বছর পাঁচেক আগে গল্পকার কুলদা রায়কে দেওয়া এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম তাঁর শৈশবে দেখা এক গল্পকথকের কথা বলেছিলেন। সেই গল্পকথক এক বয়স্কা হিন্দু বিধবা, যাঁকে তিনি ও তাঁর সহপাঠীরা ‘দিদা’ বলে ডাকতেন। উলের জামা বুনতে বুনতে, অথবা জাঁতা দিয়ে সুপারি কাটতে কাটতে, অথবা পান বানাতে বানতে দিদা তাঁদের গল্প শোনাতেন। বলতে বলতে হঠাৎ তিনি গল্প বলা থামিয়ে দিতেন। তখন শ্রোতারা হইহই করে উঠতেন। দিদা হেসে বলতেন, ‘গল্প কখনো হারায় না। আরেকদিন এসে শুনিস।’ অথবা বলতেন, ‘নিজেদের মতো করে গল্প সাজিয়ে নে।’
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মনে করতেন, তাঁর শৈশবে দেখা সেই দিদার গল্পে, গল্প বলার ঢংয়ে প্রতিফলিত হতো কথ্য888sport live footballের ঐতিহ্য। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘দক্ষিণ আমেরিকার 888sport live footballিকরা কথা888sport live footballকে গুরুত্ব দিয়েছেন। লিখিত 888sport live football হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ের, ছাপাখানা পরবর্তী সময়ের। লেখা যখন ছাপা হতে শুরু হলো, মুদ্রিত অক্ষরের – ছাপানো শব্দের শাসনে চলে গেল গল্পের কাঠামো। অক্ষরের একটা গ্রাফিক্স আছে, তার একটা দাবি থাকে। সুন্দর করে চিন্তা সাজানোর, ফর্ম নিয়ে নিরীক্ষার একটা দাবি থাকে। ‘পোস্টমাস্টার’-এর মতো, ‘কাবুলিওয়ালা’র মতো গল্পে তিনি গল্প বলছেন কথক হিসেবে, পাঠকের সঙ্গে দূরত্বটা নেই, বরং সম্পর্কের একটা তাৎক্ষণিক প্রভাব আছে। তিনি সচেতন পাঠকের অংশগ্রহণ নিয়ে।’
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের তৃতীয় 888sport alternative link আজগুবি রাত পড়ার সময় অগ্রসর পাঠক বুঝতে পারবেন, তিনি এই 888sport alternative linkে সেই দিদার গল্প বলার ঢংটিই প্রয়োগ করেছেন। এই 888sport alternative linkের কথক লেখক স্বয়ং। যেন তিনি কোনো একটা আড্ডায় বসেছেন। আড্ডার মধ্যমণি হয়ে। গল্পটি তিনি বলছেন, বাকিরা গভীর মনোযোগে শুনছে। 888sport alternative linkের শুরু বলেশ^র নদীতে ভেসে আসা একটি কাটা হাতকে কেন্দ্র করে। 888sport alternative linkের শুরুতেই কথক বলে দিচ্ছেন ভেসে আসা হাতটি যে নূর বানুর। বলে তো দেবেনই। কারণ, কথক তো জানেন হাতটি যে বলেশ্বরের উজানের গ্রাম কাকচিড়ার ইকবালুর রহিমের স্ত্রী নূর বানুর। স্বয়ং লেখকই যে এই 888sport alternative linkের কথক, তা শুরুতেই বলে দিচ্ছেন এভাবে, ‘আর নূর বানুর হাত যে নূর বানুর হাত, সে কথাটাও এক কানা রইসু ছাড়া – এবং আমি ছাড়া – কে-ই-বা জানে? আর, কানা রইসুর জানা আর আমার জানা একই কথা, যদিও তার বয়স মাত্র দশ, আমার যেখানে …।’
888sport alternative linkের সকল ঘটনাপ্রবাহের প্রত্যক্ষদর্শী এই কথক। তিনি প্রত্যক্ষদর্শী না হলে পুলিশকেই খুঁজে বের করতে হতো হাতটি আসলে কার। কোনো সাসপেন্স না রেখে এই কাটা হাত কার, তা বলে দেওয়ায় পাঠকের কৌতূহলের কোনো ঘাটতি তৈরি হয় না, বরং কৌতূহল আরো বৃদ্ধি পায়। তারা ভাবে, কাটা হাতটি যে নূর বানুর, তা না হয় বোঝা গেল। কিন্তু নূর বানু কে? কী তার পরিচয়? তার বাড়ি কোথায়? সে কি কোনো কুমারী, কোনো
স্কুল-কলেজের ছাত্রী? নাকি কোনো গৃহবধূ? তার হাতটি কাটা পড়ল কীভাবে? কে কাটল? কেউ কি শত্রুতা করে কেটে ফেলল, নাকি নূর বানু নিজের হাত নিজেই কেটে ফেলল? তার হাতটি বলেশ্বর নদীতেই-বা কীভাবে এলো?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পাঠককে গল্পকথকের কথায় মনোযোগ দিতে হয়। গভীর মনোযোগ। গভীর মনোযোগ ছাড়া সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে না। কারণ লেখক এমন এক কৌশলে গল্পটি বয়ান করেছেন, কোনো প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কারণ একটি প্রসঙ্গ অন্য একটি প্রসঙ্গের সঙ্গে জোড়া লাগানো। যেন একটি মালা। সুতাটি ছিঁড়ে গেলে কিংবা একটি ফুল পড়ে গেলে মালাটি আর অক্ষত থাকবে না। অর্থাৎ সেটিকে মালা হিসেবে দেখা যাবে না, দেখা যাবে কতগুলো পরস্পরবিচ্ছিন্ন ফুল হিসেবে।888sport alternative linkের শুরুতে মনে হয়, নূর বানুর কাটা হাতটিই বুঝি 888sport alternative linkটির কেন্দ্রীয় চরিত্র। এই কাটা হাতকে কেন্দ্র করেই বুঝি কাহিনি আবর্তিত। যেন একটি গোয়েন্দা কাহিনি, যেন একটি থ্রিলার। কিন্তু না, নূর বানুর কাটা হাতকে কেন্দ্র করে 888sport alternative linkের কাহিনি আবর্তিত হলেও সেই কাহিনিতে ঢুকে পড়ে নূর বানুর স্বামী ইকবালুর রহিম, এক নীরব প্রত্যক্ষদর্শী কানা রইসু, লম্পট বৃদ্ধ ইরফান মোল্লা, মাঝির বেটা রবিউল, চন্দ্রপাড়ার তোশারফ আলী, স্কুলমাস্টার গৌরাঙ্গ পাল, live chat 888sport নায়ক লাকি খান, পাথরঘাটা থানার ওসি, দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইকবালের বন্ধু গোপাল, খলিলের বউ হাফসা, আসলাম, সাংবাদিক সাবরিনাসহ অনেক মানুষ এবং প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সারিকা।
নূর বানুর হাতটি কীভাবে কাটা পড়ল এবং কীভাবে বলেশ্বরে ভেসে এলো, এর কোনো কূলকিনারা না হতেই পাথরঘাটায় শুরু হলো ভয়াবহ বিপদ সংকেত। তিন নম্বর, চার নম্বর কিংবা পাঁচ নম্বর নয় – একেবারে দশ নম্বর বিপদ সংকেত। ঝড়ের এমন পাগলামি পাথরঘাটার কেউ আগে কখনো দেখেনি। সারা শহরে একটা ভয়ের বাতাস শুরু হয়ে গেছে। ভয়ের খড়খড়ে বাতাস। সেই বাতাস মানুষের চুলে লাগলে চুল দাঁড়িয়ে যায়, রোমে লাগল রোম দাঁড়িয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় সারিকা আঘাত করবে পূর্ণশক্তি নিয়ে। শহরটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বাইরে থেকে। কোথাও কোনো যানবাহন চলছে না। সেই শহরে আটকা পড়েছেন সরকারের দুর্যোগ সচিব, একটি ফিল্মের শুটিং করতে আসা নায়ক-নায়িকা-ভিলেন, এক টেলিভিশন চ্যানেলের সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যান। সবাই থানায় এসে হাজির হন নিজ নিজ প্রয়োজনে। তার আগে, অর্থাৎ বাতাস শুরু হওয়ার আগে মাঝির বেটা রবিউল বলেশ্বর থেকে টেনে তোলে নূর বানুর হাতটি। সেই হাতের এক আঙুলে তামার আংটি। আঙুলের প্রথম দাগ পর্যন্ত মেহেদির রং। মেহেদিটা বেশ পুরনো। হাতটা বেশ ঠান্ডা, আঙুল দিয়ে একটু টিপলে নরম একটা ভাব লাগে। সেই ভাবটা ঠান্ডা নয়। তোশারফ আলী এবং গৌরাঙ্গ পাল সেই কাটা হাত নিয়ে হাজির হয় থানায়।
888sport alternative linkে দুই সময়ের দুই ঘটনা সমান্তরালভাবে চলতে থাকে। অর্থাৎ এক অধ্যায়ে কাটা হাত প্রসঙ্গে বলা হচ্ছে তো আরেক অধ্যায়ে বলা হচ্ছে নূর বানুর প্রসঙ্গে। কাটা হাতকে কেন্দ্র করে সমস্ত ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এবং কথক স্বয়ং লেখক। অপরদিকে নূর বানুর জীবনের সমস্ত ঘটনার কথক লেখক হলেও একজন প্রত্যক্ষদর্শী আছে, যার নাম কানা রইসু। সে নূর বানুর জীবনের সকল ঘটনার দ্রষ্টা, সকল ঘটনার সাক্ষী। নূর বানুর জীবনের ঘটনাসমূহ কথক নিজ চোখে দেখেন না, দেখেন কানা রইসুর চোখ দিয়ে। কানা রইসুর হয়েই তিনি বর্ণনা করেন পাঠকদের।
কানা রইসু কে? ইকবালের চাচাতো ভাই। সে জীবিত, না মৃত? এটা একটা রহস্য। এই রহস্যের কোনো সুরাহা করেন না লেখক। কখনো মনে হয়, কানা রইসু যেন অশরীরী প্রেত। সে সবকিছু দেখে, কিন্তু কিছু করতে পারে না, বলতেও পারে না। তার পরিচয় দিচ্ছেন লেখক এভাবে, ‘… রইসু শুধু দেখে, কথা বলে না। দেখাটাই তার কাজ, কথা বলাটা নয়। কথা সে অবশ্য বলে, তবে নিজের সঙ্গে। অনেকভাবেই বলে, নিজের গল্প, অন্যদের গল্প – টুকরো টুকরো করে বলে, লম্বা করে বলে। যখন বলে, নিজেই শোনে, শুনে কখনো হাসে, কখনো কষ্ট পায়। তার কথাগুলো – সে নিশ্চিত – বাতাসে ভেসে বেড়ায়; কেউ তুলে নিলে নিতে পারে, গেঁথে দিলে দিতে পারে অন্য কোনো গল্পে, অন্য কারও জীবনে। সে কাজ যারা করে, তাদের সে সালাম জানায়। কিন্তু তাদের মতোই সে নিজের কথার ফাঁদে নিজেই পড়ে যায় – পড়ে আছে, পড়ে থাকবেও। এই ফাঁদ থেকে সে বেরুতে পারবে না। রইসু আরও ভাবে, এইটুকু মাত্র ভূগোলে তার বাস – এই জঙ্গল, এই বাড়ি, এই উঠান। কিন্তু এই একচিলতে ভূগোলেই কত গল্প, কত জীবন। সেগুলোর গল্প সারা জীবন বললেও তো শেষ হবে না। যদি শুরুটা বলা যায়, শেষটা যেন ধেয়ে আসে, বলার জন্য তাকে তাড়া দিতে থাকে। আবার শেষটা যদি সে ধরে, শুরুর কথাগুলো, গল্পগুলো, ছায়াগুলো একঘেয়ে আবদার জানাতে থাকে, তাদের বলার জন্য। কোনটা ছেড়ে কোনটা বলে রইসু?’
কানা রইসুকে কেন নূর বানুর জীবনে ঘটা ঘটনাসমূহের প্রত্যক্ষদর্শীর ভূমিকায় আনলেন লেখক? যেহেতু তিনি স্বয়ং কথকের ভূমিকায়, সেহেতু নূর বানু, ইকবাল, বিল্লাল, খলিল, হাফসা, গোপাল বা ইরফান মোল্লা প্রমুখ চরিত্র ও তাদের যাপিত জীবনের ঘটনা-দুর্ঘটনাসমূহের কথা তো তিনিই বলতে পারতেন, আলাদা করে কানা রইসুকে কেন দরকার হলো? এর কারণ সম্ভবত এই যে, লেখক তো কাটা হাতটাকে কেন্দ্র করে ঘটে চলা ঘটনাসমূহের বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি বলেশ^রের তীরে, পাথরঘাটা থানায় এবং সারিকার তাণ্ডবকালে পাথরঘাটা শহরে উপস্থিত থেকে সবকিছু পর্যবেক্ষণ ও বর্ণনা করছেন। তিনি কী করে কাকচিড়া গ্রামে গিয়ে নূর বানুর জীবনে ঘটে চলা ঘটনাসমূহ প্রত্যক্ষ করবেন? একই ব্যক্তি তো দুই জায়গায় অবস্থান করতে পারে না। করলে তা বিশ্বাসযোগ্য হবে না। সে-কারণেই লেখক কাকচিড়ার প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে কানা রইসুকে নিযুক্ত করেছেন। কানা রইসুই সবকিছু দেখছে এবং লেখক কানা রইসুর হয়ে সবকিছুর বর্ণনা দিচ্ছেন। এটা লেখকের একটা টেকনিক, একটা নিরীক্ষা। লেখক যে সর্বদ্রষ্টা, সর্বজান্তা – এই ধারণাটি ভেঙে দেওয়ার জন্য তিনি কানা রইসু চরিত্রটি সৃষ্টি করেছেন। একইসঙ্গে আবার এটাও বলা যেতে পারে, কানা রইসু আসলে গল্পকথকেরই আরেকটি সত্তা। কেননা লেখক শুরুতেই বলে নিয়েছেন, ‘কানা রইসুর জানা আর আমার জানা একই কথা।’ বোঝাই যাচ্ছে এই কানা রইসু যে লেখকেরই দ্বিতীয় সত্তা। কানা রইসু যেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শৈশবে দেখা সেই দিদা, যিনি গল্প বলতে বলতে হঠাৎ থেমে যেতেন। রইসু থেমে গেলে কথক হাল ধরেন। অর্থাৎ নিজের মতো করে গল্পটি সাজিয়ে নেন। দিদা যখন গল্প বলতে বলতে হঠাৎ থেমে যেতেন, শ্রোতারা তখন হইহই করে উঠলে দিদা যেমন বলতেন, ‘নিজেদের মতো করে গল্প সাজিয়ে নে’ – গল্পকথকও নিজের মতো করে গল্পটি সাজিয়ে নিচ্ছেন। এ এক অভিনব আঙ্গিক, গল্প বলার অভিনব কৌশল। কিংবা অভিনব নয়, এটাই গল্প বলার ঐতিহ্যবাহী ঢং। সেই ঐতিহ্যের নবায়ন করেছেন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম তাঁর আজগুবি রাত 888sport alternative linkে।
আজগুবি রাত আসলে নূর বানুরই গল্প। কিন্তু নূর বানু তো একা কেউ নয়। তার স্বামী আছে, পুত্র আছে, বাবা-মা আছে, আত্মীয়-স্বজন আছে, পাড়াপড়শি আছে এবং তার সমাজও আছে। সবকিছুকে নিয়েই নূর বানুর অস্তিত্ব। নূর বানু গ্রামবাংলার সেসব 888sport promo codeর প্রতিনিধি, যারা চিরকালের নির্যাতিত, নিপীড়িত। সে রোগে-শোকে জর্জরিত। সে সতী-সাধ্বী, স্বামীর মতো পরকীয়া করে না, তবু স্বামী তাকে সন্দেহ করে, মারধর করে; শাশুড়ি তাকে বকাঝকা করে, দেবর তাকে গালাগাল করে। সে কোনো পরপুরুষের সঙ্গে কথা বলতে পারে না। বললে সবাই তার চরিত্র নিয়ে সন্দেহ করে, তাকে দোষারোপ করে। নূর বানু মুখ বুজে সব সয়ে যায়, সব মেনে নিয়ে স্বামী-সংসার আঁকড়ে পড়ে থাকতে চায়। কিন্তু শত চেষ্টা করেও পেরে ওঠে না। স্বামীর কৃতকর্মের ফলও তাকেই ভোগ করতে হয়। তার স্বামী ইকবালুর রহিমের লাথিতে খলিলের গর্ভবতী স্ত্রী হাফসার মৃত্যু হয়। ভয়ে ইকবাল বাড়ি ছাড়ে। খলিল পুড়িয়ে দেয় ইকবালের ঘর। পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যায় খলিলকে। জেল থেকে ছাড়া পেয়ে স্ত্রী হত্যার প্রতিশোধ নিতে ইকবালকে খোঁজে খলিল। ভয়ে ইকবাল ঘরে থাকে না। এক রাতে ইকবালকে হত্যা করতে গিয়ে নূর বানুর হাতে কোপ মেরে হাতটা দ্বিখণ্ডিত করে ফেলে খলিল। সেই হাত সে ভাসিয়ে দেয় বলেশ্বরে। বলেশ্বর থেকে সেই হাত চলে যায় পাথরঘাটার ঘাটে। মাঝির বেটা রবিউল উদ্ধার করে সেই হাত। চন্দ্রপাড়ার তোশারফ আলী ও স্কুলমাস্টার গৌরাঙ্গ পাল সেই হাত নিয়ে যায় থানায়। সেই হাতের সঙ্গে জড়িয়ে যায় নানা প্রয়োজনে থানায় উপস্থিত হওয়া live chat 888sport নায়ক লাকি খান, দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব, সাংবাদিক সাবরিনা প্রমুখ।
কীভাবে তারা জড়িয়ে যায়? হাতটির বিষয়ে live chat 888sport নায়ক লাকি খানের অনুভূতি দেখা যাক। তার অনুভূতি লেখক বর্ণনা করেছেন এভাবে, ‘লাকি খান কাটা হাতটা নিয়ে বসে থাকলেন। লাল চোখ দিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে হাতটা দেখতে থাকলেন। হাতটার স্পর্শ কেন জানি তাকে উদাসী করেছে। এরকম স্পর্শ ছিল টিনার – সেই শুরুর দিকে। ‘লাভ ইন রাঙামাটি’তে টিনার হাতে প্রথম হাত রেখেছিলেন লাকি, বুকে বুক, গালে গাল। হায়, কেন চলে গেল টিনা! লাকি খানের লাল চোখ বেয়ে এক ফোঁটা পানিও যেন বেরিয়ে এল। কিন্তু চোখে তার সানগ্লাস। পানি এলেও কেউ বুঝবে না।’
হাতটা বিষয়ে দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিবের অনুভূতি এমন, ‘সচিব নিজের অজান্তে আঙুল চালাচ্ছেন হাতটার ওপর। কী মসৃণ চামড়াটা, খোলা ছাড়ানো একটা সেদ্ধ ডিমের মতো! হাতটাকে তার হঠাৎ ভালো লাগতে থাকল। তার অবাক লাগল না, হাতটা মরা, এর ভেতরে কোনো জীবন নেই, এটি ভয়াবহ কোনো দুর্ঘটনা অথবা অপমৃত্যুর সাক্ষী। তার বরং মনে হলো, হাতটা যার, সে যেন পাশে বসে আছে। সচিবের চোখে একটা উদাস ছায়া ঘনিয়ে এলো।’
সাংবাদিক সাবরিনাও কাটা হাতটা হাতে নিয়ে এক আশ্চর্য অনুভূতির মুখোমুখি হয়। কাটা হাতটা সাবরিনার হাতে দিলেন দুর্যোগ সচিব। হাতটা সাবরিনার কাছে খুব হালকা লাগে। তার মনে পড়ে যায় ছোটবেলার একটি হাতের কথা। লেখক স্পষ্ট না করলেও পাঠক বুঝতে পারে সেই হাতটি যে সাবরিনার মায়ের হাত। হাতটা হাতে নেওয়ার পর সাবরিনার অনুভূতি এমন, ‘সাবরিনার ভেতরটাতে হঠাৎ যেন ডিপ্রেসনের বৃষ্টি হতে শুরু করল। অবাক, রীতিমতো ভিজে যাচ্ছে ভেতরটা। আর তার ঝাপটা লেগে তার চোখ দুটোই ঝাপসা হয়ে যাচ্ছে। সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না কেন এমন হচ্ছে। এই পনেরো মিনিট আগেই সে তার 888sport world cup rateের একটা খসড়া পর্যন্ত তৈরি করে ফেলেছিল মনে মনে; স্ক্রিপ্ট লেখার সময় নেই। অথচ এখন মনে হচ্ছে, 888sport world cup rateটা যেখানে ইচ্ছে যাক, সে বসে থাকবে কাটা হাতটা কোলে নিয়ে। কাটা হাতের আঙুল শক্ত করে ধরে রেখেছে সাবরিনার হাত, যেন সে রিকশা থেকে পড়ে না যায় – যেন তাকে স্কুলে পৌঁছিয়ে, ক্লাসে বসিয়ে দিয়ে তার ছুটি, দুপুর পর্যন্ত। যখন সাবরিনার বাড়ি ফেরার পালা এবং আবারও সেই হাতের কাজ শুরু – সেই হাত, সেই আংটি, সেই মেন্দি। মেন্দিটা কি শবেবরাতের রাতে লাগিয়েছিল? প্রথমে সাবরিনার হাতে, তারপর তার নিজের হাতে? তারপর, মেন্দি শুকিয়ে গেলে কতবার ওলটপালট করে দুজন দুজনের হাত দেখেছে, তারপর রাতে বিপুল উত্তেজনা নিয়ে সাবরিনা যখন ঘুমাতে গেছে, সেই হাত কী অসম্ভব মমতায় তার গালে আদর করেছে, তার রিঙ্কি পুতুলটা গালের কাছে রেখে মশারিটা গুঁজে আলোটা নিভিয়ে দিয়েছে। সাবরিনার চোখ বন্ধ, ভেতর থেকে বাষ্প জমে তাকে যেন দৃষ্টিহীন করে দিয়েছে, অথচ সে পরিষ্কার হাতটাকে দেখতে পাচ্ছে। হাতটা তাকে ধরে রেখেছে, যেন রিকশা থেকে সে পড়ে না যায়। তারপর একটা তীব্র শব্দ। একটা গাড়ির সজোরে ব্রেক কষা। সেই হাত জোর করে ধরে রেখেছে সাবরিনাকে, সাবরিনা পড়ছে, হাতটাও পড়ছে। তারপর সাবরিনার কিছুই মনে নেই। হাতটা তার জীবন থেকে হঠাৎ হারিয়ে গেল। বন্ধ চোখ জোর করে খুলে সাবরিনা ফিসফিস করে বলল, হাতটা কার, ওসি সাহেব?’ কেননা সাবরিনার মনে হচ্ছিল এই হাত তার মায়ের সেই হারিয়ে যাওয়া হাত।
ওদিকে ওসির টেবিলে কাটা হাত দেখে স্তব্ধ হয়ে বসে রইলেন আসলাম। তাঁর ক্লান্তি চলে গেছে। ক্লান্তির জায়গায় কান্না এসেছে। তিনি স্পষ্ট দেখলেন, হাতটা দিয়ে গলে গলে পড়ছে কান্না। তার মনে পড়ল, তার দেড়-দুই বছর বয়সী চলন্ত মোটরসাইকেলটা থেকে হঠাৎ এক রাতে এরকম কান্না গলে পড়তে দেখে তিনি এত চমকে উঠেছিলেন যে সেটিকে তিনি আর ধরে রাখতে পারেননি। মোটরসাইকেলটা হাত ফসকে উল্টে পড়ে গিয়েছিল। তিনি সেটিকে কোনোক্রমে তুলে ঠেলেঠুলে বাসায় এনে অনেকক্ষণ ধরে হাত ধুয়েছিলেন। পরদিন মোটরসাইকেলটা তিনি বিক্রি করে দিয়েছিলেন।
এভাবে থানায় উপস্থিত প্রত্যেক ব্যক্তিকে প্রভাবিত করে হাতটি। হাতটি মনে করিয়ে দেয় তাদের অতীত 888sport sign up bonus। প্রত্যেকেরই মনে হয় হাতটি তাদের চেনা হাত। প্রত্যেকের মনের গোপন জায়গাগুলোতে স্পর্শ করে যায় কাটা হাতটি। সেই স্পর্শে বেরিয়ে পড়ে লুকিয়ে থাকা নানা হাড়গোড়, অপ্রাপ্তির নানা 888sport sign up bonus। সেই কাটা হাত সবাইকে আমূল বদলে দেয়। অর্থাৎ একটি কাটা হাতকে দিয়ে লেখক প্রত্যেক চরিত্রের মানসিক দশা উন্মোচন করছেন। হাতটি যেন লিখে যায় আজগুবি কিছু আখ্যান, যে-আখ্যানগুলোর উৎপত্তি অবচেতনের ছায়ার অঞ্চলে। একটি হাতের মাধ্যমে সব চরিত্রের ভেতরে প্রবেশ করা, তাদের মননের পরিস্থিতি বর্ণনা করা সহজ নয়। সব ঔপন্যাসিকের পক্ষে এমন বর্ণনা দেওয়া কঠিন। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে দিতে পেরেছেন। এই কারণে আজগুবি রাত কেবল একটি কাটা হাতের কাহিনি হয়ে ওঠেনি, হয়ে উঠেছে গ্রামবাংলার সমাজ ও সংস্কৃতির শৈল্পিক বয়ান, সমাজের মানুষগুলোর হিংসা-বিদ্বেষ-সংঘাত ও সহিংসতার বয়ান, পারিবারিক কলহের বয়ান, গ্রামের সর্বংসহা 888sport promo codeদের নির্যাতন-নিপীড়নের বয়ান এবং নাগরিক মানুষদের নানা দ্বন্দ্ব, সংকট ও মনস্তাত্ত্বিক টানাপড়েনের বয়ান। সেই বয়ান বাস্তবতার একঘেয়েমিতে আক্রান্ত নয়। বাস্তবতার একঘেয়েমি থেকে পাঠককে মুক্তি দিতে লেখক এনেছেন কানা রইসুকে, যে কি না অদৃশ্য, অশরীরী। এনেছেন জাত গোখরো রাজা ও রানিকে। এছাড়া কাহিনির ফাঁকে ফাঁকে ছড়িয়ে দিয়েছেন নানা অলৌকিক ক্রিয়াকর্ম, যা বাস্তব হলেও পাঠকের মনে হয় অতিবাস্তব। সেই অতিবাস্তবতা পাঠককে বাস্তবের একঘেয়েমি থেকে মুক্তি দেয়।
আজগুবি রাত কি সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সেরা 888sport alternative link? না, তা বলব না। তাহলে কোনটি তাঁর সেরা 888sport alternative link? আধখানা মানুষ, দিনরাত্রিগুলি, তিন পর্বের জীবন, নাকি কানাগলির মানুষেরা? সেই বিচার পাঠক করবেন। তবে আজগুবি রাত 888sport alternative linkে তিনি যে-নিরীক্ষা করেছেন, তাতে বোঝা যায় এটি যে তাঁরই লেখা। কারণ এই 888sport alternative linkের একটা স্বাতন্ত্র্য আছে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম গল্প বলার যে রীতি পছন্দ করতেন, সেই রীতির সার্থক প্রয়োগ আছে। ভবিষ্যকালের পাঠকেরা হয়তো এই 888sport alternative linkের আরো নতুন নতুন দিক আবিষ্কার করবেন।
দুই
গত কুড়ি বছরে বাংলা ভাষার জ্যেষ্ঠ লেখকদের মধ্যে যাঁদের অপত্য স্নেহ পেয়েছি, তাঁদের মধ্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম একজন। সেই তেরো-চৌদ্দ বছর আগে, 888sport live footballের অন্ধিসন্ধি খুঁজে বেড়ানোর দিনগুলোতে, তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম দেখা। আমি তখন 888sport alternative link-888sport live footballকে ভালোভাবে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করছি। 888sport alternative link লিখে হাত মকশো করছি এবং বিশ্ব888sport live footballের সেরা 888sport alternative linkগুলোর পাঠ নিচ্ছি। পাশাপাশি করছি সাংবাদিকতা। কাজ করছি একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনে। সেই ম্যাগাজিনের জন্য একটি সাক্ষাৎকার নিতে একদিন গেলাম সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের কাছে, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর ইংরেজি বিভাগের কার্যালয়ে। সাক্ষাৎকারের ছকবাঁধা প্রশ্নের বাইরে সেদিন তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম বাংলা ভাষার 888sport alternative linkগুলো সম্পর্কে। জিজ্ঞেস করেছিলাম পাঠক হিসেবে কোন 888sport alternative linkগুলো পড়ব সে-বিষয়ে। তিনি প্রথমেই বলেছিলেন সৈয়দ শামসুল হকের দ্বিতীয় দিনের কাহিনী 888sport alternative linkটির কথা। বলেছিলেন, ‘পড়ে দেখ। পড়ে বুঝবে হক ভাই আমাদের সময়ের কত বড় লেখক।’
আমি তখনো সৈয়দ শামসুল হকের 888sport alternative link খেলারাম খেলে যা এবং 888sport app download apk ছাড়া তাঁর কোনো গল্প-888sport alternative link পড়িনি। আমার কৌতূহল জাগল। সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মতো 888sport live footballের অধ্যাপক যে-888sport alternative linkের প্রশংসা করছেন, নিশ্চয়ই সেই 888sport alternative link সেরা। পড়তেই হবে। বিকেলে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে আজিজ সুপার মার্কেট থেকে দ্বিতীয় দিনের কাহিনী কিনে নিয়ে গেলাম এবং রাতেই পড়তে শুরু করে দিলাম। দুদিনের মধ্যেই পড়ে শেষ করে ফোন দিলাম সৈয়দ শামসুল হককে। 888sport alternative linkটির পাঠ-উপলব্ধি জানালাম তাঁকে। জানালাম 888sport alternative linkটির হদিস যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম দিয়েছেন সে-কথা। হকভাই বললেন, তুমি মনজুরুলের আজগুবি রাত পড়েছ? পড়িনি, বললাম আমি। হকভাই বললেন, দ্রুত পড়ে নাও। তুমি 888sport alternative link লিখছ। ক্ল্যাসিক 888sport alternative linkগুলোর পাশাপাশি সমকালীন 888sport alternative linkগুলোও তোমার পড়া দরকার। মনজুরুলের সঙ্গে দেখা হলে আমার শুভেচ্ছা জানিও।
পরদিনই কিনে নিলাম আজগুবি রাত। পড়া শুরু করলাম। এরই মধ্যে সেই ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়ে গেল আমার নেওয়া সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সাক্ষাৎকারটি। কয়েক কপি পত্রিকা নিয়ে আবার দেখা করতে গেলাম তাঁর সঙ্গে। সেই একই জায়গায় – ঢাবির ইংরেজি বিভাগে তাঁর কার্যালয়ে। স্যার সেদিন ব্যস্ত ছিলেন। হয়তো কোনো ক্লাস নিচ্ছিলেন, কিংবা কোনো মিটিংয়ে ছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর তিনি এলেন। বললাম দ্বিতীয় দিনের কাহিনী পড়ার কথা। বললাম, তিনি না বললে এই অসাধারণ 888sport alternative link পাঠের স্বাদ পেতে হয়তো আরো দেরি হয়ে যেত – সে-কথা। বললাম তাঁর আজগুবি রাতের পাঠ শুরু করার কথাও। বললাম সৈয়দ হক যে তাঁর এই 888sport alternative linkের হদিস দিয়েছেন, সে-কথাও।
আমি যে-ম্যাগাজিনে কাজ করতাম সেটাতে ‘সেই সময়’ নামে একটি বিভাগ ছিল। গুণিজনদের – বিশেষত লেখকদের – শৈশব-কৈশোর নিয়ে লেখা ছাপা হতো। অধিকাংশ লেখা আমিই লিখতাম। সেদিন মনজুর স্যারকে বললাম, স্যার, আমি আপনার শৈশব-কৈশোর লিখতে চাই। স্যার বললেন, ওটা লিখে তুমি কী করবে? আমি বললাম পত্রিকার সেই সময় বিভাগটির কথা। স্যার জানতে চাইলেন কোন প্রক্রিয়ায় লিখব। বললাম, আপনি বলবেন, আমি টেপরেকর্ড করব। স্যার রাজি হলেন। বলতে লাগলেন তাঁর শৈশব-কৈশোরের 888sport sign up bonus, আর আমি টেপরেকর্ড করতে লাগলাম। ‘চতুর্থ শ্রেণী থেকেই স্কুল জীবনের শুরু’ শিরোনামে লেখাটি ছাপা হলো পত্রিকায়। পরবর্তীকালে আমার খ্যাতিমানদের শৈশব বইয়েও এই লেখা অন্তর্ভুক্ত হয়। একদিন স্যারকে বইটি উপহার দিতে গিয়েছিলাম তাঁর দফতরে। বইটি তিনি উল্টেপাল্টে দেখলেন। তাঁর শৈশব-কৈশোর নিয়ে লেখাটি পড়ে হাসলেন। বললেন, লেখাটি অনুলিখন করে একবার আমাকে দেখিয়ে নিতে পারতে। আমি বললাম, দেখিয়ে নিলে ভালো হতো। কিন্তু কোনো ভুল তথ্য যায়নি তো স্যার? তিনি হেসে বললেন, না, তা যায়নি। খুব ভালো হয়েছে।
প্রথম দিন স্যারের যে দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলাম, সেই সাক্ষাৎকারে সম্পাদকের দেওয়া ছকবাঁধা প্রশ্নের বাইরে নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেছিলাম তাঁকে। তাঁর হাতে সময় ছিল। তিনি আন্তরিক ভঙ্গিতে আমার জিজ্ঞাসার জবাব দিয়ে যাচ্ছিলেন। একটি প্রশ্ন ছিল ভাষা বিষয়ে। জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘888sport live football রচনার ক্ষেত্রে মান বাংলা এবং আঞ্চলিক বাংলা নিয়ে খুব কথা হচ্ছে এখন। একজন 888sport live footballিক হিসেবে, 888sport live footballের একজন অধ্যাপক হিসেবে এ-বিষয়ে আপনার কী অভিমত?’
উত্তরে স্যার বলেছিলেন, ‘এই ব্যাপারে আমার একটা পরিষ্কার অবস্থান আছে। আমি আঞ্চলিক ভাষায় খুব বিশ্বাসী। নিজেও আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করি। আবার একইসঙ্গে আমি একটা মানসম্পন্ন ভাষাতে বিশ্বাস করি। কারণ, এই ভাষাটা একটা সুশৃঙ্খল ভাষা। শৃঙ্খলা না থাকলে আমি দর্শনের বিষয়গুলো, 888sport apkের বিষয়গুলো উপস্থাপন করতে পারব না। শৃঙ্খলা ভাষার একটা পরিভাষা। পরিভাষা সর্বসম্মত হয়। বহুজনের একটা স্বীকৃত ভাষা, যে-ভাষা আমাদের মেধা ও মননের প্রকাশ ঘটাবে। আমি যখন একটা আনুষ্ঠানিক কথা বলতে যাব, আমি সেই সর্বজনের গ্রহণযোগ্য একটা মানসম্পন্ন ভাষায় কথা বলব। 888sport app download apk তো একটা পরিশীলিত প্রকাশ। সেই 888sport app download apkয় যদি আমি ‘আইছলাম, খাইছলাম’ ইত্যাদি ভাষা ব্যবহার করি, তাহলে কয়জন পড়বে?
ফলে আমার একটা ভাষার দরকার। একইসঙ্গে আঞ্চলিক ভাষাও চর্চা হবে। যখন আমি 888sport alternative link লিখছি সংলাপে আঞ্চলিক হোক না, অসুবিধা কী? কিন্তু দর্শনের, 888sport apkের প্রকাশের জন্য একটা ভাষা লাগবে না? একজন ফরাসি লেখক তো ফরাসি-জার্মান ভাষা মিলিয়ে বিকৃত করেননি। আমি কেন বাংলা ভাষার সঙ্গে ইংরেজি মিশিয়ে বিকৃত করব? আপনি খেয়াল করবেন, হিন্দি সিনেমায় কিন্তু এসব চলে না। সেখানে একদম পরিশীলিত হিন্দি ভাষা ব্যবহার হয়। যত দায় বাংলা ভাষা নিয়ে। এটা আমাদের হীনমন্যতা, এটা দাসত্ববোধের একটা প্রকাশ। বিশ্বমিডিয়া আমাদের নিয়ন্ত্রণ করছে, আমাদের ভাষা নিষ্ক্রিয় করে দেবে তারা, আমাদের বুদ্ধি রহিত করে দেবে। স্খলিত ভাষায় কোনো 888sport live football হয় না, স্খলিত ভাষায় কোনো পরিষ্কার চিন্তা হয় না। ফলে তারা আমাদের একটা নির্বুদ্ধি জাতি তৈরি করে পশ্চিমের যত কিছু আমাদের ওপর চাপিয়ে দেবে। সেটা মোবাইল ফোনই হোক আর ফেয়ার অ্যান্ড লাভলী ক্রিমই হোক।
খেয়াল করলাম, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা নিজের মনের ভাব প্রকাশ করতে পারে না। চার-পাঁচজন ছেলেমেয়েকে ডেকে সূর্যাস্ত নিয়ে কথা বলতে বলুন। তারা পারবে না। তারা ‘সকালে উঠলাম, উইঠা খাইলাম বাইরে, খাইয়া দেখি গাছের মইধ্যে লটকাইয়া আছে, সূর্য কোথায়’ – এরকম করে কথা বলবে। তার মধ্যে আবার ইংরেজিও ঢোকাবে। যে ছেলে বা মেয়ে নিজের মনের ভাষায় পাঁচ মিনিট গুছিয়ে কথা বলতে পারে না, সে তো একটা উচ্ছৃঙ্খল ভাষার ভিতরে আছে। এ-ভাষাটি কার জন্য প্রয়োজন? যারা আমাদের ওপর দাসত্ব চাপিয়ে দিতে চায় তাদের জন্য। ঔপনিবেশিক শাসকরা আমাদেরকে শিক্ষা দেয়নি কেন? শিক্ষিত হয়ে গেলে যে আমি তাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যাব! যখন কোনো ঔপনিবেশিক শক্তি একটা জায়গায় যায় তখন ওই জায়গার সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেয়। আমাদেরকে ইংরেজি শিখানো হলো কেন? এই জন্য যে, এমন একটা জাতি তৈরি করা হবে, যাতে চিন্তাচেতনায় সবকিছুতে তারা আমাদের অনুকরণ করবে। আমরা কি অনুকরণ করার জন্য তৈরি হয়েছি?’
888sport alternative linkে ভাষার ব্যবহার নিয়ে আমার ভেতরে যে দোদুল্যমানতা ছিল, স্যারের এই কথাগুলো শোনার পর সেই দোদুল্যমানতা কেটে গিয়েছিল। ভাষার প্রশ্নে দিশাহারা আমি একটা দিশা খুঁজে পেয়েছিলাম। আমার 888sport alternative linkের ভাষা কেমন হবে, কোন ভাষাকে আমি 888sport alternative linkে প্রয়োগ করব এবং কীভাবে করব – সেই ব্যাপারে একটা স্পষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পেরেছিলাম। অর্থাৎ তিনি আমাকে পথ দেখিয়েছেন। না দেখালে সঠিক পথটি খুঁজে পেতে হয়তো আরো অনেক সময় লেগে যেত।
সেই থেকে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কের শুরু। ধীরে ধীরে সম্পর্কটি একটা মাত্রায় উন্নীত হয়েছিল। স্যারের সঙ্গে প্রায়ই আড্ডা হতো। কখনো আমার বাসায়, কখনো কথা888sport live footballিক মোজাফ্ফর হোসেনের বাসায়। আড্ডায় আমাদের কথা হতো 888sport live football নিয়ে, 888sport live chat নিয়ে, 888sport live footballের কলাকৌশল নিয়ে। নানা বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করতাম। তিনি সুন্দর করে উত্তর দিতেন। কখনো বিরক্ত হতেন না। বরং বলতে তাঁর ভালোই লাগত। লাগাটাই স্বাভাবিক। জ্ঞানীরা জ্ঞান বিলাতে ভালোবাসেন। জ্ঞান বিলাতে তাঁদের কোনো বিরক্তি আসে না, কোনো ক্লান্তি আসে না। বরং কেউ তাঁদের কাছে কোনো বিষয়ে জানতে চাইলে তাঁরা খুশিই হন। মনজুর স্যারও খুশি হতেন। সানন্দেই আমাদের প্রশ্নসমূহের উত্তর দিতেন। মনে হতো, আমার প্রশ্নসমূহের উত্তর দেওয়ার মানুষ একজনই আছেন – সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। আরো অনেকে ছিলেন, কিন্তু তাঁরা গত হয়েছেন। তাঁদের সর্বশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম।
মনজুর স্যারের সঙ্গে সর্বশেষ আড্ডাটি হয়েছিল তাঁর প্রয়াণের কয়েক মাস আগে, কথা888sport live footballিক ওয়াসি আহমেদের বাসায়। তিনি সেদিন ছিলেন আনন্দমুখর। আমাদের সঙ্গে নানা বিষয়ে রসিকতা করছিলেন। এর মাসখানেক আগে আড্ডা হয়েছিল কথা888sport live footballিক মোজাফ্ফর হোসেনের বাসায়। কথা888sport live footballিক আহমাদ মোস্তফা কামালও ছিলেন সেই আড্ডায়। স্যার সেদিন 888sport live football বিষয়ে এত গভীরের কথা বলছিলেন যে, আমরা মুগ্ধ শ্রোতা হয়ে তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমি বলেছিলাম, স্যার, আমি যদি আপনার ছাত্র হতাম, আপনার ক্লাসগুলোতে অংশ নিতাম, তবে কত কিছুই না শিখতে পারতাম!
স্যার হাসলেন। সেই বিনয়ের হাসি। হায়! সেদিন কি একবারও ভেবেছিলাম আর বেশি দিন যে তাঁর সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হবে না! একবারও কি আন্দাজ করতে পেরেছিলাম আর বেশি দিন যে 888sport live chat-888sport live football বিষয়ে তাঁর কোনো গভীরের আলাপ শুনতে পাব না! ভাবতে পারিনি। আন্দাজ করতে পারিনি। আমাদের কল্পনাতেও ছিল না স্যার এত জলদি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন শিক্ষাবিদ, নন্দনতাত্ত্বিক এবং কথা888sport live footballিক। শেষ কুড়ি বছরে 888sport live footballমহলে তাঁর গল্পকার পরিচয়টি বড় হয়ে উঠেছিল। তাঁর অগ্রজ গল্পকারেরা তাঁর আগেই চলে গেছেন। তিনি ছিলেন। ছিলেন আমাদের দিশারী হয়ে। তিনি আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কখনো কখনো অগ্রজদের অনুপ্রেরণার দরকার হয়। অনুপ্রেরণা পেলে অনুজরা নতুন নতুন দিগন্ত আবিষ্কারে এগিয়ে যেতে পারে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সেই অগ্রজ, সর্বদা যিনি অকুণ্ঠচিত্তে অনুজ লেখকদের অনুপ্রাণিত করতেন। স্যারের কোনো সভা-সেমিনারে আমি কিংবা মোজাফ্ফর হোসেন উপস্থিত থাকলে তাঁর বক্তৃতায় তিনি আমাদের অ্যাড্রেস করতেন। নাম উল্লেখ করে আমাদের লেখার প্রশংসা করতেন। এটা তিনি না করলেও পারতেন। করতেন আমাদের উৎসাহিত করার জন্য, অনুপ্রাণিত করার জন্য, পাঠকমহলে পরিচিত করে তোলার জন্য।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের একটা কথা লোকে খুব পছন্দ করেছিল। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো 888sport apkী নেই, গবেষক নেই, দার্শনিক নেই। যেদিকে তাকাবেন শুধুই প্রশাসক।’ কথাগুলো পড়ে মনে হয়েছিল আমি একটি আয়না দেখলাম। সেই আয়নায় স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম নিজের মুখ, জাতির মুখ। লেখকরা এভাবেই বুঝি আয়নার কাজ করেন। এভাবেই জাতির বোধের উদয় ঘটিয়ে দেন। কখনো কখনো নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুও হৃদয় স্পর্শ করে না। আবার কখনো কখনো অনাত্মীয়ের মৃত্যুতে হৃদয় থরথর করে কেঁপে ওঠে। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিলেন আমাদের আত্মীয়ের অধিক আত্মীয়। তাঁর প্রয়াণ আমাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে, আমাদের নির্বাক করে দিয়েছে। তাঁকে আমরা বিদায় বলিনি। বলিনি তিনি প্রয়াত হয়েছেন। বলবো না কোনোদিন। তিনি আমার সঙ্গে ছিলেন, আমাদের সঙ্গে ছিলেন। অনাগত দিনেও থাকবেন। থাকবেন মাথার মুকুট হয়ে। তাঁর প্রতি অতল 888sport apk download apk latest version।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.