আ হ মা দ মো স্ত ফা কা মা ল
মৃত্যু ব্যাপারটা খারাপ নয়, একটা মীমাংসা হয়ে যায়।
মীমাংসা? কিসের?
সবকিছুরই। আর কোনো হিসাব-নিকাশ বাকি থাকে না।
বুঝলাম না। মৃত্যুতে কীভাবে সবকিছুর মীমাংসা হয়?
আমরা তো সবসময়ই ভাবি, আমাদের আরো অনেক কিছু করার ছিল, হওয়ার ছিল, পাওয়ার ছিল। এটা হলো না বলে ওটা হলো না, এটা পাইনি বলে ওটা করতে পারিনি – এসব। একমাত্র মৃত্যুই পারে এগুলোর একটা মীমাংসা করতে। মানে, ওটুকুই তোমার করার ছিল, ওটুকুই পাওয়ার ছিল…
হুম। তবে সব মৃত্যুতে কিন্তু তা হয় না, কোনো কোনো মৃত্যুতে উলটোটাও ঘটে।
সেটা মৃত মানুষটির সমস্যা নয়, যারা রয়ে গেল তাদের সমস্যা। যে চলে যায় তার কোনো দায় থাকে না আর।
তা ঠিক। যে যায়, ভালোই যায়। সমস্যা তাদেরই, যারা রয়ে যায়। কিন্তু মীমাংসা কি খুব জরুরি?
যে একটা মীমাংসায় পৌঁছতে চায়, তার জন্য জরুরি তো বটেই।
তার মানে, সব মানুষই চায় না?
হয়তো চায়, হয়তো চায় না। তবে আমার মনে হয়, সব মানুষই কমবেশি চায়। কেউ কেউ তীব্রভাবে চায়, কেউ হয়তো মৃদুভাবে চায়।
আপনি চান?
কী?
মীমাংসা?
তরুণ অভিনেত্রী লাবণ্য বিভার এ-প্রশ্নের উত্তর দিলেন না জহির আহসান সাহেব। খ্যাতিমান নাট্যকার তিনি, একাধিক মঞ্চসফল নাটকের স্রষ্টা, টেলিনাটকেও তাঁর সফলতা ঈর্ষণীয়। মঞ্চের নির্দেশকরা আর টেলিনাটকের পরিচালকরা তাঁর সামনে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকেন একটা পা-ুলিপির জন্য; কিন্তু তিনি বিরলপ্রজ। বছরে তিন-চারটের বেশি নাটক লেখেন না, লিখতে চানও না। নাটক তাঁর রুটিরুজির সমস্যা মেটাতে অসমর্থ, তিনি তা বুঝেছেন অনেক আগেই। তাহলে আর 888sport free bet বাড়িয়ে কী লাভ? তার চেয়ে অল্প লিখে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব তৈরি করতে পারলেই হয়। তবে সাম্প্রতিককালে তাঁর ভাবনাজগতে একটা পরিবর্তন এসেছে। তিনি বুঝতে পারছেন, তাঁর কথাগুলো কোথাও গিয়ে লাগছে না, নাটকগুলো কোথাও দাঁড়াচ্ছে না। দর্শকদের 888sport sign up bonusতেও ওগুলো আর থাকছে না। অথচ নাটক এক জীবন্ত মাধ্যম, সংগীত বা 888sport live footballের মতো দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার সম্ভাবনা নাটকের নেই। যতক্ষণ মঞ্চে অভিনীত হচ্ছে, ততক্ষণ সেটি আছে, তারপর হারিয়ে যায়। এ ব্যাপারটি যখন প্রথম অনুভব করেছিলেন তিনি, তখন প্রায় মুষড়ে পড়েছিলেন। যে-888sport live chatমাধ্যমের জন্মতেই মৃত্যুর নিশ্চয়তা দেওয়া আছে, সেটা নিয়ে তাহলে এতগুলো মানুষ কাজ করে কেন? এই দুর্যোগ থেকে তিনি বেরিয়ে এসেছিলেন আরেকটি উপলব্ধির মাধ্যমে। নাটক বেঁচে থাকে মানুষের 888sport sign up bonusতে ও 888sport sign up bonusচারণে। যুগ থেকে যুগান্তরে প্রবাহিত হয় লোকমুখে, গল্পে গল্পে। অবশ্য নাট্য888sport live football বলে একটা ব্যাপার আছে, মানে কেবল 888sport live football হিসেবেই একে পাঠ করা যায়, তবে এদেশে সে-চর্চাও গড়ে ওঠেনি। পশ্চিমে নাট্য888sport live footballও 888sport live footballের এক বড় শাখা, আর এদেশে নাটক কেবল প্রদর্শনের বস্ত্ত। এসব বিবিধ কারণে তিনি আজকাল খানিকটা বিষাদে ভোগেন। মনে হয়, অহেতুক সময় ব্যয় করে এসেছেন এসবের পেছনে। আজকে, এসব দুর্ভাবনা আর দুর্যোগ থেকে একটু বাইরে বেরিয়ে নিশ্বাস নেওয়ার জন্য লাবণ্যর সঙ্গে বেরিয়েছেন তিনি, দূর-888sport slot gameে। অবশ্য নিঃশ্বাস নেওয়ার আগেই একটা দুঃসংবাদ এসে তাঁর আনন্দ888sport slot gameটিকে বিষাদে ভরে তুলল। গাড়ি 888sport app ছেড়ে হাইওয়েতে পৌঁছতেই ফোনকলটি এলো, তাঁর প্রিয়তম এক 888sport live chatীবন্ধুর মৃত্যুসংবাদ নিয়ে। খবরটি শুনে তিনি স্তব্ধ হয়ে রইলেন কিছুক্ষণ, যদিও অপ্রত্যাশিত নয় এ-খবর, অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন বন্ধুটি, তবু মৃত্যু তো মৃত্যুই। যে-কোনো কঠিন মানুষও মৃত্যুসংবাদে থমকে যায়, বিষণ্ণ হয়, বিষাদে আক্রান্ত হয়। তিনি একবার ভাবলেন, ফিরে যাবেন। কিছুই করার নেই তার, তবু যাওয়া উচিত। মৃত্যু তো একধরনের সামাজিকতাও। মৃতের বাড়িতে যেতে হয়, স্বজনদের সান্তবনা না দিলেও উপস্থিত থেকে জানাতে হয়, আমি তোমাদের শোকের অংশীদার। কিন্তু পরমুহূর্তে মত বদলালেন। আজকেই তো ফিরবেন তিনি, সন্ধ্যায় বা রাতে বা কাল সকালে এসব সামাজিকতা করা যাবে। 888sport live chatী-888sport live footballিকদের মৃত্যু এখন আর কোনো সাধারণ ব্যাপারে সীমাবদ্ধ নেই, অনেক রকম আনুষ্ঠানিকতা, 888sport apk download apk latest version-প্রদর্শনের নানা অভিনয় চলতেই থাকে। যারা কোনোদিন ফিরেও তাকায়নি, তারাও ফুল নিয়ে শহিদমিনারে রাখা কফিনে 888sport apk download apk latest version জানায়! বিরক্তিকর! নাহ, বিরক্ত হতে চান না তিনি এ-মুহূর্তে। তাই কথা শুরু করলেন লাবণ্যর সঙ্গে, মৃত্যু আর জীবনের মীমাংসা নিয়ে কথা। মেয়েটির বয়স অল্প, হয়তো তাঁর অর্ধেক বয়সী, তবু ওর সঙ্গে কথা বলে আনন্দ পান তিনি। বোঝাপড়া-জানাশোনা ভালো মেয়েটির, রিফ্লেক্স আর রেসপন্সও ভালো। শুধু শোনে না সে, বরং নিজেও দু-একটা মন্তব্য করে, উজ্জ্বল সব মন্তব্য, যা আলোচনাকে উসকে দেয়।
এই লাবণ্য বিভাকে আবিষ্কার করার ব্যাপারটাও মজার। তাঁর সর্বশেষ মঞ্চনাটকের নির্দেশক হাসান তারেকুল হক তাঁকে বলেছিলেন – আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
কী সারপ্রাইজ?
আহা সেটা বলে দিলে তো আর সারপ্রাইজটা থাকবে না!
ও! তা বটে। তা, কখন পাওয়া যাবে সেটা?
আমাদের উদ্বোধনী শোতেই পাবেন।
জহির সাহেব সাধারণত নাটকের মহড়া দেখতে যান না। তিনি যে-কল্পনা দিয়ে চরিত্র আর দৃশ্যগুলো নির্মাণ করেন, মহড়া দেখতে গেলে সেটি আর পান না। নাটকের মঞ্চায়নটা মূলত নির্দেশকেরই কাজ, তাঁরই কল্পনা, অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তিনি সেই কল্পনাকে একটা গ্রহণযোগ্য রূপ দেন। জহির সাহেব নির্দেশকের সেই কল্পনাকে বাধাগ্রস্ত করতে চান না। তবে হ্যাঁ, নানা দৃশ্য মঞ্চায়নের ব্যাপারে নির্দেশক যদি তাঁর সঙ্গে আলাপ করতে চান, তা তিনি করেন, বিস্তারিতভাবেই করেন। সেটা ঘরে বসে, মহড়াকক্ষে গিয়ে নয়। ফলে সারপ্রাইজটা দেখার জন্য তাঁকে প্রথম মঞ্চায়ন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হলো এবং তিনি সত্যিই সারপ্রাইজড হলেন। বিস্ময়ের নাম লাবণ্য বিভা। তারেকুল হক তাঁকে ঘুণাক্ষরেও বলেননি যে, প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তিনি নবীন এক অভিনেত্রীকে নিয়েছেন এবং এটিই তার প্রথম মঞ্চনাটক। চোখ-ধাঁধানো রূপ মেয়েটির, জহির সাহেবের বিস্ময়ের সেটিই একমাত্র কারণ নয়, পুরো নাটকে সে এমন এক অবিশ্বাস্য অভিনয়-প্রতিভার পরিচয় দিলো যে, তিনি ভুলেই গেলেন নাটকটি তাঁরই লেখা। তাঁর কল্পনাকে মূর্ত করে তুলতে মেয়েটি যা করছে তা তাঁর কল্পনাকেও হার মানাচ্ছে। 888sport app চরিত্রে বিখ্যাত সব অভিনেত্রী, সবাই যেন ম্লান হয়ে গেল নবীন এই অভিনেত্রীর কাছে। নাটক শেষে দর্শকদের বিরামহীন করতালি আর আলো জ্বলে ওঠার পরও আসন ছেড়ে উঠতে না চাওয়ার ভাব দেখে তিনি বুঝে গেলেন – এ-নাটকটিও দর্শকনন্দিত হবে। তিনি বসেছিলেন প্রথম সারিতে। দর্শকরা চলে যাওয়ার পর তারেকুল হক এসে তাঁকে ড্রেসিংরুমে নিয়ে গেলেন। সবাই পূর্বপরিচিত, কেবল লাবণ্য ছাড়া। পরিচয় করিয়ে দিলেন নির্দেশকই, লাবণ্য তাঁর পা ছুঁয়ে সালাম করল, আর তিনি মাথায় হাত রেখে ‘গড বেস্নস ইউ, তোমার অভিনয় অবিশ্বাস্যরকমের ভালো হয়েছে, লেগে থাকলে অনেকদূর যাবে তুমি’ বলে আশীর্বাদ করলেন। লাবণ্য এই আশীর্বাদ পেয়ে কেঁদে ফেলেছিল সেদিন। একে তো প্রথম মঞ্চে ওঠা, তার ওপর এতো বড় একজন নাট্যকারের নাটক, তার ওপর এতো বড় একজন নির্দেশকের সঙ্গে কাজ করতে পারা, এসবই তার স্বপ্নে ছিল, বাস্তবে কোনোদিন ধরা দেবে, ভাবেনি। আর এখন স্বয়ং নাট্যকারের প্রশংসা শুনে তার আবেগপ্রবণ মন আর বাঁধ মানছিল না।
প্রথম নাটকের অভিনয়ে মুগ্ধ ও বিস্মিত হলেও জহির সাহেবের একটু দ্বিধা ছিল। এরকম অনেক দেখেছেন তিনি, প্রথমদিকে দারুণ সম্ভাবনার পরিচয় দিয়েও অনেকেই হারিয়ে গেছেন। এই মেয়েটার অবস্থাও সেরকম হবে কিনা কে জানে! একটিমাত্র বিষয় নিয়ে ভাবার লোক নন জহির আহসান, জগতের বহু কিছু নিয়ে তিনি ভাবেন, তবু লাবণ্যর ভাবনাটা তিনি মাথা থেকে সরাতে পারলেন না। আরো কয়েকবার নিজের লেখা নাটকটি দেখতে গেলেন, এর আগে কখনোই এমনটি করেননি তিনি, প্রথম প্রদর্শনী আর বিশেষ কোনো একটি প্রদর্শনী – এই দুবার দেখাই যথেষ্ট মনে হয় তাঁর, এবারই তার ব্যতিক্রম ঘটল। এবং যতবারই দেখলেন ততবারই মুগ্ধ হলেন তিনি। ভাবলেন, মেয়েটাকে টেলিভিশনে কেমন লাগবে? এর চেয়েও গস্ন্যামারাস? অভিনয়ের নৈপুণ্য বোঝার জন্য মঞ্চের বিকল্প নেই, কিন্তু গস্ন্যামারটা টেলিভিশনেই ভালো আসে। অবশ্য উলটো উদাহরণও আছে। হুমায়ুন ফরীদির কোনো গস্ন¨vমার ছিল না, কিন্তু মঞ্চ আর টেলিভিশন দুটোতেই কি তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না? লাবণ্যকে একবার সুযোগ করে দিলে কেমন হয়? জানেন তিনি, একবার টেলিভিশনের মোহে পড়লে মঞ্চ থেকে হারিয়ে যাবে, এতো সম্ভাবনাময় একজন অভিনেত্রীর মঞ্চজীবনের ইতি ঘটবে, তারেকুল হকও ব্যাপারটা ভালোভাবে নেবেন না, তবু তিনি যত্ন করে একটা নাটক লিখলেন শুধু লাবণ্যকে মাথায় রেখে। তারপর এক বিখ্যাত পরিচালককে ডেকে স্ক্রিপ্টটি হাতে দিয়ে মঞ্চের নাটকটি এবং নতুন অভিনেত্রীকে দেখার পরামর্শ দিয়ে বললেন – ‘যদি তাকে পছন্দ হয় তাহলে এই নাটকটি আপনি তাকে দিয়েই করাবেন, নইলে করার দরকার নেই।’ পরিচালক সাহেব লাবণ্যকে না দেখেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন, তবে মনে মনে। ভালো স্ক্রিপ্ট আজকাল পাওয়াই যায় না, পেয়েও হাতছাড়া করার প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া নতুন অভিনেত্রীকে নিয়ে কাজ করার একটা সুবিধা আছে, যখন-তখন শিডিউল পাওয়া যায় তো বটেই, তিনিই যে এই অভিনেত্রীকে ব্রেক থ্রু দিয়েছেন সেটিও ইতিহাস হয়ে যায়।
তারেকুল হক ব্যাপারটা পছন্দ করলেন না, জহির সাহেবকে সেটা জানালেনও, তবে লাবণ্যকে বাধা দিলেন না। শুধু বললেন – টেলিভিশনের মোহে পড়ে মঞ্চ থেকে অনেক প্রতিভাবান অভিনেত্রীই হারিয়ে গেছেন, আশা করি তুমি হারাবে না।
লাবণ্য বলল – কিন্তু অনেককে তো দুটো মাধ্যমেই কাজ করতে দেখি।
হ্যাঁ, কারা এটা করতে পারেন জানো? যারা শুরুতে দীর্ঘদিন মঞ্চে কাজ করেছেন, মঞ্চের সঙ্গে একটা মায়ার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, তারা পারেন।
কনফ্লিক্টটা কেন হয় তারেক ভাই?
দুটো মাধ্যমের চরিত্রই আলাদা। তুমি নিজেই সেটা বুঝতে পারবে।
আমি মঞ্চ ছাড়ব না। টেলিভিশনে কাজ করার কোনো শখ আমার নেই। অন্তত এখন পর্যন্ত নেই। কিন্তু স্যার বললেন বলে…
হ্যাঁ, তোমার সৌভাগ্য, জহির ভাই নিজে তোমাকে তাঁর নাটকে চাইছেন। তিনি কিন্তু কখনো কাউকে চান না। সেজন্যই আমি তোমাকে না করছি না। এরকম সুযোগ তো সচরাচর পাবে না। যাও, মন দিয়ে কাজটা করো।
লাবণ্য মন দিয়েই করল। একটু বেশিই মন দিলো। ফলে প্রথম নাটকেই বাজিমাত করল সে। খ্যাতিমান নাট্যকার, ভালো গল্প, খ্যাতিমান পরিচালক, তার সঙ্গে সু-অভিনয় – একটা নাটক উতরে যেতে আর কী লাগে? রাতারাতি তারকাখ্যাতি পেয়ে গেল লাবণ্য, কিন্তু পথ হারাল না। ফিরে এলো মঞ্চে। দর্শকরা এবার মঞ্চে ভিড় করল, প্রতিটি প্রদর্শনী হতে লাগল হাউসফুল। তারেক সাহেব খুশি হলেন, ভাবলেন – জহির আহসানের কৌশলটা মন্দ হয়নি। দর্শকরা মঞ্চে তারকাদের দেখতে চায়, আর তারকা তৈরির জন্য টেলিভিশন বা live chat 888sportের বিকল্প নেই।
লাবণ্য খুব সহজেই বুঝে নিয়েছিল, এই হঠাৎ খ্যাতি আর এই বদলে যাওয়া জীবন কেবল তার নিজের কারণেই আসেনি। জহির সাহেব এবং তারেক সাহেবের সঙ্গে কাজ করার সুযোগটিই ছিল এর পেছনে প্রধান কারণ। যত ভালো অভিনয়ই সে করুক না কেন, যদি এত ভালো দল, ভালো নির্দেশক, ভালো চরিত্র না পেত তা হলে সে তার প্রতিভা দেখাত কীভাবে? টেলিভিশনের ব্যাপারটাও একইরকম। ওই নাটকের চরিত্রটি ছিল অনবদ্য, আবার পরিচালকও ছিলেন অভিনয় আদায় করে নেওয়ার ব্যাপারে খুবই খুঁতখুঁতে, সব মিলিয়ে ঘটনাটা ঘটে গেছে আর কি! সে যদি এসব ভুলে গিয়ে ইচ্ছামতো সবার সঙ্গেই কাজ করে বেড়ায় তা হলে যে তার পতন ঘটবে, সে তা নিশ্চিতভাবেই বুঝতে পারছিল। ফলে সে জহির-তারেক জুটিকেই ধরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে রইল। অধৈর্য হওয়ার কিছু নেই, সামনে দীর্ঘ পথ পড়ে আছে।
এর মধ্যেই জহির সাহেবের সঙ্গে একটা মধুর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল লাবণ্যর। খুব বেশি কথা বলেন না তিনি, চুপচাপ ধরনের মানুষ, কিন্তু কী করে যেন লাবণ্যর কাছে নিজেকে ধীরে ধীরে মেলে ধরতে লাগলেন। শুরুতে কথা হতো ফোনে, একদিন তিনি বাসায় নিমন্ত্রণ করলেন লাবণ্যকে। সে একটু দ্বিধায় ভুগছিল, বাসায় যাবে কি যাবে না এই নিয়ে, না গেলে কী অজুহাত দেবে, কিংবা অজুহাত দিয়ে একবার পার পাওয়া গেলেও যদি ফের নিমন্ত্রণ করেন তা হলে কী করবে সে? বারবার তো অজুহাত দেওয়া যাবে না! এই দ্বিধার মূল কারণ-জহির সাহেব বাসায় একা থাকেন, বিয়ে-থা করেননি, এসব সে শুনেছে সহ888sport live chatীদের কাছেই। তো, এরকম একজন ব্যাচেলর পুরুষের বাসায় একা যাওয়া কি ঠিক হবে? যদি স্ক্যান্ডাল রটে যায়? কিন্তু তার এও মনে হলো-জহির সাহেবের চারিত্রিক ত্রম্নটি নিয়ে এ-পর্যন্ত সে কিছু শোনেনি কারো কাছ থেকে। সবার ধারণা, তিনি একজন নিরাবেগ-নিরাসক্ত সন্ত টাইপের মানুষ। আচ্ছা দেখা যাক না কী হয়-ভেবে সে নিমন্ত্রণ রক্ষা করতে গেল। না, খারাপ কোনো অভিজ্ঞতা হলো না তার, বরং চমৎকার এক অনুভূতি নিয়ে ফিরল সে। একা থাকলেও তার ঘরদোর পরিপাটি, তার দীর্ঘদিনের গৃহকর্মীই এসব গুছিয়ে রাখে বলে জানালেন তিনি। প্রচুর বই, মিউজিক অ্যালবাম, তার মধ্যে তিনি একা এক নিঃসঙ্গ সম্রাটের মতো বসে থাকেন। অনেক কথা বললেন তিনি সেদিন, জানালেন-আর বেশি কাজ করার ইচ্ছা নেই তাঁর। দু-তিনটে অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পারলে নিজেকে অবসর দেবেন। কথায় কথায় বললেন-
আমি তোমার জন্য একটা নাটক লিখতে চাই। মঞ্চনাটক। একটা মিথিক্যাল ক্যারেক্টার নিয়ে। তোমার কোন ক্যারেক্টার পছন্দ?
এক মুহূর্ত না ভেবে লাবণ্য বলল – বেহুলা।
বেহুলা? কেন? তাকেই কেন পছন্দ?
বেহুলার সংগ্রামটা ভালো লাগে।
শুধু সংগ্রামটা? প্রেমটা নয়?
ওই সংগ্রামটা সে করতে পেরেছে তো প্রেমের জন্যই। গভীর ভালোবাসা না থাকলে কি কেউ অমন যুদ্ধ করতে পারে? ভালোবাসা দিয়ে মৃত মানুষকে বাঁচিয়ে তোলার ওরকম অসম্ভব যুদ্ধ?
ঠিক বলেছ। আমি যদি তাকে নিয়ে কোনো নাটক লিখি, তুমি পারবে?
আশা করি পারব।
গুড। আমাদের নেক্সট প্রোডাকশন হবে ওটা। মিথিক্যাল চরিত্র নিয়ে নাটক লেখার একটা বিপদ আছে। গল্পটা সবার জানা থাকে। যদি নতুন কোনো ইন্টারপ্রিটেশন না দেওয়া যায় তা হলে সেই নাটক দাঁড়ায় না। আমি সেই চেষ্টাই করব। তুমি মানসিকভাবে প্রস্ত্ততি নিয়ো।
ব্যাপারটা ছিল তার জন্য অবিশ্বাস্য। বেহুলার চরিত্রে অভিনয় করার কোনো সুযোগ যে এত তাড়াতাড়ি পেয়ে যাবে সে, কল্পনাও করেনি। প্রায় হাওয়ায় উড়তে উড়তে সে ফিরে এসেছিল সেদিন।
প্রথমদিন কোনো বিরূপ অভিজ্ঞতা হয়নি বলে এরপর সে সহজ হয়ে গিয়েছিল। নানা ছুতোয় সে যেত জহির সাহেবের বাসায়, গল্প করত, মাঝেমধ্যে রান্না করে খাওয়াত। ধীরে ধীরে নিজের ঘরবাড়ির মতোই সহজ হয়ে গেল এই বাড়িটি, তার কাছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, জহির সাহেবের সঙ্গে তার সম্পর্কের ধরন নিয়ে সে একা একাই ভেবেছে বহুবার, কিন্তু কোনো কূলকিনারা পায়নি। না-পাওয়ার কারণ – সে মানুষটিকে বুঝতে পারছে না। তিনি যে পছন্দ করেন তাকে, তা সে জানে। কিন্তু এই পছন্দের ধরন কী? প্রেম? না, তা মনে হয়নি কখনো। মুগ্ধতার ঝিলিক যদিও-বা দেখেছে কখনো তাঁর চোখে, প্রেম দেখেনি। কামনা? না, তাও নয়। মানুষটার চোখে কোনো পাপ নেই। কিন্তু একজন মানুষ কী করে এতটা কামনাবিহীন হতে পারে, সে ভেবে পায় না। একজন সুন্দরী তরুণী তাঁর একলা বাসায় এত স্বচ্ছন্দে যাওয়া-আসা করছে, তিনি চাইলে কী না হতে পারে? কিন্তু তিনি চান না, এমনকি কখনো ইঙ্গিতও করেন না। তাহলে কি বাৎসল্য? না, তাও ঠিক নয়। তাহলে কী? ভেবে পায় না লাবণ্য।
আর পাবেই বা কী করে? জহির সাহেবের মনের অতলে ডুব দিয়ে কিছু খুঁজে আনার সামর্থ্য যে তার নেই। না, তিনি নিষ্কাম নন, নিরাবেগও নন। কিন্তু জীবনের অনেকটা পথ তিনি পেরিয়ে এসেছেন, অনেক অনেক অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছে। মা যতদিন বেঁচে ছিলেন, ততদিন একটা পারিবারিক কাঠামোর মধ্যে ছিলেন তিনি। যদিও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তাঁর জীবনযাপন-চিন্তাভাবনার বিস্তর ফারাক তৈরি হয়ে গিয়েছিল, তবু তাদের ছেড়ে আসতে পারেননি। মা থাকলে আসলে ছেড়ে আসা যায় না। অনেকবার বিয়ের কথাও বলেছেন মা, জহির আহসান ও-পথ মাড়াননি। সত্যি বলতে কী, বিয়ে তিনি করেননি খেয়ালের বশে। তার কেবলই মনে হতো, বিয়ে মানে বন্দিত্ব, একজন অচেনা মানুষের সঙ্গে সারাজীবন কাটিয়ে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা, এই সম্পর্কের ভেতরে তিনি কোনো আকর্ষণ খুঁজে পাননি। তিনি বরং খুঁজেছিলেন প্রেম। কাউকে কাউকে ভালোও লেগেছিল, সম্পর্ক এগিয়েও ছিল, শরীর পর্যন্তও এগিয়েছিল; কিন্তু টেকেনি কোনোটাই। তার কেবলই মনে হতো, তিনি যেমনটি চান, তেমনটি পাচ্ছেন না। একটা সময়ে এসে তার মনে হতে থাকে, ওরকম আসলে পাওয়া যায় না। ওটা এক ধরনের ইউটোপিয়া। ধীরে ধীরে এ সবকিছু থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। মায়ের মৃত্যুর পর আলাদা বাসা নিয়ে একা থাকতে শুরু করেছিলেন, এখনো তাই আছেন। এভাবেই চলে গেছে অনেকগুলো দিন। বহুকাল পরে আরেকটি মেয়ের দিকে ফিরে তাকালেন জহির আহসান। কিন্তু তিনি নিজেও ঠিক স্পষ্ট করে জানেন না, মেয়েটির কাছে কী চান! বিয়ের বয়স পেরিয়ে এসেছেন অনেক আগেই, তাছাড়া মেয়েটির সঙ্গে বয়সের ব্যবধানও অনেক, প্রায় দ্বিগুণ। ঠিক সময়ে বিয়েটিয়ে করলে এই বয়সী একটা মেয়ে থাকতে পারত তাঁর। প্রেম বা বিয়ে তো সম্ভব নয়, তাহলে? শরীর? প্রেম ছাড়া শরীরের কথাও তিনি ভাবতে পারেননি কোনোদিন। প্রজাপতির মতো মেয়েটি ঘুরে বেড়ায়, উড়ে বেড়ায় তাঁর চারপাশে। তাঁর ভালো লাগে। এটুকুই। মানে, এখন পর্যন্ত এটুকুই। নিজেকে তিনি সময় দিচ্ছেন, মেয়েটিকেও। দেখা যাক কোথায় যায় সম্পর্কটি, কোনদিকে যায়, কতদূর যায়!
একদিন তাঁর শখ হলো, লাবণ্যকে নিয়ে বেড়াতে যাবেন। 888sport appর বাইরে। পদ্মাপারে। মাওয়ায় অথবা হরিরামপুরে। তিনি পরেরটাই সাব্যস্ত করলেন, মাওয়ায় অনেক ভিড়, হরিরামপুর সেই তুলনায় অনেক বেশি নির্জন, মায়াময় আর একান্ত। জায়গাটা তিনি চিনতেন না, তাঁর এক নাটকের শুটিং করতে এখানে এসেছিল একটা টিম, তিনিও সঙ্গে এসেছিলেন এই শুনে যে, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর করুণ স্থান’টিকে দেখতে চাইলে এখানে আসতে হবে! সত্যিই তাঁর ভারি পছন্দ হয়েছিল, ওখানকার গেস্ট হাউসে দুদিন থেকেও এসেছিলেন, সখ্য গড়ে উঠেছিল স্থানীয় কিছু তরুণের সঙ্গে, যারা ওখানকার 888sport live football-সংস্কৃতির চর্চাটাকে জিইয়ে রেখেছে। তাদেরই একজন উজ্জ্বলকে, নামের মতোই উজ্জ্বল এক যুবক, ফোন করে জানালেন ওখানে যাওয়ার কথা। উজ্জ্বল চাকরি নিয়ে ব্যস্ত, নিজে থাকতে পারবে না, জানাল, হিমেল থাকবে ওখানে আপনাকে রিসিভ করার জন্য, সব রেডি করা থাকবে।
আজকে সেই 888sport slot gameের দিন। দিনটা অনেক বেশি সুন্দর হতে পারত, কিন্তু বন্ধুর মৃত্যুসংবাদে বিষাদে ভরে গেছে তাঁর মন। কতই-বা বয়স হলো মামুনের? তার সমসাময়িকই তো! এত তাড়াতাড়ি যেতে হলো! তবে কি ডাক পড়তে শুরু করেছে? কী ভাবছিলেন তিনি বোঝা কঠিন, লাবণ্যর জন্য তো আরো কঠিন। সে কখনো মানুষটিকে ঠিকঠাক বুঝে উঠতে পারে না। ফোনটা আসার পর মৃত্যু নিয়ে কথা শুরু করেছিলেন, এখন তাও বলছেন না। গাড়ি হাইওয়ে ছেড়ে গ্রামের পথ ধরেছে অনেকক্ষণ। লাবণ্য পথঘাট কিছু চেনে না, কতক্ষণ লাগবে তাও জানে না। একটু অস্বস্তি লাগছিল তার, কিন্তু কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না।
গাড়ি এসে একটা ছোট্ট নদীর পারে দাঁড়াল। ফেরিঘাট। ফেরিটা ওপারে, আসতে কিছুটা সময় লাগবে। লাবণ্য জিজ্ঞেস করল – এটাই কি পদ্মা?
আরে না! পদ্মা এতো ছোট নাকি? এটা কালীগঙ্গা।
কালীগঙ্গা! সৈয়দ হকের কোনো লেখায় যেন এই নদীর কথা পড়েছি। ওটা তো মানিকগঞ্জে!
এটাও মানিকগঞ্জ। তবে তিনি যে-জায়গাটার কথা লিখেছেন সেটা শহরের কাছে, বেউথা ঘাট। আর এটা বালিরটেক ঘাট। একই নদী, তবে জায়গা ভিন্ন।
ও! আর কতক্ষণ লাগবে?
এই তো এসে গেছি। নদীটা পার হলে দশ-বারো মিনিটেই পৌঁছে যাব। তোমার খারাপ লাগছে?
নাহ… না তো! কেন জিজ্ঞেস করলেন?
ভালো লাগলে কেউ যাত্রাপথের কথা জিজ্ঞেস করে না। কতদূর, কতক্ষণ লাগবে – এসব প্রশ্ন ভুলে যায়।
আপনি কি ঈশ্বর? সব কেন আপনাকে বুঝে ফেলতে হবে? – মনে মনে বলল লাবণ্য, মুখে বলল অন্য কথা – খারাপ লাগছে না, তবে আপনি এত চুপচাপ আজকে…
হ্যাঁ, একটু অন্যমনস্ক হয়ে গিয়েছিলাম। সরি।
না না, সরি হওয়ার কিছু নেই।
অবশ্যই আছে। তোমাকে নিয়ে এলাম, অথচ তোমার জার্নিটা বোরিং করে তুলেছি। আসলে মামুনের মৃত্যুর খবরটা এত অসময়ে এলো… আমার তো পরিবার-পরিজন বলতে কিছু নেই, এই 888sport live chatীরাই আমার পরিবার, আমার আপনজন…
আমি বুঝতে পারছি…
জানো, আমার মাঝে মাঝে মনে হয় – যদি ইচ্ছামৃত্যু বলে কিছু থাকত তা হলে বেশ হতো।
আত্মহত্যার কথা বলছেন?
না। ইচ্ছামৃত্যু। স্বাভাবিক মৃত্যু, তবে নিজের সময়টিকে নিজের ইচ্ছামতো বেছে নেওয়া।
ব্যাপারটা ভালো হতো বলে মনে হয় না।
কেন?
কেউ মরতে চাইত না। বুড়োলোকে পৃথিবী ভরে যেত।
নাহ। মানুষ ক্লান্ত হয়ে যেত একসময়। কতদিনই বা বেঁচে থাকতে সাধ হয়?
কেন এসব কথা বলছেন বারবার?
ওহ! না থাক। ফেরি এসে গেছে, চলো উঠি।
ফেরিঘাট থেকে হরিরামপুর উপজেলা সদরে পৌঁছতে বেশিক্ষণ সময় লাগল না আর। হিমেল অপেক্ষা করছিল তার বন্ধুদের নিয়ে। বলল – আগে ফ্রেশ হয়ে নেন। তারপর খেয়েদেয়ে একটু বিশ্রাম করে পদ্মায় বেড়াতে যাবেন। সব ব্যবস্থা করা আছে।
ছইওয়ালা নৌকা পেয়েছ? এক মাল্লার?
জি পেয়েছি।
কোথায় পেলে? আজকাল তো আর দেখাই যায় না।
দু-একটা এখনো আছে। আগে থেকে একজনকে বলে রেখেছিলাম।
থ্যাংক ইউ।
ওটা পরে দেবেন ভাইয়া। এবার চলুন। একটু ফ্রেশ হয়ে নেবেন।
জহির সাহেব আনুষ্ঠানিকতা এড়িয়ে চলেন, আতিথেয়তাও। কিন্তু এখানে এসে পারলেন না। হিমেল আর তার বন্ধুরা ইতোমধ্যেই খাওয়া-দাওয়ার বিশাল আয়োজন করে ফেলেছে, গেস্ট হাউসে দুটো রুমও পরিপাটি করে সাজানো। দোষটা তাঁরই। তিনি ভেবেছিলেন রাতে থাকবেন, সেভাবেই বলে রেখেছিলেন। আজকে যে তাঁকে ফিরতে হবে, মামুনের বাসায় যেতে হবে, এসব কিছু আর জানানো হয়নি। পরিস্থিতিটা হঠাৎ পালটে গেছে, তিনিও খানিকটা অন্যমনস্ক হয়ে ছিলেন খবরটা পাওয়ার পর থেকে, জানানোর কথা মনেই পড়েনি। এদিকে এরা এরকম ব্যবস্থা করে ফেলেছে। তাঁকে বাধ্য হয়েই খেতে বসতে হলো। তিনি মাছ খেতে পছন্দ করেন, এখানে পদ্মার মাছ পাওয়া যায়, ভারি সুস্বাদু, খাওয়ার টেবিলে বসে দেখলেন হরেক রকমের মাছ। মাংস শুধু এক পদের, হাঁসের। এটাও তিনি পছন্দ করেন। মায়ের হাতে অমৃতসমান হাঁসের মাংস রান্না হতো, তিনি চলে যাওয়ার পর খুব একটা সুযোগ হয় না খাওয়ার। পেটপুরে-মনভরে খেলেন তিনি, খেলো লাবণ্যও, এমন স্বাদের রান্না নাকি সে জীবনেও খায়নি। খেয়ে একটু শরীর খারাপ লাগতে লাগল জহির সাহেবের। আজই ফিরতে হবে, আবার এতদূর এসে নৌকায় চড়ে পদ্মায় একটু ঘুরে না বেড়ালে 888sport slot gameটাই অর্থহীন হয়ে যায়, এদিকে রোদের তেজ এখনো কমেনি, বৈশাখের রোদ এত সহজে মরেও না, সব মিলিয়েই কেমন যেন একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি। তিনি 888sport appয় খবর নিলেন। না, আজকে মামুনের দাফন হচ্ছে না, কালকে শহিদমিনারে 888sport apk download apk latest version নিবেদনের জন্য নেওয়া হবে তার মরদেহ, তারপর জানাজা, দাফন করতে করতে দুপুর। তিনি একটু নিশ্চিত হলেন। যদি কোনো কারণে আজকে ফিরতে বেশি দেরি হয়ে যায়, বা ফেরা নাও হয়, তবু কাল গিয়ে সব আনুষ্ঠানিকতায় থাকতে পারবেন তিনি। মনের ভেতর থেকে খুঁতখুঁতে ভাবটা দূর করার চেষ্টা করলেন তিনি।
হিমেল বলল, ভাইয়া, একটু রেস্ট নেন। নৌকা রেডি করাই আছে। রোদ একটু পড়লে বেড়াতে ভালো লাগবে।
কিন্তু হিমেল, আমার তো আজকে ফিরতে হবে।
আজকে? আপনি না থাকতে চেয়েছিলেন?
হ্যাঁ, সেরকমই ভেবেছিলাম; কিন্তু মামুনের মৃত্যুর খবরটা পেলাম রওনা দেওয়ার পর…
ও! ঠিক আছে ভাইয়া, ফিরতে চাইলে ফিরবেন। বেশি দূরের পথ তো নয়। রাতে রওনা দিলেও পৌঁছে যাবেন।
কিন্তু ফেরি খোলা থাকে কটা পর্যন্ত?
ওটা কোনো সমস্যা নয় ভাইয়া। আপনি যখনই ফিরবেন তখনই খুলে দেওয়া যাবে।
পথঘাট নিরাপদ তো?
ওসব ভাববেন না। আমরা আপনাকে এগিয়ে দিয়ে আসব। আপনি রুমে গিয়ে রেস্ট নেন, আমি আশপাশেই আছি। ফোন করলেই হাজির হয়ে যাব।
এই ছেলেদের কাছে কোনো সমস্যাই সমস্যা নয়, তাঁর ভালো লাগে এরকম উদ্দাম সাহসী তারুণ্য।
জহির সাহেব লাবণ্যর দিকে ফিরে বললেন, চলো একটু বিশ্রাম নেওয়া যাক, তারপর বেরোব।
লাবণ্য এতক্ষণ তেমন কথা বলেনি। এখানকার আতিথেয়তার ধরন দেখে সে ভীষণ অবাক হয়েছে। একটা অচেনা জায়গায় এসে এরকম অভ্যর্থনা সে আশা করেনি। রুমটাও পরিপাটি করে সাজানো। ইতোমধ্যেই তার সবকিছু ভালো লাগতে শুরু করেছে। ফেরি পার হওয়ার পরই এ-অঞ্চলের রূপ-সৌন্দর্য তার চোখ ও মন দুটোই কেড়ে নিয়েছে, ইচ্ছা করছে দু-চারদিন থেকে যেতে। কিন্তু জহির সাহেব অস্থির হয়ে উঠেছেন। এমনই ভাগ্য, আজকের দিনেই দুঃসংবাদটা না এলে কী হতো! রুমে গিয়ে সে আরেকটু পরিপাটি হলো। পোশাক পালটে নতুন শাড়ি পরল, কপালে নতুন টিপ, চোখে গভীর করে কাজল, চুলগুলো আঁচড়ে এলোখোঁপা বাঁধল। শুলো না সে, চেয়ারে বসে একটা পত্রিকা পড়তে শুরু করল, কিছুক্ষণ ফেসবুক ঘুরল, আর অপেক্ষায় রইল – কখন ডাক পড়বে।
জহির সাহেবের অবস্থা ততটা সুবিধের নয়। বেশি খেয়ে হাঁসফাঁস লাগছিল, সেটা আরো বাড়ল। এসি রুম, তবু ঘামতে লাগলেন তিনি। একটু অস্থির ভাব, বুকের ভেতরে অস্বস্তি। বিছানায় শুয়ে হাঁসফাঁস করতে লাগলেন তিনি, কিন্তু কাউকে জানতে দিলেন না। অনেকক্ষণ পর, দুপুরের রোদ ততক্ষণে পড়ে এসেছে, বিকেল নামছে 888sport app download apkর ভঙ্গিতে, তাঁর মনে হলো – এবার বেরোনো দরকার। আর দেরি করা যাবে না। এখনো তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি, থাকবেন না ফিরে যাবেন। তবে ফিরে যাওয়ার দিকেই ঝোঁক বেশি। হিমেলকে কল দিলেন তিনি, লাবণ্যকেও। বললেন – রেডি হয়ে নাও, চলো বেরোনো যাক। লাবণ্য জানাল – সে রেডি হয়েই আছে।
হিমেল এসে তাদের নিয়ে চলল পদ্মাপারের দিকে। জহির সাহেব আগেও এসেছেন, লাবণ্য আসেনি, তিনি লাবণ্যর বিস্ময়টা দেখতে চেয়েছিলেন বলে কিছু বলেনওনি। আন্ধারমানিক বাজারের পাশ দিয়ে বেরিয়ে হঠাৎ নদীর ঘাটে এসে পড়ল তারা। চোখের সামনে বিশাল এক নদী, বিস্ময়ধ্বনি বেরিয়ে এলো লাবণ্যর কণ্ঠ থেকে।
এত বড় নদী! এখানে! কল্পনাও করিনি।
জহির সাহেব মৃদু হাসি নিয়ে লাবণ্যর দিকে তাকিয়ে রইলেন।
ঘাটে ছইওয়ালা নৌকা বাঁধা। এসব নৌকা এখন আর খুব একটা দেখা যায় না। সড়কপথে যাতায়াত সহজ হয়ে গেছে বলে লোকজন এসব বিলাস আর করে না এখন। নৌপথেও এখন
ইঞ্জিন-নৌকার জয়জয়কার। সবার খুব তাড়া, এরকম ধীরগতির নৌকায় চড়ে অলস 888sport slot gameের সময় কোথায়? অথচ ছইওয়ালা এক মাল্লার এসব নৌকা কতই না রোমান্টিক ছিল! একটা প্রাইভেসি আছে এসব নৌকায়, বাইরে থেকে ভেতরের কিছু দেখা যায় না।
হিমেলকে ধন্যবাদ জানিয়ে লাবণ্যকে নিয়ে নৌকায় উঠলেন জহির সাহেব। বিকেল নেমে এসেছে, রোদের তেজ মরে গেছে, নদীর থেকে উঠে-আসা উদার-উদ্দাম হাওয়া শরীর-মনকে শীতল করে তুলছে। মাঝি নৌকা ছেড়েছে বেশ কিছুক্ষণ আগে, জিজ্ঞেস করেছে কোনদিকে যাবে, জহির সাহেব বলেছেন – যেদিকে ইচ্ছা যান, মাঝিভাই। আমরা আপনাদের দেশ দেখতে এসেছি।
আইচ্ছা স্যার।
লাবণ্যর কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে এই 888sport slot game, মনে পড়ছে তার প্রিয় লেখকের এক 888sport alternative linkের কথা। কালোবরফ। আবদুল খালেক তার বউ রেখাকে নিয়ে নৌকায় ঘুরতে বেরিয়েছিল, সেটা অবশ্য অন্য এলাকায়, তবু তার মনে হচ্ছে – 888sport alternative linkের পাতা থেকে উঠে এসে সেই দিন যেন তার জীবনে ফিরে এসেছে। টুকিটাকি কথা চলছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল অগাধ-অবাধ জলরাশির দিকে চুপচাপ তাকিয়ে থাকা। একটু দূরে চর এলাকা, সেখানে সবুজের সমারোহ, যেন জীবনানন্দের 888sport app download apk রচিত হয়েছে এইখানে – সবুজ ঘাসের দেশ যখন সে চোখে দেখে দারুচিনি দ্বীপের ভেতর। এত সুন্দর, এত মায়াময়!
তোমার ভালো লাগছে?
হুঁ, খুউব। মনে হচ্ছে জীবনটাই বদলে গেছে, কোনো দুঃখের কথা আর মনে পড়ছে না, কোনো গ্লানির কথা মনে পড়ছে না, কোনো অপমান যেন আসেনি কখনো এ-জীবনে। সুনীল লিখেছিলেন না – ‘পাপ ও দুঃখের কথা ছাড়া আর এই অবেলায় কিছুই মনে পড়ে না।’ এখানে এলে লিখতেন – এই অবেলায় সুখ আর আনন্দের কথা ছাড়া আর কিছুই মনে আসে না।
জহির সাহেব মৃদু একটু হাসলেন। মেয়েটাকে তার ভালো লাগার এ-ও এক কারণ। প্রচুর পড়ে সে, বোঝা যায়। কথা বলার সময় দু-চারটে 888sport app download apk বা গল্প বা 888sport alternative linkের প্রসঙ্গ এসেই পড়ে। পড়ুয়া না হলে এটা হতো না। যদিও এ নিয়ে তার কোনো অহংকার নেই। লাবণ্যর আনন্দ দেখে তার ভালো লাগছিল, কিন্তু শরীরটা ভালো লাগছে না। এমন অপূর্ব এক মুহূর্তে শরীরবিষয়ক আলোচনা ভালো-লাগার কথা নয়, তাই তিনি কিছু বললেনও না।
আকাশে মেঘ করেছে, তিনি মাঝির কাছে জানতে চাইলেন – ঝড়টড় হবে নাকি মাঝিভাই।
না মনে লয়। এট্টু ম্যাঘ-বিষ্টি অইতে পারে।
ভয়ের কিছু নাই তো?
আরে না। ভয় কিয়ের?
বিকেল ফুরিয়ে এলো দ্রুত, নেমে এলো অলৌকিক সন্ধ্যা। তীর থেকে অনেকটা দূরে চলে এসেছে নৌকা। কোথাও কোনো কোলাহল নেই, ঢেউয়ের একটানা মৃদু শব্দ ছাড়া কোথাও কোনো শব্দও নেই। একেই কি শিশিরের শব্দের মতো সন্ধ্যা বলে, যখন ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল! তাদের মুগ্ধতা বাড়ানোর জন্যই হয়তো একটু পর বিরাট এক চাঁদ উঠল। মেঘ আর চাঁদের লুকোচুরি খেলা চলতে লাগল পালাক্রমে। নদীর জলে এই জ্যোৎস্না তো এই অন্ধকার। যেন-বা চঞ্চল কোনো কিশোরী লুকোচুরি খেলতে গিয়ে একবার মুখ দেখাচ্ছে, আবার লুকিয়ে ফেলছে নিজেকে! একেবারেই গল্পের মতো, 888sport alternative linkের মতো, সিনেমার মতো সবকিছু ঘটে চলেছে – এই কথা মনে হলো লাবণ্যর। জহির সাহেব বললেন –
একজন অতিবিখ্যাত লেখক জোছনারাতে মরতে চেয়েছিলেন। 888sport alternative link লিখতেন তিনি, লিখতেন গল্পও; কিন্তু অদ্ভুত সুন্দর কয়েকটা গান লিখেছিলেন। তেমনি এক গানে তিনি পরম করুণাময়ের কাছে আকুতি জানিয়েছিলেন – চাঁদনী পসর রাতে যেন তার মৃত্যু হয়। কিন্তু তিনি মারা গেলেন বিদেশের এক হাসপাতালে, দুপুরবেলা, রোদে পোড়া এক শহরে। তার নিজের দেশে তখন রাত, তবে জোছনাপস্নাবিত নয়, ঘোরতর অমাবস্যা। তাঁর এই সামান্য ইচ্ছাটুকুও পূরণ হয়নি। অথচ যদি ইচ্ছামৃত্যু থাকত তাহলে এরকম জোছনামুখর রাতে এরকম এক নদীর ভেতরে নৌকার পাটাতনে শুয়ে জোছনা দেখতে দেখতে মরে যেতে পারতেন। সবারই মৃত্যু নিয়ে কিছু রোমান্টিকতা থাকে, অধিকাংশ মানুষের সেটা পূরণ হয় না।
আপনি কিন্তু প্রকারান্তরে নিজের সাধের কথাই বলে দিলেন।
কী রকম?
আপনার লেখক চাঁদনী পসর রাতে মরতে চেয়েছিলেন, নদী বা নৌকার কথা সেখানে ছিল না। ওটুকু আপনার ইচ্ছার প্রতিফলন।
তা হয়তো নয়। তবে এই নদীর ভেতরে এরকম মন-ভোলানো জোছনা দেখে আমার মরে যেতে ইচ্ছা করছে। খুব সুন্দর কিছু দেখলে আমার মরে যেতে ইচ্ছা করে। এই এখন যেমন ইচ্ছা করছে – তোমার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ি, চিরকালের জন্য।
লাবণ্য কোল পেতে দিয়ে বলল – এখানে মাথা রেখে শুয়ে থাকুন একটু।
বাধ্য ছেলের মতো তাই করলেন জহির সাহেব। লাবণ্য তাঁর চুলে বিলি কাটতে কাটতে বলল – চিরকালের মতো ঘুমিয়ে পড়ার চিন্তাটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। আজকে সারাদিন কেবল মৃত্যুর কথা ভেবেছেন। মৃত্যু তো আসবেই, তাকে তার মতো আসতে দিন, ডেকে আনার দরকার নেই।
জহির সাহেবের শরীরটা আরো খারাপ করেছে। ঘাম হচ্ছে বেশ, বুকে অস্বস্তি, একটু চিনচিনে ব্যথা। ব্যথাটা কি বাড়ছে? শরীরটা কেমন ভারী হয়ে আসছে, অবশ অবশ, চোখজুড়ে নামছে ঘুম। কেমন আচ্ছন্নভাব শরীরজুড়ে, ছায়া ছায়া, মায়াময়। তিনি চোখের পাতা খুলে রাখার চেষ্টা করলেন; কিন্তু পাথরের মতো ভারী হয়ে আসছে চোখদুটো, কোনোভাবেই খুলে রাখা যাচ্ছে না। ঘুম আসছে, ঘুম। গভীর ঘুম, অনন্তকালের জমানো ঘুম যেন একসঙ্গে নেমে আসছে চোখে। লাবণ্যর উদ্বিগ্ন কণ্ঠ শুনতে পেলেন তিনি – আপনি এত ঘামছেন কেন? শরীর খারাপ লাগছে?
তিনি আচ্ছন্ন গলায় বললেন – আমাকে ধরে রাখো, শক্ত করে ধরে রাখো, আমি একটু ঘুমাই।
লাবণ্য শক্ত করেই জড়িয়ে ধরে বসে রইল, বসেই রইল অনেকক্ষণ। জহির আহসান ঘুমিয়ে পড়লেন, লাবণ্য বসেই রইল। অনেকক্ষণ পর তার মনে হলো – এই এতক্ষণ ধরে সে ভাবনাহীন বসে আছে, কিছুই ভাবেনি, অথবা ভাবলেও কিছু মনে পড়ছে না সেসব। জহির আহসান ঘুমোচ্ছেন। তার শরীর ঠান্ডা হতে হতে এতক্ষণে শীতলপ্রায়, নিঃসাড় পড়ে আছেন, শ্বাস-প্রশ্বাস নেই, প্রাণের চিহ্ন নেই কোথাও। লাবণ্য তবু জড়িয়ে ধরে বসে আছে। কিছুই ভাবতে পারছে না সে, কিছুই না। খারাপ কিছু কি ঘটেছে? কেন কোনো সাড়া নেই তাঁর? কী হয়েছে? কেন বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে তাঁর শরীর? কেন নিশ্বাস নেই? কী করবে সে এখন? হিমেলকে ফোন করবে? অথবা অন্য কাউকে? ফোন করে কী হবে? নৌকা এখন মাঝনদীতে। কেউ তো ছুটে আসতেও পারবে না। আর পারলেই কী? সে কীভাবে নিয়ে যাবে জহির আহসানকে? কোথায় নিয়ে যাবে?
মাঝির কণ্ঠ শোনা গেল এই সময় – স্যার কি ঘুমায়া গেলেন? নাও কি ঘুরামু? রাইত তো বাড়তেছে! বিষ্টিও শুরু অইলো!
লাবণ্যর কী হয় বোঝা যায় না, বলে – মাঝিভাই, আপনার এই নৌকার দাম কত?
ক্যান গো বইন, দাম জিগান ক্যান?
আমি আপনাকে নৌকার দামটা দিয়ে দেবো। আপনি কোথাও ভেড়ান, তারপর নৌকাটা ভাসিয়ে দেন।
মাঝি কোনো উত্তর দেয় না। অল্পবয়সী মেয়েরা এসব উদ্ভট কথাবার্তা বলে, সে জানে। পাত্তা দেওয়ার কিছু নেই। সে তীরের দিকে নৌকা ঘোরায়।
বৃষ্টি বাড়ছে। বাতাসও। নৌকাটা দুলছে বেশ। ডুবে যাবে নাকি? গেলে যাক। মাঝিভাই নিশ্চয়ই সাঁতার জানে, সে মরবে না। সলিল সমাধি হবে তাদের দুজনের! মন্দ কী? ছোটবেলায় শেখা ‘সলিল সমাধি’ শব্দদুটো এতদিনে ব্যবহার করা গেল ভেবে সে অকারণে খুশি হয়ে উঠল। কোলের ওপর জহির আহসান, ঘুমোচ্ছেন, কী নিষ্পাপ তাঁর মুখ, শিশুর মতো আদরমাখা, অথচ দিব্যকাস্তি এক পুরুষ। বৃষ্টি বেড়েই চলেছে। মাঝিভাই প্রাণপণে বেয়ে চলেছে। কোথায় যাচ্ছে তারা? কোন নিরুদ্দেশে? লাবণ্য ভাবে – তার কথামতো মাঝিভাই নৌকাটা ভাসিয়ে দিলে সে মনমতো জহির আহসানের শুশ্রূষা করতে পারবে। আদরে-সোহাগে-চুম্বনে তার ঘুম ভাঙাবে, তারপর বলবে – বেহুলাকে নিয়ে নাটকটা আপনার লেখার দরকার নেই। ওই চরিত্রে আমি অভিনয় করব না। r

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.