আগরতলায় কয়েকদিন

রফিকুন নবী 

দেশে হোক বা বিদেশ – সাত সকালে 888sport slot gameের জন্যে নিদ্রাকে ব্যাহত করে রওনা দেওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। 888sport slot gameের আনন্দটাই মাটি হয়। সে-মুহূর্তে মনে হয়, আয়োজকদের কথায় সম্মতি না দিলেই ভালো হতো।

চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্তির পর এমনিতেই আরাম-আয়েশের ব্যাপারগুলি বাড়তির দিকে। পুরনো যে চিরকালের নিয়মমানা নিয়ম সলিড অবস্থানে ছিল তা পরিবর্তিত রূপ ধারণ করেছে গত দুবছরে। নতুন করে দৈনন্দিন জীবনকে নব নব নিয়মকানুনে সাজিয়ে নিচ্ছি ইদানীং। তার একটি হলো, সকালে দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা।

সকালের ঘুম মানেই আরামের ব্যাপার। কদিন আগে সেই আরামটিকে ‘ডিসটার্ব’ করে দিলো বেঙ্গল গ্যালারি। আগরতলায় তাদের একটি প্রদর্শনী এবং কর্মশালায় যোগ দিতে যেতেই হবে। আর তার জন্যে বাস ধরতে হবে কমলাপুর বিআরটিসি টার্মিনালে সকাল সাড়ে সাতটার মধ্যে। তার মানে সেই সাত সকাল।

ছেলেবেলায় সাত সকাল বলতে ভাবতাম, সকাল সাতটাকেই বুঝি সাত সকাল নাম দেওয়া হয়েছে। অবশ্য সাতটাও কিছুটা সহনশীল। কিন্তু আমি থাকি মিরপুরের অাঁকাবাঁকা অলিগলি – তস্যগলি পেরিয়ে প্রত্যন্ত একটি জায়গায়। এমন গলিঘুঁজি যে আমিও পথ হারিয়ে ফেলি মাঝেমধ্যেই। এমনকি ঘোরতর পাওনাদাররাও বাসা চিনে যেতে চায় না। সেখান থেকে কমলাপুর গিয়ে সাড়ে সাতটার বাস ধরা অথবা কমলাপুরে ট্রেন ধরতে গেলে ভোররাতে বা নিদেনপক্ষে কাকভোরে প্রায় অন্ধকার থাকতে রওনা দিতে হবে। সেই কথা মনে রেখে বেঙ্গল গ্যালারির পরিচালক সুবীর চৌধুরীর অতি সাবধানী সময় বেঁধে দেওয়ায় সকালিক সুখ-শান্তি ত্যাগ করে ঠিক সাতটায় গিয়ে পৌঁছলাম টার্মিনালে। গিয়ে শুনলাম বাস ছাড়ার সময় সাড়ে আটটা। বুঝলাম, সুবীর চৌধুরী গাড়ি ‘মিস’ করতে না দেওয়ার জন্যে সময়কে কমিয়ে বলেছিলেন।

কিছুক্ষণের মধ্যে অন্য 888sport live chatীরাও এসে উপস্থিত হলেন। একে একে এলেন 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরী, তাহেরা খানম, সমরজিৎ রায় চৌধুরী, শাকুর শাহ, শামসুদ্দোহা, খাজা কাইয়ুম, আজাদ, সুলেখা চৌধুরী, আশরাফ, ফিরোজ। আরো এলেন কালি ও কলমের সম্পাদক আবুল হাসনাত এবং গ্যালারির পরিচালক সুবীর চৌধুরী। একটা মজার দিক লক্ষ করলাম, দলে এক দঙ্গল ‘চৌধুরী’র ভিড়, মোট পাঁচজন। তো সবাই একসঙ্গে হতেই বেশ সরগরম ভাব এসে গেল। তাতে আমার তুলতুলে ভাবটিও কাটলো কিছুটা। ভাবলাম, বাসে উঠে কষে একটা ঘুম দেওয়া যাবে।

কিন্তু তার আর প্রয়োজন হবে না বুঝতে পারলাম। কারণ দেখতে দেখতেই  চড়চড় করে ঘুম তাড়ানো গরম রোদ ছড়িয়ে পড়লো। বাসও ছাড়লো। মোবাইল অন করে ঘড়িতে চোখ রাখলাম। আর অমনি লক্ষ করলাম সাড়ে সাতটার বাস ছাড়ার সময়টি গড়িয়ে পড়িয়ে সাড়ে নটায় এসে ঠেকেছে। এমনটা আগে জানলে বাড়িতে আরো ঘণ্টাখানেক ঘুমানো যেত।

টার্মিনালটি বিআরটিসির বটে কিন্তু বাস শ্যামলী পরিবহনের। বাসে ওঠার আগে ধোঁকায় পড়লো আমাদের এক তরুণ 888sport live chatী। বাসে বিদেশ 888sport slot game তার এই প্রথম। এমবার্কেশান কার্ড পূরণ করতে গিয়ে তাই ধোঁকায় পড়ে গেল। হাতে কাগজটি নিয়ে এসে বললো – ‘স্যার এই কলামটিতে কী লিখবো?’

যথার্থ প্রশ্ন। ফ্লাইট নম্বর কত – লিখতে হবে। বললাম, ‘না লিখলেও চলবে। আর লিখতেই যদি চাও তো লেখ বাই-বাস।’ 888sport live chatী লিখতে গিয়ে আবার থেমে গেল। এবার জিজ্ঞাসা – ‘কোন বাস? বিআরটিসি না শ্যামলী?’ শ্যামলীর কথা বলে আর একটু যোগ করে দিলাম। বললাম, ‘ফ্লাইট লিখেছে কেন জানো? বাসও তো দেশে প্রায় উড়েই চলে! বাসে 888sport slot game আমার সচরাচর হয়ে ওঠে না। বলা যায় অ্যাভয়েডই করি। নাইটকোচে রাজশাহী যাতায়াত করতে গিয়ে দুবার ডাকাতের কবলে পড়েছিলাম। সেই আতঙ্ক আজো ভর করে আছে মনে। কিন্তু এটুকুই যে বিপদ তা নয়। বুক-কাঁপানো প্রচন্ড গতিতে যেভাবে চলে তাতে মনে হয়, নেহায়েত পাখা নেই বলে আকাশে ছুঁতে পারছে না। টিকিট কেটে প্রাণটা, দেহটা যেন চালকের কাছে বন্ধক দেওয়া থাকে। তার ইচ্ছার কাছে সঁপে দেওয়া। দুর্ঘটনা ঘটাবার জন্যে কোন প্রক্রিয়া সে গ্রহণ করবে তা যেন তার ইচ্ছার আওতাভুক্ত। মুখোমুখি সংঘর্ষ, গাছের সঙ্গে ধাক্কা খাওয়া, উলটেপড়া, নাকি পথপাশের জলাশয়ে উড়ে গিয়ে পড়ে ডুবে যাওয়া, – কোনটা কখন বাছাই করে নেবে কে জানে?

এই জোরে চালানো নিয়ে আপত্তি করলেও খবর আছে। এই তো কিছুকাল আগে রেলগাড়ির টিকিট না পেয়ে রংপুর থেকে বাসে আসতে হলো। আমরা ছিলাম চারজন। বাসের গতি এতো বেশি ছিল যে, স্থির হয়ে বসার উপায় থাকছিল না। এ নিয়ে অবশ্য অন্য কোনো যাত্রীর কোনো বিকার দেখা যায়নি। হয়তো অভ্যস্ত বলেই এমন নির্বিকার। আমরা চারজনই শুধু মাঝে মাঝে নিষেধ করছিলাম। অধৈর্য হয়ে একবার ধমকও দিতে হয়েছে। তো কোনো বিপদ না ঘটিয়ে 888sport appয় নির্ধারিত বুথের সামনে এসে বাসটি ফাইনালি থামলে যখন নামছি তখন চালক তার কন্ডাক্টর বা সুপারভাইজারকে বলতে লাগলো, ‘কয়েকটা প্যাসেঞ্জার পুরা রাস্তা জ্বালাতন করছে। কাউন্টারের লোক ডাইক্কা একটু সাইজ করতে কও।’ ভাগ্য ভালো – কেউ তা করতে এগিয়ে আসেনি। বুঝে নিয়েছিলাম কথাটি শোনাবার জন্যেই বলা। আগরতলাগামী শ্যামলী বাস অবশ্য বেশ সহনশীল আর ভদ্রগতিতে চললো। চালক, সুপারভাইজার, কন্ডাক্টর সবাই বেশ স্মার্ট এবং মার্জিত স্বভাবের। কিন্তু বিপদ দেখা দিলো অন্য রকমের। ব্যাপারটিকে বলা যায় মোবাইল ঝঞ্ঝাট।

ভেবেছিলাম ৫টায় ফেলে আসা বাকি নিদ্রাটুকু চলতি বাসের মধ্যে পুষিয়ে নেব। কিন্তু কাছেই বসা দুই যাত্রীর চিৎকার করে পুরো পথ বাঁজখাই গলায় মোবাইলে কথা চালিয়ে যাওয়ায় সবই ভন্ডুল। মনে হলো, একজন ব্যবসায়ী আর একজন কন্ট্রাক্টর। বাসে বসেই দিব্যি ব্যবসাপাতির খুঁটিনাটি, লেনদেনের দরদাম মতোন আপিসের কাজ সেরে ফেলছেন। একজন অবশ্য এক পর্যায়ে একটু নরম কণ্ঠ ব্যবহার করলেন। কেমন যেন মিইয়ে যাওয়া স্যারেন্ডারি টোন। ফিউজ হওয়া যাকে বলে। বেচারা মতোন ভাব এসে গেল। বুঝলাম বাড়ির আন্ডারে মানে গিন্নির হাতে পড়েছেন নির্ঘাৎ। আগরতলা থেকে কী কী আনতে হবে তার লিস্টি নিয়ে কথা বলছেন বলে মনে হলো।

সাড়ে ১২টায় সীমান্তে পৌঁছে সেই বিপত্তি থেকে রেহাই পাওয়া গেল নেট না থাকায়। সুপারভাইজার সবার পাসপোর্ট নিয়ে চলে গেলে আমরা দীর্ঘ সময় ধরে একনাগাড়ে ভাঁজ করা হাঁটু সোজা করতে বাস থেকে নামলাম। নামতেই চোখে পড়লো সামনের নো ম্যান্স ল্যান্ডের ওপারে আয়োজকদের পক্ষ থেকে উপস্থিত আগরতলার 888sport live chatী চন্দন মজুমদার, কবি রাতুল দেব বর্মণ, বিধায়ক শ্রী পবিত্র কর এবং আরো কয়েকজন হাত উঁচিয়ে তাঁদের উপস্থিতি জানাচ্ছেন। বলা বাহুল্য, তাঁরা আমাদের অভ্যর্থনা জানানো এবং তাঁদের সীমান্তের দফতরে সহায়তা দিতে এসেছেন। তো দাফতরিক কাজ সমাধা করে ঘণ্টা দুয়েক পর পৌঁছে গেলাম আগরতলায়। ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী শহর আগরতলা। 888sport app থেকে যার দূরত্ব মোটরযানে খুব জোর ঘণ্টা চারেকের। দুদেশের সীমান্ত পারাপারের দফতর দুটির নিয়ম-কানুন সমাধা করে ছাড় পেতে আরো ঘণ্টা দেড়েক। নো ম্যান্স ল্যান্ড দুই মিনিটের। তা অতিক্রম করলেই দুম করে শহরে প্রবেশ।

এগারোজন 888sport live chatী, একজন সাংবাদিক-কবি এবং একজন কর্মকর্তা, মোট তেরোজন গিয়ে উপস্থিত হলাম আগরতলায়। দলের সাইজটি একেবারে আস্ত একটি খেলার টিম যেন। তা এক অর্থে খেলার টিমই বটে। রং-তুলির খেলা। 888sport live chatকলার মাঠটি ভেন্যু। তফাৎ এই যে, কোনো প্রতিপক্ষ নেই, কাউকে পরাজিত করার ব্যাপার নেই। জয়-পরাজয় বলে কিছু নেই। 888sport live chatীরা নিজেই নিজের পক্ষ-বিপক্ষ। ছবি অাঁকার মুহূর্তে একান্তই একক একা। নিজেকেই সামাল দিতে হয় নিজের ক্যানভাস। অতএব খেলাটা নিজের সঙ্গেই।

খেলাই বলি বা অাঁকা-অাঁকি, 888sport live chatীদের একসঙ্গে জড়ো হয়ে একটি কর্মশালায় উপস্থিত হওয়াটাই মুখ্য। আমার তো এই কর্মকান্ডে যোগ দেওয়ার জন্যে সেখানে যাওয়া হলো কয়েকবারই। সে-কারণেই হয়তো ভারতের এই প্রত্যন্ত পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহরটির আকর্ষণ সাথের আর সবার চাইতে একটু যেন বেশিই। 888sport live chatী-কবি-888sport live footballিকদের অনেকে এখন ঘনিষ্ঠ বন্ধু।

এই বন্ধুরা নিজ দেশের সাংস্কৃতিক জগৎ এবং চর্চার অবস্থান নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করেন বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে। এ রকমের দুটি সংগঠন ‘ঈশানী’ এবং ‘কিরাত’। এই সংগঠন দুটি 888sport live chatকলার প্রসার সম্পর্কিত ব্যাপার-স্যাপার নিয়ে ভাবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন দিয়ে 888sport live chatীদের চর্চাকে বেগবান করার প্রচেষ্টা চালান। প্রদর্শনী এবং কর্মশালা সেসবের অন্যতম। নিজেদের এবং আশপাশের অঞ্চলগুলিতে সমকালীন 888sport live chatীরা কেমন কাজ করছেন, কী ধরনের চর্চা করছেন, কী ভাবছেন 888sport live chatকলার সাম্প্রতিক গতি-প্রকৃতি নিয়ে, – এসব দেখা, পরস্পরের ভাববিনিময়ের মধ্য দিয়ে নিজেদের মূল্যায়ন করাই উদ্দেশ্য। সেইসঙ্গে নবীন-প্রবীণদের একাট্টা করে কয়েকদিন 888sport live chatকলাকে সঙ্গী করে উৎসবের আয়োজন দিয়ে আনন্দে থাকার ব্যবস্থা।

এমন আকর্ষণীয় সমারোহে যুক্ত হবার আমন্ত্রণ পেলে এবং 888sport appর নানাবিধ ব্যস্ততা থেকে নির্ভার থাকলে তবেই গিয়ে হাজির হই।

ছোট শহর এবং ভারতের প্রত্যন্ত স্থান হলেও 888sport live chat-সংস্কৃতি নিয়ে কাজ হচ্ছে অনেক। কবি-888sport live chatী-888sport live footballিকরা অসাধারণ নিষ্ঠা আর উৎসাহ-উদ্দীপনায় নিজ নিজ ক্ষেত্রে এবং মাধ্যমে একাধারে চর্চা যেমন করছেন, তেমনি সেসবকে নানান আয়োজন দিয়ে জানান দেওয়ার ব্যাপারটিও ঘটাচ্ছেন। শুধু নিজ রাজ্য ত্রিপুরাকে ঘিরেই এসব, তা নয় অবশ্য। আসাম, পশ্চিমবঙ্গসহ ভারতের 888sport app অঞ্চলকেও যুক্ত করছেন। আর সেইসঙ্গে নিকটতম দেশ 888sport appsের 888sport live chatীদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন বিশেষ অতিথি হিসেবে।

888sport appsকে অন্তর্ভুক্ত করার অন্যতম কারণ বোধহয় এই যে, 888sport live chatকলাচর্চার ক্ষেত্রে নানান বড়সড় কর্মকান্ড চলে। 888sport live chatকলার আন্তর্জাতিক ব্যাপার-স্যাপারগুলিতে 888sport appsের 888sport live chatীদের প্রবেশ ঘটেছে। দেশের ভেতরেও আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীর আয়োজন যেমন আছে, তেমনি বিশ্বের আধুনিক কলাচর্চার সঙ্গে বহু 888sport live chatী সম্পৃক্ত আছেন। সবকিছু মিলিয়ে ভিন্নমাত্রা তৈরি হচ্ছে। 888sport live chatীরাও নানা আঙ্গিকে যে-কাজ করছেন তাও কাছে থেকে দেখার সুযোগ সৃষ্টি একটি দিক। সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হলো, 888sport live chatকলায় উৎসাহী অনুরাগী দর্শক, শুভানুধ্যায়ী এবং 888sport live chatীদের সম্মিলন ঘটানো, ভাব-ভাবনার সেতু তৈরির পাশাপাশি সবার সঙ্গে সবকিছুর মেলবন্ধ রচনা।

একই রকমের আয়োজনে প্রথম গিয়েছিলাম বেশ কয়েক বছর আগে। 888sport live chatী ফরিদা জামান এবং মোখলেস। আয়োজনটি ছিল ‘ঈমানী’ নামীয় সংগঠনের। সহায়তা ছিল ভারতীয় তেল সংক্রান্ত সংস্থা ওএনজিসির। প্রধানের দায়িত্বে ছিলেন অধ্যাপক রামেশ্বর চট্টোপাধ্যায়। নামী কবি এবং 888sport live footballিক তো বটেই, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের একজন সফল সংগঠক হিসেবেও তাঁর পরিচিতি দেশব্যাপী। নিজে 888sport live chatী নন, কিন্তু সরকারি আর্ট কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন বহুদিন। সেই সুবাদে 888sport live chatী এবং 888sport live chatকলার ক্ষেত্রটিতে মন দিয়ে ফেলেছেন। যুক্ত হয়েছেন ক্ষেত্রটিতে। 888sport live chatীদের ভাব-ভাবনার সঙ্গে একাত্ম হয়েছেন। মনে আছে, সেবারও কর্মশালা শেষে দুদেশের 888sport live chatীদের কাজ নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন ছিল। উদ্বোধন করেছিলেন ত্রিপুরা রাজ্যের গভর্নর মহোদয়। উদ্বোধনী সভায় দুদেশের 888sport live chatী এবং 888sport live chatকলাসহ বিশ্বের 888sport live chatকলার সমকালীন চর্চা নিয়ে একটি বক্তৃতা দিতে হয়েছিল। বলা বাহুল্য, বক্ততায় আমি পারদর্শী নই। কী দিয়ে শুরু করতে হয় এবং কোথায় শেষ করতে হয় সেই ধাপগুলিই জানা নেই। তবু দেশের কথা ভেবে মাইকের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম কম্পমানতাকে সঙ্গী করে এবং একটি বাইলিঙ্গুয়াল বক্তৃতা দিয়েই ফেলেছিলাম। সবাই বলেছিলেন, খুব ভালো হয়েছে। এই প্রশংসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আরো জোর প্র্যাকটিস চালিয়ে যাচ্ছি মাইকের সামনে কথা বলার। কিন্তু তেমনটা আর হয়ে উঠছে না। তবু আগরতলার সংগঠকবৃন্দ নাছোড়। বক্তৃতার ব্যবস্থাটা করেই রাখেন। ফলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকীতে তাঁর চিত্রকলা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার সাহসও দেখাতে হয়েছে। ব্যাপারগুলি মন্দ নয়। কে জানে এভাবে ছবি অাঁকা ছেড়ে কথা নিয়ে থাকা অনেকের মতো হয়তো কোনোকালে সুবক্তার লাইনেই কাতারবন্দি হয়ে যাবো। 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিন তো বলতেনই – ‘মিয়ারা খালি ছবি অাঁকলে চলবো না। কথা কওন শিখো।’ তো তাঁর সেই কথা ফলতে শুরু করেছে কি-না কে জানে!

এবার অবশ্য রক্ষা পেয়ে গেলাম বরেণ্য 888sport live chatী কাইয়ুম চৌধুরী দলে থাকায়। বক্তৃতার বড়সড় ঝাপটাটা তাঁর ওপর দিয়েই গেছে। কাইয়ুম ভাই চিরকালই দারুণ বলেন। শ্রোতাদের বেঁধে ফেলেন নিমেষে। চমৎকার সব উপমা দিয়ে দিয়ে সাজিয়ে-গুছিয়ে বক্তব্য পেশ করেন ধীরস্থির ঢংয়ে। একটা গুণ দেখে আমি তো অবাক না হয়ে পারি না। তা হলো, সভায় সহধর্মিণীর উপস্থিতিতে নার্ভাস না হয়ে বক্তৃতার মুহূর্তে অবলীলায় সাবলীল থাকা। বলতে কী – এই কান্ডটি আর কারো মধ্যে তেমন দেখিনি।

এই প্রদর্শনীতে দশ 888sport live chatীর ত্রিশটি চিত্রকলা ছিল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি আগের বারের মতোই সুন্দর বক্তব্য দিয়ে সভাকে মাতালেন। শুরুতেই লালনের ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর হেথা পড়শী বসত করে’ উদ্ধৃত করে ত্রিপুরা তথা আগরতলা আর 888sport apps যে ভাষা এবং সংস্কৃতিতে এক এবং দুঅঞ্চল যে এ কারণে একান্ত সজন তা প্রতীকী করে উপস্থিত করলেন। সেইসঙ্গে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দেশটির সহযোগিতার বিশাল অবদানের কথাও এমন অপূর্বতা মিশিয়ে বললেন যে – সেই সময়টির 888sport sign up bonus সবাইকে আচ্ছন্ন করে ফেললো। সভা শেষে সবাইকেই প্রায় একাত্তরের 888sport sign up bonus রোমন্থনে পেয়ে বসে, বিশেষ করে বর্ষীয়ান যাঁরা একাত্তরে এই মহান কাজটিতে অংশ নিয়েছিলেন তাঁদের। আসলে আগেও দেখেছি, ওই অত বছর আগের সময়টি 888sport app download for androidে এলে আগরতলার প্রবীণরা একধরনের ভিন্নমাত্রার অনুভূতিতে আচ্ছন্ন বোধ করেন আমাদের মতোই। তো কাইয়ুম ভাই এদিন অত্যন্ত গোছানো একটি অভিভূত করা ইমোশনাল বক্তব্য দিলেন। তা এমনই দারুণ যে পরবর্তী বক্তাবৃন্দ সেই দিকটাকে ধরেই কথা বললেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এবং উদ্বোধক ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা মানিক সরকার মহোদয়। তিনি যেহেতু রাজনৈতিক নেতা এবং বাম রাজনীতির মানুষ অতএব তাঁর রাজ্যটিসহ ভারত এবং 888sport appsের সুসম্পর্কের কথা, সাধারণ মানুষের চাওয়া-পাওয়া এবং দুদেশের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মধ্য দিয়ে  নৈকট্যকে আরো নিকটতর করার ইচ্ছা পোষণের কথা বললেন। দুই অঞ্চলের বন্ধুতার মেলবন্ধকে আরো দৃঢ়তর করার আশা ব্যক্ত করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেন। প্রশংসা করেন আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনিরও। অচিরেই তাঁরা আগরতলা সফর করবেন বলেও জানান। এমন চমৎকার করে কঠিন বিষয়কে সহজ এবং প্রাঞ্জলতায় সাবলীল করে বলা যে, তাতে অভিভূত না হয়ে পারা যায় না। এ-ব্যাপারে আমি ইংরেজি ‘স্পেল বাউন্ড’ শব্দটি ব্যবহার করেছিলাম সেখানকার বন্ধুদের অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে।

মুখ্যমন্ত্রী আমাদের তিনদিনের তিন অনুষ্ঠানে বেশ দীর্ঘ সময় দিয়েছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরদিন বইমেলায় বেঙ্গল ফাউন্ডেশন-প্রকাশিত 888sport live chatকলা-বিষয়ক পত্রিকা 888sport live chat ও 888sport live chatীর মোড়ক উন্মোচনে এবং এক সন্ধ্যায় তাঁর দফতরে দাওয়াত দিয়ে আমাদের মাঝে অত্যন্ত ব্যস্ততার মধ্যেও দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। বলা বাহুল্য, সাবইকে আকর্ষণীয় উপহার দিতেও ভোলেননি।

যতদূর জানি, এই প্রদর্শনী, কর্মশালা এবং 888sport app যাবতীয় আনুষঙ্গিক আয়োজনের মুখ্য ভূমিকাটি ছিল বিধায়ক স্ত্রী পবিত্র কর মহোদয়ের। সংস্কৃতিমনা মানুষ তিনি। 888sport live chatকলার প্রতি, কবি-888sport live chatীদের প্রতি তিনি দারুণ অনুরক্ত। সেই কারণে আগরতলার খ্যাতিমান 888sport live chatীদের পাশাপাশি তরুণ 888sport live chatীদের সঙ্গেও সমান ঘনিষ্ঠতা। 888sport live chatী চন্দন মজুমদার, কবি রাতুল দেব বর্মণ, 888sport live chatী পার্থ গাঙ্গুলী প্রমুখকে সার্বিক সহায়তা দিয়ে পুরো অনুষ্ঠানাটিকে                বাস্তবায়িত করিয়েছেন যেমন, তেমনি আকর্ষণীয় এবং ত্রুটিহীন করার চেষ্টা করেছেন।

সমাপ্তি দিবসে শিক্ষামন্ত্রী অনিল সরকার মহোদয় ছিলেন প্রধান অতিথি। তিনিও দুদেশের সুসম্পর্ক, বন্ধুত্ব এবং ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ইত্যাদিকে মুখ্য করে দীর্ঘ বক্তৃতায় অনুষ্ঠানকে প্রাণবন্ত করেছেন। তাঁর বক্তৃতায় পূর্বাঞ্চলের ইতিহাসকে এনে বাংলা ভাষাভাষীদের অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা বর্ণিত হয়েছে। কথায় মার্কসীয় চিন্তা-চেতনা, সাংস্কৃতিক ভাবনা এবং চর্চার অবস্থান সম্পর্কেও আলোকপাত করেছেন। অডিটরিয়ামভর্তি মানুষ এই বর্ষীয়ান নেতার কথা মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন। অভিভূত হয়েছি আমরাও। এই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন 888sport live chatী চন্দন মজুমদার। চমৎকার করে পুরো আয়োজন সম্পর্কে ব্যাখ্যা মতোন কথা বলেন। তিনিও সুবক্তা। খুঁটিনাটি সমস্যা, সাফল্যকে সুন্দর করে উপস্থিত করলেন। কর্মশালাকে উপলক্ষ করে আসলে আড্ডাটা জমে ভালো। সন্ধ্যা হলেই হোটেলে বসে গল্প-গপ্পো। তবে তাতে ‘আর্ট কালচার’ই যে মুখ্য তা বলাই বাহুল্য। আড্ডার সদস্য আমাদের পুরো দল তো বটেই, শহরের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বেশ কিছু 888sport live chatী, 888sport live footballিক ও কবির উপস্থিতিতে বেশ জমজমাট আসরে রূপ নেয়। 888sport live chatী চন্দন মজুমদার, কবি রাতুল দেব বর্মণ, 888sport live chatী পার্থ গাঙ্গুলী, 888sport live chatী স্বপন নন্দী, অধ্যাপক রামেশ্বর ভট্টাচার্য ছিলেন নিয়মিত আড্ডাবাজের ভূমিকায়। চিত্রকলা কোনদিকে যাচ্ছে, দেশ-বিদেশের 888sport live chatীদের চর্চায় কোন দিকগুলি ইদানীং গৃহীত হচ্ছে, ভারতের 888sport app 888sport live chatকলার অংশ কেমন করে বিশ্ববাজার ধরছে, 888sport appsে আমরা কী করছি আর ভাবছি, তরুণরা কী রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রবেশের নিমিত্তে কাজ করছে, এইসব গম্ভীর বিষয়ের পাশাপাশি যে হালকা দিক ছিল না তা নয়। এ ব্যাপারে সবচাইতে পপুলার বিষয় ‘পরচর্চা’ এবং ‘হাস্য-রসাত্মক’ দিকও কম চর্চিত হয়নি।

মোট কথা এবারের আগরতলা যাওয়ায় সেখানকার সবাইকে আমাদের ছবি দেখানো, কর্মশালায় ত্রিপুরা এবং আগরতলার তরুণ 888sport live chatীদের কাজ দেখা এবং তাদের সঙ্গে বসে ছবি অাঁকার মধ্য দিয়ে দিনগুলি দারুণ কেটেছে। ভালো লেগেছে তাঁদের আতিথেয়তা।

আতিথেয়তার কথা মনে এলেই সেই আবার একাত্তরের কথা মনে পড়ে যায়। মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলিতে আগরতলার জনসাধারণের অকৃত্রিম ভালোবাসার কথা 888sport app download for androidে আসে। হাজার হাজার 888sport appsি শরণার্থীকে নয় মাস ধরে যে অসাধারণ সহমর্মিতা, সহায়তা এবং আতিথেয়তায় বরণ করে নেওয়ার দৃষ্টান্ত তা কি 888sport appsের কেউ ভুলতে পারি? তাই তো আগরতলার নামটি উচ্চারিত হলেই অনুভূতিতে এক ধরনের সমীহ জাগানিয়া ভাব সঞ্চারিত হয় মনে। মুক্তিযুদ্ধের চল্লিশ বছর উপলক্ষে আয়োজিত প্রদর্শনীটি ওখানে হতে পারায় আমরা আনন্দিত।