পূর্বলেখ ও টীকা : ভূঁইয়া ইকবাল
পত্র ৪৫
BOSTON UNIVERSITY
BOSTON 15, MASSACHUSETTS
১২ই মে, ১৯৫৫
Amiya Chakravarty
Professor of Comparative Oriental Religions and Literature
প্রিয়বরেষু
নরেশ,
সিগ্নেট প্রেসের হয়ে তুমি যে-চিঠি লিখেছ তার কতখানি তোমার নিজের মনের ইচ্ছে, কতটা প্রকাশনী বিভাগের, তা ঠিক বুঝতে পারিনি। আমার গদ্য রচনা পৃথক এবং ভাব-সংলগ্ন ছোট ছোট গ্রন্থাকারে বার করলে খুবই খুশি হতাম। পদ্যের সমগ্র সংগ্রহ বের হলেও তৃপ্তি পেতাম। কিন্তু সিগ্নেট প্রেস্ সম্পর্কে আমার নিজের আশা ভরসা ভেঙে গেছে। এক বছরের মধ্যে চিঠির উত্তর পাই না, লিখে কোনো ফল হয় না। সৌজন্যের এরকম অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত ব্যতিক্রম আমার জীবনে পূর্বে অভিজ্ঞতা হয় নি, তা ছাড়া সামান্যতম বৈষয়িক নীতিরক্ষার পরিচয় আমি সম্প্রতি সিগ্নেট প্রেস্ থেকে পাইনি। এটা আমারই দুর্ভাগ্য। পৃথিবীময় ঘুরে বেড়াই, বিদেশী স্বদেশী নানাজনের সঙ্গে সকল প্রকারের যোগাযোগ হয় – কিন্তু কখনো এরকম ঘটে নি। আজ অবধি আমি জানি না ‘‘দূরযানীর’’ কপি ছাপা হয়েছিল, বিক্রি হয়েছিল। বহুবার লিখেও জানতে পারলাম না ‘‘পারাপার’’ কত ছাপা, কত বিক্রি তার কী হিসাব। বলা বাহুল্য, ঐসব 888sport app download apkর বই লিখে লক্ষপতি হবার ভাবনা কখনো মনে জাগে নি, কিন্তু প্রতি লেখকের নিশ্চয়ই এটুকু দাবি আছে যে ছাপা বইয়ের একটা হিসাব তাঁরও কাছে পৌঁছবে। যদি 888sport appsে এরকম অদ্ভুত রীতি প্রবর্তিত হয় যার ফলে লেখক দয়ার পাত্র এবং প্রকাশক উপরি-অলা হয়ে দেখা দেন তাহলে বুঝব দেশের অবস্থা শোচনীয়। দুই পক্ষের 888sport apk download apk latest version এবং সমতা; এবং বৈষয়িক ব্যাপারে, চিঠিপত্রে, সম্পূর্ণ খোলাখুলি ভাব ও দায়িত্বরক্ষা না হলে বিশেষ সেইসব ক্ষেত্রে লেখক ও প্রকাশকের সম্বন্ধ ভেঙে দেওয়াই ভদ্রতা।
বহুমাস ও বৎসরের সঞ্চিত ধৈর্য্য ও ক্ষোভের শেষাঙ্কে এই চিঠি লিখলাম। আমি অত্যন্ত ব্যথিত হয়েছি। বলা বাহুল্য আমার গ্রন্থ না ছাপালে, বা ব্যক্তিগতভাবে আমার সঙ্গে লেখক-প্রকাশকের সম্বন্ধ না রাখলে বৃহৎ সুপ্রতিষ্ঠিত সিগ্নেট প্রেসের কিছুই যায়-আসবে না। আমার দিক থেকেও কোনোই অসদ্ভাব আমি পোষণ করতে অসমর্থ – সিগ্নেট প্রেসের সমূহ কল্যাণ হোক্ এই কামনা করি। কিন্তু অত্যন্ত অস্বাভাবিক এই যোগাযোগ ছিন্ন হওয়াই ভালো নয় কি? একসময় সিগ্নেট প্রেসের কাছ থেকে যে আনুকূল্য ও হৃদ্যতা পেয়েছি তার জন্যে আমি কৃতজ্ঞ। দিলীপবাবুকে তুমি আমার অভিবাদন জানিয়ো।
আমার নূতন একটি 888sport app download apkর বইয়ের বিষয়ে সিগ্নেট প্রেসকে লিখেছিলাম। উত্তর পাইনি। ভাগ্যক্রমে আমার সেই ক্ষুদ্র কাব্যগ্রন্থ ‘‘পালা-বদল’’ নামে নাভানা প্রকাশকেরা ছাপাচ্ছেন। আমার প্রবাসী জীবনের গভীরতম দান ঐ গ্রন্থে, – হয়তো বাঙালি কোনো পাঠকের হৃদয়ে পৌঁছবে। সহজ ভাষায় গ্রথিত এই অর্ঘ রেখে যাই।
জওহরলালজির চিঠি পেয়েছি – তিনি মস্কৌ থেকে ফেরার পর দিল্লিতে তাঁর কাছে কদিন থাকব। 888sport appsে পৌঁছব তার আগেই, – জুনের শেষাশেষি বা জুলাইয়ের প্রথমে। খুব কম দিনের জন্যে স্বদেশে যাচ্ছি – আফ্রিকায় ডাক্তার সোইট্জর্-এর কাছেও যাওয়ার ইচ্ছে। সব সুদ্ধ ভারতবর্ষে ও পূর্বদেশের নূতন সৃজন-কাজের আবহাওয়া জেনে আসতে চাই; আফ্রিকার জনশক্তিও সেই বৃহত্তর, পূর্বীয় আত্মশক্তির সঙ্গে জড়িত। পশ্চিম দেশে কর্মজালে জড়িয়ে এবং নিরন্তর পরিশ্রমে ক্লান্ত বোধ করছি। আমি এরোপ্লেনেই আগস্ট মাসের শেষে এদেশে ফিরব এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়েই যোগ দেব। হৈমন্তী পরশু ন্যুইয়র্ক থেকে জাহাজে রওনা হচ্ছেন – আমাদের কন্যা ও জামাতার সঙ্গে লন্ডন থেকে একজাহাজে ভারতবর্ষে পৌঁছবেন। হৈমন্তী হয়তো একটু দেরিতে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরের শেষে আমেরিকায় ফিরবেন। এইসব আমাদের ব্যক্তিগত ইতিবৃত্ত।
তুমি কেমন আছ জানিয়ো। কলকাতায় অতি কম সময় থাকব। কারণ বিনোভাজির ভূ-দানের কাজও দেখতে চাই। শান্তিনিকেতনেও দুই সন্ধ্যা প্রভাত কাটাব। নিশ্চয়ই দেশে তোমার সঙ্গে যোগাযোগ হবে। একমাত্র আমার কাম্য শিকড়ে জল ফিরে পাওয়া, – প্রবাসে অনেক সময়ে মনে হয় মূলে শুকিয়ে গেছি। বাংলার মঙ্গলবারি দু’চার ফোঁটা ফিরে পাই যেন। ইংরেজিতে কিছু রচনার কাজে নেমেছি, – দার্শনিক বিষয়ে। প্রীতি জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৪৬
BOSTON UNIVERSITY
BOSTON 15, MASS ২৫ মে, ১৯৫৫
প্রিয়বরেষু
সেদিন সিগ্নেট প্রেস সংক্রান্ত আমার চিঠি পেয়েছ। আমার বিশেষ অনুরোধ তুমি নিরিবিলি আমার গদ্য 888sport live সংকলন ইত্যাদি তোমার নিজের কাছেই রেখে দিয়ো। কারো হাতে দিয়ো না। তোমার সঙ্গে দেখা হলে সব কথা হবে।
আমি কয়েকদিনের মধ্যেই অক্সফোর্ডে যাচ্ছি, তারপর আফ্রিকায় Albert Schweitzer-এর কাছে Lambareneতে। এখন airplane-এ প্রায় একই খরচে এইসব বাড়তি ঘুরোঘুরির ব্যবস্থা ক’রে দেয়। জুনের শেষে Paris-এ Unesco-র Conferenceএ প্রতিনিধি হয়ে কদিন থাকব। জুলাইয়ের প্রথম দিকে বম্বাই, – কলকাতা। এখনো যাত্রার পথ বহু অদলবদল হতে পারে। মধ্য-আফ্রিকা আমার জানা নেই, তাই ঐ অঞ্চলে স্বেচ্ছামতে ঘুরে বেড়াতে চাই। অনেক বেদনা বুকে সঞ্চিত আছে ঐ অসীম দুঃখ-সহী দেশের জন্যে। Congo এবং Gold Coast ও French Equatorial Africa-য় যাচ্ছি।
আমার বিশ্বস্ত ঠিকানা C/O American Express Co, Mail Dept., Rue Scribe, Paris. (To await. arrival)। কিন্তু এতো নানা জায়গায় ঘুরব যে চিঠিপত্রের যোগাযোগ ভালোভাবে রক্ষা হবে না। আফ্রিকা থেকে দু’চার লাইন তোমাকে লিখব নিশ্চয়ই।
‘‘পালা-বদল’’ বেরিয়ে গেলে নিশ্চিন্ত হই। যাতে এরি মধ্যে বিক্রি শুরু হয় এবং আমি পৌঁছেই হাতে পাই। বিরামবাবুকে অনুরোধ করেছি তুমি যদি সযত্নে প্রুফ দেখে দাও। তাহলে আমার ভাবনা থাকে না। নাভানার ব্যবহারে অত্যন্ত তৃপ্ত হয়েছি।
888sport appsের লেখকদের পক্ষে অত্যন্ত প্রয়োজন যেন তাঁরা প্রকাশন ক্ষেত্রে আপন স্বাধীনতা এবং মর্যাদা অক্ষুণ্ণ রাখেন। বহুদিন অনেক আঘাত নীরবে সহ্য করেছি ব’লেই জানি।
এখানে বসন্ত আর গ্রীষ্মের চক্রাবর্তন পালা চলেছে। গরমে কিছু সুখ পাই না। যদি শরৎকালে শিউলি হাওয়ার সঙ্গে 888sport appsে উপস্থিত হতে পারতাম তাহলে কত ভালো হত! কিন্তু সবই সয়ে যাবে। এই ছুটিতে সারা ভারতবর্ষ ঘুরে ফিরব। দেশের টান বুকে গভীরতর হয়ে উঠছে। এবারে দেশে কিছু বিশুদ্ধ গান আর সেতার শুনতে তৃষিত হয়ে আছি।
আমার প্রীতি অভিবাদন জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৪৭
C/o Dr. Albert Schweitzer, Lambarene
French Equatorial Africa
July 10/ 55
প্রিয়বরেষু,
তোমার চিঠিখানি প্যারিস থেকে ঘুরে আফ্রিকার গভীর অরণ্য নদীর প্রান্তে লাম্বারেণি আশ্রমে আমার হাতে পৌঁচেছে। ঠিক যেন বিশ্বাস করতে পারছি না Equator পার হয়ে কোন্ প্রকান্ড মহাদেশে বান্টু জাতির ভাই-বোনের সঙ্গে এখানে আছি। চতুর্দিকে জটিল ঘন গাছে গুল্মে আকাশ ভারি হয়ে উঠেছে, অগোচরে নদী আর নদীর চর, হয়তো জলে হিপোপটেমাস্ জন্তুর প্রকান্ড কালোছায়া হঠাৎ দূরে দেখা দেবে, বানর আর প্রকান্ড পাখির ডাক। আফ্রিকার এই অঞ্চলে এখন শীতকাল, কিন্তু এ কী রকম থমথমে গরম বাষ্পে ভরা শীত! এইখানে একটি মহা তেজস্বী জীবন প্রায় অর্ধশতাব্দী আত্মদান করেছেন – তাঁর সহকর্মী দলের অক্লান্ত সেবা এবং প্রীতি এই লাম্বারেণিতে এসে স্পষ্ট অনুভব করলাম। ডাক্তার শোয়াইট্জারের সঙ্গে ধীরে ধীরে কথাবার্তা চলেছে; মধ্যে মধ্যে ক্যানু-তে চরে নদীতে ঘুরে বেড়াই। কত রোগ, শোক, তাপ, প্রকৃতির নিরন্ত সংগ্রামে এবং মানুষের অত্যাচারে নিপীড়িত এই হতভাগ্য মধ্য আফ্রিকা। কিন্তু এখানেও জনজীবনে ভবিষ্যের তরঙ্গ এসে পৌঁচেছে – স্বাধীনতার জোয়ার লাগছে।
আমার গদ্য ছাপানো সম্বন্ধে কলকাতায় গিয়ে কথাবার্তা হবে।
হৈমন্তী চৌরঙ্গীতে আছেন, আমি এই মাসের ২৪/২৫ নাগাদ সেখানে যাব। বিরামবাবুকে প্যারিস থেকে ‘‘পালা-বদলে’’র প্রুফ পাঠিয়েছি।১ আশাকরি পেয়েছেন। উৎসর্গ যোগ করেছি 888sport appsের উদ্দেশে। গিয়েই বই দেখতে পাব আশা করছি। প্রীতি জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৪৮
Athens, Greece
14th August 1955
প্রিয়বরেষু, নরেশ,
এবারে অত্যন্ত স্বল্পসময়ের কলকাতা-বাস ভাগ্যে ছিল। তারও মধ্যে শান্তিনিকেতন আর ওয়াল্টেয়ার ঘুরে আসতে হলো। ঐ গরমে এবং ঘোরাঘুরির উত্তাপে বিভ্রান্ত অবস্থায় তোমাদের সঙ্গ পেয়ে খুব ভালো লেগেছিল। কত ঘণ্টা সুন্দর কাটল। দুঃখ করবনা : এই অল্পদিনেও দেশে যা বিশেষ ক’রে দেখতে শুনতে চেয়েছিলাম তার প্রায় কোনোটাই বাদ যায়নি। বিনোভাজির ভূ-দান যজ্ঞের প্রত্যক্ষ চেহারা চোখে দেখে এবং তাঁর সঙ্গে কথা ক’য়ে খুব শান্তি পেয়েছি। তাঁর সঙ্গে যেসব আলোচনা হয়েছিল ওঁদের একজন তার নোট নিয়েছিলেন, ওঁদের কোনো কাগজে বেরোবে। আমার মনেও কয়েকটি কথা গাঁথা হয়ে আছে। সুবিধামতো হয়তো লিখে রাখব। মৃত্যুর পরে ব্যক্তিগত অমরত্বের বিষয়ে তাঁর কী ধারণা তা নিয়ে প্রশ্নোত্তরে কিছু জেনেছি – Schweitzer-এর কাছেও Lambareneতে এই প্রসঙ্গ তুলেছিলাম এবং দিল্লী ছাড়বার আগে ডাক্তার রাধাকৃষ্ণনের কাছে। আমার জীবনের নানা গোচর অগোচর উপলব্ধির স্তর দিয়ে যে-দিকে চলেছি তার সঙ্গে অন্য পথিকদের সংবাদ মিলিয়ে নিতে ইচ্ছা হয়। আশ্চর্য এই যে, প্রত্যেকের উত্তরের পথ একটু স্বতন্ত্র; যুগে যুগে তাই ঘটে এসেছে। এই বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়েই হয়তো বোঝা যায় জীবনের পরম সন্ধান কোনো কথায়, এমন কি ভাবে বন্দী করা যায় না। শ্রেষ্ঠ ধর্মবাণী সেও ইঙ্গিত, এবং বিবিধ ইঙ্গিতমাত্র। তাই উপনিষদের কবি অনেক সময় বিরুদ্ধ বচন – নেতি এবং অস্তীতি – এই দ্বৈতের মধ্যে দিয়ে রহস্য উদ্ঘাটিত করতে চেয়েছেন। কেউ বা শান্ত নিরুত্তর হয়ে উত্তর দিয়েছেন, যেমন ভগবান বুদ্ধ। যে-সব শাস্ত্রে-পুরাণে কথার ব্যবসায়, সেখানে সত্য আচ্ছন্ন অন্তর্হিত হয়েছে, যেখানে মূর্তি এবং প্রতীক পান্ডার উপদ্রব সেখানে অমরত্ব কেন স্বাভাবিক জীবনও প্রায় মারা পড়ে। উড়িষ্যার প্রান্তে যেখানে আচার্য বিনোভা আজ মৈত্রী কর্মে অমরত্বের সন্ধি ব্যাখ্যা করছেন সেখানে ভারতবর্ষের সেবার ধর্ম, তপস্যার ধর্ম ফিরে এসেছে, – মৃত্যুজয়ী সেই ধর্ম। আশা করা যায় গ্রামের প্রাণকেন্দ্রে তিনি অনেকটা শক্তি সঞ্চার ক’রে যাবেন। তাঁরই বা আর কদিন বাকি।
কিন্তু প্রাণধর্মের অন্য সাধনা। যেখানে সমস্ত জাগ্রত চৈতন্য রাষ্ট্রে 888sport apkে যুক্ত ফলদায়ী, সেখানকারও একটি তপস্যার রূপ আছে এবং তাও ভারতীয় – তাকে কেবলমাত্র পশ্চিমী বলা যায় না, যদিও আজকের দিনে পশ্চিম জগতে তার আলো জ্বালিয়েছে। দ্বেষ দাবানলের অগ্নি এ নয়, এই জ্ঞানাগ্নি শান্তির প্রদীপে বৃহত্তর সংসারে উজ্জ্বল হয়ে দেখা দেবে আমাদের সেই ভরসা। সমগ্র পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এই মনাগ্নি ধ্যানাগ্নি বোধ হয় জওহরলালজির হাতে, তাঁর তুল্য শক্তি ও কল্যাণের বীর্যসাধক আজ বোধ হয় আর কেউ নেই। এবারে তাঁকে দেখে কথা কয়ে চমৎকৃত হয়েছি। আমার এবারকার সমস্ত 888sport slot game ঐ একটি অভিজ্ঞতায় সার্থক হত – মনে হয় এই জন্যেই হয়তো আমার দেশে আসবার দরকার ছিল। আফ্রিকার বেদনা বিষয়ে যা বলেছি তাঁর মন তখনই তাতে সাড়া দিল। পরের দিন দিল্লী বিশববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেবার সময়ে তিনি Schweitzerএর এবং আফ্রিকার বিষয়ে অনেক তথ্য ব্যবহার করলেন। Schweitzer বলেছেন atonement, – সেই প্রায়শ্চিত্তের কথা জওহরলাল তুল্লেন। সব দেশের ধর্মতন্ত্রের মধ্যে এই প্রায়শ্চিত্ত স্থান পেয়েছে।
Athensএর যাত্রীভরা হোটেলের বারান্দায় ব’সে তোমাকে এই চিঠি পাঠাই। Acropolossis-এর ধবধবে মার্বেল পাহাড়ের শীর্ষে দেখা দিচ্ছে প্রাচীন গ্রীক্ যুগের মূর্তির মতো – সহরের সব দিক থেকেই দেখা যায়। কাছেই পিরিউসের বন্দর, নীল গ্রীক্ সমুদ্র। হঠাৎ মনে পড়ে গেল এই পিরিউসে 888sport slot gameকালে একদা বাঙালি কবি রবীন্দ্রনাথ ভৈরবীতে গান বেঁধেছিলেন ‘‘ক্ষত যত ক্ষতি যত মিছে হতে মিছে’’। ঐ গানে ‘‘অরুণজলের প্রান্তে’’ প্রভাতী রবির অপরূপ উদয় সঙ্গীত আছে। ঐ গান আজ Athens-এ আমার কানে বাজছে।
প্রাচীন সভ্যতার একটি শুভ্র শাশ্বত ধ্বনি গ্রীসে এখনো শোনা যায়, অন্তত অন্তরের নিবিড় প্রস্ত্ততি দিয়ে। বাহিরের গ্রীক্ সভ্যতা কত বদ্লে গেছে। পঞ্জাবের গোলমালে বসে বৈদিক কালের রূপ দেখতে হলে বাহিরের দিক থেকে যেমন বিশেষ সাহায্য পাওয়া যায় না; কিন্তু আদর্শরূপে মানুষ তার অতীতকে বারে বারে ধরে রাখতে চায় সেটা ভালো। এখানেও সেইরকম অবস্থা। হয়তো ভারতবর্ষের অতীত প্রজ্ঞা আমাদের জীবনে নূতন রূপ নিয়ে অথচ পুরনো সংসর্গে ফিরে আসবে। গ্রীসেও তাই হোক।
বিরামবাবুকে বোলো এই দুই জায়গায় ‘‘পালা-বদল’’ যেন (আমার হিসাবে) পাঠান – ১) Dr M. K. Maitra 5, Roberts Lane, New Delhi 2) Debesh Das, ICS, 7, Curzon Lane, New Delhi।
তুমি ভালো আছ তো? প্রীতি জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
‘‘পালা-বদলে’’ একটি মাত্র ভুল এতদিনে চোখে পড়ল। ‘‘ইয়ং কল্যাণী’’ 888sport app download apkয় কথাটা শোক-ধ্বনি নয়, শ্লোক ধ্বনি। হয়তো ছাপার সময় টাইপ খসে পড়েছে।
অ-চ
পত্র ৪৯
BOSTON UNIVERSITY
BOSTON 15, MASSCHUSETTS
৪ঠা মে, ১৯৫৬
Amiya Chakravarty
Professor of Comparative Oriental Religions and Literature
প্রিয়বরেষু,
তোমাদের শুভবিবাহের নিমন্ত্রণ পেলাম। তোমরা দুজনে হৈমন্তী-র ও আমার আন্তরিক কল্যাণকামনা এবং অভিনন্দন জেনো। তোমাদের জীবন আনন্দের মঙ্গল আলোয় ধন্য হোক্, সার্থক হোক্।
সামান্য একটি উপহার জাহাজ-ডাকে তোমাদের নামে আমরা পাঠালাম।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৫০
August 6
1956
Paramaribo, Surinam, Dutch Guiana
Latin America
প্রিয়বরেষু
ঘুরতে ঘুরতে সূরীনামে এসেছি – মনে হচ্ছে চেনা পৃথিবীর অন্য ঘরে একটি দরজা খুল্ল। সাম্নে আট্লান্টিক আদিগন্ত, – নীল-তরঙ্গিত; এপারে ঘন আরণ্যিক নদীতীরে কোথাও ক্ষীণ জলরেখা, বেশির ভাগই গহন মানবহীন।
এইখান থেকে অন্ত-তীর্থের আমেজ-লাগা দুতিনটে 888sport app download apk তোমার কাছে পাঠাই।
এইসব দেশে অলগ্ন গোছের ভারতীয় সম্প্রদায় ছড়ানো। কোথাও তাদের সংস্কৃতি আজও দীপ্যমান, কোথাও বা আখের ক্ষেতে, জলমগ্ন ধানের চরে সহরের কারখানায় প্রাচীন দাসত্বের ধারাবাহী, ক্ষীণ। এ বিষয়ে এখন কিছু লিখব না। কারণ বলার কথা অনেক। পাশাপাশি আফ্রিকান্ বন্দী-দাস বংশাবলী, ‘‘মুক্ত’’ হয়েও আজ পর্যন্ত অন্যের ইচ্ছাধীন। আদিম, অসহায় ‘‘আমেরিন্ডিয়ান্দের’’ অবস্থা ব্রিটিশ গিয়ানা, এবং ডাচ্ সূরীনামে অন্তিমের রেখায় গিয়ে ঠেকেছে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপগুলোতে বহু স্থানে তাদের সমূলে ধ্বংস করা হয়েছিল। চিহ্নমাত্র নেই বা দুচারটি পরিবার কোথাও বা ডুবে আছে।
প্রাকৃতিক বিপুল মাধুর্য এবং অবিশ্বাস্য সুন্দরশ্রী সমুদ্র, মাটি, গাছের চিত্রসন্ধির সংসর্গে মানুষের এই তীব্র ভাগ্য বিপর্য্যয় জেনেও মনে গ্রহণ করা যায় না।
আশা করছি তোমাদের সংসার কল্যাণ মধুময় ধারায় বয়ে চলেছে।
প্রীতি জেনো
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
ধর্মতার্কিক ব্রাহ্মণকে একদিন প্রশ্নোত্তরে
কিছুই না ব’লে
কী কথা গেলেন তিনি ব’লে
ভগবান বুদ্ধ, হাতে তুলে ধ’রে
পদ্মটি, আলোয় তুলে ধ’রে\
ত্রিনিদাদ
পোর্ট্-অফ্-স্পেন্
জুলাই ২৬, ১৯৫৬
ওঁ কৃতং স্মর
জ্বালানি-কাঠ, জ্বলো
জ্বল্তে জ্বল্তে বলো
আকাশতলে এসে –
‘‘আঙার হলো আলো
আঙার হলো আলো,
পুড়ল কাঠের কালো
পুড়ল কাঠের কালো,’’
নীল সন্ধ্যার শেষে\
বার্বেডোস্ দ্বীপ
ক্যারিবিয়ান্।
জুলাই ১৫, ১৯৫৬
পত্র ৫১
BOSTON UNIVERSITY
BOSTON 15, MASSCHUSETTS
১২ অক্টোবর ১৯৫৬
Amiya Chakravarty
Professor of Comparative Oriental Religions and Literature
প্রিয়বরেষু
তোমার চিঠি ট্রিনিডাড ঘুরে বস্টনে আমার হাতে পৌঁচেছে। ঐ চিঠির সঙ্গে সঙ্গে সোনালি দ্বীপের নতুন পরিচিত আবহাওয়ায় আরেকবার উড়তে পারলে খুশি হতাম। মানুষের একটি জীবন, একটি হৃদয় কতটুকুই বা, – অথচ পৃথিবীর ঘরে ঘরে তাকে ছড়িয়ে দিয়েও শেষ হয় না; সম্প্রতি ক্যারিবিয়ানের কত নারকল গাছ ঘেরা কোরাল দ্বীপে নিজের প্রাণখন্ড রেখে এসেছি। তোমার চিঠির ঠিকানাটুকুতেই কত ছবি জেগে উঠল কিন্তু সচেতনায় তাদের মূর্তি ফিরে তৈরি হবে না – জীবনের স্রোতে সেইসব 888sport sign up bonusময় ট্রিনিডাড, গ্রেনাডিন, বার্বেডোস, হেইটির সামান্য দেখাজানার অনন্ত ঐশ্বর্য কোথায় নিয়ে চলব তাই ভাবি। এদিকে দ্বীপে ছায়া ক’রে আসে, চেনা মানুষ হয় অদৃশ্য, নিজের ঘরেও দরজা জানালা কোনদিন সব বন্ধ হয়। বিচিত্র ব্যাপার; যতই সংসারের পথে ঘুরে বেড়াই ততই অবাক্ হয়ে ভাবি, এর মধ্য দিয়ে কী বলা হচ্ছে। 888sport app download apkয় আমরা সেই ধ্বনির ইশারা ধরতে চাই কিন্তু এ যেন প্রজাপতির পাখায় আকাশকে ধরার মতো। তবু তাও করতে হয়।
তোমার চিঠিতে মনে হল আত্মপ্রতিষ্ঠিত একটি নূতন দৃঢ়তায় তোমার জীবন গাঢ় হয়ে উঠছে। নিজেকে অতিমাত্র বিচার ক’রে, যাচিয়ে, সামাজিক সম্বন্ধের নানান্ ওজনে তৌল ক’রে কোনো বিশেষ ফল পাওয়া যায় না। আত্মসংবাদ যেখানে-সেখানে বিতরণ করে কেবল দাম হারাতে হয় এই ধ্রুব সত্য শিখতে আমার দেরি হয়েছিল। কিন্তু সহজ যাতায়াতের পথে নিজেকে ভুলে গিয়ে যখন জীবনকে চালনা করতে পারি তখন শুধু বাহিরের সঙ্গে নয়, নিজের সৃজনধর্মী অন্তরলোকের সঙ্গে মেলবার আঙন খুলে যায়। আপনা হতে তখন গান আসতে থাকে, বিশ্বের তাগিদ তখন বহুধা শক্তির প্রয়োগে গ্রহণ করা এবং তার দাবি রক্ষা করা সম্ভব হয়। মনে হচ্ছে জীবনের নূতন যুগ্ম পরিণতির ফলে এই উদার, আত্মমুক্ত, নির্মল নিজত্ব তুমি বিশেষভাবে অধিকার করেছ। – কাউকে আর বলতে হবে না, এমনিতেই লোকে তোমায় চিনে নেবে, সংযত সমাহিত সেই প্রসন্ন প্রকাশের বেলা তোমার উন্মুক্ত। তার পরিচয় সাধারণ ব্যবহারে এবং 888sport app download apk বা 888sport app লেখার আচরণে সবাই জানতে পারবে, তুমি আনন্দ পাবে। তা ছাড়া প্রতিদিনের কত কাজ শেষ করতে হয়, উপার্জনের জন্যে, সংসার চালনার জন্যে। সেই কাজের দৈনিক প্রবাহ সৃষ্টিশীলতার পরিপন্থী নয়, সহায়কারী। কাজ যদি নিতান্ত স্বভাববিরুদ্ধ বা অত্যন্ত ক্লান্তিকর হয় তাহলে অন্য কথা। তুমি এতদিনে সত্যি ভালো কাজও পেয়েছ।
তোমাদের কাছে যে জাপানী 888sport app download apkর সজ্জিত বইখানি পাঠিয়েছিলাম তা এখনো পাওনি শুনে বিষণ্ণ হলাম। হয়তো ওখানকার পাকে-চক্রে পোস্টাপিসে বা অন্যত্র সেই আশীর্বাদের এবং স্নেহের স্মারক বইখানি হারালো। এসব বিষয়ে পশ্চিমের বিশ্বাসযোগ্যতা ঢের বেশি তা স্বীকার করতে হয়; দেশে পাঠানো বই ক্রমাগত যে-ভাবে ঐ তীরে মারা পড়ে তা এখানে সম্ভব হত না। আরো কিছুদিন অপেক্ষা ক’রে অন্য কোনো নিদর্শন পাঠাতে চেষ্টা করব, কিন্তু পৌঁছবে কি। এখান থেকে ভারতবর্ষের বই insure করাও যায় না, শুধু এম্নি book post।
দেশে শ্রীমতী জনশ্রুতির আধিপত্য ক্ষীণ হয় নি দেখতে পাচ্ছি। যাদবপুরে যাবার জন্যে কস্মিনকালে কর্তৃপক্ষের চিঠিও পাইনি, নিমন্ত্রণও আমার কাছে পৌঁছয়নি। সুতরাং তোমরা গত গ্রীষ্মকালে আমার যাদবপুরে পদপ্রাপ্তি বিষয়ে যা-কিছু শুনেছ তা শ্রীমতী জনশ্রুতির কীর্তি; তার চেয়ে বেশি বাস্তবতা তার মধ্যে নেই। সে যাই হোক, এদিক থেকেও আমি বহু কর্মজালে নিবিড় বদ্ধ, এর থেকে ছুটি পাওয়া আমার পক্ষে সহজ হত না, হবে না, অথচ কোনো প্রসঙ্গে অন্তত কিছুকালের জন্যে দেশে ঘুরে আসবার জন্যে মন অধির হয়ে ওঠে। প্রায় চার মাস, জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এখান থেকে গ্রীষ্মের ছুটি পাই, কিন্তু ঘরে ফেরার উপায় বা উপলক্ষ্য জোগাড় করা সহজ নয়। তাই হয় ক্যারিবিয়ান নয় আফ্রিকা, ইত্যাদি ভারতবহির্গত অঞ্চলে ছুটি খরচ করি। দেখি পরের বছর কী ঘটে। এই নবেম্বরে ইউনেস্কোর সভায় দিল্লী থেকে নিমন্ত্রণ পাওয়া কঠিন হত না, কিন্তু এ সময়ে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে পূরো কাজের সময়, একটুও ছুটি মেলে না বেশি দিনের জন্যে।
আমার আরেকটা 888sport app download apk গ্রন্থ বার করবার মালমশলা জমে উঠেছে – অনেক ঘনিষ্ঠ কারুকাজখচিত 888sport app download apk তৈরি হল যা মাসিকপত্রে অভ্যাসগত ভাবে না ছড়িয়ে বইয়ের সংহত ঐক্যে ছাপানো উচিত। কলকাতায় নতুন কোনো প্রকাশকের কোনো সন্ধান কি জানো? নাভানা বৎসরযাপী সম্পূর্ণ অসহযোগ নীতি রক্ষা করেছেন : তাঁদের দরবারে বৃথা উপস্থিত হয়ে কাল এবং পরমায়ু – মানের কথা ছেড়েই দিলাম – ক্ষয় করতে চাই না। সিগ্নেট প্রেস যদি দূরযানী বইখানাকে পাঠকদের চোখে ফিরিয়ে আনেন তাহলেই যথেষ্ট পরিতোষ লাভ করব। তাঁরা গদ্য ছাপবার ভার নিলে আমার দাবি পূরণ হয়। যদি দেশে থাকতাম তাহলে নিজেই নিজের বই ছাপানোর ব্যবস্থা করতাম, কিন্তু এখানে ব’সে তা হয় কী করে। সেরকম ব্যবসা চালাতে গেলে কেবল কলকাতার সূতীক্ষ্ণ ইঁদুর সমাজকে প্রশ্রয় দেয়া হবে মাত্র, কারণ বইয়ের স্তূপ কোনো ভাড়া-করা পাতালের ঘরে স্তূপীকৃত হয়ে প’ড়ে থাকবে। মাশুল দিয়ে বই ধ্বংস করবার সেই সদুপায় কীরকম তা নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই জেনেছি। জীবনে প্রচুর অভিজ্ঞতা জমা হয়; জমা হওয়াই তার হেতু এবং উদ্দেশ্য এ কথা জানি। কিন্তু যদি দৈবক্রমে পূর্ব অভিজ্ঞতার ফলে চক্ষু খুলে যায় তাহলে জোর ক’রে তাকে বন্ধ করাও চলে না। অতএব মধ্যে মধ্যে ভাবি কোথায় সেই প্রকাশক, যিনি সহজ ব্যবহার এবং সহজ ব্যবসায়ের ফলে দুটো চারটে 888sport app download apkর বই ছাপিয়ে লেখককে দায়মুক্ত করবেন। যদি ইংরেজিতে লিখতাম তাহলে মাস খানেকের মধ্যেই ঝক্ঝকে একটি সুদৃশ্য বই ছাপতে কিছুই বিলম্ব হতো না, কিন্তু আমি তো ইংরেজিতে কাব্য-লিখিয়ে নই। এটা আক্ষেপের সুরে বলা আমার উদ্দেশ্য ছিল না, মনে ছিল অনুসন্ধানের ইচ্ছা। তুমি যদি কোনো সঠিক খবর পাও, জানিয়ো। কিন্তু এ নিয়ে নিজের মাথায় কিছুমাত্র পরিশ্রম জমিয়ো না।
পালা-বদল ‘‘রবীন্দ্র 888sport app download bd’’ পেয়েছিল সে বিষয়ে বুদ্ধদেববাবুর কাছ থেকে জেনেছিলাম। 888sport app download bdদাতা সমিতি বা কোনো কর্তৃপক্ষ বিশেষ কেউই কোনোদিন আমাকে একটুও জানান নি। খুবই আশ্চর্য লাগে কেন, এবং কী কারণ। যাই হোক, এই সূত্রে আরো দু-দশজনের চোখে বইটা পৌঁছলে লেখক হিসেবে আমি খুসি না হয়ে পারি না।
ডিলান্ টমাস্ এবং য়েট্স্-এর 888sport app download apkর বিশাদ ব্যাখ্যা সম্বলিত কোনো ভালো বই পেলে তোমার কাছে পাঠিয়ে দেবো। ডিলন্ টমাস্ খুব যে গভীর তা নয়, সৃষ্টিপ্রতিভার বিষয়ে অনেক বাড়াবাড়ি প্রশস্তি বেরিয়েছে তাঁর হঠাৎ মৃত্যুকে অবলম্বন ক’রে। কিন্তু খাঁটি 888sport app download apk তিনি কিছু লিখে গেছেন যাতে সৃষ্টির আলো লেগে আছে, সহজে নিভবে না। বড়োই অসম তাঁর রচনা, যেমন অসম অস্বাভাবিক ছিল তাঁর অসংযত মাদক জীবন। কিন্তু গাঢ় নির্মল কাব্যধারা তাঁর লেখায় তুমি অনুশীলন ক’রে দেখো। তুমি গদ্যসমালোচনা খুব ভালো লিখছ, তোমার কলমে ডিলন্ টমাস্-এর আলোচনা উপভোগ্য হবে। সহজ প্রবল তোমার গদ্য ভঙ্গিকে ঘোরালো বাক্-যুদ্ধের বিকারে অনর্থক জটিল হতে দিয়ো না। যথার্থ সৃষ্টিশীল মনের গভীর লাবণ্য আমাদের চল্তি বাংলাভাষায় কত আশ্চর্য মননশীল গূঢ় সহজচারিত্বে দেখা দেয় তার পরিচয় দূর থেকে মধ্যে মধ্যে পাই। তোমার গদ্য তার নিপুণ উদাহরণ। এই পথে তোমার প্রতিভা গভীর ব্যক্ত হোক।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পুনশ্চ : –
হেমন্তী-দের ঠিকানা তুমি কলকাতায় ব’সে সংগ্রহ করতে পারোনি এতে বোঝা যায় ডিটেক্টিভ্ বিদ্যায় তোমার পারদর্শিতা নেই। তালুকদার বাড়িতে বা পুলিন সেনের কাছে বা সেই চৌরঙ্গীর মুখার্জিদের ফ্ল্যাটে জিজ্ঞাসা করলেই ঠিকানা পেতে। পৃথিবীর অপরপ্রান্ত থেকে ঠিকানা জানাই – Parvati House, Inner Circle Road, Jamshedpur, Bihar। ওরা তোমার খবর পেলে খুশি হবে \
পত্র ৫২
Boston University
Boston, Mass
Nov 18/ 1956
কল্যাণীয়েষু
নরেশ
জানি না এই দুর্যোগের সময় চিঠিপত্র আরব্য অথবা মধ্য ধরণীর অন্য ভূখন্ড পেরিয়ে তোমার হাতে পৌঁছবে কিনা।
আমার বিশেষ জিজ্ঞাসার বিষয় ছিল শ্রীযুক্ত সঞ্জয় ভট্টাচার্য কেমন আছেন? বুদ্ধদেববাবুর চিঠিতে তাঁর একান্ত দুরবস্থার কথা শুনে আমি তাঁর জন্যে কুড়ি ডলারের একটা চেক্ বুদ্ধদেববাবুর কাছে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু সেই চেক্-এর প্রাপ্তি সংবাদ বা অন্য কোনো চিঠি বহুদিন বুদ্ধদেববাবুর কাছ থেকে পাইনি। হয়তো এই গোলমালে চিঠিপত্র খোওয়া গিয়েছে। তুমি সঠিক সন্ধান নিয়ে এ বিষয়ে আমাকে জানালে খুশি হব। কেননা বিশ্বযুদ্ধ বা সংসার-জোড়া নরঘাত সম্ভাবনার কালেও ব্যক্তিবিশেষের দুঃখ এবং অভাব একই থেকে যায়, চাপা পড়ে না। যদিও জাগতিক উত্তেজনার কালে পাড়ার কারো দুঃখযন্ত্রণার কথা ভোলার বিপদ আছে। সঞ্জয়বাবুর বিষয়ে আমাকে জানিয়ো। বুদ্ধদেববাবুর চিঠিতে তাঁর কথা শুনে অত্যন্ত ব্যথিত বোধ করছি।
আশা করছি বিবিধ চতুর হন্যতার ষড়যন্ত্র সত্ত্বেও চারদিকে আগুন লাগবে না। মিশরে হোক্, হাঙ্গেরিতে হোক্, যেখানেই মানুষ অত্যাচারিত হয়, বিশ্বাস আক্রান্ত আমাদের মন ও চিত্ত দুঃখীর দিকে, আক্রমণকারীর দিকে কখনো নয়। দুরূহ সমস্যার মধ্যে থেকে কৃষ্ণ যেমন গভীর নৈতিক শক্তি ও অন্তর্দৃষ্টি দেখিয়েছেন – (পন্ডিত নেহেরুর তো কথাই নেই -) কিন্তু U.N-এর বাক্-যুদ্ধের আঙিনায় তিনি হাঙ্গেরি সম্বন্ধে আমাদের বেদনাকে অতটা একান্ত স্পষ্ট ক’রে ধরেননি যেমন করা উচিত ছিল। একথা ঠিক যে বিপদের সময় সবচেয়ে দরকার আহত দেশ বা সমাজের দিক থেকে ভাবা, – কিসে তাদের জন্যে শ্রেষ্ঠ বিধান করা যায় – তাদের আপন অবস্থার মধ্য হতে ভবিষ্যতের এমন কি আশু ফলের ব্যবস্থা যথার্থ তৈরি হয়। গান্ধীজি বারে বারে বলতেন, তোমরা অন্যের দুঃখকে নিজের উত্তেজনার কাজে লাগাতে চাও এমন কি দলের কাজে লাগাতে চাও। অথবা কেবলমাত্র কথার চরিতার্থ খোঁজো, অথবা বদান্যতার। মেনন-এর সঙ্গে আমার দীর্ঘ কথাবার্তা হয়েছে, তিনি আসলে কোমল স্বভাব মানুষ, হাঙ্গেরির অসহ দুঃখে তাঁর চিত্ত জর্জরিত। কিন্তু অতি দ্রুত হাঙ্গেরির স্বাভাবিক রুশ-বিদ্রোহ যে-ভাবে পারস্পরিক হাঙ্গেরিয় অবর্ণনীয় তুমুল অমানুষিক হত্যা-বিলাসে পরিণত হল (যেমন হয়েছিল ভারতবর্ষে সেই সর্বভীষণ হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গায়) তাতে তিনি ঠিক ভাবে কী বলবেন মনস্থির করতে পেরে একটু বেশি সাবধান হয়েছিলেন। সব সময়েই এই হয় – এ তাঁর অজানা নয় – যে-কারণে আগুন লাগুক না কেন শত সহস্র দুর্বৃত্তের দল আগুনের পরিধি বাড়িয়ে দেয়, লুঠতরাজ, প্রতিবেশী যা বলেছেন তা-অতি সত্য। হাঙ্গেরির প্রথম ও দ্বিতীয় হত্যাকান্ডের পর্য্যায়ের পর এখন যে শক্তিমান অসহযোগ দেখা দিয়েছে রুশের বিরুদ্ধে, তা বন্দনীয়। এই তৃতীয় অবস্থায় আমরা সকলেই তাদের সম্পূর্ণ সমর্থন করতে পারি এবং UNএ তাই করছি। আমি বার UNএ গিয়েছি। কাল অসহযোগ কিভাবে নিয়ন্ত্রিত না হয়ে যে-কোনো হাঙ্গেরিয় গভর্নমেন্টের বিরুদ্ধে চালিত হবে। তাতে খুব সুফল হবে না। কীভাবে হাঙ্গেরি রুশ রাষ্ট্রের সঙ্গে সব চুক্তি ইত্যাদি থেকে মুক্ত হয়ে ভৌগোলিক ঐ বিশেষ সংস্থানে সম্পূর্ণ নূতন ব্যবস্থা গড়বে তা বলা শক্ত। সবাই এ বিষয়ে চিন্তা করছেন, বিশেষভাবে নেহেরু, এবং এদেশের অনেকে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এদেশে এবং য়ুরোপে স্বাভাবিক রুশ-রাষ্ট্রবিরোধিতাকে ফেনিয়ে ফাঁপিয়ে উত্তেজক দৈনিক রোমাঞ্চকর ঘটনায় পরিণত করা হয়েছে। যারা ভুক্তভোগী refugee তাদের নিয়ে প্রকান্ড ফুটবল খেলার মতো দর্শনীয় আয়োজনের ব্যাপার। অবশ্য এরই সঙ্গে একান্ত নম্র দুঃখিত জনসাধারণের অন্য ব্যাপারও লক্ষণীয়। কিন্তু মিশরের হতাহতের জন্যে কেউ চাঁদা তোলা বা খবর কাগজে লেখা পর্যন্ত দরকার মনে করেননি। ভারতবর্ষ থেকে এর একমাত্র উত্তর এই যে, আমরা কোনো পার্থক্য বিচার করব না যথার্থ দুঃখীদের মধ্যে। হাঙ্গেরিতে কম্যুনিস্ট ব্যাপার অনেকদিনের আধিব্যাধি, কিন্তু আজকের civil war এবং freedom war-এর মিশ্রণে তারা নূতনভাবে নিদারুণ নিঃস্ব। আমরা সব জেনেশুনেও দুঃখীদের দিকে, এবং সেবার সহায়তার দিকে তা বলাই বাহুল্য। তিন তিনটে দেশের বিশ্বাসঘাতী সামরিক বর্বর সম্প্রদায় কীভাবে মিশর বধে নামল ভেবে স্তম্ভিত হতে হয়। অবশ্য কোনোটা war, civil war আমরা মানি না।
মিশর অনেক ভুল করেছিল – অন্য দেশও করে – কিন্তু এই কি প্রতিবিধানের উপায়! একেবারে জন্তুর অধম ব্যবহার।
প্রীতি জেনো
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৫৩
BOSTON UNIVERSITY School of Theology
BOSTON 15, MASSACHUSETTS
১৮ই মার্চ, ১৯৫৭
Dr Amiya Chakravarty
Professor of Comparative Oriental Religions and Literature
প্রিয়বরেষু
কয়েক মিনিট আগে তোমার চিঠি পেলাম। এর আগে তোমার কোনো চিঠি পাই নি কয়েক মাসের মধ্যে, সুতরাং হার্ভার্ড্ সেমিনার সম্বন্ধে তোমার চিঠি পথে কোথাও হারিয়েছে। বস্টনে পৌঁছে কোনো চিঠি কখনো আমার হারায় নি।
আজ ১৮ই মার্চ, তোমার আবেদন পত্র এবং প্রশস্তি পত্রাদি ১৫ই মধ্যে পৌঁছনর কথা। তাই এখন আমি কিন্তু কিছু লিখলে কোনো ফল হবে কি না জানিনা। বোধ হয়, নয়। কিন্তু তবু Director Henry Kissingerকে আজই লিখছি, – যদি বা এটা অযথা মনে করেন তাতে কোনো ক্ষতি হবে না।
তুমি দুমাস এদেশে ঘুরে গেলে খুবই ভালো হয়। দুমাসে যথেষ্ট দেখতে শুনতে পাবে – নতুন অনেক দিগন্তের স্পর্শ পাবে। খুবই আশা করি তোমার আসা সম্ভব হবে।
যে-সময়ে তোমার আসার সম্ভাবনার কথা বলেছ সে-সময় আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রীষ্মের ছুটি। সেই সময়টা দূরে দূরে ঘোরাঘুরি করি, তাছাড়া এবারে হয়তো refugee problem সংক্রান্ত কাজে কিছুদিনের জন্যে Hungary এবং Polandএ যাব। যদি সেপ্টেম্বরের প্রথম কদিন পর্যন্ত থাকো তাহলে এদেশে ফিরে দেখা হবে।
‘‘নাভানা’’র কাছ থেকে আমি দেশ ছাড়ার পর থেকে কোনো চিঠি পাইনি। আমার নতুন 888sport app download apk বই কবে ছাপবার বিষয়ে ভেবে দেখব – বেশ কিছু জমে উঠছে। ‘‘888sport app download apk’’য় তোমার রচনা পড়ে বরাবরই গভীর আনন্দ পাই। আজ এই চিঠি সঙ্গে সঙ্গে পাঠিয়ে দিই। তোমরা আমার অন্তরের কল্যাণ জেনো।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৫৪
Boston University, Boston, Mass USA
April 25/ 57
নরেশ গুহ
সত্যেন দত্ত রোড, কলকাতা
প্রিয়বরেষু
শেষ পর্যন্ত তুমি টাইফয়েডে শয্যান্বিত; মন্দের ভালো এই যে ঐ ব্যাধি সচরাচর দুইবার হয় না সুতরাং বিশেষ অতিথিটিকে বিদায় দিয়ে সামান্য কৃতজ্ঞতার সেলাম ঠুক্তে পারো। ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ আরোগ্য লাভ করেছ; হয়তো বা বিছানার প্রান্ত থেকে দেখা শরীরমনের বিশ্বটি তোমার কাছে চাঁদের ষোলো কলার মতো ধীরে ধীরে নবমূর্ত আলোয় ফিরে এসেছে। তোমার চিঠিতে স্নিগ্ধ অপরূপ সেই আবির্ভাবের সুখ ফুটে উঠেছে মনে হল। সাবধানে থেকো, কেননা দীর্ঘ দুর্বলতাকে হঠাৎ জয় করার চেষ্টা ঠিক নয়। পুনরুজ্জীবনের স্বাভাবিক ছন্দকে মানা ভালো। মার্কিনে ব’সে তোমার পথ্যের কথা মনে ক’রে ঈর্ষা হচ্ছে – কী জানি তোমার ভাগ্যে কই মাছের ঝোল, ঘরে-পাতা দই, কাগ্জি-লেবুর রস বিধান হয়েছে কিনা, তাছাড়া বাংলা রান্নার নিপুণ সুস্বাদু আরো কতরকম ভোজ্য তোমার সেবায় পৌঁচেছে নিশ্চয়। মনে রেখো ডবল টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েও বিজয়ীদশায় তুমি এখানে শুক্তোনি, কচি পটল, বা একটু ঘিয়ে-ছোঁয়া মুগের দাল পেতে না। নানারকম টিন থেকে উন্মুক্ত খাবার তোমার পাতে পড়ত। আরোগ্যের সেই 888sport app download bd যতোই মহার্ঘ্য হোক না কেন ডলারের দামে বাংলার ব্যঞ্জন, বাংলার অমৃত বায়ু কিছুতেই ধরা দিত না। সংসারের লাভলোকসানের অঙ্কে ছোটখাটো অসীম তৃপ্তির হিসাব যোগ করতে আমরা ভুলে যাই। কবি হয়ে তুমি তা কখনোই ভুলতে না। আত্মীয় বন্ধুজনের সেবার হাত, স্নেহদৃষ্টিকেও তুমি সেই পরম তৃপ্তির পরিপূর্ণতারূপে গ্রহণ করে ধন্য হবে। এখান থেকে আমাদের কল্যাণইচ্ছা তোমার সেই ভান্ডারে যুক্ত হোক্।
একটি ক্ষুদ্র গীতি888sport app download apk তোমাকে পাঠাই। এক এক সময় মনে হয় জীবনের যেখানে এসে পৌঁছেছি সেখানে অভিজ্ঞতার সামান্যতর ধ্বনিকে 888sport app download apkয় ঝংকৃত ক’রে তোলা সম্ভব। যেমন ক’রে মোহানার কাছে যেতে যেতে সব সুরেই সাগর সঙ্গমের অনুরণন মিশে যায়, – হয়ে ওঠে সাগর সঙ্গীত। দ্বীপের 888sport app download apk তোমাকে দিলাম। তোমরা দুজনে হৈমন্তীর ও আমার প্রীতি জেনো – অল্প ক’দিন হল হৈমন্তী এখানে এসে পৌঁচেছেন।
তোমাদের
অমিয় চক্রবর্তী
Hotel Roosevelt, New York
দ্বীপান্তরে
অমিয় চক্রবর্তী
ভেবেছি ওড়াব মানস বাতাসে ফিরে
তোমার সবুজ চুলে ঢেউ তুলে
মৃদু শিরি শিরি, কোরাল দ্বীপের বাসী
ওগো নারকল, সারি নারকল, একাকী সিন্ধুতীরে।
দিগন্ত ধ’রে দেখছ আয়না, এলেম যখন কূলে
তখনো স্বপ্নে চারু নীল ঢেউ মর্মরে রাশি রাশি
সেই গ্রেনাডিনে, দ্বীপ গ্রেনাডিনে, শূন্য তোমায় ঘিরে,
ওগো নারকল, একাকী সিন্ধুতীরে।
তখন সময় ছিল না কিছুই দেবার
শুধুই সময় ছিল সে দৃষ্টি নেবার
ওগো নারকল সারি গো, সিন্ধুনীরে।
কত যে আর্দ্র ছিল বুক, কথা বন্ধ হবার মতো
হাওয়াই আকাশে ছুটে চলা অবিরত,
আলাপের তালে তবু সে সকালে
মিলেছি মাটির চলে-যাওয়া মন্দিরে –
ওগো নারকল, একা নারকল সারি গো সিন্ধুতীরে \
পত্র ৫৫
FEBRUARY 14, ’58 Semiramis Hotel
C. R. CAIRO 182 [As from Boston University]
প্রিয়বরেষু,
তোমাদের সুন্দর আতিথ্য এবং গভীর সৌজন্যের স্পর্শ প্রাণে নিয়ে এলাম – এবারকার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ক্ষণিক হলেও এই রকম অভিজ্ঞতা সঞ্চয় ক’রে ধন্য হয়েছি। ইলিশ মাছের ঝোল আর চিনি-পাতা দই তোমাদের ওখানে বহুদিন পরে স্বাদ করা গেল, তার সঙ্গে ছিল তোমার নতুন সংসারের আনন্দিত পরিবেশ এবং বাংলা ভাষায় মন-খুলে আমাদের কথাবার্তা আপন আত্মীয় বন্ধু পরিমন্ডলে। বাংলা ভাষা শুধু যে বাংলার চিরন্তন ভাষা তা নয়, মাতৃভাষার আনন্তিক মূল্যে তার শিকড় আমাদের প্রাণসত্তায় সুদৃঢ়। মনে হল অতি অল্প কয়েকদিনেও সেই অপরিসীম সত্তার পরিচয় নিবিড় নূতন হয়ে আমার আধুনিক পথিক জীবনে সঞ্চারিত হল। সুদূর বিদেশে ফিরছি মনে আরেক স্তর পলি-মাটি সংগ্রহ ক’রে, – আশা করি দুচারটে প্রবাসকুসুম বাংলা 888sport app download apkয় ফোটাতে পারব।
বুদ্ধদেববাবু ও তোমার সঙ্গে বাংলা ভাষা ‘সমস্যা’ নিয়ে কথা বলে বিশেষ উপকৃত হয়েছি।১ বাহির থেকে বিপদের চেহারাটা ঠিক বুঝতে পারিনি। অন্নদাশঙ্করবাবুও প্রশ্নটার নানাদিক আমার কাছে তুলে ধরেছিলেন। আমার বিশ্বাস আপন মাতৃভাষা নিজের মাতৃভূমিতে ব্যবহার করাটা কোনো সত্যিকার সমস্যার অন্তর্গত নয়। কিন্তু উপস্থিত কিছু রাষ্ট্রিক দুর্যোগের অনিশ্চিত ঝড়হাওয়া বাংলা ভাষার ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় প্রয়োগ ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে – দিয়েছে – যেমন বাঙালির মর্মজীবনের অন্য নানা ক্ষেত্রে বহু আঘাত পৌঁছেছে এবং পৌঁছবে।
আমি সর্বাংশে তোমাদের সঙ্গে একমত বাংলা ভাষার সম্পূর্ণ অধিকার সম্বন্ধে – সে কথা বলা বাহুল্য হলেও বলছি। জওহরলালজি দৃঢ়কণ্ঠে আমাকে বললেন বাংলাভাষা national language ; যেমন আরো কিছু মৌলিক গভীর প্রতিষ্ঠিত ভারতীয় ভাষাও ভারতের national language। হয়তো ব্যবহারিক প্রক্রিয়ার জন্যে Federal Centreএ হিন্দিকে সামান্য কিছু প্রাধান্য দিতে হবে, কিন্তু তার ক্ষেত্র সংকীর্ণ। Federal Centreএ ইংরেজি এবং হিন্দি দুইই চলবে কিছুদিন – সেই কিছুদিন কত কাল, কত বৎসর কেউ বলতে পারে না। ঠিক এখন ইংরেজির সঙ্গে সঙ্গে একটির চেয়ে বেশি ভারতীয় national ভাষা ব্যবহার করতে গেলে আমাদের রাষ্ট্রিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নানা জটিলতা দুরূহ হয়ে উঠবে। জওহরলালজির মনে লেশমাত্র সন্দেহ নেই যে বাংলার মতো চিরকালীন আশ্চর্য সমৃদ্ধ ভারতীয় national ভাষা নূতন ভারতে আরো সৃষ্টিশীল শক্তিশালী হয়ে উঠবে। সেই ধ্যান বিশ্বাস নিয়েই তিনি ভারতের বিচিত্র ভারতীয় রূপ প্রতিষ্ঠার সহায়তা করছেন। গুরুতর রাষ্ট্রিক কারণে Federal Centreএ যদি কোনো ভারতীয় national ভাষাকে (ইংরেজির সঙ্গে সঙ্গে) ব্যবহার করতে হয় তার দ্বারা ভারতের কোনো মহাভাষার লেশমাত্র ক্ষতি হবে না এ বিষয়ে তিনি নিঃসন্দেহে। দিল্লী থেকে ভাষার মারফতে ভারতীয় কোনো [?] জুলুম করা বা অন্যায় অধিকার বিস্তার করার কথা তিনি ভাবতেও পারেন না। ওরকম সম্পূর্ণ অবিচার তাঁর মানসের বহির্গত, তাঁর চিত্তের পক্ষে অগ্রহণীয় [?], আবার স্পষ্ট জানতে পেরে খুব তৃপ্তি পেয়েছি। উগ্র হিন্দি [?] তাঁর সমর্থন পাবে না, অধিকতর সম্পূর্ণ বিরোধই পাবে। মোটের উপর রাষ্ট্রের যথার্থ দায়িত্ব যাঁদের হাতে তাঁদেরও মত এই। তবে বাংলায় বা দিল্লীতে অবিবেচক অন্যায়কারী রাষ্ট্রিক ব্যক্তি ভাষাকে বা ধর্মকে বা সংস্কৃতিকে যে কোনো লাঠিয়ালদের ষড়যন্ত্রে কখনো ব্যবহার করবেন না তার নিশ্চয়তা নেই বলা বাহুল্য। সেই জন্যে তোমরা বাংলা ভাষা নিয়ে যে আন্দোলন এবং সতর্কতা জাগিয়ে তুলেছ তার বিশেষ প্রয়োজন আছে। কিন্তু দেখো যেন বাংলা ভাষার সমর্থক রূপে আমরা ভাষাকে নিশান বা যষ্ঠির কাজে ব্যবহার করবার বিপদে না প্রবেশ করি। যতদূর সাধ্য আমরা-888sport live footballিকরা এ বিষয়ে খুবই যেন অন্তর্দৃষ্টি এবং দূরদৃষ্টি নিয়ে চলি। আমাদের পরাজয় হতে পারে না, হবে না।
আবার লিখব। তোমাদের সঙ্গে সময় কাটিয়ে কতদূর যে ভালো লাগল তা বলতে পারি না। আশা করি তোমাকে অত্যন্ত ঘুরিয়ে কষ্ট দিইনি – অনেক তোমার সময় সেদিন নিয়েছিলাম। বুদ্ধদেববাবুকে আলাদা লিখছি কিন্তু চিঠিপত্র সব সময় বাহির থেকে ঠিক পৌঁছায় না। তুমিও আমার হয়ে তাঁকে জানিয়ো যে [?] বিষয়ে আমার 888sport app download apkটা যেন তিনি এখন না ছাপেন, অন্য একটা 888sport app download apk শীঘ্রই পাঠাব। ঐ 888sport app download apk এখন বেরোলে ভুল-বোঝার বোঝা বাড়বে, কোনো সুফল হবে না। আমার রচনাবলী সম্বন্ধে তোমাকে Literary Executor ক’রে authorization চিঠি তোমাকে ও Signet Press-কে বস্টন থেকে পাঠাব।২ নাভানার অফিসে বিরামবাবুকে বোলো তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বিশেষ চেষ্টা করেও কৃতকার্য হইনি এতে খুব দুঃখিত হয়েছি। প্রীতি জেনো।
অমিয় চক্রবর্তী
পত্র ৫৬
Boston, April 18/58
কল্যাণীয়েষু
পাউন্ডের মুক্তিলাভের সুখবর নিশ্চয়ই পেয়েছ – তবু আরেকটু বিবরণ পাঠালাম। আর কটা দিনই বা তার বাকি – কিন্তু সেই পোলাটুকু ইতালির মধুর সূর্যালোকে সমুদ্রের খোলা হাওয়ায় রাঙিয়ে নিতে পারেন তো সৌভাগ্য। 888sport app download apk সৃষ্টির দিক থেকেও হয়তো নতুন উদ্দীপনা পেতে পারেন, কিন্তু সে বিষয়ে খুব আশা করা ঠিক হবে না। সবচেয়ে বড়ো কথা এই যে শেষ পর্যন্ত কবি-বন্ধু Robert Frostএর চেষ্টা এবং জনমতের আন্দোলন তাঁকে গারদের বাহিরে আনতে পারল; এতে মুমূর্ষু ডেমক্রাসির প্রতি বিশ্বাস না জেগে পারে না।
ভয়ানক দুর্যোগের মধ্যে দিয়ে ইতিহাস পাড়ি দিয়েছে। অত্যন্ত সংকটের অবস্থাটাই যেন স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটু বেশি ব্যতিক্রম হলেই রসাতল, অন্ততপক্ষে বহু কোটি মানুষের পক্ষে। এই টানাটানির একান্ত সংঘর্ষে যথার্থ ডেমক্রাসি বেঁচে উঠলে আমরা বাঁচি, অন্যপক্ষেরও চরিত্র এবং সৃজনশীল উদ্যমও সর্বমানবের পক্ষে কল্যাণকর হয়ে উঠতে পারে।
তুমি এই চিঠি পেয়ে যদি সিগনেট প্রেসের দিলীপ গুপ্ত মহাশয়ের সঙ্গে দেখা করতে পারো তাহলে বিশেষ উপকৃত হই। চলো যাই যদি এখনই বেরোয় তাহলে গভীর তৃপ্তি পাব। বাকি গদ্য একটি বইয়ের অন্তর্গত হয়ে পরেই বেরোতে পারে। তোমার উপর সম্পূর্ণ নির্ভর করব – জানি যথাসাধ্য করবে। তোমরা আমার স্নেহোর্শীবাদ জেনো।
তোমাদের অমিয় চক্রবর্তী
এই ছোটো গীতি888sport app download apk পাঠাই –
সেই
অমিয় চক্রবর্তী
যেটা না-হবার
কোনোদিনই, তার
খোঁজে
যাবে তবু ও যে
চলে একাকিনী
ফিরে বারবার।
সেই ট্রেনে চড়ে
ভোলা সে নামের
বিদেশী গ্রামের
ছিন্ন কাহিনী।
নেই যার মিল
ছল ছল ভোরে
সেই ড্যাফোডিল\
ট্রেন গেছে চ’লে
বেলা সে অতলে,
সে দেশ কোথায়।
হঠাৎ পবন
তবু সে ক্ষণকে
যদি বা দোলায়,
বলো নেই, নেই –
পারো যদি মন
বোঝাও মনকে\
পত্রধৃত প্রসঙ্গ
পত্র ৪৫
ডাক্তার শোইট্জর্ (১৮৭৫-১৯৬৫) ১৯৫৪ সালে আফ্রিকায় ল্যাম্বারেনে শোইটজরের সেবাকেন্দ্রে অবস্থান করেন অমিয় চক্রবর্তী। ‘‘শোয়াইটজরের মহাপ্রয়াণে’’ 888sport app download apk লেখেন (হারানো অর্কিড কাব্যে সংকলিত, ১৩৭৩)।
১৯৫৫ সালে Albert Schweitzer and Africa নামে ইংরেজিতে 888sport app download apk লেখেন অমিয় চক্রবর্তী (সুমিতা চক্রবর্তী, Amiya Chakravarty, 888sport live football অকাদেমি, ১৯৯৩, পৃ ৮৮), অমিয় চক্রবর্তী ১৯৬১-তে লাভ করেন শোয়াইটজার পদক।
পত্র ৪৬
বিরাম বাবু – নাভানার প্রকাশক বিরাম মুখোপাধ্যায়। অমিয় চক্রবর্তীর পালা-বদল, ঘরে ফেরার দিন ও সাম্প্রতিক বইয়ের প্রকাশক। সাম্প্রতিক বইয়ের লেখকের মন্তব্যে তাঁর উলেলখ আছে।
পত্র ৪৭
এইখানে একটি মহা তেজস্বী জীবন – ৪১-সংখ্যক পত্রের টীকা দেখুন। অহর্নিশ পত্রিকায় নরেশ গুহর সংক্ষিপ্ত টীকা : পালা বদল ছাপা হয় বিরাম মুখোপাধ্যায়ের নাভানা থেকে।
পত্র ৪৮
বিনোভাজি – (১৮৯৫-১৯৮২) – গান্ধীবাদী নেতা। ভূ-দান আন্দোলনের জন্য খ্যাত।
রাধাকৃষ্ণণ – সর্বেপল্লি (১৮৮৮-১৯৭৫), দার্শনিক, ভারতের রাষ্ট্রপতি।
‘‘ক্ষত যত ক্ষতি যত মিছে হতে মিছে’’ – ইস্তাম্বুল থেকে গ্রিক বন্দর পিরিউসে সফরররত রবীন্দ্রনাথ ১৯২৬এর ২৫শে নভেম্বর এই গানটি লেখেন (প্রভাতকুমার মুখোপাধ্যায়, গীতবিতান/ কালানুক্রমিক সূচী, পৃ ২৯৮)।
পালাবদলে ‘ইয়ং কল্যাণী’ 888sport app download apkয় কথাটা শোক-ধ্বনি নয়, শ্লোক-ধ্বনি – 888sport app download apkসংগ্রহ ২-এ (তৃ-স. ২০১১) ভুলটি অসংশোধিত, পৃ ৩৫।
পত্র ৪৯
তোমাদের শুভবিবাহের নিমন্ত্রণ – ভাগলপুরের প্রবাসী বাঙালি কন্যা অর্চনা বসু (জ. ১৯২৯) ও নরেশ গুহর বিয়ে হয় ১৯৫৬-র এপ্রিলে (৯ই বৈশাখ ১৩৬৩)। তাতার সমুদ্র ঘেরা কাব্য (১৯৭৬) উৎসর্গ করেছেন নরেশ-চিনুকে।
পত্র ৫০
দু-তিনটে 888sport app download apk – ‘ধর্মতাত্ত্বিক ব্রাহ্মণকে একদিন প্রশ্নোত্তরে’ এবং ‘ওঁ কৃতং স্মর’ – ২৬ শে ও ১৫ই জুলাই ১৯৫৬ তারিখে রচিত এই ছোটো 888sport app download apk দুটি ঘরে ফেরার দিন (১৩৬৮ দ্বি-স. ১৩৭১) বইয়ে আছে। প্রথম প্রকাশ পেয়েছিল 888sport app download apk পত্রিকার আশ্বিন ১৩৬৩ 888sport free betয়।
পত্র ৫১
আত্মপ্রতিষ্ঠিত একটি নূতন দৃঢ়তায় তোমার জীবন – ১৯৫৬র আগস্টে বুদ্ধদেব বসুর আহবানে নরেশ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্যপ্রতিষ্ঠিত তুলনামূলক 888sport live football বিভাগে যোগ দেন। ১৯৬৭তে ওই বিভাগের প্রফেসর ও অধ্যক্ষ হন। ১৯৬৪-৮৩ যাদবপুর জার্নাল অব কম্পারেটিভ লিটারেচার (J J C L) সম্পাদনা করেন নরেশ।
পত্র ৫২
সঞ্জয় ভট্টাচার্য – (১৯০৯-৬৯) – কবি, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক ও মর্যাদাবান 888sport live footballপত্র পূবর্বাশার সম্পাদক। উৎসাহী পাঠক দেখুন : ভূমেন্দ্র গুহর 888sport live ‘‘সঞ্জয় ভট্টাচার্য, জীবনানন্দ এবং পূর্বাশা’’, জীবনানন্দ এবং সঞ্জয় ভট্টাচার্য, কলকাতা, ২০০৮।
পত্র ৫৩
নাভানা – এই রুচিশীল প্রকাশক অমিয় চক্রবর্তীর পালা-বদল, ঘরে ফেরার দিন ও সাম্প্রতিক বই তিনটি প্রকাশ করেন।
হেনরি কিসিঞ্জার (জ. ১৯২৩) – রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ, মার্কিন প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (১৯৬৯-৭৬); প্রেসিডেন্ট নিক্সনের মন্ত্রী, ১৯৭৩এ নোবেল শান্তি 888sport app download bd প্রাপক। হারভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিরক্ষা অধ্যয়ন কেন্দ্রের অধ্যাপক ও পরে পরিচালক (১৯৫৯-৬৯)।
পত্র ৫৪
একটি ক্ষুদ্র গীতি888sport app download apk – ‘দ্বীপান্তরে’ 888sport app download apkটি ঘরে ফেরার দিন (দ্বি-স. ১৩৭১) কাব্যের অন্তর্ভূত।
পত্র ৫৫
পূর্বোক্ত অহর্নিশ পত্রিকায় সংকলিত এই পত্রের টীকা নরেশের :
১. ভারতের ভাষা সমস্যা নিয়ে দেশে তখন বিপুল আলোড়ন এবং আন্দোলন চলছিলো। চেষ্টা চলছিলো যাতে সবাই মেনে নেন যে হিন্দিই ভারতের এক মাত্র রাষ্ট্রভাষা বা national language। বাকি সব ভাষাই হচ্ছে ‘আঞ্চলিক’ ভাষা বা regional language। ১৯৫৬ সালের মার্চ 888sport free bet ‘888sport app download apk’ পত্রিকায় বুদ্ধদেব বসু ‘ভাষা ও রাষ্ট্র’ নামক 888sport liveে তার প্রতিবাদ ক’রে লিখেছিলেন : ‘‘ইংরেজ আমলে যা ছিলো ‘vemacular’ স্বাধীন ভারতে তার নতুন নাম হয়েছে ‘regional’ বা ‘আঞ্চলিক’ ভাষা। এই বিশেষণের অর্থ কী, তা ভেবে পাওয়া শক্ত, কেননা পৃথিবীর প্রায় সকল ভাষাই ‘আঞ্চলিক’ কোনো কোনো নির্দিষ্ট অঞ্চলেই সচল – ইংরেজি, এবং অংশত ফরাসি ছাড়া, আর কোনো ভাষাকেই জাগতিক বলা যায় না। ইতালিয়ান, নারোয়েজিয়ান বা জাপানি ভাষায় প্রচার খুব বেশি নয়, কিন্তু কেউ তাদের ‘আঞ্চলিক’ ব’লে উল্লেখ করে না, এক সভ্যদেশের ভাষা রূপেই তারা স্বীকৃত ও সম্মানিত। বাংলা, মরাঠি, তামিল – প্রভৃতি ভারতীয় ভাষার স্বাভাবিক মর্যাদাও সেই রকম। … ‘আঞ্চলিক’ বললেই অধিকার সঙ্কুচিত হবার আশঙ্কা দেখা দেয়, শুধু ভারতের রঙ্গমঞ্চে নয়, এমন কি সেই ভাষার আপন সীমানার মধ্যে। পাছে এই আশঙ্কা রূঢ় বাস্তবে পরিণত হয়, সে-কথা ভেবেই বাঙালির মন আজ বিক্ষুব্ধ।’ – প্রবাসী বাঙালী কবি অমিয় চক্রবর্তীও এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত করেছিলেন নিজেকে। বর্তমান চিঠিটি সেই আন্দোলন প্রসঙ্গে লিখিত।
২. Authorization-এর প্রেরিত দলিল অনুযায়ী আমিই অমিয় চক্রবর্তীর রচনাবলীর Literary Executor। কিন্তু সেই দলিলের কোনো ব্যবহার করার প্রয়োজন আমার হয়নি। ঐতিহাসিক একটি দলিল রূপেই সেই কাগজখন্ড রক্ষিত আছে। কবির প্রকৃত Literary Executor আসলে তাঁর কন্যা সেমন্তী। তিনি আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
পত্র ৫৬
এজরা পাউন্ড (১৮৫৫-১৯৭২) – নাৎসি ও মুসোলিনির সমর্থক কবি। দেশদ্রোহিতার অভিযোগে মার্কিন সরকার গ্রেপ্তার করে ১৯৪৫এ। রবার্ট ফ্রস্ট (১৮৭৯-১৯৭০) প্রমুখের চেষ্টায় ১৯৫৮তে কারামুক্ত হন। অমিয় চক্রবর্তী তাঁর সম্পর্কে 888sport live লেখেন (সাম্প্রতিক 888sport live বইয়ে সংকলিত)।
চলো যাই – বইটি ১৩৬৯ সনে শ্রীপ্রকাশ ভবন থেকে বেরোয়।
কৃতজ্ঞতাস্বীকার : ড. মাহবুবুল হক

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.