গত শতাব্দীর আশির দশকে 888sport appর চারুকলা অঙ্গনের একদল তরুণ 888sport live chatী স্বকীয় পথ অনুসন্ধান ও 888sport live chatসৃজনে নিমগ্ন হয়েছিলেন। নিয়মিত আড্ডা, মতবিনিময় ও পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ে তাঁরা নিজেদের তৈরি করার চেষ্টা করেছেন। ভাস্কর ময়নুল ইসলাম পল তাঁদেরই একজন। উল্লেখ্য, তিনি 888sport app বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন ১৯৯১ সালে।
২০০০ সালে এই তরুণদের সম্মিলিত উদ্যোগে প্রথমবারের মতো একটি দলীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। পরপর তিন বছর এই আয়োজন হলেও নানা সীমাবদ্ধতায় থমকে যায় তাঁদের এরূপ প্রচেষ্টা। ফলে এ-উদ্যোগ প্রার্থিত দৃষ্টান্ত রাখতে পারেনি। কাছাকাছি সময়ে 888sport apps 888sport live chatকলা একাডেমি নিয়মিত ভাস্কর্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হলেও এত বছরে মাত্র চারটি প্রদর্শনী তারা করেছে।
প্রাতিষ্ঠানিক ভাস্কর্যচর্চার প্রচলিত ধরন হচ্ছে, চেনা অবয়ব বা মডেলকে সামনে রেখে পর্যায়ক্রমে কাদামাটি, সিমেন্ট, কাঠ, ব্রোঞ্জ দিয়ে অবয়ব গড়ার অনুশীলন। শুরু থেকেই মানব অবয়ব ফর্ম গড়তে তিনি অন্যদের মতো নানা উপকরণ ব্যবহার করেছেন। তবে শুরু থেকেই মডার্ন ফর্ম নিয়ে খেলা করার দিকে তাঁর ঝোঁক লক্ষ করা গেছে। যেমন সরাসরি অবয়ব গড়ার চাইতে পলের আগ্রহ ছিল অবয়বিক অভিব্যক্তি প্রকাশের নানা ধরনের প্রতি। তিনি সাগ্রহে সেটার রূপও দিয়েছেন কখনো কাঠ কেটে, কখনো কাগজের মণ্ড দিয়ে। আমাদের আবহাওয়ায় মাটি, কাঠ, কাগজের মণ্ড – এসব উপকরণ খুব টেকসই থাকে না। এসব সহজলভ্য বলে তিনি ভাস্কর্যে এর প্রয়োগ করেছেন।
পল এরই মধ্যে নিজেকে একজন সহজাত ভাস্কর হিসেবে প্রমাণ করেছেন। ২০২২ সালে 888sport appয় আয়োজিত ১৯তম এবং ২০১৪ সালে ১৬তম এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনীতে তাঁর সৃজিত ভাস্কর্যের জন্য দুবার অনারেবল মেনশন 888sport app download bd অর্জন করেছেন। এছাড়া তিনি ২০১১ সালে ১৯তম জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনীতে আজিজুন্নেসা 888sport sign up bonus 888sport app download bd পেয়েছেন। ১৯৯৪ সালে দশম নবীন 888sport live chatী চারুকলা প্রদর্শনীতে ভাস্কর্যে তিনি সম্মান 888sport app download bd লাভ করেন।
888sport appয় তাঁর সৃজনকর্মের চতুর্থ একক প্রদর্শনী করেছিলেন ২০০৫ সালে 888sport appর আলিয়ঁস ফ্রসেজের লা গ্যালারিতে। ২০০১ সালে ওখানেই তৃতীয় এককের আয়োজন হয়েছিল। তাঁর প্রথম ও দ্বিতীয় একক ভাস্কর্য প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৭ ও ১৯৯৯ সালে 888sport appর চারুকলার জয়নুল গ্যালারিতে।
গত ১৬ বছর ধরে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় নিযুক্তির পর শিক্ষকতার পাশাপাশি নিজের সৃজন নিয়ে সক্রিয় ছিলেন তিনি। জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী, এশীয় দ্বিবার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী, জাতীয় ভাস্কর্য প্রদর্শনী, দেশে-বিদেশে বৃত্ত আর্ট ট্রাস্টের আর্ট প্রজেক্টে অংশ নিয়েছেন। এরই মধ্যে পিএইচ.ডিও সম্পন্ন করেছেন। ২০২২ সালে পঞ্চদশ ডকুমেন্টা শীর্ষক জার্মানির আন্তর্জাতিক চারুকলা প্রদর্শনীতে বৃত্ত আর্ট ট্রাস্টের হয়ে অংশ নিয়েছেন। বিদেশি 888sport live chatীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ঋদ্ধ হয়েছেন। দেশে-বিদেশের খ্যাতনামা গ্যালারি, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত সংগ্রহে স্থান পেয়েছে তাঁর ভাস্কর্য।
দীর্ঘ দুই দশক পর 888sport appর লালমাটিয়ায় ডি-ব্লক মাঠের উল্টোদিকে অবস্থিত কলাকেন্দ্রে শুরু হয়েছে ময়নুল ইসলাম পলের পঞ্চম একক ভাস্কর্য প্রদর্শনী। বছর কয়েক ধরে পাথর তক্ষণ করে ভাস্কর্য গড়ছেন। সেসব দিয়েই তাঁর এবারের প্রদর্শনী, শিরোনাম ‘পাথরের বৈভব’। প্রদর্শনীর কিউরেটর 888sport app বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক নাসিমা খান মিতু। তাঁর ভাষ্য – ‘ভাস্কর্য-চর্চার শুরু থেকে পল তক্ষণ-ভাস্কর্যে আগ্রহী। … তবে পাথর তক্ষণের প্রক্রিয়া এবং এর ছোট আকার তাঁর কাজগুলোকে ভিন্ন বৈশিষ্ট্য দিয়েছে – কোনো কোনো কাজ পাথরের শক্ত চরিত্রকে ধারণ করে, আবার কোনো কাজ মাটির মতো নরম অনুভূতি দেয়। … উপকরণের প্রতি সংবেদনশীলতা এবং উপকরণ স্পর্শের অনুভূতি এই ভাস্কর্যগুলোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য।’
কলাকেন্দ্রে ভাস্কর পলের এবারের প্রদর্শনীতে ৩৭টি ভাস্কর্য স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি কাজ পুরনো। বাকি ৩২টি কাজ সাম্প্রতিককালের। শক্তপোক্ত উপকরণ বলে পাথরকে নিয়ন্ত্রণ করা বড় কঠিন। এক্ষেত্রে ভাস্কর কখনো পাথরকে নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়াস যেমন করেছেন, আবার কখনো পাথরখণ্ডের রূপ তাঁকে পথ দেখিয়েছে।
এবারের প্রদর্শনীতে নানারকম অবয়বিক ফর্ম যেমন মানব-মানবীর একক ও দ্বৈতরূপ, পাখি এবং 888sport app ফর্মকে সরলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। চাদর কিংবা হুডি পরে বসে থাকা মানুষ, এক চাদরের তলে থাকা দুইজন, মাথা ঝুঁকে বসে থাকা চিন্তামগ্ন প্রবীণ – এসব বিষয়ের সঙ্গে দর্শকের চিন্তার সাযুজ্য হতে পারে মনে করে ভাস্কর এসব ইংগিত রেখেছেন। তিনি ভেবেছেন, এটুকু রহস্য উন্মোচনে দর্শক তাঁর চিন্তাশক্তিকে ব্যবহার করুন এবং আবিষ্কারের অনির্বচনীয় আনন্দ লাভ করুন। এরূপ অবয়বিক রূপ ছাড়াও সংগ্রহকৃত পাথরের আদিম রূপকে ধরে ভাস্কর তাঁর চিন্তাকে যুক্ত করে এমনভাবে তক্ষণ করেছেন যাতে আমাদের গৃহী-জীবনের কতক প্রায় চেনা অবজেক্ট বলে তা প্রতীয়মান হয়!
রাজশাহীতে বসবাসের কারণেই তাঁর ভাস্কর্যের উপকরণ হিসেবে পাথর এসেছে। শহরের পাশেই প্রমত্তা পদ্মা নদীকে শাসনের জন্য শহররক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারি উদ্যোগে ভারত ও ভুটান থেকে নিয়মিত পাথর আনা হয় বলে রাজশাহীতে পাথর তুলনামূলক সহজলভ্য। তাঁর কাজে ভারত থেকে আনা পাথরের পাশাপাশি ভুটান থেকে আনা পাথরও আছে। পাথরে গড়া ভাস্কর্য টিকে থাকে সহস্র বছর। তার প্রমাণস্বরূপ জাদুঘরে সংরক্ষিত ভাস্কর্যগুলোর কথা উল্লেখ করা যায়।
প্রদর্শনী উপলক্ষে প্রকাশিত ব্রোশিওরে কৃতী কথা888sport live chatী ইমতিয়ার শামীম বন্ধু ভাস্কর ময়নুল ইসলাম পলের কাজ নিয়ে লিখেছেন – ‘দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর ধরে ভাস্কর্য চর্চার মধ্য দিয়ে তিনি যে শৈল্পিক প্রকাশভঙ্গি অর্জন করেছেন, তাতে রয়েছে আধুনিকতা ও ব্যক্তির নৈঃসঙ্গ্য, লোকজ ফর্মের নানা অভিপ্রকাশ, রয়েছে উপকরণ
আবিষ্কার-পুনরাবিষ্কার ও অনুশীলনের আত্মমগ্ন খেলা। … পল এ-জনপদে ভাস্কর্যচর্চার এই সীমাবদ্ধতাকে তাঁর অনুশীলনের মূল শক্তি করে তুলেছেন; সামনে নিয়ে এসেছেন প্রস্তরের বিবিধ আখ্যান। তাঁর দীর্ঘ অভিজ্ঞান পাথরের বুকে ছন্দোবদ্ধ ঐকতানে ভাস্কর্যের কাঠামো জাগিয়ে তুলেছে। … একেকটি ভাস্কর্য হয়ে উঠেছে প্রস্তরীভূত কালসঞ্চিত আদিম আবাহনের চিরকালীন অভিজ্ঞানের স্বাক্ষর। ভাস্কর নভেরা আহমেদ ও হামিদুজ্জামান খানের ধারাবাহিকতায় যারা এদেশে মিনিমালিস্ট ভাস্কর্য সৃজনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, নিবিড় ও একাগ্র ভূমিকা রেখে চলেছেন, ময়নুল ইসলাম পল তাঁদেরই একজন।’
এবারের প্রদর্শনীর বিষয় মানুষ এবং মানুষের আশপাশের প্রাণী, পাখি ও নানা বস্তু। মূর্ত-বিমূর্তের মাঝামাঝি অবয়বের ফর্ম। ত্রিমাত্রিক রূপ অবলোকনের আস্বাদ অন্যরকম। তবে একেকটা ভাস্কর্যের রস আস্বাদনে দর্শককে সময় নিয়ে দেখতে হবে। বুঝতে হবে ভাস্করের ইঙ্গিত, তিনি অবয়বের কোন অংশটিতে জোর দিয়েছেন, যেখান থেকে দেখা শুরু করলে সেটির রূপ উপলব্ধি করা সম্ভব হবে। ভাস্কর তাঁর বয়ানে নিজের কাজ নিয়ে বলেছেন – ‘কখনো পাথর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হই, কখনো বা পাথরকে নিয়ন্ত্রিত করি। এই দুই প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে আমার 888sport live chatসৃষ্টি, এইসব সৃষ্টিতে প্রাণীর বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায় যেখানে মানুষের সরব উপস্থিতি থাকে। মানুষ ছাড়া পরিচিত অবজেক্টকে নতুনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, সেখানেও নীরবে মানুষ থাকে। ব্যক্তি বা সমাজজীবনের সময়-অসময় মানুষেরই তৈরি, তাই অবজেক্ট শুধু কাছের নয়, দূর অতীত ও বর্তমানকে তুলে ধরে। যেভাবে
মসৃণ-অমসৃণ তলের সমন্বয়ে ভাস্কর্য পূর্ণতা পায়।’
কলাকেন্দ্রের নানাকক্ষের স্পেসকে ব্যবহার করে আকর্ষণীয়ভাবে বিভিন্ন ভাস্কর্য সাজিয়েছেন কিউরেটর-ভাস্কর নাসিমা হক মিতু। অভিনব সৃষ্টি সঠিক উপস্থাপনায় আরো মোহনীয় হয়ে উঠেছে। প্রদর্শনীটি ময়নুল ইসলাম পল তাঁর শিক্ষক সদ্যপ্রয়াত 888sport live chatী ও ভাস্কর হামিদুজ্জামান খানের 888sport sign up bonusর উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। গত ১লা আগস্ট শুরু হওয়া এই ভাস্কর্য প্রদর্শনী শেষ হয়েছে ১৮ই আগস্ট।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.