সুরজিৎ দাশগুপ্ত
স্কুলবেলাতে অন্নদাশঙ্কর রায়ের একটি 888sport alternative link পড়েছিলাম। আগুন নিয়ে খেলা। যেটা অবাক করেছিল সেটা লেখার কায়দা। একদিন গল্প শুরু হয়েছে। তারপর গল্প পেছিয়ে গেছে একদিন একদিন করে। এইভাবে ছদিনের কাহিনি। আধুনিক প্রজন্ম, মানে যারা বর্তমানের ভালোলাগাতেই বিশ্বাস করে, সম্পর্কের স্থায়িত্বে বিশ্বাস করে না, তেমন দুটি তরুণ-তরুণীর যৌবনোচ্ছল জীবনের একখ–র কাহিনি। কী ঝরঝরে লেখা! লেখার বেগ গল্পের বেগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলেছে। প্রেমেরই 888sport alternative link কিন্তু এ-888sport alternative linkে প্রেমের কোনো পরিণতি নেই, শুধু একসঙ্গে চলার আনন্দ আছে, কিন্তু চলার শেষে কোথাও পৌঁছনো নেই। যেন দুটি পাখি পাশাপাশি কলকল করে উড়ে চলার পরে যে-যার-মতো উড়ে গেল খোলা আকাশে। রেখে গেল আমার মনে একটা অনাস্বাদিত ভালোলাগা।
আমাকে যে আগুন নিয়ে খেলা পড়িয়েছিল তার নাম গোপাল চক্রবর্তী। তাদের বাড়িতেই ছিল পাড়ার লাইব্রেরি। আমার আগ্রহ জাগল অন্নদাশঙ্করের আরো বই পড়ার জন্য। অন্যদিন সে এনে দিল অন্নদাশঙ্করের লেখা আর একটি বই। জীবন888sport live chatী। 888sport alternative link নয়, 888sport liveের বই। কিন্তু লেখকের নাম সেই একই। অন্নদাশঙ্কর রায়। তাতে রবীন্দ্রনাথ সম্বন্ধে একটি লেখা পড়ে আমি অন্নদাশঙ্করের এমন অনুরাগী হয়ে গেলাম যে, আমার জীবনটাই পালটে গেল। অন্নদাশঙ্করের রবীন্দ্রবিষয়ক 888sport liveটি রবীন্দ্রকাব্য সংক্রান্ত নয়, রবীন্দ্রজীবন বিষয়ক। এই 888sport liveে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন, রবীন্দ্রনাথ শুধু 888sport live footballে 888sport live chat সৃষ্টি করেননি, নিজের জীবনটাকেও নির্মাণ করেছেন 888sport live chatরূপে। পরে মনীষী কবি অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত বলেছেন, বাংলা শব্দভা-ারে অন্নদাশঙ্কর একটা নতুন শব্দ দান করেছেন – ‘জীবন888sport live chatী’।
কলেজে গিয়ে পেলাম পরেশদা নামে এক লাইব্রেরিয়ানকে, যাঁর কাছে অন্নদাশঙ্করের বই চাইতেই তিনি আলমারি ঘেঁটে বের করে দিলেন যার যেথা দেশ। তার মধ্যে মানে স্কুলবেলাতেই বন্ধু নির্মল সান্যাল আমাকে পথে প্রবাসে পড়িয়েছিল। নির্মল খুব 888sport live footballপ্রেমী ছিল। শ্রীকান্তর প্রথম খ- পুরোটা এবং নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের শিলালিপির প্রথম অনেক পৃষ্ঠা তাঁর মুখস্থ ছিল। ফিরে আসি পরেশদার কথায়। তিনি আমাকে যার যেথা দেশ পড়তে দিয়ে সাবধান করে দিলেন, ‘এটার পরে আরও পাঁচ খণ্ড আছে এরকমই মোটা-মোটা।’ ভাবলাম, এ-পর্যন্ত অন্নদাশঙ্করের যা পড়েছি সেসবই তো ভালো লেগেছে, এবার এটা পড়ে দেখি। দ্বিধাভরে পড়া শুরু করে মজে গেলাম। এমনই জমে গেলাম যে, প্রকাশকের প্রযত্নে চিঠি দিলাম অন্নদাশঙ্করকে। তাঁর কাছ থেকে উত্তর আসতে-আসতে যার যেথা দেশের পরের খণ্ড অজ্ঞাতবাস শেষ করে আমি তার পরের খন্ড কলঙ্কবতীতে পৌঁছে গেছি। ফাঁকে-ফাঁকে কোনো সময় চিঠি লিখে প্রকাশকের কাছ থেকে অন্নদাশঙ্করের ইশারা, আমরা, জিয়নকাঠি প্রভৃতি কয়েকটি ছোট-ছোট 888sport liveের বই আনিয়েছি। বইগুলি আকারে ছোট হলেও প্রকারে খুবই বড়ো অর্থাৎ বিষয়মাহাত্ম্যে প্রতিটি বই-ই অনন্য।
পথে প্রবাসে পড়ে জেনেছিলাম সে-দেশের মানে ইউরোপের ছেলেমেয়েরা ছুটি পেলে দলবেঁধে পিঠে ঝোলাঝুলি বেঁধে বেড়াতে বেরিয়ে পড়ে। সেবার গরমের ছুটিতে আমি ও আমার ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসের বন্ধু নিত্যানন্দ মিলে বেরিয়ে পড়লাম বিশ্বপর্যটনে। কিন্তু মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত। আমরাও শামিত্মনিকেতন ও কলকাতা পরিক্রমা করে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরে এলাম। শামিত্মনিকেতনে পৌঁছে প্রথম যেটা টের পেয়েছিলাম, সেটা হলো প্রচ- গরম। গেস্ট হাউসের চৌবাচ্চার জলে স্নান করে খেয়েদেয়ে এক ঘুম দিয়ে বের হলাম অন্নদাশঙ্করের খোঁজে। প্রথম দেখা। তিনি তখন শাদা ট্রাউজার্স ও হাফশার্ট পরে টেনিস র্যাকেট হাতে সাইকেল চালিয়ে উত্তরায়ণে টেনিস খেলতে যাচ্ছিলেন। আমাদের দেখে আবার ফিরে গেলেন ঘরে। খানিক পরে বেরিয়ে এলেন। পরনে ধুতি, গায়ে গেরি রঙের পাঞ্জাবি, গলার বোতামের ঘরটা বাঁ-কণ্ঠার নিচে নামানো, হাতে ব্যাটারি টর্চ। বললেন, চলো, একটু বেরিয়ে আসি। আমাদের নিয়ে বেড়াতে চললেন শ্রীনিকেতনের দিকে। হাঁটতে-হাঁটতে অন্ধকার। টর্চের আলো ফেলে-ফেলে ফেরা। পরের দিন বিকেলে চায়ের নিমন্ত্রণ।
এবার একটু 888sport alternative linkের কথা বলি। কলঙ্কবতীর কথা বলেছি একটু আগে, কলঙ্কবতীর পরের খ- দুঃখমোচন, তার পরের খ- মর্ত্যের স্বর্গ, সবশেষ অপসরণ। প্রতি খ–র আলাদা নাম থাকলেও সব খণ্ড মিলিয়ে পুরো 888sport alternative linkটির নাম সত্যাসত্য। 888sport alternative linkটির দুজন নায়ক – বাদল ও সুধী। দুজনে দুজনের প্রাণের বন্ধু, কিন্তু দুজনের চিমত্মাভাবনা দুরকম। একজন বুদ্ধিবাদী, অন্যজন প্রজ্ঞাবাদী; একজন সত্যকে খুঁজছে বাইরের জ্ঞান888sport apkের নতুন মতামতে ও তত্ত্বতথ্যে, অন্যজন অন্তরের উপলব্ধ জ্ঞানে-ধ্যানে। একজনের নাম বাদল, ঝড়ের মতো সে ছুটে বেড়াচ্ছে ‘ফ্রিউইল’, না ‘ডিটারমিনেশন’ কোনটা সত্য তার সন্ধানে, আর-একজনের নাম সুধী, সে স্থিতধী হয়ে প্রজ্ঞার প্রদীপ জ্বালিয়ে সেই দীপশিখাকে রক্ষার সাধনা করে। এই দুজনের দু-সত্যের টানাপড়েনে বিভ্রান্ত 888sport alternative linkের নায়িকা, তার নাম উজ্জয়িনী। সে বাদলের স্ত্রী। বাদলের বাবা বলেছিলেন যে, বিয়ে না করে গেলে তিনি বাদলকে বিলেতে যেতে দেবেন না। বাদল মনে করে বিলেতই তার আপন দেশ, তাই যেমন করে হোক, বাবার শর্ত মেনে, মিছিমিছি বিয়ের ভান করে হলেও, তাকে বিলেতে যেতে হবে। সেভাবেই বিলেতে গেল বাদল, কিন্তু উজ্জয়িনীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখল না। বাদলের বাবা মহিমচন্দ্র এ-888sport alternative linkে খুবই অল্প স্থান জুড়ে রয়েছেন। কিন্তু সে-স্থানটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শুধু রায়বাহাদুর নন, চরিত্রে একজন ডিক্টেটর। তাঁর স্বৈরতন্ত্রের ফলেই যেমন বাদলের জীবন, তেমনি উজ্জয়িনীর জীবনও নষ্ট হলো। যেমন হিটলারের জন্য ধ্বংস হয়েছে জার্মানির গৌরব।
সত্যাসত্য 888sport alternative linkটি এক বিশাল চরিত্রশালা। এক-এক চরিত্র এক-এক মতামতের প্রবক্তা। কেউ ক্যাপিটালিজম, কেউ কমিউনিজম, কেউ রাষ্ট্র888sport apkের অন্য কোনো তত্ত্বের, অথবা পদার্থবিদ্যার তথা 888sport apkের কিংবা নন্দনতত্ত্ব বা 888sport live chat-888sport live footballের কোনো বিশেষ শাখাতে বিশেষজ্ঞ, কেউ ডেমোক্রেসিতে, কেউ ডিক্টেটরশিপে বিশ্বাসী। কারো মতে, বিশ্বের সব সমস্যার সমাধান যুদ্ধেই সম্ভব। কারো মতে, নিরস্ত্রীকরণেই সমস্যার নিরাকরণ। এতরকম আন্তর্জাতিক ঘটনাবলিতে সম্পৃক্ত এতরকম চরিত্র বাংলা 888sport live footballে আর কেউ কল্পনাও করেননি, উপস্থাপনও করেননি। বিশ্বচেতনাতে সমৃদ্ধ এমন বাংলা 888sport alternative link লেখা হয়নি অদ্যাবধি। অবয়বে, বিষয়বস্ত্ত নির্ধারণে, চরিত্রচিত্রণে এবং মননশীলতায় এমন মহাকাব্যপ্রতিম 888sport alternative link হয়তো বিশ্ব888sport live footballেও দুর্লভ। তেমনই তাঁর লিখনশৈলী – বেগবান ভাষা, চাতুর্যে প্রখর, বুদ্ধিতে প্রোজ্জ্বল এবং সংলাপ প্রত্যুৎপন্নমতিত্বে প্রদীপ্ত। বাংলা 888sport live footballে সত্যাসত্য সমকালীন মননচেতনায় সমৃদ্ধ সৃষ্টিশীলতার এক নতুন ধারা প্রবর্তন করে, যার অনুবর্তন লক্ষ করা যায় সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের পূর্ব-পশ্চিম জাতীয় 888sport alternative linkে।
সত্যাসত্য শেষ হয়েছে চিরজিজ্ঞাসু সদাচঞ্চল বাদলের মৃত্যুতে তার ডিক্টেটর পিতার হৃদয়বিদারক হাহাকারে। বাদলের মৃত্যু হলেও জিজ্ঞাসার শেষ হয়নি। সত্যাসত্যের অপর নায়ক জীবনজিজ্ঞাসু সুধীর অথবা ঘটনাজালে বিভ্রান্ত বাদলের স্ত্রী উজ্জয়িনীর জীবনকাহিনিও শেষ হয়নি। তাদের কাহিনি নতুন ঘটনাস্রোতে তাদের স্বদেশের ইতিহাসে আবার প্রবাহিত হয়েছে ক্রান্তদর্শী নামের 888sport alternative linkে। এবারে খণ্ড খণ্ড নয়, পর্বে-পর্বে মোট চারটি পর্বে। শুধু ওই দুজনের কাহিনি নয়, সত্যাসত্যের আরো কয়েকটি চরিত্র ক্রান্তদর্শীতে ফিরে এসেছে নতুন নামে, নতুন রূপে; কিন্তু নিজ-নিজ স্বভাবকে বজায় রেখে। ক্রান্তদর্শীর একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, মহাত্মা গান্ধীর মতো কোনো-কোনো ঐতিহাসিক চরিত্র এতে প্রবেশ করেছেন স্বনামে, আপন ভূমিকায়, এমনকি 888sport alternative linkের কাল্পনিক চরিত্রের সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কে ও কথোপকথনে মিশেও গেছেন বাস্তব শরীরে – বিশেষত মহাত্মা গান্ধীর চরিত্রটি, জওহরলাল, জিন্না, প্যাটেলও।
সত্যাসত্যে আমরা নায়ক বাদলের পিতার চরিত্রে দেখেছি ডিক্টেটর 888sport live chatের উদ্গম। ক্রমে-ক্রমে সেই অঙ্কুরিত ডিক্টেটরশিপ ধারণ করল হিটলারের রূপ, যা সমাজতন্ত্রের ছদ্মবেশে আকাশে ওড়াল জাতীয়তাবাদের মহান নিশান। জাতিপ্রেম তথা দেশভক্তির দুরমুশ দিয়ে মানবিকতাকে ধুলোয় মেশানোর সূচনা। শুরু হলো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ। এখান থেকেই ক্রান্তদর্শী 888sport alternative linkের ঘটনাচক্র আবর্তিত হতে লাগল। অন্নদাশঙ্কর যখন এই 888sport alternative link লেখা শুরু করেন, তাঁর বয়স ছিয়াত্তর। ইউরোপের রণাঙ্গনে যখন বন্দুক-বোমা নিয়ে যুদ্ধ চলছে, ভারতের রণাঙ্গনে তখন বিনা মারণাস্ত্রে চলছে এক অভিনব যুদ্ধ।
ক্রান্তদর্শীর ঘটনাকাল শুরু হয় ১৯৩৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। তারিখটা 888sport alternative linkে উল্লেখ করা হয়নি। 888sport alternative linkটি শুরু হয় মফস্সলের কোনো শহরের বৈঠকখানায়। সমাজের কয়েকজন গণ্যমান্য ভদ্রলোকের কথোপকথন থেকে আমরা জানতে পারি যে, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি ও জার্মানির নেতৃবর্গ মিউনিখে একত্র হয়ে চেকোসেস্নাভাকিয়ার একটা অংশ জার্মানির হাতে তুলে দেওয়ার তাৎপর্য বোঝার চেষ্টা করছেন ওই ভদ্রজনেরা। মিউনিখ চুক্তির ওই তারিখেই বোঝা গিয়েছিল যে, এভাবে জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদের ক্ষুধাকে নিবৃত্ত করা যাবে না। বরং তাদের লোভ বেড়ে যাবে। হলোও তাই। পরিণামে শুরু হলো দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ। এই মহাযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ভারতে সম্পন্ন হলো কংগ্রেসের রামগড় অধিবেশন এবং মুসলিম লীগের সেই লাহোর অধিবেশন, যেখানে প্রথম দেশভাগের প্রসত্মাব উত্থাপিত হয়। ইতোমধ্যে বাংলায় শুরু হয় গান্ধীজির প্রতি এক প্রবল বিরোধিতা। তিনি যখন ১৯৪০-এর ফেব্রম্নয়ারিতে 888sport appর মালিকান্দাতে সেবাসংঘের সর্বভারতীয় সম্মেলনে যোগ দিতে যান, তখন স্টিমারঘাটে তিনি প্রচণ্ড বিক্ষোভের সম্মুখীন হন। 888sport alternative linkটির দুই প্রধান চরিত্র – সৌম্য ও মানস – সাক্ষী হয় সে-ঘটনার। দুজনেই যাচ্ছিল গান্ধীরই সকাশে। সৌম্য একান্তভাবে গান্ধীর প্রতি উৎসর্গিতপ্রাণ। মানস উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা হয়েও পাশের জেলা থেকে ওপরওয়ালাকে না জানিয়েই
সৌম্যর সঙ্গে চলে এসেছে গান্ধী-সন্দর্শনে। সম্প্রতি মানসের পুত্রবিয়োগ হয়েছে, তাই গান্ধীর কাছে এসেছে সান্তবনার সন্ধানে। কিন্তু ‘মৃত্যুর উপরে কার হাত আছে?’ বলে তিনি নীরব হন। মানসের মনে হয়, তিনি একজন স্টোইক কিংবা গীতাকথিত স্থিতপ্রজ্ঞ বা মূর্তিমান বুদ্ধ। এদিকে গান্ধী সেবাসংঘের বিলোপ চান। বদলে জনাকয়েক থাকবেন গান্ধী কর্তৃক মনোনীত। তিনি জানিয়েছেন, এবার শুরু করবেন স্বাধীনতা সংগ্রাম, কিন্তু তার আগে হাজারবার ভাববেন। এখানেই ক্রান্তদর্শীর প্রথম পর্ব সমাপ্ত। গান্ধীজি যে বলেছেন, তাঁকে গভীরভাবে ভাবতে হবে, তার মানে কী! তাঁকে ভাবতে হবে যে, জার্মানির আক্রমণে ইংল্যান্ড যখন বিপর্যস্ত, তখন ব্রিটিশদের এই বিপদের কালে ভারতের স্বাধীনতার দাবিকে তীব্র করে তুলে জার্মানিকেই সাহায্য করা হবে কিনা, নাকি ব্রিটিশদের বেকায়দা দশায় ভারতের স্বাধীনতা আদায় সহজ হবে বলে এখনই ব্রিটিশের ওপর চাপ বাড়ানো উচিত হবে। তাছাড়া ব্রিটিশ বনাম জার্মান যুদ্ধে ভারতের বা জাতীয় কংগ্রেসের যোগদানের প্রয়োজন বা সার্থকতা কী, এটাও একটা বড় প্রশ্ন।
দ্বিতীয় পর্বের শুরুতেই বিপস্নবের স্বপ্নে বিভোর বাবলীর কথা থেকে আমরা জানতে পাই যে, ১৯৪১ সালের জুন মাসে জার্মানির হঠাৎ রাশিয়া আক্রমণের ফলে বিপস্নব সংক্রান্ত সমস্ত তথ্যই ডিগবাজির মতো পালটে গেছে। বাবলীর আশঙ্কা, পাছে রাশিয়া হেরে যায়! স্বপনদা আশ্বাস দেন, ‘রাশিয়া আত্মরক্ষা করবেই।’ 888sport alternative linkের মানস চরিত্র সত্যাসত্যে ছিল না। এখানে সে একজন উচ্চপদস্থ আমলা, মফস্সলে- মফস্সলে সরকারি কর্মে নিযুক্ত। 888sport alternative linkের মানসই 888sport alternative linkটির লেখক অন্নদাশঙ্কর। এ-888sport alternative linkের স্বপনদাও বাস্তবের একটি চরিত্র – বাস্তবে তাঁর নাম মনীন্দ্রলাল বসু, বিখ্যাত 888sport alternative link রমলা ছাড়াও ‘সুকান্ত’, ‘দার্জিলিঙে’ প্রভৃতি ছোটগল্পের, জীবনায়ন, সহযাত্রিনী প্রভৃতি 888sport alternative linkের লেখক। পুজোর ছুটিতে মানস কলকাতায় এসে স্বপনদার বাড়িতে ওঠে। ব্রেকফাস্টের পরে দু-বন্ধুতে যায় মীর আবদুল লতিফের বাড়ি। 888sport alternative linkের মীর সাহেব বাস্তবে কাজী আবদুল ওদুদ। তিনজনের কথোপকথনে সে-সময়কার বহু ঘটনা, যেমন সুভাষচন্দ্র বসুর অন্তর্ধান কাহিনি, উঠে আসে। উঠে আসে পাকিসত্মান, লীগের রাজনীতি প্রসঙ্গ, তার সঙ্গে শিখদের প্রসঙ্গ, শিখদের নিজস্ব দেশের প্রসঙ্গ, যার নাম হতে পারে খালিসত্মান এবং সেকালের আরো নানা প্রসঙ্গ। সেসব প্রসঙ্গের খেই ধরে কাহিনির মধ্যে জওয়াহরলাল, বলস্নভভাই, জিন্না, সোহরাওয়ার্দীর মতো বহু ঐতিহাসিক চরিত্রও আপন স্বরূপেই চলে এসেছেন। তাছাড়া, আগেই বলেছি, সত্যাসত্যের বহু চরিত্র ক্রান্তদর্শীতে চলে এসেছে নতুন নামে, সুধী এসেছে সৌম্য নামে, উজ্জয়িনী ফিরে এসেছে জুলি নামে, কুমার দে সরকার এসেছে সুকুমার দত্তবিশ্বাস নামে। সত্যাসত্যে বাদল-ই ছিল সবচেয়ে আকর্ষণীয় চরিত্র, তার মৃত্যুতেই শেষ হয়েছে সত্যাসত্য। মৃত্যুর পরে বাদল রূপান্তরিত হয়েছে দুলাল নামে মৃত চরিত্র রূপেই। এরাই সত্যাসত্যের সঙ্গে ক্রান্তদর্শীর সম্পর্ক রক্ষার সংযোগ-সেতু।
ক্রান্তদর্শীতে তিনটি কাহিনির স্রোত পাশাপাশি প্রবাহিত। একটি ধারা হলো মানস-যূথিকা, সৌম্য-জুলির মতো বাস্তবিক ও কাল্পনিক চরিত্রগুলির গল্প, তাদের সম্পর্কের অতীত-বর্তমানের গল্প, তাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের টানাপড়েনের গল্প। আর একটি ধারা বয়ে চলেছে ভারতের ভূগোলে, তার কুশীলব হচ্ছেন জওয়াহরলাল-বলস্নভভাই-রাজেন্দ্র প্রসাদ-জিন্না-ফজলুল হক-সোহরাওয়ার্দী প্রমুখ। তৃতীয় একটি ধারা এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে ভূম-ল ব্যেপে, যার চরিত্রাবলিতে আছেন হিটলার, চার্চিল, স্টালিন প্রমুখ ইতিহাস-প্রসিদ্ধ ব্যক্তি। তৃতীয় ধারাটির বিশেষ প্রভাব দেখা গেছে দ্বিতীয় ধারাটির ওপরে, আবার এই দুটি ধারার প্রতিক্রিয়া ও প্রতিচ্ছায়া দেখা গেছে একেবারে প্রথম ধারাটির ওপরে। এভাবে সমগ্র 888sport alternative link জুড়ে তিনটি ধারা কখনো পরস্পরে জড়াজড়ি করে, কখনো আলাদা-আলাদাভাবে বয়ে চলেছে। তৃতীয় ধারাটি ফল্গুস্রোতের মতো পাঠকের চোখের আড়ালে বয়ে চলেছে, কিন্তু দ্বিতীয় ও প্রথম ধারার চরিত্রগুলি, বিশেষত প্রথম ধারার চরিত্রগুলি বারবার পাঠকের সামনে উপস্থিত হয়ে কথোপকথনের সুবাদে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধারার গতিপ্রকৃতির বিচার-বিশেস্নষণে 888sport alternative linkকে এগিয়ে দিয়েছে। এভাবে লোকমুখেই মানস জানতে পারে যে, ১৯৪১-এর ৭ ডিসেম্বর জাপান অতর্কিতে পার্ল হারবারে হানা দিয়ে কয়েকটা জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছে। শুনে মানস বলে, ‘যুদ্ধ শুরু করে দিতে যে কোনো দেশ পারে। কিন্তু যু্দ্ধ শেষ করা তার হাতে নয়।’ ইংরেজরা এর জন্যে তৈরি ছিল না, তারা হটে আসছে, হটবার সময় শহরকে শহর ধ্বংস করে আসছে, যাতে কিছু জাপানি ভোগে না লাগে। এর নাম পোড়ামাটি নীতি। জাপানিদের ভয়ে মেদিনীপুর থেকে সরকারের রেকর্ড সরানো হয় বাঁকুড়ায়। কলকাতা থেকে অফিস সরানো হয় কৃষ্ণনগরে। পূর্ববঙ্গের নৌকো সাম্পান ডুবিয়ে দেওয়া হয় নদীতে- নদীতে। মানস দুজন ইংরেজ আর্মি অফিসারকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারে যে, তারা জাপানিদের বিহারের রাঁচি পর্যন্ত আসতে দেবে, তার আশেপাশে কোথাও গড়ে তুলবে প্রতিরোধ। মানস একটা গোপন সার্কুলার পায় যে, অফিসারদের কীভাবে অপসারণ করতে হবে তার পরিকল্পনা। সবশেষে অপসারণ করবে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট। মানসকে যখন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট থেকে জেলা জজ করা হয়, তখন সে খুশি হয়নি, কিন্তু গোপন সার্কুলারটা পেয়ে সে খুশিই হলো। তীব্রগতিতে জাপান এগিয়ে আসছে। তবু ভারত তথা কংগ্রেস তথা নেহরু কি আজাদ যুদ্ধে ইংরেজদের সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি নয়। শেষে রেঙ্গুনের পতন হয়। চার্চিল বুঝতে পারেন, ভারতকে রাজি করানোর ক্ষমতা ভারতের বড়লাট লিনলিথগাউয়ের নেই, তাই আরো কূটবুদ্ধিসম্পন্ন ও নেহরুর ঘনিষ্ঠ সার স্টাফের্ড ক্রিপসকে পাঠাচ্ছেন। কিন্তু ক্রিপস প্রসত্মাবকে গান্ধীজি বর্ণনা করেন ‘এ পোস্ট-ডেটেড চেক অন অ্যা ক্র্যাশিং ব্যাঙ্ক’ বলে। কিন্তু ক্রিপস একটা ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন ভারতীয় মুসলমানদের উদ্দেশে। কংগ্রেস যদি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে বেরিয়ে যেতে চায়, তাহলে মুসলিম লীগও বেরিয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে যদি জাপানিরা আসে তাহলে ভারতীয়দের একাংশের মতে, দেশ মুক্তি পাবে ইংরেজের হাত থেকে। আবার কারো-কারো আশা, জাপানিরা এলে ইংরেজ ভারতীয়দের হাতেই ক্ষমতা দিয়ে নিজেদের প্রাণ বাঁচাবে। কিন্তু ক্রিপস বলে যান যে, আপাতত ক্ষমতা ইংরেজের হাতেই থাকবে। রাতের বেলায় বোমার ভয়ে বস্ন্যাক আউট আর দিনের বেলায় সংবাদের ওপর বস্ন্যাক আউট। যুদ্ধের ডামাডোলে সত্যই প্রথম ক্যাজুয়ালটি। গান্ধীজির হরিজন ছাড়া সব সংবাদপত্রের ওপরেই নিষেধাজ্ঞা। এই আবহে শামিত্মর কথা বলাও দেশদ্রোহিতার শামিল। আহবান এসেছে জার্মানি-ইতালি-জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার। জাপান যুদ্ধকে নিয়ে এসেছে বাংলার দোরগোড়ায়। কিন্তু কারো-কারো মতে, জাপান যখন ইংরেজের শত্রম্ন, তখন জাপান ভারতের মিত্র। আর রাশিয়া যতদিন ছিল জার্মানির বন্ধু, ততদিন ভারতের কমিউনিস্টরা ছিল বেকায়দায়। যেদিন থেকে জার্মানি হানা দিলো রাশিয়ার ওপরে, সেদিন থেকে এই যুদ্ধ কমিউনিস্টদের কাছে হয়ে গেল জনযুদ্ধ। কলকাতা ভরে যাচ্ছে ইংরেজ ও মার্কিন সৈন্যে।
আগুয়ান জাপানিদের আতঙ্কে অনেকে কলকাতা ছেড়ে মফস্সলে চলে গেছেন। তেমনই একজন 888sport alternative linkের প্রবীণ চরিত্র সাংবাদিক ভবতোষবাবু, বাস্তবে যিনি প্রবাদপ্রতিম সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়। এই শহরে তাঁর অনেক আত্মীয়স্বজন থাকলেও ভবতোষবাবুর ছেলে পরিতোষ কলকাতা থেকে মধ্যে-মধ্যে এই শহরে আসে বাবার খবর নিতে। মানস এই শহরে এখন জেলা জজ। মানস ও পরিতোষের কথাবার্তা থেকে আমরা জানতে পারি যে, গান্ধীজি আগে স্বাধীনতা বলতে বুঝতেন ব্রিটিশ শাসন ও ব্রিটিশ সৈন্য উভয়ের অপসারণ, কিন্তু এখন চাইছেন শুধু ব্রিটিশ শাসনের অপসারণ, তাঁর সমবয়সী ভবতোষবাবুও তা-ই চান। কিন্তু তরুণতর কংগ্রেস নেতারা চান ব্রিটিশ শাসনের সঙ্গে ব্রিটিশ সৈন্যেরও অপসারণ, পরিতোষও তা-ই চায়। মানস বলে যে, হঠাৎ ব্রিটিশ শাসন ও সৈন্যের অপসারণে দেশে নেমে আসবে অরাজকতা। তাদের সঙ্গে আলাপে যোগ দেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হায়দার সাহেব। আলী হায়দার বলেন, গ্রামেগঞ্জে টুরে গিয়ে ছেলে-ছোকরাদের মুখে শুনেছেন ‘কুইট ইন্ডিয়া’। হাসিমুখে তিনি তখন বলেন, আমি তো ইংরেজ নই, ভারত ছেড়ে কোন দেশে যাব? পাকিসত্মানে? অমনি চিৎকার চুপ। গান্ধীজির ওই সেস্নাগান থেকে জিন্না বানিয়েছেন নিজের স্নোগান, ‘ডিভাইড অ্যান্ড কুইট’। ম্যাজিস্ট্রেটকে বা জজকে বা এসপিকে ভারত ছাড়ো বলার মানে পদ ছাড়ো। উচ্চপদস্থ আমলারা পদ ছাড়লে নিম্নপদস্থরা পদ আঁকড়ে থাকতে পারেন না। সবাই পদ ছাড়লে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসবে ডাকাত-লুটেরাও। সেই উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে নিয়ন্ত্রণ করবে কারা? ব্রিটিশ যদি হঠাৎ ভারত ছাড়ে, তাহলে অরাজকতা অনিবার্য, তাই গান্ধীজি কাউকে আর পদত্যাগ করতে বলছেন না, ‘যে যার পদে অধিষ্ঠিত থেকে যে যার কর্তব্য সম্পাদন করে যেতেই বলছেন,’ মানস জানায় দ্বিতীয় পর্বের সতেরোসংখ্যক পরিচ্ছেদে। পরের পরিচ্ছেদেই গান্ধীকে গ্রেফতার করার খবর। ফলে গান্ধীজির ডাকে গণসত্যাগ্রহ হয় না, যা হয় তার নাম আগস্ট বিপস্নব। বিপস্নব মানেই এক প্রকার উন্মত্ততা ও ধ্বংসকার্য। ভবতোষবাবু মানসকে এসে জানান, তমলুকে না কোথায় যেন জাতীয় সরকার গঠিত হয়েছে। তাঁর খোঁজ নিতে সেবার পরিতোষের সঙ্গে তার স্ত্রী আরতি দেবীও আসেন। আরতি দেবীর মাসি বিনীতা সিনহা ওরফে বিনু মাসি। বিনু মাসির মেয়ে জুলি, জুলির স্বামী দুলাল বিলেতে পড়তে গিয়ে অকালে মারা যায়। বিধবা জুলি মায়ের কাছে থাকলেও গোপনে নানা রকম স্বাধীনতার সংগ্রামের সঙ্গে যুক্ত। চোরা প্রেসে ছাপা বুলেটিন সাহেবপাড়ায় বিলি করে, সিনেমায় প্রচারপত্র ফেলে আসে ভারতীয় ফৌজিদের জন্যে, দিনের বেলা বোরকা পরে বেরোয়, বস্ন্যাক আউটে তার বহুরূপী রূপ। খবরের কাগজ পনেরো-ষোলো দিন বন্ধ থাকার পর আবার বেরোচ্ছে। কিন্তু কড়া সেনসরশিপ। কখনো শোনা যায় গান্ধীজিকে উগান্ডাতে, কখনো এডেনে চালান করেছে। পরে জানা গেল, আগা খাঁর প্রাসাদে তাঁকে আটকে রাখা হয়েছে। ফ্রি ইন্ডিয়া নিউজ সার্ভিস সাইক্লোস্টাইলে প্রতি সপ্তাহে গোপন খবর দেয়। থানায় তেরঙা পতাকা ওড়াতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে মাতঙ্গিনী হাজরার মৃত্যুর খবরও এভাবে প্রকাশ পায়। পাশাপাশি খবর আসে রুশ-জার্মান যুদ্ধের, ভলগা নদীর তীরে স্টালিনগ্রাদে চলছে দারুণ যুদ্ধ। জার আমলের মহাবীর সুভোরোভের দোহাই দিয়ে স্টালিন রুশদের যুদ্ধে প্রেরণা জোগাচ্ছেন। মার্কসের নামে নয়, সুভোরোভের নামেই স্টালিনগ্রাদে রুশদের সাফল্য। এরই মধ্যে বিনীতা সিনহা স্টেটসম্যানে নোটিশ ছাপিয়ে দেন যে, মেয়ে জুলির সঙ্গে সৌম্য চৌধুরীর এনগেজমেন্ট। তার পর থেকে মায়ের ওপর রাগ করে জুলি নিরুদ্দেশ। এমন সময় খবর আসে, স্টালিনগ্রাদের রাসত্মায় চলছে ঘোরতর লড়াই। এদিকে পুলিশ গেজেটে খবর বেরোয় যে, নিখোঁজ সৌম্য চৌধুরীকে ধরতে পারলে পাঁচ হাজার টাকা 888sport app download bd। যারা সৌম্যকে চেনে তারা অবাক। অহিংসাবাদী গান্ধীভক্ত সৌম্য এমন কী করল যে তাকে ধরার জন্য 888sport app download bd দেওয়া হবে! আগস্ট বিপস্নবের জোয়ারে কট্টর অহিংসাবাদী সৌম্য ভেসে যায় আর সুদূর স্টালিনগ্রাদে, জার্মানির পশ্চাদপসরণ শুরু হয়। পুজোর ছুটিতে মানস যায় কলকাতায়, তার স্ত্রী যূথিকা থেকে যায় জেলা জজের কুঠিতে স্থাপিত চরকা কেন্দ্র ও মহিলা সমিতি চালাবার জন্য। কলকাতায় এসে মানস সোদপুরের গান্ধী আশ্রমে সৌম্যর খোঁজ করে। বস্ন্যাক আউটের অন্ধকার পথে বাউলের ছদ্মবেশে সৌম্যর সাক্ষাৎ পায় মানস। তাতে জানতে পারে, অহিংস সৌম্য এখন বিপস্নবী হয়ে ধ্বংসকাজে বিশ্বাসী। বাস্তব ঘটনা এই যে, গান্ধীবাদী অন্নদাপ্রসাদ চৌধুরীও আগস্ট বিপস্নবে জ্বলে উঠে কলকাতায় গোপনে অন্নদাশঙ্কর রায়ের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। আগস্ট বিপস্নবের আগুন বছর ঘুরতে-না-ঘুরতে নিবে যায়। কিন্তু বিপস্নবীদের অপকর্মের জন্য ব্রিটিশ সরকার দায়ী করে গান্ধীজিকে; যদিও তিনি এই পর্বে বন্দি ছিলেন ব্রিটিশের বন্দিশালায়, তাঁর কোনো সম্পর্ক ছিল না দেশবাসীর সঙ্গে। তবে তাঁকে দায়ী করা কেন? প্রতিবাদে ১৯৪৩-এর ১০ ফেব্রম্নয়ারি থেকে তাঁর 888sport cricket BPL rate দিনের অনশন। এই বয়সে 888sport cricket BPL rate দিনের অনশন মানে মৃত্যুকে আবাহন। গান্ধীজির অনশনে মানস ও যূথিকাও সহমর্মিতায় প্রতীকী অনশন করে। গোপনে সৌম্য যায় গান্ধীজির সঙ্গে দেখা করতে। ছদ্মবেশে ছদ্মনামে ঘুরে বেড়াতে তার নীতিবোধে বাধে। কলকাতায় ফিরে দেখে তার আশ্রম ও খাদি ভা-ার সরকারের দখলে। এ অবস্থায় তার মুক্ত থাকাটা নিরর্থক। দুর্ভিক্ষের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে কিন্তু কাউকে একমুঠো চাল জোগাবার ক্ষমতাও তার নেই। সৌম্য লালবাজারে গিয়ে আত্মসমর্পণ করলে বিচারে তার সাজা হয় তিন বছর সশ্রম কারাদ-। তখন জুলিও আত্মসমর্পণ করে যেচে সাজা নেয় তিন বছরের সশ্রম কারাদ- এবং তাদের কারাবাসকালে মানস ছুটি নিয়ে সপরিবারে যায় আলমোড়ায়। অতদূর থেকে শুনতে পায় না, কারা সব কেঁদে বলছে, ‘একটু ফ্যান দাও, মা। এক মুঠো ভাত দাও, বাবা।’ বিপস্নবীরা কর্ণপাত করে না। বিপস্নবের লগ্ন বয়ে যায়। এভাবেই শেষ হয় ক্রান্তদর্শীর দ্বিতীয় পর্ব যা অন্নদাশঙ্কর উৎসর্গ করেছেন ‘স্বর্গীয় অন্নদাপ্রসাদ চৌধুরী 888sport app download for androidে’। তখন অন্নদাশঙ্করের বয়স ৭৯ বছর।
তাঁর তখন প্রতিদিনের উদ্বেগ – 888sport alternative linkটি যেখানে শেষ করবেন ভেবে লেখা শুরু করেছিলেন সেখান পর্যন্ত পৌঁছতে পারবেন তো! ততদিন বাঁচবেন তো! এবার থেকে লাফিয়ে-লাফিয়ে চলতে হবে। তাই ১৯৪৩-এর মন্বন্তর ও ১৯৪৪-এর মার্চে আজাদ হিন্দ ফৌজের কোহিমা আক্রমণের কাহিনি ইত্যাদি মানে প্রায় দুবছর বাদ দিয়ে পৌঁছে যান ১৯৪৫-এর মে মাসে জার্মানির আত্মসমর্পণে। ক্রান্তদর্শীর পটভূমিতে আন্তর্জাতিক ঘটনাবলি থাকলেও 888sport alternative linkটির মূল কাহিনি হলো ব্রিটিশরাজের অমিত্মম পর্যায়ে স্বাধীনতা সংগ্রামের চরিত্র আর তার ফলে স্বাধীনতা লাভ ও সেইসঙ্গে দেশভাগ, যার নিয়ামক ঘটনা হলো ভারতীয় জাতীয়তাবাদের অভ্যন্তরে গুপ্ত হিন্দু জাতীয়তাবাদের প্রতিপক্ষ রূপে মুসলিম জাতীয়তার বিকাশ ও ভারতীয় মুসলিম জাতির জন্য স্বতন্ত্র দেশ গঠনের দাবি ও সে-দাবির বাস্তবায়ন। তৃতীয় পর্বের প্রথমাংশেই আমরা জানতে পাই, জাপানে পরমাণু বোমার ধ্বংসের ও স্বপন গুপ্তের সহপাঠী নেতাজি সুভাষচন্দ্রের তাইপেতে পেস্নন দুর্ঘটনাতে মৃত্যুর কথা এবং ইংল্যান্ডের নির্বাচনে লেবার পার্টির জয়ের খবর। দ্বাদশ পরিচ্ছেদে মানস ছবছর পশ্চিমবঙ্গে কাটিয়ে আবার বদলি হয় পূর্ববঙ্গের এক জেলায়। পূর্ববঙ্গই মানসের বেশি প্রিয়। যাত্রার প্রথম অংশ ট্রেনে, পরের অংশ স্টিমারে। স্টিমারে মানসের ভাব হয় এক মুসলিম অফিসারের সঙ্গে। খানসাহেব লক্ষ করেছেন যে, ইউরোপীয়রা সম্প্রতি জড়ো হচ্ছে বড়-বড় শহরে, যাতে আপদকালে সহজে পেস্নন বা জাহাজ ধরে ফিরতে পারে স্বদেশে। মানস খানসাহেবকে বলে, হিন্দু মুসলমান যদি দুই নেশন হয়ে থাকে, তা হলে বাংলাও দুই নেশনের মধ্যে ভাগ হয়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে বোম্বাইয়ে রয়াল ইন্ডিয়ান নেভিতে মিউটিনি শুরু হয়। এদিকে বাংলার ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে নতুন জেলায় এসে মানস নতুন আলাপি পায় দেবাদিদেব গুহকে। কেমব্রিজের র্যাংলার কিন্তু বাংলায় কোনো মনের মতো পদ না পেয়ে পৈতৃক জমিদারিনির্ভর জীবন যাপন করেন। মানসকে তাঁর অনুমান জানান, ‘দেশের অবস্থা অগ্নিগর্ভ। ভারতে সবসুদ্ধ নববই হাজার ইউরোপীয় আছে।… ওরা যেমন তুখোড় পলিটিশিয়ান ভারতীয়দের লেলিয়ে দেবে ভারতীয়দের গায়ে আর নিজেরা সালিশি করবে। বাধাবেও ওরা, মেটাবেও ওরা। আর লড়ে মরবে হিন্দু মুসলমান শিখ।’ আরেকদিন তিনি বলেন, ‘আমাকে যদি কেউ তাড়িয়ে দেয় তবে সেটা আমি কাফের বলে না আমি জমিদার বলে তা কী করে জানব? হিন্দু-মুসলমানের বিবাদ কি ধর্মীয় বিবাদ না রাজনৈতিক বিবাদ না অর্থনৈতিক বিবাদ না সামাজিক বিবাদ? হয়তো সবকটা বিশেস্নষণই ঠিক। দেশের লোক ভিতরে-ভিতরে পরস্পরের কাছে পর হয়ে যাচ্ছে। এই যে এস্ট্রেঞ্জমেন্ট, এটা আপনারা সরকারি মহলে আঁচ করে থাকবেন। আমরা বাইরেও অনুভব করছি। ইংরেজদের ছেড়ে যাওয়া তখ্তে কংগ্রেস বসবে, এটা ভারতের মুসলমান মনেপ্রাণে গ্রহণ করতে পারছে না। তেমনি ইংরেজের ছেড়ে যাওয়া মসনদে মুসলিম লীগ বসবে, বাংলার হিন্দু এটা মেনে নিতে পারছে না। এই হলো এস্ট্রেঞ্জমেন্টের হেতু। এইসব আলোচনার আড়ালে-আড়ালে বাইরের
জগতে ঘটে যাচ্ছে আরো কত ঘটনা – ক্যাবিনেট মিশন, ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট, কংগ্রেসের ওপর থেকে গান্ধীর প্রভাব বিলোপ, কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলি গঠন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন, কলকাতায় ডাইরেক্ট অ্যাকশনে নেতৃত্ব দেয় বাংলার প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী-সঞ্চালিত বাহিনী, কিন্তু পালটা দেয় হিন্দুরা আর তা নিয়ে পুলকিত হন স্বয়ং কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী সর্দার বলস্নভভাই প্যাটেল। ওদিকে কলকাতায় হিন্দু শিখ সম্প্রদায়ের ক্রিয়ার প্রতিক্রিয়া দেখা যায় নোয়াখালীতে। নোয়াখালীর খবর ফলাও করে কাগজে বেরোনোর আগেই সৌম্য জেনে যায় নোয়াখালীর গান্ধীবাদীদের সুবাদে। সে সঙ্গে-সঙ্গে রওনা হয়ে যায় নোয়াখালীর উদ্দেশে। নোয়াখালী ঘুরে সৌম্য বলে, যত রটেছে তত ঘটেনি। কিন্তু কাগজের ফলাও খবর পড়ে বিহারের হিন্দুরা প্রতিশোধ নিচ্ছে ফলাও করে। ইতোমধ্যে সৌম্য ও জুলির বিয়ে হয়ে গেছে গান্ধীজির অনুমতিতে। জুলির অনুমতি নিয়ে এবার সৌম্য যায় বিহারে। এখানেই সমাপ্ত হয় ক্রান্তদর্শীর তৃতীয় পর্ব।
চতুর্থ পর্বের শুরুতেই আমরা জানতে পারি যে, কলকাতার দাঙ্গার সময় দাঙ্গাকারীরা যেমন স্বপন গুপ্তের বাড়ি, তেমনি মীর সাহেবের বাড়ি আক্রমণ করেছিল। ইতোমধ্যে শরৎ বোস ইন্টারিম গভর্নমেন্ট থেকে বিদায় নিয়ে কলকাতায় ফিরে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে মিলে অখ- ও স্বতন্ত্র বাংলা গঠন নিয়ে জল্পনা-কল্পনা করছেন। গান্ধীপন্থী বঙ্কিমবাবু নোয়াখালী থেকে ফিরে এসে জানান, নোয়াখালী এখন শান্ত, কিন্তু সেটা বাপুর প্রভাবে, না পুলিশের প্রতাপে, না মিলিটারির প্রসাদে তা বলা শক্ত। বিহারে দাঙ্গার খবর পেয়ে সৌম্য যায় বিহারে। মুসলমানরা যা করেছে হিন্দুরাও তা একই মুদ্রায় শোধ করেছে, ধর্মান্তরকরণটা বাদে আর সবই করেছে। যা হয়েছে সব আপনা থেকে হয়েছে। এমন অবস্থা যে জওহরলাল শাসাচ্ছেন বোমাবর্ষণ করবেন। বলস্নভভাই বলছেন, তরবারির সঙ্গে তরবারির ভেট হবে, মানে হিংসার জবাবে হিংসা। এখন অহিংস সৈনিকরা কার নেতৃত্ব মানবে! বাপুর, না জওহরলালের, না বলস্নভভাইয়ের! বঙ্কিমবাবুও বিভ্রান্ত। মানসের এক চোখ নোয়াখালীর ওপরে, যেখানে গান্ধীজি মাইলের পর মাইল হেঁটে চলেছেন, অন্য চোখ দিলিস্নর ওপরে, যেখানে লর্ড ওয়েভেল কংগ্রেস ও লীগ নেতাদের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছেন। মুসলিম লীগ কনস্টিটুয়েন্ট অ্যাসেম্বলিতে না এলে ওয়েভেল তার অধিবেশন ডাকবেন না। অনেক টালবাহানার পর তিনি তা ডাকেন বটে। কিন্তু প্রথমটাতে মুসলিম অনুপস্থিত – দারুণ দোটানা দশা। কিছুদিন পর বিহার থেকে মুসলিম শরণার্থীর ঢল নামে, তাদের জন্যে শিবির খোলা হয় মেদিনীপুরে। নোয়াখালীর হিন্দু শরণার্থীরা কলকাতায় আসতে ব্যগ্র, তাদের ঠেকানো হয় চাঁদপুরে। বিহার থেকে এসে সৌম্য চলে যায় নোয়াখালী। শ্রীরামপুরে বাপুর দর্শন পায়, শোনায় তার অভিজ্ঞতা। বিহারি হিন্দুর মুখে শোনা কথা শোনায়। খুনকা বদলা খুন। লুটকা বদলা লুট। আগকা বদলা আগ। কিন্তু যে-কথাটা বলতে পারে না সেটা হলো, ফেলসানিকা বদলা ফেলসানি। গান্ধীজির সঙ্গে ভারতের নানা প্রদেশ থেকে আগত সেবাকর্মীরাও রয়েছেন। এই পর্বের নবম পরিচ্ছেদে আমরা দেখা পাই নোয়াখালীতে গান্ধীজির সচিবরূপে নির্মলকুমার বসুকে। জানতে পাই, গোলাম সারওয়ার বলে সেই লোকটির কথা, যাকে মুসলিম লীগ টিকিট দেয়নি বলে লীগ সরকারকে বিব্রত করার জন্য নোয়াখালীকা- বাধিয়েছিল। একাদশ পরিচ্ছেদে পৌঁছে আমরা জানতে পারি যে, লীগপন্থীরা ভারতভাগ চান, কিন্তু প্রদেশ ভাগ চান না আর মহাসভাপন্থীরা ভারত ভাগের সঙ্গে প্রদেশ ভাগও চান। দ্বাদশ পরিচ্ছেদে স্বপনদা প্রশ্ন তোলেন, ‘হঠাৎ স্রোতের মাঝখানে ঘোড়াবদল কেন? ওয়েভেল কেন যাবেন, মাউন্টব্যাটেন কেন আসবেন? মাত্র কয়েক মাসের তো রাজত্ব।’ মাউন্টব্যাটেন এসেই ব্রিটিশ সৈন্য সরাবার কাজে লেগে গেছেন। ব্রিটিশ অফিসাররা অকালে চাকরি খোয়াবার জন্য ক্ষতিপূরণ পাবে, কিন্তু ভারতীয় অফিসাররা পাবে না এই মর্মে। বলস্নভভাই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এখন বাংলা ভাগ হবে কি-না তা নিয়েই প্রশ্ন। বাংলাকে স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্র করার ব্যাপারে জওহরলালেরও আপত্তি। ভারত তবে বলকান রাষ্ট্র হয়ে যাবে। তাহলে 888sport app প্রদেশও একে-একে স্বতন্ত্র ও স্বাধীন রাষ্ট্র হতে চাইবে। হিন্দু মহাসভার অখ- বাংলার বিষয়ে আপত্তি হলো, অখ- বাংলা হবে মুসলমানপ্রধান, তার মানে বাঙালি হিন্দু থাকবে মুসলমান সরকারের অধীন, কারণ বাংলায় মুসলমানরাই 888sport free betগরিষ্ঠ। পনেরোসংখ্যক পরিচ্ছেদে অন্নদাশঙ্কর লেখেন, ‘গান্ধীজিকে বাদ দিয়ে পাঁচজনে মিলে ভারতভাগ্য বিধাতা হন। লর্ড মাউন্টব্যাটেন, জওহরলাল নেহরু, বলস্নভভাই প্যাটেল, মহম্মদ আলি জিন্না ও বলদেও সিং। তাঁদের বিধানে ভারত ধরণি দ্বিধা হবে। দ্বিধা হবে একই কালে বঙ্গ ও পাঞ্জাব। পাকিসত্মান নামে এক স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র ভূমিষ্ঠ হবে। তার অঙ্গীভূত হবে পূর্ববঙ্গ, বঙ্গ তথা পশ্চিম পাঞ্জাব। সিন্ধু ও ব্রিটিশ বেলুচিসত্মান। গণভোটের রায় অনুকূল হলে উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ তথা সিলেট আর সব থেকে যাবে ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রে। তেসরা জুন সন্ধ্যাবেলা বলস্নভভাই বাদে বাকি চারজন বেতার ভাষণ দেন। বিচলিত হয়ে শোনে মানস ও যূথিকা। দীর্ঘশ্বাস ফেলে। আর কিছুদিনের মধ্যে ওরা নিজ বাসভূমে পরবাসী হবে। আইনের ভাষায় এলিয়েন। পরের পরিচ্ছেদে মর্মাহত সৌম্য যায় দিলিস্নতে গান্ধীজি, প–তজি, সর্দারজি প্রমুখ নেতার সঙ্গে দেখা করতে। বাংলা ভাগের অব্যবহিত আগে ও পরে বাঙালি জীবনের অভূতপূর্ব টানাপড়েনের কথা বর্ণিত হয়েছে এই পর্বে। ততদিনে ঘটে গেছে পাঞ্জাবের দাঙ্গা। এই দাঙ্গার তুলনা নেই ভারতের সমগ্র ইতিহাসে। ক্রান্তদর্শী ইতিহাস নয়, 888sport alternative link, বলা যায় ইতিহাস ভিত্তি করে 888sport alternative link। ইতিহাসে ঘটনার সঙ্গে জড়িত চরিত্রকে উপস্থাপন করা হয় শুধুমাত্র ঘটিত দৃষ্টিকোণ থেকে, ঔপন্যাসিক সেই চরিত্রকে দেখে আরো অনেক সম্ভাব্য দৃষ্টিকোণ থেকেও। ঐতিহাসিক কোনো চরিত্রের মনের কথা জানতে পারে না, জানাতেও পারে না। শুধু সেটুকু জানতে পারে যেটুকু প্রকাশ পায় ঘটনা থেকে বা চরিত্রের কাজ থেকে। পক্ষান্তরে ঔপন্যাসিক চরিত্রের কাজ বা ঘটনার ইঙ্গিত থেকে অনেক কথা কল্পনা করে নিতে পারে।
ক্রান্তদর্শী লেখা শেষ করে ১৯৮৬-র ২১ জুলাই অন্নদাশঙ্কর নিজেই এর ভূমিকায় লেখেন, ‘ক্রান্তদর্শী’ ইতিহাসভিত্তিক হলেও ঐতিহাসিক 888sport alternative link নয়। রাজনীতিনির্ভর হলেও রাজনৈতিক 888sport alternative link নয়। বলতে পারা যায় বিশেস্নষণধর্মী মানবিক স্টেটমেন্ট। বিশেস্নষণ করা হয়েছে বিশ্বের ইতিহাসের, ভারতের ইতিহাসের, বাংলার ইতিহাসের একটা যুগসন্ধিকে। সেরকম যুগসন্ধি আগেও আসেনি, পরেও আসবে না। ওই একবারই এল আর গেল।’
বিশ্বের তথা ভারতের তথা বাংলার ১৯৩৯-এর সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৪৮-এর জানুয়ারিতে গান্ধীনিধন পর্যন্ত বিসত্মৃত এই যুগসন্ধি। এই যুগসন্ধি নিয়ে অনেক ঐতিহাসিক, অনেক ঔপন্যাসিক, অনেক গবেষক অনেক 888sport live, অনেক পুস্তক রচনা করেছেন এবং ভবিষ্যতেও অনেক রচিত হবে। কিন্তু আমার মনে হয় এই যুগসন্ধির সবচেয়ে অন্তর্ভেদী ও বিদগ্ধ উপস্থাপনা হলো ক্রান্তদর্শী। এর অসাধারণ গঠনকৌশল সম্বন্ধে আগেই বলেছি। তেমনি বিস্ময়কর কল্পনা ও বাস্তব মিলিয়ে এর চরিত্রগুলির নির্মাণকৌশল। তেমনি সৌম্য ও জুলির সম্পর্কের কাহিনির সাশ্রয়ী বিকাশ। এমন অভিনিবেশ দাবিদার, এমন উচ্চাভিলাষী 888sport alternative link আমাদের জীবৎকালে লেখা হয়েছে – এ-কথা বিশ্বাস করতে হলে ক্রান্তদর্শী চার পর্ব পড়তেই হবে। ব্রিটিশরাজের ক্ষমতা হসত্মান্তর পর্বের প্রচলিত ইতিহাসে যেসব কথা পাওয়া যাবে সেসবের চাইতে অনেক বেশি তথ্য ও অন্তরঙ্গ কথা পাওয়া যাবে এই 888sport alternative linkে বর্ণিত চরিত্রগুলির জীবনকথার আড়ালে। এই সময় লেখক ছিলেন ব্রিটিশ পক্ষের অন্দরমহলে। ফলে অনেক গোপন কথা ও নির্দেশ তিনি জানতে পেরেছেন। তাছাড়া কল্পনা করতে পেরেছেন ব্রিটিশ কূটনীতিবিদবর্গ, কংগ্রেস নেতৃবর্গ, মুসলিম লীগবর্গ এবং ন্যায় ও সত্যের প্রতীক মহাত্মা গান্ধী – এই চতুর্বর্গের কী পরিমাণ দর-কষাকষি ও বিনিদ্র রাত্রি যাপনের পর ইন্টারিম গভর্নমেন্ট থেকে ডোমিনিয়ন স্টেটাস লাভ এবং ট্রেজারির অর্থভাগ সম্ভব হয়েছে তা উপলব্ধ হবে এই 888sport alternative link থেকে। ক্রান্তদর্শী প্রকৃতই এক মহাভারতকথা।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.