অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সঙ্গে আমার প্রথম প্রত্যক্ষ পরিচয় শান্তিনিকেতনে। ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে তিনি এই প্রতিষ্ঠানে এসেছিলেন। তখনো ভেঙে দেওয়া হয়নি সাবেকি পঞ্চবঢী। পঞ্চবঢী পাঁচখানি লাগোয়া বাসস্থান – গবেষক, অধ্যাপক যাঁরা বিশ্বভারতীর বিশেষ আমন্ত্রণে আসতেন, সেখানেই থাকতেন কিছুদিন। তাঁদেরই জন্য নির্মিত হয়েছিল শান্তিনিকেতনী-শৈলীর ওই একতলা বাড়িগুলি। গাছের ছায়া আর পাখির ডাকে ঘেরা ওই আবাসস্থলে থেকেছেন অনেকেই। শঙ্খ ঘোষের শান্তিনিকেতনবাসের 888sport sign up bonusর জার্নাল পড়েছেন যাঁরা তাঁরা পঞ্চবঢীকে শব্দচিত্রে জানেন। এখন অবশ্য বাড়িগুলি নেই। ভেঙে গেছে। এমনকি হারিয়ে গেছে বাড়ি না-থাকার শূন্যতার 888sport sign up bonusও। ওখানে তৈরি হয়েছে নতুন অবয়ব – পুরনো শান্তিনিকেতনের রূপ-গন্ধ সেখানে সেই নতুন অবয়বে নেই। পূর্বাভাষে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সঙ্গে যখন আমার প্রথম প্রত্যক্ষ পরিচয় হলো, তখন অবশ্য পঞ্চবঢী ছিল। সেখানেই থাকতেন তিনি। বাহুল্যহীন সেই বাসস্থানখানিতে রোদ এসে পড়ত, সন্ধের নীরবতা এসে নামত। কথা হতো নানারকম। সে-কথার মধ্যে থাকত স্পষ্টতা, অতিকথনহীন সুনির্দিষ্টতা – তবে কৌতুকবোধের অভাব ছিল না। শুনতে শুনতে বুঝতে পারতাম তাঁর জীবনচর্যা আর বিদ্যাচর্চা দুয়ের মধ্যে অনায়াস যাতায়াত। জীবনে যা বিশ্বাস করেন, বিদ্যাচর্চায় তা প্রতিফলিত হয়। সবার যে এমন হয় তা নয়, আনিসুজ্জামানের হতো। তাঁর জীবনচর্যার যে-বিশ্বাসগুলি প্রধান সেই বিশ্বাস আর মূল্যবোধই তাঁর বিদ্যানুসন্ধানের মেরুদণ্ড।
১৯৯৫ সালের ২০ মার্চ প্রথম আভা মাইতি স্মারক বক্তৃতার আয়োজন করেছিলেন কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটি। সে-বক্তৃতা দিয়েছিলেন অধ্যাপক অমর্ত্য সেন। তাঁর বলবার বিষয় ছিল, ‘On Interpreting India’s Past।’ সেখানে তিনি বলেছিলেন, ‘positional obojectivity-র কথা। কাকে বলে অবস্থানগত বস্তুমুখিতা? অমর্ত্য জানিয়েছেন,
I have argued elsewhere that the objectivity of an observation or an analysis can be judged not only in uncompromisingly universalist terms … but also with reference to identified ‘positional’ perspectives – as the view from a specified and delineated somewhere. Positionality can influence both (i) observation of events seen from a particular position, and (ii) the overall assessment of an event, from a particular perspective, taking note of different observations. … The nature of the observations and the conclusions drawn are inescapably influenced by the position of observation.
আত্মমুখী দর্শনের চেয়ে এই অবস্থানগত বস্তুমুখিতা গোত্রে আলাদা। একটা ল্যাম্পপোস্টের আকার বড়ো বা ছোটো দেখবেন কি না তা নির্ভর করে আপনি সেটি থেকে কত দূরে আছেন তার ওপর। আপনি তো মনের মাধুরী মিশিয়ে ল্যাম্পপোস্টটিকে বড়ো বা ছোটো করছেন না – আপনার অবস্থানের ওপর নির্ভর করছে আপনি সেটিকে কীভাবে দেখছেন।
আনিসুজ্জামান তাঁর বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রে এ-বিষয়ে সদা-সচেতন। তাঁর বস্তুমুখিতা অবস্থাননির্ভর – তাঁর মনন ও চিন্তন কতগুলি প্রশ্ন-প্রসঙ্গের সাপেক্ষে নিয়ন্ত্রিত, তিনি সেই প্রশ্ন-প্রসঙ্গগুলিকে নির্দেশ করেই তাঁর বস্তুমুখী গবেষণার কাজে বা বিদ্যাচর্চায় অগ্রসর হন। ‘ইহজাগতিকতা’ ও ‘বহুত্ববোধকতা’ – এই দুই বিশ্বাস তাঁর বস্তুমুখিতার কেন্দ্রে রয়েছে।
ইহজাগতিকতা বলতে তিনি জন্ম ও মৃত্যুর মধ্যবর্তী বস্তুগত-জীবন সম্বন্ধীয় উদ্বেগকে বুঝিয়েছিলেন। তাঁর ভাষায়, ‘যে-জগৎ ইন্দ্রিয়গোচর ও যুক্তিগ্রাহ্য এবং যে-জীবন জন্ম ও মৃত্যুর সীমায় আবদ্ধ, সেই জগৎ ও জীবন সম্পর্কে উৎকণ্ঠাকেই বলা যায় ইহজাগতিকতা’ (ইহজাগতিকতা, ১৯৮০)। এই উৎকণ্ঠা তাঁর নানা গবেষণামূলক কাজে প্রকাশিত হতো। বিশেষ করে বহুত্ববোধকতাকে বজায় রেখে বাঙালির ভাষা-888sport live football-সংস্কৃতির নির্মাণ ও আত্মানুসন্ধান তাঁর উদ্দেশ্য। এই দুই মূল্যবোধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র ভাবনা। ধর্মীয় সহনশীলতা ও ধর্মনিরপেক্ষতা যে সমার্থক শব্দ নয় তা তিনি নির্দেশ করেছিলেন। বিশেষ করে আধুনিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ বর্জন করে কোনো রাষ্ট্র যদি বিশেষ ধর্মের অনুবর্তী হয় তখন প্রতর্কটি ‘ধর্মীয় সহনশীলতা’র দিকে ঝোঁকে। হিন্দু বা ইসলামিক রাষ্ট্র নিজেদের ধর্মীয় ক্ষেত্রে সহনশীল বলতেই পারে; কিন্তু তা তো আর ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হলো না। বিশেষ ধর্মীয় পরিচয়টিই হয়ে উঠল মুখ্য, তারপর সেই ধর্মের মাহাত্ম্যকীর্তন করে এলো সহনশীলতার প্রসঙ্গ। আনিসুজ্জামান আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় বাঙালির সাংস্কৃতিক নবনির্মাণে ধর্মনিরপেক্ষতাকে গুরুত্ব দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর নিজের দেশের ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ লঙ্ঘিত হলে ও প্রতিবেশী ভারতবর্ষে হিন্দুত্ববাদ মাথা তুললে তাঁর মন খারাপ হয়। স্বাধীনতার পরে ও স্বাধীন 888sport appsের জন্মলগ্নে বাঙালির আত্মপরিচয়ের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ যুক্ত হোক – এই ছিল তাঁর বাসনা। আবু সয়ীদ আইয়ুব তাঁর ‘সেকুলারিজম ও জওয়াহরলাল নেহেরু’ 888sport liveে লিখেছিলেন,
প্রাচীন যুগে ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি অনিবার্যভাবে জড়িত ছিলো। রাজনীতির প্রকৃত কর্মক্ষেত্র সমাজের সুষ্ঠু গঠন ও উন্নয়ন; ধর্মের ক্ষেত্রে মনের সৌষ্ঠব ও শান্তি। আজ যখন সর্বত্রই কর্মবিভাগের আবশ্যকতা মেনে নেওয়া হয়েছে তখন এটুকু বুঝতে বাধা কেন যে, মানব-জীবনের সবচেয়ে গুরুতর দুই ক্ষেত্রেও সীমারেখা অস্পষ্ট রাখলে উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মের প্রয়োজন আজও রয়েছে, কিন্তু সামাজিক জীবনে শৃঙ্খলা ও বিবর্তনের দায়িত্ব এখন সেকুলার নেতৃবৃন্দ ও প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে ছেড়ে দিতে হবে।
আনিসুজ্জামান অনেকটাই আইয়ুবপন্থী। তবে মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে ধর্মের প্রয়োজন কতটা সে-প্রশ্ন তিনি করতেই পারেন, তিনি নিজে তো ইহজাগতিকতায় বিশ্বাস করে ধর্মের অধিকারকে ব্যক্তিগত জীবনে সীমিত করে দিয়েছিলেন।
আধুনিক রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত বাঙালি ইহজাগতিকতা আর ধর্মনিরপেক্ষতা মেনে চলুক – এই তাঁর আদর্শ; কিন্তু প্রাগাধুনিক বাঙালি তো এই দুই আদর্শ মেনে চলত না। সেই প্রাগাধুনিক বাঙালির অনুসন্ধানে ইতিহাস রচনায় ব্রতী হয়েছিলেন তিনি – ইতিহাস তাঁর বিদ্যাচর্চার সূত্রে 888sport live footballের ইতিহাস। তাঁর প্রথম বই মুসলিম-মানস ও বাংলা 888sport live football প্রকাশ করেছিল পাকিস্তান লেখক সংঘের পূর্বাঞ্চল শাখা। ১৯৬৪ সালে বইটি যখন 888sport appয় প্রকাশিত হয়েছিল তখন ভাষা-আন্দোলন পরবর্তী পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি মুসলমানেরা তাঁদের ভাষিক আত্মপরিচয় প্রতিষ্ঠার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। দীনেশচন্দ্র সেন, সুকুমার সেন 888sport live footballের ইতিহাস লিখতে গিয়ে বাংলা 888sport live footballে মুসলমানদের অবদানের বিষয়টি নিয়ে প্রথমে খানিক নীরব। পরে অবশ্য তাঁরা ফাঁক পূরণে সচেষ্ট হন। এমনিতে দীনেশচন্দ্র ও সুকুমার সেন কেউই সংকীর্ণচিত্ত মানুষ ছিলেন না। জসীমউদ্দীনের কবিখ্যাতি প্রতিষ্ঠায় দীনেশচন্দ্রের বিশেষ ভূমিকা ছিল। জসীমউদ্দীনের নক্সী কাঁথার মাঠ প্রকাশ করেছিলেন গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় এণ্ড সন্স্। বিচিত্রা পত্রের বৈশাখ ১৩৩৭ 888sport free betয় সে-বইয়ের দীর্ঘ আলোচনা করেন দীনেশচন্দ্র। বিচিত্রাতেই প্রকাশিত হয়েছিল দীনেশচন্দ্রের 888sport live ‘বঙ্গভাষার উপর মুসলমানের প্রভাব’ (মাঘ, ১৩৩৫)। সুকুমার সেন আলাদা করে ‘ইসলামি বাংলা 888sport live football’ লিখেছিলেন – এ যেন তাঁর 888sport live footballের ইতিহাসের বইয়ের খণ্ডগুলির পরিপূরক। তিনি ১৯৪২-এ বড়দিনের কাছাকাছি সময়ে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। তখন সুশীল কুমার দে-র অনুপস্থিতিতে অধ্যক্ষ শহীদুল্লাহ্ সাহেব। শহীদুল্লাহ্কে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যব্রত সামশ্রমী মুসলমান বলে সংস্কৃত পড়াননি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিপ্রার্থী শহীদুল্লাহ্র পেছনে লেগেছিল শনিবারের চিঠি – মুসলমান হওয়াই যেন তাঁর অপরাধ। সুকুমার সেনের সঙ্গে শহীদুল্লাহ্র সৌহার্দ্যের অবশ্য অভাব ছিল না। সুকুমার সেন পেট ঠিক নেই বলে শহীদুল্লাহ্র অতিথি হয়ে মাগুর মাছের ঝোল খেতে চেয়েছিলেন, শহীদুল্লাহ্র জবাব, ‘মুরগির ঝোল এমন করে রেঁধে দেওয়া হবে, যা মাগুর মাছের ঝোলের বাড়া।’ এই মিলমিশের সংস্কৃতি মিথ্যে নয়, তবে দীনেশচন্দ্র আর সুকুমার সেন কেউই ‘আধুনিক’ মুসলিম-মানসের সংকট দেশ-কালের প্রেক্ষিতে বিশ্লেষণ করেননি। আনিসুজ্জামান সে-কাজটিই করেছিলেন। তাঁর বইতে বাঙালি মুসলমানের 888sport live football ও চিন্তাধারায় পৌঁছনোর আগে ১৭৫৭ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত কালপর্বে বাঙালি মুসলমানদের আর্থ-সামাজিক অবস্থানের বিশ্লেষণ করেছিলেন। দীনেশচন্দ্র বা সুকুমার সেন কেউই 888sport live footballের ইতিহাস রচনায় এভাবে আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করেননি। গোপাল হালদার তাঁর দুই খণ্ডের মিতায়তন বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস বইতে এ-কাজ করেছিলেন। গোপাল হালদার বামপন্থী দর্শনে বিশ্বাসী বলেই দেশ-কাল-সমাজের বুনিয়াদ বিশ্লেষণ করে তবে 888sport live footballের ইতিহাসের আখ্যান রচনায় হাত দিয়েছিলেন। আনিসুজ্জামানের প্রধান-সম্পাদনায় বাংলা একাডেমির 888sport app থেকে খণ্ডে খণ্ডে যে বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস প্রকাশিত হচ্ছিল তার প্রথম খণ্ডে 888sport live footballের ইতিহাসে প্রবেশ করার আগে বাংলার ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক, নৃতাত্ত্বিক পরিচয় প্রদান করা হয়েছিল। বাংলার 888sport live chatকলা আর ধর্মজীবনের প্রসঙ্গ আলোচনা করা হয়েছিল। এগুলি ছাড়া 888sport live footballের ইতিহাস অসম্পূর্ণ। প্রধান সম্পাদক আনিসুজ্জামান তাঁর ‘নিবেদন’-এ জানিয়েছিলেন,
সমবেত প্রচেষ্টায় 888sport live footballের ইতিহাস-রচনার প্রধান সুবিধে এই যে, বিভিন্ন বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে তাঁর ক্ষেত্র-সম্পর্কিত রচনা লাভ করা যায়। কিন্তু এর একটা অসুবিধের দিকও আছে। সকল পণ্ডিতের অনুসৃত দৃষ্টিভঙ্গি ও রচ888sport promo codeতির ক্ষেত্রে অনেক সময়ে সাযুজ্য থাকে না। এমনকি, একই বিষয় সম্পর্কে একাধিক লেখকের মতপার্থক্য একই গ্রন্থের মধ্যে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। সাযুজ্যের এই অভাব ও মতপার্থক্য প্রধান সম্পাদক ও সম্পাদকমণ্ডলীর পক্ষে দূর করার উপায় থাকে না। বর্তমান ইতিহাসও এই অনিবার্য অসমতা থেকে মুক্ত নয়।
অনিবার্য অসমতা এক অর্থে বহুত্ববোধকতারও সূচক।
প্রাগাধুনিক পর্বের বাঙালির সংস্কৃতি-ভাষা-888sport live football বিচারে বহুত্ববোধকতার প্রসঙ্গটি কেন গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করেন আনিসুজ্জামান? ‘সাংস্কৃতিক বহুত্ব’ রচনায় অমর্ত্য সেনের মতো উদ্ধার করেছিলেন তিনি। ‘অসমজাতীয় স্বরূপের’ অনুসন্ধান করার জন্য ‘বহুত্ববাদ’-এ আস্থা থাকা জরুরি। ১৯৩৮-এ রবীন্দ্রনাথের বাংলাভাষা-পরিচয় প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘888sport appsের ইতিহাস খণ্ডতার ইতিহাস’ – সেই খণ্ডতার মধ্যে ঐক্য কোথা থেকে এলো? রবীন্দ্রনাথ লেখেন, ‘তবু এর মধ্যে যে ঐক্যের ধারা চলে এসেছে সে ভাষার ঐক্য নিয়ে।’ স্বাধীন 888sport appsের স্বপ্ন এক অর্থে এই আদর্শেই গড়ে ওঠে। সেজন্যেই 888sport appsবিরোধীরা রবীন্দ্রবিরোধী ছিলেন। আনিসুজ্জামান রবীন্দ্রনাথের এই আদর্শ 888sport app download for androidে রেখেই প্রাগাধুনিক বাঙালির ইতিহাস ও 888sport live football অনুসরণ করেছিলেন। বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর ভাষিক ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার বাঙালি বহন করছে। তারপর একসময় ভাষার ঐক্যে বাঙালি বাঙালি হয়ে উঠছে।
বাংলা ভাষার আদি 888sport app download apk চর্যাপদের আবিষ্কারক হরপ্রসাদ শাস্ত্রী। নেপালের রাজদরবার থেকে সেই চর্যাপদের পুথি তিনি আবিষ্কার করেছিলেন। তারপর বাঙালির অতীত-সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান বঙ্গীয় 888sport live football পরিষৎ থেকে সেই আদি বাংলা 888sport app download apkর নিদর্শনগুলি ছাপা হলো। এতে বাংলা ভাষার প্রাচীনতা প্রমাণিত হলো বটে; কিন্তু তাতে তো বাঙালির মন পুরোপুরি ভরল না। শাস্ত্রীমশাই তখন 888sport alternative link লিখতে বসলেন। সে-888sport alternative linkের নাম বেণের মেয়ে। বাংলা ভাষার আত্মপ্রকাশের ছবি আছে সে-রচনায়। সেখানে আছে কাল্পনিক এক কবিসভার বিবরণ। সেকালে কথা উঠেছিল ছয়-ভাষায় লিখতে না পারলে নাকি মহাকবি হওয়া যায় না। যাঁরা শুধু বাংলা ভাষায় 888sport app download apk লেখেন তাঁরা নিতান্তই পদকর্তা। অথচ 888sport alternative linkের সেই কবিসভায় শুধু বাংলায় যাঁরা 888sport app download apk লেখেন তাঁদের জয়-জয় পড়ে গেল। চাটিল পাদ এলেন, বীণা পাদ এলেন আর সবশেষে এলেন রাজকুমারী মায়া। ‘শাদা সাটী’ পরেছেন তিনি, ‘মাথা একরূপ মুড়ানই’, ‘মুখে স্বর্গের জ্যোতি’। তীব্র সে প্রেমের 888sport app download apk। ‘সবরার নাম রূপ ধরি সবরি মাতেলা রে।’ পদ শুনে সভা নিস্তব্ধ। সবাই জানে মায়া তার স্বামীর জন্য শবরী হয়েছে। হরপ্রসাদের 888sport alternative linkটি নারায়ণ পত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল। গুরুদাস চ্যাটার্জী এণ্ড সন্স থেকে বই হিসেবে বের হলো ১৩২৬ বঙ্গাব্দে। এই যে ভাষিক আত্মপ্রকাশ এই আত্মপ্রকাশেই তো বাঙালি বাঙালি।
সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ও বিরজাশঙ্কর গুহের দ্য রেসিয়াল এলিমেন্টস ইন ইন্ডিয়ান পপুলেশন বইটির আলোচনার সূত্রে ভারত-সংস্কৃতি ও বাঙালি-সংস্কৃতিতে নানা নৃগোষ্ঠীর অবদানের কথা লিখেছিলেন। আনিসুজ্জামানের সিদ্ধান্তও অনুরূপ। ‘বঙ্গভাষীয় অঞ্চলের ইতিহাস সুদীর্ঘ। ঠিক কবে থেকে বলা না গেলেও এখানে নানান নৃজাতি বহুকাল আগে থেকে বাস করেছে এবং এখানকার সংস্কৃতি বিকাশে ভূমিকা পালন করেছে।’ এই বোধদীপ্তি ছিল বলেই স্বাধীন 888sport appsের পার্বত্য জাতিগোষ্ঠীগুলি সম্পর্কে সমজাতীয়তার আবেগের মধ্যেও তিনি উদার দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখতে পেরেছিলেন। শান্তিনিকেতনের পঞ্চবটী হারিয়ে গেছে, গড়ে উঠেছে নতুন অতিথি-আলয়। নতুন সে-বাড়ি পুরনোকে মনে রাখেনি। আনিসুজ্জামান কিন্তু মনে রাখতেন। ইহজাগতিক ধর্মনিরপেক্ষ আধুনিক আনিসুজ্জামান বহুত্ববোধকতার আদর্শেই অতীতের সঙ্গে অনায়াস যোগ রাখতে পেরেছিলেন। তাঁর এই দৃষ্টিভঙ্গি, তাঁর মানস-অবস্থান কবুল করতে কখনো তিনি দ্বিধা করেননি।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.