888sport cricket BPL rateের অর্জন কতটা সামাজিক, কতটা রাজনৈতিক

ভাষা প্রধানত সামাজিক-সাংস্কৃতিক উপাদান হওয়া সত্ত্বেও বিকশিত সমাজে এর রাজনৈতিক তাৎপর্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকে। যেমন ব্যক্তিজীবনে তেমনি সামাজিক ও জাতীয় জীবনে ভাষার প্রভাব নানামাত্রিক। শৈশবে প্রথম ভাষা হিসেবে অতি সহজে আয়ত্ত ও আত্মস্থ করা মাতৃভাষা মনে হয় স্বতঃসিদ্ধভাবে রক্তে মিশে যায় এবং অস্তিত্বের অংশ হয়ে ওঠে। হয়তো তাই ভাষার জাদু ব্যক্তিমনে একধরনের মুগ্ধতার আবেশ তৈরি করে রাখে। একমাত্র ব্যক্তিস্বার্থের প্রবল টানই শুধু কাউকে কাউকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে পারে। এগুলো সাধারণ নিয়মের বাইরে ব্যতিক্রমি ঘটনা হিসেবে বিবেচ্য।

ব্যক্তিবৃত্তের বাইরে সমষ্টিগত বিচারে দেখা যায় ভাষিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ভাষার প্রবল প্রভাব ঐক্যের টানে যে ভাষিক জাতীয়তাবোধের প্রকাশ ঘটায় তাতে স্বাতন্ত্র্যবাদী চরিত্রও উপস্থিত থাকে। দৈশিক হোক বা আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে হোক রাজনৈতিক বিচারে এ স্বতন্ত্র্যবাদী চেতনায় যে কিছু না কিছু সংকীর্ণতার পরিচয় নিহিত থাকে তা অস্বীকার করা কঠিন। উগ্র জাতীয়তাবাদ এজন্য অশুভ ফ্যাসিবাদী রাজনীতিতে পরিণত হতে পারে। কিন্তু বৃহত্তর উদার মূল্যবোধের প্রেক্ষাপটে ভাষিক জাতীয়তা জাতি তথা ঐ জনগোষ্ঠীর জন্য যুক্তিসঙ্গত পথে মঙ্গলই বয়ে আনে।

এমন রাজনৈতিক-রাষ্ট্রনৈতিক তাৎপর্য নিয়ে ভাষা কখনো কখনো পরিস্থিতির টানে সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকে সরাসরি রাজনৈতিক ভুবনে এসে পড়ে। অর্থাৎ আসতে বাধ্য হয়। এক্ষেত্রে ভাষার সর্বজনীন চরিত্র অর্থাৎ একদিকে জনসাধারণের মুখের ভাষা হিসেবে, অন্যদিকে শিক্ষিত শ্রেণির সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যম হিসেবে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে থাকে। ভাষার স্বার্থে, ভাষার প্রয়োজনে ভাষার আহ্বান মেনে নির্দিষ্ট ভাষিক জাতিগোষ্ঠীর অধিকাংশ সদস্যই তাই মতাদর্শগত ভিন্নতা ভুলে সাধারণ ‘ইস্যু’তে এক মঞ্চে একাট্টা হয়ে দাঁড়ায়। সমস্বরে ঐ ‘ইস্যু’তে সমর্থন জানায়, মাতৃভাষা এভাবেই ভাষিক জাতীয়তার প্রতীক হিসেবে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে বিশেষ প্রেরণা হয়ে উঠতে পারে।

উদাহরণ টানতে বেশি দূর যেতে হয় না। সাতচল্লিশের ১৪ আগস্ট প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ তৎকালীন পাকিস্তানি পূর্ববঙ্গের বাংলাভাষী মানুষ শুরু থেকেই মাতৃভাষা বাংলার রাষ্ট্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে লড়াইয়ে নামে। তাতে রক্ত ঝরে, আত্মদানেরও প্রয়োজন পড়ে (১৯৫২)। তেমনি ১৯৬০ সালে অসমিয়াকে একমাত্র রাজ্যভাষা হিসেবে গ্রহণ করার পরিপ্রেক্ষিতে অসমের কাছাড় জেলায় বাংলাকে রাজ্যের দ্বিতীয় রাজ্যভাষা হিসেবে গ্রহণের আন্দোলন এত জোরালো হয় যে তাতে এগারো জন বাঙালি তরুণ-তরুণী শহীদ হন (১৯ মে, ১৯৬১)। শেষ পর্যন্ত কাছাড়ে বাংলা সরকারি ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পায়। একটু দূরে একদা সিংহল দ্বীপে (বর্তমান শ্রীলংকা) পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক জোয়ারের টানে 888sport free betগরিষ্ঠ সিংহলীদের মাতৃভাষা ‘সিংহলি’ একমাত্র জাতীয় ভাষা (রাষ্ট্রভাষা) হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

প্রতিক্রিয়ায় দেশের এক তৃতীয়াংশ জন888sport free betর তামিলভাষী মানুষ আন্দোলন শুরু করে। উদ্দেশ্য তামিলকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। ভাষিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সে লড়াই শেষ পর্যন্ত আত্মশাসনের জাতীয় সংগ্রামে পরিণত হয়। অনেক রক্ত ঝরার মধ্য দিয়ে সে লড়াই এখনো চলছে। বিশ্বে অনুরূপ ভাষিক লড়াইয়ের উদাহরণ কম নয়।

দুই

একথা ঠিক যে পূর্ব পাকিস্তানে 888sport cricket BPL rateের আন্দোলনেরও (১৯৫২) মূল লক্ষ্য ছিল পাকিস্তানে বাংলাকে উর্দুর সঙ্গে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত আন্দোলনের করা। পরোক্ষ সাংস্কৃতিক দিক থাকলেও এর রাজনৈতিক চরিত্রই ছিল প্রধান। রাষ্ট্রভাষার সঙ্গে বাঙালি শিক্ষিত শ্রেণি, হবু শিক্ষিত শ্রেণীর আর্থসামাজিক উন্নতির ছিল গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বা যোগসূত্র। এ সম্পর্ক যেমন দেশের ধনী বা সচ্ছল কৃষকশ্রেণির সন্তানদের বেলায় সত্য তেমনি সাধারণভাবে বাঙালি জনগোষ্ঠীর জন্যও ছিল। সত্য। কারণ উর্দু শিক্ষিত- অশিক্ষিত বাঙালি জনসাধারণের নিকট ছিল অচেনা ভাষা।

সেজন্যই উর্দুকে পাকিস্তানের একক রাষ্ট্রভাষা হিসেবে গ্রহণ করার অশুভ উদ্যোগে শংকিত ও উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন সচেতন বাঙালি লেখক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতিমনস্ক মানুষ। তাঁরা এ আশংকার কথা প্রকাশ করতে থাকেন ১৯৪৬ সাল থেকেই যখন হবু পাকিস্তানের সম্ভাব্য রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুর কথা বারবার মুসলিম লীগ নেতাদের মুখে নানাভাবে উচ্চারিত হতে থাকে। এর প্রতিক্রিয়া ও প্রতিবাদ জানাতে থাকেন বাঙালি লেখক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবীকুল। বহু উদ্ধৃতির বদলে অধ্যাপক মুহম্মদ এনামুল হকের দীর্ঘ 888sport liveের একটি বাক্য উদ্ধারই আমার মনে হয় যথেষ্ট, যেখানে গোটা সমস্যাটা সুন্দরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর ভাষায় ‘উর্দু বাহিয়া আসিবে পূর্ব পাকিস্তানবাসীর মরণ রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয়, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক।’

পাক শাসকশ্রেণির অদূরদর্শী, একমুখী নীতির ফলে পাকিস্তানের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের মধ্যে বিশেষভাবে বাঙালি-অবাঙালি শ্রেণিবিশেষের মধ্যে যে অর্থনৈতিক বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠতে থাকে তা আমাদের শিক্ষিত মধ্যশ্রেণিকে অবিভক্ত বঙ্গে হিন্দু-মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যকার আর্থসামাজিক বৈষম্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। তাদের ভুলে যাওয়ার কথা নয় যে ঐ বৈষম্য দূর করার ও আত্মপ্রতিষ্ঠার টানে তখনকার শিক্ষিত মধ্যশ্রেণি এবং ছাত্র-যুবক সবাই (এমনকি প্রগতিবাদীরাও) চোখ বুজে স্বতন্ত্র রাষ্ট্র পাকিস্তানের পক্ষে একাট্টা সমর্থন যুগিয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তানে এসে কিছুসংখ্যক সুবিধাভোগী ছাড়া বাকি সবার জন্যই ‘কড়াই থেকে উনানে’ পড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার কারণে হতাশা হতে থাকে প্রবল। ঐ হতাশার প্রাথমিক প্রকাশ ভাষা আন্দোলন, বিশেষ করে 888sport cricket BPL rateে (১৯৫২)।

বাহান্নর সফল ভাষা আন্দোলনের পরও পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা বাংলার অধিকার তাৎক্ষণিকভাবে অর্জিত হয়নি। এজন্য আরো চার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। কিন্তু এ আন্দোরনের তৎক্ষণিক প্রভাব পড়ে 888sport live football-সংস্কৃতিচর্চায়। সেখানে পাকিস্তানি রক্ষণশীলতার দেয়ালগুলো এক এক করে ভেঙে পড়তে থাকে। সৃষ্টি হয় গণতান্ত্রিক, প্রগতিবাদী ধারার। তবে রাজনীতিতে এর প্রভাব হয়ে ওঠে অনেক জোরালো। যেমন দুবছরের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রাদেশিক নির্বাচনে স্বৈরাচারী মুসলিম লীগ সরকারের পতন ঘটে (যুক্তফ্রন্টের নিরঙ্কুশ বিজয়ে) তেমনি ধীরগতিতে হলেও যাত্রা শুরু হয়। অসাম্প্রদায়িক ভাষিক জাতীয়তাবোধের। বাহান্ন-উত্তর কয়েক বছর (ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া) অস্তিত্বহীন শহীদ মিনারকে কেন্দ্র করেই 888sport cricket BPL rateের (শহীদ দিবসের) উদযাপন বাঙালি শিক্ষিত শ্রেণিকে (বিশেষত তরুণদের) জাতীয়তাবাদী রাজনীতির চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে থাকে। শহীদ মিনার তৈরি হবার পর ঐ আনুষ্ঠানিকতা আরো জোর কদমে রাজনৈতিক শক্তি অর্জনের পথে এগিয়ে চলে। চলে ভাষিক জাতীয়তার বিকাশ ঘটাতে, যদিও তা মূলত পূর্বোক্ত শিক্ষিত শ্রেণিকে কেন্দ্র করে।

888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি ঘিরে প্রতিবছর যে আবেগের প্রকাশ ঘটে, পরিবেশের কারণে তা যতটা সাংস্কৃতিক তার চেয়ে অনেক বেশি রাজনৈতিক চরিত্র নিয়ে প্রকাশ পায়। এ দুটো ক্ষেত্রেই শিক্ষিত শ্রেণী, মধ্যশ্রেণিই মূল ঘটক, তাদের উচ্চাশাই প্রধান বিষয় হয়ে ওঠে। উচ্চাশা অবশ্যই তাদের আর্থসামাজিক আত্মপ্রতিষ্ঠার, যে আত্মপ্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখা শুরু অবিভক্ত বঙ্গে চল্লিশের দশক থেকে। পঞ্চাশের দশক থেকে সে স্বপ্ন নতুন পরিবেশে, নতুন চরিত্র নিয়ে 888sport cricket BPL rateের হাত ধরে ধীর গতিতে নানা রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে ষাটের দশকের নিশ্চিতিতে পৌঁছায়। পৌঁছায় ভাষিক জাতীয়তাবোধের লালসবুজ রাজপথ ধরে, নতুন প্রজন্মের আদর্শ বিশ্বাস সম্বল করে। ক্রমশ এর বিস্তার ঘটে গ্রাম-গ্রামান্তরে, 888sport free betগরিষ্ঠ জনমানসের উত্তেজনার স্তরে।

888sport cricket BPL rateের ছাত্র আন্দোলন গণআন্দোলনে পরিণত হয়ে ‘দুনিয়া কাঁপানো দশদিন’-এর মতো পৃথিবী কাঁপিয়ে তোলেনি সত্য, কিন্তু সাতদিনের ঐ জঙ্গি আন্দোলন গণআন্দোলনের প্রবলতা নিয়ে ঠিকই পাকিস্তানের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলো। সে কম্পন তাৎক্ষণিক হলেও তার প্রভাব সময় ও পরিবেশের ওপর ভর করে অগ্রসর হয়েছে। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের পথ ধরে, গণঅভ্যুত্থানের জোরালো টানে সে ধারাবাহিকতা একাত্তরের রণাঙ্গনে পৌঁছে স্বতন্ত্র বাসভূমির স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করে। আর তা সম্ভব হয় 888sport free betগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের ব্যাপক সমর্থন ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে। তখন জনমানসে বাঙালিয়ানার আবেগ অতি উচ্চ হলেও তা ছিল উপরতলীয়।

এর কারণ পাক শাসনশ্রেণির রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা ও বাঙালি বিরূপতার প্রকাশ এত স্পষ্ট ছিল যে তা বুঝে নিতে বাঙালি শিক্ষিত শ্রেণিতো বটেই, সাধারণ মানুষেরও কোনো অসুবিধা হয়নি। প্রতিক্রিয়ার আবেগ ক্রমশ এত ব্যাপক হয়ে ওঠে যে সে জোয়ারি টানে মানুষ অনেকটা অসচেতনভাবেই ভেসে চলে। ষাটের দশক এ দিক থেকে স্বতন্ত্র রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করে। স্বায়ত্তশাসনের ছয়দফা শেষ পর্যন্ত ঐ অসচেতন আবেগের টানে এক দফায় পরিণত হয়। সীমিত অধিকারের দাবি পূর্ণ স্বাধীনতার দাবিতে পৌঁছে তযায়। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক মঞ্চে এত দ্রুত পট পরিবর্তন ঘটে যে বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনৈতিক চেতনা যুক্তিগ্রাহ্য কারণেই জনমানসে প্রবল আবেগ সত্ত্বেও গভীর ও স্থায়ী প্রভাব ফেলতে এবং আকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন ঘটাতে পারেনি। এটা আমাদের জাতীয় দুর্ভাগ্য হিসেবে চিহ্নিত করতে হয়। এ তাৎক্ষণিকতায় ও রাজনৈতিক অসচেতনতায় সাতচল্লিশের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করার মতো, বিশেষ করে জনচেতনার ক্ষেত্রে। চল্লিশের দশক থেকে বাঙালি মুসলমান শিক্ষিত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি (সেই সঙ্গে স্বল্পসংখ্যক পাতি ভূস্বামী শ্রেণি) স্বতন্ত্রভাবে আর্থসামাজিক প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন অনুভব করে দ্বিজাতিতত্ত্বের যে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রচার করে সে বিভ্রান্তির টানে মুসলমান জনতা ভেসে গিয়েছিল। তারা শিক্ষিত মধ্যশ্রেণি ও উচ্চশ্রেণির স্বার্থ ধর্মীয় ঐক্যের কারণে নিজ শ্রেণিস্বার্থ বলে ধরে নেয়। প্রচারিত রাজনীতির তাত্ত্বিক জটিলতা বুঝে নেবার মতো রাজনৈতিক বোধ তাদের ছিল না। স্বপ্নভূমি পাকিস্তানের স্লোগানে বিমুগ্ধ জনতার মনে শ্রেণিচেতনা বিন্দুমাত্র ছাপ ফেলতে পারেনি, সম্প্রদায়চেতনা তা মুছে দিয়েছিল। প্রধানত জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের প্রতিশ্রুতি এবং তাদের অর্থনেতিক চাহিদা পূরণের স্বপ্নই তাদের স্বতন্ত্রভূমির পথে তাড়িত করেছে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির প্রকৃত চরিত্র অনুধাবন তাই সম্ভব হয়নি।

অনেকটা সাতচল্লিশের মতোই দু’দশক পরও জনসাধারণ শিক্ষিত শ্রেণি ও মধ্যশ্রেণির রাজনৈতিক প্রভাবে পরিচালিত হয়েছে। শেষোক্ত শ্রেণির রাজনৈতিক অর্থনৈতিক স্বার্থ নিজ শ্রেণিস্বার্থের সঙ্গে একাকার করে নিয়েছে। অবশ্য পরিস্থিতি তখন এমন আবেগের পাক্ষে ছিল। পাক শাসকশ্রেণির বাঙালিবিরোধী বৈষম্যমূলক নীতি এ অবস্থা সৃষ্টি করেছিল। এমন চিন্তা হয়তো তাই অযৌক্তিক নয় যে সাতচল্লিশের রাজনৈতিক উত্তরাধিকার পুরোপুরি বর্জন করতে না পারার কারণে একাত্তরের ভিন্নচরিত্রের অর্জনও মনে হয় যেন সাতচল্লিশের অপ্রাপ্তি পূরণ করতে এসেছে, আসেনি ভাষিক জাতিসত্তার সম্প্রদায়-নিরপেক্ষ স্বাধীন স্বরূপে। স্বাধীনতার প্রাপ্তিও তাই সাতচল্লিশের পথ ধরে শিক্ষিত, মধ্যবিত্ত ও মুৎসুদ্দি শ্রেণির জন্যই সত্য হয়ে উঠেছে, জাতিসত্তার 888sport free betগরিষ্ঠ জনশ্রেণির জন্য নয়।

888sport cricket BPL rateে একইভাবে তার সর্বজনীন চরিত্র সত্ত্বেও শিক্ষিত শ্রেণির বেঁধে  দেওয়া সীমাবদ্ধ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি। 888sport cricket BPL rateের স্লোগানে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে বাংলা প্রচলনের দাবি তাই বাস্তবায়িত হয়নি, হওয়ার কথাও না। মাতৃভাষার বদলে শিক্ষার বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিদেশী ভাষার প্রাধান্য জাতীয়তাবাদী চেতনার জন্য হাস্যকর বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষিত ও এলিট শ্রেণির অর্থনৈতিক স্বার্থের বাড়বাড়ন্ত জনস্বার্থকে পিছে ঠেলে দিয়েছে এবং এখনো সে ধারাই প্রবল।

888sport cricket BPL rate থেকে একাত্তরের অর্জন যেমন রাজনৈতিক তেমনি শ্রেণিবিশেষের অর্জনরূপে ক্রমশ উচ্চতা পেয়ে চলেছে। এ অর্জনের সমৃদ্ধি উর্ধ্বমুখী, অনুভূমিক নয়। সম্ভবত সেজন্যই এবং উল্লিখিত সীমাবদ্ধতার কারণে রাজনৈতিক অর্জন সত্ত্বেও ভাষিক জাতীয়তার শুদ্ধচেতনা সমাজমানসে শিকড় প্রসারিত করতে পারেনি, সামাজিক শক্তি হিসেবে দাঁড়াতে পারেনি। সম্প্রদায়-চেতনারও পুরোপুরি অবসান ঘটেনি। চল্লিশের দশক মনে হয় সম্প্রদায়-নির্বিশেষে বাংলাভাষাভাষী সমাজমানসে এখনো ছায়া ফেলে আছে। 888sport cricket BPL rate শতকের আধুনিকতার চেতনা ঐ ছায়া পুরোপুরি আলোকিত করে তুলতে পারেনি।

এই সীমাবদ্ধতা, একমুখী অর্জন ও সমৃদ্ধির দায় 888sport cricket BPL rateের নয়, এর দায় 888sport cricket BPL rateের অমৃতভোগী শিক্ষিত, এলিট ও বিত্তবান শ্রেণির, যারা সচেতনভাবে ঐ সীমাবদ্ধতাকে বাস্তবে পরিণত করেছে এবং ক্রমাগত এর বিস্তার ঘটিয়ে চলেছে। এরাই ভাষিক জাতীয়তাবোধের সর্বজনীন ও সামাজিক ভিত গড়ে উঠতে দেয়নি। দেয়নি নিজেদের রাজনৈতিক, অর্থনেতিক স্বার্থের কারণে। সামাজিক দুর্বলতার বিশেষ বিশেষ বিন্দু সুবিধাভোগী শ্রেণির ক্ষমতা বিন্যস্ত করার পক্ষে সর্বদাই কাজে লাগে, লাগে সমৃদ্ধির ভিত গড়তে। আমাদের সুবিধাবাদী শ্রেণিও ঐ পথ ধরেই চলেছে, তাদের যাত্রাই বা প্রচলিত ধারা থেকে ভিন্ন হবে কেন? 888sport cricket BPL rateে তাই প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঐ শ্রেণিবিশেষের কাছেই দায়বদ্ধ থেকে গেছে। সে অবস্থা থেকে 888sport cricket BPL rateেকে মুক্ত করার দায়িত্ব তরুণ সমাজকেই নিতে হবে। নিতে হবে 888sport cricket BPL rateের সর্বজনীন চরিত্র বাস্তবায়নের দায়িত্ব।