বাংলা গানের ইতিহাসে অতুলপ্রসাদ সেন (১৮৭১-১৯৩৪) একটি অনন্য ও উজ্জ্বল নাম। হাজার বছরের বাংলা গানের ধারায় তিনি সঞ্চার করেছেন, বাণী ও সুরে, একটি স্বকীয় মাত্রা। কেবল গীতিকার হিসেবেই নয় – রাজনীতিবিদ, সমাজ-সংস্কারক, শিক্ষানুরাগী, 888sport live football-সংগঠক, আইনজ্ঞ এবং সর্বোপরি একজন সংবেদনশীল মানুষ হিসেবেও, বাঙালির কাছে, তিনি সমধিক পরিচিত। অতুলপ্রসাদ, প্রকৃত অর্থেই, শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বাঙালি। তাঁর গানের 888sport free bet রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) কিংবা কাজী নজরুল ইসলামের (১৮৯৯-১৯৭৬) মতো বিপুল নয়; মাত্র দুশো আটটি গানের জনয়িতা তিনি – তবু, এই স্বল্পসংখ্যক গানের মধ্য দিয়েই প্রকাশিত হয়েছে অতুল-প্রতিভার প্রাতিস্বিকতা। দুঃখ-যন্ত্রণা আর প্রবঞ্চনা-প্রতারণাপীড়িত বাঙালিকে তিনি শুনিয়েছেন বেদনাবিজয়ী পরমার্থসংগীত – অধ্যাত্মসাধনার অমৃত-আলোয় তিনি নির্মাণ করেছেন এক অনুপম জ্যোতির্ময়লোক। অতুলপ্রসাদের সংগীত, এ-কারণেই, বেদনাপীড়িত যন্ত্রণাদীর্ণ সংবেদনশীল বাঙালির কাছে প্রতিভাসিত হয় আশা আর আশ্বাস, সান্ত্বনা আর শুশ্রƒষা আর স্থৈর্যের এক অফুরান উৎসরূপে। সমাজ-সংস্কারক, 888sport live football-সংগঠক এবং জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ হিসেবেও তিনি রেখেছেন উজ্জ্বল কীর্তির স্বাক্ষর। বিদ্যাসাগর (১৮২০-৯১) কিংবা রবীন্দ্রনাথের মতো, অতুলপ্রসাদের মানসলোকেও সাধিত হয়েছিল ভাবয়িত্রী এবং কারয়িত্রী প্রতিভার এক অপূর্ব সমন্বয় ও সংগতি।
অতুলপ্রসাদ সেনের কর্ম ও রাজনৈতিক জীবন বর্ণাঢ্য
কৃতিতে ভাস্বর। শৈশব থেকেই অতুলপ্রসাদের জীবনাচরণে রাজনীতি-সচেতনতার স্ফুরণ পরিলক্ষিত হয়। মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্তের অনুপ্রেরণাতেই তিনি রাজনীতির প্রতি অনুরাগী হয়ে ওঠেন। রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ, মনমোহন ঘোষ, আনন্দমোহন বসু, টি পালিত প্রমুখ রাজনীতিবিদের বক্তৃতা শুনে তিনি রাজনীতির প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। উত্তরজীবনে এই আকর্ষণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়। রাজনীতিতে যোগদান করলেও তিনি ছিলেন সকল প্রকার রাজনৈতিক সংকীর্ণতা ও পার্টি-পলিটিক্সের ঊর্ধ্বে। মানসিক দৃষ্টিভঙ্গির উদারতার কারণে ভিন্ন মতাদর্শের অনেকের সঙ্গে তিনি সহজ সম্পর্ক স্থাপন করতে সমর্থ হয়েছিলেন। অতুলপ্রসাদ সেনের সঙ্গে একাধারে যেমন সম্পর্ক ছিল মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, মতিলাল নেহরু, জওহরলাল নেহরু, এইচ.সি. পোলক প্রমুখের, তেমনি গোখলে, অ্যানি বেসান্ত, মালব্যজী, শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার, তেজবাহাদুর সপ্রু, সুরেন্দ্রনাথ, সি. ওয়াই. চিন্তামণি, লর্ড সিন্হা, লালা লাজপৎ রায় প্রমুখের সঙ্গেও ছিল গভীর অন্তরঙ্গতা। বিপিনচন্দ্র পালের সঙ্গেও ছিল তাঁর নিবিড় সখ্য।
রাজনীতি-সচেতনতা শৈশব-কৈশোরেই অতুলপ্রসাদের চেতনায় সঞ্চার করেছে অসাম্প্রদায়িকতার ভ্রƒণকোষ। শৈশবে 888sport app শহরে মহররমের তাজিয়া, জন্মাষ্টমীর মিছিল, হোলির গানে হিন্দু-মুসলমান উভয় সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণ তিনি প্রত্যক্ষ করেছেন। উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতির ভাব শৈশবেই তাঁকে অসাম্প্রদায়িক পরিমণ্ডলে বড় হয়ে ওঠার অনুপ্রেরণা দিয়েছে। সাম্প্রদায়িকতাকে তিনি ঘৃণা করতেন। ১৯২৪ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লখ্নৌ শহরে সংঘটিত দাঙ্গার সময় অতুলপ্রসাদ দাঙ্গা-নিরসনে আপ্রাণ চেষ্টা করেন। জীবনের ঝুঁকি সত্ত্বেও মুসলিম বন্ধুদের নিয়ে তিনি দাঙ্গাবিধ্বস্ত এলাকায় ঘুরেছেন, দাঙ্গা-নিরসনের জন্য উভয় সম্প্রদায়ের মানুষকে বুঝিয়েছেন। দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সেবা-শুশ্রƒষার জন্যও তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান। হিন্দু-মুসলমানের মিলিত জীবনস্রোতে অবগাহন করে তিনি মূলত উদার মানবতাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে উঠেছিলেন।
রাজনীতি-সচেতনতা অতুলপ্রসাদের চিত্তলোকে উপ্ত করেছে স্বদেশপ্রেমের বীজ। স্বদেশের প্রতি প্রবল ভালোবাসা তাঁর চরিত্রের উল্লেখযোগ্য গুণ। ব্যারিস্টারি পড়ার উদ্দেশ্যে জাহাজযোগে ইংল্যান্ড যাওয়ার সময় ভারতীয় নাগরিকদের প্রতি ইংরেজ নাবিকশ্রেণির অবমাননাকর ব্যবহারে তিনি ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ হন। ইংল্যান্ড গিয়ে ব্রিটিশদের অসৌজন্যমূলক ব্যবহারে তিনি ব্যথিতচিত্তে পরাধীনতার গ্লানিতে যন্ত্রণাবিদ্ধ হয়েছেন। এইসব বৈরী ঘটনায় তিনি ক্রমশই স্বদেশচিন্তায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ওঠেন। পরাধীনতার যন্ত্রণা থেকে মুক্তির বাসনায় উত্তরজীবনে স্বদেশপ্রেমমূলক একটি স্বরচিত সংগীত তিনি প্রায়ই গাইতেন :
দুটি ঘরে জ্ঞানের আলো, কোটি ঘরে আঁধার কালো;
এ আঁধার ঘুচাতে হবে – নইলে এ দেশ এমনি রবে।
দানেই এ জ্ঞান দ্বিগুণ হবে – এরাও তোমার মায়ের ছেলে।
এ আঁধার ঘুচাতে হবে যতনে, অতি যতনে।
শৈশব-কৈশোরেই মাতামহ কালীনারায়ণ গুপ্ত এবং পিতা রামপ্রসাদ সেনের জীবনাচরণের প্রভাবে অতুলপ্রসাদের মাঝে অধ্যাত্মচিন্তার প্রকাশ পরিলক্ষিত হয়। উত্তরজীবনে নানা প্রতিকূল অবস্থার চাপে এই অধ্যাত্মবিশ্বাস ক্রমেই প্রগাঢ় হয়েছে, প্রতীতিতে হয়েছে দৃঢ়মূল। স্ত্রী হেমকুসুম দেবীর পৌনঃপুনিক অসহযোগিতামূলক আচরণে ব্যথিত অতুলপ্রসাদ শান্তি-অন্বেষায় ক্রমশই ঈশ্বরের কাছে সমর্পিত হয়ে ওঠেন। তাঁর অধিকাংশ গানের মাঝেই তাই লক্ষ করা যায় সমর্পণের পরম আকুতি। অবশ্য অধ্যাত্মবিশ্বাস এবং ধর্মমতের ব্যাপারে তাঁর মধ্যে সর্বদাই সক্রিয় ছিল উদার মানবতাবাদী চিন্তা। দুঃখকে তিনি কখনো পাশ কাটিয়ে যাননি, বরং বন্ধু ভেবে আলিঙ্গন করেছেন এবং দুঃখের সাগর মন্থনশেষেই তাঁর গানে উঠে এসেছে জীবনের পরমার্থ-অমৃত। তাঁর গানে সবসময়ই একটা ইতিবাচক জীবনবোধের পরিচয় পাওয়া যায়। যেমন :
ক. জাতীয়তাবাদী চিন্তার প্রকাশ :
হও ধরমেতে ধীর, হও করমেতে বীর
হও উন্নত শির – নাহি ভয়।
খ. হরিজনপ্রীতির সংগীত :
পরের শিকল ভাঙিস ’পরে,
নিজের নিগড় ভাঙরে ভাই।
গ. একত্ববোধ ও সম্প্রীতির সংগীত :
দেখ মা, এবার দুয়ার খুলে।
গলে গলে এলু মা, তোর
হিন্দু-মুসলমান দু-ছেলে।
বেদনাবোধ এবং তীব্র দুঃখই অতুলপ্রসাদের 888sport live football ও সংগীত সৃষ্টির প্রধান উৎস। পারিবারিক জীবনের সীমাহীন অশান্তিই তাঁকে নিয়ে গেছে সৃষ্টিশীলতার পথে। বস্তুত, সংগীতকে তিনি যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা উপায় হিসেবেই বেছে নিয়েছিলেন। সংগীতের মাধ্যমেই তিনি প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির দ্বন্দ্ব অতিক্রম করে জীবনের এক নতুন অভিজ্ঞতালোকে উপনীত হয়েছেন। প্রচণ্ড আঘাতের পরও তিনি মহান কোনো শক্তির প্রতি বিশ্বাস রেখে সান্ত্বনা ও শুশ্রƒষার সন্ধান করেছেন তাঁর 888sport app download apkয়, তাঁর গানে। রবীন্দ্রনাথের 888sport app download apk ও গানেও আমরা এমন এক অভিজ্ঞতালোকের সন্ধান পাই। বস্তুত, গানই ছিল অতুলপ্রসাদের প্রাণ। অতুলপ্রসাদের গান তাঁর চিত্তের সমস্ত নির্যাস নিয়েই যেন রচিত হয়েছে। অতুলপ্রসাদের গানের সাংগীতিক চারিত্র্য বর্ণনা করতে গিয়ে দিলীপকুমার রায় লিখেছেন : ‘এই গীতিকবির রচনাকে যদি সুরের দিক থেকে দেখা যায়, তাহলে আমরা দেখতে পাব যে, তাঁর গানগুলোকে মূলত দু’ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। একটি ধারা হচ্ছে আমাদের খাঁটি বাউল-কীর্তনকে আধুনিক রিফাইনমেন্টের, হৃদয়ের সৌকুমার্যের মধ্য দিয়ে বড় হৃদয়স্পর্শীভাবে প্রকাশ করার প্রয়াস; আর একটি হচ্ছে আমাদের হিন্দুস্থানী সুরের খাঁটি হিন্দুস্থানী ঢংকে বাংলা গানের মধ্যে অভিনবভাবে মূর্ত করে তোলা।’
ঠুংরি ছিল অতুলপ্রসাদের প্রিয়তম রূপবন্ধ। রবীন্দ্রনাথের প্রধান প্রেরণার বিষয় ছিল ধ্রুপদ, আর দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের খেয়াল ও টপ্পা। কিন্তু ঠুংরি থেকেই অতুলপ্রসাদ মুখ্য প্রেরণা লাভ করেছেন। অতুলপ্রসাদের সবচেয়ে প্রিয় রাগ ছিল খাম্বাজ ও ভৈরবী। বিচিত্র মাত্রায় তিনি এ-রাগদ্বয় ব্যবহার করেছেন। বাংলায় গজল রচনাতেও অতুলপ্রসাদ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। এক্ষেত্রে কাজী নজরুল ইসলামেরও পূর্বসূরি তিনি। তিনি বাস করতেন গজলকেন্দ্র লখ্নৌ শহরে, উর্দু জানতেন খুব ভালো। গজল গানের নিবিড় রসাস্বাদনে সমর্থ হয়েছিলেন অতুলপ্রসাদ এবং বাংলায় গজল রচনা করে তিনি খুলে দিয়েছেন বিশাল এক সংগীত-বাতাবরণ।
দেশপ্রেম, প্রকৃতি, ঈশ্বরভক্তি এবং প্রেম হচ্ছে অতুলপ্রসাদের গানের প্রধান বিষয়বস্তু। দেশপ্রেমমূলক গানগুলোতে অতুলপ্রসাদের স্বদেশানুরাগের সুস্পষ্ট প্রকাশ ঘটেছে। বাঙালির মাতৃভাষাপ্রীতির উল্লেখযোগ্য শ্রেষ্ঠ গান ‘মোদের গরব মোদের আশা’ তাঁর রচনা। অধ্যাত্মবিশ্বাসমূলক গানগুলোতে অতুলপ্রসাদের চিত্তলোকের যথার্থ সংবাদ আমরা খুঁজে পাই। আধুনিক বাংলা কাব্যগীতির পঞ্চপ্রধানের মধ্যে অতুলপ্রসাদই গানকে তাঁর আত্মপ্রকাশের একমাত্র মাধ্যমরূপে অবলম্বন করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ, রজনীকান্ত, দ্বিজেন্দ্রলাল এবং কাজী নজরুল ইসলাম – এঁরা কবিরূপে যেমন বিখ্যাত, তেমনি গীতিকার হিসেবেও সর্বজনস্বীকৃত। কিন্তু অতুলপ্রসাদ গীতিকার হিসেবে যতটা খ্যাত, কবিরূপে ততটা নন। তবে কাব্যক্ষেত্রে তাঁর অবদান মোটেই অকিঞ্চিৎকর নয়। রোমান্টিসিজমের বিশিষ্ট লক্ষণ অপ্রাপনীয়ের জন্য তীব্র আকুতি অতুলপ্রসাদের অনেক 888sport app download apkয় সার্থকতার সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে। জীবনের প্রতি পদে বেদনা আর যন্ত্রণা আর বিষাদ তাঁকে বিদ্ধ করেছে – এবং এইসব প্রবণতা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে কখনো কখনো তিনি বেছে নিয়েছেন 888sport app download apkকে। যেমন :
ওগো দুঃখসুখের সাথি, সঙ্গী দিন রাতি, সংগীত মোর।
তুমি ভবমরুপ্রান্তর-মাঝে শীতল শান্তির লোর।
বন্ধুহীনের তুমি বন্ধু,
তাপিত জনের সুধা-সিন্ধু,
বিরহ-আঁধারে তুমি ইন্দু –
নির্জনজন-চিতচোর।
কখনো কখনো 888sport app download apkর মাধ্যমে তিনি নিজেকে ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করে দিয়েছেন, যেমন করেছেন সংগীতে। এ-প্রসঙ্গে তাঁর ‘অর্ঘ্য’ 888sport app download apkর কথা মনে পড়ে :
এনেছি, হে বিশ্বনাথ, এ সুপ্ত নিশীথে
গুপ্ত অর্ঘ্য মোর; অন্ধ আঁধারে সঞ্চিত
সুগন্ধ কুসুম, লক্ষ নাগ-সুরক্ষিত
কণ্টক-কেতকী – লহ তারে নাগ-নাথ!
একি বিশ্বেশ্বর! কেন বহে অশ্রুধার
ত্রিনেত্রে তোমার? পড়েছে কি মনে
শিবশূন্য দক্ষযজ্ঞে সতীন ক্রন্দন
লাঞ্ছিত প্রেমের সেই চরম আহুতি?
জেগেছে কি পূর্ব 888sport sign up bonus, হে রুদ্র সন্ন্যাসী
তোমার সে প্রণয়ের প্রলয় নর্তন?
জাগিল কি মনে পার্বতীর প্রেমালাপ
মানস-সরসী-তটে নির্জন কৈলাসে?
লহ তবে, হে বৈরাগি, জাহ্নবীর তীরে
এ দীনের মহাদান পূত নেত্র-নীরে।
888sport live football-888sport live chatকলা সম্পর্কে অতুলপ্রসাদ প্রগতিশীল চিন্তাভাবনার পরিচয় দিয়েছেন। ১৯২৫ সালে লখ্নৌতে অনুষ্ঠিত প্রবাসী বঙ্গ888sport live football সমাজের সম্মেলনে অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি হিসেবে অতুলপ্রসাদ যে-ভাষণ দেন, তাতে তাঁর প্রগতিশীল 888sport live footballচিন্তার পরিচয় সুপরিস্ফুট। ওই ভাষণে তিনি যথার্থই নির্দেশ করেন যে, 888sport live footballের মৌল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনচিত্তকে জাগ্রত করা। এ-উদ্দেশ্যে পাঠাগার স্থাপনের উপযোগিতা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন : ‘…বাঙ্গালী জনসাধারণের মধ্যে বাঙ্গলা 888sport live footballের প্রচার করিতে হইলে, যেখানে যেখানে সম্ভব বাঙ্গলা পুস্তকাগার সংস্থাপন করা নিতান্ত প্রয়োজনীয়। লাইব্রেরী সংক্রান্ত একটি কথা নিবেদন করা যুক্তিসঙ্গত মনে করি। পুস্তকালয়ের উদ্দেশ্য পাঠক সাধারণের মধ্যে সুশিক্ষা বিস্তার করা। যে 888sport live football পাঠে মনের উচ্চ বৃত্তিগুলি পরিস্ফুট হয় সেই 888sport live football পাঠে জনসাধারণকে প্রলুব্ধ করাই পুস্তকালয়ের মুখ্য উদ্দেশ্য। জনসাধারণ যাহা পাঠ করিতে চায় শুধু তাহা সংগ্রহ করাই পুস্তকাগারের কর্তব্য নহে, উহা পুস্তক বিক্রেতার লক্ষ্য হইতে পারে। লঘু 888sport live footballের প্রতি স্বতঃই লোকের আকর্ষণ অধিক; যে 888sport live football চিন্তাশক্তিকে সক্রিয় করে তৎপ্রতি সাধারণের দৃষ্টি অল্প। তাই সচরাচর পুস্তকাগারে গল্প ও 888sport alternative linkের বাহুল্য দেখিতে পাই। সে বিষয়ে আমাদের একটু সতর্ক হওয়া আবশ্যক।’ এই মন্তব্যের মধ্যে অতুলপ্রসাদের 888sport live footballচিন্তার পরিচয় সুস্পষ্ট।
শিক্ষার প্রতি অতুলপ্রসাদের ছিল প্রবল অনুরাগ। লখ্নৌ শহরের বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাঁর সংযোগ ছিল অতিনিবিড়। একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। দুস্থ ও মেধাবী ছাত্রদের তিনি অকৃপণভাবে সাহায্য করতেন। বহু দরিদ্র ছাত্রের পড়ালেখার যাবতীয় খরচ তিনি হাসিমুখে বহন করেছেন। উত্তরজীবনে স্বগ্রাম পঞ্চপল্লীতে ‘গুরুপ্রসাদ-রামপ্রসাদ হাই স্কুল’ প্রতিষ্ঠার সময়েও তিনি প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করেছেন। একদিন সত্যপ্রসাদ সেন তাঁকে জানালেন যে, গ্রামের লোকেরা দল বেঁধে তার কাছে এসে পঞ্চপল্লীতে স্কুল প্রতিষ্ঠার জন্য সাহায্যের আবেদন করেছে। শুনে অতুলপ্রসাদ খুব খুশি হলেন। তিনি বললেন, যদি স্কুলের নাম ‘গুরুপ্রসাদ-রামপ্রসাদ হাই স্কুল’ রাখা হয়, তাহলে তিনি তিন হাজার টাকা দেবেন। উদ্যোক্তারা স্কুলের নাম রাখলেন ‘গুরুপ্রসাদ-রামপ্রসাদ হাই স্কুল’ এবং অতুলপ্রসাদ তাঁর কথামতো তাঁদের তিন হাজার টাকা প্রদান করেন।
উপর্যুক্ত মানসপ্রবণতা, চিত্তজাগতিক চারিত্র্য, স্বতন্ত্র রচনাবৈশিষ্ট্য এবং প্রাতিস্বিক জীবনবীক্ষা বাংলা কাব্যগীতি অঙ্গনে কবি অতুলপ্রসাদ সেনের বিশিষ্টতার পরিচয়বাহী। বাংলা গানের ধারায় অতুলপ্রসাদের বড় অবদান এই যে, গানের মাধ্যমে তিনি মানুষকে একটি ইতিবাচক জীবনবোধের সন্ধান দিয়েছেন, শ্রোতাকে চিনিয়ে দিয়েছেন জ্যোতির্ময় চেতনালোকে উপনীত হওয়ার পরম পথরেখা। মানবচৈতন্যের অন্তর-বাস্তবতার নান্দীপাঠে এবং সদর্থক জীবনবোধের ঔজ্জ্বল্যে তাঁর গান ও 888sport app download apk প্রবহমান বাংলা সংস্কৃতির ধারায় সংযোজন করেছে একটি বিশিষ্ট মাত্রা।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.