পূ র বী ব সু
প্রথম দৃশ্য
জুলাই ২৫, ২০১৬।
সময় : সন্ধ্যা হতে বেশি দেরি নেই। অস্তগামী সূর্যের রেশ চতুর্দিকে।
স্থান : হাইওয়ে ২৫ নর্থ ধরে দ্রুত ছুটে চলা ২০০৩ সালের একটি পালি রঙের টয়োটা কেম্রি গাড়ি।
অবস্থান : নিউ মেক্সিকো অঙ্গরাজ্যের সান্টা ফে শহর থেকে বিশ মাইল দূরে, দক্ষিণে।
পাত্র-পাত্রী : গাড়ির ভেতর চারজন মানুষ। গাড়ির চালক-মালিক বছর চল্লিশ বয়সের এক স্বাস্থ্যবান পুরুষ। পাশে বসা ৩৫-৩৬ বছরের এক 888sport promo code। পেছনের সিটে বছর সাত-আটের এক বালক এবং বছর ২৩-২৪-এর এক যুবক। [রাশ আওয়ার শেষ হয়নি। গাড়িটি অফিসফেরা গৃহমুখী অন্য যানবাহনের সঙ্গে ছুটে চলেছে অতিব্যস্ত হাইওয়েতে। গাড়ির চালক অস্থিরভাবে এবং প্রচ- গতিতে ক্রমাগত এই লেইন থেকে ও-লেইনে যাচ্ছে; আর ভেতরে যাত্রীদের মধ্যে চলছে উচ্চৈঃস্বরে উত্তপ্ত কথোপকথন।]
888sport promo code : আমি আর পারছি না। কোথাও একটু থামাও। এ-অঞ্চলে কোনো গ্যাস স্টেশন, রেস্ট এরিয়াই কি নেই? আশ্চর্য! তুমি থামো কোথাও।
পুরুষ : এই দিনের বেলা হাইওয়ে ২৫-এর মতো ব্যস্ত রাস্তায় কোথায় থামাই, যেখানে তুমি বসতে পারবে রাস্তার ধারে?
888sport promo code : আমি এতশত বুঝি না। শুধু টের পাচ্ছি আমি আর সইতে পারছি না। সেই কখন থেকে বলছি তোমাকে। সত্যি বলতে কী, আজ মন্দিরে যাবার কোনো ইচ্ছাই ছিল না আমার। কিন্তু তোমার মা চিঠিতে লিখে পাঠিয়েছে। অতএব যেতেই হবে। আর কারো বাচ্চা হয় না যেন। সবাই যায় মন্দিরে? সারাদিন কাজ করার পর এনার্জি থাকে কারো? আমার এসব বাড়াবাড়ি ভালো লাগে না। উঃ! আর পারছি না।
পুরুষ : তুমি বলার পর থেকেই তো থামার চেষ্টা করছি। এ-অঞ্চলে কোনো রেস্ট এরিয়া নেই হাইওয়েতে। শহরের কাছে বলেই হয়তো। কী করবো বলো? দেখি। সামনের এক্সিটটা নিয়ে দেখি। এখানে কোনোদিন বেরোইনি। কী আছে এখানে, কতদূরে আছে কিছুই জানি না। তবু গিয়ে দেখি। কিছু পাওয়া যাবে নিশ্চয়।
888sport promo code : উঃ! আর পারি না।
বালক : (তার হাতের মোবাইল টিপে নেভিগেশনের দিকে তাকিয়ে) মা আর তো মাত্র বাইশ মিনিট। বাবা যে স্পিডে চালাচ্ছে, বিশ-বাইশ মিনিটের মধ্যেই বাসায় চলে যাবো। একটু অপেক্ষা কর।
888sport promo code : বিশ-বাইশ মিনিট! পাগল! অসম্ভব।
যুবক : কিন্তু বৌদি এই হাইওয়ের পাশে এতো ব্যস্ত জায়গায় দিনের বেলায় কী করে তুমি –
888sport promo code : এখানে, মানে গাড়ির ভেতর, পেছনের সিটে বোধহয়, একটা বড় প্লাস্টিকের ব্যাগ ছিল না? দাও, ওটাই দাও আমাকে।
বালক : ইয়াক। তুমি গাড়ির ভেতর পিপি করবে?
যুবক : তুমি কি পাগল হলে বৌদি?
পুরুষ : একটু অপেক্ষা কর। মাথা খারাপ করে লাভ নেই। আমি থামছি।
888sport promo code : উঃ!
পুরুষ : এই যে সামনেই একটা এক্সিট। যদি কোনো গ্যাস স্টেশন বা কফিশপ পেয়ে যাই কাছাকাছি। যদিও এক্সিটের সঙ্গে কোনো সাইন দেখাচ্ছে না। কিছু যদি না-ও পাই অন্তত গ্রামের রাস্তায় এমন ভিড় হবে না।
[প্রথম এক্সিটেই বেরিয়ে পড়লো গাড়ি।
রাস্তাটা অপেক্ষাকৃত ছোট মানে সরু এখানে। ছয় লেন ইন্টার স্টেট হাইওয়ের বদলে দুই লেনের গ্রামীণ হাইওয়ে। স্পিড লিমিটও কম। তবু বেলাশেষে ঘরে ফেরার যানজটে এই ছোট হাইওয়েতেও যথেষ্ট ভিড়। একের পর এক সারি সারি গাড়ি ছুটে চলেছে দুই দিকেই। কাছাকাছি কোনো কফিশপ কিংবা গ্যাস স্টেশনের চিহ্ন দেখা গেল না। আরেকটু পরে রাস্তার ধারে দাঁড়ানো একটা একক সাইনবোর্ড, যাতে লেখা রয়েছে সবচেয়ে কাছের গ্যাস স্টেশন আরো দশ মাইল ভেতরে।]
888sport promo code : না, কিছুতেই না। আমি দশ মাইল এভাবে যেতে পারবো না। তুমি গাড়ি না থামালে আমি চলন্ত গাড়ি খুলেই নেমে পড়বো বলছি।
[দরজা খোলার হাতলটা জোরে চেপে ধরে 888sport promo code।]
পুরুষ : এক সেকেন্ড।
[এদিক-ওদিক তাকিয়ে ট্রাফিক লাইটটা পার হয়েই একটু নির্জনতা দেখে রাস্তার ডানদিকে থামলো গাড়িটি। এই অঞ্চলে হাইওয়ে থেকে বেশ কিছুটা ভেতরের দিকে দূরে দূরে একেকটা বাড়ি। যে-জায়গায় থামানো হলো গাড়িটা, সেখানে রাস্তা থেকে অন্তত পাঁচ-ছয়শো গজ ভেতরে একটি বাদামি/ কমলা রঙের একতলা বাড়ি। এই অঞ্চল্লের প্রায় সব বাড়িই দেখতে অনেকটা 888sport appsের কোনো কোনো পল্লী অঞ্চলের মাটির বাড়ির মতো। বাড়ির সামনে দিয়ে বালিমাটি আর লাল সুড়কির ভেজা পথ সোজা চলে এসেছে হাইওয়ে পর্যন্ত। হাইওয়ে ছোঁবার আগে আগে বেশ খানিকটা জায়গা জুড়ে অপ্রশস্ত রাস্তাটির দুপাশে রয়েছে সবুজ গাছগাছালা ও ফুলের বাগান।
গাড়ি এসে থামলো বাগানটির প্রায় কাছেই। দরজা খুলে দ্রুত বেরোবার মুখে 888sport promo code শোনে, তার উদ্দেশে পেছনের সিট থেকে কিছু বলছে যুবক।]
যুবক : বৌদি, ওই ভেতরের বাড়িটাতে একবার গিয়ে দেখো না, ওরা যদি তাদের বাথরুম ব্যবহার করতে দেয়!
[গাড়ি থেকে নামতে নামতে] 888sport promo code : পাগল! সেখানে হেঁটে যেতে লাগবে কমপক্ষে ৭-৮ মিনিট। তারপর এই বাদামি রঙের বিদেশি চেহারার আমাকে দেখে দরজা খুলবে ওরা? রাইফেল নিয়ে বেরুবে কিনা কে জানে? ট্রেসপাসিংয়ের জন্যে গুলি করে বসলেও অবাক হবার কিছু নেই।
[বলতে বলতে গাড়ি থেকে নেমে 888sport promo code এদিক-ওদিক তাকিয়ে রাস্তার ধারে বাগানের পাশে নেমে পড়ে। তারপর হুটহাট করে বসে পড়ে মাটিতে। এতো তাড়াতাড়ি করে সে বসে যে, মনে হয় তার কাজের ইউনিফর্মের প্যান্টের বোতামটা আগে থেকেই খুলে রেখেছিল। রাস্তা দিয়ে দ্রুতবেগে গাড়ি চলেছে। দুদিকেই। যেতে যেতে খোলা জানালা দিয়ে মুখ বের করে কোনো কোনো কৌতূহলী যাত্রী তাকিয়ে দেখছে কী ঘটনা ঘটে চলেছে এখানে। কিন্তু কেউ থামে না।
হাইওয়ের পাশে ঘাসের ওপর টয়োটা কেম্রি দাঁড় করানো। ওদের ঠিক পেছনেই ট্রাফিক লাইট। এখানে ট্রাফিক লাইট কেবল গাড়ির জন্যেই। রাস্তায় প্রায় কেউ হাঁটে না। 888sport promo codeটি একটু ঝুঁকে সামনের দিকে নিজেকে প্রসারিত করে দেয়। একটি গোলাপঝাড়কে পাশে রেখে নিজেকে এই অবস্থায় খোলা পৃথিবী, হাইওয়ের শত শত গাড়ির যাত্রীদের চোখ থেকে একটু আড়াল করার চেষ্টা করে। তার মনে হয়, প্রতিটি গাড়ি যেন অবাক বিস্ময়ে কেবল তাকেই দেখছে হা করে। মনে মনে ভাবে, না, বাংলার কোনো অজপাড়াগাঁয়ে নয়, খোদ আমেরিকার মধ্যভাগে বলতে গেলে মার্কিন মুল্লুকের প্রায় পেটের ভেতর বসে খোলা চত্বরে পেচ্ছাব করতে হচ্ছে তাকে। অবিশ্বাস্য ঘটনা সন্দেহ কী?
একটু পরে ভরপুর দেহটাকে টেনে টেনে একটু লজ্জা-মাখানো হাসি নিয়ে ফিরে আসে সে গাড়িতে।]
888sport promo code : এতো বড় গোলাপগাছটা এনে মাত্র লাগানো হয়েছে মনে হয়। গাছটার গোড়ার চারদিকে এখনো কাঁচা মাটি। ছিঃ! কী কা-টাই করলাম। এতো সুন্দর বাগানটার পাশে…। ভাবতে পারি না, এমন প্রকাশ্য হাইওয়ের ধারে বসে – [কথা শেষ না করে নিজের মুখখানা দুই হাতের ভেতরে নিয়ে চরম বিস্ময় ও হতাশা প্রকাশ করে 888sport promo code। গাড়িটি ইউ টার্ন নিয়ে আবার হাইওয়ে ২৫-এর দিকে ছুটে চলে।]
888sport promo code : কাল কাজের শেষে আমাকে আবার একটু নিয়ে আসবে তুমি এখানে। আমি ভারি সুন্দর দেখে দুটো গোলাপগাছ – একটা লাল – একটা হলুদ – হোম ডিপোতে এখন সেল দিয়েছে, কিনে দিয়ে আসবো ওই বাড়িটাতে। তারা জানুক না জানুক, আমি তাদের বলবো কী কা-টা করতে বাধ্য হয়েছিলাম। তবে একটা শর্ত। আমি কিন্তু একা যাবো। আমার সঙ্গে কেউ যাবে না। তোমরা গাড়িতে বসে থাকবে। দিনের বেলায় হাতে ফুলগাছ এক মহিলাকে দেখলে কেউ গুলি করবে না আশা করি।
পুরুষ : তথৈবচ।
দ্বিতীয় দৃশ্য
জুলাই ২৬, ২০১৬।
সকাল সাড়ে এগারোটা।
টাউন হল।
[বিশাল ঘরের একপাশে একটি টেবিলের ওপর কফির পাত্র ও কিছু ফোম কাপ, চা, চিনি, দুধ, প্লাস্টিকের চামচ। একটা বাস্কেটে সাদা ন্যাপকিনের ওপর কয়েক কাপ কেক। ঘরটির মাঝখানে গোটা বিশেক ফোল্ডিং চেয়ার পাতা। তার সামনে ওদিকের দেয়ালঘেঁষে ছোট্ট মতোন একটু উঁচু জায়গা, বোঝা যায় সেটা মঞ্চের জন্যে সুরক্ষিত। সেখানে দাঁড়িয়ে এক সাদা যুবক লম্বা টেবিলের ওপর রাখা সামান্য যন্ত্রপাতি ও তারটার নিয়ে মগ্ন হয়ে কিছু করছে। চেয়ারে উপবিষ্ট ইতস্তত বিক্ষিপ্ত গোটা সাতেক মানুষ। তাঁরা হচ্ছেন, চারশো অধিবাসীর এই টাউনের মেয়র, কাউন্সিলম্যান, শেরিফ, প্রাইমারি স্কুলের মাস্টার, একজন ব্যবহৃত গাড়ি-বিক্রেতা বনাম ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট, স্থানীয় এক পুরাতন গ্রোসারি স্টোরের মালিক, একমাত্র গ্যাস স্টেশনের অন্যতম মালিক।]
মেয়র : আমি তো ভেবেছিলাম সব তৈরি আছে। আমরা এসে শুধু ঠিক সময়টার ছবি দেখবো। এখন খুঁজতে বসলে তো অনেক দেরি হয়ে যাবে।
মঞ্চ থেকে যুবক : না, না, আমি সব দেখে দেখে ঠিক জায়গায় এনে রেখেছি। খুঁজতে হবে না। শুধু ছবিগুলোর ফোকাস ঠিক করে অস্পষ্টতা আরো কমাবার চেষ্টা করছিলাম।
এই পর্যায়ে কাউন্সিলম্যান উঠে দাঁড়ান।
কাউন্সিলম্যান : আমি এখানে উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই আমার বাড়ির সামনে একটি অবাঞ্ছিত ও অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাস্তার ট্রাফিক লাইটের সঙ্গে সংযুক্ত সিসি ক্যামেরার ধারণ করা ছবি দেখাবার এই বিরল ও বিস্তৃত আয়োজনের জন্যে। বিশেষ করে এতো দ্রুত তা সম্পন্ন করার জন্যে। আমি মেয়রের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ, যিনি এলাকার সুরক্ষার জন্য, সদাসতর্ক ও জাগ্রত। অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, কেন আমি এই ছোট্ট জায়গায় পড়ে আছি। বলুন, কোনো বড়ো শহরে আমার বাগানে নতুন লাগানো হলুদ গোলাপগাছের গোড়ায় এমন অপ্রত্যাশিত কাজ কেউ করে গেলে তার অনুসন্ধানে এতো ঘটা করে আয়োজন হতো? কেউ করতো?
[গ্রোসারি স্টোরের মালিক শ্বেতশুভ্র দাড়ি ও চুলের বয়স্ক লোকটি দুই পাটি পারফেক্ট বাঁধানো দাঁত বের করে হাসেন।]
গ্রোসারি স্টোরের মালিক : আমি কৌতূহলী জানার জন্যে ব্যাপারটা ধরা পড়লো কেমন করে।
কাউন্সিলম্যান : গতকাল সন্ধ্যার একটু আগে হাঁটতে বেরিয়ে হাইওয়ের পাশে আমার বাগানে ঢুকেছিলাম। দুদিন আগে নিজের হাতে লাগানো গোলাপগাছটির অবস্থা দেখতে ওটার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। এর মাত্র কিছুক্ষণ আগেই যে-ঘটনাটা ঘটেছে তা বুঝতে পারলাম, আমার ভীষণ আরামদায়ক পাতলা ক্যানভাসের জুতোর নিচে হঠাৎ একটা শিরশিরে উষ্ণতা টের পেয়ে। তাকিয়ে দেখি একগাদা হলদেটে পেচ্ছাবের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। যত পরিমাণ এই পেচ্ছাব ছিল, সেখানে বুঝতে কষ্ট হয় না, সেটা কুকুর-বেড়ালের কম্মো নয়, অথচ এই তল্লাটে কোনো গরু-ঘোড়া নেই। আমি যখন হতবাক হয়ে চারদিকে তাকাচ্ছি, তখন এই মাননীয় শিক্ষকের (উপবিষ্ট শিক্ষককে দেখিয়ে) গাড়ি এসে থামলো আমার বাগানের সামনে। তিনি জানালেন, মিনিট কয়েক আগে এখান দিয়ে যাবার পথে এই বাগানের সামনে একটি রুপালি গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেছেন। আর দেখেছেন ক্যাপ-মাথায় কেউ একজন বাগানের বাইরে এখানে মানে এই উত্তর-পুব কোনাটায় বসে আছে উলটোদিকে মুখ করে। গাড়ি দিয়ে যেতে যেতে এর বেশি কিছু দেখতে পান নি তিনি।
[অতঃপর সকলে আসন গ্রহণ করে। লাইট নিবে যায়। ক্যামেরায় ধারণ করা ছবি ফুটে উঠতে থাকে টাউন হলের ৬০ ইঞ্চি স্ক্রিনের টেলিভিশন মনিটরে। ছবি শুরু হয়।
গ্রামীণ হাইওয়ে। দুদিক থেকে গাড়ি যাচ্ছে। হঠাৎ একটি গাড়ি এসে থামলো বাগানের কাছাকাছি। গাড়ি থেকে ক্যাপ-পরিহিত কেউ ছুটে বেরিয়ে গেল বাগানের এক কোনায়। আর সঙ্গে সঙ্গে বসে পড়ল মাটিতে প্যান্ট খুলে। এতো তাড়াতাড়ি সব হয়ে গেল যে, মানুষটি কে, কীরকম দেখতে কিছুই বোঝা গেল না; কেননা সে দৌড়ে চলে গিয়েছিল। আর তাছাড়া ক্যামেরার অ্যাঙ্গেলে শুধু পেছন দিকটা দেখা যাচ্ছিল মানুষটার, সামনের দিকটা নয়। কিন্তু মাটি থেকে উঠে আস্তে-ধীরে সে যখন গাড়ির দিকে ফিরে আসতে থাকে, ক্যামেরায় স্পষ্ট দেখা যায় তার চেহারা, মুখম-ল।]
শেরিফ : ও তাই বলো, এ যে মেয়েমানুষ! এমন আহাম্মক, এমন বেকুব আর কে হবে মেয়েমানুষ ছাড়া? আগেই বোঝা উচিত ছিল।
মেয়র : ইষড়ড়ফু ভড়ৎবরমহবৎ. এমন সুন্দর দেশটাকে এরা একেবারে ছিঁড়েভিড়ে ছাড়খার করে দিলো। যতসব লঁহমষব ঢ়বড়ঢ়ষব.
ইন্স্যুরেন্স এজেন্ট : ওই কালপ্রিটের কপালে দেখো বিশাল বড় এক লাল টিপ। কপাল জুড়ে লেপ্টে আছে। তার মানে সে হিন্দু। হয়তো গোঁড়া হিন্দু। হ্যাঁ, আমি দীর্ঘদিন ওই অঞ্চলে ছিলাম। শুনেছি হিন্দু মেয়েদের লাজলজ্জা বেশ কম। তারা পোশাক-টোশাকের ব্যাপারেও খুব পধৎবভঁষ নয়। কেমন ঢিলেঢালা, আলুথালু খোলামেলা। তা নইলে এতো শত-শত পুরুষ মানুষের সামনে দিনেদুপুরে কোনো মহিলা এ-কাজ করতে পারে?
শিক্ষক : মেয়েটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন গর্ভবতী। এই সময় ঘনঘন পেচ্ছাব পায়, সেটা সত্য কথা। তাই বলে এমন গাড়ল হবে কেন, যে নিজের শরীরকে চেনে না! আগে থেকে সতর্ক হবে না, যাতে যেখানে-সেখানে বসে পড়তে না হয়। আসলে এতো বেশি ছেলেপুলে হয় এদের, কোনো কিছুই ঠিকমতো সামলাতে পারে না।
গ্রোসারি স্টোরের মালিক : হ্যাঁ, গাদায় গাদায় বাচ্চা হবে, আর ঘরে বসে বসে ওয়েলফেয়ার খাবে। দেশটাকে ধ্বংস করে দিলো এরা সব এসে।
কাউন্সিলম্যান : লক্ষ্য করেছো কী রকম ইউনিফর্ম পরে আছে মহিলা? এ পোশাক আমি চিনি। এয়ারপোর্টের ক্লিনিং লেডির কাজ করে সে। নিজেদের ইউনিফর্ম নিজেদের ধুতে হয় বলে কোনো কোনোদিন ইউনিফর্ম পরেই ওরা বাড়ি চলে যায়। তাই তো বলি, এ ধরনের জঘন্য কাজ কোনো ভদ্র পরিবারের লোক, কোনো শিক্ষিত লোক, কোনো ফবপবহঃ ঢ়ৎড়ভবংংরড়হ-এর লোক কখনো করতে পারে? এই শ্রেণির মানুষরাই, এই দিনমজুর বা ঘরের মেঝে পরিষ্কার করার লোকেরাই সবসময় এসব নচ্ছার কাজ করে। এরা এমনই। যেখানে খায়, সেখানেই হাগে। সভ্যতা, ভব্যতা, ডেকোরাম শেখা ভালো ঘরের লোক কোনোদিন এমন কাজ করতে পারে না।
গ্যাস স্টেশনের মালিক : যে যাই বলুন, আমি কিন্তু আগেই বুঝেছিলাম, এটা নিশ্চয়ই কোনো মেয়েমানুষের কাজ। তারাই
যখন-তখন যেখানে-সেখানে পেচ্ছাব করে। করতে হয় তাদের। জানি না, ওদের মূত্রাশয়টা ছোট, নাকি এটা মুদ্রাদোষের মতো, ঘর থেকে বেরুলেই তারা বাথরুম খোঁজে। না পেলে যেখানে-সেখানে বসে পড়ে। ওরা নিজের জল নিজের মধ্যে ধরে রাখতে জানে না। আমি তাই কোনো মেয়েমানুষ নিয়ে দূরপাল্লার কোথাও বেড়াতে যেতে রাজি নই। ওরা পথে তোমার জন্য একটা বোঝা, একটা দায় হয়ে দাঁড়ায়।
তৃতীয় দৃশ্য
জুলাই ২৬, ২০১৬।
বিকেল ছটা।
[কাউন্সিলম্যানের বাড়ির ডাইনিং কাম লিভিংরুম। এই বাড়ির সামনে দিয়েই বালি-সুড়কির অপ্রশস্ত পথ চলে গেছে সামনের কাউন্টি হাইওয়ের দিকে। যে-সুড়কির পথের শেষ প্রান্তে, হাইওয়েতে মেশার অব্যবহিত আগে, দুদিকেই গাঢ় সবুজের লতাগুল্ম আর বিভিন্ন রঙের ফুলের বাগান। বাগানের উত্তর-পূর্ব কোণে সেই হলুদ গোলাপের গাছ। একটা কি দুটো হয়তো ফুল ফুটেছে; কিন্তু গাছে ভরা রয়েছে অজস্র গোলাপের কুঁড়ি।
কাউন্সিলম্যান তার স্ত্রী ও বারো বছরের পুত্রের সঙ্গে ডিনার খেয়ে আরাম করে সোফায় এসে বসেছেন। ঘন দুধ দিয়ে তৈরি কফি পান করছিলেন ধীরে ধীরে। বিকেল ছয়টা হলেও মধ্যগ্রীষ্মে এখনো টান টান রৌদ্র বাইরে। হঠাৎ বাড়ির সামনের দরজায় বেল বেজে ওঠে। কাউন্সিলম্যান দরজার ফুটোতে বসানো কাচ দিয়ে বাইরেটা একবার দেখে নেন। তারপর পকেট থেকে চাবি বের করে সাইড টেবিলের ড্রয়ার খুলে রিভলবারটা পকেটে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন।
ঘরের ভেতরে তাঁর স্ত্রী তখনো সিঙ্কে দাঁড়িয়ে বাসন মাজছেন। পুত্র টিভি স্ক্রিনে ভিডিও গেম খেলছে। বেশ খানিকক্ষণ হয়ে গেল। বাসন মাজা শেষে কফি পট থেকে বড় একটা মাগ ভরে কফি নিয়ে দুধ চিনি ছাড়া পান করতে থাকেন মিসেস কাউন্সিলম্যান। কফি শেষ হয়ে যায়। কাউন্সিলম্যান তখনো বাইরে। কোনো সাড়াশব্দ নেই। একসময় অস্থির হয়ে উঠে পুত্রকে কাছে ডাকেন তিনি।]
মিসেস কাউন্সিলম্যান : তোমার বাবা এখনো আসছে না কেন? গত সপ্তাহে নাকি উত্তরের পাহাড় থেকে একটা বিশাল ভাল্লুক নেমে এসেছিল এদিকে। জানালা দিয়ে দেখো তো বাছা, বাবাকে দেখা যায় কিনা।
[মায়ের কথা অনুযায়ী পুত্র জানালার কাচের সামনে এসে দাঁড়ায়। বাইরে তাকিয়ে দেখে।]
পুত্র : হ্যাঁ, আমি দেখতে পাচ্ছি বাবাকে।
মিসেস কাউন্সিলম্যান : কী করছে সে?
[এই বিশাল জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে বাড়ির সামনের পেটিও শুধু নয়, লম্বা সুড়কির রাস্তা, দুপাশের ঘন সবুজ লন, এমনকি হাইওয়েঘেঁষা বাগানটি পর্যন্ত দেখা যায়, যদিও তার বাবা আগন্তুকের সঙ্গে কথা বলছিল বাড়ি-সংলগ্ন পেটিওতে দাঁড়িয়েই। বাইরে থেকে চোখ সরিয়ে মায়ের দিকে তাকায় পুত্র।]
পুত্র : বাবা একজনের সঙ্গে কথা বলছে।
মিসেস কাউন্সিলম্যান : কার সঙ্গে কথা বলছে?
পুত্র : আমি চিনি না। আগে কোনোদিন দেখিনি।
[হঠাৎ বাইরের দিকে ঝুঁকে এদিক-ওদিক তাকিয়ে কিছু একটা দেখতে পেয়ে পুত্র খুব উত্তেজিত ও আনন্দিত হয়ে ওঠে।]
পুত্র : ওয়াও! পেটিওতে এতো সুন্দর দুটো গোলাপের গাছ কে রাখলো? ওগুলো কে আনলো ওখানে মা?
মিসেস কাউন্সিলম্যান : গোলাপগাছ? কোথায়?
[বলতে বলতে খালি কফির কাপ হাতেই গৃহকর্ত্রী জানালার পাশে এসে দাঁড়ান। কাচের জানালার এপাশ থেকে তারা দুজনেই বাইরের দিকে তাকায়।
টবের ভেতর দুটো স্বাস্থ্যবতী গোলাপগাছ পাশাপাশি পেটিওর মেঝেতে দাঁড় করানো। একটিতে লাল গোলাপ, অন্যটিতে হলুদ। বেশ কয়েকটি করে তাজা ফুল ফুটে আছে দুটিতেই।
আরো আছে অজস্র ফুটন্ত কুঁড়ি।
মাতাপুত্র তাকিয়ে থাকে বাইরের দিকে।
তারা দেখে, পেটিওতে দাঁড়িয়ে হেসে হেসে কাউন্সিলম্যান কথা বলছে এক অপরিচিত অন্তঃসত্ত্বা 888sport promo codeর সঙ্গে, যে নিজেও হাসিভরা মুখে আগ্রহসহকারে কথা বলছে কাউন্সিলম্যানের সঙ্গে।
তারা আরো দেখে, দূরে, বাগানের বাইরে, হাইওয়ের পাশে একটা সাদা অথবা রুপালি রঙের গাড়ি পার্ক করে দাঁড়িয়ে আছে।
সন্ধ্যা হতে বেশি দেরি নেই। চারদিকে তখনো অস্তমিত সূর্যের লালিমার রেশ।]

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.