আমাদের পথচলা এক সময় থেমে যায়, জীবন থামে না।’ – আনিসুজ্জামান (বিপুলা পৃথিবীর শেষ বাক্য)
অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের জন্ম ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭। তাঁর পুরো নাম আবু তৈয়ব মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান। পুরো নামটি অনেক কাছের মানুষেরও খুব একটা জানা নেই। বিস্মৃতপ্রায়। আনিসুজ্জামানের পিতা এ. টি. এম মোয়াজ্জম ছিলেন একজন সুখ্যাত হোমিও চিকিৎসক। মা সৈয়দা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। তাঁর লেখালেখির হাত ছিল। পিতামহ শেখ আবদুর রহিম ছিলেন লেখক ও সাংবাদিক। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলার বসিরহাট মহকুমার মোহাম্মদপুর গ্রামের বাড়ির শাল-সেগুনের কড়িবর্গায় তাঁর নাম এখনো খোদাই করা আছে। 888sport live footballচর্চা এবং সাংবাদিকতার জন্য এলাকায় তাঁর নাম আজো 888sport app download for android করা হয়। আনিসুজ্জামান ছিলেন পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে চতুর্থ। তিন বোনের ছোট আনিস, তারপর আরেকটি ভাই। বড় বোনও নিয়মিত 888sport app download apk লিখতেন। প্রকৃতপক্ষে শৈশবেই 888sport live football-ভাবনামুখর এক পরিবেশে আনিসুজ্জামান বেড়ে ওঠেন। কলকাতা শহরের পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। পার্ক সার্কাস হাইস্কুলে তৃতীয় থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর তিনি পূর্ব বাংলায় চলে আসেন এবং খুলনা জিলা স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হন। এই স্কুলে মাত্র এক বছর পড়েন তিনি। পিতামহ শেখ আবদুর রহিমের ইন্তেকালের পর আনিসুজ্জামান ও তাঁর পরিবারের জীবনে আসে বেদনাময় সেই পারাপারের কাল। ১৯৪৭ সাল। দেশভাগের মর্মন্তুদ কাল। আনিসুজ্জামানের পিতা সবদিক চিন্তা করে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান স্বাধীন 888sport apps) চলে আসেন।
দুই
১৯৩৭ থেকে ২০২০ সাল। তিরাশি বছরের জীবনে আনিসুজ্জামান তিনটি কালপর্ব, অবস্থা ও মানচিত্রের পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করেছেন। ব্রিটিশ ভারত, পূর্ব পাকিস্তান (পূর্ব বাংলা) এবং স্বাধীন 888sport apps। এদেশের জাতীয় ইতিহাস এবং রাজনৈতিক পালাবদলের সঙ্গে তাঁর প্রায় এক শতাব্দীর জীবন জড়িয়ে রয়েছে। ‘মুকুলের মহফিল’র সদস্য ছিলেন তিনি। আনিসুজ্জামান কলকাতা ছেড়ে খুলনায় যখন আসেন, তখন তাঁর বয়স দশ। বস্তুত তখন থেকেই আনিসুজ্জামানের জীবনসংগ্রাম শুরু হয়। ভিটেমাটি, জন্মভূমি ছেড়ে আসার এক অব্যক্ত কষ্ট তো ছিলই। এটি ব্যাখ্যাতীত। দেশভাগের ইতিহাসের পাতায় কত মানুষের দীর্ঘশ্বাস এভাবে মিশে আছে, তার ইয়ত্তা নেই।
আনিসুজ্জামান ছোটগল্প লিখতেন প্রথম দিকে। তারপর জনজীবনের নানাবিধ দুর্বিপাক ও দুরবস্থাই যেন তাঁকে 888sport live-গবেষণার জগতে এনে হাজির করে। তাঁর পুস্তিকা রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন কী ও কেন ১৯৫২ সালে প্রকাশিত হয়। তিনি ছিলেন বাংলা ভাষার রাষ্ট্রীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের একজন সম্মুখসারির যোদ্ধা। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন ১৯৫৩ সালে। এটিও একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। তাঁর ছাত্রজীবন থেকে শিক্ষকজীবন – আমৃত্যু তিনি বাংলা বিভাগকে নানাভাবে মহিমাময় করেছেন। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের অতুলনীয় মেধাবী ছাত্র হিসেবে, ‘বাঙালি মুসলিম মানস (১৭৫৭-১৯১৮)’ বিষয়ে পিএইচ.ডি গবেষণার সুযোগ্য গবেষক হিসেবে, গুণী ও দরদি শিক্ষক হিসেবে এবং শেষপর্বে বিভাগের এমেরিটাস অধ্যাপক ও জাতীয় অধ্যাপক হিসেবে – প্রতিটি ধাপেই আনিসুজ্জামান ছিলেন একজন উজ্জ্বলতম শিক্ষানুরাগী মানুষ।
১৯৬৪ সালে প্রকাশিত তাঁর মুসলিম-মানস ও বাংলা 888sport live football বঙ্গীয় গবেষণা জগতে এক অপরিহার্য সহায়ক গ্রন্থ। ১৯৬৫ সালে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ‘উনিশ শতকের বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস : ইয়ং বেঙ্গল ও সমকাল’ বিষয়ে পোস্ট ডক্টরাল ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বছরে তিনি এক মাসের অধিককাল লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম লাইব্রেরি এবং ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরিতে অধ্যয়ন ও গবেষণা করেন। সে-সময় থেকেই মনের গভীর-আকাঙ্ক্ষাজাত প্রয়াস পনেরো বছরের সাধনায় পূর্ণতা লাভ করে। ১৯৮১ সালে লন্ডন থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর ফ্যাক্টরি করেসপন্ডেন্স অ্যান্ড আদার বেঙ্গলি ডকুমেন্টস ইন দি ইন্ডিয়া অফিস লাইব্রেরি অ্যান্ড রেকর্ডস। ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হয় আঠারো শতকের বাংলা চিঠি। ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয় পুরোনো বাংলা গদ্যের মতো সমীহ-জাগানিয়া গবেষণাগ্রন্থ।
১৯৭১ সালে আনিসুজ্জামান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। সে-সময় কলকাতায় ‘888sport apps শিক্ষক সমিতি’র তিনি ছিলেন অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিবরণ তিনি তাঁর আত্মকথায় লিখেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন মুজিবনগর সরকারের পরিকল্পনা সেলের সদস্য। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের অনেক অমর কীর্তির মধ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী 888sport appsের সংবিধানের বাংলা 888sport app download apk latest versionকর্মটি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল গণপরিষদ কর্তৃক স্বাধীন 888sport appsের সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের শাসনতন্ত্র কমিটি গঠন করা হয়। ড. কামাল হোসেন তখন আইন ও সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি মূল সংবিধানের খসড়া লিপিবদ্ধ করেন। সংবিধানের মূল খসড়া লেখা হয় ইংরেজিতে। পাশাপাশি সংবিধানের বাংলা পাঠ তৈরির প্রয়োজন দেখা দিলে আনিসুজ্জামানকে সংবিধানের বাংলা 888sport app download apk latest versionের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বসে ড. আনিসুজ্জামান খসড়া সংবিধানের বাংলা 888sport app download apk latest version করেন। এ-সময়ে তিনি ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছুটি নিয়ে মাসে পনেরো দিন করে তাঁকে 888sport appয় অবস্থান করতে হতো। খসড়া সংবিধান প্রণয়ন ও 888sport app download apk latest versionের কর্মযজ্ঞ চলাকালে তিনি প্রয়োজনের নিরিখে একাধিকবার ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উল্লেখ্য, শাসনতন্ত্র কমিটির সদস্য না হয়েও তিনি খসড়া সংবিধান বিষয়ে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে/ বিতর্কে উপস্থিত থাকার সুযোগ পান। ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর এটি গৃহীত হলে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ থেকে সংবিধান কার্যকর হয়। আনিসুজ্জামানের এ-কাজটি চির888sport app download for androidীয় বলাই বাহুল্য। গবেষণার প্রয়োজনে তিনি সফর করেন দিল্লি, করাচি, সানফ্রান্সিসকো, ব্লুমিংটন, মনট্রিল, লন্ডন স্কুল অব ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ, অক্সফোর্ড, সাসেক্স, টোকিও এবং কিয়োটো। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকারে গিয়েছিলেন মস্কো ও বুদাপেস্ট। আনিসুজ্জামান লিখেছেন স্বরূপের সন্ধানে, মুসলিম বাংলার সাময়িকপত্র, মুনীর চৌধুরী, বাঙালি 888sport promo code : 888sport live footballে ও সমাজে, ইহজাগতিকতা ও 888sport appর মতো গুরুত্বপূর্ণ সব বই। সম্পাদনা করেছেন রবীন্দ্রনাথ, বাংলা 888sport live footballের ইতিহাস, নজরুল রচনাবলী, শহীদুল্লাহ্ রচনাবলী এবং ত্রৈলোক্যনাথ রচনা-সংগ্রহ। 888sport app download apk latest version করেছেন অস্কার ওয়াইল্ডের নাটক। পুরোধা হয়েছেন আইন-শব্দকোষ, বাংলা-ফরাসি শব্দকোষ প্রণয়নে। তাঁর অসামান্য আত্মচরিত কাল নিরবধি ও বিপুলা পৃথিবী কেবল আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থই নয়, বাংলার এই জনপদের ধারাবাহিক সংগ্রাম, অগ্রগতি ও বিকাশের এক বিশ্বস্ত ও বস্তুনিষ্ঠ জবানবন্দিও বটে।
দেশপ্রেম, আন্তরিকতা, শিক্ষা ও গবেষণা এবং নিষ্ঠা ও সততার মধ্য দিয়ে তিনি প্রায় সকল কাজেই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন। যাপিত জীবনে অত্যন্ত পরিশ্রমী ছিলেন। লেখনী ও কথাবার্তায় পরিমিত ও আকর্ষণীয় ছিলেন। তাঁর জাদুবিস্তারী বাগ্মিতা, বিনয় এবং নম্রতা মুগ্ধ ও প্রাণিত করেছে অসংখ্য মানুষকে। কালি ও কলমের পুরনো আপিসে স্যারকে বহুদিন প্রত্যক্ষ করেছি। ছিটেফোঁটা লেখাজোখার উসিলায় তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতার অমূল্য সুযোগ পেয়েছি। মনে পড়ে, মুঘল ইতিহাস নিয়ে একবার আলাপ হয়েছে। জ্ঞানের বাতিঘরতুল্য এমন অসামান্য শিক্ষকের জবান চুপচাপ অনুধাবন করে বিশেষ উপকৃত হয়েছি। এ-অভিজ্ঞতা তাৎপর্যপূর্ণ। গভীরতর অনুপ্রেরণা পেয়েছি। স্যারের জন্য হাসনাত ভাইয়ের (আবুল হাসনাত, সম্পাদক, কালি ও কলম) প্রগাঢ় 888sport apk download apk latest versionবোধ ও খিদমতের কিছু মায়াময় দৃশ্যও আমার অবলোকনের আর্কাইভে জমা হয়ে আছে। আপিসের নিজ কামরায় চেয়ারে উপবিষ্ট, সফেদ পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত স্যারের শান্তিময় পূর্ণাঙ্গ অবয়বটি আমার মগজে চিরদিনের জন্য খোদিত হয়ে আছে।
তিন
এ-পর্যায়ে আনিস স্যারের একটি অপ্রকাশিত ঘটনার কথা জানাতে চাই। ঘটনাটি এক বন্ধুর সঙ্গে আরেক বন্ধুর অভিমানের, দূরত্বের। পশ্চিমবঙ্গে আনিস স্যারের কয়েকজন সুহৃদ বন্ধু ছিলেন। তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রিয় বন্ধু ছিলেন কিংবদন্তিতুল্য ইতিহাসবিদ, অধ্যাপক ড. অনিরুদ্ধ রায় (১১ অক্টোবর ১৯৩৬ – ৯ ডিসেম্বর ২০১৮)। উল্লেখ্য, আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য তাঁকে ‘888sport appsের বন্ধু’ সম্মাননা প্রদান করা হয়। ২০১৭ সালের শেষভাগ। আমি তখন গবেষণার কাজে কলকাতায়। একদিন অনিরুদ্ধ স্যারের সাক্ষাৎকার গ্রহণের জন্য তাঁর কসবার বাসায় যাই। আলাপের এক পর্বে আনিস স্যারের প্রসঙ্গ আসে। জানতে পারি, ড. অনিরুদ্ধ রায় ও ড. আনিসুজ্জামান অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকেই তাঁদের মধ্যে পারস্পরিক জানাশোনা ও সখ্য তৈরি হয়। দুই বন্ধু একসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের জন্য কাজ করেছেন। শরণার্থীদের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিয়েছেন। চন্দন রায়ের (অনিরুদ্ধ রায়ের কনিষ্ঠ ভ্রাতা) কাছে জানা যায়, 888sport appsের স্বাধীনতাযুদ্ধের পক্ষে নৈতিক সমর্থনলাভের প্রত্যাশায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় 888sport apps সহায়ক সমিতির উদ্যোগে ড. এ. আর মল্লিক ও ড. আনিসুজ্জামানকে উত্তর ভারতের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় 888sport apps সহায়ক সমিতির পক্ষে এ-দলে ছিলেন ড. অনিরুদ্ধ রায়, অনিল সরকার, সৌরীন্দ্র ভট্টাচার্য ও ড. বিষ্ণুকান্ত শাস্ত্রী।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে আলাপের পর আনিসুজ্জামানের প্রজ্ঞা ও প্রতিভা নিয়ে অনিরুদ্ধ রায় নির্মোহ মূল্যায়ন করেন। যথোপযুক্ত তারিফ করেন। তারপর নানা আলাপচারিতার ফাঁকে অনিরুদ্ধ স্যার কিছুটা আড়ষ্ট হয়ে আমাকে জানালেন – ‘আনিস আমার কাছের বন্ধু। প্রিয় বন্ধু। খুব সামান্য একটি কারণে ওঁ আমার ওপর রাগ করে যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। অনেকদিন হয়ে গেল। ঘটনাটি শোনো – শেষবার ওঁ যখন কলকাতায় এলো; আমাকে ফোন দিয়ে সে ওই সময়ই আমার কাছে আসতে চাইলো। আমি বললুম, এবেলায় এসো না। এই রাস্তায় একটু গণ্ডগোল চলছে। পলিটিক্যাল কী একটা কারণে রাস্তা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। কাল চলে এসো; তা-ই ভালো হবে। শুধু এইটুকু কথা শোনার পর সে ফোন রেখে দেয়। আমাকে ভুল বুঝে দূরে সরে যায়। আনিস আর আসেনি। আর কোনোদিনও যোগাযোগ করেনি। আমি বহু চেষ্টা করেছি …। সাইফুল, তুমি কি 888sport appয় ফিরে ওঁকে একটু বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আমার প্রতি ওঁর অভিমানটা ভেঙে দিতে পারো? ওঁ যদি আমাকে অন্তত একবার ফোন করতো!…’
আবেগাক্রান্ত হয়ে স্বভাবতই আমি ব্যাপারটা খুব গুরুত্বের সঙ্গে গ্রহণ করি। একটা বিশেষ দায়িত্ববোধ কাজ করে। তো, কলকাতা থেকে 888sport appয় ফেরার পরদিন আমি আনিস স্যারকে ফোন করে পুরো ঘটনাটি জানাই। মানে, সেদিনের প্রকৃত সত্য তুলে ধরি। নানাভাবে অনুরোধ করি অনিরুদ্ধ স্যারের প্রতি অভিমান ভুলে যেতে। অনিরুদ্ধ স্যার আপনার সত্যিকারের ভালো বন্ধু, আপনাকে অনুভব করেন, মিস করেন – ইত্যাদি কথা বলে চেষ্টা করি আনিস স্যারের অভিমান ভাঙানোর। অবশেষে তিনি বুঝলেন। রাজি হলেন। বললেন, ‘ঠিক আছে, আমি অরুকে (অনিরুদ্ধ রায়ের ডাকনাম) ফোন করবো।’ আমার সঙ্গে কথা বলার পরদিনই আনিস স্যার অনিরুদ্ধ রায়কে ফোন করেন। অনিরুদ্ধ স্যার খুব খুশিমনে সংবাদটি আমাকে ফোনে জানান। আমার এই অতি সামান্য খিদমতের জন্য তিনি একাধিকবার ধন্যবাদ দিলেন। দুই বন্ধু আবার মিলে গেলেন। আমার এত ভালো লাগলো ব্যাপারটা! এই অনুভূতি ব্যাখ্যাতীত। অনিরুদ্ধ রায়ের পুত্র কৌশিক রায় আনিস স্যারের ইন্তেকালের পর জানালেন – ‘বাবা যতদিন বেঁচে ছিলেন, আনিস কাকার সাথে যোগাযোগ রেখেছেন …।’ আহা, আজ দুজনের কেউই বেঁচে নেই। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আনিস স্যার চলে গেলেন (১৪ মে ২০২০)। দুনিয়াতে বোধহয় একটু ভালোবাসা আর একটু অপেক্ষা ছাড়া কোনোকিছুই তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। বাদশাহ বাহাদুর শাহ জাফরের শের মনে পড়ে –
উমর-এ-দরাজ মাঙ্গ কে লায়ে থে চার দিন
দো আর্জু মেঁ কট গয়ে, দো ইন্তেজার মেঁ।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.