আমিনুল ইসলাম : কালদগ্ধ 888sport live chatপথিক

তর্কে নয়, আলাপে ছিল তাঁর স্বস্তি। আমরা যারা তাঁর সঙ্গে কথা বলতাম উদার প্রশ্রয়ে, কখনো মনে হয়নি তিনি নির্দেশ দিচ্ছেন, মেনে নিতে বলছেন তাঁর বক্তব্য। 888sport live chatী আমিনুল ইসলাম তাঁর আগের প্রজন্মের গুরু888sport live chatী এবং তাঁর প্রজন্মের সতীর্থ থেকে শুরু করে সবার সঙ্গে এক সচ্ছল ভাবাবেগে কথা বলতেন, মতবিনিময় করতেন। আমরা যারা এখন ষাটোর্ধ্ব, আমাদের এই পৃথিবীতে আসারও অনেক আগে আমিনুল ইসলাম 888sport live chatী হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়ে গেছেন।

বইতে লেখা আছে জন্মসাল ১৯৩১। তিনি মানতেন না। কোনো এক অংক কষে বলতেন, এটা হবে ১৯৩০। তাছাড়া মানুষের জন্মের গণনা নিয়েও 888sport live chatীর ছিল নতুন হিসাব। মাতৃগর্ভে ভ্রূণাবস্থা থেকে মানুষের বয়স গুনতে হবে। 888sport apkের হিসাবে একে মানতে হয়। কারণ ভূমিষ্ঠ হওয়া আর মাতৃগর্ভে জন্ম নেওয়া দুটো দুই পর্ব। জন্ম তো অবশ্যই সাধারণ হিসাবে দশ মাস দশ দিন আগে। মানুষের জন্ম নিয়ে আমিনুল ইসলাম স্যারের এই অভিমতে সবাই রোমাঞ্চ বোধ করতো।

কথা শুধু কথা নয়; যদি তা বৈঠকি আলাপও হয়। আসল কথা, আমিনুল ইসলাম ছিলেন সংস্কারমুক্ত, 888sport apkে আস্থাশীল মানুষ। আবেগের চাঞ্চল্যের চেয়ে বুদ্ধির বাঁধন স্পষ্টতর তাঁর 888sport live chatে। তাই আবেগতাড়িত 888sport live chatের দর্শক তাঁর সৃজনের অন্তর্নিহিত চিন্তার গ্রন্থিমোচনের দায় নেয়নি। এজন্য আমরা অনেকেই অনেকখানি দায়ী। 888sport live chatের ইতিহাসবিদ, 888sport live chatসমালোচক, নন্দনতাত্ত্বিক – কেউ-ই এ-888sport live chatীর সৃষ্টি ভেঙে বুঝিয়ে দেয়নি।

মানুষ প্রচলিত ধারায় অবগাহনে নিরাপদ বোধ করে। হঠাৎ নতুন ঢেউ উঠলে তা দেখে শিহরিত হয় বটে, কিন্তু তার সঙ্গে সখ্যের নিবিড়তা সহসা জন্মায় না। মোহাম্মদ কিবরিয়া, আমিনুল ইসলাম, হামিদুর রাহমান, নভেরা আহমেদ, মুর্তজা বশীর, রশিদ চৌধুরী, কাইয়ুম চৌধুরী প্রমুখ আমাদের 888sport live chatচর্চায় নতুন ধারার জন্ম দিয়েছেন। তাঁদের আগের গুরু888sport live chatী জয়নুল-কামরুল-সফিউদ্দীনের ত্রিবেণী সঙ্গমে এসে তাঁরা অনুসন্ধান চালিয়েছেন নিজের ধারার। জয়নুলের প্রভাববলয় উত্তীর্ণ হয়ে হয়ে সৃজনের নতুন পথ খুঁজে নেওয়াও সহজ ছিল না। ১৯৫০-এর দশকের শুরুতে রিয়ালিজমের বাঁধন টুটিয়ে দিয়ে জয়নুলও তখন নিরীক্ষানিষ্ঠ। সেই যে ’৪৩-এর মন্বন্তরে দেখেছিলেন দুর্ভিক্ষপিষ্ট মানুষের হাড়ের দেহ-সংস্থান, সেই থেকে ঋজু ফর্মে নিবিষ্ট হয়ে যায় তাঁর ধ্যান। আকর্ষণ বাড়ে তার ভাস্কর্যসুলভ গাঠনিকতায়। লোক888sport live chatের ভাষা, প্রধানত পুতুলের গড়নের জ্যামিতি, তাঁকে পথ দেখায় সৃজনে নতুন সূত্র সংক্রমণের।

১৯৪৮-এ 888sport live chatাচার্য জয়নুল আবেদিনের অনড় প্রতিজ্ঞায় এদেশে যে চারু888sport live chatের বিদ্যায়তন প্রতিষ্ঠিত হয় সেখান থেকেই আমাদের আধুনিক 888sport live chatের জন্মলাভ। এ বিবেচনা ’৪৭-এর দেশভাগ-পরবর্তী সময়ের নিরিখে। যে-রিয়ালিজম এ-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা চর্চা করেছেন তা-ও এক নবতর 888sport live chat। কেননা, এখানে ছিল না কোনো রীতির প্রভাব, প্রতিষ্ঠানে চর্চিত বিশেষ ধারা। সুজলা-সুফলা নিসর্গ ও নিসর্গে চলমান জীবনধারা এবং নগরজীবন ছিল শিক্ষার্থী-888sport live chatীদের চর্চার বিষয়। গুরুরা ছিলেন উদার-হৃদয় বাঙালিত্বের সাধক, মানবিকতায় দীপ্র মানুষ। তাই পঞ্চাশের দশকের রিয়ালিজম বিভিন্ন কর্মে নিষ্ঠ মানুষী জীবনের যে কথা বলেছে তাতেও রয়েছে নবতর অভিব্যক্তি। তাছাড়া নদীমাতৃক দেশের ভূপ্রকৃতিও নবীনপ্রাণ 888sport live chatীদের সৃজন-আবেগে তুলেছে নতুন আবেগের রঙিন তরঙ্গ। এ-চর্চার সঙ্গে দেশভাগ-পূর্ব কলিকাতাকেন্দ্রিক 888sport live chatচর্চা এবং শান্তিনিকেতন স্কুলের 888sport live chatচর্চার সম্পর্ক ক্ষীণ। নতুন ভূগোলে, নতুন কালাবর্তে 888sport live chat ভাবে ও ভাষায় ভিন্ন মাত্রা পাবে, তা-ই সংগত। উপসংহারে এই বলতে হয় যে, এদেশের আধুনিক 888sport live chatচর্চা শুরু থেকেই নিজস্বতায় পুষ্ট! লোক888sport live chatের আকর্ষণে ও নিরীক্ষায় 888sport live chat যে নতুন দিগন্ত খুঁজে পেল, তা কি রিয়ালিজম-অভিজ্ঞ আমাদের চোখে যথাযথ আদর পেল? নাকি আমরা চোখচেনা নিসর্গ ও জীবনপ্রণালি দেখে আঁকা ছবিতেই আস্থাশীল রইলাম, স্বস্তিবোধ করলাম? নিরীক্ষা আবির্ভাবমাত্র গৃহীত হয় না। 888sport live chatের ইতিহাসে সর্বকালে তা-ই হয়েছে। নিসর্গ, সুখী মানব জীবনধারা ও দুর্ভিক্ষচিত্রের জয়নুল যতটা গৃহীত হলেন, কদর পেলেন, ততটা কিন্তু তাঁর লোক888sport live chatের নিরীক্ষা তার কালে সেই সমাদর পায়নি। অবশ্য আজ আমরা এ-বিষয়ে নিঃসন্দেহ। লোক888sport live chatের নিরীক্ষা থেকেই গুরু888sport live chatীরা ও তাঁদের আদি শিষ্যদের অনেকেই নতুন দিগ্দর্শন পেয়েছেন।

কিন্তু সকলেই নয়। আমিনুল, হামিদুর, মুর্তজা কিন্তু জয়নুল-কামরুল-সফিউদ্দীনের ত্রিবেণীতে স্নান করে নতুন 888sport live chat রচনা করায় দীক্ষিত হননি। আমিনুল ও মুর্তজা স্বদেশের স্নাতক, হামিদুরের শিক্ষা লন্ডনে। স্নাতক শেষ করেই আমিনুল ইতালিতে গেলেন উচ্চতর বিদ্যা অর্জনের জন্য, পরবর্তী সময়ে মুর্তজাও। দুজনই রেনেসাঁসের সূতিকাগার ফ্লোরেন্সে গিয়ে শিক্ষিত হলেন, নতুন গুরুদের কাছে ছবক পেলেন। লোক888sport live chatের ধারা-অনুগত আধুনিকতা আর ইতালিফেরত 888sport live chatীদ্বয়ের আধুনিক চর্চায় সংগত কারণেই ফারাক বিস্তর। দু-ধারারই লক্ষণ সুচিহ্নিত। এক পক্ষ, অন্য পক্ষকে গ্রাহ্য করল না। এতে আমাদের লাভ হয়েছে। সৃজন তো বৈচিত্র্যেই সার্থকতা পায়। লোককলার সূত্রের পুনর্বিন্যাসে যারা আধুনিক তারা সত্য, কিউবিজম ও বিমূর্ত প্রকাশবাদের বীজ রোপণ করে; যারা বিকশিত আধুনিকতায়, তারাও সত্য। কিবরিয়া-আমিনুল-হামিদ-নভেরা-মুর্তজা-কাইয়ুম-রশিদ প্রমুখ আমাদের আধুনিকতার বহুতলীয় প্রিজমের মতো নানা কোণ থেকে সত্য। এতদিনে আমরা বুঝতে পেরেছি, সত্যের থাকে বহুবিধ তল। একচক্ষু দৃষ্টিপাতে বোঝা যায় না সময়, ব্যক্তি888sport live chatী, সত্য – বিশেষত 888sport live chatের সত্য।

দুই

অনেকবার অনেক আসরে ঘনিষ্ঠ আলাপ হয়েছে আমিনুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে। একদিন জিজ্ঞেস করলাম, আপনার 888sport live chat আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করেন? উত্তেজিত হয়ে নয়, হাসিমুখে উত্তর, সেটার দায়িত্ব তো আপনাদের। আবার প্রশ্ন করলাম, জয়নুল-কামরুল-সফিউদ্দীন যে-ভাষায় 888sport live chatচর্চা করেছেন, যদিও তাঁদের কাজে বিষয়ের প্রয়োজনে ভাষার বদল হয়েছে অনেকবার, তবুও আপনারা কয়েকজন তো অন্য এক ভাষায় নিজের 888sport live chatভাবনা প্রকাশ করেছেন। আমার এ-কথার উত্তর দিতে গিয়ে আবারো স্যারের মুখে হাসি ফুটল, হ্যাঁ, তারা এক ধরনের করেছেন, আমি অন্য রকমের, বশীরের চিন্তাও অন্য রকম। কিন্তু ফ্লোরেন্স থেকে এসে যখন আমার কাজ দেখালাম তা আবেদিন স্যারের মনঃপুত হলো না। তিনি কোনো পজিটিভ মন্তব্য করেননি। অবশ্য আরো অনেক পরে যখন করাচিতে প্রদর্শনী করি, তখন তিনি খুব খুশি হয়েছিলেন। আমার কাজের প্রশংসা করে আমাকে ও অন্যদের অনেক কথা বলেছেন।

আমিনুল ইসলাম নিজের কাজের গুণাগুণ নিয়ে তেমন কোনো বিশ্লেষণ দিতেন না। আর্থিক কোনো দৈন্য ছিল না। নিজের অন্তরগত তাগিদ থেকে 888sport live chatী হয়েছেন। আর দশটা পরিবারের মতোই বাবা ও গুরুজনরা চাননি যে তিনি ছবি-আঁকার প্রতিষ্ঠানে শিক্ষালাভ করুন। সেই যে বিশ্বাস, ছবি এঁকে কিভাবে নির্বাহ করবে জীবন! তবুও আমিনুল 888sport live chatের দীক্ষা নেওয়ার জন্য কলকাতায় যান এবং দেশভাগের ফলে গুরু জয়নুলের সঙ্গে নতুন দেশে ফিরে আসেন। গুরু তাঁকে বলেন, আমরা স্কুল করব, ওখানেই শিখবা।

আমিনুল-চরিত বিশ্লেষণের জন্য আমাদের আরো কিছু ঘটনার উল্লেখ প্রয়োজন। 888sport live chatীর জন্ম নানাবাড়িতে। মেঘনাপাড়ের এক গ্রামে। নানা ছিলেন সন্তপুরুষ। জাতপাতে তাঁর অভক্তি। নানার বাউল দর্শনের স্নিগ্ধতা 888sport live chatী আমিনুল ইসলামের মনকেও দিয়েছিল মরমি-উজ্জ্বলতা। তাছাড়া আত্মীয়-পরিজনও ছিলেন সংস্কারমুক্ত। মানুষ কেন সহিষ্ণু হয় – তারও তো দৃশ্যমান ও দৃশ্যাতীত কারণ থাকে। 888sport live chatী আমিনুল ইসলামের নিজের কাজ নিয়ে গর্ব ছিল না, তবে পরম আশ্বাসে তিনি নতুন নতুন পথের পথিক হয়েছেন তাঁর 888sport live chatযাত্রায়। তাঁর অগ্রজ ও অনুজ সব প্রজন্মের মানুষের সঙ্গে সরল-স্বাভাবিক সম্পর্কসেতু রচনা করে অনুভব করেছেন মানবজীবনের বৈচিত্র্যের স্বাদ। নিজের অর্থ দান করেছেন আগামী প্রজন্মের 888sport live chatীদের বৃত্তি দিয়ে উৎসাহিত করার জন্য।

আমিনুল ইসলাম বাউল নন। তিনি আধুনিক মানুষ। চল্লিশের দশকে যাপন তাঁর 888sport app শহরে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কাল। মানুষে মানুষে নতুন সম্পর্কের ডাক। বিশ্বমৈত্রীতে আলোড়িত বহু দেশ। বার্তা এলো সমাজতন্ত্রের। আমিনুলের মনোলোক উদ্ভাসিত হলো এই রাজনৈতিক দর্শনে। তিনি প্রগতি লেখক ও 888sport live chatী সংঘের সদস্য হলেন। আর্ট কলেজে ভর্তির আগে পড়ালেখা শুরু করলেন 888sport app কলেজে। সতীর্থ ও বন্ধু হলেন আলাউদ্দিন আল আজাদ, হাসান হাফিজুর রহমান, শামসুর রাহমানের। অবশ্য কৈশোরেই পুরনো 888sport appর রামমোহন ও নর্থব্রক হল লাইব্রেরিতে বসে অধ্যয়ন করেছেন বিচিত্র বিষয়ের গ্রন্থ।

সমাজতন্ত্রের আদর্শে দীক্ষিত হলে 888sport apkে নির্ভর করতে হয়। আমিনুল ইসলাম নিজে শুধু নন, বন্ধু মুর্তজা বশীরসহ আরো অনেকেই তখন তাঁর সান্নিধ্যে সেই তত্ত্বে আশ্বাসী হয়ে জীবন ও 888sport live chatভাবনার প্রসারণ ঘটিয়েছেন। কেউ হয়তো পরিণামে ফিরে গেছেন বিপরীত মেরুর দিকে।

শুধু যাপনে নয়, বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে গৌণজ্ঞান করেননি তিনি সৃজনের অভিযানে। এ-লেখার শুরুতেই বলেছি, কল্পনার চেয়ে বুদ্ধি ও যুক্তির বাঁধন গাঢ়তর আমিনুল ইসলামের সৃষ্টিতে। অনির্বচনীয় অন্তর্গূঢ়তা যে নেই, তা বলা যাবে না। কিন্তু সেই মনোলোক মনো888sport apk বিশ্লেষণ করেছে; – এভাবে 888sport live chatীর কাজের অভিনবত্বের মাত্রাগুলো অনুভব করা যেতে পারে। তবে 888sport live chat তো আজো এ-যাবৎ উদ্ভাবিত বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের চেয়ে গূঢ়তর সংকেত প্রেরণ করে চলেছে। পরাবাস্তববাদও হয়েছিল তাঁর 888sport live chatসাধনার বিষয়। ছবির নামও দিয়েছেন ‘দালির 888sport app download for androidে’। এই একান্ত দৃশ্যমান, বিশ্বপ্রকৃতিও যেন কোনো এক কুহকী মায়ায় কখনো-বা বেধে মানুষের অস্তিত্বে। দৃশ্যাতীত ওই ইশারা মানুষের জীবনেরই অভিজ্ঞতা। আজ হয়তো 888sport live chatীর বিশেষ অভিজ্ঞতায় তা আঁকা হচ্ছে। আজ যদিও বোঝা যাচ্ছে না, একদিন সেই অচেনাবোধ যখন মনঃসমীক্ষা-তত্ত্বের আলোকে সূত্র লাভ করবে, তখন তা একান্ত বাস্তব মনে হবে দর্শকের।

তিন

নিম্নবর্গের মানুষের জীবনের চিত্রায়ণ তখন 888sport live chatীজীবনের এক অনিবার্য শর্ত। বিচিত্র বঞ্চনা, শোষণ ও নির্যাতনে পীড়িত কাল অবলোকন করে ’৫০-এর দশকের 888sport live chatীরা দারিদ্র্যক্লিষ্ট জীবন আঁকায় অভিনিবিষ্ট হয়েছেন। অপরদিকে রাষ্ট্রের পীড়নে বিক্ষুব্ধ 888sport live chatীমন এঁকেছে প্রতিবাদ, জনতার কাতারে দাঁড়িয়ে। যে-বাস্তব ঘটনা আমাদের চোখের কাছে প্রতিদিন অনুষ্ঠিত হয় তার শৈল্পিক দলিল তৈরি করার দায় অনেকের মতো আমিনুল ইসলামও নিয়েছেন। ’৫২-র ভাষা-আন্দোলনের প্রথম সংকলনের প্রচ্ছদ এঁকেছেন তিনি। মেধাবী 888sport live chatিতায় আঁকা ছবির জন্য ১৯৫২ সালে ‘888sport app আর্ট গ্রুপে’র প্রদর্শনীতে অর্জন করেছেন প্রথম 888sport app download bd।

১৯৪৮-এ 888sport appর চারুকলা ইনস্টিটিউটের যাত্রা শুরু। সে-প্রতিষ্ঠান আজ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ। পুরনো 888sport appয় দু-কামরায় সীমিত সেই সূচনাকালের বিদ্যায়তনের ছাত্ররা বিদ্যালয়ের পরিসর বাড়ানোর জন্য আন্দোলন করেছিলেন। সে-আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আমিনুল ইসলাম। সরকারি গোয়েন্দা-চোখে ধুলো দিয়ে সমাজতন্ত্রের আদর্শে দীক্ষিত কর্মীদের নিয়ে গোপন-সভা করেছেন। কমিউনিস্ট আদর্শের পত্র-পত্রিকা গুপ্তকৌশলে পৌঁছে দিয়েছেন কর্মীদের হাতে।

888sport live chatের গুপ্তরহস্যের অর্থ উদ্ধারের জন্য প্রয়োজন আরো গভীরতর অধ্যয়ন। তিনি স্বদেশ ছাড়লেন। ১৯৫৩-য় ভর্তি হলেন ফ্লোরেন্সের ফাইন আর্টস অ্যাকাডেমিতে। ভিন্ন দেশে ভিন্ন মানুষের সমাজের ভিন্ন নিয়ম। একটা অবাধ স্বাধীনতায় মুখরিত তুলি-কলম। এক রোমান্টিক দোলায় আন্দোলিত হলো আমিনুল-সত্তা। তাঁর সেই ১৯৫৩-তে আঁকা 888sport promo codeমুখের দিকে তাকালে আমরা দেখি সৌন্দর্যের বিভা, বুঝতে পারি – 888sport live chatী আপ্লুত 888sport promo codeর রূপে। তবে বিষণ্নময়ীকেও এঁকেছেন তিনি। কিন্তু প্রেমের রাগ-অনুরাগ, কামনার রক্তিম প্রকাশেও তিনি পারমিতার পরিচয় স্পষ্টতর রেখেছেন।

আজ ভাবলে অবাক লাগে। 888sport appয় স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষা সমাপ্ত করেন 888sport live chatী ১৯৫৩-তে। এ-বছরই তিনি পাড়ি জমান স্নাতকোত্তর শিক্ষার জন্য ফ্লোরেন্সে, আর এখানে এক বছর শিক্ষা-দীক্ষা লাভ করেই 888sport live chatী সমর্থ হন তাঁর 888sport live chatভাষার আমূল পরিবর্তন ঘটিয়ে বিষয়ের নতুন উপস্থাপনে। ১৯৫৪-র বসন্ত ঋতুতেই আসে 888sport live chatীর চেতনায় এই হেমবর্ণ জাগরণ। তিনি আঁকলেন ‘ফ্লোরেন্স’। এই নগরকে তিনি সদর্থকতায় ভালোবাসেন। ছবি দেখলেই তা বোঝা যায়। ছবিটির পুরোভাগে পানপাত্র, তারপর জানালা, দূরে ফ্লোরেন্সের চার্চের ডোমের আকারের প্রাধান্য এবং সঙ্গে আর অনেক স্থাপত্যের আংশিক প্রকাশ। ফ্লোরেন্সে বসে ‘ফ্লোরেন্স’ নামের ছবি আঁকলেন; কিন্তু নেই তাতে পরিপ্রেক্ষিত। আছে শুধু তলবণ্টন। একটি ফর্ম আরেকটি ফর্মে সেঁধিয়ে গেছে। তলের সঙ্গে তলের এই সম্পর্কের কারণে এ-নিয়মকে ছদ্ম-কিউবিজম বলে আখ্যায়িত করা যায়। তেইশ-চব্বিশ বছরের তরুণ আমিনুল স্থাপত্যময় নগরের জ্যামিতি দেখে আমূল বদলে গেলেন। আমার বাস্তবতা যখন দালান ও সৌধ, তখন জ্যামিতিকতাই তো আমার জীবনের অভিজ্ঞতা। এ-বছরই সুখানুভবে আঁকলেন ‘জেলের স্বপ্ন’। দাঁড়িয়ে আছে দুই জেলে। এক জেলের হাতে একটি বিশাল মাছ। পাশে আরো মাছ লম্বমান হিসেবে আঁকা। দর্শকের অভিজ্ঞ চোখ সহজেই অনুমান করতে পারে যে, উপরিতলের বাস্তবতা 888sport live chatীর বিষয় নয়। পুরু রেখায় লম্বমান বৃহদাকার মাছগুলো বস্তুতপক্ষে জেলেদের স্বপ্নের দ্যোতক।

ওই একই বছর ফর্মের ঋজুতা থেকে মুক্ত হয়ে আঙ্গিকের নতুন নিরীক্ষায় মগ্ন হয়েছেন 888sport live chatী। এবারো পরিপ্রেক্ষিত নেই। আছে শুধু তলবণ্টন। কিন্তু আগের মতো একটি ফর্মের তল ভেদ করে অন্য বস্তুর রূপের প্রভাস আর নেই। দ্বিমাত্রিক পটে গাছপালার ছায়ায় শুয়ে আছে এক তরুণ। ছবিটির নাম ‘রাখাল’। মেঘনাপাড়ের আমিনুলের কি তখন মনে পড়েছিল স্বদেশ, যেখানে রাখালিয়া বাঁশিতে মাঠ ব্যাপ্ত হয়ে ওঠে?

নতুন চিন্তা, নতুন আবেগ দাবি করে নতুন ভাষা। আমিনুল ইসলামই আমাদের চারু888sport live chatে নতুন চিন্তা প্রবিষ্ট করে নতুন ভাষা তৈরি করেছেন। তিনি ’৫০-এর দশকের নিরীক্ষাবাদীদের মধ্যে পথিকৃৎ; এ-কথার প্রমাণ তাঁর সৃষ্টি। জয়নুলের লোক888sport live chatের নিরীক্ষার দু-বছরের ব্যবধানেই জয়নুলেরই ছাত্র এ-পরিবর্তন আনলেন এদেশের আধুনিক 888sport live chatচর্চায়। এমনও বলা যাবে না যে, জয়নুলের নিরীক্ষা দেখে প্রাণিত হয়ে আমিনুল ইসলাম এই নতুন ভাষার জন্ম দিয়েছেন।

পুরু রেখার বাঁধুনি, উল্লম্ফনধর্মিতা এবং আলো-ছায়ার বণ্টনকে জ্যামিতিক গঠনে সুস্পষ্ট রেখে 888sport live chatী এই সত্য জানান দেন যে, বস্তু পৃথিবীর সত্য আকারের সঙ্গে আকারের সম্পর্ক এবং বিন্যাস তৈরি করে ছন্দ। মন্দ্রিয়ানের 888sport live chatভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য খুঁজে পাওয়া যায় 888sport live chatীর এ-পর্বের কাজে।

ষাটের দশকের শুরুতে আঁকা ‘ভুলে যাওয়া সুরের ছন্দ’ শীর্ষক ছবিতে দেখা যায় আমিনুল ইসলাম গাঠনিক শুদ্ধতা থেকে মুক্তি চাচ্ছেন। অস্পষ্ট কণ্টুর রেখার স্বাধীনচারী গতি এবং বর্ণের বিচিত্র গতায়ত একটা সাংগীতিক মুড তৈরি করছে যেন। কিন্তু ষাটের দশকের মাঝামাঝি সময়ে তাঁর স্পেসে এলো বর্ণের প্লাবন। রং ফর্ম হতে চায়, ফর্ম আবার মুক্তি খোঁজে বর্ণের স্বয়ম্ভু প্রকাশে, – এই দোলাচলে 888sport live chatী যে বিমূর্ত বা বস্তুচিহ্নহীন 888sport live chatের জন্ম দিলেন তা-ও এক নতুন উদ্ভাবন। কিবরিয়া ও আমিনুল – দুজনই তখন চূড়ান্তভাবে বস্তুনিরপেক্ষ – ফর্মে আর রঙে সমর্পিত। কিন্তু দুজনই স্বকীয়তাই উজ্জ্বল। আমিনুলের ‘রূপান্তর’ সিরিজ এদেশের নিরাবয়ব বা বিমূর্ত ধারায় নতুন সংযোজন। এদেশের বিমূর্ত 888sport live chatের ইতিহাসের কথা বলতে গেলে আমরা কেবলই কিবরিয়ার কথা বলি। আমিনুল যেমন প্রথম নিরীক্ষায় জয়নুল-অনুসারী নন, তেমনি বিমূর্তনের পথ-পরিক্রমাতেও কিবরিয়ার সহযাত্রী নন। দুজনেরই পথ আলাদা। আমিনুল জানতেন, পঞ্চেন্দ্রিয়ের অভিজ্ঞতা রেখা আর রঙের বিবরণেই প্রকাশ করতে হয়। সবই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য – চলমান। স্থির বলে কিছু নেই; 888sport apkের এই স্বতঃসিদ্ধকে শিরোধার্য করে কেবলই ফর্মের সঙ্গে ফর্মের মেলবন্ধন, রঙের বিচিত্রগামী অভিসার, রেখার নিত্যচাঞ্চল্যের মধ্যে প্রকৃতির রূপান্তর প্রত্যক্ষ করেছেন আমিনুল ইসলাম।

কিন্তু যুদ্ধের অভিজ্ঞতায় আবারো বদলে গেছেন 888sport live chatী। তাই নিসর্গের পুরোভাগে চলে এলো মানুষের করোটি ও অস্থিরাশি। দূরে আকাশের ক্ষীণ আভাস – এখানেও 888sport live chatীর বুদ্ধিমার্গিতারই পরিচয় মেলে। ’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পীড়ন নিয়ে আরো একটি ছবি এঁকেছেন তিনি। একটি মানুষ শুয়ে আছে অপারেশন থিয়েটারের টেবিলে। শল্যচিকিৎসকদের হাতের ইন্জেকশনকে মারণাস্ত্র বলে মনে হয়।  এই ছবিতে রূপকের ভাষায় পাকবাহিনীকে শল্যচিকিৎসক হিসেবে  উপস্থাপন করা হয়েছে। যুদ্ধ চলাকালে, অর্থাৎ ১৯৭১-এর ১৫ অক্টোবরে, এ-ছবি এঁকেছেন 888sport live chatী।

’৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের পর সময়ের সবচেয়ে জটিল আবর্ত তৈরি হয়েছে ১৯৭৪-এ। আবারো 888sport apps আন্তর্জাতিক চক্রান্তের শিকার। দুর্ভিক্ষ, রিলিফ চুরি, সুবিধাবাদী চরিত্রের লুটপাট ইত্যাদি ঘটছে, অন্যদিকে ভিয়েতনামে যুদ্ধের ভয়াবহতা। বলা হয়ে থাকে, ভিয়েতনাম যুদ্ধের আগে ও পরে ভূরাজনীতিতে দুটি দুই যুগ। যুদ্ধের ভয়াবহতা আর প্রতিবাদ – এই দুই অনুষঙ্গকে গুরুত্ব দিয়ে তেলরঙে ও কোলাজের সমন্বয়ে কালের বিবরণ তুলে ধরলেন ঘড়ির বিশাল ডায়ালে। নিচে পেন্ডুলাম ধূম্রজালে আটকে গেছে। যেন এখনই বোমাবর্ষণ হলো। সভ্যতার সংকটের এক মেধাবী ভাষ্য আমিনুল ইসলামের ‘সময় ও সময়ের অতীত’ নামের ছবিটি।

১৯৭৬-এ 888sport live chatী অনুভব করলেন নিরালম্ব অস্তিত্বের অবস্থা। ‘অজানা পথ’ নাম দিয়ে আঁকলেন ছবি, চারকোণা জ্যামিতিক গড়নের সংযোজনে। ছবির মধ্যিখানে একটি দরজার দুটি পাল্লা আংশিক খোলা। তা মুক্তির পথ নয়, নিরুদ্দিষ্ট হওয়ার আতঙ্ক জানান দিচ্ছে। ছদ্মবেশী সামরিক শাসনকে বিমূর্ত ভাষাতেই ক্রূর ইশারায় জানান দিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। তারপর আর ফিরে আসেনি সুসময়। ’৮০-র দশকে 888sport live chatীর প্রধান কাজ ‘আত্মপ্রতিকৃতির অন্বেষায়’ নামের সিরিজ। মাধ্যম ‘তেলরং ও আয়না কোলাজ’। বিচূর্ণ দর্পণে নিজেকে দেখতে পেলেন 888sport live chatী। ছবি জুড়ে রয়েছে অনেক জ্যামিতিবদ্ধ স্পেস। 888sport live chatীর আত্মপ্রতিকৃতি আছে, বিচূর্ণ আয়না আছে, দা ভিঞ্চির ‘ভিসুভিয়াস ম্যান’ও জুড়ে দেওয়া হয়েছে একটি ছবির মধ্যিখানের চৌখুপিতে। আরেকটি ছবির মধ্যিখানে এক্স-রে প্লেট সেঁটে দেওয়া হয়েছে আবক্ষ অবয়বের। নিজের অবয়ব, কখনো বা দুটি চোখ, একটি কান, নাক এঁকে বা ফটোগ্রাফি কেটে আটকে দেওয়া হয়েছে; – এই আয়োজনে আছে বিচ্ছিন্নতাবোধ (এলিনিয়েশন), সময়কে শনাক্ত করার চেষ্টা, নিজের অবয়ব দেখে নিজেরই সন্ত্রস্ত হয়ে-পড়া, এমন কোনো নিপাট নিভঙ্গ আয়না নেই আর সময়ের হাতে, যাতে 888sport live chatী দেখতে পারেন তাঁর পূর্ণাবয়ব। বর্ণগত পরিমার্জনা, আয়নার ফলক, এক্স-রে প্লেট, দা ভিঞ্চির ড্রইং, ফটোগ্রাফি – এতসব সংযোজনে কালের যে-ন্যারেটিভ রচনা করেছেন আমিনুল ইসলাম, তা আশির দশকের শুরুতে এদেশের অন্য কোনো 888sport live chatীর ভাবনায় আসেনি। শুধু দেশের নয়, বৈশ্বিক সংকটকে অনুধাবন করে কীভাবে রচনা করা যায় 888sport live chat, কোন বয়ানে নিরূপণ করা যায় নেতিপীড়িত কালকে, তা এমন মাধ্যমের নিরীক্ষায় আর কেউ-ই উপস্থাপিত করেননি। এমন চিন্তাগর্ভ কাজের দিকে গভীর অভিনিবেশে তাকালে 888sport live chatের একনিষ্ঠ দর্শক ঠিকই উপলব্ধি করবেন এই সত্য যে, আমিনুল ইসলাম এদেশের নিরীক্ষাধর্মী 888sport live chatের পথিকৃৎ 888sport live chatী।