১১২তম জন্মবার্ষিকী 888sport app download for android মুহম্মদ এনামুল হক : স্বকীয়তা ও সুকৃতির জীবন

মাহফুজ পারভেজ

বিংশ শতাব্দীর অবিভক্ত বঙ্গদেশে, পরবর্তীকালে পাকিস্তানে ও 888sport appsে বাংলা ভাষা, 888sport live football, সংস্কৃতি, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সমাজ বিবর্তনের শেকড়সন্ধানী গবেষণার মাধ্যমে জাতির সাংস্কৃতিক  পরম্পরা বিনির্মাণে নিবেদিত ছিলেন মুহম্মদ এনামুল হক। বাংলা 888sport live footballের এই অনন্য সাধক-পুরুষের ১১২তম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর দীপ্তিময় জীবন ও কর্মজগতের নানা দিক উপস্থাপিত হয়েছে এই রচনায়।

৭৯ বছরের জীবনের পুরোটা সময়ই  মুহম্মদ এনামুল হক (জন্ম : ২০ সেপ্টেম্বর ১৯০২-মৃত্যু : ১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৮১) নিয়োজিত ছিলেন স্বকীয়তা ও সুকৃতি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামমুখর জীবনযাত্রায়। তাঁর প্রচেষ্টা ছিল সম্পূর্ণতই অ্যাকাডেমিক; গবেষণাশ্রিত; 888sport live football-সংস্কৃতি-সমাজ বিকাশের সমান্তরাল। অবিভক্ত বঙ্গে তিনি লড়েছেন একজন শিক্ষিত বাঙালি মুসলমানের যোগ্য অধিকারের জন্য; পাকিস্তান আমলে বাঙালির ন্যায্যতর ভাষা ও সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার জন্যে এবং পরবর্তীকালে 888sport apps আমলে নিরন্তর গবেষণা করেছেন লোকজ ইতিহাস, ঐতিহ্য, ধর্ম, ভাষা, 888sport live football, সংস্কৃতির শেকড়ের সন্ধানের মাধ্যমে ঐতিহাসিক পরম্পরা বিনির্মাণের জন্যে। জন্মের ১১০ বছর পরেও তিনি জীবন ও কর্মের একটি আলোকিত জগতের মাধ্যমে উদ্ভাসিত করে রেখেছেন 888sport apps ও বাংলা ভাষার বিদ্বৎসমাজকে। এই বক্তব্যের লিখিত স্বীকৃতি পাওয়া যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৮৩ সালে প্রদত্ত ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক স্মারক বক্তৃতামালা উপলক্ষে প্রকাশিত গ্রন্থসূত্রে [কবি আবদুল কাদির-সম্পাদিত এবং ১৯৮৪ সালে বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত] প্রাপ্ত তাঁর সুবিশাল কাজের ক্ষেত্রসমূহের বিস্তৃতি থেকে :

১. বাংলা ভাষার উদ্ভব, বিকাশ ও বিবর্তন;

২. 888sport app ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার সাদৃশ্য সন্ধান;

৩. পাণিনির অনুসরণে সৃষ্ট সংস্কৃত ব্যাকরণের সর্বগ্রাসী আওতা থেকে অন্তত  দুই-তৃতীয়াংশ নির্মুক্ত হয়ে বর্তমান বাংলা ভাষার প্রকৃত বাংলা ব্যাকরণ প্রণয়নের ক্ষেত্রে পদক্ষেপ;

৪. আরবি ও ফারসি শব্দের বাংলা প্রত্যক্ষরীকরণ;

৫. বাংলা 888sport live footballে মুসলিম অবদানের বৈচিত্র্য ও বৈশিষ্ট্যভিত্তিক মূল্যায়ন;

৬. উপমহাদেশে মুসলিম মরমিয়াবাদের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অন্বেষা;

৭. বঙ্গে সুফিগণের আগমন ও সুফিবাদের প্রভাবের ধারা শনাক্তকরণ;

৮. শাস্ত্রীয় ও লৌকিক ইসলামের স্বাতন্ত্র্য বিচার এবং সেই স্বাতন্ত্র্যের হেতু ব্যাখ্যা;

৯. ইসলামের বিভিন্ন আচার ও অনুষ্ঠানের স্বরূপ-বিশ্লেষণ;

১০. কতিপয় অমর মনীষীর চরিত্র-মাহাত্ম্য ও কীর্তিকলাপের ফলশ্রুতি উদ্ঘাটন ইত্যাদি।

তদুপরি মুহম্মদ এনামুল হক পূর্বসূরি আবদুল করিম 888sport live footballবিশারদ, মওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ প্রমুখ স্বনামধন্য সাধকের অবি888sport app download for androidীয় কর্ম, কীর্তি ও নির্দেশসমূহের প্রয়োজনীয় অনুসরণ এবং যথাসাধ্য সৌকর্য ও সমৃদ্ধি বিধানের প্রয়াস গ্রহণ করেছিলেন। সন্দেহ নেই, তাঁর কর্ম বাংলা 888sport live footballের ভান্ডারকে পরিপুষ্ট করেছে এবং যথার্থ অর্থেই ‘বাংলা 888sport live footballের ইতিহাসে তাঁর পুণ্যনাম ও 888sport sign up bonusকথা চির-অমরত্ব লাভের অসংশয়িত দাবিদার।’

১৯২৯ সালে মুহম্মদ এনামুল হক  ২৭ বছর বয়সে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারতীয় ভাষা বিভাগ (প্রধান ভাষা বাংলা, তিনটি অপ্রধান ভাষা উর্দু, ফারসি ও পালির সমন্বয়ে) থেকে প্রথম শ্রেণিতে এমএ পাশ করেন। এর আগে ১৯২৭ সালে আরবি 888sport live footballে বিএ পাশ করেন। এমএ পাঠকালে তিনি বিভাগ পরিবর্তন করেছিলেন। ১৯৩৪ সালে তিনি বঙ্গে সুফিবাদের সম্প্রসারণ ও বৈচিত্র্য বিষয়ে অতুলনীয় ও অক্লান্ত গবেষণা করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। কিন্তু তৎকালীন আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এতসব উচ্চতর শিক্ষাগত স্বীকৃতি তাঁর কর্মজীবনের দ্বার উন্মোচন করতে পারেননি। তাঁকে অনেক নিম্নস্তরের বিটি পরীক্ষায় বসতে হয়। ১৯৩৬ সালে তিনি ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজে ভর্তি হয়ে বিটি পাশ করেন এবং তখন পর্যন্ত বেকারই থাকেন। অবিভক্ত বঙ্গের অতিপ্রান্তিক চট্টগ্রাম অঞ্চলের একজন মুসলিম শিক্ষিত নাগরিকের দুরবস্থা তাঁর জীবনসংগ্রামেই স্পষ্টতর হয়, যাঁকে পিএইচডির মতো সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনের পরেও বিটি (বিএড সমতুল্য) পাশ করে বেকার থাকতে হয়েছিল। এমন দুরবস্থাতেও মুহম্মদ এনামুল হক মোটেই হতোদ্যম হননি; বরং তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ক্লাসে আইনশাস্ত্র পাঠের উদ্দেশ্যে যোগদান করেন। ইত্যবসরে ‘বেঙ্গল এডুকেশন সার্ভিসে’র অধীনে কয়েকটি পদ পূরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। তিনি তার একটির জন্য দরখাস্ত করলে ওই সার্ভিসের তৎকালীন সেক্রেটারি তাঁর আবেদনপত্রটি সাধারণ কোটাভুক্ত করে দেন, সেখানে বরাদ্দ ছিল মাত্র একটি অসংরক্ষিত পদ। ফলে অক্সফোর্ড-ক্যামব্রিজে শিক্ষাপ্রাপ্ত হিন্দু যুবকদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে প্রতিভাদীপ্ত মুহম্মদ এনামুল হককে সেই পদটিতে মনোনয়ন লাভ করতে হয়। এভাবেই তিনি ১৯৩৭ সালের ১৬ অক্টোবর অতি উচ্চ ডিগ্রি নিয়েও বারাসাত সরকারি উচ্চ ইংরেজি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে নিযুক্ত হন। স্কুলশিক্ষকতা দিয়ে শুরু হয় একজন উচ্চাঙ্গের গবেষকের কর্মজীবন। লক্ষণীয় বিষয় হলো, কর্মের উপযুক্ত স্থান না পেয়েও তিনি কদাচ নিরাশ হননি এবং নিজের গবেষণা ও লেখালেখি নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যান, যে-বিষয়ে আমরা 888sport liveের পরবর্তী অংশে আলোচনা করব।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে মুহম্মদ এনামুল হক হাওড়া জেলা স্কুলে বদলি হয়ে আসেন। পরে সেখান থেকে মালদহ জেলা স্কুলে বদলি হয়ে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। মালদহ থেকে তিনি 888sport app কলেজিয়েট স্কুলে প্রধান শিক্ষকরূপে বদলি হন এবং ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত থাকেন।

পাকিস্তান সৃষ্টির পর ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক কর্মক্ষেত্রে যথাযথ সুযোগ লাভ করেন। ১৯৪৮ সালের এপ্রিলে তিনি রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপকরূপে নিযুক্ত হন। ১৯৫২ সালের জুলাইয়ে তিনি দুই বছরের জন্য খুলনার ব্রজলাল কলেজের ‘অফিসিয়েটিং অধ্যক্ষ’ রূপে নিয়োজিত হয়ে ১৯৫৪ সালের মে মাস পর্যন্ত অক্লান্তভাবে কাজ করে কলেজটির সর্বগ্রাসী বিপর্যয়, বিশৃঙ্খলা ও বিরাট ঋণভার লাঘব করেন। যদিও তিনি তখন পর্যন্ত স্থায়ী অধ্যক্ষ হতে পারেননি, তথাপি ব্রজলাল কলেজ থেকে বিদায়কালে কলেজের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করার পর তহবিলে পঞ্চাশ হাজারের অধিক পরিমাণ টাকা সঞ্চিত রেখে এবং কলেজের ছাত্র888sport free bet এক সহস্রের ঊর্ধ্বে উন্নীত করে যান।

১৯৫৪ সালে ৯২-ক ধারাবলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান বা আজকের 888sport appsে নির্বাচিত যুক্তফ্রন্টের বদলে অপেক্ষাকৃত স্বৈরতান্ত্রিক ‘গভর্নরের শাসন’ প্রবর্তিত হয়, যা ছাত্র-জনতাসহ দেশবাসী কর্তৃক প্রবলভাবে নিন্দিত হয়। সেই সংকটাপন্ন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁর কর্মভাগ্যে আকস্মিকভাবে কিছুটা প্রসন্নতা দেখা দেয়। সেই সংকটের সময়ে তিনি সরকারের জরুরি আদেশে 888sport app জগন্নাথ কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সেখানে দুমাস কাজ করার পর তাঁকে সে-বছরেরই সেপ্টেম্বরে সরকার কর্তৃক চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ করে পাঠানো হয়। এভাবেই তিনি প্রায় পঞ্চাশ বছর পর নিজ শহরে আসার সুযোগ পান। ১৯৫৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রামে কাজ করেন। ১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি তিনি সদ্য প্রতিষ্ঠিত ‘ইস্ট পাকিস্তান স্কুল টেক্সট বুক বোর্ডে’র চেয়ারম্যান পদে নিযুক্ত হয়ে 888sport appয় বদলি হয়ে আসেন। এ বছরেরই ১ ডিসেম্বর তিনি নবপ্রতিষ্ঠিত ‘বাংলা একাডেমী’র পরিচালক নিযুক্ত হন এবং তাঁর আমলেই একাডেমির খসড়া বিধিবিধান চূড়ান্ত হয়ে ১৯৫৭ সালে আইনে পরিণত হয়। ১৯৬০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাংলা একাডেমির পরিচালক পদে কাজ করার পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ পদে যোগ দিয়ে সেখানে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা ও গবেষণা করেন। সে-সময়ে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন এবং ‘ডিপার্টমেন্ট অব ল্যাঙ্গুয়েজেসে’র তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন। ১৯৬১ সালের ১ মার্চ সরকারি চাকরি থেকে তাঁর অবসরগ্রহণের আদেশ থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁর চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করে তাঁকে ডেপুটেশনে পূর্বপদেই বহাল রাখে।

১৯৬৩ সালের ১ জুলাই থেকে তিনি প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক হিসেবে নবপ্রতিষ্ঠিত ‘কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ডে’ তিন বছরের মেয়াদে যোগ দেন। সেই মেয়াদ অতিক্রম করলে তাঁকে আরো দুই বছরের জন্য সেখানে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৬৮ সালের ৩০ জুন তিনি বোর্ড থেকে অবসরগ্রহণ করেন। পরিচালক পদ থেকে অবসরগ্রহণ করলেও বোর্ডের গভর্নিং বডি তাঁকে বোর্ডের ‘প্রকল্প উপদেষ্টা’ পদে নিয়োগ দান করে। কিন্তু একজন পরিচালকের পাশাপাশি আরেকজন উপদেষ্টা নিয়োগে প্রাদেশিক সরকার  গোপনে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আপত্তি জ্ঞাপন করে। প্রবল আত্মমর্যাদার অধিকারী মুহম্মদ এনামুল হক এ-সংবাদ জানতে পারেন এক মাসের কিঞ্চিদধিক কাল উপদেষ্টা পদে কাজ করার পর এবং সঙ্গে সঙ্গে তিনি তাঁর জয়েনিং রিপোর্ট প্রত্যাহার করেন। তবে গভর্নিং বোর্ডের প্রবল চাপে নতুন এ-প্রতিষ্ঠানটি পরিগঠনে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ চালিয়ে যান। কিছুদিন পরেই তাঁকে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে 888sport free betতিরিক্ত বা সুপারনিউমারারি অধ্যাপক পদে অধিষ্ঠিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধকালীন ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন চ্যান্সেলর, সামরিক  জান্তা ও পাক হানাদার বাহিনীর প্রধান জেনারেল টিক্কা খানের এক নির্দেশে মুহম্মদ এনামুল হক সেখানকার গবেষণা-অধ্যাপনার পদটি হারান।

888sport apps স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি গঠিত হলে মুহম্মদ এনামুল হক সেখানে অন্যতম ‘সার্বক্ষণিক সদস্য’ পদে নিযুক্তি লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তাঁকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু ভগ্নস্বাস্থ্যের কারণে তিনি সে-দায়িত্ব বেশিদিন পালন করতে পারেননি। অচিরেই তিনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের              গবেষণা-অধ্যাপনা কর্মে ফিরে এসে ‘ইউজিসি প্রফেসর’রূপে কাজ করতে থাকেন। সরকারের অনিচ্ছায় এই পদে তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধি না করায় ১৯৮১ সালের শুরুর দিকে তিনি 888sport app জাদুঘরের গবেষণা বিভাগের ‘সিনিয়র ফেলো’ পদে যোগ দেন। কিন্তু বৃদ্ধ বয়সে মাত্রাতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে তিনি পুরনো শ্বাসকষ্ট ও 888sport app আনুষঙ্গিক রোগে আক্রান্ত হয়ে ১৯৮২ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে সংজ্ঞা হারান। ২০ জানুয়ারি পূর্বাহ্ণে তাঁকে তাঁর 888sport appর ৬৮/এ জিগাতলার বাসা থেকে তৎকালীন পিজি হাসপাতালের ১২৯নং ভিআইপি কেবিনে চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা হয়। চট্টগ্রামের আরেক কৃতী সন্তান জাতীয় অধ্যাপক ডা. নূরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে ২২ জানুয়ারি তাঁর জ্ঞান ফেরে এবং তিনি ক্রমশ সুস্থ হতে থাকেন। কিন্তু ২৯ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থাতেই অকস্মাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে ও রোগ বৃদ্ধি পায়। সেই পরিস্থিতি তাঁর স্বাস্থ্যের অনুকূলে আর ফিরে আসেনি এবং তিনি সকল চিকিৎসা-প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিয়ে ১৬ ফেব্রুয়ারি দুপুর পৌনে ১টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। সেদিনই 888sport app বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয় এবং অন্তিম ইচ্ছানুযায়ী চট্টগ্রামে নিজ গ্রামের (ফটিকছড়ি থানার ইছাপুর পরগনার বখৎপুর গ্রাম) পারিবারিক গোরস্তানে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

সুদীর্ঘ কর্মজীবনে মুহম্মদ এনামুল হক একবিন্দুও অলস বা অবসর জীবনযাপন করেননি। উপযুক্ত পদে অভিষিক্ত হতে না পারলেও তিনি যখন যে-দায়িত্বে ছিলেন, সেখানেই যোগ্যতা, নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের সঙ্গে কাজ করে গেছেন। তাঁর বিরল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে অন্যতম হলো, কখনো তিনি কর্মহীন বা বেকার থাকতে পছন্দ করেননি। অপছন্দের কর্মক্ষেত্রেও তিনি ছিলেন সরব, সৃষ্টিশীল;             যে-বিবরণ আমরা এই 888sport liveের পরবর্তী অংশে তাঁর কর্মকীর্তি ও গবেষণার আলোচনায় দেখতে পাব। এখানে আরেকটি বিষয় বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য তা হলো, তাঁর বিদেশ-888sport slot game। অত্যন্ত দায়িত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং কাজে লিপ্ত থাকায় তিনি খুব বেশি বিদেশ-888sport slot gameের অভিজ্ঞতা লাভ করেননি।

১৯৬১ সালের ৩১ মার্চ থেকে ২ এপ্রিল পর্যন্ত মুহম্মদ এনামুল হক ড. তারাচান্দের উদ্যোগে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ‘ভারত-পাকিস্তান সাংস্কৃতিক সম্মেলনে’ পূর্ব পাকিস্তানের একজন প্রতিনিধিরূপে যোগ দিয়েছিলেন।

১৯৬৬ সালে পাকিস্তান লেখক সংস্থার একজন মনোনীত সদস্যরূপে গণচীন সরকারের আমন্ত্রণক্রমে তিনি তিন সপ্তাহকাল চীন 888sport slot game করেন।

১৯৬৭ সালে তিনি ইউনেস্কোর আমন্ত্রণে ইরান সফর করেন।

১৯৭৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর বুলগেরিয়ার সংস্কৃতি ও ললিতকলা সমিতির আমন্ত্রণে সে-দেশের সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের ৩১তম বার্ষিক উৎসবে যোগদানের জন্য 888sport apps সরকারের মনোনীত সদস্যরূপে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সে-দেশ 888sport slot game করেন।

মুহম্মদ এনামুল হক কর্মব্যস্ত জীবনে সব ধরনের পেশাগত ও প্রশাসনিক দায়িত্ব সূচারুরূপে পালন করার পরও যে-বিশাল রচনাসম্ভার রেখে গেছেন, তা গুণে ও পরিমাণে অতুলনীয়। এই 888sport liveের সূচনায় আমরা তাঁর গবেষণা ও লেখালেখির বিস্তৃত ক্ষেত্রসমূহের কথা উল্লেখ করেছি। এক্ষনে সেগুলোর একটি অতিসংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। এতে সহজেই অনুমান করা যাবে যে, বদলির চাকরিজনিত স্থানান্তর, কাজের চাপ, আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক বিরূপতা ইত্যাদি সংকট ও সীমাবদ্ধতা তাঁকে সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে স্বকীয় সুকৃতি প্রকাশের পথে বাধা হতে পারেনি।

মুহম্মদ এনামুল হকের প্রতিভার প্রথম প্রকাশ দেখা যায়, তিনি যখন রাউজান আর আর ইনস্টিটিউশনের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র, তখন। সে-সময় অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের শ্রেষ্ঠ নেতা ও বাগ্মী ইসমাইল হোসেন সিরাজী জনগণকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রামে আসেন। তাঁকে সংবর্ধনা জ্ঞাপনের জন্যে রাউজান স্কুলপ্রাঙ্গণে যে বিরাট জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তার স্বেচ্ছাসেবক বাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত হয়ে এনামুল হক সিরাজীর সুবিখ্যাত রায়নন্দিনী 888sport alternative linkের উদ্দীপনাময়ী সূচনাংশ মুখস্থ পাঠ করলে হাজার হাজার মানুষ বিস্ময়াভিভূত হয়ে পড়েন। তখন তাঁর হাতে ছিল স্বরচিত 888sport app download apkর একটি খাতা। সিরাজী সাহেব সে-খাতাখানি থেকে স্বয়ং কয়েকটি স্বদেশি ভাবপূর্ণ 888sport app download apk আবৃত্তি করে সমবেত শ্রোতৃবর্গের স্বতঃস্ফূর্ত প্রশংসা এনামুল হকের প্রতি আকর্ষণ করেন। এই ঘটনার পর এনামুল হক 888sport live footballের প্রতি অনুরক্ত হয়ে পড়েন এবং সিরাজীর সঙ্গে সেই পরিচয় ও সান্নিধ্য তাঁর মনে স্বাদেশিক-জাতীয়তাবোধের বীজ অঙ্কুরিত করে, যে-কারণে ১৯২১-২২ সালে সমগ্র উপমহাদেশ যখন অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনে উত্তাল, তখন তিনি কংগ্রেসের একজন স্বেচ্ছাসেবক রূপে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি যখন দশম শ্রেণির ছাত্র, তখন চট্টগ্রাম কংগ্রেসের নেতা এবং যূথি পত্রিকার সম্পাদক ত্রিপুরা চৌধুরী স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে এনামুল হকের স্বদেশি গানের বই আবাহন প্রকাশ করেন। তাতে ৩০-৪০টি স্বদেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধক গান ছিল। ইতিপূর্বে চট্টগ্রামের আবদুর রশিদ সিদ্দিকীর সাধনা পত্রিকায় তাঁর প্রথম 888sport app download apk প্রকাশিত হয়েছিল। এদিকে তিনি যখন চট্টগ্রাম গভর্নমেন্ট কলেজের আইএ ক্লাসের ছাত্র তখন তাঁর প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ আবাহন ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করে। এ-সময় পুলিশি তল্লাশি ও গ্রেফতার এড়াতে বইটির সব কপি পুড়িয়ে ফেলতে হয়।

১৯২৫ সালে এনামুল হক আইএ পাশ করে চট্টগ্রাম কলেজে আরবি 888sport live footballে অনার্স নিয়ে বিএ পড়তে আরম্ভ করেন। এ-সময় বৃহত্তর ময়মনসিংহের টাঙ্গাইলের করটিয়া কলেজকে কেন্দ্র করে প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁর উদ্যোগে ও নেতৃত্বে গঠিত ‘আল হেলাল 888sport live football সমিতি’ অখন্ড বঙ্গদেশব্যাপী ‘বিশ্বসভ্যতায় মুসলিম দান’ শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার আহবান করে। তিনি এ-প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে প্রথম স্থান অধিকারী হন এবং স্বর্ণপদক লাভ করেন। তাঁর এ-রচনাটিই পরে বর্ধিত ও পরিবর্তিত আকারে সুবিখ্যাত সওগাত পত্রিকার ১৩৩৩ বঙ্গাব্দের কার্তিক, অগ্রহায়ণ ও পৌষে চতুর্থ বর্ষ পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তমসংখ্যক 888sport free betয় ‘প্রাচীন মুসলমানের শিক্ষা ও সাধনা’ শিরোনামে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়। এটিই তাঁর প্রথম প্রকাশিত উল্লেখযোগ্য গদ্যরচনা। এতে তিনি আরবি মনীষার, যাঁরা ইউরোপীয় জ্ঞানসূত্রকে আরবি ভাষায় নিয়ে এসেছিলেন, তাঁদের ব্যাপারে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। যেমন, আল হাজ্জাজুল হাসিব (টলেমির আল মাজেস্ট এবং ইউক্লিডের জ্যামিতির 888sport app download apk latest versionক), ইউহান্না ইবনে বতরিক (অ্যারিস্টটলের পলিটিক্স গ্রন্থের 888sport app download apk latest versionক), আবদুল মসিহ নইমা (অ্যারিস্টটলের থিয়োলজি গ্রন্থের 888sport app download apk latest versionক), ইবনে লুকাবাল বক্কি (ভেষজবিদ্যা, খগোলতত্ত্ব ও গণিতশাস্ত্রের মৌলিক গ্রন্থ-রচয়িতা), আবু জায়েদ হুনায়েন (ভেষজ ও দর্শনশাস্ত্র বিষয়ক মৌলিক গ্রন্থপ্রণেতা এবং ওল্ড টেস্টামেন্ট, প্লেটোর রিপাবলিক ও 888sport app প্রাচীন গ্রিক পন্ডিতের কয়েকটি ধ্রুপদী গ্রন্থের 888sport app download apk latest versionক), ইসহাক ইবনে হুনায়েন (অ্যারিস্টটলের ক্যাটাগরিস গ্রন্থের 888sport app download apk latest versionক), শাহাবুদ্দীন ইবনে আবুল রাবি (কিতাবু-ল-বালিক ফি তদবিরুল মমালিক নামে রাজনৈতিক দর্শন বিষয়ে মৌলিক গ্রন্থ-রচয়িতা), আবু নসর আল ফারাবি (তর্কশাস্ত্র, নীতিশাস্ত্র, রাজনৈতিক দর্শন, অঙ্কশাস্ত্র, রসায়ন888sport apk এবং সংগীত-বিষয়ে বহু মৌলিক পুস্তক-প্রণেতা), আবু সিনা (কানুন ফিত্তব, শিফা, কিতাবুল হিদায়া, অদ্বিয়াত-আল-কলবিয়া, কিতাবুল-নাজাত, কিতাবুল-ইনসাফ প্রভৃতি বহু গুরুত্বপূর্ণ পুস্তকের রচয়িতা ও পন্ডিত), ইবনে রুশ্দ (অ্যারিস্টটলের সমগ্র গ্রন্থাবলির ভাষ্যকার এবং মধ্যযুগের ইউরোপে যুক্তিসিদ্ধ জ্ঞান ও মুক্তবুদ্ধি প্রসারের পুরোধা) প্রমুখ আরব ও স্পেনীয় পন্ডিত, বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিকের জীবন এবং কর্মের বিশদ বিবরণ প্রদান করেন। অধিকন্তু প্রাচীন মুসলিম সমাজে 888sport promo code-স্বাধীনতা, রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, 888sport live chat-888sport live football-স্থাপত্যবৈশিষ্ট্য ইত্যাদি বিষয়েও ব্যাপক অনুসন্ধান করেন। ওই 888sport liveে বাংলা ভাষায় তিনিই প্রথমবারের মতো মুসলিম ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিশ্বস্ত বিবরণ তুলে ধরে মন্তব্য করেন :

নবম শতাব্দী হইতে ত্রয়োদশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত মুসলমানগণ জগৎকে যে জ্ঞানালোকে উদ্ভাসিত করিয়াছিল, ইউরোপীয় সভ্যতার ভিত্তি সেখানেই পত্তন হয়।… আজ যে ইউরোপীয় সভ্যতার হিরণ কিরণ-পাতে জগৎকে নতুনত্বের বর্ণে রঞ্জিত করিয়া বিস্ময় রসে আপ্লুত করিয়া দিতেছে, তাহার ভিত্তি যে ইসলামিক সভ্যতার উপর সুপ্রতিষ্ঠিত, তাহা আজ নিরপেক্ষ ইউরোপীয় জ্ঞানীগণ অবনতমস্তকে স্বীকার করিতে বাধ্য হইতেছে।

বাংলা ১৩৩৪ সনের কার্তিক-অগ্রহায়ণে পঞ্চম-ষষ্ঠ যুগ্মসংখ্যক নওরোজ পত্রিকায় মুহম্মদ এনামুল হকের দ্বিতীয় গদ্যরচনা চট্টগ্রাম জেলায় 888sport live chat-বাণিজ্য ও তাহার উন্নতির উপায় প্রকাশিত হয়। এতে তিনি মুসলমানদের অতীত ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধির ঐতিহাসিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে মননশীল ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে নিজ জেলা ও স্বকালের আর্থনৈতিক ঐশ্বর্য বিকাশে প্রবৃত্ত হয়েছেন। মনে রাখতে হবে, তখনো তিনি তাঁর শিক্ষাজীবনের কলেজস্তর শেষ করেননি। তখনই তাঁর স্বকীয়তা, গবেষণার সামর্থ্য পরিস্ফুট।

এমএ ক্লাসের ছাত্রাবস্থায় তিনি যখন কলকাতা কারমাইকেল হোস্টেলে থাকতেন, সেই সময় তাঁর দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ঝর্ণাধারা (১৯২৮) প্রকাশিত হয়। এ-কাব্যে খৈয়ামের রুবায়েতের ছন্দ অনুসৃত হয় এবং এটি কবি কাজী নজরুল ইসলামকে উৎসর্গ করা হয়েছিল। সমকালীন বিখ্যাত সাময়িকী মোহাম্মদীতে কাব্যগ্রন্থটির ভূয়সী প্রশংসা করে সমালোচনা বের হয়।

এমএ পরীক্ষায় উজ্জ্বল সাফল্যের ভিত্তিতে এনামুল হকের জীবনে গবেষণার নতুন সুযোগ উপস্থিত হয়। এর একটি হলো, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা বৃত্তি এবং অপরটি পিএইচডি গবেষণার সুযোগ। উল্লেখ্য, পিএইচডি গবেষণার আগে তিনি তৎকালীন মাসিক পঁচাত্তর টাকা বৃত্তিতে ১৯৩৩ সালের ১ জুলাই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে রামতনু লাহিড়ী সহকারী গবেষক নিযুক্ত হন। সেজন্যে তাঁকে যথাবিধি দরখাস্ত দিয়ে স্যার সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণন, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, ড. প্রমথনাথ ব্যানার্জি প্রমুখ ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কমিটির সর্বসম্মত সুপারিশ লাভ করতে হয়েছিল। ১৯৩৫ সালের ২১ জুলাই পর্যন্ত তিনি ওই পদে বহাল থাকাকালে আবদুল করিম 888sport live footballবিশারদের সংস্পর্শে আসেন। 888sport live footballবিশারদের কলমী পুঁথির বিরাট সংগ্রহশালা ব্যবহার এবং 888sport live footballবিশারদের সঙ্গে গভীর ঘনিষ্ঠতার ফলে তিনি পিএইচডি গবেষণায় উপকৃত হওয়া ছাড়াও আরাকান রাজসভায় বাঙ্গালা 888sport live football নামে অতিবিখ্যাত গবেষণাগ্রন্থ রচনা করেন। গ্রন্থটি নাজিরুল ইসলাম মোহাম্মদ সুফিয়ান-সম্পাদিত ছায়াবীথি পত্রিকায় ১৩৪১ বঙ্গাব্দের প্রথম বর্ষের একাদশ 888sport free bet থেকে আবদুল করিম 888sport live footballবিশারদের সঙ্গে যৌথভাবে ধারাবাহিকরূপে প্রকাশিত হয়। ১৯৩৫ সালে এটি তাঁর ও 888sport live footballবিশারদের যৌথ নামে গ্রন্থাকারে মুদ্রিত হয়। এতে 888sport appsের বাইরে আরাকানে মধ্যযুগীয় বাংলা 888sport live footballবিকাশের ধারা বিধৃত হয়েছে। গ্রন্থের চতুর্থ অধ্যায় ‘মহাকবি আলাওল’ 888sport live footballবিশারদ স্বয়ং রচনা করেন এবং অবশিষ্ট সমুদয় অংশ 888sport live footballবিশারদের সংগৃহীত উপকরণ, 888sport live footballবিশারদের প্রকাশিত 888sport liveসমূহ, 888sport live footballবিশারদের ‘বাঙ্গালা প্রাচীন পুথির বিবরণ’ দুই খন্ড ইত্যাদির আলোকে 888sport live footballবিশারদের পরামর্শানুক্রমে এনামুল হক কর্তৃক লিখিত। গ্রন্থটিতে আরাকানের রাজসভায় তিনজন বাঙালি কবি যথাক্রমে দৌলত কাজী, কোরেশী মাগন এবং আলাওল  ছাড়াও কুমিল্লা জেলার দোনা গাজী চৌধুরী, শেখ শেরবাজ চৌধুরী, শেখ সাদী, সৈয়দ মোহাম্মদ আকবর ও মোহাম্মদ রফীউদ্দীন এবং নোয়াখালী জেলার সুধারামের আবদুল হাকিম, চবিবশ পরগণা জেলার জিরিকপুর গ্রামের মোহাম্মদ এয়াকুবসহ আরো কয়েকজন কবির পরিচয় এবং তাঁদের কাব্যের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে মধ্যযুগের বাংলা 888sport live footballের একটি অজ্ঞাত দিক সকলের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।

অন্যদিকে তিনি বাংলা সরকারের জনশিক্ষা বিভাগের গবেষণা বৃত্তির আওতায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাচার্য সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় বাঙ্গলার সুফিবাদের ইতিবৃত্ত (A History of Sufism in Bengal) বিষয়ে পিএইচডি গবেষণায় রত হন। গবেষণার জন্য অভিসন্দর্ভ বা থিসিস লেখার প্রয়োজনে তিনি উপমহাদেশের বহু স্থানে গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাবলি ও প্রাচীন পুস্তকাদি সংগ্রহ করেন। বহু দুষ্প্রাপ্য পুঁথি থেকে মধ্যযুগে বঙ্গে আগত সুফিগণের কীর্তি এবং এদেশীয় মরমিয়াবাদীদের চিন্তাভাবনার সারমর্ম উদ্ধার করেন। তিনি উত্তর ভারতীয় ও আরব-ইরানি সুফিগণের নিগূঢ় চিন্তাধারা বাংলায় এসে কীভাবে রূপান্তরিত ও পরিবর্তিত হয়েছে, তার স্বরূপ সন্ধানেও কঠোর পরিশ্রম করেন। এ-সময়ই ১৯৩৩ সালের গ্রীষ্মকালে তিনি তিন মাস চট্টগ্রামের সুচক্রদন্ডী গ্রামে অবস্থান করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক নিযুক্ত সহকারী গবেষক রূপে আবদুল করিম 888sport live footballবিশারদের (১৮৬৯-১৯৫৩) ব্যক্তিগত গ্রন্থাগারে গভীর ও অনুপুঙ্খ গবেষণা সম্পন্ন করেন। সেখানেই তিনি সৈয়দ মর্তুজার যোগ কালন্দর, আলী রাজা ওরফে কানু ফকিরের জ্ঞানসাগর, সৈয়দ সুলতানের জ্ঞান প্রদীপ, শেখ চান্দের শাহদৌলা ফকীরের পুঁথি ও সপ্ত জ্ঞানপ্রদীপ, নয়নচান্দ ফকিরের বালকানামা প্রভৃতি বহু বিরলপ্রজ অধ্যাত্ম-পুস্তকের  পান্ডুলিপি পাঠ করে এদেশীয় সুফিগণের যোগপ্রণালি ও তন্ত্র-সাধনার বিশেষত্ব উপলব্ধি করতে সমর্থ হন। এভাবেই তিনি তাঁর থিসিসে এক নতুন ও অভূতপূর্ব গবেষণা নিদর্শন রেখে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন (১৯৩৪)। তাঁর থিসিসের পরীক্ষক ছিলেন ক্যামব্রিজ প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জুলসব্লক এবং পাঞ্জাব গুরুদয়াল সিং কলেজের আরবি-ফারসি বিভাগের অধ্যক্ষ ড. কিশোরী মোহন মৈত্র।

১৯৩৫ সালেই তিনি অত্যন্ত কৌতূহলোদ্দীপক ভাষাতত্ত্বের একটি গ্রন্থ রচনা করেন, যেখানে চট্টগ্রামের ভাষার বৈচিত্র্য ও বিশিষ্টতাসহ নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হয়েছে। সন্দেহ নেই, চট্টগ্রামের ভাষার বৈচিত্র্য ও পার্থক্য সর্বজনবিদিত। 888sport apps বা বৃহৎ বঙ্গের 888sport app স্থানের ভাষার সঙ্গে চাটগাঁইয়া ভাষার মৌলিক প্রভেদ আছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামের চকরিয়াবাসী উপেন্দ্র নন্দিনী 888sport alternative link, যবন বধ কাব্য, ‘চিন্তার চাষ’ 888sport liveপ্রণেতা এবং সাধনা সম্পাদক আবদুর রশিদ সিদ্দিকী ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে চট্টগ্রামের ভাষাতত্ত্ব নামে একটি ক্ষুদ্র পুস্তিকা প্রকাশ করেন। ১৩৪২ বঙ্গাব্দে পুস্তিকাটি চট্টগ্রামী ভাষাতত্ত্ব নামে সম্পাদিত ও পরিবর্ধিত আকারে প্রকাশ পায়। তাতে চট্টগ্রামী ভাষার উৎপত্তি সম্পর্কে বলা হয় : ‘উর্দুই চট্টগ্রামী ভাষার বাহন, আরবী ইহার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, পারসি ইহার অঙ্গরাগ এবং বাঙ্গালা ইহার নয়নাঞ্জন।… এই চতুর্ভাষার সংযোগে চট্টগ্রামী ভাষা এক অভিনব রহস্যময় ভাষায় পরিণত হইয়া গিয়াছে। পালি, দ্রাবিড়, জুমিয়া ও সংস্কৃত ভাষার অংশবিশেষ ইহার মধ্যে পরিলক্ষিত হইলেও সে সমস্ত ভাষার প্রভাব এই ভাষাকে প্রভাবিত করিতে পারে নাই।’ অন্যদিকে, মুহম্মদ এনামুল হক ১৯৩৫ সালে চট্টগ্রামী বাঙ্গালার রহস্য ভেদ শিরোনামে ১২২ পৃষ্ঠার একটি পুস্তক প্রণয়ন করেন। পুস্তকের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে তিনি বলেন : ‘চট্টগ্রামী বাঙ্গালা সাধু বাঙ্গালা ভাষার এক বিচিত্র সৃষ্টি।… চট্টগ্রামী বাঙ্গালাকে একভাবে মিশ্রিত বুলিও বলা যাইতে পারে। ইহা যেন নানা ভাষার প্রভাবের যৌগিক সংমিশ্রণ হইতে সমম্ভুত।… ভাষাটি বাঙ্গালা হইলেও ইহার উপর পালি, আরবি, ফারসি, মঘী, সকল ভাষা কিছু না কিছু প্রভাব বিস্তার করিয়াছে। এই প্রভাবগুলিকে নিতান্তই নগণ্য বলিয়া উল্লেখ করা যায় না।… দ্রাবিড়, চাকমা, জুমিয়া, খুমি বা কুঁই, মঘ, আরাকানি প্রভৃতি চট্টলবাসী আদিম জাতির সহিত পরবর্তী যুগে নবাগত নানা জাতির (আর্য ও মুসলমান জাতির) রক্তের সংমিশ্রণ ঘটিয়াছিল। ফলে চট্টগ্রামের আধুনিক কথ্য বুলিতে (dialect) এখনও ইহাদের ভাষার নানা শব্দ ওৎপ্রোতভাবে জড়িত হইয়া রহিয়াছে।’

এনামুল হক তাঁর বক্তব্যের সমর্থনকল্পে অনার্য, পালি, আরবি, ফারসি ও হিন্দি ভাষা থেকে অনেক মূল শব্দ বর্ণনুক্রমিকভাবে উদ্ধৃত করে চট্টগ্রামী বাংলায় তাদের বিকৃতভাবে ব্যবহৃত রূপ প্রদর্শন করে বলেছেন যে, ‘কোনো কোনো মূল শব্দের অর্থ হইতে চট্টগ্রামে ব্যবহৃত শব্দের অর্থের কিঞ্চিৎ বিপর্যয় ঘটিয়াছে।’ তিনি এই পুস্তকে 888sport apkসম্মত উপায়ে আঞ্চলিক উপভাষার (religinal dialects) উৎপত্তি নির্ণয়ের ও বিশ্লেষণের যে-পথ নির্দেশ করেছেন, তার অনুসরণে এদেশের 888sport app জেলার লোকমুখে ব্যবহৃত বুলি ও অদ্যাবধি প্রচলিত প্রাচীন প্রবাদসমূহ নিয়ে পর্যালোচনা করা হলে আমাদের ভাষা888sport apk সমৃদ্ধ হবে।

১৯৩৫ সালেই এনামুল হক তাঁর পিএইচডি গবেষণার থিসিস A History of Sufism in Bengal-এর বিষয়বস্ত্ত ও ভাবধারা বাংলা ভাষায় লিপিবদ্ধ করে বঙ্গে সূফী প্রভাব শিরোনামে গ্রন্থাকারে প্রকাশ করেন। গ্রন্থে তিনি উল্লেখ করেন :

মুসলিম সংস্কৃতির সর্ববাদিসম্মত মাপকাঠি শাস্ত্রীয় ইসলাম অর্থাৎ শরীঅৎ ব্যতীত আর কিছুই হইতে পারে না। সুতরাং এই পুস্তকে শরীঅতের মাপকাঠির সাহায্যেই সমস্ত বিষয়কে ওজন দেওয়া হইয়াছে।

মুহম্মদ এনামুল হকের এই গ্রন্থে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মের নতুনত্ব এবং চৈতন্যদেবের চিত্তে অতীন্দ্রিয়বাদের বিকাশ সম্বন্ধে বলা হয়েছে :

Muslim Sufis has no mean share in the development of Chaitanya’s mysticism. …the novelties of  Gaudian Vaisnabism were the result of a long con tact of Islam with Bengal and Sufism with Chaitanya Deva.

গ্রন্থের ‘বঙ্গে সূফী প্রভাব প্রবেশের ধারা’ অধ্যায়ে তিনি বলেন :

সূফীদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সূফী ভাবপ্লাবনে দেশের এক প্রান্ত হইতে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত ভাসিয়া গেল, হিন্দু সমাজের কঠোর বন্ধন, নৈয়ায়িকের কূটতর্ক, হিন্দু সাধক ও সন্ন্যাসীর অলৌকিক ইনদ্রজাল, কিছুই ইহার গতি রোধ করিতে পারিল না। দেশে যে আকস্মিক ভাবের বান ডাকিল, তাহা উত্তরোত্তর বর্ধিত হইতে হইতে ষোড়শ শতাব্দীতে আসিয়া বাঙ্গালার ক্ষণজন্মা মহাপুরুষ চৈতন্যদেবের (১৪৮৪-১৫৩৩) আবির্ভাবের সঙ্গে সঙ্গে সর্বপ্রথম প্রবল বাধাপ্রাপ্ত হইল। তাহার পর হইতে বর্ধিষ্ণু সূফী প্রভাবে ভাটা পড়ে এবং ধীরে ধীরে মন্দীভূত হইয়া যাইতে থাকে।

সুফি ইসলামের বিকাশ ও ধারাকে বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বৃহৎ বঙ্গের যে সামাজিক ও ধর্মীয় চিত্র অঙ্কন করেছিলেন, তাতে এ-অঞ্চলের লোকমানস আর চিন্তাসম্পদের সন্ধান লাভ করা যায়।

মাসিক মোহাম্মদী পত্রিকায় দশম বর্ষ প্রথম 888sport free bet থেকে এনামুল হকের ‘বঙ্গে ইসলাম বিস্তার’ শীর্ষক একটি তথ্যবহুল ও বিশ্লেষণমূলক নিবন্ধ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়, এতে তিনি উল্লেখ করেছেন যে : ‘সপ্তদশ শতাব্দীর মধ্যভাগে বৈষ্ণব মতবাদ পূর্বশক্তি হারাইতে থাকে এবং ইসলাম ধর্ম দেশের সর্বত্র প্রতিষ্ঠিত হইয়া যায়।’

888sport appsে প্রতিষ্ঠিত ইসলাম কতটুকু শাস্ত্রীয় আর কতটুকু লৌকিক, সে-সম্পর্কে তাঁর ব্যক্তিগত অনুসন্ধান, তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ প্রভূত প্রশংসার দাবিদার। নিবন্ধটি পত্রিকায় প্রকাশের প্রায় এক যুগ পর ১৯৮৪ সালে পূর্ব পাকিস্তানে ইসলাম নামে গ্রন্থভুক্ত হয়। তিনি এই চিত্রসমৃদ্ধ গ্রন্থখানির প্রণয়ন ও প্রকাশ সম্পর্কে  বলেন : ‘মুদ্রা, শিলালিপি, প্রামাণিক ইতিহাস, প্রাচীন 888sport live football, কিংবদন্তি প্রভৃতিকে আশ্রয় করে দীর্ঘদিন তথ্যানুসন্ধানের পর মাসিক মোহাম্মদীতে প্রকাশিত 888sport liveগুলোকে স্থলে স্থলে কথঞ্চিত পরিবর্তন ও  পরিবর্ধন করিয়া নতুন কালোপযোগী আখ্যায় উপস্থাপিত হইল।’

মুহম্মদ এনামুল হক যখন রামতনু লাহিড়ীর সহকারী গবেষক, সে-সময়ে ১৩৪১ বঙ্গাব্দে তৃতীয়সংখ্যক 888sport live football পরিষৎ পত্রিকায় ‘নবিবংশ’, ‘শবে-মেরাজ’, ‘ওফাতে রসূল’ প্রভৃতির প্রণেতা কবি সৈয়দ সুলতান সম্পর্কে তাঁর একটি সুদীর্ঘ গবেষণা সন্দর্ভ প্রকাশিত হয়। লেখাটি দেশের পন্ডিত ও সুধিজনের সপ্রশংস দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ১৯৩৬ সালে (১৩৪৩ বঙ্গাব্দ) চতুর্থসংখ্যক 888sport live football পরিষৎ পত্রিকায় তিনি শাহ মোহাম্মদ সগীরের য়ুসূফ জোলেখা কাব্যের ভাষা ও রচনাকাল সম্পর্কে সর্বপ্রথম আলোচনার সূত্রপাত ঘটান। বহু পরে তিনি কুমিল্লা জেলার একটি স্থান থেকে কাব্যটির একটি অতিশয় ছিন্ন ও খন্ডিত পান্ডুলিপি উদ্ধার করেন। তাতে ‘রাজ বন্দনা’র তৃতীয় শ্লোক হচ্ছে :

মনুস্বের মৈদ্ধে জেহ্ন ধর্ম অবতার।

মোহা নরপতি গ্যেছ পিরথিম্বির সার\

এ-বিষয়ে তিনি ১৯৫১ সালের (১৩৫৮ বঙ্গাব্দ) আগস্টসংখ্যক মাসিক মাহে নও পত্রিকায় ‘বাংলাভাষার প্রাচীনতম মুসলিম কবি’ শিরোনামে এক বিতর্কমূলক আলোচনার অবতারণা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, উল্লিখিত এই ‘গ্যেছ’ হচ্ছে বাংলার স্বাধীন  শাসক গৌড়ের সুলতান গিয়াসউদ্দীন আজম শাহ (রাজত্বকাল ১৩৯৭-১৪১০ খ্রিষ্টাব্দ)। ১৩৭১ বঙ্গাব্দের শীতে অষ্টম বর্ষ দ্বিতীয়সংখ্যক 888sport live football পত্রিকায় শাহ মুহম্মদ সগীরের ইউসুফ-জলিখা শিরোনামে বিস্তারিতভাবে কাব্যটির কাহিনি বর্ণনা ও অনুপুঙ্খ পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি এক সুদীর্ঘ আলোচনার প্রথম কিস্তি পরিবেশন করেন, যার শেষ বাক্যটি ছিল ‘সুতরাং ইউসুফ-জলিখা খ্রিষ্টীয় পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দশকের কাব্য।’

১৩৪৩ বঙ্গাব্দের তৃতীয়সংখ্যক 888sport live football পরিষৎ পত্রিকায় মুহম্মদ এনামুল হক কুমিল্লার কবি শেখ চান্দের রসুল বিজয় কাব্যের সুবিস্তৃত পরিচয় প্রদান করেন। ১৩৪৪ বঙ্গাব্দের শ্রাবণ ও ভাদ্রে মাসিক মোহাম্মদীর দশম ও একাদশ 888sport free betদ্বয়ে ‘কবি শেখ চান্দ’ সংকলিত হয়েছে। ১৩৪৬ বঙ্গাব্দের চৈত্রে ত্রয়োদশ বর্ষের ষষ্ঠসংখ্যক মাসিক মোহাম্মদীতে তাঁর ‘কবি দৌত উজীর বহ্রম খান’ 888sport liveটি প্রকাশিত হয়। এতে কবির সুবিখ্যাত লাইলী মজনু কাব্যটির ভাষাবৈচিত্র্য, ব্রজবুলি ব্যবহার, সৌন্দর্য-বর্ণনা এবং রচনানৈপুণ বিশ্লেষণ করেন তিনি।

১৯৪৫ সালে এনামুল হক মালদহ জেলা স্কুলে প্রধান শিক্ষকরূপে কর্মরত, তখন তিনি মাওলানা শাহ সৈয়দ মুহম্মদ আলীর উর্দু গ্রন্থ তারানা-ই-হিজায়ী বাংলায় ভাষান্তর করেন। তাঁর তখনকার একটি বড় কৃতি হচ্ছে : দেওতলার ‘বাইশ হাজারী ওয়াকফ এস্টেটে’র তত্ত্বাবধায়ক পরিষদের সদস্যরূপে গৌড়ের শেষ হিন্দু রাজা লক্ষ্মণ সেনের সভাপন্ডিত হলায়ুন মিশ্রের সংস্কৃত গ্রন্থ সেক শুভোদয়ার অযত্ন-লাঞ্ছিত মূল্যবান পান্ডুলিপি পান্ডুয়া শরিফের বড় দরগাহের সিন্দুক থেকে উদ্ধারের ব্যাপারে আন্তরিক উদ্যোগ ও তৎপরতা। সেক শুভোদয়া গ্রন্থে মখদুম শেখ জালালউদ্দীন তাবরিজীর (মৃত্যু ১২২৫ খ্রিষ্টাব্দ) ভারতের উত্তর প্রদেশ থেকে ১২০০ সালের পূর্বে গৌড়ে আগমন, পান্ডুয়ায় লঙ্গরখানা স্থাপন, হিজরি ৬০৪ সালে (১২০৭ খ্রিষ্টাব্দ) পান্ডুয়ার খানকাহ শরিফ ত্যাগ পর্যন্ত কাহিনি বর্ণিত হয়েছে। সংস্কৃত সেক শুভোদয়া গ্রন্থে মখদুম শেখ জালালের প্রশস্তিতে প্রচারিত কয়েকটি বাংলা ছড়া স্থান পেয়েছে। প্রাচীন বাংলা ভাষার স্বরূপ ও বিকাশ বিচারে এই ছড়াগুলোর মূল্য অপরিসীম। উল্লেখ করা প্রয়োজন, এনামুল হকের বাঙ্গালায় সূফীবাদের ইতিবৃত্তের ইংরেজি ও বাংলা গ্রন্থে মখদুম শেখ জালালউদ্দীন তাবরিজীর জন্ম, আধ্যাত্মিক শিক্ষালাভ, দেশ888sport slot game, ইসলাম প্রচার, জীবন-কর্ম-মৃত্যু বিষয়ে মূল্যবান তথ্য ও বিশ্লেষণ স্থান পেয়েছে।

মুহম্মদ এনামুল হক যখন কর্মোপলক্ষে মালদহে ছিলেন, সে-সময় বিখ্যাত ও বহুল পঠিত যৌন 888sport apk গ্রন্থের প্রণেতা আবুল হাসানাৎ বাংলা ভাষার সংস্কার নামে ১৭ পৃষ্ঠার একটি পুস্তিকা লিখে এ-ব্যাপারে বিজ্ঞজনের মতামত চেয়ে পুস্তিকাটি অনেক 888sport live footballিক ও ভাষাতাত্ত্বিকের কাছে পাঠান। এনামুল হক এরই প্রতিক্রিয়ায় ১৯৪৪ সালের ৩ জানুয়ারি ‘বাংলা ভাষার সংস্কার’ নামে ৪১ পৃষ্ঠার একটি সারগর্ভ আলোচনা উপস্থাপন করেন। আবুল হাসানাৎ বাংলা ভাষার মৌলিক বর্ণ888sport free bet ও যুক্তাক্ষর হ্রাস, বানান সংস্কার, ব্যাকরণ বিভ্রাট নিরসন এবং ভাষা সরলীকরণের যে-প্রস্তাব পেশ করেন, এনামুল হক যুক্তি ও তথ্যের মাধ্যমে সেগুলোকে খন্ডন ও নাকচ করে নিজের জ্ঞানগর্ভ বক্তব্য তুলে ধরেন, যা তৎকালীন পন্ডিতমহলে ব্যাপক সমাদৃত হয়।

১৯৪৫ সালের ১৫ নভেম্বর তিনি মালদহ স্কুলের কর্মক্ষেত্র থেকে 888sport appর উচ্চ ও মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীনে হাইস্কুল ও হাই মাদ্রাসাসমূহের পাঠ্যপুস্তক হিসেবে অনুমোদনলাভের জন্য নিজে সংকলক ও সম্পাদক হয়ে কাব্যকুঞ্জ নামে একটি 888sport app download apk সংকলন দাখিল করেন। এতে তিনি ‘প্রাচীন যুগের দিগ্দর্শন’ সম্পর্কে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ  মন্তব্য করেন :

প্রাকৃত ভাবাপন্ন বলিয়া চর্যাপদগুলিকে আপাত দৃষ্টিতে বাংলা বলিয়াই মনে হয় না সত্য, তথাপি ব্যাকরণ ও ভাষাতত্ত্বের বিচারে দেখা যায়, এইগুলির মধ্যেই বাংলা ভাষার আদিরূপ নিহিত এবং বর্তমান বাংলা ভাষা চর্যাপদের ভাষারই বিবর্তন মাত্র।

পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর ১৯৪৮ সালে এনামুল হক যখন রাজশাহী কলেজে বাংলা বিভাগের প্রধান, তখন তিনি পূর্ব পাকিস্তানে ইসলাম নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ পুস্তক প্রণয়ন করেন। পুস্তকটি তাঁর স্ব-ধর্মপরায়ণতা, আত্মসংস্কৃতিপ্রিয়তা ও জাতীয়তাবাদের  পরিচয় দীপ্যমান করেছে; এবং তা সমাজ ও মানুষকে ঐতিহ্যবোধ, মানবিকতা ও স্বাদেশিকতার মন্ত্রে অনুপ্রাণিত করতে সমর্থ হয়। এর ভূমিকায় তিনি যথোপযুক্তভাবেই মন্তব্য করেন যে, ‘সাংস্কৃতিক ইতিহাসের মুকুরে নিজেদের মুখ দেখিয়াই জাতি আপন আকৃতি ও প্রকৃতি সম্বন্ধে সজাগ ও সচেতন হইয়া ওঠে।’ এই কথা তিনি শুধু লিখেই ক্ষান্ত হননি; জীবনাদর্শরূপেও বিশ্বাস করেছেন, যার প্রমাণ পাওয়া যায় পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক দিনগুলোতেই।

অনেক আশা নিয়ে উপমহাদেশে মুসলমানদের নতুন রাষ্ট্র পাকিস্তানের সৃষ্টি হলেও নব্য-রাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ সংস্কৃতির স্বরূপ ও বিকাশের প্রতিবন্ধকতা শুরু হয় এবং সেটা এনামুল হকের নজর এড়ায়নি। পাকিস্তান সৃষ্টির প্রাক্কালে ১৯৪৭ সালের জুলাইয়ে আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর জিয়াউদ্দীন আহমদ হিন্দিকে ভারতের রাষ্ট্রভাষা করার কংগ্রেসের প্রস্তাবের মতোই পাকিস্তানের প্রদেশসমূহের বিদ্যালয়ে শিক্ষার বাহনরূপে এবং দেশটির রাষ্ট্রভাষারূপে উর্দুকে প্রবর্তনের অভিমত ব্যক্ত করেন এবং পাকিস্তানের জাতীয় স্তরের নেতৃবৃন্দ সেভাবেই অগ্রসর হতে থাকেন, যার কুপ্রভাব পরবর্তীকালে সমাজ-রাষ্ট্র-রাজনীতিতে দেখা যায়। এনামুল হক পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার তিন মাসের মাথায় বিষয়টি নিয়ে গভীর চিন্তা করেন এবং 888sport appsের ভাষা ও সংস্কৃতির পক্ষে নিজের মতামত তুলে ধরেন। ১৯৪৭ সালের নভেম্বর মাসেই তিনি ‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষার পরিপ্রেক্ষিতে উর্দু ও বাংলা’ নামে একটি দিকনির্দেশনামূলক 888sport live রচনা করেন। এতে তিনি বলেন : ‘বাংলাকে ছাড়িয়া উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা রূপে পূর্ব পাকিস্তানবাসী গ্রহণ করিলে তাহাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মৃত্যু অনিবার্য।’

তাঁর এই 888sport liveটি নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৩৫৪ বঙ্গাব্দের কার্তিক 888sport free bet কৃষ্টি পত্রিকায় প্রকাশিত এবং ডিসেম্বর মাসের গোড়ার দিকে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে বিতরণ করা হলে এরই সূত্র ধরে ভাষা-আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠে। তাঁর 888sport liveে যে সুতীক্ষ্ণ যুক্তি, সুদৃঢ় আন্তরিকতা, দূরদৃষ্টি এবং জন্মগত সংস্কৃতিপ্রীতির অকুণ্ঠ প্রকাশ ছিল, তাতেই ভাষা-আন্দোলনের কর্মী ও উদ্যোক্তারা প্রবলভাবে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। উল্লেখ্য, এরই ধারাবাহিকতায় ডক্টর জিয়াউদ্দীন আহমদের প্রস্তাবের প্রতিবাদে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ ১৩৫৪ বঙ্গাব্দের ১২ শ্রাবণ দৈনিক আজাদ পত্রিকায় ‘পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা সমস্যা’ শিরোনামে একটি 888sport live এবং সে-বছরেরই ১৭ পৌষ তারিখে তকবীর পত্রিকায় ‘পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার ভাষা সমস্যা’ শিরোনামে আরেকটি 888sport live লেখেন।

পরবর্তীকালে এনামুল হক বাংলা ভাষার অপরিমেয় ঐশ্বর্য, বিকাশ, স্বকীয় সামর্থ্য, সামাজিক শক্তি, সারল্য, মাধুর্য এবং সর্ববিধ ভাব প্রকাশের অনিঃশেষ ক্ষমতার উল্লেখ করে ‘বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় অধিকার’ শীর্ষক আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ 888sport liveে লিখেছিলেন : ‘সমগ্র পাকিস্তানে যদি কোনো ভাষার রাষ্ট্রীয় অধিকার পাইবার যোগ্যতা থাকে, তাহা একমাত্র বাংলা ভাষারই আছে, অন্য কোনো ভাষার নাই।’

এনামুল হকের দৃপ্ত ও অকুতোভয় বক্তব্যের জন্যে তিনি ভাষা-আন্দোলনের অন্যতম তাত্ত্বিক পুরোধা এবং নির্ভীক প্রবক্তা রূপে ইতিহাসে অবি888sport app download for androidীয়।

১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে চারদিকে যখন বাংলা ভাষার দাবিতে আন্দোলন অগ্নিগর্ভ রূপ ধারণ করেছে, তখন তিনি রাজশাহীর কর্মস্থল থেকে বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও 888sport app প্রসঙ্গে তাঁর ব্যাকরণ মঞ্জরী গ্রন্থটি প্রকাশ করেন। শুধু ভাষা-আন্দোলনই নয়, আরেকটি কারণে তাঁর জন্য এই 888sport live রচনার প্রয়োজন ছিল। তা হলো, ১৩২৪ বঙ্গাব্দে আচার্য রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী লিখেছিলেন : ‘খাঁটি বাঙ্গালার ব্যাকরণ এখনও অস্তিত্বহীন। বাঙ্গালার যে অংশ সংস্কৃত হইতে ধার করা নহে, যে অংশ খাঁটি বাঙ্গালা, সে অংশের ব্যাকরণ নাই।’ এনামুল হক তাঁর ব্যাকরণগ্রন্থের নিবেদনে দাবি করেন : ‘ইহার দুই-তৃতীয়াংশ খাঁটি বাংলা ব্যাকরণ। ইহাই এই ব্যাকরণের বৈশিষ্ট্য। এই দাবি সম্পর্কে বিশেষজ্ঞরা অভিমত জ্ঞাপন করতে পারেন।’

১৯৫৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে এনামুল হক চট্টগ্রাম কলেজের অধ্যক্ষ পদে থাকাকালে মুসলিম বাংলা 888sport live football নামের অমর গ্রন্থটি রচনা করেন। ১৯৫৭ সালে এটির ইংরেজি ও উর্দু সংস্করণ প্রকাশিত হয়। ১৯৬০ সালে এইচ.এ.আর গিব-সম্পাদিত দ্য এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইসলাম নামের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন গ্রন্থে তার ‘মুসলিম বেঙ্গলি লিটারেচার’ শীর্ষক সুচিন্তিত ও তথ্যসমৃদ্ধ 888sport liveটি অন্তর্ভুক্ত হয়। ইস্ট পাকিস্তান : অ্যা প্রোফাইল নামক গ্রন্থে তা ‘মুসলিম কন্ট্রিবিউশন টু বেঙ্গলি লিটারেচার’ নামের আরেকটি সারগর্ভ 888sport live সন্নিবেশিত হয়।

পরবর্তীকালে (১৯৫৭) তাঁর 888sport app download for androidীয় কর্মকান্ডের মধ্যে বাংলা একাডেমির প্রথম পরিচালক রূপে কাজ করা এবং বাংলা একাডেমি অ্যাক্টের রচয়িতা রূপে দায়িত্ব পালন অন্যতম। তিনিই উদ্যোগী হয়ে ১৯৫৭ সালের জানুয়ারিতে বাঙলা একাডেমী পত্রিকার প্রথম 888sport free bet প্রকাশ করেন এবং এতে তিনি ‘মধ্যযুগীয় বাংলা 888sport live footballের একমাত্র মুসলিম মহিলা কবি : রহীমু-ন-নিসা’ শিরোনামে একটি গবেষণামূলক 888sport live লেখেন। 888sport liveের পরিশিষ্টে কবি রহীমু-ন-নিসার পদ্যচ্ছন্দে বিরচিত আত্মবিবরণী এবং দোরদানা বিলাপ টীকা-টিপ্পনীসহ স্থান লাভ করে। তিনি নিজে এই লুপ্তপ্রায় কবির রচনাসমূহের পান্ডুলিপি সংগ্রহ করেছিলেন।

মুহম্মদ এনামুল হক শুধু নিজেই লেখেননি; বহুজনকে লেখালেখি ও 888sport live football-সাধনায় উৎসাহিতও করেছেন। ১৩৩৭ বঙ্গাব্দের আষাঢ়-শ্রাবণের দ্বিতীয় বর্ষের নবম-দশম 888sport free bet থেকে ১৩৩৯ সালের অগ্রহায়ণের চতুর্থ বর্ষের প্রথম 888sport free bet পর্যন্ত অধুনালুপ্ত মোয়াজ্জিন পত্রিকায় মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল আলী ‘এমরা-উল-কায়েসের মোয়াল্লাকা’ শিরোনামে প্রথম মুয়াল্লাকার বাংলা বৃত্তগন্ধি ভাবানুবাদ ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেন। পরে বাংলা একাডেমী পত্রিকায় ১৩৬৬ বঙ্গাব্দের তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় 888sport free betয় মাওলানা নূরুদ্দীন আহমদের ‘সবআ-মুয়াল্লাকা’ শীর্ষক একটি লেখা প্রকাশিত হয়; তাতে প্রাচীন আরবি কবি ইমরাউল কায়েসের প্রথম মুয়াল্লাকার বাংলা পদ্যানুবাদ ও ‘আস-সবউল-মুআল্লাকাত’ শিরোনামে তাঁর মূল আরবি পাঠ পরিবেশিত হয়। প্রাগৈতিহাসিক আরবের কাহিনি-কাব্য-সংকলন  বা সবআ-মুয়াল্লাকা (The Seven Suspended Poems, ঝুলন্ত 888sport app download apk সপ্তক) বিশ্বব্যাপী খ্যাতি লাভ করেছিল। সেই সংকলনে ইমরাউল কায়েস (আনুমানিক ৪৮০-৫৪০ খ্রিষ্টাব্দ), তারাফা-বিন-আল-আবদ, আমর-বিন-কুলসুম, হাবিস-বিন-হিল্লিয়া, আনতারা-বিন-শাদ্দাদ, জুহাইর-বিন-আবি-সুলমা এবং লাবিদ-বিন-রাবিয়া – এই সাতজন আরববিশ্রুত কবির কাসিদা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। উমাইয়া শাসনামলে কবি হাম্মাদ-আল-রাবিয়া              (৭১৩-৭৭২) ‘মুয়াল্লাকাত’ সংকলন করেছিলেন। বাংলায় এর পদ্যানুবাদকারী মাওলানা নূরুদ্দীন আহমদ, যাঁর কথা ওপরে উল্লেখ করা হয়েছে, নিজেই লিখেছেন যে :

ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক সাহেব মুঅল্লাকহ-র 888sport app download apkগুলিকে কাব্যে 888sport app download apk latest version করিতে আমাকে উৎসাহিত ও অনুরোধ করেন। এই প্রেরণা এক সময় তাড়নায় রূপ ধারণ করিলে আমি এই 888sport app download apk latest versionে হাত দিয়াছিলাম। …তিনি আমার 888sport app download apk latest versionে বহু স্থানে যথার্থ তাৎপর্য উদ্ধার করিয়া দিয়াছেন, সংশোধন করিয়াছেন।… এমন কি, অনেক চরণ তিনি 888sport app download apkয় 888sport app download apk latest version করিয়া দিয়াছেন। প্রথম চারটি মুঅল্লাকহ বাংলা একাডেমী পত্রিকায় পর পর প্রকাশিত হয়, তাহাও ডক্টর হকের সম্পাদনায়।… 888sport app download apkগুলি রচনার পটভূমি, 888sport app download apkর মূল্যায়ন ও কাব্যকৃতি বিষয়ক আলোচনাগুলিকে তিনি ঢালিয়া সাজাইয়াছেন। আগাগোড়া মূলের সহিত মিলাইয়া 888sport app download apkগুলিকে পরীক্ষা করিয়াছেন এবং ইহাদের ত্রুটিগুলির সংশোধন ও বিচ্যুতিগুলির উদ্ধার সাধন করিয়াছেন। মোট কথা, এই কাব্যানুবাদের প্রেরণা, ইহার পরিণতি, ইহার রূপরেখা ও সৌষ্ঠব্য সমৃদ্ধির যেটুকু কৃতিত্ব তাহা একমাত্র শ্রদ্ধেয় ডক্টর এনামুল হক সাহেবের প্রাপ্য।

মুহম্মদ এনামুল হক-সম্পাদিত এবং মাওলানা নূরুদ্দীন আহমদ-অনূদিত অস-সব’উ-ল-মুঅল্লাকত গ্রন্থটি ১৯৭২ সালের মে মাসে সাবেক কেন্দ্রীয় বাংলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক প্রকাশিত হয়। এতে সাতটি মুয়াল্লাকার পদ্যানুবাদ, কবিজীবনী, কবিকৃতি, কবি-প্রতিভার মূল্যায়ন স্থান পেয়েছে। এর ‘নিবেদন’ অংশে বলা হয়েছে :

শ্রদ্ধেয় ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক অসাধারণ পরিশ্রম করিয়া পান্ডুলিপি আগাগোড়া সম্পাদনা করিয়া দেন এবং অত্যন্ত যত্নসহকারে নিজে পান্ডুলিপির প্রেস কপি তৈরি করিয়া দেন। পুস্তক মুদ্রণের সময়ও প্রায় সকল প্রুফ তিনি দেখিয়া দিয়াছেন। পুস্তকটির সম্পাদনা ও মুদ্রণের ব্যাপারে ডক্টর হক যে কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগ স্বীকার করিয়াছেন, তাহার দৃষ্টান্ত বিরল।

মুহম্মদ এনামুল হকের আরেকটি বিশেষ উল্লেখযোগ্য কাজ হচ্ছে ডক্টর শেখ গোলাম মকসুদ হিলালী এমএ, ডিফিল (১৯০০-৬১) কর্তৃক সংকলিত Perso-Arabic Elements in Bengali (বাংলায় ফারসি-আরবি উপাদান) নামক অভিধানটির (Lexicon) প্রকাশের ব্যবস্থা করা। তিনি লিখেছেন :

অভিধানখানি দেশ বিভাগের পূর্বেই কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হইতে মুদ্রিত হইবে বলিয়া স্থির করা হইয়াছিল।       কিন্তু দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের বাজারে কাগজের দুষ্প্রাপ্যতা এবং পরে দেশ বিভাগের গন্ডগোলের জন্য উহা তথা হইতে আর মুদ্রিত হইল না। অতঃপর রাজশাহী মিউজিয়াম ইহার মুদ্রণ ভার গ্রহণ করিয়াছিল। কিন্তু নানা কারণে গ্রন্থখানি তথা হইতেও মুদ্রিত হয় নাই।

ডক্টর হিলালীর মৃত্যুর (১৭ ডিসেম্বর ১৯৬১) প্রায় পাঁচ বছর পরে অভিধানটি এনামুল হক-কর্তৃক সুসম্পাদিত হয়ে ১৯৬৭ সালের জানুয়ারি মাসে আত্মপ্রকাশ করে। উল্লেখ্য, অভিধানটির পুরনো পান্ডুলিপিতে অনেক শব্দের পরে তাদের উৎপত্তির মূল উৎস (Original sources of the words) এবং ইংরেজিতে যথারীতি তাদের অর্থ (Translation) লিখিত ছিল না। পরে পূরণের জন্য সেসব স্থলে ফাঁক রাখা হয়েছিল। উপরন্তু তাতে অনেক বাক্য কীটদষ্ট ও দুষ্পাঠ্য হয়ে যায়। সুতরাং পান্ডুলিপিটির কীটদষ্ট কথাগুলো যথাযথভাবে লিখন এবং তার অসম্পূর্ণ বাক্যগুলোর পূর্ণতা সাধনের ব্যবস্থাও জনাব হককে করতে হয়।            সে-সময়ে তিনি আরবি-ফারসির বাংলা প্রতিবর্ণায়ন বিষয়ক একটি পুস্তিকা প্রণয়ন করেন। অধ্যাপক ফয়েজ আহমদ চৌধুরী সংকলিত বাংলা-উর্দু অভিধান, মাওলানা মুহম্মদ আলাউদ্দীন আল            আযহারীর আরবী-বাংলা অভিধান, গোলাম মকসুদ হিলালীর বাঙলায় ফারসী-আরবী উপাদান, মাওলানা নূরুদ্দীন আহমদের অস-সব-উল-মুঅল্লকাত প্রভৃতি পুস্তকে আরবি-ফারসি-উর্দু শব্দের বাংলা প্রতিবর্ণায়ন (transliteration) যথাসম্ভব ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হকের উপরোক্ত পুস্তিকার নির্দেশ অনুসারেই সংসিদ্ধ ও মুদ্রিত। ১৩৩৯ বঙ্গাব্দের ফাল্গুনের মাসিক মোহাম্মদীতে এনামুল হক ‘আরবী ও ফারসী শব্দের বাঙ্গালা প্রত্যক্ষীকরণ’ শিরোনামে একটি নাতিহ্রস্ব নিবন্ধ লেখেন, যা 888sport app download apk latest versionের জগৎকে প্রভূত সহযোগিতা করে। বিদেশি ভাষার, বিশেষ করে আরবি, ফারসি, উর্দুর 888sport app download apk latest versionের ক্ষেত্রে তাঁর গভীর চিন্তা-ভাবনা, দিকনির্দেশনা এবং প্রণোদনা বাংলা ভাষা ও 888sport live footballের ভান্ডারকে সমৃদ্ধকরণে কাজ করেছে।

বিদেশি ভাষার সঙ্গে সঙ্গে বাংলার আদি ও মৌলিক বিষয়সমূহও এনামুল হকের নজর এড়ায়নি। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে 888sport free betতিরিক্ত অধ্যাপক রূপে তিনি চর্যাপদ ও ভাষাতত্ত্ব বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। এখানে আরো উল্লেখ্য, যখন বাংলা উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান ছিলেন বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী, তখন বোর্ডের ডিরেক্টর ছিলেন মুহম্মদ এনামুল হক। এনামুল হক বিচারপতি চৌধুরীকে বলেন, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা জমিদারবাড়িতে অনেক মূল্যবান বই-পুস্তক পড়ে আছে। এভাবে থাকলে তো চুরি হয়ে যাবে। এগুলো কি আনা যায়? বিচারপতি চৌধুরী প্রস্তাবটি তাঁর পিতাকে জানান। কারণ তাঁর পিতার সঙ্গে জমিদার-পরিবারের খুবই ঘনিষ্ঠতা ছিল। জমিদারগণ তখন ভারতের পশ্চিমবঙ্গে চলে গেছেন। বিচারপতি চৌধুরীর পিতা একটি চিঠি লিখলেন জমিদার কুমার জীবেন্দ্রকিশোর আচার্য চৌধুরীকে। জমিদার তখন বহরমপুরে। মুক্তাগাছায় তাঁদের বিরাট বড় কাছারি ছিল, বহরমপুরে গিয়ে তিনি একটি ছোট কাছারি করেন, একটি হাইস্কুল করেন। এসব নিয়ে তিনি পড়ে থাকতেন। সেখানে বিচারপতি চৌধুরীর পিতা চিঠি লিখতেই জমিদারবাবু ঠিক ফেরত ডাকে উত্তর দিলেন এই বলে, ‘আমি খুব খুশি হলাম যে আমার বইগুলো শেষ পর্যন্ত রক্ষা পেল। আপনি এটাকে লেটার অব অথরিটি মনে করে বাংলা উন্নয়ন বোর্ডকে বইগুলো নিয়ে আসতে বলুন।’ তারপর মুহম্মদ এনামুল হক তাঁর লোকজন নিয়ে গিয়ে বই দেখলেন এবং ট্রাকবোঝাই করে আনলেন। গভর্নিং বডি থেকে হাজার পঞ্চাশেক টাকা মঞ্জুর করালেন। বই বাঁধানো দরকার, শেলফ তৈরি করা দরকার। সেসব কিছু করে খুব সুন্দর করে বইগুলো এনামুল হক সাজিয়ে রাখলেন। বিচারপতি আবু সাঈদ চৌধুরী একটি সাক্ষাৎকারে (প্রতিচিন্তা, সেপ্টেম্বর-নভেম্বর ২০১২)  সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী অধ্যাপক সালাহউদ্দীন আহমদ, অধ্যাপক  মুস্তাফা নূরউল ইসলাম ও এনামুল হক (জাদুঘর বিশেষজ্ঞ) – এই তিনজনকে প্রসঙ্গটি জানিয়েছেন, যার মাধ্যমে মুহম্মদ এনামুল হকের ঐকান্তিকতা ও আগ্রহের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। পরবর্তীকালে বাংলা উন্নয়ন বোর্ড অবলুপ্ত করে বাংলা একাডেমি গঠিত হলে বইগুলো সেখানে আসে।

১৩৮৬ বঙ্গাব্দের শীতসংখ্যক 888sport live football পত্রিকায় প্রকাশিত ‘শেখ জাহেদ প্রণীত আদ্য পরিচয়’ শিরোনামের সুদীর্ঘ 888sport liveে মুহম্মদ এনামুল হক মুসলিম বাংলার আদিতম কবি শেখ জাহেদের ‘আদ্য পরিচয়’ (১৪৯৮ খ্রিষ্টাব্দ) নামক আধ্যাত্মিক ও অধিবিদ্যক কাব্যটির মূল পাঠ ও টীকা-ভাষ্য পরিবেশন করেন। সম্ভবত এটিই তাঁর সর্বশেষ রচনা।

বিভিন্ন সাময়িকপত্রে তাঁর যে-সকল গবেষণাধর্মী ও পরিচিতিমূলক 888sport live প্রকাশিত হয়েছিল, সেগুলো থেকে বাছাই করে তিনখন্ডে বিন্যস্ত মনীষা মঞ্জুষা মুক্তধারা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয়। বাংলা একাডেমি থেকেও তাঁর রচনাসমগ্র বের হয়েছে। তিনি বিভিন্ন 888sport app download bd ও সম্মাননায় ভূষিত হন : ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ (১৯৬২), ‘বাংলা একাডেমী 888sport app download bd’ (১৯৬৪), ‘প্রেসিডেন্ট 888sport app download bd’ (১৯৬৬), ‘888sport cricket BPL rateে পদক’ (১৯৭৯), ‘শেরে বাংলা 888sport live football 888sport app download bd’ (১৯৮০), ‘মুক্তধারা 888sport live football 888sport app download bd’ (১৯৮১) এর মধ্যে অন্যতম।

জন্মের ১১০ বছর পর মুহম্মদ এনামুল হকের জীবন ও কর্মের দিকে তাকালে এ-কথা স্পষ্টতই বলা যায় যে, অদম্য স্পৃহায় তিনি অধ্যবসায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন; বিরূপ পরিস্থিতিকে পরাজিত করে নিজের স্বকীয় মেধা ও মননশীলতার প্রমাণচিহ্ন অঙ্কন করতে পেরেছিলেন বাংলা ভাষা, 888sport live football ও সংস্কৃতির মহকালিক পাতায়। চট্টগ্রামের এই মনীষা অখন্ড বাংলা 888sport live footballের ইতিহাসে তুলনারহিত অবদান রেখে এ-জাতিসত্তার ঐতিহ্যের পরম্পরাগত সুতোটিকে উত্তর-প্রজন্মের হাতে ধরিয়ে দিয়ে কাল-কালান্তরের স্রোতে নিজের যশ ও কীর্তিকে সংস্থাপিত করে গেছেন।