অস্তমিত রবি

আরেক রবি চলে গেল। সবাইকেই তো একদিন চলে যেতে হয়। কিন্তু এ কেমন চলে যাওয়া! যখন তাঁর লেখা এক অসামান্য প্রত্যাশাজাগানো সৃজনশীলতায় মগ্ন, তখন কি এভাবে চলে যেতে হয়! এত অল্প বয়সে!

রবিশংকর বলের সঙ্গে আমার পরিচয় খুব বেশিদিনের নয়। কালি ও কলমে লেখা চাওয়ার জন্যে তাঁর সঙ্গে আমার যোগাযোগ করিয়ে দেন কথা888sport live footballিক বন্ধু নীহারুল ইসলাম। তাঁর লেখা সম্পর্কে অল্পবিস্তর খবর রাখতাম। যতদূর মনে আছে, আনন্দবাজার পত্রিকার ‘রবিবাসরীয়’তে তাঁর লেখা প্রথম পড়ি। সেগুলো অধিকাংশই মননঋদ্ধ 888sport live।

পরবর্তীকালে তাঁর গল্প-888sport alternative linkের সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে। সংবাদ প্রতিদিনের সাপ্তাহিকীতে তাঁর ধারাবাহিক দোজখনামা পড়ে তো আমি বিস্মিত হয়ে যাই। অপূর্ব, অসাধারণ, অসামান্য এসব কোনো অভিধাতেই এ-888sport alternative linkটিকে চিহ্নিত করতে পারছিলাম না। কেবল মনে হয়েছিল, বাংলা কথা888sport live footballে এক নতুন ধারার সৃষ্টি করেছেন এই মরমি লেখক। ১৮৫৭ থেকে ১৯৪৭ – এই দীর্ঘ কালপর্বে পাকিস্তান ও ভারতের কবরে শুয়ে মির্জা গালিব ও সাদত হাসান মান্টো তাঁদের আত্মকথনে উন্মোচন করছেন দুই দুর্ভাগা দেশ ও জাতির বিপর্যয় এবং বিধ্বংসের নানা বৃত্তান্ত। বাংলা 888sport live footballে যা সত্যিই বে-নজির।

কালি ও কলমের জন্যে তাঁর কাছে একটি গল্প চেয়েছিলাম বছরতিনেক আগে। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সাড়া দিয়েছিলেন। দারুণ সেই গল্পটি। দেখা হলো আরো কিছুদিন পরে। ২০১৬ সালের মে মাসে হাসান আজিজুল হক এলেন কলকাতায়। আনন্দ 888sport app download bd অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করতে। সীমান্ত থেকে তাঁকে নিয়ে আসার দায়িত্ব আমার। বরাবরের মতো তাঁর দেখাশোনা করা ছাড়া এবার তাঁকে নিয়ে যেতে হবে ব্যাঙ্গালুরুতে চিকিৎসার জন্যে। কলকাতায় আমরা ছিলাম হ্যারিংটন স্ট্রিটের একটি অতিথিশালায়। সেখানে প্রতিদিন নানারকম মানুষ আসত হাসানভাইয়ের সঙ্গে দেখা করতে। ওই সময় রবি আমাকে বলেছিলেন তাঁর অভিপ্রায়ের কথা, হাসানভাইকে একামেত্ম পাওয়ার। আমি সে-ব্যবস্থাও করেছিলাম। কিন্তু ওঁদের ওই সাক্ষাৎকারটা একামেত্ম করা সম্ভব হয়নি। হঠাৎ করেই কয়েকজন এসে গিয়েছিলেন।

তাতে অবশ্য রবির মধ্যে কোনো অস্বসিত্ম লক্ষ করিনি। সেদিনের সেই প্রবল আড্ডা চলেছিল অনেকক্ষণ। খুবই অবাক হয়ে দেখেছিলাম প্রায়-নির্বাক রবিকে। পরে যখন সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হলো, তখনো দেখলাম রবি খুবই স্বল্পভাষী। কথা বলার চেয়ে শোনাতেই তাঁর বেশি আগ্রহ।

একসময় কালি ও কলমে ধারাবাহিক 888sport alternative link লিখছিলেন শঙ্করলাল ভট্টাচার্য। সেটি যখন শেষ হওয়ার মুখে, তখনই সম্পাদকের অনুরোধে রবিকে একটি ধারাবাহিক 888sport alternative link লেখার জন্যে বলেছিলাম। ওঁ প্রায় বিনা দ্বিধায় ওঁর সম্মতি জানান। যথাসময়ে শুরু হয় ওঁর আরেকটি ধ্রম্নপদী 888sport alternative link কিস্সা বলেন শেহ্রজাদে
যাঁরা সেটি পড়েছেন, তাঁরাই জানেন আরেকটি দোজখনামা সৃষ্টি করতে চলেছিলেন রবি। কিন্তু তাঁর সেই সাধ অপূর্ণই থেকে গেল। মাত্র তেরোটি কিসিত্ম প্রকাশিত হতে না হতেই ঘটে গেল এই ইন্দ্রপতন।

এই 888sport alternative link প্রকাশের সূত্র ধরেই তাঁর সঙ্গে আমার অন্য এক নিবিড় সংযোগ সম্ভব হয়েছিল। 888sport alternative linkের প্রতিটি কিসিত্মর প্রথম পাঠক ছিলাম আমি। প্রকাশিত হওয়ার আগেই মতামত জানাতাম ওঁকে। বরাবরের মতো তিনি খুব ধৈর্য ধরে আমার কথা শুনতেন।  প্রতি মাসে তাঁকে পত্রিকার সৌজন্য 888sport free bet আর সম্মান দক্ষিণা পৌঁছে দিতাম। সে-সুবাদে ওঁর সঙ্গে মাসে একবার অন্তত দেখা হতোই। আমরা কলেজ স্ট্রিট এলাকার ফেভারিট কেবিনেই বেশি বসতাম। নির্জনতাপ্রিয় রবি কফি হাউস পছন্দ করতেন না। কথায় কথায় জেনেছিলাম ওঁর অসুখের কথা। পরে তো কয়েকবার ওঁকে দেখতে গেছি বি আর সিং রেলওয়ে হাসপাতালে। ওঁর স্ত্রী সীমা ওখানকার মেট্রন।

রবি একটানা ২৩ বছর সংবাদ প্রতিদিনে চাকরি করেছেন। তখন তিনি ফ্রিল্যান্স লেখক। প্রায়ই বলতেন, একটা নতুন দৈনিক কাগজে যোগ দেবো ভাবছি। ওরা খুব করে ধরেছে। যদি যোগ দিই, তাহলে আপনাকে কিন্তু লিখতে হবে। আমি তো বিস্মিত। আমার ভেতরকার সুপ্ত ইচ্ছাকে সত্যি সত্যি ওঁ একদিন বাস্তবায়িত করে তুলল। একদিন শুনলাম ও নতুন দৈনিক সুখবরে যোগ দিয়েছেন।

তারপর সত্যি সত্যি আমি ওই কাগজে লিখতে শুরু করলাম। দু-চারটে খুচরো লেখা ছাপার পর তিনি বললেন 888sport apps নিয়ে ধারাবাহিক লেখার জন্যে। গত নভেম্বরের প্রথম রোববার থেকে বেরোতে শুরু করল আমার লেখা। প্রতি রোববার। ওঁ নিজেই নামকরণ করে দিলেন, ‘বাংলা নামে দেশ’। আমি তো সোৎসাহে লিখেই যাচ্ছি। জানুয়ারি অবধি লেখা জমা দিয়ে একটু দম নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ছটা লেখা ছাপা হয়ে অনেকের নজর কেড়েছে।

১০ ডিসেম্বর দুপুরে হঠাৎ করেই শুনলাম রবি আবার অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। অবস্থা খুবই গুরুতর। একেবারে ভেন্টিলেশনে। এবার আর সময় দিলো না। রাত পোহাতেই খারাপ খবরটা এলো, রবি আর নেই।

চকিতে মনে পড়ল পাঁচ বছর আগে এই এগারো ডিসেম্বরেই প্রয়াত হয়েছিলেন আর এক রবিশংকর।

আশ্চর্য এই সমাপতন।