রশিদ চৌধুরী, মুর্তজা বশীর ও দেবদাস চক্রবর্তী – 888sport appsের আধুনিক চারু888sport live chatের প্রথম প্রজন্মের সৃজন888sport live chatী। তাঁরা তিনজনই কাছাকাছি সময়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। আমাদের সমকালীন 888sport live chatের গতিপ্রকৃতির সঙ্গে, ঐতিহ্যের সঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন এবং সমসাময়িক এই তিন বরেণ্য চিত্র888sport live chatীর নির্বাচিত সৃজনকর্ম দর্শকদের একসঙ্গে দেখার ব্যতিক্রমী এক সুযোগ করে দিয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন। বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক 888sport live chatী ঢালী আল মামুনের কিউরেটিংয়ে বিশেষ এ-প্রদর্শনী চলছে 888sport appর ধানমণ্ডির বেঙ্গল 888sport live chatালয়ে। এই আয়োজনে তিন 888sport live chatীর সৃজনকৃত রেখাঙ্কন, জলরং ছবি, তেলরঙে আঁকা চিত্রকর্ম, ক্যানভাসে অ্যাক্রিলিক মাধ্যমে আঁকা শেষোক্ত দুজনের ছবি, প্রচ্ছদ, ইলাস্ট্রেশন প্রভৃতি যুক্ত করায় প্রদর্শনী যেমন ঋদ্ধ হয়েছে, তেমনই এটি ডকুমেন্টারি ও গবেষণাঋদ্ধ একটি অবয়ব পেয়েছে!
888sport live chatপাঠকের সুবিধার্থে আমি প্রয়াত বরেণ্য এই মাস্টার আর্টিস্টদের সংক্ষিপ্ত জীবনকে মেলে ধরতে চাই। রশিদ চৌধুরী ও মুর্তজা বশীরের জন্ম একই বছর হলেও (১৯৩২) রশিদের জন্ম এপ্রিলের ১ তারিখে, বশীরের জন্ম ১৭ আগস্ট। ১৯৩৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর দেবদাস চক্রবর্তীর জন্ম। সে-হিসেবে এই তিনে তিনিই কনিষ্ঠতম।
ফরিদপুরে জন্ম রশিদ চৌধুরীর ১৯৩২-এ। মৃত্যু 888sport appয় ১৯৮৬ সালের ১২ই ডিসেম্বর। মাত্র সাড়ে ৫৪ বছরের নাতিদীর্ঘ জীবন! 888sport appsের চিত্র888sport live chat অসম্ভব এই প্রতিভাবানের সেবাবঞ্চিত হয়েছে!
১৯৪৯ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে রশিদ ভর্তি হন 888sport appর সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে। প্রথম বিভাগে পাশ করেন, ১৯৫৪ সালে। ওই বছরই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ মিউজিয়াম থেকে 888sport live chat-সমঝদারি বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৫৬-৫৭ সালে বৃত্তি পেয়ে মাদ্রিদের সেন্ট্রাল এস্কুলা দেস বেলিয়াস আর্টেস দ্য সান ফার্নান্দো থেকে ভাস্কর্যে এবং ১৯৬০-৬৪ সালে বৃত্তি পেয়ে প্যারিসের অ্যাকাডেমি অব জুলিয়ান অ্যান্ড বোজ আর্টস থেকে ফ্রেস্কো, ভাস্কর্য ও ট্যাপেস্ট্রি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৭৫ সালে মার্কিন সরকার-প্রদত্ত লিডারশিপ গ্র্যান্টের অধীনে আমেরিকায় শিক্ষাসফর করেন।
১৯৫৮ সালে সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। ১৯৬৪ সালে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করেন। ১৯৬৫ সালে 888sport appর সরকারি চারু ও কারুকলা মহাবিদ্যালয়ে প্রাচ্যকলা বিষয়ের শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে প্রথম শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭২ সালে বেসরকারি উদ্যোগে 888sport live chat – প্রদর্শনকেন্দ্র ‘কলাভবন’ যেটি এখন 888sport apps 888sport live chatকলা একাডেমীর চট্টগ্রাম কেন্দ্র সেটি গড়ে তোলেন। ১৯৭৩ সালে চট্টগ্রাম চারুকলা কলেজ প্রতিষ্ঠায়ও ছিলেন মুখ্য উদ্যোক্তা। ১৯৮১ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরি ত্যাগ করে 888sport appয় স্থায়ীভাবে চলে আসেন এবং মিরপুরে ট্যাপেস্ট্রি কারখানা গড়ে তোলেন। ১৯৮৪ সাল ট্যাপেস্ট্রি পল্লির খসড়া প্রণয়ন করেন। তাঁর অকালপ্রয়াণ সম্ভাবনাময় এই 888sport live chatমাধ্যম বিকাশের পথ বাধাগ্রস্ত করে।
প্রদর্শনীতে রশিদ চৌধুরীর আঁকা চিত্রকর্মের পাশাপাশি তাঁর করা ট্যাপেস্ট্রি কাজের দেখা পাওয়া গেল। এমনকি তাঁর শিক্ষকজীবনে চমৎকার হস্তাক্ষরে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য প্রশ্ন তৈরি ও নম্বর দেওয়ার জন্য সাজানো – গোছানো শিটও যুক্ত হয়েছে! একজন সম্পূর্ণ 888sport live chatী ও 888sport live chatের শিক্ষককে তুলে ধরার চেষ্টা কিউরেটরের।
আমরা জানি, রশিদ চৌধুরী তাঁর শিক্ষার্থীজীবনে পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্ট রীতিতে ছবি এঁকেছেন। স্পেনের মাদ্রিদ ও ফ্রান্সের প্যারিসে তাঁর 888sport live chatশিক্ষা নিজের দেশ ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধ বিষয়ের প্রতি তাঁর মনোনিবেশকে নিশ্চিত করে। তিনি বাঙালির মিথ বা পৌরাণিক কাহিনির চিত্রকল্প তৈরিতে আকৃষ্ট হন। বিশেষ করে নদীমাতৃক বাংলার উর্বরতার নানা প্রতীক ফসলাদি, বৃক্ষ, হিন্দু মিথের ক্ষমতাধর দেবী মনসা, প্রাচুর্যের দেবী লক্ষ্মীর প্রতীক প্রয়োগ করে তিনি লোকবাংলার অন্তরকে বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং দর্শকদের সামনে সেগুলিকে সহজ-সাবলীল রং, রেখা ও ছন্দে তুলে ধরেছেন। তাঁর ট্যাপেস্ট্রিতেও লোকজীবনের সেই গল্প, ঐশ্বর্য, রং ও রেখার মিশ্রণ, গতিময় বিন্যাসের দেখা পেয়ে যাই।
জলরঙে আঁকা রশিদ চৌধুরীর মা ও তার কন্যাশিশুর অবয়বিক একটি চিত্র এ-প্রদর্শনীতে দেখলাম – যেটি মাতৃশক্তির এক প্রতীকী চিত্রায়ণ। এর পরের কাজগুলিতেও সেই মাতৃত্বশক্তির অবতারণা। তবে অবয়বিক ভাব ও এসব চিত্রপটে একাধিক 888sport promo codeর শরীরী উপস্থিতি থাকলেও এখানে তাদের সংহতিই প্রধান হয়ে উঠেছে। এ-সময়ের 888sport promo code-আন্দোলনের ঐক্য ও বর্তমান যৌক্তিকতাকেই যেনবা তুলে ধরে সেসব চিত্র।
888sport app কাজের মধ্যে কয়েকটি রেখাঙ্কন পাওয়া গেছে। এর একটিতে হাতির ছন্দময় গঠন, অন্যটিতে ভারি ও মোটা ফ্রেমের চশমাসমেত 888sport live chatীর আত্মপ্রতিকৃতি! দুর্ভাগ্যবশত এখনকার প্রজন্ম রশিদ চৌধুরীর করা বেশিরভাগ কাজ কিংবা তাঁর ছবি দেখার সুযোগ থেকে বঞ্চিত! সেক্ষেত্রে চলমান প্রদর্শনী অকালপ্রয়াত 888sport live chatীর সৃজন ও জীবন সম্পর্কে দর্শকের তৃষ্ণা নিবারণে খানিকটা সহায়ক হলো।
মুর্তজা বশীরের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট 888sport appয়। মৃত্যু ২০২০ সালের ১৫ আগস্ট। ১৯৪৯ সালে তিনি 888sport appর সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হন। তিনি ভাষা-আন্দোলনে সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত তিনি 888sport appর গভর্নমেন্ট আর্ট ইনস্টিটিউটে 888sport live chatপাঠ নিয়ে প্রথম বিভাগে স্নাতক করে কলকাতা আশুতোষ মিউজিয়াম থেকে 888sport live chat – সমালোচনায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ সনদ লাভ করেন। ১৯৫৬ থেকে ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত তিনি ইতালির ফ্লোরেন্সে অ্যাকাদেমিয়া দ্য বেল্লে আর্তিতে চিত্রকলা ও ফ্রেস্কো বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ এবং ১৯৭১ থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত প্যারিসের ইকোল ন্যাসিওনাল সুপিরিয়র দ্য বোজ আর্তে অধ্যয়ন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে তিনি দীর্ঘদিন অধ্যাপনা করেছেন।
মুর্তজা বশীর বহু মাধ্যমে কাজ করে নিজের সৃজনকে বৈচিত্র্যময়তায় মেলে ধরেছেন। তিনি রেখাচিত্র, ছাপচিত্র, জলরং, তেলরং, মিশ্রমাধ্যম, ম্যুরাল করেছেন। তেলরঙে তাঁর সমধিক সিদ্ধি। বেশ কয়েকটি চিত্রমালা করেছেন তিনি। এগুলো হচ্ছে – দেয়াল, শহিদ – শিরোনাম, পাখা, রমণী, কলেমা তৈয়বা প্রভৃতি। শক্তিশালী অংকন, রঙের সুমিত প্রয়োগ এবং সমাজচৈতন্যে 888sport live chatীর সংগ্রামী দৃষ্টিভঙ্গি তাঁকে সমসাময়িক 888sport live chatীদের থেকে স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে। আরেকটি অনন্য গুণ 888sport live chat – অভিযাত্রায় তাঁকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত করেছে, সেটি হলো – 888sport live footballসাধনা ও ইতিহাস নিয়ে তাঁর নিরলস গবেষণা। যৌবনে তিনি live chat 888sport 888sport live chatেও যুক্ত হয়েছিলেন।
888sport live chatীরা নানা সময়ে প্রচুর রেখাচিত্র করেন। মুর্তজা বশীর রেখাংকনে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। এ-প্রদর্শনীতে এর অনেক নমুনা প্রদর্শিত হয়েছে। একটি রেখাচিত্রে মৃত্যুপথযাত্রী এক বৃদ্ধের যন্ত্রণাক্লিষ্ট অবয়বকে অসামান্য দক্ষতায় তুলে ধরেছেন বশীর। তাঁর জীবনব্যাপী করা সিরিজচিত্রের অনেকটার দু-একটা নমুনা এখানে আছে। যেমন পাখা হাতে রমণী, দেয়াল, এপিটাফ ইত্যাদি। প্রদর্শনীতে মুর্তজা বশীরের অংশগ্রহণ সবচেয়ে বেশি অনুভূত হয়েছে। এর কারণ – তিনি দীর্ঘজীবী হয়েছেন, বিচিত্র ধরনের কাজও করেছেন।
দেবদাস চক্রবর্তীর জন্ম ১৯৩৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর শরীয়তপুরে। মৃত্যু ২০০৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারিতে।
তিনি ১৯৫৬ সালে আর্ট কলেজ থেকে বিএফএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৭৭-৭৯ পর্যন্ত পোল্যান্ড সরকারের বৃত্তি নিয়ে তিনি ওয়ারস থেকে ছাপচিত্রে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন।
তিনি ’৫৮ থেকে ’৭০ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন কৃষি তথ্য অধিদফতরের সিনিয়র ডিজাইনার হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালে পটুয়া কামরুল হাসানের নেতৃত্বে গঠিত মুজিবনগর সরকারের ডাইরেক্টরেট অব প্রেস পাবলিসিটি, ইনফরমেশন অ্যান্ড ব্রডকাস্টিং ডিপার্টমেন্টের ছয় সদস্যের অন্যতম ছিলেন তিনি।
স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় প্রকাশিত ‘বাংলার হিন্দু, বাংলার খ্রিস্টান, বাংলার বৌদ্ধ, বাংলার মুসলমান – আমরা সবাই বাঙালি’ শিরোনামের অসাধারণ পোস্টারটিসহ আরো অনেক জননন্দিত পোস্টারের নকশা করেন 888sport live chatী দেবদাস চক্রবর্তী।
১৯৭০-৮০ সময়ে তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে শিক্ষকতা করেন। ১৯৯০ সালে তিনি রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘888sport cricket BPL rateে পদক’ লাভ করেন। ২০০৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি 888sport appয় তাঁর প্রয়াণ ঘটে।
দেবদাস চক্রবর্তী নানাবিধ মাধ্যমে ছবি এঁকেছেন। স্কেচ করেছেন, জলরং-তেলরঙে অজস্র কাজ করেছেন। শেষ বয়সে ক্যানভাসে অ্যাক্রিলিক মাধ্যমেও ছবি এঁকেছেন তিনি। আর ডিজাইনারের চাকরি করতে গিয়ে বিস্তর গ্রাফিকস করেছেন।
ফিগারেটিভ কাজ যেমন করেছেন, আবার নকশাধর্মী ফর্মে নির্বস্তুক ছবি এঁকেছেন। এসব কাজের ধরন এমন যেন চিত্রপটে তিনি নানা বর্ণিল ফুল ফুটিয়েছেন! মানুষের মনের ভেতরকার সৌন্দর্যকে তিনি তুলে ধরেছেন। এমন কয়েকটি চিত্রকর্ম প্রদর্শিত হয়েছে।
নিজে একজন মুক্তিযোদ্ধা 888sport live chatী – মুক্তিযুদ্ধকালে বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া বর্বর পাকিস্তানিদের অত্যাচার, নির্যাতন ও গণহত্যা নিয়েও তিনি ছবি এঁকেছেন।
সমসাময়িক তিন বন্ধু888sport live chatী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের সহকর্মীর সৃজনকে একত্র করে এক ছাদের নিচে উপস্থাপন করার গুরুকৃত্যের জন্য 888sport live chatী অধ্যাপক ঢালী আল মামুনের প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা! এবং গুরুত্বপূর্ণ এই প্রদর্শনী আয়োজন করার গুরুদায়িত্ব পালনের জন্য বেঙ্গল ফাউন্ডেশনকে অজস্র ধন্যবাদ। ছবি : বেঙ্গল ফাউন্ডেশন


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.