পূর্বলেখ ও টীকা : ভূঁইয়া ইকবাল
বিশ শতকের তিরিশোত্তর আধুনিক বাংলা 888sport app download apkর অন্যতম প্রধান কবি অমিয় চক্রবর্তী (১৯০১-৮৬) ও পঞ্চাশের দশকের দুরন্ত দুপুরের কবি নরেশ গুহর (১৯২৩-২০০৯) মধ্যে পত্রালাপের সূচনা ১৯৪২-এ। তাঁকে লেখা অমিয় চক্রবর্তীর চিঠি সম্পর্কে নরেশ গুহ নিজেই জানিয়েছেন, ‘‘১৯৪২ থেকে শুরু করে ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রয়াণকাল পর্যন্ত কবি অমিয় চক্রবর্তী আমাকে দুই শতাধিক অতি চমৎকার চিঠি লিখেছিলেন। বহু চিঠিই, ছিলো রীতিমতো দীর্ঘ এবং নানাভাবে মূল্যবান।… আমার ইচ্ছে ছিলো সমগ্র পত্রাবলী গ্রন্থাকারে একদিন প্রকাশ করা সম্ভব হবে।’’
রবীন্দ্রনাথ১ ও প্রমথ চৌধুরীকে২ লেখা অমিয় চক্রবর্তীর পত্রাবলী স্বতন্ত্র দুটি বইয়ে সংকলন ও সম্পাদনা করেছেন নরেশ গুহ। শিবনারায়ণ রায়কে লেখা অমিয় চক্রবর্তীর পত্রগুচ্ছ প্রাপক নিজেই সংকলন ও প্রকাশ করছেন। ১৯৪২-এ নরেশের বয়স মাত্র ১৯। তখন গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের বিন্যাফৈর গ্রামের ঠিকানায় পুরী থেকে ৪২ বছর বয়স্ক কবি অমিয় চক্রবর্তী কবিযশঃপ্রার্থী সদ্য যুবা নরেশকে চিঠি লেখেন। প্রায় সব চিঠি সংরক্ষণের প্রয়াস পেয়েছিলেন নরেশ; কিন্তু শেষ পর্যন্ত সব চিঠি রক্ষা পায়নি। প্রাপকের হাতে লেখা দুই শতাধিক চিঠির তালিকা পাওয়া গিয়েছে; তবে আমাদের হাতে যেসব চিঠির ফটোকপি এসেছে তার 888sport free bet আনুমানিক পৌনে দুশোর মতো। ফটোকপিতে সব চিঠি স্পষ্ট হয় না, এখানেও তাই হয়েছে। সব চিঠির সবটুকু পাঠোদ্ধার সম্ভব নয়। এখানে ৫৬টি চিঠি সংকলিত। কয়েকটি চিঠির সঙ্গে আছে 888sport app download apk।
এই পত্রাবলির প্রেরক ও প্রাপকের ব্যক্তিগত ও 888sport live footballিক সম্পর্ক পিতা-পুত্রের মতো ঘনিষ্ঠ ছিল। পুত্রহীন অমিয় চক্রবর্তী ছাত্র নরেশকে পুত্রের মতো ভালোবাসতেন, মার্কিনপ্রবাসী কবি তাঁর ওপর নির্ভরশীলও ছিলেন। ১৯৫১ সালে লেখা এক চিঠিতে অমিয় নরেশকে লিখেছেন : ‘তুমি বহুদিন আমাদের পরিবারের সঙ্গে যুক্ত আছো, তোমাকে ঘরের ছেলে বলেই মনে করি।’ (অমিয় চক্রবর্তী-র পত্র ৫, অহর্নিশ, নরেশ গুহ 888sport free bet, ২০০৯, পৃ ২৮) অমিয় চক্রবর্তীর একমাত্র সন্তান সেমন্তী ভট্টাচার্য বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ৮ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে জানিয়েছেন : ‘বাবার সঙ্গে পরিচিত-ধন্য শ্রীনরেশ গুহ দীর্ঘকাল বাবার রচনা ও চিন্তাধারার সঙ্গে জড়িত থেকেছেন।’ (অহর্নিশ, নরেশ গুহ 888sport free bet, ২০০৯)
১৯৪৩ সালে নরেশ কী বিষয়ে এম এ পড়বেন – সম্ভবত এ-সম্পর্কে পরামর্শ চেয়ে অমিয়কে লিখেছিলেন। ১৯৪৩-র ১লা জুন অমিয় লিখছেন : ‘ইংরেজি নিয়ে পড়া মন্দ কি?’ (এখানে সংকলিত পত্র ৫)। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ ক্লাসে নরেশ শিক্ষকরূপে পেয়েছিলেন অমিয়কে। ১৯৪৫-এ এমএ পাশ করার পরের বছর অধ্যাপক অমিয় চক্রবর্তীর এলগিন রোডের বাড়িতে একদিন দেখা করেন তাঁর সঙ্গে (১৯৪৬)। দেশভাগের আগে দাঙ্গা-উপদ্রুত নোয়াখালিতে মহাত্মা গান্ধীর শান্তিমিশনে অমিয় চক্রবর্তীর সঙ্গী হয়েছিলেন নরেশ। ১৯৪৭-এর ২৯শে এপ্রিল অমিয়র সঙ্গে পাটনায় অবস্থানরত মহাত্মা গান্ধীর সাক্ষাৎ লাভ করেন নরেশ অমিয়র সঙ্গী হয়ে।
‘অমিয়-অধিগত ছিলেন অনেকটা, অমিয় চক্রবর্তীর মনোজগতের এক দ্বারী।’ – এই মত নরেশের ছাত্র ও পরে সহকর্মী ড. অমিয় দেবের। এখানে অমিয়-র যেসব চিঠি গ্রথিত, তার প্রথমটি (৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৪২) থেকেই নবীন কবিকে পরামর্শ ও উপদেশ দিয়ে, উৎসাহ দিয়ে, তাঁর 888sport app download apkর প্রশংসা ও সমাদর করেছেন। এমনকি কলকাতায় বাসা ভাড়া পাওয়ার হদিস দিয়েও চিঠি লিখেছেন (জীবনানন্দ দাশের একটি কক্ষ সাব-লেট নেওয়ার সম্পর্কে)।
এবার দুইজনের 888sport live footballিক যোগাযোগের খতিয়ান। সিগনেট প্রেসে যুক্ত থাকাকালে নরেশ অমিয়র দুটি কাব্য – দূরযাত্রী ও পারাপার প্রকাশনায় সহযোগিতা করেন। নাভানা থেকে 888sport liveের বই সাম্প্রতিক প্রকাশেও নরেশের সাহায্যের কথা উল্লেখ করেছেন লেখক। দুই খন্ডে অমিয় চক্রবর্তীর কাব্যসংগ্রহ সম্পাদনা করেছেন নরেশ গুহ। রবীন্দ্রনাথ ও প্রমথ চৌধুরীকে লেখা অমিয়র চিঠিপত্রের দুটি স্বতন্ত্র গ্রন্থের সটীক সংস্করণ সম্পাদনা করেছেন তিনি।
নরেশ গুহর পত্রোত্তরে অমিয় আত্মচরিতের খসড়া ‘রচনা’ করেছেন (অহর্নিশ, নরেশ গুহ 888sport free bet, ২০০৯, পৃ ১১৬-১৫৬)।
পারাপার কাব্যের সমালোচনা লেখেন নরেশ (888sport app download apk, আষাঢ় ১৩৬২; পরে অন্তরালে ধ্বনি প্রতিধ্বনি গ্রন্থে সংকলিত)। ‘অমিয় চক্রবর্তীর মৃত্যু’ 888sport liveও এই গ্রন্থে আছে। 888sport app download apkয় সমালোচনা করেন অমিয়র Modern Tendencies in English Literature বইয়ের (আষাঢ় ১৩৫৩)।
অমিয় চক্রবর্তী নরেশ গুহর প্রথম কাব্য দুরন্ত দুপুরের সমালোচনা করেন; ‘মার্কিন প্রবাসীর পত্র’ শিরোনামে তা 888sport app download apk পত্রিকায় (পৌষ ১৩৬০) ছাপা হয়েছিল। অনিঃশেষ (১৯৭৬) কাব্যটি নরেশকে উৎসর্গ করেন অমিয়।
এখানে সংকলিত চিঠিগুলি থেকে দেখা যাবে অমিয় তাঁর 888sport app download apk-888sport live মুদ্রণ-প্রকাশনার জন্য নরেশের সাহায্য চাইছেন; বিভিন্ন পত্রপত্রিকা থেকে 888sport app download apk ও 888sport live খুঁজে সংকলনের অনুরোধ জানাচ্ছেন। 888sport app download apk পত্রিকায় প্রকাশের জন্য 888sport app download apk পাঠিয়েছেন নরেশের মাধ্যমে, যামিনী রায়কে দিয়ে বইয়ের প্রচ্ছদ অাঁকাবার ব্যবস্থা করতে বলছেন। এমনকি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কাজেও শরণাপন্ন হয়েছেন (দেখুন, নিউ জার্সি থেকে লেখা ১৯ মার্চ ১৯৫১ তারিখের ২৪ সংখ্যক পত্র) মার্কিন প্রবাসী এই কবি।
মার্কিনপ্রবাসী কবি অমিয় চক্রবর্তীর প্রকাশক ভাগ্য ছিলো মন্দ। তিনি তাঁর 888sport app download apk ও 888sport liveসংকলন বই হিসেবে প্রকাশের ব্যাকুলতা প্রকাশ করেছেন নরেশকে লেখা অনেক চিঠিতে; এমনকি প্রকাশনার ব্যয়ভার আংশিক বহনের প্রস্তাব পর্যন্ত দিতে হয়েছে এই কবিকে।
প্রকাশনার বিষয়ে ও রচনাদি সংগ্রহের জন্য তিনি যে কত নির্ভর করতেন নরেশের ওপর তার পরিচয় আছে এসব চিঠির ছত্রে-ছত্রে :
ক. যদি তুমি কোনোমতে ‘‘ভারত’’ এবং ‘‘Eastern Express’’ (একই বাড়িতে আপিস) এই দুই জায়গা থেকে তাদের শেষ পূজা 888sport free bet সংগ্রহ করতে পারো। তাতে গান্ধীজির সম্বন্ধে আমার বাংলা ও ইংরেজি লেখা বেরিয়েছিল – আমার বিশেষ দরকার। ইংলন্ডেই তার cutting air mailএ পাঠিয়ে দিতে পারো তো একান্ত উপকৃত হই – …উদ্বোধন আপিস থেকে কোনো সময়ে জেনে নিয়ো তাদের Jubilee 888sport free bet কবে বেরোবে। … বুদ্ধদেব সম্পর্কে আমার 888sport app download apk, সেইটে ওদের দিয়েচিলাম। বেরোলে আমার 888sport app download apkটির off print বা cutting আমাকে তুমি air mailএ পাঠিয়ে দিয়ো।
খ. Californiaয় film সম্বন্ধে যা বলেছিলাম তা নিয়ে Statesman Editorial যা বেরিয়েছিল যেমন ক’রে হয় আমাকে air mailএ পাঠিয়ো – …‘‘উদ্বোধনে’’ শুনলাম আমার চিঠি দুই 888sport free betয় বেরিয়েছে – cutting যেন তাঁরা air mailএ পাঠান…,
গ. …ওখানে খবরের কাগজে কখনো আমার এখানকার খবর বেরোলে ঠিক কী বেরিয়েছে তা আমার জানা প্রয়োজন… তুমি ছাড়া আর কার সহায়তা চাইব? তুমি যদি cutting পাঠাও তো উপকৃত হই – শুনলাম শেষ কিছু দিনে দু-একবার বেরিয়েছে, খুঁজে দেখবে কি?
ঘ. তোমাকে তিনটে 888sport app download apk পাঠাচ্ছি – ত্রয়ী কাব্য – অনেকটা একই সুতোয় তিনরকম। তোমার ভালো লাগে তো ‘‘888sport app download apk’’র দরবারে উপস্থিত কোরো। যদি ছাপতে বেশি দেরি হয় তাহলে অন্য কোনো পত্রিকায় (যেমন ‘‘চতুরঙ্গ’’ বা ‘‘পূর্বাশা’’) যেখানে শীঘ্র বেরোয় ছাপিয়ো।
ঙ. তাছাড়া দ্বিতীয় কথা, আমার নতুন 888sport app download apk সংগ্রহ। আমার 888sport app download apk সম্বন্ধে তোমার মায়াদয়া ঘোচে নি, এটা আমার কাছে আশ্চর্য ঘটনা। তুমি যদি ছাপ্বার ব্যবস্থা করো তাহলে আমি নিশ্চিন্ত হই। ছোটো একটি সুদৃশ্য পুঁথি – যে-কোনো প্রকাশক দুতিন মাসের মধ্যে ছাপতে প্রস্ত্তত তাঁকেই দিয়ো। যদি কেউ খরচের অন্তত আংশিক ভাগ নেন তাহলে অত্যন্ত সুখী ও কৃতজ্ঞ হই; তা না হলে সাধ্যমতো খরচে আমাকেই ছাপতে হবে, খুবই সাদাসিধে ভাবে। কীরকম খরচ লাগবে জানলে আমি অবিলম্বে কিছু অর্থ তোমাকে আগামী পাঠিয়ে দেব।… তুমি আমার Editor হ’য়ে 888sport app download apkগুলি সংগ্রহ ও ছাপবার ভার নাও –
চ. …তুমি আমার কাব্যের শেষ-রক্ষার ব্যাপারে ভার নাও। আমার বিশেষ আকাঙ্ক্ষা সিগনেট প্রেসে এই ছোট্ট বই সুদৃশ্য অথচ সাদাসিধে আকারে বেরোয় – ছাপার আংশিক খরচ, ধর ২০০/৩০০ টাকা আমি পাঠিয়ে দিতে পারি।… কিন্তু যদি তা নিতান্তই না সম্ভব হয় তুমি অবিলম্বে অন্য তোমার চেনা কোনো জায়গায় চেষ্টা কোরো, সিগনেট প্রেসে এ বিষয়ে পরামর্শ নিয়ো।… তিন মাসের মধ্যে, অর্থাৎ বড়ো দিনের ছুটির পরে বা আগে – এই ক্ষুদ্র ‘‘মার্কিনী’’ কাব্য পুঁথি হয়ে বাজারে বেরোয় এই আমার অনুরোধ।
…প্রবাসে 888sport slot gameকালেও বাংলা কাব্যের কিছু সাধনা করেছিলাম এইটুকু আমার ক্ষুদ্রকায় নূতন সংগ্রহে জানিয়ে যেতে চাই। এই ইচ্ছেটুকুও যদি পূর্ণ না হয় তাহলে গভীর দুঃখে আমার পালা শেষ হবে।
ছ. …সংসারে কতদিনই বা বাঁচব – কৃতকর্মের দায়িত্ব-স্বরূপে 888sport app download apk-কটার ব্যবস্থা ক’রে যাওয়া প্রয়োজন মনে করি।… 888sport app download apkর কপি জোগাড় ক’রে আমাকে পাঠাতে পারো? আমার কাছে নেই। …এইবার আমাকে যেমন ক’রে হয় এই ছোটো কাজটা সমাপন করতে হবে – তোমাদের বিশেষ সহায়তা আমার প্রয়োজন। এত দূর থেকে কীভাবে আমার ব্যাকুলতা জ্ঞাপন করব জানি না।
জ. Signet Press এর চিঠি এখনো পাইনি। তুমি এই পান্ডুলিপি ওঁদের কাছে নিয়ে যেয়ো।
যখন ছাপা আরম্ভ হবে, তুমি first proof, সব দেখে দিলে নিশ্চিন্ত হই। পাত্লা কাগজে সমস্ত বইয়ের final proof আমাকে air mailএ পাঠালে ভালো হয় –
…বইয়ের lay-out, cover এবং কাগজ ইত্যাদি বিষয়ে সম্পূর্ণভাবেই Signet Press এর রুচি ও নির্ধারণের উপর নির্ভর করতে পারি। Faber and Faber যে-ভাবে Eliot প্রভৃতির বই ছাপায় (Murder in the Cathedral) সেইরকম সহজ, সুন্দর 888sport app download apkর বই বেশ মানাবে।
ঝ. … ২) সমগ্র first proof অথবা final proof আমাকে পাঠালে আমি অবিলম্বে আবার হাওয়াই ডাকে ফেরৎ দেব। একবার আমার দেখা দরকার। … ৫) আশা করি 888sport app download apkর টাইপ পাইকা হবে – চোখে যাতে সহজপাঠ্য হয়। ছোটো অক্ষরে ছাপা 888sport app download apkয় 888sport app download apk চাপা পড়ে। … ছাপার সময়, বইয়ের আকার ইত্যাদি বিষয় জানতে একান্ত উৎসুক রইলাম।
ঞ. সবখনই আমার ‘‘ছড়ানো মার্কিনি’’ বইয়ের ভবিষ্য আবির্ভাব এখনো দৃষ্টিগোচর কিনা তাই ভাবি – ছাপা আরম্ভ হতে কত দিন তা কি তুমি জানাবে? দিলীপ বাবুকে আমার গভীর ব্যাগ্রতা জানিয়ো… এই আকস্মিকতার সংসারে কখন কী হয় – বইখানি দুচোখে দেখতে পেলে বড়োই তৃপ্তি ও সার্থকতা অনুভব করব।… ‘‘ছড়ানো মার্কিনি’’ বিষয়ে বিশেষ উৎসুক হয়ে অপেক্ষা করছি।
ট. গদ্যসংগ্রহ বিষয়ে আমার বহুদিনের ইচ্ছা এবং বেদনা রয়েছে – সিগনেট প্রেসের শুভেচ্ছায় যদি ঐ বই বেরোয় তাহলে তৃপ্ত হই।
ঠ. আমি হতাশ হয়ে মাসের পর মাস অপেক্ষা করছি, ‘‘ছড়ানো মার্কিনি’’ ছাপা হবে কিনা তারি সন্ধানে। …যদি অনিবার্য কারণে সিগনেট প্রেস থেকে বই বার করা সম্ভব না হয় তাহলে আমার বিনীত অনুরোধে পান্ডুলিপি চেয়ে নিয়ো।…
গদ্যরচনা সংগ্রহ সম্বন্ধেও জানিয়ো। একটি ছোটোখাটো বিচিত্র 888sport liveের সংযুক্ত সংগ্রহ তো সহজেই তৈরি হতে পারে। তুমি কি সংগ্রহের কাজ শেষ করেছ?… মানুষ কদিনই বা বাঁচে। যেটুকু সংসারে দিতে চাই সেই সামান্য দানকেও নিজের হাতে সংসারে পৌঁছিয়ে দিয়ে বিদায় গ্রহণ করতে হয়।… বুদ্ধদেব বাবুর দিল্লীর ঠিকানায় কয়েকটি শ্লেষরসাত্মক 888sport app download apk পাঠিয়েছি – ‘‘888sport app download apk’’ পত্রিকার জন্যে। তিনি তোমার কাছে পাঠাবেন। তুমি নিজে যদি প্রুফ দেখে দাও তাহলে নিশ্চিন্ত হই।
ড. যামিনী বাবুর ঠিকানা জানি না – এই সঙ্গে তাঁর জন্যে একটা চিঠি দিলাম। আর যাই হোক, প্রচ্ছদে যেন খুব সাদাসিধে নকসা – মানুষের মুখ বিবর্জিত – গাছপালা বা ছক-কাটা সহজ কিছু অাঁকা হয়। কিছুই না থাকলেও ক্ষতি নেই। আর বইয়ের নাম যেন হাতের লেখার অক্ষরে ছাপার অক্ষরে বসে। [শেষ পর্যন্ত বইয়ের কবি-প্রস্তাবিত নাম ‘‘ছড়ানো মার্কিনি’’র পরিবর্তে পারাপার রাখা হয়; প্রচ্ছদ888sport live chatী সত্যজিৎ রায় – সম্পাদক]।
ঢ. …তুমি এই বইখানি ছাপার ভার নিয়ে আমাকে বাঁচিয়েছ।
ণ. তুমি যদি একটু কষ্ট করে দেশী দৈনিকে ও সাপ্তাহিকে প্রকাশিত দিলীপ রায়ের আমেরিকা 888sport slot game সংক্রান্ত বৃত্তান্তের (বাংলা এবং ইংরেজিতে) কাঁচি-ছাঁটা টুকরো আমাকে মধ্যে মধ্যে পাঠাও তাহলে বিশেষ উপকৃত হবো। একটু বিশেষ দরকার।
ত. [আমার গদ্য সংগ্রহ…] সম্পাদকীয় সমস্ত ব্যাপারে তোমার উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করব। এখান থেকে প্রুফ দেখা, সাজানো, বা সংস্কারকাজের কোনো প্রক্রিয়াই আমার পক্ষে সম্ভব নয়। … তোমার উপর নিশ্চিন্ত হয়ে এই মরমী দায়িত্ব আমি অর্পণ করছি।
থ. ‘‘পালা-বদল’’ ছাপবার সময় তোমার সহায়তা কামনা করব।
দ. [পালা-বদল]… বিরামবাবুকে অনুরোধ করেছি তুমি যদি সযত্নে প্রুফ দেখে দাও। তাহলে আমার ভাবনা থাকে না।
ধ. যদি দেশে থাকতাম তাহলে নিজেই নিজের বই ছাপানোর ব্যবস্থা করতাম,
ন. যদি সিগনেট প্রেসের দিলীপ গুপ্ত মহাশয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারো তাহলে বিশেষ উপকৃত হই। চলো যাই যদি এখনই বেরোয় তাহলে গভীর তৃপ্তি পাব। বাকি গদ্য একটি বইয়ের অন্তর্গত হয়ে পরেই বেরোতে পারে। তোমার উপরে সম্পূর্ণ নির্ভর করব – জানি যথাসাধ্য করবে।
ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনেও অমিয় নরেশের ওপর নির্ভর করেছেন।
১৯৫১ সালে নিউ জার্সি থেকে লেখা এক চিঠিতে নরেশের উপর তাঁর আস্থা ও পরম নিশ্চিন্ত নির্ভরতার পরিচয় পাই;
একটা অত্যন্ত গভীর এবং আত্মীয় জীবনের পরম দায়িত্বের সঙ্গে তোমাকে জাড়তে চাই। …আমার পিতা ও মাতা দুজনেই জীবনের শেষ কয়েক বৎসর পুরীতে বাস করেন এবং ঐখানেই তাঁদের মৃত্যু হয় তুমি তা জানো –
…তুমি যদি গিয়ে দুটো কাজ করো তাহলে আমাদের পরিবারের বড়ো কল্যাণ হয়। প্রথম হচ্ছে বাবা-মার ডায়েরি, চিঠিপত্র রচনাদি যেন কারো চোখে না পড়ে – তুমি অবিনাশবাবুর সাহায্যে সেগুলি পোড়াবার ব্যবস্থা কোরো এবং পোড়ানো হয়েছে তা স্বচক্ষে দেখে এসো। দ্বিতীয় হচ্ছে বই। বুঝতে পারো এ বিষয়ে আমার কত গভীর মায়া।… হৈমন্তীর ও আমার ইচ্ছা এই যে রক্ষণীয় ওইসব শেষ পর্যন্ত সেমন্তীর কাছে যাবে – আর তো কিছু স্মারক ও পিতৃধন রেখে যেতে পারব না।…
যদি দরকার হয় একবার নয় দুবার তুমি সপ্তাহান্তে পুরী যেয়ো – …কত গভীর পারিবারিক দায়িত্ব এই ব্যাপারের সঙ্গে সঙ্গে যুক্ত তা তোমাকে আর কী বলব – দূর দেশ থেকে পিতৃঋণ মাতৃঋণ তাও শোধ করতে পারছি না। তোমাকে বিরক্ত করার জন্যে ক্ষমা চেয়ে তোমাকে লজ্জা দেবো না।
১৯৪২ থেকে ১৯৫৮ পর্যন্ত প্রায় দেড় যুগের অর্ধশতাধিক চিঠি এখানে গ্রথিত হলো। কয়েকটি চিঠি তো রীতিমতো পত্র888sport live। রবীন্দ্রনাথ ও প্রমথ চৌধুরী ছাড়া সম্ভবত নরেশকেই অমিয় সবচেয়ে বেশি চিঠি লিখেছিলেন। এসব চিঠিতে 888sport live football ছাড়াও দেশ-বিদেশের রাজনীতি, আন্তর্জাতিক যুদ্ধ-পরিস্থিতি, ভারতবর্ষের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি – নানা বিষয়ে তিনি লিখেছেন। লিখেছেন নরেশের শান্তিনিকেতনে শিক্ষকতার চাকরির সম্ভাবনার বিষয়ে, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিনারে যোগদানের আমন্ত্রণের জন্যে হেনরি কিসিঞ্জারের কাছে নরেশের আবেদনপত্র ও প্রশস্তিপত্র পাঠানোর কথা, নরেশের 888sport app download apk সম্পর্কে উৎসাহদানকারী অভিমত জ্ঞাপন, সিগনেট প্রেসের আচরণ বিষয়ে তাঁর ক্ষুণ্ণ হবার কথা, 888sport app download apk পত্রিকা যাতে বন্ধ না-হয় সে-সম্পর্কে তাঁর উৎকণ্ঠা, গান্ধী-নেহেরু-আচার্য বিনোবা ভাবের সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য – নানা বিষয়ে তাঁর চেয়ে ২৩ বছরের কনিষ্ঠ-কবিকে লিখেছেন।
৫৫ থেকে ৭২ বছর আগের লেখা এসব চিঠির ফটোকপি আমাদের হাতে পৌঁছেছে শ্রীমতী অর্চনা গুহর সৌজন্যে।
অনেক চিঠির কাগজে লেখা শেষ হবার পর মার্জিনের, সম্বোধনের ওপরে কিংবা প্রেরকের ঠিকানার ওপরে সংকীর্ণ জায়গায় অতি ক্ষুদ্র হরফে অমিয় যা লিখেছিলেন তার অনেকটাই অনুমান করে পড়তে হয়েছে।
স্থানাভাবে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ চিঠির পাঠ এখানে মুদ্রিত হলো। প্রাপকের ইচ্ছা ছিল এসব চিঠি বইয়ের আকারে প্রকাশ করা। আমরা আশা করি কোনো সহৃদয় প্রকাশকের আনুকূল্যে অদূর ভবিষ্যতে সবগুলি চিঠি হয়তো প্রকাশ-অসম্ভব না-ও হতে পারে।
পত্রধৃত নানা প্রসঙ্গে আমাদের অধিকার নেই। যথাসম্ভব টীকা সংকলনের প্রয়াস পেয়েছি। আমাকে সহযোগিতা করেছেন আলম খোরশেদ ও মাইনুল হাসান চৌধুরী।
সংকলিত পত্রাবলির আটটি নিজে টীকা লেখে অহর্নিশ পত্রিকার নরেশ গুহ 888sport free betয় (২০০৯) প্রকাশ করেছিলেন প্রাপক। এই সুযোগে ওই পত্রিকার সম্পাদক শুভাশিস চক্রবর্তীকে ধন্যবাদ জানাই।
অমিয় চক্রবর্তী ও নরেশ গুহর ফটোগ্রাফ অহর্নিশ পত্রিকার সৌজন্যে মুদ্রিত।
পত্রপ্রেরক ও প্রাপক-পরিচয়
অমিয় চক্রবর্তী
অমিয় চক্রবর্তী ১৯০১ সালের ১০ এপ্রিল শ্রীরামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষেরা পাবনা জেলার অধিবাসী ছিলেন। তাঁর পিতামহ যাদবচন্দ্র 888sport appয় জগন্নাথ কলেজের (এখন বিশ্ববিদ্যালয়) ছাত্র ছিলেন। যাদবচন্দ্র রামমোহন রায়ের জীবনীকার। তিনি রাজনারায়ণ বসু ও কেশবচন্দ্র সেনের সংস্পর্শে এসেছিলেন ও ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হন। অমিয়র পিতা দ্বিজেশচন্দ্র কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির এমএ। তিনি অভিনেতা প্রমথেশ বড়ুয়ার পিতা আসামের গৌরীপুরের রাজা প্রভাতচন্দ্রের এস্টেটের দেওয়ান পদে চাকরি করতেন। অমিয়র মা অনিন্দিতা দেবী আগমনী 888sport live-গ্রন্থের লেখিকা। তিনি প্রবাসী, উত্তরা, বঙ্গলক্ষ্মী ইত্যাদি সাময়িকপত্রে 888sport promo codeমুক্তি বিষয়ে 888sport live লিখতেন। তিনি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে পত্রালাপ করতেন (দেখুন, চিঠিপত্র, একাদশ খন্ড)। 888sport live football, দর্শন, ধর্ম, আন্তর্জাতিকতা – সব বিষয়ে অমিয়র আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিল মায়ের কাছ থেকে।
গৌরীপুরে বাল্যে ও কৈশোরে শিক্ষালাভ করেন অমিয়। বালক বয়সেই তিনি রবীন্দ্রনাথ, বার্নার্ড শ, এইচজি ওয়েলস, রমা রঁলা প্রমুখের সঙ্গে পত্রালাপ করতেন। অমিয় কলকাতার হেয়ার স্কুল থেকে ১৯১৭ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করেন। প্রমথ চৌধুরী, ইন্দিরা দেবী, অতুলচন্দ্র গুপ্ত প্রমুখের সঙ্গে তাঁর মামা প্রেসিডেন্সি কলেজের ইংরেজির অধ্যাপক সোমনাথ মৈত্রর মাধ্যমে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেন অমিয়। প্রমথ চৌধুরী তাঁকে প্রথম শান্তিনিকেতনে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি হাজারিবাগে সেন্ট কলাম্বাস কলেজে উচ্চমাধ্যমিক ও ইংরেজিতে অনার্স পড়ে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি অনার্সে প্রথম হয়েছিলেন। বিএ পাশ করেই তিনি শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্র-সাহচর্যে চলে আসেন শিক্ষকতাকর্মে। ১৯২৬ সালে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নন-কলেজিয়েট প্রার্থীরূপে ইংরেজিতে এমএ পাশ করেন।
১৯২১ থেকে ১৯৩৩ সাল পর্যন্ত অমিয় শান্তিনিকেতনে ছিলেন প্রথমে কলেজে ইংরেজি 888sport live footballের শিক্ষক ও পরে রবীন্দ্রনাথের 888sport live football-সচিব পদে। তাঁর দায়িত্ব ছিল বিশ্বভারতীতে আগত বিদেশি পন্ডিত ও 888sport live footballিকদের সহায়তা করা। তিনি ভারতী 888sport live chat ও ভাস্কর্যের বিশেষজ্ঞ স্টেলা ক্রামরিশ, সংস্কৃত ও ভারততত্ত্বের পন্ডিত এম ভিনটারনিৎস, চেক সংস্কৃতজ্ঞ ডক্টর ভি লেসনি, ফ্রান্স থেকে আগত সুইস-বংশোদ্ভূত ভারততত্ত্ববিদ অধ্যাপক এফ বেনোয়া প্রমুখের সঙ্গে ১৯২১ থেকে ১৯২৪ কালপর্বে ঘনিষ্ঠ হয়েছিলেন। অমিয়র সহযোগিতায় বেনোইত রবীন্দ্রনাথের মুক্তধারা নাটক এবং মিসেস অঁদ্রে কারপেলেস অবনীন্দ্রনাথের ক্ষীরের পুতুল ও নালক ফরাসিতে 888sport app download apk latest version করেন। আরবি ও ফারসি 888sport live footballজ্ঞ অধ্যাপক জারমানাস, রুশ পন্ডিত এল বগদানভ, অধ্যাপক সিলভাঁ লেভি ও এডওয়ার্ড টমসন প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সংস্পর্শে আসেন অমিয়।
১৯২৪-২৫ সালে তাঁর সতেরোটি 888sport app download apk নিয়ে প্রথম কাব্য 888sport app download apkবলী নিজেই প্রকাশ করেন অমিয়। ইতোমধ্যে তাঁর 888sport app download apk প্রবাসী, উত্তরা, কল্লোল ও বিচিত্রা 888sport live footballপত্রে বেরিয়েছে। প্রথম দিকে তিনি রবীন্দ্রনাথের অনুকরণ করে 888sport app download apk লিখতেন এবং নিজেরই তা পছন্দ হতো না।
888sport live football-সচিবরূপে অমিয় রবীন্দ্রনাথকে লেখা অসংখ্য চিঠিপত্র গুছিয়ে রাখতেন, অনেকগুলি উত্তরের খসড়া তৈরি করতেন (বিশেষ করে ইংরেজি চিঠির), কবির সাক্ষাৎকারের তালিকা বানাতেন, তাঁর বক্তৃতা লেখায় সহায়তা করতেন, পান্ডুলিপি থেকে প্রেস-কপি তৈরি করতেন, বই মুদ্রণ ও প্রকাশে সহায়তা করতেন, বিদেশি অতিথিদের দেখাশোনা করতেন।
তিনি ১৯৩৪ সালে অক্সফোর্ডের বেলিওল কলেজে আধুনিক ইংরেজি 888sport app download apk বিষয়ে গবেষণার জন্য যোগ দেন। ১৯৩৭-এ ডি ফিল ডিগ্রি লাভ করেন। ডিগ্রি পাওয়ার আগে ব্রাসেনোজ কলেজে সিনিয়র রিসার্চ ফেলো পদ লাভ করেন। পরে লাহোরে ফরম্যান ক্রিশ্চান কলেজে যোগ দেন ১৯৩৭-এ।
দেশে ফিরে আসার জন্য তিনি রবীন্দ্রনাথের সহায়তা প্রার্থনা করেন।
১৯৪০-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে লেকচারার পদে যোগ দেন; ১৯৪৮ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শেষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হন। অনেক কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি 888sport live football, দর্শন ও ধর্ম পড়িয়েছেন। ১৯৪৮-৫০-এ হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি অধ্যাপক, ১৯৫০-এ ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেলো ও লেকচারার, ১৯৫০-৫১তে জাতিসংঘে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতা, ১৯৫১-৫৩তে কানসাস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও ১৯৫৩-৫৫তে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। বস্টন থেকে ছুটিতে মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ে রবীন্দ্র-অধ্যাপক পদে বৃত হন ১৯৬৩তে।
নিউ ইয়র্ক স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৬৭ থেকে ৭৭ পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। ১৯৬৯-এ উল্লিখিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন অতিথি অধ্যাপক পদে। ১৯৭৭-এ মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিজিটিং প্রফেসর ছিলেন; একই বছর বিশ্বভারতীতে অতিথি অধ্যাপক পদে আমন্ত্রিত হন।
রবীন্দ্রনাথের সফরসঙ্গীরূপে ১৯৩০-এ জার্মানি, ডেনমার্ক, রাশিয়া ও আমেরিকা এবং ১৯৩২-এ পারস্য ও মধ্যপ্রাচ্য 888sport slot game করেন। আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা, প্রশান্ত ও আটলান্টিক মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ, জাপান ও কোরিয়াসহ অনেক দেশ তিনি 888sport slot game করেন।
বিশ্বভারতীর দেশিকোত্তম উপাধি পান ১৯৬৩তে। 888sport live football অকাদেমি 888sport app download bd পান ১৯৬৪তে। পদ্মভূষণ লাভ করেন ১৯৭০-এ।
জীবনের শেষ দিনগুলি শান্তিনিকেতনে কাটিয়েছেন। ১৯৮৩ সালে তিনি আমেরিকা থেকে ফেরেন। ১৯৮৬-র ১২ জুন তিনি প্রয়াত হন।
আন্তর্জাতিকতাবাদী মানবতাবাদী কবির জীবনদর্শন এই কয় চরণে বিধৃত :
জানি ধর্ম তাই। কোন্ ধর্ম?
ধর্ম কি খ্রীস্টান? প্রাণে-বাঁচা সে কি হিন্দু? আয়ু বৌদ্ধ?
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস মুসলমানী? রক্ত শিন্টো? জৈন? চৈন?
যে ধর্ম আমরা মানি সে তো উৎস, তারি লোকায়ত
কত ধারা উৎকর্ষের কালে-কালে প্রবাহ কল্যাণী
নেমে এল জনচিত্তে যেখানেই করুণা আধার;
মানুষের কোনো ধর্ম সৃষ্টি তো করেনি সৃষ্টিকে,
(‘প্রাণের ভৎর্সনা’, অনিঃশেষ, ১৯৭৬)
তাঁর কাব্য-তালিকা : 888sport app download apkবলী ১৯২৪/২৫; উপহার ১৯২৭; খসড়া ১৯৩৮; একমুঠো ১৯৩৯; মাটির দেয়াল ১৯৪১; অভিজ্ঞান বসন্ত ১৯৪৩; দূরযানী ১৯৪৪; পারাপার ১৯৫৩; পালা-বদল ১৯৫৯; ঘরে ফেরার দিন ১৯৬১; হারানো অর্কিড ১৯৬৬; পুষ্পিত ইমেজ ১৯৬৭; অমরাবতী ১৯৭২; অনিঃশেষ ১৯৭৬; নতুন 888sport app download apk ১৯৮০।
গদ্যগ্রন্থ : চলো যাই ১৯৬২ এবং সাম্প্রতিক ১৯৬৩।
ইংরেজি : The Dynasts and the Post-War Age in Poetry (অক্সফোর্ড ১৯৩৮); Modern Tendencies in English Literature (কলকাতা ১৯৪২); Amiya Chakrabarty in Enghlish Translation (Santiniketan 1990) ও 888sport app।
নরেশ গুহ
পিতৃদত্ত নাম নরেশচন্দ্র গুহবক্সী। প্রথম দিকে নরেশ গুহবক্সী নামেই 888sport app download apk লিখতেন। ১৯২৩-এর মার্চে (১৯শে ফাল্গুন ১৩৩০ বঙ্গাব্দ) টাঙ্গাইল জেলার (তৎকালে ময়মনসিংহ) বিন্যাফৈর গ্রামে জন্ম। পিতা রমেশচন্দ্র গুহবক্সী, মায়ের নাম ইন্দুমতী।
সন্তোষ জাহ্নবী হাই স্কুল থেকে ১৯৩৯-এ প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা, ১৯৪১-এ কলকাতার রিপন কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি, ১৯৪৩-এ ওই কলেজ থেকে ডিস্টিংশন নিয়ে পাস কোর্সে বিএ, ১৯৪৫-এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এমএ পাশ করেন। ১৯৬২ সালে নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডবল্যু বি ইয়েটস সম্পর্কে গবেষণার জন্য পিএইচডি উপাধি অর্জন করেন।
১৯৪৭-এ যুগান্তর পত্রিকায় সহ-সম্পাদক এবং ১৯৪৯-এ চারুচন্দ্র কলেজে ও ১৯৫৬তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৫৯-এ ফুলব্রাইট বৃত্তি নিয়ে শিকাগোর কাছে এভানস্টনে নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতে যান। ১৯৬৩ থেকে যাদবপুরে তুলনামূলক 888sport live football বিভাগের অধ্যক্ষ, ১৯৬৭তে প্রফেসর হন। কলা অনুষদের ডিনও হয়েছিলেন। ১৯৮০তে যাদবপুর থেকে অবসর নেন। ১৯৮৩-৮৬, এই চার বছর বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবনের অধ্যক্ষ ছিলেন।
তাঁর প্রকাশিত কাব্য : দুরন্ত দুপুর (১৯৫২), তাতারসমুদ্র ঘেরা (১৯৭৬); বিদিশার ইনি আর উনি (১৯৯৩); 888sport app download apkসংগ্রহ (১৯৯৩, দ্বি-স ১৯৯৯)। 888sport liveগ্রন্থ : অন্তরালে ধ্বনি প্রতিধ্বনি (১৯৯৪)। সম্পাদিত গ্রন্থ : কবির চিঠি কবিকে (১৯৯৫), 888sport live footballসারথির সমীপে (২০০০), অম্লান দত্তর খানকয় চিঠি (২০০১)। ইংরেজি : W B Yeats/ An Indian Approach ১৯৬৮ এবং In Praise of Two Bengali Novels and other Essays (১৯৯৭)।
সম্পাদিত সাময়িকপত্র : টুকরো কথা, বিভাব পত্রিকার ‘টুকরো কথা’ 888sport free bet (২০০২), Jadavpur Journal of Comparative Literature (১৯৬৪-৮৩); Visva-Bharati Quarterly (১৯৮৪-৮৭)।
তিনি বুদ্ধদেব বসুর 888sport app download apkসংগ্রহ (৫ম খন্ড) এবং অমিয় চক্রবর্তীর 888sport app download apkসংগ্রহ (২য় খন্ড) সম্পাদনা করেন। সার্ত্রের নাটকের 888sport app download apk latest version করেন কপাট (১৯৯৬) নামে।
তাতারসমুদ্র ঘেরা কাব্যের জন্যে কেরালার আসান 888sport app download bd লাভ করেন (১৯৭৯), 888sport app download apkসংগ্রহের জন্য 888sport live football অকাদেমি 888sport app download bdে সম্মানিত (১৯৯৫)।
৪ঠা জানুয়ারি ২০০৯ তিনি কলকাতায় প্রয়াত হন।
পত্র ১
27-A ELGIN ROAD
CALCUTTA
৪ঠা ফেব্রু. [১৯৪২]
কল্যাণীয়েষু
তোমার 888sport app download apkগুলি খুব ভালো হয়েছে। পড়ে খুব উপভোগ করলাম। চতুর্দিকের চলন্ত ঘটনার আলো-ছায়া তোমার কাব্যের মধ্যে অনুভূতির বিচিত্র রসে রঞ্জিত হয়ে রূপলাভ করেচে – মনের মাধুরীর সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংসার-পৃথিবীর এই যোগেই কাব্যের যাথার্থ্য প্রমাণ হয়।
আমার ‘‘অভিজ্ঞান বসন্ত’’ বেরোতে প্রায় বসন্তকাল এসে পড়ল। আর দিন দশ পনেরো বাকি। এর মধ্যে নূতন পরীক্ষার সন্ধান পাবে – ফলাফলের বিচার আমার কৃত্য নয়।
আজকের দিনের পৃথিবীতে স্বচ্ছ উচ্ছল সুখের সুর 888sport app download apkয় তেমন সহজে বেজে উঠতে চায় না – আমার রচনায় সেটা তুমি লক্ষ্য করেচ! অথচ একটা সুর কাব্যজগতে আছে যেটা সুখদুঃখকে মিলিয়ে নিয়ে বৈরাগ্যবিধৃত আনন্দের – সেই সুর বাজাতে চেয়েছিলাম।
শুভাকাঙ্ক্ষী
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ২
“Aruni.”
Seaside Puri.
April 23 ’42
কল্যাণীয়েষু
তোমার 888sport app download apkগুলি পড়ে খুব ভালো লাগল। ভাষা ও অনুভবের একটি সূক্ষ্মতা তোমার লেখায় প্রকাশিত হচ্চে – এই পথে তুমি এগিয়ে চল্বে।
আমার বিশ্বাস কঠিন ছন্দের রাস্তায় কিছুদিন 888sport app download apk চালনা করলে তোমার রচনাশক্তি বাড়বে। মিল-হীন স্বেচ্ছাভঙ্গীর রচনা বিপদজনক, – ছন্দ, তাল এবং লয়ের অধিকার যার পাকা হয়েচে তারই পক্ষে অতখানি মুক্তির সদ্ব্যবহার সম্ভবপর। আধুনিক অনেক লেখক ছন্দের দুরূহ সাধনা না করেই লিখ্তে নেমেছেন – তার ফলে শক্তির পরিণত রূপ প্রায় কোথাও দেখা যাচ্চে না।
তোমার মন ছবিতে ভরা এবং কথার ভঙ্গীটি সরস। আমার বিশ্বাস তুমি সাধনা করলে 888sport live footballে আপন স্থান ক’রে নিতে পারবে। বাহিরের প্রশংসা বা নিন্দার উপর নির্ভর কোরো না – বল্বার উৎসাহ নিজের মধ্য হতেই খুঁজে পাবে। নিতান্ত তাগিদ না বোধ করলে লিখো না। যা লিখবে তার বেশির ভাগই নির্ম্মম হাতে ছিঁড়বে। এই রইল আমার সস্নেহ অনুরোধ। আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে যা সত্য বলে জেনেছি তাই বল্চি। রবীন্দ্রনাথের কাছে ছিলাম কিন্তু কোনোদিন তাঁরও নিন্দাপ্রশংসার উপর নির্ভর করিনি – নিভৃতে নিজের পথে চলেচি। তোমাকেও তাই বলি আপন সৃষ্টিকাজে কারো নেতৃত্ব মেনো না – আধুনিক বা প্রাচীন।
পুরীতে নীল সমুদ্রের ধারে দিনগুলি বেশ যাচ্চে। জগন্নাথের আশ্রয়ে আছি – অবশ্য বদ্ধ মন্দিরের বাহিরেই – মনকে শঙ্কিত ক’রে রাখাটা কিছু নয়।
আশা করি গ্রামে গিয়ে ভালোই আছ।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৩
“Aruni.”
Sea-side
Puri
Orissa
২৭ বৈশাখ [১৩৪১]
কল্যাণীয়েষু
তোমার সুন্দর চিঠিখানি পেলাম। বাংলা গ্রামের ছবি তোমার অক্ষরে ফুটে উঠেছে। এই সতেজ শ্যামল পল্লীপ্রকৃতির কাছে ফেরবার ডাক এসেচে – যদি সেই ডাক সাইরেনের কণ্ঠেই প্রথম বেজে ওঠে তবেও সহরত্যাগীর ক্ষতি হবেনা। যদিও নিমিত্তকারণটা আকস্মিক এবং নিতান্তই অপ্রীতিকর।
এই ফিরে-যাবার কথাটা দেখ্বে বৈশাখ মাসের ‘‘888sport app download apk’’য় আমি বলেচি – সহুরে শুক্নো ব্যর্থ মনোবৃত্তির বিরুদ্ধে যা লিখেচি তার সঙ্গে তোমার মিল্বে।
আধুনিক কাব্য যে বৃহৎ পাঠক সমাজে পৌঁছচ্চে না তার জন্যে প্রধানতঃ লেখকেরাই দায়ী। রবীন্দ্রনাথের কথা ছেড়েই দাও – সাধারণ গ্রহতারার আলোকশক্তি আমাদের নেই যাতে দূর পর্য্যন্ত পৌঁছতে পারি। কিন্তু পাঠকের দিক থেকেও মনকে কানকে প্রস্ত্তত করতে হবে – যা নূতন তাকে গ্রহণ করবার শক্তি চাই। যে-ভাষা আজ অনভ্যাসের দুরূহতাবশত ব্যর্থ মনে হচ্চে তার অর্থ এক সময়ে হয়তো সুন্দর এবং বেদনাময় হয়েই আগামী পাঠকের চিত্তকে অধিকার করবে। কিছু বলা যায় না। দুই দিকেই মনের আতিথ্য এবং দানশক্তি চাই। আমার বিশ্বাস আধুনিক বাংলা কাব্যের মধ্যে দিয়ে কিছু রূপ তৈরি হচ্চে যা টিকে যাবে – যাতে প্রাণের পাথেয় এবং মনের স্থায়ী ঔজ্জ্বল্য আছে।
‘‘প্রাচীর’’ একখন্ড পাঠাচ্চি। তুমি পোড়ো এবং দশজনকে পড়িয়ো। এই পুঁথির বহুল প্রচার হলে ভালো হয়। ছাত্র ফেডারেশনের ঠিকানা বইয়ে আছে – তাদের কাছে আরো কিছু কপি অবশিষ্ট আছে। তোমার দুটি 888sport app download apkই খুব ভালো লাগ্ল। বেশ একটু সরসতা আঙ্গিকের শক্তি আছে – এই দুয়ের গাঢ় যোগেই কাব্য সার্থক হয়ে ওঠে।
শুভেচ্ছা জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৪
27.A ELGIN ROAD
CALCUTTA
4/12 [42]
কল্যাণীয়েষু
তোমার চিঠি এবং 888sport app download apk পেয়ে সুখী হলাম। 888sport app download apkগুলি, খুব ভালো হয়েচে।
একদিন এসে দেখা কোরো। সাধারণত একটু দেরিতে আমার সুবিধা হয় – যে-কোনো দিন রাত আটটার পর আমি বাড়ি থাকব আগামী সপ্তাহের প্রথমার্দ্ধে। ও-সময়ে সুবিধা না হলে এই বুধবারে বিকেল পাঁচটার সময় এসো।
দেখা হলে কথা হবে। অশোক রাহার ‘‘ভানুমতির মাঠ’’ পড়েচি এবং আমার খুব ভালো লেগেচে।
শুভাকাঙ্ক্ষী
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৫
“Aruni” Seaside, Puri
1st June [1943]
কল্যাণীয়েষু
কিছুদিন হল আমরা পুরীতে আছি। তোমার চিঠি এখানেই এসেচে।
ইংরেজি নিয়ে পড়া মন্দ কি? বাংলা হলে আরো যেন ভালো হয়, কিন্তু কাজকর্মের দিক থেকে হয়তো প্রথমটাই প্রশস্ত। কিন্তু তোমার সব দিক থেকে কোন্টা সুবিধা তা বিচার ক’রে দেখো। আমাদের কারো পক্ষে ঠিক বলা শক্ত।
ছুটিতে গ্রামে থাক্বে মনে ক’রে সেখানেই লিখচি – যথার্থ ছুটির সন্ধান সহরে নেই। আমরা জুনের শেষাশেষি কলকাতায় ফিরব, তখন একদিন দেখা কোরো।
শুভাকাঙ্ক্ষী
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৬
27/A Elgin Road
Calcutta
২৪ জুন [১৯৪৩]
কল্যাণীয়েষু
তোমার চিঠিখানি পেলাম – তাতে যে-888sport app download apkর টুক্রো অন্তর্ভুক্ত করেচ সেটি প’ড়ে আননদ হল। তোমার সহজ গভীর অভিজ্ঞতাগুলি স্বজাত ছন্দ নিয়ে আবির্ভূত হোক্ – তার মধ্য দিয়ে তোমার আত্মপরিচয় এবং প্রকাশের পথ এগিয়ে যাবে। তোমাদের গ্রাম্য পরিবেশের যে-ছবি দিয়েচ সেটি উপভোগ্য।
‘‘সামুদ্রিক’’ 888sport app download apkর মূলকথা তুমি ঠিকই ধরেচ। অনেক সময় বহিরাকাশের বিরল পটেই অন্তরের রং উজ্জবল বিচিত্র হয়ে ফোটে; সহরের বহু বিভ্রান্ত জীবনে সেই অন্তরের রঙীন সন্ধান হারিয়ে যায়। সমুদ্রতটের বালি বহিরাকাশের বিরল পটের প্রতীক – সেখানে বাহিরের রিক্ততা অন্তর থেকে বর্ণময় প্রকাশকে টেনে আনে। সৃষ্টির জন্যে এই বৈরল্যকে আমরা চাই। ইরানের কথা উল্লেখ করেচি – সেখানে লক্ষ্য করেছিলাম যে-সব জায়গায় ব’সে পুরুষমেয়ে আশ্চর্য রঙীন কার্পেট গালিচা বানাচ্চে সেই সব জায়গা অনেক ক্ষেত্রেই রং-ছুট, মরুতে পাওয়া, তৃণবৃক্ষহীন প্রান্তর। রং তারা পেল কোথায়? মুখত্য [মুখ্যত] আপনাদের ভিতর থেকেই। রঙের ক্ষুধা তাদের সহায় হোলো, বাহিরের অপূর্ণ রং-তৃষ্ণা তাদেরকে অন্তরের আশ্চর্য রঙের সন্ধানী করল। 888sport live footballসৃষ্টির জন্যেও বাহিরের বিরলতা অনেক সময় দরকার – তাতে ক’রে মন আপনার বাহিরেই নির্ভর না ক’রে ভিতরেও ঐশ্বর্য আবিষ্কার করে। তবেই ‘‘ম্যাজিক কার্পেট’’ বোনা হয়; আরব্যোপন্যাসের অলৌকিক সেই সৃষ্টি স্বাধীনতার রূপক।
তরুণতা যাকে বলচ সে নিশ্চয়ই প্রাণের কথা; বয়সের, বা দেশের কথা নয়। প্রাণ যেখানে নবীন সেখানে তার সর্বত্রই একই ধর্ম; প্রকাশের সামান্য প্রভেদ হতে পারে। য়ুরোপে বা ভারতবর্ষে যথার্থ নবীন যারা তারা সমশ্রেণীর, সমভাবাপন্ন – তারা সৃজনশীল, তারা বিশ্বাসী, তারা আনন্দিত। যা মৃত, যা বাধামাত্র তাকে দূর করবার জন্যে তারা দুঃখকে মেনে নেয়, কিন্তু সেও অন্তর্নিহিত প্রাণের তাগিদেই। আমার সময় বেশি থাকেনা, তার মধ্যে তোমাকে লিখলাম।
শুভকামনা জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৭
27/A Elgin Road
Calcutta
23/7 [1943]
কল্যাণীয়েষু
B.T. পরীক্ষার খাতা দেখা এবং 888sport app কাজে আকণ্ঠ ডুবে ছিলাম – তোমার চিঠির উত্তর দেওয়া হয়নি এজন্যে লজ্জিত আছি। বুধবার কি বৃহস্পতিবার যদি বেলা পাঁচটা নাগাদ আসতে পারো তো সুখী হব। (নয়তো সন্ধ্যা সাতটার পর।) কোনদিন আসবে জানিয়ো।
শান্তিনিকেতনে ঘুরে আসতে পারো – এখন তো বিদ্যালয় খুলেচে – খুব ঘনঘটা বর্ষামঙ্গল চলচে আকাশে। হয়তো বা বর্ষার গানও ছেলেমেয়েদের কণ্ঠে শুনতে পাবে। আমাদের এখন আর যাওয়া হবে না।
প্রীতিনমস্কার জেনো।
ভবদীয়
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৮
27/A Elgin Road [২৭.১০.১৯৪৩]
Calcutta
কল্যাণীয়েষু,
আগামী শুক্রবার যদি ৪টা বা ৫টার সময় আসো তো সুখী হই। বাড়িতে অসুখ চলছিল, নানা দুর্যোগ, তাই লিখে উঠতে পারিনি। তুমি এলে কথাবার্তা হবে। সেবার চিঠিখানি পড়ে খুবই আনন্দলাভ করেছি এবং উৎসাহিত হয়েছি।
শুভাকাঙ্ক্ষী
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ৯
27/A Elgin Road
শুক্রবার [৫.১১.১৯৪৩]
কল্যাণীয়েষু,
তোমার শরীর খারাপ ছিল জেনে দুঃখিত আছি – এখন নিশ্চয়ই সেরে উঠছ। এই চিঠি কোন সময়ে পাবে জানিনা – এই রবিবার দুটোর সময় কি আসতে পারো? সাড়ে তিনটেয় বিশ্বভারতী মিটিঙে আমাকে যেতে হবে; ঘণ্টা দেড়েক পাওয়া যাবে। যদি এতে সুবিধা না হয় সোমবারে Universityতে দেখা হলে একটা সময় ঠিক করা যাবে।
শুভাকাঙ্ক্ষী
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ১০
S S Astarias 26/2/48
Near Aden
কল্যাণীয়েষু
আসবার আগে যাত্রার উদ্ভ্রান্তিবশত তেমন ক’রে তোমার সঙ্গে কথাবার্তা হল না। দূর সমুদ্র থেকে আমার প্রীতি ও কল্যাণ পাঠাই।
যে-ভারতবর্ষের তীর ছেড়ে এলাম সেখানে আজ রবীন্দ্রনাথ নেই, মহাত্মাজির কণ্ঠ নীরব। দেশে ফিরে গিয়েও তাঁদের আর পাবোনা মনে করা যায় না। পরমাত্মীয় যাঁরা আমার দেশের প্রাণস্বরূপ হয়ে ছিলেন তাঁদের পুণ্যভূমি আজ যেন আরো দূরে সরে যাচ্ছে। কিন্তু সেই ভারতবর্ষেই ফিরে গিয়ে একমাত্র শান্তি পাব এও জানি। বারো বছর পর আবার সমুদ্রে বেড়িয়েছি – এবারকার অভিযান আরো অনির্দিষ্ট বেদনায় ভরে উঠেছে।
তোমাকে মধ্যে মধ্যে লিখব এবং আমার জন্যে কিছু দাবিও করব জেনো। দুটো জিনিষের কথা বিশেষ এখন বলতে চাই – যদি তুমি কোনোমতে ‘‘ভারত’’ এবং ‘‘Eastern Express’’ (একই বাড়িতে আপিস) এই দুই জায়গা থেকে তাদের শেষ পূজা 888sport free bet আমার নামে সংগ্রহ করতে পারো। তাতে গান্ধীজির সম্বন্ধে আমার বাংলা ও ইংরেজি লেখা বেরিয়েছিল – আমার বিশেষ দরকার। ইংলন্ডেই আমাকে তার cutting air mailএ পাঠিয়ে দিতে পারো তো একান্ত উপকৃত হই – C/O Miss Agatha Harrison, 2 Cranbourne Court, Albert Bridge Road, London S.W.11. আমার সংকল্প আছে ইংলন্ডেই কিছু লেখা মহাত্মা গান্ধী সম্বন্ধে তৈরি ক’রে রাখব।
দ্বিতীয় অনুরোধ এই যে, উদ্বোধন আপিস থেকে কোনো সময়ে জেনে নিয়ো তাদের Jubilee 888sport free bet কবে বেরোবে। জানুয়ারির প্রথমে বেরোবার কথা ছিল। তোমার ভালো লেগেছিল সেই বুদ্ধদেব সম্বন্ধে রচিত আমার 888sport app download apk, সেইটে ওদের দিয়েচিলাম। বেরোলে আমার 888sport app download apkটির offprint বা cutting আমাকে তুমি air mailএ পাঠিয়ে দিয়ো – ভারতবর্ষ সম্বন্ধে যে-888sport app download apkগ্রন্থ সম্পূর্ণ করছি তাতে বসাব। সমস্ত উদ্বোধন 888sport free betটি যথাসময়ে আমার মার্কিন ঠিকানায় পাঠাতে বলে দাও তো সুখী হই।
জাহাজে বসে অনেক কাজ করছি যদিও যাত্রীর ভিড়। তাজমহল সম্বন্ধে আমার দিক থেকে একটি নাতিদীর্ঘ বিলম্বিত ছন্দের 888sport app download apk লিখেছি – এখনও সংস্কার চলছে। ইংরেজি লেখার ভূতকে এখনো ঘাড়ে চাপতে দিই নি কিন্তু শীঘ্রই অনেক দুঃখ আমার কপালে আছে।
বুদ্ধদেববাবুকে আমার প্রীতি নমস্কার।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ১১
OSKALOOSA [পোস্ট মার্ক]
8/4/48
সমস্ত মার্কিন দেশে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কত বড় দেশ, কত বিচিত্র জীবন, প্রকৃতির কী আশ্চর্য রূপ দুই চোখে দেখলাম। এখনো তিন মাস এখানকার নানা শিক্ষা কেন্দ্রে ঘুরব; তার পর Washing tonএ পড়ানো সুরু করব। তোমাদের খবর পাইনি বহুদিন – আশা করি লিখবে।
প্রীতিনমস্কার
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্ত্তী
পত্র ১২
Grand Canyon, Arizona
18th July [1948]
এই আদিম প্রাণের স্বাক্ষরিত শিলা-শৈললোকে এসেছি – যেমন ভয়ানক তেমনি সুন্দর। অবিশ্বাস্য নানা রঙপ্রাপ্ত পাথর আলোয় আলোয় রং বদলায়।
নীল পরিব্যাপ্ত, হাওয়া আসা শীত মরুভূমির
তোমাদের খবর দিয়ো। রওনা হবার পর ‘‘888sport app download apk’’র একটিও 888sport free bet পাই[নি]।
অমিয়
পত্র ১৩
Toronto
Canada
১১ অক্টোবর ’৪৮
As from
Howard University
Washington DC
USA
কল্যাণীয়েষু
888sport apps থেকে লেখা তোমার স্নিগ্ধ চিঠিখানি নায়াগ্রা প্রপাত পার হয়ে ক্যানাডার অন্টারিয়ো প্রদেশের এক কোণায় আমার হস্তগত হয়েছে – বিশ্বের প্রাত্যহিক দৈবঘটনার মধ্যে ডাকঘর বিভাগের এই কৃতিত্ব মনকে বিস্মিত ক’রে দেয়। হঠাৎ এই শীত-মধ্যাহ্নের দূরতার মধ্যে কলকাতার ঘরোয়া হাওয়া প্রবেশ করল, মনে হল দ্রুতচক্র আকাশযান মোটরবাহিনীর নিরন্ত যাত্রার ভিড়ে কোথায় একটু পর্দা সরিয়ে বাংলাভাষায় কে যেন পূর্বজন্মের অনন্ত ছবি এঁকে যাচ্ছে। গোলদিঘির পার দেখতে গেলাম, রেলিঙের ওপাশে আমাদের সাবেকি আপন বিদ্যালয়, অন্যপারে বিশ্বভারতীয় দোকান, হয়তো সেখানে তুমি সদ্য ঘুরে বেড়িয়ে দুচারটে বইয়ের দোকানের জানলায় উঁকি মেরে ভর সন্ধ্যাবেলায় রাসবিহারী আভিনিউএ 888sport app download apkভবনের কোনো মজলিশে উপস্থিত। হঠাৎ মনে পড়ে যায় গঙ্গার ধার এবং কামাক স্ট্রীটের পাশ দিয়ে সেই ছলছল দিঘির বামদিকের রাস্তা – কত চোখে দেখেছি সেই সব দৃশ্য। যখন কলকাতার পথে অন্যমনে চলেছি, দুপুরে ছায়া ক’রে এসেছে আর মেঘলা গাছের বাঁকে নুয়ে পড়েছে রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার কৃষ্ণবৃন্ত, ওদিকে রিক্শ-র টুংটাং শব্দ, বাড়িগুলো প্রসন্ন অবুঝ একটা ভাব নিয়ে বাগানসুদ্ধ সারি সারি স্বপ্নস্থিত – বারবার ভেবেছি কোথায় যাচ্ছি এমন কিছু সেটা বাস্তব নয়, সত্য ভেবেছি এই যাওয়াটাই লক্ষ্য। সেইসব পরিপূর্ণ ঘরোয়া দিনের কথা মনে পড়ে যায়। এখনও সেই মানুষই আছি কিন্তু যেন ছবির ছায়া স্বচ্ছ বায়ুতে মিলিয়ে মধ্যে একটা অদৃশ্য হিতের বাধা সৃজন করেছে – যেন সূক্ষ্মশরীরের মতো সে আমার আরো একটা শরীর, আছে এবং নেই, 888sport sign up bonusকে ভর ক’রেই তার আদিম সত্তা। চতুর্দিকে কল্লোলিত পশ্চিমজীবনী, তার মধ্যে আছি নূতন উদগত সংস্কারের একটি আপন আবরণে। জানিনা এ সব কথার কী মানে হয়। কিন্তু ঐ দেখনা, টরন্টো সহরের ঝলমল পণ্যের দোকান, সারি সারি চলেছে দৃষ্টির বহুদূর পর্যন্ত; মধ্যে মধ্যে অগণ্য রেস্তরাঁ, হোটেল, ব্যাঙ্ক, 888sport live chatসৌধের ব্যতিক্রম ঘটিয়ে প্রকান্ড একটা গির্জের চূড়া, সেই চূড়া যেন অন্যমনস্ক। উপরে শীতের হিমভরা আকাশ। যারা যাচ্ছে আসছে তারা জামা টুপি বিদেশী বাস পরা অতি শুভ্রকায়, মেয়েরা উজ্জ্বল সুন্দর দ্রুতচারী; পুরুষেরা দীর্ঘ, ব্যস্ত; হুস্হাস্ ক’রে বিদ্যুতের মতো নানারঙের মোটর আসছে অদৃশ্য হচ্ছে। এখানে কী করছি, এ কোন্ খানে? কিন্তু এই প্রশ্ন বেশিক্ষণ মনে থাকে না – পা এগিয়েই চলে, জনপূর্ণ সভায় প্রবেশ ক’রে বক্তৃতা মঞ্চে উঠি, নয়তো সজ্জিত নর888sport promo codeর কোনো আলাপকেন্দ্রে লক্ষ আলোর তলে যোগ দিই। তবু এ দেশটার ছন্দ; মার্কিনের তুলনায় মনুষ্যোপযোগী, এখানে এরা অত্যন্ত তীব্র ব্যস্ত, তীক্ষ্ণ জীবন888sport apkী নয়। এরা নতুন দেশ, এদের মধ্যে অনুভব করা যায় যৌবনী হাওয়া, এদের জাতীয় সত্তায় প্রকান্ড অনাবিষ্কৃত রাজ্যের পাহাড়সমুদ্র এখোনো সঞ্চারিত। আমাদের এখানে খুব ভালো লাগছে। পাঁচমাসে আমেরিকার ৪২ প্রদেশে ঘুরেছি; বায়ুপথে, মোটরে, বিদ্যুৎরেলগাড়িতে অভাব্য 888sport slot gameকাব্য আমার কাছে আশ্চর্য ঈষৎ শঙ্কিত মরীচিকার মতো স্বরচিত হয়ে উঠেছে। মনের চোখ ধাঁধিয়ে গেছে, দৌড়ে ছবির প্রদর্শনী দেখার মতো, কথাও বলেছি কয়েক লক্ষ। তার পর ভাবলাম তিনজনে কানাডায় সত্যিকার ছুটি কাটাব। সেমন্তীকে নায়াগ্রা দেখাবার খুব ইচ্ছা ছিল – একটা প্রকান্ড নদী সবসুদ্ধ অমন ক’রে আস্ত ঝাঁপ দিচ্ছে, কতদূরে নীচের পাহাড় এবং খাদ – যুগে যুগে উন্মত্তা নদীর এই নিত্য আত্মাহুতি। ঝন্ঝন্ ক’রে বাজছে শত সহস্র কোটি পাগল শব্দের করতালি, জলের চূর্ণ চূর্ণ খন্ড ঐ দ্রুত মেঘের মতো সাদা হয়ে দূরে দূরে জমে উঠছে, ভেসে আসছে বৃষ্টির মতো, গর্জনের শেষ নেই। কানাডার দিক থেকেই এই প্রাকৃতী তান্ডবিনীর নাট্য খুব অনেকখানি সমারোহে দেখা যায়, মার্কিনের দিকে নদীর ঝাঁপানো পর্ব আরো ভয়ানক। এই সব কান্ডকারখানার মধ্যে প্রবল দৈত্যশক্তিমানুষ হার মানে নি। কাছ ঘেঁষে রেলিঙ বানিয়েছে। মাথা ঘোরে কিন্তু মৃত্যুবন্যার সাদা ফেনায়িত স্রোত প্রায় হাত দিয়ে ছোঁওয়া যায় – শুধু তাই নয়, কপি-কলে ক’রে পাথরের পাতালে নেমে ঝরণাকে তল থেকে দেখা যায়, কী ভয়ানক সেই আদিশক্তির দৃশ্য। সেখান থেকে বিদায় নিয়ে আঙুর, পীচ, আপেল ক্ষেতের মধ্য দিয়ে আমরা কানাডিয়ান চাষবাসের গ্রামে হাজির হলাম – একজায়গায় ডেনিস্ কৃষীরা উপনিবেশ গড়েছে, হৈমন্তীর ভাষা খুব কাজে লাগল। টাটকা গরম রুটি, ভাজা ডিম, নিজেদের তৈরি ক্রীম, মাখন আর মস্ত মস্ত ঝলসানো আলু – মাখনে পোড়ানো – তাই খাওয়ালো। আপেলের সুরভী রস পাত্রে ক’রে এনে দিল, এবং কানাডার বিশেষ উৎকৃষ্ট কফি। দরজার সামনে যন্ত্রচাষের সরঞ্জাম নিস্তব্ধ দুরন্ত অশ্বের মতো স্থির; যতদূর দেখা যায় মোটা শীর্ষঅলা সোনালি গম, বাড়ির অন্যদিকে এলম গাছের সারি। অনেকগুলি গ্রামে এবং উপনিবেশে আতিথ্য গ্রহণ করেছি – হৈমন্তী 888sport live chatকাজের নমুনা দেখতে ব্যস্ত। আমাকে মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজে অটাওয়া সহরে যেতে হল – কানাডার সৌম্য সুন্দর অনতিবৃহৎ রাজধানী। সেইখান থেকে ফরাসীভাষার প্রাধান্য সুরু, – নদীর ওপার থেকে ক্যুবেক্ প্রদেশ। মনট্রিয়াল সহরেও গেলাম – ওখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসিদ্ধ, 888sport live footballিক মহলেও ঘুরলাম। এরা ফরাসী ভাষায় বিশিষ্ট একরকম কানাডিয়ান 888sport live football রচনা করছে – 888sport app download apkয় জোর আছে। যদিও শিকড়ের মাটি এখনো উপরের দিকে। মার্কিনের তুলনায় এরা কমবয়সী, যদিও আমেরিকার মধ্যবয়স্ক ভাব একটা বৈষয়িক ভঙ্গীর মতো, যেটুকু প্রাচীনতা সেটা অল্পদিনে অত্যন্ত শক্তি নিয়ে কারবারী বুদ্ধির নকল আভিজাত্য। এদের ক্যানেডিয়ান্ বুদ্ধি অত শান্ দেওয়া নয়, যদিও 888sport apkে এবং বৈদ্যুতিক অনুশীলনে এরা খুব কৃতিত্ব দেখিয়েছে। মার্কিনের জৌলশের পরে কানাডাকেও গরীব দেশ মনে হয় – যেন বাতি তেমন ক’রে জ্বলেনি, পাথর অত ঝকঝকে শাদা নয়। মার্কিনের দোকানের আশ্চর্য জানালায় যে-ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকার জিনিস ছোট ছোট সহরেও কুবের ভান্ডারের সাক্ষ্য দেয় এখানে তা স্বপ্নেরও অগোচর। মার্কিন ডলার এখানেও অতি লোভনীয় জিনিষ, – যা এনেছি খুব কাজে লাগছে। কিন্তু আমরা যে-দেশের লোক আমাদের পক্ষে এসব রাজ্যে বাস করা রক্তের মূল্যে দুদিনের অভিযান, ধনে প্রাণে সর্বস্বান্ত হতে হয়। মানুষের তৈরি হিজিবিজি সব ভুলে যাই যখন হঠাৎ দরিদ্রা বসুন্ধরাকে চিনতে পারি, সেই যিনি ধূলির ঐশ্বর্য নিয়ে বসে আছেন – বিদেশী মাঠে ঘাটে তাঁকে যখন তখন দেখতে পাই ঐ তো বড়ো বড়ো গাছ নিয়ে, নির্মল অরণ্যে প্রান্তরে তিনি আছেন। সভ্যতার ঢেউ উঠছে, পড়ছে, কিন্তু নীলিমার তলে তিনি প্রাণের শস্য প্রান্তরে আজো সেই আমাদের জননী বসুমতী। তাঁকে যারা ভোলে তাদের লোকালয় কি টিকবে?
এসব দেশের 888sport live footballের কথা জিজ্ঞেস করেছ। পরে লিখব কিন্তু সত্যি কথা এই যে যথার্থ সৃষ্টি888sport live football পশ্চিমে আর দেখা দিচ্ছে না। বুদ্ধির আশ্চর্যতা আছে, গঠনশক্তির প্রতিভা এবং ভাষার পালিশ যথেষ্ট কিন্তু একটিও কণ্ঠস্বর শুনতে পাই না যা দাঁড়িয়ে শোনবার মতো, যা কথা নয় বাণী। এদের সাংবাদিক বিচিত্র পরিবেষণের, এবং জ্ঞান888sport apkের রাজ্যে একজাতীয় প্রকাশনী 888sport live football তৈরি হচ্ছে তার ধার এবং সুষমা উপভোগ্য কিন্তু 888sport app download apk? 888sport live chat? গান? যেটুকু যা বেশ দেখা যায় তা হয় মেক্সিকোর স্পেনের দূরবর্তী স্থাপত্য বা ছবির প্রভাব, অথবা ক্যালিফোর্নিয়ায় পূর্বদেশের নানা ঢেউএ চীন-জাপান-ভারত হতে সমাগত। প্রশান্ত সমুদ্রের তীরেই এদের যেটুকু ধ্যানরঞ্জিত দর্শন, 888sport live footballে ও 888sport live chatের উপনিবেশ গড়ে উঠছে। আমেরিকার লোক যে সহৃদয় নয় একথা বলা চলে না, এদের আতিথ্য, ঔদার্য এবং সর্বগ্রাহী নিয়ত-অভিযানী মনের মাধুর্যও বিস্ময়কর কিন্তু ঐশ্বর্য্যের আয়োজনে এবং জটিলতায় এরা ভারাক্রান্ত। অলীক সম্পদের তন্ময়তায় মুগ্ধ এদের দৃষ্টি কিছুতেই স্বচ্ছ হচ্ছে না, দুচারজন তপস্বী ছাড়া কেউই ক্ষণিক পর্বের পারে পশ্চিম সভ্যতার সাংঘাতিক পরিণামকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছেন না। এ অবস্থায় 888sport live football রচনা হয় না, কোটি ডলারের সৌধ তৈরি হতে পারে – তলার ওপর তলা আকাশে মুষ্টি তুলে দাঁড়ায়। গান বলো, 888sport live football বলো যেটুকু রচা হচ্ছে তা নিগ্রোদের উপকূলে, দক্ষিণে তুলো-ক্ষেতের কাঁচা মাটিতে, দুঃখের উপনিবেশে। সেই দুঃখের যে-ধ্রুব কাহিনী জর্জিয়া, লুউসিয়ানায় স্বচক্ষে দেখেছি তা আর কী বল্ব। কিন্তু সেই বেদনার ক্ষেত্রেও আজ গানের জায়গায় বিদ্রোহী শক্তি রক্তিম হয়ে উঠছে – ঝড় এল বলে – না হয়ে উপায় নেই।
আমেরিকায় ভারতের যে বজ্রশীল বাণী প্রবেশ করেছে তা গান্ধীজির। ওরা শুনে চমকে উঠেছে। তাঁকে এরা ভয় করে, পূজা করে, এবং তাঁর কাছেই পরিণামে শান্তির আশ্বাস পায়। গ্রহণও করতে পারে না অথচ মরণজয়ী ঐ তপস্বীর মঙ্গল আলোয় ওদের দূর থেকে ডাক দেয় – জানে ঐ ডাকে সবাইকেই একদিন সাড়া দিতে হবে। যুদ্ধের আগে, কিম্বা পরে। আমি যেখানেই গেছি দেখেছি ভীত কৌতূহলান্বিত, চঞ্চল জনসংঘ মহাত্মাজির বিষয়ে ক্রমাগত জানতে চায়। এসব কথা শোনাবার লোক কোথায়? ভারতবর্ষ থেকেও কী কালীপুজোর খাঁড়ার মন্ত্র আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যাসুদ্ধ পশ্চিমে আসতে থাকবে?
তোমাকে এই চিঠি দীর্ঘ রাত্রে লিখে পাঠাই। দেখ, আমি বিপদে পড়েছি। এদেশে কী কঠোর পরিশ্রম করতে হয় বুঝতে কি পারো? কিন্তু নিজের কাজ করবার সময় পাই না। তাই চিঠি লিখতে পারিনি।
চিরন্তন ভারতী, সেই বুদ্ধ-গান্ধী-রবীন্দ্রনাথের মহা মানবিক কল্পপ্রাণ ভারতীকে প্রণাম পাঠাই। সেই ভারতবর্ষে যেন পৌত্তলিকতা না থাকে, জাতিবিচার না থাকে, রক্ত প্রচার না হয়।
দেখো, Californiaয় film সম্বন্ধে যা বলেছিলাম তা নিয়ে Statesman Editorial যা বেরিয়েছিল যেমন ক’রে হয় আমাকে air mailএ পাঠিয়ো – বিশেষ দরকার পড়েছে। আরেক কথা। ‘‘উদ্বোধনে’’ শুনলাম আমার চিঠি দুই 888sport free betয় বেরিয়েছে – cutting যেন তাঁরা air mailএ পাঠান, আমি দেখে, স্বামী প্রভবানন্দের কাছে Californiaয় দেব। তাঁরা এটা দয়া ক’রে পাঠালে কৃতজ্ঞ হব। যা খরচ হবে সব আমাকে জানিয়ো। ওখানের bank থেকে দিয়ে দেবে।
একটা অপ্রত্যাশিত বই শীঘ্রই তোমার কাছে পৌঁছবে – পড়ে দেখো।
তোমাদের অমিয় চক্রবর্তী
পত্র-১৪
[ডাক সীলমোহর ১ : [ডাক সীলমোহর ২ :
WASHINGTON D.C. CALCUTTA-2
NOV 9 1948 2 PM] 16 NOV 1948
6:30 A.M.]
কল্যাণীয়েষু,
পুরী থেকে লেখা তোমার সুন্দর চিঠিখানি পেলাম – ইতিমধ্যে আমার টরন্টোর পত্র তুমি পেয়ে থাকবে। বুদ্ধদেববাবুকেও ‘‘888sport app download apk’’র জন্যে অতি দীর্ঘ 888sport live পাঠিয়েছি – বহুদিন পর একখানি গদ্য সমালোচনা তাঁরই উৎসাহে লিখেছি। কাটাকাটি-সুদ্ধ রচনাটি পাঠিয়েছি – প্রুফের বেলায় ‘‘888sport app download apk’’র দপ্তরে অনেকখানি পরিশ্রম জমা হবে। ফুটনোট এবং পাউন্ডের 888sport app download apkর উদ্ধৃতাংশ ঠিক যেমন লিখেছি তেমনি অবিকল রাখা – এইটেই মুষ্কিল হবে। বিশেষ ক’রে ইংরেজি ব’লে ছাপাখানার প্রমাদের সম্ভাবনা গুরুতর। আমি Cantos সমগ্র একখন্ডে বুদ্ধদেববাবুকে পাঠিয়েছি – তার সামনে পাউন্ডের ছবি আছে। জানি না সেটা reproduce করতে গেলে ঠিক উঠবে কি না।
আমাদের সময় কাজের ভিড়ে ঠাসা – হৈমন্তী ও খুকু দুজনেই Howard বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। হৈমন্তী Master of Education এবং সেমন্তী graduate Honors এর জন্যে তৈরি হচ্ছে কিন্তু জানি না আমরা যাবার আগে Course শেষ হবে কিনা। যতদূর যা হয়। এতে তাদের সব দিক থেকেই বিদ্যাগ্রহণ এবং নির্ধারিত উপায়ে ব্যবহার করবার একটা পদ্ধতি শিক্ষা হবে – দেশে গিয়েও কাজে লাগবে। আমাকে হপ্তায় পনেরো ঘণ্টা graduate class পড়াতে হয়। তাছাড়া পরীক্ষা করা, এবং পড়ানোর জন্যেও প্রস্ত্তত হতে অনেক খাটুনি। এ ছাড়া আরো কত ব্যাপারে জড়িয়ে থাকি তা বুঝতে পারো – ছুটি পেলে সবাই নানা কেন্দ্রে ঘুরি, দেশ দেখি। একটু ক্লান্তি জমে উঠছে – জীবনযাত্রার তাল এদের দ্রুত এবং জটিল, পেরে ওঠা যায় না। কিন্তু দৈত্যকুলে জেনেশুনেই এসেছি কোনো কিছু বিদ্যা স্বদেশে ফিরিয়ে নেবার জন্যে – এর জন্যে কিছু জীবন মূল্য দিতেই হবে। তা ছাড়া সখ্য এবং বন্ধুতা সব দেশেই পাওয়া যায় – বনলক্ষ্মীও নিত্য সুন্দর হয়ে নানা বেশে দেখা দেন। মানবসংসারকে বিচিত্রভাবে দেখে গেলাম। এ জীবনের চক্র যেন অনেকটা ক্রান্তির দিকে আসছে – মনে হচ্ছে একবারকার পালা অনেকটা হল। কেবল একটা সমস্যা এখনো বুঝি নি – মানুষের হাত থেকে মানুষকে কেমন ক’রে বাঁচানো যায়? রাষ্ট্রিকতার যন্ত্র ধার্মিকতার যন্ত্র দেশে দেশে স্বার্থপর বিশেষজ্ঞ দলের করায়ত্ত – তাদের ষড়যন্ত্রে সাধারণ মানুষ নিষ্পিষ্ট। সেই সাধারণ মানুষ তুমি আমি সর্বদেশেই প্রায় একরকম। এই বৈজ্ঞানিক নামধারী সভ্যতায় সেই সাধারণ্যের অবস্থা আরোই অসহায় মনে হয়। – আসন্ন দুর্যোগের ছায়া সবাই দেখছে কিন্তু উদ্ধারের যেটা উপায় – হঠাৎ এখন যন্ত্রসভ্যতাকে বদ্লানো, হন্যে নীতির বদলে সাম্যনীতির অনুবর্তন – তা এরা সাহসী ও সংঘবদ্ধভাবে আনতে পারছে না। এদের মধ্যে তো মহাত্মা গান্ধী কেউ নেই যে ‘‘মুক্তধারা’’র অভিজিৎ-এর মতো বাঁধ ভাঙবেন, নিজের মৃত্যু বরণ ক’রে। তবে হয়তো গান্ধীজির মন্ত্র প্রলয়কালে এসব দেশেও সক্রিয় হয়ে উঠবে। তারও যে লক্ষণ নেই তা নয়। তান্ডবের ডমরার মতো দূরে শোনা যায়।।
তোমাদের সব খবর দিয়ো। বিষ্ণুবাবুর পত্রিকা পেলে খুশি হব। আধুনিক 888sport live footballে সমালোচনা আরো বিশদতর ছড়িয়ে যাওয়া উচিত – সাম্প্রতিক রচনার মধ্যে বুদ্ধদেববাবুর ঐ সমালোচনা – নলিনী গুপ্তের আপ্ত বাক্য নিয়ে – উৎকৃষ্ট লাগল। এরকম সতেজ শালীনতা বাংলা 888sport live footballে প্রবেশ করলে হাওয়া সতেজ এবং মুক্ত হবে। তোমার লেখা আমার ভালো লাগে – তুমি এবারে একটা গদ্য বই করো।
আমি হঠাৎ হঠাৎ চিঠিপত্র লিখব কিন্তু প্রতিদানের কথা ভুলো না। ওখানে খবরের কাগজে কখনো আমার এখানকার খবর বেরোলে ঠিক কী বেরিয়েছে তা আমার জানা বিশেষ প্রয়োজন – নানা কারণ আছে। তুমি ছাড়া আর কার সহায়তা চাইব? তুমি যদি cutting পাঠাও তো উপকৃত হই – শুনলাম শেষ কিছুদিনে দুএকবার বেরিয়েছে, খুঁজে দেখবে কি?
T.S. Eliot পরের শুক্রবার এখানে আসছেন। উৎসাহিত আছি। তাঁর নূতন নাটক – এখনো শেষ হয়নি – তার বিষয়ে শুনব। Carl Sandburgকে আমার খুব ভালো লাগল – একেবারে ষোলো আনা কাব্যে অভিষিক্ত মানুষ। রাজ্যের গ্রাম্য গান – অবশ্য মার্কিন রাজ্যের – তিনি একতারার মতো একটা যন্ত্র বাজিয়ে গান করেন – নিগ্রো গান, দরিদ্র ‘‘রেড ইন্ডিয়ান’’, আমেরিকান তুলো ক্ষেতের চাষী মেক্সিকান্দের গান। সুরু হলে অন্তত চার ঘণ্টা – রাত্রি বয়ে যায়। গান গল্প, আবৃত্তি – একাই একশ; দেখতে সুন্দর, শুভ্র চুলে আলো প’ড়ে বেশ দেখায়, আর কথাও তেমনি হৃদয়গ্রাহী সরস এবং সুকৌতুক, এবং অত্যন্ত মার্জিত। Cumming[s] Poundএর খুব বন্ধু – তাঁর কাছে যাব। এর কাছে কোথায় থাকেন। এর বিষয়ে তোমাদের বলেছি – তাঁকে California-য় বড়ো ভালো লেগেছিল আর 888sport live chatীর রাজা Charlie Chaplin-কে। শেষ 888sport free bet ‘‘888sport app download apk’’ একখন্ড আমার [ছিন্ন]।
স্নেহানুরক্ত
[অমিয়] চক্রবর্তী
পত্র ১৫
[অস্পষ্ট ৩/৪ লাইন]
Quebec
Canada Dec. 12, ’48
কল্যাণীয়েষু,
হঠাৎ ক্যানাডার প্রত্যন্ত ‘‘ফরাসী অঞ্চলে’’ চলে আসতে হয়েছে – এদিকটায় শুধু ফ্রান্সের ভাষা নয়, সেই রকম নীল টালি বাড়ির ছাত, ঘুরোনো পাথরের রাস্তা, গির্জের চূড়া। খুব বরফ পড়ছে, অবিশ্বাস্য ঠান্ডা, – কিন্তু শুভ্র প্রকৃতির সাদায় সোনালিতে এই অপরূপ খেলা নয়ন মনোহর। সাদা পৃথিবীর উপর দিয়ে উড়ে মার্কিন দেশে ‘‘ঘরে’’ ফিরব।
তোমরা কেমন আছ?
[অমিয় চক্রবর্তী]
পত্র ১৬
EN ROUTE
THE LIBERTY LIMITED
PENNSYLVANIA RAILROAD
১৬ই মার্চ ১৯৪৯
প্রিয়বরেষু,
তোমার চিঠিখানি পেয়ে খুব ভালো লাগল কিন্তু একটু দুঃখও পেলাম। কেননা দেখছি তুমি আমার চিঠি পাওনি। মধ্যে “Richer by Asia” – সব দিক থেকেই দামী বই – সেটাও মারা গেল। প্রত্যেকবার রেজিষ্টরি ক’রে পাঠাবার কথা মনে থাকে না, ইচ্ছাও হয় না। যাই হোক ঐ বইটা আবার পাঠাব – ইতিমধ্যে আরো কয়েকটি বই তোমার নামে এবং বুদ্ধদেববাবুর ঠিকানায় পাঠিয়েছি। এবারে রেজেষ্টরি করেছিলাম তাই যাবে নিশ্চয়ই। এই গেল পত্রতত্ত্ব।
তুমি গানের কথা ব’লে আমার মন উতলা ক’রে দিলে। এদেশে বাংলা গান শুনব কোথায় বলো? মধ্যে মধ্যে যে শুনি না তা নয়, কিন্তু বাঙালি কণ্ঠ হলেই যে বাংলা গান হয় তা কী করে বলি। মোটের উপর মনে মনেই শুনতে হয়। তুমি বোধ হয় জানো যে সত্য সত্যই অনেক শত বাংলা গান – রবীন্দ্রনাথের গান এবং হয়তো কিছু বাউল কীর্তন, কিছু মীরার গান, আমার মনের কণ্ঠস্থ আছে। একদিনের জন্যেও তা অনুজ্জ্বল বা সুরবিহীন হয়নি। আকাশপথে ঘুরে বেড়াই, মার্কিনের সহস্র পরিবেশে নূতন উদ্ভ্রান্ত ভূমিকার যোগ হয়, কিন্তু কখনো বা মাটির পাতাল তলে চলন্ত ট্রেনের ভিড়ে, কখনো লক্ষ কোটি আলোর বৈদ্যুৎ[?}কারে হঠাৎ এসে সূক্ষ্ম সুরের মালা বদল হয় – বাংলা গান সুরে সুরে অক্ষরে অক্ষরে সৃজিত হতে থাকে। বেশির ভাগই মনোমেঘে রবীন্দ্রনাথের গানের সঞ্চার, তারই প্রকান্ড মাঠ-জোড়া বিরাগী হাওয়া, তারই উজ্জ্বল বর্ষণ অথবা আলোকিত বিলীন প্রকাশ। যদি আমার মনের কণ্ঠকে গানের কণ্ঠে তুলতে পারতাম তাহলে খুব তৃপ্তি হত কিন্তু ভাগ্যক্রমে নিবিষ্ট হয়ে অন্তরে রাগরাগিণী শোনবার একটা গোপন বিদ্যা বিধাতা আমাকে দিয়েছিলেন। সোমেনবাবুর মজলিশে রবীন্দ্রনাথের বহু দিব্য [?]-গান শোনার কথা তুমি লিখেছ। সব গানই চেনা এবং আশ্চর্য সংসর্গিত – মনে পড়ল সোমেনবাবু একদিন যুরোপের রেলগাড়িতে গান করছিলেন। তখন রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আমরা কয়েকজন জর্মনি থেকে Warsaw পার হয়ে রাশিয়ার দিকে চলেছি। বারান্দাঅলা সারি সারি রেলের কামরা, একটা সম্পূর্ণ গাড়ির অংশ আমাদের জন্যে ছিল – হঠাৎ রবীন্দ্রনাথের মনে হল যেন নিজের তৈরি গান হাওয়ায় ভেসে এল। ‘‘কান্নাহাসির দোল দোলানো’’ সেই গান। তিনি ভাবতেই পারেন নি সত্য সত্যই কেউ ঐ গান গাইছে, ঐ বৈদেশিক দূর প্রান্তরে। সেদিন সোমেনবাবুর সেই গান দুপুরের রোদ্দুরে-শীতে মেশা সোনালি অপরূপ পোলান্ডের চিরদিন হয়ে আমাদের মনে আছে – রবীন্দ্রনাথের চোখ ছলছল ক’রে এসেছিল। এই সব কথা মনে থাকে। কত রাষ্ট্রিক মতামতের বিরোধ, তর্ক, সব জঞ্জালের মতো মিলিয়ে যায়। আমার মনে এখন ভৈরবী আশাবরি গুঞ্জন করছে। তোমার বর্ণিত গানের আবহাওয়ায় ইমন মল্লার রামকেলি কেদারা মিশ্রিত হয়ে সম্পূর্ণ আন্তর বেদনা সৃজন করছে। যদি একবার সেই ঝোঁক সম্বরণ না ক’রে তাতে সায় দিই তাহলে রেলগাড়িতে ব’সে এই চিঠি লেখা এবং আরো কত কী কাজ ও গুরুতর প্রস্ত্ততি সবই বিন্দুতে পরিণত হবে; এখন তা হলে ঠিক সময়ে গাড়িবদল করা এবং পার্শ্বস্থ অতি সজাগ যাত্রীদলের সঙ্গে ঠিক ব্যবহার করা সম্ভব হবে না। যখন আরো রাত্রে নরম কৃষ্ণতা চোখে নিয়ে কম-আলো গাড়ি থেকে জানালার দিকে চেয়ে দেখব তখন গানের অবচেতনা হয়তো মনকে দিকে দিকে অস্বীকার ক’রে ফুটে উঠবে।
আমাদের জীবন এখানে এতই বিচিত্রবিধ এবং দুরন্ত ছন্দে প্রবাহিত যে সে বিষয়ে কিছু লেখা শক্ত। কেবল শুনে সুখী হবে যে বোধ হয় দুতিন মাসের মধ্যেই হৈমন্তী তার M.Ed. (MA in Education) ডিগ্রি পাবে। তাকে নিরন্ত খাটতে হয়েছে। এখনো কোনোদিন ১০/১২ ঘণ্টার কম নয়। সঙ্গে সঙ্গে M.A.র এক অংশের জন্যে thesis তাকে লিখতে হচ্ছে। কিন্তু এই পরিশ্রমের প্রসাদ আছে – অনেক নূতন অনুশীলন তার হল, কঠিন প্রতিযোগিতায় আত্মপরীক্ষা ঘটল। সেমন্তীও তার B.A. degree এখানে নেবে – গ্রীষ্মের ছুটির মধ্যে সব Course শেষ হবে না কিন্তু তার পরেই পাবে। সেও খুব ভালো করছে – নাম করেছে। তাকে এখানকার Graduate degree নিতে তিন চারটে Science subject, philosophy, humanities সব কঠিন বিষয়ে নূতন করে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে। অথচ Physics প্রভৃতি তার ছিল না। যেমন হৈমন্তীর এখন প্রধান এবং কঠিনতম শিক্ষার বিষয় Statistics – এখানে তা না হলে Educationএর ডিগ্রি নেওয়া যায় না। পদ্ধতির নিয়ন্ত্রণে 888sport free betতত্ত্ব এবং তার ব্যবহারিক জ্ঞান শিক্ষার ক্ষেত্রেও অনিবার্য প্রয়োজন। আমি এর তুলনায় ভালো আছি কিন্তু অনেকে জানে না যে আমাকে হপ্তায় পনেরো ঘণ্টা পড়াতে হয় এবং এদের পনেরো ঘণ্টা। শুক্রবার থেকে সোমবার ছুটি, সেই সময়ে হাওয়ায় ছোটাছুটি করি, কখনো রেলগাড়িতে।
এ দেশে রাত্রির শোওয়াটাও কাজে লেগে যায়। ঘুমোনোর সঙ্গে সঙ্গে “five miles a minute” বেগে হাওয়াই Constellation planeএ দেশের অপর প্রান্তে পৌঁছিয়ে, অর্থাৎ ঘুমোনোর মধ্যে কলকাতা থেকে সিংহলদ্বীপে গিয়ে, সকালে বক্তৃতা দেওয়া যায়। হাতে রইল আরো দুটো দিন। মনে করো দুটো দিন কতখানি – কাজে ভর্তি করবার কত বড়ো প্রকান্ড পেঁটরা। তার মধ্যে অন্তত আটবার আহারের সঙ্গে সঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে বক্তৃতা, অনবরত মোটরে বাড়ি-বাড়ি সহরে-সহরে ছোটাছুটি। নানা মতের খবর-কাগজীদের সঙ্গে বাক্-যুদ্ধ, এবং কমপক্ষে দুশো পাঁচশ জনের সঙ্গে কর-মর্দন ক’রে বিশ্ববিষয়ে আলাপ প্রলাপ সেরে সোমবারে অলক্ষ্যে পরিচিত Washingtonএর ঘরে ফেরা যায়। যেন কিছুই হয় নি। এই ছুটন্ত কালের মন্থনে মন সবটা মন্থিত হয় না – কিছু উদ্বৃত্ত থাকে যাতে আড়-চোখে বাসন্তী শীতের দুটো চারটে ডাফোডিল ফুল, তুষারের উপর সূর্য বা রূপোলি কুয়াষা মনে প্রত্যক্ষ হয় – কিন্তু ক্ষুধা থেকেই যায়। এই ক্ষুধিত জীবন বহন ক’রে আরো কিছুকাল এদেশের কাজে থাকতে হবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছর ছুটি চেয়েছি। আরেকটা শীতের প্রারম্ভে য়ুরোপ 888sport slot gameান্তে জন্মভূমিতে ফিরব। সেই শঙ্খ সানাই দূর থেকে শুনছি। দূরেও যদি হঠাৎ মৃত্যু হয়, শেষপর্যন্ত সেই ঘরের ডাক শুনেই বিদায় নেব। কোনো বিষাদে এ কথা বলছি না – মৃত্যুকে সামনে রেখে জীবনে চলতে হয়, ত্রিশের পর থেকেই জন্ম মৃত্যুকে মিলিয়ে মুক্তজীবন যাপন করা ভালো। তাতে একটুও বিমর্ষ করে না, তেজ দেয়। অনন্ত প্রাণের মূল-উৎস উচ্ছলিত হয়ে ওঠে। ভারতবর্ষে থেকেই এই জ্ঞান শিখেছি – অনেক দুঃখ পেয়েই শিখতে হয়েছে – কিন্তু এখন আর ভোলবার আশঙ্কা নেই। সর্বদাই ঢেউয়ের উপরে মন থাকে। কোনো দোলানিতেই, যথার্থ আর চঞ্চল হয় না যদিও সাময়িক দায়িত্বের ছন্দ তাকে বারেবারে টান দেয়। তাই এই ব্যস্ত ট্রেনযাত্রার মধ্যেই সেদিনের এরোপ্লেন যাত্রার 888sport sign up bonusকে কথায় গাঁথবার চেষ্টা ক’রে বাধা পাই নি – খানিক আগেই সেই কাজ করছিলাম। পাশের যাত্রী তখন বহুযোজন দূরে ছিল, কে জানে তারাও অদৃশ্য কোন্ সুতোয় জীবনের বুনোনি কীভাবে বুনে চলছিল। এরোপ্লেনযাত্রা প্রতিবারই আমাকে বিচিত্র শাব্দিক, শারীরিক কতরকম বোধন দেয় তার ঠিক নেই – এদেশের নূতন মেঘাতীত বিশ্ব, অদ্ভুত চন্দ্রবিম্বিত রাত্রি আবিষ্কার করি – কতরকম আলোর পরিপ্রেক্ষিত, নীচের কোটি প্রাণলোকের চষা সবুজ ক্ষেত্র, মালবেরির বেড়া, সাহরিক প্রচন্ড সংহতির কত দূর দৃষ্টি-কোণ। তার পর হঠাৎ নেমে এসে পক্ষবিহীন মানুষের জীবনযাপন করি : মাটির উপরে দুপা ফেলে চলা। এইটেই ঠিকরকম চলবার উপায় তা মানুষ হয়ে অস্বীকার করব কী করে – যা কিছু মাটির পৃথিবীতে জানি তার ছন্দ এই আশ্চর্য হাঁটবার ছন্দ, কিন্তু জলের সাঁতার বা নৌকোর সাঁতারের মতো হাওয়ায় আকাশিক যানে ওড়াও একটা মানুষেরই প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা। পাখী প্রজাপতি কোন্ গতির জগতে থাকে তা খানিকটা বুঝতে পারি। তোমাকে একটা ছোটো 888sport app download apkর উদাহরণ পাঠালাম। বলা বাহুল্য এ সব উড্ডীন কাব্য চল্তি কালে লেখা, তার পরমায়ু বেশি দূর ওড়ে না।
তোমার প্রেরিত কাঁচি-ছাটা পত্রিকাংশ এবং খবরের কাগজের টুকরো আমার বিশেষ কাজে লাগল – তুমি আমার খুব উপকার করেছ। জাহাজ ডাকে যে মাসিক এবং বার্ষিক পত্রিকাগুলি পাঠিয়েছিলে তা আমরা আগ্রহ ক’রে পড়েছি, যদিও স্বীকার করি আজকালকার অধিকাংশ রচনা পড়ে বুক ধ্বসে যায়। লেখার মধ্যে প্রাণশক্তির অভাব তার সদ্য মুমূর্ষুদশা এত বেশি চোখে পড়ে যে আশ্চর্য হই 888sport appsের 888sport live footballে কী ঘটছে। বাংলার প্রাণধারা অন্য কোন খাতে বইছে? 888sport app download apk, গল্প এবং বিশেষ ক’রে 888sport liveে এমনতরো ভাঁটা বহুকাল দেখা দেয়নি। পূজার 888sport free betগুলিতে আর যারই পূজা হয়ে থাক্ 888sport live footballের পূজা হয় নি – একথা আমি অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলছি। মননশক্তির দৌবর্বল্য অধিকাংশ বাংলা রচনায় প্রকট, এতটা আগে লক্ষ্য হয় নি। অবশ্য মাসিক পত্রিকা দিয়ে কোনোদিনই দেশীয় 888sport live footballকে যাচাই করা যায় না কিন্তু অন্ততপক্ষে কিছু প্রাণণের [?] সন্ধান চাই তো। জীর্ণ দেবালয়ে কতকগুলি প্রচলিত কথার দৈন্যভরা আবর্তন, অবিশ্বাস্য মৃত ছবির ভৌতিক প্রতিলিপি, অর্ধ-নিমীলিত মনের অভ্যস্ত প্রতিধ্বনিভরা 888sport live – এমন কি এদেশের মার্কিন পত্রিকাগুলিতেও এর চেয়ে বেশি 888sport live footballিক প্রাণ আছে, শক্তি আছে। বাংলার পত্র কেন আকাশের তেজ, মাটির রস হতে বঞ্চিত হচ্ছে – জীবনের দুঃখসুখদ্বন্দ্বঅভিযানময় ধারা কেন তার মজ্জায় আর বইছে না? অনেকখানি সস্তা পশ্চিমী ফিল্ম আলোচনা, গল্প, বা কৌশলী কথাবার্তার অনুকরণ, নয়তো একেবারে তর্জমা। বাকি যেটুকু ভারতীয় তাতে ভারতবর্ষের বা বাংলার গভীরতর শক্তির কোনো পরিচয় নেই।
আরেকটা কথা এই সঙ্গে বলি। দুচারজন যাঁরা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ সতেজ করবার আধুনিক প্রথা গ্রহণ করেছেন তাঁরা যেন ভাষার স্বভাবটাকে নষ্ট না করেন। ফরাসী ভাষাকে জর্মান করে তুলতে গেলে বোঝাই নৌকো ডুবি হয় – বাংলার স্বধর্ম একটা আছে, সেইটেকে রক্ষা করেই সব কথা বলানো যায়। আমি সত্যিই অনেক সময়ে বুঝতে পারি না ইংরেজি কায়দায় বাংলাকে বিপর্য্যস্ত ক’রে, তাতে সংস্কৃত শব্দের অতি-বেষ্টিত মিশ্রণ ঘটিয়ে যে বিদগ্ধ ভাষা তৈরি হচ্ছে তা বাংলা কি না। খুব সূক্ষ্ম মাত্রাবোধ না থাকলে 888sport live football-বৈয়াকরণিকের এই নেশা অথবা পশ্চিমী পদ্ধতির এই তর্জমাকে নূতন ভাষার তেজ ব’লে মনে হবে, কিন্তু এ ভাষা দুদিন টিঁকবে না। এ বিষয়ে রবীন্দ্রনাথের প্রবর্তিত পথকেই ভাষা-সৃষ্টি ও ব্যবহারের রাজপথ বলে মানতে হবে – তিনি অজস্ত্র শব্দসম্পদ বাড়িয়েছেন। নানা দিকে তার চলৎশক্তি উদ্যত করেছেন কিন্তু আবর্তিত কষ্টরুচি ভাষণকে কখনো স্বীকার করেন নি। জানি এ পথ তোমার নয় কিন্তু সংক্রামক ব্যাধি শুধু সমাজে নয় 888sport live footballেও দেখা দেয় : সুস্থ, সাবলীল সহজ অথচ মননশীল বাংলার ধর্ম তুমি রক্ষা কোরো। কান্তিবাবুর সম্বন্ধে তুমি যে অনুলিপি ছাপিয়েছ তার ভাষা কত সুন্দর; যেখানে সূক্ষ্ম বিচার এবং যুক্তির প্রাধান্য সেখানেও ভাষার বিন্যাসকে সুসম্বন্ধ স্বকীয়তায় প্রকাশ করা যায়। যে-বৃত্তি আজ আমাদের অনেককে ভাষার নূতন পরীক্ষায় প্রবৃত্ত করেছে তাকে 888sport apk download apk latest version করি : বাংলার বাঁধুনি দৃঢ় করা দরকার : 888sport apkময় শব্দ এবং সুযৌক্তিক প্রয়োগের ক্ষেত্র অনেকখানি বিস্তৃত না ক’রে চলে না : কিন্তু জুলুম ক’রে 888sport live footballের কাজ আদায় হয় না। দুদিকে চেষ্টা বাড়ানো চাই – এক হচ্ছে, পারিভাষিক শব্দ বিচিত্র ব্যবসায় ও ব্যবহারের ক্ষেত্র থেকে ঝুড়ি ঝুড়ি আহরণ করা। রংরেজিনীর কাছ থেকে রঙের শব্দ; কলু কামার তাঁতি নাপিত মাঝি বণিক ইত্যাদির কাছ থেকে স্পষ্ট, জোরালো, শব্দ প্রতিশব্দ, ভঙ্গী যথাযথ শিক্ষা করা। (যেমন, যোগেশ রায় মহাশয়ের ভারতীয় রত্ন সম্বন্ধে বইখানিতে প্রচুর আশ্চর্য পুরোনো ও নতুন শব্দ পাওয়া যায়।) এইভাবেই ইংরেজি ভাষায় শব্দসম্পদ বেড়েছে – ঘরে বসে অভিধান নিয়ে এবং অন্য ভাষার অনুকরণ করে কেউ রক্ষা পান নি। আরেক উপায়, চতুর্দিকে মনের উৎসাহকে বিস্তৃত ক’রে শারীর 888sport apk, মনস্তত্ত্ব, দর্শনশাস্ত্র ইত্যাদি থেকে ফলিত ভাষার প্রয়োগার্থ যাচাই করা : কিন্তু এজন্যে ঐ সব রাজ্যে চৈতন্যের বিস্তার চাই, কেবল ভাষা খুঁজলে ফল হবে না। বিচিত্র জীবন ও জীবিকার উৎসুক সন্ধান এবং মনের একীকরণের দ্বারা ভাষা জীবন্ত হয়ে ওঠে তা না হলে আহরিত বাক্য কেবল স্তূপ হয়ে বাধা সৃষ্টি করে। বারবার এই কথা দূর থেকে মনে হয় তাই হঠাৎ এই প্রসঙ্গ কলমে উত্তীর্ণ হল।
এইবারে শেষ করি। উড়ন্ত 888sport app download apkর নমুনা :
রাত্রির প্লেন
গর্জনচক্রের পারে তমিস্রের শূন্যতায় ভাসা
বিদ্যুৎবাষ্পাভ কোটি প্রকান্ড সহর বিন্দু নীচে,
যুগান্ত ঢেউএ সে জনতরী –
নিঃশ্বসিত মৌনে চ’লে যায় \
পাহাড় দাঁড়ায় পাশে, এক স্তূপ ছায়া,
আপেক্ষিক লগ্নে স্থিরতর,
তারার তিলক-কাটা দূরের কপালে –
ছুঁতে চায় এই নৌকো আকাশে উড্ডীন।
দূরে চলি ঘনতর চন্দ্রহীনতায় \
নিবিড় কৃষ্ণতা বায়ু, নেই তবু থরথর
ছুঁয়ে আছে গতি ঐ চলন্ত পাশের [?];
হঠাৎ কয়লা-খনি আগুনের লাল-ফাটা ফুল
সমস্ত পৃথিবী-রাত্রে ফোটে পিট্স্বার্গ –
প্রাণ-অঙ্গারের মরীচিকা \
নীল আলো প্লেন কক্ষে দৃষ্টি মেলে দেখি
রাত্রিগাঢ় জানালার ধারে :
চেতনার অস্পর্শ শরীর
ছায়া ফেলে ওড়ে,
মগ্ন ধরিত্রীর বুকে স্পন্দিত একাকী \
নির্বাণযাত্রীর চলা উঠে আসে আরো মেঘে-মেঘে;
শুধু ধূ ধূ শূন্য শুধু অবলীন,
সত্তার স্বরূপ বর্ণ নেই;
পাশে শেষ সংস্কারের মতো
ছবির পত্রিকা, বই, টুপি সঙ্গে চলে –
চেনার ঘুমের ঘোরে সে কে
বলে চলি, শুধু চলি \
আমাদের প্রীতি নমস্কার তুমি জেনো।
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ১৭
১৬ই জুলাই ১৯৪৯
Gran Hotel Palas, Mexico, D.F. মেক্সিকো
প্রীতিভাজনেষু,
আরো বেশিদিন থাকলে আমরা মেক্সিকান ব’নে যাব১ : মেক্সিকান পাহাড়, মেক্সিকান ভোজন888sport live chat, মেক্সিকান সৌজন্য আমাদের অভিভূত করেছে। শীত-বসন্তের হাওয়া ঝিরঝির করছে -পথিক রাস্তার সামনে নীল খাড়াই শৈলশ্রেণী-খড়্গের মতো উজ্জ্বল দিগন্ত। যা দেখছি তাই স্পষ্ট নতুন – মনকে নূতন ক’রে দিচ্ছে। মেক্সিকান বলতে আমাদের কাছে প্রথমত তারা যাদের এরা মেক্সিকান ইন্ডিয়ান বলে-তারাই আদিম অধিবাসী এবং ভাগ্যক্রমে তাদের দশা মার্কিন দেশের মতো নয়, এখানে তারা 888sport free betগরিষ্ঠ। এখানে মিশ্রণও হয়েছে ঢের বেশি – রঙের বিদ্বেষ এখানে অজানা – কিন্তু তবু যারা জীবিকার তলার দিকে তারা একটু পৃথকভাবে মেক্সিকান ইন্ডিয়ান ব’লে পরিচিত। উপরের তলায় মার্কিনের যান্ত্রিক কৌশল, মাটির যারা কাছে তারা দরিদ্র হলেও আসল তারাই 888sport live chatী, তারাই আজটেক-টলটেক-মায়া সভ্যতার ধারা বইছে এবং তাদের আশ্চর্য মনন-কল্পনশক্তি হাতের কাজে, বাড়ি-বানানোর ছাঁদে, বোনা বা বেতের বা চামড়ার পশমের 888sport live chatে প্রকাশিত। আর কী আশ্চর্য সুন্দর দেখতে এদের শিশু, এদের মেয়ে-পুরুষেরা! পাঁচ-সাতটা সভ্যতার স্তর এখানে মিশেও মেশেনি – সেই আন্দোলিত অবস্থার নানারকম অপ্রত্যাশিত মাধুর্য এবং অদ্ভুৎ পরিচয় মনকে ধাক্কা দিতে থাকে। প্রকৃতি এখানে সর্বদাই যেন পাহাড়ের উপর রঙের রেখার কম্পিত তুলি বুলোচ্ছে – বৈচিত্রের সীমা পরিসীমা নেই। 888sport live chatের রঙীন জগৎ এই মেক্সিকো। বুঝতে পারি জগতের চিত্রী কেন এখানে আসে; চোখে অঞ্জন নিয়ে ফেরে। সঙ্গে সঙ্গে রাষ্ট্রিক ভুমিকম্পের ঢেউ উঠছে নামছে – এটা শুধু Popocatapetl-এর দেশ নয়, মানুষিক ভূমিকম্পনেরও এই প্রকৃষ্ট দেশ। মনকে এর 888sport live chatে জাগিয়ে দেয়, সমাজ রাষ্ট্রের প্রশ্নে ভাবিয়ে তোলে – এখানে এসে অনেক কথা দ্রুত উপলব্ধি হচ্ছে। বহু বিষয়ে এদের সমস্যার সঙ্গে আমাদের মিল-এমনকি আনুষ্ঠানিক ধর্মের ক্যাথলিক অত্যাচার আমাদেরই পান্ডা-পুরোহিত জর্জরিত সমাজের মতো। পৃথিবীর ঈশান কোণে যে বৃহৎ মানবিক ঝড় উঠেছে তার এক পর্ব এখানে এসে দেখছি, দূর-চোখ মেলে (এবং কান পেতে) ভারত ও এশিয়ার ঝড়ের বিদ্যুৎ এবং রলরোল এখান থেকে উপলব্ধি করছি। য়্যুনিভার্সিটিতে ভারতীয় সভ্যতা সম্বন্ধে বক্তৃতা দিচ্ছি-সহরে 888sport live chatী ও কর্মীদের সঙ্গে দেখাশোনা হয়। কিন্তু যখনই পারি তিন চারদিন আমরা মোটরে ক’রে চলে যাই-গ্রামে বা প্রাদেশিক ছোটো সহরে থাকি – এরকম আশ্চর্য সার্থক জীবন যাপন আমাদের কমই ঘটেছে।
Pound কী লিখতে কী লিখেছেন – তুমি বইয়ের সঙ্গে বাঁধিয়ে নিয়ো – খুশি হয়ে লিখে দিলেন – তার মর্মোদ্ধার তুমি কোরো, আমি ব্যাখ্যা দেবো না। তোমার পাঠানো জগন্নাহোর পট পেয়ে উনি অত্যন্ত উত্তেজিত হলেন – ইংরেজি অর্থে ex[c]ited – আগে হলে 888sport app download apk লিখতেন।
আমরা যেখানেই যাই ঠিকানা Howard- চিঠি লিখো। দেশের খবর একটু আধটু দিয়ো। জওহরলালজিকে কলকাতা কেন অমন অথ্যর্থনা দিল : ভিতরের ব্যাখার কী? ক্ষুদ্র রাষ্ট্রিকতায় আমার কোনো ঔৎসুক্য নেই – হোক দেশের বা বিদেশের – কিন্তু মনে হচ্ছে ভারতীয় জনশক্তির তলে তলে একটা নতুন বড়ো রকম কম্পন জেগেছে। সেই প্রকম্পের বিষয় জানতে চাই। আমাদের প্রীতি নাও। তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ১৮
Octobeer 6, 1949
Howard University
Washington D.C
প্রীতিভাজনেষু,
মেক্সিকো এবং প্রশান্ত সাগরের ধারে ধারে ঝলমলে সহরে পল্লীতে ঘুরে আমরা অবশেষে কলোরাডোর উত্তুঙ্গ শৈল প্রদেশে কিছুকাল ছিলাম – সেখানে পথের ধারে শুভ্র তুষার হাতে তুলে নেওয়া যায়, নীল পাথরে-কাটা আকাশের উজ্জ্বল টুকরো চোখে পড়ে আর বসুমতীর লুণ্ঠিত শ্যামল উপত্যকায় শত সহস্র ফুলের অলঙ্কার বিছিয়ে আছে। কাঠের ক্যাবিনে আগুন জ্বেলে থাকতে হয়, সারাদিন সুগন্ধী পাইনের হাওয়ায় দীর্ঘ অরণ্য আদিমতম বেদভাষী। গম্ভীর সৌন্দর্যের তপস্যায় আমরা পরিবেষ্টিত ছিলাম অথচ সহজ আনন্দ সঙ্গেওর অভাব ছিল না। আমেরিকারও একটি আন্তর প্রদেশ আছে, যা তার নূতন রচে-ওঠা সভ্যতার অন্য মহল – সেটা বড় নয়, কিন্তু বিস্তৃত; সেখানে চাষী গম তুলছে ক্যানসাসের সোনার মাটিতে, রসে-ভরা লাল আপেলের পীচের অজস্রত্বে ক্যালিফর্নিয়ার সহস্র মাইল জোড়া ফলের বাগান, সেখানে আন্দোলিত বহু মাংসপেশীর ছন্দে ছন্দে কঠিন কাজের ছন্দ মিলেছে আরিজোনার দগ্ধ মাটির সফলতায়। সেই মানুষের বীর মহিমা যে-আমেরিকায় প্রকাশিত তাকে 888sport apk download apk latest version করি, সেই আমেরিকায় এবং দূর ভলগা নদরি ধারে যারা চাষী 888sport live chatী কাঠুরে তাদের মধ্যে কোনো অমিল নেই। কিন্তু বোমায় বোমায় গরমিল; সেখানে হার জিতেরও কোনো মানে নেই। যে-পক্ষই জাতি বা প্রতাপের নামে ধ্বংসের লীলায় নামবে সেই মরবে, অন্যকে মারবে। কিন্তু দুই পক্ষের যারা অগণ্য মানুষ তাদের কণ্ঠস্বর শুনতে কি পাও? তাদের শক্তি কি রাষ্ট্রব্যাপারে কোথাও স্পষ্ট প্রকাশিত দেখছ? কোথায় সেই গঙ্গার তীরবর্তী কামার তাঁতি মাঝি হাটঘাটের মানুষজন – ভারতবর্ষে যে তারা আছে তা বাহিরে কজন জানে? আমেরিকাও এ বিষয়ে ঠিক একই পর্যায়ে তা জেনো – এদের প্রতাপের দিকটা সাংঘাতিক প্রহসনে শেষ হবে সন্দেহ নেই কিন্তু মানুষের দিকটা যেন না ভুলি। মানুষের সংসারে এসে আজ আর দেশে দেশে জনসাধারণের অনন্ত ধারাবতী প্রাণনীর মধ্যে ভেদ বিভেদ করতে পারি না। বার বার চোখ বুজে ভুলতে চেষ্টা করি কোথায় আছি। হঠাৎ দেখি কলোরাডোর পূর্ণ চাঁদ উঠল, রাঙা দিগন্তের আভায় উজ্জ্বল ঐ বুঝি মেক্সিকোর কোন পাহাড় – বুঝতে পারি দুদিনের আশ্চর্য সুন্দর পৃথিবীতে আছি। বেলা পড়ে এল। এইটুকুই থাক। দেশে দেশে রাষ্টের সংঘর্ষে কিসে কী হবে তার খবর মনের এক কোণায় জমা হয় কিন্তু তার হিসাবটা অপূর্ণ রেখেই বিদায় নেব। নানা পাড়ার তীর্থ-ধুলো গায়ে মেখে আমরা তিনজন ফিরেছি – সেমন্তীকে ন্যুইয়র্কে রেখে এলাম।১ সে কলম্বিয়া য়্যুনিভার্সিটিতে এম.এ পড়ছে। স্বতন্ত্র ঘরে বেশ সুন্দর মেয়েদের ছাত্রাবাসে আছে – ন্যুইয়র্কে তার আধুনিক শিক্ষার বাড়তি যেটুকু হবে তা প্রাচীন ভারতীয় সংস্কারের ধাক্কায় আপনি ক্ষয়ে যাবে। আমরা Washingtonএ উদিত হয়েছি – দেখি পড়ানো বাদে আর কী করি। উপস্থিত জওহরলালজির আসন্নিক আগমনের নানা প্রসঙ্গে ঘন ঘন শ্রীবিজয়লক্ষ্মী আমার খোঁজ করছেন২ – তাঁর 888sport slot game যাতে রাষ্ট্রিক আয়োজন পেরিয়েও পশ্চিম সংস্কৃতির কেন্দ্রে পৌঁছয় সেই বিষয়ে আমরা কিছু সাহায্য করছি। আইনস্টাইনের সঙ্গে ইতিমধ্যে কথা বলেছি এবং পন্ডিতজি আমেরিকা ছাড়বার শেষ দিনে অর্থাৎ ৫-ই কি ৬-ই নভেম্বরে আমেরিকাবাসী শ্রেষ্ঠ মনীষীর সঙ্গে নিভৃত বাক্যালাপের ব্যবস্থা করেছি।৩ এখানকার রাষ্ট্রপতিরা যে-ভাবে পন্ডিতজিকে দখলবন্দী করছেন তাতে তাঁর পক্ষে বেশি কিছু করা সম্ভব নয়, কিন্তু যেখানেই ফাঁক পাওয়া যাচ্ছে কিছু অন্যরকম অ-রাষ্ট্রীয় ব্যাপারের প্রবর্তন করতে বাধা নেই। Thomas Mann-কে লিখেছি – কিন্তু জানি না – তিনি Los Angeles থেকে San Francisco এসে পন্ডিতজির সঙ্গে দুঘণ্টা দেখা করে যেতে পারবেন কিনা – পন্ডিতজিকে এরা San Francisco-র চেয়ে বেশি দূর যেতে দেবার সময় দিচ্ছে না। অথচ Los Angelesএ Huxley প্রভৃতি অনেকে আছেন যাঁরা অনেকটা বিশদ দৃষ্টিতে জগতের সমস্যা দেখতে পান। তাঁদের সঙ্গে কথাবার্তায়, জওহরলালজি এবং তাঁদের দুই পক্ষেরই প্রভূত লাভ। যাই হোক অন্তত Mann বা Einstein কেউই Power block-এর এ-পক্ষ বা ও-পক্ষে যোগ দিয়ে সামরিক সহমরণের আয়োজনে এতটুকুও বিশ্বাসী নন – তাঁদের কথায় ভারতবর্ষের খুব উপকার হবে। মার্কিন রাষ্ট্রপতিরা যেমন মানসিক অাঁধিগ্রস্ত তেমনি উদ্ধত – সব দেশেই প্রতাপী দলের অবস্থা ঐখানে গিয়ে ঠেকে। ভারতীয় ধনিক এবং রাষ্ট্রকূলের অধমদশা চেয়ে দেখ। সাবধান না হলে শেষ দশ বছরের চীনের দশা আমাদেরও ঘিরে ধরবে। মার্কিন ডলারের লোভ বড় ভয়ানক। এবারকার সাহায্য অবশ্য ভালো কিন্তু আন্তর্জাতিকতার মধ্যে লোভ এবং লাভের চেয়েও বড়ো অঙ্কের কিছু হিসাব চাই। রুপোর শিকল যেন সামরিক প্রতিশ্রুতিতে না ঠেকে। জওহরলালজি ইতিহাসের যে দুর্যোগ লগ্নে এদেশে আসছেন তাতে চৈতন্যশক্তি স্থির রেখে ভারত এবং বিশ্বের সমস্যায় স্থিতধী কর্মের পথ ঠিক করা শক্ত। এটা তাঁর জীবনের কঠিন পরীক্ষা – বিধাতা করুন যেন তিনি ভারতের শ্রেয়োবুদ্ধির পূর্ণ প্রয়োগ করেন। শুনলাম এখানকার Embassy থেকে ভারতের কাগজে আমার interview পাঠিয়েছে – Statesmanএও একটা বক্তৃতার সারাংশ বেরোবার কথা। আমাকে cuttings airmailএ পাঠাও তো সুখী হব। নেহেরু-888sport slot gameের তথ্য মধ্যে-মধ্যে পাঠাব।
পত্র ১৯
Howard University
Washingtion 1, D.C.
Department of English
২০ অক্টোবর ’৪৯
প্রিয়বরেষু
নরেশ, তোমার চিঠি পাবার পূর্বেই তোমাকে লিখেছি। একে নেহেরুর আগমন, তার উপর আমার আসন্ন ভারত888sport slot game – দুইয়ে মিলে আমার কীভাবে সময় ভ’রে উঠেছে বুঝতে পারো। সঙ্গে এখানকার কাগজপত্রে নেহেরু সম্বন্ধে যা বেরিয়েছে কিছু নিয়ে যাবার চেষ্টা করব – দেশেও তোমরা নিশ্চয় যথেষ্ট খবর এবং ছবি পাচ্ছ।
তিনদিনের বেশি আমার কলকাতায় থাকা হবেনা – যদি জাপান হয়ে যাই তাহলে সোজা শান্তিনিকেতনে যাব কলকাতা থেকে। ফেরবার পথে আরো দুদিন থাকব। পৌঁছব ৩০ নভেম্বর নাগাদ, ফের মার্কিনপথে রওনা হব ১৫ই ডিসেম্বর কেননা দিল্লী ও ইংলন্ডে কয়েকদিন থেমে আমাকে ন্যুইয়র্কে ১লা জানুয়ারির মধ্যে পৌঁছতেই হবে। এভাবে দেশে যাওয়ার কোনো অর্থ হয় কিনা ভেবে দেখো। উড়ন্ত 888sport slot gameের নূতনত্ব অনেকটা কেটেছে, তাছাড়া এত সামান্য ক্ষণ ভারতবর্ষে থাকবার প্রসঙ্গে মন আরো উতলা অশান্ত হয়।
সঙ্গের টুকরো থেকে জওহরলালজির 888sport slot gameের একটি সুফলের সংবাদ পাবে। তিনি অ-পশ্চিমী জাত ও সর্বপৃথিবীর অ-সাদা রঙের মর্যাদা উচ্চে তুলেছেন – এরা ক্রমেই বুঝছে যে ওদের সংকীর্ণ সংজ্ঞায় মানবসভ্যতাকে বন্দী ও অসম্মানিত করলে ওরাই দ্রুত মরবে। পৃথিবী হুহু ক’রে এগিয়ে চলেছে। ভারতবর্ষ অন্ন ও অনিবার্য প্রয়োজনীয় উপকরণের প্রার্থী – কিন্তু তার বিনিময়ে মারণিক চুক্তি অথবা বশ্যতা স্বীকার করবার দরকার হবেনা। নেহেরু ঠিক মাত্রা বাঁচিয়ে চলছেন। কেবল স্বদেশের স্থানে স্থানে কণ্ঠরোধ এবং পূর্বপ্রথামত গায়ের জোরিয়ানা চলবেনা – যে কোনো কারণই ঘটুক – সে বিষয়ে জওহরলালজিরও কোনো উত্তর নেই। তাঁর সঙ্গে প্রায়ই কথাবার্তা হয়ে অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছি ও উৎসাহ পেয়েছি। সঙ্গে পুরোনো সং (এবং পাপী) বাজপাই এসেছেন কিন্তু তিনি হাস্যকর বিড়ম্বনামাত্র।
আমরা ত্রয়ী ভালো আছি – এখন ন্যুইয়র্ক ও রাজধানী দুজায়গাতেই আমরা ঘন ঘন ঠাঁই বদল করি। সেমন্তীর জন্যে এবং ঠিক এখন জওহরলালজীর জন্যে।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ২০
Sj Naresh Guha 27A, Elgin Road
Calcutta-20
25/10 [1949]
প্রিয়বরেষু
তুমি শ্রীযুক্ত বাণী রায় (তাঁর ঠিকানা 75 Southern Avenue – কিন্তু Telephone বইয়ে আবার দেখে নিয়ো) তাঁর কাছে গেলে একটি ভালো ঘরের সন্ধান পাবে। মাসিক ৫০। স্নানের ঘর ইত্যাদি আছে। কবি জীবনানন্দ দাশ ভাড়া দিচ্ছেন। শ্রীযুক্তা বাণী রায়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে – তাঁর বাড়ির নাম ‘‘বাণীভবন’’ – (লেকের Bus Standএর কাছে – রাস্তার অন্যপারে) সেইখানে এখনই গিয়ে খবর নিয়ো। Telephoneএ রায় নামে দেখো – ওঁর পিতার নামে আছে।
আমি দুতিনদিনের জন্যে বুদ্ধগয়ায় যাচ্ছি। পরের বুধবার সকালে ৯টার পূর্বে কিম্বা রাত্রি ৯টার পর আমার সঙ্গে দেখা করতে পারো। বিজয়ার শুভকামনা জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ২১
হিরোশিমা
জাপান ২৪.১১.১৯৪৯
নারা তীর্থে ঐ পৃথিবীর সর্ববৃহৎ বুদ্ধমূর্ত্তি দেখে এলাম – যেখান থেকে এই চিঠি পাঠাচ্ছি সেখানে বুদ্ধমূর্ত্তি নেই, যা আছে যা হয়েছে তা বর্ণনাতীত। আশা করি মানবের মহত্তম বাণী এখানেই এসে পৌঁছবে।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
PAN AMERICAN WORLD AIRWAYS
The system of the flying clippers
পত্র ২২
Brussels, Belgium
8th January 1950
কল্যাণীয়েষু
দিনরাত্রির মিশ্রিত কুহেলিকা মনে নিয়ে এখানকার এরোড্রেমে বসেছি : বেল্জিয়মে এখন রাত্রি তিনটে কিন্তু দিল্লীতে নিয়ন্ত্রিত আমার ঘড়ির কাঁটা বলছে এখন বেলা প্রায় আটটা সকাল। আমার চায়ের ক্ষিধেও বলছে তাই – বোঝা যাচ্ছে শরীরের জারক-রস এরোপ্লেনে উড়লেও তার শারীর ছন্দকে পেরিয়ে খাপছাড়া অনির্দিষ্ট বা বিবিধ সময়ের মরীচিকায় ঘোরে না। ভাগ্যক্রমে এক নৈশ কক্ষ কোণায় কফি বিক্রি হচ্ছে, সেইখানে বসে বাহিরের মস্ত বেল্জিয়ম্ চাঁদ আর তার তলে উড়ন্ত ক্ষীণ দুচারটে দ্রুত গুঞ্জিত দূরযাত্রী প্লেন দেখতে পাচ্ছি – আমার প্যান-আমেরিকান্ বায়ু-গৃহ লন্ডনের দিকে উড়ে গেল, আমি প্যারিসে যাব ব’লে এখানে নেমেছি। ক-ঘণ্টা আগেই দিল্লীর প্রকান্ড ধূলিময় সৌধবিহারী ভারতবর্ষকে বিদায় দিয়েছি – শেষ চোখে পড়ল পুরোনো সুন্দর মোঘল গম্বুজ, আর ইংরেজ আমলে তৈরি লাট-সাহেবী উদ্ধত চূড়া-শ্রেণী যার সঙ্গে আজ ভারত কর্তৃপক্ষের বিসঙ্গত ব্যবহারের নূতন যোগ ঘটেছে : তা ছাড়া শুনে এলাম অশ্রুত একটি ভারতীয় ধ্বনি যা জীবনে জীবনে বেদনায় বেজে উঠছে, – তার বর্ণনা নেই। তার পরে কোন্ এক সময়ে আরব্য মরুভূমি, চৌকো চ্যাপটা মাটির বাড়ি, উটের তর্জনী-তোলা রুক্ষ পাহাড় – দূরে প্রতিঘাতী নোনা সমুদ্রের নীল বিস্তার। কারাভান ডামাস্কাস্ পার হতেই রাত্রির ছায়ায় আকাশের দৃষ্টি নিব্ল – তুরস্ক, গ্রীস, প্রত্যন্ত য়ুরোপীয় নানা নামধারী দেশগুলিকে দেখতেও পেলাম না। কী করব, এবারের এসব জায়গায় নামা কপালে ছিল না – সুদূর উপরের বায়ুস্তরে আলোকিত একটি উড়ন্ত ঘরে বসে ভাবনার আশ্রয় করলাম। এইভাবে সুইটজরলন্ড, জর্মানীর কোণা দিয়ে একেবারে বেলজিয়মের রাজধানীর কোটি দীপমালা সহরে উপস্থিত – এশিয়া থেকে য়ুরোপের পূরোপূরি মাঝখানে। এইসব প্রাত্যহিক যাত্রীজনোচিত ঘটনাকে আমি কখনো সহজে নিতে পারি না – আমার চৈতন্যে একটা আলোড়ন আন্দোলন চলতেই থাকে, ওই ব্রাসেল্স্-এর পূর্ব888sport sign up bonus নয়, আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার বহু আগে ও পরের কত জীবন, কত সভ্যতার দুঃখে সুখে জোড়া ইতিহাস আমাকে অধিকার ক’রে বসে। মানবসংসারের সর্বত্রই আজ আমার আত্মিক আশ্রয় এবং ঘনিষ্ঠ যোগ অনুভব করি – সবই ভয়নক আকৃষ্ট করে। মনেপ্রাণে ভারতীয় কেন্দ্র বহন করি ব’লেই বিদেশ যাকে বলি সেখানেও দেশ খুঁজে পাই – আরো যদি বেশি কিছু বলতে চাও আন্তর যোগের কথা যা দেশবিদেশের চেয়েও সর্বগ্রাসী সত্য সেখানে আজ প্রবেশ করেছি মনে হয়। ‘‘সর্বমেবা বিলন্তি’’ – কোনো দ্বার যেন বন্ধ না থাকে। মনের দ্বার খুলে রাখলে প্রাণের কোনো দ্বার বাহিরে কেউ বন্ধ করে না – যদি ব্যতিক্রম ঘটে তারও প্রতিকার খুঁজে পাওয়া যায় চৈতন্যের প্রযুক্ত শক্তির ব্যবহারে।
এবারে ভারতবর্ষকে বড়ো দুঃখে দেখে এলাম। বোধ হয় আশা করেছিলাম অত্যন্ত বেশি তাই সব দুঃখই বড়ো বাজল। কলকাতায় নিত্য অপঘাত দিল্লীর কাগজ পড়ে মন বিদ্ধ হত – দেশ জোড়া অশান্তি, অনটন এবং ধনীর নির্দয় লোভ এবারে আরো উগ্র হয়ে উঠেছে মনে হল। অথচ স্বাধীন ভারতের তপস্যা নানা জায়গায় যে পূর্ণ হচেছ না তাও নয় – কিন্তু সত্য ক’রে বলছি ভারতের কোনো মুক্তি হবে না যদি সে ব্যবহারিক জীবনেও মুক্তি না পায়। গুঁড়িয়ে যাবে তার যত নকল আধ্যাত্মিকতার গরিমা যদি মানুষ খেতে না পায়, পরতে না পায়, জীবনযাপনের পরিচ্ছন্ন শক্তিমান সাধনা না করে। শুনোনা শুনোনা আমাদের বৈরাগী ধার্মিকবিলাসীদের ভারতীয় আধ্যাত্মিকতার কথা। মন প্রাণ জীবনের যাতে তেজ বাড়ে এমন ধর্মের প্রচার তোমরা করো। তাতে বিশুদ্ধ হিন্দুধর্ম যদি নষ্ট হয় আসল হিন্দুত্ব মরবে না, তারও চেয়ে যা বড়ো, মনুষ্যত্ব, তা বাঁচবে। আজ চল্লাম। প্যারিস লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক। সেখানে লিখো। Amritabazar Patrikaয় 1st Janতে প্রকাশিত আমার লেখার cutting পাঠাবে?
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ২৩
Yale University
New Haven Connecticut
Address : Embassy of Indian
Massachusetts Avenue
Washington D.C.
ন্যুইয়র্ক্, ১ জুলাই, ’৫০
প্রিয়বরেষু, নরেশ,
তোমার চিঠি পেয়ে অবধি ভাবছি্ একটা নতুন 888sport app download apk লিখে তোমাকে পাঠাবো। ছুটির রোদ্দুরে ব’সে এই একটা মাটির পদ্য মাথায় এসেছে – পড়ে দেখো।
মাটি
ধান করো, ধান হবে, ধূলোর সংসারে এই মাটি
তাতে যে যেমন ইচ্ছে খাটি।
ব’সে যদি থাকো তবু আগাছায় ধরে বিন্দু ফুল
হল্দে-নীল তারি মধ্যে, রুক্ষ মাটি তবু নয় ভুল –
ভুল থেকে স’রে স’রে অন্য কোনো নিয়মের চলা,
কিছু-না-কিছুর খেলা, থেমে নেই হওয়ার শৃঙ্খলা,
সৃষ্টিমাটি এই মতো।
তাইতে আরোই বেশি ভাবি
ফলাবোনা কেন তবে আশ্চর্যের জীবনীর দাবি।
কচি বৃন্তে গুচ্ছ অন্নধান।
সোনা মাঠে ছেয়ে দেবে শ্রমের সম্মান।
তারি জন্যে সূর্য তাপী, বাহুর শক্তির অধিকার,
মানুষের জন্ম নিয়ে প্রাণের সংকল্প বাঁচাবার।
বৃষ্টি ঝরে, চৈতন্যের বোধে
আবার আকাশ ভরে রোদে।
তারি জন্যে শিশু আঙ্গিনায়
দৌড়ে খেলে, হাট বসে, গৌরীপুরে জমে ব্যবসায়।
গাছ চাই, গাছ হবে, ছায়া দেবে, বাড়িতে বাগানে
শহরে 888sport live chatের সৌধে প্রাণ জাগে প্রাণে।
যা হয় তারই সে হওয়া আরোই উজ্জ্বল ক’রে তুলি
কঠিন লাবণ্যে ছুঁই মনের অঙ্গুলি।
বীজ আনি, জল আনি, ভাগ্যজয়ী খেলা তারো বেশি –
যে-রহস্য সর্বাতীত তারি সঙ্গে হোক্ রেশারেশি।
অচিন্ত্য রহস্য খুলে যাই –
কিছু হয়, হয় না বা, এরি মাটি চষি এসো ভাই \
এই হ’ল 888sport app download apk। সন্ধ্যাবেলার রঙীন ছায়াময় ন্যু জর্সি নদীর ওপার থেকে দেখা যাচ্ছে, মধ্যে হাড্শন নদী সমুদ্রমুখী, কাছেই আটলান্টিক এবং প্রচন্ড জাহাজের বন্দর। ন্যুইয়র্কে& আমাদের নদীতীরবর্তী নতুন flatএ বসে এই কাব্যচর্চা হ’ল।
মনটা আক্রান্ত কোরীয়ার বেদনায় ভ’রে আছে – আক্রমণকারী এক নয়, বহু। আমরাও ভারতবর্ষ থেকে এই আক্রমণকারীদের এক পক্ষে যোগ দিলাম এতে লজ্জা বোধ হয়। কোরীয়াবাসী কী চায়? তাদের জনসাধারণকে পৌঁছনর চেষ্টা কোথায়? পক্ষপ্রতিপক্ষের লড়াইয়ে হুঙ্কার ক’রে যোগ দেওয়ার মতো ভীষণ ব্যর্থতা আর কী হতে পারে। মধ্যে থেকে অগণিত সাধারণ চাষী, শ্রমিক, গৃহবাসী জ্বলে পুড়ে মরবে। তাদের কথা কে ভাবছে।
শেষ পর্যন্ত কোনো প্রবল পক্ষই জিতবে না। মানুষেরই জয় হবে, এ কথা জেনে রেখো। কোরীয় জনসাধারণই জিতবে যদি তারা বেঁচে থাকে। অন্ততপক্ষে কুবের কুলের নকল সভ্যতা যে বোমার জোরে বেঁচে থাকবে না এ কথা নিশ্চিত। থাকবে প্রাণের মৃত্তিকা। ‘‘সেই মাটি চষি এসো ভাই।’’
দেখতে দেখতে নদীর ওপারে আলো জ্বলে উঠছে – অল্পক্ষণের মধ্যে কোটি রঙীন বিদ্যুৎ আলোর বাষ্পে নক্ষত্রহীন ন্যুইয়র্কের আকাশ ঝলমল করবে। ধরণীর দিকে তাকিয়ে দেখলে কেবলি আশ্চর্য যন্ত্রের সহরশীর্ষ চোখে পড়ে। তার গলিতে গলিতে উদ্দাম প্রাণের ঝড় ছুটেছে। আমরা এরি প্রান্তে দাঁড়িয়েছি। ভারতীয় মন মাটি না পেলে… (অস্পষ্ট) ভরে না। তোমাদের খবর দিয়ো। Signet Pressএ যোগ দিয়ে খুব ভালো করেছ। ওখানে অনুপ্রেরণা পাবে।
আমরা ছুটিতে ঘুরব – ঠিকানা Embassy
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
চিঠি ২৪
362 Riverside Drive, Apt3-B
New York 25, N.Y. USA
জানুয়ারি ৬ই, ১৯৫১
প্রিয়বরেষুু
নরেশ,
শেষ কয়েক মাস ধরে United Nationsএ advisor রূপে কর্মচারিত্ব করেছি তা বোধ হয় জানো। দিনে প্রায় বারো ঘণ্টা Lake Successএ থাকতে হয়েছে, তার পরেও রাত্রে কাজের জের সম্পূর্ণ কাটেনি। কী ভাবে সময় কেটেছে তা বুঝতে পারো; এর ফলাফল আমার জীবনে নির্ধারণ করবার এখনও যথেষ্ট দূরত্ব ঘটেনি। আন্তর্জাতিক নিয়মে কতখানি চক্রান্ত, সংঘবদ্ধ দুষ্টবুদ্ধির খেলা চলতে পারে তা আরো কাছ [?] থেকে দেখা গেল। অথচ মানুষের সমাজ ভালো-মন্দ মিশিয়ে এক একটি প্রতীক বানিয়ে তোলে, তারও বিশেষ মূল্য আছে যা ব্যবহারিক মূল্যকেও বোধ হয় ছাড়িয়ে যায় – United Nationsও সেই রকম প্রতীক। সেই প্রতীককে কোরিয়ায় রক্ত ছিটিয়ে ব্যবহার করা হল, সেই প্রতীককে প্রায় ৬০টি রাষ্ট্রিক জাতি আপন স্বার্থান্ধ কাজে নিযুক্ত করতে চায়, হয়তো বিশ্ব মহাযুদ্ধে ঐ প্রতীককে নীল নিশানের কাপড় পরিয়ে ধ্বংসের তান্ডবে নামানোর চেষ্টা চলবে। ভারতবর্ষের দিক থেকে একটু অন্যভাবে United Nationsএর কাজ ব্যক্ত করতে আমরা চেয়েছিলাম। 888sport app দেশও যোগ দিয়েছে, কিন্তু সব সুদ্ধ কতটুকু উদ্ধার হল তা দেখতে পাচ্ছ। সাধারণ বহু মানুষ পৃথিবী জুড়ে এখনো আশা ছাড়েনি, জাতীয়তার প্রতীকের চেয়ে এই আন্তর্জাতিক প্রতীকের মূল্য এবং সম্ভবপরতা বেশি এ কথাও অস্বীকার করা যায় না। United Nationsএর রাষ্ট্রিক কাীর্তি যতই নিষ্ফল এবং পাপ-লিপ্ত হোক, অন্য নানা অঙ্গনে তার কাজ সমাজে স্বাস্থ্য অন্ন বিদ্যার সমবায়ে সাহায্য করছে তাতে সন্দেহ নেই। সব দিকই দেখলাম – আমি ছিলাম Human Rights এবং Ecosoc (Economic & Social Council) এই বিভাগে; বহু প্রহর কেটেছে কঠিন চতুর মসৃণ বিবিধ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে। এদিকে যুদ্ধ এসে পড়ল। আরেকটা প্রবল বিশ্বপ্রলয় হন্তারক জাতিবৃন্ত (ন্দ ?) দ্রুত কাছে এনে ফেলেছে মনে হয়; ঝড় উঠতে দেরি নেই। এই দুর্যোগের অন্তে কোথায় কী অবশিষ্ট থাকবে বলা শক্ত, অন্ততপক্ষে য়ুরোপে হিসাব করবার জন্যে বেশি কেউ টিঁকে যাবে মনে হয় না। পূর্ব দিগন্তে অন্ধকার গভীর নয় কেননা সেখানে উজ্জীবনের পালা – নানাবিধ তীব্রতার সঙ্গে সেই পালার মিশ্রিত আবির্ভাব। কিন্তু যে এশিয়ার আগমন আমরা চেয়েছিলাম সে কি ঐ রক্তলাঞ্ছিত ঘাতকবৃত্তির ধ্বজা উড়িয়ে দেখা দিল? – উন্মত্ত প্রতিশোধের ক্রিয়া যে-ভাবেই বিশ্লেষণ করি না কেন, মানবসভ্যতার দিক থেকে এই পূর্বীয়তার প্রকরণ আমাদের সংকল্পের অতীত। এখনো আশা করা যায়, ভারত মহাভূমি থেকে পূর্বপশ্চিমের পূর্ণতর সামঞ্জস্য ও বিজয় ঘোষণা একদিন প্রচারিত হবে – কিন্তু সেদিন এখনো নয়। বুভুক্ষু, আত্মবিরোধী, অবিশ্বাসী জনসংঘের ঢেউ ভারতসমাজের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে আলোড়িত হয়ে উঠবে, সেখানেও খন্ডপ্রলয়ের অন্ধকার দেখা দেবে এইটেই মনে হয়। আমাদের সময় হয়ে এল, বেশিদূর পর্যন্ত স্বচক্ষে দেখবার বেলা নেই, তোমরা দেখবে।
মার্কিনেরা যুদ্ধবুদ্ধিতে জীর্ণ, বেশির ভাগ কলম, তুলি ও কণ্ঠ ঐ সব ব্যাপারেই অহর্নিশি নিযুক্ত। আমি তো তাগাদা দিয়ে ক্লান্ত, কবি মহারথী কারো নূতন 888sport app download apk শেষ পর্যন্ত আদায় করতে পারলাম না। এ জন্যে যথেষ্ট বিড়ম্বিত ও বিষণ্ণ বোধ করেছি। ভরসা ছিল ‘‘888sport app download apk’’র দপ্তরে হঠাৎ কিছু অপ্রত্যাশিত দান পৌঁছিয়ে দিতে পারব। কিন্তু পশ্চিমী দুর্যোগ যতই ঘন হচ্ছে আর্থিকতার দিকটাও 888sport live football 888sport live chat মহলে আরো স্পষ্ট দেখা দিচ্ছে – বিনা রৌপ্য ডলার বর্ষণে 888sport live footballের সাড়া পাওয়াই শক্ত। যেটুকু যা জোগাড় হয়েছে তাই নিয়ে 888sport app download apkর ‘‘মার্কিন’’ 888sport free bet বেরোচ্ছে এতে অত্যন্ত সুখী হয়েছি : সূচি পড়ে মনে হল সংগ্রহ রীতিমতো ভালোই হয়েছে। আমি কিছু করতে পারলাম না এ জন্যে আমার কর্মদাসত্ব এবং অকর্মণ্যতা দুইই সমান দায়ী; একেবারে বন্দীর জীবন যাপন করেছি। এইবার মুক্তি। শীঘ্রই Princetonএ যোগ দেব। সেখানে Einstein এবং অন্য মনীষীর সাহচর্যে শান্তি আছে, শুভবুদ্ধি আছে, সেখানে কল্যাণী বিশ্বপ্রকৃতির শান্তি সৌন্দর্য বিস্তৃত।
কতদিন এদেশে আর থাকব জানি না। পৃথিবীতে বাস-পর্বই আর কত দিন কে জানে। ন্যুইয়র্কও যুদ্ধের আসন্ন শঙ্কায় টলমল। তো সামনে মহামৃত্যুর … সকলের সঙ্গে [?] হবে আশা করি তখনো আর চোখে দেখব আকাশ নীল।… দিনের হাওয়া।… থেকে মন্ত্রের স্পর্শ এনে দেবে। আর যাই হোক সংসারকে বড়ো ক’রে দেখে গেলাম, নিজের এবং নানাজনের ভুলভ্রান্তির অতীত চিরন্তন মানব সমাজে বাস করেছি। নরদেবতাকে পূজা করে গেলাম প্রাণের মন্দিরে, এবং সেই আলো দেখে গেলাম।
পত্র ২৫
THE INSTITUTE FOR ADVANCED STUDY
PRINCETON, NEW JERSEY USA
৬ই ফেব্রুয়ারি ১৯৫১
কল্যাণীয়েষু
নরেশ,
তোমাকে তিনটে 888sport app download apk পাঠাচ্ছি – ত্রয়ী কাব্য – অনেকটা একই। ভাবের সুতোয় তিনরকম। তোমার ভালো লাগে তো ‘‘888sport app download apk’’র দরবারে উপস্থিত কোরো। যদি ছাপতে বেশি দেরি হয় তাহলে অন্য কোনো পত্রিকায়, (যেমন ‘‘চতুরঙ্গ’’ বা ‘‘পূর্বাশা’’) যেখানে শীঘ্রই বেরোয় ছাপিয়ো। বাংলা ভাষার বন্ধন ঘোচবার নয়, সমস্ত শরীর মনের বাক্য সেই ভাষায় বাঁধা – তাই ঘুরন্ত মার্কিনি এবং ঘোরতর অকাব্যের মধ্যেও এই ভাষার শরণাপন্ন হয়ে বাঁচি। দেশের কাগজে নিজের কোনো লেখা বেরোলে হঠাৎ প্রাণে নিবিড় আনন্দ এসে ঠেকে – ‘‘888sport app download apk’’র পাতায় তোমাকে পাঠানো সেই ‘‘মাটি’’ 888sport app download apk হঠাৎ বিদেশে পড়লাম – এ একরকম আশ্চর্য অভাব্য অনুভূতি।
তোমাদের খবর দিয়ো। বিষম যুদ্ধ আর বিরুদ্ধ বাষ্পায়িত এই মর্ত-কোণে আছি, যথাসাধ্য চেষ্টা করি ভারতীয় সহজ মানবিক প্রসঙ্গ প্রচার করতে। United Nationsএ এই কয়েক মাস ভারত সরকারের প্রতিনিধি হয়ে দিনে দশ ঘণ্টা খাটলাম – সে খবর বোধ হয় পেয়েছ। তার পর কানাডা এবং এই দেশে বক্তৃতা 888sport slot gameে বেরিয়েছিলাম। এখন আইনস্টাইন অপেনহাইমারের পাড়ায় এই বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানে সভ্যরূপে যোগ দিয়েছি। এ এক আশ্চর্য মনন-সাধনার কেন্দ্র, বেশির ভাগই 888sport apk, কিন্তু সম্পূর্ণ তা নয়। আমার এখানে অধিষ্ঠান থেকেই তা বুঝতে পারো। অন্তত চার পাঁচ মাস এখানে থাকব। হৈমন্তী আর সেমন্তী এক ঘণ্টা পথ দূরে ন্যুইয়র্কে আছে – সেমন্তী Ph.D. পড়ছে। সবাই ভালো আছি। শীঘ্র লিখো।
‘‘888sport app download apk’’ ত্রৈমাসিককে যেমন করে হোক বাঁচিয়ে রাখতে হবে। তা না হলে আমাদেরই সমূহ লজ্জা; এমন পরাভব যেন না হয়।
প্রীতি জেনো
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
ত্রয়ী 888sport app download apk
(এক)
প্রতীক্ষা
অমিয় চক্রবর্তী
খর মাঠ কথা কয় অজানা খোটানি
ভাঙা মেঘ চলে ছায়া টানি;
নয়নীল ছিন্নের শূন্যে ত্রিশূল
টুক্রো পাহাড় উড়ো চুল;
মদ মন কাকে বলে – শোনো –
ঝঞ্ছায়
ঐ দূর দিক্-রাঙা বন যায়
বন্দরে দেখোনি কখনো?
ঢেউএ ঢেউএ শাম্পানে জাভানীর
প্রলাপীর জল-ছবি অবনীর :
– কানে চোখে ঠেকে তবু বুঝিনা।।
বোবা ভাষা সৃষ্টির তলে
বিদেশীর পথে পথে ছলছলে।
রুক্ষ বক্ষে ছুঁই জীবনের হারানো,
ফিরে পাবো মৃত্যুর পারানো।
যেখানে মাটিতে মাটি, গাছে গাছ, মেঘে মেঘ
যেখানে হওয়ার বেশি, উদ্বেগ,
স্থিরতার চুম্বন ঠান্ডা পাথর,
বনে বয় ফুলের আতর,
মানে নেই, মানে নেই, মানে নেই –
শুধু আছে, কথা-ধরা গানে নেই,
তাকে পেলে বাড়ি যাবো।।
বার্নস্ভিল্
ওহায়ো।
১৯৫০
(দুই)
ফিরব না
অমিয় চক্রবর্তী
হাতল সবুজ তামা; পুরু দর্জা পুরোনো গাছের,
বন্ধ, – তবু খোলা তার অস্পষ্ট আওয়াজ ‘‘এসো, এসো’’;
ঝোড়ো শূন্যে দেওদার, অত ঢেউ, পাতা ভরা ঢেউ;
ফুলের রঙীন ফেনা, নীল ফ্রেমে; বাড়ি অবিশ্বাসী।
বঙ্কিম গলিতে এসে দাঁড়াই এ২/বি-তে; খুঁজে পাই।
মন্ত্রের দরোজা ঐ খুলে কারা বস্তা নিয়ে আসে
সেই দর্জা খুলে : পাটের কুবের, কেনা মুটে।
ধনিকের নখ কবে এখানেও প্রাণের মর্মে দাগা;
বন্ধ হল চিরদিন খোলা দর্জা আরো খুলে গিয়ে।
ঝোড়ো দিনে কার স্পর্শ, স্পর্শাতীত সেদিনের বাড়ি,
উর্ধ্বাকাশে লগ্ন-লাগা স্তব্ধ তারা, তপ্ত ঠান্ডা পাতা,
কেনার অসীম ডুব, বন্ধু পরিবারে স্নিগ্ধ ভাব,
ঠেকে এসে চূণ আর ধুলোর আড়তে। এরা কারা,
হো হো হাসি পান খায়, দোঙ্কার দোকান, লাল জল,
বড়ো বাজারের মজা গিজিগিজি; প্রাকৃত ধনের
মোটা মজা দৈন্য গৃধ্নুতার; কলকাতা; ফিরে যাবো
দরোজা বন্ধ করে ধড়াস বুকের মধ্যে, একা,
বসন্ত রাত্রির ঝড়ে দৃষ্টিভরা একটি সে কাহিনী
কুসুম সংকীর্ণ গলি, কোথা সেই দরোজা পারের
গাছের পরিচ্ছন্ন বাসা। চিহ্নহারা। প্রবাসী পথের
ধূলোয় দুপুরে চলি, রোদ্দুরে চলেছে মালগাড়ি।।
ন্যুইয়র্ক্
১৯৫০
(তিন)
মার্কিনি
অমিয় চক্রবর্তী
হোটেলের বহু ঘরে আলো আলো আলো-আভা
বনের নদীর সাঁকো পেরিয়ে এলেম,
প্রদীপ্ত জনতার পাশ দিয়ে নীচে নাবা
আমার ঘরের কাছে চাবি নিয়ে দাঁড়ালেম।
হঠাৎ চেনার হাওয়া বুকে বয়েছিল,
জানিনি, জানিনি,
আজো কি জানি সে জানা? ঠিকানা আনিনি।
সাঁকোর বাঁ দিকে দ্রুত ট্রাম যায়,
গ্রামে যায় বহু লোক, ঘড়ি দেখে দ্রুত চোখ;
বেলা সাড়ে চারটের ফিরতি জনতা খোঁজে বাসা,
টপ্ টপ্ সিমেন্টে পড়্ছে কুয়াষা,
জানিনা তো, জানিনা,
এ সহরে মার্কিনে কাউকেই চিনি কিনা
উজ্জ্বল কাঁচে কাঁচে পণ্য সাজানো
জিনিষের বিন্যাস ডলারে বাজানো,
শিকারের পাখি চোখ লক্ষ লক্ষ লোক খামে
ঝলমল মার্বেলে আলো নামে,
উন্মন-পবন দোলায়
কার চেনা লাগে জনতায়,
মনে মন প্রাণে প্রাণ সংসার
খোলে কি হঠাৎ ফালি দরোজার?
হাতে নিয়ে চাবি
কোথা সে চেনার মন্ত্র, ভাবি।।
সিন্সিনাটি
১৯৫১ r
পত্রধৃত প্রসঙ্গ
পত্র ১
অভিজ্ঞানবসন্ত – অমিয় চক্রবর্তীর ষষ্ঠ কাব্য। একমাত্র সংস্করণ ১৩৫০। শ্রীপ্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়-কর্তৃক তুলট কাগজে শান্তিনিকেতন প্রেস, বোলপুর, বীরভূম থেকে মুদ্রিত ও ২৭/এ এলগিন রোড, কলকাতা থেকে কবি-কর্তৃক প্রকাশিত।
পত্র ২
‘‘রবীন্দ্রনাথের কাছে ছিলাম – ১৯২১এ বিশ্বভারতীর ছাত্ররূপে এবং স্বল্পকাল অধ্যাপনার দায়িত্বে; ১৯২৪ থেকে ১৯৩৩ পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের 888sport live football-সচিব ও মধ্যে-মধ্যে সহযাত্রীর পালা। ইংলন্ডে, য়ুরোপে, মার্কিন দেশে, ইরানে এবং স্বদেশের নানা স্থানে তাঁর সঙ্গে ছিলাম;’’ (শিরোনামহীন ভূমিকা, চিঠিপত্র, একাদশ খন্ড, ১৩৮১)।
পত্র ৩
প্রাচীর – ছাত্র ফেডারেশনের দক্ষিণ কলকাতা শাখা থেকে মিহির আচার্য-কর্তৃক প্রকাশিত (১৯৪২) যুদ্ধবিরোধী বাংলা 888sport app download apkর প্রথম সংকলন। সোমেন চন্দের 888sport app download for androidে উৎসর্গীকৃত। অমিয় চক্রবর্তীর ‘‘প্রাচীর’’ ওই সংকলনে গ্রথিত। সংকলন প্রকাশের ব্যয়ভারও তিনি বহন করেন।
পত্র ৪
অশোক রাহা – অশোকবিজয় রাহা (১৯১০-৯০); ভানুমতির মাঠ (১৯৪২) তাঁর কাব্য। শান্তিনিকেতনে অধ্যাপনা করেন এবং রবীন্দ্রভবনের অধ্যক্ষ ছিলেন।
পত্র ৫
ইংরেজি নিয়ে পড়া – ১৯৪১এ রিপন কলেজে ইংরেজি অনার্স ক্লাসে ভর্তি হয়েছিলেন নরেশ গুহ। কিন্তু অনার্স পরীক্ষা দেননি; ১৯৪৩এ ডিস্টিংশনসহ বিএ (পাস) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৪৩এ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজিতে এমএ ক্লাসে ভর্তি হন।
পত্র ৬
‘‘সামুদ্রিক’’ – বুদ্ধদেব বসু-সম্পাদিত 888sport app download apk পত্রিকায় প্রকাশ (চৈত্র, ১৩৪৯), পরে পারাপার কাব্যে গ্রথিত (১৩৬০)।
পত্র ৯
Universityতে – ১৯৪০ থেকে ১৯৪৮ পর্যন্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা করেন অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ১০
ভারত ও Eastern Express পত্রিকায় গান্ধীজির সম্বন্ধে বাংলা ও ইংরেজি লেখা। … আমার সংকল্প আছে ইংলন্ডেই কিছু লেখা মহাত্মা গান্ধী সম্বন্ধে তৈরি করে রাখব। – সাম্প্রতিক 888sport liveগ্রন্থে সংকলিত ‘‘মহাত্মা গান্ধী’’ (কলকাতা, ১৯৬৩); ইংরেজিতে বই লেখেন : Mahatma Gandhi and Modern World (১৯৪২); 888sport live লেখেন “Tagore and Gandhi : Reflections and Remineiscences” এবং Gandhi India and World নামে শিবনারায়ণ রায়-সম্পাদিত গ্রন্থে (মেলবোর্ন, ১৯৭০) “Race Problem” ও “Non-cooperation Movement” – দুটি 888sport live প্রকাশ করেন।
১৯২১এ অমিয় চক্রবর্তী শান্তিনিকেতনে প্রথম দেখেন গান্ধীকে; গান্ধী প্রায়ই আসতেন শান্তিনিকেতনে, তখন পরিচয় হয়। ১৯২৬ থেকে দু-জনের মধ্যে পত্রযোগাযোগের সূচনা। ১৯৩০এ অমিয় চক্রবর্তী রবীন্দ্রনাথের সঙ্গী হয়ে বরোদায় গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। ১৯৩২এ গান্ধীর আমন্ত্রণে তিনি পুনায় কয়েকদিন অতিবাহিত করেন। ১৯৪৬এ নোয়াখালিতে গান্ধীর পদযাত্রায় তিনিও তাঁর সঙ্গী ছিলেন। ‘বুদ্ধদেব সম্বন্ধে রচিত আমার 888sport app download apk’ – ‘‘বোধগয়া’’ 888sport app download apkটি পারাপার কাব্যের ‘ভারতী’ অংশে আছে। বুদ্ধদেববাবু – বুদ্ধদেব বসু।
তাজমহল সম্বন্ধে 888sport app download apkর – ‘‘তাজমহলের সন্ধ্যা’’ হারানো অর্কিড কাব্যগ্রন্থে সংকলিত।
পত্র ১১
‘ওয়াশিংটনে পড়ানো সুরু করব’ – অমিয় চক্রবর্তী ওয়াশিংটনে হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ কালপর্বে ধর্মতত্ত্ব ও ইংরেজি 888sport live footballের ভিজিটিং অধ্যাপক ছিলেন।
পত্র ১৩
হৈমন্তী – অমিয় চক্রবর্তীর দিনেমার স্ত্রী হিওর্ডিস সিগো; ১৯২৭এ শান্তিনিকেতনে বিয়ের সময়ে রবীন্দ্রনাথ নামকরণ করেন হৈমন্তী। উপহার ও খসড়া কাব্যদুটি এঁকে উৎসর্গ করেছেন।
সেমন্তী – একমাত্র সন্তান, নাম রেখেছেন রবীন্দ্রনাথ। জ. বার্মিংহামে, মে ১৯৩০এ।
পত্র ১৪
888sport app download apkর জন্য দীর্ঘ 888sport live – ‘‘এজরা পাউন্ড/ 888sport app download apkর দরবারে পত্রাঘাত’’ 888sport app download apk/ পৌষ, ১৩৫৫)/, সাম্প্রতিক গ্রন্থেও গ্রথিত।
CANTOS – মার্কিন কবি এজরা পাউন্ডের (১৮৮৫-১৯৭২) কাব্য-বিষয়ে উল্লিখিত 888sport liveে অমিয় চক্রবর্তী লিখেছেন : ‘রূপের নেশায় ভরা; ছোটো ছোটো গীতিকাব্যের মুক্তো ছড়ানো।’ পাউন্ডের সঙ্গে অমিয় চক্রবর্তীর একাধিকবার সাক্ষাৎ হয়; প্রথম দেখার বিবরণ আছে এই 888sport liveে।
মুক্তধারার অভিজিৎ – ১৯২২এ প্রকাশিত রবীন্দ্রনাথের নাটকের চরিত্র যুবরাজ অভিজিৎ – কবিরই কোমল-কঠোর রূপটিকে প্রকাশ করেছে।
বিষ্ণুবাবুর পত্রিকা – বিষ্ণু দে (১৯০৯-৮২)-সম্পাদিত 888sport live footballপত্র।
বুদ্ধদেববাবুর ঐ সমালোচনা – নলিনী গুপ্তের (১৮৮৯-১৯৮৪) আপ্তবাক্য নিয়ে – অরবিন্দের পন্ডিচেরী আশ্রমে আজীবন সম্পাদক; আত্মজীবনী – 888sport sign up bonusর পাতা। বুদ্ধদেব বসু তাঁর 888sport live chatকথা বইয়ের সমালোচনা করেন 888sport app download apkয় (চৈত্র, ১৩৫৪)।
T.S. Eliot (১৮৮৮-১৯৬৫) : অমিয় চক্রবর্তী তাঁর সম্পর্কে 888sport live লিখেছেন এলিয়টের নতুন 888sport app download apk; প্রথমে 888sport app download apk পত্রিকায় (পৌষ ১৩৫০) ও পরে সাম্প্রতিক গ্রন্থে সংকলিত।
Carl Sandburg – (১৮৭৮-১৯৬৭)।
Cummings [E. E.] – (১৮৯৪-১৯৬২)
Charlie Chaplin – (১৮৮৯-১৯৭৭)
পত্র ১৬
মীরা – মধ্যযুগের কবি ও সাধিকা; তাঁর পদাবলির ভাষা পশ্চিম রাজস্থানী; তাতে মারবাড়ী, গুজরাতি, হিন্দি ও ব্রজভাষার প্রচুর শব্দ আছে।
সৌমেনবাবু – (১৯০১-৭৪) জ. জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে। দ্বিজেনদ্রনাথ ঠাকুরের পৌত্র ও সুধীন্দ্রনাথের পুত্র।
‘রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে রাশিয়ার দিকে চলেছি’ – ১৯৩০এ রবীন্দ্রনাথের রাশিয়া সফরে সঙ্গী ছিলেন অমিয় চক্রবর্তী ও সৌমেন্দ্রনাথ ঠাকুর।
‘কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এক বছর ছুটি’ – ১৯৪০-৪৮ ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক, আগেই বলেছি।
কান্তিবাবু – কান্তিচন্দ্র ঘোষ (১৮৮৬-১৯৪৮) – ওমর খৈয়াম ও হাফিজের 888sport app download apk latest versionক।
যোগেশ রায়ের বই (১৮৫৯-১৯৫৬) – রত্নপরীক্ষা। কান্নাহাসির দোল দোলানো – রচনা : চৈত্র ১৩২৪ [?]। প্রথম প্রকাশ মানসী ও মর্ম্মবাণী (চৈত্র, ১৩২৪)। গীতবিতান ১ পূজা/ গান ১। স্বরলিপি ১৬। [দেখুন, প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, গীতবিতান, কালানুক্রমিক সূচি, কলকাতা ১৩৯৯, পৃ ২৩১]
‘কান্তিবাবুর সম্বন্ধে তুমি যে অনুলিপি’ – নরেশ গুহ কান্তিচন্দ্র ঘোষের বিধবা এটা ঘোষের মৌখিক 888sport sign up bonusচারণ অবলম্বনে 888sport app download apk পত্রিকায় ‘‘স্ত্রীর চোখে কবি কান্তিচন্দ্র ঘোষ’’ রচনাটি লিখেছিলেন; পরে অন্তরালে ধ্বনি প্রতিধ্বনি গ্রন্থে গৃহীত (পৃ ৭৮-৮২)।
‘‘রাত্রির প্লেন’’ – 888sport app download apk (আশ্বিন-পৌষ ১৩৫৭); পারাপার কাব্যের অন্তর্গত।
পত্র ১৭
১৬ই জুলাই ১৯৪৯এর এই পত্রের টীকা নরেশ গুহ নিজেই বিস্তারিত লিখেছেন অহর্নিশ পত্রিকার ‘নরেশ গুহ 888sport free bet’য় (কলকাতা, ২০০৯ পৃ ১৮-১৯) ওই 888sport free betয় অমিয় চক্রবর্তীর আটটি পত্র সংকলিত :
‘১৯৪২ সাল থেকে শুরু ক’রে ১৯৮৬ সালে তাঁর প্রয়াণ কাল পর্যন্ত কবি অমিয় চক্রবর্তী আমাকে দুই শতাধিক অতি চমৎকার চিঠি লিখেছিলেন। বহু চিঠিই ছিলো রীতিমতো দীর্ঘ এবং নানাভাবে মূল্যবান। সুরচিত এই রকম কতশত চিঠি দেশে বিদেশে তাঁর প্রিয়জনদের নিশ্চয়ই তিনি পাঠিয়েছিলেন, যার কোনো হিশেব কেউ রক্ষা করেননি। পত্রপ্রাপকদের মধ্যে অল্প দুচারজনকে লেখা কিছু চিঠি নানা পত্রপত্রিকা এবং গ্রন্থাদিতে ছাপা দেখতে পেয়েছি। তাঁদের মধ্যে বুদ্ধদেব বসু, জগদীশ ভট্টাচার্য এবং শিবনারায়ণ রায়কে লেখা পত্রগুচ্ছই প্রধান। আমি নিজেও তাঁর রচিত চিঠিপত্র কোথাও-কোথাও প্রকাশ করেছি, কিন্তু কোথায় তা মনে নেই। আমার ইচ্ছে ছিলো সমগ্র পত্রাবলী গ্রন্থাকারে একদিন প্রকাশ করা সম্ভব হবে। জানি না সে-ইচ্ছে পূর্ণ হবে কিনা।’
১. ১৯৪৮ সালে স্ত্রী হৈমন্তী দেবী এবং কন্যা সেমন্তীসহ অমিয় চক্রবর্তী এক বছরের জন্য মার্কিন দেশের নিগ্রো হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতে চ’লে যান। তাঁর ইচ্ছে ছিলো এক বছর পরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসবেন। ১৯৪৯ সালের জুলাই মাসেও তিনি ভাবছিলেন যে, বৎসরান্তে দেশে ফিরবেন। তার আগে হাওয়ার্ড থেকে একবার দক্ষিণে মেক্সিকোতে ছুটি কাটাতে যান। সেই সময়কার অভিজ্ঞতার কথা আছে এই চিঠিতে।
২. ‘অমিয়বাবুর মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের নিকটবর্তী সেইন্ট এলিজাবেথ উন্মাদাগারে বন্দী অবস্থায় থাকার সময়, কবি এজরা পাউন্ড কলকাতার 888sport app download apkভবন থেকে প্রকাশ করার উদ্দেশ্যে Confucius : The Unwobbling Pivot & The Great Digest নামে চীনের একটি প্রাচীন কেতাবের উৎকৃষ্ট 888sport app download apk latest version প্রস্ত্তত করে বুদ্ধদেব বসুকে পাঠান। Orient Longmans Ltd. (কলকাতা) থেকে 888sport app download apkভবনের পক্ষে সেই গ্রন্থ ছাপা হয় ১৯৪৯ সালে। ৭ ওয়েলিংটন স্কোয়ারের মর্ডান ইন্ডিয়া প্রেস থেকে বহু পরিশ্রমে চীনা হরফ সম্বলিত সেই অত্যাশ্চর্য গ্রন্থটির আনুপূর্বিক প্রুফ দেখে আমি 888sport app download apkভবনের হ’য়ে সেটি প্রকাশ করি। এজরা পাউন্ডের মতো বড়ো মাপের কবির এই একটি বই-ই ভারতবর্ষে বেরিয়েছে। সেই বই-এর এক কপি এজরা পাউন্ডের স্বাক্ষর সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অমিয়বাবুর হাত দিয়ে আমি ওয়াশিংটনে পাঠাই। এছাড়াও, পাউন্ডকে আমি পুরী থেকে আনানো একটি উপহারও পাঠিয়েছিলাম। স্বাক্ষর সমেত একটি চীনা হরফ সম্বলিত কয়েক পঙ্ক্তি লিখে আমাকে উপহার পাঠান এজরা পাউন্ড। সেই অমূল্য পুস্তকটি আমার সংগ্রহে এখনো আছে। পাউন্ডের দেওয়া সেই উপহারের বিষয়ে আমেরিকা থেকে প্রকাশিত শুধু পাউন্ড বিষয়ক একটি পত্রিকায় ছোটো একটি 888sport live ছাপা হয়। তাঁরা লেখার কপি পাঠিয়েছিলেন আমাকে।’
টীকা : নরেশ গুহ
১. চক্রবর্তী দম্পতীর কন্যা সেমন্তী তাঁদের একমাত্র সন্তান। সেমন্তী এখন বছরের একভাগ থাকেন শান্তিনিকেতনে তাঁদের স্বগৃহে, বাকি সময়টা থাকেন তাঁর দুই কন্যার সঙ্গে ন্যুইয়র্কে।
২. শ্রীমতী বিজয়লক্ষ্মী, জওহরলাল নেহেরুর ভগ্নী, তখন ছিলেন মার্কিন দেশে ভারতের রাষ্ট্রদূত। অমিয়বাবুদের সঙ্গে তাঁরও সৌহার্দ্য ছিলো।
৩. মহা888sport apkী আইনস্টাইন হিটলারের জর্মানী ছেড়ে তখন ছিলেন আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমন্ত্রিত অধ্যাপক। আমন্ত্রিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী নেহেরু সেবার যখন আমেরিকায় যান তখন আইনস্টাইনের সঙ্গে নিভৃতে সাক্ষাৎ করার ইচ্ছে জানিয়েছিলেন তিনি। মার্কিন রাষ্ট্রপতি সে-কথা জেনে স্বয়ং আইনস্টাইনকে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউস-এ আনিয়ে নেহেরুর সঙ্গে দেখা করাতে উদ্যত হয়েছিলেন। কিন্তু নেহেরুর কান্ডজ্ঞান ছিলো, তিনি কখনোই চাননি যে মনীষী আইনস্টাইনের তুল্য মানুষ নিজে এসে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তার চাইতে বরং অমিয় চক্রবর্তীর সঙ্গে তিনি নিজেই প্রিন্সটনে গিয়ে সেই মহা888sport apkীর সঙ্গে অনেকটা সময় কাটান। আইনস্টাইন, নেহেরু এবং অমিয় চক্রবর্তীকে নিয়ে একত্রে তোলা চমৎকার একটি ফটোগ্রাফ অমিয়বাবু পরে আমাকে পাঠিয়েছিলেন। ছবিটা রক্ষা করেছি। Thomas Mann-ও তখন আমেরিকাপ্রবাসী। একসময় রবীন্দ্রনাথের সঙ্গেও টোমাস মান্-এর পরিচয় হয়েছিলো। কিন্তু ১৯৪৯ সালে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসে এসে পন্ডিতজির সঙ্গে তিনি সেবার সাক্ষাৎ করতে পারেননি।
পত্র ১৯ টীকা : নরেশ গুহ
ভারতবর্ষে তখন প্রচন্ড খাদ্যাভাব চলছিলো। প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু ভারতকে বিশেষ প্রয়োজনীয় গম সরবরাহের অনুরোধ জানাতে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। অমিয় চক্রবর্তীর সঙ্গেও গভীর অন্তরঙ্গতার সম্পর্ক ছিলো নেহেরু পরিবারের। যখনই স্বদেশে আসতেন অমিয়বাবু দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর আতিথ্য স্বীকার করতেন। মার্কিন দেশে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গী হয়েও অনেক ঘুরেছেন তিনি। (অহর্নিশ, নরেশ গুহ 888sport free bet, ২০০৯ পৃ ২৩-২৪)।
পত্র ২০
বাণী রায় – কবি ও ঔপন্যাসিক (১৯১৮-৯২)। প্রকাশিত বই : জুপিটার, প্রেম, সপ্তসাগর, শীত ও শম্পা।
জীবনানন্দ দাশ ভাড়া দিচ্ছেন – ১১.৫.৫১ তারিখে নরেশকে জীবনানন্দ দাশের চিঠিতে উল্লেখ আছে : আমার এখানে একটা বড় room ও খানিকটা enclosed বারান্দা … খালি আছে। Sublet করতে চাই। ২৭.৫.৫১ তারিখে জানিয়েছেন : ঘরটি ভাড়া হয়ে গেছে। (অহর্নিশ, পূর্বোক্ত)
পত্র ২৩
‘মাটির পদ্য’ : ‘‘মাটি’’ নামে পারাপারে সংকলিত। প্রথম প্রকাশ : 888sport app download apk, আষাঢ়, ১৩৫৭।
Signet Pressএ যোগ দিয়ে – নরেশ ১৯৪৯এ সিগনেট প্রেসের কাজে যোগ দেন মাসিক দেড়শো টাকা মাইনেতে। নতুন পান্ডুলিপির (পরে নামকরণ হয় টুকরো কথা) লেখক-সম্পাদক ছিলেন নরেশ।
পত্র ২৪
United Nations ও observer – ১৯৫০-৫১ সালে অমিয় চক্রবর্তী জাতিসংঘে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতা পদে কাজ করেন Human Rights ও ECOSOC (Economic and Social Council) বিভাগে।
আইনস্টাইন (১৮৭৯-১৯৫৫) – রবীন্দ্রনাথ-আইনস্টাইন সাক্ষাৎকালে অমিয় চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। সাম্প্রতিক-এ সংকলিত 888sport live লেখেন (পৃ ২৪২-২৪৭)
প্রিন্সটনে যোগ – ১৯৫০এ আইনস্টাইন ও ওপেনহেইমারের আমন্ত্রণে ইন্সটিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজের (প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়) ফেলো পদে যোগ দেন অমিয় চক্রবর্তী।
পত্র ২৫
চতুরঙ্গ – হুমায়ুন কবির-সম্পাদিত ত্রৈমাসিক 888sport live football পত্রিকা; সূচনায় বুদ্ধদেব বসুর সহযোগে। প্রথম প্রকাশ : (আশ্বিন ১৩৪৫)।
পূর্বাশা – সঞ্জয় ভট্টাচার্য (১৯০৯-৬৯)-সম্পাদিত 888sport live footballপত্রিকা।
ত্রয়ী কাব্য – এক : প্রতীক্ষা, দুই : ফিরব না, তিন : মার্কিনী 888sport app download apk। 888sport app download apk, চৈত্র ১৩৫৭; পারাপারে সংকলিত।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.