মুখবন্ধ
হচ্ছে-হবে।
হচ্ছে এবং হবে, হচ্ছে ও হবে, হচ্ছে কিংবা হবে।
চমৎকার দ্বন্দ¡ সমাস। আমার অভিমত শুনে ব্যাকরণবিদ ভ্রƒকুঞ্চন করলেন। আমি বাধ্য হয়ে বললাম, ‘তাহলে তোমাদের এখনকার কালের ভঙ্গিতে বলা যেতে পারে, ‘ব্যতিক্রমী দ্বন্দ¡ সমাস। যেমন, চলছে-চলবে।’
ব্যাকরণবিদ বললেন, ‘চলছে-চলবে চলবে না।’
‘চলবে না, মানে? তুমি কি কোনো কল-কারখানার মালিকানা নিয়েছ? শ্রমিক-আন্দোলনের ভয়ে আছো?’
বলা বাহুল্য, এ ধরনের খোশতর্ক বেশিদূর গড়ায় না, এরই মধ্যে ব্যাকরণবিদ বললেন, ‘জোড়ায় জোড়ায় উচ্চারণ হলেও তা আলাদা-আলাদা শব্দ, সমাসবদ্ধ নয়।’
ব্যাকরণের তর্কে আমার মতো মূর্খের প্রবেশ উচিত নয়। আমি বরং হচ্ছে-হবে শব্দটির (অথবা শব্দদুটির) বিষয়ে আপাতত মনোনিবেশ করছি।
আমার এই শেষতম তরল নিবন্ধমালার নাম ‘হচ্ছে-হবে’।
চিরটা কাল দৈনিক ও সাপ্তাহিক কাগজে ধারাবাহিক রম্যরচনা লিখে গেছি। কলকাতায়, উত্তরবঙ্গে, 888sport appয়। সেই অর্থে কোনো 888sport live footballপত্রে নিয়মিত রম্যরচনা লেখা এই প্রথম।
সেই কাণ্ডজ্ঞান, বিদ্যাবুদ্ধি থেকে সম্প্রতি গত বইমেলায় প্রকাশিত ধারদেনা পর্যন্ত আমার রম্যরচনার বইয়ের 888sport free bet বোধ হয় তিরিশ পেরিয়ে গেছে।
নিবন্ধমালার নামকরণ করতে করতে আমি আজ প্রায় সর্বস্বান্ত। রম্যরচনার ভাঁড়ারও তলানিতে এসে ঠেকেছে। তবু লিখতে হয়, লিখে যাচ্ছি। গতযৌবনার চোখের ঝিলিকে যেমন কখনো কখনো বিদ্যুৎ খেলে যায়, কালি ও কলমের এই রচনামালায় শুধু তারই প্রত্যাশা।
হচ্ছে-হবে কথাটি একটু দায়সারা গোছের। যেমন কোনো অফিসে কোনো কাজে গেলে, একটু খোঁজখবর নিতে গেলে কেরানিরা বলেন, ‘হচ্ছে, হবে।’ যেমন বড় লেখকেরা সম্পাদকদের অভয় দেন, ‘হচ্ছে, হবে।’ যেমন ফাঁকিবাজ ছাত্র পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেও খাতা-বই দেরাজে তুলে রেখে বলে, ‘হচ্ছে, হবে।’
বরং এর থেকে চলছে-চলবে অনেক জোরদার। একটু স্লোগানগন্ধী হলেও বেশ একটা প্রতিবাদের, প্রতিরোধের মেজাজ আছে।
প্রথম ভেবেছিলাম, এই ধারাবাহিকের নাম দেবো ওই ‘চলছে-চলবে’। কিন্তু রম্যরচনার তরলতায় প্রতিবাদের সুযোগ কোথায়! দুঃখ-বঞ্চনা, লড়াইয়ের গল্প অনেক লেখা হয়, হালকা হাসির রচনায় আবার তাহারে কেন?
তবু চলছে-চলবে কথাটাও ফেলে দিচ্ছি না। ধারাবাহিক রচনা যেখানে শেষ হয় সেখানে লেখা থাকে ‘ক্রমশ’, আমি আমার রচনার পাদদেশে লিখে রাখছি, ‘চলছে-চলবে।’
একদা খেলাচ্ছলে বন্ধুবান্ধবের তালে পড়ে এবং এক জাঁদরেল সম্পাদকের চাপে পড়ে কয়েকটি হাসির গল্প লেখার পরে ধারাবাহিক রম্যরচনা লেখা শুরু করে দিলাম।
এ সেই ষাটের দশকের গোড়ার কথা। চল্লিশ বছর হয়ে গেছে। তারপর ক্রমাগত লিখে গেছি। যখন যেখানে যেমন ডাক পেয়েছি।
অবশেষে একদিন টের পেয়েছিলাম, এ কর্ম আমরা সাধ্য নয়, কোনো মানুষেরই নয়। জীবনে ও 888sport live footballে এত রস কোথায়?
তবু আমি এখান থেকে শুনে, ওখান থেকে টুুুকে, যথাসাধ্য জোগান দিয়ে গেছি। আমার ইংরেজিনবিশ অনুরাগিণী একদা আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ‘আপনার এই লেখাগুলো ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করব।’ আমি করজোড়ে তাঁকে বলেছিলাম, ‘দিদি, ও কাজ করতে যাবেন না। আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে। এ সবই তো ইংরেজি থেকে টোকা। আমি ধরা পড়ে যাবো।’ আমার সেই পাঠিকা আমার সঙ্গে আর সংযোগ রাখেননি।
পুনশ্চ :
অবশেষে একটু সাফাই গেয়ে রাখি।
সম্পাদক মহোদয় নিশ্চয় সেই গল্পটা কখনো শুনেছেন-
একটি ছোট মেয়ে কাগজ-কলম নিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে হিজিবিজি দাগাদাগি করছিল। লেখাপড়ার বয়েস এখনো ঠিক তার হয়নি। অ-আ-ক-খ কিংবা এ-বি-সি-ডি সে হয়তো কিছুটা আয়ত্ত করেছে, কিন্তু পড়তে জানে না, লিখতেও নয়।
তাকে তার পিতামহ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এসব কী করছো? শুধু শুধু কাগজ নষ্ট করছো।’
তিন বছরের মেয়েটি চ্যাট্যাং-চ্যাটাং কথা বলতে শিখেছে, সে ঠাকুরদাকে বললো, ‘কাগজ নষ্ট করবো কেন? দেখছো না চিঠি লিখছি।’
‘চিঠি? কাকে চিঠি লিখছো?’ বিসি¥ত পিতামহের জিজ্ঞাসা।
এবার নাতনির নির্লিপ্ত, সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘বন্ধুকে’।
ঠাকুরদা এবার বাধ্য হয়ে কঠিন কথাটা বললেন, ‘তুমি তো লিখতেই জানো না, চিঠি লিখবে কী করে?’
নাতনির সঙ্গে সঙ্গে উত্তর, ‘আমি লিখতে জানি না, তাতে কী হয়েছে, যাকে চিঠি দিচ্ছি সেও পড়তে জানে না।’
সম্পাদক মহোদয়,
ওই শিশুকন্যাটির মতো আমিও কবুল করছি, আমি লিখতে শিখিনি, আমি লিখতে জানি না। আর আমার কোনো পাঠকও নেই, আমার এই লেখা কেউই পড়বে না।
খারাপ-ভালো বিবেচনা না করে এ লেখা আপনি নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে ছেপে যেতে পারেন।
ইতি,
ভবদীয় তারাপদ রায়
(চলছে, চলবে) ধারাবাহিক রম্যরচনা লিখে গেছি। কলকাতায়, উত্তরবঙ্গে, 888sport appয়। সেই অর্থে কোনো 888sport live footballপত্রে নিয়মিত রম্যরচনা লেখা এই প্রথম।
সেই কাণ্ডজ্ঞান, বিদ্যাবুদ্ধি থেকে সম্প্রতি গত বইমেলায় প্রকাশিত ধারদেনা পর্যন্ত আমার রম্যরচনার বইয়ের 888sport free bet বোধ হয় তিরিশ পেরিয়ে গেছে।
নিবন্ধমালার নামকরণ করতে করতে আমি আজ প্রায় সর্বস্বান্ত। রম্যরচনার ভাঁড়ারও তলানিতে এসে ঠেকেছে। তবু লিখতে হয়, লিখে যাচ্ছি। গতযৌবনার চোখের ঝিলিকে যেমন কখনো কখনো বিদ্যুৎ খেলে যায়, কালি ও কলমের এই রচনামালায় শুধু তারই প্রত্যাশা।
হচ্ছে-হবে কথাটি একটু দায়সারা গোছের। যেমন কোনো অফিসে কোনো কাজে গেলে, একটু খোঁজখবর নিতে গেলে কেরানিরা বলেন, ‘হচ্ছে, হবে।’ যেমন বড় লেখকেরা সম্পাদকদের অভয় দেন, ‘হচ্ছে, হবে।’ যেমন ফাঁকিবাজ ছাত্র পরীক্ষার এক সপ্তাহ আগেও খাতা-বই দেরাজে তুলে রেখে বলে, ‘হচ্ছে, হবে।’
বরং এর থেকে চলছে-চলবে অনেক জোরদার। একটু স্লোগানগন্ধী হলেও বেশ একটা প্রতিবাদের, প্রতিরোধের মেজাজ আছে।
প্রথম ভেবেছিলাম, এই ধারাবাহিকের নাম দেবো ওই ‘চলছে-চলবে’। কিন্তু রম্যরচনার তরলতায় প্রতিবাদের সুযোগ কোথায়! দুঃখ-বঞ্চনা, লড়াইয়ের গল্প অনেক লেখা হয়, হালকা হাসির রচনায় আবার তাহারে কেন?
তবু চলছে-চলবে কথাটাও ফেলে দিচ্ছি না। ধারাবাহিক রচনা যেখানে শেষ হয় সেখানে লেখা থাকে ‘ক্রমশ’, আমি আমার রচনার পাদদেশে লিখে রাখছি, ‘চলছে-চলবে।’
একদা খেলাচ্ছলে বন্ধুবান্ধবের তালে পড়ে এবং এক জাঁদরেল সম্পাদকের চাপে পড়ে কয়েকটি হাসির গল্প লেখার পরে ধারাবাহিক রম্যরচনা লেখা শুরু করে দিলাম।
এ সেই ষাটের দশকের গোড়ার কথা। চল্লিশ বছর হয়ে গেছে। তারপর ক্রমাগত লিখে গেছি। যখন যেখানে যেমন ডাক পেয়েছি।
অবশেষে একদিন টের পেয়েছিলাম, এ কর্ম আমরা সাধ্য নয়, কোনো মানুষেরই নয়। জীবনে ও 888sport live footballে এত রস কোথায়?
তবু আমি এখান থেকে শুনে, ওখান থেকে টুুুকে, যথাসাধ্য জোগান দিয়ে গেছি। আমার ইংরেজিনবিশ অনুরাগিণী একদা আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, ‘আপনার এই লেখাগুলো ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করব।’ আমি করজোড়ে তাঁকে বলেছিলাম, ‘দিদি, ও কাজ করতে যাবেন না। আমার সর্বনাশ হয়ে যাবে। এ সবই তো ইংরেজি থেকে টোকা। আমি ধরা পড়ে যাবো।’ আমার সেই পাঠিকা আমার সঙ্গে আর সংযোগ রাখেননি।
পুনশ্চ :
অবশেষে একটু সাফাই গেয়ে রাখি।
সম্পাদক মহোদয় নিশ্চয় সেই গল্পটা কখনো শুনেছেন-
একটি ছোট মেয়ে কাগজ-কলম নিয়ে খুব মনোযোগ দিয়ে হিজিবিজি দাগাদাগি করছিল। লেখাপড়ার বয়েস এখনো ঠিক তার হয়নি। অ-আ-ক-খ কিংবা এ-বি-সি-ডি সে হয়তো কিছুটা আয়ত্ত করেছে, কিন্তু পড়তে জানে না, লিখতেও নয়।
তাকে তার পিতামহ জিজ্ঞাসা করলেন, ‘এসব কী করছো? শুধু শুধু কাগজ নষ্ট করছো।’
তিন বছরের মেয়েটি চ্যাট্যাং-চ্যাটাং কথা বলতে শিখেছে, সে ঠাকুরদাকে বললো, ‘কাগজ নষ্ট করবো কেন? দেখছো না চিঠি লিখছি।’
‘চিঠি? কাকে চিঠি লিখছো?’ বিসি¥ত পিতামহের জিজ্ঞাসা।
এবার নাতনির নির্লিপ্ত, সংক্ষিপ্ত উত্তর, ‘বন্ধুকে’।
ঠাকুরদা এবার বাধ্য হয়ে কঠিন কথাটা বললেন, ‘তুমি তো লিখতেই জানো না, চিঠি লিখবে কী করে?’
নাতনির সঙ্গে সঙ্গে উত্তর, ‘আমি লিখতে জানি না, তাতে কী হয়েছে, যাকে চিঠি দিচ্ছি সেও পড়তে জানে না।’
সম্পাদক মহোদয়,
ওই শিশুকন্যাটির মতো আমিও কবুল করছি, আমি লিখতে শিখিনি, আমি লিখতে জানি না। আর আমার কোনো পাঠকও নেই, আমার এই লেখা কেউই পড়বে না।
খারাপ-ভালো বিবেচনা না করে এ লেখা আপনি নির্ভয়ে, নিঃসংকোচে ছেপে যেতে পারেন।
ইতি,
ভবদীয় তারাপদ রায়
(চলছে, চলবে)


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.