প্রথমা স্ত্রী মনীষা 888sport sign up bonusচারণা করছেন উস্তাদ বিলায়েত খাঁ সাহেবের।
শঙ্করলাল ভট্টাচার্যের সঙ্গে কথোপকথনে।খাঁ
সাহেবকে প্রথম দেখা
১৯৫৯, এপ্রিল মাস। আমি, আমার বোন, আর এক বন্ধু গিয়েছিলুম ওবেরয় গ্র্যান্ডের শেরাজাডে, প্রিন্সেসে নয়। তখন তো পয়সাও কম ছিল … ও ঃযরহশ ঝপযবৎধুধফব ঁংবফ ঃড় নব পড়সঢ়ধৎধঃরাবষু পযবধঢ়বৎ. আর সেখানে ফোর্ট উইলিয়ামের কিছু তরুণ আর্মি অফিসারও ছিলেন সেদিন। আমার সঙ্গে এক বান্ধবী ছিল, এডনা; ও একটা ডান্স স্কুলে যেত ওর এক বন্ধুর সঙ্গে। তার নাম পিসু মজুমদার। আরো একজন ওদের সঙ্গী ছিল, কী সব বাজাত, নাম ছিল প্রদীপ বটব্যাল। আমাকে ওরা মাঝে-মাঝেই বলতো, ‘তুমি এসো না- একজন ভালো আর্টিস্টের সঙ্গে দেখা করাব।’ বাড়িতে যেহেতু রাতের ডিনার বাবা-মার সঙ্গে করতেই হয়, তাই রাতে ঘরে ফেরার একটা ডেডলাইন ছিল, যার ফলে ওরা বারবার যেতে বললেও পাক্কা এক বছরের মধ্যে কিন্তু যেতে
পারিনি। এক বছর পর ভরহধষষু একদিন বন্ধুর সঙ্গে এসেছি শেরাজাডেতে। সেদিন ওঁকে প্রথম দেখলাম। বন্ধুর সঙ্গে অল্পসময় কথা বললেন … ক্ষণিকের পরিচয় হলো, তারপর চলে গেলেন। ওই দিনটির কথা আমার বিশেষ মনে নেই।
কী পরেছিলেন খাঁ সাহেব?
সেই তো হলো কথা। আমি তো সবসময়েই ভাবি যে উনি পরেছিলেন ব্রাউন থ্রি-পিস স্যুট। উনি বলতেন, ‘জীবনে কোনোদিনই আমি ব্রাউন পরিনি। ওঃ ধিং হধাু নষঁব’. শেরাজাডেতে গাছপালার জন্য আলো কম ছিল, তাই হয়তো … কিন্তু এরপর যখন ওঁর সঙ্গে কথা বলতে প্রিন্সেসে গিয়েছিলুম তখন উনি ডান্স করছিলেন, তখন ও ঃযড়ঁমযঃ যড়ি রৎড়হরপ. ঐব ধিং ষরসঢ়রহম ড়হ ড়হব ভড়ড়ঃ! একটা পায়ে সামান্য খুঁড়োচ্ছিলেন, কিন্তু নাচছিলেন কী চমৎকার!
কেন লিম্প করছিলেন?
সবই ওঁর মুখ থেকে শোনা। কিছুদিন আগেই বম্বের ফ্ল্যাটে ওঁকে ছুরি মারা হয়েছিল। উনি ছিলেন সুন্নি মুসলমান। ওঁর সঙ্গে রাজিয়া নামে একটি মেয়ে বহমধমবফ ছিল। নজাকত আলি, সালামত আলির বোন। আম্মা- মানে আমার শাশুড়ি এই বিয়ে ঠিক করেছিলেন। বিয়ের শর্ত ছিল উনি রাজিয়াকে বিয়ে করবেন আর সালামত আলি আমার ছোট ননদকে। এরই মধ্যে ওঁর কাছে প্রায়ই উড়ো চিঠি আসত, ‘আপনি খুব সাবধানে থাকবেন, নয়তো আপনার অবস্থাও লিয়াকত আলি খাঁ সাহেবের মতো হবে।’ প্রথম দিকে উনি বিশেষ আমল দিতেন না, কিন্তু একদিন বেশ রাত করে বম্বের নেপিয়ান সি রোডের বাড়িতে গাড়ি পার্ক করার সময় উনি লক্ষ করলেন যে গ্যারেজের ওপর কিছু ংযধফড়,ি ছায়ামূর্তি। গাড়ি পুরো গ্যারেজে না ঢুকিয়ে উনি সিঁড়ি চড়তে আরম্ভ করলেন, সিঁড়িও অন্ধকার। এরপর অতর্কিতে ক’জন ওঁর ওপর হামলা করল, উনি মনে করতে পারেননি। ওঁর পকেটে সবসময়ে একটা রামপুরী ছুরি থাকত, ভষরপশ শহরভব. ওটা দিয়েই উনি আমাকে একবার স্ট্র্যান্ড রোডে বাঁচিয়েছিলেন। যা-ই হোক, ওই রাতে হামলাকারীদের কারও একটা শরীরে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, সেটা ওঁর মনে ছিল। এরপর উনি নিজের ফ্ল্যাটে গিয়ে ছুরিটা বের করে দেখলেন সেটার অর্ধেকটাই নেই। পুলিশকে বলা হলো এ-ঘটনা যেন পেপারে না বের হয়। আমি জানি না এরপর কী হয়েছিল। যদিও ওই সময়ে আমাদের বিয়ে হয়নি, পুরোটাই ওঁর মুখ থেকে শোনা। ওঁরও থাইয়ে লেগেছিল। এরপর যখন উনি বম্বে থেকে কলকাতায় এলেন এবং প্রিন্সেসে আমার সঙ্গে দেখা করলেন। সে-দিনই একটা বিয়ের engagement ভেস্তে এসেছিলেন উনি। That was his 19th engagement which he broke. He had been engaged 19 times, and twice he actually ran away from the wedding pandal, বিয়ের মণ্ডপ। তার মধ্যে একটা ভোপালে।
রাজবাড়ির মেয়ে কি?
না, না, সেটা আলাদা ছিল। সেটা ছিল মহারাজ জ্যাকি বরোদার বউ। তখন তিনি মহারাজ ছিলেন না। এ হলো একজন সাধারণ বাড়ির মেয়ে। এবং জ্যাকি বরোদার বউয়ের ক্ষেত্রেও উনি যে রানিকে নিয়ে পালিয়ে যাননি তার কারণ উনি অনেক গয়না এনেছিলেন সঙ্গে। আপনি জানেন, আমার বিয়েতে শুধু একটা লাল পাড়ের সাদা তাঁতের শাড়ি পরে আমি বম্বে পৌঁছেছিলুম। ওঁর সব নিজের views ছিল তো, যার থেকে কোনোদিনও নড়েননি।
রাজিয়ার সঙ্গে বহমধমবসবহঃ ভেঙে যাওয়ায় বাড়িতে তো খুব রাগারাগি হলো। কারণ, বিয়েটা ভেঙে গেলে ছোট বোনেরও বিয়ে হবে না। তখন উনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে পিসুদার সঙ্গে প্রিন্সেসে গিয়েছিলেন, সেখানে বসে they were drinking, eating… যার যা খুশি।
সেসময়ে খাঁ সাহেব কি খুবই বিখ্যাত?
হ্যাঁ-হ্যাঁ তখন সব্বাই চিনত ওঁকে। Grooming -এর কী বাহার! পাউডার মাখতেন- এক্কেবারে জমিদার বংশের ছেলের মতো লাগত।
প্রথম পরিচয়ের পর অনুভূতি
মনে আছে, ওঁর সঙ্গে সেভাবে প্রথম পরিচয়ের পর মা-কে এসে বলেছিলুম, ‘আজকে একজন নামকরা সঁংরপরধহ-এর সঙ্গে দেখা হয়েছে। He speaks like music. I remember this very well-Iui মুখের ভাষাটাই সংগীত। ওঁর আবার পান খাওয়ার মস্ত নেশা ছিল, পারলে কাউকে জুটিয়েও নিতেন। আর ওই পান খেতেই ভিক্টোরিয়ার সামনে যেতেন দফায় দফায়। বিভিন্ন জনের সঙ্গে যাবার ফলে পানওয়ালা বলতো, ‘সাব, আপ কিতনি লোগোঁকো, কিতনি লেড়কিয়োঁকো, কিতনি দফা লাতেঁ হ্যায়, সবকা অলগ অলগ ঃধংঃব হ্যায়, সবকা অলগ অলগ পান কা মসালেঁ হ্যায়।’ তখন উনি বলতেন, ‘মোতি, অ্যায়সেই হোগা, অ্যায়সেই হোগা।’
Was it love at first sight?
I cant say that. It wasnÕt love at first sight. It was a deep impression …আমি বললাম যে, He was somebody who could carry you along with his talking … just his talk… মানে উনি এত ভালো কথা বলতেন যে, ও was practically swept off my feet. উনি আপনাকে বলেছেন কি কোথায় আমাদের কোর্টশিপ হয়েছে? কুমায়ুন হিলসে। আমার বাবা-মা প্রতিবছর গরমে মে মাসে ওখানে যেতেন, আমাদের ওখানে ট্রেনে এসিতে চারজনের একটা কোচে যাচ্ছি। আমি, বোন, বাবা-মা হঠাৎ কোনো এক স্টেশনে পর্দা সরিয়ে দেখলুম উনি দাঁড়িয়ে আছেন। আমরাও সব ওঁর দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে আছি। তখন উনি আমাকে বললেন যে, ‘আমি কি নিজেই নিজেকে introduce করব?’ এবং করলেনও তিনি। আমার মা-তো আগে কিছুটা জানত। এরপর ছুটি কাটিয়ে বাবা-মা, বোন ফিরে এল। আমি এলুম না। তখন আমি এয়ার-ইন্ডিয়াতে, দুমাসের ছুটি। আমি থেকে যাবার জিদ করাতে দূর-সম্পর্কীয় এক পিসিকে রাখা হলো আমার কাছে। তিনি আবার কানে কম শুনতেন, চোখেও কম দেখতেন। তো অন্য ঘরে ফৎধরিহম ৎড়ড়স-এ যদি আমরা কথা বলতুম, পিসি শুয়ে শুয়ে ভাবতেন, হয়তো রেডিও চলছে। তো সেখানে আমাদের বেশি মেলামেশা … আর কী! … মানে কোর্টশিপ, প্রেম হলো। নৈনিতাল বোটক্লাবে আমরা যখন দুজনে নাচতুম … on the floor … সবাই সরে গিয়ে গোল করে … used to watch us. বিভিন্ন জায়গা থেকে যে-সমস্ত মেয়েরা আসত all were after him … এক্কেবারে ছেঁকে ধরত। কারো অটোগ্রাফ চাই, কারো চাই ফটোগ্রাফ। আমি এই সময়ে ভিড় থেকে সরে দাঁড়াতুম, ভিড়ের মধ্যে যেতুম না। রানিক্ষেত, আলমোড়া, কৌসানি ওঁর সঙ্গে ট্যুর করেছিলুম। পিসিমাকে বলেছিলুম বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাচ্ছি।
বিয়ের প্রস্তাবের প্রতিক্রিয়া
উনি যখন প্রথম প্রপোজ করেছিলেন ভয়েতে আমি ‘না’ বলেছিলুম। তা বলে এই নয় যে, আমি ওঁকে চাইনি। আমিবলেছিলাম, আমি পূজারী ব্রাহ্মণ ঘরের মেয়ে, উনি একজন মুসলমান, আমার মনে অত শক্তি নেই। আসলে আমি ওঁকে একটা pedestal -এ রেখেছিলুম, একটা ভক্তি-ভক্তি ভাবও ছিল। উনি যে আমার ইকুয়াল পার্টনার, হাত ধরে ঢ্যাং-ঢ্যাং করে ঘুরতে যাবো সেরকম কোনো ভাবনাই ছিল না। আমি খুব সমীহ করতুম ওঁকে। নৈনিতালে দুজনে যখন নাচতুম তখন প্রথম ওঁকে বলেছিলুম, ‘You have a wonderful sense of rhythm.’ পরে অবশ্য হাসিও পেত, লজ্জাও লাগত, Hwo could I tell him, you have a wonderful sense of rhythm! উনি বিলিয়ার্ডস, স্নুকার বেশ ভালো খেলতেন, দু’পেগ খেলে নাকি খেলা আরো ভালো হতো। তখন উনি বলতেন, ‘খুব চমকতা হ্যায়’। ড্রিংক যে খুব বেশি করতেন তা নয়। দু থেকে তিন পেগ। নৈনিতাল বোটক্লাবে শাড়ি পরেই যেতুম। অনেকেই বেশ পছন্দ করত, কেউ কেউ আবার চোখ টাটিয়ে দেখত। এরপর একদিন হরিণ শিকার করে পিকনিক হলো। সেসময়ে আমি খাঁ সাহেবকে নাম ধরে ডাকতুম না। সম্ভবত বি কে বলতুম।
বি কে মানে বিলায়েত খাঁ-
বিলায়েত নাম ধরে যে ডাকব তার সাধ্যি আমার ছিল না। ওঁর প্রথম প্রপোজালে ‘না’ বলায় উনি তখন আমায় বলেছিলেন, ‘I respect that… না, তো না।’ এরপর এক ঝড়ের রাতে আমি খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিলুম। সারারাত ঘুমোতে পারিনি। আসলে পাহাড়ের ঝড় খুব ভয়াবহ। সেদিন রাতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলুম ওঁর বিয়ের প্রস্তাবে সম্মতি জানাব। তখন তো আর ফোনটোন ছিল না। সক্কালবেলা ওঁকে ডেকে সুখবরটা জানাতে উনি বলেছিলেন, ‘আর ‘না’ হবে না তো?’ আমি বলেছিলুম, ‘না, হবে না।’ তখন উনি বলেছিলেন, ‘তোমার বাবা-মা আছেন, সংসার আছে। তুমি আরো ভাবো। কিন্তু কথা দিয়ে এবারও যদি না হয় তবে তোমাকে আমি shoot করব।’
Then it was very beautiful, we walked around a lake, একটা মন্দিরও ছিল। We sought blessings there, then promised to each other. উনি একটা মেজরাব দিয়েছিলেন as an engagement ring. আমি বললুম যে এরকম romantic marriage কোনো আর্টিস্টই করতে পারে।
ভাবতে পারেন আমি একটি ব্রাহ্মণ মেয়ে আর উনি মুসলমান … opposition যে হয়নি তা নয়, কিন্তু ততটা হয়নি। আসলে ওঁকে তো সবাই চেনে। আমাদের বাড়িতে গানের চর্চা ছিল। সবাই হয়তো classical musician নয়, তবে রেডিও আর্টিস্ট। ফলে তখন হেমন্তর সঙ্গে যথেষ্ট সখ্য ছিল। পুজোর আগে মহালয়াতে প্রোগ্রামে হেমন্ত, বেলা সব আসত, আমার দিদি কল্পনার সঙ্গে বেশ সম্পর্ক ছিল। আমার ইচ্ছে শুনে বাবা বললেন যে, ‘তোমায় আমি ছেলের মতো মানুষ করেছি, তুমি পড়াশুনো জানো, intelligent ‡g‡q, you are self-dependent, you have taken your decision. কিন্তু হলফ করে বলতে পারি, পরে গিয়ে তোমাদের দুজনের background -এর clash হবে’। মা কোনো কথা বলেননি। মা-বাবার সঙ্গে প্রথম উনি যেদিন দেখা করতে এসেছিলেন সেদিন কোলে বাচ্চা নেওয়ার মতো করে রজনীগন্ধা ফুল হাতে করে নিয়ে এসে ওঁদের পায়ে দিয়েছিলেন। এই বাড়িতেই, তখন আমি ভেতরে … প্রায় কাঁপছি। মা ভেতরে চলে গেলেন। বাবা ওঁকে বললেন, ‘ঝামাপুকুরে আমাদের রাজবাড়ি আছে, সেখানে আমার দাদা, তাঁর ছেলেরা আছে, মনির বিয়ে কীভাবে হবে তা নিয়ে ওঁদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।’
এরপর ওঁকে ঝামাপুকুরে নিয়ে যাওয়া হলো। মা-বোনও গিয়েছিল। জ্যাঠামশাই ওঁকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘বিলায়েত, ওয়েস্টার্ন মিউজিকে তুমি সবচেয়ে বেশি কী পছন্দ করো?’ তো উনি বলেছিলেন, ‘শপ্যাঁ’। জ্যাঠামশাই আবার প্রশ্ন করেছিলেন, ‘তুমি শপ্যাঁর বানান জানো!’ উত্তর এসেছিল, হ্যাঁ। অবশ্য এর আগে আগেই ওঁর রাশিয়া, হাঙ্গেরি ঘোরা হয়ে গিয়েছে। আমার বড়দা, মানে জ্যাঠামশাইয়ের বড় ছেলে প্রভাত হাজরা ওঁর সঙ্গে দেখা করতে খুব উৎসাহিত ছিল। দেখা হবার পর সে বলেছিল আমাদের, ‘তোমরা ছমাস অপেক্ষা করো।’ তখন বিলায়েত বলেছিল, ‘কেন?’ দাদা প্রত্যুত্তরে জানিয়েছিল, ‘তোমরা দেখ এই ছমাসে কী করে বিয়েটা না হতে পারে।’ উনি তখন বললেন, ‘না, আমি অপেক্ষা করব না। ছমাস বাদে যদি পাক্কা বিয়েই হয় তবেই অপেক্ষা করব।’ বিয়ের পর ওঁর মায়ের কাছে যাবার ব্যাপার ছিল। তিনি ছেলের বউ দেখতে খুব উৎসাহী ছিলেন। ওইদিন বেশ গয়না-টয়না পরে গিয়েছিলুম। যা-ই হোক, ওখানে গিয়ে আমি বেশি কথা-টথা বলিনি। ওঁরা যা প্রশ্ন করেছেন, তার উত্তর দিয়েছি। ও! সেদিনই তো আবার ছুরির দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছিল। ওখান থেকে ফেরার পথে স্ট্র্যান্ড রোডে … অবশ্য সেদিনই ওঁর ‘ব্রেভারি’ দেখে আমি চমৎকৃত হয়েছিলুম। বিপক্ষে তিনজন, তাদের হাতে একটা বড় ছোরা। উনি একা, সঙ্গে ওই ভষরপশ শহরভব। উনি এগোচ্ছেন দু®কৃতরা পিছোচ্ছে। শেষ অবধি দুজন পালিয়ে গেলেও একজনকে ধরে গাড়িতে বসিয়ে সোজা খিদিরপুর পুলিশ স্টেশনে চলে এসেছিলুম। পুলিশও ওই লোকটিকে বেদম পিটিয়েছিল। সেই ব্যাপারের পর থেকে উনি একটা বন্দুকও রাখতেন। হ্যাঁ, উনি সুন্নি ছিলেন। জানেন, বিয়ের কয়েক বছর আগে শিমলাতে যাবার আগে বম্বেতে উনি আমাকে একটা বন্দুক উপহার দিয়েছিলেন। দু-চারদিন পর অবশ্য বললেন, ‘মনি, তোমাকে ওটা দিয়ে কোনো লাভ নেই। তুমি ধরছোই তো উলটো।’
শিমলার দিনগুলো
শিমলায় গিয়ে একটা বাড়ি নেওয়া হলো। নাম ‘পরীমহল’। সত্যিই সুন্দর। কিন্তু আশেপাশে কোনো বাড়ি-ঘর ছিল না, এক্কেবারে ফাঁকা। আমরা বিকেলে ঘুরতে বেরুতুম। গ্রীষ্মাবকাশে দেশের বিভিন্ন জায়গার রাজারাজড়ারা আসতেন। রোজকার জীবনযাত্রায় একটা একঘেয়েমি চলে আসছিল। এরই মধ্যে আমাদের নিচে ছাত্রছাত্রীতে ভরে গেল। কেউ স্প্যানিশ, রয়েছে ফ্রেঞ্চের সঙ্গে। আবার কেউবা আমেরিকান, ইংরেজের সঙ্গে রয়েছে। আর উনি তো মেয়ে খুব পছন্দই করতেন।
প্রসঙ্গের সূত্র ধরেই বলতে হয়, ওঁর জীবনে অন্য ভদ্রমহিলাটি কী করে আসলেন। আপনি যেটা কোমল গান্ধার-এ লিখেছেন, তার কোনো প্রতিবাদে যাচ্ছি না, ঠিক আছে। আজ উনি নেই, তাই উনি যদি বলে গিয়ে থাকেন …। যা-ই হোক আমাদের ঝি-চাকরদের মধ্যে ছিল রিটা এবং সালভাদোর, তারাই মেয়েটিকে পাঠিয়েছিল। ওই মেয়েটির আবার ভাই-বোন ছিল উনিশ জন। শিমলায় ওর যাবার কোনো কথাই ছিল না। আমার মেডসার্ভেন্ট রত্নাবলি না যাওয়ায় ও বলল, ‘হাম যা সাকতে হ্যায়।’ ডিনার আমিই দিতুম। সাজানো-গোছানো ব্যাপারটা উনি বেশ পছন্দ করতেন। অবশ্য বাচ্চারা সকালে ইস্কুলে যেত, ওই সকাল সাতটায় ওদের সঙ্গেই ঘুম থেকে উঠতে আমার বেশ মুশকিল লাগত। এই সময়ে আয়ারাই কাছাকাছি থাকত। আমি পড়ানো, ম্যানারস শেখানো- এগুলোই দেখতুম।
ওঁর বাজনায় আগ্রহ
I used to attend all his concerts. I wasnÕt only interested in his music, I was his secretary … আমি সব চিঠি লিখতুম … কনসার্ট ঠিক করতুম। কিছু সময় পার্টি চাইছে উনি একলা বাজান, কিন্তু উনি একগুঁয়ে হয়ে গ্রুপ নিতে চাইছেন। এইরকম পরিস্থিতিতে আমি এজেন্টের হয়ে ওঁকে রাজি করাতুম, ‘You will have to be alonesometimes.’
ওঁর সঙ্গে অনেক মেয়েরই তো অ্যাফেয়ার ছিল। এরকম বহুবার হয়েছে, ওঁরই কোনো বন্ধু-বান্ধব কিংবা couple -দের সঙ্গে সিনেমা অথবা পার্টিতে গিয়েছি, ফেরার সময় লক্ষ করেছি গাড়ির হেডলাইটের আলোতে উলটোদিকের কোনো গাড়িতে উনি কোনো মহিলার গায়ে হাত রেখে আমার চেনা গাড়িতে করে বেরিয়ে যাচ্ছেন। এরকম বহুবার হয়েছে।
খুব রোমান্টিক মানুষ কি?
দেখুন, What do you mean by romantic … উনি খুব মহিলা পছন্দ করতেন, used to like different types of women. He had clean habits and a body. He was basically very refined. আমি ওঁর কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি, উনি আমার কাছ থেকে শেক্সপীয়ার বুঝতে চাইতেন, আমি অধৈর্য হয়ে যেতুম।
After 10 years there was a decline in the relationship. শিমলাতে যাবার পর বাড়ির পরিবেশ আর ভালো ছিল না। গান-বাজনা হতো … বেশি ড্রিংক করতে শুরু করলেন … ডায়াবেটিস ধরা পড়ল। উনি কোত্থেকে শুনেছিলেন ডায়াবেটিস হলে নাকি Man becomes a non-performer in his sex life, loses manhood. ওঁকে আমার বাবাই একদিন গল্পচ্ছলে বলেছিলেন, ‘এই সময়ে usually the treatment is you take out a fresh nwe girl. উনি ওই কথাটিই ধরে নিয়েছিলেন।
এরপর লিজা, ওর বোন আর বোনের বর ঘুরতে গিয়েছিল ওঁকে নিয়ে … আমি ওঁকে জিজ্ঞেস করতেই উনি বলেছিলেন, না- না বাচ্চাদের দেখতে গিয়েছিলাম। আসলে কেমন একটা ষড়যন্ত্র চলছিল। আমি বুঝি সবকিছু, কিন্তু একটু দেরিতে। এরপর আমি লিজাকে সরাসরি বলেছিলুম, ‘দেখো, আমার ছোট-ছোট ছেলেমেয়ে রয়েছে, আর তুমি কী করছ বলো তো?’ … তো ও বলল, ‘সাহেব আমায় বলেছেন বিয়ে করবেন।’ আমি বললুম, ‘তোমার কী করে বিয়ে হবে! আমি তো এখানে রয়েছি, ডিভোর্স না দিলে তোমার সঙ্গে বিয়েটা হবে কী করে?’
আমি ভাবি এখন, আমি যদি ব্যাপারটা চেপে যেতুম … আমাদের দেশে মেয়েদের যেমন শেখানো হয় … Whatever it is-wait and you see the result. I was stupid and felt humiliated, … যখন এটা চরমে উঠে গিয়েছিল, ও have been illtreated, neglected, very deeply saddened. আমি তখন ব্যাপারটা handle করতে পারিনি। ThatÕs my fault and itÕs my mistake. অসুস্থতার সময় উনি very suspicious হয়ে উঠেছিলেন, এবং মানসিকভাবে ১৮০০ ঘুরে গিয়েছিলেন। কিন্তু কখনো গায়ে হাত তোলেননি কিংবা জোরে কথা বলেননি, কখনো না।
মান-অভিমানের ব্যাপারটা কার সঙ্গে ছিল?
বেশির ভাগ অভিমান কিংবা touchiness ছিল musicians আর সঁংরপ ড়িৎষফ নিয়ে। এক কথায় উনি যা মনে করতেন তা-ই করতেন। খুব একগুঁয়ে ছিলেন। কারো কথায় চলার লোক ছিলেন না।
ওঁর অনুযোগ ছিল মানুষকে যেভাবে ভালোবাসা দিই সেভাবে ভালোবাসা পাই না।
সেটা ওঁর ড়ঢ়রহরড়হ মাত্র। আসলে এটা উনি এমনি-এমনিই ভাবতেন। কিন্তু এটা কেন ভাবতেন! ও deeply feel that it was a sense of insecurity. এরই মধ্যে রবিদার (রবিশঙ্কর) সঙ্গে কথা হলো। ওঁকে আমি বলেছি, আপনার কাছে লোক আসলে, আপনার মনে যা আসবে আপনি যা ভালো বুঝবেন তা-ই বলবেন। রবিদা আমাকে বউমা বলেন। বেশ ভালোবাসেন। রবিদা কনসার্টে ডাকলে আমি যেতুম। উনি বললেন, ‘আমি আমার রাগ অনুরাগ-এ ওঁর সম্পর্কে লিখেছিলাম, ‘এরকম মানুষ ৎধৎবষু জন্ম নেয়!’ তবুও এই লোকটার এত insecurity থাকার কারণ বুঝিনি।
ছোটবেলায় খুব অভাব ছিল, ঘরে ভাই-বোনদের জন্য কিছু করার তাগিদ, একটা চাপ … এদিকে বাবাও কিছু রেখে যেতে পারেননি, এমনকী সেতারও ভালোভাবে শিখতে পারেননি। পরবর্তীসময়ে শুনেছি অনেকের কাছেই টাকা রেখেছিলেন, কেউ ফেরত দেয়নি। It was he who was making the mistake.
এরপর থেকে উনি ব্যাংককেও বিশ্বাস করতেন না। থলি থলি টাকা আমার কাছে রাখতেন। আমি কিছুই নিইনি। আমার বাবা-মা ভাবতেন আমার বেশ চলছে। ঝবৎারাব করার জন্য আমি বত্রিশ বছর কত রকম কাজ করেছি, জানেন! তা আমার ছেলেমেয়ে এবং দিল্লির লোকেরা জানে।
সব মিলিয়ে কেমন মানুষ খাঁ সাহেব?
মিউজিকের জগতে ওঁর মতো ‘নেক্ লোক’ হতে পারে না। ওঁর সঙ্গে ঘর করার অভিজ্ঞতা থেকে বলি- ওই ১০ বছরে এমন স্বামী পাওয়াও ভাগ্যের ব্যাপার। মে মাসের ৬ তারিখে আমার জন্মদিন। ৫ তারিখ রাতে হঠাৎ ঘুম ভাঙিয়ে উনি আমায় কত রকমের গয়না-টয়না দিতেন … আমি সব রেখে এসেছি। সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হবার পরে উনি বলেছিলেন, ওগুলো নিয়ে যেতে, ছেলেমেয়েদের দিতে, আমি নিইনি।
এত সবকিছুর পরেও আপনি ভাববেন না যে, আমার কোনো ভুল নেই- আছে। আমার উচিত ছিল আরো সহ্য করা। আসলে বাচ্চাদের নিয়ে কখনো কোথাও গেলেও উনি সন্দেহ করতেন, সিনেমা দেখতে গেলেও বলতেন, ‘হামকো কেয়া মালুম হ্যায় তুম বাচ্চোঁ কে সাথ থে ইয়া অউর কোই অর থে।’ এরপর মিউজিক ওয়ার্ল্ড, রবিশংকর, গভর্নমেন্টের সঙ্গে যেমন insecured feel করতেন, তেমনি আমার সঙ্গেও। ছেলেমেয়েরা মাঝে-মাঝেই বলত, মা তুমি কাকে বিয়ে করেছ? আমি বলতুম, ‘Look that was not the man I married. I married a demigod, a saint, I promise. I married somebody with tremendous class.’
ওঁকে মিস করেছেন?
I missed him through my children. যদিও সুজাত ভালো বাজাচ্ছে, কিন্তু স্টেজ পারফরম্যান্স করতে পারছে না, তখন ওঁকে খুব মিস করেছি। … যা-ই হোক, আমার সব পরিচিতি বেগম বিলায়েত খাঁ হিসেবেই। ১৯৭২-এ দিল্লিতে নিজামুদ্দিনের বাড়িতে চিঠি দিয়ে উনি আমাকে নিয়ে যান, তখন একটা তিক্ততা ছিল, তবুও উনি বলেন, Lets get together। কিন্তু গিয়ে দেখি সিচুয়েশন একফোঁটাও বদলায়নি। আমি কখনোই কোনো ব্যাপারে মুখ খুলিনি। শুধু ঘনিষ্ঠ দুচারজন এবং ছেলেমেয়েরা এ সমস্ত ব্যাপার জানত।
কোনো অনুতাপ?
I donÕt regret that I came away. সুজাত বলেছিল, তুমি খুব ভালো করেছ।
৩০ বছর আগে আমি আমার এক ছেলেবন্ধুর সঙ্গে ওঁর পরিচয় করিয়েছিলুম। কলকাতার সঞ্জীব। বলেছিল, ‘Stay with him, look after him, but you donÕt hurt my ego going after Tata-Birla.-এটাই ওঁর মহত্ব। আমি সঞ্জীবকে বিয়ে করিনি। কিন্তু খুব 888sport apk download apk latest version করতাম। বিলায়েতের সঙ্গেও ডিভোর্স হয়নি। আমি করিনি, প্রয়োজন হয়নি। এতসব কিছুর পরেও আমি বলব উনি দোষে-গুণে ভরা এক ৎধৎব মানুষ ছিলেন।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.