বিশ্বজিৎ ঘোষ
১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে পাকিস্তান নামের এক কৃত্রিম রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠার পর থেকেই পূর্ববাংলার ভাষা নিয়ে বিতর্ক জমে ওঠে। পূর্ববাংলার জনগণের ভাষা সহজ ও প্রমিতকরণের জন্য সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে নানামাত্রিক আলোচনা ও বিতর্কের প্রেক্ষাপটে পূর্ববাংলা সরকার ১৯৪৯ সালের ৯ মার্চ ‘পূর্ববাংলা ভাষা কমিটি’ (East Bengal Language Committee) নামে একটি কমিটি গঠন করে। ‘পূর্ববাংলায় প্রচলিত বাংলা ভাষা প্রমিতকরণ, সহজীকরণ ও সংস্কারের প্রশ্ন’ পরীক্ষার জন্য সরকারি প্রস্তাবে ভাষা কমিটির কর্মপরিধির শর্ত নিম্নোক্তভাবে উলেস্নখ করা হয় – ১. পূর্ববাংলার জনগণের ভাষা (বাংলা ব্যাকরণ, বানান ইত্যাদিসহ) সহজীকরণ, সংস্কার ও প্রমিতকরণের প্রশ্ন বিবেচনা করে সে-বিষয়ে সুপারিশ প্রদান। [To consider the question of simplication, reform and standardisation of the Language of the people of East Bengal (Bengali including Grammar, Spelling, etc.) and to make recommendations.]
২. যেসব বিদেশি টেকনিক্যাল ও 888sport app শব্দের পরিভাষা বাংলা ভাষায় নেই, সেগুলোর জন্য নতুন শব্দ ও ফ্রেজ কীভাবে গঠন করা যায় এবং সেগুলোকে কীভাবে যতদূর সম্ভব 888sport app download apk latest version করা যায়, তার নিয়মাদর্শ ও পদ্ধতি নির্দেশ করা। [To suggest methods of coining new words and phrases for and for translating as for as possible technical terms and other words from foreign Languages for which equivalents do not exist in the said language.]
৩. বাংলা ভাষাকে কীভাবে পাকিস্তান এবং বিশেষ করে পূর্ববাংলার প্রতিভা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যায়, সে-বিষয়ে কমিটি অন্য যা কিছু প্রয়োজনবোধ করে, সে-অনুসারে পরামর্শ প্রদান। [To make such other recommendations as the Committee may consider necessary for bringing the said language in harmony and accord with the genius and culture of the people of East Bengal in particular and of Pakistan in general.]
মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁকে সভাপতি এবং কবি গোলাম মুস্তফাকে সদস্যসচিব করে ‘পূর্ববাংলা ভাষা কমিটি’ গঠন করে পূর্ববাংলা সরকার। সরকারি-বেসরকারি যেসব ব্যক্তি ভাষা কমিটিতে ছিলেন তাঁরা হচ্ছেন – ১. মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ, সভাপতি, ২. হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী (প্রাদেশিক মন্ত্রী), ৩. ডক্টর এএম মালিক (প্রাদেশিক মন্ত্রী), ৪. ডক্টর মোয়াজ্জেম হোসেন (উপাচার্য, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়), ৫. মৌলানা আবদুল্লাহ আল-বাকী (এমএলএ), ৬. ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (অধ্যক্ষ, বাংলা বিভাগ, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়), ৭. আবুল কালাম শামসুদ্দীন (এমএলএ, সম্পাদক : দৈনিক আজাদ), ৮. সৈয়দ আবুল হাসনাত মুহম্মদ ইসমাইল (ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ, পূর্ববাংলা সরকার, 888sport app), ৯. মীজানুর রহমান (ডেপুটি সেক্রেটারি, শিক্ষা বিভাগ, পূর্ববাংলা সরকার), ১০. এমাজউদ্দীন আহমদ (প্রাক্তন অধ্যক্ষ, মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেট), ১১. শাইখ শরাফুদ্দীন (অধ্যক্ষ, ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ), ১২. একিউএম আদমউদ্দিন (অধ্যাপক, ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ, নওগাঁ, রাজশাহী), ১৩. মৌলভী জুলফিকার আলী (স্বত্বাধিকারী, আলাবিয়া প্রেস, চট্টগ্রাম), ১৪. গণেশচন্দ্র [গণেশচরণ?] বসু (অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়), ১৫. মোহিনী মোহন দাস ও ১৬. গোলাম মুস্তফা, (হেডমাস্টার, সেক্রেটারি)। উপর্যুক্ত ষোলোজন সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন কারণে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদেরও ভাষা কমিটির সদস্য নির্বাচন করা হয় : ১. ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক (অধ্যক্ষ, বাংলা বিভাগ, রাজশাহী কলেজ), ২. আবদুল মজিদ (পূর্ববাংলা সরকারের বাংলা 888sport app download apk latest versionক) এবং ৩. অজিত কুমার গুহ (অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ কলেজ, 888sport app)। ব্যক্তিগত বা শারীরিক কারণে, কখনো-বা মতের ভিন্নতার কারণে একাধিক সদস্য হয় ভাষা কমিটির সভায় অনুপস্থিত থেকেছেন, অথবা কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। অধ্যাপক গণেশচরণ বসু (যদিও 888sport world cup rateটির সর্বত্র তাঁকে গণেশচন্দ্র বসু বলে উলেস্নখ করা হয়েছে; এমনকি পরবর্তীকালে বদরুদ্দীন উমরও একই ভুল করেছেন) প্রথম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন; কিন্তু কমিটির উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে সদস্য হিসেবে থাকতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। ১৯৫০ সালের মে মাসে তাঁর স্থানে 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক হরনাথ পালকে নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু তিনিও কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় অধ্যাপক অজিত কুমার গুহকে সরকার সদস্য নিযুক্ত করে।
১৯৪৯ সালের ২২ ও ২৩ জুন মওলানা আকরম খাঁর সভাপতিত্বে পূর্ববাংলা ব্যবস্থাপক সভার কমিটি কক্ষে ভাষা কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংশিস্নষ্ট ব্যক্তিদের মতামত সংগ্রহের জন্য একটি প্রশ্নমালা তৈরি করা এবং তা জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ-উদ্দেশ্যে পূর্ববাংলার শিক্ষাসংশিস্নষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কাছে প্রশ্নমালা পাঠানো হয়। এক হাজার দুশো কপি প্রশ্নমালা পাঠানো হলেও মাত্র তিনশো চারজন উত্তরপত্র কমিটির কাছে প্রেরণ করেন। প্রচারমাধ্যমেও প্রশ্নমালা প্রচার করা হয়। প্রাপ্ত উত্তরমালা পর্যালোচনা ও কমিটির সদস্যদের মতামতের আলোকে ভাষা কমিটি চূড়ান্তভাবে তাঁদের সুপারিশমালা সরকারের কাছে পেশ করে। সুপারিশমালা প্রস্ত্তত করতে গিয়ে কমিটির সদস্যদের মধ্যে নানারকম মতবিরোধ হয়, হয় মতান্তর। যেমন – ১৯৪৯ সালের ২৩ জুনের সভায় কয়েকজন সদস্য বলেন, সরকার ভাষা কমিটির যে-শর্ত নির্দেশ করেছে তাতে হরফ পরিবর্তনের কোনো কথা নেই; সে-সূত্রে বাংলা ভাষার হরফ পরিবর্তনবিষয়ক আলোচনা কমিটির এখতিয়ারে পড়ে না। কিন্তু অন্য সদস্যরা বলেন, ‘সংস্কার’ এবং ‘সহজীকরণের’ কথা যখন বলা হয়েছে, তখন তার মধ্যে হরফের প্রশ্নও এসে যেতে পারে। অতএব হরফ পরিবর্তনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়া খুবই জরুরি। মত-ভিন্নমতের এই প্রেক্ষাপটে কমিটির সভাপতি মওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ অভিমত দেন – সরাসরি হরফের কথা বলা না হলেও হরফের প্রশ্নটি পূর্ববাংলার লোকের ‘প্রতিভা ও সংস্কৃতির’ সঙ্গে জড়িত, কাজেই তা অবশ্যই কমিটির আলোচনার এখতিয়ারভুক্ত। এ-প্রেক্ষাপটে মওলানা আকরম খাঁকে সভাপতি করে হরফবিষয়ক একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়। ১৯ সেপ্টেম্বরের এক সভায় সাব-কমিটির 888sport world cup rate মূল কমিটির কাছে উপস্থাপন করা হয়। সাব কমিটির 888sport world cup rateে বলা হয় –
যেহেতু আরবিতে কোরআন পাঠ সব মুসলমানের জন্য বাধ্যতামূলক এবং সে হিসেবে প্রস্তাবিত প্রাথমিক শিক্ষা স্কিমে পাঠ্য তালিকাভুক্ত এবং বাংলা ও উর্দু (উর্দু হচ্ছে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা) উভয় ভাষাই প্রস্তাবিত মাধ্যমিক শিক্ষা স্কিমে উর্দুভাষী ও বাংলাভাষী শিশুদের জন্য অবশ্যপাঠ্য বিষয় এবং যেহেতু সহজীকৃত অবস্থায়ও বাংলা হরফ একাধিক হরফের ভার লাঘব করবে না, উপরন্তু চিরকালের জন্য আমাদের জনগণের ওপর একটা অপ্রয়োজনীয় এবং ভারী বোঝা চাপিয়ে দেবে, তাই হরফ, বানান ও ব্যাকরণের মধ্যে বাস্তবত যতটা সম্ভব সমতাবিধান খুব জরুরি। সে হিসেবে উর্দু হরফ সাব-কমিটি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে সুপারিশ করছে যে বাংলা হরফের পরিবর্তে উর্দু হরফ (অর্থাৎ ফারসি ও উর্দু অক্ষর সংযোজিত আরবি হরফ) ব্যবহার অবশ্য প্রয়োজনীয়।
উর্দু হরফ সাব-কমিটির এই প্রস্তাব ভাষা কমিটির মূল সভায় বাতিল হয়ে যায়। মূল কমিটির সভায় কতগুলো যুক্তি উপস্থাপন করে বলা হয় –
১. সহজীকৃত ও সংস্কার-পরবর্তী অবস্থায় বাংলা হরফ যে-রূপ নেবে তাতে যে-কোনো কিছু পড়া বা লেখা সহজ হবে। অতএব উর্দু হরফে বাংলা লেখার প্রয়োজন হবে না।
২. বাংলা শব্দের উচ্চারণের মধ্যে যে-বিশেষত্ব আছে, তা উর্দু হরফের মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়।
৩. বাংলা ভাষায় উর্দু হরফ চালু হলে হাজার বছরের বাংলা 888sport live footballের সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের সঙ্গে ভবিষ্যৎ প্রবংশের সম্পর্ক চিরকালের মতো ছিন্ন হবে।
৪. উর্দু হরফ প্রবর্তন করলে পূর্ববাংলা প্রদেশের সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থা ল-ভ- হয়ে যাবে, ফলে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে অনেক বেশি। উর্দু হরফ প্রবর্তন করলে পূর্ববাংলার শিক্ষা-সংস্কৃতি-সমাজ ও অর্থনীতিতে ভয়াবহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। নানারকম মত, ভিন্নমত, সুপারিশ, পরামর্শ পর্যালোচনা করে ভাষা কমিটি অবশেষে ‘শহজ বাংলা’ নামের এক ‘থিসিস’ সভায় গ্রহণ করে।
‘শহজ বাংলা’ কেমন হবে, ভাষা কমিটি যান্ত্রিকভাবে কতগুলো বাক্য তৈরি করে তা বোঝানোর চেষ্টা করে। তাদের দেওয়া কয়েকটি উদাহরণ ছিল এরকম –
ক. তিনি যাবতীয় বিষয় আনুপূর্বিক অবগত হইয়া বিস্ময়াপন্ন হইলেন।
শহজ বাংলা : তিনি সবকিছু আগাগোড়া শুনিয়া তাজ্জব হইলেন।
খ. আমি তোমায় জন্ম-জন্মান্তরেও ভুলিব না।
শহজ বাংলা : আমি তোমায় কেয়ামতের দিন পর্যন্ত ভুলিব না।
গ. মাসের পরিসমাপ্তিতে ঋণ শোধ করিব।
শহজ বাংলা : মাসকাবারিতে দেনা (করজ) আদায় করিব।
ঘ. হিলেস্নালিত সমীরে তরঙ্গিনী আন্দোলিত হইতে লাগিল।
শহজ বাংলা : লীলুয়া বাতাসে নদী নাচিতে লাগিল।
– উদ্ধৃত বাক্যগুলো দেখলেই অনুধাবন করা যায়, একটি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ভাষা কমিটি এই বাক্যরাশি তৈরি করেছে। কেননা, উদ্ধৃত বাক্যের আদলে সেকালে সাধারণ বাঙালি কথা বলত না।
১৯৫০ সালের ৭ ডিসেম্বর ভাষা কমিটি তাদের চূড়ান্ত 888sport world cup rate সরকারের কাছে উপস্থাপন করে। কমিটির সদস্য শাইখ শরাফুদ্দীন ছাড়া সবাই একমত হন 888sport world cup rateের প্রতি; সুপারিশের সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে শাইখ শরাফুদ্দীন লেখেন যে, দেশের বিপুলসংখ্যক লোক আরবি হরফে বাংলা লেখার পক্ষপাতী, কাজেই আরবি হরফ প্রচলনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে-প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তার সঙ্গে প্রাদেশিক সরকারের উচিত ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করা। তিনি আরো বলেন, উর্দু যেহেতু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা, তাই সব পাকিস্তানিকেই উর্দু শিখতে হবে। মূল 888sport world cup rateে কমিটির মোট বারোজন সদস্য স্বাক্ষর করেন। তাঁরা হচ্ছেন – মোহাম্মদ আকরম খাঁ, আবদুল্লাহ আল-বাকী, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, সৈয়দ মুহম্মদ আফজল, হবীবুল্লাহ চৌধুরী, মীজানুর রহমান, সৈয়দ আবুল হাসনাত মুহম্মদ ইসমাইল, অজিত কুমার গুহ, একিউএম আদমউদ্দিন, আবুল কালাম শামসুদ্দীন, শামসুন্নাহার মাহমুদ এবং শাইখ শরাফুদ্দীন (ভিন্নমত উলেস্নখপূর্বক)। ভাষা কমিটি চূড়ান্ত 888sport world cup rateে পাঁচটি ভাগে বিন্যাস করে সরকারের কাছে তাদের 888sport world cup rate উপস্থাপন করে। বাংলা ভাষা প্রসঙ্গে 888sport world cup rateে বলা হয় –
১. কমিটি পূর্ববাংলার জন্য ‘শহজ বাংলা’ ভাষা প্রচলনের
সুপারিশ করছে।
২. পূর্ববাংলার মানুষের প্রতিভা ও ঐতিহ্যের দিকে নজর
রেখে ‘শহজ বাংলা’ চালু করতে হবে।
৩. শহজ বাংলায় সরল শব্দবিন্যাস ও বাক্যরীতির ব্যবহার করে ভাষায় সংস্কৃত প্রভাব এড়িয়ে যেতে হবে।
৪. মুসলিম লেখকদের প্রকাশভঙ্গি ও ভাবসমূহ ইসলামি
আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত।
৫. পূর্ববাংলায় সাধারণভাবে ব্যবহৃত শব্দ, ইডিয়ম,
ফ্রেইজ (বিশেষত পুঁথি ও বহুল প্রচলিত 888sport live footballে যেগুলো
ব্যবহৃত হয়) ভাষায় আরো স্বাধীনভাবে প্রবর্তন করতে
হবে।
৬. বাংলা হরফকেই শহজ ফর্মে (simplified form)
রূপান্তর করে ব্যবহার করতে হবে।
৭. জনমতের স্বীকৃতির জন্য দ্রম্নত ‘শহজ বাংলা’র পক্ষে
সরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নিতে হবে। এ উদ্দেশ্যে
সরকারি কাজকর্মে শহজ বাংলা চালু করতে হবে, টেক্সট
বুক বোর্ডের বই শহজ বাংলায় লিখতে হবে।
বাংলা ব্যাকরণ সম্পর্কে 888sport world cup rateে অনেক সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে প্রধান দিকগুলো ছিল – বাংলা ব্যাকরণকে সহজ করতে হবে, ব্যাকরণের বিভিন্ন টার্ম ও নিয়মকে সহজ করতে হবে। সংস্কৃত ব্যাকরণের যেসব নিয়ম বাংলা ভাষার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত নয়, তা বাতিল করতে হবে। বস্তুত বাংলা ব্যাকরণ সম্পর্কে কমিটি
যে-888sport world cup rate প্রস্ত্তত করে, তার মধ্যেই বোধকরি সবচেয়ে বেশি যুক্তির পরিচয় পাওয়া যায়।
বাংলা বর্ণমালা, বানান ও লিপি প্রসঙ্গে 888sport world cup rateে যা বলা হয়, তার উলেস্নখযোগ্য বিষয়গুলো ছিল নিম্নরূপ –
১. সাতটি মৌলিক স্বরবর্ণই সহজ বাংলায় গৃহীত হবে।
স্বরবর্ণের কার-রূপও অক্ষুণ্ণ থাকবে।
২. ভাষা কমিটি নির্দেশিত বর্ণমালা ব্যবহার করতে হবে।
কোনো ব্যঞ্জনবর্ণের রূপান্তরিত রূপ প্রয়োগ করা যাবে
না।
৩. আগামী ২০ বছরের মধ্যে বাংলা হরফ পরিবর্তনের
প্রয়োজন নেই। ২০ বছর পরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কমিটি সুপারিশ করছে।
৪. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে উর্দু ভাষা
পড়ানো হবে।
৫. সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাজে অনতিবিলম্বে ‘শহজ বাংলা’-নির্দেশিত বর্ণমালা ব্যবহার
করতে হবে।
বিদেশি ভাষা থেকে টেকনিক্যাল শব্দ গ্রহণ ও বিদেশি ভাষা 888sport app download apk latest version প্রসঙ্গে কমিটি যেসব সুপারিশ উপস্থাপন করে, তার উলেস্নখযোগ্য দিক হলো – যেসব শব্দ ইতোমধ্যে বাংলা ভাষায় ব্যবহৃত হচ্ছে, সেগুলো অক্ষুণ্ণ থাকুক, জনসাধারণের বোধগম্যতার দিকে লক্ষ রেখে ভাষা 888sport app download apk latest version করা হোক এবং টেকনিক্যাল শব্দগুলো যথাসম্ভব মূল ভাষার সঙ্গে সংগতি রেখে অবিকল রাখা হোক। যেসব পারিভাষিক শব্দের আন্তর্জাতিক প্রচলন রয়েছে, সেসব অবিকৃতভাবে ‘শহজ বাংলায়’ গ্রহণ করা হবে।
ভাষা কমিটি যথাসময়ে 888sport world cup rate দিলেও প্রাদেশিক সরকার জনসাধারণের অবগতির জন্য ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তা প্রকাশ করেনি। ভাষা কমিটি স্থাপনের মূল উদ্দেশ্য ছিল আরবি হরফে বাংলা প্রচলনের সুপারিশ আদায় করা। কিন্তু উর্দু বা আরবি কোনোটার পক্ষেই সুপারিশ না পেয়ে সরকার এটিকে প্রকাশ থেকে বিরত থাকে। বরং 888sport world cup rateের সুপারিশকে চেপে রেখে এরপরও পাকিস্তানি ঔপনিবেশিক শাসকগোষ্ঠী পূর্ববাংলায় আরবি হরফ প্রচলনের নানা ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখে। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ১৯৫৮ সালের পর পূর্ববাংলায় আরবি হরফে বাংলা লেখা চালু করা যে আর সম্ভব নয়, এ-কথা অনুধাবন করে আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে ‘পূর্ববাংলা ভাষা কমিটি’র 888sport world cup rate প্রকাশ করেন।
‘পূর্ববাংলা ভাষা কমিটি’তে নানা মতের লোক থাকলেও সেদিনের প্রেক্ষাপটে তাঁরা শেষ পর্যন্ত যে-সুপারিশ সরকারের কাছে পেশ করেছিলেন, সেখানে ইতি-নেতি দুই ধারাই বর্তমান। তাঁরা যে আরবি বা উর্দু হরফ প্রবর্তনের সুপারিশ করেননি, এটি অবশ্যই আজ ইতিবাচক সিদ্ধান্ত বলে মেনে নিতে হয়। আবার বর্ণমালা সহজীকরণের নামে তাঁদের কিছু সিদ্ধান্তকে নেতিবাচক মানসিকতার দৃষ্টান্ত হিসেবেই উলেস্নখ করতে হয়। বিশেষত ‘শহজ বাংলা’র নামে তাঁরা যেসব বাক্য তৈরি করেছেন, তা ছিল রীতিমতো হাস্যকর। r


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.