ছোটগল্পকে চিহ্নিত করা হয় 888sport live footballের সর্বকনিষ্ঠ 888sport live chatপ্রকরণ হিসেবে। বিশেষত, 888sport live chat বিপ্লবের পর, যন্ত্রযুগের পরাভব ও যন্ত্রণা, নগর ও নাগরিক চেতনা, ব্যক্তিমানুষের বিচ্ছিন্নতা ও নৈঃসঙ্গ্যবোধ, সমস্যা ও সংকট তীক্ষèভাবে দেখার প্রয়োজনেই ছোটগল্পের জন্ম। যদিও ব্যক্তিমানুষের একটি মাত্র সমস্যাকে কেন্দ্রবিন্দু করে একরৈখিক আলো ফেলে তার সংকটের স্বরূপকে উন্মোচিত করা আজকের সমাজবাস্তবতায় সত্যি কঠিন। কারণ, তার কোনো ‘ব্যথা’ই ছোট নয়, কোনো ‘দুঃখ’ই ক্ষুদ্র নয়, তার জীবনের কোনো ঘটনাই নিতান্ত ‘সহজ-সরল’ নয়। আধুনিক মানুষ পরস্পরের কাছে হয়ে উঠেছে জটিল, অস্পষ্ট, সংশয়ী ও দূরবর্তী। ছোটগল্পের সংজ্ঞার্থও বদলে গেছে। ফ্রাঁস কাফকা, আলবেয়ার কাম্যু, আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, এডগার অ্যালান পো, রবীন্দ্রনাথ থেকে শুরু করে বর্তমান পৃথিবীর খ্যাতিমান কথাকার গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, হোর্হে লুইস বোর্হেসের রচনায় ছোটগল্পের প্রথাগত ধারণার মুক্তি ঘটেছে। 888sport appsের সমাজ বিবর্তনের ধারায় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে ব্যক্তিমানুষের জীবন নিবিড়ভাবে জড়িত। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগ ও ১৯৫২ সালের ভাষা-আন্দোলন এ-ভূখ-ের জনজীবনকে প্রবলভাবে আলোড়িত করেছে। 888sport cricket BPL rateের অভিঘাত ও রক্তাক্ত অভিজ্ঞতা 888sport appsের গল্পকারদের সবচেয়ে বেশি জীবনমুখী করেছে, মানবিক বোধে উজ্জীবিত করেছে। স্বতঃস্ফূর্তভাবেই তাঁরা লিখেছেন রক্ত ও অশ্রুপাতের গল্প। যুগের বেদনা ও যন্ত্রণাকে ধারণ করেছে 888sport cricket BPL rateের ছোটগল্প।
888sport cricket BPL rateের 888sport live footballিক শস্য ‘ছোটগল্পে’ আমাদের এই যুগের দাবি কতটুকু পূরণ করেছে, কীভাবে ধারণ করেছে আমাদের রক্তাক্ত বেদনাকে, সেটা তুলে ধরাই বর্তমান আলোচনার উদ্দেশ্য। কল্লোলিত সমকালের অনেক অভিজ্ঞতার উত্তাপে দাঁড়িয়ে একজন 888sport live chatী নির্মাণ ও নির্ণয় করেন ত্রৈকালিক বিভূতি। সমকালীন জীবনাবেগকে অঙ্গীকার করে তাঁর রচনা নবতর মাত্রায় স্পন্দিত হয়। সঞ্চার করে নবতর সংবেদনা। লক্ষণীয়, 888sport cricket BPL rateের ছোটগল্পের অনেক গল্পকারও এই সংগ্রামে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শরিক হয়েছিলেন। এই আন্দোলনের উত্তাপ সঞ্চারিত হয়েছিল তাঁদের মননে। ফলে 888sport cricket BPL rateের ছোটগল্পে তাঁদের হৃদয়াবেগ দেশমাতৃকার প্রেমে প্রোজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
ভাষা-আন্দোলনের প্রত্যক্ষ স্বাক্ষর নিয়ে ১৯৫৩ সালে প্রকাশিত হয়েছিল হাসান হাফিজুর রহমান-সম্পাদিত 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি সংকলন। গল্প, 888sport app download apk, গান, ছড়া ও 888sport cricket BPL rateের 888sport sign up bonusচারণ গ্রন্থিত হয়েছিল এই সংকলনে। এই মহত্তম সংকলনে কয়েকটি 888sport app download apk অসাধারণ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। উত্তরকালে আমরা পেয়েছি
ভাষা-আন্দোলন নিয়ে লেখা মুনীর চৌধুরীর নাটক কবর, জহির রায়হানের 888sport alternative link আরেক ফাল্গুন, সেলিনা হোসেনের নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি এবং আরো কিছু ছোটগল্প। ভাষা-আন্দোলন নিয়ে লেখা গল্পের যদি হিসাব নেওয়া হয় তাহলে প্রথমেই মনে পড়বে, 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি সংকলনের কথা। এই সংকলনে পাঁচটি গল্প অন্তর্ভুক্ত হয়। এগুলো হচ্ছে : ‘মৌন নয়’ – শওকত ওসমান, ‘হাসি’ – সাইয়িদ আতীকুল্লাহ, ‘দৃষ্টি’ – আনিসুজ্জামান, ‘অগ্নিবাক’ – আতোয়ার রহমান, ‘বহ্নি’ – সিরাজুল ইসলাম।
পরবর্তীকালে বাংলা একাডেমি থেকে রশীদ হায়দার-সম্পাদিত 888sport cricket BPL rateের গল্প (১৯৮৪) নামে একটি সংকলন প্রকাশিত হয়। এই সংকলনে সিরাজুল ইসলামের গল্পটি ছাড়া 888sport cricket BPL rateের প্রথম সংকলনের বাকি চারটি গল্পসহ আরো আটটি গল্প অন্তর্ভুক্ত হয়। রশীদ হায়দার-সম্পাদিত 888sport cricket BPL rateের গল্পের অন্য গল্পগুলো হচ্ছে : ‘খরস্রোত’ – সরদার জয়েনউদ্দীন, ‘আমরা ফুল দিতে যাবো’ – মিরজা আবদুল হাই, ‘প্রথম বধ্যভূমি’ – রাবেয়া খাতুন, ‘বরকত যখন জানতো না সে শহীদ হবে’ – বশীর আল হেলাল, ‘ছেঁড়া তার’ – মাহমুদুল হক, ‘মীর আজিমের দুর্দিন’ – সেলিনা হোসেন, ‘উনিশ শ তিয়াত্তরের একটি সকাল’ – আহমদ বশীর, ‘চেতনার চোখ’ – আনিস চৌধুরী। এই পরি888sport free betনের বাইরেও হয়তো 888sport cricket BPL rateের কিছু উল্লেখযোগ্য গল্প রয়ে গেছে। তবে এর 888sport free bet খুব বেশি বলে মনে হয় না। আমরা আশা করব কেউ না কেউ 888sport cricket BPL rateভিত্তিক একটি পূর্ণাঙ্গ গল্প-সংকলন সম্পাদনার দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসবেন।
‘মৌন নয়’ শওকত ওসমানের গল্প। ভাষা-আন্দোলনে ছেলেহারা এক বৃদ্ধের শোকবিহ্বলতার গল্প। চলন্ত একটি বাস, বাসের যাত্রী ছাত্র, চাষি, কেরানি, ড্রাইভার, কন্ডাক্টর সবাই যেন মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। বাসের হেলপার, যে কিনা প্রতিদিন অসংখ্য স্থানের নাম উচ্চারণ করে ডাকত ভাড়া চেয়ে চেয়ে, দ্রুত হাতে ভাংতি পয়সা গুনে দিতে দিতে বাসের তালে হেলেদুলে ভারসাম্য রক্ষা করে পুরো বাসে আনাগোনা করত প্রচ- ভিড় ঠেলে, সেও নির্বিকার, ভাষাহীন। বিমূঢ় বিষাদে সবাই স্তব্ধ। বাস চলছে কিন্তু গন্তব্য জানা নেই। নির্বিকার যাত্রীদল বসে আছে, কারো কোনো উদ্বেগ নেই, তাড়াহুড়া নেই বাড়ি ফেরার। সমস্ত নীরবতাকে টুকরো টুকরো করে হঠাৎ সেই বৃদ্ধ আর্তনাদ করে উঠল –
‘চোখের দৃষ্টি অপলক, বৃদ্ধ এইবার ডুকরে আর্তনাদ করে উঠল, সঙ্গে সঙ্গে চুরমার হয়ে গেল নীরবতার জগদ্দল।’
– ‘কী দোষ করেছিল আমার ছেলে? ওরা কেন তাকে গুলি করে মারল? কী দোষ – কী দোষ করেছিল সে? উঃ’
কী দোষ করেছিল সে? এই জিজ্ঞাসাচিহ্ন ভাসছে তার চোখের ওপর। এখনই মুখ থুবড়ে পড়বে বৃদ্ধ বাসের মেঝেয়।
সমস্ত যাত্রী তখন নিজের জায়গা ছেড়ে বৃদ্ধের ওপর ঝুঁকে পড়েছে। চাষি দুজন তার কোমর জড়িয়ে ধরল, যেন পড়ে না যান। ড্রাইভারের এক হাতে স্টিয়ারিং, অন্য হাত সে সবার আগেই বৃদ্ধের দিকে এগিয়ে দিয়েছে।
জোড়া জোড়া জ্বলন্ত চোখের দৃষ্টি – স্ফুলিঙ্গ ঠিকরে পড়ে। দমকে দমকে সিংহ-গর্জন এখনই ফেটে পড়বে। সকলের গলার রগ কেঁপে কেঁপে উঠছে দমকে দমকে।
নির্বিকার গাড়ি শুধু এগোতে লাগল।
‘কী দোষ করেছিল আমার ছেলে?’
এই জিজ্ঞাসাচিহ্ন সবার চোখের সামনে তুলে ধরে বৃদ্ধ পড়ে যায় বাসের মেঝেতে। সঙ্গে সঙ্গে সমস্ত যাত্রী নিজ আসন ছেড়ে ঝুঁকে পড়ে বৃদ্ধের ওপর। ভাষা-আন্দোলনে শহীদ পিতার এই আর্তনাদ আমাদের বিমূঢ় স্তব্ধ করে দেয়।
এই গল্পটি লেখার সময়ে শওকত ওসমান চট্টগ্রামে থাকতেন। তাই চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে 888sport appর ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের 888sport sign up bonus নিয়ে তিনি গল্পটি লিখেছেন। সুদূর চট্টগ্রামেও যে সেদিন 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারির প্রভাব তাৎক্ষণিকভাবে সম্প্রসারিত হয়েছিল, এই গল্পটি তারই প্রমাণ। গল্পটি সম্পর্কে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম মন্তব্য করেন –
‘বায়ান্নর 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারির ঘটনায় পূর্ব বাংলার প্রতিক্রিয়ার রূপক বলা যেতে পারে গল্পটিকে। ঘটনার আকস্মিকতা ও অভাবনীয়তায় প্রথমে ক্ষণকালীন স্তব্ধতা ও পরে প্রচ- বিস্ফোরণ, বাসযাত্রীদের অভিব্যক্তিতে তারই প্রকাশ। শওকত ওসমান ‘মৌন নয়’ এই ছোটগল্পটিতে বায়ান্নর 888sport cricket BPL rateে-পরবর্তী পূর্ব বাংলার মানুষের মেজাজ বিশ্বস্ততার সঙ্গে তুলে ধরেছেন। বায়ান্নর 888sport cricket BPL rateের ঘটনা ঘটেছিল 888sport appয় অথচ তার তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় যেমন প্রথম সার্থক 888sport app download apk রচিত হয়েছিল চট্টগ্রামে (মাহবুব-উল-আলম চৌধুরীর ‘কাঁদতে আসিনি, ফাঁসির দাবি নিয়ে এসেছি’) তেমনি প্রথম সার্থক গল্পও রচিত হয়েছিল চট্টগ্রামে, শওকত ওসমানের ‘মৌন নয়’, (রফিকুল ইসলাম, ভাষা-আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের 888sport live football, ১৯৯৩, পৃ ১৫)।
‘খরস্রোত’ সরদার জয়েনউদ্দীনের গল্প। ১৯৫৩ সালে লেখা এ-গল্পটি শোকের বিশাল বেদনা ধরে রেখেছে। এ হচ্ছে বরকতের মায়ের কান্না। ১৯৫২ সালের এক সকালে বরকত তার মাকে বলেছিল : মা তোমাকে মা বলে যে ডাকবো তা নাকি আর পারবো, না। বলতো মা আমরা কি তা মেনে নিতে পারি? আজ তাই আমরা তার জন্য শান্তিযুদ্ধ করবো। আমরা ধর্মঘট করবো। তুমি আশীর্বাদ করো। মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে আনন্দে সে বেরিয়ে যায়, কিন্তু আর ফিরে আসেনি। বরকতের মা এসব বলে বলে কাঁদে, সারা বছর কাঁদে।
বস্তিবাসী বরকতের মায়ের করুণ কান্নার সুর ডানাভাঙা পাখির মতো আকাশে-বাতাসে ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে চৌচির হয়ে ছড়িয়ে পড়ে দেশময়। তারই পাশে কিয়দ্দূরে প্রাসাদতুল্য বাড়ি। অবসরপ্রাপ্ত এককালের বাঘা ডিস্ট্রিক ম্যাজিস্ট্রেট খান বাহাদুর মির্জা গোলাম হাফিজের পামরোজ হাউস। ত্রিশ বছরের অর্জিত আভিজাত্য সে কিছুতেই খোয়াতে চায় না। তারই ছেলে মুনীর। মির্জার ইচ্ছা এমএ পাশ করা ছেলে, সিভিলিয়ানের ঘরে জন্ম, কোথায় বাঘের বাচ্চার মতো চলাফেরা করবে, তা না করে মুনীর রাতদিন চাষাভুষা, মুচি, মেথর যতসব ছোটলোকের জাত নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে। 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি পালন করার জন্য সভা, মিছিল-মিটিং করে বেড়ায়। এমনি করে ১৯৫৩ সালের 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি ঘনিয়ে আসে। 888sport cricket BPL rateের পূর্বরাতেই মুনীরকে পুলিশ ধরে নিয়ে যায়। পরদিনই 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি, মিছিল নিয়ে এগিয়ে আসে মুনীরের সহযোগীরা কিন্তু মুনীরকে তো ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। প্রভাতফেরিতে যাওয়া তার হয় না। যে খান সাহেব একসময় মুনীরের রাজনীতির বিপক্ষে ছিলেন, শেষ পর্যন্ত তিনিও মিছিলে অংশ নেন। অশ্রুভরা বেদনার্ত কণ্ঠে খান সাহেব বলেন, – ‘মুনীরকে যে কাল পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে, আমি গেলে চলবে বাবারা।’ মিছিল এগিয়ে যায় শহীদ মিনারের দিকে। সরদার জয়েনউদ্দীনের এই গল্পে বায়ান্নর পূর্ববর্তী সময়েও যে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী আমাদের চাপের মধ্যে রেখেছিল, তারই প্রমাণ পাওয়া যায়।
মিরজা আবদুল হাইয়ের গল্প ‘আমরা ফুল দিতে যাবো’-তে বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলনকে ভিন্ন একটি দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার প্রয়াস রয়েছে। পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করলেও সিভিলিয়ানদের মধ্যে অনেকে স্বদেশপ্রেমী হওয়ার কারণে শাসকগোষ্ঠীর রুদ্রদৃষ্টিতে পড়েছিলেন। গল্পের নায়ক মুরাদ ভাগ্যাহত ম্যাজিস্ট্রেট আফসারউদ্দিন সাহেবের পুত্র। আফসারউদ্দিন সাহেব স্বদেশের পক্ষাবলম্বন করায় চাকরি হারান এবং হার্টফেল করে মারা যান। হাওলাদার সাহেবই (যিনি শাসকগোষ্ঠীর মন রক্ষা করে চলতেন) মূলত আফসারউদ্দিনের মৃত্যুর জন্য দায়ী। শেষ বয়সে প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য তিনি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেন। 888sport cricket BPL rateের বিশেষ দৈনিকে সে-বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয় –
‘বায়ান্ন ইংরেজির অক্টোবর মাসে…।
থানার সার্কেল অফিসার আফসারউদ্দিন হার্টফেল করে মারা যান। তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রীও একপুত্র রেখে স্বামীর অনুগামী হন। সেই পুত্র যদি বেঁচে থাকে তবে তাকে নিম্ন ঠিকানায় অতি অবশ্য সাক্ষাৎ করতে সনির্বন্ধ অনুরোধ জানানো হচ্ছে। কফিলউদ্দিন হাওলাদার … নং ধানম-ি।’
এই বিজ্ঞপ্তি হাতে পেয়ে মুরাদ সেখানে যায় এবং দেখে প্রাসাদতুল্য বাড়িতে একটি খাটে শুয়ে আছে বৃদ্ধ। সেবায় নিয়োজিত নার্সকে তাড়িয়ে দিয়ে তিনি হাত ইশারায় ডাকলেন মুরাদকে। হাঁফাতে হাঁফাতে বললেন, ‘আঃ আমি লাফিয়ে লাফিয়ে উপরে উঠেছি। বাড়ির পর বাড়ি করেছি। আর তোমার বাবা? সরকার কয়েক মাসের মধ্যেই তাকে কঠিন শাস্তি দিলেন। সেই চিঠি পেয়েই তাঁর দুর্বল হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেল। আই অ্যাম এ মার্ডারার। আমি তোমার বাপকে হত্যা করেছি। কিল মি অর ফর গিভ মি। ফর গিভ? ক্যান ইউ? নো, নো, ইউ ক্যানট। পিতার হত্যাকারীকে কেউ ক্ষমা করতে পারে? পারে না। এই বলে চিৎকার করতে লাগলেন। শুনে মুরাদও অচেতন হয়ে পড়ে।’
‘হাসি’ সাইয়িদ আতীকুল্লাহর এক অসাধারণ গল্প। আটচল্লিশ থেকে বায়ান্ন পর্যন্ত সময়টা ছিল বড় বেশি বিলোড়িত। বাঙালি জাতির অস্তিত্ব-অনস্তিত্বের লড়াইয়ে ছাত্রসমাজই ছিল অগ্রগামী। গল্পের নায়ক আবু একজন ইউনিভার্সিটির ছাত্র, সে ভাষার জন্য মিটিং করে, মিছিলে যায়, রাত জেগে পোস্টার লেখে। থাকে খালার বাসায়। নীহার খালার সঙ্গে তার মায়ের মতো সম্পর্ক। বায়ান্ন সালের 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি সকালে ঘুম থেকে উঠে নীহার খালা দেখেন আবু তখনো ঘুমে। রাতজাগা আর দিনভর ছোটাছুটিতে তার ক্লান্ত দেহ অচেতন। নীহার খালা আস্তে আস্তে কাছে বসে, মাথায় স্নেহের হাত বুলান। জেগে ওঠে আবু। নাস্তা খেতে বসে আগের দিনের অভিমানের কথা বলে হাসে দুজন। আজ আবুর প্রচুর কাজ, ১৪৪ ধারা ভাঙতে হবে। তাই সে গোসল সেরে খালার কাছ থেকে একটি টাকা নিয়ে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় বলে – ‘খালা এখন তো আর হাসতে পারলাম না। বিকালে এসে বাকিটা হাসব।’
ইউনিভার্সিটির সামনে অনেক পুলিশের সমাগম হয়েছে, তুমুল বাগ্বিত-ার শেষে দশজন-দশজন করে চুয়াল্লিশ ধারা ভাঙার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হলো। হাজার কণ্ঠের ঘন ঘন সেøাগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠল। একসময়ে ঠেলাঠেলি-মারামারি শুরু হয়ে গেল।
কড়ি নিয়ে নাড়াচাড়া করার মতো মৃদু কটকট আওয়াজ ওঠে কোথা থেকে। একসঙ্গে যেন কতগুলো বুদ্বুদ ফাটছে নিকটে
কোথাও। শেষ গ্রুপের দুজন ছাত্র হঠাৎ মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে যায়। অব্যর্থ বুলেটে একজনের গোটা মাথাটাই উড়ে গেছে। চারদিকে হুটোপুটি পড়ে যায়, পুলিশ চঞ্চল হয়ে মাথার টুপি ঠিক করে। আবার ট্রিগার টিপে। লাঠি পড়ে। টিয়ারগ্যাস ফাটে।
মুখ থুবড়ে পড়ে যায় আরো তিনজন। ব্যাপারটা এতক্ষণে কারো আর বুঝতে বাকি থাকে না। উত্তেজিত জনতা সেøাগান দিয়ে ছত্রভঙ্গ হতে থাকে। নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটতে ছুটতে তারা গিয়ে থামে মধুর স্টলে, ইউনিভার্সিটি বিল্ডিংয়ে, পুুকুরঘাটের শানবাঁধানো সিঁড়ির তলায়, আমগাছের আড়ালে। গুলি চালানো সত্ত্বেও এখানে-সেখানে থেকে বিচ্ছিন্ন আওয়াজ ওঠে।
: রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।
: নাজিম-নুরুলের ফাঁসি চাই।
: খুনি-জল্লাদের বিচার চাই, দমননীতি চলবে না।
গুলিবিদ্ধ আহতদের রক্তাক্ত দেহ নিয়ে রিকশাওয়ালারা ছুটে যায় হাসপাতালের দিকে, কারো আদেশ-নির্দেশের অপেক্ষায় থাকে না। রাইফেল হাতে লোহার টুপি পরা পুলিশের দল ঢুকে পড়ে ইউনিভার্সিটি মাঠে। আবার লাঠি চলে, টিয়ারগ্যাস ফাটে। ধোঁয়া ওঠে। গুলি চলে।
শেষবারের মতো গুলিবিদ্ধ একজনের কণ্ঠনালি চিড়ে সেøাগান ওঠে –
: রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।
কিন্তু ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে সে নিহত হয়। হাসি দেখা তার আর হয় না। আবুর লাশ যখন কয়েকজন ধরাধরি করে বাসায় নামায়, ডুকরে কেঁদে ওঠেন নীহার খালা। লাশ বুকে চেপে ধরে বলেন – ‘আবু, আবু, আবু, কথা বলিস না কেন? তুই তো আমার হাসি দেখবি বলে বেরিয়েছিলি।’ তারপর পুলিশ আসে, নীহার খালার বুক থেকে কেড়ে নিয়ে যায় আবুর লাশ। লাশ গুম করার জন্য পুলিশ যখন আবুর লাশ গাড়িতে ওঠায়, তখন হঠাৎ খালা হেসে ওঠেন প্রচ- অট্টহাসি। মধ্যরাতের ধ্বংসোন্মত্ত প্রেতিনির অশরীরী হাসির ভয়ংকর, অসহ্য সুন্দর, ‘হাঃ হাঃ হাঃ হাঃ’ সেই থেকে নীহার খালা হেসে চলেছেন। যে-হাসি আর কোনোদিন থামবে না।
সাইয়িদ আতীকুল্লাহর এ-গল্পে লাশ গুম করা বায়ান্নর নাম না-জানা শহীদের মাতৃরূপী খালার হাসি তীব্র অভিঘাত হানে আমাদের চৈতন্যে। এ-হাসি আমাদের রক্তাক্ত ইতিহাসের পাতায় কেবল বিষাদ ছড়ায়।
‘প্রথম বধ্যভূমি’ রাবেয়া খাতুনের গল্প, ‘৪৮ থেকে ৫২’ পর্যন্ত সময়কে ধারণ করে আছে। শহীদ মিনার তৈরির প্রথম পদক্ষেপের ঘটনা আলোচ্য গল্পকে ভিন্ন একটি মাত্রা দিয়েছে। সাবের সাহেব দেশবিভাগের পর পশ্চিমবঙ্গ থেকে পরিবার নিয়ে চলে আসেন 888sport appয়। সাবের সাহেবের একমাত্র ছেলে শাহেদ বায়ান্নর 888sport cricket BPL rateে গুলিতে নিহত হয়, কিন্তু তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায় না। সাবের সাহেব ‘গলির মুখে এসে দেখেন মানুষের ভিড়। ভীত, আতংকিত। মুখে মুখে কিছু সংলাপ – আগ্নেয়াস্ত্র, আর্তনাদ, ধোঁয়া, গর্জন, সবকিছুর শেষে জায়গাটাকে মনে হচ্ছে বিরানভূমি।’
চাচাজান?
কে?
চমকে তাকালেন (সাবের সাহেব) শাহেদের বন্ধু আলমগীর। গলার কাছটায় দলাপাকানো। ভাষা উঠতে চাইছে না। নিজের ওপর অসম্ভব জোর খাটিয়ে বলল : …লাশ পেলে?
জি না। ওরা শুধু প্রাণে মারেনি। দেহটাকেও কেড়ে নিয়ে গেছে। শাহেদ শেষনিঃশ্বাস নিয়েছিল আমারই কোলে। হঠাৎ শুরু হলো টিয়ারগ্যাসের ঝড়। তার ভেতরে… ’ সাবের সাহেব পুত্রের লাশ খুঁজতে এসে দেখেন – ছাত্ররা ইটের টুকরো দিয়ে কি যেন তৈরি করছে। শহীদদের 888sport sign up bonusকে ধরে রাখার জন্য কিন্তু বারবার পুলিশ এসে সেটা ভেঙে দিচ্ছে। ছাত্ররা আবার তৈরি করছে সেই 888sport sign up bonusস্তম্ভ। সাবের সাহেব রাত জেগে যুবকদের এই ভাঙাগড়া দেখছেন।
আতোয়ার রহমানের ‘অগ্নিবাক’ প্রায় একই প্লটের গল্প। মা, মনি, বাবা, মিনা, রেবী, তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে 888sport appয় চলে আসে। এখানে এসে স্থিতি হতে না হতেই শুরু হয় ভাষা-আন্দোলন। মনি সে-আন্দোলনে যোগ দেয়। 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে মনি শহীদ হয়।
আনিসুজ্জামানের গল্প ‘দৃষ্টি’। বুড়ো কেরানি সাদত সাহেবের ছেলে আসাদ একজন সাধারণ চাকরিজীবী। সেও 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে মারা যায়।
কে যেন কড়া নাড়ে। সালেহাকে ডেকে দেখতে বলেন তিনি। দরজা খোলার আওয়াজ পান। সালেহা বলছে, কী খবর হালিমভাই? উত্তরটা আর শুনতে পান না তিনি। হালিম ছেলেটা আসাদের সঙ্গে চাকরি করে, কাছেই থাকে। কী ব্যাপার।
কয়েকজনের পদশব্দ শুনতে পাওয়া যায় পাশের ঘরে। হাসিনা আর সালেহা ডুকরে কেঁদে ওঠে। সাদত সাহেব বলেন, ‘কি হলো?’ সালেহা-হাসিনা, তক্তপোশ থেকে পা নামিয়ে চটি পায়ে দেন। চশমা নেই, এগোতে পারছেন না। সালেহা এ-ঘরে আসে। কাঁদতে কাঁদতে বলে ‘ভাইয়ার গুলি লেগেছে – মারা গেছে’। এবার থেমে থেমে হালিমের গলা শোনা যায় : ‘অফিস স্ট্রাইক হয়ে প্রসেশন বেরিয়েছিল – পুলিশ গুলি চালায়। সঙ্গে সঙ্গে মারা যায় ও হাসপাতালে দিলে লাশ যদি না পাওয়া যায়, সেই ভেবে ডাক্তারখানায় নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে নিয়ে এসেছি।’
সালেহা সাদত সাহেবকে ধরে এ-ঘরে নিয়ে আসে। সে কাঁদছে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে। হাসিনা আছড়ে পড়েছে মৃতদেহের ওপর।
তার প্রথম সন্তান তখন বউয়ের পেটে। বুড়ো সাদত কিছুতেই তার পুরনো চশমা খুঁজে পান না। চশমা ছাড়া যে তিনি কিছুই দেখতে পান না। তিনি অন্ধদৃষ্টিতে আসাদের না হওয়া ছেলেটার ছবি মনে মনে আঁকতে থাকেন এবং এই অন্ধদৃষ্টিতে আগন্তুক সন্তানের ছবি আঁকার মধ্যে একটি প্রতীকী ব্যঞ্জনা আছে।
‘বরকত যখন জানতো না সে শহীদ হবে’ বশীর আল হেলালের গল্প। বরকতের জন্ম – গ্রাম বাবলা। রাঢ়বঙ্গের ছোট্ট একটি গ্রাম। দেশবিভাগের পর অনেক মুসলমান পরিবারকে চলে আসতে হয়েছে পূর্ববঙ্গে। এ-গল্পে বশীর আল হেলালের অসাধারণ বর্ণনাশক্তির পরিচয় পাওয়া যায়। শহীদ বরকতের সঙ্গে বশীর আল হেলালের ব্যক্তিগত 888sport sign up bonus জড়িত থাকায় গল্পটি হৃদয়স্পর্শী আবহ সৃষ্টি করে।
‘বরকতের নাম যে বরকত আমি জেনেছিলাম সম্ভবত সে শহীদ হওয়ার পরে, তার আগে জানতাম না। তার ডাকনাম ছিল – ‘আবাই’। ওই নামেই জানতাম। এই গল্প লিখতে বসে আমার চোখে পানি আসছে। সে ‘আবাই’ ভাষা-আন্দোলনে শহীদ হয়েছে বলে নয়। ইতিহাসের চাকা বসে গেল এঁটেল মাটির কাদায়।… ওর জন্ম ১৯২৮ সালে, আমার ১৯৩৬-এ।’
বর্ণনার গুণে এই গল্পটি হয়ে উঠেছে 888sport cricket BPL rateের এক সজীব অ্যালবাম। এ-গল্পটি পড়ে হাসান হাফিজুর রহমানের সেই বিখ্যাত পঙ্ক্তির কথা মনে পড়ছে :
‘আবুল বরকত নেই; সেই অস্বাভাবিক বেড়ে ওঠা
বিশাল শরীর বালক, মধুর ক্যান্টিনের ছাদ ছুঁয়ে হাঁটতো যে
তাকে ডেকো না’
‘ছেঁড়া তার’ মাহমুদুল হকের গল্প। মকবুল আর নজরুল দুই বন্ধু। দুজনেই 888sport cricket BPL rateের আন্দোলনের সময় পোস্টার লাগাতে গিয়ে সরকারের পোষা গুন্ডাদের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে নজরুল চিরতরে খোঁড়া হয়ে যায়। যার গ্লানি নিয়ে কাটাতে হয় সারাজীবন। অনেক দিন পরে অফিস-ফেরত মকবুলের সঙ্গে তার দেখা হয়। আর তখনই নজরুল তার বর্তমান গ্লানিময় জীবনের বর্ণনা দেয়।
সেলিনা হোসেনের গল্প ‘মীর আজিমের দুর্দিন’। ১৯৮০ সালে লেখা এই গল্পে সেলিনা হোসেন 888sport cricket BPL rateকে একটু পেছন ফিরে দেখেছেন। বায়ান্নর কিংবা স্বাধীনতা-উত্তর জাতীয় চেতনা আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে আমরা সঠিকভাবে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছি। ফলত আজকের প্রজন্মের কাছে স্বদেশপ্রেম আর আত্মত্যাগ যেন বৃথা। গল্পের নায়ক মীর আজিম ষাট বছরের রিটায়ার মানুষ। তার চাকরিজীবনের প্রথমে ঘটেছিল ভাষা-আন্দোলন। সেই আন্দোলনে সে মিছিলে গিয়েছিল এবং তারই সামনে গুলিতে নিহত হয় সালাম, সেই 888sport sign up bonus ও সেøাগান তার মনে তীব্রতর হয় অবসর জীবনে – যখন সে স্ত্রী-হারা একাকী জীবনযাপন করে। মীর দুঃখ পায় যখন তার ছেলে মাসুদ অনেক টাকা রোজগারের জন্য বিদেশে যাওয়ার কথা বলে। সেই 888sport sign up bonus ভারাতুর অবসরজীবন তার কাছে হয়ে ওঠে চরম দুর্দিনের। ষাট বছরের মীর আবার শহীদ মিনারে যায় ফুল দিতে এবং শহীদ মিনারের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে অলক্ষে সে সেøাগান দিয়ে ওঠে – ‘রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই’। গ্লানিতে কেঁদে ওঠে মীর আজিম।
‘উনিশ শ তিয়াত্তরের একটি সকাল’ আহমদ বশীরের গল্প। 888sport cricket BPL rateের চেতনায় উজ্জীবিত যুবক জামিল, শামসু, শফিক, কামাল, কানিজ ফাতেমা এরা সবাই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু যে-চেতনা নিয়ে তারা যুদ্ধে গিয়েছিল, স্বাধীনতার পর সেই আশা ভেঙে যায়। স্বাধীনতার পরেও যখন মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হয়নি, অর্থনৈতিক মুক্তি আসেনি, তখন তারা নতুন পার্টি গড়ার উদ্যোগ নেয়। সিদ্ধান্ত হয় 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারির দিন শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে এসে পার্টির নাম ঘোষণা হবে। এই উদ্দেশ্যে ব্যানার, পোস্টার, সংকলন সবই তৈরি করে। যথারীতি শহীদ মিনারে যায় তারা এবং যখন পার্টির ঘোষণা করতে মঞ্চে ওঠে তখনই প্রতিপক্ষের দ্বারা আক্রান্ত হয়। দৌড়াতে থাকে প্রাণপণে জামিল। এ যেন আমাদের প্রত্যাশিত স্বপ্নগুলো আক্রান্ত হয়ে দৌড়াচ্ছে।
আনিস চৌধুরীর গল্প ‘চেতনার চোখ’ – এতে অন্য একটি ব্যঞ্জনা আছে। মানুষের সত্যিকার আশা-আকাক্সক্ষার চিত্র তুলে ধরবে বলে শাহেদ একদিন মাস্টারি ছেড়ে সাংবাদিকতায় যোগ দেয়। গভীর নিষ্ঠার সঙ্গে আত্মস্থ করে সাংবাদিকতার সমস্ত গিরিপথ। স্টাফ রিপোর্টার হয়ে সে যখন প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা দিয়ে রিপোর্ট লেখে, তখন তা সেন্সর করা হয়। এমনি বায়ান্নর 888sport cricket BPL rateের প্রত্যক্ষ রিপোর্ট যখন সে লেখে সেটাও কেটেছেঁটে ছাপা হয়। প্রয়োজনীয় অংশ বাদ পড়ে যায়। তখন সে ইস্তফা দিয়ে চলে যায় পুরনো পেশায় মাস্টারিতে। শেষ পর্যন্ত শাহেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় মারা যায় চরফ্যাশনে।
মিন্নাত আলীর গল্প ‘রুম বদলের ইতিকথা’ প্রথমে প্রকাশিত ফজলুল হক হল বার্ষিকী ১৯৫৩-৫৪ 888sport free betয়। ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত এই গল্প মিন্নাত আলীর যাদুঘর (১৯৬৯) গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত। এ-গল্পে জামিল নামের এক কলেজপড়–য়া ছাত্রের সঙ্গে গল্পকথকের দেখা হয় হলের বারান্দায়। জামিল জানতে চায়, হলের একশ তিন নম্বর সিঙ্গেল সিটের রুমে কে থাকে? কথক জানায়, আমিই থাকি। পরদিন বিকেলে জামিল এসে কথককে নিয়ে যায় একটি বাসায়। কিছুক্ষণ পর মাঝবয়সী এক মহিলা পর্দা সরিয়ে রুমে ঢোকেন। তার সঙ্গে আলাপে জানা যায়, মহিলার ছেলে আনিস এমএসসি পড়ত এবং থাকত একশ তিন নম্বর রুমে।
ভাষা-আন্দোলনে গুলিতে সে মারা যায়।
‘ছাত্রদের মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে যখন সেক্রেটারিয়েট ভবনের দিকে অগ্রসর হতে থাকে, তখন পুলিশ বেপরোয়া গুলি চালায়। আর সে গুলিতেই আনিস প্রাণ হারায় পরের দিন হাসপাতালে। আম্মা-আব্বা তখন মোমেনশাহী শহরে – আব্বা বেসরকারি স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক। খবর পেয়ে আনিসের আম্মা-আব্বা ছেলেমেয়ে ছুটে এলেন মোমেনশাহী থেকে। তখন আনিসের সংজ্ঞা লোপ পায়নি। তাঁরা আনিসের বেডটার পাশে গিয়ে দাঁড়ালেন। হু, হু করে কাঁদতে লাগল সবাই। কান্নার রোল পড়ে গেল হাসপাতালটাতে।
আনিস যেন কী বলতে চেষ্টা করল। ওর ঠোঁট দুটো কাঁপল কেবল। কোনো ভাষা বেরোলো না। হাতের ইশারায় দেখাল ওর বুলেটের ক্ষতস্থান : কোমরের ওপর পিঠটা রক্তে ভেসে যাচ্ছে।’
বাসার দেয়ালে ভাষা-আন্দোলনে নিহত আনিসের একটি বড় ছবি টানানো। জামিলদের বাসা থেকে বের হয়ে আসার পর কথক কিছুতেই ঘুমুতে পারে না। তার মনে হতে থাকে, একদিন এই রুমে আনিস ছিল, এ-রুমের সবকিছু আনিসের ব্যবহৃত ছিল। তারপর থেকে কথক জামিলদের বাসায় নিয়মিত আসা-যাওয়া করতে থাকে এবং নাজমা ও জামিল তাকে ভাইয়া বলে ডাকতে থাকে। পরীক্ষার অজুহাতে কিছুদিন জামিলদের বাসায় যাওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু মন থেকে সে আনিসের কথা কিছুতেই ভুলতে পারে না। একরাতে স্বপ্নের মধ্যেও সে আনিসকে দেখতে পায়। শেষ পর্যন্ত কথককে একশ তিন নম্বর রুমটি বদল করতে হয়। মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে আনিস নিহত হয়েছে। ‘এটি কোনো একটি সাধারণ ঘটনা নয়। সমগ্র জাতির চেতনা যে-বিষয়কে কেন্দ্র করে একদিন জাগ্রত হয়েছিল সে-বিষয়কেই এ-গল্পে উপজীব্য করা হয়েছে। রাষ্ট্রভাষার আন্দোলনে সমসাময়িক ছাত্রসমাজ কীভাবে কতটা সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিল তার প্রমাণ এ-গল্পটিতে পাওয়া যায়। আনিস 888sport apkের ছাত্র ছিল। কিন্তু মাতৃভাষার প্রশ্নে তার বড়ো পরিচয় ছিল সে একজন সচেতন ছাত্র। বায়ান্ন সালের পরবর্তী সময়েও ভাষা-আন্দোলন এদেশের মানুষের মনে কত সজীব ছিল তা আমরা এ-গল্পে দেখতে পাই।’ (মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন, 888sport appsের ছোটগল্প : জীবন ও সমাজ, বাংলা একাডেমি, 888sport app, পৃ ১৪১)।
নূরউল আলমের ‘একালের রূপকথা’ গল্পের পটভূমিও বায়ান্নর 888sport cricket BPL rateের ফেব্রুয়ারি। এ-গল্পের হামিদ সাহেব উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। তার ছেলে কাসেম পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে। পিতার নিষেধকে উপেক্ষা করে কাসেম নিজের বিবেকের তাড়নায় যোগ দেয় ভাষা-আন্দোলনে। হামিদ সাহেব ছেলের অবাধ্যতায় ক্ষুব্ধ হয়ে অফিস থেকে বেরিয়ে গেলেন। যেতে যেতে তিনি দেখলেন রাস্তায় রাস্তায় পুলিশ, সশস্ত্র প্রহরায় দাঁড়িয়ে আছে। এর মধ্যে ছাত্রদের সেøাগান ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই’।
দুপুরে বাসার দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে চমকে ওঠেন কাসেমের মা। দরজা খুলতেই দেখেন, দুটি ছেলে কাসেমকে ধরাধরি করে ভেতর ঢুকল। ছেলের অবস্থা দেখে মা ডুকরে কেঁদে উঠলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে কাসেমের মা প্রশ্ন করেন, কী অপরাধ ছিল তার ছেলের? একটি ছেলে জবাবে বলল – ‘আমাদের জীবনে আজকের দিনে অনেক, অ-নে-ক প্রশ্নেরও জবাব নেই। শহীদ 888sport sign up bonus দিবস পালন করছিলাম। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘেরার ভেতর আমগাছের তলায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে শোকসভা করছিলাম। কোনো রকমের হিংসাত্মক সেøাগানও আমরা দিইনি। বেলা আন্দাজ বারোটা নাগাদ অতর্কিতে পুলিশ ভেতরে ঢুকে আমাদের ওপর নিষ্ঠুরভাবে লাঠিচার্জ করে। ছাত্রছাত্রীদের বেদম প্রহার করে। সবচেয়ে কলঙ্কের কথা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন বিল্ডিংয়ে গিয়ে, প্রফেসরদের রুমের ভেতরে ঢুকে, মেয়েদের কমন রুমে ঢুকে ছাত্রছাত্রীদের ধরে নিয়ে গেছে। তাদের প্রহার করেছে, আর যত পেরেছে গাড়ি ভর্তি করে থানায় চালান দিয়েছে। দুটি মেয়ে আর একটি ছেলের অবস্থা খুবই গুরুতর।’
গল্পের এ-বর্ণনা থেকে বোঝা যায়, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে গিয়ে এদেশের ছাত্ররা কতটা জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেছে। দিতে হয়েছে কত রক্ত। উত্তর-প্রজন্ম কি ভুলে যাবে এই আত্মত্যাগের কথা?
‘সিঁড়ি’ গল্পে সাঈদ-উর রহমান তুলে ধরেছেন গ্রামের এক বৃদ্ধ করিমের কথা। তার ছেলে সিরাজ ভাষা-আন্দোলনে বন্দি হয়ে জেলে আছে। বৃদ্ধ করিম ছেলেকে দেখতে নৌকা করে 888sport appয় যাবেন। কারণ, ছেলে সিরাজের আজ মুক্তি পাওয়ার কথা; কিন্তু বউমা মরিয়মের ভাত রান্না হতে দেরি হচ্ছে। চুলার ওপর ভাত, ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন মরিয়মের চেষ্টার ত্রুটি নেই। সেও চায় শ্বশুর গরম ভাত খেয়ে যাত্রা করুক। গ্রামীণ সেই দৃশ্যগল্প উঠে আসে এভাবে –
‘উঠোনের আম গাছটার তলায় দাঁড়িয়ে করিম সাহেব খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন রান্নায় ব্যস্ত মরিয়মের দিকে। ঘেমে গেছে মেয়েটা। আগুনের আঁচে ফর্সা মুখটা রাঙা হয়ে উঠেছে, সেই মুখ বেয়ে ঘামের ফোঁটা পড়ছে মাটিতে টপ টপ করে। যে কাপড় পরেছে মরিয়ম তাতে লজ্জা নিবারণ হয় না। আঁচল দিয়ে ঘোমটা দিলেও ছেঁড়া বলেই মাথার কেশগুচ্ছ বেরিয়ে পড়েছে। স্থানে-স্থানে তালিও পড়েছে কাপড়ের গায়ে। চোখ নামিয়ে আনলেন করিম সাহেব উঠোনের মাটির ওপর। ছড়ির মাথায় মাটি ঘষতে লাগলেন। একটা ক্ষুব্ধ হতাশার বেদনায় মনটা কেঁদে উঠছে ফুলে ফুলে। আহা, কী হাল হয়েছে মরিয়মের। আজ যদি সিরাজ থাকত তাহলে এ-অবস্থা হতো কি? সিরাজ আজ থেকেও নেই। 888sport app জেলে পচে মরছে তার একমাত্র সন্তান সিরাজ। বাহান্ন সালের ভাষা-আন্দোলনে পুলিশ জেলে পুরল সিরাজকে। আজ দুবছরের ওপর হতে চলল, কিন্তু তার বিচার পর্যন্ত হলো না। বিনা বিচারেই আটক রাখা হলো ওকে। ছেলের মুক্তির জন্যে চেষ্টার ত্রুটি করেননি করিম সাহেব। পত্রপত্রিকায় কত লেখাজোখা, কত অনুনয়-বিনয়, কত আবেদন-নিবেদন করলেন। সিরাজকে যদি জেলে আটক রাখা হয় তাহলে তারা খাবেন কি, পরবেন কি? উপার্জনক্ষম ব্যক্তি সংসারে সিরাজ ছাড়া ছিলইবা কে? ছেলের শোকেই ওর মা মারা গেল। আর তিনিই বা বেঁচে করবেন কি! শুধু সিরাজের মুক্তির ক্ষীণ আশা নিয়ে পুত্রবধূর মুখ চেয়ে বেঁচে আছেন কোনো প্রকারে। আর শূন্য সংসারে এই দুবছর ধরে কি কষ্টে, কি দুঃখে দিন গুজরান করছেন তা কি বোঝেন না সরকার? যে পাঁচ বিঘা জমির ফসলে অন্তত তিনটি মাস ভাতের ভাবনা ভাবতে হতো না তাও বন্ধক রেখে টাকা জোগাড় করতে হয়েছে। কিন্তু এ-টাকায় আর কদিন। তাই, নৌকাটা বেচে দিলেন। দুধেলা গাই দুটিকেও বেচে এলেন একদিন গিরিগঞ্জের হাটে। তারপর একে একে সংসারের ছোটখাটো জিনিসপত্রের ওপর হাত পড়েছে।’
এক রোববারে সিরাজ বাড়ি যাওয়ার সময় কিছু লিফলেট হাতে করে নিয়ে যায়। মরিয়ম বুঝতে পারে তার স্বামী সিরাজ ভাষা-আন্দোলনে জড়িয়ে গেছে। পরের রোববার আসার আগে সিরাজকে পুলিশ ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করে। দীর্ঘ দুবছর সিরাজ জেলে। তার মুক্তি পাওয়ার খবরে বৃদ্ধ পিতা করিম ছুটে যায় 888sport appয়। বাড়িতে মরিয়ম অপেক্ষার প্রহর গুনে ক্লান্ত। গভীর রাতে করিম সাহেব একাই ফিরে আসে। কারণ, সিরাজ মুক্তি পেয়ে রওনা হবে, এমন সময় পুলিশ নিরাপত্তা আইনে আবার তাকে গ্রেফতার করে। বিবরণ শুনে মরিয়ম কিন্তু ভেঙে পড়েনি। আশায় বুক বেঁধে অপেক্ষায় থাকে। তীব্র সংবেদনশীল এ-গল্পে সাঈদ-উর রহমান তুলে ধরেছেন এক মানবিক আবেগ, যে-আবেগ আবেশ ছড়ায়, ছড়ায় বিষাদও।
ভাষা-আন্দোলনকে অমøান করে রেখেছেন জহির রায়হান তাঁর 888sport live footballকর্মে। আমার মনে হয় 888sport cricket BPL rateে ফেব্রুয়ারি জহির রায়হানকে ভেতর থেকে যতটা আলোড়িত করেছিল, উত্তরকালে আর কোনো কবি-লেখককে এতটা আলোড়িত করেনি। ভাষা-আন্দোলনকে পটভূমি করে জহির রায়হান লিখেছেন ‘সূর্যগ্রহণ’, ‘888sport cricket BPL rateের গল্প’, ‘কয়েকটি সংলাপ’ ইত্যাদি গল্প এবং 888sport alternative link আরেক ফাল্গুন। ‘সূর্যগ্রহণ’ গল্পে দেখা যায়, ভাষা-আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে তসলীম নিহত হয়। তসলীমের ঘনিষ্ঠ বন্ধু আনোয়ার সাহেব এ-কথা জানলেও তসলীমের স্ত্রী হাসিনাকে সে কিছুই জানায়নি। হাসিনা মর্মান্তিকভাবে দুঃখ পাবে, তাদের পরিবার পথে বসবে। কারণ তসলীমই ছিল তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তাই আনোয়ার সাহেব প্রকৃত সত্য হাসিনাকে না জানিয়ে প্রতি মাসে হাসিনার নামে টাকা পাঠিয়েছে। হাসিনার নামে তসলীমের হয়ে চিঠি লিখেছে। হাসিনা কিছুই বুঝতে পারেনি। বারবার চিঠিতে একবছর পর্যন্ত বাড়িতে না যাওয়ার অভিযোগ করে। হাসিনার সেই চিঠি পড়তে পড়তে আনোয়ার সাহেব ভাবেন, হায় কপাল! হাসিনা যদি সত্যি জানত, তাহলে নিশ্চয় তার বেদনার সীমা থাকবে না।
‘এক বছরে কম চিঠি লিখেনি হাসিনা। অনেক – অনেক লিখেছে। ওগো, আর কতোদিন বাড়ি আসবে না তুমি? তুমি কি মাস মাস টাকা পাঠিয়েই শুধু নিশ্চিন্ত থাকবে? মা যে তোমার জন্যে কাঁদতে কাঁদতে অন্ধ হয়ে গেলো।’ হাসিনাকে বুঝতে দিচ্ছেন না, তার স্বামী মারা গেছে? অথচ তসলীমের মৃত্যুর দুর্ভার বেদনা তিনি বহন করতে পারছেন না। এমন জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আছেন আনোয়ার সাহেব। ভাষাশহিদদের 888sport sign up bonusর আবেগময় বেদনা ‘সূর্যগ্রহণ’ গল্পকে 888sport live chatোত্তীর্ণ করেছে।
‘888sport cricket BPL rateের গল্পে’র নায়ক তপু মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ছিল। বয়সে ছোট হলেও সে ছিল একমাত্র বিবাহিত বন্ধুদের মধ্যে। হোস্টেলের দৈনন্দিন জীবনে তপুর উচ্ছল, উজ্জ্বল তারুণ্যদীপ্ত চরিত্র ছিল সবার চেয়ে ব্যতিক্রম। তপু চরিত্রটি ভাষা-আন্দোলনের স্থানিক ও কালিক মহিমা অতিক্রম করে যায়। পাঠকের মনের পর্দায় তপু জীবন্ত হয়ে ওঠে। বাস্তব সত্যকে ছাড়িয়ে তপু সর্বজনীন চরিত্রের প্রতীক হয়ে ওঠে। আমি, তপু আর রাহাত। এ তিনটি চরিত্রের মধ্যে গল্পে ‘আমি’র বর্ণনায় তপুর মৃত্যুর ঘটনাটি উঠে এসেছে এভাবে –
‘মিছিলটা তখন মেডিকেলের গেট পেরিয়ে কার্জন হলের কাছাকাছি এসে গেছে।
তিনজন আমরা পাশাপাশি হাঁটছিলাম।
রাহাত সেøাগান দিচ্ছিলো।
আর তপুর হাতে ছিলো একটি মস্ত বড় প্ল্যাকার্ড। তার ওপর লাল কালিতে লেখা ছিলো, ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই।’
মিছিলটা হাইকোর্টের মোড়ে পৌঁছতেই অকস্মাৎ আমাদের সামনের লোকগুলো চিৎকার করে পালাতে লাগল চারপাশে। ব্যাপার কি বোঝার আগেই চেয়ে দেখি, প্ল্যাকার্ডসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে তপু। কপালের ঠিক মাঝখানটায় গোল একটা গর্ত। আর সে-গর্ত দিয়ে নির্ঝরের মতো রক্ত ঝরছে তার।
‘তপু’ – রাহাত আর্তনাদ করে উঠলো।’
গল্পের পরিণতিতে দেখা যায় তপু আবার ফিরে এসেছে বন্ধুদের মাঝে। রাহাত স্কালটা হাতে নিয়ে অবাক হয়। কপালের মাঝখানটায় গোল একটা ফুটো। বাঁ-পায়ের হাড়টা দু’ইঞ্চি ছোট ছিল ওর। ‘স্কালটা দুহাতে তুলে ধরে রাহাত বলল্লো, তপু।’ 888sport cricket BPL rateের গল্পে মৃত তপু সবার মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে দেয়। ভাষা-আন্দোলনের নাম না জানা শহীদের প্রতীকী ভাবমূর্তি গড়ে ওঠে তপুর মধ্যে। এভাবে প্রতীকী তাৎপর্যের মাধ্যমে জহির রায়হান আমাদের সামনে 888sport live chat-সত্য তুলে ধরেন।
ভাষা-আন্দোলনের পটভূমিতে রচিত ছোটগল্প সম্পর্কে একজন সমালোচকের মন্তব্য –
‘অনেকে বলেন, ভাষা আন্দোলন আমাদের 888sport live footballে যে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হয়েছিল তা পড়েনি। ১৯৫২-র পরে অবশ্যই কিছু সাড়া জেগেছিল। কিন্তু প্রাণের সেই জোয়ার আমাদের 888sport live footballের দু-কূলকে প্লাবিত করার আগেই তাতে ভাটা পড়েছিল। কথাটি হয়তো মিথ্যা নয়। এবং সেটা আমাদের ভয়ংকর দুর্ভাগ্যের কথা। কিন্তু তবু সেই ১৯৫২-ই হচ্ছে ল্যান্ডমার্ক। আমাদের সাফল্যের জয়যাত্রা ওখান থেকেই শুরু হয়েছিল। আমাদের ধারণা সে যাত্রার ইতি হয়নি, নানা কারণে মাঝপথে থেমে আছে মাত্র। উৎসের কাছে একটি নদীর অগ্রযাত্রা একটি প্রস্তরখ-েই ব্যাহত হতে পারে। কিন্তু অবধারিত নববর্ষায় সে প্রস্তরখ- ভেসে যাবেই। আমাদের 888sport live footballের ভাগ্যে যাই ঘটে থাকুক না কেন, ওই ১৯৫২-র উৎস মিথ্যা নয়। মিথ্যা নয় আমাদের পঞ্চাশের দশক।’
(বশীর আল হেলাল, ‘888sport appsের ছোটগল্প’, উত্তরাধিকার, শহীদ দিবস 888sport free bet, ১৯৭৪, পৃ ৩০৫)
888sport cricket BPL rateের চেতনার পরিপাটি বিস্তার আমাদের ছোটগল্পে খুবই প্রত্যক্ষ এবং বাস্তব। যদিও সৃষ্টির পরি888sport free betন খুব দীর্ঘ নয়, তবু শুধু যুগের দাবিকে ধারণ করার জন্য 888sport cricket BPL rateের ছোটগল্পের মূল্য ও মর্যাদা অপরিসীম। আমাদের ইতিহাসের রক্তাক্ত অধ্যায়ের এক বহুবিচিত্র অ্যালবাম 888sport cricket BPL rateের ছোটগল্প।
ভাষা-আন্দোলন সম্পর্কিত গল্প :
শওকত ওসমান মৌন নয় 888sport cricket BPL rateের সংকলন ১৯৫৩
সাইয়িদ আতীকুল্লাহ হাসি 888sport cricket BPL rateের সংকলন ১৯৫৩
আনিসুজ্জামান দৃষ্টি 888sport cricket BPL rateের সংকলন ১৯৫৩
সরদার জয়েনউদ্দীন খরস্রোত খরস্রোত ১৯৫৫
নূরউল আলম একালের রূপকথা পুতুলের কান্না ১৯৫৭
সাঈদ-উর-রহমান সিঁড়ি ময়ূরের পা ১৯৫৮
রাবেয়া খাতুন প্রথম বধ্যভূমি মুক্তিযুদ্ধ : নির্বাচিত গল্প ১৯৮৫
(৬৭/৬৮ রচিত) (হারুন হাবীব-সম্পাদিত)
জহির রায়হান 888sport cricket BPL rateের গল্প হে স্বদেশ ১৯৭২
(বা. একাডেমি-
সম্পাদিত)
জহির রায়হান কয়েকটি সংলাপ রচনাবলী ১৯৮০
(১৯৭১ রচিত)
সেলিনা হোসেন দীপান্বিতা উৎস থেকে নিরন্তর ১৯৬৯
মিন্নাত আলী রুম বদলের ইতিকথা যাদুঘর ১৯৬৯
বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বিভিন্ন স্বর বিশাল ক্রোধ ১৩৭৬
সরদার জয়েনউদদীন কারফিউ অষ্টপ্রহর ১৩৭৭
বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ হে স্বদেশ ১৯৭২
(বা. একাডেমি-সম্পাদিত) রাহাত খান যখন যেখানে যা খাদ্য অনিশ্চিত লোকালয় ১৩৮০
(৬৯-৭২ এ-রচিত)


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.