কাছের মানুষ আবুল হাসনাত

আমাদের কাছের মানুষ আবুল হাসনাত চলে গেল। আমি এখন যা দেখছি ওটা লোকে বলে বটে, ‘একে একে শুখাইছে ফুল এবে, নিবিছে দেউটি।’ কথাটি খুবই সত্যি। গত ছয়-সাত মাসে 888sport appsে অসম্ভব রকমের ভালো মানুষ ছিলেন যাঁরা, জ্ঞানী মানুষ যাঁরা, যাঁদের দেখলেই 888sport apk download apk latest version করতে ইচ্ছে হতো, মানুষের পাশে এসে যাঁরা দাঁড়াতেন, মানুষের জন্য যাঁরা কাজ করে গেছেন – তাঁদের চলে যাওয়ার একটা মড়ক যেন লেগে গেছে।

এঁদের মধ্যে হাসনাতও চলে যাবে, এ-কথা আমি কল্পনাও করতে পারছি না। হাসনাত শুধু আমার পরিচিত নয়, সে ছিল আমার ভাইয়েরও অধিক। ও চলে যাওয়ার পর থেকেই শুধুই মনে হচ্ছে, আমার আপন এক ভাই যেন চলে গেল! তার সঙ্গে আমার এত পুরনো দিনের সম্পর্ক, সে কি আজকের কথা! কবে সেই ১৯৭২ সালের কথা – যখন হাসনাত, মফিদুল এঁরা মিলে গণ888sport live football বের করত, তখন থেকেই যোগাযোগের শুরু। সেই যে শুরু সেটা আর কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি।

আগে যখন হাসনাত সংবাদে ছিল, তখনো তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ছিল। তারপর যখন কালি ও কলমে যোগ দিলো, সেটার মান ভালো হতে-হতে এমন একটা জায়গায় হাসনাত নিয়ে গিয়েছিল যে এটা দুই বাংলাতেই একটা উল্লেখযোগ্য পত্রিকা, মাসিক পত্রিকা হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করল। এবং এটা যে করা গেছে, সেটি হাসনাতের জন্যেই সম্ভব হয়েছে। আমার মনে হয় না, হাসনাত ছাড়া আর কারো পক্ষে কালি ও কলমকে এই জায়গায় নিয়ে যাওয়াটা সম্ভব ছিল। আর যেভাবে সে লেখা সংগ্রহ করত, করতে পারতও, সেটা আর কারো জন্যে অসম্ভব একটা ব্যাপার ছিল।

সত্যি বলতে কী, কালি ও কলমে লেখার স্বাধীনতা পেয়ে আমার নিজের লেখার গতিপ্রকৃতিও পালটে গেল। খুবই মগ্নভাবে সেখানে লেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। হাসনাতের কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছিল।

অথচ মানুষটা এত নরম ছিল, এত মৃদুগলায় কথা বলত, কিন্তু লেখকদের সঙ্গে লেগে থাকত, একটা ভালো লেখা পাওয়ার জন্যে। কিছুতেই বিরক্ত হতো না। নিজেও বিরক্ত হতো না, লেখককেও বিরক্ত হতে দিত না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একজন লেখক তাকে লেখাটা দিতে বাধ্য হতেন। আমার কাছ থেকেও অসংখ্যবার এইভাবে লেখা আদায় করে নিয়েছে। আমার জীবনে এমন অসাধারণ সম্পাদক, অসামান্য মানুষ, নিঃস্বার্থ ব্যক্তিত্ব সত্যিই খুব কম দেখেছি। সেইসঙ্গে জ্ঞানীও বটে। পড়াশোনার এত বিস্তৃতি যে অবাক করে দিত। সেই মানুষটি যে এরকমভাবে হঠাৎ চলে যাবে, সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। হাসনাত চলে যাওয়ার পর থেকে কেবলই মনে হচ্ছে, 888sport appsটা কি ক্রমশই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে নাকি? মাথার ওপরে কাউকেই তো দেখতে পাচ্ছি না, আশেপাশেও কাউকে দেখছি না।

এখন 888sport apk download apk latest version করতে পারি, এমন কাউকেই দেখছি না। সব যেন শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে। যে-মানুষ দীর্ঘজীবী হয়, সে তার চারপাশের মানুষজনকে ক্রমাগত একজনের পর আরেকজন এইভাবে চলে যেতে দেখে। এজন্যে মনে হয়, দীর্ঘজীবী হওয়া একটা অভিশাপ। একেকবার মনে হয়, আমার মতো মানুষের দীর্ঘজীবী হওয়াটা বোধহয় ঠিকই না। এতে অনেক আঘাত পেতে হয়, যা সবসময় সহ্য করা যায় না।

আবুল হাসনাত গণ888sport live footballে যখন ছিল, সংবাদে যখন ছিল, কালি ও কলমে যখন ছিল – তখন যে ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল তাতে অবাক হই। কারণ এত অল্প কথার মানুষ ছিল সে। নিচু গলায় কথা বলত আর একনিষ্ঠভাবে নিজের কাজগুলো করে যেত।

888sport appয় গেলেই আড্ডা হতো মফিদুল হকের বইয়ের দোকানে। মফিদুল সংবাদে ফোন করলেই সেখানে হাসনাত এসে হাজির হতো। হাসনাত যতই কম কথা বলুক, নিচু গলায় কথা বলুক, এটা বুঝতে আমার অসুবিধে হয়নি যে, গভীর বড় একটা হৃদয় তার ছিল। তখন থেকেই সংবাদে আমি ক্রমাগত নিয়মিত লিখতে থাকি। সে ওই হাসনাতের জন্যেই। তবে যাকে বলে ঘনিষ্ঠতা, সেটা ঠিক সংবাদের সময় হয়নি। হয়নি যে তার কারণ আমি থাকতাম 888sport app থেকে বেশ দূরে, রাজশাহীতে। তারপর যখন সে কালি ও কলমে যোগ দিলো, তখন থেকে যে-হৃদ্যতার সম্পর্ক তৈরি হলো, সেটা বলার মতো নয়, কল্পনা করার মতোও নয়। আমার আর্নেস্ট হেমিংওয়ের 888sport app download apk latest versionটা কী অসম্ভব দ্রুততায় সে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছিল। সেজন্যে ভালোবাসা জানাই। আবুল হাসনাতের চলে যাওয়াতে আমি মর্মাহত বললেও খুব কম বলা হয়। আমি অনেক বেশি অনুভূতিপ্রবণ হয়ে যাচ্ছি। হাসনাতের মৃত্যুটা আমি ঠিক নিতে পারছি না। হাসনাতকে নিয়ে দীর্ঘ একটি লেখা লিখব বলে ঠিক করেছিলাম কিন্তু লিখতে পারছি না। লিখতে পারলাম না। অথচ হাসনাত ছিল আমার আত্মার অধিক আত্মীয়।

কাছের মানুষ আবুল হাসনাত

হাসান আজিজুল হক

আমাদের কাছের মানুষ আবুল হাসনাত চলে গেল। আমি এখন যা দেখছি ওটা লোকে বলে বটে, ‘একে একে শুখাইছে ফুল এবে, নিবিছে দেউটি।’ কথাটি খুবই সত্যি। গত ছয়-সাত মাসে 888sport appsে অসম্ভব রকমের ভালো মানুষ ছিলেন যাঁরা, জ্ঞানী মানুষ যাঁরা, যাঁদের দেখলেই 888sport apk download apk latest version করতে ইচ্ছে হতো, মানুষের পাশে এসে যাঁরা দাঁড়াতেন, মানুষের জন্য যাঁরা কাজ করে গেছেন – তাঁদের চলে যাওয়ার একটা মড়ক যেন লেগে গেছে।

এঁদের মধ্যে হাসনাতও চলে যাবে, এ-কথা আমি কল্পনাও করতে পারছি না। হাসনাত শুধু আমার পরিচিত নয়, সে ছিল আমার ভাইয়েরও অধিক। ও চলে যাওয়ার পর থেকেই শুধুই মনে হচ্ছে, আমার আপন এক ভাই যেন চলে গেল! তার সঙ্গে আমার এত পুরনো দিনের সম্পর্ক, সে কি আজকের কথা! কবে সেই ১৯৭২ সালের কথা – যখন হাসনাত, মফিদুল এঁরা মিলে গণ888sport live football বের করত, তখন থেকেই যোগাযোগের শুরু। সেই যে শুরু সেটা আর কখনো বিচ্ছিন্ন হয়নি।

আগে যখন হাসনাত সংবাদে ছিল, তখনো তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা ছিল। তারপর যখন কালি ও কলমে যোগ দিলো, সেটার মান ভালো হতে-হতে এমন একটা জায়গায় হাসনাত নিয়ে গিয়েছিল যে এটা দুই বাংলাতেই একটা উল্লেখযোগ্য পত্রিকা, মাসিক পত্রিকা হিসেবে বিবেচিত হতে শুরু করল। এবং এটা যে করা গেছে, সেটি হাসনাতের জন্যেই সম্ভব হয়েছে। আমার মনে হয় না, হাসনাত ছাড়া আর কারো পক্ষে কালি ও কলমকে এই জায়গায় নিয়ে যাওয়াটা সম্ভব ছিল। আর যেভাবে সে লেখা সংগ্রহ করত, করতে পারতও, সেটা আর কারো জন্যে অসম্ভব একটা ব্যাপার ছিল।

সত্যি বলতে কী, কালি ও কলমে লেখার স্বাধীনতা পেয়ে আমার নিজের লেখার গতিপ্রকৃতিও পালটে গেল। খুবই মগ্নভাবে সেখানে লেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। হাসনাতের কারণেই সেটা সম্ভব হয়েছিল।

অথচ মানুষটা এত নরম ছিল, এত মৃদুগলায় কথা বলত, কিন্তু লেখকদের সঙ্গে লেগে থাকত, একটা ভালো লেখা পাওয়ার জন্যে। কিছুতেই বিরক্ত হতো না। নিজেও বিরক্ত হতো না, লেখককেও বিরক্ত হতে দিত না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একজন লেখক তাকে লেখাটা দিতে বাধ্য হতেন। আমার কাছ থেকেও অসংখ্যবার এইভাবে লেখা আদায় করে নিয়েছে। আমার জীবনে এমন অসাধারণ সম্পাদক, অসামান্য মানুষ, নিঃস্বার্থ ব্যক্তিত্ব সত্যিই খুব কম দেখেছি। সেইসঙ্গে জ্ঞানীও বটে। পড়াশোনার এত বিস্তৃতি যে অবাক করে দিত। সেই মানুষটি যে এরকমভাবে হঠাৎ চলে যাবে, সেটা আমি কল্পনাও করতে পারিনি। হাসনাত চলে যাওয়ার পর থেকে কেবলই মনে হচ্ছে, 888sport appsটা কি ক্রমশই ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে নাকি? মাথার ওপরে কাউকেই তো দেখতে পাচ্ছি না, আশেপাশেও কাউকে দেখছি না।

এখন 888sport apk download apk latest version করতে পারি, এমন কাউকেই দেখছি না। সব যেন শূন্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে। যে-মানুষ দীর্ঘজীবী হয়, সে তার চারপাশের মানুষজনকে ক্রমাগত একজনের পর আরেকজন এইভাবে চলে যেতে দেখে। এজন্যে মনে হয়, দীর্ঘজীবী হওয়া একটা অভিশাপ। একেকবার মনে হয়, আমার মতো মানুষের দীর্ঘজীবী হওয়াটা বোধহয় ঠিকই না। এতে অনেক আঘাত পেতে হয়, যা সবসময় সহ্য করা যায় না।

আবুল হাসনাত গণ888sport live footballে যখন ছিল, সংবাদে যখন ছিল, কালি ও কলমে যখন ছিল – তখন যে ঘনিষ্ঠতা হয়েছিল তাতে অবাক হই। কারণ এত অল্প কথার মানুষ ছিল সে। নিচু গলায় কথা বলত আর একনিষ্ঠভাবে নিজের কাজগুলো করে যেত।

888sport appয় গেলেই আড্ডা হতো মফিদুল হকের বইয়ের দোকানে। মফিদুল সংবাদে ফোন করলেই সেখানে হাসনাত এসে হাজির হতো। হাসনাত যতই কম কথা বলুক, নিচু গলায় কথা বলুক, এটা বুঝতে আমার অসুবিধে হয়নি যে, গভীর বড় একটা হৃদয় তার ছিল। তখন থেকেই সংবাদে আমি ক্রমাগত নিয়মিত লিখতে থাকি। সে ওই হাসনাতের জন্যেই। তবে যাকে বলে ঘনিষ্ঠতা, সেটা ঠিক সংবাদের সময় হয়নি। হয়নি যে তার কারণ আমি থাকতাম 888sport app থেকে বেশ দূরে, রাজশাহীতে। তারপর যখন সে কালি ও কলমে যোগ দিলো, তখন থেকে যে-হৃদ্যতার সম্পর্ক তৈরি হলো, সেটা বলার মতো নয়, কল্পনা করার মতোও নয়। আমার আর্নেস্ট হেমিংওয়ের 888sport app download apk latest versionটা কী অসম্ভব দ্রুততায় সে বেঙ্গল পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশের ব্যবস্থা করেছিল। সেজন্যে ভালোবাসা জানাই। আবুল হাসনাতের চলে যাওয়াতে আমি মর্মাহত বললেও খুব কম বলা হয়। আমি অনেক বেশি অনুভূতিপ্রবণ হয়ে যাচ্ছি। হাসনাতের মৃত্যুটা আমি ঠিক নিতে পারছি না। হাসনাতকে নিয়ে দীর্ঘ একটি লেখা লিখব বলে ঠিক করেছিলাম কিন্তু লিখতে পারছি না। লিখতে পারলাম না। অথচ হাসনাত ছিল আমার আত্মার অধিক আত্মীয়।