মফিদুল হক
আর্জেন্টিনা আমাদের জন্য অনেক দূরের দেশ, 888sport appsের সঙ্গে আর্জেন্টিনার সংযোগ বা লেনদেন বিশেষ নেই, বিশাল এই দেশে এমনকি 888sport appsের কোনো দূতাবাসও নেই, ব্রাজিলে অবস্থিত 888sport apps মিশন আর্জেন্টিনাসহ ল্যাটিন আমেরিকার আরো কতক দেশে কূটনীতিক প্রতিনিধিত্বকারীর দায়িত্ব পালন করে। তবে আর্জেন্টিনার পতাকা 888sport appsে সুপরিচিত, এমনকি গ্রামগঞ্জের মানুষ, বিশেষত বালক-তরম্নণদের কাছে এই পতাকা অজানা নয়, দরজিদের কাছে তো নয়ই। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনায় অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপ ফুটবল এবং দিয়েগো ম্যারাডোনার জাদুকরী ক্রীড়াশৈলীর সুবাদে আর্জেন্টিনার দল দুনিয়াব্যাপী অর্জন করেছে ভক্তকুল এবং তারপর থেকে টেলিভিশন প্রযুক্তির কল্যাণে বিশ্বকাপ এবং আমত্মর্জাতিক ফুটবল আমাদের গ্রামগঞ্জে চায়ের পেয়ালায় তুফান তুলে চলেছে। হালে লিওনেল মেসি দখল নেওয়ার চেষ্টা করছেন ম্যারাডোনার স্থানের, খেলোয়াড় হিসেবে তাঁর দক্ষতারও কোনো কমতি নেই, খেলার সুবাদে 888sport apps তো আর্জেন্টিনা-ব্রাজিলে বিভাজিত, তারপরও ম্যারাডোনা হয়ে আছেন ম্যারাডোনা, তাঁর শরীরী ভাষার চমৎকারিত্ব এবং জীবনের উত্থান-পতন নিয়ে তিনি একমেবাদ্বিতীয়ম্ বটে। কিন্তু ফুটবলের আর্জেন্টিনা তো উন্মাদনার জোয়ারে অবগাহন করে ফেনার মতো ভেসে বেড়ায়, সেটা তো দেশের ইতিহাসে, সমাজের গভীরে আমাদের নিয়ে যায় না, সেজন্য প্রয়োজন অন্যতর অবলোকন, যে-অবলোকনের সুযোগ বাঙালির বিশেষ মেলে না। মেলে না, কারণ 888sport appsের সঙ্গে আর্জেন্টিনার সংযোগের সূত্রগুলো খুঁজে পাওয়া ভার। গোটা বিশ্বে সর্বাধিক পরিচিত আর্জেন্টিনীয় নিঃসন্দেহে অর্নেসেত্মা চে গুয়েভারা। বুয়েনাস আয়ারেসের অদূরে 888sport live chatশহর রোসারিওতে তাঁর জন্ম ও বেড়ে-ওঠা বটে, তবে চে কিউবার বিপস্নবের অন্যতম রূপকার হিসেবেই নন্দিত হয়েছেন দেশে দেশে, বিপস্নবের সফলতার পর তিনি যে দেশকালের ঊর্ধ্বে উঠে আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন স্থানে দেশাতীত বিপস্নবে ব্রতী হলেন, জীবন বিসর্জন দিলেন বলিভিয়ার অরণ্যে সেটা তো চে গুয়েভারাকে সর্বজনীন করে তুলেছে, জন্মসূত্রে তিনি কোন দেশের নাগরিক সে-প্রশ্ন হয়েছে গৌণ, তিনি আধুনিক যুগের অনন্য বিশ্বনাগরিক, আর তাই আর্জেন্টিনার সঙ্গে তাঁকে মিলিয়ে দেখা হয় কম।
বাঙালির সঙ্গে আর্জেন্টিনার বিশেষ মেলবন্ধন রচনা করেছিলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর আরো অনেক বিস্ময়কর কাজের মতো এরও রয়েছে ভিন্নতর মাত্রা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সম্পর্ক ও উভয়ের জীবনে এর অভিঘাত সম্পর্কে কিছু কথা তো জানা গিয়েছিল যখন ১৯২৪ সালে অসুস্থ কবি প্রায় দুই মাস আর্জেন্টিনায় কাটিয়ে আবার দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে দেশে ফিরলেন, পরবর্তী কাব্যগ্রন্থ পূরবী উৎসর্গ করলেন তাঁর বিজয়াকে, আর সবার কাছে যিনি ভিক্টোরিয়া। এই সম্পর্কের গভীরতা ও ব্যাপ্তির বিশদ পরিচয় মিলেছিল শঙ্খ ঘোষের 888sport app download apk latest version ও টীকা-ভাষ্যসহ প্রকাশিত ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ গ্রন্থে। এরপর কেতকী কুশারী ডাইসন স্বয়ং আর্জেন্টিনা 888sport slot game করে এবং নানা দলিল-দসত্মাবেজ-চিঠিপত্র ঘেঁটে প্রকাশ করেন বাংলা ও ইংরেজিতে দুই গ্রন্থ, যা চমৎকৃত করেছে আগ্রহী পাঠকদের। হালে তো অসমর্থ-সমর্থ সব ধরনের লেখকের কাছে রবীন্দ্রজীবনে 888sport promo code কৌতূহল ও কৌতুকের উপজীব্য হয়েছে এবং কল্পনার পাখা উড়িয়ে রচিত গ্রন্থের ব্যবসা এখন বেশ রমরমা। তারপরও শিক্ষিত বাঙালি-চিত্তে আর্জেন্টিনার প্রতীক হয়ে আছেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো, যিনি বিশ্ব-সংস্কৃতির মিলন ও একত্ব রূপায়ণে পালন করেছিলেন অসাধারণ ভূমিকা।
কিন্তু স্বাধীনতা-উত্তর 888sport appsের সঙ্গে আর্জেন্টিনার আরেক সংযোগ একাত্তর-পরবর্তী বৈশ্বিক বাসত্মবতায় আমাদের অগোচরেই ঘটিয়ে দিয়েছিল ইতিহাস, আর সেটা ছিল গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ তথা আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিচারে দুই দেশের প্রয়াস, যার মধ্যে ধরন ও অভিজ্ঞতার ফারাক সত্ত্বেও মৌলিক প্রশ্নে রয়েছে অভিন্নতা এবং যে-কারণে উভয় দেশের আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিচার-প্রক্রিয়া এবং তার পদ্ধতি ও পরিচালনা বিষয়ে অভিজ্ঞতাবিনিময় ক্রমেই গুরম্নত্ব অর্জন করে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর একাত্তরের নৃশংসতা ও বর্বরতার বিপরীতে মানবিক উত্থান ও প্রতিরোধের যে-888sport sign up bonusভা-ার গড়ে তুলছে সেই কাজের সূত্রে আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিপরীতে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার বিভিন্ন প্রয়াসের সঙ্গে নানা যোগসূত্র গড়ে উঠেছে। এই কাজের সুবাদে অনেক মানুষ ও সংস্থার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নিবিড় সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, যাঁদের একজন আর্জেন্টিনার খ্যাতনামা গবেষক-অধ্যাপক ড্যানিয়েল ফেইরস্টেইন। তিনি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব জেনোসাইড স্কলার্সের সভাপতি, এবং আইএজিএস সংস্থাকে যাঁরা হলোকাস্ট স্টাডিজের গ–র বাইরে বড় পরিসরে এনে বিশ্বের অপরাপর গণহত্যা ও তার প্রতিরোধ প্রয়াসের সঙ্গে যুক্ত করেছেন তাঁদের মধ্যে তিনি অগ্রণী ব্যক্তিত্ব। ড্যানিয়েল ফেইরস্টেইনের সঙ্গে আমার পরিচয় কাম্বোডিয়ায়, সুইসপিস-আয়োজিত এক আমত্মর্জাতিক সম্মেলনে। নমপেনের অদূরবর্তী য়েক চোয়ং বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কয়েক বাস বোঝাই প্রতিনিধিদের। সেই বাসযাত্রায় ড্যানিয়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে আলাপের সুযোগ ঘটে এবং 888sport appsে একাত্তরের গণহত্যা ও পরবর্তীকালে এইসব অপরাধের বিচারে প্রায় অরণ্যে রোদনে পর্যবসিত 888sport appsের দাবি এবং সেই পটভূমিকায় বঙ্গবন্ধুর সরকার-প্রণীত ১৯৭৩ সালের আইন তাঁর কাছে মেলে ধরা যায়। বঙ্গবন্ধু-হত্যার পর বিচারহীনতার দীর্ঘ পর্ব সূচিত হয়, তার প্রায় চার দশক পর জাতি কীভাবে সেই গস্নানি থেকে মুক্ত হয়ে বিচারের অধিকার প্রতিষ্ঠা করলো, সে-কাহিনি আমি সোৎসাহে ড্যানিয়েলের কাছে মেলে ধরি। তাঁর মতো বিদ্বজ্জনের পক্ষে 888sport appsের ইতিহাসের পরম্পরা ও বিচারের ন্যায্যতা বুঝে নিতে বিলম্ব ঘটেনি। ২০১১ সালে সেই পরিচয়ের পর ড্যানিয়েল ফেইরস্টেইন 888sport appsের বিচার-প্রক্রিয়ার আগ্রহী পর্যবেক্ষক হয়ে ওঠেন এবং আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতার সঙ্গে এই পাঠ মিলিয়ে নিতে চান। ২০১২ সালের গ্রীষ্মে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর এবং হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশীয় বিভাগ ইউরোপের এই প্রাচীন বিদ্যাপীঠে ‘888sport appsে গণহত্যা ও বিচার’ বিষয়ে যে আমত্মর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে, সেখানে স্ব-উদ্যোগে যোগ দিয়েছিলেন ড্যানিয়েল ফেইরস্টেইন। আইএজিএসের সিয়েনা (ইতালি), মানিটোবা (কানাডা) এবং ইয়েরেভান (আর্মেনিয়া) সম্মেলনে যে 888sport appsের গণহত্যা বিশেষভাবে আলোচিত হয়, তার পেছনে ড্যানিয়েলের সমর্থন ও উদ্যোগ কার্যকর ভূমিকা রেখেছিল।
তো মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর চলতি বছরের ২৮ ফেব্রম্নয়ারি-২ মার্চ 888sport appয় ‘888sport appsে গণহত্যা ও বিচার’ বিষয়ক চতুর্থ আমত্মর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করে। 888sport appsে আমত্মর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন, সেই পটভূমিকায় এই সম্মেলন বিশেষ গুরম্নত্ব বহন করে এবং ড্যানিয়েল ফেইরস্টেইনসহ আর্জেন্টিনা থেকে তিনজন প্রতিনিধি সেখানে যোগদান করেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন আর্জেন্টিনার আমত্মর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারক ড্যানিয়েল অবলিগাডো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন গবেষক ইরিনা মাসিমিনো। এছাড়া কাম্বোডিয়া থেকে যোগ দিয়েছিলেন ইসিসিসি বা এক্সট্রা-অর্ডিনারি চেম্বার ইন দ্য কোর্ট অব কাম্বোডিয়ার আমত্মর্জাতিক বিচারক পোল্যান্ডের অ্যাংলিজকা-মিলার্ট এবং আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিচার বিষয়ক উপদেষ্টা ড. হেলেন জারভিস। 888sport appয় আয়োজিত সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা ও সভামঞ্চের বাইরের আলোচনায় আর্জেন্টিনা, 888sport apps এবং কাম্বোডিয়ার অভিজ্ঞতার কতক মিল বিশেষভাবে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে। এই তিন দেশেই গণহত্যা ও মানবতার বিরম্নদ্ধে অপরাধ সংঘটিত হয়েছিল সত্তরের দশকে – ১৯৭১ (888sport apps), ১৯৭৫-৭৯ (কাম্বোডিয়া) এবং ১৯৭৬-৮৩ (আর্জেন্টিনা)। তিন দেশই আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিচারের জন্য প্রাথমিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল, কিন্তু তা ফলপ্রসূ হয় নি। দীর্ঘ সংগ্রামের পর তিন দেশই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিরম্নদ্ধে পুনরায় বিচার প্রক্রিয়া শুরম্ন করতে পেরেছে। আর্জেন্টিনা ও কাম্বোডিয়ায় ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয় ২০০৬ সালে, 888sport appsে ২০১০ সালে। 888sport appর সম্মেলনে তিন দেশের বিচারের সাযুজ্য পর্যালোচনা এবং অভিজ্ঞতাবিনিময়ের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। এরই জের ধরে বুয়েনাস আয়ারেসে আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিচারে তিন দেশের বিচারকদের সম্মেলন অনুষ্ঠানের চেষ্টা নেয় ড্যানিয়েল ফেইরস্টেইন ও তাঁর সহকর্মীবৃন্দ। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে আর্জেন্টিনার বিচার মন্ত্রণালয় এবং ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জেনোসাইড স্টাডিজ সেন্টার মিলে ১৯ এবং ২০ আগস্ট, ২০১৫ আয়োজন করে দুদিনব্যাপী ত্রিদেশীয় সম্মেলনের। প্রথম দিন পুরোপুরিভাবে নির্ধারিত ছিল বিচারকদের জন্য, দ্বিতীয় দিন বৈকালিক অধিবেশনে গবেষক ও প্রসিকিউটাররা পৃথক প্যানেলে আলোচনায় অংশ নেন। আর্জেন্টিনার তিন বিচারক – ড্যানিয়েল অবলিগাডো, ফাতিমা রম্নইজ লোপেজ এবং কার্লোস রোজান্সকি ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন 888sport appsের আমত্মর্জাতিক অপরাধ আদালতের চার বিচারক – এনায়েতুর রহিম, জাহাঙ্গীর হোসেন, ওবায়দুল হাসান ও আনোয়ারম্নল হক। কাম্বোডিয়া থেকে এসেছিলেন ইসিসিসির বিচারক ইউ ওটারা। 888sport appsের জন্য অতীব গুরম্নত্ববহ এই ত্রিদেশীয় সম্মেলনের বিষয় পৃথক আলোচনার দাবি রাখে। বর্তমান আলোচনায় আমরা বরং 888sport apps ও আর্জেন্টিনার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতার নিষ্ঠুর দিকটি পেরিয়ে তাকাতে চাই আরো পেছনে, ঘুরেফিরে দেখতে চাই ভিলা ওকাম্পো, বাঙালির জন্য ঔৎসুক্যের উৎস রবীন্দ্রনাথ ও ভিক্টোরিয়ার হার্দ্যিক বন্ধন রূপায়িত হয়েছিল সান ইসিদ্রোর যে-আবাসে সেটার দর্শনলাভ তো এক ধরনের তীর্থযাত্রাই। অধিকন্তু এই আবাস এখন ইউনেস্কো অধিগ্রহণ করেছে সংস্কৃতির ভবন হিসেবে, ল্যাটিন আমেরিকার সাংস্কৃতিক ইতিহাসে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ। ‘ভিলা ওকাম্পো’ অধুনা হয়েছে গৃহ-জাদুঘর এবং সাংস্কৃতিক মিলনকেন্দ্র, যে-আবাসে একদা রবীন্দ্রনাথ কাটিয়েছেন জীবনের আনন্দময় ও ফলপ্রদ সময়, তাই আর্জেন্টিনা এসে ভিলা ওকাম্পো পরিদর্শন না করে বাঙালির উপায় থাকে না।
দুই
দূর দেশ আর্জেন্টিনা যাওয়ার সুযোগ বাঙালি জীবনে স্বাভাবিকভাবে ঘটে না, আর তাই এতো দূরপথ পাড়ি দিয়ে এক ঝলক দেশরূপ চাক্ষুষ না করে ফিরে যাওয়া অর্থবহ হবে না। তেমন 888sport slot gameের আকর্ষণ থেকে সহধর্মিণী সীমা হয়েছিল সফরসঙ্গিনী এবং পরিকল্পনা ছিল সম্মেলনের কাজ শেষে থেকে যাব অতিরিক্ত কয়েকটি দিন, যাওয়া যাবে ব্রাজিল সীমামত্মঘেঁষা ইগুয়াসি, প্রায় দিগমত্মস্পর্শী সারি সারি জলপ্রপাত যেখানে জন্ম দিয়েছে দুর্লভ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের, আর দেখা হবে ভিলা ওকাম্পো, জীবনের সৌন্দর্য রূপ পেয়েছে যে-ভবনে। ইরিনাকে জানিয়েছিলাম সফর-পরিকল্পনার কথা, ইগুয়াসি যেতে ১৮ ঘণ্টার বাসযাত্রার ইচ্ছে তাঁর পরামর্শে জলাঞ্জলি দিতে হলো। সে বললো চূড়ামত্ম ক্লামিত্মকর হবে সেই 888sport slot game, দেখার মতো দৃশ্যও যাত্রাপথে তেমন মিলবে না, মাইলের পর মাইল পাম্পার সমতলভূমি, তদুপরি বাস পথ পাড়ি দেবে রাত্রিজুড়ে, আর যেহেতু তোমাদের হাতে সময় কম, তাই এই পরিকল্পনা ত্যাগ করাই সংগত। পরে বিমানযোগেই যাওয়া হলো ইগুয়াসি, স্বল্পভাড়ার পরিচ্ছন্ন এক হোটেল ঠিক করে রেখেছিল ইরিনা, বিমানবন্দরে ট্যাক্সিচালকও ছিল তাঁর নাম লেখা পস্ন্যাকার্ড বহন করে। ফলে আমাদের কোনোই বেগ পোহাতে হয় নি স্বল্পসময়ে এই ভয়ংকর সুন্দর প্রকৃতি দর্শনের অভিজ্ঞতা আহরণে। ইরিনা জানিয়েছিল, ইগুয়াসি তাঁরও এক প্রিয় জায়গা। বলেছিল, দেখবে সেখানকার মাটি হচ্ছে লাল, আর প্রকৃতি ঘন সবুজ, লাল-সবুজের মেলা, ঠিক যেন 888sport appsের পতাকা।
আর ইগুয়াসির জলপ্রপাতধারা! এর বর্ণনা দেওয়া দুষ্কর। গাইডবইয়ে লেখা আছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রম্নজভেল্ট-পত্নী এলিনর রম্নজভেল্টের উক্তি, ইগুয়াসি দেখে তিনি মমত্মব্য করেছিলেন, পুওর নায়াগ্রা! জলপ্রপাতরাশি অবলোকনের পস্ন¨vটফর্মের একধারে খোদিত রয়েছে কবি আলফোনসো রিকোইত্তোর পঙ্ক্তি, ‘গর্জনশীল জলরাশির আবর্তন এবং/ জলকণার চাদরে আবৃত হয়ে/ মেলে দাও ভাবনার ডানা, অনুভব করো অমত্মরের গভীরতা/ কণ্ঠ কিংবা শব্দ দিয়ে এর শোভা বোঝাতে যেও না/ যেখানে দৃশ্যরূপ পেয়েছে ঈশ্বর শব্দের মহিমা।’
ইগুয়াসিতে যদি নীরবতাই হয় কাম্য, তবে ভিলা ওকাম্পোতে মুখর হয়ে ওঠে এমন এক আমত্মর্জাতিক সংস্কৃতি-পরিম-ল যার তুলনা বিশেষ মিলবে না। আমরা সৌভাগ্যবান হয়েছিলাম যখন বিচারপতি ড্যানিয়েল অবলিগাডো প্রসত্মাব করলেন তিনি স্বয়ং গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাবেন বুয়েনাস আয়ারেস থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরের ভিলা ওকাম্পোতে। ইরিনার কাছ থেকে আমাদের আগ্রহের কথা শুনে তিনি এই প্রসত্মাব দিলে স্বাভাবিকভাবে আনন্দ ও কৃতজ্ঞতায় ভরে ওঠে মন। আতিথেয়তার পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছিলেন বিচারপতি ড্যানিয়েল, নৈশভোজে আমাদের আপ্যায়িত করেছিলেন দু-দুবার, বাছাই করেছেন শহরের ভিন্নধর্মী রেসেত্মারাঁ। বিদায়ের আগের রাতে তিনি ব্যতিক্রমী এক রেসেত্মারাঁয় আমন্ত্রণ জানান আর্জেন্টিনার বিখ্যাত স্টেকের স্বাদগ্রহণে। ‘ক্লাসিকস অ্যান্ড মর্ডান’ নামে এই রেসেত্মারাঁর দোতলায় রয়েছে এক সাবেকি পিয়ানো, খ্যাতনামা বাদকেরা এখানে এসে সুরের ঝংকার তোলেন। ভেতরে আরো রয়েছে অসাধারণ এক গ্রন্থবিপণি, মূলত 888sport live chat-888sport live football-সংস্কৃতি বিষয়ক বইয়ের সমৃদ্ধ ভান্ডার।
এর আগেই অবশ্য বিচারপতি ড্যানিয়েল অবলিগাডো আমাদের নিয়ে গিয়েছিলেন ভিলা ওকাম্পোতে। তিনি ইংরেজি বিশেষ বলতে পারেন না, ভাঙা-ভাঙা ইংরেজিতে খুব কসরত করে মনের ভাব প্রকাশ করেন। এখন একজন শিক্ষক রেখে ইংরেজি শেখার চেষ্টা করছেন। শিক্ষয়িত্রী তাঁর বন্ধুপত্নী, এই দম্পত্তির সঙ্গেও তিনি আমাদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। তো বিচারপতি অবলিগাডো যখন জেনোসাইড কনফারেন্সে যোগ দিতে 888sport app গিয়েছিলেন, সম্মেলনের ডামাডোলে আমরা আলাদাভাবে বিশেষ আতিথেয়তা প্রদর্শন করতে পারিনি। তাঁরা ছিলেনও খুব কম সময়, তবু এর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের একগুচ্ছ নবীন-নবীনা স্বেচ্ছাকর্মী যেভাবে অতিথিদের দেখভাল করেছে, তাঁদের সঙ্গে 888sport appsের ইতিহাস-ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ এবং বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে ভাববিনিময় করেছে সেটা তাঁদের আপস্নুত করেছে। 888sport appsে যে এক নতুন প্রজন্ম বেড়ে উঠছে মাটির গভীরে পা রেখে ইতিহাসের অভিজ্ঞতা ধারণ করে সমাজের দায় মেটাতে তার সামান্য পরিচয় এই তরম্নণেরা মেলে ধরেছিল। এদের মধ্যে যে স্প্যানিশ-জানা আইনের ছাত্রছাত্রীও ছিল সেটাও সৌভাগ্যের ব্যাপার। আমরা যেটুকু করে থাকি না কেন বিচারপতি অবলিগাডো তার শতগুণ ফিরিয়ে দিতে ব্রতী হয়েছিলেন আপন স্বভাব-মাধুর্যের কারণে।
পূর্বনির্ধারিত সময়ের কিছুটা আগেই বেলা তিনটায় বিচারপতি ড্যানিয়েল অবলিগাডো গাড়ি নিয়ে হাজির হলেন আমাদের হোটেলে। গাড়ি তিনি নিজেই চালাচ্ছিলেন, আর সঙ্গে এনেছেন তাঁর স্ত্রী এবং পুত্র মার্ক অবলিগাডোকে। মার্ক এবার স্কুল ফাইনাল দেবে, বিদ্যালয়ের বাইরে সে একটি কোচিং সেন্টারে ইংরেজির পাঠগ্রহণ করছে। বিচারপতি পিতা তাঁকে সঙ্গে এনেছেন যেন পুত্র আমাদের সঙ্গে কথোপকথনে ভাষাশিক্ষা ঝালিয়ে নিতে পারে, সেইসঙ্গে বাবাকেও সাহায্য করতে পারে আলাপ চালিয়ে নিতে।
বুয়েনাস আয়ারেস শহরের কেন্দ্রস্থলে হোটেল রোচেস্টার ক্লাসিক থেকে আমরা রওনা হলাম অবলিগাডো পরিবারের সঙ্গে। বিচারপতির ইংরেজি শিক্ষয়িত্রী ও তাঁর স্বামী সরাসরি চলে যাবেন ভিলা ওকাম্পোতে। ইরিনা মাসিমিনোও তাঁর গাড়ি নিয়ে চলে যাবে সেখানে। আমরা চলছিলাম এভিনিউ দেল লিবারটেডর বা মুক্তিপথ ধরে। বলা হয় ল্যাটিন আমেরিকা মহাদেশের কোনো শহরের দীর্ঘতম রাসত্মা এটি। চলছিলাম পূর্ব দিকে, লা পvটা নদীর সঙ্গে প্রায় সমামত্মরালভাবে, তবে দালানকোঠার ভিড়ে নদীর দেখা বিশেষ মিলছিল না। যাওয়ার পথে শহরের অনেক উলেস্নখযোগ্য স্থাপনাই চোখে পড়ছিল, বিচারপতি ড্যানিয়েল অবলিগাডো কিংবা পুত্র মার্ক সেসবের পরিচিতি দিচ্ছিল, বলা বাহুল্য, ভাঙা-ভাঙা ইংরেজিতে। রিকোলেতায় রয়েছে পুরনো কবরস্থান, যেখানে শায়িত আছেন প্রেসিডেন্ট হুয়ান পেরনের তরম্নণী স্ত্রী এভিতা পেরন। আর্জেন্টিনার ইতিহাসে পেরন এক বিতর্কিত ব্যক্তি, একদিকে তিনি জনহিতকর অনেক কর্মকা–র উদ্গাতা ছিলেন, অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট মতাদর্শের প্রতি ছিল তাঁর পক্ষপাত এবং বিরোধীদের পীড়নে কোনোভাবে পিছপা ছিলেন না। তাঁর প্রথম স্ত্রী অপেরা-গায়িকা এভিটা লোকসমাজ থেকে উঠে আসা 888sport promo code, দরিদ্রজনের সেবক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সমর্থ হয়েছিলেন। এভিটার অকালমৃত্যু তাঁকে করে তুলেছিল কাল্ট ফিগার। রিকোলেতোতে যেমন সমাধিস্থ রয়েছেন এভিটা, তেমনি এখানে শায়িত আছেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। এরপর আমরা যাচ্ছিলাম উদ্যানঘেরা অভিজাত এলাকা পালেরমোর ভেতর দিয়ে। ড্যানিয়েল অবলিগাডো আমাদের দেখালেন ওকাম্পো-ভগিনী সিলভানার অ্যাপার্টমেন্ট, যিনি নিজেও পরে 888sport live footballিক হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন, ততোধিক খ্যাতিমান ছিলেন তাঁর স্বামী, অর্জন করেছিলেন স্প্যানিশ ভাষার সম্মানজনক 888sport app download bd ‘সের্ভামেত্মস অ্যাওয়ার্ড’।
বুয়েনাস আয়ারেস বিশাল নগর, উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে এর মূল বিকাশ। আর্জেন্টিনা তখন গড়ে উঠছিল সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে, কৃষি ও পশুপালনে শক্তিমান এবং মূল্যবান খনিজ পাথরে সমৃদ্ধ দেশে অভিবাসীরাই বিসত্মার করেছিল প্রাধান্য, তারা মূলত স্পেন ও ইতালি থেকে আগত হলেও আরো নানা দেশের মানুষ ছিল সেখানে। এদের মধ্যে আরব-দেশীয় মুসলিমরাও ছিল, বিশেষভাবে লেবানিজ ও সিরীয়রা। স্পেনে যে প্রায় চারশো বছর ধরে মুসলিম রাজত্ব চলছিল তার জের বুঝি খুঁজে পাওয়া যায় ল্যাটিন মহাদেশে আরব অভিবাসী ও আরব সংস্কৃতির উপস্থিতিতে, যার কিছু পরিচয় মিলবে গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের 888sport live footballে।
এই যে নানা সত্তার মিলনে-মিশ্রণে আর্জেন্টিনীয় জাতিসত্তা তার গড়ে-ওঠার পথ খুব মসৃণ ছিল না। স্থানীয় অধিবাসীরা 888sport free betয় ছিল লঘু, অন্যদিকে ইনকা-সভ্যতার মূল কেন্দ্রগুলো ছিল আর্জেন্টিনার বাইরে মূলত পেরম্ন, চিলি, বলিভিয়ায়। তদুপরি বহিরাগতদের আধিপত্য ও সভ্যতা-বিসত্মারের দাপুটে অভিযানের সামনে স্থানীয়দের প্রতিরোধ বিশেষ কার্যকর হয়নি। তাই আর্জেন্টিনায় আদিবাসীরা বিশেষ দৃশ্যগোচর নয়, তারা আপন ভূমিতে একামত্মই প্রামিত্মকজন। অন্যদিকে ইউরোপ-আগত হিসপানি ও 888sport app জাতিগোষ্ঠীর সদস্যদের দ্বারা নির্মিত হচ্ছিল যে নগর-সভ্যতা তা ইউরোপকেই গণ্য করেছিল আদর্শ। স্প্যানিশ জাতীয় ভাষা হয়ে উঠলেও ফরাসি-ইংরেজি ভাষা ছিল অভিজাতদের প্রিয় এবং ইঙ্গ-ফরাসি ও ইতালীয় স্থাপত্য, পোশাক ও সংস্কৃতির আদল অনুসরণের চেষ্টা নেওয়া হয়েছিল নানাভাবে। এর ফলে আর্জেন্টিনায় বিকশিত সমাজ অনেক দিক দিয়েই ছিল ল্যাটিন আমেরিকার মাটিতে প্রোথিত ইউরোপীয় সভ্যতা। সেটা হয়ে-ওঠা সম্ভব ছিল না, তবে বাসত্মব করে তোলার চেষ্টার কোনো অমত্ম ছিল না। আর তাই একসময় বলা হতো, আর্জেন্টিনা হচ্ছে ল্যাটিন আমেরিকার একমাত্র ইউরোপীয় দেশ।
এভিনিউ দেল লিবারটেডর চলে গেছে রোমান আদলে নির্মিত ভারি সত্মম্ভশোভিত দরদালানের পাশ দিয়ে। বিচারপতি গর্বের সঙ্গে জানান, এই হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ, এখানে আমি পড়েছি। এরপর আমরা চলি বিশাল আরেক কমপেস্নক্সের সামনে দিয়ে, ভেতরে হলুদ রঙের বিবর্ণ কতক ভবন, সামনে-পেছনে প্রচুর খোলা জায়গা। মার্ক জানালো, এটা হচ্ছে পূর্বতন এসমা, চার আদ্যাক্ষরে ESMA হিসেবে পরিচিত এই কমপেস্নক্স ছিল নৌবাহিনীর মেকানিক্স স্কুল। এসমা নামটি কুখ্যাতি অর্জন করেছে ১৯৭৬-৮৩ সালের সামরিক শাসনকালের গোপন আটকখানা ও পীড়নকেন্দ্র হিসেবে। বহু সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী-রাজনীতিক এবং তরম্নণ প্রতিবাদীকে বন্দি করে এখানে আনা হয়েছিল এবং পরে তাঁদের আর হদিস মেলেনি। মার্ক জানালো যে, বন্দিদের চোখ বেঁধে নিয়ে আসা হতো, অত্যাচারের পর তাদের হত্যা করে খানাখন্দে ফেলে রাখতো কিংবা বিমান অথবা হেলিকপ্টারে করে পvটা নদী যেখানে সাগরে মিশেছে সেই বিশাল মোহনার জলরাশির ওপর ছুড়ে ফেলা হতো ভারী পাথর বেঁধে। কেউ আর কোনো খোঁজ পায় নি সেইসব বন্দির। সামরিক শাসনকালে এমনি প্রায় ৩৫০০০ মানুষ নিখোঁজ হয়েছিলেন আর্জেন্টিনায়, হারিয়ে গিয়েছিলেন চিরতরে। কঠোর সামরিক শাসনাধীনে যখন মতপ্রকাশের কোনো স্বাধীনতা ও সুযোগ ছিল না, রাজনৈতিক দল ছিল বেআইনি, সভা-সমাবেশ ছিল নিষিদ্ধ, তখন নিখোঁজদের মাতা অথবা স্ত্রী অথবা ভগিনীরা তাঁদের প্রিয়জনের ছবি হাতে প্রতি বৃহস্পতিবার বিকেলে জমা হতে থাকেন রাষ্ট্রপতি ভবনের সামনে পvজা দ্য মেয়োতে। এই সমাবেশ ছিল মূলত মায়েদের, শোকের প্রতীক হিসেবে তাঁরা মাথায় বাঁধতেন সাদা স্কার্ফ, হাতে থাকতো নিখোঁজের ছবি এবং নীরবে তাঁরা প্রদক্ষিণ করতেন চত্বরের মধ্যভাগের স্বাধীনতা সত্মম্ভ। নিখোঁজ মানুষের মাতাদের এই সমাবেশে একে একে অংশগ্রহণকারীর 888sport free bet বাড়তে থাকে, তাদের নীরব প্রতিবাদ অনুরণন তোলে শত-সহস্র মানুষের অমত্মরে এবং কালক্রমে জেগে-ওঠা প্রতিবাদের বিশাল ঢেউ ভাসিয়ে নিয়ে যায় সামরিক শাসনের তখতে-তাউস।
সামরিক শাসনের অবসানের পর ক্রমে ক্রমে উদ্ঘাটিত হতে থাকে নৃশংসতার অনেক কাহিনি। মার্ক বললো, এসমা যে ছিল বন্দিশিবির সেটা জানার কোনো উপায় ছিল না, কেননা বন্দিদের এখানে আনা হতো চোখ বেঁধে, বের করাও হতো চোখ বাঁধা অবস্থায়। অন্ধ প্রকোষ্ঠে বন্দি থাকাকালে বাইরের কিছু দেখার কোনো উপায় ছিল না। যারা বেঁচে গিয়েছিল তাঁদের জবানিতে জানা গিয়েছিল, বন্দিরা শব্দ শুনতে পেতেন ট্রেন চলাচল ও বিমান উড্ডয়নের। সেই থেকে অনুমান করা গিয়েছিল আটক শিবিরটি হবে রেললাইন সংলগ্ন এবং বিমানবন্দরের কাছাকাছি। এভাবেই এসমার স্বরূপ উন্মোচিত হয়েছিল এবং এসমা ও 888sport app বন্দিশিবিরে যে অত্যাচার হয়েছে, যেভাবে ব্যাপক মানুষকে চিরতরে নিখোঁজ করে দেওয়া হয়, মানবতার বিরম্নদ্ধে অপরাধ হিসেবে তার বিচার এখন চলছে আর্জেন্টিনায়। এসমা ট্রায়াল হিসেবে পরিচিত এই বিশেষ মামলায় অভিযুক্তের 888sport free bet পঁয়ষট্টি। যারা অপরাধের সঙ্গে বিভিন্নভাবে যুক্ত তাদের একত্রে একটি মামলায় বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। আমত্মর্জাতিক অপরাধের জন্য আর্জেন্টিনায় এটাই সবচেয়ে বড় ট্রায়াল, আর এর প্রধান বিচারক হচ্ছেন জাস্টিস ড্যানিয়েল অবলিগাডো, যিনি এখন আমাদের গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর ভিলার উদ্দেশে, যিনি বিগত ফেব্রম্নয়ারিতে 888sport appয় আয়োজিত আমত্মর্জাতিক সম্মেলনে পেশ করেছিলেন এসমা ট্রায়াল-সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা এবং সাক্ষাৎ করেছিলেন 888sport appsের আমত্মর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিচারকদের সঙ্গে, সম্প্রতি বুয়েনাস আয়ারেসে আয়োজিত সম্মেলনে মেলে ধরেছিলেন আমত্মর্জাতিক অপরাধের বিচারের জন্য বিভিন্ন দেশে গঠিত জাতীয় আদালত তথা ডোমেস্টিক ট্রাইব্যুনালের মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তোলার প্রয়োজনের কথা।
এসমা ট্রায়ালের গুরম্নদায়িত্ব বহনকারী বিচারক যখন আমাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন খোদ এসমা কমপেস্নক্সের সামনে দিয়ে, বালকপুত্র বিবৃত করছিল এসমা বন্দিদের করম্নণ জীবনভাগ্য, তখন তাঁর অনুভূতি কী ছিল সেটা বোঝা দুষ্কর, বিচারপতিদের মানস তো প্রকাশ্য হওয়ার নয়। তবে আইনের পথে ন্যায় ও সত্য প্রতিষ্ঠার গুরম্নদায়িত্ব যাঁদের ওপর অর্পিত হয় তাঁরা তো ইতিহাসের অংশী হয়ে ওঠেন, আইনের সূত্র ধরে ইতিহাসের সঙ্গে তাঁদের চলে নিত্য বোঝাপড়া। তাই বুঝি জাস্টিস ড্যানিয়েল অবলিগাডো এসমা পেরিয়ে যখন যাচ্ছেন ভিলা ওকাম্পোর উদ্দেশে তখন তাঁর মন প্রসন্ন না হয়ে পারে নি, তিনি আনন্দের সঙ্গে জানালেন, সান ইসিদ্রোর ভিলার বারান্দায় বসে বৈকালিক চা-পানের জন্য তিনি টেবিল সংরক্ষিত রেখেছেন, সেটা নিশ্চয় আমাদের ভালো লাগবে।
শঙ্খ ঘোষের 888sport app download apk latest version-গ্রন্থ ওকাম্পোর রবীন্দ্রনাথ বাঙালি পাঠকের সামনে রবীন্দ্রনাথের বিজয়ার অমত্মরঙ্গ রূপ মেলে ধরেছিল। সেখানে বারবার এসেছে সান ইসিদ্রোর ভিলার প্রসঙ্গ, যদিও রবীন্দ্রনাথ অবস্থান করেছিলেন অদূরবর্তী আরেক আবাস মিরালরিওতে, কিন্তু দুই বাড়ি মিলেই সম্পন্ন হয়েছিল তাঁর দুই মাসের অবস্থান এবং গড়ে উঠেছিল আর্জেন্টিনীয় 888sport promo code অনন্য সাংস্কৃতিক-888sport live footballিক ব্যক্তিত্ব ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে নিবিড় সখ্য, ভালোবাসা ও ভাববিনিময়। পারস্পরিক এই মিথস্ক্রিয়ার বড় অংশ জুড়ে ছিল সান ইসিদ্রোর ভবনের অলিন্দ, যেখানে বসে চলতো বৈকালিক চা-পান, যে চা-পানের আসরে পরে বিভিন্ন সময়ে রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও যুক্ত হয়েছেন ফেদোরিকো গার্সিয়া লোরকা, ইগর স্ত্রাভিনস্কি, অর্তেগা ই গ্যাসেট, গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রাল, লে করবুসিয়ঁ, পাবলো নেরম্নদা, জাঁক মার্টিন, সাঁ-জন পার্স, গ্রাহাম গ্রিন, অ্যালাঁ-রো গ্রিল, হোর্হে লুই বোরহেসসহ আরো কত না বরেণ্য ব্যক্তিত্ব! সান ইসিদ্রোর উদ্দেশে আমাদের যাত্রা তাই ইতিহাসের গতিপথ অনুসরণ থেকে ভিন্নতর কিছু ছিল না। ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথের সান ইসিদ্রো অবস্থান এবং রবীন্দ্রনাথ-বিজয়া ভাববিনিময় থেকে যে অভিন্ন মানবিক সাংস্কৃতিক ঐক্য ও সংযোগের তাগিদ ফুটে উঠেছিল, যা ছিল রবীন্দ্রনাথ কিংবা তাঁর ভালোবাসাধন্য বিজয়ার জীবনভর সাধনার উদ্দিষ্ট, আজকের সংঘাত-দীর্ণ বিশ্ব-বাসত্মবতায় মনে হতে পারে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে চলেছে সেই প্রয়াস। এই পটভূমিকায় 888sport apps ও আর্জেন্টিনা স্ব-স্ব ইতিহাসে মানুষের চরম অপমানের বিরম্নদ্ধে রম্নখে দাঁড়াবার জন্য যে বিচারপ্রক্রিয়া সূচনা করেছে তা নির্মাণ করতে চলেছে মানবিক ঐক্য ও সংযোগের আরেক সেতু। অন্যতর সেই সংযোগ নববই বছর আগে সান ইসিদ্রোর বাগানে, তিপা গাছের তলে, মিরালরিওর বাড়ির দোতলার কক্ষ থেকে দৃশ্যমান লা পvটা নদীর জলস্রোতের আবহে যেভাবে পাখা মেলেছিল তা কেবল এক পুরম্নষ ও 888sport promo codeসত্তার মধ্যকার একামত্ম ও প্রায় অনুচ্চারিত সংযোগ ছিল না, ছিল সাংস্কৃতিক মিলন ও অভিন্নতার বার্তাবহ, নববই বছর আগের যে সাংস্কৃতিক আকুতি আজ আবার আরেক সংযোগের তাগিদ মেলে ধরছে। সেই নিমিতি আমাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ, তবে এক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ও ওকাম্পো যে হবেন যাত্রাপথের সঙ্গী, সেটা প্রেরণাদায়কই বটে। এমনি ভাবনায় তোলপাড় হয়ে আমরা এসে পৌঁছই সান ইসিদ্রো, ভিলা ওকাম্পোর সামনে।
তিন
সান ইসিদ্রোর রাসত্মায় ছায়া মেলে আছে ওক গাছের দীর্ঘ সারি, দেয়ালঘেরা বিশাল এলাকা নিয়ে একেকটি বাড়ি, বাড়ি না বলে ভবন বলাই সংগত, বুঝতে অসুবিধা হয় না শহর থেকে দূরে এ-এক অভিজাত এলাকা, বিত্তবানদের আবাস যেখানে। আমাদের গাড়ি দাঁড়ালো গুল্মলতা-আচ্ছাদিত দীর্ঘ দেয়ালের পার্শ্ববর্তী প্রবেশদ্বারে, পাতার আচ্ছাদনে প্রায় 888sport app পড়েছে বাড়ির নম্বর ১৮৩৭, গেটে শোভা পাচ্ছে ইউনেস্কোর লোগো সংবলিত বোর্ড – ভিলা ওকাম্পো, সংস্কৃতির আবাসভূমি। নুড়ি পাথর বিছানো পথ বেঁকে গেছে বাগানের ভেতর দিয়ে, সেই পথ ধরে এগোলে চোখে পড়বে দ্বিতল ভবন, ১৮৯০ সালের দিকে ওকাম্পোর প্রকৌশলী পিতা নির্মাণ করেছিলেন এই গ্রীষ্মকালীন আবাস, বুয়েনাস আয়ারেস থেকে দূরগ্রামে নিজেদের খামারবাড়িতে যাতায়াতের পথে এটা ছিল বিশ্রামস্থল। গ্রীষ্মের উষ্ণ দিনগুলো কাটাবার জন্য নদীতীরবর্তী বাগানঘেরা এই ভবন আদর্শ স্থানও বটে। ভবন এবং ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো প্রায় সমান বয়েসি, ভিক্টোরিয়ার শেষ দিনগুলোও কেটেছে এখানে। বস্ত্তত ১৯৩০ সালের পর থেকে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো এখানে নিয়মিত-অনিয়মিতভাবে থাকা শুরম্ন করেন এবং 888sport live footballিক ও সাংস্কৃতিক জগতের গুণীজনের জন্য আবাসের দ্বার উন্মুক্ত করে দেন। ভিক্টোরিয়ার আতিথ্যগ্রহণকারীর তালিকা অনেক দীর্ঘ এবং এই তালিকার বয়ান হয়ে উঠতে পারে সাংস্কৃতিক ইতিহাসের ভাষ্য, তার বহুমুখী বিচিত্র মাত্রা নিয়ে। ভিলা ওকাম্পোর গাইডরা পালাক্রমে ইংরেজি ও স্প্যানিশ ভাষায় ব্যাখ্যা করেন ভবনের তাৎপর্য, মেলে ধরেন ভবন ও ভবনকর্ত্রীর জীবনকথা। ১৮৯০ সালে জন্ম ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর, প্রয়াণ ১৯৭৯ সালে, দীর্ঘ জীবনের অধিকারী হয়েছিলেন তিনি, আর এক জীবনে কত ধরনের কাজই না তিনি করেছেন, কত না মানুষের সঙ্গে গড়ে তুলেছেন আমত্মরিক সম্পর্ক, যে-সম্পর্কের উদ্দিষ্ট ছিল 888sport live chat-888sport live football-সংস্কৃতির চর্চা, প্রসার ও অনুশীলনের মাধ্যমে সর্বমানবের জীবন আনন্দময় করে তোলা। জীবনব্যাপী এ-এক অনন্য সাধনা, সাধনক্ষেত্র ছিল তাঁর বিপুলা, সাধনসঙ্গীও ছিল অনেক। ফলে যে-কাজই তিনি করেছেন সেখানে মানব-অসিত্মত্বের বিপুলতা সর্বদা অভিঘাত সঞ্চার করে চলেছে। জীবনভর ওকাম্পোর এই পথচলার বাইরের দিক থেকে ছিল আড়ম্বর ও ঐশ্বর্য – বিত্তশালী পিতার কন্যা হিসেবে মনে হতে পারে এটাই তাঁর সর্বোচ্চ সুবিধা, কিংবা মনে হতে পারে ধনীকন্যা হিসেবে তিনি তাঁর শখ মিটিয়েছেন প্রাণভরে। ভিলা ওকাম্পো পরিদর্শনে ভবনবাসিনীর পরিচয় যে চট করে কেউ পেয়ে যাবেন তা মনে হয় না, যতটুকু দেখা বা শ্রম্নত হয় তার বাইরে রয়ে যায় অনিঃশেষ বিপুলতা এবং অশ্রম্নত বহু কথা। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর জীবন-দর্শনের ছোঁয়া ভবনের সবকিছুতে এমনভাবে লেপ্টে আছে যে তাঁর গোটা জীবন এবং কর্মসাধনার নিরিখে এর পাঠ নেওয়া যেতে পারে, যে-পাঠের জন্য প্রস্ত্ততি, সময় ও অনুধ্যান বিশেষ প্রয়োজন। আমাদের মতো গোবেচারা দর্শকদের তাই এখানে কিছুটা হতবুদ্ধি হয়ে পড়তে হয়, সেইসাথে মানবিক জীবন যে কত সম্পদবান হতে পারে এবং এক জীবনে মানুষ যে কত ঐশ্বর্যের সম্ভার আহরণ ও বিতরণ করতে পারে পরের জন্য, সর্বজনের জন্য, সেই অনুভবটুকু অমত্মত সবাই এখান থেকে পেতে পারেন, এমনকি বর্তমান অর্বাচীন দর্শনার্থীও।
ভিলা পরিদর্শন শেষে আমরা এসে বসেছিলাম অলিন্দে বৈকালিক চায়ের আসরে, হালকা নাসত্মার সঙ্গে হালকা কথাবার্তা বলবার উপযুক্ত পরিবেশ বটে, কিন্তু মাথা ভারী ও ভরে ছিল সদ্যোজাত অভিজ্ঞতার বোঝায়, যা কিছু অবলোকন করা গেল তার বিবরণ দেওয়া যায় কীভাবে? মনে হচ্ছিল আমি না এসে এই ভবনে পা রাখা প্রয়োজন ছিল শঙ্খ ঘোষের, তিনিই পারতেন ভিলা ওকাম্পোর রূপ ও গভীরতার যথার্থ পরিচয় মেলে ধরতে। এই ভবন দর্শনার্থীকে বিমূঢ় ও হতবাক করে দেয়, কিন্তু তারপরেও তো ভাববিনিময়ের পন্থা সবাইকে করে নিতে হয়, যার যেমন সাধ্য। খোঁজ করেছিলাম গৃহ-জাদুঘরের দপ্তরে, ইংরেজিতে কোনো প্রকাশনা রয়েছে কিনা ভিলা ওকাম্পো কিংবা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো বিষয়ে। তেমন কিছুই তাঁরা দিতে পারলেন না, যা আছে তার সবই স্প্যানিশ ভাষায়। ১৯৯০ সালে ওকাম্পোর জন্মশতবর্ষে প্রকাশিত বিশাল গ্রন্থ তাঁরা দেখালেন, বিশ্বের অনেক মনীষীর রচনায় সমৃদ্ধ, কেতকী কুশারী ডাইসনের একটি লেখাও রয়েছে, তবে সবই স্প্যানিশ ভাষায়। আমার দুর্গতি দেখে ইরিনা মাসিমিনো খুঁজে পেতে একটি তথ্যচিত্র কিনে উপহার দিলো, ছবির নাম ট্রেস ফাবুলাস দ্য ভিলা ওকাম্পো, এতে ইংরেজি সাব-টাইটেল রয়েছে। ছবির নাম বাংলায় বলা যেতে পারে ‘ভিলা ওকাম্পো নিয়ে তিনটি উপকথা’, তো এই তথ্যচিত্রে তথ্য বিশেষ নেই, আছে ভিলা ওকাম্পোর বহুমাত্রিক পরিচয়, বস্ত্তনিচয়ের মধ্য দিয়ে জীবনের সারসত্যে পৌঁছবার আরেক প্রয়াস, ধরনটি বলা যেতে পারে বোরহেসীয়। তিনটি উপকথার আকারে পরিবেশন করা হয়েছে ভিলা ওকাম্পোর বৃত্তামত্ম, যেখানে কোনো সচল দৃশ্য নেই, নেই কোনো মানুষের সজীব উপস্থিতি, অর্থাৎ নেই কোনো পুরনো ফুটেজ, কিংবা কোনো দৃশ্যের পুনর্নির্মাণ, আছে কেবল বাড়ির বাগান, বাগানের গাছপালা তরম্নলতা, ভবনের কারম্নকাজ, ভবন অভ্যমত্মরের যাবতীয় সামগ্রী, আসবাব, ছবি, লেখার টেবিল, দেয়ালে কিংবা টেবিলে শোভা পাওয়া বিভিন্ন ফটোগ্রাফ, বই, পত্র-পত্রিকা, সুর পত্রিকার নানা 888sport free bet, চিঠিপত্র ইত্যাদি; এভাবে টুকরো টুকরো দৃশ্যের মধ্য দিয়ে নানা সামগ্রী ও আসবাবের সূত্রে ধারা-বর্ণনায় চিত্ররূপময় হয়ে ওঠে ভিলা ওকাম্পো এবং ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। চিত্ররূপ গড়ে তুলে আবার তা ভেঙেও দেয় এই তথ্যচিত্র, দর্শকদের ফেলে দেয় ধন্ধে, খুঁজতে ব্রতী করে অধরা মাধুরী, সবকিছুর পরও বুঝি রয়ে যায় আরো কিছু কথা, যেখানে প্রকৃতভাবে মিলবে এই 888sport promo codeর পরিচয়, আলোকচিত্রে কিংবা পেইন্টিংয়ে যাঁকে মনে হয় একই সঙ্গে বিষণ্ণ ও দৃঢ়চেতা। ছবির সমাপনীতে তাই শ্রম্নত হয় বোর্হেসীয় উক্তি, সবকিছুর পর জীবনে ইমেজ টিকে থাকে না, ইমেজ মিলিয়ে যায়, থাকে কেবল শব্দসমষ্টি।
একই সঙ্গে সরলতা ও জটিলতা নিয়ে নির্মিত এই তথ্যচিত্র অমত্মত এটুকু বুঝিয়ে দেয় যে, ভিলা ওকাম্পোর বয়ান হয়ে উঠতে হবে স্বয়ম্ভু, ভিলাবাসিনীর মতোই গভীরতা ও বৈচিত্র্যসন্ধানী, ব্যতিক্রমী। এমনি শৈল্পিক live chat 888sportের বিবরণ ভাষা দিয়ে বোঝানো দুরূহ, এমন তথ্যচিত্র থেকে ভিলা ওকাম্পোর বর্ণনাদানের সূত্র খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, তবে তথ্যচিত্রের মতো আমরাও বেছে নিতে পারি তিনটি উপকথা অথবা বলা যায় রূপকথা, যার মধ্য দিয়ে ভিক্টোরিয়ার মানসভুবন অনুধাবনের চেষ্টা নেওয়া যেতে পারে। এই রূপকথা-উপকথার প্রথমটির অবলম্বন হতে পারেন আমাদেরই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
চার
১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর খ্যাতির শীর্ষগগনে, 888sport live footballে নোবেল 888sport app download bdপ্রাপ্তি যে স্বীকৃতি তাঁকে এনে দিয়েছিল সেটা তাৎক্ষণিকভাবে কাজে লাগেনি প্রথম বিশ্বযুদ্ধের দাবানলের কারণে, যুদ্ধ শেষে বিধ্বসত্ম ইউরোপের গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে কিছু সময় লেগেছিল, ইতিমধ্যে ধ্বংসযজ্ঞের পটভূমিকায় গীতাঞ্জলির কবির বিশ্বমানবিক আবেদন অর্জন করে আরো বেশি বাসত্মব তাৎপর্য। যুদ্ধকালেই ১৯১৬-১৭ সালে রবীন্দ্রনাথ গিয়েছিলেন আমেরিকায়, যে-দেশ ছিল যুদ্ধের বাইরে, সান ফ্রান্সিসকো থেকে নিউইয়র্ক, গোটা আমেরিকা তিনি চষে বেড়িয়েছেন, তবে তাঁর বিদেশ-888sport slot game বড়ভাবে শুরম্ন হয় ১৯২১ সাল থেকে, তিনি ইংলন্ড, ইউরোপ ও আমেরিকার বহু শহরে পদপাত করেন এবং নানা সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, সভা-সমিতিতে অংশ নেন। এই সময়ে তিনি বিশ্বভারতীরও পত্তন করেন। বিশ্বসংস্কৃতির বৈচিত্র্যের মধ্যে মেলবন্ধন রচনা করে মানবের জীবনসাধনার ঐক্য ও অভিন্নতা প্রসারই ছিল তাঁর অন্বিষ্ট। বিশ্বভারতীর জন্য প্রচার ও অর্থ সংগ্রহ হয় তাঁর সফরের অনুষঙ্গ। এমনি পটভূমিকায় ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ যখন পেরম্ন যাওয়ার আমন্ত্রণ পেলেন তখন স্বভাবতই উৎসাহ বোধ করেছিলেন, যেতে হবে পেরম্নর স্বাধীনতা অর্জনের শতবর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে এবং এ-উপলক্ষে পেরম্নর সরকার বিশ্বভারতীকেও মোটা অঙ্কের সহায়তা জোগাবে। দক্ষিণ আমেরিকা বহু দূরের দেশ, জাহাজে যেতে হবে ইউরোপ, সেখান থেকে আবারো জাহাজে বুয়েনাস আয়ারেস, তারপর আন্দেজ পেরিয়ে পেরম্নর রাজধানী লিমা। ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯২৪ কলকাতা থেকে রওনা হয়ে ১২ অক্টোবর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পৌঁছান ফ্রান্সের মার্সাই বন্দরে, এক সপ্তাহ পর পুনরায় জাহাজ-যাত্রা করে তিনি বুয়েনাস আয়ারেস পৌঁছলেন ৬ নভেম্বর। এই জাহাজযাত্রায় সমুদ্রবক্ষ থেকে রবীন্দ্রনাথ এক পত্র লিখেছিলেন রানু অধিকারীকে, 888sport promo code-পুরম্নষ সম্পর্কের গভীরতর মাত্রা বিষয়ে তিনি লিখলেন, ‘মেয়েদের চাওয়া পুরম্নষের পক্ষে একটা শক্তি। সেই চাওয়ার বেগেই পুরম্নষ নিজের গূঢ় সম্পদকে আবিষ্কার করে। কতকাল থেকে উৎসুক হয়ে আমি ইচ্ছা করেছি কোনো মেয়ে আমার সম্পূর্ণ আমাকে প্রার্থনা করম্নক, আমার খ–ত আমাকে নয়। আজো তা হল না – সেই জন্যই আমার সম্পূর্ণ উদ্বোধন হয় নি। কি জানি আমার উমা কোন্ দেশে কোথায় আছে? হয়তো আর জন্মে সেই তপস্বিনীর দেখা পাব।’ কে জানতো সেই তপস্বিনী তখন প্রতীক্ষায় অধীর হয়ে থরথর কাঁপছে বুয়েনাস আয়ারেস শহরে, যেখানে কবির ক্ষণকালীন যাত্রাবিরতির কথা।
জাহাজে আরো এক ঘটনার অবতারণা হয়েছিল, যে-888sport app download apk তিনি লিখছিলেন কাটাকুটির পর সেই পা-ুলিপিতে বিভিন্ন চিত্র-অবয়ব যেন উঁকি দিতে লাগল। বিশেষভাবে ‘অপরিচিতা’ ও ‘আনমনা’ 888sport app download apkর খসড়ায় এসব চিত্ররেখা শনাক্ত করেছেন পরবর্তী 888sport live chatসমালোচকরা। ৬৩ বছর বয়েসি কবি, শরীরের জীর্ণতাজনিত কারণে হোক বিংবা দীর্ঘ সমুদ্রযাত্রার ফলে হোক, হয়ে পড়েছিলেন গুরম্নতরভাবে অসুস্থ, এমনই অসুস্থ যে এই প্রথম তাঁর জীবনে দেখা দিলো মৃত্যুচ্ছায়া। তিনি লিখেছিলেন, ‘কয়দিন রম্নদ্ধকক্ষে সঙ্কীর্ণ শয্যায় পড়ে পড়ে মৃত্যুকে খুব কাছে দেখতে পেয়েছিলাম, মনে হয়েছিল প্রাণকে বহন করবার যোগ্য শক্তি আমার শেষ হয়ে গেছে। এই অবস্থায় আমার প্রথম ইচ্ছার ধাক্কাটা ছিল দেশের আকাশে প্রাণটাকে মুক্ত করে দেওয়া। ক্রমে সেই ইচ্ছার বন্ধন শিথিল হয়ে এল।’ রবীন্দ্রনাথের মনে হয়েছিল, অভ্যসত্ম জীবনে চারপাশের সঞ্চয় মৃত্যুকে প্রবলভাবে অস্বীকার করতে চায়, ফলে জীবন-মরণের খেলায় বিঘ্ন ঘটে, তাতে আমরা ‘মৃত্যুর সম্পূর্ণ সঙ্গীত শুনতে পাই নে, মৃত্যুকে সত্য বলে স্বীকার করে নেবার আনন্দ চলে যায়। …মৃত্যু বাঁধন ছিন্ন করে দেবে, এইটেই কুৎসিত। আপনি বাঁধন আলগা করে দিয়ে সম্পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে তাঁর হাত ধরব, এইটেই সুন্দর।’
জীবন ও মৃত্যুচিমত্মার দোলায় আলোড়িত অসুস্থ রবীন্দ্রনাথ জাহাজ থেকে বুয়েনাস আয়ারেসে নামলেন ৬ নভেম্বর ১৯২৪ এবং উঠলেন শহরের অভিজাত পস্নাজা হোটেলে। ডাক্তাররা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নির্দেশ দিলেন সম্পূর্ণ বিশ্রামের, সবরকম দর্শনার্থীর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বারণ হলো। এদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিমা যাবার পথে বুয়েনাস আয়ারেসে যাত্রাবিরতি করবেন এই সংবাদ জেনে অধীর অপেক্ষায় ছিলেন শহরের সারস্বত মহলে বিশেষ পরিচিত ৩৪ বছর বয়সের 888sport promo code ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। লেখালেখির সুবাদে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ১৯১৪ সালে গীতাঞ্জলি ও মালিনী গ্রন্থের ফরাসি ও স্প্যানিশ 888sport app download apk latest versionের মাধ্যমে, যে-গ্রন্থ তাঁর জীবনের এক সংকটকালে পরম নির্ভর হিসেবে দেখা দিয়েছিল। ১৯১২ সালে ২২ বছরের তরম্নণী ভিক্টোরিয়া বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন আইনজ্ঞ ও অধ্যাপক ড. লুই এস্ত্রাদার সঙ্গে। বিয়ের পর প্যারিসে মধুচন্দ্রিমা যাপনকালে ভিক্টোরিয়া উপলব্ধি করেন, প্রচ-রকম পুরম্নষবাদী কর্তৃত্বশীল এমন এক মানুষের সঙ্গে তিনি গাঁটছাড়া বেঁধেছেন যা কোনোভাবে যুগল-জীবন বিকাশে সহায়ক হবে না। অচিরেই ভেঙে পড়ে তাঁদের আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক। তরম্নণী ভিক্টোরিয়া সেই সংকটকালে দামেত্মর বিয়েত্রিচের মধ্যে খুঁজে পেয়েছিলেন আস্থা আর রবীন্দ্রনাথের গীতাঞ্জলিতে আশ্রয়। জীবনের সংকটকালে গীতাঞ্জলি হাতে তুলে নেওয়ার 888sport sign up bonusর পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছেন ওকাম্পো প্রায় পঞ্চাশ বছর পর ১৯৬১ সালে রবীন্দ্রজন্মশতবর্ষকালে নিবেদিত লেখায়। ভিক্টোরিয়া লিখেছেন, ‘সেই ক্ষণ এবং সেই স্থান আমার হুবহু মনে আছে। ছাইরঙা হালকা রেশমি-কাপড় আবৃত আসবাবের পাশে সাদা মার্বেল পাথরের ফায়ারপেস্নসের ধারে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম আমি। সেই বাড়ি আজ আর নেই, নেই সেইসব মানুষেরা, যাঁদের আমি দুঃখ দিতে চাই নি, কিংবা তাঁরা যারা আমাকে পীড়িত করেছিল। নেই সেই কবি যিনি আমার জন্য বয়ে এনেছিলেন অশ্রম্ন-উপহার, যেমনটা একামত্ম ঘনিষ্ঠ বন্ধুও করতে পারতো না। যে 888sport sign up bonusচিত্র আমার মনে গাঁথা আছে তা আমার জীবনের সাথে সাথে লোপ পাবে। ইতিপূর্বে যা কিছু লোপ পেয়েছে তেমনি সহজ ও অমোঘভাবে সব কিছু মিলিয়ে যাবে শূন্যে। কিন্তু রয়ে যাবে গীতাঞ্জলি, যা একদা আমার দু-চোখ বেয়ে অশ্রম্নধারা বইয়ে দিয়েছিল।… আমার মনে হয়েছিল, রবীন্দ্রনাথের ঈশ্বর, পরমের সঙ্গে বিচ্ছিন্নতার বেদনা, সেই অনুভব রয়েছে সবার জন্য, তবে অনেক সময় কেউ তা শনাক্ত করতে পারে না। অভিন্ন সত্তায় মিশে যাওয়ার যে আকুতি, তার নাম তো একই, পূর্ব বা পশ্চিম যেখানেই হোক, – প্রেম।’
তেজস্বী 888sport promo code ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো ১৯২৪ সালে প্রথম যৌবনের সংকট কাটিয়ে উঠেছিলেন তবে জীবনের চলার পথ তিনি তখনো ঠিক খুঁজে পান নি। নানা দিকে তাঁর আগ্রহ, বহু মানুষের সঙ্গে সংযোগ, কিন্তু স্থিরলক্ষ্য হয়ে এগোবার মতো পথ ও প্রত্যয় তিনি নিজের জন্য নির্ধারণ করতে পারেন নি। এমনই এক সময়ে অসুস্থ কবির বুয়েনাস আয়ারেস আগমন।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা, বয়সের দুই প্রামেত্ম দুই মহাদেশে তাঁদের অবস্থান, তৎসত্ত্বেও তাঁদের জীবনে মিলের ক্ষেত্র ছিল লক্ষণীয়। উভয়ে ছিলেন অভিজাত পরিবারের সমত্মান, দেশের বিশিষ্টজনের সঙ্গে পরিবারের ছিল কয়েক পুরম্নষের সংযোগ। তবে 888sport promo code শিক্ষার বিষয়টি রক্ষণশীল অভিজাত পরিবারে গ্রাহ্যের মধ্যে ছিল না, আর তাই ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো আনুষ্ঠানিক শিক্ষার কোনো সুযোগ পান নি। বাড়িতে আসা শিক্ষয়িত্রীর কাছ থেকে শিখেছেন ইংরেজি ও ফরাসি, যে ভাষাশিক্ষা তাঁর জন্য 888sport live footballের স্বাদগ্রহণের পথ উন্মুক্ত করেছিল, তিনি হয়ে উঠেছিলেন স্বশিক্ষিত উদারচেতা ব্যক্তিত্ব। একইভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও আনুষ্ঠানিক শিক্ষার পথে পা বাড়ান নি, কিন্তু পিতা ও পরিবারের প্রযত্নে স্বশিক্ষিত হতে পেরেছিলেন যথার্থ অর্থে। তাঁদের ঠাকুর পরিবার তিন পুরম্নষজুড়ে বাংলার নবজাগরণের সঙ্গে ছিল সম্পৃক্ত, ফলে দেশের বিদ্বৎসমাজের সঙ্গে যেমন রবীন্দ্রনাথের ছিল যোগ, তেমনি পরিবার থেকে প্রায় কৈশোর কালেই তিনি শিক্ষাগ্রহণের জন্য গিয়েছিলেন বিলেতে, পাশ্চাত্য সভ্যতার সঙ্গে তাঁর ঘটেছিল স্বাভাবিক পরিচয়। ওকাম্পোর জন্যও ফরাসি দেশে কালক্ষেপণ কোনো ব্যতিক্রমী ঘটনা ছিল না এবং দেশের ও ইউরোপের সারস্বত সমাজের সঙ্গে সংযোগ গড়ে উঠবার স্বাভাবিক সুযোগ তাঁর ছিল। অষ্টাদশী ওকাম্পো দুবছর কাটিয়েছিলেন প্যারিসে, ফরাসি কলেজে পাঠগ্রহণ করেছেন, যেমন রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বিলেতে শিক্ষাগ্রহণের জন্য। তবে বিশেষভাবে যেটা লক্ষণীয়, শুরম্ন থেকেই রবীন্দ্রনাথ ছিলেন উপনিবেশিক অধসত্মনতার মানসিকতা থেকে মুক্ত, যেটা তাঁর সমাজে অনেকটা ব্যতিক্রমীই ছিল। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোও ছিলেন আর্জেন্টিনার রক্ষণশীলতা থেকে মুক্ত কসমোপলিটান মানসের অধিকারী, যেটা ব্যতিক্রম ছিল বটে, 888sport promo codeদের জন্য তো ছিল আরো বেশি ব্যতিক্রমী।
তবে ১৯২৪ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিত্ব, তাঁর চিমত্মা, কর্ম ও সৃজনশীলতা দেশকালের গ– ছাপিয়ে গেছে, তাঁর রচনার ইংরেজি 888sport app download apk latest version ছাড়াও আন্দ্রে জিঁদ ফরাসি ভাষায় 888sport app download apk latest version করেছেন গীতাঞ্জলি, স্প্যানিশ ভাষায় একাধিক গ্রন্থের 888sport app download apk latest version করেছেন হুয়ান র্যামন হিমেনেথ দম্পতি, বিশ্বের খ্যাতনামা ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে চলে রবীন্দ্রনাথের ভাববিনিময়, আর্জেন্টিনাতেও তাঁর পরিচিতি ছিল ব্যাপক। অন্যদিকে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো তখন সবে পা রাখছেন লেখালেখির জগতে, দামেত্ম বিষয়ক তাঁর বই পাঠকের মনোযোগ পেয়েছে, তবে যতটা না লেখক তার চেয়ে বেশি লেখক-888sport live chatীদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে তাঁর পরিচিতি। আরেক পরিচয় প্রথার গ–ভাঙা 888sport promo code হিসেবে, আর্জেন্টিনার ক্যাথলিক সমাজে বিবাহ-বিচ্ছেদ অনুমোদিত ছিল না, কিন্তু সে-কারণে নষ্টনীড়ে মুখ বুঁজে পড়ে থাকেন নি ভিক্টোরিয়া, স্বামীর ঘর ছেড়ে একক 888sport promo code হিসেবে আলাদা বাসা নিয়েছেন তিনি, প্রেমিক জুলিয়ান মার্টিনেজের সঙ্গে সম্পর্কেও বিশেষ রাখঢাক ছিল না। আর ছিল লেখক-888sport live chatী-সংগীতজ্ঞদের সঙ্গে তাঁর বন্ধুতা, যা অনেক সময় জন্ম দিত মুখরোচক গল্পকথার।
১৯২৪ সালে কবির গুণমুগ্ধ আত্মমগ্ন ভীরম্ন যে তরম্নণী পস্নাজা হোটেলে মুখোমুখি হলেন রবীন্দ্রনাথের, তিনি মনের কথা কিছুই বলতে পারেন নি, প্রচ- আবেগতাড়িত হয়ে। এর পরপর তিনি যখন জানলেন ডাক্তাররা কবিকে লোকচক্ষুর আড়ালে পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছে, তখন তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে এসেছিলেন সান ইসিদ্রোর আবাসে এবং প্রায় দুমাস কবি কাটিয়েছেন ভিক্টোরিয়ার আতিথ্য গ্রহণ করে। এই সময়ে অসমবয়েসি তবে চিমত্মার সাযুজ্যের অধিকারী দুই 888sport promo code-পুরম্নষের মধ্যে যে নিবিড় সখ্য, মৈত্রী, ভালোবাসা ও ভাববন্ধন গড়ে ওঠে তা নানাভাবে নানা গ্রন্থ ও রচনায় বিবেচিত হয়েছে। কবি প্রেমে পড়েছিলেন ওকাম্পোর, ওকাম্পো প্রেমে মজেছিলেন কবির, এসব কথকতার মধ্যে কোনটা কতটা গ্রহণযোগ্য বা অগ্রহণযোগ্য এমনি ধন্ধের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকে আলোচনা। এ-ও এখানে স্মর্তব্য, বুয়েনাস আয়ারেস থেকে বিদায়ের পর একবারই রবীন্দ্রনাথ-ওকাম্পোর স্বল্পকালীন সাক্ষাৎ ঘটেছিল, ১৯৩০ সালে প্যারিসে, যখন কবি তাঁর চিত্রকর্ম নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই 888sport live chatের শহরে এবং প্রদর্শনীর কোনো কূল-কিনারা করতে পারছিলেন না। তখন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোই তাঁর সহায়তায় এগিয়ে আসেন এবং খুব দ্রম্নত সুচারম্নভাবে আয়োজন করেন প্রদর্শনীর। এরপর আর তাঁদের দেখা হয় নি, কিন্তু রবীন্দ্রনাথের পরবর্তী বিভিন্ন রচনায় এবং ওকাম্পোর জীবন-কর্মে ছাপ রয়ে গেছে এই অনন্য ও তুলনারহিত সম্পর্কের। তাঁদের মধ্যে পত্রবিনিময় ছেদ বা বিরতি সত্ত্বেও অব্যাহত ছিল রবীন্দ্রনাথের জীবন-উপামত্ম পর্যমত্ম, কেউ কারো 888sport sign up bonus বা বিবেচনার বাইরে ছিলেন না।
রবীন্দ্রনাথকে বাঙালি চিনেছে নিবিড়ভাবে কিন্তু ওকাম্পোকে চেনায় রয়ে গেছে অনেক ঘাটতি। আর রবীন্দ্রনাথ-ওকাম্পোর সম্পর্ক বিবেচনায় বাঙালি মানস প্রেমকাহিনি শুনতে ও বলতে মগ্ন থেকেছে বেশি, এর প্রসারিত মাত্রা বহুলাংশে রয়ে গেছে দৃষ্টিসীমার বাইরে। ভিলা ওকাম্পো পরিদর্শন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে বিশ শতকের ইতিহাসের এমন এক আমত্মঃমহাদেশীয় পটভূমিকায় বহু সংস্কৃতির ধারা-উপধারার মিলনমেলায় দাঁড় করিয়ে দেয় যে, দুই মহাদেশের দুই মনীষীর কাছে হয়ে উঠতে হয় আনত, প্রণম্য; সংস্কৃতির মহাবিসত্মারে দুই চিত্তের অবগাহনের আনন্দরস জীবনের অর্থময়তায় জোগায় নতুন সমৃদ্ধি।
চিঠিপত্রে রবীন্দ্রনাথ ও ওকাম্পো উভয়ে আপনকার নিভৃত অনেক অনুভূতি মেলে ধরেছেন, চরিত্রগতভাবে এসব চিঠি একামত্মই ব্যক্তিগত, তবে উভয়ের দুমাসের সঙ্গ, আলাপচারিতা, ভাববিনিময় ও বিশেস্নষণের ধরন ও গভীরতা কী ছিল তা এসব পত্রে বিশেষ প্রতিফলিত হয় নি। সেসব আলাপচারিতার প্রকাশ যেহেতু তত প্রত্যক্ষ নয়, তাই অনুসন্ধানী নজরের বাইরে থেকে গেছে এর অনেক দিক। আর্জেন্টিনার দিনগুলো কবি রবীন্দ্রনাথকে চিত্রকর রবীন্দ্রনাথে রূপামত্মরিত করেছিল এবং তাঁর প্রথম চিত্রপ্রদর্শনী কাকতালীয়ভাবে ভিক্টোরিয়ার সহায়তাতেই আয়োজিত হয় প্যারিসে। এখানে ঘটনার আকস্মিকতার সঙ্গে আছে এক পরম্পরা, ফলে যা আকস্মিক তার মধ্যে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে ধারাবাহিকতা, হালে যেদিকে কতক 888sport live chat-সমালোচকের দৃষ্টি পড়েছে।
রবীন্দ্রনাথ-ভিক্টোরিয়া আলাপচারিতায় বহু সংস্কৃতির মিলনের তাগিদ থেকে বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ নিশ্চিতভাবেই এসেছে। একই আদর্শিক বোধ ভিক্টোরিয়ার মনোজগতেও নানাভাবে আলোড়ন তুলেছিল। বহু সংস্কৃতির মিলন সাধনার শক্তি ওকাম্পো আর কারো কারো সাথে পেয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকেও। বিশেষভাবে এবং প্রধানভাবে রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে। আবার রবীন্দ্রনাথও ওকাম্পোর মধ্যে 888sport promo codeর শক্তিরূপ দেখতে পেয়েছিলেন এবং 888sport promo code-পুরম্নষ সম্পর্ক আরো তলিয়ে দেখবার কতক উপাদান নিশ্চয় তিনি এখান থেকে আহরণ করেছিলেন। গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথের কাছে জানতে চেয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া, রবীন্দ্রনাথ তাঁকে বিশদভাবে বলেছিলেন বুদ্ধগয়ায় সবান্ধব 888sport slot gameের চিত্তাকর্ষক অভিজ্ঞতা, যখন কবির সঙ্গী হয়েছিলেন ভগিনী নিবেদিতা, 888sport apkী জগদীশচন্দ্র বসু, ঐতিহাসিক যদুনাথ সরকার প্রমুখ। বহু আগের ১৯০৫ সালের সেই 888sport slot gameের অনেক 888sport sign up bonus ওকাম্পোর সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ, বলেছিলেন গৌতম বুদ্ধ ও তাঁর দর্শন সম্পর্কে স্বীয় মূল্যায়ন, ভগবৎ গীতায় মিলবে ভারতবর্ষের গড়নের আভাস, আর ধম্মপদে পাওয়া যাবে ভারতাত্মার পরিচয়।
রবীন্দ্রনাথের পারিবারিক জীবনের কথা জানতে চেয়েছিলেন ওকাম্পো। কবি বলেছিলেন তাঁর স্ত্রী ও পুত্রকন্যাদের কথা, তাঁদের কয়েকজনের অকালমৃত্যু প্রসঙ্গে তিনি মৃত্যু নিয়ে রচিত তাঁর 888sport app download apk আবৃত্তি করে শোনান। স্ত্রী মৃণালিনী দেবীর শ্যামলা-বরণ নিয়ে পারিবারিক প্রতিক্রিয়া প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ পাঠ করে শুনিয়েছিলেন কৃষ্ণকলি 888sport app download apkংশ, সবাই যাকে কালো বলে সেখানে তিনি দেখেছিলেন কালো চোখের রূপের ছটা।
সেইসাথে এ-ও লক্ষণীয়, আর্জেন্টিনা তথা ল্যাটিন আমেরিকার সংস্কৃতি সম্পর্কে গভীরতর উপলব্ধি রবীন্দ্রনাথ আহরণ করেছিলেন তাঁর দুমাসের সান ইসিদ্রো বসবাসের মাধ্যমে। আধুনিক ফরাসি ও স্প্যানিশ 888sport live footballের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের পরিচয় নিবিড় করবার অমত্মত একটি প্রচেষ্টার কথা জানা যায় ওকাম্পোর জবানিতে, তিনি রবীন্দ্রনাথকে পড়ে শুনিয়েছিলেন বোদলেয়ারের মূল ফরাসি 888sport app download apk, ‘অভিযাত্রার আমন্ত্রণ’ শীর্ষক 888sport app download apk পাঠের পর ইংরেজিতে 888sport app download apkর ভাবানুবাদও মুখে মুখে করেছিলেন ভিক্টোরিয়া, কিন্তু মাঝপথে বাধা দিয়ে কবি বলেছিলেন, আসবাবের বৃত্তামত্মমূলক এই 888sport app download apk তাঁর ভালো লাগছে না। 888sport app download apkয় যে পালাবদল প্রতিফলিত করেছিলেন শার্ল বোদলেয়ার, বুঝতে পারা যায় রবীন্দ্রকাব্যমানসে সেই নতুন 888sport app download apk বিশেষ অভিঘাত সঞ্চার করতে পারে নি। এটা আমাদের জানা, সান ইসিদ্রোতে যে আরামকেদারায় কেটেছে রবীন্দ্রনাথের বিশ্রাম ও আলাপচারিতার অনেকটা সময়, ফিরতি যাত্রায় সেই আসন ভিক্টোরিয়া জবরদসিত্ম করে জাহাজের কেবিনে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন। শামিত্মনিকেতনে জীবনের পড়মত্ম বেলায় এই আসন হয়েছিল কবির বিশ্রাম ও ভাবনার প্রিয় অবলম্বন। অনেক পরে, মৃত্যুর মাত্র কয়েক মাস আগে রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন এক 888sport app download apk, শেষ লেখায় যে-888sport app download apk স্থান পেয়েছে এবং আসবাবই হয়েছে এর উপজীব্য, সেই আসন ও সান ইসিদ্রোর সমৃদ্ধ 888sport sign up bonus-জাগানিয়া। শিরোনামহীন 888sport app download apkর সূচনায় তিনি লিখেছিলেন, ‘আরো একবার যদি পারি/ খুঁজে দেব সে আসনখানি/ যার কোলে রয়েছে বিছানো/ বিদেশের আদরের বাণী।’ ওকাম্পো-888sport sign up bonusর চিরজীবিতা নিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘বিদেশের ভালোবাসা দিয়ে/ যে প্রেয়সী পেতেছে আসন/ চিরদিন রাখিবে বাঁধিয়া/ কানে কানে তাহারি ভাষণ।’ আসবাবের 888sport app download apkই শেষ পর্যমত্ম লিখলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এ-ও বোধ করি একরকমভাবে বিজয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া, যা তিনি করে গেছেন আজীবন।
পাঁচ
রূপকথার আরেক অধ্যায় রয়েছে ভিলা ওকাম্পোর দ্বিতীয় তলায়, যেখানে ব্যক্তিগত 888sport free bet loginের সংগ্রহ সাজানো আছে থরে-থরে। এই লাইব্রেরি মেলে ধরছে ভবনবাসিনীর আগ্রহ ও পরিচিতজনের বৃত্তামত্ম। ঘরের তিনদিক জুড়ে মেঝে থেকে ছাদ অবধি সারি সারি বই আর বই। মরক্কো চামড়ায় বাঁধানো সোনার জলে নাম-খোদিত বই রয়েছে ভিক্টোরিয়ার পিতার আমলের। তাঁর নিজের সংগ্রহের অনেক বই-ই লেখকের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া, এসব লেখক তো কেবল নাম নয়, ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে তাঁদের সখ্য ও বন্ধনের পরিচয় খোদিত রয়েছে বইয়ের পাতার স্বাক্ষরে। আলবেয়ার কাম্যুর উপহার দেওয়া বইয়ে লেখা আছে বিভিন্ন স্থান ও সাল, যেখানে যে-বছর ওকাম্পোর সঙ্গে তাঁর দেখা ও আলাপ হয়েছে। সেটা যেমন হয়েছে প্যারিসে, তেমনি সান ইসিদ্রোতেও। সবশেষের সাক্ষাৎ-স্থান ও বছরের জায়গায় দুটি প্রশ্নচিহ্ন দেওয়া, এভাবে কাম্যু প্রত্যাশা জানিয়েছেন আবার মিলবার, তবে সেটা কবে কোথায় হবে তা জানা নেই। সড়ক দুর্ঘটনায় আলবেয়ার কাম্যুর মৃত্যু সেই সম্ভাবনায় আকস্মিক ছেদ টেনেছিল। আছে জেমস জয়েসের বই ফিনেগান্স ওয়েক, এর পাশেই মিলবে আন্দ্রে ম্যালরোর বেশ কয়েকটি বই, লেখকেরই উপহার, যেমন দেখি অর্তেগা গ্যাসেট, জাঁ পল সার্ত্র, কিংবা গারসিয়া লোরকার বই। লোরকাও একবার এসেছিলেন ভিলা ওকাম্পোয়, সে-যাত্রায় ওকাম্পো স্ব-উদ্যোগী হয়ে প্রকাশ করেছিলেন তাঁর জিপসি ব্যালাড গ্রন্থ। ১৯৭২ সালে পাবলো নেরম্নদা তাঁর 888sport app download apk সংকলন উপহার দিয়েছেন দ্রম্নত হাতে কয়েক ছত্র লিখে, বলা হয়, কলমের এক টানে নেরম্নদা এভাবে ওকাম্পোর সঙ্গে চার দশকের বিরোধ মিটিয়ে ফেলেছিলেন। বিষণ্ণ বোধ করতে হয় ভার্জিনিয়া উলফের বইগুলোর সামনে দাঁড়িয়ে। ভার্জিনিয়া উলফের সঙ্গে নিমেষে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর যে মৈত্রী গড়ে উঠেছিল তাঁর ভিত্তি 888sport promo codeর ওপর পুরম্নষশাসিত সমাজের পীড়ন বিষয়ে উভয়ের গভীর উপলব্ধি। তবে স্বভাবগতভাবে দুজন ছিলেন দুই প্রামেত্মর, একজন অমত্মর্মুখী, আরেকজন বহির্মুখী। উলফের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে ভিক্টোরিয়া যে-শোকগাথা রচনা করেছিলেন সেখানে তিনি বইয়ের কথাই বলেছিলেন, লিখেছিলেন, ‘ভার্জিনিয়া উলফকে আমরা হারিয়েছি, কিমত্মু হারাইনি তাঁর কাজ। তাঁর নিবিড় স্বগতোক্তি, জেন অস্টিন অথবা ঘণ্টাধ্বনি অথবা এলিজাবেথ ব্রাউনিংয়ের কুকুর কিংবা লন্ডনের রাসত্মা নিয়ে তাঁর ভাবনা – সেসব কিছুই তো হারাই নি। তিন ডলার দিয়ে যে-কেউ এসব গ্রন্থ কিনতে পারবেন। এ-এমন এক মহাসম্পদ যা এখন এবং সর্বদা সবার হাতের নাগালের মধ্যে থাকবে। আর এখন আমি এখানে পড়ে আছি একা, ভার্জিনিয়া তোমার বইসকল নিয়ে।’ স্মর্তব্য, 888sport promo codeমুক্তির প্রশ্নে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া এবং ১৯৩৬ সালে আর্জেন্টিনীয় 888sport promo codeদের জাতীয় সংস্থা গঠিত হলে তিনি এর সভাপতি পদে অধিষ্ঠিত হন।
সারি সারি বইয়ের মধ্যে এক জায়গায় এসে দৃষ্টি আটকে যায়, নুরেমবার্গ ডকুমেন্টস গ্রন্থের পাশে রয়েছে সংশিস্নষ্ট বিষয়ে আরো কতক বই। আছে হান্না আরেন্ডের যুগামত্মকারী রচনা আইখম্যান ইন জেরম্নজালেম। গাইড জানালেন যে, নাৎসি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত নুরেমবার্গ আদালতে একমাত্র মহিলা অবজারভার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো। নাৎসিবাদের বিরম্নদ্ধে সোচ্চার হতে ওকাম্পোর কখনো দ্বিধা ছিল না। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর হুয়ান পেরন আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচিত হলে তাঁর দেশ হয়ে ওঠে জার্মান যুদ্ধাপরাধী ও হিটলার-অনুগত নাৎসিদের নির্ভরযোগ্য আশ্রয়। অ্যাড্লফ আইখম্যানকে তো আর্জেন্টিনা থেকে অপহরণ করে বিচারের সম্মুখীন করেছিল ইসরায়েল। নাৎসিদের পৃষ্ঠপোষকতার সরকারি নীতির প্রবল সমালোচক ছিলেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো, এজন্য পেরন সরকার এক পর্যায়ে তাঁকে কারারম্নদ্ধ করেছিল, পরে প্রবল আমত্মর্জাতিক প্রতিবাদের মুখে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। স্বল্পকালীন কারাবাসকালেও অনেক মূল্যবান অভিজ্ঞতা আহরণ করেছিলেন ওকাম্পো। তাঁর আত্ম888sport sign up bonus টেসটিমোনিয়াস গ্রন্থে 888sport promo code-কয়েদিদের জীবনের ছবি তিনি এঁকেছিলেন।
১৯৩০ সালে প্যারিসে প্রদর্শনী শেষে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গেলেন অক্সফোর্ডে, হিবার্ট ভাষণ দিতে। কবির ইচ্ছে ছিল ভিক্টোরিয়াও তাঁর সঙ্গে অক্সফোর্ডের অনুষ্ঠানে শরিক হোক। কিন্তু ভিক্টোরিয়ার মাথায় তখন অন্য চিমত্মা, তিনি গভীরভাবে মেতে উঠেছেন নতুন এক 888sport live footballপত্রিকা প্রকাশের ধারণা নিয়ে, যে-পত্রিকা দক্ষিণ মহাদেশে বয়ে আনবে বিশ্বকে এবং বাইরের দুনিয়াকে জানাবে দক্ষিণের বার্তা। পত্রিকা প্রকাশের পেছনে প্রত্যক্ষ প্রেরণা হিসেবে ছিলেন মাদ্রিদ থেকে অর্তেগা গ্যাসেট এবং নিউইয়র্ক থেকে ওয়ালডো ফ্রাঙ্ক। তবে ভাষা ও ভূগোল আরোপিত 888sport live footballের সীমানা পেরোবার বাসনা ও গুরম্নত্ব তিনি অনুধাবন করতে পেরেছিলেন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে ভাববিনিময় দ্বারা, বিশেষভাবে বিশ্বভারতীর আদর্শে প্রাণিত হয়ে। বিশ্বভারতীর জোর ছিল শিক্ষার ওপর, আর ভিক্টোরিয়া স্বাভাবিক স্ফূর্তি পেতেন 888sport live football ও সংস্কৃতির বৃত্তে, তবে লক্ষ্য সেই একই – বিশ্বজনীনতা। ১৯৩১ সালে প্রথম প্রকাশের পর এই পত্রিকা হয়ে উঠেছিল ওকাম্পোর জীবনের প্রধান ব্রত, নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে চলিস্নশ বছর অব্যাহতভাবে বের হয়েছিল সুর এবং গোটা এক মহাদেশ ও স্প্যানিশ ভাষাভাষী বিশ্বের 888sport live football-বোধ প্রসার এবং নানা ভাষার 888sport live football-সৃষ্টি দুই মলাটের মধ্যে নিয়ে আসতে পালন করে অনন্য ভূমিকা। ভিলা ওকাম্পোর লাইব্রেরি ও অফিস-কক্ষে রয়েছে সুর পত্রিকার নানা 888sport free bet, মোটা কাগজে ছাপা নিরাভরণ প্রচ্ছদ, ‘সুর’ শব্দের অর্থ যে দক্ষিণ সেটা বোঝাতে প্রচ্ছদে মোটা এক তীর চিহ্ন নির্দেশ করছে দক্ষিণ দিক, আর প্রচ্ছদেই মোটা হরফে ছাপা ভেতরের উলেস্নখযোগ্য লেখা বা লেখকের নাম কিংবা সেই 888sport free betর মূল বিষয়। ভিক্টোরিয়ার পাঠাগারে যেসব লেখকের বই শোভা পাচ্ছে তাঁরা প্রায় সবাই অমত্মর্ভুক্ত হয়েছেন সুরের লেখক তালিকায়। এমন এক পত্রিকার চার দশকজুড়ে নিরবচ্ছিন্ন প্রকাশনা কোনো জাতির জন্য যে কী বিশাল সৌভাগ্য তা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। ১৯৭৩ সালে ‘ইউনেস্কো কুরিয়ার’ ম্যাগাজিনে জাঁক রিগো লিখেছিলেন, ‘তিনি (ভিক্টোরিয়া) কাজ করেছেন দুই গৃহে যে-দুই আবাস তাঁর জীবনের সমার্থক হয়ে উঠেছিল। এর একটি সান ইসিদ্রোর পাথুরে ভবন, আরেকটি তাঁর নিজ হাতে তৈরি আত্মার আবাস সুর (দক্ষিণী)।’ এই একই নিবন্ধে লেখক সুর পত্রিকার সঙ্গে সংশিস্নষ্ট বহু খ্যাতনামা 888sport live footballিকের নামোলেস্নখ করে লিখেছেন, ‘এসবের সূচনা হয়েছিল ১৯২৪ সালে যখন তিনি বুয়েনাস আয়ারেসের অদূরবর্তী তাঁর পারিবারিক আবাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আতিথ্য গ্রহণের আমন্ত্রণ জানান, তখন স্বাস্থ্যগত কারণে কবিকে তাঁর আর্জেন্টিনা-অবস্থান বিলম্বিত করতে হয়েছিল। এই দেখা-সাক্ষাতের মধ্য দিয়ে ভিক্টোরিরা যে কেবল মহান এক কবির রচনা এবং ভারতবর্ষের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানলেন তা নয়, তিনি খুঁজে পেলেন তাঁর জীবনের ব্রত – সকল ধরনের লেখক, 888sport live chatী, সৃজনশীল মানুষদের প্রণোদনা, সহায়তা ও আতিথেয়তা জোগানো এবং একের সঙ্গে অপরের পরিচিতি ঘটানো। এর পর থেকে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো এমন এক নিষ্ঠা নিয়ে তাঁর ব্রত পালন করেছেন যা তাঁকে কখনো বয়োবৃদ্ধ করেনি।’
ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর 888sport live chatী-সহায়ক ভূমিকার ব্যাপ্তি বোঝা দায়। জাদুঘর দপ্তরেই চোখে পড়েছিল বিশ্ব-live chat 888sportের প্রবাদপুরম্নষ সের্গেই আইজেনস্টাইন বিষয়ক বই, রম্নশ বিপস্নবের live chat 888sport-রূপদানে কিংবা live chat 888sportের ভাষা নির্মাণে আইজেনস্টাইনের অবদান তো আলোচনার অপেক্ষা রাখে না, কিন্তু তাঁর সঙ্গে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সংযোগ বিশেষ উলিস্নখিত হয় নি। আইজেনস্টাইন হলিউডে এসেছিলেন থিওডর ড্রেইজারের অ্যান আমেরিকান ট্র্যাজেডির live chat 888sport রূপদানের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে, তাঁর সেই ইচ্ছা ফলবতী হয়নি, তবে ওকাম্পো-আইজেনস্টাইন পত্রবিনিময় থেকে জানা যায়, এই প্রয়াসে কতভাবেই না সহায়তাদানে সক্রিয় হয়েছিলেন ভিক্টোরিয়া।
হোর্হে লুই বোরহেস 888sport app download for android করতে পারেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে তাঁর প্রথম পরিচয় ১৯২৪ সালে, যে-বছরটি, আমরা জানি, ওকাম্পোর জীবনেও গুরম্নত্বপূর্ণ। বোরহেস তখন নবীন কবি, যা লিখছেন নিজেরই তা পছন্দ হচ্ছে না, খুঁজছেন নতুন ভাষা ও প্রকাশভঙ্গি, নতুন 888sport app download apk। বোরহেসের মধ্যে ব্যতিক্রমী প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখতে পেয়েছিলেন ওকাম্পো, সুর পত্রিকার সঙ্গেও তাঁকে যুক্ত করতে পেরেছিলেন সার্থকভাবে। ওকাম্পোর প্রয়াণের পর স্বভাবসিদ্ধভাবে বোরহেস লিখেছিলেন, ‘আমি লেখকদের বিচার করি বাকচাতুর্য কিংবা উদ্ভাবনী দক্ষতা দিয়ে। ভিক্টোরিয়া বিচার করেন তাদের মন-মানস ও জীবন-পটভূমি দিয়ে। বই তো একটা মুখোশ, তিনি খুঁজতেন এর পেছনে লুকোনো মুখ। পাঠানন্দে মগ্ন ভিক্টোরিয়া বারবার পড়তেন তাঁর আগ্রহের বই, আমার মনে হয় ধারাবাহিক পাঠ তাঁর স্বভাবের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়, যেমনটা এখন আমার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।’
এরপর পাই বোরহেসের 888sport app download for androidীয় উক্তি, ‘ভিক্টোরিয়া আর নেই, আমি জানি আমাদের মধ্যেকার সম্পর্ক কখনো খুব ঘনিষ্ঠ ছিল না, তবে আমার জন্য তা ছিল এবং হয়ে আছে একেবারে মূল বিষয়। আমি এমনটা বলতে পারি, আমাদের নীরব ও সত্যিকারের বন্ধুত্বের যাত্রা শুরম্ন হলো আজ থেকে।’
ছয়
আমরা ঘুরে ঘুরে বেড়াই ভিলা ওকাম্পোর ঘর থেকে ঘরে, নানা উপকথায় ভরপুর এই গৃহে। নিচতলার ডাইনিং হলে বিশাল টেবিল, অমত্মত বিশজন অতিথি সেখানে একত্রে আহারে যোগ দিতে পারবেন। বোঝা যায়, গৃহকর্ত্রী একক মানুষ হলেও নিঃসঙ্গ নন, এ-বাড়ির দরজা অতিথিদের জন্য সদা রয়েছে উদারভাবে খোলা। দোতলার সিঁড়ির মুখোমুখি দেয়ালে ঝুলছে ট্যাপেস্ট্রি, নিচের বুননে 888sport live chatীর নাম – পাবলো পিকাসো। আরেক দেয়ালে ফার্দিনান্দ লেজারের কাজ। পিতার আমলে দেয়ালে যেসব বিশাল অয়েল পেইন্টিং ঝুলতো সেসব সরিয়ে দিয়েছেন ভিক্টোরিয়া, জানালার ভারী পর্দা অপসারণ করে আলোকিত করেছেন ঘর। টেবিলে আছে অনেক কবি-888sport live footballিকের নাম-স্বাক্ষরিত ছবি, রয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও। ইন্দিরা গান্ধী যখন এসেছিলেন ভিলা ওকাম্পোতে তখনকার ছবি রয়েছে দুটি। যে পিয়ানো রয়েছে ঘরে তার ওপর ফ্রেমে বাঁধানো ইগর স্ত্রাভিন্সকির ছবি, এই পিয়ানোতে স্ত্রাভিন্সকি অনেকবার সুরঝংকার তুলেছিলেন। ধ্রম্নপদী সংগীতের ঘরানায় 888sport live chatী আধুনিকতার আমেজ বয়ে এনেছিলেন এবং আধুনিকতার জন্য নিন্দিত ও নন্দিত দুই-ই হয়েছিলেন। এখন অবশ্য সংগীতজগতের পূজনীয় ব্যক্তিত্ব তিনি।
দেখি নানা রকম আসবাব, মেহগনি কাঠের কারম্নকার্যময় সাবেকি টেবিলের ওপর বাউহাউস ডিজাইনের আধুনিক ল্যাম্প। ওয়াল্টার গ্রোপিয়াসের সঙ্গে ভিক্টোরিয়ার ছিল সখ্য, তাঁর সঙ্গে মিলে প্যারিসের শ্রমজীবী এলাকা ঘুরে দেখা ছিল ওকাম্পোর জীবনের 888sport app download for androidীয় অভিজ্ঞতা। আছে নানা 888sport live chatীর আঁকা ওকাম্পোর প্রতিকৃতি, রম্নশ ভাস্কর প্রিন্স টুরডোভস্কি গড়েছিলেন ব্রোঞ্জের অসাধারণ মূর্তি। আছে ওকাম্পোর আলোকচিত্র, মান রে-র তোলা পোর্ট্রেট এখন বিশ্বের বিখ্যাত ফটোগ্রাফের বইয়ে স্থান পায়, যে-ছবিতে ওকাম্পোর অমত্মর্গত বিষাদ পেয়েছে অনন্য রূপ। যে-ঘরে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটিয়েছেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো সেখানে পাতা আছে শ্বেতশুভ্র শয্যা, অদূরে পড়বার ও লিখবার টেবিল, টেবিলের ওপর টাইপরাইটার, কাগজপত্র, বই। তবে শেষ বয়সে টেবিলে বসে পড়বার ক্ষমতারহিত হয়েছিলেন তিনি, কিন্তু পাঠের স্পৃহা বিন্দুমাত্র হ্রাস পায় নি। বিছানার পাশে আছে ট্রলি, যে-ধরনের ট্রলিতে সাধারণত খাবার বয়ে আনা হয় শয্যাগত মানুষের জন্য। এই ট্রলিতে অবশ্য খাবারের সংস্থান নেই, আছে কতক বই, বিছানায় শুয়ে থাকলেও বই যেন থাকে হাতের নাগালে সেজন্য এমত ব্যবস্থা।
১৯৭৯ সালে মৃত্যুকালে ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো নববই বছরের দ্বারপ্রামেত্ম পৌঁছেছিলেন। শেষ জীবনে তিনি অনেকটা নিঃসঙ্গ হয়ে পড়েছিলেন, আর্থিক সচ্ছলতাও পূর্বের মতো ছিল না, তাঁর স্বদেশ তখন চরম পীড়নমূলক সামরিক শাসনের অন্ধকারে তলিয়ে রয়েছে, পস্নাজা দ্য মেয়োতে মাতাদের পদচারণা তখনো শুরম্ন হয় নি, আলোর কোনো ইশারা পাওয়া যাচ্ছে না, এমন দুঃসময়েও মনের অমিত তেজ বিন্দুমাত্র ক্ষয়িত হয়নি ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর। ১৯৭৮ সালে আর্জেন্টিনায় বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার আয়োজন-আড়ম্বরে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করতে সচেষ্ট হয়েছিল সামরিক জামত্মা, সারা দেশের মানুষও মেতে উঠেছিল ফুটবল জ্বরে। এর বিপরীতে দাঁড়িয়ে মুষ্টিমেয় যে-কজন 888sport live chatী-বুদ্ধিজীবী অর্থনৈতিক হতদ্দশায় এমন ব্যয়বহুল আয়োজনকে ধিক্কার জানালেন তাঁদের সামনের কাতারে ছিলেন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো।
888sport appsের মানুষ আরো এক কারণে রবীন্দ্রনাথের বিজয়ার প্রতি 888sport apk download apk latest versionয় আনত হয়, ১৯৭১ সালে অশীতিপর ওকাম্পো 888sport appsের মুক্তিসংগ্রামের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, শামিল হয়েছিলেন প্রতিবাদী মিছিলে। 888sport apps তাঁর কাছে নিশ্চয় তৃতীয় বিশ্বের আরেক দেশ ছিল না, যুক্ত ছিল এর অতিরিক্ত মাত্রা, যে-দেশের কবির রচনা একদা তাঁকে জীবনের বিশালতার সন্ধান দিয়েছিল, যে-কবির সান্নিধ্য দিয়েছিল জীবনের চলবার পথের দিশা, সেই দেশের দুর্গতি-মোচনে তিনি নেমেছিলেন রাজপথে। তাঁর পাঠাগারে চোখে পড়েছিল সুজান ব্রাউনমিলারের যুগামত্মকারী গ্রন্থ, অ্যাগেইনস্ট আওয়ার উইল : মেন, উইমেন অ্যান্ড ওয়ার, যেখানে একাত্তরে পাকবাহিনীর বর্বরতার শিকার 888sport promo codeদের প্রসঙ্গ বিশেষভাবে আলোচিত হয়েছে।
সাত
ভিলা ওকাম্পো পরিদর্শনের সবটুকুই যে আনন্দময় ছিল সেটা বলা যাবে না। মনের মধ্যে বেদনার এক কাঁটা সবসময়ে খচখচ করছিল, বারবারই মনে হচ্ছিল জীবন ছাপিয়ে মহাজীবন ও মহাবিশ্বকে আলিঙ্গন-পিয়াসী এক সতেজ প্রাণবমত্ম বাঙালি যুবক এক বছর আগে তাঁর জীবনসঙ্গিনী ও কন্যাকে নিয়ে এসেছিলেন ভিলা ওকাম্পোয়। রবীন্দ্র-বিশেষজ্ঞ তিনি নন, 888sport apk-লেখক হিসেবে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিশেষভাবে আর গভীরভাবে পীড়িত বোধ করেন সমাজে চিমত্মার দৈন্য, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের প্রতাপ দেখে। ভিলা ওকাম্পো পরিদর্শন এই যুবককে আলোড়িত করেছিল প্রবলভাবে, তিনি প্রসারিত দৃষ্টিতে বুঝে নিতে সচেষ্ট হন রবীন্দ্রনাথ ও ওকাম্পোর সম্পর্কের মাত্রা ও অভিঘাতসমূহ, বাঙালির সহজাত আবেগ-উচ্ছ্বাস পরিহার করে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসার তাগিদ নিয়ে। এই অনুসন্ধানের পরতে পরতে উন্মোচিত হতে থাকে অনেক অজানা তথ্য, নতুন দৃষ্টিতে দেখার মধ্য দিয়ে জানা তথ্য পায় অন্যতর মাত্রা এবং দ্রম্নত এক পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ তিনি রচনা করে ফেললেন। ২০১৫ সালের বইমেলায় অবসর প্রকাশনা সংস্থা থেকে বের হয় গ্রন্থ ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো : এক রবি-বিদেশিনীর খোঁজে, প্রায় দুইশো পৃষ্ঠার যে-গ্রন্থ 888sport appsে রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে মৌলিক অবদান হিসেবে বিবেচনার দাবি রাখে। বইপ্রকাশ উপলক্ষে প্রবাসী লেখক দূর আমেরিকা থেকে আসেন স্বদেশে, ফেব্রম্নয়ারির উপামেত্ম সস্ত্রীক ঘুরে বেড়ান বইমেলায়, ঘ্রাণ নেন নতুন বইয়ের, তাঁর পা-ুলিপির পরিপাটি প্রকাশনা তাঁকে নিশ্চয় আনন্দিত করে থাকবে। এই তরম্নণ লেখক পেশায় প্রকৌশলী, 888sport apps প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সণাতক, পরে পিএইচডি উপাধী অর্জন করেন সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে। তাঁর জীবনসঙ্গিনীও কৃতবিদ্য 888sport apkলেখক। ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোবিষয়ক এই গ্রন্থের রচয়িতা অভিজিৎ রায়কে নির্মমভাবে হত্যা করে ধর্মান্ধ ঘাতকদল বইমেলার সামনের রাজপথে, বই প্রকাশনার সপ্তাহকাল না পেরোতেই।
অভিজিৎ রায় নেই, আছে তাঁর বইসকল, আর্জেন্টিনা যাওয়ার আগে মনে হয়েছিল ভিলা ওকাম্পোর পাঠাগারে তাঁর বইয়ের স্থান অবশ্যই হওয়া উচিত, বিশ্বসংস্কৃতির যে মৈত্রী ও ভ্রাতৃবন্ধনের উন্মোচন ছিল ভিলাবাসিনীর উদ্দিষ্ট এই বই তো সেই ভাবদর্শনের অনুপম প্রকাশ। সেইসঙ্গে নিষ্ঠুর আঘাতে গ্রন্থকারের জীবনহরণ দেখিয়ে দেয় কী চরম দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে আমরা কালাতিপাত করছি। ১৯৪০ সালের ৮ জুন প্যারিস থেকে রবীন্দ্রনাথকে শেষ চিঠি লিখেছিলেন ওকাম্পো, অভিজিৎ রায় সেই চিঠির 888sport app download apk latest version সন্নিবেশিত করেছেন তাঁর বইয়ে, ভিক্টোরিয়া লিখেছিলেন, ‘সমগ্র পৃথিবীটা যেন ‘শয়তানের রাজত্বে’ পরিণত হয়েছে। আমাদের সবকিছু মনে হচ্ছে একেবারে পচে গেছে, সারা পৃথিবীতেই।’
ওকাম্পোর সেই উক্তি মনে হয় যেন আজকের পৃথিবীর জন্য উচ্চারিত হয়েছে; কিন্তু তারপরও তো বেঁচে থাকে বই, আর তাই অভিজিৎ রায়ের বইয়ের কপি আমি তুলে দিয়েছিলাম ভিলা ওকাম্পোর গ্রন্থাগারিক গুয়াডালুপ রোবলেডোর হাতে। অভিজিৎ-হত্যাকা–র বিবরণ জেনে অশ্রম্নসজল হয়েছিল তাঁর চোখ, বললেন, হতে পারে আমার সাথে এই দম্পতির দেখা হয়েছে, ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে যাঁরা আসেন, সাধারণত আমিই তাঁদের ঘুরিয়ে দেখাই ভিলা ওকাম্পো।
আবারো 888sport app download for android করতে হয় ওকাম্পোর উক্তি, সবকিছু যখন বিলীন হবে তারপরও বেঁচে থাকবে বই। বই তো এখানে উলিস্নখিত হয়েছে অনেক বড় অর্থে, বিশ্বমানবের সংস্কৃতি-সাধনার আধার হিসেবে। সংস্কৃতির এই সাধনায় মুক্তমনের অধিকার ও চর্চায় প্রাণপাত করলেন অভিজিৎ রায়, তাঁর রক্তাপস্নুত শরীর যেন আমাদের রূপকথার লালকমল, বড় বেদনাবিধুর সেই দৃশ্য, তারপরও তো আস্থা রাখতে হয় বইয়ের ওপর, অভিজিৎ রায়ের যে-বই ভিলা ওকাম্পোতে বাংলার রূপকথার লালকমলের কথা বলবে আরো অনেক বইয়ের পাশে। মানবিকতার বিশ্বজনীন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবার রয়েছে অনেক, সেই প্রয়াসে চাই সংস্কৃতির শক্তিতে চলবার প্রত্যয়। তেমনি প্রয়াসে আবার মিলিত হয়েছে আর্জেন্টিনা ও 888sport apps, তাদের মধ্যে সংযোগ নতুনভাবে বিকশিত হতে চাইছে, যে-সংযোগ অভিজিৎ রায় নিবিড় করে তুললেন তাঁর প্রণীত গ্রন্থে, যে-সংযোগ মূর্ত হয়ে উঠছে যুদ্ধাপরাধের বিচারে উভয় দেশের অভিন্ন প্রয়াসে, যে-সংযোগ তাগিদ সৃষ্টি করছে বৈচিত্র্যের মধ্যে সুরসংগতি গড়বার, যা ছিল রবীন্দ্রনাথের ও ভিক্টোরিয়ার জীবন-সাধনা। তাই বুঝি বিশ্বজনীন সংকটের পটভূমিকায় ভিলা ওকাম্পো জুড়ে মানবতার যে জয়গান ধ্বনিত হচ্ছে তা পেরিয়ে যায় দেশকালের সীমানা, অভয়বাণী শোনায় বিশ্বমানবকে। ভিলা ওকাম্পোর জানালার সব পর্দা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, আসছে আলো ও বাতাস, দক্ষিণী ‘সুর’ যেন স্পন্দিত হচ্ছে ভবন জুড়ে, যে-সুর ছড়িয়ে পড়ছে জগৎময়। সংস্কৃতির এমন পীঠস্থানে হাজির হওয়াটা এক তীর্থযাত্রাই বটে।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.