প্রথম কাব্যগ্রন্থ দাও বৃক্ষ দাও দিন থেকেই হাবীবুল্লাহ সিরাজীর কবিসত্তা নিজের পথ সন্ধান করে নিতে চাইছিল। গ্রন্থটি প্রকাশিত হয় ১৯৭৫ সালে, মোট ৪৫টি 888sport app download apkর সমাহার। তারপর শুধু লিখেই গেছেন অন্তরতাগিদে, একের পর এক 888sport app download apkগ্রন্থ বের হয়েছে। বিবর্তিত ও বিকশিত হয়েছেন কি? সেই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে প্রবেশ করতে হয় তাঁর রচনার গভীরে, চিহ্নিত করতে হয় 888sport app download apkশৈলীর নিজস্ব রূপটিকে। সেই কবে বিষ্ণু দে লিখেছিলেন, ‘888sport app download apk তো লেখাই হয় শব্দের ছন্দের দ্বন্দ্বে।’ এই দ্বন্দ্বময়তা শব্দের শরীরে ক্রীড়াচঞ্চল হয়, চিত্রলতা তৈরি করতে থাকে প্রতি 888sport app download apkবাক্যে। ‘উপলব্যথিতগতি’কে শব্দে স্পন্দিত করার ফলেই 888sport app download apkনদী সমুদ্রসঙ্গমে তথা কাব্যাত্মার মোহনায় সমর্পিত হয়। এ-কথাটি শুরুতেই বুঝেছিলেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী। তাঁর কথায়, “তাই জলের আন্দোলন দেখলেও ঢেউগুলো থেকে স্রোতকে পৃথক করা ছিল দুরূহ; কিন্তু মুহূর্তের পদ্মা আমাকে ভাসিয়ে দিলো, আর পলাশী (ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটির এলাকা) আমাকে ঘূর্ণিগুলো চিহ্নিত করে সঙ্গে রাখলো। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তির ক্ষেত্র তখন নক্ষত্রমণ্ডল ছুঁই-ছুঁই। আমি 888sport apkের আয়তনে মেঘের ক্ষেত্রফল নির্ণয়ে ব্যস্ত হ’তে শুরু করলাম। গাছ যেমন বৃক্ষ হয়ে ওঠে, মাছ যেমন মৎস্যরূপে লীলা দেখায় – তেমনি সব্জি ও আমিষে আমি একাকার হ’য়ে গেলাম। বুড়িগঙ্গা আমাকে নুন ও পলির বিভেদভঞ্জনে বুক পেতে দিলো।”
এই উক্তিগুলো থেকেই বোঝা যায় সিরাজীর 888sport app download apk কোনোকিছুকে জেনারালাইজ করে না। তিনি জগৎকে – নক্ষত্র-নদী-বালুকণা-মেঘ – সবকিছুকে বুকে নেয় পার্টিকুলার রূপে – ‘উপলব্যথিত’ গতিতে, সময়ের বর্তমান নিয়ে শূন্যতায়, অতীত নিয়ে আনন্ত্যে এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে বিদ্যুতায়িত অন্ধ-ঝাঁপকে চকিত করেন শব্দমালায়। উক্ত ব্যথিত গতির নদীর যে-চলা তা একইসঙ্গে বেগবান ও শস্যময়। তাই গাছ জন্মের কাছাকাছি থেকে ‘শিকড় ছিঁড়েই দেখে ঝুলে আছে চাঁদ/ পশ্চিম আকাশে।’ এই গাছের কাছে 888sport app download apkর পারসোনার আবেদন – ‘সোনালি সিঞ্চনচ্যুত হে বৃক্ষ, হে আয়ুষ্মতি গাছ!/ সবুজ শিকড়ে গেঁথে পবনের ন্যায়/ আমাকে উড়াল দাও।’ এই গাছ, এই বৃক্ষ 888sport app download apkর পারসোনারই রূপক। 888sport app download apk তখনই রূপকল্পকে নান্দনিক করে তোলে যখন তা চিন্তাভ হয়, মন ও মস্তিষ্কের যূথবদ্ধতায় বিনত হয়, বিনম্র হয় ব্যথিত মন্ময় সংবেদনায়। হৃদয়কে সংবেদনার সিঁড়িগুলোর ধাপ পেরিয়ে-পেরিয়ে তুলে দেয় মননের চত্বরে, যেখানে সময় ও ফেনোমেনার অনন্ত রঙ্গ জমে ওঠে। প্রশ্ন এই, এই রঙ্গমুহূর্ত বৃক্ষবোধকে বোধিতে উত্তীর্ণ করে কি? অথবা খণ্ড খণ্ড দেখার জগৎটি কি অখণ্ড দিব্যদৃষ্টির তন্মুহূর্তে সম্পৃক্ত হয়? নাকি কেবলই খণ্ড থেকে আরো টুকরো-টাকরার মধ্যে ভেঙে-ভেঙে সূক্ষ্ম হয়ে ওঠে?
আর সকলের মতোই সিরাজীরও বাসনা জনক-জননীর সৃষ্টির সঙ্গম আর জীবন888sport apkকে জন্ম ও ভালোবাসার উৎসব করে তোলে। ধ্যান করে পিতা – জনকের 888sport sign up bonusর পুষ্পিত কানন, কারণ তিনি ‘নদীকে নদী বলা’র যে-সরল নিয়ম তাই মেনে চলেন। এতে মনে হয়, সিরাজী বিদ্যমান রূপকেই রূপকত্বে ভূষিত করেন। ফলে শব্দের কেরামতি চিত্রলতা পর্যন্ত সীমিত থাকে, তা বিদ্যুল্লতা হয়ে চিত্রকল্পে উত্তীর্ণ হয় না। যেমন : ‘রৌদ্রের প্রপাতধ্বনি দেয়ালের ছবি/ এক পা দুই পা করে ইটের উজান বেয়ে জানালায় বসে,/ খুলি দ্বার : কপাটে কপাটে শব্দ কালো শিকে দক্ষিণের গান -/ মেঘের সাম্পানে ওই মোহিনী বৃষ্টির মেয়ে নামছে দুয়ারে/ এ আমার ঘর …।’ এ নিছক নিজের ঘরটির শব্দায়ন মাত্র, তবে শেষ পঙ্ক্তিতে একটু দিব্যতা ফোটে – ‘কতোটুকু জল হলে তারে নেবে অতলে তোমার।’ (‘মালীবাগ, বিকেলে বৃষ্টি’) কবির মল্লিকাবনে খুব সরলভাবেই স্বপ্ন দ্যাখে ‘সম্মুখে উড়ছে বন।’ কবিজীবন তাঁর কাছে শ্রমের রক্তবীজ যা 888sport app download apkর ‘গর্ভের মধ্যে অপার আঁধারে/ বিষাদের বৃক্ষ হয়ে বেড়ে ওঠে ধীরে -/ তোমাতে আমাতে মিলে সৃষ্টি হয় তৃতীয় ভুবন!’ (‘কবিজীবন’)। এই যে objectivity – বস্তুময়তা, তা শব্দে সমর্পিত উপচিত্রের পর উপচিত্র আঁকে এবং performance in words হয়ে ওঠে। তাঁর শব্দায়ন রীতিকে পরিস্রুত করে ‘শব্দে শব্দে বিয়া দেয়’। তার মধ্যে অনুশীলিত হয় কবিরও সত্তা – জংধরা ছুরিতে শান দেওয়ার মতো। বলেন, ‘সবজি চাষের মতো মগজের মিহি জমিতে/ অবিরাম চাষ চলে শব্দের, চিত্রের।/ অঙ্কুরিত তাজা প্রাণে জলবায়ু ঢেউ খেলে গেলে/ পাতার আড়ালে এসে দাঁড়ায় বিষয়/ বর্ণনার ডালে ধরে কচি ফুল, কল্পনার ঠোঁটে বাড়ে/ গোলাপি সবজির তাজা দেহ …।’ পার্টিকুলারকে বিশেষভাবে দেখেন বলেই 888sport app download apkয় ‘সবজির চাষ’ রূপকল্পটি ব্যবহৃত হয়।
এই প্রথম কাব্যটিতে সিরাজী 888sport app download apk লেখার কায়দা রপ্ত করতে চেয়েছেন উপমার ধরনে নিজস্বতা ফোটাতে চেয়ে। ‘তুমি’-কে দেখা-পাওয়ার মুহূর্তগুলো বৃক্ষ, পাখির পালক, বরফকুচি, বৃষ্টি নোনা চোখ – ইত্যাকার রূপকল্পে যেভাবে প্রতীকায়িত হয় তাতে চমক থাকলেও ব্যঞ্জনার দ্যুতি ন্যূন, তবে দ্রুতি আছে। কোনো কোনো পঙ্ক্তি অবশ্য ছুঁয়ে যায় – ‘বৃষ্টির মতো স্বচ্ছ ফোঁটার তলে/ তোমাকে দেখি :/ স্বপ্নকে দেখি স্বপ্নেই শুয়ে আছে।’ (‘তোমাকে দেখি’) এরকম নানা পঙক্তির পসরায় সিরাজীর কবিসত্তা 888sport live chatময়তা সন্ধান করে। যেমন : ‘ঘুমের ঘোরে আরেকটি ঘুম ঘুমিয়ে থাকে’; ‘সুপ্ত হ্লাদে আমোদিত প্রেমের পিপাসা’, ‘নক্ষত্র ভাঙছে মেঘ, বায়ু নামে, … বজ্রপাণি শূন্যে দোলে’; ‘দেয়ালে দেয়াল ভাঙে রাত ভাঙে চাঁদ’ ইত্যাদি।
বস্তুত, প্রথম কাব্যের শব্দ আর চিত্রলতার এইসব বিন্যাস থেকে কবি ক্রমে অনুশীলনে গেছেন পরবর্তী 888sport app download apkগুলোর প্রাণ সন্ধিৎসায়। তবুও, এই ঢংটি, – শব্দান্বয়ে চমক সৃষ্টির কারুময়তা থেকে সরে আসেননি। বিষয় থেকে যতই বিষয়ান্তরে গেছেন ততই শব্দরূপকল্পের জালায়ন তাঁকে মোহগ্রস্ত করে রেখেছে। যেটুকু কাব্যায়ন তা শব্দের ‘উপলব্যথিত’ গতিরই জলঝর্নাধ্বনি। যতটা কবিত্বমোহ তাঁকে পেয়ে বসেছে ততোটা 888sport app download apkর গভীর প্রাণ ইশারাস্পন্দনে দ্যোদিত হয়েছে কি না তা নিবিড় বিবেচনার দাবি রাখে। সে-আলোচনা বারান্তরে। তবে গত শতাব্দীর শেষ তিনটি দশক থেকে প্রয়াণকাল পর্যন্ত অজস্র লেখার ধারায় তাঁর স্বকীয়ত্ব তৈরি হয়েছে ওই দৃষ্টিভঙ্গির পার্টিকুলারিটির জন্যেই এবং অবশ্যই বিষয় থেকে বিষয়ান্তরে গমনাগমনের কৃৎকারুতায়। তবে কাব্যভাষায় আয়ত্তীভূত হলেও কাব্যদর্শন দানা বেঁধেছে কি? হয়তো, উত্তর-আধুনিক পাঠক বলবেন – দর্শন ভাঙাই এ-কালের 888sport app download apkর কাজ। সে-বিতর্ক কালের হাতে রইল।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.