প্রসঙ্গকথা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ : মতিন রায়হান
প্রসঙ্গকথা
কলিম শরাফী। জন্ম ৮ মে ১৯২৪। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার খয়রাডিহি গ্রামে। ভারত উপমহাদেশের জাতীয় আন্দোলনসহ নানা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। নিবেদিতপ্রাণ এই রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী যখন দশম শ্রেণির ছাত্র তখন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ডাকে ‘হলওয়েল মনুমেন্ট’ অপসারণের আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৪২ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষাশেষে ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে যোগ দিয়ে প্রথম কারাবরণ করেন। সিউড়ি জেলে পরিচয় ঘটে বিখ্যাত সব কংগ্রেস নেতার সঙ্গে। এগারো মাস জেলে থাকাকালে প্রণব গুহঠাকুরতার কল্যাণে রবীন্দ্রসংগীত গাইতে শুরু করেন। জেলে তাঁদের ‘স্বদেশি বাবু’ বলে সম্বোধন করা হতো। কলিম শরাফী ছিলেন একমাত্র মুসলিম ‘স্বদেশি বাবু’। রাজনীতি সংশ্লিষ্টতার কারণে ভর্তি হতে পারলেন না শান্তিনিকেতনে। দেশজুড়ে পঞ্চাশের মন্বন্তর শুরু হলে কলিম শরাফীরা দলবেঁধে গাইতে শুরু করেন নবজীবনের গান। অংশ নেন লঙ্গরখানার খাবার বিতরণেও। রাতদিন খাটাখাটুনিতে এক পর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাওয়াবদলের জন্যে যান দার্জিলিংয়ের কালিম্পংয়ে। সেখানে পরিচয় ঘটে ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে। ১৯৪৫ সালে সেখানে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। কেবল অর্থনৈতিক কারণেই মেডিক্যালের পড়া ছেড়ে দিয়ে কলকাতায় ফিরে আসেন। এ-খবর পেয়ে ‘কাকাবাবু’মানে মুজফ্ফর আহমদ খুব কষ্ট পান। ১৯৪৩ সালেই যোগ দিয়েছিলেন ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনে (আইপিটিএ) অর্থাৎ গণনাট্য সংঘে। ১৯৪৬ সালে ভর্তি হয়েছিলেন কৃষ্ণনাথ কলেজে। সে-বছরই দাঙ্গা শুরু হলে তিনি ‘বর্ডার গার্ডে’র দায়িত্ব পালন করেন। তখন হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের জন্যে মহল্লায় মহল্লায় কাজ করে বেড়ান। এইচএমভি থেকে একই বছরই বের হয় তাঁর গণসংগীতের একটি রেকর্ড। গুরু শুভ গুহঠাকুরতার ‘দক্ষিণী’তে শুরু হয় তাঁর নিয়মিত রবীন্দ্রসংগীত-চর্চা। গণনাট্যের কার্যক্রমও অব্যাহত থাকে। একসময় শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন ‘দক্ষিণী’তেও। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলে কলকাতায় আবার দাঙ্গা শুরু হয়। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৯৫০ সালে চলে আসেন 888sport appয়। তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে দিয়ে গানের রেকর্ড উদ্বোধন তাঁর জীবনের অবি888sport app download for androidীয় ঘটনা। নানামুখী কর্মের পাশাপাশি সংগঠন তৈরি ও পরিচালনাও অব্যাহত থাকে। প্রগতিশীল চিন্তাচেতনার জন্যে বিভিন্ন সময় পাকিস্তান সরকারের রোষানলেও পড়তে হয় তাঁকে। সংগীত সাধনার পাশাপাশি একসময় live chat 888sport পরিচালনায়ও নিজের নাম লেখান। ১৯৬৪ সালে 888sport appয় টিভি সেন্টার চালু হলে তিনি ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দেন। রবীন্দ্রসংগীতপ্রীতির জন্যে সে-চাকরিতে ইস্তফাও দিতে হয়। ছিলেন উদীচীর উপদেষ্টা। 888sport apps টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের জেনারেল ম্যানেজারও ছিলেন। সংগীতশিক্ষার প্রতিষ্ঠান ‘সঙ্গীত ভবনে’র প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষও ছিলেন তিনি। রবীন্দ্রসংগীতে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় 888sport cricket BPL rateে পদক ও স্বাধীনতা দিবস 888sport app download bd।
ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল ম্যাগাজিন ক্যানভাসের ‘আলোকিত ব্যক্তিত্ব’ বিভাগে এই কৃতী মানুষটির জীবন ও কর্ম নিয়ে একটি নাতিদীর্ঘ ফিচার লেখার লক্ষ্যে তাঁর মুখোমুখি হয়েছিলাম ২০০৭ সালের ১ অক্টোবর 888sport appর নিউ বেইলি রোডের বেইলি হাইটসে। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক আমাদের শোনালেন তাঁর জীবনের জানা-অজানা সব গল্প। আর সেই সাক্ষাৎকারের আলোকেই তৈরি করেছিলাম ক্যানভাসের সেই লেখাটি। বরেণ্য এই রবীন্দ্রসংগীত888sport live chatী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মৃত্যুবরণ করেন ২০১০ সালের ২ নভেম্বর। মৃত্যুর এক দশক পর এসে মনে হলো পুরো সাক্ষাৎকারটি এখনই গ্রন্থনা করা দরকার। আর এ-চিন্তা থেকেই পুরো সাক্ষাৎকারটি ভবিষ্যতের পাঠকদের জন্যে সযত্নে গ্রন্থনা করা হলো। – লেখক
মতিন রায়হান : কেমন আছেন আপনি?
কলিম শরাফী : ভালো আছি। আপনারা?
মতিন রায়হান : আমরাও ভালো আছি। শুরুতেই আপনার জন্ম, জন্মস্থান ও শৈশবের কথা শুনতে চাই।
কলিম শরাফী : আমার জন্ম নানাবাড়িতে। ১৯২৪ সালের ৮ মে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার খয়রাডিহি গ্রামে। আমার বাবার নাম সৈয়দ সামী আহমেদ শরাফী। আর মায়ের নাম বেগম আলিয়া। আমাদের পূর্বপুরুষ ছিলেন 888sport appর সোনারগাঁওয়ের বাসিন্দা হজরত আবু তামামার শিষ্য ও জামাতা মাখদুম শারফুদ্দীন ইয়াহিয়া মানেরি। ইয়াহিয়া মানেরি ছিলেন বিহার শরিফের পির। মজার ব্যাপার হলো, আমাদের পারিবারিক ব্যবসা ছিল সিনেমা হলের ব্যবসা। আমার বাবাকেও সিনেমা হল দেখাশোনা করতে হয়েছে। মাত্র চার বছর বয়সেই মাকে হারাই। মায়ের মৃত্যুর 888sport sign up bonus এখনো আমার মনে গেঁথে আছে।
মতিন রায়হান : আমাদের তা শোনাবেন?
কলিম শরাফী : নিশ্চয়ই। মাকে যখন হারাই তখন আমার বয়স মাত্র চার। আমাদের বাড়িটি ছিল শহর থেকে একটু দূরে। মা খুব অসুস্থ। মামা তাড়াহুড়ো করে ডাক্তার আনতে চলে গেলেন শহরে। বাড়ির সবার মন খারাপ। মায়ের চারপাশ ঘিরে সবাই সেবা করছে। কেউ কেউ আবার কাঁদছেন। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কখন মামা ডাক্তার নিয়ে আসবেন! অল্প সময়ের মধ্যেই মামা ডাক্তার সাহেবকে নিয়ে বাড়ি এলেন। ডাক্তার সাহেব অনেকক্ষণ ধরে মাকে নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেন। আমার মামা তখন আমাকে অতি আদরে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন। আর ডাক্তারের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছেন। একসময় ডাক্তার সাহেব মুখ ভার করে বললেন : ‘কোনো আশা নেই!’ সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির সবার মধ্যে কান্নার রোল পড়ে গেল। সবাই আমাকে আদর করছে, কোলে নিচ্ছে। আস্তে আস্তে পাড়া-প্রতিবেশী আর আত্মীয়স্বজনে বাড়ি ভরে গেল। মা কথা বলছেন না, চোখ খুলছেন না। চুপচাপ শুয়ে আছেন। সবাই মায়ের মুখ দেখছেন। একপর্যায়ে মাকে ঘরের বাইরে নেওয়া হলো। কেউ বলছেন, তাড়াতাড়ি লাশের গোসল দাও। দাফনের ব্যবস্থা করো। মাকে গোসল দেওয়া হলো। সাদা কাফনের কাপড় পরানো হলো। কবর খোঁড়ার সময় মামা আমাকে কবরস্থানে নিয়ে গেলেন। আমি কবর খোঁড়া দেখলাম। জানাজার পর কবরস্থানে মায়ের লাশ দাফন করা হলো।
এসব ঘটনার সবই আমার স্পষ্ট মনে আছে। আমার এও মনে আছে, মা মারা যাওয়ার তিন-চারদিন আগে আমাকে জড়িয়ে ধরে নানিকে বলেছিলেন : ‘মা, আপনি আমার বাচ্চাদের দেখবেন; আমি মনে হয় আর বেশিদিন বাঁচবো না!’
মতিন রায়হান : খুব অল্প বয়সে মাকে হারালেন!
কলিম শরাফী : হ্যাঁ। কিন্তু চোখের সামনে মায়ের মৃত্যুর ঘটনাটি সেই শৈশবে বুঝে উঠতে পারিনি। তারপর আমি নানির আদরেই বড় হয়েছি। কিছুকাল পরে আব্বা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। আমি বড় হয়ে আব্বার সংসারেই ছিলাম। আমার নতুন মাও আমাকে আদর-স্নেহ করতেন। আমার মায়ের 888sport sign up bonus এখনো আমার মনে জীবন্ত হয়ে আছে।
মতিন রায়হান : আপনার ছেলেবেলার কথা শুনতে চাই।
কলিম শরাফী : মায়ের মৃত্যুর পর আমার ছেলেবেলা কেটেছে নানাবাড়িতেই। নানি ও মামাদের স্নেহ এবং আদরে বড় হয়েছি। নানাদের গ্রামে যেন সারাবছরই উৎসব লেগে থাকতো। সেসব উৎসবে মেঠো, ঝুমুর, লেটো ইত্যাদি গান হতো। একটু দূরের হিন্দুপাড়ায় রোজ সন্ধ্যায় কীর্তন হতো। আমরা ঘরে বসেই সেসব শুনতে পেতাম। সেই দিনগুলো খুব মধুর ছিল।
মতিন রায়হান : আপনার লেখাপড়ার হাতেখড়ি কীভাবে হলো?
কলিম শরাফী : নানার বাড়িতেই আরবি ওস্তাদজি ও বাংলা পণ্ডিত মশাইয়ের কাছে আমার লেখাপড়ার হাতেখড়ি। ১৯২৯ সালে আমাকে তাঁতিপাড়া পাঠশালায় ভর্তি করা হলো। এখানে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করি। তারপর কলকাতায় বাবার কাছে চলে যাই। সেখানে ১৯৩৪ সালে আবার তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। সেন্ট বার্নাবাস স্কুলে। তার পরের বছর ক্যালকাটা মাদ্রাসায় অ্যাংলো-পার্শিয়ান বিভাগে চতুর্থ শ্রেণিতে ভর্তি হই। মাদ্রাসার ইংরেজি বিভাগে পড়তে থাকি।
শৈশবে স্যারের সঙ্গে সুর করে পড়া মুখস্থ করতাম। শিক্ষার এই পদ্ধতিটা শিশুদের জন্যে বেশ কার্যকরী। এভাবে পড়তে পড়তে ছাত্ররা যা শিখতো, তা সারাজীবনের জন্যে মনে গেঁথে যেতো।
মতিন রায়হান : মাদ্রাসা জীবনের কোনো ঘটনা-888sport sign up bonus মনে আছে?
কলিম শরাফী : ক্যালকাটা মাদ্রাসাতে সহপাঠী হিসেবে পেলাম শহীদুল্লা কায়সারকে। আমরা যখন দশম শ্রেণির ছাত্র তখন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ‘হলওয়েল মনুমেন্ট’ অপসারণের আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনে আমরাও অংশগ্রহণ করি।
মতিন রায়হান : এভাবেই কি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়লেন?
কলিম শরাফী : হ্যাঁ, ঠিক এভাবেই শুরু হলো। ব্রিটিশশাসিত ভারতবর্ষ তখন আন্দোলনমুখর। চারদিকে চলছে ব্রিটিশরাজের নিগ্রহ। তবে আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্য ছিলাম না। একবার এক মিছিলে হঠাৎ করেই পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। অনেকের সঙ্গে আমিও আহত হই। এসময় আমার বন্ধু শহীদুল্লা কায়সার ও আমার সঙ্গে পরিচয় ঘটে রউফ ভাইয়ের। তিনিই আমাদের রাজনীতির শিক্ষাগুরু। এই আন্দোলন থেকেই আমরা শিখতে পেরেছি মেহনতি জনগণ অর্থাৎ কৃষক-শ্রমিকের দুরবস্থা নিরসনের জন্যে কীভাবে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। সে-সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা ক্রমশ বাড়ছিল। কলকাতা শহরে বোমা পড়ছে। লোডশেডিং হচ্ছে। চারদিকে কী এক অস্থিরতা! এই পরিস্থিতিতে ম্যাট্রিক পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া হলো। আমি ফিরে যাই বীরভূমে। সেখান থেকেই ম্যাট্রিক পরীক্ষা দিই ১৯৪২ সালে।
মতিন রায়হান : যুদ্ধের মধ্যেই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলো?
কলিম শরাফী : হ্যাঁ।
মতিন রায়হান : পরীক্ষাশেষে কী করলেন?
কলিম শরাফী : তখন ব্রিটিশ শাসকের বিরুদ্ধে গান্ধীজির ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলন চলছে। আমিও সেই আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ি। গ্রামে গ্রামে ঘুরে এই আন্দোলনের সমর্থনে সভা করতে শুরু করি। আন্দোলন ঠেকাতে ব্রিটিশরাজ আন্দোলনকারীদের গ্রেফতার শুরু করে। ডিফেন্স অব ইন্ডিয়া অ্যাক্টের আওতায় আমিও বাড়ি থেকে গ্রেফতার হই। তখন ১৯৪২ সালের আগস্ট মাস। গ্রেফতারের পর ঘটে এক অভাবনীয় ঘটনা। মুহূর্তের মধ্যেই দেখি জনতার বিশাল ভিড়। গ্রামের লোক একত্রিত হয়ে আমাকে উদ্দেশ করে নানারকম উদ্দীপনামূলক স্লোগান দিচ্ছে। তখন নিজেকে খুব গর্বিত মনে হচ্ছিল। আমি তখন নিশ্চিত হলাম যে, এই আন্দোলনের সঙ্গে জনগণ আছে এবং তারা আমাকে ভালোবাসে। মনটা নিমিষেই ভয়শূন্য হয়ে গেল।
মতিন রায়হান : গ্রেফতারের পর আপনাকে কোথায় নিয়ে গেল?
কলিম শরাফী : আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো সিউড়ি জেলে। সেখানে সঙ্গী হিসেবে পেলাম বীরভূম জেলার কংগ্রেস নেতা কামদাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, কুমিল্লা অভয় আশ্রমের হেনাদি, বিখ্যাত কবিরাজ নৃসিংহ সেন, আনন্দ গোপাল সেনগুপ্ত, শ্রীমতি রাণী চন্দ, শ্রীমতি নন্দিতা কৃপালিনী (বুড়িদি), সুহাস দে, দিনকর কৌশিক, প্রণব গুহঠাকুরতা প্রমুখ রাজনৈতিক বন্দিকে। জেলে দিনকর কৌশিক, আনন্দ গোপাল সেনগুপ্ত ও প্রণব গুহঠাকুরতার সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব হয়। প্রণব জেলে সবসময় রবীন্দ্রসংগীত গাইতেন। আমিও তাঁর সঙ্গে রবীন্দ্রসংগীত গাইতে শুরু করি। এই জেলে তখন আমিই একমাত্র মুসলমান রাজবন্দি। যাঁদের কথা বললাম, এঁদের প্রায় প্রত্যেকেই জীবনে বিখ্যাত হন। শ্রীমতি রাণী চন্দ, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে লেখা বই ঘরোয়ার জন্যে বিশেষ খ্যাত। শ্রীমতি নন্দিতা কৃপালিনী (বুড়িদি), রবীন্দ্রনাথের নাতনি; চিত্র888sport live chatী সুহাস দে – প্রখ্যাত চিত্র888sport live chatী ও কলকাতা গভর্নমেন্ট আর্ট স্কুলের অধ্যক্ষ মুকুল দে-র ছোটভাই। আর মহারাষ্ট্রের দীনকর কৌশিক ছিলেন তখন শান্তিনিকেতন কলাভবনের ছাত্র, পরবর্তী সময়ে কলাভবনের অধ্যক্ষ ও নামকরা চিত্র888sport live chatী হন। কংগ্রেস নেতা শ্রী কামদাপ্রসাদ বর্তমানে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বাবা।
মতিন রায়হান : জেলে আপনাদের দিন কাটতো কীভাবে?
কলিম শরাফী : প্রায় ১১ মাস জেলে বন্দি ছিলাম। জেলে ঢুকেও আমরা থেমে থাকিনি। জেলের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-আন্দোলন করতাম, এমনকি হাঙ্গার স্ট্রাইকও। জেলে আমাদের ‘স্বদেশি বাবু’ বলে সম্বোধন করা হতো। আমি ছিলাম একমাত্র মুসলিম ‘স্বদেশি বাবু’। এর মধ্যে ম্যাট্রিকের রেজাল্টও বের হয়ে যায়। আমি ভালোভাবেই পাশ করি।
মতিন রায়হান : জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর কী করলেন?
কলিম শরাফী : জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর প্রণব গুহঠাকুরতা আমাকে ভর্তির উদ্দেশ্যে নিয়ে গেলেন শান্তিনিকেতনে। কিন্তু রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে শান্তিনিকেতনে ভর্তি হওয়া গেল না। সেখান থেকে ফিরে ভর্তি হলাম হেতমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজে। এটা ১৯৪৩ সালের ঘটনা। এখানে ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য হই। শুরু হলো পঞ্চাশের মন্বন্তর। দলে দলে মানুষ খাবারের সন্ধানে শহরে ছুটে আসতে লাগলো। চারদিকে নিরন্ন মানুষের হাহাকার। এ সময় বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে যোগ দিই এবং দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়াই। দেশে তখন চলছে চরম দুর্ভিক্ষ। সংগঠনগুলো লঙ্গরখানা খুলে খিচুড়ি খাওয়াতে শুরু করলো। আমিও খাবার বিতরণে যোগ দিই। এ-সময় কবি জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র নবজীবনের গান লিখতে শুরু করলেন। আমরা খাবার বিতরণের পাশাপাশি দলবেঁধে নবজীবনের গান গাইতে শুরু করলাম। রাতদিন খাটাখাটুনিতে একসময় অসুস্থ হয়ে পড়ি। চলে যাই দার্জিলিংয়ের কালিম্পংয়ে। সেখানে পরিচয় ঘটে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা কমরেড মুজফ্ফর আহমদের সঙ্গে। এটি আমার জীবনে এক মহা888sport app download for androidীয় ঘটনা। মুজফ্ফর আহমদকে আমরা ডাকতাম ‘কাকাবাবু’। ১৯৪৫ সালে ভর্তি হলাম ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলে। কাকাবাবু সবার খোঁজখবর রাখতেন। কার কী সুবিধা-অসুবিধা দেখতেন। অনেকটা অর্থনৈতিক কারণেই মেডিক্যালের পড়া ছেড়ে দিয়ে চলে এলাম কলকাতায়। কাকাবাবু পরে সেটা জানতে পেরে খুব কষ্ট পেয়েছিলেন। তিনি অনেককেই বলেছেন, ‘ওর অসুবিধার কথা একটুও জানতে পারলাম না!’
মতিন রায়হান : পড়াশোনা এখানেই কি শেষ হয়ে গেল?
কলিম শরাফী : না। ১৯৪৬ সালে ভর্তি হলাম সিটি কলেজে বাণিজ্য বিভাগে। এর আগে ১৯৪৩ সালেই যোগ দিয়েছিলাম ইন্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েশনে অর্থাৎ আইপিটিএ-তে। দেশের মানুষকে রাজনীতি-সচেতন করে তোলার জন্যে এটি ছিল একটি কারচারাল স্কোয়াড। এ-সংগঠন দ্রুত সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এতদিন যে গান করতাম তাতে গানটা মুখ্য ছিল না। আইপিটিএ বা গণনাট্য সংঘে যোগ দেওয়ার পর গানটা মুখ্য হয়ে ওঠে। বলতে পারি, এখানেই শুরু হলো আমার আসল গান শেখা। দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠান করতাম। অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী গান করতাম। পুরনো দিনের গানও করতাম। গণনাট্য সংঘের উদ্যোগে নাটক মঞ্চায়নও হতো। এ-সময় বন্ধু হিসেবে পেলাম খালেদ চৌধুরীকে।
মতিন রায়হান : গণনাট্য সংঘে যোগ দিয়ে তো সারাদেশ ঘুরে বেড়ালেন। এ-সময়ের অভিজ্ঞতার কথা যদি বলতেন?
কলিম শরাফী : হ্যাঁ, সে-কথাই বলছি। গণনাট্য সংঘেই পরিচয় ঘটে শুভব্রত ঠাকুরতা, দেবব্রত বিশ্বাস, সুচিত্রা মিত্র, সুবিনয় রায়, সলিল চৌধুরী, ঋত্বিক ঘটক, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, বিজন ভট্টাচার্য, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, মুলুকরাজ আনন্দ, খাজা আহমদ আব্বাস, রবিশঙ্কর, শান্তিবর্ধন, বুলবুল চৌধুরী, হেমাঙ্গ বিশ্বাস প্রমুখ কৃতী ব্যক্তির সঙ্গে। আমার সংগীতসাধনার ব্যাপক চর্চা শুরু গণনাট্য সংঘেই। শুভ গুহঠাকুরতা, দেবব্রত বিশ্বাস ও জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের কাছ থেকেই বিশেষভাবে রপ্ত করি রবীন্দ্রসংগীত ও স্বদেশি গান। ছায়ানাট্য শহীদের ডাক নিয়ে ঘুরে বেড়ালাম সারা বাংলা ও আসাম অঞ্চল। এসময় দুর্ভিক্ষে ৫০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটে। এ নিয়ে চারদিকে তীব্র ক্ষোভ আর অসন্তোষের আগুন। এই পরিস্থিতিতে পড়াশোনা আর চালিয়ে যেতে পারলাম না। এখানেই আমার পড়াশোনার ইতি ঘটে।
মতিন রায়হান : ১৯৪৬ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা শুরু হলে তখন আপনি কোথায় ছিলেন?
কলিম শরাফী : দাঙ্গা শুরু হলে আমি গণনাট্যের সদস্য হিসেবে ‘বর্ডার গার্ডে’র দায়িত্ব পালন করি। এসময় শম্ভু মিত্র ও সুধী প্রধানদের সঙ্গে উত্তর কলকাতায় কমিউনে থাকতে শুরু করি। হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের জন্যে মহল্লায় মহল্লায় কাজ করে বেড়াতাম। মুসলিমপ্রধান পার্ক সার্কাস এলাকার পাম প্যালেসের বাসিন্দা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপক কে.পি. চট্টোপাধ্যায়ের বাসা পাহারা দিতাম। দাঙ্গার প্রথমদিকে দেবব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সে-সময় দাঙ্গাবিরোধী নানা কর্মকাণ্ডে অংশ নিই। তখনো আমার গান থেমে থাকেনি। গণনাট্য সংঘে সলিল চৌধুরী ও আমি ছিলাম মিউজিক বিভাগের দায়িত্বে।
মতিন রায়হান : সে-সময় আপনার কি কোনো গানের রেকর্ড বেরিয়েছিল?
কলিম শরাফী : এইচএমভি থেকে আমার গণসংগীতের একটি রেকর্ড বের হয় ১৯৪৬ সালে। তখন আমি কলকাতা বেতারের নিয়মিত 888sport live chatী হই। আমার গানের প্রশংসা করে স্টেটসম্যান পত্রিকায় একটি রিভিউ ছাপা হয়। এসময় একটি মজার ঘটনা ঘটে। পার্ক সার্কাসের অনুষ্ঠানে আমার গান শুনে পরদিন বাড়িতে গিয়ে হাজির হন তড়িৎ চৌধুরী। তিনি আমাকে নিয়ে গেলেন সংগীতগুরু শুভ গুহঠাকুরতার কাছে। আগেই বলেছি, গুরু শুভ গুহর প্রতিষ্ঠান ‘দক্ষিণী’তে শুরু হলো আমার নিয়মিত রবীন্দ্রসংগীত-চর্চা। সকালে দক্ষিণী আর বিকেলে গণনাট্য – এভাবেই চলতে থাকে আমার কর্মকাণ্ড। একসময় দক্ষিণীতে শিক্ষকতাও করেছি। প্রগতিশীল আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলাম বলে প্রশাসন সন্দেহের চোখে দেখতো। ১৯৪৮ সালে আবার গ্রেফতার হলাম। জিজ্ঞাসাবাদের পর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সে-সময় গণনাট্য সংঘের নেতৃত্বে বদল ঘটে। পরিবর্তন আসে নীতিতেও। পরিবর্তিত নীতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে তৎকালীন স্বনামখ্যাত অনেক 888sport live chatী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। কেউ চলে যান বোম্বে।
মতিন রায়হান : আপনি তখন কী করলেন?
কলিম শরাফী : মহর্ষি মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শম্ভু মিত্র, তৃপ্তি মিত্র, অশোক মজুমদার, মোহাম্মদ ইসরাইল ও আমি গণনাট্য সংঘ ছেড়ে গঠন করলাম নাট্য সংস্থা ‘বহুরূপী’। তবে ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র হলে কলকাতায় আবার দাঙ্গা শুরু হয়। মুসলিম হওয়ার কারণে কাজ পাচ্ছিলাম না। দেখা দিলো প্রচণ্ড অর্থকষ্ট।
মতিন রায়হান : দেশভাগের পর এই পরিস্থিতিতে কী সিদ্ধান্ত নিলেন?
কলিম শরাফী : ১৯৫০ সালে সপরিবারে 888sport appয় চলে এলাম। এখানে এসে 888sport app বেতারে ক্যাজুয়াল আর্টিস্ট হিসেবে যোগ দিই। তখন সুকান্তের ‘অবাক পৃথিবী’ গানটি গেয়ে পাকিস্তান গোয়েন্দা দফতরের রোষানলে পড়ি। তবে এর আগে 888sport app থেকে সন্জীদা খাতুন, ফাহমিদা খাতুন, আফসারী বেগম, রাখী চক্রবর্তীকে নিয়ে করাচি যাই। এইচএমভি কোম্পানি থেকে রেকর্ড বের করি। তখন পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। শেখ মুজিবের জনপ্রিয়তাও বাড়ছে। সিদ্ধান্ত নিলাম এই রেকর্ডের উদ্বোধন করাবো শেখ মুজিবকে দিয়ে। তা-ই করলাম। এই ঘটনা আন্তর্জাতিক সংবাদে পরিণত হলো। এসব কারণে পাকিস্তান সরকারের সন্দেহের তালিকায় আমার নাম উঠে যায়। ফলে 888sport appয় থাকা আর সম্ভব হলো না। ১৯৫১ সালে চট্টগ্রামে চলে যাই। জিইটিজেড ব্রাদার্স নামে একটি আমেরিকান কোম্পানিতে যোগ দিই। একই বছর আমেরিকান কোম্পানিটি ছেড়ে যোগ দিই একটি ব্রিটিশ কোম্পানিতে।
মতিন রায়হান : চট্টগ্রামে যাওয়ার পর কি আপনার সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড থেমে গেল?
কলিম শরাফী : না। ১৯৫১ সালেই চট্টগ্রামে গড়ে তুলি ‘প্রান্তিক’ নামে একটি সংগঠন। প্রান্তিকে আমার সহযোদ্ধা ছিলেন মাহবুব উল আলম চৌধুরী, কাজী আলী ইমাম, চিরঞ্জীব দাশ শর্মা, মাহবুব হাসান, রমেন মজুমদার, এমএ সামাদ, ফওজিয়া সামাদ, অচিন্ত্য চক্রবর্তী, নিত্যগোপাল দত্ত। এ-বছরই চট্টগ্রামে আবুল ফজলের উদ্যোগে 888sport live football সাংস্কৃতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানটি হয়েছিল হরিখোলার মাঠে। সম্মেলনে অতিথি হিসেবে এসেছিলেন সলিল চৌধুরী, দেবব্রত বিশ্বাস, সুচিত্রা মিত্র। সম্মেলনে ‘প্রান্তিক’ অংশগ্রহণ করে যথেষ্ট সুনাম অর্জন করে। ১৯৫২ সালে 888sport appয় অনুষ্ঠিত হয় 888sport live football সম্মেলন। এতে প্রান্তিক যোগ দেয় নাচ-গান ও ‘বিভাব’ নাটক নিয়ে। প্রান্তিকের অনুষ্ঠান ব্যাপক প্রশংসা কুড়ায়।
মতিন রায়হান : চাকরিসূত্রে চট্টগ্রামে এসেও সংগঠন গড়ে তুললেন। সফলও হলেন। চট্টগ্রামেই কি স্থায়ী হওয়ার চিন্তা করলেন?
কলিম শরাফী : না, তখনো সেভাবে ভাবিনি। তবে চট্টগ্রামও ছাড়তে হলো কিছুদিনের মধ্যে। ১৯৫৬ সালে শেরেবাংলার মন্ত্রিসভা বরখাস্ত করা হলো। জারি করা হলো সেকশন-৯২। আবারো আত্মগোপন করতে হলো। ১৯৫৬ সালের শেষদিকে 888sport appয় ফিরে গেলাম।
মতিন রায়হান : আবারো 888sport appয় ফিরলেন?
কলিম শরাফী : ফিরতে বাধ্য হলাম। 888sport appয় ফিরেও সংগঠনের চিন্তা মাথা থেকে সরে না। ‘হ-য-ব-র-ল’ নামে একটি সংগঠন গড়ে তুললাম। মঞ্চায়ন করলাম তাসের দেশ নাটকটি। তখন আমার সহযোগী ছিলেন ড. আনিসুর রহমান ও ড. রফিকুল ইসলাম। ১৯৫৭ সালে 888sport appয় নির্মিত আকাশ আর মাটি live chat 888sportে প্লেব্যাক করলাম। রবীন্দ্রনাথের ‘দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে’ গানটির মাত্র দুই লাইন। মজার ব্যাপার হলো, পূর্ব বাংলায় এই প্রথম কোনো live chat 888sportে রবীন্দ্রনাথের গান ব্যবহার করা হলো।
মতিন রায়হান : এভাবেই কি live chat 888sportে জড়িয়ে পড়লেন?
কলিম শরাফী : ঠিক জড়িয়ে পড়া নয়, তবে live chat 888sportের প্রতি একটা টান তৈরি হলো। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন জারি হলে রেডিওতে আমার গান সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হলো। এই পরিস্থিতিতে ১৯৬০ সালে সোনার কাজল সিনেমা পরিচালনা করি। এই ছবিতে জহির রায়হান অ্যাসিট্যান্ট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেন। ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৬২ সালে। এসময় আমার মিউজিক ডিরেকশনে নির্মিত ডকুমেন্টারি ভেনিস আন্তর্জাতিক 888sport app download bd লাভ করে। তারপর সূর্যস্নান সিনেমায় ‘পথে পথে দিলাম ছড়াইয়া’ গানটি গেয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাই। তারপর রমেশ শীলের জীবনভিত্তিক তথ্যচিত্র নির্মাণ করি।
মতিন রায়হান : রেডিওতে গান নিষিদ্ধ হওয়ার ফলেই কি live chat 888sportে এই জড়িয়ে পড়া?
কলিম শরাফী : কিছুটা তো হতেই পারে। তবে সোনার কাজল সিনেমা পরিচালনার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না। কাহিনিটা মাথায় এলে শম্ভু মিত্রের সঙ্গে কথা বলি। তিনি বললেন, এই কাহিনি নিয়ে সিনেমা করতে পারো। তারপর আমি জহির রায়হানকে প্রস্তাব দিই ছবিটি পরিচালনার জন্যে। জহির উলটো বলে, কলিমভাই ছবিটা আপনিই করুন। আমি আপনার অ্যাসিট্যান্ট থাকবো। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই সোনার কাজল পরিচালনা করতে হলো। জহিরকে করে নিলাম কো-ডিরেক্টর। আর ক্যামেরায় ছিলেন জামান। সংগীত পরিচালনা করি আমি নিজেই। অভিনেতা খলিল ছবির নায়ক আর সুমিতা দেবী নায়িকা। খলিলের এটি প্রথম ছবি। আর সহ-অভিনেত্রী ছিলেন সুলতানা জামান।
মতিন রায়হান : ডকুমেন্টারি তৈরির চিন্তা কী করে মাথায় এলো? আবার ভেনিস নির্মাণ করে আন্তর্জাতিক 888sport app download bdও পেলেন?
কলিম শরাফী : কোনোটাই হঠাৎ করে হয়নি। জীবনের শুরু থেকেই তো 888sport live chat-সংস্কৃতির সঙ্গে আছি। একটা মাধ্যমের সঙ্গে আরেকটা মাধ্যম কানেক্টেড। কো-অপারেটিভের ওপর ডকুমেন্টারি নির্মাণের মধ্য দিয়েই এর যাত্রা শুরু। এসব ডকুমেন্টারিতে এক্সপেরিমেন্টাল পাপেট নিয়ে উপস্থিত হতেন মুস্তাফা মনোয়ার। বিষয় বিশ্লেষণে কণ্ঠ দিতেন সৈয়দ হাসান ইমাম।
মতিন রায়হান : আমরা জানি, 888sport appয় টেলিভিশন সেন্টার চালু হলে আপনি সেখানে যোগ দেন। সে-সময়ের অভিজ্ঞতা জানতে চাই।
কলিম শরাফী : ১৯৬৪ সালে জাপানিরা 888sport appয় টেলিভিশন সেন্টার চালু করে। আমাকে করা হয় প্রোগ্রাম ডিরেক্টর। তৎকালীন সরকার কেন যে সেটা মেনে নেয় এখনো তা আমার কাছে একটা রহস্যজনক প্রশ্ন। কিন্তু চাকরিতে জয়েন করার পরই শুরু হয়ে গেল ষড়যন্ত্র। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ – আমি বেশি বেশি রবীন্দ্রসংগীত প্রচার করছি। ফলে দু-বছরের বেশি টিভিতে চাকরি করা সম্ভব হলো না। ইস্তফা দিয়ে যোগ দিলাম 888sport appস্থ এইচএমভিতে। ১৯৬৫ সালে শুরু হয় পাক-ভারত যুদ্ধ। পাকিস্তানে নিষিদ্ধ করা হয় রবীন্দ্রসংগীত। আমার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়। ফলে জাপানে প্রশিক্ষণে যেতে পারিনি।
১৯৬৮ সালে যোগ দিই ব্রিটিশ কোম্পানি পরিচালিত ইএমআই রেকর্ডিং স্টুডিওতে। প্রথমে আমাকে করা হয় ম্যানেজার ইস্ট পাকিস্তান। পরে ওই কোম্পানিতে জেনারেল ম্যানেজার এবং আরো পরে ডিরেক্টর অ্যান্ড জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়।
মতিন রায়হান : আপনি তো উদীচীর সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন?
কলিম শরাফী : ১৯৬৯ সালে উদীচীর প্রাণপুরুষ সত্যেন সেন আমাকে উপদেষ্টা করে উদীচীর সঙ্গে যুক্ত করেন। দীর্ঘ সময় এই সংগঠনটির উপদেষ্টা ও সভাপতি ছিলাম। ১৯৭৯ সালে জাহিদুর রহিম 888sport sign up bonus পরিষদ গঠিত হয়। আমি ছিলাম এই পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক। পরবর্তী সময়ে এই ‘জাহিদুর রহিম 888sport sign up bonus পরিষদ’ই ‘জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদে’ রূপান্তরিত হয়।
মতিন রায়হান : আপনি তো 888sport appয় সংগীত শিক্ষালয়ও প্রতিষ্ঠা করেছেন? আপনার ‘সঙ্গীত ভবন’ সম্পর্কে জানতে চাই।
কলিম শরাফী : এটি ১৯৮৩ সালের ঘটনা। অর্থাৎ ১৩৯০ সনের পহেলা বৈশাখ শান্তিনিকেতন-প্রত্যাগত শিক্ষকদের নিয়ে গড়ে তুলি ‘সঙ্গীত ভবন’। এই সংগীত বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে আমি অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করে আসছি।
মতিন রায়হান : এবার একটু ভিন্ন প্রসঙ্গে যাই। আপনি ১৯৭১ সালে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় কোথায় ছিলেন?
কলিম শরাফী : মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি লন্ডনে ছিলাম। 888sport appsের পক্ষে জনমত গড়ে তোলার জন্যে বিভিন্ন সভা-সমিতিতে অংশ নিয়েছি। গান গেয়ে প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করেছি। একসময় লন্ডন থেকে চলে যাই আমেরিকার ওয়াশিংটনে। সেখানেও একই ধরনের কার্যক্রমে অংশ নিই।
মতিন রায়হান : স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে কী করলেন?
কলিম শরাফী : আগেই তো বলেছি, উদীচী, রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদ, সঙ্গীত ভবন ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। ১৯৭৪ সালে 888sport apps 888sport live chatকলা পরিষদের উপদেষ্টা সদস্য হই। আর কর্মক্ষেত্রের কথা যদি বলি – স্বাধীনতার পর থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত 888sport apps টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনে প্রথমে জনসংযোগ কর্মকর্তা, পরে জেনারেল ম্যানেজার ছিলাম। ওই বছর টেক্সটাইল করপোরেশন থেকে আমাকে এক ঘণ্টার নোটিশে বরখাস্ত করা হয়। আমার অপরাধ – ১৯৭৬ সালে 888sport cricket BPL rateে উদ্যাপন কমিটিতে আমার নাম অন্তর্ভুক্তি এবং তা খবরের কাগজে প্রকাশের ঘটনা। নিগ্রহের আরো ঘটনা আছে। ১৯৯১ সালের ২৫ মার্চ একাত্তরের ঘাতক-দালাল বিরোধী গণসমাবেশে অংশগ্রহণ করায় দেশের ২৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে আমাকেও আসামি করা হয়।
মতিন রায়হান : এবার আবার গানের প্রসঙ্গে ফিরছি। আপনার সংগীতগুরুদের সম্পর্কে যদি কিছু বলতেন?
কলিম শরাফী : আমার সংগীতগুরু শুভ গুহঠাকুরতা, দেবব্রত বিশ্বাস, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, সুবিনয় রায় প্রমুখ। কলকাতার বিখ্যাত সংগীত বিদ্যালয় শুভ গুহঠাকুরতার ‘দক্ষিণী’তে আমি ১৯৪৬ থেকে ১৯৫০ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রসংগীত শিক্ষালাভ করি। এরপর সেখানে কিছুদিন শিক্ষকতাও করি। ‘দক্ষিণী’তে সংগীতগুরু দেবব্রত বিশ্বাস, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও সুচিত্রা মিত্রের সাহচর্য পেয়েছি। শুভ গুহঠাকুরতা, দেবব্রত বিশ্বাস ও জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের কাছ থেকেই বিশেষভাবে রপ্ত করি রবীন্দ্রসংগীত ও স্বদেশি গান। প্রকৃত সংগীত সাধনায় প্রয়োজন তিনটি জিনিস – অনুশীলন, চিন্তাভাবনা আর গাইডেন্স বা পথনির্দেশ। দেবব্রত বিশ্বাস অর্থাৎ জর্জদা বলতেন : ‘বুইঝা গাও, না বুইঝা গাইও না।’ গান কীভাবে গাইবো, সেটা একটা ভাবার বিষয়। গানটা বুঝে অনুভূতি প্রকাশ করা – সেই পথনির্দেশ পেয়েছি শম্ভু মিত্রের কাছে। শম্ভুদা বলতেন : ‘শ্রোতাকে বুঝিয়ে গাইতে হবে। কী বলতে চাইছো, শ্রোতার সঙ্গে আদান-প্রদান হওয়া চাই। ব্যক্তিত্বটা গানের মধ্য দিয়ে ফুটিয়ে তুলতে হবে।’ গান আসলেই গুরুমুখী বিদ্যা। যার একাগ্রতা ও নিষ্ঠা যত বেশি, সে ততদূর যেতে পারবে।
মতিন রায়হান : এতক্ষণ আমরা আপনার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন সম্পর্কে জানলাম। গান নিয়ে কোন কোন দেশ 888sport slot game করেছেন?
কলিম শরাফী : শুধু গান নয়, 888sport live chat-সংস্কৃতির শুভবার্তা নিয়ে অনেক দেশে গিয়েছি। ভারত ও পাকিস্তানে একাধিকবার গিয়েছি। এছাড়া চীন, সুইজারল্যান্ড, পর্তুগাল, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়াসহ আরো কিছু দেশে গিয়েছি। এসব সফরে বিচিত্র অভিজ্ঞতা হয়েছে।
মতিন রায়হান : আপনার গানের প্রকাশিত ক্যাসেট ও সিডি সম্পর্কে জানতে চাই।
কলিম শরাফী : এ পর্যন্ত আমার ১৫টি ক্যাসেট ও তিনটি সিডি প্রকাশিত হয়েছে। আর অ্যালবাম বেরিয়েছে পাঁচটি। অ্যালবামগুলোর শিরোনাম – ‘এই কথাটি মনে রেখো’, ‘আমি যখন তার দুয়ারে’, ‘কলিম শরাফীর যত গান’, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গান’ ও ‘নবজীবনের গান’ কথা ও সুর : জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র।
মতিন রায়হান : আপনি কি আত্মজীবনী লিখেছেন?
কলিম শরাফী : লিখেছি। বইটির নাম 888sport sign up bonus অমৃত। বইটিকে আমার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের আলেখ্যও বলতে পারি। ৮৬ পৃষ্ঠার বইটি প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। এটি ১৯৯৩ সালের ঘটনা। বইটি উৎসর্গ করেছি ১৯৪২ সালে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যাঁরা শহিদ হয়েছেন তাঁদের 888sport sign up bonusর উদ্দেশে।
মতিন রায়হান : আপনার আর কোনো বই প্রকাশিত হয়েছে?
কলিম শরাফী : না।
মতিন রায়হান : আপনার বিয়ে ও পরিবার সম্পর্কে জানতে চাই।
(বিয়ে নিয়ে একটু রহস্যই করলেন কলিম শরাফী। স্ত্রী নওশেবাও তাঁর সঙ্গে একাত্ম হলেন। বিয়ের সাল-তারিখ কিছুই বললেন না। তবে এটুকু বললেন, তাঁদের বিয়ে হয়েছে পারিবারিকভাবেই। সঙ্গে ছিল ভালোবাসার ছোঁয়াও। স্ত্রী নওশেবা খাতুন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে সাইকোলজিতে দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন। ১৯৮৮ সাল থেকে অবসর জীবনযাপন করছেন।)
কলিম শরাফী : আমাদের পাঁচ সন্তান। চার মেয়ে ও এক ছেলে। বড় মেয়ে রুমানা শরাফী ডাক্তার, বর্তমানে ওয়াশিংটনে কর্মরত; দ্বিতীয় মেয়ে ফরিদা শরাফীও ওয়াশিংটনে, চাকরি করছে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে; তৃতীয় মেয়ে আলেয়া শরাফী, কানাডায় দোভাষী; ছোট মেয়ে ফেরদৌসী শরাফী কাজ করছে আইসিডিডিআর’বি-তে সিনিয়র সায়েন্টিস্ট হিসেবে। আমাদের একমাত্র পুত্র আজিজ শরাফীও প্রবাসী। সে ক্যানসাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইন আর্টসের প্রফেসর। এই আমাদের পরিবার।
(পরে অবশ্য আমরা জেনেছি, কলিম শরাফীর প্রথম স্ত্রী কামেলা খাতুন। কামেলা খাতুনের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ১৯৪৯ সালে। তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে ১৯৫৭ সালে। দ্বিতীয়বার ১৯৬৩ সালে অধ্যাপিকা নওশেবা খাতুনের সঙ্গে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হন। শরাফী ও নওশেবা দম্পতির দুই সন্তান – আলেয়া শরাফী ও আজিজ শরাফী।)
মতিন রায়হান : আমাদের ক্যানভাস একটি লাইফস্টাইল ও ফ্যাশন ম্যাগাজিন। এবার আপনার লাইফস্টাইল নিয়ে কিছু প্রশ্ন করতে চাই। আপনি কোন ধরনের পোশাক পরতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন?
কলিম শরাফী : আমার প্রথম পছন্দ পাজামা-পাঞ্জাবি। তবে পার্টিতে স্যুট-টাই পরি।
মতিন রায়হান : আপনার বিশেষ শখ?
কলিম শরাফী : আড্ডা দেওয়া। প্রায় বিকেলেই প্রিয় বন্ধুজনের বাসায় আড্ডা দিই।
মতিন রায়হান : প্রতিদিন কীভাবে কাটে?
কলিম শরাফী : ঘুম ভাঙে সকাল ৬টা-সাড়ে ৬টায়। তারপর হাত-মুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে এক কাপ চা খাই। নাশতা করি সকাল ৮টায়। নাশতায় থাকে রুটি কিংবা বাখরখানি। সঙ্গে ডিম ভাজা ও সবজি। কখনো মিষ্টিও খাই। গোসল সেরে নিই দশটায়। তারপর বেরিয়ে পড়ি। কেনাকাটা থাকলে কোনো শপিংমলে ঢু মারি। প্রায়ই সুপারশপ আগোরায় যাই। কখনো আত্মীয়স্বজন কিংবা বন্ধুবান্ধবের বাসায় যাই। আড্ডা দিই। দুপুর একটায় দুপুরের খাবার খাই। হালকা খাবার। বিকেলে নিয়মিত আড্ডা দিই। প্রায়ই বেড়াতে যাই 888sport live chatী ফেরদৌসী প্রিয়ভাষিণীর বাসায়। ওর 888sport live chatকর্ম আমাকে খুব টানে। অবাক হয়ে সেসব 888sport live chatকর্ম দেখি। খবরের কাগজ ও ম্যাগাজিন পড়ি।
মতিন রায়হান : কী কী খেতে পছন্দ করেন?
কলিম শরাফী : ফ্যাটজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলি। নিয়মিত ভেজিটেবল খাই। প্রিয় খাবার মিষ্টি।
মতিন রায়হান : পারফিউম ব্যবহার করেন? কোন কোন ব্র্যান্ড পছন্দ?
কলিম শরাফী : পারফিউম আমার খুব পছন্দ। প্রিয় ব্র্যান্ড ওয়ানম্যান শো, অ্যারামিস ইত্যাদি।
মতিন রায়হান : আপনাদের সময়ের সঙ্গে বর্তমান সময়ের ফ্যাশনের কী পার্থক্য?
কলিম শরাফী : সবদিক থেকেই এসময়ের ছেলেমেয়েরা অ্যাডভান্সড। তারা ফ্যাশনেবল পোশাক-আশাক পরে।
মতিন রায়হান : প্রিয় মানুষ?
কলিম শরাফী : বন্ধু সুচিত্রা মিত্র।
মতিন রায়হান : আপনার প্রিয় বন্ধুজন কারা?
কলিম শরাফী : এ-তালিকা বেশ দীর্ঘ। এঁরা হলেন – সুচিত্রা মিত্র, পঙ্কজ মল্লিক, শচীন দেববর্মণ, সত্যজিৎ রায়, জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্র, কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, আব্বাস উদ্দিন, আবু সয়ীদ আইয়ুব, জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, খালেদ চৌধুরী, শামসুর রাহমান, রশীদ করীম, শহীদুল্লা কায়সার, এম আর আখতার মুকুল।
মতিন রায়হান : প্রিয় রং?
কলিম শরাফী : সবুজ।
মতিন রায়হান : প্রিয় 888sport app download apk?
কলিম শরাফী : জ্যোতিরিন্দ্র মৈত্রের 888sport app download apk ‘তোমারি প্রেরণা পেয়েছি’।
মতিন রায়হান : 888sport live footballের প্রিয় চরিত্র?
কলিম শরাফী : শরৎচন্দ্রের ‘দেবদাস’।
মতিন রায়হান : প্রিয় গ্রন্থ?
কলিম শরাফী : রবীন্দ্রনাথ ও তারাশঙ্করের বই।
মতিন রায়হান : আপনার কিছু প্রিয় রবীন্দ্রসংগীত?
কলিম শরাফী : ‘আমি তোমায় যত শুনিয়েছিলেম গান’, ‘আমি তখন ছিলেম মগন গহন ঘুমের ঘোরে যখন বৃষ্টি নামল’, ‘আমি চঞ্চল হে আমি সুদূরের পিয়াসী’, ‘আকাশভরা সূর্যতারা’, ‘যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক আমি তোমায় ছাড়ব না মা’।
মতিন রায়হান : বহুবিচিত্র কর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ কী কী 888sport app download bd ও সম্মাননা পেয়েছেন?
কলিম শরাফী : অনেক 888sport app download bdই পেয়েছি। জাতীয় 888sport cricket BPL rateে পদক পেয়েছি ১৯৮৫ সালে। আর স্বাধীনতা পদক পেয়েছি ১৯৯৯ সালে। এছাড়া নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক (১৯৮৮), বেগম জেবুন্নেছা ও কাজী মাহবুব উল্লাহ স্বর্ণপদক (১৯৮৭), সত্যজিৎ রায় 888sport app download bd (১৯৯৫), শিক্ষা ও সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র-প্রদত্ত ‘কৃতী বাঙ্গালী সম্মাননা পদক’ (১৯৮৮) ইত্যাদি।
এছাড়া বাংলা একাডেমি ফেলোশিপ, বুলবুল ললিতকলা একাডেমী, রাষ্ট্রপ্রতি আবু সাঈদ চৌধুরী অ্যাওয়ার্ড, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় গুণীজন সংবর্ধনা, পশ্চিমবঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১২৫তম জন্মবার্ষিকী সম্মাননা ইত্যাদি। আসলে এতসব 888sport app download bd ও সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য কি আমি!
মতিন রায়হান : দীর্ঘ সুস্থ জীবন লাভের কী উপায়?
কলিম শরাফী : অসুস্থ পরিবেশ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে এবং ডিসিপ্লিন মেনে চলতে হবে।
মতিন রায়হান : ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উদ্দেশে কিছু বলুন।
কলিম শরাফী : রবীন্দ্রনাথ পড়তে হবে, বুঝতে হবে। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকের তুলনায় এখন 888sport appsে অনেক বেশি সংখ্যক 888sport live chatী রবীন্দ্রসংগীত গাইছেন। কিন্তু কেন জানি মনে হচ্ছে, বেশি টেকনিকসর্বস্ব হয়ে গেছে। অনেকেই স্বরলিপি গাওয়ার মতো করে রবীন্দ্রসংগীত গাইছেন। বুঝে গাওয়াটা জরুরি। এ-বিষয়ে সচেতনতা দরকার। প্রশিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। সুর, তাল, লয়, উচ্চারণ – এসব দিকে মনোযোগ দিতে হবে। মোটকথা বুঝে, হৃদয়ঙ্গম করে গাইতে হবে। টেকনিকসর্বস্ব হলে গানে প্রাণ থাকে না। তরুণদের প্রকৃত মানবিক শিক্ষায় গড়ে তুলতে হবে। আর ভালোবাসতে হবে দেশ, মাটি ও মানুষকে। (সাক্ষাৎকার গ্রহণ : ১ অক্টোবর ২০০৭)


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.