সেই সব শেয়ালেরা l ফারুক মঈনউদ্দীন l শ্রাবণ l 888sport app, ২০১৮ l ২৫০ টাকা
কৃষন চন্দর ‘কালু ঝাড়ুদার’, শরৎচন্দ্রের ‘মহেশ’ অথবা তারাশঙ্করের ‘কালাপাহাড়’ গল্পের মধ্যের মিলটা মূলত বিষয়ের, আঙ্গিক বা বিবরণে প্রতিটি গল্পই স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল। এমনকি এই তিন লেখকও 888sport live footballকে তিন ধরনের রসে সমৃদ্ধ করেছেন। এই মিলটা সমৃদ্ধির। ফারুক মঈনউদ্দীনের সেই সব শেয়ালেরা গল্পগ্রন্থের সব গল্প পড়ে এমন একটা ভালো লাগা তৈরি হলো, যা সচরাচর হয় না। ভেবে বের করলাম, এমন শান্ত, শুভ্র, মার্জিত এবং পরিমিতিবোধের 888sport live footballানন্দ আমাকে দিয়েছিল নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘বন-জ্যোৎস্না’ গল্পের এমন দু-একটি অধ্যায় আছে যা একটি মহাকাব্যের শক্তিতে ভরপুর। অথবা ‘টোপে’র মতো ভয়ংকর সত্য গল্প আমি আমার স্বল্প পঠন-পাঠনের সীমারেখায় বিশ্ব888sport live footballেও পাইনি। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বাংলা 888sport live footballের অনেক হ্যাজাক লাইটের আলোর মধ্যে আমার কাছে – দূরদিগমেত্ম জ্বলা ছোট্ট একটি হিরকখ–র আলো। এ-আলো খুবই ঐশ্বর্যময়। নিভে যাওয়ার কারণ তার জানা নেই। আমার ভালো লেগেছে যে, আমার সময়ে এমন একজন জীবিত গল্পকারের গল্প পড়তে পারলাম – যে-গল্পগুলো দ্বিতীয়বারও পড়ার আগ্রহ তৈরি হলো এবং পড়ে আমি প্রথম পাঠের চেয়ে কম 888sport live footballরস আস্বাদন করিনি, বরং আরো বেশি আবিষ্কার করতে পেরেছি ফারুক মঈনউদ্দীনের গল্পের দুনিয়া।
নিরীক্ষা 888sport live footballে থাকবেই। নিরীক্ষার কারণে কী নিয়ে নিরীক্ষা হচ্ছে সেটাই যদি দেখা না যায়, তাহলে কীভাবে কী বোঝা যাবে! যদি কোনো 888sport live footballামোদী বুঝতে চান? সম্ভবত এমন একটি সময়ের মধ্য দিয়েই দীর্ঘ ২৫-৩০ বছর বাংলা কথা888sport live football পথ খুঁজছে। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় বা ফারুক মঈনউদ্দীনের গল্পের পস্নট দেখে মনে হয়েছে, এ-ঘটনা নিয়ে তাঁরা ছাড়া বুঝি আর কেউ এ-গল্পগুলো লিখতে পারতেন না। অবশ্যই গল্পের জন্য ঘটনাই প্রথম এবং প্রধান শর্ত। এটাকে উপজীব্য করে কোনো কোনো গল্পকার গল্প শেষ করেন আবার কোনো কোনো গল্পকার গল্পটি লেখা শেষ করে ভাবনায় চড়িয়ে অন্য কোনো দিকে নিয়ে যান বা নিয়ে যেতেই থাকেন। যাদের গল্প শেষ হলেও ভাবনা পাঠককে অনেকদূর, অনেকদিকে নিয়ে যায় – বর্তমানের নানা অলিতে-গলিতে দাঁড়িয়েও ইতিহাসের দিকে, ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাওয়ার শক্তি রাখে – ফারুক মঈনউদ্দীন সেই বিরল প্রজাতির লেখক। তাঁর গল্পে কোনো চরিত্রই নিজে অন্য চরিত্রকে স্যাটায়ার করে না, তবে গল্পের একটা পর্যায়ে এসে পরিস্থিতিই পরিণতিকে অথবা পরিণতিই পরিস্থিতিকে সৌম্য স্যাটায়ারে স্তম্ভিত করে দেয়। এই অ্যাপ্রোচ অত্যন্ত ভদ্রোচিত 888sport live footballরুচির প্রয়োগ। এখানে সবই হয়। সবই বলা হয়। বলাটা দেখা যায় না, শুধু দেখা যায় বলার উদ্দেশ্যটা। তাঁর গল্পের বইয়ের নামের মতোই আজকের পৃথিবীটা। সব শেয়াল। মাঠঘাট, অফিস-আদালত সব ক্ষেত্র শেয়ালে ভরপুর। এ-শেয়াল কোথা থেকে এলো! ফারুক মঈনউদ্দীনের গল্পের সেই দূরগ্রামের হারিয়ে যাওয়া শেয়াল কি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে? বইয়ের নাম-শিরোনামের গল্পটি নানা দিকের সংকট তুলে ধরেছে। প্রকৃতির মধ্যের শেয়াল হারিয়ে যায়। আবার সেই শেয়াল গ্রামের সহজ-সাধারণ মানুষের ভেতর কীভাবে দখল করে নেয়, সবই তিনি দেখিয়েছেন।
শেয়াল এতটাই ধূর্ত যে, ধূর্ততার প্রতিশব্দই করে নিয়েছে নিজেকে। শেয়াল অনেক চালাক কিন্তু জ্ঞানী নয়। সে তার সামান্য আহার জোগাড়ের জন্য সারাক্ষণ হঠকারী চিমত্মা বয়ে বেড়ায়। নিজের চেষ্টার চেয়ে অন্যেরটা হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই তার সিংহভাগ বুদ্ধির প্রয়োগ ঘটে। তার নিজস্ব স্থির কোনো অবস্থান থাকে না। মূলত সব ক্ষেত্রেই সে উচ্ছিষ্টভোগী। এ-শেয়াল বিচরণ করছে তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত অস্থিতিশীল দেশে, সমাজের শরীরে, সময়ের গল্পে।
সেই সব শেয়ালেরা বইয়ে অল্প কিছু বনের শেয়াল আছে, আছে তার কিছু হাঁকডাকও। তবে তা গল্পের চরিত্রের খাতিরে। এ-গল্পে চার পায়ের শেয়ালের সামান্য বিচরণ দেখা গেলেও দুই পায়ের শেয়ালেরই ঘনঘটা। দেখা যায় তাদের দ্রম্নত বিস্তার প্রক্রিয়াও। বড় শেয়ালটা বিশ্বায়নের পোশাক পরা বাজার। সে-ই অন্যসব ছোট শেয়ালকে চিহ্নিত করে এবং তার চেতনায় জাগিয়ে তোলে। তারপর দুই পায়ের শেয়ালে ছেয়ে যায় একটি গ্রাম, গ্রাম থেকে ভূখ– সে সংক্রমিত হয়। কিন্তু স্থানীয় শেয়ালেরা মাত্রই শেয়াল হয়েছে। তাদের লেজ অত বড় হয়নি যে, তারা সেই লেজে জাল বুনতে পারবে। তাই তারা কিছুদূর গিয়ে আটকা পড়ে বিশ্বায়নের জালে।
ফারুক মঈনউদ্দীনের গল্পগ্রন্থ সেই সব শেয়ালেরার শেষ গল্পের নামেই বইয়ের নাম। এ-গল্পটি নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। তার একটি হচ্ছে মেটাফরিক্যাল দক্ষতা। গল্পে রূপকের যথার্থ ব্যবহার খুবই কঠিন কাজ। কারণ রূপকায়িত হয়েও মূল ছবিটা দেখা যেতে হয়। সে-কাজটি ফারুক ভালোভাবেই করতে পেরেছেন। আবার সেই রূপকের রূপান্তরিত রূপটিও লেখক দেখাতে সমর্থ হয়েছেন। এ-গল্পের শুরুতেই দেখা যায় বিদেশি ঠিকাদার কোম্পানি রাস্তা তৈরির কাজের তদারকি করতে একটি গ্রামে ঘাঁটি গেড়েছে। এ বিদেশিরা এখানে আসার পর থেকেই এলাকায় কুকুর কমে যাচ্ছে। এ-বিষয়টি নিয়ে গ্রামের লোকেরা চায়ের দোকানে আলস্যের আড্ডায় নানা কথাবার্তা, তর্কবিতর্কে মেতে ওঠে। সেখানে বিদেশিদের কুকুর খাওয়া এবং কুকুর পালা নিয়েও কথা হয়। কেউ বলে – বিদেশিরা নিজের সমত্মানদের মতো যত্ন-আত্তি করে কুকুর পালে। আবার কেউ সেই কথার জবাবে অন্য বাস্তবতাও তুলে ধরে। আড্ডার সেসবলোককে দিয়েই লেখক গল্পের মূল সত্যকে তুলে ধরেন – ‘বাপের জন্মে কেউ কখনো শুনেছে, কুকুরের জন্য এত কিছু লাগে! দুয়েকটা পোষা কুকুর যে আমাদের গ্রামে নেই তা নয়, তবে ওগুলো সেরকম অর্থে পোষা নয়। যেমন হারেস মিয়ার চায়ের দোকানের সামনে একটা কুকুর সব সময় বসে বসে ঝিমোয়। খদ্দেরদের কেউ কেউ নান রুটির টুকরা ছুড়ে দিলে সার্কাসের মতো লাফ দিয়ে শূন্য থেকে খপাত করে ওঠা মুখের ভেতর ধরে নিয়ে গিলে ফেলে। ওটার এই কসরত দেখার জন্য লোকজন রুটি বা বিস্কিট খাওয়ায় বলে কুকুরটা নাদুসনুদুস না হলেও আর দশটা হেটো কুকুরের মতো ঘেয়ো নেড়ি নয়।’
পুঁজি-নিয়ন্ত্রিত নামকাওয়াসেত্মর গণতন্ত্রের পৃথিবীতে দরিদ্র দেশগুলোই
হারেস মিয়ার দোকানের সামনের কুকুরটি। সে কিছুটা কৌশলে খাবারের কাছাকাছি অবস্থান
নিশ্চিত করে। কর্তাদেশগুলোর দান-খয়রাত দেওয়ার আনন্দ হাসিখুশি তামাশা লক্ষ করা যায় রুটি ছুড়ে আনন্দ নেওয়া
লোকগুলোর মধ্যে।
তবে কুকুরটি দরিদ্র হলেও কিছুটা মনোরঞ্জন যে কর্তারা তার কাছ থেকে আদায় করে
নেয়, তা ওই কসরত দেখলেই বোঝা যায়। কুকুরটি কর্তাদের বাতলানো গণতন্ত্রের মতো কখনো
স্বৈরতন্ত্রের মতো কখনোবা জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলনের ভঙ্গিতে ফুর্তি ডেলিভারি দিয়ে
থাকে। আবার শেয়াল যে ধূর্ত, সে জ্ঞানী নয়, তাও বোঝা যায় দোকানে-ভিড়-করাদের আলোচনা
এবং কা–কারখানা দেখে।
গল্পের বিস্তার বিদেশি ঠিকাদার কোম্পানির রাস্তা তৈরির কাজের তদারকি করতে একটি গ্রামে ঘাঁটি গাড়া থেকে। ঘাঁটি রাস্তা তৈরির জন্য। কিন্তু এই ঘাঁটি ভেঙে দেয় একটি গ্রাম, একটি জনপদ, আর একটি ভূখ–র দীর্ঘ প্রচলিত মানুষের সহায়ক ব্যবস্থা।
গল্পের পটভূমির গ্রামটিতে মানুষের প্রাকৃতিক বসবাস। যেখানকার মানুষ মাঠ ভালোবাসে, ভালোবাসে খোলা প্রান্তরের মতো হূদয়ের উদারতা। যাদের জীবনসৌন্দর্যের অংশ প্রকৃতির সব উপকরণ। পাখির গান। গাছের সবুজ কোমল পাতাছোঁয়া সতেজ বাতাস। বৈকালিক আড্ডা। কুকুরের ডাক। শেয়ালের হাঁক। সবাই সবার জীবনের অংশীদার সুখে-দুঃখে। বেঁচে থাকার সামষ্টিক আনন্দ আড্ডায় ‘রাতে জয়লক্ষ্মী অপেরার যাত্রা দেখে ঘরে ফিরতে ফিরতে কয়েক যুবকের পথচলতি আলাপের মধ্যে বিষয়টা চলে আসে, – আচ্ছা খিয়াল করিছিস, আগে ইরহম নিশুত রাইতে গিরামে ঢুকলি পর একপাল কুত্তো যিরহম ডাক ছাইড়ে ছুইটে আসত, এহন ওরহম চোহি পড়ে না। গিরামের কুত্তাগুলান গেল কোয়ানে?
অন্ধকারের ভেতর থেকে একজন ঠাট্টা করে, কোয়ানে আর, ঘুম দিসে্স। ওগের জন্যি তো প্রিন্সেস জরিনার নাচ নেই, কী আর করবেনে?’
এই যুবকদেরই কেউ একজন পরক্ষণেই বলে, ‘শুনিছি বিশ্বরোডের ক্যাম্পের বিদেশিগুলান কুউর মাইরে খায়ে নিস্সে।’
গ্রামের কুকুর 888sport appsে আমদানি করা বিদেশি কুকুরের মতো বিশেষ যোগ্যতাসম্পন্ন নয়। কবি আহসান হাবীবের ‘ধন্যবাদ’ 888sport app download apkর কুকুরছানা ডলির আদরযত্নেও এদের পালা হয় না। গ্রামের মানুষের কাছে এদের কোনো দাম নেই। এ মানুষগুলো জীবনের মূল্য বোঝে, ভালোবাসা বোঝে; কিন্তু দাম তারা বোঝে না কোনো কিছুরই। কারণ পুঁজির আগ্রাসনের আগে তো কেউ সবকিছুকে পণ্য ভাবতে শেখেনি। তাই এ-যুবকরা কুকুরের অভাব বোধ করেছে জীবন-সৌন্দর্যের অংশ হিসেবেই।
সেই শেয়াল। প্রথম শেয়াল। বড় শেয়াল, যার লেজ বিশ্বায়নের পুঁজির জাল ছড়িয়েছে এই গ্রামে, গ্রামের মানুষের মধ্যে; সেই শেয়ালই একসময় এলাকার অনেক যুবককে ছোট শেয়ালে পরিণত করতে সমর্থ হয়। একসময় যে-যুবক কুকুর কমে যাওয়ার জন্য বিদেশিদের ভৎর্সনা করেছিল, পুঁজি সেই যুবককে দিয়েই কুকুর ধরে এনে বিদেশিদের ভক্ষণের ব্যবস্থা করিয়েছে। গল্পে এ-কুকুর বিষয়ে দুটো বাক্যে একটি গ্রামের বিষণ্ণ-স্তম্ভিত চিত্র ধরা পড়ে – ‘মাঝে মাঝে গ্রামের অনেক দূরপ্রান্ত থেকে এরকম বিষণ্ণ ক্রন্দন ভেসে আসে, কিন্তু লোকজন তখনও ধারণা করতে পারে না যে সে কান্না খাদ্যে পরিণত হওয়া কোনো কুকুরের নিঃসঙ্গ সঙ্গীর বিলাপ।’
এই শেয়ালের আগ্রাসন ক্রমান্বয়ে বাড়তেই থাকে। এরপর গল্প এগোয় মানুষের স্বাভাবিক ব্যবস্থাটি ভেঙে পুঁজির আগ্রাসনের রাস্তা গড়ে গড়ে, যেটি কুকুর ভক্ষণ থেকে স্থানীয় দুই পায়ের শেয়ালের পিঠে চড়ে এসে হামলে পড়েছে সুরেন দাসের যুবতী মেয়ে সরলার দেহে। গ্রামের মানুষ এর আগে এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়নি। সরলা ‘চিড়ে মুড়ি ভেজে মানুষের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে’ দেয়। এলাকার মানুষ ছোটবেলা থেকে সুরেন দাসের মেয়েটিকে দেখে আসছে। সে সবার কাছেই সাধারণ একটা মেয়ে। যেরকম অন্যদের ঘরে তার বয়সী মেয়ে-বউ-ঝি আছে, সরলাও এমনই সবার কাছে। কেউ এই যুবতীকে যৌনতার রঙে দেখেনি, দেখেছে মানুষ রূপে। এমন একটি ঘটনা গ্রামে প্রবেশ করল এই প্রথম। মানুষ এ নিয়ে ভীত। তারা নিজ নিজ ঘরের যুবতী মেয়েদের মধ্যে সরলার পরিণতি ভেবে আতঙ্কিত। এ আতঙ্কের মধ্যেই কিছুদিন পর আবার সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এবার মৃধাবাড়ির কলেজপড়ুয়া মেয়ের চাচা চুপ করে রইলেন না। তিনি মামলা করলেন। পুলিশের দ্বারস্থ হলেন। মৃধাবাড়ির মেয়ের ঘটনার মধ্য দিয়ে গ্রামে পুলিশের আগমন। গ্রামের চিত্রটি আসেত্ম আসেত্ম পালটাতে শুরু করে। গ্রামটি এখন ব্যস্ত এসব অস্বাভাবিক ঘটনা নিয়ে। গ্রামটির মানুষ আর তার প্রকৃতি ধীরে ধীরে এই ব্যস্ত জীবনের বাস্তবতায় অভ্যস্ত হতে থাকবে। পরপর দুটি ঘটনার কিছুদিন না যেতেই ‘এক ভোরবেলা লোকজন শুনতে পায় উত্তর বিলের খাদের ভেতর একটা মু-ুহীন লাশ পড়ে আছে।’
এখানে এসে গল্প তার চূড়ান্ত উদ্দেশ্যের সঙ্গে পাঠককে পরিচিত করে তোলে। দেখা যায় একটার পর একটা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে যাচ্ছে নিয়মিত বিরতিতে। বিরতি এবং ঘটনার ধারাবাহিকতায় পরিকল্পনার ইঙ্গিত খুঁজে নেওয়া সম্ভব। তবে ঘটনাগুলো এমনভাবে ঘটছে যে, বর্তমান ঘটনা ঠিক তার আগের ঘটনাকে ছাপিয়ে যাচ্ছে। ছোট ছোট শেয়াল হয়ে যাওয়া মানুষরা আগের ঘটনার কারণ খুঁজতে না গিয়ে পরের নতুন এবং আরো ভয়ংকর ঘটনাটিকে নিয়তি বানিয়ে সেদিকেই ছুটছে। আর মানুষের বুকের মধ্যে জেগে উঠছে হতাশা ও হাহাকারের অন্য এক জীবন, অন্য বাস্তবতা।
লেখকের ভাষায় – ‘কাটা গাছের মতো পড়ে থাকা ধড়টার ওপর এর মধ্যে কে যেন একটা চাদর বিছিয়ে দিলে 888sport app শরীরটা নতুন কবরের মতো উঁচু হয়ে জেগে থাকে।’ এই বইয়ে দশটি গল্প রয়েছে। তুলনামূলক কোনটা কম ভালো লেগেছে সেটা বুঝতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। আমার কেবল মনে হয়েছে দশটি গল্পের প্রতিটি নিয়েই আলাদাভাবে 888sport live লেখা যেতে পারে। অথবা বলা যায় এর একেকটা গল্প ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিটি নিয়ে 888sport live লেখার রসদ জোগাচ্ছে। বিশেষ করে ‘মান-সম্মান’, ‘কোথায় শরণ’, ‘জনকের দায়’, এবং ‘যখন অসময়’ নানা ডাইমেনশনে সময়কে প্রভাবিত করে ভবিষ্যৎ নির্দেশ করার গল্প। ‘কোথায় শরণ’ নামে বইয়ের প্রথম গল্পটিতে জীবনের নিংড়ানো সব ছবি আঁকা হয়েছে। অসাধারণ সব চিত্রকল্প। এ-গল্প শুধু নিজেই উৎকৃষ্ট গল্প নয়, বরং গল্প সম্পর্কেও নতুন ধারণা দিচ্ছে।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.