এক মাতাল মেয়ের দিবাস্বপ্ন

মূল : ক্লারিস লিস্পেক্টরস

888sport app download apk latest version : মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়

মেয়েটির কাছে মনে হলো যে, ট্রলিকারগুলো ঘরটার মধ্যে দিয়ে যেন ওপাশে চলে যাবে, যেহেতু গাড়িগুলো তার প্রতিফলিত ছবিটাকে যেন কাঁপিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। সে তার এই অবসরের মুহূর্তে তার চুল অাঁচড়াচ্ছিল ড্রেসিং টেবিলের সামনেটাতে। যে-ড্রেসিংটেবিলটাতে আছে

তিন-তিনটে আয়না, আর তার সরল সাদা বাহুগুলো সন্ধেবেলার ঠান্ডায় যেন কেঁপে-কেঁপে উঠছিল। আয়নাগুলো কাঁপছিল, কিন্তু সে তার চাওনি সরিয়ে নেয়নি, কখনো যা থাকে অন্ধকারে 888sport app, যখন তা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। বাইরে, ওপরের একটি জানলা থেকে কী একটা যেন ভারীমতো জিনিস, ভারী কিন্তু ফাঁপা মাটির ওপর এসে পড়ল। যদি তার স্বামী আর

বাচ্চাকাচ্চারা বাড়ির মধ্যে থাকত ভাবনাটা তাহলে তার মধ্যে দানা পাকিয়ে উঠত যে, এর জন্য তাদেরই দোষ দিতে হবে। তার চোখগুলো আয়নায় তার প্রতিফলনের ওপর থেকে সরে যায়নি, তার চিরম্ননি বেশ জোরেই কাজ করে যাচ্ছিল আর তার খোলা ড্রেসিং গাউনটা আয়নাগুলো দেখিয়ে দিলো কয়েকটি মেয়ের সত্মনগুলো।

‘সন্ধেবেলার খবরের কাগজ’ চেঁচিয়ে বলল, খবর-কাগজের হকারটি রিয়াচুয়েলো স্ট্রিটের রাসত্মাটায় হাওয়ার মধ্যে, কিছু একটা যেন কেঁপে-কেঁপে উঠল, যেন তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট হয়ে ছিল। সে তার চিরম্ননিটি ড্রেসিং টেবিলের ওপর ছুড়ে ফেলল আর যেন স্বপ্নের ঘোরে গাইতে লাগল – ‘কে দেখেছিল ছোট্ট  পায়রাটাকে… যখন তার জানলার পাশ দিয়ে চলে গিয়েছিল… আর মিনোর বাইরে অনেক দূরে উড়ে চলে গিয়েছিল’; কিন্তু হঠাৎ কেমন যেন উত্ত্যক্ত হয়ে উঠে দুম্ করে গানটা বন্ধ করে দিলো একটা ফ্যানের মতো।

সে নিচে শুয়ে পড়ল আর নিজেকে অধীরভাবে হাওয়া করতে লাগল একটা খবরের কাগজ দিয়ে, যেটা ঘরের মধ্যে খসখস একটা আওয়াজ তুলল। সে অাঁকড়ে ধরল বিছানার চাদরটাকে, তার গন্ধ নাক দিয়ে টেনে নিতে-নিতে আর তার ওপর শুকনো এমব্রয়ডারি করা নকশাগুলোকে, তার লাল রং করা নখগুলো দিয়ে চেপ্টে দিলো। তারপর প্রায় যেন মৃদু হেসেই সে নিজেকে আবারো একবার খবরের কাগজটা দিয়ে হাওয়া করতে লাগল। ওহ্! মা গো! – সে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল আর মৃদু হাসতে লাগল। সে দেখতে পেল তার উজ্জ্বল মৃদু হাসির ছবিটাকে। সেই স্ত্রীলোকেরই মৃদু হাসি যে এখনো যেন তরম্নণীই আছে, আর সে নিজের কাছেই মৃদু মধুর হেসে চলল, তার চোখদুটো বুজে এখনো জোরে-জোরে নিজেকে একটানা হাওয়া করে দিতে-দিতে। ওহ্ মা গো! সে হয়তো চঞ্চল পাখা নেড়ে-নেড়ে রাসত্মা থেকে উড়ে চলে আসত কোনো প্রজাপতির মতো।

‘কে আছো ওখানে! একবার আন্দাজ করতো কে আমায় আজকে দেখতে এসেছিল?’ সে গুনগুন করে বললে যেন একটা মনমাতানো কথার বিষয় হিসেবে যেন কোনো চেনা আলোচনাই চলছে। ‘ভাবতে পারছো না তো বল, খুলে বল আমায়।’ সেই চোখগুলো তাকে জিগ্যেস করল এক বিজয়িনীর হাসি হেসে, সেই বিষাদ-বিধুর চোখগুলো যা বিবর্ণ একটা মুখের ওপর বসানো যা নিজেকে যেন এতটাই ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে দেয় ‘মারিয়া কিতেরিয়া, আমার প্রিয় মারিয়া!’ সে উত্তর দিলো একটু যেন শেস্নষের ভঙ্গিতেই আর তার হাত ঊরম্নর ওপর ‘আর কে বলতো, আমরা কি জিগ্যেস করতে পারি, ওই মেয়েটি কে হবে বলত?’ তারা যেন বিজয়িনীর ভঙ্গিতেই বারে-বারে চাপ দিতে লাগল কিন্তু এখন মুখ-চোখে বিশেষ কোনো অভিব্যক্তিই নেই। ‘তুমি’ সে থেমে গেল, একটু যেন বিরক্তির কারণেই। কী যে একঘেয়ে বিরক্তিকর!

আহা কেমন যে মিষ্টিমধুর ঘরখানা এখানেই সে আছে, নিজেকে হাওয়া করে যাচ্ছে এখানে ব্রাজিলে। জানলার খড়তলির মধ্যে আটকা পড়ে গেছে সূর্য আর দেয়ালের গায়ে আলোর ধারা কেঁপে-কেঁপে যাচ্ছে যেন গিটারের কোনো তার। রিয়াচুয়েলো স্ট্রিট হাঁসফাঁস করে কেঁপে-কেঁপে উঠল ট্রলিকারগুলোর ওজনের তলায়

যে-ট্রলিকার এসেছে মেম-ডি সাঁ স্ট্রিট থেকে। কৌতূহলী আর অধীর, সে কান পেতে শুনতে লাগল ড্রয়িংরম্নমের মধ্যেকার চীনে কেবিনেটের কেঁপে-কেঁপে ওঠা প্রতিধ্বনি। অধীরভাবে মেয়েটি পাক খেয়ে গেল মুখটা নিচের দিকে করে আর একটা শৌখিন রং করা পায়ের আঙুলগুলো বাড়িয়ে দিয়ে, সে অপেক্ষা করে রইল খোলাচোখে তার পরের ভাবনাটার জন্য। ‘সে কে দেখতে পেয়েছিল হাতড়ে-হাতড়ে খুঁজেছিল’ নিজেকে সে বলতে লাগল যেন কোনো ছড়া আওড়াচ্ছে, যা সবসময়ই শেষ হয় কোনো প্রবচনের মতো। শেষটায় যতক্ষণ না সে ঘুমে ঢলে পড়ল, তার মুখটা হাঁ করে খোলা তার মুখের লালা বালিশটাতে দাগ ধরিয়ে দিলো।

সে শুধু তখনই জেগে উঠল যখন তার স্বামী ঘরে এসে ঢুকল, যখন সে ফিরে এলো তার কাজ থেকে। মেয়েটি কোনো ডিনার খেতে চাইল না, তার স্বপ্নগুলোকেও ত্যাগ করতে চাইল না। আর সে ফের ঘুমে ঢলে পড়ল : তার স্বামীকে বরং তৃপ্তিভরে খেতেই দাও লাঞ্চের সময়কার খাবারের বাকি অংশটুকু দিয়ে।

আর এখন যখন বাচ্চা-কাচ্চারা গাঁয়ের বাড়িতে পিসিদের সঙ্গে জাকারেইপাজুয়া, মেয়েটি তাদের গরহাজিরার সুযোগটাই নিল, যেমনভাবে খুশি তার দিনটাকে শুরম্ন করার জন্য অস্থির আর খেয়ালখুশিতে ভরা তার বিছানার ওপর… হয়তো অমনতরো কোনো খামখেয়ালের মতোই। তার স্বামী তার সামনে এসে দেখা দিলো, এর মধ্যে সে পোশাক-আশাক পরে তৈরি, মেয়েটি আদপেই জানে না প্রাতরাশ হিসেবে তার স্বামী কী-কী তৈরি করেছিল। সে অপেক্ষা করে রইল, তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখল তার পরনের স্যুটটাকে ওটাকে ঝাড়পোছ করে দিয়ে সাফ করে দেবে কী না ভাবতে-ভাবতে… মেয়েটি থোড়াই কেয়ার করে আজ তার স্বামীকে শহরে গিয়ে ব্যবসাপত্তরের ওপর নজর দিতে হবে কী না। কিন্তু যতই তার স্বামী তাকে চুমু খাবে বলে মুখটাকে নোয়াল মেয়েটির চপল খেয়াল একটা শুকনো পাতার মতো মড়মড় করে উঠল।

‘আমাকে আগ বাড়িয়ে আদর কোরো না!’

 

 

‘এ আবার কী মর্জি হলো তোমার, কোন শয়তানের খেয়াল?’ পুরম্নষটি জিগ্যেস করলে তার 888sport promo codeকে বিস্ময়ে ভরে গিয়ে, যেই সে ভেবেছিল এক্ষুনি তাকে বেশ আদর করবে।

একগুঁয়ের মতো মেয়েটি শুয়ে রইল জবাবে কী যে বলবে তা আদপেই জানি না, আর নিজেকে তার এমন উদাসীন আর বিরাগী মনে হলো যে, সে এমনকি আদপেই বুঝতে পারল না মানানসইভাবে উত্তরে সে কী বলবে। আচমকাই সে তার মেজাজ হারিয়ে বসল, ‘গোলস্নায় যাও!… আমার ওপর এমনভাবে নড়েচড়ে বেড়াচ্ছ যেন তুমি কোনো একটা হুলো বেড়াল।’

তার স্বামীকে মনে হলো আরো স্পষ্টভাবে যেন ভাবতে পারে আর বলল দৃঢ় গলায় – ‘নিশ্চয় তোমার কোনো অসুখ করেছে।’ মেয়েটি তার এই মমত্মব্য মেনে নিল, একটু অবাকও হলো আর কেমন আবছাভাবে যেন মনে হলো তার স্বামী তাকে তোয়াজ করছে।

সে তার বিছানায় সারাটা দিনই শুয়ে রইল সারা বাড়িটার সত্মব্ধতাকে কান পেতে শুনতে-শুনতে যেহেতু বাচ্চাদের হুটোপাটির কোনো আওয়াজ নেই, তার স্বামীও নেই যে আজ খাওয়া-দাওয়া সারবে সহজেই। মেয়েটির রাগ যেন একটানা আর তীব্র। সে শুধু একবার বিছানা ছেড়ে উঠল বাথরম্নমে যাবে বলে যেখান থেকে সে ফিরে এলো মেজাজ হারিয়ে আর অপমানিত হয়ে।

সকালবেলাটা বদলে গেল দীর্ঘ বিশাল এক বিকেলবেলায় তারপর বদলে গেল একটা অগভীর রাতে, যেটা খুব সহজ-সরলভাবে ঘুরে বেড়াল আসত্ম বাড়িটার মধ্যে।

মেয়েটা এখনো তার বিছানায় শামিত্মতে ভরা আর খোলামেলা। মেয়েটি প্রেমে পড়ে গিয়েছে… সে সেই লোকটার কাছ থেকে ভালোবাসা পাওয়ার প্রত্যাশায় ভরে রইল অমত্মত একদিন যাতে তাকে ভালোবাসতে পারে। কে জানে এমন তো মাঝেসাঝেই হয়, কোনো অপরাধবোধ বা ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন ছাড়াই প্রেমিকযুগলের দুজনের মধ্যে বিছানায় শুয়ে-শুয়ে মেয়েটি ভাবছে আর ভাবছে আর যেন হেসেই উঠছে লোকে যেমন করে কোনো গল্প-গুজব শুনে হেসে ওঠে। ভাবছে আর ভাবছে। কী নিয়ে ভাবছে? যেন সে জানে না। আর তাই সে সেখানেই ঠায় শুয়ে রইল।

পরের মিনিটে সে উঠে পড়বে রাগে ভরে গিয়ে। কিন্তু সেই প্রথম মুহূর্তের দুর্বলতায় তার মাথাটা যেন ঘুরছে আর ঘরটার মধ্যে সে ঘুরপাক খেতে-খেতে শেষটায় কেমন করে যেন হাতড়ে-হাতড়ে খুঁজে পেল স্রেফ তার বিছানায় ফিরে যাওয়ার রাসত্মাটা, সে একেবারে তাজ্জব হয়ে গেছে হয়তো এটা সত্যিই ঘটেছে। ‘এই মেয়েটা, শোন, তুই যেন আমায় নিয়ে কোনো অসুখ-বিসুখ বাধিয়ে বসিস না।’ সে কেমন যেন সন্দেহের সুরে বিড়বিড় করে বলল। সে তার হাতটা দিয়ে কপাল ছুঁয়ে দেখল তার কোনো জ্বর-টর হয়নি তো।

সেই রাতে যতক্ষণ না সে ঘুমিয়ে পড়ল তার মনটা যেন আগের চাইতেও আরো আরো বেশি প্রলাপমুখর হয়ে উঠল – কমিনিটের জন্য! – যতক্ষণ না সে পাশ ফিরে শুয়ে চটপট ঘুমিয়ে পড়ল তার স্বামীর পাশে শুয়ে নাক ডাকাতে-ডাকাতে।

সে অনেক দেরি করে জেগে উঠল, আলুগুলো অপেক্ষা করে আছে কখন তাদের খোসা ছাড়ানো হবে, সেই সন্ধেবেলাতে তাদের গাঁয়ের বাড়ি থেকে বাচ্চা-কাচ্চাদের ফিরে আসার কথা। ‘হা ভগবান, আমি যে আমার আত্মসম্মান হারিয়ে ফেলেছি, সত্যি! আজকে তো আমার মোজা-টোজা সব কেচে সাফ করে দেওয়ার কথা… তুই কী যে একটা অলস মেয়েছেলে হয়ে উঠেছিস!’ সে নিজেকে

বারে-বারে গাল দিলে, একটু কৌতূহলী আর খানিকটা খুশি।… আজকের বাজারহাটও করতে হবে, মাছের কথাটা মনে রাখতে হবে, এর মধ্যেই কতটা যে দেরি হয়ে গেল এই রোদে ভরা সকালবেলাটায় হুড়মুড় করে কত কিছু করতে-করতে।

কিন্তু শনিবার রাত্তিরে তারা গেল টিরাডেন্টেস স্কয়ারের শুঁড়িখানায় এক ধনী ব্যবসায়ীর নিমন্ত্রণে, মেয়েটি তার নতুন পোশাক পরে আছে, যে-পোশাকের গায়ে কোনো চোখ-ধাঁধানো অাঁচল নেই, যেটা বানানো হয়েছে ভালো কাপড়ে এমন এক পোশাক যেটা সে সারাজীবন পরতে পারবে, শনিবারের রাতে টিরাডেন্টাস স্কয়ারে মদ খেয়ে মাতাল একটু বেসামাল কিন্তু তার সঙ্গে আছে তার স্বামী তাকে ধরে-ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্যে আর অন্য পুরম্নষের সামনে খুবই নম্র হয়ে যে-মানুষটা ছিল অনেক বেশি মার্জিত আর ধনী তার সঙ্গে আলাপ জমানোর চেষ্টা করে-করে কারণ মেয়েটি তো আর কোনো গাঁয়ের মেয়ে নয় আর সে এর মধ্যেই জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছে রাজধানীর অভিজ্ঞতায়। কিন্তু এত মাতাল হয়ে গেছে যে, সে আর নিজের পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াতেই পারছিল না। এবং যদি তার স্বামী মাতাল না হয়ে গিয়ে থাকে তা শুধু এই জন্যেই যে, সে ওই ব্যবসায়ীকে অসৌজন্যতা দেখাতে চায় না, আর অসম্মানও করতে চায় না, আর অনুগত ভঙ্গিতে সে সম্মান দেখিয়েই বেটাল পদপাতের দায়িত্ব অন্যদের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। তার আচার-ব্যবহার, হাবভাব আমন্ত্রণ আভিজাত্যে ভরা উপলক্ষের সঙ্গে মানিয়ে যেত। কিন্তু তার স্ত্রীকে এটা এমন এক তাগিদ জুগিয়েছিল যে, সে প্রায় পুরোপুরি হেসেই ফেলত! সে তার স্বামীকে এমন অপছন্দ করত যে, ভাষায় বুঝিয়ে দেওয়া যাবে না! সে তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে দেখল নতুন স্যুট-বুট পরা, আর দেখে তাকে বিষম হাস্যকর মনে হলো!… এতটাই মাতাল হয়ে গিয়েছে যে, মেয়েটি এখন আর নিজের পায়ে দাঁড়াতেই পারছে না কিন্তু 888sport promo code হিসেবে সে তার আত্মসম্মান খুইয়ে বসতে চায় না। আর সে সবুজ মন তার নিজের দেশ পর্তুগাল থেকে আনা তার গেলাশ থেকে বারে-বারেই অপসৃত হয়ে যাচ্ছিল।

যখন সে মাতাল হয়ে পড়েছে যেন সে রোববারের মসত্ম এক লাঞ্চ খেয়েছে সবকিছু যা তাদের সত্যিকার স্বভাব অনুযায়ী একে অন্যের চেয়ে আলাদা হয়েছিল একহাঁটু তেলের গন্ধ অন্য হাতে একটি পুরম্নষের গন্ধ; এক হাতে স্যুপের বাটি অন্যদিকে ওয়েটার – যেন অদ্ভুতভাবে তাদের সত্যিকার অনুযায়ী মিশে গিয়েছে আর পুরো জিনিসটাই অশোভনতা কিছু ছাড়া আর কিছুই নয়… খুবই অশোভন।

আর যদি তার চোখদুটো দেখায় ঝলমল করে উঠেছে অথচ হিমশীতল যদি তার চলাফেরা বিশ্রীভাবে টলমল হয়ে থাকে যতক্ষণ না সে শেষ পর্যমত্ম যেখানে টুথপিক রাখা আছে তার তলায় তার নিজেকে স্বাচ্ছন্দ্যের চাইতে অনেক দূরে বলে মনে হলো… সেখানেই ছিল সেই রাশি-রাশি মেঘ যা তাকে কোনো চেষ্টা ছাড়াই তাকে নিয়ে আসতে পারত। তার ফোলা-ফোলা ঠোঁট তার দাঁতগুলো সাদা আর তার সারা শরীরটা ফুলে-ফেঁপে উঠেছে মদে। আর নিজেকে মাতাল বলে বোধ করার সেই মিথ্যা দম্ভ তাকে এতটাই সবকিছু সম্বন্ধে ঘৃণায় ভরে দিয়েছিল, তাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দিয়েছিল, আর গোলগাল করে দিয়েছিল একটা মসত্ম গরম্নর মতো।

স্বভাবতই সে কথা বলে যাচ্ছিল, যেহেতু তার কথোপকথনের কোনো সামর্থ্যও ছিল না কিংবা আলোচনার কোনো বিষয়বস্ত্তও ছিল না। কিন্তু ওই শব্দগুলো যা একটি মেয়ে আওড়ায় বা মাতাল হয়ে বলে যেন গর্ভবতী হয়ে পড়েছে অনেক কথা যা তার ঠোঁটদুটো থেকে বেরিয়ে এলো যাদের মধ্যে কোনো গোপন রহস্যও ছিল না যাকে দেখে কাউকে গর্ভবতী বলে মনে হয়। হায় ভগবান, নিজেকে তার কেমন যে আজব বলে মনে হচ্ছিল শনিবারের রাত, যে-রাতে তার প্রতিদিনকার আত্মা হারিয়ে গেছে, তার হারিয়ে ফেলে যেন ভারি খুশি ভারি সুস্থ আর আগেকার দিনগুলোর কথা তাকে যেন মনে করিয়ে দেওয়ার কথা শুধু তার ছোট-ছোট কেমন অসুস্থ হয়ে পড়া হাতদুটোর মতো – আর এই তো এখন সে এখানে তার কনুই দুটো এলিয়ে আছে লাল-সাদা খোপকাটা টেবিলক্লথের ওপর যেটাকে দেখাচ্ছিল একটা জুয়ার টেবিলের মতো। যেন গভীরভাবে আটকে গিয়েছে এক অসম্মান জানানো বিবমিষাজাগানো অসিত্মত্বের ওপর। আর তার সেই খিলখিল হাসির কী হলো?… সেই হাস্যরোলের অট্টনাদ যেটা রহস্যময়ভাবে বেরিয়ে এলো তার সাদা গলার ভেতর থেকে সেই ব্যবসায়ীর বিনম্র হাবভাবে উত্তরেই যেন, হাস্যরোলের এক অট্টনাদ যেটা নিদ্রার গভীর থেকে বেরিয়ে এসেছে, বেরিয়ে এসেছে কারো সেই নিরাপত্তার মধ্যে থেকে, যার আছে একটা অবয়ব একটা শরীর। তার গায়ের সাদা মাংস যেন এক গলদা চিংড়ির মতোই মধুর জ্যামত্ম কোনো গলদা চিংড়ির পা-গুলোর মতো আসেত্ম-আসেত্ম খেলা করছে হাওয়ার মধ্যে… সেই উদগ্র ইচ্ছা অসুস্থ হয়ে পড়ার যেটা সেই মাধুর্যকে যেন সত্যি-সত্যি কোনো বিশ্রী কিছুর মধ্যে ডুবিয়ে দেবে আর কারো যেন সেই অসৎ সমসত্ম ইচ্ছা যার একটা আসত্ম শরীর আছে।

সে কথা বলে যাচ্ছে আর কৌতূহলভরে শুনছে সে নিজে উত্তরে কী বলবে সেই ধনী ব্যবসায়ীকে। যিনি এত সদয়ভাবে তাদের নেমমত্মন্ন করেছিলেন ডিনারে। আর তাদের ভোজনের জন্য সব দাম দিয়ে দিয়েছিলেন। বিস্ময় আর কৌতূহলে ভরে গিয়ে সে শুনতে পেল উত্তরে সে কী বলতে যাচ্ছে, আর এখনো তার যা অবস্থা তাতে সে কী বলতে যাচ্ছে যা অদূরভবিষ্যতের সূচনা হিসেবে কাজ করে যাবে। এখন আর সে কোনো গলদা চিংড়ি নয় বরং তার চেয়ে অনেক কর্কশ কোনো চিহ্ন যেটা কোনো বৃশ্চিকের শরীর। আর সত্যি তো তার তো জন্মই হয়েছিল নভেম্বরে।

তার জ্বলজ্বলে আলো যেটা ভোরবেলার মধ্যে দিয়ে ঝেঁটিয়ে চলে এলো যখন কেউ ঘুমিয়ে শুয়ে আছে, এই ছিল তার মাতলামি যেটা আসেত্ম-আসেত্ম ভেসে এলো হাওয়ার মধ্যে দিয়ে।

অথচ সেই একই সময়ে সে যে সচেতনই ছিল এরকম সব অনুভূতির জন্য! এরকম সব অনুভূতির! রেসেত্মারাঁটার দেয়ালে খুব সুন্দরভাবে অাঁকা সেই ছবিটার দিকে সে যখন তাকাল তৎক্ষণাৎ সে যেন এক 888sport live chatীসত্তার আবির্ভাবে তলিয়ে গেল। সে যে সত্যি-সত্যিই বড়-বড় জিনিসের জন্য জন্মেছিল এই তথ্যটা কেউ যেন তার মাথা থেকে বের করে নিয়ে যেতে পারবে না। সে তো সবসময়ই ছিল 888sport live chatের সব অভিব্যক্তি আর রূপের পক্ষে।

কিন্তু এরকম মনোভাব! এবং শুধু যে ওই ছবিটা থেকেই চেতিয়ে উঠেছে যার মধ্যে আছে আঙুর আর পেয়ারা আর মরা মাছ। আর যার অাঁশগুলো আলো পড়ে জ্বলজ্বল করছে। তার মনের ভাবটা তাতে খানিকটা যেন উত্ত্যক্তই করে দিলো যদিও তার মধ্যে ব্যথা-বেদনার কোনো চিহ্নই ছিল না। যেন আঙুলের একটা নখ বিশ্রীভাবে ভেঙে গিয়েছে। আর সে যদি চাইত তাহলে নিজেকে সে আরো স্পর্শকাতর হওয়ার বিলাসে ভরে দিতে পারত। সে হয়তো আরো দূরে চলে যেতে পারত। কারণ সে তো একটা পরিস্থিতির দ্বারাই সুরক্ষেত হয়ে আছে, সেই সকলের মতোই সুরক্ষেত যারা জীবনের একটা ভালো অবস্থা জয় করে ফেলেছে। যেন এমন কারো মতো সে দুর্ভাগ্য থেকে বেঁচে গিয়েছে। আমি এতটাই দুর্দশায় ভরা, হে ভগবান! সে যদি ইচ্ছে করত তাহলে সে তার গেলাশটায় আরো মদ ঢেলে নিতে পারত, আর জীবনে যে-আসনটি সে অর্জন করে বসেছে, তার দ্বারাই সুরক্ষেত হয়ে থাকত। হয়ে উঠতে পারত আরো মাতাল যতক্ষণ না সে তার আত্মসম্মান খুইয়ে বসত। আর তাই আগের চেয়েও আরো অনেক বেশি মদ খেয়ে সে ঘরের চারদিকটায় ইতিউতি তাকালে আর সে কেমন যে ঘৃণা করতে লাগল সেই রেসেত্মারাঁটার নিঃসঙ্গ লোকদের।

সত্যিকার কোনো মানুষ তো এদের মধ্যে নেই। সত্যি এসব যে কতটা করম্নণ দেখাচ্ছে আর সে যে কেমন অপছন্দ করতে লাগল রেসেত্মারাঁর মধ্যেকার এই অনুর্বর লোকগুলোকে যখন সে নিজে কী না বেশ মোটাসোটা আর ভারিক্কি আর কানায়-কানায় সদয় হয়ে আছে। আর রেসেত্মারাঁটার মধ্যেকার সবকিছুকে দেখাল যেন অতীব সুন্দর। একজনের চেয়ে আরেকজন আরো সুন্দর, যেন কেউ হাজার চেষ্টা করেও অন্য কারো সঙ্গে কথা বলতে পারবে না। প্রত্যেকেই বেঁচে আছে তার নিজের জন্য আর ঈশ্বর সেখানে বর্তমান আছেন সকলের জন্যই।

তার চোখদুটো আবারো সেই 888sport promo codeটির ওপর আটকেই রইল যাকে সে দেখামাত্র ঘৃণা করতে শুরম্ন করে দিয়েছিল সেই যখন সে-ঘরটার মধ্যে প্রথম পা রেখেছিল তখন থেকেই। ঘরে ঢুকেই সে এই মেয়েটিকে দেখতে পেয়েছিল একটা টেবিলে বসে আছে, তার সঙ্গে আছে এক পুরম্নষ আর যেন পুতুলের মতো সেজে আছে একটা টুপি আর গয়নাগাটি পরে, যে-গয়নাগাটি জাল টাকার মতো ঝিকমিক করছিল, অথচ সবকিছু ছিল সুসামঞ্জস্যে ভরা আর বেশ সাজানো-গোছানো। এই যে একটা সুন্দর টুপি সে মাথায় পরে আছে!… তোমার সঙ্গে যত টাকা চাই বাজি রাখতে পারি এই কথা বলে যে, এই সবকিছু থেকে সে তার মুখ চোখের যে শালীন-সুশীল ভাব ফুটিয়ে তুলেছে তৎসত্ত্বেও সে আদপেই বিবাহিত নয়।… আর ওই চমৎকার টুপিটা তার মাথায় আটকে আছে। তার এই ভ-ামির জন্যে মোটা টাকাই সে বাজি ধরতে পারত, আর সে বরং খেয়াল রাখলে পারত যে, তার হাবভাব আর সুশীল ভঙ্গিমাই তার সর্বনাশের কারণ হয়ে উঠেছে। যতই কেননা, তাদের পূত বা পবিত্র দেখা দেখাক, তারা সব মসত্ম-মসত্ম ধাপ্পাবাজ হিসেবে চারপাশে নজর রাখবে, না হলে যে কাহিল হয়ে পড়বে! আর ওয়েটার, সে আসলে মসত্ম এক হাবাগোবা, তাকে খাবার দিয়ে যাচ্ছিল খুব চমৎকারভাবে

সাজিয়ে-গুছিয়ে পেস্নটগুলো। যখন সেই মহাধড়িবাজ লোকটা,

যে-মেয়েটির সঙ্গে বসেছিল, সে এমন একটা ভাব করতে লাগল যেন কিছুই তার নজরে আসেনি। আর সেই ধার্মিক তরম্নণী নিজেকে নিয়ে এতটাই খুশি হয়েছিল মাথায় ওই টুপিটা পরে আর নিজের রোগাটে কোমরের জন্য এতটাই বিনম্র হয়েছিল আর আমি বাজি ধরে বলতে পারি, সে তার পুরম্নষটার কোনো সমত্মানই জন্ম দিতে পারবে না। ঠিক হ্যায়, এসব আসলে তার মাথা ঘামানোর কোনো ব্যাপার নয়, কিন্তু যে-মুহূর্তে সে এখানে এসে পৌঁছেছে তার মনে হয়েছিল যে, তার টুপি পরা সেই সোনালি চুলের মেয়েটা এমন এক মহিলার ভান করে চলেছে যে, তার মুখে বেশ কয়েকটা থাপ্পড় মারলে হতো। তার তো সত্যি অর্থে কোনো ভালো আকৃতিই নেই। আর তার বুকে সত্মনের চিহ্নও নেই। আর সন্দেহ নেই তার সব চমৎকার টুপি সত্ত্বেও সে কোনো নেহাতই গাইয়া এক পেত্নি হওয়া সত্ত্বেও নিজেকে কোনো ডাচেসের হিসেবে দেখাতে চাইছে।

ইস্ নিজেকে যে কীরকম নাজেহাল ঠেকছে। এই বার্তাতে কোনো টুপি ছাড়াই এসে আর ঠিক এখনই যেন তার মাথাটাকে ফাঁকা আর খালি খালি ঠেকছে। আর ওই মাদাম তার সেণহ-মমতাসমেত কি না অতিশয় সুসংস্কৃত মহিলার ভান করে চলেছে! ওহে সুন্দরী, আমি জানি তোমার সত্যি-সত্যি কী চাই, কী চাই তোমার আর তোমার ওই দুর্বল ছেলেবন্ধুর! আর যদি তুমি ভেবে থাকো তোমার ওই সমতল বক্ষদেশের জন্য আমি তোমাকে ঈর্ষা করি, তবে আমাকে ভালো করে বুঝিয়ে দিতে দাও যে, আমি তোমাকে আর তোমার টুপির জন্যে মোটেই কোনো পাত্তা দিই না। তোমার মতো নির্লজ্জ, বেহায়া মেয়েরা সবসময় একটা বিরাশি সিক্কার থাপ্পড় দাবি করে থাকে ওই মুখের ওপর।

তার এই দিব্য ক্রোধের মধ্যে সে বাড়িয়ে তুলল একটি কম্পিত হাত আর একটা টুথপিক খুঁজল।

 

কিন্তু শেষটায় বাড়ি ফেরার মুশকিলটা আসান হয়ে গেল; এবার সে নিজেকে তার চিরচেনা বাসত্মবতার মধ্যে তার ওই ঘরে তাকে চেতিয়ে তুলল; এখন বিছানাটার একপাশে বসে, একপায়ে একটা চপ্পল, একটু ওপরে ঝুলে থেকে দোল খাচ্ছে।

আর সে তার ঝাপসা চোখদুটো অর্ধেকটা বুজল আর সবকিছুই যেন নিয়ে নিল রক্ত-মাংসের চেহারা, বিছানার পায়াগুলো, জানলাটা, তার স্বামীর স্যুট গা থেকে খুলে ছুড়ে ফেলা আর সবকিছু

হয়ে উঠল কেমন যেন বেদনাদায়ক। এরই মধ্যে সে শুরম্ন করে দিয়েছে বৃহদাকার ধারণ করতে, আরো অধীর, ফুলে-ফেঁপে বৃহদাকার হয়ে-ওঠা। যদি সে তার নিজের কাছে চলে যেতে পারত তাহলে সে দেখতে পেত সে এমনকি আরো-আরো বৃহদাকার হয়ে উঠেছে। তার এক একটা বাহু এমন কারো দ্বারা যেন স্পর্শিত হতো। যে এমনকি এটাও চিনতে পারত না যে, তারা কোনো একটা হাতকেই যেন ছুঁয়ে দেখতে চাইছে, আর কেউ হয়তো ডুব দিতে পারত, এক-একটা চোখে সাঁতরে চলতে পারত, এটা না জেনেই যে তারা সাঁতার দিচ্ছে একটা চোখে। আর তার চারপাশে সবকিছু কেমন যেন বেদনাদায়ক হয়ে উঠেছে। তার শরীরের মাংস যেগুলো নার্ভাসভাবে কুঁকড়ে-মুকড়ে যাচ্ছে। হিমশীতল হাওয়া তার গা-টাকে যেন পাকড়ে ধরেছে, যখন সে ওই রেসেত্মারাঁ থেকে বেরিয়ে এসেছিল।

সে বিছানার ওপর বসে আছে হাল ছেড়ে দিয়ে। কিন্তু সন্দেহের বশে তার মনে হয় আরে এখনো তো কিছুই হয়নি, শুধু ঈশ্বরই তা জানেন। সে নিজে খুব ভালো করেই জানে যে, এটা এখনো কিছুই নয়। এই মুহূর্তে তার কাছে যেন কত কী ঘটে চলেছে যেটা পরে তাকে ব্যথায় ভরিয়ে দেবে আর একাগ্র করে তুলবে। আর যখন সে তার স্বাভাবিক আকারে ফিরে এলো তার চেতনাবিহীন শরীর শুরম্ন করবে জেগে উঠতে, দপদপ করতে আর সে ওই বড় ভোজন আর মদের জন্য শুরম্ন করবে যথাযোগ্য মাসুল দিতে। তারপর যেহেতু তা সত্যি-সত্যি শেষ হবে না কোনো ঘটনায়, আমি বরং এখনই আমার চোখদুটো খুলে রাখলাম (আর সে অবশ্য তাই করল) আর তারপর সবকিছুই দেখাল ছোট আর স্পষ্ট, আর সে কোনো ব্যথাই অনুভব করল না, সবকিছু একেবারে গভীরে, একই রকম আছে, শুধু আগের চেয়ে একটু ছোট। আর আরো বেশি চেনা। সে সটান বসে আছে বিছানার ওপর। তার উদরভর্তি টইটুম্বরে কিছু একটাতে মগ্ন আর হাল ছেড়ে দেওয়ায় সেই নমনীয়তাসমেত যা নিয়ে কেউ বসে থাকে যতক্ষণ না তার স্বামী জেগে উঠে ‘তুমি গোগ্রাসে সব গিলেছ আর আমি তার মাসুল দিয়েছি’ সে করম্নণ সুরে বলল তার শৌখিন সাদা-সাদা পায়ের আঙুলগুলোর দিকে তাকিয়ে থেকে। সে চারপাশে তাকিয়ে-তাকিয়ে দেখল ধৈর্যে ভরে গিয়ে আর বাধ্যভাবে। ওঃ, কথার পর কথা, কথা ছাড়া আর কিছুই নয় আর ঘরের মধ্যেকার সবকিছুই সার বেঁধে আছে কথার আবেশেই এসব গোলমাল পাকানো আর উত্ত্যক্ত করা সব কথা যা কেউ জানে করতে গেলে কেমন লাগবে। একঘেয়ে, অসহ্য… এমন বিচ্ছিরি একঘেয়েমি… কী যে অসুখ বাধিয়ে বসা! কেমন যে উত্তপ্ত করা! যখন সবকিছু বলা হয়ে গেছে আর করাও হয়ে গেছে ভগবান আমায় সাহায্য করো – ঈশ্বরই সব ভালো করে জানে। কী করবে কেউ? কেমন করে আমি বর্ণনা করব আমার ভেতরে কী আছে? তবে যাই হোক, ঈশ্বরই সব চেয়ে ভালো জানেন। আর কাল রাত্তিরে সে নিজেকে এতটাই উপভোগ করেছিল যে, তার কথা ভাবতে গেলেই কেমন যে লাগে!… আর একবার ভেবে দেখো সব কিছুই কেমন সুন্দর ছিল তার নিজের পছন্দসই এক রেসেত্মারাঁ আর কেমন করে সে অভিজাত মহিলার ভঙ্গিতে বসেছিল টেবিলে, টেবিলটায়! জগৎটা যেন বিস্ময়ে চেঁচিয়ে উঠবে। কিন্তু সে জবাবে কিছুই বলেনি, নিজেকে সটান বসিয়ে রেখেছিল তার জিহবায় বদমেজাজে… বীরত্ব… তারপর ‘আমার কাছে কখনো আসবে না তোমার সব ভালোবাসার ধূলি আওড়ে’… এখন মোটেই মুগ্ধ নয়, হাল ছেড়ে দেওয়া বিবাহিত, তৃপ্ত, আর কেমন যেন আবছা একটা বিবমিষা।

আর ঠিক এই মুহূর্তে সে একেবারে বধির হয়ে গেল; তার ইন্দ্রিয়ের একটা যেন কোথায় হারিয়ে গেছে। সে তার হাত দিয়ে তালি দিলে তার কানের কাছে যা সেই দশাটাকে আরো খারাপ করে দিলো…। আচমকা তার কানের পর্দাগুলোকে কোনো একটা লিফটের ওঠানামার আওয়াজ ভরে নিল, জীবন হঠাৎ হয়ে উঠল জোরালো আওয়াজে ভরা। আর তার ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আন্দোলনও যেন বৃহদায়তন হয়ে পড়ছে। দুয়ের মধ্যে এক : হয় সে বধিরই ছিল কিংবা সে সবকিছুই ভালো করে শুনতে পেত। সে এই নতুন অভিজ্ঞতার বিরম্নদ্ধে বিরক্তির এক রোমাঞ্চে ভরে গেল। আর আত্মসমর্পণ করার ভঙ্গিতে এক দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে সে বসেই রইল। ‘ওরে তুই মরে যা’, সে নরমভাবে বলল… হার মেনে গিয়ে।

আর ঠিক কখন ওই রেসেত্মারাঁটায়… হঠাৎই তার মনে পড়ে গেল কখন সে রেসেত্মারাঁয় গিয়েছিল তার স্বামীর রক্ষক হিসেবে আর তার স্বামীর পা-দুটোতে চাপ দিয়েছিল টেবিলের তলায় নিজের পা দিয়ে, আর টেবিলের ওপর তার দিকে তাকিয়ে-তাকিয়ে তাকে খেয়াল করে যাচ্ছিল। হয় কোনো কাকতাল, নয়তো কোনো অযৌক্তিক কিছু। ৎধংপধষ, এমন একটা লোক, সিধেভাবে বলতে গেলে, যে মোটেই বিচ্ছিরি দেখতে ছিল না। মেয়েটি তার পা-দুটো অসহায়ভাবে মাড়াল।

আর তার বুক খোলা জামাটার ওপরে – টিরাডেন্টেস স্কোয়ারের মাঝখানে! সে ভাবল, তার মাথাটা ঝাঁকিয়ে প্রায় অবিশ্বাসের ভঙ্গিতে সেই মশাটা যেটা এসে বসেছিল তার খোলা বুকটায়। কী আশ্চর্য!

কোনো-কোনো ব্যাপার কিন্তু ভালোই ছিল। কারণ সেসব ছিল প্রায় বমি জাগানো… তার রক্তের মধ্যে সেই লিফটটার আওয়াজ যখন তার স্বামী তার পাশে শুয়ে-শুয়ে নাক ডাকাচ্ছে তার ছেলেমেয়েরা মনে হচ্ছে পাশের ঘরটায়, ছোট-ছোট সব শয়তান। ইস্ আমার কী যে হয়েছে, কেন এমন গোলমেলে লাগছে! সে কেমন ব্যাকুলভাবে ভাবল। আমি কি খুব বেশি কিছু খেয়ে ফেলেছি? হা ঈশ্বর! আমার মধ্যে সে কোন জিনিস এমন গন্ডগোল পাকাচ্ছে?

এটা অসুখী ভাব।

তার পায়ের আঙুলগুলো তার চপ্পল নিয়ে খেলছে… মেঝেটা সেখানে খুব একটা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নয়। ‘কী একটা অলস বেত্তমিজ কুকুর হয়ে উঠছিস তুই।’ না আগামীকাল নয়। কারণ তার পা-দুটো খুব একটা সুস্থির থাকবে না, তবে পরশু দিন তার এ-বাড়ি হয়ে উঠবে দেখার মতো একটা জিনিস! সে ঘরটরগুলো সব সাফ করে দেবে সাবান-জলে। যা সব ময়লা-আবর্জনা দূরে সরিয়ে দেবে! ‘আমার কথাগুলো তুমি ভালো করে মনে রেখো’, সে তার রাগি-রাগি গলায় ভয় দেখানো শুরম্ন করল। ওহ্, এত ভালো লাগছে নিজেকে, এত সুস্থ-সবল, যেন এখনো তার দৃঢ় ওই সত্মনগুলোতে দুধ জমে আছে। যখন তার স্বামীর বন্ধু তাকে এত সুন্দরী দেখেছিল আর নধরকামিত্ম দেখেছিল যে, সেই বন্ধুটি তক্ষুনি তার জন্যে একটা 888sport apk download apk latest versionর ভাব অনুভব করেছিল। আর যখন মেয়েটি নিজে একটু লজ্জা অনুভব করতে শুরম্ন করেছিল, সে বুঝতেই পারেনি কোনদিকে তাকাবে। এমনও দুর্দশা হয়! কেউ তবে করবেটা কি? বিছানার একপাশে বসে থেকে, সমর্পণের ভঙ্গিতে মিটিমিটি চোখে তাকাল সে।

এই গ্রীষ্মের রাতগুলোতে কেউ কতটা ভালো করে চাঁদের দিকে তাকাতে পারবে, সে একপাশে একটু ঝুঁকে পড়ল উদাসীনভাবে, হার মেনে গিয়ে। চাঁদ, আকাশের চাঁদ! কতটা স্পষ্টতরূপে এই চাঁদকে দেখতে পারবে যে চাঁদ এত উঁচুতে আছে আর হলদে-সোনালি আকাশে একপাশ থেকে আরেকপাশে সরে যাচ্ছে। বেচারা। একপাশ থেকে আরেকপাশে চলে যাচ্ছে… ওই উঁচু আকাশে ওই উঁচুতে। ওই চাঁদ! তারপরেই তার অশস্নীলতা বিস্ফোরণের মতো ফেটে পড়ল ভালোবাসার এক আকস্মিক টানে; ‘ওরে মাগি’, সে চেঁচিয়ে বলল হাসতে-হাসতে।