দ্রাবিড় সৈকত
উপনিষদের নির্গুণ ব্রহ্ম থেকে প্লেটোর আইডিয়া হয়ে দেকার্তের কজিটো আর হেগেলের অ্যাবসলুট পর্যন্ত রাস্তায় অধিবিদ্যার সঙ্গে 888sport live chatের সখ্য সর্বজনবিদিত। 888sport live chatের জন্মটাই ম্যাটাফিজিক্সের কোলে কিনা, এ-বিষয়ে পন্ডিত মহলে যৎকিঞ্চিৎ মতবিরোধ থাকলেও প্রাথমিক জাদুবিদ্যা বা প্রাইমারি ম্যাজিকের বিষয়ে সবার মতামত প্রায় একই রকম। কিন্তু মধ্যযুগের পরে আধুনিকতার সূচনালগ্নেই যেমন দেব-দেবীর আশ্রয় ছেড়ে 888sport live chatকলা নেমে এসেছে মাটির পৃথিবীতে, তেমনি উত্তরাধুনিকতার শুরুতেই 888sport live chatকর্ম নিজেই হয়ে গেছে মাটির তথা বাস্তব নির্মিতি। মহা-আখ্যানগুলো ভেঙে যাওয়ার কালে এই রাইজোমেটিক যমানায় 888sport live chatী গৌতম চক্রবর্তীর একক চিত্র-প্রদর্শনীর নাম ‘আই অ্যাম’ কিংবা ‘আমি’; শূন্যবাদের নাগার্জুন, রলাঁ বার্থ, জাক দেরিদা অথবা মিশেল ফুকো এই আমিকে ছড়িয়ে দেবেন চূড়ান্ত নাস্তিতে। সেই নাস্তি থেকে যখন ক্রুদ্ধ বেড়ালরা সমুদ্রসৈকত জুড়ে খুঁজে বেড়াবে গঙ্গাঋদ্ধির হস্তী বাহিনীর ভুলতে-বসা ইতিহাসের ধূসর পান্ডুলিপি, ঠিক তখনই জমে উঠবে গৌতম চক্রবর্তীর আত্মবহনের ম্যাটান্যারেটিভ রেসিপি।
888sport appর উত্তর প্রান্তের গ্যালারি কায়ায় ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত চলেছে গৌতম চক্রবর্তীর ‘আই অ্যাম’ শীর্ষক 888sport live chatকর্ম-প্রদর্শনী। এই ‘আমি’ বিভেদ না সর্বভূতে অভেদ; আসক্তি না বৈরাগ্যের সর্বগ্রাসী আবাহন, তার উত্তর গৌতমের প্রদর্শনী না দেখেই দিয়েছিলেন ‘আনাল হক’ বলে মনসুর হাল্লাজ। সুইস পন্ডিত ফার্দিনা সসুর হয়তো বলবেন, এটা সামাজিক, রাজনৈতিক বা ধর্মীয় সংস্থাগুলোর সঙ্গে, 888sport live chatীর অজান্তে, এক গোপন চক্রান্ত। অর্থকারক ও কৃত অর্থের আন্তঃসম্পর্ককে সসুর হয়তো ফেলে দেবেন একটি মনগড়া ব্যবস্থা বলে; কিন্তু গৌতমের ‘হাতি’ যদি আমাদের ভারতীয় ইতিহাসের প্রাক্-ঔপনিবেশিকতার কথা মনে করিয়ে দেয়, যদি হস্তী আয়ুর্বেদের সমৃদ্ধ গল্পগুলো শুনিয়ে দেয়, তাহলে আমাদের স্বয়ং গৌতম চক্রবর্তীকেও হাতি ভাবতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। প্রতীচ্যের জ্ঞানতাত্ত্বিক আখ্যানগুলোর ছাঁচে ক্রমাগত বরখাস্ত হতে হতে এই প্রাক্-ঔপনিবেশিক ‘হাতি’কেই মনে হয় অধিকতর নিরাপদ। ‘হাতি’র বহুরূপী-বহুদর্শী-বহুকৌণিক আখ্যান রয়েছে আমাদের 888sport sign up bonusতে এবং 888sport live chatী গৌতম চক্রবর্তীর প্রদর্শনীতে। এই ‘হাতি’ 888sport live chatীর অবচেতন। কালেক্টিভ আন্কনসাস থেকে আমরা গৌতমের হাতিকে পাঠ করি। সিগমুন্ড ফ্রয়েড কিংবা জাক লাকাঁর বাইরে এই অবচেতনের অবস্থান। ইতিহাস-অথর-ঈশ্বরকে মৃত ঘোষণা করায় চমক আছে; কিন্তু ইতিহাসের সঙ্গে সঙ্গে গৌতমের (সিদ্ধার্থও হতে পারে) ‘হাতি’কে মৃত ঘোষণায় দুরভিসন্ধির আভাসও আছে। গৌতমের ‘হাতি’ বর্ণিল, বর্ণবিভায় উচ্চকিত হাতির শুঁড়, দাঁত, স্তম্ভের মতো দৃঢ়বদ্ধ পা সবই সুরেলা গীতির মতো; এই গীতি আখ্যান নয়, মহা-আখ্যান। 888sport live chatী গৌতম চক্রবর্তীর এই প্রদর্শনীতে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিরিজ ‘বিড়াল’ এবং ‘ক্রুদ্ধ বিড়াল’। আপাত-আদুরে বিড়ালগুলো কেমন করে যেন ক্রুদ্ধ হয়ে গেল। প্রদর্শনীর শিরোনামে 888sport live chatী নিজেকে স্থাপন করার পর, যখন তাঁর বিড়ালরা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ওঠে, তখন দর্শকের বুঝতে বেগ পেতে হয় না, বিড়াল প্রতীকে আড়ালের খবর। চারপাশের অস্থিরতা, অব্যবস্থাপনা, অনিশ্চয়তার বিরুদ্ধে জমে থাকা ক্ষোভগুলো যেন ফেটে পড়ছে বিড়ালের প্রতীকায়িত ফর্মে। দৈনন্দিন বিষয়াবলির অসংগতি থেকে জাত বিবমিষায় 888sport live chatীর উদ্বেগ শেষ পর্যন্ত ক্রোধে রূপান্তরিত হয়, আদুরে বিড়ালের রূপ মুহূর্তেই উলটে যায়। সম্পর্কগুলো নতুন করে বিন্যস্ত হয়। পূর্বতন ধারণাগুলোকে বাছাই করার লগ্ন ঘোষিত হয় ক্রুদ্ধ বিড়ালের হুংকারে। বিষাক্ত দাঁত ও নখের আঁচড়ে নতুন ক্ষত ও নতুন পথের সম্ভাবনা তৈরি করে ক্রুদ্ধ বিড়াল। প্রদর্শনীতে ‘মুন ওমেন’, ‘সমুদ্র সৈকত’, ‘তেরেসা’, ‘টেগোর’, ‘ফ্রিডম’, ‘ফেইসেস’ প্রভৃতি নামাঙ্কিত চিত্র থেকে গৌতম নিজেই বের হয়ে আসেন। টেক্সচুয়াল পঠনকে সামনে নিয়ে এলেই বোঝা যাবে, এসব যাপনের বিবিধ শৈলীতে আসে মানুষের পূর্ণতা। তার অবয়বগুলো সিগনিফায়ার; কিন্তু সিগনিফায়েড এখানে হতে পারে দর্শক অথবা 888sport live chatী নিজেই। মার্কিন ভাবুক এডওয়ার্ড স্যাপির হয়তো বলবেন, বিষয়টি 888sport live chatীর নিয়ন্ত্রণে নেই, বরং এটা নির্ধারিত হচ্ছে সামাজিক 888sport app ক্রিয়াকান্ডের মধ্যস্থতায়। এ প্রক্রিয়ায় বিমূর্তনের হাত থেকে ফসকে যাওয়ার পরই কেবল অভিমুখের অন্তর্নিহিত সম্পর্কগুলো বহুমুখী সম্ভাবনায় গৃহীত হবে। অবজেক্টিভিটিকে সামনে নিয়ে এলে 888sport live chatী গৌতম চক্রবর্তীর ক্যানভাসকে নঞর্থকভাবে দেখা যায়। প্রকৃতই কি যায়? অন্তত এ-বিষয়ে নিশ্চিত করে বলার মতো এপিস্টেম এখন অকেজো হয়ে গেছে।
888sport live chatী গৌতম চক্রবর্তীর রং ব্যবহারের ধরন, কখনো কখনো চিত্রপট নির্বাচন সুশৃঙ্খল বিন্যাসে নিয়ন্ত্রিত। এই শক্ত নিয়ন্ত্রণ স্বল্পমেয়াদে 888sport live chatীকে পরিতৃপ্ত করতে পারে; কিন্তু মেয়াদান্তে বাঁধন আলগা হলেই 888sport live chatের উপভোগ্য হয়ে ওঠার ক্ষেত্র প্রস্ত্তত হয়। প্রাইমারি রঙের ব্যবহারে 888sport live chatীর পক্ষপাত জোরালো হলেও এর বাইরেই তাঁর মেকানিক্যাল অবস্থান। চারকোলের ক্রুদ্ধ বিড়াল যতটা ক্ষোভ উগড়ে দিতে পারছে, তেলরং ততটা নয়। সেরিগ্রাফের বিড়ালরা অপটিক্যাল ইল্যুশন তৈরি করে অনেকটাই প্যাটার্নাইজড হয়ে গেছে; এটা মাধ্যমের সীমাবদ্ধতাও হতে পারে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল কৌশল মাইক্রো-নান্দনিকতায় ব্যর্থ হওয়ার ঝুঁকি নিয়েই জন্মায়। গৌতম চক্রবর্তী মাধ্যমের বিষয়ে সনাতন ধারণার অনুগামী নন; জল, তেল, কয়লা, কালি, বিড়াল, তেরেসা, প্রিন্ট, সেরিগ্রাফ কোনো কিছুতেই অরুচি নেই তাঁর। সাবজেক্ট, অবজেক্ট এবং ম্যাটেরিয়াল ব্যবহারে তার ভার্সেটাইলিটি সংযোগ সেতুর মতো রসিকের মনন ও মগজে বিছিয়ে থাকে।
মানুষের যুক্তিশীলতা কিংবা সৃজনশীলতা আরো লীলাময় হয়ে উঠেছে সমসাময়িক বিবিধ প্রয়োগ পদ্ধতির স্রোতে। 888sport live chatের স্রোতধারা এখন বেগবান, বহুমুখী। সংরক্ষণবাদী প্রাচীনপন্থি চিন্তা-চেতনা অনেকটাই হাল ছেড়ে দিয়েছে; সেখানে স্বরাট পেতে বসেছে গৌতম চক্রবর্তীর ‘আমি’। এই ‘আমি’ লাইবনিৎসের মোনাড নয়। এই ‘আমি’ নিজস্ব শূন্যতা থেকে মুক্তির জন্য চিন্তা ও কর্মে ব্যাপৃত হতে বাধ্য হওয়া। গৌতম চক্রবর্তী চিত্র888sport live chatে পারঙ্গম বলেই তাঁর বহিঃপ্রকাশের রূপ চিত্রিত পন্থায় সমর্পিত। এই পথের কোনো বিকল্প নেই, একমাত্র নাস্তিতে তলিয়ে যাওয়া যায় এবং এই অসীম অনাত্মার কোনো বর্ণনা কিংবা বুদ্ধির সমতলে বিছিয়ে দেওয়ার কোনো প্রক্রিয়া নেই। গৌতমের ‘আমি’ তথা গৌতম স্বয়ং শুধু 888sport live chatীসত্তা নয়, বরং মহাকালে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য তেল-জল-পেনসিলের স্ট্রোক; যা কাল থেকে কালান্তরে গমনের পথে গৌতমের ক্যানভাসের গহিনে তাদের আত্মার ছায়া ফেলে গেছে।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.