কবি কুসুমকুমারী দাশ

কুসুমকুমারী দাশ রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের মা। তিনি নিজেও ছিলেন একজন কবি। সেই যুগে সংসার ও সমাজ সামলে 888sport live footballচর্চা অব্যাহত রাখা একজন মহিলার পক্ষ বেশ দুরূহই ছিল। সেই দুরূহ কাজটি তিনি করেছেন নিবিষ্টচিত্তে।

‘আমাদের দেশে হবে সেই ছেলে কবে/ কথায় না বড় হয়ে কাজে বড় হবে।’ আমরা অনেকেই কমবেশি পরিচিত কবি কুসুমকুমারী দাশের (১৮৭৫-১৯৪৮) এই প্রবাদপ্রতিম পঙ্ক্তির সঙ্গে।

কুসুমকুমারী দাশ শুধু কবিই নন, তিনি সুশিক্ষিত ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের অধিকারী এবং ব্রাহ্ম সমাজের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। বাংলা 888sport live footballের ইতিহাসে গিরীন্দ্রমোহিনী (১৮৫৮-১৯২৪), মানকুমারী বসু (১৮৬৩-১৯৩২), বেগম রোকেয়া (১৮৮০-১৯৩২) প্রমুখ মহিলা কবির মতো কুসুমকুমারী দাশেরও একটি বিশিষ্ট স্থান রয়েছে।

কুসুমকুমারী দাশ ১৮৭৫ খ্রিষ্টাব্দে (২১শে পৌষ ১২৮২ বঙ্গাব্দ) বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা চন্দ্রনাথ দাশ, মা ধনমনি দেবী। পিতার পৈতৃক নিবাস আগৈলঝাড়ার গৈলা গ্রামে। চন্দ্রনাথ ও তাঁর অগ্রজ কালীমোহন দাশ ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করলে নিজ গ্রামবাসীর বিরোধিতার ফলে তাঁরা পৈতৃক গ্রাম ছেড়ে বরিশাল শহরে চলে আসেন। বরিশালে এসে প্রথমদিকে তিনি সর্বানন্দ দাশের বাড়িতে কিছুদিন বাস করেন। সর্বানন্দ দাশ তখন বরিশালের ব্রাহ্মসমাজের সম্পাদক। তিনি ছিলেন জীবনানন্দ দাশের পিতামহ। আমরা সহজেই অনুমান করতে পারি, কুসুমকুমারী দাশের জন্মের আগেই দুই পরিবারের মধ্যে একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। চন্দ্রনাথের এক পুত্র প্রিয়নাথ এবং তিন কন্যা কুসুমকুমারী, সুকুমারী ও হেমন্তকুমারী।

কুসুমকুমারী প্রাথমিক পাঠ শুরু করেন বরিশালে। তখন বরিশালে মেয়েদের হাইস্কুল ছিল না। ছাত্রবৃত্তি পর্যন্ত পড়ানো হতো মাইনর স্কুলে। ১২৯৬ বঙ্গাব্দে কিছুকালের জন্য বরিশালে মেয়েদের হাইস্কুল করা হয়। ইন্দুভূষণ রায় চৌধুরী ছিলেন সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ছাত্রীস্বল্পতার কারণে অচিরেই স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। কুসুমকুমারী এই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। পরে তাঁকে কলকাতায় বেথুন স্কুলে ভর্তি করা হয়। কুসুমকুমারীর শিক্ষালাভের সুযোগ সম্পর্কে অনুজ হেমন্তকুমারীর একটি মন্তব্য এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য – ‘আমরা নিঃসম্বল হইলেও আমাদের উচ্চশিক্ষা দিতে কার্পণ্য করেন নাই। প্রকৃতপক্ষে কুসুমকুমারী একটি বিদ্যানুরাগী পারিবারিক পরিমণ্ডল পেয়েছিলেন আশৈশব।’

১৮৯৪ সাল পর্যন্ত কুসুমকুমারী দাশ বেথুন স্কুলের ছাত্রী ছিলেন। প্রবেশিকা শ্রেণিতে (১৮৯৪) পড়ার সময় তাঁর বিয়ে হয়। এবং এর পরই তাঁর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অবসান ঘটে। হেমন্তমারী লিখেছেন – অনুমান ১৩০১ সালের ১৯শে জ্যৈষ্ঠ সর্বানন্দের দ্বিতীয় পুত্রসন্তানের সঙ্গে কুসুমকুমারীর বিয়ে হয়। সত্যানন্দের পূর্বপুরুষ বিক্রমপুরের দ্বিতীয় কীর্তিপাশা নদীর তীরে গাউপাড়া গ্রামের অধিবাসী ছিলেন। একসময় তাঁদের জমিদারি ছিল, যার কিছুটা অবহেলায় নষ্ট হয়। বাকিটুকু নদীতে বিলীন হলে তাঁরা বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে এসে বসবাস শুরু করেন।

সত্যানন্দের পিতা সর্বানন্দ দাশগুপ্ত বরিশালের কালেক্টরিতে কাজ করতেন। পরিবারে তিনিই প্রথম ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণ করেন। ব্রাহ্মধর্ম গ্রহণের পর বৈদ্যদের জাতিচিহ্নস্বরূপ গুপ্ত পদবি বর্জন করে দাশ লিখতে শুরু করেন। পরবর্তী জীবনে তিনি সর্বানন্দ দাশ নামেই পরিচিত হন। তারপর দাশ পরিবার বরিশালে নিজ বাড়ি নির্মাণ করে বাড়ির নাম রাখে ‘সর্বানন্দ ভবন’। এভাবেই বরিশালে দাশ পরিবারের স্থায়ী আবাসন তৈরি হয়। সত্যানন্দ দাশ ছিলেন বরিশালের ব্রজমোহন ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক এবং বরিশাল থেকে প্রকাশিত মাসিক ব্রাহ্মবাদী পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা-সম্পাদক। পরবর্তী সময়ে প্রজ্ঞাকামী দার্শনিক মানুষ সত্যানন্দ দাশ তাঁর জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেন কুসুমকুমারী দাশকে। তাঁর পঠিত একটি 888sport live শুনেই নাকি সত্যানন্দ বিয়েতে রাজি হয়েছিলেন।

সংসারজীবনে ও সামাজিক নানা কাজে ব্যস্ততার পরও কুসুমকুমারীর লেখালেখিতে তেমন ছেদ পড়েনি। তবে এ-কাজে তাঁর স্বামী তাঁকে বেশি সহযোগিতা করতেন। কুসুমকুমারীকে লেখা সত্যানন্দের একটি চিঠিতে এ-সম্পর্কে তাঁর মনোভাব জানা যায়, ‘সন্তান পালন ব্যতীতও একটা কিছু দ্রুত গ্রহণ কর, একখানা কিছু লিখতে আরম্ভ কর।’ কুসুমকুমারীর কর্মজীবন পুরোটাতেই সমাজসেবা প্রাধান্য পেয়েছে। শ্বশুর ও স্বামী ছিলেন বরিশালে ব্রাহ্মসমাজের দুই কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। ব্রাহ্মসমাজের সুবাদেই সেকালের 888sport promo codeরা একসময় ঘরের বাইরে পা রেখে সামাজিক কাজকর্মে নিজেদের নিয়োগ করতে পেরেছিলেন – তার প্রমাণ কুসুমকুমারী দাশ নিজেই।

কুসুমকুমারীর কর্মজীবনের পরিচয় পাওয়া যায় ব্রাহ্মবাদী পত্রিকায়, ‘স্থানীয় প্রসঙ্গ ও সংবাদ শিরোনাম’ বিভাগে। বিয়ের পর সংসারজীবনের দৈনন্দিন ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি 888sport live footballচর্চা ও ব্রাহ্মসমাজের কর্মকাণ্ড যেমন নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন, তেমনি পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনের প্রয়োজন, সংকটেও ছুটে গেছেন সবসময়। বাড়িতে শিশুসন্তান রেখে রাতের বেলা প্রতিবেশীর সজ্জাসংকটে গিয়ে দাঁড়ানোর মতো 888sport promo code শুধু সেকালে কেন এ-যুগেও অল্প। এ থেকেই উনিশ শতকের নবজাগরণের পথিকৃৎ রাজা রামমোহন রায়, বিদ্যাসাগর প্রমুখের সঙ্গে কুসুমকুমারীর চিন্তা ও কর্মের একটা মিল খুঁজে পাওয়া যায়। কুসুমকুমারীর শ্বশুরালয়ে ব্রাহ্মসমাজের উদ্যোগে শিশুদের নীতিশিক্ষা ও সংস্কৃতিচর্চার উদ্দেশ্যে নীতি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। এ-বিদ্যালয়ে শিশুদের প্রবণতা নির্ধারণের প্রচেষ্টা ছিল। কুসুমকুমারী দাশ এই স্কুলটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এভাবেই কুসুমকুমারী দাশ বরিশাল ব্রাহ্মসমাজের নানা রকম উন্নয়ন ও সেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘ সময়ব্যাপী এই কর্মকাণ্ড তাঁর আগ্রহ ও দক্ষতার সুস্পষ্ট পরিচয় পাওয়া যায়। শুধু পরিবেশগত নয়, ইচ্ছাশক্তির ফলেই তিনি 888sport promo code আন্দোলনের পথিকৃতের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে নিজেকে আলোকিত করেছেন। কুসুমকুমারী দাশ জীবনের অধিকাংশ সময় বরিশালে কাটালেও কৈশোরে কলকাতায় বেথুন স্কুলে, সন্তানের রোগ নিরাময়ের জন্য উত্তর ও পশ্চিম ভারতে পুত্র অশোকানন্দের কর্মক্ষেত্র পুনা, দমদমসহ বিভিন্ন স্থান পরি888sport slot game করেন। ১৯৪২ সালের ২২শে নভেম্বর স্বামী সত্যানন্দের মৃত্যুর পর কুসুমকুমারী মূলত অশোকানন্দ ও তাঁর পত্নী নলিনী দেবীর কাছেই থাকতেন। ১৯৪৭ সালের পর বয়সের ভার ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি আর বরিশালে যাননি। ১৯৪৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতায় তিনি পরলোকগমন করেন।

বিশ শতকের প্রথম তিন দশকে যেসব বাঙালি মেয়ে 888sport live footballচর্চা করেছেন, কুসুমকুমারী দাশ তাঁদেরই একজন। মূলত কিশোর, বালক ও তরুণদের উদ্দেশে রচিত 888sport app download apkগুলোর জন্য কুসুমকুমারী সর্বাধিক পরিচিত। তাঁর 888sport live footballকর্মের সার্বিক বিচারে সুমিতা চক্রবর্তী যে-মন্তব্য করেছেন তা অবশ্যই প্রণিধানযোগ্য। ‘স্ত্রী শিক্ষার প্রথম যুগে যে মেয়েরা সারাজীবন 888sport live football সাধনার সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রেখেছিলেন তিনি তাঁদেরই একজন, 888sport live football রুচির একটি একাত্মতা ছিল তাঁদের মধ্যে। নিজেদের জীবন ও সমাজ পরিবেশ থেকে একটি আদর্শ তাঁরা ছেঁকে নিতেন এবং লেখায় তাকে রূপ দিতে চেষ্টা করতেন। লেখার মধ্য দিয়ে উচ্চভাব প্রকাশ করতে হবে। বঙ্কিম যুগের এই প্রতিষ্ঠিত ধারণার তাঁরাই ছিলেন শেষ বাহক। সত্যিকার অর্থে ব্রাহ্মসমাজের 888sport promo codeরা সে-সময় স্ত্রী শিক্ষা ও স্ত্রী স্বাধীনতার পথ উন্মুক্ত করেছিলেন।’

ছোটবেলা থেকেই 888sport app download apk ও 888sport live লেখার হাত ছিল কুসুমকুমারী দাশের। রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় তাঁর এই ক্ষমতাকে সবসময় উৎসাহিত করতেন। প্রবাসী সম্পাদক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায় শিশুদের জন্য যে চিত্রশোভিত বর্ণশিক্ষার বই লিখেছিলেন তার প্রথমভাগে কুসুমকুমারী-রচিত যুক্তাক্ষরবিহীন ছোট ছোট দু-একটি পদ্যাংশ সংযোজিত করেছিলেন।

‘ছোট নদী দিনরাত বহে কুলকুল/ পরপারে আমগাছে থাকে বুলবুল।’

কুসুসকুমারীর 888sport app download apkগুলি ব্রাহ্মবাদী, প্রবাসী, মুকুল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। কুসুমকুমারীর মুকুল ও পৌরাণিক আখ্যায়িকা নামে দুটি গ্রন্থের কথা বিভিন্নজন উল্লেখ করলেও আজ অবধি প্রাচীন গ্রন্থাগার ও মুদ্রিত গ্রন্থতালিকায় কুসুমকুমারীর কোনো বইয়ের সন্ধান পাওয়া যায়নি। 888sport sign up bonusসুধা নামে তিনি একটি আত্মজীবনী লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু সেটিও বেশিদূর এগোয়নি। কুসুমকুমারী 888sport app download apk, 888sport live, দিনলিপি, শিশুতোষ গল্প এবং অসমাপ্ত আত্মজীবনী রচনা করেছেন। তবে তাঁর রচনার বড় অংশই 888sport app download apk। তাঁর 888sport live ব্রাহ্মসমাজের বিভিন্ন সভায় পাঠের উদ্দেশ্যে রচিত হয়েছে। তিনি ‘888sport promo codeত্বের আদর্শ’ নামে একটি 888sport live লিখে স্বর্ণপদকও লাভ করেন।

কবি জীবনানন্দ দাশ-প্রণীত ‘আমার মা ও বাবা’ 888sport liveে তিনি তাঁর মাকে নানাভাবে মূল্যায়ন করেছেন, সেই মূল্যায়নের কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হলো –

আমার মা শ্রীযুক্তা কুসুমকুমারী দাশ বরিশাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতার বেথুন স্কুলে পড়তেন। খুব সম্ভব ফার্স্ট ক্লাস অবধি পড়েছিলেন। তারপরই তাঁর বিয়ে হয়ে যায়।

তিনি অনায়াসেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ পরীক্ষায় খুব ভালোই করতে পারতেন। এ বিষয়ে সন্তানদের চেয়ে তাঁর বেশি শক্তি ছিল মনে হচ্ছে। পঁচিশ ত্রিশ চল্লিশ বছর আগে আমাদের বরিশালের বাড়িতে পরিবারের লোক888sport free bet অনেক ছিল। জেঠিমা ও মাকে সারাদিন গৃহস্থালির কাজকর্মে এবং উপরে ঠাকুমার তদারকে কত বিরোধী অস্বভাবী অবস্থার ভিতর দিয়ে কি রকম সহিষ্ণু, নিরলস ও সার্থকভাবে সংসারের কাজ সম্পন্ন হতো সে কথা ভাবলে আজ আশ্চর্য হয়ে থাকতে হয়।

‘আমরা তাঁর সন্তান ইউনিভার্সিটি থেকে পাশ করে বেরিয়েছি অনেকদিন হতে চলল। কিন্তু কার কাছে শিক্ষা পেয়েছিলাম আমরা? আমি অন্তত তিনজন মানুষের কাছে – একজন বাবা, একজন মা, আর একজন ব্রজমোহন স্কুলের হেডমাস্টার আচার্য্য জগদীশচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।

888sport live football পড়ায় ও আলোচনায় মাকে বিশেষ অংশ নিতে দেখেছি। দেশি-বিদেশি কোনো কোনো কবি ও ঔপন্যাসিকের কোথায় কী ভালো, কী বিশেষ দিয়ে গেছেন তারা এসবের প্রায় প্রথম পাঠ তাঁর কাছ থেকে নিয়েছি। ওয়ার্ডসওয়ার্থের অনেক ছোট ছোট 888sport app download apk তার মুখে শুনেছি এবং শেলী ব্রাউনিভের, বৈষ্ণব পদাবলী থেকে রবীন্দ্রনাথ পর্যন্ত আমাদের দেশের 888sport app download apkর মোটামুটি সম্পূর্ণ ঐতিহ্য জেনে ও ভালোবেসে এবং বিদেশি কবিদের কাউকে কাউকে মনে রেখে তিনি তাঁর স্বাভাবিক কবিজনকে শিক্ষিত ও স্বতন্ত্র করে রেখেছিলেন।’

‘মা বেশি লেখবার সুযোগ পেলেন না। খুব বড় সংসারের ভেতরে এসে পড়েছিলেন যেখানে শিক্ষা ও শিক্ষিতদের আবহ ছিল বটে কিন্তু দিনরাতের অবিশ্রান্ত কাজের ফাঁকে সময় করে লেখা তখনকার দিনের সেই অসচ্ছল সংসারের একজন স্ত্রীলোকের পক্ষে শেষ পর্যন্ত সম্ভব হয়ে উঠলো না আর। 888sport app download apk লেখার চেয়ে কাজ ও সেবার সর্বাত্মকতার ভেতরে ডুবে গিয়ে তিনি ভালোই করেছেন হয়তো। তাঁর কাজকর্মের আশ্চর্য নিষ্ঠা দেখে সেই কথা মনে হলেও ভেতরের খবর বুঝতে পারিনি। কিন্তু তিনি আরো লিখলে বাংলা 888sport live footballের বিশেষ কিছু দিয়ে যেতে পারতেন মনে হয়। মার 888sport app download apkয় আশ্চর্য প্রসাদগুণ। অনেক সময় বেশ ভালো 888sport app download apk বা গদ্য রচনা করছেন দেখতে পেতাম।

সংসারের নানা কাজকর্মে খুবই ব্যস্ত আছেন এমন সময় ব্রাহ্মবাদীর সম্পাদক আচার্য মনোমোহন চক্রবর্তী এসে বললেন – এক্ষুনি ব্রাহ্মবাদীর জন্য তোমার 888sport app download apk চাই, প্রেসে পাঠাতে হবে, লোক দাঁড়িয়ে আছে। শুনে মা
খাতা-কলম নিয়ে রান্নাঘরে ঢুকে এক হাতে খুন্তি আরেক হাতে কলম নাড়ছেন দেখা যেত। যেন চিঠি লিখছেন বড় একটা ঠেকছেন না কোথাও। আচার্য চক্রবর্তীকে প্রায় তখনই 888sport app download apk দিয়ে দিলেন। স্বভাবকবিদের কথা মনে পড়ত আমার, আমাদের দেশের লোককবিদের স্বভাবেই সহজাতকে।’

‘অনেক আগে প্রথম জীবনে মা কয়েকটি 888sport app download apk লিখেছিলেন। যেমন – ছোট নদী দিনরাত বহে কুলকুল অথবা দাদার চিঠি কিংবা বিপাশার পরপারে, হাসিমুখে রবি উঠে, একটি শান্ত, অর্থধ্বন সুস্মিত ভোরের আলো, শিশির লেগে রয়েছে যেন এসব 888sport app download apkর শরীরে। সেদেশ মায়েরই স্বকীয় ভাবনা কল্পনার স্বীয় দেশ। কোনো সময় এসে সেখান থেকে এদের স্থানচ্যুত করতে পারবে না।’

‘আজকের পৃথিবীর জীবনবেদের তাৎপর্য মা বেশি বলেছিলেন তাঁর পদ্য লেখায়, অভিভাষণে, সমাজে নানা সমিতির কাজকর্মে, লোকসমাজের সঙ্গে লেনদেনে নানা রকম বিখ্যাত বই ও চিন্তাধারার সঙ্গে পরিচয়ের পিপাসায়, ভাবনা বিচারের আধুনিকতার মর্ম দেখেছিলেন যখন তার কিছু আগেই 888sport app download apk লেখা প্রায় ঘুচিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে যে মহৎ 888sport app download apk হয়তো তিনি লিখে যেতে পারতেন, তাঁর রচিত কাব্যের ভেতরে অনেক জায়গাতেই তার আভাস আছে, কিন্তু কোনো জায়গাতেই সম্পূর্ণ সিদ্ধি নেই। মাঝে মাঝে 888sport app download apkর ভেতর দু-চারটে বিচ্ছিন্ন সিদ্ধিকে বাদ দিয়ে – গদ্যসন্দর্ভ রচনায়ও এরকম সৎ 888sport live footballের উপাদান ছিল তাঁর মধ্যে। বাবা ও পিসেমশায়ের অবর্তমানে তিনি বরিশালের ব্রাহ্মসমাজে আচার্যের কাজ করতেন। আরাধনা উপাসনা আশ্চর্য নির্ঝরের মতো ধ্বনিত হয়ে তবু ধ্বনির অতীত অর্থ গোরিদের দিকে আমাদের মর্ম ফিরিয়ে রাখত, কোথাও ঠেকতেন না, তাল কেটে যেত না, পুনরুক্তি ছিল না; কিন্তু যে 888sport live footballিক ও কবির গরিমা তাঁর প্রাপ্য ছিল, সেটাকে অন্তর্দমিত করে রাখলেন। তিনি প্রকাশ্য কোনো 888sport app download bd নিতে গেলেন না। শ্রেষ্ঠ 888sport live footballকদের লেখায়ও নিজের অলিখিত অনুভাবনা বিতর্ক ও ধ্যানের ভেতর কেমন যেন আত্মনির্বাণ খুঁজে পেতেন আত্মশুদ্ধির জন্য।’

‘অনেকদিন আগে চিত্তরঞ্জনের মৃত্যুর পর তাঁর ওপর আমি একটি 888sport app download apk লিখেছিলাম। মা নিজে কবিপত্র পত্রিকার পাতায় আমার সেই প্রায় প্রথম জাতক 888sport app download apkটি সম্বন্ধে তাঁর মতামত জানবার জন্য মাকে এককপি 888sport live footballপত্র পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। মা আমাকে ফেরত ডাকে লিখলেন, চিত্তরঞ্জন সম্বন্ধে লিখছো, ভালোই করেছ, কিন্তু রামমোহনের ওপর লিখতে বলেছি তোমাকে, মহর্ষির ওপরেও। তিনি পড়ে বিক্ষুব্ধ বোধ করেছিলেন – এ যেন ধান ভানতে শিবের গীত। কিন্তু দেশের নানা রকম সাময়িক ঘনঘটাচ্ছন্ন অতীতে রামমোহন যে কত বড় পুরুষ আমাদের সক্রিয় সচেতন মনে যে অঙ্গীকারের একটা স্পষ্ট জীবনবেদ দেখতে চাইতেন তিনি। অনেক আগে আমার মন বড় বড় আদর্শ পুরুষকে তাদের উঁচু পীঠস্থান থেকে নামিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে চাইত, তাঁদের সত্যিকারের মূল্য নিরূপণের নামে বিনাশী বুদ্ধিবলে তাঁদের আঘাত করে। মা টের পেয়েছিলেন, বলেছিলেন – ওরকম করে হয় না আগে তাদের মহত্বে বিশ্বাস  করো – মনের নেতিধর্মী নষ্ট করে ফেল। শুধু মহামানুষ কেন, যে-কোনো মানুষ কতখানি 888sport apk download apk latest version ও বিশ্বাসের পাত্র অনুভব করতে শেখ।’

‘দেশে ও বিদেশের যেসব মহাপুরুষের তালিকা দিয়েছিলেন তিনি আমাকে – অনেক অনুতর্ক বিতর্কের পর টের পেয়েছি সত্যিই তারা মহৎ। যে-কোনো তুচ্ছ মানুষকে 888sport apk download apk latest version ও বিশ্বাস করতে বলেছিলেন। এখন বুঝেছি ঠিকই বলেছিলেন। যদিও মায়ের সেই নির্ধারিত পথে মনপবনের মাঝির দল চলেছে যত বেশি, বাস্তব যাত্রা সেই অনুপাতে কিছুই হয়ে উঠছে না ব্যক্তির বা জাতির বা পৃথিবীর জীবনে। বিদ্বেষই বেশি, হিংসা কেটে যায় না, সংঘর্ষ নষ্ট করে ফেরতে চায় সব। রোলার মত, টমাস থম, রবীন্দ্রনাথ, আইনস্টাইন, গান্ধীজির মতো একেকজন লোক তবুও আশা করে বসে থাকেন। ইতিহাস চেনে তাদের। আমার মার মতো একজন মহিলাও আশা করে বসেছিলেন, বিশ্বাস করতেন।’

তথ্যসূত্র

১. লায়লা জামান-সম্পাদিত, কুসুমকুমারী দাশের 888sport app download apk, অবসর, 888sport app ২০০০।

২. ড. মিজান রহমান-সম্পাদিত, শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk : কুসুমকুমারী দাশ, কথাপ্রকাশ, 888sport app ২০১২। ৩. যোগেন্দ্রনাথ গুপ্ত, বঙ্গের মহিলা কবি, কলকাতা, দ্বিতীয় সংস্করণ ১৩৬০।