কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর
কথা888sport live chatী হুমায়ূন আহমেদ নিজেকে নিজের কাছে সর্বতোই রেখেছেন; আবার যেন কিছুই রাখেননি। নিজেকে নিয়ে তেমন কথা তাঁর নেই। এই জনপদের এমন বাঙালি মধ্যবিত্ত পাওয়া যাবে না, যেখানে কোনো না কোনো হুমায়ূন নেই। মাল্টিকালার হুমায়ূনের দেখা পাই আমরা। তিনি যে 888sport live footballের সেই কৌশলী কূটনীতিক, যেখানে তিনি প্রায় বাস্তবত সলাজ-নির্বাক থাকেন, আর তাঁকে নিয়ে তাঁর আশপাশের মানুষজন পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো না কোনো কথা বলেনই! তাঁকে নিয়ে যখন আমরা কথা বলতে চাই, তখন স্বভাবতই তাঁর জনপ্রিয়তা আর সৃজনকাল আমাদের চৈতন্যে দীপ্যমান হয়। যে কেউ চাইলেও এর বাইরে যেতে পারে না বা আমাদেরও যাওয়া উচিত নয়। তবে আমার যেটা অনুভূত হয়, তাঁর জনপ্রিয়তার জায়গাটা নতুন করে দেখতে হবে। এর কার্যকারণ নিয়ে আমাদের ভাবতেও হবে। আমরা দেখি যে, তাঁর বর্ণিত মধ্যবিত্ত এমনই মধ্যবিত্ত, যারা হুমায়ূনের লেখার সঙ্গে আরাম-আয়েশের একটা সম্পর্ক গড়েন। অথবা বলা যায়, আরাম-আয়েশকে এক সদা-ব্যাকুল চেহারায় রাখার জন্যই তারা হুমায়ূন পড়েন। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে, এসব পাঠকই শুধু হুমায়ূন পড়েন না, হুমায়ূনও তাঁদেরকে ক্রমাগত পাঠ করছিলেন। তাতে এ-কথাটা বলা যায়, তাঁদের সৃজিত প্রেমের পারস্পরিক সমতাবিধান হয়েছে। তাঁরা পরস্পরকে আস্থার ভেতরও রাখেন। আর তাঁদের মনমাজারে যে-প্রেম আস্থা কর্তৃক সৃজিত হয় তার মেয়াদকাল অনেক কালই স্থির থাকে বা, বলা যায় তাঁরা কখনো মেয়াদোত্তীর্ণ হন না। তাঁরা পরস্পরকে ওহি নাজেলের মতো জাদুমন্ত্র দিয়ে নিজেদের ভেতর যেন বন্ধকির ব্যবস্থা করেন। হুমায়ূনের বেশিরভাগ পাঠকই তো মধ্যবিত্ত। তা নিয়ে আশ্চর্য হওয়ারও কিছু নেই। আর আমাদের মধ্যবিত্তকে চিনতে হলে মধ্যবিত্তের যে চলমান চেহারা আছে তাও দেখা যেতে পারে। এ মধ্যবিত্ত পুঁজি বিকাশের সঙ্গে স্বভাবতই বিকশিত হয়েছে। ফিউডালিজম পরিবর্তিত হতে হতে যে বুর্জোয়া সমাজের বিকাশ হয় তারই হাত ধরে মধ্যবিত্তের চরিত্র রক্ষা করতে দেখা যায়। বিশ শতকের গোড়ার দিকেই এর মাথাচাড়া দেওয়ার মুখ্য সময়। এর ইতিহাসের সঙ্গে আমাদের সমাজবিকাশ আর নৃতত্ত্বের নানান যোগের কথা আমাদের 888sport app download for androidে রাখতে হয়। একসময় আমাদের নৃতাত্ত্বিক জীবনাচরণে আর্য-অনার্যের একটা মিশ্রণ হয়। তাতে হিন্দু-মুসলমানের একটা মিলন যেমন ওই সময়ে হতে থাকে, তেমনি অপরাপর জাতি-ধর্মের নানান প্রবাহ এতে মিশে যেতে থাকে। একসময় ইউরোপের কলোনিয়াল হাওয়া এসে তাতে যোগ দেয়। তার মানে এতে অনার্য, বৌদ্ধ, মুসলিম আর পাশ্চাত্য-সংস্কৃতি মিলে একটা জগাখিচুড়ি অবস্থা বহাল হলেও স্থান হিসেবে নানান জাতিগোষ্ঠীর বিভিন্ন আবহ এতে মিশে যায়। সে-হিসেবে পূর্ববাংলায় মুসলিম সংস্কৃতির বিকাশ একটা বিশাল ব্যাপার। আমরা একে বিশেষ বিবেচনায় রাখব। তো পূর্ববঙ্গের মুসলমানরা সাতচল্লিশের দেশভাগের সময় আলাদা জাতিরাষ্ট্রের তাগিদ অনুভব করে। সেই তাগিদ মুসলমান হওয়ার জন্য, বা, মুসলমান হিসেবে বিকাশের পূর্বশর্ত হিসেবে চাওয়া হয়নি। তারা মুখ্যত তিনটি অসহনীয় অবস্থা থেকে মুক্তি চেয়েছিল। তা হচ্ছে – ১. ইউরো-কলোনিয়াল শাসন, ২. সনাতন ধর্মীয় জমিদারদের অত্যাচার, ৩. সদা সাংস্কৃতিক প্রেষণে মগ্ন ব্রাহ্মণ্যবাদ। কিন্তু সাধের পাকিস্তান পূর্ববঙ্গের নিপীড়িত মুসলমানের কোনো কাজে আসে না। তারা স্পষ্টতই দেখল, ক্ষমতাশালীরাই তাদের শোষণ করছে। তখনই এ-এলাকার বাঙালি, মূলত মধ্যবিত্ত বাঙালি, বা অর্থনৈতিকভাবে বলা যায়, মধ্যস্বত্বভোগীর নেতৃত্বে এরা এক হতে থাকল। তারাই একসময় ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত করত; একপর্যায়ে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ সম্পন্ন করল। আর তখনই শুরু হয় আরেক ইতিহাস, সশস্ত্রতার ভেতর দিয়ে স্বাধীন হওয়া এ-জাতি নিজের শাসন নিজের কব্জায় নিতে চাইল। যাঁদের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ হলো, তাঁদের সঙ্গে আলাদা হিসাব-নিকাশ শুরু হলো। ততদিনে বাঙালি আর অপরাপর জাতিগোষ্ঠী নিয়ে নিজেদের কর্তৃক নিজেদের শাসনের পরিবর্তে নিজেদের দিয়ে নিজেদের সাজানোর বাসনা করতে চাইল। তাঁরা সাংস্কৃতিক মুক্তি চাইতে থাকল।
এই যে একটা দীর্ঘ এক সংস্কৃতির জাগরণ আমরা প্রত্যক্ষ করছি, এর ভেতর কথা888sport live chatের যে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ধারা, এরও তো একটা ধারাক্রম আছে। দেশভাগের ফলে সে-ধারায় সৃজনশীল ব্যক্তিত্ব হিসেবে আমরা পাই সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ্, শওকত ওসমান, আবু রুশদ, আবুল ফজলদের। তারও কিছু পরে আমরা পাই রশীদ করীম, সৈয়দ শামসুল হক, শওকত আলী, মাহমুদুল হক, কায়েস আহমেদ আর হাসান আজিজুল হকদের। ভাষা-আন্দোলনের সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি হয়ে যাচ্ছেন জহির রায়হান, হাসান হাফিজুর রহমান। ক্রমে ষাটের দশকে সশস্ত্র সাংস্কৃতিক আবহ আমরা লক্ষ করি – তার প্রতিনিধি হতে পারেন হাসান, শওকত আলী, আবুবকর সিদ্দিক। ষাটের দশকের প্রগতিশীল বুদ্ধিবৃত্তিক আবহকে যাঁরা ধারণ করছেন, সামরিক স্বৈরাচারকে মোকাবেলা করছেন তাঁদের অন্যতম হচ্ছেন আহমদ ছফা, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সাইয়িদ আতিকুল্লাহ ও হুমায়ূন কবির। স্বাধীনতার পর যে নতুন আবহের নতুন সাংস্কৃতিক প্রতিনিধি আমরা পাই, সেখানেও ষাটের বিপ্লবীরাই তাঁদের আধিপত্য বহাল রাখেন। 888sport live footballের ক্ষেত্রে যাঁদের আমরা পাই, তাঁরা একক কোনো প্রতিনিধি হিসেবে আলোড়িত করতে পেরেছেন বলে ধরা মুশকিলই। তাঁদের প্রতিনিধি হতে পারেন মঞ্জু সরকার, মঈনুল আহসান সাবের, আহমেদ বশির, হুমায়ূন আহমেদ, ইমদাদুল হক মিলন, হরিপদ দত্ত, সুশান্ত মজুমদার, আতা সরকার, মনিরা কায়েস প্রমুখ।
হুমায়ূন আহমেদ যখন নন্দিত নরকে লেখেন, তখন তিনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তিনি সারাজীবনই যে নানান অনুপ্রেরণার ভেতর দিয়েই লেখালেখি চালিয়ে গেছেন, সেটা তাঁর প্রথম মুদ্রিত গ্রন্থটিতেও আছে। তিনি পরপর তিনটি দীর্ঘ গল্পই লেখেন সমর চন্দের ‘ইঁদুর’ গল্পটি পড়ার প্রতিক্রিয়া হিসেবে। এমনকি আমার যদ্দুর মনে পড়ছে, নন্দিত নরকে নামটিও নিয়েছেন রফিক কায়সারের একটা 888sport app download apk থেকে। তাঁর 888sport alternative link বা নাটকের যত নাম দিয়েছেন, তার প্রায় সবই রবিঠাকুর আর জীবনানন্দ দাশ থেকে ধার করা। ধার-দেনার এ-জাতীয় বাসনা সারাজীবন তাঁর ছিল। তা তিনি স্বীকারও করতেন। তবে আরেকটা বিষয় উল্লেখ না করলেই নয়, গ্রন্থটি তখনকার লেখক শিবির নামের অতিপরিচিত সাংস্কৃতিক সংগঠনের দারুণ আনুকূল্য পায়। আর তখনকার লেখক শিবিরের সামাজিক-রাজনৈতিক অবস্থা অনেক প্রভাববিস্তারী ছিল। এটি যেন ছিল তখনকার ‘বিকল্প বাংলা একাডেমী’। আর আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, তখনকার সমস্ত ‘বিকল্প’ই সবদিকে রাজত্ব করে বেড়াত। সশস্ত্র-ব্যাকুল বাম সংগঠনগুলো তখনই হু-হু করে তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম বিস্তৃত করতে সমর্থ হয়। যাই হোক, নন্দিত নরকের ভূমিকা লেখেন আহমদ শরিফ। এ নিয়ে প্রচারে নামেন আহমদ ছফা, বদরুদ্দীন উমর প্রমুখ। ফলে হুমায়ূন আহমেদ তাঁর 888sport live footballচর্চার শুরুতেই এক কার্যকর পাটাতন পেয়ে যান, যা তাঁর পাঠনন্দনের বড়ো একটা ফ্যাক্টরও হয়ে যায়। তাঁর সৃজনশীলতা তখন ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। আমাদের এ হতোদ্যম, হকচকিত, সদা-ব্যাকুল, এমনকি নষ্টভ্রষ্ট, রোদনমুখর মধ্যবিত্তকে তিনি যে একধরনের আমোদ-প্রমোদে রাখতে পেরেছিলেন তাও তো কম কথা নয়।
রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়ে দেয়াল, মাতাল হাওয়া, জোছনা ও জননীর গল্প আর মধ্যাহ্ন লিখেছেন তিনি। এখানেও তিনি ব্যক্তিবিলাসের উদ্ভটত্ব আরোপ করেছেন। লেখকের নিজস্ব শৈল্পিকতা তো থাকতেই পারে, প্রচলিত সমাজে চালু হয়ে যাওয়া সহজ-নির্ভার সত্যকে তো অস্বীকার করা যায় না। যেমন তিনি মাতাল হাওয়া লিখেছেন ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান নিয়ে। তাতে মূল উপজীব্য হিসেবে আসাদের আত্মত্যাগ, তৎকালীন 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের চলাচল, তখনকার ছাত্র আর রাজনৈতিক নেতাদের কার্যক্রম স্বভাবতই স্থান পেয়েছে। তাতে হুমায়ূন নিজের কাহিনিতে সরেজমিন হাজির-নাজির থেকেছেন। তবে তাতে ছাত্র-আন্দোলনের যে-স্বর্ণকাল ছিল তারই জলজ্যান্ত ছোঁয়া আছে। দেয়াল লিখিত হয়েছে শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডকে উপজীব্য করে। এতে ইতিহাস আছে। ইতিহাসের নিজস্ব অবয়ব আছে, প্রয়োগ আছে, আছে একধরনের উদাসীনতা! তাতে কর্নেল ফারুক শুধু মুক্তিযোদ্ধাই নন, তার ওপর ভর করেছে হিরোসুলভ কমনীয়তা; খন্দকার মোশতাক যেন ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের ঘটনা জানতেনই না! অন্যদিকে শেখ মুজিবকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মেনে নেওয়া মুশকিল, যেন তিনি এক গ্রাম্য-স্বভাবের মোড়ল আর আ স ম রব সেখানে গ্রামেরই কোনো এক বেয়াদব ছোকরা। রাসেলের মৃত্যু নিয়ে আছে লেখকের কল্পিত কাহিনি! জোছনা ও জননীর গল্পে মুক্তিযুদ্ধের বিশাল অবয়ব আছে – তাতে নেই জনমানসের প্রপার দ্রোহ, নেই তাহের, সিরাজ শিকদার, তাজউদ্দীন, ভাসান বা নিম্নবর্গীয় জনগণের যথাযথ অবস্থান! তিনি আওয়াম লীগ-বিএনপির নেতাদের প্রেরিত সৃজিত বর্ণিত ব্যাপক মুক্তিযুদ্ধ এনেছেন। তিনি যেন তাঁর বর্ণিত কাহিনির ভেতর দিয়ে এ দুদুলের পরস্পরকে হ্যান্ডশেক করানোতেই মশগুল ছিলেন। ফলে তাঁর সৃজিত মুক্তিযুদ্ধের স্বোপার্জিত জনদ্রোহ প্রকাশ পায়নি। মধ্যাহ্ন নামের 888sport alternative linkে বঙ্গভঙ্গ, দেশভাগ, হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, গান্ধী, জিন্নাহ, সোহরাওয়ার্দী, রবিঠাকুর, নজরুল, সুভাষ বসুর অনেক কথাই আছে। এর ভাষার ধরনটি বেশ চমৎকার – যেন পূর্ববঙ্গের জল-নদী-হাওয়া-হাওর একেবারে মিশে গেছে। ধর্মের প্রচুর প্রসঙ্গ আছে। তিনি প্রচলিত ধর্মের বাইরে অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের বাইরে ধর্মের ব্যক্তিক রূপকে সামনে এনেছেন। ব্যক্তির স্বাধীন চাওয়া-পাওয়া, চৈতন্যের মুক্তবিকাশ, তার আনন্দ-বেদনা, হাহাকার ক্রন্দনকেই নিজের নিজের ধর্মের বৈশিষ্ট্যরূপে সৌকর্যময় করতে চেয়েছেন। এ-888sport alternative linkের লাবুস আর চান বিবি ওরফে জুলেখা অতিচমৎকার দুটি চরিত্র – মানুষ কতভাবে যে নিজেকে স্বাধীন ভাবতে পারে – এ যেন তারই জলজ্যান্ত রূপ। সৃজন-জগতে তারা দীর্ঘজীবী হোন! এটি হুমায়ূনের এক চমৎকার প্রয়োজনীয় সৃজনকর্ম। মধ্যাহ্ন পাঠ করতে গিয়ে আরেকটা 888sport alternative link, সৈয়দ মোস্তফা সিরাজের অলীক মানুষের কথা আমাদের মনে পড়বেই। একই সময়, প্রায় একই টাইপের মানুষ নিয়ে তারা দুজনই তৎপর ছিলেন। তবে হুমায়ূনের চরিত্রসকল পূর্ববঙ্গে বাস করে আর সিরাজের লোকজন পশ্চিমবঙ্গে বাস করে। এটি শুধু স্থানিক বিষয় নয়, এতে ভাবনারও অনেক হেরফের হয়ে গেছে! তখন সীমানা ভাগ না হলেও দুজনের ভাবনার সীমানা ভাগ আছে। হুমায়ূন তাঁর মানুষকে যত মুক্ত-স্বাধীন করতে চেয়েছেন, ইসলাম ধর্মের জটিল-কুটিল বিষয়কে হাস্যকলতানে ব্যবচ্ছেদ করতে চেয়েছেন, ধর্মের সংস্কারকে একেবারে ফালি ফালি করে দেখাতে চেয়েছেন, সিরাজের মুসলমানরা ততই দিশাহীন, বিভাজিত, গতিহীন, এমনকি অদ্ভুত অচেনা সব আচরণ করছে! মুসলমানদের ভেতর বর্ণপ্রথা দেখানোর অদ্ভুত আচরণ দেখিয়েছেন সৈয়দ সিরাজ, যেন তারা রবিঠাকুরের ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা না নেওয়া পর্যন্ত তাদের মুক্তি নেই! হুমায়ূন একটা সময়কে, ঊনবিংশ-বিংশ শতককে, হিন্দু-মুসলমান আচরণকে, বঙ্গভঙ্গকে, দাঙ্গাকে চেনাতে যত স্বচ্ছ-মুক্ত মন দিয়ে থাকতে চেয়েছেন, সিরাজ ততই মুসলমানদের প্রকৃতিজাত দ্রোহকে প্রশ্নদীর্ণ করেছেন। সিরাজ দেশ-কালের ঊর্ধ্বে উঠে এ-জাতকে স্পষ্ট করে চিহ্নিত করতে পারেননি। সেখানে হুমায়ূন অনেকটাই সফল। রাজনৈতিক 888sport alternative link হিসেবে এখানে মাতাল হাওয়ার কথা বলতে পারি। এটি তিনি সৃজন করেন ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্রে রেখে। তখনকার 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অবস্থা, আসাদের ছাত্রত্ব, তাঁর রাজনীতি, এমনকি তাঁর প্রাণদান, ছাত্র-আন্দোলন সম্পর্কীয় নানা কথা ও ছাত্রদের মহান আচরণই এ-888sport alternative linkের মূল জিনিস সঙ্গে শেখ মুজিব, মওলানা ভাসানীও আছেন। সবই আছে তবে তাতে আলাদা কোনো ভাষাবিশেষত্ব নেই। একধরনের হেঁয়ালিপনা এখানেও বিরাজিত। তবে সামরিক শাসন বলতে তিনি আইয়ুবের কালটাকেই চিনেছেন। এরপরের অন্য কোনো সামরিক শাসন তাঁর লেখায় নেই। 888sport appsের শাসনব্যবস্থাপনা বা তাদের লোকজন নেই। তবে হয়তো তিনি স্বভাবতই জানতেন যে, এদের সমর্থিত পাঠকও তাঁর আছে। পাঠকের প্রতি অবয়বহীন দায়বোধ থেকেই তিনি হয়তো এ-গ্যাঞ্জামে ঢোকেননি! পাঠকের কাছে নিরাকার কর্মযজ্ঞ প্রকাশ করতে গিয়েই তিনি যেন নির্বিরোধী-888sport live chatের কাছে ক্রমাগত আত্মসমর্পণ করে গেছেন!
আমরা তাঁর সৃজনকর্মে ভাষাবিকাশের বিষয়টি খেয়াল করলে দেখব, নন্দিত নরকে বা শঙ্খনীল কারাগার হয়ে যে-কাহিনি, চরিত্রবিন্যাস বা ভাষা বিকাশের শুরু, গৌরীপুর জংশনে এসে তা যেন একটা পরিণতি পায়। একটা জংশনের কতিপয় নিম্নবর্গীয় মানুষের জীবন এতে আছে। জয়নাল আর অনুফা এর মূল চরিত্র হলেও আশির দশকের একটা বোহেমিয়ান মুসলমানি-জীবনকথন এতে আছে। আছে ভালোবাসা নামের সরল হাহাকার। যে-জয়নাল এক সময় কুলির কাজ করত, তিনমণী বস্তা কোমরে পড়ে যাওয়ায় সে হয় মাজুল মানুষ, একটা সাইড তার ধরে যায়। চুরি-চামারি করে কোনো রকমে বেঁচে থাকে। তার বউ, মানে অনুফা নানা স্বামীর হাত ঘুরে শেষে বেশ্যাপাড়ায় আশ্রয় নেয়। শুরু হলো জীবন বহনের আরেক গল্প। সেখানে জয়নাল, হায় আমাদের খোঁড়া জয়নাল কী এক প্রেমের টানে যায়। একসময় অনুফা অন্যত্র চলে যায়। জয়নালের জীবন জংশনেই আটকা পড়ে। এর যে-বর্ণনা, তার যদি বিকাশ হতো, তাহলে আমরা পাঠকব্যাকুল গড়পড়তা এক কথাওয়ালা হুমায়ূনকে হয়তো পেতাম না, পেতাম এমন এক হুমায়ূনকে, যার জন্য সিরিয়াস অনেক পাঠকই নিজেদের ভেতর নিজেদের শান দিতে থাকে! তবে যদি দিয়ে তো আর জীবন চলে না। এতে তার সৃজনশক্তি প্রকাশ পায়; কিন্তু হুমায়ূন বুঝে যান, এ দিয়ে তাঁর চলবে না। তাই সরল গল্পের কাহিনিকার হন তিনি। কিন্তু তিনি যে সিরিয়াস কিছু করতে চান এর প্রমাণ রাখতে চেয়েছেন জোছনা ও জননীর গল্প, মধ্যাহ্ন, বাদশাহ নামদার, কবি, অনিল বাগচীর একদিন, ১৯৭১ প্রভৃতিতে।
ঘোরমুখর জীবনের আরেক প্রকাশ তার বাদশাহ নামদার নামের 888sport alternative linkটি। এটি লেখার পেছনে হুমায়ূন নামের চমক তো ছিলই, এর ফলেই হয়তো বাদশা হুমায়ূনকে একেবারে হুমায়ূন আহমেদের সমান্তরাল ব্যক্তি করে ফেলেন। আমরা এটি পড়তে গিয়ে ব্যক্তি হুমায়ূন, তাঁর ব্যক্তিপ্রেম, বিয়ে, মায়ের দাবি, এমনকি নুহাশ পল্লীর ছায়া পাই যেন। রাজা-উজিরের কথাচ্ছলে তিনি আমাদের গ্রামীণ সমাজকে পর্যন্ত ছুঁতে চেয়েছেন। সেই বৃষ্টি, নদী, তুমুল জোছনার প্লাবনে যেন চারপাশ থইথই করতে শুরু করেছে। তিনি এখানে এমন এক দর্পণ সৃজন করেছেন, যেখানে আরেক হুমায়ূনকে আমরা পাই, তিনি বাদশা নামদার নন, 888sport live chatী হুমায়ূন। বাদশাহ হুমায়ূনের ওপর কল্পিত আবেগই শুধু প্রয়োগ করেননি তিনি, বারো জাতের লিপ্সু হরিশংকর, আকিকা, লছমি বাই, অম্বা, ভাইদের বিচিত্র রূপ তিনি প্রয়োগ করেছেন। কিন্তু তিনি দেয়াল 888sport alternative linkে আইনের কাছে দায়বদ্ধ হয়ে গেলেন! গল্পই যদি তিনি লেখেন তবে বঙ্গবন্ধু, মোশতাক, বিপ্লবী তাহেরকে নিয়ে কেন লেখা যাবে না। ঐতিহাসিক ঘটনা নিয়ে পৃথিবীর অনেক ক্ল্যাসিক কথা888sport live chat রচিত হয়েছে, যেখানে কথা888sport live chat তাঁর পূর্ণ স্বাধীনতা নিয়ে দিনকে রাত করে ফেলেছেন। দেয়ালে তিনি শুদ্ধবাদী হয়ে গেলেন?
তবে প্রয়োজনে, ঘটনার রকমফেরে, ভাষার ধরন পরিবর্তনে তার কখনো মনোনিবেশ ছিল মনে করা যায় না। ফলে নন্দিত নরকে থেকে গৌরীপুর জংশন হয়ে জোছনা ও জননীর গল্প পার হয়ে হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরীতে একই ছিল। তবে এর উজ্জ্বল ব্যতিক্রম হচ্ছে মধ্যাহ্ন। সেখানে যেন আমাদের পূর্ববঙ্গীয় এক আমেজ পাওয়া যায়। আমরা তাতে বিমোহিত হই। আমরা একটু খেয়াল করলেই দেখব, প্রায় একই কালে হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী আর বাদশাহ নামদার প্রকাশিত হলেও প্রথমটির প্রচার-প্রসার ছিল অনেক বেশি। অথচ বাদশাহ নামদার লিখতে প্রচুর সময়ই শুধু তিনি নেননি, স্টাডিও করেছেন অনেক। অথচ অতি তরল-টাইপের হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী পাঠক অনেক বেশি পছন্দ করেছেন। এই যে অনেক গড়পড়তা পাঠক, এরাই হুমায়ূনের জৈবিক দশার প্রাণ বলা যায়। 888sport live chatের যে-ক্ষতিটা করেছেন তারাও এ-গড়পড়তা পাঠকই!
তবে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, তাঁর 888sport live footballজীবনটা প্রায় বেশিরভাগই কাটিয়েছেন রাষ্ট্রীয় বাস্তবতাকে অগ্রাহ্য করে। বলা যায়, তা তিনি করছিলেন। এটাকে তবে আমরা কী বলব – তিনি বিকল্পবাস্তব নির্মাণের কারিগর, নিজেকে লুকিয়ে রাখার সাধক, মধ্যবিত্তের চরম সুবিধাবাদী লেখক! আমার যেটা মনে হয়, তিনি স্বোপার্জিত স্বাধীনতার ধারক। তাঁর সত্য তাঁর মতোই। তিনি কারো ধার ধারেননি। তাঁর লেখায় বোধহয় পলিটিক্সকে নির্দিষ্ট করে খোঁজার দরকার নেই। কারণ সামাজিক বাস্তবতা তাঁকে টানেনি। তাহলে তিনি কি আকাশচারী ছিলেন, তাঁর পাশের মানুষকে দেখেননি, তিনি কি আন্ধাকাল অতিক্রম করলেন? এই যে আমরা একাত্তর-পরবর্তীকালে মানুষের যেহাহাকার, সর্বত্র ত্রাস, মানুষের বৈপ্লবিক জাগরণ, রোদনময়তা দেখছি, মানুষ যে-সময়ে তার মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটাতে পারছে না, পথে-বিপথে সমানে মানুষ মরে যাচ্ছে, দুর্ভিক্ষের চরম থাবায় তার জীবন অতিষ্ঠ, সামরিক শাসনের হিংস্র থাবায় তার বেঁচে থাকার ন্যূনতম অধিকারই পাচ্ছে না, সেখানে তাঁর 888sport live footballচর্চা অত উদাসীন কেন? তাঁর লেখায় সামাজিক অরাজকতা যাও এসেছে, একে তো দানা বাঁধতে দিচ্ছেনই না তিনি!
তবে এটা ঠিক, পাঠককে তিনি ধরে রাখতে জানেন; তাঁর লেখা পাঠ শুরু করলে তা থেকে নজর ফেরানো মুশকিলই। একটা ঘোরের ভেতর রাখার আশ্চর্য এক ক্ষমতা তাঁর আছে। সে-ক্ষমতার ওপর ভর করেই এই পাঠ-আকালের দেশে তিনশো বাইশটি বাজারমুখী গ্রন্থ তিনি লিখে ফেলেন। তাঁর বই মানেই হাজার হাজার কপির একটা হুলস্থূল ব্যাপার। তাহলে এই যে পাঠকের সঙ্গে একটা সম্পর্ক, একে আমরা কী হিসেবে দেখব? তা দেখব মধ্যবিত্তীয় একধরনের জাদু হিসেবে। দেখব, একধরনের প্রফেটিজম হিসেবে – সেখানে হুমায়ূনের সীমাবদ্ধতা যেমন আছে, জীবনকে দেখানোর স্বোপার্জিত শক্তিও আছে। তিনি কোনো ধারায় ছিলেন না, প্রায় একা একা এত জনপ্রিয়তার শীর্ষে আরোহণ করেছেন। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস, সৈয়দ শামসুল হক, আল মাহমুদ : এঁদের প্রত্যেকের সাংস্কৃতিক বাহিনী আছে! হুমায়ূনের পক্ষে সৃজনশীল ক্যাডার হিসেবে কে কে ছিলেন! তিনি একেবারে একলা এতদূর যেতে পেরেছেন – এটাই তাঁর স্টাইল। তাঁকে আমাদের 888sport app download for android করতেই হবে। মনুষ্য বিকাশের জনপ্রিয় 888sport live footballের প্রয়োজনও তো আছে।
তাঁর 888sport promo codeচরিত্র অত বিচিত্র আর জোরালো কৌশলে বিস্তৃত ছিল যে, তা আমাদের কথা888sport live chatের এক অদ্ভুত-প্রেরণামুখর সংযোজন। আমরা প্রথমেই তাঁর মুদ্রিত প্রথম 888sport alternative link নন্দিত নরকের কথা বলতে পারি। এখানে মুখ্যত তিনটি 888sport promo codeচরিত্র – রাবেয়া, রুনু আর মা। রাবেয়ার প্রতি কিঞ্চিত আকাক্সক্ষী তার প্রতিবেশী রমণী, তার মেয়ে আর ছেলের বউয়ের নাম করা যায়। কিংবা খোকার প্রেমিকার কথাও বলা যায়; কিন্তু রাবেয়ার কাছে তাঁরা একেবারে ম্লান। রাবেয়া অনেকটাই অপ্রকৃতিস্থ, উদাসীন, জীবন সম্পর্কে তাঁর যেন কোনো মোহই নেই। অথচ তাদের প্রতিবেশী যুবকটার প্রতি তার মমতার কী চমৎকার রূপ আমরা পাই! পাক্কা একটা গানই রাবেয়া মুখস্থ করে ফেলে! তাকে মায়ায় জড়াতে চায়। কিন্তু সমাজের কথিত সুস্থ মানুষজন রাবেয়াকে চিনতে চায় না; এমনকি মনেও রাখে না। তার জীবন একপর্যায়ে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু রাবেয়া এমন এক চরিত্র, যাকে ভোলা যায় না। শঙ্খনীল কারাগারের মাতৃহীন রাবেয়াও আমাদের 888sport sign up bonusতে থাকে। তাকে আমরা বারবার মনে রাখতে চাই। কোথাও কেউ নেই-এর মুনা শুধু নয়, তিনটি বন্দি যুবতীও রহস্যময়তার প্রতীক হিসেবে আমাদের মনে থাকে। আমাদের মনে থাকে মধ্যাহ্নের লাবুসের মা ওরফে রঙিলা বাড়ির দেহজীবী 888sport promo code জুলেখা। বাদশাহ নামদারের হুমায়ূনের কনিষ্ঠ স্ত্রী হামিদা বানুকেও আমরা ভুলতে পারি না যেন। গৌরীপুর জংশনের অনুফাকেও আমরা ভুলে থাকতে পারি না। তাঁর 888sport sign up bonus, বেশ্যা হয়েও তাঁর প্রাক্তন স্বামীর প্রতি যে-মমতা হুমায়ূন সৃজন করেন, তা 888sport promo codeচরিত্রের আলাদা লৌকিকতা বহন করে। আমরা এ-888sport promo codeর 888sport sign up bonusতে যেন আপ্লুত হতে থাকি। এমনকি হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী নামের সেই এলিতা নামের কথিত পরীকেও জৈবিকতার আলাদা মাত্রা নিয়ে নিজেকে জাহির করতে দেখি। আসলে হুমায়ূন 888sport promo codeকে উন্মুক্ত-স্বাধীন সমাজের এক রহস্যময় প্রতিনিধিরূপে যেন আমাদের মনোজগতে হাজির করেন। আমরা তাঁর সৃজিত 888sport promo codeচরিত্র নিয়ে মুগ্ধ-বিস্ময়ে আমাদের কালযাপনে তৎপর হই যেন। তিনি 888sport promo codeতে হুর দেখেন, এমনকি বেহেশত-দোজখ, এমনকি সৃজনকর্তা নিয়ে ম্যালা নসিহতও করেন। মৃত্যুকে পর্যন্ত মহিমান্বিত করতে থাকেন। কিন্তু পরকালের সুখকে এমন ঝামেলায় ফেলেন, যেন মানুষকে শায়েস্তা করার একটা মজাদার পন্থা হচ্ছে তাকে বেহেশতে ছেড়ে দেওয়া! মুগ্ধতা আর বিস্ময়ই চরিত্রসৃজনে তাঁর অন্যতম পুঁজি। চরম লজিক্যাল ক্যারেক্টর মিসির আলী যেমন তার মানুষ, খটখটে হলুদ পাঞ্জাবি-পরিহিত নগ্নপায়ের হিমু এক অ্যান্টিলজিক্যাল স্বপ্নাতুর চরিত্র!
এখন কথা হচ্ছে, এই যে বাস্তবের হুমায়ূনবিহীন অবস্থা, এখন তার আওতাধীন পাঠকের কী হবে? তাদের অনেকেই তো শইল-গজারের পোনার মতো আন্ধাগুন্ধা মানুষের মতো হুমায়ূনের পেছনে ছুটতেন – তাঁরা এখন কী করতে পারেন! তাঁরা সৃজনশীল বই পড়া ছেড়ে দেবেন? জোছনার মায়া আর শ্রাবণ মেঘের কারসাজি দেখে বেড়াবেন? কী যে করবেন তা তো এখনই বলা মুশকিল। তবে তাঁদের ভেতর এ-বোধ আনা যায় কিনা, তিনি যে মধ্যবিত্ত রেখে গেছেন, যে-মধ্যবিত্ত প্রায় অনড় অবস্থায় হুমায়ূনে মগ্ন থাকতেন, তা থেকে জীবনকে বিচিত্ররূপে চেনানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে! সেটাই বা কে কীভাবে করবে? সেখানেও তো বিকল্প হুমায়ূনই দরকার! সেই বিকল্প-ব্যক্তিত্ব ভাবা একধরনের হেঁয়ালিপনা বই কিছু নয়। তাছাড়া তিনি কোনো মতবাদে নিজেকে আটকে রাখেননি। 888sport live chatের স্বোপার্জিত কথকতায় মুক্তচাঞ্চল্যে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন। কাউকে কেয়ার করে (মাঝে মাঝে প্রতিষ্ঠানের কাছে নত তো হয়েছেনই!) 888sport live football করেননি। সমালোচকদের তিনি হিসাবের মধ্যে রাখেনইনি! তা থেকে 888sport live chatের মজাদার এক দিগন্ত আমরা পাই। নিজের কাজে শৈল্পিক ঈশ্বরত্ব জ্ঞাপনের এক আরাধনা যেন! আমার মনে হয়, এখন প্রয়োজন হুমায়ূন নিয়ে যথার্থ আলোচনা-প্রতি-আলোচনা চালিয়ে যাওয়া – তাঁর ব্যক্তিত্বের নানান চেহারা চেনানো, সংস্কৃতিবিকাশে পাঠকের মৌল-করণীয়কে চিহ্নিত করে দেখিয়ে যাওয়া।
বেসিক্যালি আমাদের তো কোনো নায়ক নেই। এই আমরা হচ্ছি মধ্যবিত্ত সমাজের মানবসকল। আমরা ধরেই নিই মধ্যবিত্তের কোনো নায়ক থাকতে নেই। কারণ তারা কোনো পদের নায়কই ধরে রাখতে পারে না। তারা এতই বিচলিত, হকচকিত, সুবিধাখোর যে, তারা মধ্যবিত্তের স্বপ্নকে একত্রে রাখতে পারে না। এমনকি তাদের স্বপ্নকে স্বপ্নায়িত করার ভেতর বিপদও আছে। কারণ তাদের একহাত মাটিতে দিয়ে অন্য হাত আকাশে বাড়িয়ে রাখে – কোনদিকে মহৎ হবে তার পথ খোঁজে। তাদের বিশ্বাস করা যায় না। কারণ তারা বিশ্বাসের জায়গাই থাকে না। এই হচ্ছে চলতি কথা; কিন্তু কেউ না কেউ এ-জায়গার ভিন্ন চরিত্র আনতে পেরেছেন বলে মনে করতে আমাদের মন চাইতে পারে না? তা খুব পারে। এই যে বেখেয়ালি, কখনো দারুণ খেয়ালি, নষ্টভ্রষ্ট-হকচকিত-পিষ্ট হতে থাকা মধ্যবিত্ত তাদের মুগ্ধতাকে, আনন্দ-অশ্র“কে, একটা রূপ দেওয়ার জায়গায় এসেছে – এ-কাজে নিরলস চেষ্টা যিনি করেছেন তাঁর নাম হুমায়ূন আহমেদ। তিনি আমাদের মধ্যবিত্ত-চরিত্রকে কিছুটা হলেও রিলাক্স করতে পেরেছেন। তাঁকে এজন্যে সাধুবাদ দিতেই হয়।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.