কবি জসীমউদ্দীনের 888sport sign up bonusমঞ্জুষা

রবিন পাল

কোনো সুবিস্তৃত আত্মজীবনী, আনুপূর্বিক 888sport sign up bonusসঞ্চয় আত্মকথা জসীমউদ্দীন লেখেননি। তবু তাঁর জীবন কথা, অনুভব কথা, কালের কথা, 888sport app download for androidীয়তার কথা ধরা আছে যাদের দেখেছি (১৯৫২), ঠাকুর বাড়ির আঙিনায় (১৯৬২), জীবন কথা (১৯৬৪), 888sport sign up bonusর পট (১৯৬৮), 888sport app download for androidের সরণী বাহি (১৯৭৮) প্রভৃতি বইগুলোর মধ্যে। 888sport sign up bonusকথা আত্মজীবনীর মতোই জনভোগ্যতার জন্যে রচিত, তবে 888sport sign up bonusকথায় লেখক অভিজ্ঞতার অন্তর্গত কিছু ঘটনার বিবরণ দেন, কিন্তু অন্তর্বীক্ষণ থাকলেও আনুপূর্বিকতা, সমগ্রতার সন্ধান থাকে না। জসীমউদ্দীনের উল্লিখিত রচনাগুলো 888sport sign up bonusকথার ধার ঘেঁষে যায়। সাধারণত কবিদের লেখা আত্মজীবনী বা 888sport sign up bonusকথা একটা আলাদা মাত্রা পায়। রবীন্দ্রনাথের জীবন888sport sign up bonus, ছেলেবেলা, বুদ্ধদেব বসুর আমার ছেলেবেলা, আমার যৌবন, সুধীন্দ্রনাথের THE WORLD OF TWILIGHT, বিষ্ণু দে’র ছড়ানো এই জীবন, অরুন মিত্রের পথের মোড়ে, শঙ্খ ঘোষের এখন সব অলীক, নির্মলেন্দু গুণের আমার ছেলেবেলা, মনীন্দ্র রায়ের 888sport sign up bonusর সংলাপ, অলোকরঞ্জনের আমাদের শান্তিনিকেতন প্রভৃতি বইয়ের কথা মনে পড়ে। অন্য ভাষায় ইয়েটস্-এর আত্মজীবনী, নেরুদার 888sport sign up bonusকথা, আলবের্তির হারানো তরু বীথি, পাস্তেরনাকের 888sport sign up bonusকথা আমাদের মনে পড়বে। যদিও বিভিন্ন দেশ ও বিভিন্ন কালের রচনা তথাপি কবি-888sport sign up bonusতে আছে কালানুক্রমিতার বদলে আকর্ষণীয় নির্বাচন, ব্যক্তি ও আত্মসত্তার উপস্থাপন এবং অনুভবমুখ্য বিশ্লেষণ এবং এসব পরিবেশিত আকর্ষণীয়, কবিত্বময় বাক্যবিন্যাস, যার বিচ্ছিন্ন অংশ 888sport app download apkংশ বলেও স্বচ্ছন্দে বিবেচিত হতে পারে। পাস্তেরনাক স্পেন্ডারকে বলেছিলেন, তিনি যথেষ্ট আনন্দ পান আত্মের পরিবেশ রচনায়, পরিবৃত্তের সমগ্রতা ধারণে, বিশেষ ও চিত্রিত বস্তু যাতে ভাসমান সেই কাঠামো রচনায়।

জসীমউদ্দীনের প্রাসঙ্গিক রচনায় এইসব বৈশিষ্ট্য আছে যদিও স্বীকার না করাটা বেঠিক হবে যে কবিত্বময় বাক্যবিন্যাস অনেক সময়েই নেই। রবীন্দ্রনাথ জীবন888sport sign up bonus-র শুরুতে বলেছেন – ‘জীবনের 888sport sign up bonus জীবনের ইতিহাস নহে, তাহা কোনো এক অদৃশ্য চিত্রকরের স্বহস্তের রচনা।’ তা সন তারিখ-বিবর্জিত কবি-কাহিনী, জীবনীর উপাদান তাতে প্রচুর, কিন্তু যথার্থ জীবনেতিহাস বলতে যা বোঝায় তা নয়। বুদ্ধদেব বসু বলেছেন – ‘কল্পনায় বা অন্য বিষয়ে আশ্রিত হলেও সেই ভগ্নাংশগুলোতে আত্মজৈবনিক যাথার্থ্য নেই বলা যায় না। তবু যাকে বলে ‘নিছক তথ্য’ তাঁর প্রয়োজন ঘটে মাঝে মাঝে।’ আর পাবলো নেরুদা বলেছেন – ‘এই 888sport sign up bonus888sport app download for androidিকায় এখানে সেখানে আছে অনেক ফাঁক, কখনো বি888sport app download for android, কারণ জীবন তো এমনই। স্বপ্ন

দেখার মধ্যে সাময়িক বিরতি দিনের কর্তব্য সম্পাদনে সাহায্য করে। দেখা যাচ্ছে 888sport sign up bonusর অনেক কিছু গেছে বিবর্ণ হয়ে, গুঁড়িয়ে ধুলো হয়ে গেছে, জোড়-অসাধ্য কাচের টুকরোর মতো। আর জসীমউদ্দীন লেখেন – ‘জীবনে সুদূর অতীতের প্রথম পটভূমিতে যতদূর দৃষ্টি যায় চাহিয়া চাহিয়া দেখি, এই আলো আঁধারির দেশে কতক বোঝা যায় কতক বোঝা যায় না, ভাসা ভাসা কয়েকটি ছবি আমার মনে উদয় হয়’ (জীবন কথা, পৃ.-১)। জীবন888sport sign up bonusর মতোই ছবি সংগ্রহ, কল্পনা বা স্বপ্নের সহযোগে আত্মের নির্মাণ, হয়তো বার্ধক্যে বাল্য888sport sign up bonus রোমন্থনে নিগূঢ় উপভোগের বাসনা – অজিত চক্রবর্তী জীবন888sport sign up bonus প্রসঙ্গে যেমন বলেছিলেন। জসীমউদ্দীনের লেখায় রবীন্দ্রনাথ বা বুদ্ধদেবের সফিস্টিকেশন নেই, বৌদ্ধিক উপভোগ্যতা নেই, কিন্তু আছে স্বপ্নিল সারল্য, আর লেখক-জীবনসূত্র ফুটিয়ে তোলার উপযোগী প্রসঙ্গ যোজনা, কোথাও অশ্রুসজলতা, কোথাও মুগ্ধ প্রসন্নতা, তাতে অনুভব প্রকাশের সরলতা আছে, আরবান দ্ব্যর্থতা নেই, আর সবটাই উদ্ভিদসৌরভে সুরভিত। এ গদ্য তার 888sport app download apkর মতোই রাখালিয়া।

পল্লীপ্রাণতা তাঁর 888sport app download apkর মতো ছড়িয়ে আছে 888sport sign up bonusকথায়। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দশকের ফরিদপুরের অন্তর্গত গোবিন্দপুর। ছিল দুখানা খড়ের ঘর, চারধারে নলখাগড়ার বেড়া, চাটাইয়ের ঝাঁপ, অর্ধেকটায় বাঁশের মাচা তাতে বেড়ি, হাঁড়ি, পাতিল, সামনে সুন্দর কারুকার্যময় বাখারি নকশার ঝাঁপ। মেঝেতে সপ বিছিয়ে শোয়া। শীত-সকালের রোদ-রেখার উপর দিয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো ধূলিকণা নানান ভঙ্গিতে আসা-যাওয়া করতো। বিছানা থেকে আধঘুমন্ত চোখে তা দেখে কতই কল্পনা। মাঘ মাসে ঘরের পাশে বরই পাকতো, শেষ রাতে টুবু টুবু শব্দে বরই পড়ার সময় বুকের ভেতর যেন কেমন করতো। উঠানে বারো মাস রং আর শব্দের বিচিত্র খেলা – প্রকৃতিমুগ্ধতার এই ছবি জীবনানন্দের রূপসী বাংলা মনে করিয়ে দেয়। দুজনের মধ্যেই রূপমুগ্ধতা, বিলীয়মানতার বেদনা – যদিও প্রকাশভঙ্গির পার্থক্য। রয়না-র ফল ঢেঁকিতে কুটে পানিতে জ্বাল দিয়ে মা তেল বার করে দিতেন, যে তেলে প্রদীপ জ্বেলে পড়াশোনা। বাড়ির গরুর জন্য পদ্মা পার হয়ে ‘নটা’ ঘাস আনা হতো। একবার ঘাসবোঝাই নৌকা ডুবে যায়। জীবন কথা বইয়ে আছে নানা আমের (উড়ি, নাভিওয়ালা, বর্ণচোরা, চিনিচম্পা, সিঁদুরে) কথা। হাটে-বাজারে লোকে আম কিনতে যেত না, মা রং-বেরঙের আমসত্ত্ব বানাতেন। পান-চাষের ও ব্যাবসার বিস্তৃত বর্ণনাও পাই। একটা তালগাছ আত্মহত্যাসূত্রে গা ছমছম করাত। কলার ভেলায় চেপে তাল চুরি করতে যাওয়ার বিবরণ দিয়েছেন। স্কুল থেকে ফেরার পথে বাবুই পাখির বাসা দেখার মুগ্ধতা ভুলিয়ে দিত খিদে। পরিণত বয়সেও লেখক রাখাল বালকের সঙ্গে চেয়ে থাকতে ভালোবাসতেন তালগাছে বাবুই বাসা দেখতে। ‘সেই অপূর্ব রহস্য জাল’ তাকে আবিষ্ট করতো বিভূতিভূষণের মতো। দুজনের রচনাতেই প্রকৃতিস্নিগ্ধ উজ্জ্বলতার ছবি। লিখছেন – ‘কোন গোপন চিত্রকর যেন এই বনের মধ্যে বসিয়া পাকা তেলা কুঁচের রঙে আর হিজল ফুলের রঙে মিলাইয়া তার সবচাইতে সুন্দর ছবিখানা আঁকিয়া বসিয়া বসিয়া দেখিতেছে।’ (জীবন কথা/৫৬) জসীমউদ্দীন প্রকৃতি ও মানুষ-সংলগ্ন করে আঁকেন – ‘শেওড়া ফল’ … ‘মনে হইত যেন কোনো রাজকন্যা গা ভরিয়া গহনা পরিয়া বনের মধ্যে বসিয়া আছে।’ মটরশুঁটি … সাদা-গোলাপি-লাল মেশা … ‘গ্রাম্য মেয়ের নোলকের মতো।’ কুচের ফল – ‘যেন বনরানীর সিঁদুরের ঝাঁপি।’ মা যেন আসমানের চাঁদ, ‘একটি একটি করিয়া তারাগুলি এখন মাকে ছাড়িয়া যাইতেছে।’ (অর্থাৎ বন্ধুরা) এই বর্ণননৈপুণ্য প্রির‌্যাফেলাইট বলা যায়। সোজনবাদিয়ার ঘাটের ‘দুলি’ বা ‘সুতি’র বর্ণনা এমনই।

ছোটবেলায় কবি ছিলেন অস্থির ও দুরন্ত। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই এক পর্যটক হিন্দু সন্ন্যাসীর সংস্রবে আসেন, শ্মশানবাস শুরু করেন, সন্ন্যাসী চলে গেলে আত্মহত্যাতে উদ্যত হন। দামাল ছেলে খেলা সেরে বাড়ি এসে শুধু মা ডাল আর ভাত রেঁধেছে শুনে হাঁড়ি ভেঙে, ইতর গালি দিয়ে, মাকে কাঁদিয়ে, নদীর ধারে বসে থাকত। তাঁর লেখা থেকে ওই অঞ্চলে প্রচলিত নানা খেলার কথা পাই। ছিল কুস্তি, হাডুডু, লাঠিখেলা, চাষীদের সঙ্গে খেলা, বর-বউ খেলা। জঙ্গল থেকে আনতো কাউয়ার ঠুটি (বেগনে মিষ্টি ফল), সজারুর কাঁটা, গাব, ডুমকুরের মালা, খেজুর। নদীতে সাঁতার ছিল বিশেষ আকর্ষণ। অংশ নিতেন হৈলডুবি, ঝাপড়ি প্রভৃতি জলের খেলায়। সরষে খেতে দুধালী লতা মাথায় জড়িয়ে ঘোরা মনে করিয়ে দেয় অপুকে। আর ছিল ক্ষেতে মই দেবার সময় মই চড়া, ঢেলা কুড়িয়ে নকল কামান গড়া, কঞ্চিতে বুনো ফল দিয়ে খেলা ইত্যাদি।

সেকালের খাদ্যদ্রব্যের প্রসঙ্গ আছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। পিঠেই কত প্রকার (সেমুই পিঠা, ভাপা পিঠা বানানোর পদ্ধতিসহ, কুশলী, চিতই), আর ঢ্যাপের খইয়ের মোয়া, তেল ছাড়া ডাল বড়া, গুড়ের নৈটানা। সামান্য ঝাল, গুড়, সেমাই পাক ও মুরগি রান্না দেওয়া হতো পোয়াতিকে। আর যেদিন বাড়িতে ইলিশ আসতো সেদিন আনন্দের উৎসব। এ বাড়ির সে বাড়ির মেয়েরা দাম জিজ্ঞেস করে যেত, লেখকের তখন খুব গর্ববোধ হতো। পরিণত বয়সেও ইলিশ মাছ হাতে ঝুলিয়ে বাড়ি ফেরার সময়ে লোকে দাম জিজ্ঞেস করলে ভালো লাগতো। সারল্যের এই অভিব্যক্তি অন্যপ্রসঙ্গেও আছে।

জীবন কথা ও 888sport app বই থেকে সমসাময়িক কালের ছবিটিও ধরা পড়ে। নকসী কাঁথার মাঠ এবং সোজনবাদিয়ার ঘাটে এই গ্রামবাংলার পরিবেশই ধরেছেন। দু-একটি প্রসঙ্গ তোলা যাক। গাঁয়ে ছিল বিনিময় প্রথা। ছুতোর, নাপিত, কুমোর, কলু কাজ করে জিনিস নিয়ে যেত। আঁতুড়ে পোয়াতিরা শুধু একবেলা ভাত পেত। দরজা প্রায়শ বন্ধ। ঘরের সামনে একটা মরা গরুর মাথার হাড়, একজোড়া ছেঁড়া জুতো আর পিছা – অপদেবতা প্রতিরোধে। সন্তান হলে দৌড়ে বাঁশের ঝাড় থেকে ‘নেইল’ কাটা হতো। অপরিষ্কার হাতে নাড়ি কাটায় ধনুষ্টংকার হলে বলা হতো শিশুকে পেঁচোয় পেয়েছে। শিশুজন্মের ছদিনে হতো ছয় হাটুরে অনুষ্ঠান। আঁতুড়ঘরের একটি গান উল্লেখ করেছেন তিনি, যাতে বলা হলো – আমীর আলীর ঘরে গোপাল জন্ম নিয়েছে। মন্তব্য করেন – ‘গানগুলো বহু রীতি-নীতিসম্পন্ন দুই ধর্মের লোকদের মধ্যে একটি সুন্দর মিলনসেতু রচনা করিয়া দেয়।’ আশ্বিন-কার্তিক সংক্রান্তিতে ‘গাস্বী’ উৎসবে ধর্মীয় ব্যাপার নেই বলে তিনি এটিকে হিন্দু-মুসলমানের ‘জাতীয় উৎসব’ করার আশা করেছিলেন। তাঁর 888sport app download apkয় যেমন অসাম্প্রদায়িকতা, তেমনি জীবন888sport sign up bonusতে, বিদায়কালীন কন্যা ‘বিসর্জনের প্রতিমা’। সেজদির গায়ের রং ছড়িয়েছে গাছগুলোতে (শেফালিকা এল উমার বর্ণমাখি-আগমনী) কিংবা নানি মাকে জিজ্ঞেস করছে ভালো ছিলে কিনা, মা দুরবস্থা গোপন করছে – (আগমনী) শাক্তপদাবলি মনে করিয়ে দেয় অনিবার্যভাবে। অসুস্থ দিদির জন্যে বরফ আনতে যাওয়াতেও (আমি যেন শক্তিশেলাহত লক্ষ্মণের জন্য বিশল্যকরণী আনিতে চলিয়াছি) হিন্দু মেটাফর আসছে। আর জানা যাচ্ছে কলেরা মহামারি প্রথমেই হতো তাঁতি পাড়ায়, কারণ তারা ব্যবহার করতো নদীর জল। সুদে টাকা খাটান তাদের পাড়ায় নিষিদ্ধ ছিল, কিন্তু সুদি মহাজনের খত লিখে দেওয়া অপরাধ ছিল না। নৌকার ব্যাপারী বা ভাগীরা মিলে মহাজনকে

চালান বা চুক্তিপত্র লিখে দিতো। গাঁয়ের মোল্লাকী হয়েছিলেন তাঁর বাবা পীরের সনদে, চাষীদের বিয়ে পড়িয়ে পেতেন ২/৩ টাকা, মৃতের জানাজা পড়িয়ে কাঁসার থালা, ঘটি-বাটি। আর আছে নানা পার্বণের কথা (হাওয়া বিবির সম্মানে সিন্নি, কদমতলায় মেলা, সেখানে জারি ও গাজীর গান, গাস্বী উৎসব, মশা তাড়ানোর মন্ত্র, নিষ্ফলা গাছ নিয়ে কথা-পালটা কথা)। জসীমউদ্দীনের পিতা শিক্ষকতায় ঢোকেন ৫ টাকায়, পরে পঁয়ত্রিশ বছর স্কুলে চাকরির পর অবসরের সময় বেতন হলো পনেরো টাকা। তাদের পাঠশালা বসতো সীতানাথ চৌধুরির বাড়িতে। খাগের কলম, লাউ পাতায় জল মিশিয়ে হাঁড়ি-পাতিলের পিঠের কালিতে তৈরি কালি, আর কলাপাতা। শিক্ষক আসার আগে পোড়োরা এদিক ওদিক। তিনি আসছেন শুনেই আধ-খাওয়া পেয়ারা ফেলে, তামাক খাওয়া মুখে পেয়ারা পাতা চিবিয়ে ছেলেরা ঢুকতো। পাঠশালা ফটিকের মতো তার কারাগার এবং জোর করে ভর্তি করায় ‘কোরবানির খাসি’ মনে হয়েছিল। তালপাতার পাখার বাতাস ও তামাক পেয়ে পরিতৃপ্ত শিক্ষক দু চার জনকে নিলডাউন করিয়ে তারপর কলাপাতার ওপর অক্ষর লিখে তা বুলোতে নির্দেশ দিতেন। শিক্ষক ছাত্রদের সুখ-দুঃখের কথা শুনতেন, বেতন দিতে না পারলেও তাড়াতেন না। ছাত্র-বেতন থেকে আদায় হতো মাত্র দু-আড়াই টাকা। ১৯৩৩-এ জসীমউদ্দীন রামতনু লাহিড়ী গবেষণা সহায়ক হিসেবে পেতেন মাসে ৭৫, পরে একশ টাকা। ১৯৩৮-এ 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হন, পরে সরকারি প্রচার বিভাগে চাকরি। শিক্ষকজীবন নিয়ে অবিচার ও ভিখারি বনে যেতে বাধ্য হওয়া নিয়ে তিনি বেদনা প্রকাশ করেন। একটা বিলীয়মানকাল ও পরিবেশ নিয়ে নষ্টালজিক বেদনা এইসব লেখাকে করে তুলেছে প্রাণবন্ত।

আবুবকর সিদ্দিকী বলেছেন – ‘জসীমউদ্দীন তাঁর আশ্চর্য দরদী তুলিতে যে মানুষকে অঙ্কিত করে গেছেন সে এক হারানো সময়ের ফুরানো মানুষ।’ আলোচ্য বইগুলো থেকে তার কিছু পরিচয় পেশ করা যাক। চিত্রিত মানুষগুলো হলো – অতি নিকটজন, কাছের মানুষ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব। জীবন কথা বইটিতে পিতা, শিক্ষক, নীতিপরায়ণ, ধর্মপ্রাণ আনসারউদ্দীনের সুন্দর মনোবৃত্তির বিস্তৃত পরিচয় আছে। গৃহকর্ম এবং উপার্জনে অনীহ ছিলেন তিনি। তবে শিক্ষক হিসেবে যতœশীল। ২য়, ৩য়, ৪র্থ অধ্যায় মাকে নিয়ে। আদরের মেয়ে হয়েও স্বামীগৃহে আমিনা খাতুন দুঃখ-দারিদ্র্যে কাটিয়েছেন। ধান ভানা, ঢেঁকিতে পাড়, চাল কোটা, পিঠা বানান, গরিবি ঘরে তুচ্ছ থেকে অমৃত রচনায় অপূর্ব নৈপুণ্য ছিল তাঁর। একবার ছোট ভাইয়ের মিছরি চুরি করে খেয়ে ফেলায় খুব মার খান। বাপের বাড়ি যাওয়া ছিল বিরল, কিন্তু সে-সুযোগে যেন ছোট্ট খুকী হয়ে পড়তেন। মার সঙ্গে নানির গল্প চলতো অনেক রাত পর্যন্ত। পাড়ায় বন্ধুরা গল্প করতে, শুনতে আসর করতো, নেমন্তন্ন করতো। খেয়ে-দেয়ে তেল-সিঁদুর নিয়ে মা বেরুতেন পাড়া বেড়াতে। দল ক্রমশ বাড়তে থাকে। লেখক লক্ষ করেছেন, ‘এখানে আসিলে মা যেন সত্যিকার মা হইয়া উঠেন।’ তারপর বিদায়ের পালা, বন্ধুরা কাঁদে, মা কাঁদে, নানি কাঁদে। নানার মৃত্যুর পর প্রতিদিন শেষ রাতে উঠে মা কাঁদতে বসতেন, মায়ের কান্নায় ছেলেদের ঘুম ভেঙে যেত। বাজানের এ ব্যাপারে বকুনি মা গ্রাহ্য করতেন না। এই মায়ের প্রতি দামালপনার জন্যে করেছেন অনুশোচনা। এরপর যাদব ঢুলির কথা, যার কাছে লেখক ঢোল বাজানো শিখতে গিয়েছিলেন। তার সুমধুর ঢোলবাদ্যের 888sport live chatসৃষ্টি মুছে যাবে বলে লেখকের বেদনা। শ্রীশবাবুর ভাইপো মনাদার সেতার বাজনা লেখককে অমৃতবর্ষণ করতো। এখানে বলে নিয়েছেন তাঁর কৈশোরে রবীন্দ্রনাথের গান তত প্রচলিত হয়নি, রজনীকান্তই মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজের মন আকর্ষণ করেছিলেন। সেতার বাজানো ছাড়াও মনাদা খুব চমৎকার গল্প বলতেন। তাঁর 888sport app download apk নিয়ে মনাদার উচ্চাশা ছিল। পদ্মাভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে মনাদা ও লেখক সচেষ্ট হন, পত্রিকা বের করেন। বিপ্লবী কালীমোহনের কথাও এসেছে প্রসঙ্গত। বন্ধুর মেজদি ও সেজদিকে নিয়ে আছে দুটি অধ্যায়। অসুস্থ দিদির সেবা, স্বামীকে লেখা চিঠি খুলে পড়া, দিদির বাজার করে দিয়ে টাকা পাওয়া, সেজদি অভুক্ত থেকে জসীমকে খাওয়ানো, সেজদির অসুখে আল্লার কাছে প্রার্থনা, সেজদির গল্প করা, সুন্দর গান করা সরলভাবে তুলে ধরেছেন।

রবীন্দ্রপ্রসঙ্গ নানা কারণে মূল্যবান। এতে যেমন আছে ভক্তিআপ্লুত ভঙ্গি, তেমনি মৃদু সমালোচনা। কিশোর বয়সে ছিল কবির 888sport app download apkর অপূর্ব সুরের মাদকতায় আবিষ্টতা, তার নিবিষ্ট-সাধনার অনুকরণ। পরে রবীন্দ্র888sport app download apkর আলো-আঁধারি ভাব অস্বস্তি আনত। রবীন্দ্রের ‘শেষ বর্ষণ’, ‘নটীর পূজা’, ‘তপতী’ দেখার প্রতিক্রিয়ার মূল্য যথেষ্ট। কল্লোলীয়দের জসীম-ঔদাসীন্য তাঁকে দুঃখ দিয়েছিল। রাখালী এবং নকসী কাঁথার মাঠ রবীন্দ্রনাথ প্রশংসা করেছেন উচ্ছ্বাস নিয়ে। বাংলা 888sport app download apkর সংকলনে রবীন্দ্রনাথ নিয়েছিলেন ‘উড়ানীর চর’ 888sport app download apkটি। রবীন্দ্রনাথের কাছে প্লট পেয়ে লিখেছিলেন ‘পল্লী বধূ’ নামে একটি নাটক। চাকরির জন্যে দুবার প্রশংসাপত্র লিখে দিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কোনো কোনো বাউল গানের খাঁটিত্ব বিষয়ে ক্ষিতিমোহনকে রবীন্দ্রনাথ জসীমউদ্দীনের কথায় সমালোচনা করেননি। দ্বিতীয়ত মুসলমানদের প্রতি কবির মনে কিছু ভুল ধারণা ছিল। তিনি সাধারণত হিন্দু পত্রিকাগুলোই পড়তেন (ঠাকুর বাড়ির আঙিনায়/পৃ. ২৮)। ৩য় সমালোচনা হলো – তাঁর মতে শান্তিনিকেতন ও বিশ্বভারতী গঠনে রবীন্দ্রপ্রতিভার অপচয় হয়েছে। শান্তিদেবের সঙ্গে সখ্য হয়। তাঁর রবীন্দ্রসংগীতের গায়কী সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম সুর বুনোট মনে হয়েছিল অনন্য। এখানেই ফাঁকে-ফোঁকরে এসে গিয়েছে নন্দলাল বসু ও প্রভাত মুখোপাধ্যায়ের স্নেহ পাবার কথা। অবনীন্দ্রনাথ বিচিত্রা ঘরে জসীমউদ্দীনের গল্পবলার আয়োজন করেছিলেন। কলকাতার সুসংস্কৃত শ্রোতাদের সামনে তাঁর জড়তা ছিল, শ্রোতারাও ফরিদপুরি ভাষায় গাথা বর্ণনা পছন্দ করেননি। তখন কথকতার ভঙ্গি আয়ত্ত করতে কবি ফরিদপুর, 888sport app, ময়মনসিংহের গল্পকথকদের কাছে তালিম নেন। নকসী কাঁথার মাঠ শুনেছেন অবনীন্দ্রনাথ মন দিয়ে। আধুনিক প্রকাশভঙ্গি পরিবর্তনের আদেশ দিয়েছেন, কোনো পৃষ্ঠায় গদ্য ছন্দে পরিবর্তন করেছেন, আবার প্রচ্ছদ এঁকে দিয়েছেন, ভূমিকা লিখেছেন। বই আকর্ষণীয় করার জন্যে প্রতিটি অধ্যায়ের সূচনায় গ্রাম্যকবির কয়েকটি পঙ্ক্তি বসানোর পরামর্শ দিয়েছেন। নতুন লেখা আনলে দোষ শুধরে দিতেন। নিবিড় আলাপ হয়েছিল দৌহিত্র মোহনলালের সঙ্গে। অবনীন্দ্রনাথের ওয়াশের পদ্ধতির বর্ণনা আছে লেখায়। তুলনা করতে গিয়ে জসীমউদ্দীন বলেন – ‘দুই ভাই অবনবাবু আর গগনবাবু রঙের জাদুকর; কথার সরিৎসাগর’ (ঠাকুর বাড়ির আঙিনায়/পৃ. ৬০)। একজন মোগল হারেমের সুন্দরীর অধরের অস্ফুট হাসি ধরছেন রূপপিয়াসীদের অনন্ত সান্ত¡নার্থে, আর একজন কথার সরিৎসাগরে সাঁতার কেটে রূপকথা সাজাচ্ছেন কাগজে। অন্যদিকে সমরবাবু, ‘স্বপন পুরীর রাজপুত্র’ শুধু বই পড়ে যান আর মাঝে মাঝে দুই ভাইয়ের ছবি দেখে নেন বই থেকে মুখ তুলে। অবনীন্দ্রনাথের যাত্রাপালা রচনা ও অভিনয়, রবীন্দ্রের সংশয়ী প্রশস্তি, নন্দলালের ছবিতে ব্যাকগ্রাউন্ডে রং বদলানোর পরামর্শ ও আত্মভ্রান্তি উপলব্ধি দামি পাথরের বাক্স, পুঁথি কিনতে যাওয়া – প্রভৃতি যেমন আছে তেমনি আছে অ্যাডভোকেট বিপুলের ভাইকে কালী দেখানো, মড়ায় চড়ে আকাশ বেড়ানোর, মন্ত্রপাঠ প্রভৃতি নিয়ে পরিহাসের আপাতগম্ভীর বাতাবরণ রচনার পরিহাস। মোহনলালের বন্ধুজনোচিত ঔদার্য, নানা আমোদের যেমন উল্লেখ আছে তেমনি আছে ব্রতীন্দ্রনাথের সঙ্গে, রবীন্দ্রনাথ যে খাঁটি কবি নন, এ বিষয়ে পরিহাসের খেলার কথা। দীনেন্দ্রনাথের গানের রিহার্সালে উপস্থিত থাকতেন প্রতিটি দিন। আর সৌম্যেন্দ্রনাথ – যার ঘরে কুলি-মজুর-চাষির কথা, মাসে একাধিক বার খানাতল্লাশি, নানা দেশের গল্প শোনা, সৌম্যের অনাপোষ তর্কপ্রবণতা, ধর্মের নামে সামাজিক অবিচার বিষয়ে তাঁর তীব্র শ্লেষ, সমাজতন্ত্রের প্লাবনের স্বপ্ন, মহাত্মা গান্ধীকে সমালোচনা করে সৌম্যের কাগজে 888sport app download apk লেখা, জার্মান অধ্যাপক ড. ভার্গনারের নকসী কাঁথার মাঠের সমালোচনা রচনায় সৌম্যের উদ্যোগ, প্রভৃতি প্রাণবন্ত প্রসঙ্গের পাশে ‘বর্ণমালার মৌচাক’ রচয়িতা অবনীন্দ্রনাথের শেষ জীবনের একাকীত্বের যন্ত্রণার ছবিটি জসীমউদ্দীন নিপুণভাবে পরিবেশন করেছেন। স্তব করেছেন – অমনি স্নেহ, মমতা আর রঙের রেখার মাধুরী বিস্তার করিয়া তুমি অপেক্ষা করিও সেই চির অজানা তুহিন রহস্যময় দেশে। আমরাও একদিন গিয়া তোমার সঙ্গে মিলিত হইব’ (ঐ/পৃ. ১১৬)। জোড়াসাঁকো ঠাকুর বাড়ির ইন্দ্রপুরী শ্মশানে পরিণত হওয়ায় কবির বেদনার অবধি ছিল না। নজরুল অধ্যায়ের সূচনায় আছে অসহযোগ আন্দোলনের ধূমে জসীমউদ্দীনের স্কুল ছেড়ে কলকাতায় এসে এক দিদির বাড়িতে ওঠার কথা, যেখানে বস্তির আবহাওয়া, স্নানের কষ্ট, ছারপোকার উৎপাত, পর্দানশীনতা, আর রঙিন সুতোয় কাঁথার নকশা, মেয়েদের গলায় দুপুরে বিয়ের গান কিংবা মধুবালার কাহিনী – আল্লার আসমানের এক ঝলক 888sport app download apk। তারপর পেটের ভাত যোগানোর জন্যে ‘নায়ক’ পত্রিকা রাস্তায় চিৎকার করে বিক্রি, কার্তিকদার সঙ্গে পরিচয়, অসহযোগ ও কাগজ বিক্রি, জাতীয় বিদ্যালয় প্রভৃতির কথা। অচিরেই মোহভঙ্গ হলো – ‘বসন্তের হাওয়া তো বহিতে দেখিলাম না। জাতীয় বিদ্যালয়ের সেই সাত ঘোড়ার গতির অনুভব করিতে পারিলাম না।’ দেশে ফেরার আগে চারুচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে গেলেন, কিন্তু তিনি পাত্তা দিলেন না। নজরুলের ব্যক্তিত্ব এবং স্নেহমধুর ব্যবহার, কবিত্বের প্রশংসা শুশ্রƒষার কাজ করলো। নজরুলের অনুরোধে তিনি ‘ধূমকেতু’ পত্রিকার গ্রাহক যোগাড়ে নামেন। নজরুল তাঁর গ্রামের বাড়িতেও এসেছেন। তাঁর জন্যে ‘চা’ যোগাড়ের বিবরণ আছে। বঙ্গীয় রাষ্ট্রীয় সমিতির অধিবেশনে নজরুলের গান, ব্যান্ড ‘বিষের বাঁশি’ ও ‘ভাঙ্গার গান’ বিক্রির চেষ্টা, সস্ত্রীক নজরুলকে কলকাতার হোস্টেলে নিয়ে আসা, ভাবির স্নেহপ্রাচুর্য, পুত্রশোকাতুর নজরুলের ডি.এম. লাইব্রেরির দোকানে বসে হাস্যরসের 888sport app download apk লেখার চেষ্টা, নজরুলের ভোটে দাঁড়ানোর চেষ্টা, ফরিদপুরের অম্বিকা হলের ময়দানে নজরুলের সাম্যবাদ-সংরক্ত গান ও ‘সাম্যবাদী’ 888sport app download apk আবৃত্তি, জসীমউদ্দীনের প্রাসঙ্গিক বক্তৃতা, প্রকাশকের কাছে টাকা আদায়, গ্রামোফোন কোম্পানির ঘরে বহু লোকের মধ্যে বসে বিচিত্র গান রচনা, প্রেম জীবনের গল্প নিয়ে রাতভর – প্রভৃতি অনেক প্রসঙ্গ আছে। নজরুলের কাছে নিজেকে মনে হতো বড় প্রদীপের কাছে ছোট প্রদীপ আর তাঁর আশ্চর্য লোকরঞ্জনের ক্ষমতায় মুগ্ধ হয়েছেন, নজরুলী গানে সুন্দর রচনা ও সুন্দর সুরের সার্থক সমন্বয় দেখেছেন, তাঁর অসুস্থতায় অশ্রুসজল হয়েছেন।

888sport sign up bonusর পট (১৯৬৮) বইটিতে তিনি যেমন ফজলুল হক, আব্বাসউদ্দীন, গোলাম মোস্তাফার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা বলেছেন, তেমনি এসেছে আইজদ্দীর বউ, হাজেরা বিবি, বোষ্টমী ঠাকরুন, জেলেনী মা প্রভৃতি সাধারণ আধারে অসাধারণত্বের কথা। নাজীর এবং আনন্দ – এই দুটি চিত্রণও মর্মস্পর্শী। এই লেখাগুলোর অধিকাংশের ঐকসূত্র হলো জসীমউদ্দীনের অসামান্য লোকসংগীত বিহ্বলতা ও সংগ্রহপ্রয়াসে গ্রামে-গঞ্জে যাত্রা। উদাহৃত সংগীত ও তালিম-প্রসঙ্গের মূল্য যথেষ্ট। কয়েকটি লেখায় আছে সরকারি চাকরির জটিলতা ও মানবতার টানাপোড়েন। সাম্প্রদায়িক সংঘাতে তাঁর সক্রিয়তার বিবরণ এবং বিশ-ত্রিশ দশকের জীবনচর্যায় কিছু কথা প্রসঙ্গত এসে গেছে। সেইদিক থেকে এ বইয়ে লেখকের কথা সমর্থনযোগ্য যে- ‘888sport sign up bonusর পট শুধুমাত্র 888sport sign up bonusকাহিনী নয়। ইহা ইতিহাস।’

শেষ বয়সে লেখা 888sport app download for androidের সরণী বাহি-কে (১৯৭৮) বলা যেতে পারে দীনেশচন্দ্র সেনের 888sport sign up bonusতর্পণ। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে জীবনসাধনায় নিবিষ্ট দীনেশচন্দ্র গ্রাম্যগাথা সংগ্রহ করেন, নকসী কাঁথার মাঠের ওপর বিস্তৃত আলোচনা করেন বিচিত্রায়, তিনি ‘কবর’ 888sport app download apkটি সূত্রে তাঁকে বৃহত্তর পাঠকসমাজের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন 888sport live লিখে, অংশত ইংরেজি 888sport app download apk latest version করেন। ব্যক্তি দীনেশচন্দ্রের পরিচয় আছে এ বইতে। আছে স্টিমার 888sport slot gameের গল্প, বৈষ্ণব পদের রস-বিশ্লেষণ, ‘তরুণ কিশোর’ 888sport app download apkয় দীনেশচন্দ্রের বৃন্দাবনলীলা ব্যাখ্যার প্রভাবের কথা। কবির মনে হয়েছিল দীনেশচন্দ্রের চ-ীদাস পদ-আবৃত্তি যেন বিনিসুতোয় মালাগাঁথা। তাঁর অত্যন্ত ভাবপ্রবণতা, লোকচরিত্র বিচারের নৈপুণ্য যেমন আছে তেমনি পাই দীনেশপুত্র অরুণের কথা, তাদের বাড়িতে অতিথি হয়ে আসা সুলেখা বৌদির স্নেহ-সান্নিধ্যের মধুর কাহিনী ও সৌরভবিস্তারের কথা। দীনেশচন্দ্রকে তিনি চন্দ্র কুমারের সংগৃহীত ময়মনসিংহ গীতিকার শুদ্ধতার অভাবের কথা বললেও, তা তিনি কিছুতেই মেনে নেননি। আর নকসী কাঁথার মাঠে-র প্রতি সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ, যা তুলেছিলেন নরেন্দ্র দেব ও সুনীতি কুমার চট্টোপাধ্যায়, তাঁকে বেদনাহত করে। ‘বঙ্গভাষা ও 888sport live football’ তাঁর কাছে 888sport app download apkর মতো সুপাঠ্য এবং গিবনের পৃথিবীর ইতিহাসের মতো আদর্শ। দীনেশচন্দ্রকে জসীমউদ্দীন ‘ছায়া পুষ্পদাত্রী মহামহীরূহ’ রূপে মনের মধ্যে চিরজীবিত রূপে পূজা করেছেন। আধুনিকদের কাগজ ‘কল্লোল’-এ অনেক 888sport app download apk লিখলেও আধুনিকরা তাঁকে সমাদর করেননি। তিনি ইংরেজি 888sport live footballের অনুরাগী পাঠক হওয়া সত্ত্বেও ‘ত্রিশ, চল্লিশ ও পঞ্চাশ দশকের আরবান কবিকুলের মধ্যে ছিল যূথবদ্ধ গ্রাম্য অবজ্ঞা’। (বাঙালির সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার/সৈয়দ আবুল মকসুদ) অচিন্ত্য সেনগুপ্ত যদিও লিখেছিলেন জসীমউদ্দীনের 888sport app download apk ‘হয়তো বা জনতোষিণী নয়, কিন্তু মনতোষিণী’ তবুও তাঁর সরলতা, কবিপ্রাণতা স্বীকৃতি পায়নি শিষ্ট 888sport live football সমাজে। তিনি ‘পল্লীকবি’ই থেকে গেছেন। 888sport sign up bonusকথাসমূহের গদ্যেও সেই সরল অভিব্যক্তি। তবে জীবন কথা-র গদ্য ভাববিহ্বল গতিময়, বেদনা ও পরিহাসে সমুজ্জ্বল, ঠাকুর বাড়ির আঙিনায়-এ মুগ্ধ আবেগ ও বিশ্লেষণের সতর্কতা পূর্বোক্ত গদ্যগতিকে করে রেখেছে আকর্ষণীয়। সে-তুলনায় 888sport app download for androidের সরণী বাহি-তে আছে বর্ণনার আন্তরিকতা সত্ত্বেও প্রতিভার ক্লান্তির ছাপ। লিরিকধর্মী আবেগমুখ্য গদ্যে এসব বইতে তিনি ধরেছেন আত্মপ্রতিভার বিকাশ এবং বিলীয়মানকালের স্পর্শ। ব্যষ্টি ও সমষ্টির যৌগে 888sport app download for androidিকাগুলো হয়ে আছে মূল্যবান। পাবলো নেরুদা স্পেনের বরেণ্য কবি মিগুয়েল এরনান্দেথ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, মিগুয়েল ছিল মৃত্তিকা জ্যোতি-সমন্বিত কৃষক, তাঁর মতো লেখক উঠে আসে ছেদনহীন পাথরের মতো প্রকৃতির মাঝ থেকে (১১), যাতে লেগে থাকে অরণ্যের সতেজতা এবং অপ্রতিরোধ্য প্রাণবন্ততা। নাইটিংগেল, অন্ধকার ও কমলার প্রস্ফুটনের শব্দ তাঁর রক্তে, তাঁর মৃত্তিকা-স্পর্শী বন্য 888sport app download apkয়, যাতে বিচিত্র বর্ণালি, সৌরভ, স্পেনীয় পূর্বাঞ্চলী কৃষকের স্বরে জেগে ওঠে শক্তিমান, পৌরুষভরা সুগন্ধ ও প্রাচুর্যে। সামান্য মার্জনা করে কবি জসীমউদ্দীনের 888sport app download apk বা গদ্য সম্পর্কে এসব নিশ্চয়ই বলা যেতে পারে।