এক বিদগ্ধ রুচিমান ভদ্রলোক আবুল হাসনাত

কয়েকদিন আগে কালি ও কলম পত্রিকার সহকারী সম্পাদক আশফাক খান সাহেবের কাছ থেকে একটি ই-মেইল বার্তা পাই যে কালি ও কলম সম্পাদক আবুল হাসনাতকে 888sport app download for android করে একটি বিশেষ 888sport free betর পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে যদি আমি ওঁর সম্পর্কে একটি ছোট লেখা লিখি – এই অনুরোধ। সঙ্গে লুভা নাহিদ চৌধুরী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি, যা পড়ে জানতে পারলাম গত ১ নভেম্বর ২০২০ কালি ও কলম পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক আবুল হাসনাত পরলোকগমন করেছেন। এই খবরটা আমার কাছে এতই আকস্মিক ও বেদনাদায়ক যে, আমি সঙ্গে সঙ্গে সুশীল সাহা, যিনি কলকাতায় কালি ও কলমের সঙ্গে যুক্ত আছেন, তাঁকে ফোন করি এবং জানি যে সত্যিই হাসনাত সাহেব আর নেই।

হাসনাত সাহেবের সঙ্গে আমার পরিচয় পাঁচ-ছয় বছরের। সেই পরিচয় গভীর না হলেও ওঁর ব্যবহারিক স্নিগ্ধতা আমাকে মুগ্ধ করেছিল। সময়টা বোধহয় ২০১৪ সালের একদিন সন্ধেবেলা; 888sport apps থেকে আনিসুজ্জামান ও আবুল হাসনাত কলকাতায় আমাদের বাঙ্গুর অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে এলেন আমার শ্বশুরমশাই কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করতে। বাড়িতে ওঁর কাছে বিশিষ্ট কেউ এলেই নীরেনকাকা আমাকে ডাকতেন এবং তাঁদের সঙ্গে আলাপ করিয়ে দিতেন। সেদিনও সেইভাবেই ওঁদের সঙ্গেও আলাপ হয়ে গেল। শুনলাম ওঁরা নীরেনকাকার কাছে প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন যে, 888sport app থেকে প্রকাশিত 888sport live football ও সংস্কৃতির মাসিক পত্রিকা কালি ও কলম কলকাতা থেকেও প্রকাশিত হবে এবং নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী হবেন তার সম্পাদক। নীরেনকাকা রাজি হলেন এবং ওঁর ইচ্ছায় আমিও সেই পত্রিকার সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেলাম। তখন আমিও বর্তমান পত্রিকার ম্যাগাজিন সাপ্তাহিক বর্তমান ও শারদীয়া বর্তমানের সম্পাদক পদ থেকে সদ্য অবসর নিয়েছি। প্রস্তাবনা হয়ে গেলেও নানান জটিলতা কাটিয়ে পত্রিকা প্রকাশিত হতে প্রায় এক বছর লেগে গিয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে হাসনাত সাহেব, আনিসুজ্জামান সাহেব বা লুভার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ছিন্ন হয়নি। ওঁরা কলকাতায় এলেই আমাদের বাড়িতে দেখা করতে আসতেন। এবং একবার ওঁদের নিমন্ত্রণে নীরেনকাকাকে নিয়ে আমি 888sport app গিয়েছিলাম এবং চার-পাঁচ দিন ছিলাম। তখন প্রতিদিনই কোনো না কোনো অনুষ্ঠান থাকত নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে উপলক্ষ করে। এছাড়াও আমরা যে গেস্ট হাউসে ছিলাম সেখানে সকাল থেকেই ওঁরা চলে আসতেন আমাদের সঙ্গ দেবার জন্য। প্রাতঃরাশের পর সেখানকার খাবারঘরে আড্ডা বসত। খুবই উচ্চমার্গের আলোচনা হতো। সেখানে আনিসুজ্জামান, আবুল হাসনাত তো উপস্থিত থাকতেনই কখনো কখনো মাহবুব তালুকদার আসতেন। একদিন সকালে মাহবুব তালুকদার এসে আমাদের সবাইকে ওঁর বাড়িতে নিয়ে গেলেন। সেবার হাসনাত সাহেবের স্ত্রী ওঁর মেয়ের কাছে বিদেশে ছিলেন বলে আমাদের ওঁর বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেননি। এ-কথাটা কয়েকবারই দুঃখ করে বলেছিলেন হাসনাত সাহেব।

এরপর তো পত্রিকা প্রকাশিত হলো এবং আমরাও কাজে যুক্ত হয়ে গেলাম। নীরেনকাকা প্রতি 888sport free betয় সম্পাদকীয় লিখে দিতেন এবং 888sport app থেকে পাতা তৈরি হয়ে এলে আমি সেটা দেখে দিতাম। আমার মতো আমি এডিট করতাম এবং পত্রিকা বার হলে দেখেছি সেগুলো প্রতিটি মান্য করা হয়েছে। এই সময় হাসনাত সাহেব প্রায় প্রতি মাসেই কলকাতায় আসতেন এবং আমাদের বাড়ির মিটিংয়ে আমরা বিভিন্ন লেখা নিয়ে আলোচনা করতাম। আমার কোনো লেখা তেমন পছন্দ না হলে আমি অনায়াসে সেই মত ওঁকে জানাতাম। উনি কোনোদিন তাতে বিরক্ত হননি। বরং পত্রিকার ব্যাপারে সবসময় আমার সঙ্গে ওঁর ই-মেইলে যোগাযোগ হতো। কখনো বলেছেন, ‘কে.জি. সুব্রহ্মনিয়াম সম্পর্কে এ-লেখাটি ঠিক আছে কিনা নীরেনদাকে দেখিয়ে নেবেন। প্রচ্ছদে ওঁর পেইন্টিং যাচ্ছে। পরিচিতি হিসেবে প্রত্যেক 888sport free betর মতো ছোট লেখা।’ কখনো কোনো লেখা পাঠিয়ে বলেছেন, ‘কাকলি বৌদি ঈদের লেখা পাঠালাম।’ আবার কখনো বলেছেন, ‘আগস্ট 888sport free betর যে-888sport liveগুলো সূচিপত্রে উল্লিখিত হবে তা পাঠালাম। দেখে দেবেন।’ কোনো সময় জিজ্ঞেস করেছেন, জুলাই মাসের 888sport free betয় ঈদের লেখা দিলে কলকাতার পাঠকের ভালো লাগবে কি না। যতদিন কলকাতা থেকে কালি ও কলম প্রকাশিত হয়েছে ততদিনই এরকম নিরন্তর যোগাযোগ আমাদের মধ্যে ছিল। এমনকি ২০১৭-র পুজোর আগে কালি ও কলম যখন কলকাতা থেকে প্রকাশিত হওয়া বন্ধ হয়ে গেল, সেই খবরটা জানাতে হাসনাত সাহেব 888sport app থেকে কলকাতা এসেছিলেন এবং নীরেনকাকাকে ও আমাকে আলাদা আলাদাভাবে ওদের অপারগতার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন। এই ভদ্রতার তুলনা হয় না। ২০১৮-র ডিসেম্বরে নীরেনকাকার মৃত্যুর পরেও উনি সস্ত্রীক আমাদের বাড়িতে এসে ওঁর সমবেদনা জানিয়ে গেছেন। কাজের দিন ছাড়াও আলাদাভাবে একদিন এসে আমাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে গেছেন। ওঁরই কথায় আমি কালি ও কলমে  নীরেনকাকা সম্পর্কে একটা লেখাও লিখি।

সেই ২০১৪ সালে যখন 888sport app গিয়েছিলাম তখন হাসনাত সাহেব আমাদের নিয়ে গিয়েছিলেন ওদের অফিস দেখাতে। সেখানেই লাঞ্চ করেছিলাম। বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সেই অফিস খুবই সুন্দর লেগেছিল। তারপর আবার ২০১৯-এর মার্চে আমরা ১০-১২ জন শিকড়ের সন্ধানে 888sport appsে যাই। ফরিদপুরের রাজবাড়ী, উলিপুর ইত্যাদি আমাদের বাবা-মায়েদের জন্মস্থানগুলো একবার দেখব – এই ছিল উদ্দেশ্য। সঙ্গে চট্টগ্রাম, 888sport app সবই ঘুরে দেখেছিলাম। তখন মাহবুব তালুকদার সাহায্য না করলে আমাদের 888sport slot game অত সফল হতো না যেমন সত্যি, তেমনি ভোলার নয় সেবারে এক সন্ধ্যায় বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের আতিথেয়তার কথাও। তখন আর পুরনো অফিস নেই – অপূর্ব এক আলো-আঁধারিতে ছাদে হয়েছিল নৈশভোজ। উপস্থিত ছিলেন আনিসুজ্জামান, আবুল হাসনাত, শ্রীমতি হাসনাত, লুভা নাহিদ চৌধুরী আরো অনেকে। সম্পূর্ণ বাড়িটা ঘুরিয়ে দেখিয়েছিলেন লুভা। সেই সন্ধ্যার 888sport sign up bonus আজো মেদুর করে। এর মধ্যে হঠাৎই চলে গেলেন আনিসুজ্জামান। খবরটা কাগজে দেখেছিলাম। তারপর হাসনাত সাহেব দু-তিন দিন ফোন করেছিলেন, আনিসুজ্জামানের 888sport app download for androidে ওঁরা একটা বই করছেন তাতে লেখা দেবার জন্য। আমি লেখাটা দিতে পারিনি। তার জন্য উনি আমাকে একটুও জোর করেননি। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি যে ওঁর জন্য লিখতে হবে, আমি সত্যি ভাবতে পারিনি। ‘চাহি না রহিতে বসে ফুরাইলে বেলা’, এটা হয়তো আমরা অনেকেই ভাবতে পারি কিন্তু ‘তখনই চলিয়া যাব শেষ হলে খেলা’, এটা কি বলতে পারি? হাসনাত সাহেবের আত্মার শান্তি কামনা করে লেখাটি শেষ করি।