ইরানের নিষিদ্ধ live chat 888sportকার জাফর পানাহি : বাস্তব যাঁর উপস্থাপনা

জাফর পানাহি ইরানি live chat 888sport-পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও live chat 888sport-সম্পাদক। জন্মেছিলেন ১১ জুলাই ১৯৬০ সালে মিয়ানে। ইরানি নবকল্লোল live chat 888sport-আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। স্বল্পদৈর্ঘ্য live chat 888sport নির্মাণ করেন অল্পকাল। live chat 888sport নির্মাতা আব্বাস কিয়ারোস্তামির সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। এরপর নির্মাণ করেন তাঁর প্রথম live chat 888sport বাদকোনাকে সেফিদ (‘সাদা বেলুন’, ‘দি হোয়াইট বেলুন’, ১৯৯৫)। live chat 888sportটি তাঁকে আন্তর্জাতিক খ্যাতি এনে দেয়। কান live chat 888sport উৎসব থেকে ‘ক্যামেরা দর’ লাভ করে। এটি ছিল কোনো ইরানি live chat 888sportের জন্য কান থেকে পাওয়া প্রথম প্রধান 888sport app download bd। অসংখ্য 888sport app download bd অর্জন করেন তিনি। আয়না (দি মিরর, ১৯৯৭) live chat 888sportের জন্য লোকার্নো আন্তর্জাতিক live chat 888sport উৎসব থেকে ‘সোনালি চিতা’, চক্র (দি সার্কেল, ২০০০) live chat 888sportের জন্য ভেনিস live chat 888sport উৎসব থেকে ‘গোল্ডেন লায়ন’ এবং অফসাইডার (২০০৬) live chat 888sportের জন্য বার্লিন আন্তর্জাতিক live chat 888sport উৎসব থেকে ‘রৌপ্য ভল্লুক’ পান তিনি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য live chat 888sport : বাদকোনাকে সেফিদ (১৯৯৫), পরিচালক ও সহ-লেখক; আয়না (১৯৯৭) পরিচালক, প্রযোজক; দায়রা (২০০০), পরিচালক, সহ-লেখক, প্রযোজক; অফসাইডার (২০০৬), পরিচালক, লেখক, প্রযোজক; ইন ফিল্ম নিস্ত (২০১১), পরিচালক, লেখক, প্রযোজক; পার্দে (২০১৩) পরিচালক, লেখক, প্রযোজক; ট্যাক্সি (২০১৫), পরিচালক, লেখক, প্রযোজক; সে রোখ (২০১৮), পরিচালক, লেখক, অভিনেতা।
পানাহি অল্প সময়ে ইরানের সবচেয়ে প্রভাবশালী live chat 888sport-নির্মাতাদের একজন হয়ে ওঠেন। তাঁর live chat 888sport তাত্ত্বিক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করলেও live chat 888sportগুলো নিজ দেশে নিষিদ্ধ হতে থাকে।
জাফর পানাহির জীবন বিচিত্র অভিজ্ঞতার সম্ভার। ১৯৮০ সালে ইরান-ইরাক যুদ্ধে বাধ্য হয়েই তাঁকে অংশ নিতে হয়েছিল। ১৯৮৮ সালে যুদ্ধ থেকে ফিরে তিনি ইরান ব্রডকাস্টিং স্কুলে live chat 888sport পরিচালনা বিশেষত তথ্যচিত্র নির্মাণ বিষয়ে শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৯৪ সালে কিয়ারোস্তামির থ্রু দি অলিভ ট্রিস live chat 888sportে সহকারী পরিচালক হিসেবে যুক্ত হন। এছাড়া সম্পাদনা করেন 888sport app live chat 888sportকারের কয়েকটি ছবি।
তাঁর প্রথম ছবি দি হোয়াইট বেলুন (১৯৯৫) দেশের মাটিতে মুক্তি পায়নি। কিন্তু বিদেশের মাটিতে প্রদর্শিত হয়ে বিপুল প্রশংসা পেয়েছে। পানাহির নির্মাণের খ্যাতি ছড়িয়ে গেছে চারদিকে। ১৯৯৭ সালে নির্মিত দি মিরর সম্পর্কেও একই ঘটনা ঘটে, দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর খ্যাতি আর সম্মান বয়ে আনে তাঁর জন্য; কিন্তু পানাহি এতে মোটেও তৃপ্ত ছিলেন না। তাঁর দুঃখ ছিল, নিজের নির্মিত ছবি তিনি নিজ দেশের ফার্সি ভাষা-ভাষাদির দেখাতে পারছেন না। ২০০০ সালে নির্মিত হয় দি সার্কেল। ছবিটি ইরানে নিষিদ্ধ করা হয়।
মায়দে, আর্জু, পারি আর নার্গিস পালাতে চেয়েছিল বাড়ি থেকে, পরিবার থেকে। কেন তারা পালাতে চেয়েছিল? অকারণে নিশ্চয়ই নয়। একজন দরিদ্র মা তার ছয় বছর বয়সী সন্তানকে রাস্তায় ফেলে গিয়েছিল, যাতে কোনো ধনী পরিবার তাকে গ্রহণ করে। নিদেনপক্ষে রাষ্ট্র যেন তার দায়ভার নেয়। যেন সে খেয়ে-পরে বাঁচতে পারে। একটি মেয়ে কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার অপরাধে পরিবার থেকে বিতাড়িত হয়েছিল। একজন যৌনকর্মী জীবিকার তাড়নায় গভীর রাতে পথে বেরিয়েছিল। কাহিনির শেষে এদের সবাইকে আমরা দেখি কারাগারের জেনানা সেলে। এদের সবারই কমন অপরাধ। পুরুষ সাথি ছাড়া এরা রাস্তায় বেরিয়েছিল। অর্থাৎ 888sport promo codeসত্তা কোনো একক সত্তা নয়, খণ্ডিত সত্তা। পুরুষ সঙ্গে না থাকলে সে সম্পূর্ণ নয়। এই আরজু-পারি-নার্গিস, এদের কাহিনি নিয়েই আবর্তিত দি সার্কেল। এক চক্রে বন্দি ওরা। স্কুল-কলেজ, বাজার-ঘাট, জনস্রোত সর্বত্র ওদের ওপর কঠোর দৃষ্টি রাখছে পুলিশ। ওরা জনস্রোতে হারিয়ে যেতে চায়, কিন্তু পারে না। পুলিশের শ্যেন দৃষ্টি ওদের অনুসরণ করে। শাসকদের চোখে মেয়েদের স্বাধীনতা বেআইনি। তাই ধূর্ত নেকড়ের মতো ওদের খুঁজে চলেছে পুলিশ।
দরিদ্র মা শিশুটিকে একটা দামি রেস্তোরাঁর সামনে বসিয়ে দিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে কে তার সন্তানটিকে নিয়ে যায় দেখার জন্য। এক বেলুনওয়ালা এসে বাচ্চাটাকে আদর করে। একসময় পুলিশ এসে বাচ্চাটাকে সরকারি হেফাজতে নিয়ে যায়। ঘটনাক্রমে পারির সঙ্গে দেখা হয়ে যায় ওই বাচ্চা আর ওই 888sport promo codeর। বিপন্ন বিধ্বস্ত ক্লান্ত সন্তান হারানো মা হাঁটছে রাস্তা দিয়ে। কিন্তু সবশেষে পারি, ওই মা, নার্গিস সবাই আটকা পড়ে কারাগারের অভ্যন্তরে ।
জাফরের পরের ছবি ক্রিমসন গোল্ড। ছবিটি পিৎজা শ্রমিকের জীবন নিয়ে নির্মিত। ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন আব্বাস কিয়ারোস্তামি। হুসেন ও আলি একটা পিৎজা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক। তারা বাইকে করে বিভিন্ন বাড়িতে পিৎজা পৌঁছে দেয়। হুসেনের খুব ইচ্ছা, ক্রিসমাসে স্ত্রীকে দামি গয়না কিনে দেবে; কিন্তু পর্যাপ্ত পয়সা না থাকায় সে পিস্তল নিয়ে গয়নার দোকানে ঢোকে। সবশেষে হতাশা ও ক্রোধে সে আত্মহনন করে। ছবিতে এই অংশটুকু দেখানো হয়েছে মাত্র তিনটি ফ্রেমে। গোটা ছবি জুড়ে আমরা দেখি হুসেনের নানান অভিজ্ঞতার কাহিনি। হুসেনের কণ্ঠে সংলাপ ছিল খুব কম। হুসেন শুধু চোখ দিয়ে দেখেছে চারপাশের কঠিন বাস্তব। সমাজের একটা অংশ অত্যন্ত ধনী, মানুষকে তারা মানুষ মনে করে না। ক্ষমতা আর অর্থের দম্ভে মোহগ্রস্ত তারা। আর একটি অংশ বড্ড দরিদ্র। কিছুই নেই তাদের। কিন্তু এই যে সামাজিক ভারসাম্যহীনতা এ-বিষয়ে সরকার আর প্রশাসন নিস্পৃহ। হুসেন দেখে চারপাশের এই মেকি দুনিয়াকে। দেখে ধনীদের নিষ্ঠুরতা। ক্ষয়ে যাওয়া সমাজব্যবস্থা তার চোখে প্রতিকারহীনতায় একটু একটু করে আলো হারায়। ঢেকে রাখা সত্যগুলো বেরিয়ে আসে। হুসেনের নিজেকে একা আর বিচ্ছিন্ন মনে হয়। সে কেউ না, এদের কেউ না। অবশেষে সে আত্মঘাতী হয়।
জাফর পানাহির ক্রিমসন গোল্ড live chat 888sportটিতে আমরা শ্রেণিসম্পর্ক প্রত্যক্ষ করি। আব্বাস কিয়ারোস্তামির চিত্রনাট্যে সেটা সুস্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হয়। ইরানে শোষক আর শাসিতের মধ্যে যে অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক ব্যবধান তা প্রতিভাত হয়েছে ফ্রেমে ফ্রেমে। হুসেন পিৎজা বিক্রির সুবাদে বড়লোকের অন্দরমহল, বিত্তশালীর আলো-ঝলমলে অ্যাপার্টমেন্টে যাতায়াত করে হরহামেশা। দেখে চোখ-ধাঁধানো পণ্যের সমাহার। এ যেন তার কাছে এক অলীক জগৎ। এই জগৎটিকে সে নৈর্ব্যক্তিক চোখে ভাবলেশহীনভাবে দেখে। সে আর তার বাগদত্তা একখানা গয়না কেনার জন্য চোখ-ধাঁধানো দোকানগুলোর মহামূল্যবান গয়নার শোকেসের সামনে দিয়ে হাঁটতে থাকে। একখানা গয়না সে কিনতে চায়, প্রত্যাখ্যাত হয়। তখন একধরনের হতাশা আর অনিশ্চয়তা তাকে ঘিরে ধরে। সে পিৎজা দিতে যায় এক বাড়িতে। বাড়ির মালিক রাতে তাকে থেকে যেতে আর শেষ পিৎজাটা খেতে বললে সে থেকে যায়। সে-রাতে সে ঘুরে ঘুরে দেখে বাড়িবোঝাই মূল্যবান সামগ্রী, আসবাবপত্র, ঝাড়বাতি, সুইমিংপুল। একসময় নিজেকে তার নিতান্তই তুচ্ছ আর অকিঞ্চিৎকর মনে হয়। এতটাই তুচ্ছ মনে হয় যে সে-মনোভাব তাকে আত্মহননের পথে নিয়ে যায়।
হুসেন বাধ্যতামূলকভাবে ইরান-ইরাক যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন মানুষ। এই যুদ্ধশেষে অনেকেই হয়ে গেছে ট্রমাগ্রস্ত স্কিৎজোফ্রেনিক। যুদ্ধের দাবদাহে অনেক মানুষ বিকলাঙ্গ হয়ে গেছে। অনেকের শরীরে ঢুকে গেছে গোলাগুলি থেকে নির্গত বিষ। যুদ্ধশেষে যে-সমাজে তারা ফিরেছে সে-সমাজও কোনো অনুকূল সমাজ নয়। রক্ষণশীলতা আর গোঁড়ামি সে-সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। সামাজিক ভারসাম্যহীনতা সে-সমাজে প্রকট। শুধু তাই নয়, মরাল পুলিশিংয়ের দাপট তাদের জীবন রাহুগ্রস্ত করে তুলেছে। হুসেনের জীবনে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সীমাহীন দারিদ্র্যের কশাঘাত।
ক্রিমসন গোল্ড একজন বাস্তববাদী পরিচালকের গভীর সামাজিক ভাবনার প্রতিফলন। এ-ছবিতে আছে ব্যক্তিকেন্দ্রিক তিক্তকার অনুভূতি। আছে বিচ্ছিন্নতাবোধ।
দি সার্কেল live chat 888sportও সামাজিক জীবনের প্রতিফলন। তবে সে-ছবিতে বিচ্ছিন্নতাবোধের প্রকাশ সেভাবে নেই। বরং মায়দে, পারি, নার্গিস এই মেয়েগুলি গভীরভাবে একীভূত। সে-ছবির প্রতিটি ফ্রেমই চলমান জীবনকে ধারণ করে এগিয়ে যায়। এমনকি শেষ দৃশ্যে যখন তারা জেনানা ফাটকে তখনো তারা একীভূত। তাদের মধ্যে রয়েছে ঐক্য, বিচ্ছিন্নতা নয় মোটেও। সেদিক দিয়ে ক্রিমসন গোল্ডে পানাহি এক ব্যক্তিকেন্দ্রিক তিক্ত অভিঘাত সৃষ্টি করেন, যা কখনো কখনো দমবন্ধকর মনে হয়।
আব্বাস কিয়ারোস্তামি ও জাফর পানাহি দুজনই সমাজ-সচেতন পরিচালক; কিন্তু দুজন সমাজকে দেখেছেন দুভাবে। পানাহির দেখা ব্যক্তিকেন্দ্রিক। তিনি ব্যক্তির মধ্য দিয়ে সমাজকে দেখেছেন। আর আব্বাস অনেক মানুষ নিয়ে যে-সমাজ তাদের একত্রিত করে দেখেছেন। দেখেছেন সামাজিক মানুষকে। আর সে-মানুষ প্রধানত 888sport promo code। তিনি উচ্চ দর্শন এড়িয়ে সাধারণ জীবন তুলে আনতে চেয়েছেন বাস্তবতার নিরিখে।
দি মিরর ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র সাত বছরের বালিকা মিনা মোহাম্মদখানি। 888sport app দিনের মতো মা আজো তাকে স্কুল থেকে নিতে আসবে। সে স্কুল গেটে অপেক্ষমাণ; কিন্তু মায়ের আজ দেরি হচ্ছে। এবার নিজেই সে বাড়ি ফেরার উদ্যোগ নেয়। তার বাঁ হাত ভেঙে গেছে। সে-হাতে প্লাস্টার বাঁধা। সে অসুবিধা সত্ত্বেও এক ভদ্রলোকের বাইকের পেছনে চেপে বাস স্টপেজে পৌঁছায়। বাসে ওঠে। একটু একটু ভয় করে তার। তারপরও অপার কৌত‚হল আর উপস্থিত বুদ্ধি সম্বল করে চলতে থাকে। এই অচেনা নগর, এর মানুষ, চলমান জীবনের খুঁটিনাটি, প্রতিটি শব্দ, ধ্বনি, সংলাপ তাকে আকৃষ্ট করে। সে গভীর আগ্রহ নিয়ে দেখতে থাকে। কিন্তু এই শহর, এই শহরের মানুষেরা এই ছোট্ট বালিকার প্রতি নিতান্তই নিস্পৃহ। তার ব্যাপারে তাদের কোনো চিন্তা নেই, প্রশ্ন নেই, কৌত‚হল নেই। মিনার দৃষ্টিতে আমরা নগরসভ্যতার অবক্ষয়িত চিত্র দেখি। দেখি এ-সমাজ, এ-শহর একেবারেই নিরেট, কঠোর। ছোট্ট একটা বালিকার ব্যাপারেও তাদের কোনো আগ্রহ নেই।
একসময় রেগে যায় মিনা। টান দিয়ে নিজের হাতের প্লাস্টার খুলে ফেলে সে। ঘোষণা দেয় এ-ছবিতে সে আর অভিনয় করতে আগ্রহী নয়। সে যথেষ্ট বড় হয়েছে। সে পরিচালকের অভিভাবকত্ব মানবে না। নিজের বাড়ির দিকে হাঁটতে থাকে। জাফর পানাহি ও তাঁর ক্রুরা ছবি নেওয়ার জন্য অপেক্ষমাণ; কিন্তু কীভাবে? এখন তো আর কোনো স্ত্রিপ্ট নেই। তারা অনুসরণ করে মিনাকে। তাহলে এ-ছবি কি কাহিনিচিত্র, তথ্যচিত্র বা অন্য কিছু? এ প্রসঙ্গে জাফর পানাহি বলেছেন, ‘When I see my picture the picture (in a mirror) resembles me.’ অর্থাৎ live chat 888sport তাঁর কাছে আয়নার মতো, যা বাস্তবের প্রতিবিম্ব গঠন করে। তাঁর এ-ছবির উদ্দেশ্য উপস্থাপনা আর বাস্তবের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক স্থাপন।
আমরা ফিরে আসি দি হোয়াইট বেলুনে। দি হোয়াইট বেলুনের রাজিয়া একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সাত বছরের বালিকা। নওরোজের দিন সে বায়না ধরে একটা বাহারি মাছ কেনার। মায়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সে দোকানের দিকে দৌড় দেয়। পথে একটা লোহার জালের ভিতর দিয়ে টাকাটা পড়ে যায় বৃষ্টির পানি নিষ্কাষণের একটা শুকনো নালার অনেক গভীরে। রাজিয়া ও তার দাদা আলি টাকা তোলার ব্যাপারে বিভিন্ন মানুষের কাছে যায়। অনেকরকম মানুষের সঙ্গে তাদের দেখা হয়। একজন বৃদ্ধ, দুজন পৌঢ় দোকানদার, এক বৃদ্ধা, একজন পথচারী দম্পতি, আরো কিছু মানুষ। কিন্তু এদের কারোরই ওই ছোট্ট বালিকার সমস্যাটি নিয়ে কোনো সংবেদনশীলতা নেই। নেই টাকাটা খুঁজে দেওয়ার চেষ্টা। পানাহি আসলে এমন এক সমাজ দেখাতে চাইতেন যেখানে অধিকাংশ মানুষ শুধু নির্লিপ্ত আর নিরাসক্তই নয়, দায়িত্বজ্ঞানহীন। এরা সামনে বড় বড় বুলি আওড়ায়। কিন্তু আপাদমস্তক সুবিধাবাদী, নীতিবাগীশ, আত্মকেন্দ্রিক আর সুযোগসন্ধানী।
দি হোয়াইট বেলুনের শেষাংশে আমরা দেখি, এক আফগান শরণার্থী বেলুনওয়ালা বালকের সাহায্যে রাজিয়া নালার মধ্যে পড়ে যাওয়া টাকাটা উদ্ধার করে। টাকা পাওয়ামাত্র রাজিয়া আর তার দাদা দৌড় দেয় বাহারি মাছের দোকানের দিকে। পেছনে একা পড়ে থাকে ওই বালক। এতক্ষণ আমরা রাজিয়ার চোখ দিয়ে চারধার দেখছিলাম। এবার ক্যামেরা অনুসরণ করে ক্লান্ত বিধ্বস্ত ওই আফগান শরণার্থী বালককে। তারপর গমনোদ্যত ওই বালকের ইমেজের ওপর ফ্রিজ করে। কে এই বালক? কোথায় এর ঘর? এর কি কোনো ঘরবাড়ি আছে? কেন সে আফগান ছেড়ে তেহরানে? ওরা তো চলে গেল, এবার এই বালক যাবে কোথায়? সে তো শরণার্থী। উত্তর খুঁজবে এবার দর্শক।
আব্বাস কিয়ারোস্তামির live chat 888sportে যেমন কোনো সমাপ্তি আমরা পাই না, প্রতিটি ছবি শেষ হয়েছে প্রশ্ন রেখে। জাফর পানাহির live chat 888sportেও সেই একই ব্যাপার দেখি। live chat 888sportের শেষে কাহিনির পরিণতি মেলাতে বসে দর্শক। তবে পানাহির live chat 888sportের যেটা প্রধান বৈশিষ্ট্য তা হলো, উপস্থাপনা আর বাস্তবের মধ্যে সাজুয্য। যেটা তিনি করতে চেয়েছিলেন এবং পেরেছেন।

তথ্যসূত্র : Jake wilson, ‘A mirror under the veil-and inside the stadium’, The Age, September 26, 2006.