আবদুলরাজাক গুরনাহ : জীবন ও 888sport live football

এক

২০২১ সালে 888sport live footballে নোবেল 888sport app download bd পেয়েছেন পূর্ব আফ্রিকার জাঞ্জিবার দ্বীপের (বর্তমান তানজানিয়া) ব্রিটিশ নাগরিক ঔপন্যাসিক আবদুলরাজাক গুরনাহ। আফ্রিকার লেখকদের মধ্যে তাঁর আগে নোবেল পেয়েছেন আলবেয়ার কামু (১৯৫৭), ক্লদ সিমোক (১৯৮৫), ওলে সোয়েঙ্কা (১৯৮৬) এবং নাগিব মাহফুজ (১৯৮৮)।

কামু জন্মসূত্রে আলজেরীয় হলেও তিনি কিন্তু ফরাসি। ক্লদের জন্ম মাদাগাস্কারে। ফরাসি ভাষার ঔপন্যাসিক। নাগিব মাহফুজ মিশরীয়। তাঁর ভাষা আরবি। তিনি আরবি ভাষার লেখক। তাঁদের মধ্যে নাইজেরিয়ার ওলে সোয়েঙ্কাই অবিমিশ্র আফ্রিকী লেখক।

বৃহত্তর অর্থে আফ্রিকা বলতে দক্ষিণ আফ্রিকার কথাও এসে যায়। দক্ষিণ আফ্রিকার শ্বেতাঙ্গ লেখিকা নাডিন গর্ডিমার (১৯৯১) এবং জন ম্যাক্সওয়েল কোয়েৎজিও নোবেল পান (২০০৩)। নাইজেরিয়ার লেখক চিনুয়া আচেবে বিশ্ব888sport live footballে নামকরা ঔপন্যাসিক হলেও এবং কেনিয়ার ঔপন্যাসিক গুগি ওয়া থিয়োঙ্গো দীর্ঘদিন ধরে আফ্রিকার 888sport live footballকে আলোকিত করে গেলেও তাঁদের কেউই নোবেল 888sport app download bd পাননি।

ওপরে যাঁদের কথা বলা হলো আবদুলরাজাক গুরনাহ তাঁদের চেয়ে বিশ্ব888sport live footballাঙ্গনে কম আলোচিত। ব্যাপারটা তিনিও জানেন। দ্য গার্ডিয়ানের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে গুরনাহ বলেন, ‘হয়তো আরো বেশি পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারতাম।’ তাঁর নোবেল পাওয়াটা তাই খুব প্রত্যাশা জাগায়নি পাঠক এবং 888sport live football-গবেষকদের মধ্যে। অবশ্য তার অর্থ এই নয় যে, নোবেল পাওয়ার জন্য তাঁর কম যোগ্যতা রয়েছে।

গুরনাহর দীর্ঘকালের সম্পাদক আলেকজান্দ্রা প্রিঙ্গেল বলেন, ‘হি ইজ ওয়ান অব দ্য গ্রেটেস্ট লিভিং আফ্রিকান রাইটার্স, অ্যান্ড নো ওয়ান হ্যাজ এভার টেকেন অ্যানি নোটিস অব হিম, অ্যান্ড ইট’স জাস্ট কিলড মি।’

এ-মন্তব্যে গুরনাহ বলেন, ‘আমার মনে হয় আলেকজান্দ্রা বোঝাতে চেয়েছে, তার ধারণা আমার আরো ভালো অবস্থানে থাকা উচিত ছিল। অবশ্য আমি মনে করি না আমাকে উপেক্ষা করা হয়েছে।’

নোবেল পাওয়ার আগে (১৯৯৪) গুরনাহ বুকার প্রাইজের জন্য একবার সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত হয়েছিলেন এবং আরেকবার মনোনয়ন লাভ করেছিলেন। হোয়াইটব্রেড প্রাইজ এবং লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমস বুক প্রাইজের সংক্ষিপ্ত তালিকায়ও তাঁর নাম ছিল। তাই তিনি যথার্থই বলেছেন, তাঁকে উপেক্ষা করা হয়নি।

নোবেল কমিটির সভাপতি এন্ডারস ওলসন বলেন, (গুরনাহ) ‘ওয়ান অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস মোস্ট প্রমিন্যান্ট পোস্ট-কলোনিয়াল রাইটার্স’।

দুই

আবদুলরাজাক গুরনাহর জন্মস্থান তানজানিয়া বা জাঞ্জিবার। নোবেল 888sport app download bdপ্রাপ্তির সংবাদে কেউ কেউ তাঁর পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সমাজ888sport apkী আইকান্দে কোয়ো বলেন, ‘আবদুলরাজাকের পরিচয়ের বিষয়টি খোলসা হওয়া দরকার।’ প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক, তাঁর আত্মপরিচয়ে সমস্যা কোথায়?

সাংবাদিক এরিক কাবেন্দ্রা লিখেছেন, ‘জাঞ্জিবারে আরবদের ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে আফ্রিকানদের যে-বিপ্লব সংঘটিত হয়, তখন আবদুলরাজাক এবং তাঁর পিতামহ জন্মভিটা ছেড়ে, দেশ ত্যাগ করে ব্রিটেনে চলে যান।’ ব্রিটেন তখন জাঞ্জিবারে আরব শাসনকে প্রোটেক্ট করেছিল ‘প্রোটেক্টর’ হিসেবে। আরব ওমানের ঔপনিবেশিক শাসনের পেছনে 888sport free betলঘু ও স্থানীয় কিছু আফ্রিকানের সমর্থন ছিল। ওমানের ঔপনিবেশিক শাসকেরা এভাবে একশ বছরের (১৮৫৬-১৯৬৪) বেশি জাঞ্জিবার শাসন করেন।

আরব এবং আরবদের ঔপনিবেশিক শাসনে স্থানীয় যাঁরা সুবিধা ভোগ করেছেন, বিপ্লবোত্তর জাঞ্জিবারে তাঁরা স্বাভাবিকভাবেই সমস্যার সম্মুখীন হন এবং দেশ ত্যাগে বাধ্য হন। আবদুলরাজাক গুরনাহ তাঁর পিতামহের সঙ্গে এ-কারণেই দেশ ত্যাগ করেছিলেন।

আবদুলরাজাক ব্রিটেনে পাড়ি জমান শরণার্থী হিসেবে। তখন তাঁর বয়স ছিল আঠারো বছর। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে ব্রিটেনে নাগরিকত্ব লাভ করেন তিনি।

১৯৬৩ সালে কমিউনিস্টপন্থীরা আরব ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে বিপ্লব সংঘটিত করে এবং তাদের ক্ষমতাচ্যুত করে। আরবদের ইসলামিক শাসনের বিরুদ্ধে এটা ছিল মূলত কমিউনিস্টদের বিজয়। তাই প্রতিপক্ষের লোকদের বিরুদ্ধে বিপ্লবীরা কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে।

স্নায়ুযুদ্ধের সময়টায় দ্বিধাবিভক্ত বিশ্বে কমিউনিস্ট ব্লকের রাশিয়া, পূর্ব জার্মানি, পোল্যান্ড, উত্তর কোরিয়াসহ অন্য দেশসমূহ বিপ্লবীদের পাশে এসে দাঁড়ায়। আরব মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধে বিপ্লব বলে পুঁজিবাদী আমেরিকার দোসর ইসরায়েলও বিপ্লবীদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। চীন সোভিয়েত জোটে না থাকলেও কমিউনিস্ট দেশ হিসেবে আলাদাভাবে নতুন প্রশাসনকে সাহায্য করে।

এরকম একটা ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বাভাবিকভাবেই জাঞ্জিবারে অস্থিতিশীলতা, অস্থিরতা, বিশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তাহীন অবস্থা তৈরি হয়। প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে সালতানাতের আরব এবং তাদের সহযোগীদের গণহারে হত্যা করা হয়। এই গণহত্যা অভ্যন্তরীণ কোন্দলকে আরো ভয়াবহ করে তোলে। ভয়ে লোকজন দেশছাড়া হয়।

দেশ ছেড়ে যাওয়া এই লোকদের ভিন্ন মতাদর্শের কারণে নতুন প্রশাসন তাদের জাঞ্জিবারের নাগরিকত্ব খারিজ করে দেয় এবং বিষয়সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে। জাঞ্জিবার এবং তানজানিইকা একত্রিত হয়ে তানজানিয়া রাষ্ট্র গঠিত হয়। নতুন রাষ্ট্রের সংবিধানে দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়নি। ফলে যাঁরা বিপ্লবোত্তর কালে দেশ ত্যাগ করেন তাঁদের, বিশেষ করে পুঁজিবাদী শত্রুরাষ্ট্রে আশ্রিত ব্যক্তিদের, তানজানিয়ার নাগরিকত্ব পাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

একবার প্রবাসীদের অনুরোধে তানজানিয়ার সরকার নীতিগতভাবে দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকার করে নিতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছিল; কিন্তু সাংবিধানিক বাধার মুখে সরকার তার অবস্থান থেকে সরে আসে। সংবিধানের শক্তিতে দেশত্যাগীদের বিষয়সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দিলে সম্পত্তিও ফেরত দিতে হবে। সরকার সম্পত্তিগুলো রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবে গ্রহণ করে কমিউনিস্টভাবাপন্নদের মধ্যে বিলিবণ্টন করে দিয়েছে বা হস্তান্তর করেছে। এখন সেসব সম্পত্তি উদ্ধার সম্ভব নয়। দ্বৈত নাগরিকত্ব মেনে নিলে নতুন করে জটিলতা তৈরি হবে।

এদিকে নোবেল পাওয়ায় গুরনাহকে অভিনন্দন জানিয়ে তানজানিয়ার প্রেসিডেন্ট সামিয়া সুলুহু হাসান বলেছেন, ‘এ-888sport app download bd আপনার জন্য, এমনকি আফ্রিকার ও আমাদের তানজানিয়ার জন্য সম্মানের।’

তা দেখে সাংবাদিক এরিক কাবেন্দ্রা প্রশ্ন করেন, ‘তানজানিয়া তাঁর দ্বৈত নাগরিকত্ব স্বীকার করে না, তাহলে কেন নির্লজ্জের মতো আমরা তাঁর বিজয় উদযাপন করছি!’

তিন

গুরনাহ জন্মসূত্রে আরবি এবং সোহালি ভাষা জানতেন। তবে লেখাপড়া ও লেখাজোখা করেছেন ইংরেজি ভাষায়। তিনি মূলত ইংরেজি ভাষার লেখক।

ইংল্যান্ডে যাওয়ার পর শুরুতে তিনি ক্যান্টারবারির ক্রাইস্ট চার্চ কলেজে ভর্তি হন। তবে ডিগ্রিটা প্রদান করে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন। অতঃপর ১৯৮৯ সালে ইউনিভার্সিটি অব কেন্ট থেকে পিএইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ক্রাইটেরিয়া ইন দ্য ক্রিটিসিজম অব ওয়েস্ট আফ্রিকান ফিকশন’।

১৯৮০ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত গুরনাহ নাইজেরিয়ার বায়েরো ইউনিভার্সিটি ক্যানোতে লেকচারার ছিলেন। সেখান থেকে ইউনিভার্সিটি অব কেন্টে চলে আসেন ইংরেজি 888sport live footballের অধ্যাপক হিসেবে। এখানে তাঁর পড়ানোর বিষয় ছিল পোস্ট-কলোনিয়াল লিটারেচার। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি ২০১৭ সালে অবসরে যান। তবে এখনো তিনি প্রফেসর এমেরিটাস অব ইংলিশ অ্যান্ড পোস্ট-কলোনিয়াল লিটারেচার হিসেবে আছেন।

পোস্ট-কলোনিয়াল লিটারেচার বা উত্তর-ঔপনিবেশিক 888sport live football পড়াতে গিয়ে তিনি মূলত অভিবাসী 888sport live footballের দিকপাল এবং তাঁদের লেখার ওপর আলোকপাত করতেন। দিকপালদের মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নোবেল বিজয়ী লেখক ভি এস নাইপল – যিনি ক্যারিবিয়ান দ্বীপ ত্রিনিদাদ থেকে ব্রিটেনে অভিবাসী হন; সালমান রুশদি – তিনিও ভারত থেকে ব্রিটেনে পাড়ি জমান; মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইসরায়েল থেকে আমেরিকা গেছেন এডওয়ার্ড সাইদ; আফ্রিকা থেকে তেজো কোলে এবং জার্মানি থেকে ডাবলিউ জি সেবাল্ড।

উপনিবেশ-উত্তর 888sport live footballে অভিবাসন বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। অভিবাসন সম্পর্কিত কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো এ-888sport live footballের উপজীব্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জেমস উড ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ‘এল আর বি’ বক্তৃতায় বিষয়গুলোর আলোকে অভিবাসীদের বাস্তুহীনতা, স্বত্ব বা মালিকানাহীনতা, নির্বাসন সাজা, নিজের নির্বাচিত অভিবাসন, পার্থিব বাস্তুহীনতা প্রভৃতি ব্যাপার তুলে আনেন। 888sport app download for android করা যেতে পারে, এই অভিবাসন, বিশেষত ব্রিটেন প্রবাসী 888sport appsি বংশোদ্ভূত লেখক জিয়া হায়দার রহমানের 888sport alternative link ইন দ্য লাইট অব হোয়াট উই নো, নিয়ে দ্য নিউইয়র্কার পত্রিকায় চার হাজার শব্দের আলোচনামূলক 888sport live লিখেছিলেন উড। 888sport alternative linkটির মধ্যে অভিবাসী জীবনের নানা যন্ত্রণা রয়েছে, যা উডকে ব্যাপকভাবে নাড়া দিয়েছিল।

উপনিবেশ-উত্তর 888sport live footballের ইতিহাসে অভিবাসন নিয়ে 888sport alternative link লিখে প্রথম পশ্চিমের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ভিএস নাইপল। ভৌগোলিক স্থানচ্যুতি, বিলঙ্গিংলেসনেস এবং আত্মপরিচয় সংকটের পটভূমিতে লেখা তাঁর 888sport alternative link এ হাউস ফর মিস্টার বিশ্বাস ব্যাপকভাবে সাড়া জাগায়। আফ্রো-ক্যারিবিয়ান লেখকদের সম্পর্কে ক্যারল ভয়েস ডেভিস সুনির্দিষ্টভাবেই বলেছেন, ‘অভিবাসন জীবনের অভিজ্ঞতা নিশ্চিতভাবেই তাঁদের সামনে ঠেলে দিয়েছে। উদাহরণ ভিএস নাইপল।’

উপনিবেশ-উত্তর 888sport live football পড়ানোর বিষয়টি বেছে নেওয়ার ব্যাপারে নিজের অভিবাসী জীবনের নানা অভিজ্ঞতা আগ্রহ হিসেবে গুরনাহর ভেতর কাজ করেছে, তা নির্দ্বিধায় বলে দেওয়া যায়।

চার

গুরনাহ লেখা শুরু করেন গৃহকাতরতা থেকে। প্রথমে ডায়েরি লেখা শুরু করেন, যা একসময় বাড়ির কথা, আশেপাশের মানুষের কথায় কল্পিত গল্পের রূপ পায়। শরণার্থী জীবনের দুঃখময় অভিজ্ঞতাগুলো, নিজের দেশ ছেড়ে অন্য এক দেশে বসবাস, স্থানচ্যুতির অনুভূতি প্রভৃতি তাঁর লেখায় স্থান পায়। এর মধ্যেই তিনি যেন লেখার উপাদান এবং প্রেরণা খুঁজে পান। তাঁর চিন্তার সবটা জুড়ে আবির্ভূত হয় জাঞ্জিবার, সেখানকার নিম্ন পর্যায়ের মানুষের জীবনসংগ্রাম,

অভাব-অভিযোগ এবং অনৈতিক ও অশুচি জীবনের বাস্তব চিত্র – যা একসময় গুরনাহ শৈশব-কৈশোর, এমনকি যৌবনের প্রারম্ভে প্রত্যক্ষ করেছেন। লিখতে গিয়ে দেখলেন, তাদের জন্য তাঁর অন্তরে দরদের একটি জায়গা আছে। সেখান থেকেই বইছে লেখার ধারা।

তাঁর প্রথম 888sport alternative link মেমোরি অব ডিপার্চার ১৯৮৭ সালে ৩৯ বছর বয়সে লেখা। ততদিনে মেধা এবং জ্ঞান ও প্রজ্ঞার দিক থেকে কেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের এই 888sport live footballের অধ্যাপক বেশ পরিপক্ব। পটভূমি বেছে নিয়েছেন পূর্ব আফ্রিকার সমুদ্রোপকূলীয় অঞ্চল এবং সেখানকার মানুষের দুঃসহ জীবন।

এক দরিদ্র পরিবারের ছেলে হাসান ওমর। বয়স পনেরো বছর। পারিবারিক পরিবেশ কণ্টকময়। পিতা নীতি-নৈতিকতাহীন নিম্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মচারী, লম্পট এবং মদ্যপ। রাতের বেলায় অন্ধকারে ঘর ছেড়ে রাস্তায় বের হয় সস্তায় পাওয়া যায় এমন দেহপসারিণীদের কাছে।

মাঝে-মধ্যে বালকদের সঙ্গেও দৈহিক সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। এজন্য এক বছর জেলও হয় তাঁর।

মা সবকিছু সহ্য করেন। সংসারের ঘানি টেনে টেনে এই অসুখী মানুষটি রোগব্যাধিগ্রস্ত। বোন জাকিয়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে, ‘যার টাকা আছে আমাকে বিছানায় তুলুক।’ নষ্ট হয়ে গেছে সে। বড় ভাই সাঈদ বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত, বালকদের ধরে এনে বিছানায় তোলে। নানা কারণে-অকারণে ছেলেদের মারধর করে, বেজন্মা বলে গালি দেয়।

হাসান ওমরের জবানীতে উত্তম পুরুষে লেখা 888sport alternative linkটি। সে এক জায়গায় বলছে, ‘সাঈদ ঘুরে দৌড়াতে লাগলো। বাবা তার ডান কাঁধে ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দিলো। শব্দটা মাংসে কুড়ালের কোপের মতো শোনালো। সাঈদের হাঁটু বেঁকে গেল, শ্বাসকষ্টে সে মুখ হা করে নিশ্বাস নিচ্ছে। বাবা কষে লাথি মারলো ওর পেটে। সাঈদ উঠে দাঁড়াতে চাইল।

বাবা আবার লাথি মারল। ওকে অনবরত ঘুষি মারতে লাগল। মাটিতে মাথা ঠুকে দিলো। হাতের কব্জির গিঁটে পেটাতে লাগল। মারের চোটে সাঈদ পায়খানা করে দিলো। মা এগিয়ে এলো ছেলেকে বাঁচাতে। এবার সে স্ত্রীর দিকে ফিরে হিংস্র ক্রুদ্ধ পশুর মতো ফুঁসতে থাকলো। তার অসুরিক ক্রোধ যেন বেড়ে গেছে, ছেলেকে আরো পেটাচ্ছে। তার ঘাম ঝরছে।

ছেলের দুপাশে দুই পা রেখে সে বলল, ঠিকমতো হয়েছে, নাকি আরো মার দিতে হবে?’

সাঈদের অপরাধ ছিল খুবই সামান্য। রাস্তার ধারে আবর্জনার মধ্যে কিছু টাকা কুড়িয়ে পায় দুই ভাই। সে-টাকায় একটি বল কেনে। অর্থের উৎস সম্পর্কে সন্দেহের কারণে এই মার। মারের ফলে সাঈদ অসুস্থ হয়ে পড়ে। মায়ের অসাবধানতায় আগুনে পুড়ে তার মৃত্যু হয়। বাবার এর জন্য কোনো অনুশোচনা নেই, বরং ওমরকে গাল দিলেন এক নোংরা খুনি বলে।

তাই সে বাড়ি থেকে পালিয়ে মামার বাড়ি নাইরোবিতে চলে যায়। মামাতো বোন সালমার সঙ্গে মেলামেশা করতে দেখে বাড়ি থেকে বের করে দেয় মামা। সব উচ্চাশার সমাপ্তি হলে সে জাহাজে একটি চাকরি পেয়ে যায়। বাড়ি থেকে চলে যাওয়ার কালে বলে আবার ফিরে আসবে। কিন্তু আর ফিরে আসেনি হাসান ওমর।

না, এই 888sport alternative linkের জন্য উত্তর-ঔপনিবেশিক ঔপন্যাসিক বলা যাবে না গুরনাহকে, বলা যাবে না অভিবাসী 888sport live footballিকও, পরের বইগুলোতেই তাঁর এ-পরিচয় স্পষ্ট।

১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয় 888sport alternative link পিলগ্রিমস ওয়ে। নামটির মধ্যে তীর্থযাত্রার পথের ইঙ্গিত রয়েছে এবং তা প্রতীকী। তীর্থযাত্রীর পথ ক্যান্টারবারির দিকে [Pilgrim to Canterbury]- একথা অভিধানেও আছে। গুরনাহর যাত্রাটা আফ্রিকার জাঞ্জিবার থেকে এই ক্যান্টারবারিতেই। স্বাভাবিকভাবে এ-যাত্রায় আত্মপরিচয়, 888sport sign up bonus, সম্পর্কের সূত্রগুলো গুরুত্ব পায়, কোথাও প্রশ্ন হয়ে দেখা দেয়। তিনি কি সে সকল পিউরিটান – যাঁরা ১৬২০ খ্রিষ্টাব্দে ইংল্যান্ড থেকে আমেরিকার প্লাইমাউথে গিয়ে উপনিবেশন স্থাপন করেছিলেন – তীর্থযাত্রার পথে তাঁদের কথা ভেবে দীর্ঘশ্বাস চেপে রেখেছেন?

১৯৯০ সালে প্রকাশিত হয় তৃতীয় 888sport alternative link ডটি। এতে গুরনাহ একজন অভিবাসী কৃষ্ণাঙ্গ 888sport promo codeর জীবনের চিত্র প্রতিফলিত করেন। এই কৃষ্ণাঙ্গ 888sport promo code পঞ্চাশের দশকের বর্ণবাদী ইংল্যান্ডের কঠোর অবস্থার মধ্যে বেড়ে উঠেছে। তার মা পরিবার সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করলেই নীরব থাকেন। সে জানে না তার পরিবারের ইতিহাস। তাহলে কী সে শেকড়হীন? বই পড়ায় মনোযোগী হয় সে। বইয়ের মাধ্যমে সে তার নিজের স্থান এবং পরিচয় তৈরির চেষ্টা করে, সঙ্গে নিজেকে পুনর্গঠনেরও।

১৯৯৪ সালে প্রকাশিত 888sport alternative link প্যারাডাইস গুরনাহকে সুখ্যাতি এনে দেয়। এ-বইয়ের জন্য তিনি বুকার এবং হোয়াইটব্রেড 888sport app download bdের সংক্ষিপ্ত তালিকায় স্থান করে নেন।

এ-888sport alternative linkের গল্প ইউসুফ নামে এক বারো বছর বয়সী বালকের। তার জন্ম তানজানিয়ার এক কল্পিত শহর কাওয়ায়। তার পিতা এক প্রভাবশালী, ধনী আরব বণিকের কাছে ঋণগ্রস্ত। বণিকের নাম আজিজ। ইউসুফ বাবার ঋণের জন্য আজিজের কাছে অস্থাবর সম্পত্তির মতোই বন্ধক আছে, জিম্মা নয়। ইউসুফকে বিনা বেতনে আজিজের ব্যবসা-বাণিজ্যে খাটাখাটুনি করতে হয়।

মধ্য আফ্রিকা এবং কঙ্গো বেসিনে আজিজ এবং তার লোকজন বাণিজ্যে যায়। তাদের কাফেলায় ইউসুফকেও সঙ্গী করা হয়। এখানে এসে তারা স্থানীয় আদিবাসীদের বাধার মুখে পড়ে। হিংস্র বন্যপ্রাণীর আক্রমণ এবং কষ্টদায়ক বন্ধুর পথ (ভূখণ্ড) পাড়ি দিতে হয় তাদের। বাণিজ্যে ব্যর্থ হয়ে লোকসান গুনে আজিজের কাফেলা (ক্যারাভান) পূর্ব আফ্রিকায় ফিরে আসে।

ইউসুফ সুদর্শন বালক। বয়স কম হলেও গায়ে-গতরে বলিষ্ঠ। 888sport promo codeরা তার প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। আজিজের স্ত্রীও সুঠামদেহী ইউসুফকে পছন্দ করে। আজিজ তা আঁচ করতে পেরে ইউসুফকে সঙ্গে সঙ্গে রাখে। আজিজের স্ত্রী ভাবে, সে ইউসুফের সঙ্গে পালাবে। কিন্তু ইউসুফ যে চালচুলোহীন, তাদের চাকর। দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে সে। ইউসুফকে আজিজ তাড়াতে পারে না, কারণ এমন বিনা বেতনে আর কাকে খাটাবে সে। আর ইউছুফের বাবার ধার নেওয়া টাকারই বা কী হবে। এ-সময় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়। জার্মান সেনাবাহিনী তানজানিয়ায় প্রবেশ করে। তারা আফ্রিকানদের সেনাবাহিনীতে যোগদানে বাধ্য করে।

মনে হবে 888sport alternative linkটি শেষ হয়নি। তবে লেখকের বক্তব্য শেষ হয়েছে। গুরনাহর লেখার এ-ধরন সম্পর্কে এন্ডারস ওলসন বলেছেন, ‘ইন হিজ লিটারেরি ইউনিভার্স এভরিথিং ইজ শিফটিং – মেমোরিস, নেইমস, আইডেন্টিটিজ।’

অ্যাডমায়ারিং সাইলেন্স প্রকাশিত হয় দুবছর পর। দেখা যায়, ১৯৬০ সালে এক যুবক জাঞ্জিবার থেকে ইংল্যান্ডে গেছে। সেখানে সে এক ইংরেজ যুবতীর প্রেমে পড়ে এবং তাকে নিয়ে সংসার বাঁধে। কিন্তু তাদের ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধ অবস্থায় পড়তে হয়। আফ্রিকার মানুষটিকে তার নিজের বিরুদ্ধে রীতিমতো লড়াই করতে হয় নিজেকে মানিয়ে নিতে।

ক্রমাগতভাবে জীবন পরিবর্তিত হতে থাকে। আত্মানুসন্ধানে পরিচয়-দ্বন্দ্ব অস্থির করে তোলে তাকে। পরিবেশটা বৈরী এবং বিরূপ। ওরা তাকে গ্রহণ করেনি। নামহীন এই প্রোটাগনিস্ট তার প্রেমিকার বাবাকে যখন বলে, তাদের মেয়ে গর্ভবতী, তখন প্রেমিকা এমার বাবা-মা তাকে ঘৃণার চোখে দেখে। তারা মনে করে, তাদের মেয়েকে এখন থেকে সারাজীবন পঙ্কিলতার মধ্যে

থাকতে হবে। আফ্রিকার অভিবাসী কালো লোকটি বুঝি মারাত্মক এক দূষণ সঙ্গে নিয়ে আছে, যা তাদের অহংকারকে, বর্ণবাদী-মনকে কলুষিত করেছে।

কাহিনি এগোতে থাকে। জাঞ্জিবারের ব্রিটেনে অভিবাসীটি কুড়ি বছর পর জন্মভূমিতে ফিরে যায়। মা তাকে লিখেছিলেন যারা বিপ্লবোত্তরকালে দেশ ছেড়েছিল সরকার তাদের ক্ষমা করে দিয়েছে। ক্ষমা করেছে কিন্তু নাগরিকত্ব দেয়নি। তাই এ-ক্ষমা অর্থহীন, তবুও জন্মভূমিতে ফেরা। সে তার মায়ের কাছে স্ত্রী এমা এবং কন্যা অ্যামেলিয়ার কথা গোপন রাখে।

মা এবং মাতৃভূমি থেকে সুখানুভূতি নিয়ে ইংল্যান্ডে ফিরে এসে সে জানতে পারে, এমা অন্য এক প্রেমিককে নিয়ে মত্ত আছে। তার কন্যাও যেন পর হয়ে গেছে। তখন সে বুঝতে পারে এবং উপলব্ধি করে, নিজের দেশ জাঞ্জিবারকে ছেড়ে শরণার্থী হয়ে ব্রিটেনে এসে তার পায়ের নিচে মাটি নেই। সে কোথাও নেই – না জাঞ্জিবারে, না ব্রিটেনে।

পরিচয়সংকট এবং বিলঙ্গিংলেসনেসের আরেক 888sport alternative link বাই দ্য সি। 888sport alternative linkটি ২০০১ সালে আমেরিকায় প্রকাশিত হয়। সালেহ ওমরের বয়স পঁয়ষট্টি। জাঞ্জিবারে একজন বণিক ছিলেন। দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। কারণ সেখানে ‘দুষ্ট জিনরা’ (কমিউনিস্ট নামক) কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। তাদের (ভিন্নমতাবলম্বীদের) জন্য কনসেনট্রেশন ক্যাম্প খুলেছে। বন্দুকের গুলি আর ক্যাঙ্গারু কোর্টের মাধ্যমে দেশ চালাচ্ছে।

গ্যাটউইট বিমানবন্দরে এসে সালেহ ওমর একটি অবৈধ ভিসা প্রদর্শন করেন। ভিসাটি তার দূরসম্পর্কের ভাই, তার খুব অপছন্দের মানুষ রজব সাবান মাহমুদের নামে ইস্যু করা। দৈবক্রমে তার দেখা হয় অভিবাসন বিশেষজ্ঞ লতিফ মাহমুদের সঙ্গে। লতিফ রজব সাবানের পুত্র। লতিফ অনেক আগেই জাঞ্জিবার থেকে ইংল্যান্ডে আশ্রয় নিয়েছেন। ইংরেজির অধ্যাপক এবং কবি। জানতে পারেন, তার বাবা রজব এবং তার স্ত্রী আশার প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন সালেহ ওমর। আশা একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর উপপত্নী। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ওমরের সম্পত্তির ওপর চোখ পড়েছে তাদের। তারা তাকে বাড়িছাড়া করে, প্রভাব খাটিয়ে এক কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে আরেক ক্যাম্পে পাঠায়। অবশেষে তিনি পালিয়ে বাঁচেন; কিন্তু ইংল্যান্ডে এসেও নতুন পরিচয়সংকটসহ নানা সমস্যায় জড়ান। ইংরেজি জানেন না। শুধু বলেন, ‘রিফিউজি’। আশ্রয় চান।

তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ‘ডিটেনশন ক্যাম্পে’। সমাজকর্মী রাসেল, তার রয়েছে অভিবাসনে বিশেষ দক্ষতা, এগিয়ে আসে ওমরকে সাহায্যের জন্য। শরণার্থীদের বহু গল্প তার পেটে। তাদের কষ্টের কথা, বাস্তুচ্যুতি, বাস্তুহীনতা, আত্মপরিচয়হীনতা, কোনো কিছুতে অধিকারশূন্যতা এবং জীবনের অর্থহীনতা উঠে আসে তার গল্পে।

২০১১ সালে প্রকাশিত হয় দ্য লাস্ট গিফট। চারজন মানুষকে কেন্দ্র করে এই 888sport alternative linkের গল্প – আব্বাস, মরিয়ম, হানা ও জামাল। আব্বাস সারাজীবন তার পরিবারের কাছে নিজের গল্প গোপন রাখে। স্ত্রী মরিয়ম, ছেলে জামাল এবং কন্যা হানা জানে না সে কোথা থেকে এসেছে, তার পরিবারে কে কে ছিল। যে-শহরে আব্বাস বসবাস করে সেখানে সে বন্ধুহীন এবং আত্মীয়স্বজন থেকে বিচ্ছিন্ন।

অনেক বছর ধরে ব্রিটেনে থাকা সত্ত্বেও আব্বাস একে নিজের দেশ মনে করে না। আবদুলরাজাক গুরনাহ একবার কথা প্রসঙ্গে বলেন, ‘যদি আমাকে হঠাৎ কেউ ঘুম থেকে তুলে জানতে চায়, তোমার দেশ কোথায়? আমি খুব সম্ভবত বলব জাঞ্জিবার, যদিও আমার জীবনের বড় অংশ কেটেছে যুক্তরাজ্যে।’

গুরনাহর নবম 888sport alternative link গ্রেভেল হার্ট। 888sport alternative linkটি লেখার একটি পটভূমি রয়েছে। দ্য ন্যাশনাল পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এটি একদমই অনুচিত মনে হয়েছে আমার কাছে। আমার জাঞ্জিবারে ফেরত যাওয়া উচিত ছিল। সেখানে গিয়ে শেষকৃত্যানুষ্ঠান পালন করা উচিত ছিল; কিন্তু তখন মোবাইল ফোন ছিল না। তাই বাড়িতে না যাওয়া পর্যন্ত জানতে পারিনি কিছুই। তা অনেক বছর আগের কথা।’

এটা আশ্চর্যজনক যে, মায়ের মৃত্যুর পর চারদিন পর্যন্ত গুরনাহ সে-সংবাদ পাননি। ২০১৭ সালে প্রকাশিত গ্রেভেল হার্ট 888sport alternative linkে দেখা যায়, প্রোটাগনিস্ট সেলিম ঠিক একইভাবে অনেক পরে তার মায়ের মৃত্যুর কথা জানতে পারে।

গ্রেভেল হার্ট শুরুতে একটি ছোটগল্প ছিল, মায়ের মৃত্যুঘটনাকে কেন্দ্র করে। পরে এটিকে 888sport alternative linkে রূপ দেওয়া হয়। এ-ব্যাপারে গুরনাহ বলেন, ‘মনে হলো এই গল্পের অনেকটাই এখনো বাকি। তখন এটিকে 888sport alternative linkে পরিণত করার চিন্তা এলো। আসল কথা হলো, আমি নিজেকে নিয়ে লিখছি না।’

তবে 888sport alternative linkের প্রোটাগনিস্ট সেলিমের সঙ্গে কিছু মিল রয়েছে গুরনাহর জীবনের। লেখকের মতো সেলিমও জাঞ্জিবার থেকে কৈশোরে লন্ডনে এসেছিল এবং একইভাবে বিচ্ছিন্নতা, প্রতিকূলতা একাকিত্ব এবং আত্মপরিচয় সংকটে পড়ে।

প্রসঙ্গত, হারুকি মুরাকামির 888sport alternative link কালারলেস সুকুরু তাজাকি অ্যান্ড হিজ ইয়ার্স অব পিলগ্রিমসের কথা মনে পড়ে যায়। প্রথমে মুরাকামিরও উদ্দেশ্য ছিল সুকুরুকে নিয়ে একটি ছোটগল্প লেখার। ৩৬ বছর বয়স্ক এক ব্যক্তি, খুব একা। শুরু করেছিলেন। পরে এটিকে 888sport alternative linkে রূপ দেন। এ প্রসঙ্গে স্টিভেন পুলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি যখন লিখছি, আমার চরিত্র আমাকে বলছে আমার কী করা উচিত। এভাবে গল্পটা 888sport alternative link হয়ে গেল।’

গুরনাহ যদিও বলেছেন – নিজেকে নিয়ে লিখছেন না, মুরাকামি অকপটে স্বীকার করেন – ‘আমি জানি না (কেন) সুকুরুর সঙ্গে আমার অনেক মিল। তাই সহানুভূতিও আছে।’

গুরনাহ প্রায়ই বলেন, ‘একজন মানুষ সারাজীবন ধরে একটাই গল্প বলে এবং তা নিজেরই গল্প।’

888sport alternative linkে সেলিমের প্রতি যে গুরনাহর সহানুভূতি প্রবল, তা স্পষ্ট। বড় হওয়ার কালে সেলিমের মনে হতো, এমন একটা কিছু ঘটছে যা তার জন্য লজ্জার। তবে সে জানে না কী ঘটছে। তার বাবা জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মা বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে কাটায় উচ্চপদস্থ এক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে। সেলিমের চাচা সবই জানে মনে হয়। তাই তাকে বলে যে, সেলিম যেন তখনই জাঞ্জিবারের দুর্বিষহ জীবন থেকে মুক্ত হতে লন্ডনে চলে যায়। সেলিম লন্ডনে চলে এসেও দুর্বিষহ জীবন থেকে রেহায় পায় না। জাঞ্জিবারের জীবনের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয় অভিবাসী জীবনের নানা যন্ত্রণা। দ্বিধাসহ নানা মানসিক সংকট তৈরি হয়। গুরনাহ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘যারা নিজের শেকড় ছেড়ে যায় তারাই বুঝতে পারে এই দ্বিধার কারণ।’ জীবন যেন তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। তাই দেখা যায়, গ্রেভেল হার্টের চরিত্রগুলো এক জায়গায় নয়, ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় গিয়ে আশ্রয় খুঁজছে।

নাইজেরিয়ান-আমেরিকান লেখক তেজো কোলের ওপেন সিটি 888sport alternative linkেও জুলিয়াস নিউইয়র্ক থেকে নাইজেরিয়া, নাইজেরিয়া থেকে বেলজিয়ামে ভেসে বেড়াচ্ছে, কোথাও তার স্থিতি হচ্ছে না। বিচ্ছিন্ন, ছিন্নমূল, আত্মপরিচয়শূন্য।

গুরনাহর সর্বশেষ 888sport alternative link আফটারলাইভস প্রকাশিত হয় ২০২০ সালে। এ-888sport alternative linkে ইতিহাসের সংশ্রব রয়েছে। পূর্ব আফ্রিকার সমুদ্র উপকূলে মাজি মাজি বিদ্রোহকে আশ্রয় করে এ-888sport alternative link লেখা হয়েছে। জার্মান ঔপনিবেশিক শাসকেরা স্থানীয় লোকদের জোর করে তুলা উৎপাদনে বাধ্য করলে শুরু হয় বিদ্রোহ।

888sport alternative linkের প্রধান চরিত্র চারটি : খলিফা, হামজা, ইলিয়াস এবং আফিয়া। মূল গল্পটি তাদের নিয়ে। ইলিয়াসকে জার্মান সৈন্যরা চুরি করে। সে সৈন্যদের দ্বারা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে তাকে দিনাতিপাত করতে হয়। কয়েক বছর যুদ্ধে যুদ্ধে কাটানোর পর সে নিজের গ্রামে ফিরে আসে।

তার বোন আফিয়া। সে অন্যের পরিবারে লালিত-পালিত হয়। সেখানে মূলত সে দাসী হিসেবে বেঁচে থাকে। ইলিয়াস তার বোনকে দাসত্ব থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। হামজাকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল জার্মান সৈন্যদের কাছে। জার্মানদের পক্ষ হয়ে যুদ্ধ করেছে সে। একসময় যাদের বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল তারা বুঝতে পারে, জার্মানরা তাদের ধোঁকা দিয়েছে। নানাভাবে ঠকিয়েছে। জীবনের স্বাভাবিক বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করেছে; কিন্তু হামজা তা মনে করে না। সে বেড়ে উঠেছে একজন জার্মান সেনা কর্মকর্তার আশ্রয়ে। মনমানসিকতায় তাই সে উপনিবেশবাদকে গ্রহণ করেছে। এর পক্ষে সে কথাও বলছে। সে যখন জার্মানদের পক্ষে কথা বলে, লোকজন অবিশ্বাসের চোখে কোনো প্রতিবাদ না করে তাকিয়ে থাকে, আর মনে মনে বলে, বন্ধু, তোমাকে ওরা গিলে খেয়ে ফেলেছে।

খলিফার ছাব্বিশ বছর বয়সে ব্যবসায়ী আমুর বিয়াশারার সঙ্গে পরিচয় হয়। সে আমুরের ভাগ্নি আশাকে বিয়ে করে। ১৯০৭ সালের এই সময়টা ছিল মাজি মাজি বিদ্রোহের শেষ নিষ্ঠুরতা এবং মর্মান্তিক যন্ত্রণার। আফ্রিকা তখন প্রতিরোধ-সংগ্রামে মরিয়া।

888sport alternative linkটি সম্পর্কে দ্য গার্ডিয়ান বলেছে, ‘গুরনাহ আফটারলাইভস-এ ঔপনিবেশিক শাসন এবং যুদ্ধ প্রজন্মের পর প্রজন্মে কতটা প্রভাব ফেলে, পরিণামে কতটা ধ্বংস ডেকে আনে, তা আমাদেরকে দেখিয়েছেন।’ ফিন্যান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, ‘এ বুক অব কোয়াইট বিউটি অ্যান্ড ট্র্যাজেডি।’

পাঁচ

অভিবাসী লেখকদের মধ্যে প্রায় সবক্ষেত্রেই দেখা গেছে পিছুটান, নিজের ছেড়ে আসা দেশের প্রতি 888sport sign up bonusকাতরতা এবং নস্টালজিয়া। তাঁরা লেখাটা শুরু করেন এসব পটভূমির অনুভূতি ও উপলব্ধি থেকে। গুরনাহর প্রায় সমসাময়িক লেখক ২০১৭ সালে 888sport live footballে নোবেল বিজয়ী কাজুও ইশিগুরু। জাপানে জন্মগ্রহণকারী ইশিগুরু পাঁচ বছর বয়সে ইংল্যান্ডে আসেন। তাঁর প্রথম দুটি 888sport alternative link এ পেইল ভিউ অব হিলস এবং অ্যান আর্টিস্ট অফ দ্য ফ্লোটিং ওয়ার্ল্ড সম্পূর্ণরূপে জাপানের পটভূমিতে লেখা, বলা যায় এক্সপ্লোরেশনস অফ জাপানিজ আইডেনটিটি। তবে খুব শৈশবে ইংল্যান্ড এসেছেন বলে জাপান এসেছে সম্পূর্ণ কল্পনা ও 888sport sign up bonusতে, বাস্তব উপলব্ধিতে নয়। তাঁর লেখা পড়ে কোনো জাপানি সন্তুষ্ট হতে পারেননি। বলেননি যে, এগুলো আমাদের কথা। তাই নোবেল 888sport app download bd লাভের পর তাঁর জন্মভূমির অনেকেই অবাক হয়েছেন। ইশিগুরু জাপানে পরিচিত লেখক নন। তারা প্রকাশ্যেই প্রায় সবাই বলেছেন, এ-নামের কোনো লেখককে তারা চেনেন না। মুরাকামিকে তারা তাদের প্রিয় লেখক বলে জানেন।

ইশিগুরুও উল্লিখিত দুটি 888sport alternative linkের পর আর জাপানের দিকে তাকাননি। ইশিগুরু গল্প নিয়ে গেছেন জাপান থেকে টিপিক্যাল ব্রিটেনে (রিমেইন্স অব দ্য ডে), যা তাঁকে বুকার এনে দিয়েছে। সেখান থেকে ফ্রান্সের কাফকোয় (দ্য আনকনসোলড) এবং সবশেষে ফ্যান্টাসিতে (দ্য বারিড জায়ান্ট)।

কিন্তু আবদুলরাজাক গুরনাহ তাঁর দশটি 888sport alternative linkই রচনা করেছেন পূর্ব আফ্রিকার জাঞ্জিবার এবং এর উপকূলীয় অতিসাধারণ মানুষের ঔপনিবেশিক এবং অভিবাসী জীবনের দুঃখ-বেদনার গল্প এবং কাহিনি নিয়ে। আঠারো বছর বয়সে ব্রিটেনে এসেছেন শরণার্থী হয়ে। নিজের দেশ, সমাজ-সংস্কৃতি, সাধারণ মানুষের বাস্তবজীবনের সংকট, ঘাত-প্রতিঘাত বোঝার বয়স তাঁর হয়েছিল। ইশিগুরুর মতো হয়তো ব্রিটিশ হতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠেননি। মানসিকভাবে ফিরে যেতে চাননি ব্রিটেনে। সারাজীবন পূর্ব আফ্রিকার জাঞ্জিবার নিয়েই ভেবেছেন। সেখানকার দারিদ্র্য ও ঔপনিবেশিক জীবনের গঞ্জনা-লাঞ্ছনা এবং পীড়িত ও পালিয়ে আসা অভিবাসী মানুষের জীবনচিত্র এঁকেছেন অত্যন্ত দরদের সঙ্গে।

কথা888sport live footballে গীতিময়তাকে দোষ বলে পরিগণিত করা হয়; কিন্তু গুরনাহর 888sport live footballে তা দরদের হাত ধরে এতটাই বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে, তাকে সমালোচকেরা আমল দিয়েছেন ভূয়সী প্রশংসা করে।

অভিবাসী 888sport live footballে আফ্রো-ক্যারিরীয় লেখক বিদ্যাধর সুরুজপ্রসাদ নাইপলের (ভিএস নাইপল) অবদান সর্বাগ্রে স্মর্তব্য, সে-কথা আগেই বলেছি। তাঁর মহৎ 888sport live chatকর্ম (888sport live football888sport live chat) এ হাউস ফর মি. বিশ্বাস ত্রিনিদাদে ভারতীয় অভিবাসী মিস্টার বিশ্বাসের বঞ্চনা, সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকার সমস্যা ব্যক্তির তাৎপর্যহীনতা, পরিচয়হীনতা, বাস্তুচ্যুতির হতাশা নিয়ে লেখা। কেউ কেউ বলেছেন, 888sport alternative linkটি আত্মজৈবনিক। তিনি পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ত্রিনিদাদে গিয়েছিলেন। সেখানে অভিবাসী জীবনের নানা বিড়ম্বনা এবং তিক্ততার প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর। ব্রিটেন প্রবাসে এসে সে উপলব্ধি ও অভিজ্ঞতা আরো পূর্ণতা পায়। এরই ফলশ্রুতিতে রচিত হয় আ হাউস ফর মি. বিশ্বাস এবং তা হইচই ফেলে দেয়।

গুরনাহ তাঁর 888sport live football বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। একটি ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে নাইপলও এসেছেন। ব্রিটেনে এসে উপলব্ধি করেছেন, তাঁকে কেউ আর ভারতীয় ভাবছে না। মাতৃভূমির লোকজনও নয়।

এ-অভিজ্ঞতাগুলো গুরনাহর লেখায় এবং তাঁর নোবেলপ্রাপ্তির পর তানজানিয়ার (জাঞ্জিবার) লোকদের প্রতিক্রিয়ার মধ্যে আমরা দেখেছি। তবে তা প্রচণ্ডভাবে দেখা গেছে অভিবাসী লেখকদের মধ্যে কনিষ্ঠতম, 888sport appsি বংশোদ্ভূত লেখক জিয়া হায়দার রহমানের মধ্যে। ব্রিটেনে অভিবাসী এই লেখক বলেন, ‘২০০১-২০০২ সালে আমি 888sport appsে ছিলাম। তখন আমি উপলব্ধি করি যে, আমি 888sport appsি নই। 888sport appsের সঙ্গে আমার আবেগের সম্পর্ক রয়েছে। তারপরও বুঝতে পারি, তারা আমাকে 888sport appsি মনে করে না।’

কিন্তু ব্রিটেনও তো তাঁকে গ্রহণ করেনি। ব্রিটিশ পরিচয়ের ব্যাপারেও তিনি শঙ্কামুক্ত নন। তাই বলেন, ‘আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আমি এ-প্রশ্ন করার প্রয়োজন বোধ করি না যে, জিয়া তুমি ব্রিটিশ কি না? আপনি নিজেকে কী ভাবলেন তাতে এ বিতর্কের (ব্রিটিশ পরিচয়ের সংজ্ঞা বিতর্ক) ইতি হবে না।’ তাই তাঁর ইন দ্য লাইট অব হোয়াট উই নো 888sport alternative linkের নায়ক জাফর এ-যন্ত্রণায় দগ্ধ। সে ব্রিটিশ যুবতী এমিলির প্রেমে পড়েছিল। গুরনাহর নায়ক (নামহীন, 888sport alternative link অ্যাডমায়ারিং সাইলেন্স) এক ব্রিটিশকে ভালোবেসে বিয়ে করে মায়ের চিঠি পেয়ে জাঞ্জিবারে আসে। ফিরে গিয়ে দেখে স্ত্রী এমা কন্যা অ্যামেলিয়াকে নিয়ে আরেক প্রেমিকের সঙ্গে চলে গেছে। জাফরও বিয়ে করবে বলে ব্রিটিশ যুবতী এমিলির পেছন পেছন আমেরিকা, এমনকি, ভয়াবহ আফগানিস্তানে পর্যন্ত চলে গেছে; কিন্তু কোনো ফল হয়নি। কারণ হচ্ছে বর্ণবাদ।

বর্ণবাদ সম্পর্কে জাফর বলছে, ‘আই হ্যাভ বিন কিকড অ্যান্ড স্পাট এ্যাট বিকজ অব মাই রেস।’

গুরনাহও বর্ণবাদের শিকার হয়েছেন। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘হোয়েন আই ওয়াজ হিয়ার অ্যাজ এ ভেরি ইয়ং পারসন, পিপল উড নট হ্যাভ হ্যাড অ্যানি প্রবলেম অ্যাবাউট সেইং টু ইয়োর ফেস সার্টেইন ওয়ার্ড দ্যাট উই নাও কনসিডার টু বি ওফেনসিভ। ইট ওয়াজ মোর পারভাসিভ দ্যাট সর্ট অব অ্যাটিচুড। ইউ ক্যান নট ইভেন গেট অন এ বাস উইদাউট সামহাউ এনকাউন্টারিং সামথিং দ্যাট মেইড ইউ রিকোইল।’

তখন শরণার্থীদের ডিটেনশন ক্যাম্পে রাখা হতো। গুরনাহর বাই দ্য সি 888sport alternative linkের নায়ক সালেহ ওমর এরকম ডিটেনশন ক্যাম্পে গেছে। আশ্রয়প্রার্থীদের ভয়ঙ্কর অপরাধী ভাবা হতো। সরকারই তা মনে করেছে এবং এখনো এসব সমস্যা রয়ে গেছে।

ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব (মন্ত্রী) প্রীতি প্যাটেল শরণার্থী আশ্রয়দানের ব্যাপারটি কঠোর দৃষ্টিতে দেখেন। গুরনাহ এ-সম্পর্কে দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘কৌতূহলের ব্যাপার হলো, অবশ্যই বলব, এ ব্যক্তি কি পৌরহিত্য করছেন? কেউ এখানে আসতে পারে। অথবা তাঁর বাবা-মাও আসতে পারেন, তাঁদের কি বিরূপ বা খারাপ মনোভাব দেখানো উচিত?’

তাঁকে পেলে কী বলবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে গুরনাহ বলেন, ‘আমি বলব, সামান্য সহানুভূতি মনে হয় খারাপ জিনিস নয়। তবে আমি সত্যিই তাঁর সঙ্গে কথোপকথনে যেতে চাই না।’

প্রীতি প্যাটেলের পূর্বপুরুষরাও প্রথমে ভারতের গুজরাট থেকে আফ্রিকার উগান্ডা এবং সেখান থেকে ব্রিটেনে অভিবাসী হন। তাঁকে কট্টর হিন্দুত্ববাদী বলে কৌতুক করা হয়।

২০১৮ সালে ‘উইনড্রাশ কেলেঙ্কারি’ সংঘটিত হয় ব্রিটেনে। এটি একটি ব্রিটিশ রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি। এর ফলে কমনওয়েলথভুক্ত দেশসমূহের অভিবাসীদের অন্যায়ভাবে আটক, তাদের আইনগত অধিকার অস্বীকার এবং নির্বাসনের হুমকিসহ কমপক্ষে ৮৩টি ক্ষেত্রে হোম অফিস যুক্তরাজ্য থেকে নির্বাসন বা বহিষ্কারের নিয়ম তৈরি করে। এই কেলেঙ্কারি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে গুরনাহ বলেন, ‘তাতে অবাক হবার কিছু নেই। ব্যাপারটা সবসময়ই ঘটছে। এটা ধারণা করা যায়, আবার ঘটবে, আমরা যেমনটা বলেছি।’ বলে দীর্ঘশ্বাস ফেলেন তিনি।

ছয়

আমি ভালোবাসি

আমি ভালোবাসি

সূর্যের ওপর ধাবমান

নিখিল আফ্রিকাকে।

এটি গুরনাহ নন, সেনেগালের কবি আসাদ মুস্তফার 888sport app download apkর অংশ। আফ্রিকার কবি-888sport live footballিকরা আফ্রিকাকে ভালোবাসবেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। তবে তাঁদের ভালোবাসা এত প্রবল যে, অন্য কারো সঙ্গে তুলনা করা চলে না। গুরনাহকে তানজানিয়া (জাঞ্জিবার) নাগরিকত্ব ফিরিয়ে দেয়নি, অথচ ২১ বছর বয়স থেকে আফ্রিকাকে নিয়ে, আফ্রিকার ঔপনিবেশিক জীবন, উপনিবেশ-উত্তর জীবন নিয়ে লিখে চলেছেন ৭২ বছর বয়সী আবদুলরাজাক গুরনাহ। নোবেল পাওয়ার পর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তিনি বলেন, তাঁর মন পড়ে আফ্রিকাকে (জাঞ্জিবারে)। সেখানেই তাঁর বিচরণক্ষেত্র। এ-কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, কারণ তাঁর বইগুলোই এর জ্বলন্ত প্রমাণ। জাঞ্জিবার, তানজানিয়া কিংবা আফ্রিকার বাইরে কিছু লিখেছেন বলে মনে হয় না। ইংরেজি ভাষাভাষী পাঠকদের তিনি শুধু আফ্রিকার গল্প শোনাতেই কী মনস্থ করে রেখেছিলেন?

আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট জুলিয়াস নায়ার নিজে 888sport app download apk লেখেন না, কিন্তু মাতৃভাষা জোয়াহিলিতে শেক্সপিয়ারের জুলিয়াস সিজার ও কিং লিয়ার 888sport app download apk latest version করে আফ্রিকাকে (তানজানিয়া) ইউরোপীয় 888sport live footballরস আস্বাদন করাতে চেয়েছেন। গুরনাহ এরকমটি কখনো চেয়েছেন বলে মনে হয় না।

আফ্রিকার সেনেগালের কবি ও রাজনীতিবিদ সেঙ্গরের 888sport app download apkয় ভাব ও ভঙ্গিতে ক্ষোভ ও ঘৃণা উপচে পড়ছে যেন। ‘প্যারিতে তুষারপাত’ 888sport app download apkয় তিনি লিখেছেন, ‘সেইসব হাত/ যারা ক্রীতদাসকে মেরেছিল চাবুক/ এবং তোমাকেও/ সেইসব ধুলো পড়া হাত আমাকে থাপ্পড় মেরেছিল/ সেইসব হাত/ যারা আকাশ স্পর্শ করা বনের/ পদানত আফ্রিকাকে করেছিল নির্মূল’।

গুরনাহর উচ্চারণে এসব দ্রোহ এবং ঘৃণার বিস্তার পাওয়া যাবে না। পাওয়া যাবে না আফ্রিকীয়তা বা নিগ্রোতা – যাকে জ্যঁ পল সার্ত্রে বলেছিলেন ‘অ্যান্টিরেসিস্ট রেসিজম’। সেঙ্গর বলেছেন, এটি বর্ণবাদ নয়, সংস্কৃতি। আফ্রিকীয়তা হচ্ছে একটি সাংস্কৃতিক মূল্যবোধপুঞ্জ, যার একটি দিক নিগ্রোতা, আরেক দিক আরববাদ এবং উত্তর আফ্রিকার আদিবাসীবাদ।

এসবের মধ্য দিয়ে গিয়েও 888sport app আফ্রিকার কবি-888sport live footballিকের মতো গুরনাহ তাত্ত্বিক আফ্রিকার সমগ্রতাকে বিশ্বসংস্কৃতির ওপর চাপিয়ে দিতে চাননি। তাহলে সাংস্কৃতিক সংঘাতটা অনিবার্য ছিল। সম্ভবত এজন্যই গুরনাহ এক প্রশ্নের জবাবে দ্য গার্ডিয়ানকে বলতে পেরেছিলেন, আফ্রিকা এবং ইউরোপীয় সংস্কৃতি তাঁর মধ্যে কখনো টানাপড়েন বা বিরোধ সৃষ্টি করেনি। আফ্রিকার জীবন এবং সংস্কৃতিকে তিনি সৃজনশীল 888sport live footballের মধ্য দিয়ে বিশ্ব888sport live footballের দরবারে যুক্ত করে দিতে পেরেছেন। আফ্রিকার চারিত্র্য, আফ্রিকান মানুষের চরিত্রের এই উপস্থিতি বিশ্ব888sport live football কখনোই ভুলে যেতে পারবে না।

সরাসরিও অনেকে বর্ণবাদের (সাদা চামড়ার) বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। রবিন ডি অ্যাঞ্জেলার বিখ্যাত বই হোয়াইট ফ্রাগিলিটি (সাদা ভঙ্গুরতা)। সাদা চামড়ার (কাগজ পাতলা চামড়া) লোকজন বা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বলা কেন এতটা কঠিন – এই বইতে তা বিবৃত হয়েছে।

গুরনাহ অভিবাসী জীবনের মর্মান্তিক কষ্ট ভোগ করেও এরকম উগ্র বর্ণবাদবিরোধী উচ্চারণে অভ্যস্ত হয়ে পড়েননি। সাম্রাজ্যবাদী জার্মানি, ফরাসি কিংবা ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে তিনিও কথা বলেছেন, তবে তা চামড়াকে লক্ষ্য করে নয়।

সাত

কেউ কেউ মনে করেন, বিশেষ করে আফ্রিকান 888sport live football বিশারদ জে ইউ জ্যাকব দাবি করেন, গুরনাহ জোসেফ কনরাডের ১৯০২ সালে প্রকাশিত 888sport alternative linkিকা হার্ট অব ডার্কনেস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে প্যারাডাইস 888sport alternative link লিখেছেন। অন্য 888sport alternative linkের ক্ষেত্রেও এরকমটি ঘটেনি – একথা জোর দিয়ে বলা যাবে না।

জোসেফ কনরাডের হার্ট অব ডার্কনেস 888sport alternative linkিকার প্রভাব বহু নামকরা কবি-লেখকের ওপর পড়েছে। তাঁদের মধ্যে কবি টিএস এলিয়ট তাঁর ‘দ্য হলোম্যান’ 888sport app download apkয় 888sport alternative linkটির একটি লাইন এপিটাফ হিসেবে ব্যবহারও করেছেন। লাইনটি হলো ‘মিসটাহ কুর্টজ – হি ডেড।’ এলিয়ট তাঁর ‘দ্য ওয়েস্ট ল্যান্ডে’ও এরকমটা করতে চেয়েছিলেন। এজরা পাউন্ড চিঠি লিখে তা না করতে পরামর্শ দেন। তিনি ছাড়া কবি ইয়াদা মোরিসন, জেমস রেইচ, ঔপন্যাসিক স্কভোরেসকি, টিমোথি ফিন্ডলে, জে জি ব্যালাড, রবার্ট সিলভারবার্গ প্রমুখ কবি-লেখক নানাভাবে হার্ট অব ডার্কনেস দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন। 888sport alternative linkটি বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে।

888sport alternative linkটিতে ব্যাপকভাবে আফ্রিকায় ইউরোপীয় ঔপনিবেশিক শাসনের সমালোচনা হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে বর্ণবাদের কথা। তবে কিছু কথা গেছে কালোদের বিপক্ষেও – যেজন্য আফ্রিকার নাইজেরীয় লেখক চিনুয়া আচেবে এ-888sport alternative link সম্পর্কে বেশ বিরূপ কথাও বলেছেন।

কনরাডের হার্ট অব ডার্কনেসের প্রভাব থেকে থাকলেও গুরনাহ সেই মাপের লেখক যিনি অন্যের কাছ থেকে গ্রহণ করেন, এমনকি অন্যের প্রভাবেও প্রভাবান্বিত হন; কিন্তু শেষটায় সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠেন নিজস্বতায়। এমন লেখকেরা সমস্ত গ্রহণকে জারিত করেন মৌলিক রসে।

আট

এক সাক্ষাৎকারে গুরনাহ বলেছিলেন, ‘যে জিনিসটি আমার জন্য লেখার পুরো অভিজ্ঞতাকে অনুপ্রাণিত করেছিল তা হলো, বিশ্বে নিজের স্থান হারানোর আশঙ্কা।’ লেখার বিষয় হিসেবে বেছে নিয়েছেন ঔপনিবেশিক এবং উদ্বাস্তু – অভিবাসী জীবন – যা উত্তর-ঔপনিবেশিক 888sport live footballকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে। ইংল্যান্ডে অবস্থান করলেও মাতৃভূমি আফ্রিকা প্রতিনিয়ত তাঁকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাই পূর্ব আফ্রিকার জীবনকেন্দ্রিক গল্প ও চরিত্র ভাবলেশহীনভাবে স্পষ্ট বাস্তবতায় তাঁর 888sport alternative linkে বিধৃত হয়েছে। ব্রুস কিং বলেছেন, ‘গুরনাহর 888sport alternative linkগুলো পূর্ব আফ্রিকার নায়কদের বিস্তৃত আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে স্থান করে দিয়েছে।’ এক্ষেত্রে তিনি কোনো আপস করেননি। আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া কালো মানুষদের অভিবাসী হিসেবে যারা গ্রহণ করেনি, সেসব ইংরেজি ভাষাভাষী পাঠকের কাছে শুধু পরিচিতই নয়, পছন্দের চরিত্র বা পাত্র-পাত্রীতে পরিণত করেছেন এবং তা করেছেন আন্তরিকতা এবং সহানুভূতির সঙ্গে।

মেনজিস্টে লিখেছেন, ‘গুরনাহ এমন 888sport live football রচনা করেছেন, যা একেবারে অপ্রতিরোধ্য এবং একইভাবে পূর্ব আফ্রিকার মানুষের জন্যে সহানুভূতিশীল। তিনি এমন গল্প লিখেছেন, যা আপাতত শান্ত মনে হয়, অনুচ্চারিত থাকে অনেক কিছু, কিন্তু সেখানে এমন জেদি কিছু থাকে, যা শুনতেই হয়।’ প্রত্যেক লেখকেরই লেখার উদ্দেশ্য থাকে পাঠককে আনন্দ দেওয়া। গুরনাহর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তার জন্য দরকার হয় লেখার প্রক্রিয়াটিকে প্রচলিত অবস্থা থেকে আরো উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। মুরাকামি বেশি বেশি নিরীক্ষাধর্মী 888sport alternative link লিখে এ-প্রক্রিয়াকে জীবন্ত রাখেন। গুরনাহ নিজের লেখা সম্পর্কে বলেন, ‘আমি পাঠকদের আনন্দ দিতে চাই, তার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সবাই যেভাবে বুঝে থাকি সেই প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত করতে চাই – প্রতিটি বইয়ের সঙ্গে এক কদম করে সামনে এগিয়ে।’