কাইয়ুম চৌধুরী : জীবনের অন্যতম বন্দনা

মফিদুল হক

888sport appsের প্রবীণ 888sport live chatী এবং 888sport live chatসম্ভারে জনচিত্ত, আলোড়িত ও সমৃদ্ধ করে চলা সৃজনমুখর চিত্রকর কাইয়ুম চৌধুরীর অশীতিতম জন্মদিন উপলক্ষে সাম্প্রতিককালে অঙ্কিত তাঁর আশিটি ছবি নিয়ে যে বিশাল প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল বেঙ্গল গ্যালারি অব ফাইন আর্টস এর নাম দেওয়া হয়েছিল ‘আত্মানুসন্ধান’। প্রবীণ কোনো 888sport live chatীর এতো কাজ একসঙ্গে দেখতে পাওয়া সৌভাগ্যের বিষয়, 888sport live chatীর কাজের গভীরতা ও মাত্রা মেলে ধরা এসব ছবির মুখোমুখি হয়ে ভাবতে হয় রং-তুলি দিয়ে ক্যানভাসে কাইয়ুম চৌধুরী জীবনভর যে-আকুতির রূপায়ণ ঘটিয়েছেন তা স্বদেশের ও স্ব-সমাজের আত্মানুসন্ধান বটে, তবে এ আত্মকথা নয়, আত্মারই কথা। খটকা লাগে শিরোনামার ইংরেজি 888sport app download apk latest versionে, ‘কোয়েস্ট ফর দ্য সেলফ’ কি প্রকৃত অর্থে ‘কোয়েস্ট ফর দ্য সোল’ নয়? বাংলায় দুইয়ের ধ্বনিগত ও অর্থগত মিল রয়েছে, কিন্তু ইংরেজিতে বেছে নিতে হবে একটি অভিধা, আত্ম অথবা আত্মা। আবার ছবি দেখতে দেখতে এমনও মনে হতে পারে, এ-বুঝি ‘আত্ম’ থেকে আত্মার দিকেই যাত্রা, যে-যাত্রাপথে 888sport live chatের পাথেয় কেবল সঞ্চয় করেননি কাইয়ুম চৌধুরী, সতত সর্বত্র তা বিলিয়ে চলেছেন এবং ব্যবহারিক 888sport live chatে সৃষ্টিশীলতার যোগ ঘটিয়ে জনচিত্তে কি বিপুল 888sport live chat-বিপ্লবই তিনি ঘটিয়ে দিয়েছিলেন, যে খ্যাতি ও অবদান আবার তাঁর 888sport live chatীসত্তার জন্য বিড়ম্বনারই কারণ হয়ে উঠেছিল নানাভাবে।

Qayyum Chowdhury
Qayyum Chowdhury

আশিতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বড়মাপের প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে – এমন অভিপ্রায় বেঙ্গল গ্যালারি অনেক আগেই ব্যক্ত করেছিল। প্রকৃত অর্থে বলা যায়, এই প্রদর্শনীর কিউরেটর বেঙ্গল 888sport live chatালয়ের পরিচালক সুবীর চৌধুরী। তাঁর পরিকল্পনা ও প্রণোদনাতে এমন বিশাল আয়োজন সম্ভব হয়েছে, 888sport live chatীও তাতে সায় দিয়েছেন। ফলে প্রদর্শনীর চিত্রকর্মের বড় অংশ জন্মোৎসবের কথা 888sport app download for androidে রেখে সৃজিত। প্রায় ছয় দশকের দীর্ঘ 888sport live chatপথ পাড়ি দিয়ে আশিতম জন্মদিনে এসে কাইয়ুম চৌধুরী কোন 888sport live chatচেতনা-উদ্ভূত 888sport live chatরূপ আমাদের সামনে মেলে ধরতে চাইছেন তার দলিল হয়ে আছে এ-প্রদর্শনী। তবে এমন দলিলের পাঠগ্রহণ খুব সহজ নয়, কেননা এর আপাত-সারল্যের অন্তরালে রয়েছে যে-গভীর চিত্রভাবনা তা অনেক সময় বুঝে-ওঠা দুষ্কর হয়।
তবে সর্বাগ্রে বিচার করতে হয় আশি বছরে এসে কী বলতে চেয়েছেন 888sport live chatী। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে মনে পড়তে পারে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা, জন্মদিন ঘিরে অজস্র লেখা তিনি উপহার দিয়েছেন; কিন্তু সবচেয়ে 888sport app download for androidীয় হয়ে আছে আশিতম জন্মদিন উপলক্ষে প্রদত্ত ভাষণ ‘সভ্যতার সংকট’, যা হয়ে আছে কবির টেস্টামেন্ট অব লাইফ, শেষ অভিভাষণ। ১৯৪১ সালের গোড়ার সময় থেকে রবীন্দ্রনাথ ছিলেন শারীরিকভাবে পীড়িত, বৈশাখে জন্মোৎসব পালনের মতো উদ্যম তাঁর ছিল না; কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা এবং স্বদেশে ঔপনিবেশিক শাসনের রুদ্ররূপ তাঁকে এতোটাই বিচলিত করেছিল যে, কিছু বলবার তাগিদে তিনি অস্থির হয়ে উঠেছিলেন। এর ফলে রবীন্দ্রনাথের আশিতম জন্মদিনে আমরা পেয়েছি ‘সভ্যতার সংকট’ ভাষণ, লিখিত যে-ভাষ্যপাঠের সামর্থ্য কবির ছিল না, শান্তিনিকেতনে আয়োজিত জন্মোৎসবে ‘সভ্যতার সংকট’ তাঁর হয়ে পাঠ করে শুনিয়েছিলেন আচার্য ক্ষিতিমোহন সেন। গভীর পরিতাপ নিয়ে রবীন্দ্রনাথ লিখেছিলেন, ‘আজ আমার বয়স আশি বৎসর পূর্ণ হল। আমার জীবনক্ষেত্রের   বিস্তীর্ণতা আজ আমার সম্মুখে প্রসারিত। পূর্বতম দিগন্তে যে-জীবন আরম্ভ হয়েছিল তার দৃশ্য অপর প্রান্ত থেকে নিঃসক্ত দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি এবং অনুভব করতে পারছি যে, আমার জীবনের এবং সমস্ত দেশের মনোবৃত্তির পরিণতি দ্বিখন্ডিত হয়ে গেছে – সেই বিচ্ছিন্নতার মধ্যে গভীর দুঃখের কারণ আছে।’ জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এসে এক অন্ধ-সময়ের মুখোমুখি প্রায় যেন বিপর্যস্ত রবীন্দ্রনাথ, তিনি লিখেছেন, ‘আজ পারের দিকে যাত্রা করেছি, – পিছনের ঘাটে কি দেখে এলুম কি রেখে এলুম, ইতিহাসের কি অকিঞ্চিৎকর উচ্ছিষ্ট, সভ্যতাভিমানের পরিকীর্ণ ভগ্নস্তূপ!’
কাইয়ুম চৌধুরী যখন আশি বছরে পদার্পণ করে আমাদের জন্য উপহার দেন চিত্রসম্ভার তখন, সভ্যতার আরেক যে সংকট আমরা প্রত্যক্ষ করি, মনে হতে পারে তার সঙ্গে 888sport live chatীর চিত্রমালার কোনো যোগসূত্র নেই। বাজার-অর্থনীতির প্রচন্ড দাপটে যখন অর্থনৈতিকভাবে কেবল নয়, সাংস্কৃতিকভাবেও তৈরি হতে চলেছে এক পণ্যভোগী আদর্শবিবর্জিত সমরূপ বিশ্ব, প্রতিবাদের অথবা বিকল্পের ক্ষেত্রগুলো খানখান হয়ে পড়েছে, বিশ্বজুড়ে বেড়ে চলছে সংঘাত ও হানাহানি, বৃহৎ শক্তির দাপট সংঘাতের জবরদস্তি সমাধান ঘটাতে গিয়ে পরিস্থিতি করে তুলেছে আরো জটিল, সেই উদ্ধার-সম্ভাবনাহীন পটভূমিকায় কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport live chatরূপ কোন কথা আমাদের বলছে? যে-সুন্দরের আবাহন ও জীবনের বন্দনা কাইয়ুম চৌধুরীর চিত্রমালায় মনে হতে পারে তার সঙ্গে সংকটের কোনো সম্পর্ক নেই।
একান্ত প্রাচ্যদেশীর রীতিতে ‘সভ্যতার সংকট’ বক্তৃতার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি গান পরিবেশন করেছিলেন, তাঁরই রচিত ও সুরারোপিত সংগীত। কাঁপা কাঁপা হাতে গানের কথাগুলো তিনি লিখেছিলেন, গাইবার উপায় তাঁর ছিল না, শিখিয়ে দিয়েছিলেন সংগীতভবনের শিক্ষাগুরুকে, জন্মোৎসবে শিক্ষার্থীরা দলগতভাবে পরিবেশন করেছিল সেই গান, ‘ঐ মহামানব আসে’। প্রচলিত ভাবনাধারায় আমরা এই গানকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলি ‘সভ্যতার সংকট’ 888sport live থেকে, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তো তাঁর ভাষণের অঙ্গাঙ্গি অংশ হিসেবেই বেঁধেছিলেন এই গান, বাঙালি যেমন আপন মনের গহিন উপলব্ধি প্রকাশে সুরে ও বাণীতে অনুভব করে স্বাচ্ছন্দ্য। যখন পুস্তকাকারে 888sport live হিসেবে ছাপা হয় ‘সভ্যতার সংকট’ কিংবা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকৃত তাঁর ইংরেজি ভাষ্য, ‘দি ক্রাইসিস ইন সিভিলাইজেশন’, তখন এই গান সেখানে আমরা পাই না, অথচ দুইয়ে মিলেই তো জন্মদিনের আবাহন করেছেন রবীন্দ্রনাথ। আশ্চর্যজনকভাবে এই গানে ‘সভ্যতার সংকটে’র বেদনা ও হতাশার কোনো ছায়াপাত নেই, আছে জীবনের প্রতি প্রবল আশাবাদ, যে-আশাবাদ তিনি ব্যক্ত করেছিলেন ভাষণের শেষে, বলেছিলেন – ‘মানুষের প্রতি বিশ্বাস হারানো পাপ’ এবং তাকিয়েছিলেন পূর্বাচলের সূর্যোদয়ের দিগন্তের দিকে, যখন একদিন অপরাজিত মানুষেরা সকল বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাবে তার মহৎ মর্যাদা ফিরে পাওয়ার পথে। তাই ভাষণ-শেষে গীত হয়েছিল গান, ‘উদয়শিখরে জাগে মাভৈঃ মাভৈঃ রব/ নবজীবনের আশ্বাসে।/ ‘জয় জয় জয় রে মানব-অভ্যুদয়’/ মন্দ্রি উঠিল মহাকাশে’।
‘আত্মানুসন্ধান’ চিত্রমালা দেখে মনে হবে আশি বছরে উপনীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হতাশা নয়, আশাবাদ ব্যক্ত করতে চেয়েছেন কাইয়ুম চৌধুরী, 888sport liveের ভাষ্য নয়, গানের বার্তা হয়েছে তাঁর অবলম্বন, সভ্যতার সংকটের মুখোমুখি হয়ে যেমন গান বেঁধেছিলেন রবীন্দ্রনাথ, তেমনি সভ্যতার নবতর সংকটের কালে জীবনের প্রতি প্রবল আস্থার 888sport live chatরূপ সৃজনে নিমগ্ন হয়েছেন কাইয়ুম চৌধুরী।

Anushandan-65, Qayyum Chowdhury
Anushandan-65, Qayyum Chowdhury

দুই

‘আত্মানুসন্ধান’ প্রদর্শনীর আশিটি ছবির মধ্যে দিয়ে যে পরিক্রমণ, তা দর্শক-দৃষ্টি আকর্ষণ করবে দুভাবে, রঙের ঔজ্জ্বল্যে এবং ফর্মের সারল্যে। দুভাবে বলা হলো বটে তবে ছবিতে এই দুই ধারা মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। বরাবরই কাইয়ুম চৌধুরীর কাজে থাকে একধরনের চিত্রধর্মিতা, যা নিছক চিত্ররূপ হয়ে থাকে না, রং এবং ফর্মের ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে তিনি চিত্রের আপাতসারল্য অতিক্রম করে পৌঁছতে চান অন্যতর গভীরতায়। মানুষ যখন জীবনাভিজ্ঞতার নির্যাস আহরণ করে, দীর্ঘ জীবনপথ পাড়ি দিয়ে তাকাতে পারে অতিক্রান্ত সময়ের দিকে তখন আমরা স্বাভাবিকভাবে ধরে নিই জীবনের রং তার কাছে ফিকে হয়ে আসে, ধূসরতা আচ্ছন্ন করে বোধ। কিন্তু কাইয়ুম চৌধুরী জন্মোৎসবকে পরিণত করেছেন চিত্রোৎসবে এবং তিনি যেন রঙের এক হাট আমাদের সামনে উপস্থাপন করলেন।
কাইয়ুম চৌধুরীর প্রিয় 888sport live chatী পল ক্লি একবার বলেছিলেন, ‘রং আমাকে আচ্ছন্ন করে।’ কাইয়ুম চৌধুরীও তেমনি রং দ্বারা আচ্ছন্ন হয়েছেন এবং রঙের মধ্য দিয়ে ব্যক্ত করতে চেয়েছেন 888sport live chatানুভূতি। লাল, হলুদ, নীল এইসব প্রাথমিক রং তাদের সকল ঔজ্জ্বল্য নিয়ে ফুটে উঠেছে ক্যানভাসে। এমনকি কালো রঙের ব্যবহারেও কার্পণ্য করেননি 888sport live chatী। মোটা কালো রেখা অথবা কালোর ছোপ মিলবে অনেক ছবিতে। তবে সেই কালোও যেন চারপাশের ঔজ্জ্বল্য আরো বাড়িয়ে দেয়, স্বয়ং হয়ে ওঠে উজ্জ্বলতা। বৃষ্টিধোয়া প্রকৃতিতে যেমন সজীবতা, সদ্য-স্নাত 888sport promo codeর যেমন স্নিগ্ধতা, সেই সতেজতা ও মাধুর্য যেন রঙের মধ্যে পুরে দিতে চান কাইয়ুম চৌধুরী। প্রদর্শনীতে রয়েছে 888sport live chatীর যে-আত্মপ্রতিকৃতি, ৬১-সংখ্যক চিত্র, সেখানে সাদা অংশ হিসেবে আছে ঘাড় ছাপিয়ে নেমে আসা প্রবীণ 888sport live chatীর চুল, আর প্রতিকৃতি ঘিরে রয়েছে ফুল, পাখি, নদী, নৌকো, মাছ, ঘুড়ি, লতাপাতার ফর্ম, আছে পাকা ফসলের হলুদ, গরুর গাড়ির চাকা, উজ্জ্বল আলোয় ভরা 888sport live chatীর ভুবন, আর রয়েছে এক অচিন পাখি, হাতে এসে বসা এই পাখির সঙ্গে 888sport live chatীর কথোপকথনই বুঝি প্রতিফলিত হয়েছে চিত্রমালায়।
ফর্ম নিয়ে জীবনভর কাজ করে চলেছেন কাইয়ুম চৌধুরী, নিজের জন্য বিশেষ সুবিধা তিনি গড়ে তুলতে পেরেছিলেন তাঁর কৃত ব্যবহারিক 888sport live chatে ফর্মের প্রয়োগ দ্বারা। জীবনভর তিনি ব্যবহারিক 888sport live chatের কত বিচিত্র ধরনের কাজই না করেছেন। প্রচ্ছদ888sport live chatী হিসেবে তাঁকে চেনে কয়েক প্রজন্মের মানুষ, তিনি প্রচ্ছদ চিত্রায়নে 888sport live chatের যোগসাধন এমন এক মাত্রায় নিয়ে গেছেন যার উদাহরণ বিশেষ মিলবে না। সংবাদপত্র সাময়িকীর রচনা-চিত্রায়ন, প্রকাশনার লে-আউট, টাইপোগ্রাফি ইত্যাদি সকল দিকে তাঁর নজর এবং এইসব কাজ এমন এক নিবিষ্টতা ও মমতা দিয়ে তিনি করেন যা ব্যাখ্যা করা কঠিন। একেবারে অাঁটসাঁট আড়ষ্ট যেসব কাজ, প্রতিষ্ঠানের লোগো তৈরি, লেটারহেড ডিজাইন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তিনি গ্রাফিক 888sport live chatীর কুশলতার সঙ্গে ফর্ম নিয়ে নানা খেলা যোগ করতে পারেন। পোস্টার, আমন্ত্রণপত্র, ব্রোশিওর, প্রচারপত্র, বিজ্ঞাপনের ডিজাইন সব কাজই তিনি করেন আনন্দচিত্তে। তিনি ফর্মের যে-সারাৎসার খুঁজে ফেরেন সেই অনুসন্ধানের সামাজিক অবলম্বন হয়ে উঠেছে ব্যবহারিক 888sport live chatে তাঁর অবাধ বিচরণ। এই অনুসন্ধিৎসা এবং প্রয়োগজাত উপলব্ধি ফিরে ফিরে তাঁর ক্যানভাসে যে মূর্ত হয়ে উঠবে সেটা বলা বাহুল্য। তবে আমাদের দেশে 888sport live chatবোধ ও 888sport live chatবিচারে যে আড়ষ্টতা ও গন্ডিবদ্ধতা তার ফলে কাইয়ুম চৌধুরীর কাজের এ-মতো মাত্রা বুঝে নিতে 888sport live chat-সমালোচকদের অস্বস্তি দুর্নিরীক্ষ্য নয়।
সম্প্রতি কাইয়ুম চৌধুরীর আশিতম জন্মদিনে অর্ঘ্য নিবেদনকালে এক 888sport live chat-সমালোচক লিখলেন যে, তিনি আমাদের বাণিজ্যিক ধারার প্রধান 888sport live chatী এবং 888sport live chatধারায়ও তাঁর বিশেষ স্থান রয়েছে। এমন কড়ে আঙুলে স্বীকৃতিদানকালে সমালোচক বিস্মৃত হলেন যে, বাণিজ্যিক ধারা প্রত্যয়টি বহু আগেই বাতিল হয়ে গেছে, বাণিজ্যিক বলে কোনো কথা নেই, ব্যবহারিক 888sport live chat হিসেবে তা এখন নন্দিত এবং ব্যবহারিক 888sport live chat ও 888sport live chatকলার মধ্যে ভেদরেখাও মুছে গেছে অনেক আগে। এই বিভাজন যাঁরা অতিক্রম করতে পারেন তাঁরা পারেন, যেমন পেরেছিলেন অ্যান্ডি ওয়ারহল, পেরেছেন আমাদের কাইয়ুম চৌধুরী, তাঁর মতো করেই বাংলার 888sport live chatধারা ঐতিহ্য ও আধুনিকতার ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে। তবে আমাদের চিত্রভাবনায় সাবেকি কেতা এখনও বিশেষ প্রবল। চিত্রকলা বলতে আমরা এখনও বুঝি বর্গাকার কিংবা আয়তাকার ক্যানভাসে রঙের প্রলেপ, প্রদর্শনী বলতে বুঝি গ্যালারির পরিচ্ছন্ন পরিসরে সারবেঁধে ছবির প্রদর্শনী, যেখানে ধোপ-দুরস্ত দর্শক নির্দিষ্ট সময় মেনে এসে ছবি দেখবেন, কিনবেন, কিন্তু জীবনে 888sport live chatকলার উপস্থিতি তো এর বাইরে অনেক বিস্তৃত।
কাইয়ুম চৌধুরীর ছবির চিত্রধর্মিতা ছাপিয়ে ওঠে তাঁর 888sport live chatকর্মে ফর্ম ও রঙের উদ্ভাসন। তিনি যে স্বদেশ ও স্ব-সমাজের গভীরে শেকড় জারিত করে রস আহরণ করতে চান এবং সেই রসে সিঞ্চিত করেন তাঁর ক্যানভাস, সেটা নানাভাবে নন্দিত হয়েছে। সেইসঙ্গে এটাও লক্ষণীয়, ফর্ম কাইয়ুম চৌধুরীর 888sport live chatস্পর্শে যেন-বা হয়ে উঠেছে কনটেন্ট। তাঁর ফর্ম বিমূর্ততা উৎসারিত অথবা বিমূর্ততা-অভিমুখী নয়, এই উৎস একান্ত লোকজ, যে-লোকায়ত 888sport live chat সবসময়ে ব্যবহারিক, সাবেকি কায়দায় বলা যেতে পারে বাণিজ্যিক। নিত্যকার কেনাবেচা ও ব্যবহারের সামগ্রীতে লোক888sport live chatী যেভাবে 888sport live chatের মাত্রা যোগ করেন তা শনাক্ত করতে পেরেছিলেন জয়নুল আবেদিন ও কামরুল হাসান এবং সেই উপলব্ধির পথ ধরে জীবনভর পরিক্রমণে কাইয়ুম চৌধুরী ফর্মের বিশুদ্ধতায় যেন পৌঁছতে চাইছেন। ফলে তাঁর ছবিতে, বিশেষভাবে সাম্প্রতিক কাজে, কাঁথার ফোঁড়, পাখার নকশা, পিঠার ছাঁচ অথবা শখের হাঁড়িতে তুলির টান এসবের নবতর প্রয়োগ এমন এক রূপ অর্জন করে বহুকালের সাধনা ছাড়া সেই রূপে পৌঁছানো সম্ভব ছিল না। যেমন ধরা যাক জ্বলন্ত সূর্যের উপস্থিতি, কাইয়ুম চৌধুরীর ছবিতে বারবার তা ফিরে আসে মামুলি রূপক হিসেবে নয়, ফর্মের বহুবিচিত্র প্রকাশ হিসেবে। ক্যানভাসে সূর্য তো নিছক গোলাকার বৃত্ত, কিন্তু সেই বৃত্তে জীবনের বিপুল শক্তিময়তা পুরে দিতে 888sport live chatীকে  ভিন্নতর সাধনায় নিবিষ্ট হতে হয়। সেই ষাটের দশকে কাইয়ুম চৌধুরীর ক্যানভাসে সূর্য শীতল পাটির নকশা থেকে শুরু করে কতরকম প্যাটার্নেই না ফুটে উঠেছিল। সাম্প্রতিক কাজে সূর্যকে আমরা পাই পূর্বের আড়ম্বর ঝেড়ে ফেলে নকশার বিশুদ্ধতায় প্রকাশের আকুতি হিসেবে। এসব কাজের সারল্য অর্জনের পেছনে 888sport live chatের যে-দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়া এবং হাজারোভাবে উলটেপালটে সূর্য প্রতীক বিবেচনায় নেওয়ার প্রয়াস, সেসব বিস্মৃত হলে চলবে না।
কাইয়ুম চৌধুরীর রঙের পক্ষপাতিত্ব ও ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। এই রং উঠে এসেছে লোকজ 888sport live chatধারা থেকে, শখের হাঁড়ি, কাঠের ঘোড়া, পাখার রঙিন সুতোর নকশা, কাগজের চড়কি ইত্যাদি উৎস থেকে রং আহরণ করেছেন তিনি। রঙের বিন্যাসে লোকজ ফর্ম ভেঙে প্রকৃতি ও মানুষের যে-চিত্র তিনি অাঁকতে চেয়েছেন, সেক্ষেত্রেও রঙের এক বিশুদ্ধতার প্রতি ক্রমান্বয়ে আকৃষ্ট হয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক কাজে, ‘আত্মানুসন্ধানে’, তাই দেখা যায় রঙের ঔজ্জ্বল্যে তিনি ভরিয়ে দিতে চেয়েছেন ক্যানভাস এবং সেই ঔজ্জ্বল্য বশে আনার জন্যে কখনো ছেড়ে দিয়েছেন সাদা জমিন, কখনো-বা ব্যবহার করেছেন কালো। রং তাঁর এসব ক্যানভাসে স্বয়ম্ভূ হয়ে উঠেছে, এও তাঁর সাম্প্রতিক কাজের বৈশিষ্ট্য, যখন রং স্বয়ং হয়ে ওঠে ছবির কনটেন্ট, যেমন ঘটে থাকে বিমূর্ত চিত্রকলার ক্ষেত্রে। বস্ত্তত, কাইয়ুম চৌধুরীর ছবির এমন অনেক খন্ডাংশ আমরা খুঁজে পেতে পারি যা বিমূর্ত চিত্র হিসেবে দাখিল করা যায়। 888sport live chatের ও জীবনের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে অভিজ্ঞতার জারণের মধ্যে দিয়ে কাইয়ুম চৌধুরী যে রঙের ঔজ্জ্বল্য ও তীব্রতার প্রতি ক্রমান্বয়ে আকৃষ্ট হতে থাকলেন, সেই অভিযাত্রা আমাদের 888sport app download for android করিয়ে দেয় অাঁরি মাতিসের 888sport live chatযাত্রা। আশি বছরের উপান্তে এসে তিনি প্রায় পুরোপুরি নিজেকে সমর্পণ করলেন রঙের উজ্জ্বলতায় এবং ফর্মের বিশুদ্ধতায়। কাগজ কেটে তিনি বানিয়েছেন ফুল, পাখি, লতার নানা ফর্ম, প্রায়শ সেই রঙিন উজ্জ্বল কাগজ সেঁটে দিয়েছেন ক্যানভাসে, আর কোনো রং লাগানোর প্রয়োজন মনে করেননি। আর রং-তুলি দিয়ে ক্যানভাস রাঙিয়েছেন লাল, নীল ও হলুদের উজ্জ্বলতায়, এমন এক তীব্রতায় যা আচ্ছন্ন করে ক্যানভাসের সামনে দাঁড়ানো দর্শক-হৃদয়। এইসব কাজ সম্পর্কে এক 888sport live chat-সমালোচক বলেছিলেন, ‘The canvas radiates it. The redness overflows and people standing in front of the picture to look are seen to have it reflected on them. They are included in it; they share in a natural condition of things and of painting.’ (Matisse – Lawrence Gowing, Oxford University Press, 1979).
কাইয়ুম চৌধুরী আশি বছরে উপনীত হয়ে যে ‘আত্মানুসন্ধান’ চিত্রমালা আমাদের উপহার দিলেন তা সর্বার্থে একজন আধুনিক মননশীল 888sport live chatীর জীবনভর সাধনার নির্যাস। এর আপাতসারল্য যেন অাঁরি মাতিসের আশি-উপান্তের কাজের সঙ্গে তুলনীয়, যে-সরলতায় পৌঁছতে প্রয়োজন পড়ে দীর্ঘ জীবনসাধনা, সতত অনুসন্ধিৎসা ও নিরন্তর সৃজনকর্মে মগ্ন থাকা।
কাইয়ুম চৌধুরী লোক888sport live chatীদের মতোই ব্যবহারিক 888sport live chatকর্মে পান অপার আনন্দ এবং মানুষের নিত্যকার সামগ্রী 888sport live chatিত করে তোলা, তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনকে 888sport live chatমন্ডিত করা, এইসব কাজে সদা নিমগ্ন রয়েছেন। সেইসঙ্গে চলে তাঁর যে নিরন্তর 888sport live chatানুসন্ধান এবং দুইয়ের সম্মিলনে তাঁর 888sport live chat-দর্শনের ও রূপচেতনার পরিচয় পাওয়া যায় সাম্প্রতিক এইসব কাজে। এই জীবনবন্দনার মধ্যে নিহিত আছে গভীর জীবনোপলব্ধি, যে-উপলব্ধির ঘরানা আলাদা। ‘সভ্যতার সংকট’ এ-নয়, এ-হচ্ছে একই উপলব্ধির অন্যতর রূপ, ভাষণ এ-নয়, এ-হচ্ছে সংগীত, কিন্তু জীবন ও সভ্যতার নিবিড় অধ্যয়ন ও সম্পৃক্তির মধ্য দিয়েই বিকশিত হয় এমন নিবিড়তর উপলব্ধি যার অনন্যসাধারণ 888sport live chatরূপ আমরা প্রত্যক্ষ করি ‘আত্মানুসন্ধান’ চিত্রমালায়।