এই মুহূর্তে পৃথিবীর ‘সবচেয়ে মাথাওয়ালা’ লোকটি কে, এ-প্রশ্নে হয়তো অনেকেই অবাক হয়ে যাবেন। প্রাচীন পৃথিবীর ক্ষেত্রে এ-প্রশ্নটির যথার্থতা নিয়ে সন্দেহ না থাকলেও বর্তমানের জটিল পৃথিবীতে জ্ঞানজগৎ এতটাই বিস্তৃত হয়ে পড়েছে যে, এককভাবে কাউকে এ-অভিধাটি দেওয়া অসম্ভব। দর্শনের নানা শাখা থেকে 888sport apk ও সামাজিক 888sport apk আলাদা হয়ে গেছে অনেক আগেই, তাই জগৎ-জীবন ও সংসারকে দেখার ক্ষেত্রে চিন্তাবিদদের ভিন্নতাও চোখে পড়ার মতো। তাই প্রশ্নটিকে আরো সহজ করে নিয়ে বলা যায় –
এ-মুহূর্তে পৃথিবীকে নিয়ে ‘সবচেয়ে মাথা ঘামানো’ লোকটি কে? এর উত্তরে উচ্চারিত হতে পারে অনেকেরই নাম – ভাষাতাত্ত্বিক ও সমাজ888sport apkী নোয়াম চমস্কি, সমাজচিন্তক ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা, জর্জ ফ্রিডম্যান, পদার্থবিদ মিচিও কাকু, রোজার পেনরোজ, মার্টিন রিস থেকে আমাদের প্রতিবেশী অমর্ত্য সেন, অরুন্ধতী রায় পর্যন্ত অনেকেই। কিন্তু এ-প্রশ্নটির উত্তর দিতে গিয়ে অনেকের মনেই উঁকি দেয় একজন তরুণ ইতিহাসবিদের নাম – ইউভাল নোয়া হারারি। অল্প কিছুদিন আগেও ইউভাল নোয়া হারারি ছিলেন একজন অখ্যাত ইসরায়েলি ইতিহাসবিদ। এরপর তিনি লিখলেন Sapiens : A Brief History of Humankind নামক একটি অসাধারণ গ্রন্থ। এটি প্রকাশিত হওয়ার পর একটানা চার বছর ধরে নিউইয়র্ক টাইমস ও সানডে টাইমসের বেস্ট সেলার লিস্টে অবস্থান করে সারা বিশ^কে চমকে দিলো। জেরেড ডায়মন্ডের আরেক বিখ্যাত গ্রন্থ Guns, Germs and Steel-এর মতোই হারারির সাপিয়েন্সও মানবেতিহাসের বিশ্লেষণ নিয়ে কিছু চমকপ্রদ প্রশ্ন উত্থাপন করেছে, যেমন হারারির অদ্ভুত উচ্চারণ – ‘888sport live chatভিত্তিক আধুনিক কৃষিব্যবস্থা সম্ভবত ইতিহাসের সবচেয়ে বড় একটি অপরাধ।’ শুধু সাধারণ পাঠক নয়, বইটি তার পাঠক হিসেবে বারাক ওবামা, বিল গেটস, মার্ক জাকারবার্গ প্রমুখ মহারথীকেও টেনে এনেছে।
হারারি তাঁর গবেষণা শুরু করেছিলেন মানবসভ্যতার উত্থান, মধ্যযুগের সভ্যতার প্রকৃতি এবং সমসাময়িক ইতিহাস নিয়ে – কীভাবে ৭০ হাজার বছর আগে পূর্ব আফ্রিকা থেকে বেরিয়ে আসা একদল স্মার্ট, অভিযাত্রী তাদের মহাকাব্যিক যাত্রা শুরু করেছে ধারণাগত বিপ্লব (Cognitive revolution) দিয়ে, প্রতিদ্বন্দ্বী নিয়ান্ডারথাল এবং আরো দু-একটি দুর্বল হোমো প্রজাতির সদস্যদের হটিয়ে দিয়ে ও নিশ্চিহ্ন করে, ভাষাগত যোগাযোগ মাধ্যমের উৎকর্ষ সাধন করে নিজের সমাজবিন্যাসকে সংহত করে শিকারি পশুদের শীর্ষে আরোহণ করেছে। এরপর থেকে সে ঘটিয়ে চলেছে একের পর এক বিপ্লব – কৃষি বিপ্লব ঘটিয়ে, প্রকৃতির নিয়মগুলোকে আত্মস্থ করে ও বৈজ্ঞানিক সত্যগুলোকে আবিষ্কার করে সে উঠে এসেছে এক অনন্য উচ্চতায়। এগুলো পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা করে হারারি এখন মনোসংযোগ করেছেন কিছু বিমূর্ত জিনিস ও সামনে আগতদিনের প্রশ্নগুলোর দিকে – জীব888sport apkের সঙ্গে ইতিহাসের সম্পর্কটা কী? হোমো সাপিয়েন্সের সঙ্গে 888sport app জীবজন্তুর মৌলিক পার্থক্য কী? ইতিহাসে কি ন্যায়বিচার বলে কিছু রয়েছে? ইতিহাসের কি কোনো সুনির্দিষ্ট গতিপথ রয়েছে? ইতিহাসের রথের চাকায় ঘূর্ণনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ কি সুখী হয়েছে? আমাদের কি স্বাধীন ইচ্ছা বলে কিছু রয়েছে? চেতনা, বুদ্ধি ও প্রজ্ঞা জিনিসগুলো কী? সুখ ও দুঃখের স্বরূপ কী ও তাদের মধ্যে সীমানা কোথায়? 888sport cricket BPL rate শতকের 888sport apk ও প্রযুক্তি আমাদের সামনে কী কী প্রশ্ন নিয়ে এসেছে? সর্বোপরি, জৈবপ্রযুক্তিনির্ভর সভ্যতা মানুষকে কি এতদূর নিয়ে যাবে, যাতে আগামী শতাব্দীতেই হোমো সাপিয়েন্স নামক প্রজাতিটি বদলে গিয়ে পরিণত হবে উন্নততর নতুন কোনো প্রজাতিতে?
হারারির প্রথম বই Sapiens : A Brief History of Humankind প্রকাশিত হয়েছিল তাঁর মাতৃভাষা হিব্রুতে ২০১১ সালে, যখন তাঁর বয়স মাত্র ৩৫ বছর। বইটি প্রকাশের পরই বিদ্যুচ্চমকের মতোই তা সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। এরপর ২০১৪ সালে বইটির ইংরেজি 888sport app download apk latest version বের হওয়ার পর থেকে পরে তা ৬০টি ভাষায় অনূদিত হয়ে ২৭.৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। হারারি যখন এ-বইটি লেখেন, তখন তিনি অক্সফোর্ড থেকে ইতিহাসে পিএইচ.ডি করে দেশে ফিরে এসে জেরুজালেম হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দিয়েছেন। অক্সফোর্ডে থাকাকালেই জেরেড ডায়মন্ডের নন্দিত বইটি পাঠ করে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি একই ধরনের একটি বই লিখতে উদ্যোগী হয়ে ওঠেন। অবশ্য সে-সময় তাঁর আর বইটি লেখা হয়ে ওঠেনি, যা তিনি তাঁর পরবর্তী শিক্ষকতা জীবনে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ছাত্রদের জন্য প্রস্তুত নোট ঘষামাজা করে তাঁর পাণ্ডুলিপি তৈরি করেন। এরপর হারারি তাঁর দ্বিতীয় বই Homo Deus : A Brief History of Tomorrow-তে দেখিয়েছেন আমাদের ভবিষ্যৎকে – অর্থাৎ আগতকালের মানুষ ও পৃথিবীর ভবিষ্যৎকে। দু’হাজার ষোলো সালে প্রকাশিত এ-বইটি প্রথমটির মতো জনপ্রিয়তা না পেলেও তা ইতোমধ্যে ৫০টি ভাষায় অনূদিত হয়ে মোট ৭.৫ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে। এ-বইয়ে তিনি আশা করেছেন যে, আমরা আমাদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার সদ্ব্যবহার করে রোগ-শোক ও দুঃখকে জয় করব, লাভ করব অমরতা এবং একসময়ে হোমো সাপিয়েন্স নামক জ্ঞানী মানুষ হয়ে উঠবে হোমোদিয়ুস বা দেবতামানব। আমরা হয়ে উঠব দেবতা বা ঈশ্বরের মতোই ক্ষমতাবান একটি প্রজাতি।
এভাবে আমাদের অতীত ও ভবিষ্যৎ – এ দুটো দিকই বিশ্লেষণ করে হারারি তাঁর তৃতীয় বইটি লেখেন – ২১ 21 Lessons for the 21st century, যা প্রকাশিত হয়েছে ২০১৮ সালে। এখানে তিনি নাড়িস্পন্দন মেপেছেন এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন আমাদের পরিবেশ-প্রতিবেশের এবং প্রশ্ন তুলেছেন – হচ্ছেটা কী? বর্তমান যুগে আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলো কী কী, এবং সেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের করণীয় কী কী? বইটি বের হওয়ার প্রথম বছরই এর চার মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়েছে এবং তা ৪০টি ভাষায় 888sport app download apk latest version হয়েছে। এরপর ২০২৪ সালে প্রকাশিত হয়েছে হারারির চতুর্থ বই – Nexus : A Brief History of Information Networks from the Stone Age to AI , এই নামে। প্রস্তুরযুগ থেকে শুরু করে আধুনিক ইতিহাসের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (অও) পর্যন্ত তথ্যপ্রবাহ ও তার সংযোগের রূপান্তর-কাহিনিই এ-বইটির উপজীব্য। এটিও বর্তমানে একটি বহুল আলোচিত বই।
পৃথিবীর বুকে মানুষের উত্থানের কারণগুলো হারারি বিশ্লেষণ করেছেন তাঁর প্রথম বই সাপিয়েন্সেই। তাঁর ভাষায় – হোমো সাপিয়েন্স এখন পৃথিবীতে রাজত্ব করছে যে-কারণে, সেটি হচ্ছে পৃথিবীর বুকে এটিই একমাত্র প্রাণী, যে তৈরি করেছে এমন কিছু বিমূর্ত জিনিস, যেগুলোর অস্তিত্ব রয়েছে শুধু তার মস্তিষ্ক কোষে। এগুলো রয়েছে শুধু তার কল্পনায় – যেমন দেবতা বা ঈশ্বর, রাষ্ট্র, টাকা, মানবাধিকার ইত্যাদি। ধারণাগত বিপ্লবের মানসসন্তান পূর্ব আফ্রিকার সাভানাত্যাগী মানুষ এখন দেখতে পাচ্ছে যে, তার চারপাশের প্রকৃতিনির্ভর জগৎ এখন দ্রুত পাল্টে যাচ্ছে 888sport apk ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায়। এই বদলে যাওয়া জগৎকে নির্দেশ করে হারারি প্রশ্ন তুলেছেন – যখন আমাদের পুরনো পৃথিবীর ধ্রুপদী গল্পগুলো (অর্থাৎ পৌরাণিক কাহিনিনির্ভর ধ্যানধারণা ও মূল্যবোধ) ধসে পড়েছে এবং নতুন কোনো গল্প এখনো সেগুলোকে প্রতিস্থাপন করে উঠতে সক্ষম হয়নি, সেরকম বিস্ময়াভিভূত একটি নতুন যুগে আমরা কী করে পৃথিবীর বুকে বেঁচে থাকব? আমরা কি শুধু প্রভু যিশুর মতোই ক্ষীণকণ্ঠে আর্তনাদ করব – হায় প্রভু, তুমিও কি আমায় ছেড়ে গেলে? নাকি আমরা অপেক্ষায় থাকব নতুন কোনো ডিজিটাল মোজেসের, যিনি আমাদের জন্য সিলিকন ডিস্কে লেখা নতুন অনুশাসন মাথায় করে কোনো পর্বতচূড়া থেকে নেমে আসবেন?
হারারির ব্যক্তিজীবনের দিকে এবার একটু তাকানো যাক। ইউভাল নোয়া হারারি জন্ম নিয়েছিলেন ১৯৭৬ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারি ইসরায়েলের হাইফায়, প্রকৌশলী শ্লোমো হারারি ও চাকরিজীবী প্লিনা হারারির ঘরে – একটি সেক্যুলার ইহুদি পরিবারের তিন সন্তানের একজন হয়ে। তিন বছর বয়সে ঘরেই তিনি তাঁর লেখাপড়া শুরু করেন এবং আট বছর বয়সেই প্রতিভার স্বাক্ষর রেখে প্রতিভাবান বালকদের বিশেষ স্কুলে ভর্তি হন। জেরুজালেম হিব্রু বিশ^বিদ্যালয় থেকে ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন করে তিনি চলে যান অক্সফোর্ডে এবং সেখানে ২০০২ সালে জেসাস কলেজে স্টিভেন জে গুনের অধীনে পিএইচ.ডি সম্পন্ন করেন। পরবর্তীকালে অক্সফোর্ডেই ২০০৩ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তিনি ইয়াদ হানাদিব স্কলার হিসেবে পোস্ট ডক্টরাল থিসিস করেন। অক্সফোর্ডে থাকার সময়ই তিনি ২০০০ সালে বিপাসান্না যোগ নামক কোর্সে ভর্তি হন, যা তাঁর মতে, তাঁর জীবনকে বদলে দিয়েছে। তিনি এখনো প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে যোগাভ্যাস করেন – কাজের শুরুতে এক ঘণ্টা এবং কাজের শেষে এক ঘণ্টা করে। প্রতিবছরই তিনি এক মাসের জন্য কোনো অবকাশযাপন কেন্দ্রে চলে যান – কোনো 888sport free bet login সঙ্গে না নিয়ে এবং ইন্টারনেট ও ফোন থেকে দূরে থেকে। তিনি তাঁর যোগ শিক্ষক এস এন গোয়েঙ্কাকে তাঁর হোমোদিয়ুস বইটি উৎসর্গ করে লিখেছেন যে, তাঁকে ছাড়া বইটি লিখতে তিনি সমর্থ হতেন না। ব্যক্তিগত জীবনে হারারি একজন নিরামিষাশী।
নানা প্রতিষ্ঠান থেকে হারারি তাঁর মননশীলতার জন্য অসংখ্য 888sport app download bdও পেয়েছেন – দু’বার সৃষ্টিশীলতা ও মৌলিকত্বের জন্য ২০০৯ ও ২০১২ সালে পোলানস্কি 888sport app download bd এবং ২০১১ সালে সামরিক ইতিহাস সমিতির মর্যাদাপূর্ণ মনকাডো 888sport app download bd। তিনি ২০১৮ ও ২০১০ সালে দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে মানবজাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে কি-নোট বক্তৃতা দিয়েছেন। বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে সাম্প্রতিক বিশ্ব প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি আলোচনা করে থাকেন – যাঁদের মধ্যে রয়েছেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর প্রমুখ। ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করে তিনি কথা বলেছেন ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, অ্যাঞ্জেলা মার্কেল, আর্জেন্টাইন রাষ্ট্রপতি মরিসিও মাক্রি, জার্মান রাষ্ট্রপতি ফ্রাঙ্ক ওয়াল্টার স্টেইনমার, সাংহাইয়ের মেয়র ইং ইয়ং প্রমুখের সঙ্গে। তিনি ২০১৯ সালে TED Talk-এ বলেছেন ডিজিটাল অবতার প্রসঙ্গে, মার্ক জাকারবার্গের সঙ্গে কথা বলেছেন প্রযুক্তি ও সভ্যতার ভবিষ্যৎ নিয়ে। হারারি ইজ্জিক ইয়াহার নামক সমবয়সীর (যাঁকে তিনি ২০১০ সালে বিয়েও করেছেন) সঙ্গে মিলে ২০১৯ সালে গড়ে তুলেছেন sapiens hip নামে একটি বহুমুখী প্রতিষ্ঠান, যার উদ্দেশ্য হচ্ছে বৈশ্বিক প্রসঙ্গ আলোচনা, নানা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ ও আমাদের বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলো সমাধানের উপায় বের করা। বর্তমান পৃথিবী যদিও অনেক চ্যালেঞ্জই মোকাবিলা করছে, তার মধ্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ তিনটিকে তাঁরা বেছে নিয়েছেন – প্রযুক্তিগত বিশৃঙ্খলা, পরিবেশের অবনতি এবং পারমাণবিক বিপর্যয়ের হুমকি মোকাবিলা করা।
এই হচ্ছে ইউভাল নোয়া হারারি – বর্তমান পৃথিবীর সমস্যা-ভারাক্রান্ত পরিবেশ-প্রতিবেশ শুধু নয়, তার সুদূর অতীত ও অনাগত ভবিষ্যৎ নিয়েও মাথা ঘামানো একজন মানুষের গল্প। বয়সে যথেষ্ট তরুণ বলে এখনো তাঁর হাতে আরো কয়েকটি দশক রয়ে গেছে বলে আমরা আশা করতে পারি, মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে শেষ কথাটি বলার জন্য। তবে এখন পর্যন্ত আমরা তাঁকে যে-রূপে দেখছি, তাতে তিনি একজন আলোর দিশারী নতুন প্রমিথিউস, নাকি হতাশা ও আশঙ্কার ধাত্রী একজন কাসান্দ্রা – তা বুঝতে হলে আমাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছুটা সময়।
স্টিভেন ভি পলসনের১ সঙ্গে সাক্ষাৎকার : ইউভাল নোয়া হারারি আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত হারারি তাঁর চারটি বইয়ের নতুন প্রযুক্তি থেকে রাজনীতি, ধর্ম ইত্যাদি অনেক কিছু নিয়েই এক ঝুড়ি পূর্বাভাস হাজির করেছেন। তিনি যদিও সিলিকন ভ্যালির একজন প্রিয় মানুষ, তবু ফেসবুক ও 888sport app প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কীভাবে আমাদের ব্যক্তিগত ডাটা ব্যবহার করছে, তা নিয়ে হারারি সমালোচনায় উচ্চকণ্ঠ। ব্যক্তিগত সাক্ষাতের পরিবর্তে অনলাইন কাজকর্মের মাধ্যমে মানুষ কীভাবে জড়িয়ে পড়ছে, এ নিয়েও তিনি চিন্তিত। 21 Lessons for the 21st century বইটির অনেকটা জুড়েই কৃত্রিম প্রজ্ঞার মাধ্যমে কী কী বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটতে যাচ্ছে, তা তুলে ধরা হয়েছে। আপনি আপনার নিজেকে যতটুকু জানেন, কম্পিউটার ও অ্যালগরিদম যদি তার চেয়ে বেশি আপনাকে জানে; তাহলে আপনার স্বাধীন ইচ্ছা বলে কি কিছু থাকবে? আর সেরকম ক্ষেত্রে আমাদের বর্তমান সমাজে রাজনীতি-অর্থনীতির স্থানই বা কোথায় হবে?
আমাদের চারপাশে ঘটতে থাকে সবকিছু নিয়েই দ্রুত মতামত দেওয়া একজন ব্যক্তি হচ্ছেন ইউভাল নোয়া হারারি। নিজের প্রতি তিনি যথেষ্ট আস্থাশীল এবং ‘উসকানিদাতার’ ভূমিকায় নিজেকে তুলে ধরতে পছন্দ করেন। আমাদের বর্তমান পৃথিবীর ইতিহাস যে একটি ব্যতিক্রমী সময় পার করছে, এ বিষয়ে আমরা সবাই প্রায় একমত। আমরা এমন একটি বিপ্লবের শিলাখণ্ড, যা মানবসভ্যতাকে হয় চূড়ায় নিয়ে যাবে; অথবা তার ধ্বংস ডেকে আনবে – এ-বিষয়টি এখনো আমাদের কাছে পরিষ্কার নয়। এ প্রসঙ্গে হারারি বলেন – ‘ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা এমন একটি জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে দাঁড়িয়ে আগামী ৩০ বছরে পৃথিবীতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা আমরা বুঝতে পারছি না।’
প্রশ্ন : আমাদের বর্তমান সময়টি কেন পৃথিবীর ইতিহাসে অনন্য?
হারারি : যে-বিষয়টি আলাদা, তা হচ্ছে প্রায়োগিক পরিবর্তনের গতি – বিশেষ করে কৃত্রিম প্রজ্ঞা ও জৈব প্রকৌশলের যমজ বিপ্লব। তারা একসঙ্গে মিলে মানুষকেই ‘হ্যাক’ করে নিতে পারে, যেমনটা পারে অন্য প্রাণীদেরও। এভাবে তারা কৃত্রিমভাবে নতুন ধরনের জীবনও তৈরি করতে পারে।
প্রশ্ন : ‘আমরা কারা?’ – এ-প্রশ্নটিকে প্রযুক্তি কীভাবে বদলে দিতে পারে?
হারারি : অনেক, অনেক দূর। সম্ভবত তা আমাদের কল্পনারও বাইরে। এটি আমাদের কল্পনাশক্তিকেও বদলে দিতে পারে। নতুন নতুন সম্ভাবনার কথা চিন্তা করতে আপনার কল্পনাশক্তির যদি সীমাবদ্ধতা থাকে, তাহলে আমরা তার উন্নতি সাধন করতে পারি। বিগত বিলিয়ন বছর যাবত জীবজগতের ইতিহাস সীমাবদ্ধ ছিল শুধু জৈব পরিমণ্ডলে। আমরা কি একটি অ্যামিবা, ট্রাইনোসোরাস রেক্স, নাকি একটি নারিকেল, শসা বা হোমো সাপিয়েন্স – তাতে খুব একটা আসত-যেত না। কারণ আপনি শুধু ছিলেন একটি জৈব সংগঠন, যা জৈব রাসায়নিক সূত্রাবলি মেনে চলত। কিন্তু এখন আমরা জৈব রাসায়নের এই নিয়মগুলো ভাঙতে চলেছি। আমরা জৈবের সঙ্গে অজৈবকে ইঙঞ২ সংযুক্ত করে সাইবর্গ সৃষ্টি করে চলেছি।
‘সভ্যতার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে মানুষের নির্বুদ্ধিতা। এই নির্বুদ্ধিতাকে খাটো করে দেখা কিছুতেই উচিত হবে না।
প্রশ্ন : এই নতুন সাইবর্গ সম্পর্কে কী কী বিষয় আপনাকে পীড়িত করে?
হারারি : মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উন্নত করে একটি বায়োনিক সিস্টেম তৈরি করতে ইতোমধ্যে কাজ চলছে এবং তাতে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে। মিলিয়ন মিলিয়ন অতিক্ষুদ্র ন্যানোবট এবং সেন্সর আপনার দেহাভ্যন্তরে কী ঘটছে, তার হিসাব রাখছে। এভাবেই তারা শুরুতেই আবিষ্কার করে নেবে ক্যান্সার, সংক্রামক রোগ ইত্যাদি নানা ধরনের প্রাণঘাতী রোগ। আপনার দেহাভ্যন্তরে রোগের শুরুতেই তারা যুদ্ধ ঘোষণা করে আপনাকে সুস্থ রাখার সংগ্রাম করবে। আপনার শরীরে খারাপ কী ঘটছে, শুধু তা-ই নয় – এটি আপনার মুড, আবেগ, চিন্তা ইত্যাদির দিকেও খেয়াল রাখবে। অর্থাৎ আপনি নিজেকে যতটুকু জানবেন, তার চেয়ে এরা আপনাকে বেশি জানবে। আপনার উচ্চস্তরের এসব আবেগ-উদ্দীপনাকে বুঝতে ও তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপনাকে হয়তো বছরের পর বছর প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। কিন্তু নতুন এই প্রযুক্তি – তা গুগল, অ্যামাজনের হোক
অথবা সরকারের হোক – আপনাকে এমনভাবে সার্বক্ষণিক নজরে রাখতে পারে, যা আপনার মনোচিকিৎসক কোনোভাবেই করতে সক্ষম হবে না।
প্রশ্ন : আপনি বলতে চাইছেন যে কম্পিউটার অ্যালগরিদম আমাদের ব্যক্তিগত ডাটা ব্যাংকে এমনভাবে ঢুকে যেতে পারে যে আমরা তা বুঝে উঠতেও সক্ষম হবো না?
হারারি : হ্যাঁ। ভয়, ক্রোধ এবং প্রেম ইত্যাদি যে-কোনো মানবিক আবেগ শেষ বিচারে শুধু কিছু জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়া। আপনার ফ্লু হলে আপনি যেভাবে রোগ নির্ণয় করেন, সেভাবেই আপনি আপনার ক্রোধকেও নির্ণয় করতে পারবেন। আপনি হয়তো কাউকে প্রশ্ন করতে পারেন – ‘আপনি কেন রেগে আছেন? কী নিয়ে আপনার এই ক্রোধ?’ তিনি হয়তো বলবেন – ‘না, আমি ক্রোধান্বিত নই। কেন আপনি আমাকে এরকমটা ভাবছেন?’ কিন্তু এখন আপনাকে এটি আর জিজ্ঞেস করতে হবে না। নিজের হৃদস্পন্দন, মগজ, রক্তচাপ ইত্যাদি বিষয়ই আপনাকে তা বলে দেবে। ক্রোধের মাত্রা পরিমাপ করে এটি আপনাকে জানিয়ে দেবে যে শূন্য থেকে ১০ স্কেলে আপনি এখন ৬.৮ স্থানে রয়েছেন। এর সঙ্গে আপনার প্রতিদিনের ২৪ ঘণ্টার সংগৃহীত সমস্ত ডাটা মিলিয়ে আপনার মানসিক অবস্থার সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা এখন আপনাকে দেওয়া সম্ভব। তবে এরকম ক্ষেত্রে পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে স্বৈরাচারী একটি শাসন ব্যবস্থায়ও এটি অংশগ্রহণ করতে পারে।
প্রশ্ন : আপনি লিখেছেন – ‘যিনি ডাটার মালিক হবেন, তিনিই ভবিষ্যৎকে নিয়ন্ত্রণ করবেন।’ এটি দিয়ে আপনি কী বোঝাতে চাইছেন?
হারারি : ইতিহাসে দেখা যায় যে, আগে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ছিল জমি। তারপর এটি হলো কলকব্জা বা মেশিন। আর এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে তথ্য বা ডাটা। বর্তমানে রাজনীতি হচ্ছে এই ডাটাকে নিয়ন্ত্রণ করারই সংগ্রাম। যারাই একচেটিয়াভাবে এ-কাজটি করতে পারবেন, ভবিষ্যৎ পৃথিবী তাদেরই। আমাদের যুগের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক প্রশ্ন – এই ডাটার মালিকানাকে আপনি কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন?
প্রশ্ন : এখানে কী ভয় রয়েছে?
হারারি : সেটি হচ্ছে যে, আপনি নিজেকে যতটুকু জানেন, তার চেয়ে বেশি অন্য কেউ আপনার সম্পর্কে জানতে পারে। তাই সে অগ্রিম বলে দিতে পারে আপনার প্রাধিকার ও সিদ্ধান্ত কী হবে, তা। এটি আপনার আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে ও আপনার কাছে বিক্রি করতে পারে যে-কোনো পণ্য – এমনকি রাজনৈতিক নেতাদেরও।
প্রশ্ন : কিন্তু আমরা কেন বিষয়টি কম্পিউটারের ওপর ছেড়ে দিচ্ছি না? তারাই না হয় আমাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিক। হয়তো আমরা তাতেই সুখী হবো।
হারারি : হয়তো কিছু ক্ষেত্রে এটি একটি উত্তম আইডিয়া। এটি এরকম যে, আপনি কাকে গাড়ির চালক হিসেবে বিশ^াস করবেন? বর্তমানে প্রতিবছর ট্রাফিক দুর্ঘটনায় ১ মিলিয়নের চেয়ে বেশি মানুষ নিহত হয়। এ 888sport free betটি প্রতি বছর যুদ্ধ, সন্ত্রাস, অপরাধ ইত্যাদিতে মিলিতভাবে মারা যাওয়া মানুষের চেয়েও বেশি। আর সমস্ত ট্রাফিক দুর্ঘটনাই মানুষের ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্তের কারণে ঘটে থাকে। আমরা যদি এর ভার অ্যালগরিদমের ওপর ছেড়ে দিই এবং কম্পিউটারকে গাড়ি চালাতে দিই – তাহলে তা দুর্ঘটনার 888sport free bet শূন্যে নামিয়ে আনতে না পারলেও সম্ভবত তা ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম হবে। এভাবেই তা হাজার হাজার লোকের প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হবে।
প্রশ্ন : কিন্তু অ্যালগরিদমকে কোনো জিনিসের দায়িত্ব দেওয়াটা খারাপ হবে?
হারারি : যখন আপনি তাকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেবেন যে কী পড়তে হবে, কোথায় বাস করতে হবে, কাকে বিয়ে করতে হবে, কাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে হবে। অ্যালগরিদম অবশ্য শুধু আপনার কাছে এগুলো তুলে ধরবে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়াটা থাকবে আপনার হাতেই। তবে অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ তাদের পরামর্শগুলোই মেনে চলবে, কারণ তারা তাদের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারবে যে, অ্যালগরিদম সাধারণত ভালো পরামর্শই দেয়। তাদের সুপারিশগুলো হয়তো নিখুঁত নয়, তবে তা হওয়ার প্রয়োজনও নেই। মানুষের নেওয়া সিদ্ধান্তের চেয়ে সেগুলো ভালো হলেই চলবে। সেটি হওয়া অসম্ভব নয়, কারণ অনেক সময়ই মানুষ খুব বাজে ও ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। এটি ঘটে থাকে এমনকি জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর ক্ষেত্রেও। আমরা কোন বাড়িটি কিনবো, বা কোন বইটি কিনবো – এ সমস্ত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব অ্যালগরিদমকে দিলেও আমরা নিজেদের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছি। গুগল ম্যাপ দেখে চলতে চলতে কয়েক বছর পরে আপনি স্বাধীনভাবে আর চলতেও পারবেন না। তাই, যদিও আপনার নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা অটুট রয়েছে, সত্যিকার অর্থে আপনি ধীরে ধীরে অ্যালগরিদমের দিকেই ঝুঁকে পড়েছেন।
প্রশ্ন : বর্তমানে আমরা কৃত্রিম প্রজ্ঞা সম্পর্কে যে ভয়টা পাচ্ছি, তা হলো একসময়ে রোবট সবকিছু তার হাতে তুলে নিতে পারে। তারা একসময়ে স্বনিয়ন্ত্রিত বা স্বাধীন হয়ে উঠতে পারে এবং এভাবেই হয়ে উঠতে পারে আমাদের প্রভু। কিন্তু আপনি কিন্তু অন্যরকম কিছু বলছেন। আপনি বলছেন যে, আমরা নিজেরাই একসময়ে তাদের কাছে আত্মসমর্পণ করব।
হারারি : ঠিক তাই। আমরাই একসময়ে তাদের হাতে নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা তুলে দেব। বেশিরভাগ 888sport apk কল্পকাহিনিতে দেখা যায় যে, রোবট ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও তারা নিজেরাই তাদের মেরামত করে নেয় এবং মানুষকে মেরে ফেলতে চেষ্টা করে। অবশ্য মানুষও তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় এবং রোবটকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করে। এটি আমাদের আনন্দদানকারী একটি মিথ। এটি মানুষকে বোঝাতে চায় যে, মানুষের চেয়ে নিপুণতরভাবে অন্য কেউ কিছু করতে পারে না। আমরা যদি রোবটের ওপর নির্ভর করি, তাহলে সবকিছুই দুর্যোগের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এর চেয়েও ভয়াবহ দৃশ্য হচ্ছে যে, রোবটসমূহ আমাদের চেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। এখানেই প্রশ্ন আসে যে, ‘মানবজীবন আসলে কী?’ আমরা হাজার বছর ধরে যে ধারণাটি তৈরি করেছি, তা হচ্ছে যে, মানবজীবন সিদ্ধান্ত নেওয়ার একটি নাট্যমঞ্চ। জীবন হচ্ছে বিভিন্ন দিকে চলে যাওয়া একটি চৌরাস্তা, আর প্রতিটি দিন, মাস বা বছর জুড়েই আপনাকে নানারকম সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
প্রশ্ন : আমাদের নৈতিক বিষয়টি এর ওপরই নির্ভরশীল। আর অনেকটা এর ওপর ভিত্তি করেই আমাদের ধর্মও রচিত।
হারারি : ঠিক তাই। আপনি যদি ভালো সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে আপনি স্বর্গে যাবেন। আর যদি খারাপ সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে যাবেন নরকে। শেক্সপিয়রের নাটক থেকে শুরু করে হলিউডের নির্বোধ কমেডিগুলো একই কথা বলে। আমরা কাকে বিয়ে করবো? আমরা কি যুদ্ধ করবো, নাকি শান্তির জন্য কাজ করবো? হ্যামলেট যদি হঠাৎ করে তার সেলফোন বের করে সিরিকে৩ প্রশ্ন করে যে কী করতে হবে, তাহলে আমাদের জনসমাজে কী ঘটবে?
প্রশ্ন : এই প্রায়োগিক স্থানান্তর কীভাবে আমাদের রাজনৈতিক পদ্ধতিকে প্রভাবিত করবে? বর্তমানের প্রভাবশালী রাজনৈতিক আদর্শবাদ, উদারনৈতিক গণতন্ত্র ইত্যাদি নিশ্চিতভাবেই এখন হুমকির সম্মুখীন।
হারারি : এখন যা ঘটছে, তাতে আমরা কোনদিকে এগিয়ে চলেছি, তা বোঝার জন্য অপ্রতুল। আমরা বেশিরভাগ মানুষই উদার গণতন্ত্রের আইডিয়ায় বিশ্বাস করি, কিন্তু এটি আমাদের সবকিছু ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলছে। গত ১৯৯০ ও ২০০০ দশকে এটি আমাদের কিছু শক্তিশালী ভবিষ্যদ্বাণী দিয়েছে যে, আমরা কোনদিকে এগিয়ে চলেছি। উদার গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতি সারা বিশে^ই ছড়িয়ে পড়েছে আর সারা বিশ্বই এখন যুক্তরাষ্ট্র ও ডেনমার্কের মতোই হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এখন এই উদার গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎকে দেখার কোনো ভিশন দেখা যাচ্ছে না। আমাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের কারো কোনো ধারণা নেই। আগামী ২০৫০ সালে আমাদের পৃথিবী ও মানুষ দেখতে কেমন হবে, তা নিয়ে আমাদের বাম ও ডানপন্থী কারো কোনো ধারণা নেই। যারা উদারনৈতিকতায় বিশ্বাসী, তারাও সঠিকভাবে বলতে পারেন না যে, তাদের ভবিষ্যদ্বাণীগুলোই সঠিকভাবে ফলবে। এসব উদারনৈতিক ভাবনাগুলো যেভাবে ঘটা উচিত, আমাদের পৃথিবীতে সেগুলো ঠিক সেরকমভাবেই ঘটছে না। তাই যারা উদারনৈতিকতায় বিশ^াস করেন, তারা বুঝে উঠতে পারছেন না যে, এখন বিশ্বে কী ঘটে চলেছে।
প্রশ্ন : কী ঘটে চলেছে, তা আমরাও বুঝে উঠতে পারছি না। উদার গণতন্ত্রই সফলতার চাবিকাঠি বলে মনে হচ্ছে, যদিও পৃথিবীর বেশ কিছু দেশেই এটি কাজ করছেন না বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি।
হারারি : হ্যাঁ, ঠিক তাই। নেতারা যতই স্বৈরাচারী হয়ে উঠছেন, বেশ কিছু দেশ ততোই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তবে মানবেতিহাসে এটি দেখা যাবে যে, বিগত ৩০ বছরে, যখন উদারনৈতিকতা রাজত্ব করছে, যখন আমাদের পৃথিবী একটি ভালো অবস্থায় রয়েছে। আর এর মূল কৃতিত্বটি এই উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থারই। তবে এটি ঠিক যে, মানুষ ক্রমশ এতে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে। আর এর একটা মূল কারণ হচ্ছে নতুন নতুন প্রায়োগিক আবিষ্কার, যার ফলে কিছু মানুষ ক্রমশই পেছনে পড়ে যাচ্ছেন। এটা শুধু যে প্রযুক্তি, তা নয় – এটা নতুন বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গিরও প্রশ্ন। এই উদারনৈতিক ভাবনা যে বিষয়টির ওপর ভিত্তি করে, তা হচ্ছে মুক্ত বা স্বাধীন চিন্তা (free will) – অর্থাৎ প্রতিটি মুক্ত মানুষের মুক্তচিন্তাই এ-পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় বিধিসংগত ক্ষমতা (authority)। কিন্তু 888sport apk এখন আমাদের বলছে যে, পৃথিবীতে মুক্তচিন্তা বলে কিছু নেই। এটি শুধু একটি মিথ।
মানুষ সবসময়ই নানা রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কামনা থেকে মুক্ত নই।
প্রশ্ন : এটি নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। 888sport apkী ও দার্শনিকদের একটি বড় অংশ মুক্তচিন্তার আইডিয়াটিকে বিসর্জন দিতে এখনো ইচ্ছুক নন।
হারারি : হয়তো ব্যক্তিগতভাবে সেটা ঠিক। কিন্তু আপনি যদি 888sport apk সাময়িকীগুলোর নিবন্ধ ও পরীক্ষাগুলোর দিকে তাকান, তাহলে দেখতে পাবেন যে, 888sport apk এমনকি এই মুক্তচিন্তার অর্থ কী – তাই বুঝতে পারে না। আমরা প্রকৃতিতে এমন কোনো মুক্ত ঘটনা দেখতে পাই না। আমরা পরিণামবাদী (deterministic) এবং যদৃচ্ছ এলোমেলো (random) – এ দুটো পদ্ধতি সম্বন্ধে জানি। আর এ দুটোকে একত্র করে আমরা সম্ভাব্যতার (probabilistic) পদ্ধতিটি হাতে পাই। কিন্তু এই যদৃচ্ছভাব (randomness) মুক্ত কিছু নয়। নিশ্চিতভাবেই মানুষের একটি স্বাধীন ইচ্ছা (free will) রয়েছে। মানুষের কামনাও রয়েছে। মানুষ সবসময়ই নানা রকম সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা কখনো মুক্ত বা স্বাধীন নই। আমরা মুক্ত নই যে আমরা কী কামনা করব, তার ক্ষেত্রেও। আমাদের কামনাগুলো রূপ নেয় প্রকৃতি ও আমাদের সংস্কৃতি দিয়ে এমনভাবে যে সেগুলো ব্যক্তির ধারণা ও তার নিয়ন্ত্রণক্ষমতার বাইরে।
প্রশ্ন : আপনি কি বলতে চান যে, সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে ব্যক্তির এই অক্ষমতা গণতন্ত্রের এই অকার্যকর হয়ে ওঠার পেছনে কাজ করছে?
হারারি : অন্তত এ-দুটো জিনিসই একসঙ্গে ঘটছে বলে আমরা দেখতে পাচ্ছি। প্রথমত, আমরা মানুষকে হ্যাক করার ক্ষমতা অর্জন করেছি। আপনি যদি মুক্তচিন্তায় বিশ্বাস করেন, তাহলে আপনি বলবেন যে, এটি অসম্ভব। আমি নিজেকে যতটুকু জানি, তারচেয়ে বেশি কেউ আমাকে জানে না। আমার সিদ্ধান্ত কী হবে, কেউই তার ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবে না। কেউই আমার সিদ্ধান্তকে পরিবর্তন করতে পারবে না – কারণ এগুলো আমার মুক্তচিন্তারই প্রতিফলন। কিন্তু এখানেই দেখা যাচ্ছে যে, আপনাকে হ্যাক করাটা এবং স্বকার্যে ব্যবহার করাটা সহজ হয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন : আপনি কি এ-বিষয়ে বলছেন যে, কিছু রাজনৈতিক গ্রুপ ফেসবুকে তাদের রাজনৈতিক মতবাদ প্রয়োগ করতে ব্যবহার করছে?
হারারি : এটি একটি হিমশৈলের চূড়া মাত্র। অথবা বলতে পারেন এটি একটি wake-up call। কিন্তু ক্যামব্রিজ অ্যানালাইটিকা এবং বেশ কিছু কোম্পানি এবং ইড়ঃং এমনভাবে কাজ করছে যেন তারা মানুষকে হ্যাক করছে। তারা আপনার বর্তমান ভয়, ঘৃণা ও পক্ষপাতকে জেনেই এটা করছে। আপনি যখনই জানতে পারবেন একজন ব্যক্তির পক্ষপাত কী এবং তার কী দুর্বলতা রয়েছে, তখনই আপনি তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে কাজ করতে পারবেন।
প্রশ্ন : ভয় এবং ঘৃণা হচ্ছে আদিম রিপু। আপনি কি বলতে চাচ্ছেন যে, যদি এই আদিম রিপুকে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাহলে কোনো ব্যক্তির রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকেও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব?
হারারি : হ্যাঁ, আপনি যদি মানুষের ভয় এবং ঘৃণাকে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম হন, তাহলে তাদের সামাজিক বিন্যাসকে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম হবেন। এবং এটা ব্যক্তির ক্ষেত্রেও সম্ভব। অবশ্য একই গল্প আপনি সবার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে সক্ষম হবেন না, কারণ ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে দুর্বলতা রয়েছে। তারা যদি দেখতে পায় যে, অভিবাসীদের সম্পর্কে আপনার আতঙ্ক রয়েছে তখন তারা আপনাকে দেখাবে যে, অভিবাসীরা একটি স্থানীয় মেয়েকে গ্যাং রেপ করেছে। তারা জানে যে, আপনি এটি বিশ্বাস করবেন। কারণ আপনার মধ্যে এরকম একটি পক্ষপাত রয়ে গেছে। কিন্তু আপনার প্রতিবেশীর ক্ষেত্রে অন্যরকম একটি পক্ষপাত রয়েছে। তিনি অভিবাসনের পক্ষে। তিনি মনে করেন যে, যারা অভিবাসনের বিরোধিতা করে, তারা সবাই বর্ণবাদী ও ফ্যাসিস্ট। কাজেই তার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হবে যে গল্পটি, সেটি হচ্ছে যে, একদল ডানপন্থী উগ্রবাদী হত্যা করছে অভিবাসীদের। তারাও এ-গল্পটি আগের গল্পটির মতোই বিশ্বাস করবে। এ-দুটো ক্ষেত্রেই মানুষের মাঝে বর্তমান কিছু ভয় ও ঘৃণাকে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। সুতরাং আপনি যদি মনে করেন যে, মানুষ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে তা ভুল। তাই আপনি এ রকমভাবে ব্যবহৃত হওয়ার ক্ষেত্রে খুব সহজ শিকার।
প্রশ্ন : আপনি বলছেন যে দুটো জিনিস গণতন্ত্রকে দুর্বল করে ভেঙে দিচ্ছে। এর মধ্যে দ্বিতীয় জিনিসটি কী?
হারারি : দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে যে, ভবিষ্যতে আপনি আরো বেশিসংখ্যক লোককে পেছনে ফেলে যাবেন। যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানকালের সমস্যা নিয়ে চিন্তা করাটাই সবচেয়ে বড় সমস্যা নয়, বরং সমস্যা হচ্ছে সেটা যে, মানুষ ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে দেখতে পায় যে, ভবিষ্যতে তাদের আর কোনো প্রয়োজনীয়তা থাকবে না। বিশ শতকের বহু রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগ্রামের মূলে ছিল ধনবৈষম্য বা শোষণ (exploitation) – ধনীরা শ্রমিক শ্রেণিকে শোষণ করছিল। কিন্তু 888sport cricket BPL rate শতকে এসে এই শোষণ নয়, সবচেয়ে বড় ভয় হচ্ছে ধনীদের জন্য গরিবদের আর কোনো প্রয়োজন হবে না। গরিবেরা ক্রমশই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ছে। বৃহৎ দৃষ্টি থেকে দেখতে হলে এ ধরনের ভয় খুব যুক্তিযুক্ত। ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে অনেক লোকই অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে, যেমন হয়ে পড়বে রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও। তাই তারা খুব বেশি দেরি হওয়ার আগেই তাদের রাজনৈতিক শক্তি ব্যবহার করতে চায়।
প্রশ্ন : আপনার এই ক্রিস্টাল বল যদি সঠিক হয়, তাহলে আমরা কী করতে পারি?
হারারি : আমরা আমাদের নতুন প্রযুক্তিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারি। আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে তারা শুধু ভালো কাজেই ব্যবহৃত হবে, কোনো খারাপ কাজে নয়। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, বিগ ডাটা অ্যালগরিদম আমাদের সেবা করবে – অর্থাৎ ব্যক্তিকে, কোনো করপোরেশন বা সরকারকে নয়। বর্তমানকালে আমরা দেখতে পাই যে AI system সরকার ও করপোরেশনের চেয়ে ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করতেই বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এই প্রযুক্তি ক্ষমতা সরকার এবং করপোরেশনকে মনিটর করতে ব্যবহার করা যেতে পারে, যাতে উপকৃত হবে ব্যক্তি (individual)। কিন্তু এর উল্টোটাই এখন ঘটছে, যাতে উপকৃত হচ্ছে সরকার ও করপোরেশনগুলো। এর বিপরীতটা করতে হলে কোনো প্রায়োগিক সমস্যা নেই, যাতে সাধারণ মানুষকে উপকার-বঞ্চিত রাখতে হয়।
প্রশ্ন : আমরা তো আমাদের সিম্পলি আনপ্লাগ করতে পারি।
হারারি : আমি সবাইকে পরামর্শ দেব যে, সবাই যেন প্রতিদিন এক থেকে দুই ঘণ্টা করে আনপ্লাগ করে রাখে, যাতে বছরের বড় একটা সময় আনপ্লাগড থাকা যায়। আমি নিজে এরকম আনপ্লাগড অবস্থায় প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে মেডিটেশন করি। প্রতিবছর আমি একটা লম্বা সময় – ৩০ থেকে ৬০ দিন এরকমভাবে কাজ থেকে দূরে চলে যাই এবং সবরকম ফোন, কম্পিউটার থেকে দূরে অবস্থান করি। এভাবেই আমি হয়ে উঠি একজন সুখী ও শান্ত ব্যক্তি, যা আমার মনের প্রশান্তি বাড়ায়। এটি আমাকে পৃথিবীর ভবিষ্যৎ দেখার ক্ষেত্রেও সাহায্য করে। কারণ আপনার ও পৃথিবীর মাঝখানে যা আসে, তা এতটাই অস্বচ্ছ যে তা আপনার নিজেরই দুর্বলতা, ঘৃণা, ভয় ও পক্ষপাত। আপনি যদি এগুলোকে সঠিকভাবে না জানেন, তাহলে এ-পৃথিবীকে বোঝার ক্ষেত্রেও আপনার সমস্যা হবে। আপনার মন যদি সর্বত্র বিরাজ করে, কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে একে ফোকাস করতে না পারেন; তাহলে আপনি কোনো প্রশ্নেরই গভীরে যেতে পারবেন না। মেডিটেশন আমাকে এসব ক্ষেত্রে যে-কোনো কিছুর গভীরে যেতে সাহায্য করে, যাতে আমি আমার দুর্বলতা ও পক্ষপাতগুলোর বিষয়েও জানতে পারি।
প্রশ্ন : আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনি কি আশাবাদী, নাকি হতাশাবাদী?
হারারি : আমি আমার দৃষ্টিভঙ্গিকে তিনটি সরল বক্তব্য দিয়ে প্রকাশ করতে চাই। বর্তমান পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো, যদিও এখনো প্রচুর খারাপ জিনিস রয়ে গেছে। আর এটি আমাদের আরো খারাপের দিকেও নিয়ে যেতে পারে। এখানেই একটি আশাবাদী দৃষ্টি রয়ে গেছে যে, আপনি যেহেতু অতীতের চেয়ে ভালো অবস্থায় আছেন, তাহলে ভবিষ্যৎকে আরো ভালো করার সুযোগ রয়ে গেছে। আমরা আমাদের অবস্থার উন্নতি ঘটাতে পারি। কিন্তু এটা যে ঘটবেই, তা নিশ্চয় করে বলা যায় না। আমি এরকম বিশ্বাসে বিশ্বাসী নই যে, 888sport apk ও প্রযুক্তি আমাদের ভবিষ্যৎ পৃথিবীকে উন্নততর করবেই। 888sport apk ও প্রযুক্তি শুধু একটি জিনিসই নিশ্চিত করতে পারে – আর এটি হচ্ছে শক্তি। মানুষ ক্রমশ আরো শক্তিশালী হতে যাচ্ছে। কিন্তু এই শক্তি দিয়ে কী হবে? এখানেই আমাদের সামনে কিছু বিকল্প বা অপশন রয়েছে। আমরা যদি ইতিহাসের দিকে তাকাই, তাহলে দেখতে পাবো যে, মানুষ এই শক্তিকে কখনো খুব বুদ্ধিমানভাবে ব্যবহার করেছে, আবার কখনো করেছে নির্বুদ্ধিতার সঙ্গে। মানবেতিহাসে মানুষের এই নির্বুদ্ধিতার ইতিহাসও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মানুষের এই নির্বুদ্ধিতাকে আমরা কখনো অবমূল্যায়ন করে দেখতে পারি না। 888sport cricket BPL rate শতকে মানুষ যে ক্ষমতাকে হাতে পেতে যাচ্ছে, তার সঙ্গে যদি এই নির্বুদ্ধিতাকে মিশিয়ে ফেলা যায়, তাহলে তা মানবজাতির জন্য হতে পারে দুর্যোগের একটি রন্ধনপ্রণালি।
টিকা
১. স্টিভেন ভি পলসন : অস্ট্রেলিয়ায় জন্ম, যুক্তরাষ্ট্রে কর্মরত ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক ও যাজক। 888sport apk কল্পকাহিনি, রহস্য ও রোমাঞ্চ 888sport alternative linkের লেখক। তিনি বেশ কিছু বিখ্যাত ব্যক্তির সাক্ষাৎকার গ্রহীতাও।
২. BOT : BOT শব্দটি ইংরেজি Robot শব্দটি থেকে আনা একটি সংক্ষিপ্ত রূপ, যা মূলত একটি স্বয়ংক্রিয় প্রোগ্রাম বা স্ক্রিপ্ট। এটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে। আবার অন্যদিকে বৈদ্যুতিক শক্তির বাণিজ্যিক একককেও BOT (Board of Trade) বলা হয় – ১ বট = ১০০০ ওয়াট-ঘণ্টা।
৩. সিরি : প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল একটি বিপ্লবী ভয়েস সহকারী হিসেবে সিরি চালু করে ২০১১ সালে। নর্ডিক ভাষায় সিরি নামের অর্থ সুন্দরী 888sport promo code, যে আপনাকে বিজয়ের পথে চালিত করে। এটি আই-ফোনের মাধ্যমে তথ্য পেতে এবং আরো নানা কাজ সম্পন্ন করতে ব্যবহৃত হয়। সিরির সাফল্য বিশ্বকে দেখিয়েছে যে, ভয়েস নিয়ন্ত্রণ প্রযুক্তির সঙ্গে যোগাযোগ একটি ব্যবহারিক পদ্ধতি হতে পারে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.