কালান্তরে এসেছিলে উড়ে
কালান্তরে ফিরে গেলে ঘুরে
আরম্ভের আগে ছিল আরম্ভ তোমার,
আরম্ভের আগে থাকে আরম্ভ সবার,
সবার থাকে না শুধু শেষ হয়ে শেষ
তুমি কিন্তু কালান্তরে শেষেও অশেষ;
সেই কথা কিছু আছে জানা,
বাকিটুকু বাকি থাক অনন্ত অজানা।
প্রায়-আদিপুরুষের নাম জগন্নাথ কুশারি
পীরালি ব্রাহ্মণ কন্যা বিয়ে করে বাড়ি
বানালেন খুলনার দক্ষিণডিহিতে;
এমন বিয়ের ফলে সমাজে ‘পতিতে’
লেখালেন নাম রায়চৌধুরীদের মতোন;
তুকিীপাঠান থেকে নানাজাতি নৃতত্ত্বমিশ্রণ
আর বংশের সংস্পর্শে আনে এই তো নিয়তি!
সনাতন নবায়িত হলে কার যে কি ক্ষতি!
পিতা দেবেন্দ্রনাথের কাছে ব্রাহ্মধর্মে দীক্ষা,
‘ঈশ্বর আছেন ছেয়ে সমস্তকে’ উপনিষদের শিক্ষা,
পুরোনো বিশ্বাস থেকে ফিরলেন আপন নিশ্বাসে,
আদি-মধ্য-অন্তে যেন পরিশ্রুত দমে দমে শ্বাসে;
মানুষ নদীর মতো বাঁকে বাঁকে শুধু বয়ে যায়,
হারায় না কোনো কিছু, যা হারায় তা-ও পেয়ে যায়
ভিন্ন পথে, যেতে যেতে ভিন্ন ইশ্টিশনে,
নিজে যদি পরিযায়ী,
ঘরবাড়ি পরিযায়ী
প্রত্ন প্রয়োজনে।
উৎস থেকে যাত্রা যদি
মুহূর্তে মুহূর্তে উৎস বদলায় নদী যথা নিরবধি,
যদিও আদিম উৎসরাজি মিলেমিশে উৎসবৃত্ত হয়;
নিশ্বাসে নিশ্বাসে তার বিশ্বাসও নবায়িত প্রজাপতিময়।
পনেরো সন্তান যার, তার মধ্যে চতুর্দশ,
প্রতিভা প্রকৃতিসত্য, নয় কভু অপ্রাকৃত বশ।
পঁচিশে বৈশাখ যদি জন্মদিন, চিরজন্ম বাইশে শ্রাবণে;
কালান্তরে কালসাক্ষী, খণ্ডজন্ম প্রয়োজন নেই অকারণে।
বর্ষপঞ্জি শেষ হলে, অনন্তপঞ্জির দেখা সহজে মেলে না,
কালান্তরে এতো জন্ম এতো মৃত্যু – মাথায় খেলে না।
অষ্টপ্রহরের ভাগে সব পাঠ, সব গুরু, নৃত্য বা সংগীত থেকে
ধর্ম, কলা, লোকজ্ঞান, 888sport apkের সবকেরা যায় এঁকেবেঁকে;
প্রহরে প্রহরে পাঠ, বাড়িজোড়া পাঠশালা, কখনোবা রথে
শৈশব কেটেছে শুধু ঝি-চাকরদের হেফাজতে,
হঠাৎ সান্ধ্য888sport slot game; অনেক মহল, ঘর, আঁকাবাঁকা অনেক আঙিনা :
আমার রাজার বাড়ি এখন কোথায়? হায়, আমিও জানি না!
কতদিন একটা বাঁখারি দিয়ে রহস্য খুঁড়েছি গোলাবাড়ির মাটিতে,
ধুলোর ভিতরে আতাবীজ পুঁতে দিয়ে উড়ে গেছি হাঁটিতে হাঁটিতে
কত যে আশ্চর্য পথে, পুকুরপাড়ের বটে, চিলেদের ডাকে,
অর্ধপরিচিত এক প্রাণী এসে আমাকে ঘুরিয়ে নিত ভুবনের বাঁকে…
বৃদ্ধবয়সে এসেই এসব লিখেছি সুখে ‘ছেলেবেলা’ নামে,
আমাকে পুরেছি আমি এভাবেই কালান্তরে মহাকালখামে।
মরণ রে তুঁহু মম জীবন সমান
গানে গানে অভিনয়ে শরীরচর্চায় কবি অনন্তর আধিক্য কমান
বিলাতফেরত আমি ধর্মে ধর্মে ভেদবুদ্ধি কিছুই শিখিনি
সভ্যতার সংজ্ঞা মানে মনুসংহিতার সদাচার ছাড়া কিছুই লিখিনি
এভাবেই ছাতিমতলায়, আন্দালুসিয়ার সেনোবিয়া থেকে ওকাম্পো হাওয়ায়
সংসারে সংসার লিখে একজন্মে শতজন্ম মা গঙ্গার স্রোতে বয়ে যায়
শিলাইদহের আঙিনায় কত গগন হরকরা এসে গান গায় সোনার বাংলায়
যখন চড়েছি বোটে, পদ্মার রুপোলি স্রোতে, মাছেদের সাথে
মুহূর্ত অনন্ত স্রোতে সুন্দরবনের বাঘ থাবা রাখে বাওয়ালির পাতে
আমি কোথায় পাবো তারে, আমার সোনার বাংলা যেরে
আচানক মুগ্ধ-পূর্ণিমায় মুক্তিযোদ্ধা লাঠিয়াল লাফায় হা-রে-রে
প্রভুর পতন হলে জলডাকাতেরা আসে,
তারাই পাহারা দেয় যবে
কুহেলী কৃপাণ হাতে মহামানবের শিশু হাসে
আকাশ মাথায় করে এ-বাংলার মাটিথালা মাথে
আহা, কী রূপ হেরিনু আমি অমারাতে
জেলেজোলাচাষীদের পাতে
অনন্তর আশিতেই ভাসি আমি যৌবনের নীলদরিয়ায়
আমার দুচোখ বেয়ে লখিন্দর-বেহুলার ভেলা ভেসে যায়
সেহেতু আমিও তবে ফিরে আসি মুণ্ডুক রাঙাবালি
দেশ-মহাদেশ থেকে ছিরাদিয়া রঙ্গপুর জাফলং তেভাগার চর
অনন্ত বাঙালি আমি অনঙ্গ বাঙালি
তরঙ্গে তরঙ্গে তুই প্রমুক্তি ভাসালি
রাখি আমি কালান্তরে মানুষের মনান্তরে
বাঙালির সত্তান্তর তার স্বাধীনতার খবর
শরীরে শরীরে ঘষে নিশিপ্রহরের ঘরে অষ্টপ্রহরে
‘জয় জয় জয় রে মানব-অভ্যুদয়’
জয় জয় জয় জয় বঙ্গময় জয় অঙ্গঅনঙ্গময়
জয় মহামানবময় জয় বিশ্বময় জয়মহাজন্মময়
এ জীবন দুখানন্দ, এ জীবন মত্তানন্দ, নয় আর কিছু নয়
জয় লোকমানবের জয় জয়মহামানবের জয় জয়জন্মময়
‘জয় জয় জয় রে মানব-অভ্যুদয়’
০৯-১৩.০৪.২০২১

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.