সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ছিল অনুজপ্রতিম। ১৯৫১ সালে তার জন্ম, সিলেটে। আমি তখন চট্টগ্রামে। দেশ ভাগ হয়ে গেছে। ১৯৫০ সালে চট্টগ্রামে স্থিতি। সরকারি এম. ই. স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি। এক যুগের ছোট। বাকি জীবন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে দুজনই সহকর্মী। অনুজ ছিল তাই সব সময় অগ্রজের সম্মান দিয়ে কথা বলত। বন্ধু হওয়ার সুযোগ বাস্তবে ছিল না। মানসে সহোদরপ্রতিম। 888sport live footballিক, চিত্রলেখক, চিত্র-সমালোচক … মুখে স্মিত হাসি। জন্মেছিল বেবিফেস নিয়ে – সেভাবেই চলে গেল। বার্ধক্য তাকে ছুঁতে পারেনি। নিম্নশ্রু। গোঁফ ছিল।
কথার সুরে দ্রুত লয়। চিন্তার সঙ্গে সংগত। তার কথায় আমার কানে একটা অহমিয়া সুর বাজত। এটা অঞ্চল ও দলগত সংস্কৃতির প্রভাব। সিলেট বাংলার মানচিত্রে ছিল না। পাকিস্তান হওয়ায় সিলেটবাসী গণভোটে বাংলায় যোগ দেয়।
সমাজজীবনে সিলেটিগণ মনে মনে বাংলা থেকে দূরে। আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা : ষাটের দশকে সিলেট গমন। শীতলপাটি কিনব। এটা সিলেটের বিখ্যাত লোক888sport live chat। দোকানদার মধ্যবয়সী, এক হিন্দু ভদ্রলোক। দরদাম করছি। তখন সিলেট শহরে জন888sport free bet খুব কম। আমি ছাড়া দোকানে কেউ ছিল না। এই সময় আর একজন স্থানীয় ভদ্রলোক এলেন। দোকানদারের সমবয়সী। দোকানদারকে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, উনি কে? দোকানদার জবাব দিলেন, উনি একজন বেঙ্গলি।
আমার যা বোঝার বোঝা হয়ে গেল।
সৈয়দ মুজতবা আলী একজন অহমিয়া। সেই সূত্রে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামও। কারণ মুজতবা আলী মনজুরের নানা। আরো নানা ছিলেন সৈয়দ মুর্তজা আলী – পুরাতত্ত্ববিদ।
সৈয়দ পদবি বাংলায় মুসলিম সমাজে যথেষ্ট সম্ভ্রম আদায় করে। ভারতীয় বর্ণবাদের সমান্তরাল মুসলিম সমাজেও তা ছাপ ফেলে। শেখ, সৈয়দ, মোগল বা পাঠান। মোগল পদবি পাইনি, তবে আমি পাঠান পদবিধারী আমার এক ছাত্র পেয়েছি। পাঠান চেহারার ভাবমূর্তি ছিল না, ছিল নিছক রোগা-পটকা এক বাঙালি যুবক। আমার পাঠান ছিল খুব ভদ্র-নম্র স্বভাবের। ছিল সবার খুব প্রিয়।
তো মনজুরের কথা।
মনজুর ইরেজি ভাষা ও 888sport live football নিয়ে পঠন-পাঠন করেছে। মেধার গুণে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদ লাভ।
দ্রুত কথা বলত। অথচ মৃদুভাষী। ছাত্র-ছাত্রী ও বিভাগের ব্যতিক্রমী প্রিয় স্যার।
888sport live footballের ছাত্রদের মধ্যে একটা ব্যাপক জীবনবোধ জন্ম নেয়, যা অন্য কোনো বিষয়ে পাওয়া যায় না। বাকি সব শিক্ষা খণ্ডিত। অর্থাৎ একটি বিশেষ শাখায় বিশেষায়িত। 888sport live football জীবনচিত্র। তাই
দর্শন-ধর্ম-888sport apk-শিক্ষা-কলাকৌশল-আমোদ-প্রমোদ – জীবনের নেতিবাচক দিক সবকিছুর আধার। তাই 888sport live footballের ছাত্ররা সমাজে অগ্রগণ্য হয়। যারা 888sport live footballচর্চা করে, তারাও হয় অগ্রগামী ব্যক্তিত্ব।
ইংরেজি বিভাগ তৈরি করেছে জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, খান সরওয়ার মুর্শিদ, এহসানুল হক, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ বিজ্ঞজন। এ-তালিকায় বর্তমানে সর্বশেষ সংযোজন সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। এরপর ইংরেজি বিভাগ মনজুরকে দিয়েছে বিশ্ব888sport live football ও বিশ্বসমাজের জ্ঞান। তাই মনজুরকে দেখি 888sport live chatকলার জগতে 888sport appsে একজন বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠতে।
ওর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা হয় আমার প্রথম চিত্রপ্রদর্শনী নিয়ে। ১৯৮৮-তে অলিয়ঁস ফ্রঁসেজে হয় আমার প্রথম জলরং প্রদর্শনী। এই চিত্রপ্রদর্শনীর একটি আলোচনা লেখার জন্য মনজুর আমার কাছে আসে চারুকলা ইনস্টিটিউটে। তখন এটা 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাকাল্টি হয়নি। বর্তমান 888sport live chatকলার ইতিহাস বিভাগের দোতলায় সেমিনার কক্ষটি ছিল আমার স্টুডিও। এখানেই দীর্ঘ সময় ধরে কয়েক দিন আলাপ হয়। মনে পড়ছে না রিভিউটি কোন পত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। তবে আমাকে সে প্রথম পদক্ষেপে যে দুর্বলতা থাকে, সেদিকে না গিয়ে তার লেখায় আমাকে নিয়ে উৎসাহব্যঞ্জক বাক্য বেশি ব্যবহার করেছিল।
আমি খুশি হলেও, কিছু বকুনি পেলে আরো খুশি হতাম।
যাক সে-কথা।
এরপর থেকে ওর সঙ্গে একটা আত্মিক ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে। আনিসুজ্জামানভাইয়ের মৃত্যুর পর মনজুর কালি ও কলমের সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি হওয়ায় আমি খুব খুশি হই। একজন যোগ্য ব্যক্তি জায়গা পাওয়ায়। কালি ও কলম দুই বাংলার সর্বশ্রেষ্ঠ 888sport live football-মাসিক।
দুই বাংলার শ্রেষ্ঠ মনীষীদের ও নতুনদের লেখাসমৃদ্ধ এই পত্রিকা। নিয়মিত প্রকাশিত। বর্তমানে এই পত্রিকায় আমার 888sport sign up bonusকথা ছাপা হচ্ছে। কালি ও কলম ছাড়া আর কোথায় বা লিখব!
কালি ও কলম এর সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতিকে হারাল – পত্রিকাটি তো বটেই গোটা দেশ হারাল এক বরেণ্য বুদ্ধিজীবীকে। অল্প কিছুদিন আগে চলে গেলেন বদরুদ্দীন উমর ও আহমদ রফিক – যাঁরা ১৯৫২-র বাংলা
ভাষা-আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা সৈনিক ছিলেন। চলে গেল একেবারে কোনো কিছু না জানিয়ে ভাস্কর হামিদুজ্জামান খান। সে ছিল আমার প্রথম ব্যাচের ছাত্র – চারুকলার। আরো এক ঘনিষ্ঠ ছাত্র সুরকার, গায়ক, চিত্র888sport live chatী জয়নুল গবেষক ও 888sport live chat-সমালোচক মতলুব আলী।
আমি বড় কষ্টে দিন কাটাচ্ছি এদের হারিয়ে।
হঠাৎ ফেসবুকে মনজুরের খবরটা দেখে, আমার মুখ দিয়ে, স্বগতোক্তির মতো বেরিয়ে গেল : হায় এ কী হলো … এমন করে আওয়াজ করে আমি কখনো ডুকরে উঠিনি। এমনটা শুধু হয়েছিল কানাডায় অবস্থানরত একমাত্র বোন আনফিসা আনসার লাইলীর ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার খবর শুনে। মধ্যবিত্তের জীবন বড় টাইটভাবে বাঁধা যে, বোনকে দেখতে যেতেও পারিনি। কানাডার টরন্টোতেই ওকে সমাধিস্থ করা হয়। সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম দেশের চিন্তাজগতের মানুষের কাছে চিরজাগরূক থাকবে। আর আমার কাছে বেঁচে থাকবে আমৃত্যু অনুজ হয়ে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.