কাইয়ুম চৌধুরী, খুব সম্ভব 888sport appsের একমাত্র 888sport live chatী, যিনি ধারাবাহিকভাবে 888sport appsের প্রকৃতি ও নিসর্গকে দেখে চলেছেন। এই দেখা সময়ের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি ও নিসর্গকে দেখা। সময়ের বদল হয়, প্রকৃতি ও নিসর্গেরও। মানুষ প্রকৃতি ও নিসর্গের পরিসরে জীবনযাপন করে। 888sport appsের অধিকাংশ মানুষের জীবনযাপনের পরিসর প্রকৃতি ও নিসর্গের মধ্যে বলে একধরনের আবহমানতা তৈরি হয়। জীবনযাপন পরিবর্তিত হয় বলে আবহমানতার মধ্যে মানুষও পরিবর্তিত হয়। এই আবহমানতার মধ্যে পরিবর্তনকে য¤ঞতে চেয়েছেন কাইয়ুম চৌধুরী ধারাবাহিকভাবে। একটি একক দৃষ্টির মধ্যে তিনি তৈরি করেছেন বিভিন্ন পরিপ্রেক্ষিত। সময়ের মধ্য দিয়ে একই প্রকৃতি ও নিসর্গ বদলে যায়, যেমন বদলে গেছে রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্রের প্রকৃতি ও নিসর্গ। রবীন্দ্রনাথ যেভাবে প্রকৃতি ও নিসর্গ দেখেছেন, সেই দেখাটা এখন ছিন্নপত্র বইটির মধ্যে আছে। রবীন্দ্রনাথের মানুষগুলো সেভাবে আর নেই, কিন্তু পরিবর্তিত প্রকৃতি ও নিসর্গ আছে। কাইয়ুম চৌধুরীর কাজে আবহমানতার মধ্যে এ-ধরনের পরিবর্তমানতার একটি বোধ কাজ করে চলেছে। এই আবহমানতার একটা অংশ 888sport sign up bonus, পিতৃপুরুষের পরম্পরা, লোকপ্রবচন, গাথা, কিসসা কাহিনী এবং অন্য অংশ ভূগোল ও ইতিহাস। নদী বাঁচে এবং নদী মরে যায়। নদী যতদিন বাঁচে ততদিন নদীর পাড়ে জনপদ গড়ে ওঠে। কৃষক, জেলে ও মাঝি নিজেদের বাঁচার সরঞ্জাম নিয়ে প্রাত্যহিক কাজে ব্যস্ত থাকে; যখন নদী মরে যায় তখন জনপদ বিরান হয়, কৃষক, জেলে ও মাঝি উধাও হয়, বাঁচার সরঞ্জামের খোঁজ মেলে না। এভাবে ভূগোলের বদল হয়, ইতিহাসের বদল হয়, 888sport sign up bonus থাকে। এই 888sport sign up bonus আবহমানতার অংশ, এই পরিবর্তন আবহমানতার অংশ। কাইয়ুম চৌধুরী এভাবেই সময়ের মধ্যে নিসর্গ ও প্রকৃতিকে দেখে চলেছেন।
সময়কে এভাবে দেখার মধ্যে নস্টালজিয়া আছে, আছে বিষণ্নতা, তেমনি আছে বিষণ্ন আশার বোধ। এই 888sport appsে, শহরে থেকেও কাইয়ুম চৌধুরীর এ কাজগুলোর দিকে তাকালে (ড্রইং, জলরং ও তেল রং) চোখে ধরা দেয় ঋতুর আসা এবং যাওয়া, পাতা ও স্রোত এবং আকাশের অনন্ত সূক্ষ্মবদলের মধ্যে ফিসফিস করে ওঠে বাংলার লৌকিক অতীত, এর সঙ্গে মিশে যায় বর্তমানের ভাঙন। এই হচ্ছে প্রকৃতি, মানুষ-নির্মিত, সভ্যতার বিভিন্ন তরঙ্গে রূপান্তরিত। কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে এই নিসর্গের প্রতিটি গাছপালা, পশুপাখি, পুরুষ-রমণী, নদী-আকাশ নির্দিষ্ট এক ধারণ: গাছপালার ডালপালা নির্দিষ্ট দিনে যেভাবে কাঁপে, বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় আলোর গুণসম্পন্নতা, নদীর পাড়ে বিরাট এক মহীরুহের আকাশতৃষ্ণা – সবই তাঁর চোখে আবহমান 888sport apps।
তাঁর রচিত 888sport appsের দিকে নিরাসক্তভাবে তাকানো সম্ভব নয়। তার প্রতিটি নদী, প্রতিটি গাছপালা, প্রতিটি পশুপাখি, প্রতিটি পুরুষ-রমণী 888sport sign up bonusমেদুর ও সাযুজ্যভারাক্রান্ত, সেজন্যে অতীত ও বর্তমানের মধ্যে বাংলার ফারাক করা যায় না। একটা ধারাবাহিকতা কোথাও আছে, একটা নস্টালজিয়া, একটা ইতিহাসবোধ।
জীবনানন্দ দাশের মনোভঙ্গির সঙ্গে কোথাও তার একটি মিল আছে চিত্রময়তার দিক থেকে, বোধের বিষণ্নতার দিক থেকে, ইতিহাসের অতীত ও বর্তমানতার দিক থেকে।
‘সেই শৈশবের থেকে এইসব আকাশ-মাঠ-রৌদ্র দেখেছি;
এইসব নক্ষত্র দেখেছি।
বিস্ময়ের চোখে চেয়ে কতোবার দেখা গেছে মানুষের বাড়ি
রোদের ভিতরে যেন সমুদ্রের পারে পাখিদের
বিষণ্ন শক্তির মতো আয়োজনে নির্মিত হতেছে;
কোলাহলে- কেমন নিশীথ উৎসবে গড়ে ওঠে।
একদিন শূন্যতায় স্তব্ধতায় ফিরে দেখি তারা
কেউ আর নেই।
পিতৃপুরুষেরা সব নিজ স্বার্থ ছেড়ে দিয়ে অতীতের দিকে
সরে যায়- পুরোনো গাছের সাথে সহমর্মী জিনিসের মতো
হেমন্তের রৌদ্রে-দিনে-অন্ধকারে শেষবার দাঁড়ায়ে তবুও
কখনো শীতের রাতে যখন বেড়েছে খুব শীত
দেখেছি পিপুল গাছ
আর পিতাদের ঢেউ
আর সব জিনিস : অতীত।
তারপর ঢের দিন চ’লে গেলে আবার জীবনোৎসব
যৌনমত্ততার চেয়ে ঢের মহীয়ান, অনেক করুণ।
তবুও আবার মৃত্যু।- তারপর একদিন মউমাছিদের
অনুরণের বলে রৌদ্রে বিচ্ছুরিত হ’য়ে গেলে নীল
আকাশ নিজের কণ্ঠে কেমন নিঃসৃত হয়ে ওঠে; হেমন্তের
অপরাহ্ণে পৃথিবী মাঠের দিকে সহসা তাকালে
কোথাও শনের বনে- হলুদ রঙের খড়ে- চাষার আঙুলে
গালে- কেমন নিমীল সোনা পশ্চিমের
অদৃশ্য সূর্যের থেকে চুপে নেমে আসে;
প্রকৃতি ও পাখির শরীর ছুঁয়ে মৃতোপম মানুষের হাড়ে
কি যেন কিসের সৌরব্যবহার এসে লেগে থাকে।’
জীবনানন্দের মতো কাইয়ুম চৌধুরীর গুণসম্পন্নতা হচ্ছে তাঁর কল্পনাকুশলতা। কেবল ড্রইং, কেবল রং নিজেদের থেকে (অবশ্যই ড্রইং ও রং নিশ্চিতভাবে সহায়ক শক্তি) কাউকে বড়ো মাপের 888sport live chatী করে না। এসবের সঙ্গে সবচেয়ে বেশি দরকার কল্পনাকুশলতা। এই কল্পনাকুশতার কারণে তিনি সব বিভ্রান্তি এবং ভাঙনের মধ্যে শান্তি খুঁজে পান। এই শান্তি খুঁজে পাওয়া ভাবালুতা কিংবা বাস্তববর্জিত আদর্শবাদ নয়। এই শান্তি হচ্ছে শক্তি, বেঁচে থাকার শক্তি। তাঁর কাজে কম্পোজিশনের প্রশান্তি এবং বিষয়ের লৌকিক বাংলা কিংবা বাংলার বর্তমানতার মধ্যে বৈসাদৃশ্য আছে (মুক্তিযুদ্ধ-বিষয়ক চিত্রাবলি কিংবা নিসর্গবিষয়ক চিত্রাবলি)। তাঁর আবেগগত অভিজ্ঞতা এসব বিষয়ের মধ্যে বেড়ে উঠেছে এবং মুক্তি খুঁজেছে।
লৌকিক বাংলা তাঁর কাছে ভূস্বর্গ। তিনি পেইন্টিং এবং ফরাসি-ঐতিহ্যের পরপারে, ব্রিটিশ রোমান্টিসিজম এবং বঙ্গীয় রোমান্টিসিজমের ফিগারেটিভ ও নিসর্গ-ঐতিহ্যের মধ্যে আধুনিকতার খোঁজ করেছেন। তাঁর মধ্যে কাজ করেছে লৌকিক বাংলার ভিশন, এই ভিশন বঙ্গীয় নিসর্গের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে যুক্ত। কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে নিসর্গের অন্বেষণ স্বাভাবিক ও মানুষী ফর্মের চেয়ে ভিন্ন কিছু। তিনি উৎসুক যা দেখেন তার রূপান্তরণে, প্রায়শই এই রূপান্তরণ থেকে উৎসরিত হয় লৌকিক ঐতিহ্যজাত ভিশন, এই ভিশনের দরুন নিসর্গ-প্রকৃতি, মানুষী ফর্ম, নৌকার ফর্ম, পশুপাখির ফর্ম কল্পনাকুশলতায় বদলে যায়। নিসর্গ তাঁর কাছে সাবজেকটিভ এবং অবজেকটিভ এক ক্ষেত্র, সেখানে গভীরতর ব্যক্তিক এবং জমকালো ঐতিহ্যের সংমিশ্রণ ঘটে, তৈরি হয় নতুন এবং পূর্ব থেকে ভিন্ন এক দেখা।
বঙ্গীয় আধুনিকতার মধ্যে রোমান্টিক ঐতিহ্যের ক্রমিকতা এবং বঙ্গীয় অনন্য সাংস্কৃতিক-প্রবণতা পাশ্চাত্যের 888sport live chatকলার মূলধারার
সমান্তরালে বেড়ে উঠেছে। বঙ্গীয় আধুনিকতার এই রোমান্টিক ঐতিহ্য ছড়িয়ে আছে 888sport live footballে, পেইন্টিংয়ে, 888sport app download apkয় এবং সমালোচনামনস্ক চিন্তার ক্ষেত্রে। এই রোমান্টিকতার একটি অংশ হচ্ছে লৌকিক বাংলার বিভিন্ন শিকড়, যেসব বাসা খুঁজে পেয়েছে আমাদের জাতীয় ইতিহাসের কেন্দ্রে, যেসব পাশাপাশি থেকেছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক ধনতন্ত্রের সঙ্গে গ্রামাঞ্চলে, কৃষিজীবী সভ্যতা ও সংস্কৃতির মধ্যে।
এই ঐতিহ্যের মধ্যে কাইয়ুম চৌধুরী চোখ মেলে রেখেছেন। তাঁর কাছে সংস্কৃতির মডেল হচ্ছে প্রকৃতি-নিসর্গ, যন্ত্র নয়। বঙ্গীয় চিত্রকলার ক্ষেত্রে, এই বিদ্যমান প্যাসটোরালিজম শক্তিলাভ করেছে নিসর্গ-ঐতিহ্যের মধ্যে। এই ঐতিহ্যের ব্যক্তিক স্বাক্ষর জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান এবং সুলতান। প্যাসটোরালিজমের মধ্যে পরস্পর প্রবিষ্ট হয় গ্রামীণ ভিশন এবং রোমান্টিক ভিশন। স্বর্গের আশা, প্রক্ষিপ্ত হয় ভবিষ্যতের ভিশন হিসেবে, একই সঙ্গে বর্তমান হয়ে ওঠে স্বর্গচ্যুত নরক, কাইয়ুম চৌধুরী এভাবেই বঙ্গীয় সংস্কৃতির সমস্যা ধরতে চেয়েছেন। 888sport live chat কোনো এক কালের শান্তশ্রী উৎসারিত সান্ত্বনা নয়, বরং লৌকিক অতীতের আলেখ্য, যে-আলেখ্যে বিস্তৃত-বিচ্যুতি, ছন্দ-পতন। নিসর্গ থেকে নিংড়ে নেওয়া হয়েছে সবকিছু, বর্তমানে নিসর্গ নয় আর জীবনযাপনের অংশ। এই প্রশ্ন এবং এই সংশয় কাইয়ুমের কাজের মধ্যে স্পন্দিত। তিনি অবশ্য মানেন জীবনযাপনে গ্রামীণ বিকল্প প্রান্তিক, তবু প্যাসটোরাল আকুতি থেকে তিনি রেহাই পান না, যেমন রেহাই পাননি জীবনানন্দ।
কিন্তু সব প্রশ্ন, সব সংশয় সত্ত্বেও সংস্কৃতির দিক থেকে প্যাসটোরালিজম নিঃশেষ হয় না। এই প্যাসটোরালিজমের একদিকে আছে জসিমউদ্দীনের ভিশন, অন্যদিকে জীবনানন্দের ভিশন, অন্যদিকে জয়নুল আবেদিন, কামরুল হাসান, সুলতান এবং কাইয়ুম চৌধুরীর ভিশন, অন্যদিকে রাজনীতিবিদ শেখ মুজিবের ভিশন। এই প্যাসটোরাল ইডাইলকে আক্রমণ করেছে ঔপনিবেশিক শক্তি এবং ধনতন্ত্র। এই ইডাইলিক ভিশনকে ঘৃণা করেছে সামরিক শাসকরা, লৌকিক সংস্কৃতি এবং স্বাভাবিক প্রতিবেশের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান। এই ইডাইলিক ভিশনের বিরোধিতা যেমন করেছে সামরিক শক্তি, তেমনি এই ভিশনকে চুরমার করেছে সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ এবং শ্রেণিবিদ্বেষ। লৌকিক সংস্কৃতি দ্বিখণ্ডিত সাম্প্রদায়িকতার দিক থেকে, লৌকিক সংস্কৃতি পৌত্তলিকতা মৌলবাদের দিক থেকে এবং লৌকিক সংস্কৃতিতে উৎসারিত শ্রেণির সঙ্গে শ্রেণির বিরোধ।
কাইয়ুম চৌধুরীর কাছে লৌকিক সংস্কৃতির অর্থ এবং শক্তি তাঁর প্রতীকময়তা। এই প্রতীকময়তার যেমন নান্দনিকতা আছে তেমনি নৈতিকতা আছে। সবার পক্ষে এই প্রতীকময় ব্যবস্থার মধ্যে অংশগ্রহণ সম্ভব। তাহলেই প্রতীক ও নিসর্গের সঙ্গে মানুষের জীবনযাপনের যে-দূরত্ব তৈরি হয়েছে তা হ্রাস পাবে। নৈতিক ও নান্দনিক শক্তি জীবনযাপনের ক্ষেত্রে শুভ ও কল্যাণ তৈরি করবে।
সেজন্যে প্যাসটোরালিজম হচ্ছে বঙ্গীয় সংস্কৃতির একটি দুটি প্রতীকী শক্তি যা থেকে কিছু আশা, সকল অন্ধকার ও দুর্যোগ সত্ত্বেও, খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এ টিকে থেকেছে ক্রমিক, সেক্যুলার ইমেজ হিসেবে, যেখানে মানুষের নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া, মানুষের সঙ্গে মানুষের বোঝাপড়া এবং মানুষের সঙ্গে প্রকৃতির বোঝাপড়া করা সম্ভব। এমন লৌকিক অতীত ছিল কি-না কিংবা এমন লৌকিক ভবিষ্যৎ তৈরি করা সম্ভব কি-না – প্রশ্ন এটি নয়। লৌকিক বাংলার শক্তি প্যাসটোরালিজম থেকে উৎসরিত, এই শক্তি প্রোথিত আমাদের ইতিহাসের মধ্যে এবং এই শক্তি দীপ্ত আমাদের ভিশনের ক্ষেত্রে। কাইয়ুম চৌধুরী এই সম্ভাবনার ক্ষেত্র পরিক্রম করে চলেছেন। যেমন করেছেন জসিমউদ্দীন এবং জীবনানন্দ, যেমন করেছেন শেখ মুজিব, যেমন করেছেন জয়নুল আবেদিন থেকে কামরুল হাসান থেকে সুলতান পর্যন্ত মহান 888sport live chatীরা।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.