আমার বন্ধু ও সহকর্মী আনিসুজ্জামান 888sport app download for androidে

প্রফেসর আনিসুজ্জামান আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সহকর্মী ছিলেন। তিনি আমাদের 888sport live chat-সংস্কৃতি, সমাজ ও 888sport live footballের ক্ষেত্রে ছিলেন একটি আলোকবর্তিকার মতো এবং একটি অবি888sport app download for androidীয় নাম। তাই আজ অত্যন্ত দুঃখ-ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তাঁকে 888sport app download for android করছি। অতি অল্পদিনের ব্যবধানে চলে গেলেন আমাদের সমাজের গর্বের মানুষ বেশ কয়েকজন – স্যার ফজলে হাসান আবেদ, ভাষাসৈনিক ও 888sport appsের প্রথম 888sport promo code জাতীয় অধ্যাপক ডা. সুফিয়া আহম্মদ, জাতীয় অধ্যাপক ডা. জামিলুর রেজা চৌধুরী, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডা. নীলুফার মঞ্জুর ও সর্বশেষ ড. আনিসুজ্জামান। তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় হয় ১৯৫৩ সালে, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন তিনি ভর্তি হন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের সংশ্লিষ্ট ছাত্র হিসেবে। আমি সলিমুল্লাহ হলেই থাকতাম। সে প্রায় ৬৭ বছর আগের কথা। আমার বন্ধুদের কাছে শুনেছিলাম – আনিসুজ্জামান ছিলেন প্রতিবাদী একজন ছাত্রনেতা, যা ’৫২ সালের বাংলা ভাষা-আন্দোলনের সময়ে প্রকাশ পেয়েছিল।
আনিসের জন্ম ১৯৩৭ সালে, ২৪ পরগনায়। তাঁর পিতা ডা. এ.টি.এম. মোয়াজ্জম ১৯৪৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন, 888sport appয়। আনিস ভর্তি হয়েছিলেন তখনকার দিনের প্রিয়নাথ হাইস্কুলে, যা পরবর্তীকালে নবাবপুর হাইস্কুল হয়ে যায়। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার সঙ্গে আনিসের বন্ধু ও সাহচর্য সৃষ্টি হয়েছিল আমার আরেক আজীবন বন্ধু নূরুল হকের মাধ্যমে। নূরুল হক (প্রয়াত ২০১৭ সালে) ও আমি পদার্থ888sport apk বিভাগের ছাত্র ছিলাম, আর আনিস ছিলেন বাংলা বিভাগে।
আনিসের 888sport live football ও সংস্কৃতিতে আগ্রহ বোঝা যায় পঞ্চাশের দশকেই। যখন বুলবুল একাডেমি (888sport live chat সম্প্রসারণের জন্য) প্রতিষ্ঠিত হয় সেই পঞ্চাশের দশকে, তখনই আনিস তার founder member ছিলেন।
১৯৫৯ সালে আনিস 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিযুক্ত হন। আমরা সবাই আশ্চর্য হয়েছিলাম যে ১৯৬২ সালে ২৫ বছর বয়সে তিনি পিএইচ.ডি অর্জন করেন বাংলা ভাষা, 888sport live football ও সংস্কৃতির বিবর্তনের বিষয়ে। 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনি শিক্ষক ছিলেন ১৯৫৭-৬৯ সাল সময়ে এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন ১৯৬৯-৮৫ সাল সময়ে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে ভারতে চলে যান। পরবর্তীকালে বিশ্বভারতীসহ বিদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে Visiting Fellow, Visiting Professor হিসেবে কর্তব্যরত ছিলেন, এবং ১৯৮১ সালে লন্ডনে India Office লাইব্রেরিতে অনেক গবেষণা করেন।
আনিস ছিলেন আত্মপ্রচারবিমুখ একজন ব্যক্তি ও সামাজিক অঙ্গনে অত্যন্ত সাদামাটা জীবনযাপনের পক্ষপাতি। আমি তাঁকে আজীবন দেখেছি পাজামা-পাঞ্জাবি পরিহিত – শুধু একবার, বোধহয় ষাটের দশকে, আমেরিকার Chicago শহরে দেখা হয়েছিল, যখন আমি তাঁকে একটি স্যুট পরা দেখেছিলাম।
আনিসের স্ত্রী, সিদ্দিকা আনিস (যাকে আমরা বেবীভাবি বলেই ডাকি), তিনি ছিলেন সেকালের একজন সুপরিচিত ব্যক্তির কন্যা – যাঁর নাম ছিল মি. ওয়াহাব, যিনি সেকালে 888sport appয় The Statesman কাগজের প্রতিনিধি ছিলেন। বেবীভাবির সঙ্গে আনিসের বিয়ে হয় ১৯৬১ সালে।
আনিসের জীবনকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে বিভক্ত করা যায়, যেমন –
১. শিক্ষাঙ্গনে – পঞ্চাশের শেষ থেকে ষাটের দশকে এবং আশির দশকে
২. প্রগতিশীল ছাত্র আন্দোলনে – ষাটের দশকে
৩. মুক্তিযুদ্ধের সময়ে ও স্বাধীনতার পরবর্তী দশকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে, শেষের দীর্ঘ সময় – 888sport live football, সংস্কৃতি, সামাজিক বিবর্তনের ক্ষেত্রে, এবং
৪. সর্বশেষ সময়ে দীর্ঘদিন যাবত বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে ও সংশ্লিষ্ট 888sport app অঙ্গনে – যে সময়টি আমার মনে হয়, আমাদের নতুন প্রজন্মের প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। আনিস প্রথমে ১৯৯৯ সালে বাংলা একাডেমির সভাপতি হয়েছিলেন ২০০২ সালের গোড়ায় তবে তিনি সেই পদটি ত্যাগ করেছিলেন। পরবর্তীকালে ২০১১ সালের ডিসেম্বরে/ ২০১২ সালের জানুয়ারি মাসে আবার সভাপতি হিসেবে তাঁকে নির্বাচিত করেন সরকার।
প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে আমার সঙ্গে আনিসের পরিচয় গভীর হয় এবং সাহচর্যের পরিধি বৃদ্ধি পায় – কয়েকজন সমসাময়িক গুণীজনের সাহচর্যে – যেমন, সৈয়দ আতিকুল্লাহ, হাসান হাফিজুর রহমান ও আলাউদ্দিন আল আজাদ। আজ তাঁরা সকলেই প্রয়াত। একসময় সদ্যপ্রয়াত বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও লেখক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীরের মাধ্যমেও আনিসের সঙ্গে আমার সাহচর্যের পরিধি বৃদ্ধি পায়।
আনিসের কাছ থেকে আমি যা জেনেছি – আলোচনায়, তাঁর বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতা ও তাঁর বিভিন্ন লেখা থেকে, তাতে প্রাধান্য পেয়েছে – বাংলাভাষার ইতিহাস, বাঙালি সংস্কৃতি, বাংলার রাজনৈতিক আন্দোলনের ও দর্শনের বিবর্তন। আনিসের গবেষণাভিত্তিক লেখাগুলি সম্পূর্ণভাবে পড়ার আমার খুব সুযোগ হয়নি – ১৯৬৪ সালে সেগুলো প্রকাশিত হয়েছিল।
মুজিবনগর 888sport apps সরকারের সঙ্গে তাঁর নিবিড় সংযোগ ও কর্মময় সময়ের এবং দায়িত্ব পালনের কথা আমরা সবাই জানি। 888sport appsের শিক্ষকরা যাঁরা কলকাতায় ছিলেন তাঁদের নিয়ে আনিসের উদ্যোগে একটি শিক্ষক সমিতি গঠিত হয়, যার সভাপতি ছিলেন ড. এ. আর মল্লিক।
স্বাধীনতার পর আনিস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান। কিন্তু ১৯৭২ সালে তাঁকে অনেক সময় ও ছুটির দিনগুলি কাটাতে হয় 888sport appয়ই – স্বাধীন 888sport appsের সংবিধান প্রণয়নে সহায়তা করা, বিশেষ করে সংবিধানের বাংলা সংস্করণ তৈরি করা – যা সে-বছর ৪ঠা নভেম্বর জাতীয় পরিষদে পেশ করা হয়। আমরা সকলেই জানি সংবিধান প্রণয়ন কমিটির নেতৃত্ব ও দায়িত্বে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, যিনি কয়েকজন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সহায়তায়, যাঁদের মধ্যে আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার আমীর-উল ইসলাম ছিলেন এবং আনিসও অন্যতম সহকারী ছিলেন।
সপরিবারে পালিয়ে বিপদসংকুল অবস্থার মধ্যে দিয়ে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিম প্রদেশের উপজাতীয় অঞ্চল ও আফগানিস্তান, দিল্লি, কলকাতা হয়ে ১৯৭৩ সালের ২২শে জানুয়ারি আমি 888sport appয় পৌঁছি, এবং 888sport apps সরকারের কাছে রিপোর্ট করি। ২রা মার্চ থেকে আমাকে তখন দায়িত্ব দেওয়া হয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিকল্পনা কমিশনের সচিব ও কমিশনের বৈদেশিক সম্পদ বিভাগের সচিব হিসেবে।
আমার বন্ধু জামিল চৌধুরী ও নূরুল হককে নিয়ে একদিন আমরা আনিসের সঙ্গে দেখা করতে যাই, কয়েক সপ্তাহ পরেই। আমি আনিসের সঙ্গে সময় ঠিক করে, দুই দফায়, পাঁচ-ছয় ঘণ্টা ধরে তাঁর সঙ্গে স্বাধীনতা যুদ্ধ সময়কার সরকার ও তাঁর সেটিতে দায়িত্ব পালন সম্বন্ধে, বিশেষ করে তখনকার পরিকল্পনা বোর্ডের সম্বন্ধে, যেটিতে আনিস সদস্য ছিলেন ও সংবিধান প্রণয়ন বিষয়ে তাঁর দায়িত্ব পালন সম্বন্ধে অবগত হই; বিশেষ করে ’৭২ সালের ৪ঠা নভেম্বরের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮-২০ সম্বন্ধে, যেখানে বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক দর্শন সম্বন্ধে বর্ণনা করা হয়েছিল। দ্বিতীয় দিনে আনিস আমাকে বলেছিলেন, আপনি তো দেশে ছিলেন না। স্বাধীনতার প্রথম বছরে বঙ্গবন্ধু যা করেছেন এবং হাতে নিয়েছেন তা তো আপনি দেখতেই পাবেন, যেমন – যুদ্ধবিধ্বস্ত আমাদের দেশের পুনর্গঠনের কার্যক্রম, 888sport appsের বিপুলভাবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ, মাত্র এক বছরের মধ্যে স্বাধীন 888sport appsের সংবিধান রচনা, মুক্তিযোদ্ধাদের কাছ থেকে অস্ত্র ফেরত নেওয়া ও তাঁদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার কর্মসূচি হাতে নেওয়া, ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আলোচনা করে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে স্বদেশে ফিরিয়ে দেওয়া এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, একটি প্রাদেশিক সরকারের প্রশাসনব্যবস্থাকে জাতীয় প্রশাসনে রূপান্তর করা – যার অনেক কিছুই এখনো বাকি রয়েছে। কিন্তু আমাকে কোনো দিন আনিস বলেননি যে, বঙ্গবন্ধু তাঁকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব নিতে বলেছিলেন। (পরে অবশ্য ড. কুদরত-এ-খুদা শিক্ষা কমিশনের সদস্য হিসেবে আনিস শিক্ষাক্ষেত্র সম্বন্ধে তাঁর মতামত ও পরামর্শ ব্যক্ত করেছিলেন)।
সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে অবসর গ্রহণ করার পর আনিসের সাহচর্য ও সহকর্মী হওয়ার আমার সুযোগ হয় একাধিক পরিসরে। জ্ঞানতাপস অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের কাছে আমরা মাঝে মাঝে একসঙ্গে যেতাম। (আমার সরকারি চাকরির অল্প বয়সে, ষাটের দশকের দিকে, তিনি আমাকে অর্থনীতি সম্বন্ধে পড়াশোনা করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন, উপদেশ দিয়েছিলেন ও সহায়তা করেছিলেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে দেড় বছরের ছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের Williams College থেকে আমি Masters in Development Economics-এ ডিগ্রি অর্জন করতে সমর্থ হই)।
আনিস রাজ্জাক স্যার সম্বন্ধে একসময় বলেছিলেন, ‘তিনি ছিলেন রেনেসাঁস-মানব। তাঁর সবকিছুতেই আগ্রহ ছিল, তবে নিজের প্রিয় ক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন মানববিদ্যা ও সমাজ888sport apk।’ এটা আনিস সত্যিকারভাবে প্রকাশ করেছিল। আমি এর পরিচয় পাই যখনই স্যারের ওখানে যেতাম – তাঁর বাড়িতে কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মিলনকক্ষে, যেখানে তাঁর একাধিক গুণগ্রাহীকে তিনি সময় দিতেন। আমার মনে আছে, ১৯৯৬ সালে BRAC University সম্বন্ধে চিন্তা করার সময় স্যার ফজলে হাসান আবেদ একবার আমার প্রয়াত বন্ধু (ও BRAC-এর উপদেষ্টা) ফারুক চৌধুরী আর আমাকে নিয়ে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে, বিশ্বের কয়েকটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করতে। কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছিল – যেমন Harvard, MIT, Wharton College, University of Pennsylvania ও একটি মেয়েদের প্রতিষ্ঠান – Skidmore College। ফিরে এসে রাজ্জাক স্যারকে আমি সে-সম্বন্ধে বলেছিলাম। আমাকে তিনি বললেন, ‘আবেদকে বলেন বিশ্ববিদ্যালয় না করে একটি উচ্চমানের High School স্থাপন করতে!’ তার কিছুদিন পর আমি আর আনিস রাজ্জাক স্যারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম এবং তখন স্যার আনিসকে বলেছিলেন, ‘আপনারা একটি ভালো High School করেন; যেটি পরিচালনা করবেন আপনি (আনিস), সরদার ফজলুল করিম ও বদরুদ্দীন ওমর।’ আনিস তখন হ্যাঁ-না কিছুই বলেনি, কিন্তু পরবর্তীকালে সেদিকে তাঁর আগ্রহ ছিল না।
বিগত শতকের শেষের দশকের মাঝামাঝি (১৯৯৩ সালে) অধ্যাপক রেহমান সোবহান Centre for Policy Dialogue (CPD) নামে একটি প্রতিষ্ঠান (Think Tank) গঠন করেন। ১৯৯৫ সালে তাঁর Board of Trustees-এর সদস্য হিসেবে আমার আগ্রহ দেখে আমাকে যোগদান করতে বলেন রেহমান সোবহান। তার কিছুদিন পরই (২০০১ সালে) আনিসুজ্জামান CPD-র Board of Trustees-এ যোগদান করেন, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটির সুশীল সমাজের অঙ্গনে মান উন্নত হয়। শেষ সময় অবধি আনিস CPD-র সঙ্গে ওই পর্যায়ে যুক্ত ছিলেন। CPD-তে তাঁর অবদান সম্বন্ধে আপনারা সবাই শুনেছেন এবং আরো শুনবেন। ২০০৬ সালে নাগরিক কমিটির আন্দোলনে, যার সভাপতি ছিলেন রেহমান সোবহান, আনিস একজন বিশিষ্ট সদস্য হিসেবে এর কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন। আমাকে করা হয়েছিল ওই কমিটির একজন সহ-আহ্বায়ক। সেই আন্দোলনে আনিসের অবদান ছিল অপরিসীম, বিশেষ করে ‘Bangladesh Vision 2021/ রূপকল্প ২০২১’-এর প্রস্তুতিতে। ওই সংকলনটিতে যা মতামত ব্যক্ত করা হয়েছিল তার প্রায় শতকরা ৮০-৯০ ভাগই গ্রহণ করেছিল পরবর্তী নির্বাচনের জন্যে গঠিত নির্বাচন কমিশন ও দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের Election Manifesto-তেও তার প্রতিফলন ছিল।
১৯৯৯ সালের শেষের দিকে আনিসুজ্জামান বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে পদায়িত হন, কিন্তু ২০০২ সালের প্রথম দিকে সেখান থেকে চলে আসেন। ২০১১ সালের শেষের দিকে আনিসকে আবার সরকার বাংলা একাডেমির সভাপতি হিসেবে নিয়োগ দেন। সেটি হয়েছিল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে। আমাদের মনে রাখতে হবে আনিস শেখ হাসিনার শিক্ষক ছিলেন এবং জননেত্রী শেখ হাসিনা একবার বলেছিলেন যে, ‘আনিস স্যার ছিলেন আমাদের tutorial ক্লাসের শিক্ষক।’ যেকোনো অনুষ্ঠানে যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতেন, আনিসও থাকতেন, আনিসের প্রতি তাঁর 888sport apk download apk latest versionর বহিঃপ্রকাশ স্পষ্ট ছিল। ২০১২ সালে আমাকে বাংলা একাডেমির একজন Fellow হিসেবে মনোনীত করা হয় এবং আনিস ওই বছর থেকেই মৃত্যু অবধি ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি। সেখানেও গত ফেব্রুয়ারি মাসের বার্ষিক সম্মেলন পর্যন্ত, দীর্ঘ আট বছর, তাঁর কর্মজীবনের কৃতিত্ব ও বাংলা একাডেমির অবস্থান ও অবদান ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী করার তাঁর প্রচেষ্টা ও সাফল্য আমি দেখেছি। জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনেও আনিস ও আমি একসঙ্গে কাজ করেছি।
আনিস তাঁর কৃতিত্বের জন্য, শিক্ষা, দেশ, 888sport live football, সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য বিভিন্ন পদকসহ 888sport appsের সর্বোচ্চ পদক ‘স্বাধীনতা 888sport app download bd’ পেয়েছেন এবং ‘জাতীয় অধ্যাপক’ (National Professor) মনোনীত হয়েছেন। বিদেশ থেকেও তাঁর অবদানের স্বীকৃতি এসেছে, যেমন – পদ্মভূষণ 888sport app download bd দিয়ে ভারত সরকার তাঁকে সম্মানিত করেছে এবং রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে Honorary D. Lit প্রদান করে সম্মানিত করেছে।
একটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছি। আমরা কয়েকজন বন্ধু সময় পেলেই আড্ডাতে মিলিত হতাম – বেশির ভাগই 888sport app ক্লাবে দুপুরের খাবার খেতে, যাতে ছিলেন (প্রয়াত) নূরুল হক (পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য ও CPD-র বোর্ডের সদস্য), জামিল চৌধুরী ও হাবিবুল্লাহ (পদার্থ888sport apk বিভাগের ছাত্র/ সাবেক সহকারী শিক্ষক)। আনিস ছাড়া আমরা সবাই ছিলাম পদার্থ888sport apk বিভাগের ছাত্র। তবে দীর্ঘদিন জামিল চৌধুরী বাংলা একাডেমির একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে আনিসের সঙ্গে কাজ করেছে।
বহুদিন আগে নূরুল হক ও আমি একসঙ্গে মাঝে মাঝে ওয়ারীতে যেতাম বন্ধু গোলাম কিবরিয়ার (প্রয়াত) বাড়িতে, এবং সময় পেলেই ঠাটারীবাজারে আনিসের বাসায়ও চলে যেতাম। সেই দিনগুলোর বহু পুরনো কথা মনে পড়ে। গোলাম কিবরিয়ার স্ত্রী ছিলেন তখনকার সময়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত 888sport promo code নেত্রী – নাদেরা বেগম (প্রয়াত কবীর চৌধুরী, মুনীর চৌধুরীর ছোট বোন)।
গেল কয়েক বছর ধরে আনিসের স্বাস্থ্য খুব ভালো যাচ্ছিল না। বেবীভাবির কাছে শুনেছি, দেশের বাইরেও তিনি হৃদরোগের চিকিৎসার জন্য গিয়েছেন। তবে অতি সম্প্রতিকালে তাঁর চিকিৎসায় নাকি চিকিৎসকদের কিছু গাফিলতি ছিল – বেবীভাবি মনে করেন। অনেকদিন থেকেই দেখেছি ও শুনেছি, যারা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কিংবা আলোচনা করতে যেতেন, কাউকেই আনিস না করতেন না। এছাড়া বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার চাপ তো ছিলই। তাই বেবীভাবিকেই খুব দায়িত্বের সঙ্গে সংসার চালাতে হতো। তবুও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে সভাপতি/ প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকার জন্য তাঁর কাছে অনুরোধ আসত। একটা জিনিস আমি লক্ষ করেছি এবং আপনারা অনেকেই হয়তো লক্ষ করে থাকবেন, আনিস খুব অল্পকথায় তাঁর বক্তব্যের প্রধান প্রধান বিষয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ দিকই বাদ না দিয়ে উপস্থিত দর্শকদের কাছে পৌঁছে দিতেন। আমি শুধু একটি উদাহরণ দেব :
888sports কালি ও কলমের বঙ্গবন্ধু জন্মশতবর্ষ 888sport free betয় মাত্র দুই পৃষ্ঠায়, বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে, সম্পূর্ণভাবে, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে তুলে ধরেছেন এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষেত্রে 888sport appsকে যেভাবে শুরু থেকেই পুনর্গঠনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন, তার বর্ণনা অপূর্ব।
তাঁর একটি বক্তৃতা : আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের গুণীজন বক্তৃতামালায় (২০১৭-১৮) যেটি প্রকাশিত হয়েছে : ‘বাংলার মুসলমানের পরিচয় বৈচিত্র্য – অষ্টাদশ শতাব্দী অবধি’, যারা পড়েননি, তাঁদেরকে আমি অনুরোধ করবো পড়ে নিতে।
আনিসের সঙ্গে আমার সাহচর্যে, সহকর্মী ও বন্ধু হিসেবে তাঁর যে-দুটি বিষয় সম্বন্ধে ধারণা আমার মনে গেঁথে গিয়েছিল সে-দুটি হলো –
ক. পাকিস্তান আন্দোলনের ও দাবির পেছনে যুক্তির চেয়ে আবেগ বেশি ছিল।
খ. ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে 888sport appয় অনুষ্ঠিত পূর্ব পাকিস্তান 888sport live football সম্মেলনে ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ তাঁর মূল সভাপতির ভাষণে নাকি বলেছিলেন : ‘আমরা হিন্দু বা মুসলমান যেমন সত্য, তার চেয়ে বেশি সত্য আমরা বাঙালি।’
রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও জাতীয়তাবাদ সম্বন্ধে আনিসের চিন্তার প্রকাশ যে কীভাবে হয়েছিল তা ওই মন্তব্য বা আলোচনা থেকেই বোঝা যায়। এই কথাগুলি আমাকে আনিস বলেছিলেন সত্তরের দশকের কোনো একসময়ে, শেষের দিকে।
বিষয়গুলি সম্বন্ধে পরে আমি খোঁজ করে ও একজন গুণী ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা করে তাঁর সমর্থন পেয়েছি। তিনি ছিলেন ড. সালাহ্উদ্দীন আহ্মদ – অত্যন্ত সুপরিচিত ও নামকরা ইতিহাসের অধ্যাপক। তাঁর ইতিহাসের সন্ধানে বইটি জানুয়ারি ১৯৯৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সমর্থনে ‘888sport live football প্রকাশ’ প্রকাশকের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল।
আমি ইতোপূর্বেই বলেছি যে, আনিসের গবেষণাভিত্তিক লেখাগুলো গভীরভাবে পড়ার সুযোগ আমার হয়নি। তবে কয়েকটি বিখ্যাত প্রকাশনা আমার পড়তে খুবই ভালো লেগেছে – সেগুলি হলো 888sport sign up bonusভিত্তিক শিক্ষকতা ও কর্মজীবনের বৃত্তান্ত, যেমন : আমার একাত্তর, কাল নিরবধি, বিপুলা পৃথিবী।
রাজনৈতিক চেতনা ও 888sport appsের গণআন্দোলন সম্বন্ধে আনিসের অবস্থান ও তার ওপর আলোচনা অতি সত্বরই অনুষ্ঠিত হবে বলে জেনেছি, যা হবে আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য একটি মূল্যবান বিষয়। এ কথা আমি বিনাদ্বিধায় বলতে পারি যে, আনিসের রাজনৈতিক চিন্তাধারার মূলভিত্তি ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রেক্ষাপটে, আমাদের মূল সংবিধানের বঙ্গবন্ধুর চারটি নির্ধারিত রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতি – জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও মানবাধিকার, ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা।
সাম্প্রতিককালে বেশ কয়েকটি বক্তৃতায়, নতুন প্রজন্মকে লক্ষ্য করে আনিস সামাজিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনের কিছু বিষয় সম্বন্ধে তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। বিষয়গুলো ছিল : কীভাবে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বদলে যাচ্ছে, পরশ্রীকাতরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, উন্নয়নের সঙ্গে আর্থিক বৈষম্য বাড়ছে, মূল্যবোধের অবক্ষয় হচ্ছে এবং রাজনীতিতে সহিষ্ণুতা কমে যাচ্ছে। আনিসকে কোনো রাজনৈতিক সমাবেশে যেতে আমরা দেখিনি কিংবা যাওয়ার কথাও শুনিনি। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আনিস তাঁর উপস্থিতি, তাঁর ব্যক্তিত্ব ও কলমকে ব্যবহার করেছেন যে উদ্দেশ্যে তা সর্বজনবিদিত। সেগুলো ছিল শিক্ষা, সংস্কৃতি ও 888sport live footballের ক্ষেত্রে এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদের একনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে।
মানুষ হিসেবে ড. আনিসুজ্জামান ছিলেন অতুলনীয়, তা পারিবারিক জীবনে হোক, বন্ধুবাৎসল্যে হোক কিংবা সহকর্মী হিসেবে হোক। তাঁর প্রতি অশেষ 888sport apk download apk latest version জানিয়ে আমি আজ এখানে শেষ করছি।