প্রতিবছর ইতালি ও ইউরোপের 888sport app দেশে গ্রীষ্মের শেষদিন হিসেবে পালন করা হয় ১৫ই আগস্টকে। ৩৬-৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছে যাওয়া গ্রীষ্মের উত্তাপ এই দিনটির পর থেকে ধীরে ধীরে কমতে আরম্ভ করে। এর পরের দশদিনেই তাপমাত্রা বেশ সহনীয়, ৩০ ডিগ্রি অথবা তারও নিচে, নেমে আসে।
সমুদ্রের বেলাভূমিতে শুয়ে-বসে, সময় কাটিয়ে যেসব 888sport promo code-পুরুষ সূর্যের আলো প্রতিটি অঙ্গে মেখে নিতে সচেষ্ট থাকে, ১৫ই আগস্টের পর থেকে তাদের 888sport free betও কমতে শুরু করে। কমতে থাকে বিদেশ থেকে আসা কর্মপ্রত্যাশীদের ভিড়; কিছু আয়ের প্রত্যাশায় সৈকতে প্রয়োজনীয় ছোট ছোট পণ্য বিক্রেতার 888sport free bet। এদের অনেকেই আসেন উত্তর আফ্রিকা থেকে, তবে এখন অনেক 888sport appsিরও দেখা পাওয়া যায় তাদের মাঝে।
কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রকোপে গত দু-তিন বছর ধরে 888sport slot gameপিপাসুদের আনাগোনা কম ইতালির সমুদ্রসৈকতে। তবে এখন আবার পর্যটকরা ফিরে আসতে শুরু করেছেন। অবশ্য তাদের 888sport free bet এখনো প্রাক্-কোভিড ১৯ পর্যায়ে পৌঁছেনি। নর্ডিক ও জার্মান পর্যটকরা প্রচণ্ড শীত শেষে অপেক্ষা করেন উষ্ম ইতালীয় সৈকতে তাদের মেলে দেওয়ার জন্য। তাদের 888sport free bet এখনো অপ্রতুল।
এখন ধীরে ধীরে বেলাভূমির ছাতাগুলি বন্ধ হতে শুরু করবে। সমুদ্রের পাশ দিয়ে লম্বা রাস্তা, যেখানে গাড়ির ভিড়ে যাতায়াত করা প্রায় অসম্ভব, সেই রাস্তাগুলি আবার গাড়িমুক্ত হতে থাকবে, পর্যটকরা ফিরে যেতে শুরু করবেন নিজেদের দেশে। যারা অবশ্য পুরো গ্রীষ্মের জন্য অনেকটা কম ভাড়ায় ছাতা, শুয়ে থাকার জন্য ফোল্ডিং বিছানা ও চেঞ্জিংরুম ভাড়া করেছেন, তারা হয়তো আরো কিছুদিন থাকবে। তারপর সমুদ্রের গর্জন ছাড়া সুনসান নীরবতা। সমুদ্র সৈকতের অসংখ্য রেস্টুরেন্টে ভিড় কমতে কমতে একসময় শীত নেমে আসার পর বন্ধ হয়ে যাবে। শরতের হালকা ঠান্ডা বাতাস হিম ছড়াতে থাকবে।
গ্রীষ্মের পাট গুটানোর দিন এলেই মনে পড়ে অনেকদিন আগে আমাদের পরিচিত এক ইতালীয় পরিবারেরর সঙ্গে গ্রীষ্মের শেষদিন কাটানোর ও দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর 888sport sign up bonus।
১৯৯১ সালের বসন্ত। ইতালিতে আমরা সবে এসেছি, ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের রিভারসাইড ক্যাম্পাসের অর্থনীতি বিভাগে এক বছর পড়িয়ে 888sport app হয়ে জাতিসংঘের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইফাদে যোগ দেওয়ার জন্য। ভাড়া করেছি ভিয়াচে জারেপাভেসির ওপর একটা অ্যাপার্টমেন্ট ব্লকের ছয়তলার ডানদিকের ফ্ল্যাট। আমাদের ঠিক একতলা নিচে, উল্টোদিকে একটা ইতালিয়ান পরিবারের বসবাস। কম বয়সী একটা যুগল, এমিলিও ও ফ্লাভিয়া; তিনটি বাচ্চা নিয়ে ওদের সুন্দর গোছানো পরিবার। এমিলিও কম্পিউটার টেকনোলজির ওপর কাজ করে আর ফ্লাভিয়া একটা স্কুলে পিয়ানো শেখায়। ওদের বাচ্চাদের বয়স আমাদের মেয়েদের কাছাকাছি। তাই বাচ্চাদের পরিচয়ের মাধ্যমে এমিলিও ও ফ্লাভিয়ার সঙ্গে পরিচয়, বন্ধুত্ব ও অন্তরঙ্গতা হয়ে যায়। বাচ্চাদের পরিচয় নিবিড় করার জন্য আমাদের দুই পরিবারেরই চেষ্টা ছিল। তাদের উদ্দেশ্য, আমাদের মেয়েদের সঙ্গে মেলেমেশার মধ্য দিয়ে ওদের বাচ্চারা ইংরেজি শিখবে, আর আমাদের উদ্দেশ্য, আমাদের বাচ্চারা ইতালিয়ান শিখবে। বেশ কিছুদিন পরে দেখা গেল তাদের উদ্দেশ্য তেমন সফল হয়নি, কিন্তু আমাদের বাচ্চারা ইতালিয়ান ভাষা বেশ আয়ত্ত করে ফেলেছে। যা হোক, যাতায়াত, খাবারের আদান-প্রদান, এবং একটা নতুন জায়গায় গিয়ে স্থিতু হতে যা কিছু প্রয়োজন, সব ব্যাপারেই তাদের আন্তরিক সাহায্য দুই পরিবারের বন্ধুত্বকে বেশ গভীর করে তোলে।
গত কয়েক বছর ধরেই এমিলিও-ফ্লাভিয়া আমাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছিল তাদের দেশের বাড়িতে গ্রীষ্মের ছুটিতে বেড়াতে যেতে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
১৯৯৬ সাল। বসন্ত পেরিয়ে গ্রীষ্ম এসে গেছে। ছেলেমেয়েদের ছুটি। গ্রীষ্মের ছুটিতে সব ইতালিয়ান পরিবারই শহুরে কর্মব্যস্ততার একঘেয়েমি দূর করার জন্য কয়েকদিনের জন্য হলেও কাজ থেকে ছুটি নিয়ে দূরে কোথাও বেড়াতে যায়। কেউ যায় নিজেদের গ্রামের বাড়িতে, কেউ সমুদ্রের পারে, কেউ উঁচু পাহাড়ে শীতল আবহাওয়ার খোঁজে, কেউবা হলিডে রিসোর্টে বা লাইফস্টাইল হোটেলে। তখন বিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটকও আসে ইতালির কৃষ্টি, ঐতিহাসিক ও প্রাগৈতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্রগুলি ঘুরে দেখার জন্য।
আমাদের নিচতলার প্রতিবেশী এমিলিওরাও তৈরি হচ্ছে, তারা যাবে তাদের গ্রামের বাড়িতে, পূর্বে অ্যাড্রিয়াটিকের পারে। সেখানকার আবহাওয়া চমৎকার। সমুদ্রের পারে পাহাড়ের সারি। কিছু কিছু পাহাড়ের উচ্চতা অনেক, ৭০০ মিটারের ওপর। উচ্চতার জন্য আবহাওয়া কিছুটা শীতল আর আগ্নেয়গিরির লাভাসমৃদ্ধ জমির ফলমূলও অনেক সুস্বাদু। পাহাড়ের ঢালে ঢালে বসতি, বসতির চারপাশে পাথরের মোটা দেয়ালে ধস প্রতিরোধের ব্যবস্থা, অনেক পুরনো গাছপালায় 888sport app।
এমিলিও এবং ফ্লাভিয়া অনেক আন্তরিকতার সঙ্গে আমাদের আমন্ত্রণ জানাল তাদের গ্রামের বাড়িতে গ্রীষ্মের শেষ কটি দিন কাটানোর জন্য। আমরাও রাজি হয়ে গেলাম। ঠিক হলো যাব ১৪ই আগস্ট দুপুরে, গ্রীষ্মের শেষদিন পার করে ১৬ তারিখে ফিরব রোমে।
ওরা চলে গেল জুলাইয়ের শেষের দিকে – ঠিকানা, গ্রামের বাড়ির ফোন নম্বর এবং কীভাবে যেতে হবে তা আমাদের বুঝিয়ে দিয়ে। জানিয়ে গেল, গ্রামের নাম মাসিনিয়ানো, রোম থেকে ২৫০-২৬০ কিলোমিটার পূর্বে আড্রিয়াটিক সমুদ্রের পারে একটি পাহাড়ের প্রায় চূড়ার পুবদিকের ঢালে। প্রায় ৬০০-৭০০ মিটার উচ্চতায় ঠান্ডা আবহাওয়া, শান্ত পরিবেশ। গ্রীষ্মে হাইওয়েতে বেশ ভিড় হয়, তাই আমরা যেন তাড়াতাড়ি রওনা হই, যাতে সন্ধ্যার আগেই ওদের ওখানে পৌঁছাতে পারি। রাতের আহারেরও নিমন্ত্রণ জানালো। আরো বলল, না থেমে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালালে তিন থেকে চার ঘণ্টায় পৌঁছে যাওয়া যাবে। আমরা যেন বিকেল ৫টা থেকে ৬টার মধ্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করি।
এবার শুরু হলো আমাদের যাওয়ার প্রস্তুতি। কিছু উপহার, আমাদের দুই মেয়ের (দশ ও পাঁচ বছর) প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, খাবার, পানি, ফ্রুট ড্রিঙ্কস, ইত্যাদি ঠান্ডা বাক্সে করে গাড়িতে ভরা হলো। বেশ লম্বা পথ পাড়ি দিতে হবে। গ্রীষ্মকাল। সবাই বেরিয়েছে কোথাও না কোথাও যাবে বলে। রাস্তায় গাড়ির ব্যাপক ভিড়। পূর্ব-পশ্চিমের সংযোগ রাস্তাগুলি হাইওয়ে পর্যায়ের নয়, একটু নিচুমানের, সুপার স্ট্রাডা। তাই গাড়ির গতি মাঝে মাঝেই কমিয়ে ৭০-৮০ কিলোমিটারে নিয়ে আসতে হয়। রাস্তা ব্যবহার করার জন্য টোলও দিতে হয়। হাইওয়েতে ঢোকার ও বেরোনোর টোলবুথগুলিতে গাড়ির ভিড়ের জন্য বেশ সময় লেগে যায়। গ্রীষ্মে গাড়ির ভিড়ে আটকে বসে
থাকতে হয় অনেকক্ষণ, বিশেষ করে টোল বুথগুলিতে। তখনো আমরা টেলিপাস নিইনি, যেটা থাকলে পূর্বনির্ধারিত বিশেষ গেট দিয়ে গতি না কমিয়েই সরাসরি চলে যাওয়া যায় আর টেলিপাসটি জানিয়ে দেয় আমরা কোথা থেকে হাইওয়েতে উঠেছি এবং কোথায় বেরুচ্ছি। সেই হিসাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সরাসরি ইউরো কেটে নেওয়া হয়।
ইতালির ঠিক মাঝামাঝি, উত্তর থেকে দক্ষিণে, উঁচু-নিচু পাহাড়ের মালা উত্তরের কারডিবনা পাস থেকে আরম্ভ করে কালাব্রিয়ার শেষ মাথা হয়ে সিসিলি পর্যন্ত শিরদাড়ার মতো বিস্তৃত। এই মালার মাঝামাঝি আব্রুজ্জর কাছে এপেনাইন পাহাড়, যার উচ্চতা প্রায় দুই হাজার ৯০০ মিটার (অর্থাৎ প্রায় নয় হাজার ৫০০ ফুট)। তার মাঝামাঝি গ্রেনছাছো পাহাড়। আমাদের সেটা অতিক্রম করতে হবে। অবশ্য পাহাড়ের একদম চূড়ায় উঠতে হবে না, দুই-তৃতীয়াংশ পথ উঠেই একটা চার লেনের বেশ চওড়া ছয় মাইলেরও বেশি লম্বা সুড়ঙ্গপথ দিয়ে এপার থেকে ওপারে চলে যাওয়া যায়।
সুড়ঙ্গপথের রাস্তা মসৃণ, উন্নত মানের, বেশ আলোকিত। পাহাড়ের গভীরে বেশ ঠান্ডা। বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে ভেতরের তাপমাত্রা প্রায় সাত-আট ডিগ্রি কম। যেখানে গ্রেনছাছো পাহাড়ের উচ্চতা সবচেয়ে বেশি ঠিক সেখানেই, পাহাড়ের গভীরে, ইতালির একটা উঁচুমানের অণু-পরমাণু সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে, যেটা পার্টিকেল ফিজিক্সের ওপর পৃথিবীর সর্ববৃহৎ ভূগর্ভস্থ গবেষণার স্থান হিসেবে পরিচিত।
সুড়ঙ্গপথের প্রায় মাঝিমাঝি স্থানে দেখলাম একটা ফলকে পরমাণু গবেষণা কেদ্রের নাম; পাশ দিয়েই রাস্তা চলে গেছে ভেতরে একটা বন্ধ বিশাল লোহার গেটের দিকে। কারণ ছাড়া গাড়ি না থামানোর নির্দেশ। এত বড় একটা পাহাড়ের গভীরে কী সুন্দর সুড়ঙ্গপথ আর সেটাই ব্যবহার করে আরো গভীরে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র।
মাঝে মাঝে পানীয়, খাবার ও টয়লেটের প্রয়োজনে থেমে, পথে ও বিপথে ঘুরে, ছোট ছোট বেশ কয়েকটা পাহাড়ের চূড়ায় উঠে ও নেমে, সন্ধে ৮টার দিকে অ্যাড্রিয়াটিক উপকূলে এমিলিওর পাহাড়ে পৌঁছালাম। গ্রীষ্ম, তাই দিন বড়। পাহাড়ের নিচের দিকে গাছের ছায়ায় অন্ধকার কিছুটা ঘনীভূত। বেশ কয়েকটা হেয়ার পিন বাঁক নিয়ে কিছুটা ওপরে উঠতেই দেখলাম চারদিক বেশ আলোকিত। সূর্য তখনো অস্ত যায়নি। সুন্দর বিছানো রাস্তার পাশে বেশকিছু বাড়ি। এটাই কি পাড়াগাঁ? এত সুন্দর! চারদিকে পাহারের চূড়ায় চূড়ায় গ্রাম। মধ্যযুগে বা তারও আগে গ্রামগুলি এভাবেই তৈরি হতো, শত্রুর আক্রমণ থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য।
এমিলিওরা অপেক্ষা করছিল। আমাদের দেখে এগিয়ে এলো। তাদের বাচ্চারা তাদের বন্ধুদের সঙ্গে সাইকেল চালাচ্ছিল, সেগুলি ফেলে দৌড়ে এসে আমাদের বাচ্চাদের জড়িয়ে ধরল। বাড়িটা একটা মাঠের পাশে। চারতলা ভবন। প্রতি তলায় একটি করে ফ্ল্যাট। ছোট ছোট। এমিলিওর মা, বাবা, ভাই, গ্রীষ্মের ছুটিতে মাসিনিয়ানোতে এলে এক-একটা ফ্ল্যাটে থাকেন। নিচতলায় বাচ্চাদের খেলার জায়গা, একটা বেশ বড় ঘরে বিলিয়ার্ড টেবিল, একটা খাবার ঘর ইত্যাদি। আমাদের জন্য পাঁচ মিনিট হাঁটার দূরত্বে একটা গ্রামীণ হোটেলে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাতের খাবারের পরে গল্পগুজব করে আমাদের সেখানে পৌঁছে দেওয়া হলো। বিলাসবহুল নয়, তবে সুন্দর থাকার জায়গা। পরিষ্কার-পরিছন্ন। সকালবেলায় এমিলিওদের ওখানে চলে যাবো, সকালের নাস্তা ওদের সঙ্গে করে ঘুরতে বেরোব।
বাড়ি থেকে বেরুনোর সময় দেখলাম ওরা কোনো তালা লাগাল না। সামনের মাঠে দেখলাম বাচ্চাদের সাইকেলগুলি সেভাবেই পড়ে আছে। অবাক লাগল, চুরি হয়ে যায়নি এখনো! রোমে তো এটা চিন্তাই করা যায় না। জিজ্ঞেস করতেই বলল, এটা তো আমাদের গ্রাম, এখানে কে চুরি করবে? এখানে আমাদের ‘কমিউনিটি ফিলিং’ অনেক পোক্ত। সারাদিন ঘর খোলা রাখলেও কেউ চুরি করতে আসবে না। অবশ্য এখন রোমে চুরির প্রবণতা অনেক কমেছে, কয়েক বছর আগে পুলিশ ও কেরাবিনিয়েরির (আর্মড পুলিশের) বিশেষ অভিযানে ঝিংঘেরি গোষ্ঠীকে উচ্ছেদ করার পর থেকে।
হোটেলে যেতে যেতে বলা হলো, ১৫ আগস্ট রাতে এমিলিওদের বাড়ির পাশে সিন্ডিকেট অফিসের সামনের বড় চত্বরে হবে ফ্যাশন শো, খাবারের মেলা ও 888sport app download bd বিতরণী অনুষ্ঠান। প্রতিবছরই হয়ে থাকে এমন গ্রীষ্মবিদায় অনুষ্ঠান।
পরদিন সকালে ওদের বাসায় আসতে আসতে দেখলাম খোলা চত্বরে বেশ কর্মব্যস্ততা। একদিকে উন্মুক্ত বার সাজানো হচ্ছে। ক্রেট ধরে ধরে বিয়ার, ওয়াইন ও 888sport app পানীয় নামানো হচ্ছে। আরেকদিকে একটি মঞ্চ, ব্যান্ডের জিনিসপত্র নামান হচ্ছে। রাতে লাইভ মিউজিক ও ডান্স হবে, তারই ব্যবস্থা। চত্বরের শেষ প্রান্তে একটু ঢালু মতোন জায়গায় রাতে বাজি পোড়ান হবে।
ওখানে দাঁড়ালে দিগন্তবিস্তৃত ঘন নীল অ্যাড্রিয়াটিক সমুদ্র দেখা যায়। খুব পরিষ্কার দিনে দূরে বসনিয়ার উপকূলও দেখা যায়।
বসনিয়ার উপকূল? মনে পড়লো সেখানকার কুখ্যাত সেব্রেনিকার হত্যাযজ্ঞের ঘটনা। ১৯৯৫ সালে সার্বিয়ার স্কোরপিও প্যারা মিলিটারি বাহিনী সেখানে প্রায় দশ হাজার মুসলমান পুরুষকে গভীর বনে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করেছিল। কাছেই থাকা জাতিসংঘের আওতাভুক্ত ডাচ শান্তিরক্ষী বাহিনী সেদিন বসনিয়ান মুসলমানদের বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। ডেকেও আনা যায়নি। এতদিন পরে মাত্র সেদিন নেদারল্যান্ডস মৃতদের হতভাগ্য পরিবার-পরিজনের কাছে ক্ষমা চেয়েছে। তাও বোধ হয় এখনকার উত্তপ্ত বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে। রাশিয়া-ইউক্রেনের সংঘর্ষের পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমা দেশগুলি চাইছে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলমান দেশগুলির সহযোগিতা। থাক সে-কথা।
পরদিন সকালে এমিলিওদের বাসায় তৃপ্তিদায়ক নাস্তা সেরে বেরিয়ে পড়লাম। এমিলিওর গাড়ি সামনে, আমারটা পেছনে। আমার বড় মেয়ে ওর বান্ধবীর সঙ্গে ওদের গাড়িতে। প্রথমে যাব এখানকার একটা ছোট শহরে। সেখানে হবে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। তবে কোনো রেসকোর্সে নয়, প্রতিযোগিতা হবে শহরের মাঝখানে পাথরের ইট বিছানো বিশাল চত্বরে, সিয়েনার বিখ্যাত পালিও স্টাইলে। শহরের প্রান্তে পৌঁছে দেখলাম বেশ ভিড়। গাড়ি পার্ক করতে বেশ বেগ পেতে হলো। আশপাশের গ্রাম থেকে লোকজন আসছে। মাঝে মাঝে মালা, ফুল, রঙিন চাদর দিয়ে সাজান ঘোড়া, ব্যান্ডপার্টি, রংচংয়ে পোশাক পরা জকি এবং গ্রামের লোকজন। বেশ জমকালো, আনন্দঘন পরিবেশ, খাবারের ‘কিয়স্ক’, বড় বড় রঙিন ফ্ল্যাগ বাজনার তালে তালে ঘোরানো হচ্ছে বেশ দক্ষতার সঙ্গে। সবার গন্তব্য শহরের মাঝখানের চত্বরের দিকে। চারদিকে আনন্দ ও তুমুল উত্তেজনা। প্রতিযোগিতা, ব্যান্ড মিউজিক, খাবারের স্টল, লোকের ঢল কাটিয়ে দুপুরের লাঞ্চ খেতে খেতে প্রায় দুটো বেজে গেল। কিছুটা এদিক-সেদিক ঘুরে, কিছু কিছু দোকান – যেগুলি খোলা রয়েছে, সেগুলি থেকে ছোটখাটো কিছু জিনিস কিনে, দুপুরের খাবার সেরে মাসিনিয়ানোতে ফেরার পালা।
ছোট ছোট পাহাড়ের মাথায় গ্রাম-বসতি। পাহাড়ের চারদিকে সরু আঁকাবাঁকা পথে ঘুরে ঘুরে উঠতে হয়। একটি গ্রামে থামলাম। গ্রামের মাঝে চত্বরে মেলা বসেছে। গ্রামের বয়স্ক 888sport promo codeদের বুনন888sport live chatের মেলা। নিপুণ এমব্রয়ডারি, টেবিলে বিছানার চাদর, ন্যাপকিন – সূক্ষ্ম কারুকাজখচিত চমকপ্রদ। এই এলাকাটি নাকি হস্ত888sport live chatের জন্য বিখ্যাত। আমার স্ত্রী আগ্রহ নিয়ে বেশকিছু জিনিস কিনে নিল। বলল, 888sport appয় আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবকে দেওয়া যাবে।
ফিরে একটু নিদ্রা সেরে সন্ধে ৬টার দিকে স্নান করে এমিলিওদের বাসায় পৌঁছালাম। কফি, স্ন্যাক্স খেতে খেতে কিছুটা আড্ডা হলো। একটু পর বাইরে পাহাড়ঘেঁষে হাঁটাপথে কিছুটা হেঁটে বেড়ালাম সবাই, আড্রিয়াটিকের গাঢ় নীল বিশালতা উপভোগ করতে করতে। চোখ বারবার ফিরে যাচ্ছিল বিশাল সাগরের বসনিয়া প্রান্তে। মানুষ কীভাবে এমন নিষ্ঠুর হতে পারে!
রাতে যোগ দিলাম গ্রীষ্মবিদায়ী অনুষ্ঠানে। খাবারের মেলা, যার যেটা পছন্দ কিনে খাও। পরে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা ও খাবারের 888sport app download bd বিতরণ। পুরস্কৃত খাবার টেবিলের সামনে কেনার বেশ ভিড়। এমিলিও দোকানে দোকানে ঘুরে বেশকিছু খাবার কিনে আনলো সবার জন্য। আমিও বেরুলাম কিছু কিনতে। দেখলাম, অঢেল ওয়াইন ও বিয়ার কেনা হচ্ছে। এদিকে এতক্ষণ ধরে চলা হালকা মিউজিকের ভলিউম আস্তে আস্তে বাড়ানো হচ্ছে।
কিছু পরে ফ্যাশন প্রতিযোগিতা শুরু হলো। 888sport app আলো কমিয়ে স্টেজের ওপর ফোকাস বাড়ানো হলো। এই গ্রামের ও আশেপাশের কয়েকটি গ্রামের মেয়েদের এবং ছেলেদের ফ্যাশন প্রতিযোগিতা। মেয়েদের 888sport free bet, আনন্দ ও উল্লাসই বেশি। মিউজিকের তালে তালে হেঁটে যাওয়া, বন্ধুদের ও সমর্থকদের করতালি, হইচই, সবমিলিয়ে বেশ অন্তরঙ্গ ও আনন্দঘন পরিবেশ। স্টেজের ওপর তখন কিছু ছেলেমেয়ে নেচে যাচ্ছে। মিউজিকও বেশ উঁচু পর্দায়। তবে সবকিছু একটা পারিবারিক পরিবেশ ও শালীনতার মধ্যেই হচ্ছে।
রাত ১২টার কিছু আগে ব্যান্ড মিউজিক আরম্ভ হলো, মিউজিকের ভলিউম তীব্রতর হচ্ছে। ঘড়ির কাঁটা ১২টার দিকে এগোচ্ছে। ঠিক ১২টায় আতশবাজি পোড়ানো শুরু হলো। আশপাশের অনেক পাহাড়ের চূড়ায় বাজি পুড়ছে, আকাশে বিভিন্ন রঙের ঝলক, তারার মতো চারিদিকে ঝরে পড়ছে। ধোঁয়া, মিউজিক ও নাচের সঙ্গে সঙ্গে গ্রীষ্মকে বিদায় জানান হচ্ছে। একইসঙ্গে হচ্ছে শরৎবরণ। পোড়ান বাজির ধোঁয়া আকাশে মিলিয়ে যাচ্ছে।
গ্রীষ্মকে বিদায় দেয়া শুধু এই এলাকার আনুষ্ঠানিকতা নয়; এটা সারা ইতালিতেই হয়ে থাকে। এখান থেকে সবাই আবার নিজের কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করবে ও পূর্ণোদ্যমে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়বে।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.