আইজাক আসিমভ : জীবন ও জগতের বিশ্বস্ত ব্যাখ্যাকার

জীবন ও জগতের রহস্য  উন্মোচনে এগিয়ে এসে নিষ্ঠার সঙ্গে যিনি সারাজীবন ধরে এ-দায়িত্ব পালন করেছেন, তেমনি একজন হলেন আমেরিকান 888sport apk ও কল্প888sport apk লেখক আইজাক আসিমভ। শিশুকালেই যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসী হওয়া আসিমভ জন্মেছিলেন রুশ বিপস্নব-পরবর্তী ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ রাশিয়ার পেত্রভিচ শহরে এক দরিদ্র ইহুদি পরিবারে। তাঁর সঠিক জন্মতারিখটি জানা ছিল না, তবে তিনি নিজে অনুমান করেছেন যে ৪ঠা অক্টোবর ১৯১৯ থেকে ২রা জানুয়ারি ১৯২০ সালের মধ্যে যে-কোনো একটি দিন হবে। পরে আসিমভ স্থির করলেন যে, ২রা জানুয়ারি ১৯২০ তারিখটিই তিনি জন্মদিন হিসেবে ধরে নেবেন এবং পালন করবেন। তাঁর বাবা ছিলেন জুদাহ আসিমভ, মা আন্না রাচেল। আসিমভ মনে করতেন, তাঁর নামটি উজবেক বংশ থেকে উদ্ভূত। আসিমভ মানে আজিমের পুত্র, কিংবা হাশেমের পুত্র। আসিমভ তাঁর নাম নিয়ে পরে একটি ছোটগল্পও লিখেছিলেন – ‘Spell my name with an S’ শিরোনামে।

আসিমভের জন্মের পরের বছরই পেত্রভিচ শহরের ১৬টি শিশু গুরুতর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয় এবং আসিমভ ছাড়া বাকি সব শিশু মারা যায়। পরে অবশ্য তাঁর এক বোন এবং এক ভাইও জন্ম নেয়। আসিমভের বয়স যখন মাত্র তিন বছর, তখন তাঁর পরিবার হঠাৎ করেই সিদ্ধান্ত নেয় যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার। তাঁরা ১৯২৩ সালে আরএমএস বাল্টিক জাহাজে লিভারপুল হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেন। তাঁর পিতামাতা যেহেতু আসিমভের সঙ্গে শুধু ইহুদি ভাষা ইদ্দিশ এবং ইংরেজিতে কথা বলতেন, তাই আসিমভও আর রুশ ভাষা শিখে উঠতে পারেননি। নিউইয়র্কের ইহুদি-অধ্যুষিত অঞ্চল ব্রম্নকলিনে তিনি বেড়ে ওঠেন এবং তাঁর যখন আট বছর বয়স, তখন আমেরিকার নাগরিকত্ব লাভ করেন।

জীবিকা নির্বাহের জন্য আসিমভের পিতামাতা শহরের রাসত্মায় ‘ক্যান্ডি স্টোর’ নামে পরিচিত মনিহারি দোকান চালাতে শুরু করেন, যেগুলিতে টুকিটাকি জিনিসপত্রের সঙ্গে পত্রপত্রিকা ও সাময়িকীও বিক্রি হতো। এটিই আসিমভের জীবনে বইপড়া ও লেখালেখির সঙ্গে আমৃত্যু সম্পর্ককে গড়ে তোলে, কেননা সেখানে ম্যাগাজিন ও পত্রপত্রিকার সরবরাহ ছিল অফুরন্ত – পড়ার বিষয়বস্তু পেতে তাঁর কখনো সমস্যা হয়নি। অন্যথায় তাঁর পরিবার তা কিনতে কখনো সমর্থ হতো না। আসিমভ তাঁর নয়-দশ বছর বয়সেই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি পড়া শুরু করেন এবং সেগুলোর ভক্ত হয়ে যান। তাঁর পিতামাতা এগুলোকে ‘গাঁজাখুরি’ বলে তিরস্কার করলেও তিনি তাঁদের বোঝাতে সমর্থ হন যে, এগুলোর মধ্যে প্রকৃত 888sport apk বলেও অনেক কিছু লুকানো রয়েছে। এরপর তাঁরা আর পুত্রের পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিতে চেষ্টা করেননি।

ব্রম্নকলিনেই স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করে ১৫ বছর বয়সে তিনি নিউইয়র্ক সিটি কলেজে ভর্তি হন। প্রথমে জীববিদ্যায় পড়াশোনা করে পরে রসায়নশাস্ত্রে ১৯৩৯ সালে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। চিকিৎসাবিদ্যায় ভর্তি হতে দু’বার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে পরে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৪১ সালে মাস্টার্স এবং ১৯৪৮ সালে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন তিনি। এ-সময়কালেই তিনি ফরাসি ও জার্মান ভাষা শিখে নেন। শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার আগেই আমেরিকার নৌবাহিনীতে যোগ দিয়ে তিনি কাজ করতে থাকেন। যুক্তরাষ্ট্র যখন বিকিনি দ্বীপে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়, তখন সে-পরীক্ষাসমূহে নেভি সদস্য হিসেবে তিনিও অংশগ্রহণ করেন। এরপর বোস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনে প্রাণরসায়নের শিক্ষক হিসেবে ১৯৪৯ সালে তিনি যোগ দেন। বছর তিনেকের মধ্যেই তিনি দেখতে পান যে, লেখালেখি – যা তিনি স্কুলজীবনেই শুরু করেছিলেন, তা থেকে প্রাপ্ত আয় তাঁর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাওয়া বেতনের চেয়ে বেশি।  যা হোক, ১৯৫৫ সালে তিনি পদোন্নতি পেয়ে সহযোগী অধ্যাপক হন এবং ১৯৭৯ সালে তাঁর লেখালেখিকে সম্মান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে অধ্যাপক পদে উন্নীত করে। আমেরিকান মিসাইল প্রতিরক্ষা বিভাগে ১৯৫৯ সালে তিনি চাকরির সুযোগ পেলেও তাঁর লেখালেখিতে তা বিঘ্ন ঘটাবে ভেবে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।

তাঁর প্রথম স্ত্রী গারট্রুড ব্লগারম্যানের সঙ্গে আসিমভের প্রথম সাক্ষাৎ হয় কানাডার টরন্টোতে। সে-বছরই জুলাই মাসে তিনি তাঁকে বিয়ে করেন। পশ্চিম ফিলাডেলফিয়ায় তাঁরা দাম্পত্যজীবন শুরু করেন। পরে নিউইয়র্কের ম্যানহাটান, বোস্টন এবং নিউটন শহরেও কিছুকাল কাটান। দুটি সন্তান জন্মের পর ১৯৭০ সালে গারট্রুডের সঙ্গে তাঁর বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। আসিমভ এরপর নিউইয়র্কে চলে আসেন এবং জীবনের পরবর্তী বছরগুলি সে-শহরেই কাটান। নিউইয়র্কেই মনোচিকিৎসক জেনেট জেপসনের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয় এবং ১৯৭৩ সালে তাঁকে বিয়ে করেন। তাঁদের সে-বিয়ে ১৯৯২ সালে আসিমভের মৃত্যু পর্যন্ত টিকে ছিল এবং তাঁরা সুখী দাম্পত্য জীবন যাপন করে গেছেন।

আসিমভ তাঁর আত্মজীবনীর তৃতীয় খণ্ডে উল্লেখ করেছেন যে, তিনি শৈশবে স্বপ্ন দেখতেন নিউইয়র্কের কোনো সাবওয়ে স্টেশনে তিনি একটি ম্যাগাজিন স্ট্যান্ডের মালিক হবেন, যেখানে  আবিষ্ট হয়ে 888sport free bet login পড়তে পড়তে তিনি ট্রেন চলাচলের শব্দ শুনতে পাবেন। আসিমভ ছিলেন ক্লাস্ট্রোফিল, অর্থাৎ ছোট্ট, আবদ্ধ জায়গায় থাকতে ভালোবাসতেন। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন অ্যাক্রোজোবিক, অর্থাৎ উঁচুতে চড়তে ভয় পেতেন। উড়োজাহাজে চড়তে ভয় পেতেন বলে জীবনে তিনি মাত্র দুবার প্লেনে চড়েছেন – একবার নেভিতে চাকরিকালে তাঁর সরকারি কাজে, অন্যবার ওহাইও শহর থেকে বাড়ি ফেরার পথে। তাই আমন্ত্রণ পেলেও খুব দূরে 888sport slot game করা তাঁর পক্ষ কঠিন ছিল। তাঁর গল্প-888sport alternative linkেও এই অ্যারোপ্লেনভীতির উল্লেখ আছে। পরবর্তী জীবনে তিনি অবশ্য ক্রুজশিপে সমুদ্র888sport slot gameে আনন্দ খুঁজে পান এবং আরএমএস কুইন এলিজাবেথ-২ জাহাজে তিনি 888sport apkবিষয়ক বক্তৃতাও দিয়েছেন। তিনি একবার ইংল্যান্ডে আসেন ১৯৭৪ সালে, প্রধানত লন্ডন ও বার্মিংহাম 888sport slot game করতে; তবে এর মধ্যেই তিনি সময় করে স্টোনহ্যাঞ্জ সফর করেছিলেন।

আসিমভ ছিলেন সুবক্তা। দর্শনীর বিনিময়ে 888sport apk-বক্তৃতা দিতে তিনি উৎসাহী ছিলেন। বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি সংক্রান্ত যে-কোনো সভা-সমিতিতে সুযোগ পেলেই তিনি যোগ দিতেন। এভাবে অনেকের সঙ্গেই তাঁর সোহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। 888sport apk সংক্রান্ত শুধু নয়, জগৎ ও জীবন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ৯০ হাজার প্রশ্নের তিনি উত্তর দিয়েছেন পোস্টকার্ডে বা মেইল করে – বেশিরভাগক্ষেত্রে নিজের অটোগ্রাফসহ। মাঝারি উচ্চতার আসিমভের চেহারার ট্রেডমার্ক ছিল তাঁর দুটো বিরাট জুলফি। দৈহিক ক্রিয়াকর্মে তাঁর দক্ষতা মোটেও প্রশংসনীয় ছিল না – কখনো তিনি সাঁতার কিংবা সাইকেল চালনা শিখতে পারেননি, তবে বোস্টনে থাকার সময়ে কোনোরকমে গাড়ি চালানোটা শিখেছিলেন। হিউমার নিয়ে লেখা তাঁর আসিমভ লাফ্স অ্যাগেইন বইয়ে তিনি তাঁর বোস্টন-ড্রাইভিংকে উল্লেখ করেছেন ‘চাকার ওপর চলা নৈরাজ্য’ বলে।

আমেরিকান হিউম্যানিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (AHA) তাঁকে তাঁর মানবতাবাদী কর্মকাণ্ডের জন্য ১৯৮৪ সালে ‘হিউম্যানিস্ট অফ দ্য ইয়ার’ খেতাব প্রদান করে। এ-সংস্থার জন্য মানবতাবাদী মেনিফেস্টো প্রণয়নকারীদের একজন ছিলেন তিনি। ১৯৮৫ থেকে শুরু করে ১৯৯২ সালে তাঁর মৃত্যু হওয়া পর্যন্ত তিনি এ-সংস্থার সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁরই ঘনিষ্ঠ বন্ধু কুর্ট ভনেগাটকে এ-দায়িত্ব দেওয়া হয়। ‘স্টার ট্রেক’ নামে জনপ্রিয় টেলিভিশন সিরিজের জন্য তিনি বিশেষ 888sport apk উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন। প্যারানরমাল অ্যাক্টিভিটিজ তদন্ত কমিটির (পরবর্তীকালে স্পেটিক্যাল ইনকোয়ারি কমিটি) তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। আসিমভ একবার বলেছিলেন যে, তাঁর নিজের চেয়ে বেশি বুদ্ধিমান বলে মাত্র দুজন মানুষকেই তাঁর মনে হয়েছে – একজন প্রখ্যাত 888sport apkী, 888sport apkলেখক ও 888sport apk জনপ্রিয়করণে অগ্রণী ব্যক্তিত্ব কার্ল সাগান; অন্যজন হচ্ছেন কৃত্রিম প্রজ্ঞার পথিকৃৎ মার্ভিন মিনস্কি। বুদ্ধিমত্তা ও আইকিউ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান মেনসা ইন্টারন্যাশনালের তিনি ছিলেন সহসভাপতি। তাঁর পিতা জুদাহ আসিমভ ১৯৬৯ সালে মারা যাওয়ার পর ব্রান্ডেইস বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি তাঁর পিতার নামে একটি বৃত্তি চালু করেন।

আসিমভ হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হন ১৯৭৭ সালে। বেশ কিছুদিন চিকিৎসার পর ১৯৮৩ সালে তাঁর ট্রিপল বাইপাস অপারেশন করা হয়। এ-সময়ে তিনি রক্ত পরিসঞ্চালনজনিত কারণ থেকে এইডস রোগে আক্রান্ত হন, তবে তিনি বা তাঁর পরিবারের কেউই তা বাইরে প্রকাশ করেননি। তাঁর মৃত্যুর বেশ কিছুদিন পর তাঁর স্ত্রী জেনেট জেপসন তাঁর আত্মজীবনী ইট হ্যাজ বিন অ্যা গুড লাইফে তা প্রকাশ করেন। বেশ কিছুদিন অসুস্থ থাকার পর ১৯৯২ সালের ৬ই এপ্রিল বাহাত্তর বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন ম্যানহাটানের একটি হাসপাতালে। মৃত্যুর পর তাঁর ইচ্ছানুযায়ী দেহ দাহ করা হয়।

টি এইচ হাক্সলির মতো আসিমভও বিশ্বাস করতেন যে, 888sport apkকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে হলে তা সহজবোধ্য ভাষায় জনসাধারণকে জানাতে হবে। ক্লেমসোঁর ভাষার প্রতিধ্বনি করে তিনি বলেছেন – 888sport apkকে শুধু 888sport apkীদের জন্য রেখে দেওয়া মানে তাঁদের প্রতি অতিরিক্ত গুরুত্ব আরোপ করা। এটা কখনো জানা সম্ভব হবে না যে, কতজন কার্যরত 888sport apkী তাঁদের প্রাথমিক উদ্দীপনা পেয়েছিলেন আসিমভের কোনো বই, নিবন্ধ বা ছোটগল্প পড়ে। জানা যাবে না কতজন সাধারণ মানুষ 888sport apk-প্রতিষ্ঠানের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েছিলেন একই কারণে। মার্ভিন মিনস্কি স্বীকার করেছেন যে, আসিমভের রোবোটকাহিনি পাঠ করেই তিনি কৃত্রিম প্রজ্ঞার জগৎ সম্পর্কে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন।

লেখক হিসেবে আসিমভের ক্যারিয়াকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় – প্রথম ভাগটি তাঁর গল্প লেখার, যা ১৯৩৯ সালে শুরু হয়। পরবর্তী ভাগটি 888sport alternative linkের, যা ১৯৫০ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চলে। এর পরের সময়টা প্রধানত নন-ফিকশনের, যার মধ্যে তাঁর দুই সহকর্মীকে নিয়ে লেখা কলেজপাঠ্য টেক্সটবই Biochemistry and Human Metadolism বইটিও রয়েছে। কিন্তু তাঁকে যা বিশ্বখ্যাতি এনে দিয়েছে, তা হচ্ছে 888sport apkের সহজপাঠ্য বই এবং বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি। এগুলোর মধ্যে রয়েছে একটি নীহারিকা সাম্রাজ্যের পতনের ওপর ভিত্তি করে তাঁর জনপ্রিয় ‘ফাউন্ডেশন’ সিরিজ – যার আইডিয়া তিনি পেয়েছিলেন গিবনের ডিক্লাইন অ্যান্ড ফল অফ দ্য রোমান এম্পায়ার পাঠ করে। এর মূল বিষয়বস্তুতে রয়েছে অন্ধকার যুগে 888sport apkকে বাঁচিয়ে রাখার প্রয়াস। রোবোটকাহিনি নিয়েও তাঁর রচিত বইগুলো জনপ্রিয়, যে-888sport apkের জন্মের পূর্বেই আসিমভের হাতে নামকরণ হয়েছে। এগুলো ছাড়াও তাঁর রয়েছে মনো888sport apk বিষয়ক সিরিজ। ইউনেস্কোর হিসাব অনুসারে আসিমভ হচ্ছেন পৃথিবীর চবিবশতম বেশি অনূদিত বইয়ের লেখক। আসিমভ ১৯৮০ সালে লিখেছেন – ‘আমি যত বৈচিত্র্যময় জিনিস নিয়েই লিখি না কেন, দিন শেষে আমি সবসময়ই একজন 888sport apk-কল্পকাহিনি লেখক এবং আমি সবসময়ই এ-পরিচয়ে পরিচিত হতে চাই।’

আসিমভ তাঁর স্কুলজীবনেই গল্প লেখা শুরু করেছিলেন। তাঁর পিতা আসিমভের ১৬ বছর বয়সে একটি টাইপরাইটার কিনে দেন। আসিমভও তাঁর পেশাগত লেখকজীবন শুরু করেন ১৯৩৭ সালে এবং অল্পদিনের মধ্যেই জনপ্রিয় 888sport apk সাময়িকী Astounding-এর সম্পাদক জন ডব্লিউ ক্যাম্পবেলের সঙ্গে হৃদ্য সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এর বছর তিনেকের মধ্যে তিনি দেখতে পান যে, তাঁর লেখাপড়ার খরচ তাঁর লেখালেখির সম্মানী থেকেই উঠে আসছে, তবে তা ফুলটাইম লেখক হওয়ার মতো যথেষ্ট নয়। ১৯৭২ সালে তিনি লিখেছেন যে, ১৯৩৯ সালের পর থেকে তিনি এমন কোনো কল্পকাহিনি লেখেননি, যা কোথাও না কোথাও ছাপা হয়নি। আসিমভ ১৯৪১ সালে লেখেন ‘নাইটফল’ গল্পটি, যা আমেরিকান বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি লেখকদের ভোটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি বলে স্বীকৃতি লাভ করে।

আসিমভ তাঁর সবচেয়ে জনপ্রিয় সিরিজ ফাউন্ডেশনের প্রথম বই ফাউন্ডেশন লেখেন ১৯৫১ সালে, এরপর লেখেন ফাউন্ডেশন অ্যান্ড এম্পায়ার (১৯৫২) এবং সেকেন্ড ফাউন্ডেশন (১৯৫৩)। এ-তিনটি বই একসঙ্গে ‘ফাউন্ডেশন ট্রিলজি’ নামে পরিচিত। তাঁর শেষ জীবনে অবশ্য এ-সিরিজে আরো কয়েকটি বই যুক্ত হয় – ফাউন্ডেশন এজ (১৯৮২), ফাউন্ডেশন অ্যান্ড আর্থ (১৯৮৬), প্রিলুড টু ফাউন্ডেশন (১৯৮৮) এবং সবশেষে মৃত্যুর অল্পদিন আগে প্রকাশিত হয় তাঁর শেষ 888sport alternative link ফরওয়ার্ড দ্য ফাউন্ডেশন (১৯৯২)। তাঁর রোবোট সিরিজের জন্য ১৯৬৬ সালে তিনি হিউগো অ্যাওয়ার্ড পান। এছাড়া এ-সিরিজটি কল্পকাহিনির সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সিরিজ অভিধা লাভ করে। তাঁর আই, রোবোট বইটিতে তিনি রোবোটিকসের তিনটি সূত্র আবিষ্কার করেছেন, যা আগে কারো জানা ছিল না। রোবোটিকস শব্দটিও তিনিই আবিষ্কার করেছেন।

তিনি পজিট্রনিক শব্দটিও আবিষ্কার করেছেন, যা ইলেকট্রনের উল্টো কাউন্টার পার্ট পজিট্রন থেকে উদ্ভূত। সাইকোহিস্ট্রি শব্দটিও তাঁরই আবিষ্কার। তাঁর ১৯৬০ সালে লেখা দি ইন্টেলিজেন্ট ম্যানস গাইড টু সায়েন্স ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ড ও ১৯৬৩ সালে হিউগো অ্যাওয়ার্ড লাভ করে। ফ্লয়েড সি গেইল বলেছেন যে, আসিমভের একটি সহজাত প্রতিভা ছিল, যাতে তিনি খুব শুকনো তথ্যকেও উপাদেয় করে পরিবেশন করতে পারতেন।

888sport apk ছাড়াও তাঁর আগ্রহ ছিল ইতিহাসে। ১৯৬০ সাল থেকে তিনি এরকম ১৪টি জনপ্রিয় গ্রন্থ লিখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে গ্রিক, রোমান, মিশরীয়, নিকট প্রাচ্যবিষয়ক ইতিহাস এবং আসিমভস ক্রনোলজি অফ ওয়ার্ল্ড, আসিমভস গাইড টু বাইবেল দুই খণ্ড বের হয়েছে – ওল্ড টেস্টামেন্ট ১৯৬৭ সালে এবং নিউ টেস্টামেন্ট ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৭০ সালে বের হয় আসিমভস গাইড টু শেক্সপিয়র। পরবর্তী সময়ে তিনি লেখেন ডন জুয়ান, মিল্টনের প্যারাডাইস লস্ট, গ্যালিভার্স ট্রাভেলস ইত্যাদির টীকাভাষ্য। জীবনের শেষদিকে এসে আসিমভ লিমেরিক লিখতে শুরু করেন এবং ১৯৭৫ সালে লিমেরিক্স : টু গ্রস নামে বের হয়। এতে তাঁর ছিল ১৪৪টি ও জন সিয়ার্ডির সমসংখ্যক লিমেরিক্স। এগুলি ছাড়াও হিউমারের ওপর তাঁর বেশ কিছু বই রয়েছে, যার অন্যতম হচ্ছে ট্রেজারি অফ হিউমার। যৌনতা সংক্রান্ত বিষয়বস্তু নিয়েও তাঁর কিছু জনপ্রিয় গ্রন্থ রয়েছে, যেমন – দ্য সেনসুয়াস ম্যান, দ্য সেনসুয়াস উইম্যান, দ্য সেনসুয়াস ডার্টি ওল্ড ম্যান ইত্যাদি। তাঁর আত্মজীবনী বেরিয়েছে তিন খণ্ড, যা ১৯৯৫ সালে হিউগো 888sport app download bd লাভ করে, আসিমভের মৃত্যুর পর। এর একটি সংক্ষপ্ত রূপ স্ত্রী জেনেট ২০০২ সালে প্রকাশ করেছেন – ইট হ্যাজ বিন অ্যা গুড লাইফ নামে।

আসিমভ নিজেই ছিলেন তাঁর সেক্রেটারি, টাইপিস্ট, প্রুফরিডার এবং লিটারারি এজেন্ট। তিনি ছিলেন একাধারে যুক্তিবাদী ও মানবতাবাদী, অন্যদিকে নিরীশ্বরবাদী। ছদ্ম888sport apk ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপসহীন। তিনি বিশ্বাস করতেন যে, ইলিয়াড যেমন গ্রিক পৌরাণিক কাহিনি, তেমনি তৌরিৎ বা তোরা হচ্ছে হিব্রম্ন পুরাণ কাহিনি। তাঁর ট্রেজারি অফ হিউমার, আসিমভ লাফস অ্যাগেইন ইত্যাদি বইয়ে ঈশ্বর, শয়তান, ইডেন গার্ডেন, জেরুজালেম – এ বিষয়গুলো নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা করেছেন। মানুষ তার কোনো বিশ্বাস কিংবা কাজের জন্য অনন্তকাল ধরে শাস্তিভোগ করবে, তা তিনি মেনে নিতে পারতেন না। ভিয়েতনাম যুদ্ধের তিনি ছিলেন ঘোর বিরোধী ও প্রেসিডেন্ট নিক্সনের কঠোর সমালোচক, যাঁকে তিনি প্রতারক ও মিথ্যাবাদী ভাবতেন। নিক্সনের পদত্যাগে তিনি খুশি হয়েছিলেন। অনেকের মতো তাঁকেও কমিউনিস্ট অপবাদ সহ্য করতে হয়েছিল। তবে এফবিআই তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত করে কিছু পায়নি।

সারাজীবন ধরে আসিমভ পাঁচশোটির মতো বই লিখেছেন, যা বহুবিধ বিষয়ে লেখা। তিনি হিসাব করে দেখেছেন যে, তাঁর লেখকজীবনের প্রথম ৪০ বছরে তিনি দিনে লিখেছেন এক হাজার শব্দ এবং শেষের ২০ বছরে দিনে এক হাজার সাতশো শব্দ করে লিখেছেন। যখন কেউ দারিদ্রে্যর মধ্যে জন্মগ্রহণ করে এবং সারাজীবন ধরে লিখতে ও বুঝতে আবেগাক্রান্ত থাকে, তেমনি একজন লেখক আসিমভ তাঁর আপন মাপকাঠিতে সফল ও সুখী জীবনযাপন করে গেছেন।

আসিমভের মৃত্যুর পর নিউজউইক সাময়িকীটিতে একটি শোকগাথা লিখেছিলেন আরেক প্রখ্যাত 888sport apk লেখক কার্ল সাগান। তিনি তাতে আসিমভেরই শেষদিকের একটি বইয়ের উদ্ধৃতি তুলে ধরেছিলেন – ‘আমার জীবন তার শেষ সীমায় এসে পৌঁছেছে এবং সত্যিকারভাবে আর বেশিদিন বাঁচার আশা করি না। এটি একটি সুখী জীবন, আর আমি তাতে পরিতৃপ্ত। কাজেই আমার সম্পর্কে কেউ চিন্তিত বা বিষণ্ণ হবেন না।’ সাগান বলছেন – ‘আমি তা হইনি। তার পরিবর্তে আমি চিন্তিত আমাদের অন্য সবার জন্য – যখন আসিমভ নামে কেউ আমাদের পাশে থাকবেন না, আমাদের তরুণদের জ্ঞান ও 888sport apkের প্রতি উৎসাহী করে তুলতে।’