১৯৫৫ সালের ১৯ জুলাই, মঙ্গলবার। ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে সানফ্রান্সিসকো শহরের ঠিক উত্তরে গাঢ় লালরঙা পৃথিবীখ্যাত গোল্ডেন গেট সেতু। পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চল থেকে 888sport slot gameকারীরা আসেন সেতুটির দর্শনে এবং চরাচর কুয়াশায় 888sport app হয়ে না থাকলে ছবি তুলে নিয়ে যান অসম্ভব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মধ্যে বসানো এই যান্ত্রিক বিস্ময়ের। প্রশান্ত মহাসাগর গুঁড়ি মেরে ঢুকে পড়েছে স্থলভাগে, তৈরি হয়েছে সানফ্রান্সিসকো উপসাগর। সেই প্রবেশপথে উত্তর-দক্ষিণে বিসত্মৃত প্রায় দু-মাইলের এই সেতু – পৃথিবীর সপ্তম দীর্ঘতম। বরফশীতল নীল জল, প্রায় ঢেউহীন, দুশো বিশ ফুট নিচে।
ওইদিনটিতে সেতুর উত্তর প্রান্তে হাইওয়ে প্যাট্রল পুলিশ খুঁজে পেল একটি পরিত্যক্ত গাড়ি – ১৯৫৪ সালের মডেল পিস্নমাথ স্যাভয়, গাড়ির চাবিটিও লাগানো ইগনিশানে। পুলিশ খুঁজে বের করল গাড়ির মালিকের নাম, হ্যারি ওয়েল্ডন কিইস,
জন্ম ১৯১৪। জানা গেল, তিনি আমেরিকার নামকরা কবি-888sport live footballিক এবং রেডিওকথক। সারাদেশ তোলপাড় করা হলো মানুষটির খোঁজে। খবর পেয়েই কবির দুই বন্ধু মাইকেল গ্রেগ এবং এড্ডিয়ান উইলস পুলিশসহ তাঁর অ্যাপার্টমেন্টে গেলেন। সেখানে কেবল কবির বেড়াল, ‘নির্জন’ (Lonesome), কবির দেখা নেই। বাথরুমের সিংকে দুটি লাল মোজা কেচে শুকোতে দেওয়া রয়েছে। ভালো করে সব ঘর খুঁজে দেখা গেল, চারটি জিনিস নেই, আর সবকিছু যা যেখানে থাকার ঠিকঠাক রয়েছে। নেই কবির ওয়ালেট, হাতঘড়ি, ব্যাংকের সেভিংস অ্যাকাউন্টের পাশবই আর একটি ঘুমথলি (sleeping bag)। অ্যাকাউন্টে ছিল মোট আটশো ডলার এবং এখনো তাই আছে, কোনোদিন কেউ এক পয়সাও তোলার চেষ্টা করেনি। মাইকেল কবির অ্যাপার্টমেন্টে এসে গল্পগুজব করে গেছেন সদ্য রবিবার। জ্যাক ড্যানিয়েল মদের একটি বোতল খোলা হয়েছিল, সেটি তাঁদের পান করার পরে যতটা থাকার কথা ততটাই রয়েছে; পিয়ানোর ওপরে এবং চারপাশের মেঝেয় এলোমেলো গানের স্বরলিপি ছড়ানো। বিছানার পাশের ছোট টেবিলে দস্তয়েভস্কির শয়তান 888sport alternative linkটি – ওয়েল্ডন কয়েকদিন ধরে পড়ছিলেন গ্রন্থটি। টেবিলে আরো একটি বই, উনামুনো-রচিত জীবনের বিয়োগান্ত ব্যঞ্জনা। রান্নাঘরের তাকে এক বাটি দুধ, নির্জনের জন্য খাবার, ছানা কেটে গেছে। ঘরে এমন কোনো চিহ্ন নেই যা থেকে বোঝা যাবে কবি কোথাও গেছেন কি না বা আত্মহত্যার কথা ভাবছিলেন কি না।
সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা, ওই একই দিনে ওয়েল্ডনের গাড়ি থেকে কয়েক গজ দূরে পুলিশ দেখতে পায় আরেকটি পরিত্যক্ত গাড়ি – তার মালিক ঊনষাট বছর বয়সী সেলসম্যান জোসেফ আর এপলার – তিনি কিন্তু গাড়িতে রেখে গেছেন তার অন্তিম চিঠি, তাতে স্বীকার করেছেন ব্যবসায়ে বিপর্যয় এবং ব্যর্থতার কথা, তিনি ক্ষমা চেয়েছেন তাঁর পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের কাছে। অতএব, সব মিলিয়ে দুটি পরিত্যক্ত গাড়ি, একটি আত্মহত্যার চিঠি, কিন্তু কোনো মৃতদেহ নেই। ১৯৩৭ সালে সেতুটি প্রথম খোলার পর থেকে স্থানীয় মানুষের কাছে আত্মহত্যা ও মৃত্যুবরণের স্থান হিসেবে ভীষণ জনপ্রিয়। এখন পর্যন্ত প্রায় এক হাজার পাঁচশো 888sport promo code-পুরুষ সমর্থ হয়েছেন সেতুর ওপর থেকে জলে ঝাঁপ দিতে – গড়ে প্রতি দুই সপ্তাহে একজন করে। তাদের মধ্যে আটাশিতম আর ঊননববইতম ঝাঁপের সমস্যার এখনো সমাধান হয়নি। আটাশিতম কে! ওয়েল্ডন, না জোসেফ? আর সত্যি সত্যিই ঊননববইতম কেউ ছিলেন কি?
সেদিন পুলিশ যখন তন্নতন্ন করে খুঁজে দেখছে কবির অ্যাপার্টমেন্ট, হঠাৎ বেজে ওঠে ফোন। একজন পুলিশ ফোন ধরে – অন্যদিকের মানুষটি নীরব, এমনকি বোঝাও যায় না অন্যপ্রান্তে কেউ রয়েছে কি না? অনেকে মনে করেন কবি নিজেই ফোন করে খবরাখবর নিচ্ছিলেন তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের। এই রহস্যের কোনো সমাধান হয়নি এখনো।
দুই
কোন জীবন্ত মানুষ কবির সঙ্গে শেষ সংলাপ করেছেন তার আগের দিন – সোমবার, ১৮ জুলাই। সেদিন বিকেলে ওয়েল্ডন ফোন করেন তাঁর দুই বান্ধবী ও সহকর্মীকে। প্রথমজন জ্যানেট রিচার্ড। কবি তাঁকে ফোনে বলেন, ‘আমার মানসিক অবস্থা শোচনীয়, কী করব জানি না।’ পাকেচক্রে জ্যানেট তখন নানা কাজকর্মে অসম্ভব ব্যস্ত। আর সে-মুহূর্তে তিনি বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলেন বিমানবন্দর থেকে শাশুড়িকে নিয়ে আসার জন্য। কবি কথাবার্তা শেষ করেন এই বলে, ‘ভাবছি মেক্সিকো চলে যাব, সেখানেই থাকব বাকি জীবন।’ তখনো এক বছর হয়নি ওয়েল্ডনের ডিভোর্স সারা হয়েছে স্ত্রী অ্যানের সঙ্গে। তাঁর পারিবারিক শান্তি ও মানসিক ভারসাম্যের অভাবের কথা জ্যানেট ভালোমতোই জানতেন। কিন্তু তখন তিনি ফোন ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। পরে অবশ্য তাঁর অনুশোচনার সীমা ছিল না, ‘মনে হয়েছে মানুষ খুনের জন্য দায়ী আমি।’
দ্বিতীয় বান্ধবীর নাম পরবর্তীকালে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে নামকরা live chat 888sport-সমালোচক হিসেবে। তিনি তখন সানফ্রান্সিসকো অঞ্চলে 888sport live footballিক এবং রেডিওকথকের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। আমেরিকায় রেডিও স্টেশনগুলোর নামকরণ হয় বর্ণমালা দিয়ে – মিসিসিপি নদীর পূর্বদিকে সব রেডিও স্টেশনের নাম ‘ডবলু’ দিয়ে শুরু, আর পশ্চিমে ‘কে’ দিয়ে। বার্কলে শহরের বামপন্থী, প্রগতিশীল রেডিও স্টেশন কেপিএফএ। সেখানে একটি সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করতেন ওয়েল্ডন ও তাঁর বন্ধু মাইকেল গ্রেগ, তার বিষয়, live chat 888sport এবং নাম ‘মুভি ক্যামেরার অন্তরালে’। এই বান্ধবী নিয়মিত অংশ নিতেন সেই অনুষ্ঠানে অতিথি888sport live chatী হয়ে। তাঁর নাম পলিন কেল (১৯১৯-২০০১)।
পলিনের সঙ্গেও তাঁর কথাবার্তা খুবই সংক্ষিপ্ত। তিনি বলেছিলেন, ‘কীভাবে তোমরা চালিয়ে যাও দৈনন্দিন জীবনযাত্রা, আমি ঠিক বুঝি না।’ আর কথা হয়েছিল সিনেমা-বিষয়ে। সিনেমা নিয়ে কবির উৎসাহ দীর্ঘদিনের। যুদ্ধের সময় তিনি নিউজরিলের জন্য ছবি তোলার কাজ করেছেন। তাঁর জীবনের স্বপ্ন ছিল live chat 888sport প্রযোজনা ও পরিচালনা এবং একটি প্রোডাকশন স্টুডিও গড়ে তোলা। হারিয়ে যাওয়ার আগে তিনি কয়েকটি অসমাপ্ত চিত্রনাট্য নিয়েও কাজ করেছিলেন।
তারও আগের দিন, রোববার, ১৭ জুলাই সন্ধেবেলা বন্ধু মাইকেল গ্রেগের সঙ্গে শেষ দেখা। মাইকেল শুধু তাঁর বন্ধুই নন, বলতে গেলে বিজনেস পার্টনার। তাঁকে নিজের অ্যাপার্টমেন্টে ডেকেছেন কবি, কিনে এনেছেন দামি মদ, জ্যাক ড্যানিয়েলের ঝকঝকে নতুন বোতল। মদের গস্নাস হাতে নিয়ে দুই বান্ধবের অন্তরঙ্গ কথোপকথন। ফোনোগ্রামে বেজে চলেছিল জ্যাজ-সংগীত। প্রাসঙ্গিক শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর গ্রেগ কবিকে বললেন শরীরের যত্ন নিতে। বিবাহবিচ্ছেদের পর থেকেই তিনি আর নিয়মিত খাওয়া-দাওয়া করছেন না, এভাবে চললে শরীর ভেঙে পড়বে তাঁর। সাধারণত এই দ্বৈত সংলাপে কবি কথা বলেন কম, শোনেন বেশি; মাইকেলই কথা চালিয়ে যান, আজকেও তাই হতে যাচ্ছিল। কিন্তু কয়েক পেগ পেটে পড়ার পর অস্বাভাবিক মুখর হয়ে উঠলেন কবি। কোনোরকম ইতস্তত না করেই স্পষ্টভাবে বললেন, তাঁর সামনে এখন দুটি পথ খোলা আছে। এক, পাকাপাকিভাবে মেক্সিকো চলে যাওয়া এবং কিছু কাজকর্ম খুঁজে নিয়ে বাকি জীবন সেখানে কাটানো। এবং দুই, গোল্ডেন গেট সেতুর ওপর থেকে জলে ঝাঁপ দেওয়া। যদিও মদের নেশা চেপে ধরতে শুরু করেছে, তাঁর কণ্ঠস্বর দৃঢ়, বক্তব্যে দ্বিধা নেই, যেন শেষ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তিনি। কোনোরকম আবেগ ছাড়াই নিস্পৃহ কণ্ঠে বললেন তিনি – আগের সপ্তাহে আর সহ্য করতে না পেরে তিনি গিয়েছিলেন গোল্ডেন গেট সেতুতে আত্মহত্যার জন্য। এবং রেলিং ধরে খানিকটা উঠেও ছিলেন; কিন্তু টপকে উলটোদিকে চলে যাওয়ার আগে তাঁর সাহস নিভে যায় এবং লেজ গুটিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন। হয়তো প্রশান্ত মহাসাগর থেকে উড়ে এসেছিল কুয়াশা, ঢেকে দিয়েছিল দিগন্ত। হয়তো তাঁর মনে পড়েছিল হার্ট ক্রেনের ‘সেতু’ 888sport app download apkটির কথা –
A bedlamite speeds to thy parapets,
Tilting there momently, shrill shirt ballooning,
এখন আর জানার উপায় নেই। তবে বাড়ি ফেরার আগে মাইকেল মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছিলেন যে, তিনি কবিকে রাজি করাতে পেরেছেন মেক্সিকো যেতে এবং তিনি তাঁকে সাহায্য করবেন সেখানে চাকরি খুঁজতে। সেই শেষ দেখা। পরের দিন ফোন করে কিছু খবরাখবর দিলেন কাজকর্মের আর মনে হলো বন্ধুর মানসিক অস্থিরতা ও অশান্তি কমেছে খানিকটা। পরের দিন ফোন করল পুলিশ –
Pick up the pieces,
Throw them away,
Say, Amen,
Because like Humpty Dumpty
I can not be put back together again
(কবির রচিত গানের কলি)
তিন
নেব্রাস্কা রাজ্যের বিয়েট্রিস শহরে কবির জন্ম ১৯১৪ সালের ২৪ ফেব্রম্নয়ারি। কবির নিজের ভাষায় শহরটিতে রয়েছে ‘অস্বাভাবিক শান্তিময় অস্তিত্ব’। অবশ্য তাঁর জন্মমুহূর্তেই প্রচণ্ড তুষারঝড় – আটকে পড়ে দূরগামী ট্রেন আর বরফে চাপা পড়ে মৃত্যু হয় গ্রামের চাষার। কিইস পরিবারটি বংশপরিচয়ে জার্মান-আমেরিকান – ওয়েল্ডনের ঠাকুরদা ও ঠাকুমা দুজনেই জার্মান-বংশোদ্ভূত। বংশগত ব্যবসা লোহা-লক্কড়ের, বন্দুক ও তালাচাবি সারাইয়ের। ঊনবিংশ শতাব্দীতে এই অঞ্চলটি দিয়ে চালু হয় রেললাইন – কর্মযজ্ঞে, জিনিসপত্র বেচাকেনায় ও সরবরাহে অন্য অনেক পরিবারের সঙ্গে তাঁদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি।
কবির পিতা জন কিইস খুব অল্পবয়সে তাঁদের পারিবারিক
ব্যবসায়ের কর্ণধার হন। তিনি বিবাহ করেন এক অভিজাত পরিবারের কন্যা সেরা লুসি গ্রিনকে, যদিও তাঁদের অবস্থা তখন পড়ন্ত এবং তিনি স্কুলের শিক্ষিকার চাকরি করেন। বিবাহের সময় তাঁর বয়স তিরিশ ছুঁইছুঁই এবং প্রথম সন্তানের জন্মের সময় চৌত্রিশ পেরিয়েছে। কবির নাম রাখা হয় হ্যারি, যে স্থানীয় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে এই কষ্টকর সন্তান প্রসব ঘটে, তাঁর নামে। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই সকলে তাঁকে ‘হ্যারে’ নামে না ডেকে, মামাবাড়ির দিক থেকে পাওয়া মধ্যনাম ‘ওয়েল্ডন’ বলে ডাকতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত সেই নামটিই চালু হয়।
স্কুলের পাঠ শেষ করে সতেরো বছর বয়সে বাড়ির কাছাকাছি ডোন কলেজে লেখাপড়া শুরু করেন – প্রধান বিষয় ইংরেজি 888sport live football ও মনো888sport apk। ছোট কলেজ, মাত্র দুশো পঞ্চাশজন ছাত্রছাত্রী। মূলত কলেজে এসেই তাঁর শুরু হয় 888sport live footballে অনুরাগ ও ধূমপান – দুটিই তিনি চালিয়ে যাবেন বাকি জীবন। এখানকার নাট্যকলা বিভাগে তাঁর প্রথম নাটকে অভিনয় এবং ইংরেজি বিভাগের ক্লাসে কর্মভার (assignment) পূর্ণ করতে গিয়ে প্রথম গল্প লেখা। এর পরে কলেজ পালটে তিনি গেলেন লিংকন শহরের নেব্রাস্কা বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং নিয়মিতভাবে গল্প লেখা শুরু করে দিলেন। সেখানে ইংরেজি 888sport live football বিভাগ থেকে প্রকাশিত হতো তৃণভূমির নৌকা নামে একটি লিটল ম্যাগাজিন। এই কাগজে লিখেই তাঁর কথা888sport live footballে হাত পাকানোর শুরু। 888sport app download apk তাঁর কলমে এসেছে আরো অনেক পরে। কথিত আছে যে, সদ্য-অকালমৃত কবি হার্ট ক্রেনের একটি জীবনী পড়ে তিনি প্রথম 888sport app download apk লেখার অনুপ্রেরণা পান। ১৯৩৬ সালে যখন তাঁর প্রথম, পাতে দেওয়ার মতো, 888sport app download apkটি প্রকাশিত হয়, তার আগেই তিনি কয়েক ডজন গল্প ও একটি সম্পূর্ণ 888sport alternative linkের জনক।
১৯৪৩ সালে সানফ্রান্সিসকোর কোল্ট প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ অন্তিম মানুষ। যদিও তাঁর 888sport app download apkর শরীরে তিরিশের দশকের দুই মহীরুহ টিএস এলিয়ট ও ডবিস্নউএইচ অডেনের প্রভাব লক্ষ করার মতো, তাঁর নিজস্ব প্রতিভা ও মৌলিকতাও অনস্বীকার্য। এই গ্রন্থের অনেক 888sport app download apkই অনুচ্চকণ্ঠে স্বীকারোক্তির, অথচ আশ্চর্যের কথা, একেবারেই আত্মজীবনীমূলক নয় তারা। এবং 888sport app download apkর মূল স্বরটি মধুর নয়, তিক্ততায় ভরা। এর প্রায় দুদশক পরে ডোনাল্ড জাস্টিস তাঁকে অভিহিত করবেন ‘পৃথিবীর তিক্ততম কবি’ বলে।
চার বছর পরে ১৯৪৭ সালে নিউইয়র্কের একটি নামী প্রকাশনা সংস্থা থেকে বেরোলো দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ জাদুকরদের পতন। প্রথম গ্রন্থের তেরোটি 888sport app download apk আবার প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় গ্রন্থে। দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের শেষ এবং ঠান্ডাযুদ্ধের শুরু তখন – মানবমনের হতাশা ও সমস্যাবহুল জীবন তাঁর বিষয়বস্ত্ত। মার্কিন কবিদের মধ্যে তিনি স্থান পেলেন প্রথম সারিতে।
অথচ অন্য প্রায় প্রতিটি 888sport live chatমাধ্যমেই তিনি হাত দিয়েছেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন এবং অনেক সময়ই পুরোপুরি সফল না হলেও দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি সুররিয়ালিস্ট এবং বিমূর্তবাদী ছবি এঁকেছেন, গান লিখেছেন ও তাতে সুর দিয়েছেন, নাটক লিখেছেন এবং তার অভিনয় ও পরিচালনা করেছেন, করেছেন পুস্তক-সমালোচনা, সংগীত-সমালোচনা ও live chat 888sport-সমালোচনা, অংশ নিয়েছেন রেডিওতে নিয়মিত আলোচনায়, পিয়ানো বাজিয়েছেন জ্যাজ ব্যান্ডে। যদিও তিনি মূলত কবি এবং 888sport app download apkই তাঁকে নিয়ে যায় খ্যাতির শিখরে, সারাজীবনে একটি 888sport app download apk না লিখলেও আমেরিকার 888sport live chatজগতে তিনি হতেন এক উলেস্নখযোগ্য ব্যক্তিত্ব।
চার
ওয়েল্ডন কিইসের জন্ম ১৯১৪ সালে। বেঁচে থাকলে এতদিনে তাঁর বয়স হতো একশ তিন। ঘটনাটি দুর্লভ হলেও অসম্ভব
নয়। পোল-আমেরিকান কবি চেশোয়াভ মিউশ বেঁচেছিলেন তিরানববই বছর (১৯১১-২০০৪) এবং 888sport app download apk লিখে গেছেন প্রায় অন্তিম দিনটি পর্যন্ত। নববই পেরিয়েছেন অরুণ মিত্র, অন্নদাশংকর রায় ও বিল্ব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো কবিরা। ওয়েল্ডনের সমবয়েসি এক খ্যাতনামা কবি এখনো জীবন্ত এবং সক্রিয় – চিলির নিকানোর পাররা।
জীবিত থাকলে তিনি কি হতে পারতেন আমেরিকার প্রধানতম কবি, নাকি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর 888sport app download apkর ধার কমে যেত? এখন আর জানার কোনো উপায় নেই, কারণ মধ্যযৌবনে একচলিস্নশ বছর বয়সে, একদিন হারিয়ে গেলেন তিনি।
বর্তমানকালে ওয়েল্ডন কিইস সম্পূর্ণভাবেই বিস্মৃত। মার্কিন 888sport app download apkর নিবিষ্ট পাঠকরাও হয়তো তাঁর নাম শুনলে চিনতে পারবেন না। পঞ্চাশ এবং ষাটের দশকে মার্কিন 888sport app download apkর যে-কোনো সংকলনে তাঁর উপস্থিতি ছিল প্রায় নিয়মিত। পরে কমে আসে তাঁর 888sport app download apkর জনপ্রিয়তা। সানফ্রান্সিসকো শহরের কাছাকাছি বসবাসের সূত্রে আমি প্রথম তাঁর 888sport app download apkর সঙ্গে পরিচিত হই – তাঁর সতীর্থ কবিদের বিষয়ে আলোচনার সময় তাঁর নামও উঠে আসে। তারপর ২০০৫ সালের গ্রীষ্মে তাঁর অন্তর্ধানের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষে শুরু হয় সংবাদপত্রে ও পত্রপত্রিকায় আলাপ-আলোচনা। কবির অন্তর্ধানের দুবছর পরে শুরু হয় তাঁর 888sport app download apkসমগ্র প্রকাশের প্রচেষ্টা। আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য পিএইচ.ডি শেষ করা তরুণ কবি ডোনাল্ড জাস্টিসকে (১৯২৫-২০০৪) ভার দেওয়া হয় সম্পাদনার। ১৯৬০ সালে আইওয়ার স্টোন ওয়াল প্রেস থেকে প্রকাশিত হয় একশ চলিস্নশ পৃষ্ঠার গ্রন্থটি। কবির পিতা জন কিইস অর্থ সাহায্য করেছিলেন। প্রথমে তাঁর ইচ্ছা ছিল ওয়েল্ডনের আঁকা একটি ছবি দিয়ে বইটির প্রচ্ছদ বানানো হোক; কিন্তু পরে স্ত্রীর কথা মেনে নিয়ে কবির একটি ফটো দেওয়া হয় প্রচ্ছদে – কবি যদি জীবিত থাকেন এভাবে তাঁকে খুঁজে পাওয়া সম্ভব হলেও হতে পারে। চামড়ায় বাঁধানো দুশো কপি ছাপা হয় এবং জন কিইস তাঁর মৃত্যুর আগে দেখে যেতে পারেন সন্তানের গ্রন্থ প্রকাশনা। আর ১৯৬১ সালের জানুয়ারি মাসে নিউইয়র্ক টাইমস সংবাদপত্রে গ্রন্থটির আলোচনা প্রকাশিত হয়। ‘ম্যাডিসন অ্যাভিনিউতে অচেনা’ নামক বুক রিভিউটি লেখেন সতীর্থ কবি কেনেথ রেক্সরথ (১৯০৫-৮২)। পরে বইটির নতুন সংস্করণ প্রকাশিত হয় এবং যুক্ত হয় অপ্রকাশিত/অগ্রন্থিত 888sport app download apkবলি। ১৯৯২ সালে প্রকাশিত পেপারব্যাক সংস্করণটি এখনো বাজারে কিনতে পাওয়া যায়।
১৯৬১ সালে চিত্রপরিচালক জন হাল একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেন, ওয়েল্ডন কিইসের জগৎ, পাবলিক টেলিভিশনের জন্য। সেই উপলক্ষে তিনি কবির পিতামাতা জন ও সেরা কিইসের ইন্টারভিউ নিয়েছিলেন। তাঁরা সদ্য হাওয়াই দ্বীপ এবং অস্ট্রেলিয়া ক্রুজ জাহাজে 888sport slot game করে এসেছেন। যখন তাঁদের জাহাজ সিডনি বন্দরে ঢুকছে তখন আরেকটি জাহাজ বেরিয়ে আসছে বন্দর ছেড়ে – তার ডেকে দাঁড়িয়ে একজন যাত্রী, চেহারা হুবহু তাঁদের সন্তান ওয়েল্ডনের মতো। দুজনেই মানুষটির দিকে হাত নাড়েন, চিৎকার করে ডাকেন; কিন্তু ভদ্রলোক শুনতে পান না। তারপর দুটি জাহাজের দূরত্ব বাড়ে।
যেহেতু তিনি আত্মহত্যার বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভেবেছেন অনেক বছর ধরে, তাঁর বন্ধু-বান্ধব মেনে নিতে পারেননি যে, তিনি সত্যি সত্যিই আত্মহত্যা করবেন। কাজটি মানুষ করে ঝোঁকের মাথায়; চিন্তাভাবনা করে, আটঘাট বেঁধে নয়। এরপরও অনেকে তাঁকে রাসত্মায়, ঘাটে, হোটেলে, ক্লাবে দেখতে পেয়েছেন অনেকবার, কিন্তু কাছে যাওয়ার বা কথাবার্তা বলার আগেই মিলিয়ে গেছেন তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই আস্তে আস্তে করে হলেও সরে যাচ্ছিলেন, মিলিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। জীবন সম্পর্কে যিনি লিখেছিলেন, ‘…the customary torments,/ And the usual wonder why we live।’ তাঁর অন্তর্ধানের পরে এই পঙ্ক্তিগুলো এক নতুন মাত্রা পায়। যাঁরা তাঁকে গভীরভাবে চিনতেন তাঁরাও আর নিশ্চিত নন সত্যি সত্যিই কতটা জানতেন তাঁকে। কেনেথ রেক্সরথের উক্তিটি এখানে প্রণিধানযোগ্য, ‘He is Robinson Crusoe, utterly alone on Madison Avenue, a stranger and afraid in the world of high-paying news weeklies, fashionable galleries, jazz
concerts, highbrow movies, sophisticated revues.’
তথ্যসূত্র
- Vanished act : The life and Art of Weldon kees, James Riedel, University of Nebraska press, 2003.
- The Collected Poems of Weldon kees, Edited by Donald Justice, Stone Wall Press, 1960.
- Weldon Kess, William T Ross, Twoyne Publishers, 1985.
- ‘The Disappearing Poet – whatever Happened to Weldon Kees?’, Anthony Lane, The New Yorker Magazine.
- Weldon Kees and the midcentury Generation : Letters 1935-1955, Edited and with commentary by Robert E Knoll, University of Nebraska Press; 1986.
পুনশ্চঃ বিভিন্ন সময়ে লেখা ওয়েল্ডন কিইসের তিনটি 888sport app download apkর বাংলা 888sport app download apk latest version এখানে সংকলিত হলো। প্রথম 888sport app download apkটির (১৯২৬) বিষয় শৈশব – মধ্যতিরিশের কবি বিশ বছর পেছনে ফিরে তাকিয়েছেন। নেব্রাস্কার ছোট শহরে সিনেমা ছিল গুরুত্বপূর্ণ বিনোদন এবং live chat 888sport মাধ্যমটিকে কেন্দ্র করেই তাঁর কল্পনার প্রসার ও সমালোচকের মনোভঙ্গি নিয়ে চিন্তাভাবনার শুরু। মিল্টন সিলস এবং ডরিস কেনিয়ান তখনকার দিনের live chat 888sportের জনপ্রিয় তারকা। 888sport app download apkটি একসময় খুব জনপ্রিয় হয়েছিল এবং অনেক সংকলনে স্থান পেয়েছিল। দ্বিতীয় 888sport app download apkটি (‘আমার মেয়ের জন্যে’) ১৯৪০ সালে রচিত, তিনি তখন বিবাহিত, সংসারী, বাইরে থেকে মনে হয় তৃপ্ত, সুখী জীবন; অথচ কোথায় যেন রয়ে যায় অস্বস্তি। তিনি প্রথাবিরোধী বুদ্ধিজীবী, তাঁর চিন্তাভাবনা সাধারণ মধ্যবিত্তের চেয়ে আলাদা। 888sport app download apkটি একটি নামকরা পত্রিকায় প্রকাশিত হয় (কেনিয়ান রিভিউ) এবং কবি হিসেবে তাঁর সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। তৃতীয় 888sport app download apkটি (‘সাবটাইটেল’) একেবারে প্রথমদিকের রচনা – live chat 888sport মাধ্যমটিতে তাঁর অবাধ গতির পরিচয় দেয় এবং ভবিষ্যতে যে-ভয়ংকর ব্যর্থতার প্রত্যাশা তাঁকে পাকে পাকে জড়িয়ে ধরবে এমন মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হবে – তার খানিকটা পূর্বাভাসও লক্ষ করা যায়। 888sport app download apkটি তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ অন্তিম পুরুষের ভূমিকা হিসেবে প্রকাশিত হয়।
ওয়েল্ডন কিইস
১৯২৬
আবার জ্বলে ওঠে বারান্দার আলো,
নভেম্বরের শুরু, রাশি রাশি শুকনো পাতা
ঝেঁটিয়ে জড়ো করা, দোলনা চেয়ারের
ক্যাঁচ-ক্যাঁচ। রাসত্মার ওপারে
গ্রামোফোন বাজে ‘জা-ডা’।
কমলা রং চাঁদ। দেখতে পাই
প্রতিবেশীর জীবন, ছক-কাটা ও বিকৃত
ভবিষ্যতের সব যুদ্ধের মতনই।
র পাগল হয়ে যায়, ব-এর গলা কাটা,
পনেরো বছর পরে, ওমাহা শহরে।
আমি তাদের চিনতাম না তখন
দরজায় আঁচড় কাটে আমার শিকারি কুকুর।
বাড়ি ফেরা হলো মিল্টন সিলস আর ডরিস
কেনিয়ানের সঙ্গে দেখা করে। বয়েস বারো।
আবার জ্বলে ওঠে বারান্দার আলো।
(প্রথম প্রকাশ : হার্পার্স ম্যাগাজিন, আগস্ট, ১৯৪৯)
আমার মেয়ের জন্য
আমার মেয়ের চোখের ভেতরে তাকিয়ে
ভোরের নির্দোষ শরীরের অন্তরালে দেখি
মৃত্যুর লুকানো চিহ্ন, কিন্তু সে দেখেও দ্যাখে না।
শীতলতম হাওয়া বয়েছে ওই কেশরাজির ফাঁকে,
আর ওই খুদে খুদে হাতে জড়িয়েছে সমুদ্রশৈবাল;
নিশীথের শস্নথ বিষ, সহনীয় অথচ স্বাদহীন,
মিশে যায় তার শোণিতে। রুখোশুখো বছরগুলোতে দেখেছি
তার বহিরঙ্গে লাবণ্যহীন রূপ : নোংরা, যুদ্ধ শেষ হলেও
মৃত্যুর রেশ থেকে যায় যেমন, সবুজাভ রোগা রোগা পায়ে।
অথবা, ঘৃণার স্রোতে তার বড় হওয়া, অন্যের দুঃখ-বেদনায়
তার মনে তৃপ্তির ছোঁয়া; হয়তো কোনো সিফিলিস রোগী
বা পাঁড়মূর্খের নৃশংস, নির্মম নববধূ হবে সে।
এ সবই কিন্তু সূর্যের আলোয় টকটক জল্পনা কল্পনা।
আমার নিজের মেয়ে নেই। চাইও না।
(প্রথম প্রকাশ : কেনিয়ান রিভিউ, বসন্ত, ১৯৪০)
সাবটাইটেল
(নরিস গেটি ও মরিস জনসনের উদ্দেশে…)
সুধীগণ, আপনাদের সামনে আজ প্রদর্শিত হবে
এক মৃত্যুময় live chat 888sport : দৃশ্যগুলি দেখুন
জিরজিরে সেলুলয়েডে
বিজ্ঞাপন থাকবে না, ট্যাক্সও লাগবে না।
কেবল কয়েকটি বিনীত অনুরোধ :
চুইংগামগুলি আসনের তলায় সেঁটে দিন
বা চটপট গিলে ফেলুন, পপকর্নের প্যাকেট
রেখে আসুন বাইরে। দরজা
একবার বন্ধ হলে মুভি শেষ না হওয়া পর্যন্ত
খুলবে না। দয়া করে পড়ে দেখুন
প্রোগ্রাম : জেনে রাখুন, কোনো রাসত্মা নেই
বেরোনোর। দরকারি সতর্কতা
নিতে হয়েছে আমাদের।
ছবিতে সংলাপ নেই, এমনকি
মানুষের কণ্ঠস্বরও নেই : অনেক ভেবেচিন্তে
কাহিনির সঙ্গে তাল রেখে জুড়ে দেওয়া হয়েছে
শুয়োরের ঘোঁত-ঘোঁত, বন্দুকের মৃদু গর্জন,
শূন্য চকোলেটবার মেশিনের মৃত্যুশীতল ক্লিক।
আবার বলি, মন দিয়ে শুনুন : বেরোনোর
রাসত্মা বন্ধ, দারোয়ান পর্যন্ত নেই যে ঘুষ খাওয়াবেন,
পেচ্ছাপখানায় কোনো জানালা নেই।
এই ফিল্ম শেষ পর্যন্ত না দেখার
একমাত্র উপায় দুম করে মরে যাওয়া।
আলো নেভাও, অপারেটরকে মনে করাও
তার ইউনিয়ন কার্ডের কথা :
সোজা হয়ে বসুন, পর্দায় উন্মোচিত হবে
আপনার উত্তরাধিকার আর অমোঘ নিয়তি
(রচনাকাল ১৯৩৭-৩৮ : প্রথম প্রকাশ ১৯৪৩)


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.