১৯৫৫ সালে 888sport appর চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে পাশ করে সবে বেরিয়েছি। ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর জিওফ্রে হেডলি এবং ইউএসআইএস লাইব্রেরির ডিরেক্টর গেইলর্ড হফ্টাইজার – এ দুজন আমাকে বেশ সহযোগিতা করেছিলেন সে-সময়। জিওফ্রে হেডলি ছিলেন আমার ছবির বিশেষ ভক্ত। আমার ছবি তিনি কিনেছিলেন এবং অন্যদের কাছে আমার ছবি বিক্রি করাতেও তিনি সচেষ্ট থাকতেন। ওই সময় তিনি তাঁর লাইব্রেরি থেকে অনেক বই আমাকে পড়তে দিতেন। আমার ইংরেজি-দুর্বল দেখে তিনি আমাকে অনেক সময় ইংরেজি শিক্ষা সম্পর্কে এবং ইংরেজি উচ্চারণ সম্পর্কে পরামর্শ দিতেন। যেমন : অ্যাডভারটাইজ আর অ্যাডভারটিজমেন্ট। এখানে অ্যাডভারটাইজমেন্ট নয়। এবং ডিকশনারি দেখে শব্দার্থ জেনে নিয়ে পড়তে বলতেন। বহু সময় আমার ইংরেজির ভুল ধরে তাৎক্ষণিক তা শুদ্ধ করে দিতেন। এভাবে তিনি আমাকে ইংরেজি শিখতে এবং ইউরোপীয় 888sport live chatীদের সঙ্গে আক্ষরিকভাবে পরিচিত হবার সুযোগ করে দিতেন। ওই সময় 888sport appয় 888sport live chatের উপকরণ তেমন একটা পাওয়া যেত না, তাই তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তেলরং, জলরং কিনে এনে আমাদের উপহার দিতেন। আমরা বলতে আমি, কাইয়ুম চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, দেবদাস চক্রবর্তী এবং আরো অনেকে। আগেই বলেছি, তিনি আমার জলরঙের কাজ খুব পছন্দ করতেন। আমি নিয়মিত বুড়িগঙ্গার তীর ঘেঁষে বিভিন্ন জায়গায় ছবি আঁকতে যেতাম। এছাড়া সপ্তাহে একদিন নৌকা ভাড়া করে সারাদিন নদীতে ঘুরে বেড়াতাম আর ছবি আঁকতাম। হেডলি একদিন প্রস্তাব করলেন, তিনি আমার সঙ্গে যাবেন, নৌকা888sport slot game করতে – আমি ছবি আঁকব, তিনি দেখবেন। তিনি আমাদের দুজনার জন্য লাঞ্চ নিয়ে যাবেন আর কিছু পানীয় (হার্ড ড্রিংকস)। আমার সঙ্গে তিনি বেশ কবার এভাবে নৌকা888sport slot game করেছেন। আসলে তিনি খালি গায়ে শর্টস পরে পাটাতনের ওপর শুয়ে শুয়ে বই পড়তেন, আর আমার ছবি আঁকা পর্যবেক্ষণ করতেন। একবার ওরকম একটা 888sport slot gameের পর বেশ কিছুদিন আর হেডলির খোঁজ পাই না, তাই ফোন করলাম তাঁর অফিসে। জানতে পারলাম তিনি শেষবার যখন আমার সঙ্গে গিয়ে সূর্যস্নান করছিলেন তখন প্রখর রৌদ্রের তাপে তাঁর সারা শরীরে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল। এমনকি ঠোঁট দুটো ফুলে দশাসই সাইজের হয়ে গিয়েছিল, তাই তিনি চিকিৎসার জন্য শীতল জায়গা বেছে দার্জিলিং চলে গেছেন। মাসখানেক পর যখন ফিরে এলেন তখনো তাঁর শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ নয়। এর কিছুদিন পর তিনি বদলি হয়ে লন্ডন ফিরে যান। হেডলির বয়স ওই সময় প্রায় ষাটের ওপরেই ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধক্ষেত্রে আহত হওয়ার কারণে তাঁর পা ও পাঁজরে ধাতুনির্মিত কয়েকটা কৃত্রিম হাড় প্রতিস্থাপন করতে হয়েছিল। একটু খুঁড়িয়ে হাঁটতেন তিনি। স্ত্রী-সন্তান না থাকায় বেশ নিঃসঙ্গ জীবনযাপন করতেন। ১৯৫৬ সালে ব্রিটিশ কাউন্সিলে তিনি আমার একটা চিত্র-প্রদর্শনীর আয়োজন করেন। 888sport appর লোকেরা তখন চিত্র-প্রদর্শনী দেখে অভ্যস্ত নন। তবু প্রচুর দর্শক সমাগম হয়েছিল প্রদর্শনীতে। খবরের কাগজেও দু-একটা লেখা বেরিয়েছিল। তখন সাদেক খান আর বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীর সমালোচনা লিখতেন। প্রদর্শনীতে বেশ কয়েকটা ছবি বিক্রি হয়েছিল। মনে আছে, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক মিসেস কুলসুম হুদা আমার দুটো ছবি কিনেছিলেন। হেডলির পর ব্রিটিশ কাউন্সিলের পরিচালক হয়ে আসেন জেওফ্রে গ্লেইস্টার। দারুণ চটপটে ওই ভদ্রলোকের বয়স কিছুটা কম ছিল। দ্রুতগতিতে কথা বলতেন। মাঝে মাঝে তাঁর কথা বোঝা মুশকিলই হতো। তাঁর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা হলো। তিনিও আমার বেশ কিছু ছবি কিনলেন।
আমি যখন আমেরিকা যাই হেডলি তখন আমাকে লন্ডনে দু-একদিন 888sport slot game-বিরতি নিতে বলেছিলেন। কিন্তু যেহেতু আমি প্যারিসে যাত্রাবিরতি করব, তাই তাঁকে বলেছিলাম, ফেরার পথে লন্ডনে থাকব কিছুদিন। আমেরিকা থেকে কয়েকবার চিঠিপত্র আদান-প্রদান হয়েছিল। তিনি একবার লিখেছিলেন, ‘জাহাঙ্গীর তুমি এলে আমরা একটা কামরা ভাগাভাগি করে থাকব। তোমার জন্য থাকবে একটা ডিভান। কাপড়ের আলমারির একটা অংশ তোমার কাপড়ের জন্য ভাগ করে রাখব। তুমি লন্ডন বিমানবন্দর থেকে আমাকে ফোন দিলে আমি তোমাকে নিয়ে আসব।’
আমেরিকা থেকে ফেরার মাস দু-এক আগে থেকে হেডলির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কোনো চিঠিও তাঁর পাই না। যা হোক, লন্ডন বিমানবন্দরে পৌঁছে হেডলির অফিসে ফোন করি, সেদিন অফিস খোলা। এক ভদ্রমহিলা আমার ফোন ধরলেন। আমি আমার পরিচয় দিয়ে হেডলির সঙ্গে কথা বলতে চাইলাম। ভদ্রমহিলা অন্য একজনকে ফোনটা দিলেন এবং তিনি বেশ কিছুটা ইতস্তত করে আমাকে বললেন, জিওফ্রে হেডলি ইজ নো-লংগার, হি ডায়েড অ্যাবাউট টু মান্থস ব্যাক। আমি ভাবতেই পারছিলাম না এটা কী করে সম্ভব। ভাবলাম, এজন্যই হেডলি গত দুমাস ধরে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। ভদ্রলোক আরো বললেন, তিনি তোমার কথা মাঝে মাঝে বলতেন। হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মারা গেছেন। মৃত্যুর আগে তাঁর সংগ্রহে রাখা সব 888sport live chatকর্ম কোনো এক জাদুঘরে দান করে গেছেন।
আমার চোখের সামনে সব কিছুই তখন অন্ধকার মনে হলো। কোথায় যাব, কার কাছে যাব, কোথায় থাকব – সব কিছু মিলিয়ে একটা নাস্তানাবুদ অবস্থা তখন। হঠাৎ মনে পড়ল আমার সহপাঠী মীর মোস্তফা আলী লন্ডনে থাকে, 888sport appর আর্ট কলেজ থেকে পাশ করে লন্ডনে এসেছে সিরামিকের ওপর উচ্চতর শিক্ষা নিতে। ভাবলাম তার ওখানে যাই। খুঁজে খুঁজে তার ঠিকানাও ডায়েরিতে পেয়ে গেলাম। একটা ট্যাক্সি নিয়ে রওনা হলাম ৪৭ আলপাটন স্ট্রিটের খোঁজে। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টার ওপর চেষ্টা করেও ওই রাস্তার খোঁজ পেলাম না। তখন ট্যাক্সিচালক অন্য এক চালকের কাছে জিজ্ঞেস করল ওই রাস্তার অবস্থান। ওই ট্যাক্সিচালক ঠিকানা দেখে বলল, ওটা আলাপারটন স্ট্রিট। একটা ‘র’ ভুল হওয়ার কারণে এই ঝামেলা। মোস্তফার বাসায় গিয়ে দেখলাম ওখানে ওবেইদ জায়গীরদারও (888sport live chatবোদ্ধা, পরবর্তীকালে ব্যবসায়ী ও লেখক) থাকেন একত্রে। যা-ই হোক, ক্লান্ত, বিধ্বস্ত শরীরটা গরম পানির শাওয়ারের নিচে দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে গোসল করে খেয়ে-দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি সে রাতের মতো।
দিন-কয়েক ছিলাম লন্ডনে। তার মধ্যেই ব্রিটিশ মিউজিয়াম, টেট গ্যালারি, মাদাম তুশো গ্যালারি, হাইড পার্কে হেনরি মুরের ভাস্কর্য এবং বেশ কিছু ছোটখাটো গ্যালারি দেখে নিলাম কখনো মোস্তফা, কখনো নিজে, আবার কখনো ওবেইদের সঙ্গে গিয়ে। এরপর একদিন ফিরে এলাম 888sport appয়।
বলতে ভুলে গেছি, লন্ডনে ফিরে যাওয়ার আগে হেডলি এক অস্ট্রেলীয় কূটনীতিককে আমার তারাবাগের স্টুডিওতে পাঠিয়েছিল আমার কাজ দেখতে। তিনি ছিলেন করাচিতে অবস্থিত অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের শার্জ-দ্য-অ্যাফেয়ার্স। পরে তিনি বেশ কিছুদিন হাইকমিশনারের দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
এখানে একই সময়ের ইউএসআইএসের পরিচালক গেইলর্ড হফ্টাইজারের কিছু উল্লেখ থাকা প্রয়োজন। হফ্টাইজার ছিলেন বয়সে তরুণ এবং খুব সংস্কৃতিমনা। বাড়িতে প্রায়ই পার্টি করতেন হইহুল্লোড় করে। 888sport live chatীদের মধ্যে আমিনুল, মুর্তজা বশীর, দেবদাসসহ সমসাময়িক কবি-888sport live footballিক প্রায় সবাই যেতেন তাঁর পার্টিতে। আমার কাইয়ুম এবং বশীরের সঙ্গে সম্পর্কটা কিছুটা ঘনিষ্ঠ ছিল। তার কারণ আমরা ১৯৫৬ সালে 888sport appর প্রেসক্লাবে একটা যৌথ প্রদর্শনী করি। আমি, মুর্তজা আর কাইয়ুম চৌধুরী মিলে ‘পেইন্টার্স ইউনিট’ নামে একটা সংগঠন করে ওই প্রদর্শনীর আয়োজন করি। প্রদর্শনী থেকে হফ্টাইজার বেশকিছু ছবি কেনে। সেই সূত্রে আমাদের সঙ্গে তার একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। হফ্টাইজারও নানাভাবে 888sport live chatীদের সহযোগিতা করত, যেমন 888sport live chatকলাবিষয়ক পুস্তক উপহার দেওয়া। কখনো কখনো রং উপহারও দিত। বেশ কয়েকবার ইউএসআইএস লাইব্রেরিতে 888sport live chatীদের প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল হফ্টাইজার।
মজার ব্যাপার হলো, হফ্টাইজার প্রচুর ছবি সংগ্রহ করেছিল এবং সে আমেরিকা ফিরে গিয়ে ওই ছবিগুলো দিয়ে ওয়াশিংটন ডিসির জর্জ টাউনের একটা গ্যালারিতে বড়সড় একটা প্রদর্শনীও করেছিল। ওখানে সে স্টেট ডিপার্টমেন্টে বেশ কয়েক বছর চাকরিতে ছিল এবং 888sport apps ডেস্ক পরিচালনা করত। এরপর তার সঙ্গে তেমন আর কোনো যোগাযোগ ছিল না। আমি যখন আমেরিকা গিয়েছিলাম তখন জর্জ টাউনে গিয়ে সেই গ্যালারির খোঁজ নিয়েছিলাম; কিন্তু দেখলাম গ্রীষ্মের ছুটিতে সব প্রায় বন্ধ। ওটা মূলত একটা ফিশারম্যান্স-হোয়ার্ফ (জেলেপাড়া) ছিল। কিন্তু হফ্টাইজারের কোনো সন্ধান আর পাইনি। এরপর ইউএসআইএসের ডিরেক্টর হয়ে এলেন কদ কলভিন। তিনি এসেই আমাকে খোঁজ করে বের করেন। সম্ভবত হফ্টাইজারই তাঁকে সন্ধানটি দিয়েছে।
ক্লদ কলভিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। তিনি আমার বেশ কিছু ছবি কিনেছিলেন। তাঁর আবার নাটকের ঝোঁক ছিল। নাটক লিখতেন, মঞ্চে নাটক করতেন। তাঁর রিহার্সাল দেখতে গিয়েছি বেশ কবার। এমনও হয়েছে তিনি রিহার্সাল করছেন, আমি কয়েকটা ওয়াটার কালার পেইন্টিং নিয়ে গেছি সেই মহড়ায়। গিয়ে ক্লদকে বলেছি, আমার ৫০০ টাকা দরকার। ক্লদ পকেট থেকে টাকা বের করে দিয়েছেন। আমি তার বদলে ছবিগুলো তাঁকে দিয়ে এসেছি। তখনকার দিনে, সেই ১৯৫৬-৫৭ সালে ৫০০ টাকা বিরাট ব্যাপার। ক্লদ নিজের কাছে সব ছবি রাখতেন না। কিছু বিক্রিও করে দিতেন। সে-টাকা আবার আমাকে দিয়েও দিতেন। এরকম একটা সম্পর্ক ছিল তাঁর সঙ্গে। তখন ওয়াটার কালার ছবির মূল্য ৫০ থেকে ১০০ টাকার মধ্যে ছিল।
একদিন ক্লদ আমাকে বললেন, আমরা তোমাকে আমেরিকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কয়েক বছর ধরে আমরা তোমার পেইন্টিং পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা ভেবেছি তুমি উপযুক্ত 888sport live chatী, যার আমেরিকার মিউজিয়াম ও গ্যালারিগুলো দেখা দরকার। প্রস্তাবটি লোভনীয় সন্দেহ নেই। এর চেয়ে আনন্দের সংবাদ আর কী হতে পারে একজন তরুণ 888sport live chatীর জন্য। কেননা ওখানে আমি পৃথিবীর সব সেরা 888sport live chatীর 888sport live chatকর্ম দেখার সুযোগ পাব। তাছাড়া তৎকালীন পাকিস্তানে আমিই হবো প্রথম 888sport live chatী যে এই দুর্লভ সম্মান লাভ করবে।
বললাম, আমাকে কী করতে হবে?
ক্লদ জানালেন, তোমাকে কিছুই করতে হবে না। জুন মাসের দিকে তুমি আমেরিকায় যাওয়ার জন্য প্রস্ত্ততি নাও।
জুন মাসে সত্যি সত্যি আমার আমেরিকার টিকিট রেডি। দুই মাসের জন্য এই ফেলোশিপ এবং প্রতিদিনের ভাতা ১৭ ডলার। আমি জানতে পারলাম, মন্ত্রী বা সচিব পদমর্যাদার ব্যক্তিদের পারডিয়েম (ভাতা) দেওয়া হয় ২১ ডলার। উচ্চ পর্যায়ের এই ফেলোশিপ হয় তিন মাসের। ক্লদকে বললাম, 888sport live chatীর সঙ্গে অন্যদের এই বৈষম্যের বিষয়টি আমাকে পীড়া দিয়েছে। আরো বললাম, আমি মন্ত্রীর চেয়ে কম নাকি? ক্লদ বললেন, সব ঠিক হয়ে গেছে। এখন তুমি এসব বলো না।
আমি বললাম, দুঃখিত, আমি যেতে পারব না। আমি অপমানিত বোধ করছি।
আমার বেঁকে বসায় ওদের প্রোগ্রামটা আর হলো না। আমি তখন প্রচুর ছবি আঁকছি। বিক্রি হচ্ছে। করাচিতে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনার হ্যারি বুলক 888sport appয় এসে আমার বেশ কিছু ছবি কিনলেন। কোথায় আমার রেফারেন্স পেয়েছেন জিজ্ঞেস করায় তিনি ব্রিটিশ কাউন্সিলের ডিরেক্টর জিওফ্রে হেডলির নাম বলেন। হ্যারি বুলক আমাকে জানালেন, তিনি আমার ছবি বিক্রির ব্যবস্থা করে দেবেন। করাচিতে তাঁর বাসভবনে তিনি প্রতি উইকএন্ডে মানে রোববারে পার্টি দেন। ওই পার্টির দিন আমার ছবিগুলো প্রদর্শনের ব্যবস্থা করবেন বিভিন্ন দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সামনে। সত্যি বলতে কি, এভাবে প্রায় তিন বছর তাঁর মাধ্যমে আমার প্রচুর ছবি বিক্রি হয়েছিল। 888sport appsের মানুষ আর নিসর্গচিত্রই বেশি আঁকতাম তখন। সেসব খুব পছন্দ করতেন করাচিতে আগত বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা। পরের বছর ১৯৫৮ সালে ইউএসআইএস আবার আমাকে প্রস্তাব দিলো আমেরিকায় যাওয়ার। বলা বাহুল্য, আমার দেওয়া শর্ত অনুযায়ীই। অর্থাৎ পারডিয়েম 888sport cricket BPL rate ডলার, এবং তিন মাসের ফেলোশিপ।
হ্যারি বুলক চিঠি লিখে জানালেন, তিনি পাকিস্তান ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। তাই আমি যেন করাচিতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে মাসখানেক বেড়াই। আমি ব্যাচেলর মানুষ, কোনো সমস্যা নাই। চলে গেলাম করাচি। সেখানে আরব সাগরতীরে ক্লিফটন বিচে ছিল হ্যারি বুলকের বিরাট বাড়ি। হাইকমিশনার বা অ্যাম্বাসাডররা যে কী ডাঁটে থাকে, কী তাঁদের বিলাসব্যাসন – নিজ চোখে না দেখলে জানাই হতো না। একজন মানুষের সেবায় দশ-বারোজন। ধোপাই আছে তিনজন। সকালে ধোপা এসে আমার কাছে কাপড় চায়। আমার তো অত কাপড়চোপড় নেই, আছে মোটে দুই জোড়া। ওদের কাছে এটা বিস্ময়ের ব্যাপার। সাহেবের বন্ধু, অথচ এমন আটপৌরে। ক্লদকে বলে এসেছিলাম, যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, আমার কাগজপত্র তৈরি হয়ে যায়, তাহলে যেন করাচিতে আমার কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ওরা তা-ই করল। সব পাঠিয়ে দিয়েছিল। এবং আমি ওখান থেকেই আমেরিকা চলে যাই। হ্যারির বাসায় ছিল সংগীতের অসংখ্য রেকর্ড। পাশ্চাত্যের সংগীত শোনার সূচনা সেখান থেকেই। ফ্রাঙ্ক সিনাত্রার গান তখন প্রচারণার তুঙ্গে। ‘কল এ ল’ইয়ার, অ্যান্ড স্যু মি, হোয়াট ক্যান ইউ ডু মি, আই লাভ ইউ… শুট বুলেটস্ থ্রু মি, হোয়াট ক্যান ইউ ডু মি… আই লাভ ইউ…’ এছাড়া জ্যাজ মিউজিক – পল রবসন, বিং ক্রসবিসহ বেতোফেন, বাখ্ মোজার্ট প্রমুখ 888sport live chatীর মিউজিক ও গান শোনার সৌভাগ্য হলো ওখানে।
সে-সময় করাচিতে এক মার্কিন ডিপ্লোম্যাট ছিলেন রবার্ট (বব) ডিউয়ান নামে। তিনি 888sport appsের বহু 888sport live chatীর ছবি কিনেছিলেন – আমার, আমিনুল ইসলাম, কিবরিয়া, কাইয়ুম চৌধুরী, মুর্তজা বশীর, দেবদাস চক্রবর্তী এবং আরো অনেকের। পাকিস্তানের শাকির আলী, যুবেদা আগা, সাদেকাইনসহ অনেকের ছবির সংগ্রাহক ছিলেন ওই ভদ্রলোক। ভদ্রলোক প্যারিসে বদলি হয়ে গেলেন। তাঁকে বললাম, আমেরিকা যাব, যাওয়ার সময় প্যারিসে তোমার ওখানে থাকব। তিনি সানন্দে রাজি। সত্যি সত্যি প্যারিস এয়ারপোর্টে তিনি আমাকে স্বাগত জানাতে এসেছিলেন। তাঁর বাড়িতে থাকলাম তিন দিন। এক কামরার একটি ভাড়া করা ফ্ল্যাট। একেবারে সাদামাটা। জিজ্ঞেস করলাম, তোমার কেনা ছবিগুলো কোথায়? বলল, মায়ের কাছে আমেরিকায় দিয়েছি সেগুলো ফ্রেম করতে। মা পাঠিয়েছে ফ্রেম করে, জাহাজে আসছে। এরপর নিজের ফ্ল্যাটে সেগুলো টাঙাব।
প্যারিসকে বলা হয় 888sport live chatের শহর, 888sport live chatীদের শহর। মমাসহ 888sport live chatীদের আড্ডার জায়গাগুলো, মিউজিয়াম, আর্ট সেন্টার – শনি ও রোববার, এ দুই দিনে যতটা পারা যায় সব দেখলাম। ল্যুভ মিউজিয়ামের প্রধান আকর্ষণ ছিল মাইকেল অ্যানজেলের ‘ম্যাডোনা’ দ্যাখা। 888sport appয় থাকতে যেসব ইউরোপীয় 888sport live chatীর ছবি (বইয়ের পৃষ্ঠায়) দেখে আবেগাপ্লুত ছিলাম, সেখানে ম্যাডোনাই ছিল সবার শীর্ষে। তাই প্রথমেই গেলাম ম্যাডোনা যে-কক্ষে রাখা সেখানে। অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। অপূর্ব সৃষ্টি। তবে ছবিটির সাইজ দেখে একটু অবাক হয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিল ছবিটি আরো বড় আকারের হবে। এরপর এক এক করে বহু ছবি আর ভাস্কর্য দেখলাম। তবে এটা উপলব্ধি করলাম যে, এত বড় মিউজিয়ামে গেলে প্রথমেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে কোন কোন ছবি দেখতে চাই এবং সেগুলো কোন কোন গ্যালারিতে প্রদর্শিত হচ্ছে। তা না হলে ভালোলাগা ছবি দেখা সম্ভব নাও হতে পারে। যাই হোক ম্যাডোনাসহ ইউরোপীয় রেনেসাঁসের 888sport live chatী এবং আধুনিক ইউরোপীয় 888sport live chatীদের মধ্যে অনেকের ছবি দেখলাম – তাঁদের মধ্যে পিকাসো, মাতিস, ভ্যান গঘ, গঁগাসহ আরো অনেকের কাজ দেখলাম যাঁদের কাজ এর আগে শুধু বইয়ের পাতায় দেখেছি। রাফায়েলের ‘সেন্ট মাইকেল ভ্যাংকুইসিং দি ডেভিল’ এখনো মনে পড়ে। কী নিপুণ নিখুঁত বাস্তবতা ফুটিয়ে তুলেছেন ছবিতে। অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে থাকতে হয়।
বব বলল, আমি তো সোমবার অফিসে ব্যস্ত থাকব। তুমি কী করবে? বললাম কোনো মিউজিয়াম ঘুরে দেখা যায়। তুমি আমাকে নামিয়ে দিয়ে অফিসে চলে যেও। তাই হলো। সকাল ৯টায় মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে সে আমাকে নামিয়ে দিলো। বলল, ৬টার মধ্যে এমবাসিতে চলে এসো। গ্যালারি তখনো খোলেনি। খুললে প্রবেশ করলাম।
বিশাল গ্যালারি, উঁচু উঁচু দেয়াল। কোনো কোনো স্থানে ছবি টাঙানোর জায়গা করা প্রায় বিশ ফুট উঁচুতে। জানতে পারলাম পিকাসো, মাতিস – এঁদের বড় বড় ছবি টাঙানোর উদ্দেশ্যেই এই ধরনের উঁচু দেয়াল তৈরি করা হয়েছে। মনের আনন্দে সব পরিচিত 888sport live chatীর কাজ ঘুরে ঘুরে দেখছি। একটি কক্ষে মদিগ্লিয়ানির ‘শায়িতা রমণী’ সিরিজের একটা ছবি দেখছি, পাশে এসে এক সুন্দরী মহিলাও ছবিটা গভীরভাবে নিরীক্ষণ করছিলেন। একসময় আলাপচারিতা শুরু হলো। তাঁরও খুব পছন্দ মদিগ্লিয়ানির ছবি। এভাবে ফিসফিস করে 888sport live chat-সমালোচনা করতে করতে অনেক কামরা ঘুরে দেখা হলো। মহিলার নাম বিট্রস। আমি কোথায় থাকছি, কী করছি ইত্যাদি জেনে নিয়ে বললেন, তুমি আমার বাসায় গিয়ে কেন থাকো না কিছুদিন। ছবি নিয়ে আলাপ হবে, তোমার ছবি আঁকা দেখব। আমি তোমার মডেল হবো। আমার নাইট ক্লাবের চাকরি থেকে অনেক রোজগার হয়। একা থাকি। ওর কথা শুনে দারুণ আকর্ষণ বোধ করলাম। বললাম, এরপর যখন প্যারিসে আসব, তখন থাকব তোমার ওখানে। কিছুটা দ্বিধান্বিত স্বরে, আমি যদি সত্যিই ফেরার পথে প্যারিস হয়ে যাই, তাহলে তাঁর সঙ্গে থাকার আমন্ত্রণ জানালেন তিনি। তাঁর ঠিকানা ও ফোন নাম্বার দিলেন।
হঠাৎ ঘণ্টা শুনে দুজনেই চমকে উঠলাম। খেয়াল হলো ৬টা বেজে গেছে। সর্বনাশ! বেরিয়ে দেখি বাইরে প্রচন্ড ভিড়। অফিস ছুটির সময় বলেই এত ভিড়। কোনো রকমে একটা ট্যাক্সি জোগাড় করে ছুটে গেলাম আমেরিকান এমবাসিতে। ততক্ষণে সাড়ে ৭টা বেজে গেছে। এমবাসি বন্ধ হয়ে গেছে। সিকিউরিটির দায়িত্বে আছে মারিন গার্ড। তাদের শরণাপন্ন হলাম। ওরা বলল যে, দূতাবাসের নিরাপত্তা বিধান করা ছাড়া অন্য কোনো ব্যাপারে জানার তাদের অধিকার নেই। সুতরাং তাদের কাছ থেকে রবার্ট ডিউয়ানের ফোন নাম্বার বা ঠিকানা জোগাড় করা সম্ভব হলো না। একটা বড় শিক্ষা হলো। আমার উচিত ছিল ববের ঠিকানা, ফোন নাম্বার সব লিখে কাছে রাখা। অবশ্য এয়ারপোর্ট থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত সারাক্ষণ একসঙ্গে থাকার ফলে ববের বাসার ঠিকানা আর নেওয়া হয়নি। তাছাড়া সে-ও এটা মনে করেনি। অগত্যা হাঁটতে শুরু করলাম। গত দুদিন ওর সঙ্গে প্যারিসের বিভিন্ন রাস্তায় হেঁটে বেড়িয়েছি। ও বলেছিল, কিছুকাল পরে ও গাড়ি কিনবে। তার আগে হেঁটে হেঁটে প্যারিসের সব জায়গা চিনে নিতে চায়। গাড়ি হলে তো আর হাঁটা হবে না। না হাঁটলে কি পথঘাটের সঙ্গে চেনাজানা হয়? সারাদিনের ক্লান্ত শরীর নিয়ে হেঁটে চলেছি। এক জায়গায় এসে একটি ভবনের প্রধান ফটক দেখে মনে হলো, এই তো পেয়ে গেছি। ঢুকে বুঝলাম ভুল করেছি। এরকম ফটক আরো অনেক দেখলাম। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গেট অজানাই রয়ে গেল। তখন আমার অবস্থা রীতিমতো করুণ, ক্ষুধায় প্রাণান্ত অবস্থা। হাঁটার ক্ষমতাও লোপ পেয়েছে প্রায়। কোনো রেস্টুরেন্টের খোঁজে পথচারীদের জিজ্ঞেস করে করে পথ চলছি। একটা রেস্টুরেন্ট পেয়েও গেলাম অবশেষে। ওয়েটারকে বললাম এটা-ওটা খেতে চাই। সে কিছুতেই আমার কথা বুঝতে পারে না। আমি বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হলাম। তখন পেছন থেকে এক মধ্যবয়সী সুন্দরী ইংরেজ মহিলা এসে ইংরেজিতে বললেন, চিন্তা করো না, তুমি কী খাবে আমি ওদের বুঝিয়ে বলছি। ডিনার শেষ করে ওই ভদ্রমহিলাকেই জিজ্ঞেস করলাম, আশপাশে ভালো কোনো হোটেল কি আছে যেখানে রাত্রিবাস করতে পারি? তিনি আশ্বস্ত করলেন। তারপর নিজেই কাউন্টারে গিয়ে ট্যাক্সি কোম্পানিকে ফোন করে ট্যাক্সি আনালেন। ড্রাইভারের হাতে হোটেলের নাম-ঠিকানা লেখা কাগজ গুঁজে দিলেন। খুব ভালো লাগল এই সহযোগিতা। তাঁকে অনেক ধন্যবাদ জানালাম, করমর্দন করলাম। আর হাতের মুঠোয় কিছু ডলার দিতে চাইলাম। না, এবার না, ওটা তোমার কাজে আসবে।
হোটেলের কামরায় ঢুকেই বিছানায় গিয়ে গা এলিয়ে দিতেই ঘুম এসে গেল। সকালে ঘুম থেকে উঠে আয়নায় নিজের চেহারা দেখে করুণাই হচ্ছিল। একটা চিরুনি নেই যে চুল আঁচড়াব। যাই হোক, কোনোমতে আঙুল দিয়ে চুল ঠিক করে নাশতা সেরেই ট্যাক্সি নিয়ে আমেরিকান এমবাসিতে গেলাম। রিসেপশনে যাওয়ার আগেই মেয়েটি চিৎকার করে বলল, তুমি নিখোঁজ হয়েছো দেখে তোমার বন্ধু পুলিশ স্টেশনে অভিযোগ লিখতে গেছে। বারান্দায় পায়চারি করছি এমন সময় হাঁপাতে হাঁপাতে বব এলো। আমার দিকে তাকাল। আমিও ওর দিকে তাকালাম। বুঝল দুজনেরই ভুল হয়েছে। ওই পর্যন্তই। কেউ কোনো কথা বলছি না। খানিক পরে ও বলল, তোমার ফ্লাইটের সময় হয়েছে। দুজনে ওর বাসায় গেলাম। আমার ব্যাগট্যাগ নিয়ে এয়ারপোর্ট রওনা দিলাম। বিদায়ের সময় ওকে জড়িয়ে বললাম, ভেরি স্যরি, আই য়্যাম রিয়েলি স্যরি বব। সে বুঝল সব। বিদায় নিয়ে প্লেনে উঠলাম। হঠাৎ মনে হলো, আমি কী যেন ফেলে এসেছি। আসলেই আমার ওয়াটার কালারের কাজগুলো যে টিউবে ভরে রাখা ছিল, সেটাই ফেলে এসেছি বিমানবন্দরের ওয়েটিং রুমে। বিমানের সিঁড়ি দিয়ে নেমে দৌড়ে গেলাম সেখানে, যেখানটায় বসেছিলাম। না, সেখানে আমার টিউবটা নেই। সিকিউরিটিও কিছু বলতে পারল না। তারপর ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড’ সেকশনে গিয়ে ওটা উদ্ধার করতে পারলাম। খোয়া যাওয়া জিনিস দ্রুত ওরা ওই ডিপার্টমেন্টে জমা দিয়ে দেয়। দৌড়ে আবার প্লেনে গিয়ে উঠলাম। সবাই ঘুরে ঘুরে আমাকে দেখতে লাগল। কারণ আমার জন্যই প্লেন ছাড়তে কিছুটা বিলম্ব ঘটেছিল।
মাথার ওপরে বাঙ্কার প্রথম দেখলাম এই প্লেনে। যেখানে মালপত্র রাখার জায়গা সেটাই কনভার্ট হয়ে যায় শোবার বিছানায়। ছোট্ট সিঁড়ি দিয়ে উঠে শুতে হয় স্লিপিং বার্থে। বালিশটালিশও আছে। পর্দা টানানোর ব্যবস্থাও আছে। আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দেওয়ার আগে সম্ভবত প্লেনটা একবার থেমেছিল এডেন বিমানবন্দরে জ্বালানি নেওয়ার জন্য। আমি অবশ্য পানীয়ের মাহাত্ম্যে ঘুমে এমন আচ্ছন্ন ছিলাম যে কিছুই বুঝতে পারিনি। আমেরিকায় পৌঁছে ওয়াশিংটন ডিসিতে অভ্যর্থনা জানাল এক মহিলা গাইড। নাম মারিয়ান্থে কারাবেরি। তিনি নিজে একজন নামকরা ভাস্কর। করকোরান আর্ট মিউজিয়ামে কাজ শিখেছেন, মাঝেমধ্যে গাইডের কাজ করেন। ন্যাশনাল আর্ট গ্যালারি দেখতে গেলাম একদিন। বিশাল স্থাপনা আর প্রদর্শনকক্ষ। সোনালি ফ্রেমে ঝকঝকে তেলরঙের ছবিগুলো যেভাবে যত্ন করে রাখা, দেখে অবাক হলাম। অনেক ছবির মধ্যে রাফায়েলের একটা ছবি এখনো চোখে ভাসে ‘The alba madonna’ – কী নিখুঁত অ্যানাটমি আর রং। মনে হয় যেন জীবন্ত। রাফায়েলের ড্রইং স্টাডি মাইকেলেঞ্জেলো আর দ্য ভিঞ্চির মতোই সূক্ষ্ম আর নিপুণ। ব্যক্তিমালিকানার ফিলিপস আর্ট গ্যালারিসহ আরো অনেক গ্যালারি দেখে ফেললাম কদিনেই। এর মধ্যে একদিন লিংকন মেমোরিয়াল, ইনডিপেনডেন্স মেমোরিয়ালসহ আকর্ষণীয় সব জায়গা ঘুরেটুরে দেখা হলো।
ওয়াশিংটনে থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল তাই চলে যেতে হবে। ট্রেন স্টেশনে আমাকে পৌঁছে দিতে মারিয়ান্থে খুব কাছে এসে আলিঙ্গন করে বলল, পরেরবার ওয়াশিংটনে এলে আমার সঙ্গে থেকো। আমি সাময়িক প্রতিশ্রুতি দিয়ে দ্রুত ট্রেনে উঠলাম।
ওখান থেকে গেলাম ফিলাডেলফিয়ায়। এখানেও যথারীতি একজন মধ্যবয়সী মহিলা গাইড। চালচলনে বেশ কেতাদুরস্ত। আমাকে নির্দিষ্ট হোটেলে পৌঁছে দিয়ে ‘কাল সকাল ৮টায় দেখা হবে’ বলে চলে গেলেন। অবশ্য যাওয়ার আগে আমার হোটেলের অবস্থান এবং হাতখরচের পুরো টাকাটাই আমাকে নগদ দিয়ে গেলেন। সেই সঙ্গে আমার 888sport slot gameসূচিও। এটাই ছিল নিয়ম। ফিলাডেলফিয়া শহরটা বেশ পুরনো। গথিক স্টাইলের বিশাল বিশাল অট্টালিকা ধারণ করে আছে মিউজিয়াম, মিউজিক হল, থিয়েটার হল, আর্ট গ্যালারি। বিশাল বিশাল বাণিজ্যিক দোকানপাট। হাইরাইজ বিল্ডিং খুব একটা নজরে পড়ে না। শহরগুলোতে তখনো আধুনিক স্থাপত্যের তেমন ছাপ পড়েনি। মিউজিয়ামগুলোতে ইউরোপীয় ছবির প্রাধান্য বেশি লক্ষ করা গেল। আমেরিকার 888sport live chatীদের ছবিতে ইউরোপীয় রেনেসাঁসের প্রভাব অনেক বেশি, বিশেষ করে ইমপ্রেশনিস্টদের। আমেরিকার আধুনিক চিত্রকলা গ্যালারিগুলোতে সবেমাত্র প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। ফিলাডেলফিয়ার কিছু কিছু জায়গায় যেতে আমার ভীষণ ভয়ই করত। ষন্ডামার্কা ব্ল্যাক আমেরিকানদের দাপটে তখন বর্ণবিদ্বেষ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। মাতাল হয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক কন্ট্রোল করত ওরা। এটার কোনো দরকার ছিল না। তবু ওরা এটা করত, যা আমার কাছে ভীতিকর বলেই মনে হতো। আমি অবশ্য একা একা কোথাও যেতাম না। গাইডের সঙ্গে গাড়িতেই ঘুরতাম। এর মধ্যে পরিচয় হলো চল্লিশোর্ধ্ব এক সুন্দরী মহিলার সঙ্গে। তিনি নাম বললেন ভিনিতা স্যুয়ার্ড। স্বামী এবং তিনি নিজে ফিলাডেলফিয়া ইন্কোয়ারার নামে প্রসিদ্ধ এক দৈনিক পত্রিকায় কাজ করেন। তিনি প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছেন। তাঁর ঔরসে রয়েছে দুই মেয়ে। এক মেয়ে নিউইয়র্কে থেকে পড়াশোনা করে, অন্য মেয়ে ছোট বলে বাবার কাছে থাকে। তবে উইকএন্ডে মায়ের কাছে এসে থাকে। মহিলার দ্বিতীয় স্বামী আর্থার স্যুয়ার্ড খুব নিরীহ সাদাসিধে, মূক-বধির হওয়ার কারণে। সংবাদপত্রে মহিলা করেন প্রুফ রিডিংয়ের চাকরি, আর স্বামী আর্থার করেন কম্পোজিটরের কাজ। এই কম্পোজিং রুমে শব্দের তীব্রতার কারণে কোনো সুস্থ লোক কাজ করতে পারে না, তাই মূক-বধিরেরাই উপযুক্ত কর্মী হিসেবে বিবেচিত হয়। এই দম্পতির সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর তাঁরা এক সন্ধ্যায় আমাকে ডিনার খেতে দাওয়াত দেন। ডিনারের জন্য নির্ধারিত রেস্তোরাঁয় গিয়ে দেখি ওই দম্পতির সঙ্গে উপস্থিত ষোলো-সতেরো বছরের এক তরুণী। নাম ভার্জিনিয়া গ্যে। গাল দুটো লাল টুকটুকে আর পিঠছোঁয়া চুলগুলো হুবহু সোনালি তারের মতো। হাত দিলে একটা ওজনও যেন অনুভব করা যাবে। অবাক বিস্ময়ে আমার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আমার কথাগুলো যেন ক্ষুধার্তের মতো গিলে ফেলছিল। তার মায়ের অবস্থাও প্রায় একই রকম। বেচারা স্বামীকে মাঝেমাঝে মা-মেয়ে হাতের ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন আমাদের বাক্যালাপের বিষয়বস্ত্ত। আগেই বলেছি ভদ্রলোক ছিলেন মূক-বধির।
মা-মেয়ের আগ্রহে আমি বিরামহীনভাবে বলে চললাম আমার বাল্যজীবন, বাসস্থান, প্রকৃতির মাধুর্য, 888sport live chat, 888sport live football, সংগীত ইত্যাদি যাবতীয় বিষয়ে লম্বা কথন। একনিষ্ঠভাবে তাঁরা আমার 888sport app download apk, গান শুনছিলেন আর তাঁদের বিস্মিত চোখগুলো আমাকে নিরিখ করছিল। আমি যখন বাংলা গান বা 888sport app download apkগুলো ইংরেজিতে 888sport app download apk latest version করে শোনাচ্ছিলাম, তাঁরা আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠছিলেন। বারবার বলছিলেন, ওহ ওয়ান্ডারফুল, আমাদের জীবনে এমন অভিজ্ঞতা কখনো হয়নি। আমি আসতে চাইলেও মা-মেয়ে দুজনেই হইহই করে বলে উঠতেন – না, আর কিছুক্ষণ গল্প করি। তুমি তো কাল নিউইয়র্ক চলে যাবে। তুমি কফি খাও, ডোনাট খাও। আইসক্রিম খাও। আমাদের খুব ভালো লাগছে তোমার কথা শুনতে। এরই মধ্যে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের অনেকগুলো গান গাইলাম। যার মধ্যে ছিল ‘কারার ঐ লৌহ কবাট, ভেঙে ফেল কর রে লোপাট…’, রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি, চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস…’, নজরুলের ‘একাদশীর চাঁদ রে ঐ রাঙা মেঘের কোলে…’, হেমন্তের অনেক গান। আববাসউদ্দীন, আবদুল আলিম, পঙ্কজ মল্লিকসহ অনেক 888sport live chatী-কবির গান ও 888sport app download apk আবৃত্তি করা ও গাওয়া হয়ে গেল। …বলে রাখা ভালো ছেলেবেলায় আমাদের বাসায় দেখেছি কলের গান। সাধারণত হিজ মাস্টার্স ভয়েসের যে-ধরনের বাক্স থাকে, ওটা ছিল তার চাইতেও অনেক বড়। চারকোনা উঁচু। আমার চাচা ওটা কিনে এনেছিলেন। কলকাতায় যত নতুন গানের রেকর্ড বেরোত হিজ মাস্টার্স ভয়েস, কলম্বিয়া ইত্যাদি রেকর্ড কোম্পানির, তার প্রায় সবগুলোই আমাদের বাড়িতে চলে আসত। যৌথ পরিবার ছিল আমাদের। আববা-চাচারা তিন ভাই। এই তিন ভাইয়ের পনেরো-কুড়িজন ছেলেমেয়ে। সে এক এলাহি কান্ড। আমরা পাঁচ-সাতজন ভাইবোন খুব গান শুনতাম। শুনে শুনে হুবহু গান গাইতেও পারতাম। পান্নালাল, হেমন্ত, সন্ধ্যা, পঙ্কজ মল্লিক, কানাকেষ্ট মানে কৃষ্ণচন্দ্রসহ অনেকের গানই আমরা গাইতাম এবং পরে আমি 888sport app বেতার থেকে 888sport app download apk আবৃত্তি, নাটকে অভিনয় ইত্যাদিতে বেশ পারদর্শী ছিলাম, তাই গান গাওয়া, 888sport app download apk আবৃত্তি করা আমার জন্য কোনো ব্যাপার ছিল না।
পরে অভিনয়ের দিকেও আমার ঝোঁক তৈরি হয়। বেবী ইসলামের একটা সিনেমায় আমি অভিনয়ও করেছিলাম নায়কের ভূমিকায়। বজলে মওলা, ফজলে মওলা দুই ভাই এফডিসিতে চাকরি করতেন। বজলে যুক্ত ছিলেন ওই শুটিংয়ে। বড় নৌকা চালানোর দৃশ্য আছে সিনেমায়। হাল ধরা শিখলাম। আমাকে ঠিকভাবে নৌকা চালাতে হবে, ভুল হলে বুড়িগঙ্গায় সলিলসমাধি! এক বিকেলে সূর্যাস্তের দৃশ্য ধারণ করতে আমাকে ওই বৃহৎ নৌকা চালিয়ে আসতে হলো সূর্যকে পেছনে ফেলে। কঠিন কাজ ছিল। বেশ কয়েকবার করতে হলো একই দৃশ্য। সিনেমাটা অবশ্য শেষ পর্যন্ত শেষ হয়নি। সেটা ১৯৫৮ সালের কথা। রেডিওতে অনেক নাটক করেছি আমি। আবদুল খালেক, পাঠক মুজিবুর রহমান, রণেন কুশারী এঁদের সঙ্গে অভিনয় করেছি। যখন আমরা উঠলাম তখন ভোর ৫টা বাজে। বিদায়ের আগে ভিনিতা (এরই মধ্যে আন্টি ডাকা শুরু করে দিয়েছি) আমাকে বারবার করে বললেন, আমি যেন তার বড় মেয়ে রমোনার সঙ্গে অবশ্যই দেখা করি। সে নাকি আমার কথা খুব পছন্দ করবে। তিনি রমোনার ফোন নাম্বার আর ঠিকানা দিলেন। আমাকে বললেন, ওকে বারবার ফোন করে চেষ্টা করো। ও পড়াশোনায় খুব ব্যস্ত থাকে। তোমার ভাগ্য ভালো হলে পেয়ে যাবে। আমি ফোন করব বললাম।
এরপর নিউইয়র্কে পৌঁছে পেলাম ব্রিটিশ স্টাইলে কথাবার্তা বলেন এমন এক স্মার্ট গাইডকে। নন-আমেরিকান অ্যাটিচিউড ভদ্রমহিলার। তিনি হচ্ছেন নিউ ইংল্যান্ডের অধিবাসী।
হোটেলে পৌঁছেই ব্যাগ-ট্যাগগুলো রেখে কামরাটা এবং বাথরুমটা একবার দেখে নিলাম। টিভিটা চালাতেই দেখলাম একটা ছবি চলছে – একজন 888sport live chatী যে নিজের ছবি বিক্রি করতে না পেরে অন্য নামজাদা 888sport live chatীর ছবি নকল করে বিক্রি করত। একপর্যায়ে ধরা পড়ে যায় এবং কারাদন্ডের শাস্তি ভোগ করছিল। হঠাৎ মনে হওয়ায় বসে গেলাম রমোনাকে ফোন করতে, কারণ ওর মা বলে দিয়েছিল অনেকবার চেষ্টা করে তবে তাকে পাওয়া যাবে। ভাগ্য ভালো, প্রথমবারেই পেয়ে গেলাম লাইন। বললাম আমি কে… সে আমাকে থামিয়ে বলতে শুরু করল, আমি তোমার বিষয়ে সব শুনেছি আজ সকালেই আমার বোনের কাছ থেকে। ও তো তোমার দারুণ ভক্ত হয়ে গেছে। শোনো, আমার কালকেও একটা ফাইনাল পরীক্ষা। কিন্তু তোমার কথা শোনার পর তোমার সঙ্গে দেখা না করে গেলে পরীক্ষা ভালো হবে না। আই অ্যাম ভেরি একসাইটেড টু মিট ইউ। তুমি একটা ট্যাক্সি নিয়ে চলে এসো। আমি তোমাকে একটা ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টে ডিনার খেতে নিয়ে যাব। সময়ক্ষেপণ না করে আমি চলে গেলাম তার ছোট্ট এক কামরার অ্যাপার্টমেন্টে। ঘরে ঢুকে রমোনাকে দেখে প্রায় নির্বাক হয়ে পড়ার মতো অবস্থা। এত সুন্দরী একটা মেয়ে, যাকে বলা হয় ‘হোলসাম উওম্যান’। একটা হাফপ্যান্ট পরা, গায়ে খালি পাতলা একটা গেঞ্জি যা কোনোভাবেই তার স্ফীত স্তনযুগলকে শাসনে আনতে পারছিল না। হাই বলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে আমাকে একটা আলিঙ্গন করল। ওর কাছে এটা ছিল অত্যন্ত স্বাভাবিক একটি ঘটনা। কিন্তু সত্যি কথা বলতে কি, আমার হৃৎস্পন্দন প্রায় দশগুণ বেড়ে গিয়ে প্রবল গতিতে চলতে শুরু করে দিলো। যাই হোক, আমরা ট্যাক্সি নিয়ে গেলাম একটা ইন্ডিয়ান রেস্তোরাঁয়। রমোনা বলল, তোমাকে আজ বেঙ্গলি ফুড খাওয়াব।
অর্ডার দেওয়া শেষ। একটা ছোট টেবিলের দুপাশে আমরা বসে কথা বলছি। অপলক আমরা দুজনে দুজনার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলছি। ওর ছোট বোন আমার ওপর দারুণ আসক্ত। আমার কথা কত কী যে বলেছে রমোনাকে, মনে হচ্ছে রমোনাই যেন আমার প্রেমে পড়ে গেছে। আমার কথা আমার অজান্তেই যেন সবকিছু জেনে গেছে। বোনের দেওয়া বর্ণনায় সে নিজের মহিমায় আরো কিছু যোগ করে আত্মহারা হয়ে উঠেছে। আমি ব্যাপারটা বুঝতে পেরে খুব বিজ্ঞের মতো বললাম, তোমার পড়াশোনা কেমন হচ্ছে, কী পড়ছো? বলল সোশ্যাল সায়েন্স। আর কয়েকটা পরীক্ষা মাত্র বাকি আছে। সেটা শেষ করে মাসখানেক ঘুরতে যাব, তারপর মার ওখানে গিয়ে থাকব কিছুদিন। অবশ্য এর মধ্যে একটা চাকরিও জোগাড় হয়ে গেছে নিউইয়র্কে। উইকএন্ডে যাবো মা-বোনের সঙ্গে সময় কাটাতে। আমার 888sport slot gameপর্ব শেষ করে রমোনার মায়ের বাসায় গিয়ে ছিলাম সপ্তাহখানেক। দুই দফায় প্রায় তিন সপ্তাহ। সে কাহিনিতে পরে আসব।
ইতোমধ্যে আমাদের ডিনারের প্রথম পর্ব অর্থাৎ স্যুপ এলো খুব সুন্দর করে সাজানো বাটিতে করে। খেয়ে দেখলাম, নেহাতই আমাদের দেশি ডাল। এরপর এলো এক প্লেটে কিছু সাদা ভাত এবং একটা ভাজি আর মুরগির একটা রান। বিদেশে এসে ভালোই লাগল খেতে, তবে মসলার গুণে স্বাদটা অন্য রকম, কিছু বিশেষ মসলার কারণেই হবে। রাত অনেক হয়ে যাচ্ছিল, রমোনাকে পড়তে হবে তাই তাকে পৌঁছে দিয়ে আমি হোটেলে ফিরে এলাম। রমোনাকে ওর অ্যাপার্টমেন্টের গেটে যখন নামিয়ে বিদায় নিচ্ছি রমোনা আচমকা আমাকে জড়িয়ে ধরে গভীর আবেগে চুমু খেতে লাগল। আমি একটু বিব্রত বোধ করছিলাম, কিন্তু ওর সেদিকে হুঁশ নেই। অনেকক্ষণ পর যেন সম্বিত ফিরে পেয়েছে সে রকম ভঙ্গিতে আমাকে ছেড়ে দিলো। দরজায় ঢুকতে গিয়ে আবার ফিরে এসে জানতে চাইল, আবার কবে দেখা হবে? বললাম, জানি না। আমার ট্যুর শেষ করে হয়তো আবার তোমার মার বাড়িতে যাব ফিলাডেলফিয়ায়। তখন যোগাযোগ করো। আর কোনো কথা না বলে রমোনা তার ফটকের মধ্যে ঢুকে গেল, আর সঙ্গে সঙ্গে অটোমেটিক দরজাটা শব্দ করে বন্ধ হয়ে গেল।
কয়েক দিনের মধ্যেই মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট, মেট্রোপলিটন মিউজিয়ামসহ অনেক ছোট-বড় গ্যালারিও দেখা হয়ে গেল। মেট্রোপলিটন মিউজিয়ামেও রাফায়েলের একটা ছবির কথা এখনো মনে পড়ে ‘ম্যাডোনা অ্যান্ড চাইল্ড’। মনে-এর একটা কাজও মনে পড়ে ‘টেরাস অ্যাট দ্য সি-সাইড’। সমুদ্রের তীরে ফুলে ফুলে ভরা একটা বারান্দা। মনে হয় যেন এখনই কেউ হেঁটে বেড়াবে ওই পায়ে হাঁটা পথ দিয়ে। এক ফাঁকে স্ট্যাচু অব লিবার্টিও দেখে ফেললাম, হাডসন নদীতে স্টিমারে চড়ে ঘুরে ঘুরে দেখা। অপূর্ব সুন্দর ওই ভাস্কর্যটি। জানতে পারলাম ওটা একজন ফরাসি ভাস্কর নির্মাণ করেছিলেন এবং ফরাসি সরকার সেটা মার্কিন সরকারকে উপহার দিয়েছিলেন। এই শহরেই প্রথম দেখলাম আকাশচুম্বী সব অট্টালিকা। এম্পায়ার স্টেট ভবনেও একদিন চড়লাম। ১০৫ তলা ভবনের ছাদের কাছে উঠে বাইরের দৃশ্যটা অপূর্ব। কিন্তু কিছু কিছু স্থান অদৃশ্য হয়েছিল খন্ড খন্ড মেঘে 888sport appর কারণে। এ ছিল আমার জীবনের এক অনন্য অভিজ্ঞতা। নিউইয়র্কে তখন নির্মিত হচ্ছে গুগেনহাইম মিউজিয়াম। প্রায় শেষ পর্যায়ে এসেছে কাজ।
এরপর গেলাম বোস্টনে। তিন-চারদিন করে থাকা হতো একেকটা শহরে। গাইড আমাকে নতুন শহরের জন্য ট্রেনে তুলে দিয়ে বিদায় নিতেন। নতুন জায়গায় নেমে পেতাম নতুন গাইডকে। বোস্টনে প্রথমেই গেলাম মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে। প্রায় সবখানেই ইউরোপিয়ান আর্টিস্টদের কাজ দেখা যায়। এখানেও মনে-র কাজ দেখলাম, ক্যাপ্টেন মার্টিন, নিয়ার সেনটন এবং পপি ফিল্ড ছিল খুবই আকর্ষণীয়। আমেরিকান 888sport live chatীদের মধ্যে জ্যাকসন পোলক, মার্ক রথকো, ডি কুনিং, মেরি ক্যাসটে এবং কয়েকজন পপ আর্টিস্টের কাজ ছিল খুবই সুন্দর। আরো অনেকের কাজ ছিল যাঁদের নাম এখন আর 888sport app download for android করতে পারছি না। বোস্টনে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির মধ্য দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। গাইড আমাকে বিভিন্ন ভবন সম্পর্কে বলছেন কোথায় কোনটা। মুনীর চৌধুরীর সঙ্গে আকস্মিকভাবে দেখা হয়ে গেল। হাফপ্যান্ট পরা এক কালো ভদ্রলোককে দেখলাম সাইকেল চালিয়ে আমাদের দিকে আসতে। কাছে আসতেই চিনলাম মুনীর চৌধুরীকে। বললাম, মুনীরভাই, আপনি এখানে। উত্তরে জানালেন বাংলা টাইপরাইটারের ওপর তিনি কাজ করছেন এখানে। টাইপরাইটারে তখন ছিল ইংরেজি হরফ, ওটায় বাংলা অক্ষর কীভাবে সেট করা যায় তারই কাজ করছেন তিনি। তিনিই ছিলেন বাংলা টাইপরাইটারের প্রবর্তক, একে বলা হতো মুনির অপটিমা। একসঙ্গে অনেকটা সময় কাটল আনন্দে। সবাই মিলে হট ডগ আর কফি খেলাম এক কফি বুথে দাঁড়িয়ে, এরপর চলে গেলাম এমআইটিতে। দেখলাম সেই নাট্যশালা যেখানে মার্লোন ব্রান্ডো অভিনয় শিখেছিলেন।
এরপর শিকাগোতে যাত্রা। আমেরিকার গ্র্যাজুয়েশন সেরেমনিতে থাকারও অভিজ্ঞতা হলো। আমার গাইড মহিলার মেয়ের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান দেখতে গেলাম। এটাও এক নতুন অভিজ্ঞতা। শিকাগোতেও মিউজিয়াম, গ্যালারিগুলো দেখা হলো। সম্ভবত এখানেই দেখলাম মাইকেলেঞ্জেলোর ‘দ্য লাস্ট সাপার’, পিকাসোর ‘গুয়ের্নিকা’ এবং আরো কিছু আধুনিক বিমূর্ত ছবি। একটা মজার ব্যাপার লক্ষ করলাম, বেশ কয়েকজন মহিলা দর্শক এসে একটা বিমূর্ত ছবির সামনে দাঁড়িয়ে বেশ একটু উঁচু স্বরে বলে উঠলেন, ‘ওহ হোয়াট এ বিউটিফুল ওয়ার্ক!’ একটু পরে আক্ষেপের সুরে বললেন, ‘বাট আই ডোন্ট আন্ডারস্ট্যান্ড’। এরপর লস অ্যাঞ্জেলেসে গিয়ে মিউজিয়াম গ্যালারি দেখার পর একদিন বেড়াতে গেলাম ডিজনিল্যান্ডে। এলাহি কান্ড সব। কী বিশাল সব সেট। স্বপ্নপুরী যেন। ছয় মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ওখানে তখন ‘স্লিপিং বিউটি’ নামে একটা অ্যানিমেশন ফিল্ম নির্মাণ হচ্ছিলো। সেখানে স্টুডিওতে গিয়ে দেখলাম, বহু 888sport live chatী কাজ করছেন ছয় বছর ধরে ছবিটি নির্মাণের জন্য। তখনো মুক্তি পায়নি। এরপর সানফ্রান্সিসকো। উঁচু-নিচু শহর। ট্রাম চলে। দৌড়ে গিয়ে উঠতে হয়। পয়সা দিয়ে আবার নির্দিষ্ট জায়গায় নেমে পড়তে হয়। কারো ভেতর কোনো অসততা দেখিনি। খুব ভালো লাগল শহরটা আমার কাছে। বলতে গেলে আমেরিকার সব থেকে সুন্দর শহর এটা।
বহু মিউজিয়াম ও গ্যালারিতে আমেরিকান 888sport live chatীদের কাজ দেখেছি। জ্যাকসন পোলক, অ্যান্ড্রু ওয়াইথসহ আমার পছন্দের 888sport live chatীদের কাজ দেখেছি। জন মারিন অয়েল এবং ওয়াটার কালারের একজন সুদক্ষ 888sport live chatী। তাঁর কাজ আমাকে বেশ প্রভাবিতও করেছিল। ওখানকার কয়েকজন তরুণ 888sport live chatীর সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ হলো। এতদিন পর তাঁদের নাম 888sport app download for android করতে পারছি না। ওখানকার এক গ্যালারিতে আয়োজিত এক সভায় আলোচনা করলাম সমকালীন পাকিস্তানি আর্ট নিয়ে। অবশ্য বেশির ভাগই ছিল পূর্ব পাকিস্তানের 888sport live chatীদের কাজের ওপর। প্রায় সর্বত্রই আমি সুযোগ পেলেই ছবি আঁকি, ড্রইং করি। নিউ মেক্সিকোর নিসর্গ, নায়াগ্রা ফলস, কনসার্ট হল, সমুদ্রতীরে যুগল 888sport promo code মুখ এবং শহরের পুরনো অংশের বিভিন্ন স্থানের চিত্র উঠে এলো ওই তিন মাসে আঁকা আমার বেশ কিছু 888sport live chatকর্মে। আর্টস ক্লাব অব ওয়াশিংটনে আমার একটা চিত্র-প্রদর্শনীও হয়ে গেল। আমাদের দেশের প্রফেসর শামসুল হক তখন এমবাসিতে ছিলেন কালচারাল অ্যাটাশে হিসেবে। দুদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে তিনি অফিসের বাইরে থাকায়। তাঁকে পাওয়াই যায় না অফিসে। তৃতীয় দিন আমি খেপেই গেলাম তাঁকে না পেয়ে। ওখানকার কমার্শিয়াল কাউন্সেলর ভদ্রলোক বেরিয়ে এলেন আমার চেঁচামেচি শুনে। তাঁর নামও শামস। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানি। তিনি নিয়ে গেলেন তাঁর অফিসকক্ষে। জানতে চাইলেন আমি কী জন্য এসেছি, কিসের অভিযোগ। সব শোনার পর তিনি বললেন, আমি তোমার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দেব। সত্যি সত্যি প্রদর্শনী হলো আর্টস ক্লাব অব ওয়াশিংটন গ্যালারিতে। ওই আর্ট গ্যালারির পেট্রন মিসেস গ্রিনফিল্ড আমার ছবি দেখে খুবই মুগ্ধ হয়েছিলেন। আমার সঙ্গে কথা বলার জন্য গ্যালারির পাশে তাঁর রুমে নিয়ে গেলেন। তখন পাকিস্তানি পোশাকে ছিলাম আমি। পায়ে নাগরা জুতো পরা। ভদ্রমহিলা আমাকে বললেন, ছবি আঁকতে গেলে কী কী প্রয়োজন হয়? বললাম, রং, তুলি, ক্যানভাস এবং সর্বোপরি অর্থ। তিনি বললেন, আমি তোমার জন্য অর্থের ব্যবস্থা করব। তুমি কি শুনেছো আমি একটা ব্যাংকের মালিক? আমেরিকার বড় বড় ব্যবসায়ীর সঙ্গে আমার জানাশোনা আছে। তোমাকে আমি আমেরিকার চারটি শহরে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দেব। সারাজীবনে তোমার যত টাকা দরকার, সব পেয়ে যাবে ওখান থেকে। আমি তো অবাক! জানতে চাইলাম, কীভাবে? উনি বললেন, তোমার পায়ে যে জুতা (নাগরা জুতা) ওটা পাকিস্তান থেকে ইমপোর্ট করে আনতে পারবে? যদি পারো তবে টাকার অভাব হবে না। ওই জুতা এখানে বিচ উইয়ার হিসেবে দারুণ বিক্রি হবে।
কথাবার্তা ওই পর্যন্তই। পরে উনি গাড়ি পাঠিয়ে নিউ হ্যাভেনে তাঁর বাড়িতে নিয়ে গেলেন আমাকে তাঁর সেক্রেটারি পাঠিয়ে। ভারি সুন্দর সে বাড়ি পাহাড়ের ওপর। চারিদিকে বাগান। 888sport live chatসম্মত সব স্থাপনা। সুইমিংপুলের কাছে ভাস্কর্য রয়েছে ইতালির ভাস্কর মারিনো মারিনির। বাড়িতে মাতিসের ও পিকাসোর বড় ছবিও দেখলাম। এই বাড়ি নির্মাণের সময় পিকাসো, মাতিস এবং সমসাময়িক আরো অনেক 888sport live chatীর কাজ সংগ্রহ করেছিলেন প্যারিসে গিয়ে। ছবির জন্য আগে থেকেই স্থান নির্ধারণ করে রেখেছিলেন ভবনের নানা দেয়ালে। ভদ্রমহিলা চল্লিশোর্ধ্ব হবেন। তিনি আমার ছবি পছন্দ করেছিলেন এটা সত্য। তবে আমার প্রতিও তাঁর একটা তীব্র আকর্ষণ জন্মেছিল। কখনো রাত ৩টায় ফোন করে বসতেন। সকাল ৬টায় আমাকে নেওয়ার জন্য গাড়ি পাঠিয়ে দিতেন। এভাবে চলল কিছুদিন। আমার পক্ষে জুতার ব্যবসা করা সম্ভব নয়, জানিয়ে দিলাম একদিন। আমাকে নিয়ে তাঁর অভিনয় করা খুবই বিরক্তিকর হয়ে উঠল তাই ওয়াশিংটন ছেড়ে চলে গেলাম একদিন।
আবার ফিরে আসি ওয়াশিংটন ডিসিতে। হোটেলে থাকি। ফোন করলাম মারিয়ান্থে কারাবেরিকে। ও বলল, আমার বাসায় চলে এসো। গেলবারে সে দাওয়াত দিয়েছিল তাঁর বাসায় থাকার জন্য। ওর বাড়িটা ছোট একটা পাহাড়ের ওপর স্প্রিঙ্গফিল্ড, মেরিল্যান্ডে। পাহাড়ের শরীর কেটে গাড়ি রাখার জায়গা বানানো হয়েছে। দুটো গাড়ি পাশাপাশি পার্ক করার ব্যবস্থা আছে। তারপর সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে হয়। তিনতলা বাড়ি, পেছনে ঘাসের প্রশস্ত লন। তার পেছনে ম্যাপলগাছের বিরাট বাগান। মারিয়ান্থে যথেষ্ট ধনাঢ্য ব্যক্তি। বহু গুণিজনের ভাস্কর্য গড়েছেন। আমাকে একদিন বেসমেন্টে তাঁর স্টুডিওতে বসিয়ে ভাস্কর্য তৈরি করতে শুরু করলেন। তিনি আমার আবক্ষ একটা মূর্তির প্রাথমিক নকশা তৈরি করে ফেললেন প্রায় তিন সিটিংয়ে। নিপুণ তাঁর হাতের কাজ। এর পরদিন আমিও তাঁর কয়েকটা চারকোল ড্রইং করে ফেললাম। মারিয়ান্থে অবশ্য ন্যুড মডেল হতে অভ্যস্ত ছিলেন। এঁদের কাছে এটা অনেকটা চা-মুড়ির ব্যাপার।
একদিন সকালে আমার নাম ধরে মারিয়ান্থে নিচে থেকে চিৎকার করে ডাকছে, সাইয়েদ কাম ডাউন, ব্রেকফাস্ট ইজ রেডি। ও কখন নিচে গেছে জানতে পারিনি। খুব ভোরে হয়তো। নিচে নেমে দেখি, না-খাওয়া আঙুর পড়ে আছে একটা পাত্রে। বললাম, ঘুম থেকে উঠেই আঙুর খেতে শুরু করে দিয়েছো? ও বলল, আমি না। সম্ভবত আমার স্বামী খেয়েছে, সে এসেছিল রাতে। ওর কাছে আলাদা চাবি আছে। শুনে আমার শিরদাঁড়া বেয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল। অবাক হয়ে বললাম, তোমার স্বামী এখানে আসেন? হ্যাঁ আসে, আবার চলে যায়। যেহেতু আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, তাই আমাকে বিরক্ত করে না।
ভয়েস অব আমেরিকায় তখন কাজ করতেন নাট্যকার সাঈদ আহমদের ভ্রাতুষ্পুত্র ইশতিয়াক। তার সৌজন্যে ১৫ মিনিটের একটা ইন্টারভিউ হলো। পাকিস্তানের চিত্রকলার অগ্রগতি সম্পর্কে এবং আমেরিকায় আমার অভিজ্ঞতাই ছিল মূল বক্তব্য। তাঁর কাছ থেকে বাংলা গানের ৭৮ সাইজের বেশকিছু ডিস্ক সংগ্রহ করেছিলাম। ডুপন্ট সার্কেলে বসে কফি খাচ্ছি। সঙ্গে সেসব রেকর্ড। সুদর্শন দীর্ঘকায় এক ভদ্রলোক এসে জিজ্ঞেস করলেন, এগুলো কি গান? ভদ্রলোক কাছেই তাঁর বাড়িতে আমন্ত্রণ জানালেন গানগুলো শোনার আগ্রহ প্রকাশ করে। তাঁর বাসায় গিয়ে রেকর্ড শুনছি। গানের বাণী আর সুরের মাধুরীতে ভদ্রলোক বিমুগ্ধ। হেমন্তের গান বাজছে – মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে চলে, মেঘ কালো আঁধার কালো, আরো কত গান! ভদ্রলোক খুব আনন্দ উপভোগ করছেন। আমার বৃত্তান্ত শুনে বললেন, তুমি যদি আমেরিকায় থাকো তবে তোমার জন্য একটা প্রোগ্রাম তৈরি করে দিতে পারি। ছয়টা মিউজিয়ামে তোমার চিত্র-প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে দেব। শেষ প্রদর্শনী হবে নিউইয়র্কের মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে। এসবের যাবতীয় ব্যয় আমার। তোমার যত ছবি বিক্রি হবে তার সব পয়সাও তোমার। শুধু শেষ প্রদর্শনীতে (অর্থাৎ মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টে) যা বিক্রি হবে তার শতকরা পঞ্চাশ ভাগ অর্থ আমাকে দিতে হবে। তৎক্ষণাৎ বসে সে পুরো প্রোগ্রাম টাইপ করে ফেলল। টাইপ করতে করতে ভদ্রলোক আবেগাক্রান্ত হয়ে বলল, এই টাইপরাইটারে আমার স্ত্রী টাইপ করতেন। আর আমি হেঁটে হেঁটে তাকে ডিক্টেশন দিতাম। ভদ্রলোক একজন সিনেটরের সঙ্গে কাজ করতেন তখন।
সম্প্রতি স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে গেছেন। ভদ্রলোক আরো বললেন, যারা উঁচুমানের চিত্র সংগ্রাহক তারা কখনোই চিত্র-প্রদর্শনীতে গিয়ে ছবি কেনে না। তাদের এজেন্ট, আর্ট ক্রিটিক, বা কিউরেটর থাকে। তারা জ্ঞান, বাণিজ্যিক অভিজ্ঞতা আর সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে বিচার-বিবেচনা করে ছবি ক্রয়ের তালিকা তৈরি করে। ভদ্রলোক আমার প্রদর্শনীর একজন এজেন্ট ও আর্ট প্রমোটর হিসেবে ভূমিকা রাখার কথাও বললেন। এছাড়া সাধারণ দর্শকদের আকৃষ্ট করার কৌশলও তিনি বাতলে দিলেন। বললেন, 888sport apps থেকে জামদানি শাড়ি এনে দেয়ালে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। পেইন্টিং থাকবে ওই শাড়ির ওপরে, দেয়ালে। লোকে জামদানি শাড়ির আকর্ষণেই চিত্র-প্রদর্শনীতে আসবে, ওই শাড়ি দেখা শেষ হলে তোমার ছবি দেখবে। যদি পারো, একটা হাতির বাচ্চা এনে প্রদর্শনীর প্রধান ফটকে রেখে দিতে পারো। লোকে কথা বলবে হাতির বাচ্চা নিয়ে, তোমার ছবি নিয়ে নয়। কিন্তু শহরে একটা অভিনব প্রচারণার সৃষ্টি হবে। তিনি পারফিউমের কথাও বললেন যেটা আনা হবে 888sport app থেকে, যার ঘ্রাণ এখনো পায়নি আমেরিকাবাসী। প্রদর্শনীতে ঢুকেই ওই সুগন্ধির ঘ্রাণে তারা একটা ধাক্কা খাবে। বাপ রে, কী তুখোড় বাণিজ্য-বুদ্ধি ওই ভদ্রলোকের।
এর পরই মিসেস গ্রিনফিল্ডের প্রস্তাবটা পেয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছিল যে প্রেরণা ও শান্তি এবং সুস্থিতি নিয়ে আমি 888sport live chatচর্চা করি, তা বিঘ্নিত হবে এঁদের সঙ্গে কাজ করলে। ফলে ওদের লোভনীয় প্রস্তাবে শেষ পর্যন্ত সম্মতি দিতে পারলাম না।
ইতিপূর্বে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে আমি গিয়েছিলাম নিউ মেক্সিকোতে। ওখানে সবেমাত্র একটা আধুনিক মিউজিয়াম তৈরি হয়েছে। সুন্দর ডিজাইনের ভবন এবং প্রবীণ 888sport live chatীদের পাশাপাশি তরুণ মার্কিনিদের ছবিও স্থান পেয়েছে সেখানে। এরপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো আদিবাসী ইন্ডিয়ানদের যেখানে পৃথক আবাসস্থল করে রাখা হয়েছে সেখানে। নিতান্তই টুরিস্টদের দর্শনীয় স্থান হিসেবে আকর্ষণ করার জন্য রাখা হয়েছে। বাড়িঘর সেই পুরনো ঐতিহ্যের। বাড়িগুলোকে বলা হয় ‘ডোবি হাউস’। কিছুটা মেক্সিকোর গ্রামের বাড়ির সঙ্গে মিল। ইন্ডিয়ানদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ দেখলাম। কেউ নতুন ঘর বানাচ্ছে। কেউ ছোট ছোট কার্পেট বানাচ্ছে, টুরিস্টরা সেগুলো কিনছেও বেশি দামে। মানুষগুলো কিছুটা বিরক্ত মনে হলো। ওরা পছন্দ করে না এ-ধরনের দর্শনীয় হয়ে থাকা। আমি কয়েকটা ছবি আঁকলাম এখানে। ল্যান্ডস্কেপ। তার মধ্যে একটা গোরস্তানও ছিল।
এরপর আমাকে নিয়ে গেল গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন দেখাতে। অপূর্ব সুন্দর এর প্রাকৃতিক দৃশ্য। লাল রঙের মাটি। ক্যানিয়ন বা গভীর খাদ খুবই মনোমুগ্ধকর। এই খাদে নামা যায়। খচ্চরের পিঠে চড়ে নিচে নামতে প্রায় সারাদিন লেগে যায়। ওখানে অবশ্য থাকার ব্যবস্থা আছে। তবে আমাকে কালই চলে যেতে হবে বলে এই আকর্ষণ ত্যাগ করতে হলো। অনেক নিচ দিয়ে অবশ্য একটা ট্রেনলাইন আছে। ওটা আসে অনেক দূর থেকে। আমি রং-তুলি নিয়ে বসে গেলাম এবং বেশ কয়েকটা ছবি এঁকে ফেললাম।
এখানেও একটা মজার ঘটনা ঘটল। আমার গাইডের সঙ্গে এক সুন্দরী তরুণী এলো আমার সঙ্গে আলাপ করতে এবং আমার ছবি দেখতে। গাইড মহিলা বলল, আমি একটা ব্যক্তিগত কাজে চলে যাচ্ছি, আমার মেয়ে মিরিয়াম তোমাকে বাইরে নিয়ে যাবে। আমার গাইড মহিলা ছিলেন বেশ বয়স্ক। ভাবছিলাম, তিনি কি ইচ্ছা করেই তাঁর মেয়েকে আমার সঙ্গ দেবার জন্য রেখে গেলেন কিনা। যাই হোক, মেয়েটির চেহারাটা একটু চৌকো; কিন্তু খুব সুন্দর। মেক্সিকান চেহারার আদল। গরমের দেশে থেকে লাল হয়ে গেছে চিবুক দুটো। লম্বা কালো চুল ঝুলে আছে কাঁধের ওপর বুকের ওপর। লোভ সামলাতে পারলাম না। খুব ক্ষিপ্র গতিতে একটা পেন-ড্রইং করে ফেললাম। ছবিতে চেহারাটা মিলে যাওয়ার মিরিয়াম খুব খুশি। এত খুশি যে, কাছে এসে একটু আদর করতে ভুলল না। এরপর সারাদিন আমরা কামরায়ই থাকলাম। কামরাতেই খাবার আনিয়ে খেলাম। ছবি এঁকে গল্প করে সারাদিন কাটিয়ে দিলাম। সন্ধের আগ দিয়ে আমার গাইড মহিলা, মিরিয়ামের মা এলেন। কিছুক্ষণ আমাদের দুজনের দিকে চোখ বুলিয়ে নিলেন। তারপর স্বাভাবিকভাবে জিজ্ঞেস করলেন, ইউ হ্যাভ এনজয়েড দ্য ডে? ইয়েস, ভেরি মাচ, বললাম। মহিলা আমার আঁকা ছবিগুলো দেখতে চাইলেন। আমি সতর্কতার সঙ্গে ড্রইং ছবিগুলো ফ্লোরে বিছিয়ে দিলাম, শুধু ন্যুড ড্রইংটা অন্য একটা ছবির নিচে রেখে দিলাম। ছবিগুলোর প্রশংসা করে মেয়েকে নিয়ে তিনি চলে গেলেন। সকালে আবার এলেন, আমাকে প্লেনে তুলে দিতে। আমি মিয়ামির পথে রওনা হলাম।
এরপর ফিলাডেলফিয়া। ওখানকার বিরাট ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ‘বনউইট টেলারে’ একটা চিত্র-প্রদর্শনী করলাম। বড় বড় দশখানা জানালায় আমার ছবি ঝুলিয়ে দেওয়া হলো। আর্ট গ্যালারি নয় বলে ওপেনলি ছবি বিক্রি করা সম্ভব ছিল না। তাই ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের বড় বড় শো-উইনডোতে আমার ছবি টাঙানো হলো এবং ওখানে রাখা ম্যানিকিনের হাতে লিফলেট ধরিয়ে দেওয়ায় মনে হলো যেন কেউ ছবি দেখছে আগ্রহ নিয়ে। দর্শনার্থী কোনো ক্রেতার ছবি পছন্দ হলে রিসেপশনে গিয়ে যোগাযোগ করত এবং ছবি কিনত। এই স্টোর যেহেতু আর্ট গ্যালরি নয়, সে-কারণে খোলাখুলিভাবে ছবি বিক্রি করতে পারত না।
ছবি বিক্রি মন্দ হয়নি। সে-সময়েই একদিন রাস্তায় আকস্মিকভাবে 888sport live chatী হামিদুর রহমানের সঙ্গে দেখা হয়ে গেল। ম্যুরালের ওপরে উচ্চতর শিক্ষার জন্য সে আমেরিকা এসেছে। ও নিয়ে গেল তার বাসায়। এক কামরার ছোট্ট একটা ফ্ল্যাট। ভালোই। ওর ওখানেই থেকে গেলাম পুরো এক মাস। রান্নাবান্নায় ওর আগ্রহ ছিল খুব। খাসির ঘাড়ের অংশটায় যেখানে মাংসের সঙ্গে নরম হাড়ও থাকে, যাকে বলা হতো নেক অব ল্যাম্ব, ওটা কিনে আনত হামিদ। দারুণ রান্না করতে পারত। একদিন একটা গালা পার্টি করল ওখানে। সকালে ঘুম ভেঙে দেখি সারা মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ঘুমোচ্ছেন 888sport live chatীরা – ছেলেমেয়েরা।
ফিলাডেলফিয়ায় এক সন্ধ্যায় গাইড ভদ্রমহিলার কথামতো ডিনারের দাওয়াত খেতে যাওয়ার জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছি। হঠাৎ দেখি সতেরো-আঠারো বছরের এক সুন্দরী তরুণী আমার দিকেই এগিয়ে আসছে। এসে আমার নাম জিজ্ঞেস করে নিশ্চিত হয়ে জানাল, আমাকে নিতেই তার আসা। ওদের বাড়িতে গেলাম মাইক্রোবাসে করে। মাইক্রো পার্ক করেই ও আমাকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করে দিলো। আমি তো অবাক! মেয়েটি বলল, আমার বোন অনেক সুন্দরী। আমাদের বাড়িতে কেউ এলে সবাই ওর প্রেমেই পড়ে যায়। তুমি যাতে ওর প্রেমে না পড়তে পারো তাই আগেভাগেই আমি তোমাকে প্রেম নিবেদন করে রাখলাম। তেরেসা মারিয়া বেহমার নামের মেয়েটি ছিল নার্সিংয়ের শেষ বর্ষের ছাত্রী। ওর সঙ্গে পরে ঘনিষ্ঠতা হয়। ওর বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী, ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রি ছিল তাঁর। বেশ শক্তিশালী শরীরের অধিকারী। মা ছিলেন খুব সহজ-সরল গৃহিণী। তেরেসা (টেসি) ঠিকই বলেছিল ওর বোন সম্পর্কে। সত্যিই খুবই সুন্দরী মেয়েটা, নাম ন্যান্সি। একদিন দুবোন মিলে আমাকে বেড়াতে নিয়ে গেল এক খ্রিষ্টান সেমিটারির মধ্যে। কবরের ওপর দুই বোন ব্যালে নাচের মহড়া দেখাল। আমার সঙ্গে কিছুটা অভিনয়ও করল টেসি। খুবই চঞ্চল স্বভাব, সরল আর খুব জিদ্দি মেয়েটা, তাই আকর্ষণীয়। অন্যদিকে ন্যান্সি জানে, সে খুবই সুন্দরী তাই নিশ্চিন্তমনে পুরুষের দৃষ্টি কাড়ে আর কিছুটা ছলনায় পারদর্শী মনে হলো। একবার আমার সঙ্গে ওই কবরের প্রশস্ত চত্বরে নাচ করতেও বাধ্য করাল আমাকে। মনে হলো টেসি সেটা পছন্দ করছিল না। ওর ধারণা, আমি কেবল ওরই হয়ে থাকব। প্রচন্ড একগুঁয়ে। একদিন আমি বললাম, চলো কোথাও ঘুরতে যাই। ও বলল, আমার ক্লাস আছে আমি যেতে পারব না। তবে তুমি ১২টায় আমার কলেজে ফোন করো, তখন বলব যেতে পারব কিনা। ইতিমধ্যে আমি একটা রেড ইন্ডিয়ান মেয়েকে, যার সঙ্গে কিছুদিন আগে ভিনিতার পার্টিতে পরিচয় হয়েছিল, ফোন করলাম সে যদি আমাকে সঙ্গ দিতে পারে। ও বলল, আমার তো অফিস আছে। তবে তোমার জন্য একদিনের ছুটি নিতে পারি। মাও চাকরি করে, বেরিয়ে যাবে ৯টায়, তারপর তোমাকে আমি তুলে আনব। ভালোই কাটছিল। গল্প-গুজব, কিছু বিয়ার খাওয়া আর আমার ছবি আঁকা অবাক হয়ে দেখছিল, তার নিজের সুন্দর ফিগারের ছবি। একটু বাড়তি আদর করে চলে গেল শাওয়ার নিতে। আমার হঠাৎ মনে পড়ল টেসি বলেছিল ১২টায় ফোন করতে। এখন সাড়ে ১২টা। মনে হতেই দৌড়ে ফোন করলাম। টেসি বেশ রেগে ছিল দেরিতে ফোন করায়। বলল, জানো না এটা পাবলিক ফোন, অনেক মেয়ে অপেক্ষা করছে ফোনের জন্য, আর আমি আগলে আছি তোমার ফোনের অপেক্ষায়। ইউ রিয়েলি ডোন্ট লাভ মি। আমার জবাবের আগেই ভিনেসা চিৎকার করে বলল, সাইয়েদ গিভ মি টাওয়াল। কথাগুলো টেসি শুনে জিজ্ঞেস করল, তুমি কোথায়? আমি হতবিহবল হয়ে জানালাম এক বান্ধবীর বাসায়। তুমি আসতে পারবে না বলে তার বাসায় এসেছি। আমাকে অর্ডার দিলো পাগলি মেয়েটা, পনেরো মিনিটের মধ্যে তুমি 17th and Chestnut st.-এর মোড়ে এসো। অগত্যা ভিনেসা ব্যাপারটা উপলব্ধি করে বলল, যাও। খুব খারাপ লাগছিল মেয়েটা আমার জন্য অফিস থেকে একদিনের ছুটি নিল, তা এমনিভাবে ভেস্তে গেল। ঠিক পনেরো মিনিটেই পৌঁছে গেল টেসি। আমাকে প্রায় ছোবল দিয়ে নিয়ে চলল দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে। একসময় বুঝলাম, আমরা কোনো জঙ্গলাকীর্ণ পার্কে ঢুকছি। পাহাড়ি রাস্তায় যেতে যেতে হঠাৎ করে, হ্যান্ড ব্রেকে একটা টান দিয়ে গাড়ি থামিয়ে আমার শরীরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রচন্ড আবেগে চুমু খেতে লাগল। ওর হাতের চাপে গাড়ির স্টিয়ারিং হুইলে ক্রমাগত বিকট শব্দে হর্ন বাজতে লাগল। সেদিকে টেসির কোনো খেয়ালই নেই, পাগলের মতো আদর করতে লাগল। এরপর বহু কষ্টে নিজেকে উন্মুক্ত করে ওকে বোঝাবার চেষ্টা করলাম, এটাতে আমার অপরাধ কিছু ছিল না। তুমি আসবে না, আমি সারাদিন কী করব, সেজন্যই ভিনেসাকে ফোন করে ওর সঙ্গে ছিলাম। তখনো ফুঁসছিল, বলল, তুমি কেবলই আমার। অন্য কারো সঙ্গে যেতে পারবে না।
এমন পাগল, এক সন্ধ্যায় আমাকে ডিনারের আমন্ত্রণ জানাল একটা নামী রেস্টুরেন্টে। ওখানে পৌঁছে দেখি এখনো টেসি আসেনি। একটা ইন্ডিয়ান মেয়ে তার মার্কিনি বান্ধবীর সঙ্গে লম্বা একটা টেবিলের এক কোনায় বসে গল্প করছে। ভারতীয় মেয়েই মনে হলো, শাড়ি-ব্লাউজ পরে বসে আছে। আমি ইতস্তত করছিলাম কোথায় বসব। রিসেপশনের আগেই দাঁড়িয়ে দেখছিলাম চারদিকের দৃশ্য। হঠাৎ ভারতীয় মেয়েটি আমাকে দেখে এগিয়ে এলো, হাই সাইয়েদ ডিডন্ট আই গিভ এ সারপ্রাইজ? ওমা এ তো টেসি! কোথাও থেকে শাড়ি জোগাড় করে পরে এসেছে? একটু আনাড়ি পরা শাড়ি, ইতোমধ্যে তার আরো পাঁচ-ছয়জন বন্ধু-বান্ধবী এসে গেছে। আমাকে পরিচয় করাল সবার সঙ্গে এমনভাবে যেন আমি সত্যিই সম্রাট জাহাঙ্গীর। আরো ঘোষণা করল, আমি নাকি তাকে ভারত থেকে এই শাড়ি এনে দিয়েছি। এবং বাসায় আরো কয়েকটা আছে। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সে যেভাবে আমাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে পরিচয় করাচ্ছিল, আমার পক্ষে তা হজম করা প্রায় অসম্ভব ছিল। সবাই মিলে হইচই করে ভোর ৪টার দিকে যে যার গন্তব্যে চলে যায়।
আরো একদিন সে এরকমই আর একটা কান্ড করেছিল। এক রাতে সে আমার বাসায় এলো যখন আন্টি ভিনিতা আর আর্থার রাত ৮টায় ডিনার শেষ করে রাতের শিফটে কাজ করতে চলে গেছেন। টেসি এসেই গাত্রাবাস খুলতে শুরু করে বলে, তুমি এখনই আমার ছবি আঁকো। আমি খুবই বিব্রত বোধ করছিলাম। এই অবস্থায় আমি কিছুতেই মন বসাতে পারব না। তাই মিনতি করলাম, আজ না, অন্য কোনো দিন আঁকব। জিদ্দি মেয়ে দেখল যখন কিছুতেই আমাকে রাজি করাতে পারল না, তখন লাফ দিয়ে রাস্তা পার হয়ে ওর সেই জিপভ্যান গাড়ি চালিয়ে চলে গেল একটা কথাও না বলে।
অবশ্য পরবর্তীকালে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিল। ওয়াশিংটন ডিসিতে আমার চিত্র-প্রদর্শনীর সময় টেরেসা জানাল, সে আসতে চায়। প্রদর্শনীর কদিন আমার সঙ্গে থাকবে। ফিলাডেলফিয়া থেকে সে সত্যিই এলো। আমার বড় ভাইয়ের এক বন্ধু এসেছিলেন প্রদর্শনীতে, তিনি ভয়েস অব আমেরিকায় কাজ করতেন। আমি অন্য অতিথিদের সামাল দিতে যাওয়ার আগে তেরেসাকে বললাম, আমার ভাইয়ের এই বন্ধু, আমারও ঘনিষ্ঠ। ওর সঙ্গে গল্প করো। আমি অতিথিদের সঙ্গে যাচ্ছি। প্রদর্শনী শেষে রাস্তায় এক ওভারকোটের ভেতর দুজনে উষ্ণতা নিচ্ছি আর হেঁটে চলেছি আমাদের ডেরায়। তখন পথেঘাটে চলার সময় জুটিদের চুম্বনরত থাকাটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা ছিল। এখন আর সেরকম নেই। আমি আর টেরেসা সেভাবেই যাচ্ছি। যেতে যেতে টেসি আমার কাছে ওই বড় ভাইটি সম্পর্কে জানতে চাইল। শুনে বলল, ও তোমার ভালো বন্ধু নয়। সে বলেছে কি জানো? জানাল, জাহাঙ্গীর তো চলে যাবে পাকিস্তানে, কিন্তু আমি এখানে থাকব কয়েক বছর। তাই তুমি আমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করো। বাঙালির এই হ্যাংলাপনা সত্যিই কষ্টদায়ক!
শিকাগোর কথায় আসি। হেনরি মুর, বারবারা হেপওয়ার্ত, মাতিস, পিকাসো এঁদের কাজ প্রচুর রয়েছে সেখানে। সঙ্গে আমেরিকান 888sport live chatীদের কাজ তো রয়েছেই, বিশেষ করে ইম্প্রেশনিস্টদের কাজ। যার মধ্যে থিয়োডোর রবিনসন, থিয়োডোর বাটলার, এলমার শোফিল্ড, মেরি ক্যাসাট, উইলিয়াস মেটকাফ, উইলিয়াম ভান্নাহ উল্লেখযোগ্য। জন মারিনের কাজের প্রভাব পড়েছিল আমার জলরঙের 888sport live chatকর্মে। ওর কম্পোজিশন দারুণ। রিয়েলিস্টিক ও অ্যাবস্ট্রাকশনের মিশেলে ওর কাজের একটা বিশিষ্টতা ছিল। ওখানে অনেক স্কেচ করেছি, যার ভেতর ল্যান্ডস্কেপ ও ফিগারও ছিল। কিছু কাজ শুধু ব্ল্যাক লাইন দিয়েই কাজ করা। মেক্সিকোতে রেড ইন্ডিয়ানদের বাড়িঘর নিয়েও কাজ করেছি, যা খুব প্রশংসিত হয়। ফলে বেশ অনেক কাজ বিক্রি হয়ে গিয়েছিল। হামিদুর রহমানের বাসায় থাকার সময় এক স্প্যানিশ 888sport live chatীর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। তিনিও ম্যুরাল শিখতেন। ওই 888sport live chatী আমার কাজ খুব পছন্দ করতেন। তাঁর কাজের মধ্যে আমার কাজের ধারা আনার চেষ্টাও করেছিলেন। ভদ্রলোক দুপুরে খেতেন না, যদি না কিছু না কিছু আঁকা তাঁর পক্ষে সম্ভব হতো। তিনি বলতেন, খাবার আমাকে উপার্জন করে নিতে হবে ছবি আঁকার মাধ্যমে।
888sport apps থেকে আমার যেসব ছবি নিয়ে গিয়েছিলাম সেসব ল্যান্ডস্কেপ ও ড্রইং ওরা খুবই পছন্দ করেছিল। ফলে সেসব বিক্রি হতে সময় লাগেনি। ওখানে একটা উদ্দামতার ভেতর দিয়েই দিনগুলো কেটেছে। 888sport appsে আমার 888sport promo codeসঙ্গের অভাব ঘটেনি কখনো। গল্পবাজ, গান-জানা পুরুষদের মেয়েরা পছন্দই করে। আর আমেরিকা তো ওপেন সোসাইটি। ওখানে কত বান্ধবীই না আমার জুটেছিল। আমার গাইড অ্যান আমাকে ওদের বাসায় থাকার জন্য নিয়ে এসেছিল। বিশেষ করে তার কথা মনে পড়ে। তিনি অবশ্য বিবাহিত ছিলেন। বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি। তার স্বামী তার বাবারই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। ভদ্রলোক সকালবেলা নাকেমুখে খাবার গুঁজে দৌড়তেন অফিসে। বাবার অফিস তো কী হয়েছে? তাঁকে ছয় গ্রেড প্রমোশন পেতে হবে – সেজন্যেই এত সাধনা আর পরিশ্রম। ওই গাইড মহিলা আমাকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন সে-দেশে থেকে যাওয়ার। যখন থাকবই না জানল, তখন বলেছিল, চলো দূরে কোনো জায়গা থেকে কিছুকালের জন্য দুজনে বেড়িয়ে আসি। এত অনুরক্ত ছিল সেই ভদ্রমহিলা।
ওখানে সে-সময় বিমূর্ত ছবির প্রচলন ঘটে গেছে ভালোভাবেই। আমি লক্ষ করে দেখেছি, দর্শকরা ছবি দেখে আনন্দ পেলেও ছবির বিষয়বস্ত্ত বুঝতে চাইতেন। পৃথিবীর সর্বত্রই বোধ হয় মানুষ 888sport live chatকলা বুঝতে চায়। একসময় আমরা মেঘের খেলা, রংধনু – এসব দেখে মুগ্ধ হতাম। এসব কী ও কেন তা কি বুঝতে চাইতাম? মানুষ বিমূর্ত ছবি পছন্দ করলেও ছবির মর্মার্থ বুঝতে চায়। ‘আত্মার উজ্জীবন’ নামে একটা সিরিজ ছবি আছে আমার। ওটা বিমূর্ত হলেও তা বুঝতে অসুবিধে হবে না। এরকম সবসময় হয় না। তবে এটা ঠিক বিমূর্ত ছবির ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়ার ফাঁক রয়েছে। নেচার নাম দিয়ে কত কিছুই চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যখন আর কিছুই বোঝানো সম্ভব হয় না, তখন কেউ কেউ ছবির নাম দিয়ে দেন ‘আনটাইটেলড’। মানে শিরোনামহীন। এটা কিছুটা অনৈতিক মনে হয়। তুমি কী আঁকছ তুমি নিজে তো জানো। তাই সেটার নাম দিতেই হবে। তবে গোটা জীবনে 888sport live chatী এমন ছবিও এঁকে ফেলতে পারেন সত্যি সত্যি তাকে সংজ্ঞায়িত করা চলে না। এমন ছবি গোটা জীবনে দু-চারটের বেশি থাকতে পারে না। সেগুলোর নাম শিরোনামহীন দেওয়া যেতে পারে বটে।
সেই পঞ্চাশের দশকে 888sport appয় তো কোনো আর্ট গ্যালারি বা চিত্রশালা ছিল না। তাই আমেরিকার আর্ট গ্যালারি আর মিউজিয়ামগুলো দেখে আমার ধারণা স্পষ্ট হলো সেসব সম্পর্কে। পরে বুঝলাম, আমার বিদেশি বন্ধুরা কেন চেয়েছিলেন আমি আমেরিকায় যাই। আসল উদ্দেশ্য হলো, একজন 888sport live chatীকে কেবল ছবি আঁকলেই চলবে না, তার প্রদর্শনের সংস্কৃতি এবং সংরক্ষণের রীতিনীতি – এসব সম্পর্কেও সম্যক ধারণা রাখতে হবে। আলো ও আর্দ্রতার নিয়ন্ত্রণও যে ছবি সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে, সেটাও আমার প্রথম শেখা ওখানে গিয়ে। আমার 888sport slot gameের সার্থকতা এখানেই। আমি অনেক বছর পরে যখন সদ্য স্বাধীন একটি দেশের 888sport live chatকলাবিষয়ক জাতীয় প্রতিষ্ঠানের একটি শাখার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ শুরু করব, তখন এসব অভিজ্ঞতাই তো আমার সঞ্চয় ও পাথেয় হয়ে জাগরূক রইবে। তারও অনেক আগে রাওয়ালপিন্ডিতে একটি কমার্শিয়াল আর্ট গ্যালারির গোড়াপত্তনই করি আমি ওই প্রেরণা থেকেই তো। গ্যালারির নাম দিয়েছিলাম ‘গ্যালারি কো-অপ’। আর্ট প্রমোট করা আমার কাজের একটা অংশ হয়ে দাঁড়াল ধীরে ধীরে। 888sport appর সব গুরুত্বপূর্ণ 888sport live chatীর 888sport live chatকর্ম ওই আর্ট গ্যালারিতে প্রদর্শন ও বিক্রির ব্যবস্থা আমি করেছিলাম।
আধুনিক যন্ত্রসভ্যতার অগ্রযাত্রা আমি দেখেছি আমেরিকায়। ট্রেনে দেখেছি ছোট্ট একটি কামরায় ভাঁজ করা বিছানা, কমোড, বেসিন ইত্যাদি। জানালাগুলো বিশাল। বাইরের দৃশ্য দেখার জন্য। আবার পর্দা দিয়ে ঢেকে দিলে পুরো অন্ধকার। প্রাইভেসি এরই নাম।
নায়াগ্রা ফলস (জলপ্রপাত) দেখার অভিজ্ঞতাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঘোড়ার খুরের মতো ঘুরে গেছে একটা জায়গা, নাম তার ‘হর্সশু ফলস’। ওখানে কাঠের সিঁড়ি বেয়ে হেঁটে হেঁটে নেমে আসা যেত। এখন শুনেছি সেখানে লিফট লেগেছে। মজার মজার কথা লেখা ছিল ওখানে। ‘ডোন্ট পার্ক হেয়ার’, ‘বি ওয়্যার অব পিকপকেট’ এইসব। আমেরিকার সাইড থেকে কানাডার সাইডে গেলাম রাতের আলোকচ্ছটা দেখতে। জলপ্রপাতের খুব কাছে গিয়ে দেখলাম খুব তীব্র গতিতে পানি প্রবহমান। সেখানকার পানি নিচে পড়ার আগে ওপরের অংশ দুই ফুট মতো উঁচু যেন জেলির মতো থকথকে। কেটে নেওয়া যাবে ইচ্ছে করলে। অথচ তীব্র স্রোতস্বিনী। দূরে তার পতন দেখেই বিষয়টা আঁচ করা যায়। এ নিয়ে বেশ কিছু ছবিও এঁকেছি। নিথর স্বচ্ছ জলের ছবি। আবার উত্তাল বিস্ফারিত জলের ছবি।
আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গরা আমাকে ঈর্ষাই করত, ক্ষোভও ছিল আমার প্রতি। কারণ ওখানে আমার বাদামি চামড়া নিয়ে শ্বেতাঙ্গ আমেরিকানদের বাড়িতে আমার ছিল অবাধ যাতায়াত। ওরা যেতে পারত না। ওখানে বর্ণবৈষম্য এমনই প্রকট হয়ে উঠেছিল তখন। ভারতের একটা বাঙালি ছেলেকে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকরা এক সন্ধ্যায় বিয়ারের ভাঙা বোতল দিয়ে নৃশংসভাবে ক্ষতবিক্ষত করে মেরে ফেলার খবর এসেছিল কাগজে। আমার ভয় ধরে গেল। ওয়াশিংটন ডিসিতে বাস থেকে নেমে চার্চ স্ট্রিটের বাসায় আসতে কিছুটা পথ আমাকে হাঁটতে হতো। ওই সময় কৃষ্ণাঙ্গ কোনো মানুষ দেখলে ভয়ে আমি দৌড় দিতাম।
এর উলটো চিত্রও রয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে নিউইয়র্ক যাওয়ার সময় গ্রে হাউন্ড বাসের একটা ঘটনা মনে পড়ে। রাত হয়ে গেছে। সব বাতি বন্ধ। আমার পাশে কৃষ্ণাঙ্গ এক 888sport promo code কখন এসে বসেছে জানি না, আমি ঘুমিয়েছিলাম। আমার কাছে লাইটার চাইল সিগারেট ধরানোর জন্য। আমি ধরিয়ে দিলাম এবং ওই বাতিতে তাকে দেখলাম ভালো করে, সুন্দরী। অনেক প্রশ্ন করল। গল্প জমে উঠল। ও নিউ হ্যাভেনে নামার আগে বলল, তুমি যাবে নাকি আমার বাড়িতে? আমার বিশেষ কিছু জরুরি কাজ ছিল না। আর একটু নতুনত্বের স্বাদ নিতে আগ্রহ হলো। তাই নেমে পড়লাম ওর সঙ্গে। রীতিমতো অ্যাডভেঞ্চার। ওর বাসায় থাকতাম আর ঘুরে ঘুরে বেড়াতাম। একটা নাইট ক্লাবে আমাকে নিয়ে গিয়েছিল ওই মহিলা। সেখানে সাদা চামড়ার কোনো ব্যক্তির ঢোকার অনুমোদন নেই। সে এক আনন্দময় অভিজ্ঞতা। উদ্দাম নাচ-গান-উপভোগ। এত বাধাবন্ধনহীন বৈচিত্র্যপূর্ণ ওদের গান। বড় ভালো লেগেছিল। কৃষ্ণাঙ্গদের ওই বিচ্ছিন্ন জীবন বেশ কষ্টকর। বেশি জড়িয়ে পড়ার ভয়ে এক সকালে চলে গেলাম নিউইয়র্কে।
১৯৫৯ সালে 888sport appয় ফিরে এলাম। প্রথমেই গেলাম গ্রামের বাড়িতে মায়ের দোয়া নিতে। মা অপেক্ষা করছিলেন একডালা ফুল নিয়ে, যা আমার মাথায় ঢেলে দিয়ে বুকে জড়িয়ে আদরে আদরে ভরে দিলেন। আববা খুব বেশি আবেগ প্রকাশ না করলেও, খুব খুশি হয়েছেন তা কথাবার্তায় বুঝিয়ে দিলেন। দুজনকেই শোনাতে হলো সংক্ষেপে আমেরিকা 888sport slot game কাহিনি। এদিকে জাফর ভাই এবং ভাবি নার্গিস জাফরও তাঁদের আনন্দ প্রকাশ করতে ভুললেন না। আমি যথারীতি তাঁদের তারাবাগের বাসায় আমার স্টুডিওতে (বাড়িসংলগ্ন দুটো ছোট কামরা) এসে ছবি আঁকতে শুরু করলাম। তখন গুলিস্তানের কাছে ক্যাসবাহ বলে একটা এক কামরার ছোট্ট রেস্টুরেন্ট ছিল। চালাতেন এক অবাঙালি ভদ্রলোক। ওখানে আড্ডা দিতাম আমরা। সে-সময় প্রেস ক্লাবে আড্ডা দিতে যেতাম হাসান হাফিজুর রহমান, দেবদাস চক্রবর্তী, সাইয়িদ আতীকুল্লাহ, সাদেক খান এবং আরো অনেকে। ভাবলাম, এখানেই হতে পারে আমার চিত্র-প্রদর্শনী। ত্রিশ-পঁয়ত্রিশটা কাজ নিয়ে প্রদর্শনী করলাম। জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসানসহ অনেক 888sport live chatী এসেছিলেন ছবি দেখতে। বিক্রি খুব বেশি না হলেও অনেক দর্শক পেলাম। এক ডেনিশ স্থপতি ডুলুর্যাঁ সে-সময়ে পিডব্লিউডিতে কাজ করতেন। 888sport live chatকলা একাডেমির পুরনো ভবনসহ বেশ কিছু ভবনের ডিজাইন তিনি করেছিলেন। ওই ভদ্রলোকের মেয়ে বিন্তের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বন্ধু সাদেক খান এসে আমাকে ধরল। আমাকে বলল, ওদের বন্ধুত্ব করিয়ে দিতে হবে। কিন্তু আমি তো মেয়েটিকে চিনি না। পরে প্রদর্শনী চলাকালে ক্যাসবাহ রেস্টুরেন্টে আমি ওদের দাওয়াত দিলাম এবং সাদেক খানকে মেয়েটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিলাম। ডেনিশ ভদ্রলোক আমার ছবি কিনলেন। ক্যাসবাহ রেস্টুরেন্টে আর্ট এক্সিবিশন সফল হওয়ায় 888sport live chatীদের ভেতর এমন ধারণা জন্মাল যে, চিত্র-প্রদর্শনীর জন্য ঘর ভাড়া না নিলেও চলে। জমজমাট কোনো খাবারঘরেও এটা করা সম্ভব। একদিন প্রেস ক্লাবে গিয়ে দেখি সাদেক খানের পার্টি হচ্ছে। ওই ডেনিশ মেয়েদের নিয়েই সাদেক খান পার্টি করছে, অথচ আমাকে জানায়নি। কিছুদিন পর গুলিস্তান থেকে সিনেমা দেখে ফিরছি। সাদেক খান পরিচয় করিয়ে দিলো জহরত আরার সঙ্গে। জহরত আরা 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তুখোড় মেয়ে। তখন হাতেগোনা মাত্র তিন-চারজন মেয়েই ছিল স্মার্ট এবং বেপরোয়া। জহরত আরা ছিল তাদের মধ্যে একজন।
আমেরিকা 888sport slot game শেষে, উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, প্রায় বিশটা স্টেট 888sport slot game করলেও অনেক স্টেটের কথা এখন আর তেমন 888sport app download for android নেই, তাই সেগুলোর উল্লেখ করিনি। 888sport slot gameের নির্ধারিত তিন মাস উত্তীর্ণ হওয়ার পর নিজ ব্যয়ে দৈনিক ভাতার টাকা জমিয়ে এবং পরবর্তী সময়ে ছবি বিক্রি করে আরো মাসছয়েক ওখানে থেকে যাই। এই সময়ের পুরোটাই মারিয়ান্থের সহযোগিতায় প্রদর্শনী আয়োজন ও নিউইয়র্ক, ফিলাডেলফিয়া আর ওয়াশিংটন ঘুরে বেড়ানো সম্ভব হয়েছিল। এ ছিল এক অবি888sport app download for androidীয় অভিজ্ঞতা। আজ প্রায় ছাপ্পান্ন বছর পরও বহু ঘটনা 888sport sign up bonusতে উজ্জ্বল হয়ে আছে। যেসব 888sport live chatীর দেখা কাজ এখনো চোখে ভাসে তাঁদের মধ্যে পল ক্লি, যিনি বলেছিলেন, ‘becoming is superior to being’, কথা আর কাজে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। আরো মনে পড়ে মিরো, গয়া, কেন্ডেনিস্কি, সেজান, ডালি, মনে, ম্যানে, মদিগ্লিয়ানি, ভ্যান গঘ, গগ্যাঁ, রেমব্রাঁ, ল্যুত্রে এমনি সব আরো কত নাম। এঁদের প্রত্যেকেরই কাজ কোনো না কোনো গ্যালারিতে দেখা হয়েছে।
২০১০ সালে আবার যখন আমেরিকা গেলাম। দেখলাম সেখানে আমূল পরিবর্তন। ’৫৮ সালে যখন আমেরিকায় ছিলাম তখন বলতে গেলে কোনো বাঙালিকেই দেখিনি, দূতাবাসের দু-একজন ছাড়া। আর এবার দেখলাম হাজার হাজার বাঙালি। আগের দিনের মার্কিনিরা এখন আর তেমন উদারমনা নয়। রাস্তাঘাট নতুন নতুন তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে ওয়াশিংটন থেকে নিউইয়র্ক যেতে রাস্তার বিস্তার ও প্রশস্তি এবং মাঝে মাঝে বিরতির স্থানগুলো বিশেষভাবে চোখে পড়ে। এক কথায় বলতে গেলে, আমেরিকা 888sport slot game ছিল আমার 888sport live chatীজীবনের অভিজ্ঞতা ও অগ্রগতির সোনালি সোপান।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.