আবুল মোমেন
দাবি ছিল বাংলাকে অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার। সেই দাবি এগিয়ে নিতে নিতে আমরা বাংলা ভাষাভাষির রাষ্ট্র 888sport apps আদায় করে ছাড়লাম। কুড়ি বছরের মাথাতেই এ-ঘটনা। এখন দুই কুড়ি অর্থাৎ আরও চল্লিশ বছরের দূরত্ব থেকে তাকিয়ে বিচারে বসলে হিসেব কিছু কি মেলে?
888sport apps আছে, বাংলা অবশ্যই একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, সংসদ চলে বাংলায়, দেশের কর্ণধারগণ সকলেই বাঙালি। আর তো কথা থাকার কথা নয়। কিন্তু কথা যেন শেষ হয় না।
888sport apps আছে, কিন্তু কীভাবে আছে? বাংলা রাষ্ট্রভাষা বটে, কিন্তু কতটা? বাঙালিয়ানার বিপরীতে পাকিস্তান ইসলামকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছিল, একাত্তরে সে ভুল ভেঙেছিল বটে, কিন্তু এখন তা ভূত হয়ে ফিরে এসেছে। বাংলা যথারীতি স্বীকৃতিটুকু পেয়েছে, কিন্তু সরকারি এবং সমাজের ধনিকগোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষকতায় চর্চা হচ্ছে ইংরেজির। বিভ্রান্ত ও উচ্চাভিলাষী মধ্যবিত্ত প্রায় পতঙ্গের মতো সেই আগুনে ঝাঁপ দিচ্ছে, দিয়ে চলেছে।
যারা নীতিনির্ধারণ করেন তাঁদের আস্থা নেই বাংলার ওপর, 888sport apk download apk latest version নেই বাঙালির সংস্কৃতির প্রতি।
এখানে বরাবর একটা ধারা ছিল, যা বাংলাভাষা ও বাঙালিদের প্রতি সন্দিগ্ধ। বাঙালি যদি বিশেষ পোশাক হিসেবে পাজামা-পাঞ্জাবি পরে তো তারা তা নাকচ করে দেয়। বদলে একসময় আচকান টুপি চাপাতো, এখন সাফারি। এরা হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিমের যৌথ উত্তরাধিকারের কথা বললে তারা বিপন্ন ইসলামের ধুয়া তুলে ইসলামকে রাজনীতিতে টেনে রাজনীতিকে সাম্প্রদায়িক খোলস পরাতে থাকে। একেবারে বাংলার মেঠোসুরের রবীন্দ্রসংগীতকে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা দিলে ওরা মান রক্ষার্থে পপিশ আধুনিক গানের আশ্রয় খোঁজে, অন্তত দলীয় সংগীতের দাম দিয়ে। 888sport cricket BPL rateের প্রভাতফেরি, বইমেলা, 888sport app download apk, গানকে এড়িয়ে মিলাদ মাহফিলের ধারা চালু করে দেয়।
অর্ধভুক্ত দারিদ্র্যক্লীষ্ট মানুষ বড়লোকের দিকে যুগপৎ সন্দেহ ও আশা নিয়ে তাকায়। ফলে আশা জাগাতে জানলেই হলো। আশার ভিত হলো আশ্বাস। আমাদের ক্ষমতাসীন রাজনীতিকরা – যে কাতারে দিনে দিনে বড়লোকদের একচেটিয়া ভিড় বাড়ছে – তারা সব সময় ‘হবে’ ‘হচ্ছে’ ইত্যাদি শুনিয়ে যান। মানুষও আশায় আশায় থাকে। জনমনে – শিক্ষাহীন মানুষের মনে – আশ্বাসের দীপে আলোর সলতে জ্বালিয়ে রাখতে হবে তো। শিক্ষাহীন মানুষের মনে নানা সংস্কারের জুজু ভিড় করে থাকে। তার বড় ভয় আল্লাহর দোহাই দিয়ে কিছু বলা হলে। ফলে যেই গণতন্ত্রের অর্থাৎ এদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনুযায়ী মানবিকতার হাওয়া জোরদার হয়, যা কিনা আবশ্যিকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ, তারা অমনি আল্লাহর দোহাই দিয়ে কোরান-সুন্নাহর নাম করে মানুষকে ভয় দেখানো শুরু করে।
চল্লিশ বছরে আমরা মরিনি, কিন্তু কিছু 888sport free betতাত্ত্বিক অর্জন ছাড়া গুণগতভাবে তেমন উল্লেখ করার মতো এগোইনি, মার্চ করিনি মার্কটাইম করেছি। বোধহয় মানসজগৎ পিছিয়েছে অনেকাংশে, কারণ আগে ছাত্ররা প্রায় সর্বাংশে প্রগতির পক্ষে ছিল, এখন সেখানে পশ্চাৎপদ চিন্তার প্রেতাত্মা বাসা বাঁধছে। সমাজে মানবতার ধারার বিরুদ্ধে পাশববৃত্তিকে লেলিয়ে রাখা যাচ্ছে বেশ লাগসইভাবে। লোভ ও ভোগের বাসনা এত উগ্রভাবে বেড়েছে যে, মনুষ্যত্বের অর্জনে ধুঁকছে সমাজ, আর স্বার্থের প্রেরণায় নিষ্ঠুরতার খড়্গ বিবেক-বুদ্ধিকে বলি নিচ্ছে। ফলে কোনো কথাই কাজে পরিণত হচ্ছে না, আশ্বাস ও কর্মসূচিতে, আদর্শ ও বাস্তবে কোনোই মিল থাকছে না।
যদি বাংলাভাষার প্রচলনই আমরা চাই, তবে সর্বাগ্রে প্রয়োজন তার পরিবেশ তৈরি। মাটি তৈরি না হলে, পরিবেশ অনুকূল না হলে গাছ জন্মায় না, জন্মালেও ফল দেয় না, যদি ফল দেয়ও পরিমাণে, গুণে ও আকারে যথোচিত হয় না। আমাদের বাংলাভাষা চর্চার অনেকটা এই রকম অবস্থা – কোথাও একদম চর্চা নেই, কোথাও নিষ্ফল চর্চা হচ্ছে, আর অন্যত্র, যেটুকু চর্চা হচ্ছে, তা যথাযোগ্য নয়।
ভাষাভিত্তিক সৃষ্টিগুলো যদি হয় ভাষার ফসল তো ভাষা নিজে হলো গাছ, শিক্ষা তার ভূমি আর সংস্কৃতি বাতাবরণ। আমাদের সাংস্কৃতিক দিশাহীনতা কারও অজানা নয়, এর বন্ধ্যত্ব চলছে অনেককাল। ফলে পতিত জমিতে যেমন আগাছা জন্মায়, এখানেও তেমনি অপসংস্কৃতির বিকার চলছে। আর লক্ষ্যহীন ও সংস্কৃতিহীন শিক্ষা কেবল ভাষা নয়, কোনো ফসলই ফলাতে পারে না।
ইংরেজের ঘরে ইংরেজই জন্মায়, ইংল্যান্ডের খাস বাসিন্দারা ইংরেজই হতে পারে, তাদের কেউ আস্তিক কেউ নাস্তিক, কেউ প্রটেস্টান্ট তো কেউ প্রেসবিটারিয়ান, কেউ প্রাচীনপন্থী তো কেউ অতিআধুনিক, কারও গর্ব তার খ্রিষ্টান ঐতিহ্য নিয়ে, কারও কৌতূহল প্রাচ্য সভ্যতায়, কেউ মাথা ঘামায় রাজনীতি নিয়ে, কারও মন পড়ে থাকে সংগীতে, কেউ জাতিবিদ্বেষী, কেউ বা মানবাধিকার সংগ্রামী। কিন্তু এতসব বৈচিত্র্য-বৈপরীত্য মিলে যায় একখানে – তাদের সংস্কৃতি ইংরেজ সংস্কৃতি, তাদের ভাষা ইংরেজি। বাঙালির ক্ষেত্রে এমন হয়নি। একই ঘরে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি লালিত ও বাঙালি সংস্কৃতি লালিত ভাই জন্মায় ও বড় হয়, একই অফিসে পাশাপাশি কাজ করতে পারে বাঙালিয়ানায় স্বস্থ মানুষ ও আরবিয়ানায় আগ্রহী ব্যক্তি, একই দলে থাকতে পারে গ্রামবাংলার শাশ্বত আবহে গড়া নেতা আর শহুরে আধা ইংরেজ ভুঁইফোঁড়। একই ব্যক্তি গ্রামীণ জনসভায় বাঙালি আর শহরের পার্টিতে ইংরেজেরও বাড়া সাহেব। মেয়েদের ক্ষেত্রে এই সংকট কম হলেও ইদানীং তা বাড়ছে।
এই আবহে বাংলাভাষা চর্চার ভূমিটি তৈরি করবে কে? তা তো আইনের নির্দেশ বা সরকারি সিদ্ধান্তের চোখ রাঙানিতে, 888sport cricket BPL rateের সমবেত শপথে, নেতানেত্রীর আশাবাদী বাণীতে, আর বুদ্ধিজীবীদের ইচ্ছা পূরণের জন্যে তৈরি হবে না। এসবই আমাদের ফাঁকা কথা ও ফাঁকা কাজ বলে প্রমাণিত হবে কারণ সত্যি-সত্যি বাঙালি রূপে বাঁচার, বাঙালি হয়ে সার্থকতা লাভ ও বাঙালি হয়ে ওঠার মধ্যে বিশেষ ও বাড়তি কোনো আনন্দ কি আমরা পাই? পাই না। কারণ এর মধ্যে কোনো সার্থকতার বোধ সে অনুভব করে না। বাঙালি হওয়ার মধ্যে আমরা যেমন সার্থকতার স্বপ্ন দেখাতে পারিনি, তেমনি পারিনি এর বাস্তব ভিত্তি দাঁড় করাতে। যেখানে বাঙালি অর্থাৎ সার্থক বাঙালি হতে চায় না কেউ, সেখানে বাংলাভাষার প্রসার ও সাফল্য অলীক স্বপ্ন মাত্র। যেখানে শিক্ষাও বাঙালি গড়ায় বিশ্বাসী নয়, সংস্কৃতি বাঙালিকে দিচ্ছে না কোনোরকম আনুকূল্য। কেউ জন্মগতভাবে বাংলাবিদ্বেষী হয় না, পরিবেশ তাকে বাংলায় দুর্বল করে রাখে, তাকে বাঙালির সংস্কৃতি সম্পর্কে অর্থাৎ তার নিজের জীবনের কর্ষণভূমি সম্পর্কে সন্দিগ্ধ ও অনীহ করে রাখে। এটা লক্ষ্যস্থির করার ও ব্যবস্থার দোষ, মানুষের নয়।
তাই মনে করি, সব ভরসাই যায়নি, সব পথই রুদ্ধ নয়। বাঙালি এখনও চাইলে বাঙালি হতে পারে। কেবল সেই লক্ষ্যটি সম্পর্কে তাকে স্থির সিদ্ধান্তে আসতে হবে। তারপরে চাই যথাযথ আয়োজন। এখানে বলা ভালো যে, বাঙালি হওয়ার সঙ্গে আধুনিক হওয়ার, একেবারে পাশ্চাত্যের সর্বাধুনিক জ্ঞান ও 888sport live chatে ব্যুৎপত্তি অর্জনের সঙ্গে কোনো বিরোধ নেই। ঠিক তেমনি ইংরেজিয়ানা রপ্ত করার সঙ্গে ইউরোপীয় আধুনিক কেতা আয়ত্ত করার কোনো সম্পর্ক নেই। খোদ ইংরেজ বা জর্মনই মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণার মধ্যে পড়ে থাকতে পারে, আবার বাউফলের গ্রামীণ ঘরের ছেলে জ্যোতির্পদার্থবিদ্যা বা পলিমার রসায়নে যথেষ্ট অগ্রসর জ্ঞান অর্জন করতে পারে। এর সঙ্গে কোন সংস্কৃতি আমরা নেব তার সম্পর্ক এটুকু যে, সামগ্রিকভাবে জাতি হিসেবে বাঙালির যেহেতু ইংরেজ বা জর্মন হওয়ার কোনো পথ নেই, তাই তার এগোনোর পথ একটিই, তার আপন বাঙালি জীবনের মধ্যেই। ফলে তার জন্যে চাই সকল জ্ঞান, 888sport live chat ও বিদ্যাকে ধারণের সুযোগসহ বিকাশমান বাঙালির জীবন। এ সুযোগ না থাকায় আমরা ব্যতিক্রমী দু-চারজন প্রতিভাকে নিয়ে গলা ফাটাই যখন যুগ-যুগ ধরে আমজনগণ সিসিফাসের মতো সাফল্যহীন শ্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নীতিনির্ধারকদের অবিমৃষ্যকারিতার ফলে বাঙালি বস্তুত একধরনের দণ্ডিত জাতিতে পরিণত হয়েছে। শিক্ষা ও সংস্কৃতির দিক থেকে বিচার করলে বিকাশহীন বামন সৃষ্টি করা হচ্ছে বহুকাল ধরে। আমাদের এই বাঙালি হওয়ার সাধনা প্রধানত শিক্ষিত জনগণকে ঘিরেই ভাবতে হবে, কারণ গোলমাল তাদের নিয়েই। সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত ও বিপথগামী করছে এরাই। সবচেয়ে বড় বাধা হলো সরকার ও দেশের ক্ষমতাবান শ্রেণি। তবে এও দেখা যায়, রাষ্ট্রক্ষমতায় বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা আসীন হলেও বাঙালি হওয়ার পরিবেশ তৈরি করা যায় না, কারণ এ নিয়ে গভীর ও মৌলিক কোনো ভাবনাচিন্তায় কেউই যেন আগ্রহী নন। বাংলার ওপর সত্যিই তাঁরা ষোল আনা ভরসা পান না। কিন্তু আস্থা ও লক্ষ্যে ঠিক না থাকলে তো আর কিছুই সম্ভব নয়। আবার এও সত্য, পথ পাওয়া গেলে বিশ্বাস আনা ও লক্ষ্য স্থির হওয়া সহজ হতে পারে।
প্রথম কথা, জাতি হিসেবে যে কোনো জাতির বিকাশ সম্ভব তার নিজস্ব সংস্কৃতির আবহে বাঁচার, বাড়ার মাধ্যমে, সেখানে মিশ্রণ গ্রহণ-বর্জন, ভাঙাগড়া ইত্যাদি চলতে থাকবে। দ্বিতীয় কথা হলো, এর জন্যে শিক্ষার মাধ্যম মাতৃভাষা হওয়ার পাশাপাশি সামগ্রিক সাংস্কৃতিক পরিবেশটি সেই ভাষা ও ঐতিহ্যের অনুকূল হতে হবে। তাই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ব্যবসা বন্ধ করতেই হবে। সেটা নিতান্ত ব্যবসাদারি, তার সঙ্গে শিক্ষার আদর্শিক-আত্মিক সম্পর্ক হয় না। তবে সব স্কুলেই নিচের শ্রেণি থেকেই দ্বিতীয় ভাষা শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে, যা আমাদের দেশে বিকল্পহীনভাবে ইংরেজি।
যে-কোনো সাংস্কৃতিক অর্জন রাজনৈতিক ক্ষমতাভোগের হাতিয়ারের বেশি হতে পারে না যতক্ষণ না তা প্রাত্যহিকতায় জীবনচর্চার অংশ হয়ে না ওঠে। নয়তো এ হবে ভাবাবেগের বিষয়, কথার কথা, বুলিবিশেষ।
তাই এখন বাঙালিকে তার ব্যক্তিগত ও জাতীয় জীবনে নিজের সংস্কৃতিতে ফিরিয়ে আনার পথ হিসেবে কয়েকটি করণীয়র কথা বলব।
এক. মূল ক্যালেন্ডার হিসেবে বাংলা সন-তারিখ চালু করা উচিত। এতে অভ্যস্ত হওয়ার জন্যে প্রথমত সর্বত্র চাকরিজীবীদের বেতন দিতে হবে বাংলা মাসের ভিত্তিতে। তাতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সকল নাগরিকের জীবনে রাতারাতি বাংলা দিনপঞ্জিকা, বাংলা সন, মাস, তারিখ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ও সত্য হয়ে উঠবে।
দুই. স্কুলপর্যায়ে শিক্ষাবর্ষ বৈশাখ-চৈত্র করে নেওয়া যায়। চৈত্রের প্রথমভাগে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হবে, তারপর ফল প্রকাশ এবং এর পরে সারাদেশে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উদ্যাপিত হবে বসন্তোৎসব। সেটাকে সার্থক করতে সবার জন্যে বিস্তারিত কর্মসূচি তৈরি করা যায়। তবে উৎসবে অবশ্যই নাচ, গান, সাজসহ প্রাণমাতানো আনন্দের আয়োজন থাকবে। বৈশাখের গোড়া থেকে বর্ষ শুরু হয়ে জ্যৈষ্ঠে গ্রীষ্মকালীন ছুটি থাকবে। এ ক্রমপঞ্জিকে ইংরেজি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী 888sport app download apk latest version করলে এরকম দাঁড়ায় – ফল প্রকাশ এপ্রিলের গোড়ায় ও তার পরপর বসন্তোৎসব এবং এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে-র মাঝামাঝি নতুন শ্রেণিতে ক্লাস হয়ে গ্রীষ্মাবকাশ ইত্যাদি। এতে আগামী প্রজন্ম এবং তাদের সূত্রে বিরাট অভিভাবক শ্রেণি যারা নগরবাসী তাদের জীবনেও কৃষিজীবী গ্রামীণ মানুষের মতো বাংলা সনসহ মাস-তারিখ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে।
তিন. বাংলা দিনপঞ্জিকার ব্যবহার সরকারি অর্থবছর থেকে নিয়ে জাতীয় ও 888sport app গুরুত্বপূর্ণ সকল ক্ষেত্রে করা যেতে পারে।
চার. একই সঙ্গে, হয়তো আরও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে, নজর দিতে হবে শিক্ষার দিকে। কারণ যে কোনো আধুনিক জাতির মতো আমাদেরও লক্ষ্য তো একটি শিক্ষিত জাতি সৃষ্টি করা। প্রকৃত শিক্ষিত মানুষ কেবল ডিগ্রিধারী হয় না, সংস্কৃতির আলোয় সমৃদ্ধ হন। সেটা আসে সংস্কৃতিচর্চা থেকে। অতএব শিক্ষার সঙ্গে বাঙালি হওয়ার বিষয়টি যে যুক্ত তা আমাদের অনুধাবন করতে হবে।
শিক্ষিত মানুষের দেশচেতনাসহ সকল মানবিক চেতনার মূলভিত্তি 888sport live football। তাই স্কুলপর্যায়ে সকল শ্রেণিতে চিরায়ত বাংলা 888sport live football পাঠ করার আয়োজন শিক্ষাক্রমের মধ্যেই ঢোকাতে হবে। এতে ছাত্রদের 888sport apk, গণিত বা ইংরেজি শেখায় কোনো বাধা পড়বে না। কেবল এতে তার চরিত্রটি এবং ঠিকানাটি সে খুঁজে পাবে, তার জীবন বিকাশের পথটির সন্ধান সে পাবে।
পাঁচ. সুর সবার মধ্যেই থাকে। 888sport live chatীস্তরের গায়ক-গায়িকা হওয়া বিশেষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ ও প্রতিভার ব্যাপার হতে পারে, কিন্তু সদলে গাইবার ক্ষমতা সামান্য মনোযোগ ও সামান্য প্রশিক্ষণে প্রায় সবারই আয়ত্ত হওয়ার কথা। সুরের মধ্যে একটি জাতির প্রাণের রস ও ব্যঞ্জনা সুপ্ত থাকে। এও নিজেকে পাওয়ার এবং বারে-বারে মালিন্যমুক্ত করে তাজা রাখার বড় মাধ্যম। আর এতে বাঙালি সত্তার সুরটি মনকে রাঙাবে ও মনে অনুরণিত হতে থাকবে। তাই স্কুলপর্যায়ে নাগরিক ও লোক সবধরনের প্রমিত বাংলা গানের চর্চা সবার জন্যে আবশ্যিক থাকা জরুরি।
ছয়. দেশ ও সংস্কৃতিকে প্রাণে অনুভবের ও প্রাণভরে উপভোগের আরেক বড় অবলম্বন প্রকৃতি। ছাত্রদের প্রকৃতির সান্নিধ্যে রাখার কিছু আয়োজন চাই। তার পাশাপাশি সরকার একটু পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সাহায্য করতে পারে যাতে সারাদেশে নির্দিষ্ট দিনে সর্বত্র ঋতুভিত্তিক অন্তত দুটি সামাজিক উৎসব উদ্যাপিত হয় যা কেবল মেলায় পর্যবসিত হবে না, সবার অংশগ্রহণ, কিছু করা ও উপভোগের সুযোগ থাকবে তাতে। এই উৎসবগুলো যেন মানুষ ও প্রকৃতিতে, ধর্মে-ধর্মে, 888sport promo code ও পুরুষে ব্যবধান ঘুচিয়ে সৃজনশীল শোভন উদ্দীপনাময় আনন্দে সকলকে মেলাতে পারে। হতে পারে আমাদের প্রস্তাবিত বার্ষিক পরীক্ষার পরে চৈত্রের শেষে (অর্থাৎ মার্চের শেষে বা এপ্রিলের প্রথমে) এমন কিছু অনুষ্ঠানের ভিত্তিতে বসন্তোৎসব এবং জুলাই-আগস্টে বাংলার প্রকৃতির প্রধান ঋতু বর্ষায় বর্ষামঙ্গল উৎসব যেগুলো মঞ্চ ও কেন্দ্রমুখী হবে না, প্রতিষ্ঠিত 888sport live chatীর অনুষ্ঠান নির্ভর হয়ে সাধারণজনকে নিছক দর্শক-শ্রোতায় পরিণত করবে না, এবং বুদ্ধিজীবী ও ক্ষমতাবান গোষ্ঠীর আধিপত্যে ভারাক্রান্ত হবে না। এখানে ঘর-সংসার-লোকালয় তথা সমাজ হবে মুখ্য, পারিবারিক সামাজিক যোগাযোগ হবে প্রধান। আর তাতে সকলে আপনার মতো করে অংশ নেওয়ার ও আনন্দ লাভের সুযোগ পাবে।
এসব উৎসবের জন্যে আমরা এ-অঞ্চলের প্রাচীন কিছু প্রচলিত ব্রত অনুষ্ঠানের কথা ভাবতে পারি যা মুসলমান পরিত্যাগ করায় হিন্দুর অনুষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। এসবকে সাম্প্রদায়িক থেকে সামাজিক অনুষ্ঠানে উন্নীত করা যায়। আবার যোগ করতে পারি নতুন নতুন সব অনুষ্ঠান যাতে ধর্ম-সম্প্রদায়ের কোনো ছাপ থাকবে না। বাঙালির সামাজিক জীবনের চারিত্র্যের সঙ্গে সংগতি রেখেই রাখিবন্ধ হতে পারে, যা ধর্ম-সাম্প্রদায়িক ব্যবধান ঘোচাতে সহায়ক হবে; হতে পারে ভাইফোঁটা যা ছেলেমেয়ের মধ্যে ব্যবধান ঘুচিয়ে পবিত্র সুন্দর সম্পর্ক রচনা করতে পারে; হতে পারে রংখেলা – যা গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মুসলমান খেলছেও। এতে ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে সমগ্র সমাজ বছরে একটি দিন জড়তার কাঠিন্য ভেঙে জীবনানন্দে মেতে উঠতে পারে। এর সঙ্গে যুক্ত হতে পারে ছোট-বড় সবার জন্যে বৃক্ষোৎসব, ছোটদের সেবাব্রতে উদ্বুদ্ধ করে এমন অনুষ্ঠান। সব অনুষ্ঠানে সবসময় গান থাকবে, কারণ নতুন ব্যবস্থায় দলে মিলে গাইবার অভ্যাস গড়ে উঠবে। সঙ্গে নৃত্য যোগ করা গেলে সবচেয়ে ভালো হয়। নাচ মানুষকে কেবল শারীরিকভাবে জড়তামুক্ত করে তা নয়, সমবেত নৃত্য সকলের মধ্যে নৈকট্য ও প্রাণময় বন্ধুতার সুযোগ তৈরি করে। আর থাকছে অনুষ্ঠানসহ প্রাঙ্গণ ও ঘরবাড়ির পরিচ্ছন্নতা ও সজ্জা। সেইসঙ্গে নতুন পোশাকের বিষয়ও ভাবতে হবে।
আজ বায়ান্নর ভাষা-আন্দোলন থেকে ষাট বছরের দূরত্বে থেকে আমরা বিহ্বলভাবে লক্ষ করছি উন্নতিপ্রয়াসী মানুষ নিজ সন্তানকে প্রাণপণে তুলে দিতে চাইছেন ইংরেজি-ভাষা-সংস্কৃতির তরণীতে। স্বাধীনতার পরে চতুর্দিকে বাংলা নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিকাশ ঘটেছিল। চমৎকার সব তাৎপর্যপূর্ণ বাংলা নামকরণ করা হয়েছিল ব্যাংকগুলোর – সোনালী, রূপালী, পূবালী, জনতা, অগ্রণী ইত্যাদি। তেমনি তেল কোম্পানিগুলোর নাম রাখা হয়েছিল পদ্মা, মেঘনা, যমুনা। আর আজ যে ৭০-৭৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার একটি ছাড়া কোনোটির নামই বাংলা নয়। অফিস, কোম্পানি, ফার্ম, স্কুল, কলেজ সব প্রতিষ্ঠানেরই নাম রাখা হচ্ছে ইংরেজিতে। বিয়ে ও অনুষ্ঠানের কার্ড, ভিজিটিং কার্ড, প্যাড সবটাতেই চলছে ইংরেজি ভাষার দৌরাত্ম্য। শহর-গাঁয়ের দরিদ্র স্বল্পশিক্ষিত মানুষ, যাদের অনেকের ইংরেজি-ভাষাজ্ঞান সংগত কারণেই নেই, বাংলা ভাষা ছেড়ে ইংরেজির বেদিমূলে আÍসমর্পণ করছে। বাঙালিরাই পরস্পরের মধ্যে ইংরেজি ভাষায় আমন্ত্রণ-নিমন্ত্রণের রেওয়াজ চালু করেছে। একি ভাবা যায়! স্বেচ্ছায় আমরা যেন জীবন থেকে বাংলাকে পরিত্যাগ করে ইংরেজির বশংবদ হয়ে বসছি। স্বদেশ ত্যাগ করার হিড়িক পড়েছে। সেক্ষেত্রে ধনী-গরিবের পার্থক্য নেই। হয়তো 888sport cricket BPL rateে ও বাংলা নববর্ষ উদযাপন বহরে ও আড়ম্বরে বেড়ে চলেছে, মঞ্চে-অনুষ্ঠানে, ভাষণে-গানে আমরা বাঙালি কিন্তু জীবনে ইংরেজিয়ানার দাসত্ব গ্রহণ করছি। 888sport cricket BPL rateে ফেব্র“য়ারি নিয়ে আমরা যে-সংগ্রাম করেছি তা আমাদের নিয়ে গেছে মুক্তিযুদ্ধ, বিজয় ও স্বাধীনতার মতো জাতির গৌরবময় অর্জনের পথে। কিন্তু 888sport cricket BPL rateের চেতনাকে যথার্থভবে অন্তরে ধারণে ব্যর্থ হয়েছি আমরা, তাই এ কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতা ও ক্ষমতাবদল আর নামবদলে সীমিত হয়ে পড়ছে। প্রাণে-মননে 888sport cricket BPL rateের স্পন্দন নেই। আবেগে থাকলেও ভাবনায় নেই।
এভাবে এই বিভ্রান্ত জড়তাগ্রস্ত হীনম্মন্যতায় বিকারগ্রস্ত জাতির দুঃস্বপ্নময় বন্ধ্যত্ব ও অবক্ষয় ঘুচতে পারে না। বাঙালি হয়ে যাতে সে বাঁচার আনন্দ ও সার্থকতা খুঁজে পায় তার আয়োজনের ওপরই জোর দিতে হবে। 888sport cricket BPL rateে কেবল দিবস নয়, এমন অর্জন নয় যা ইতিহাসে সীমাবদ্ধ, এ হলো চেতনা যা বীজের মতো অন্তহীন বিকাশের সম্ভাবনায় বলীয়ান। 888sport cricket BPL rate আমাদের ভাষার ভূমিতে স্থাপিত করেছে, বিকশিত হলেই কেবল এ দিবস পালনের অর্থ থাকে। তাই ভাষায় ও ভাবে, জীবনযাপনে বাঙালি হয়ে-ওঠার মধ্যেই এর সার্থকতা, তাৎপর্য মিলবে। তখনই হতাশাগ্রস্ত দিশাহীন মানুষ বাঁচার আনন্দ খুঁজে পাবে, তাতে তার মানুষ হওয়ার পথে অনেক বাধা দূর হয়ে যাবে। তার দিশেহারা ছন্নছাড়া জীবনে ছন্দ ও সৌন্দর্য ফিরতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, মানুষ হওয়ার এই সাধনায় তার প্রথম কৃত্য বাঙালি হওয়া – এর আর কোনো বিকল্প নেই।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.