কাজী আনোয়ারুল কাদীর : বিস্মৃত চিন্তানায়ক

বিংশ শতাব্দীর 888sport appsে সংঘটিত উল্লেখযোগ্য বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম ‘বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন’। মুসলিম 888sport live football সমাজের সাংগঠনিক নেতৃত্বে এ-আন্দোলন প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯২৬ সালে। মুসলিম 888sport live football সমাজের শতবর্ষ পূরণ হতে চলেছে। এ-আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কয়েকজন উদার মানবতাবাদী লেখক ও সংগঠক। তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে অগ্রজ ছিলেন কাজী আনোয়ারুল কাদীর। তিনি শুধু সবচেয়ে অগ্রজ ছিলেন না, বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের প্রাণপুরুষ আবুল হুসেনের শিক্ষকও ছিলেন।

কাজী আনোয়ারুল কাদীরের 888sport live footballচর্চার প্রধান মাধ্যম ছিল 888sport live। এই মননশীল পরিচয়ের বাইরেও সৃজনশীল রচনায় তাঁর প্রতিভা বোঝা যায় কাজী ইমদাদুল হকের আবদুল্লাহ 888sport alternative linkের শেষ কয়েকটি পরিচ্ছেদে। কাজী ইমদাদুল হকের আকস্মিক মৃত্যুর পর এই অসমাপ্ত 888sport alternative linkের শেষাংশ রচনা করেন কাজী আনোয়ারুল কাদীর। এ-888sport alternative linkের শেষাংশে সমাজসচেতন চিন্তকের প্রতিফলন স্পষ্ট। 888sport live রচনায় যে প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও মানবতাবাদী চেতনার পরিচয় তিনি দিয়েছেন, উল্লিখিত 888sport alternative linkেও সেই পরিচয় পাওয়া যায়। শৈল্পিক দৃষ্টিকোণ থেকে খুব সার্থক না হলেও আবদুল্লাহ 888sport alternative linkের উপসংহার তৎকালীন বাঙালি মুসলমানের অনবদ্য সমাজচিত্র।

কাজী আনোয়ারুল কাদীরের একমাত্র প্রকাশিত বই আমাদের দুঃখ একটি 888sport live সংকলন। এই 888sport liveগুলো শিখা, নওরোজ, দীপিকা, নব্য বাংলা, জয়তী ও বুলবুল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। স্বল্পায়তনের এ-বইয়ে আটটি 888sport live রয়েছে। প্রতিটি 888sport liveে লেখকের ক্ষুরধার সমাজচেতনার পরিচয় পাওয়া যায়।

প্রথম 888sport liveের শিরোনাম ‘আমাদের দুঃখ’ দিয়ে এ-বইয়ের নামকরণ করা হয়েছে। মাত্র তিন পৃষ্ঠার এ-888sport liveটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু লক্ষ্যভেদী। ঔপনিবেশিক ভারতবর্ষের অন্যতম সংকট ছিল সাম্প্রদায়িকতা। হিন্দু ও মুসলমান জনগোষ্ঠী একে অপরের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছে; পরস্পরকে আক্রমণ ও প্রতি-আক্রমণ করেছে, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় প্রাণ হারিয়েছেন অগণিত নিরীহ মানুষ। এই মনোভাব দিয়ে যে দেশের স্বাধীনতা আসবে না, তা স্পষ্ট করে আনোয়ারুল কাদীর লিখেছেন। ধর্মান্ধতা কীভাবে মানুষকে যুক্তিবর্জিত করে এর উদাহরণ লেখক দিয়েছেন। আরেকটি বিপজ্জনক প্রবণতার প্রতি লেখক দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন, যা এ-যুগেও প্রাসঙ্গিক। নিজের ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত মতের সঙ্গে না মিললেই কাউকে শত্রুজ্ঞান করার প্রবণতা কোনো সভ্য আচরণ নয়। মতভিন্নতা ও পরমতের প্রতি 888sport apk download apk latest version একটি সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজের বৈশিষ্ট্য। স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করেও ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তি ও সম্প্রদায়ের মধ্যে মিলনের সেতু গড়া সম্ভব। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য। এই ঐক্য প্রকৃতির মধ্যে চমৎকারভাবে বিরাজ করছে। আনোয়ারুল কাদীরের ভাষায় – জগতে দেখতে পাই ফুল ফল গাছ পাতা সব ভিন্ন ভিন্ন রকমের। একই জাত গোলাপ ফুল তার মধ্যে রকমারি। আবার একই গাছের দুটি গোলাপ ফুল ঠিক একরকম নয়। দুটি জীবন্ত চলন্ত চেতনাযুক্ত মানুষ একরকম পাওয়া দায়। আর সমগ্র মুসলমান সমাজের লোকগুলি সব একই রকম হওয়া চাই! হচ্ছে না তবু হওয়াতেই হবে এই যে দুরাশা, এতে খেয়ে সেরেছে মুসলমানকে। লাঠির আঘাতে সব হিন্দু যদি মুসলমান হ’য়েও যায় তার পরক্ষণেই দেখতে পাওয়া যাবে আবার হিন্দুর বীজ গজিয়ে উঠেছে। আবার সেই দ্বন্দ্ব আরম্ভ হয়েছে। কি হবে হিন্দুকে মুসলমান ক’রে?

মানুষ-মানুষ।

বইয়ের দ্বিতীয় 888sport live ‘নেতাদের কথা’র উপজীব্য ভবানীপুর ব্রাহ্মসমাজে প্রদত্ত আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের একটি বক্তৃতা। প্রফুলস্ন রায় এই ভাষণে হিন্দু সমাজের জাতিভেদ প্রথার সমালোচনা করতে গিয়ে 888sport appsে মুসলমানদের 888sport free bet বৃদ্ধির জন্য হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথার কঠোরতাকে দায়ী করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘শতকরা ৯৯ জন মুসলমান যাহাদের রক্ত হিন্দু ও ভাষা বাংলা – তাহারা আমাদের অত্যাচারে জর্জরিত হইয়া ইসলামের উদার বক্ষে আশ্রয় লইয়াছে।’ এই বক্তব্যের বিরোধিতা করে আলোচ্য 888sport liveটি লিখেছেন আনোয়ারুল কাদীর। ধর্মীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠতে না পারলে যে যথার্থ দেশসেবক হওয়া যায় না তা চমৎকার যুক্তির সাহায্যে উপস্থাপন করেছেন লেখক। তিনি মনে করেন – দেশের সব নেতাই ‘‘হিন্দু-মুসলমান’’ ইত্যাদি কথা এতই ব্যবহার করেন যে, তাঁরা দেশের মঙ্গল চান এ কথা স্বীকার করা যায় না। এঁরা কেউ হিন্দুর মঙ্গল, কেউ মুসলমানের মঙ্গল চান। 888sport live footballে বা বক্তৃতায় হিন্দুর মঙ্গল বা মুসলমানের মঙ্গলের জন্য যখন কোনো নেতা বিশেষ আগ্রহ দেখাতে যান বা তাঁর নেতৃত্বের দাবী সপ্রমাণ করতে চান তখন যে বিদ্বেষের বহ্নি জ্ব’লে ওঠে তাতে পুড়ে মরে উভয়েই। যাঁরা দেশের প্রকৃত সেবক হতে চান তাঁদের হিন্দু-মুসলমান এ সব কথা বাদ দিয়ে কথা বলতে হবে। সম্প্রদায় বিশেষের নেতা হওয়া এক কথা আর দেশের সেবা করা অন্য কথা, এ কথা আমাদের বুঝতে শিখতে হবে।

আমরা দেশসেবক অর্থে সম্প্রদায় বিশেষের নেতা বুঝি। যাঁদের নেতা হবার মতো জ্ঞান বৃদ্ধি ও ক্ষমতা আছে, তাঁদের উচিত যথাসম্ভব গণ্ডি অতিক্রম করার চেষ্টা করা। স্যার পি, সি, বায়ের বহুমুখী প্রতিভার নতুন ক’রে পরিচয় দেবার কোনো প্রয়োজন নাই। বড়ই দুঃখের বিষয় যে, স্যার পি, সি, রায়ের মতো প্রতিভাবান ব্যক্তি গণ্ডি অতিক্রম করতে সক্ষম নন। এটা শুধু তাঁর একার দোষ নয়। এই দুর্ভাগা দেশের রীতিই এই। কি হিন্দু কি মুসলমান সবারই দৃষ্টি যেন কেমন ক’রে ছাঁচে ঢালা বস্তুর মতো একই রকম। এভাবে দেশের সেবা সম্ভবপর হবে না। আমাদের সকলেরই দৃষ্টি প্রসারিত করা দরকার।

এ-বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ 888sport live ‘সামাজিক গলদ’। এ-888sport live ‘মুসলিম 888sport live football সমাজ’-এর প্রথম বার্ষিক অধিবেশনে লেখক কর্তৃক পঠিত হয় এবং ‘বাঙালি মুসলমানের সামাজিক গলদ’ শিরোনামে শিখা পত্রিকার প্রথম 888sport free betয় প্রকাশিত হয়েছিল। 888sport liveটি তখন আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল। কাজী আবদুল ওদুদ সেই সময়ের 888sport sign up bonusচারণা করে লিখেছিলেন –

বাংলার মুসলমান সমাজে যে একটি নব মনোভাবের সূচনা হয়েছে, সেদিনকার সেই সভায় এই কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, আর যে সব 888sport liveের ভিতর দিয়ে এই কথাটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল, সে সবের মধ্যে শ্রোতৃবর্গকে বিশেষভাবে চমকিত করেছিল এই লেখাটি। কিন্তু এর লেখক এটি লিখেছিলেন ও পড়েছিলেন শান্তভাবে। … শিক্ষা, সাধারণ চাল-চলন, ধর্ম্ম, দেশের বৃহত্তর জীবন ইত্যাদি সম্বন্ধে বহু মূল্যবান কথা যেটি এতে অতি প্রাঞ্জল ভাষায় বলা হয়েছে, কিন্তু সব চাইতে বড় কথা যেটি এতে বলা হয়েছে, সেটা হচ্ছে জীবন-যাত্রায় যুক্তির বুদ্ধির অপরিসীম প্রয়োজনীয়তার কথা। মনুষ্যত্বের বোধ লেখকের কত পরিপূর্ণ, তারও পরিচয় এতে আছে।

888sport liveের শুরুতে কাজী আনোয়ারুল কাদীর মুসলমান সমাজের সামাজিক বন্ধনের প্রশংসা করেছেন। ইসলামের সাম্যনীতি মুসলমানদের সমাজব্যবস্থাকে শক্তিশালী ও প্রগতিমুখী হতে সহায়তা করেছে। ইসলামের মহান শিক্ষা ও এর ইতিবাচক প্রভাব উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ভারতের মুসলমান সমাজে এই শিক্ষা কতটুকু অনুসরণ করা হচ্ছে? লেখকের ভাষায়, ‘মুসলমান-সমাজ যে রাহুগ্রস্ত অবস্থায় কাল কাটাচ্ছে এ সত্য গোপন করে কোনো লাভ হবে না।’ মুসলমান সমাজের এ-দুর্দশার জন্য তিনি দায়ী করেছেন শিক্ষার অভাবকে। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেছেন –

বাংলার মুসলমান-সমাজের বয়স নিতান্ত কম নয়; কিন্তু এই দীর্ঘকালের মধ্যে আমাদের মধ্যে একজন রুশো, একজন পেট্‌সালট্‌জী, একজন হারবার্ট স্পেনসার জন্মান নাই। আমাদের সমাজ একজন রাজা রামমোহন, একজন বিদ্যাসাগর, একজন বঙ্কিমচন্দ্র, একজন পিয়ারীচরণ, একজন রামতনু লাহিড়ী, একজন রাজনারায়ণ বসু কি একজন স্যার আশুতোষ তৈরি করতে পারে নি। এর একমাত্র কারণ আমরা শিক্ষা চাই না, আমরা বিদ্যা চাই না, জ্ঞানের মর্যাদা বুঝি না, 888sport live footballের আদর করি না, তাই আমাদের মধ্যে বিদ্বান নাই, বৈজ্ঞানিক নাই, 888sport live footballিক দার্শনিক ঐতিহাসিক নাই। আমরা দান ভালবাসি তাই আমাদের মধ্যে দাতা আছে, এবং দাতা আছে বলেই ভিক্ষুকের অভাব নাই। সেইরূপ আমরা যদি শিক্ষা ভালবাসতাম তবে শিক্ষাদাতা, শিক্ষিতজন ও শিক্ষান্বেষী কোনোটির অভাব হ’ত না।

ধর্মীয় গোঁড়ামি সম্পর্কে এ-888sport liveে কিছু সাহসী মন্তব্য করেছেন লেখক। তাঁর কথাগুলো এ-যুগেও প্রাসঙ্গিক। এর মধ্য দিয়ে কাজী আনোয়ারুল কাদীরের অসাধারণ দূরদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায়। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে, শতবর্ষ আগের এ-সমস্যা এ-শতাব্দীতে থেকে গেলেও কাজী আনোয়ারুল কাদীরের মতো নির্ভীক চিন্তাবিদ এ-যুগে বিরল। ‘বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন’-এর অন্যতম প্রবক্তা বুদ্ধির মুক্তির প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে বলেছিলেন – বুদ্ধির মুক্তি না হলে ধর্মশিক্ষা হতে পারে না। ধর্মের আদেশ ও নিষেধ পালন করার জন্য বুদ্ধির দরকার। বুদ্ধির অভাবে আজকাল আমাদের ভিতর প্রকৃত ধর্মভাব লোপ পেয়েছে। এখন গোঁড়ামিই আমাদের ধর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোঁড়ামির দরুন আমাদের অবস্থা যা হয়েছে তা ভাবলে আতঙ্ক উপস্থিত হয়। কোনো কিছু বলবার জো নেই। সমাজের প্রচলিত অর্থহীন কোনো সংস্কারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বললে যে বলবে তাকে তখনই কাফের, জাহের, গোমরাহ, গাঁওয়ার ইত্যাদি বলা হবে।

আমাদের দুঃখ বইয়ের চতুর্থ 888sport live ‘শিক্ষিতা 888sport promo codeর বিবাহ’। 888sport liveটি বুলবুল পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। মুসলমান সমাজে শিক্ষিতা 888sport promo codeদের স্ত্রী ও পুত্রবধূ রূপে গ্রহণ করার অনীহার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন লেখক। এই প্রবণতা যে 888sport promo codeশিক্ষা ও 888sport promo codeপ্রগতির পথে চরম প্রতিবন্ধক, সে-কথা জোর দিয়ে বলেছেন তিনি। 888sport promo codeর সতীত্ব সম্পর্কে প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গির বিরোধিতা করেছেন লেখক। শারীরিক সতীত্বের ধারণা যে পরোক্ষভাবে সমাজে 888sport promo code নির্যাতনকে প্রশ্রয় দেয়, তা উল্লেখ করে 888sport promo codeর মানসিক সতীত্বকে অধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষিতা 888sport promo codeর মূল্য বোঝাতে তিনি লিখেছেন –

এই সব শিক্ষিতা 888sport promo codeদের অসহায় অবস্থা যে আমাদের সমাজের স্ত্রী-শিক্ষার কতখানি অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে তা উপলব্ধি করবার জন্য আমরা একটুও চিন্তা করি না। শিক্ষিতা 888sport promo codeর প্রতি অ888sport apk download apk latest versionর দরুন আমাদের সংসারের বধূ মাতা এঁরা অধিকাংশই অপেক্ষাকৃত অশিক্ষিতা। তাঁদের সতীত্বের দরুন তারা নিশ্চয়ই 888sport apk download apk latest versionর পাত্র। কিন্তু তাদের যেসব গুণ আছে তার সঙ্গে উচ্চশিক্ষা থাকলে আরও যে সুন্দর হতো! তারা সন্তান-সন্ততিদের লালন পালন শিক্ষা ইত্যাদি সম্বন্ধে অধিকতর পারদর্শী হয়ে সমাজের অধিকতর কল্যাণ সাধন করতে সক্ষম হতেন।

এ-বইয়ের পঞ্চম 888sport liveের শিরোনাম ‘জাতীয় সমস্যা’। নব্যবাংলা নামক একটি পত্রিকায় এ-888sport liveটি প্রথম প্রকাশিত হয়। তৎকালীন ভারতবর্ষের অন্যতম সংকট ছিল সাম্প্রদায়িকতা। একজন সমাজ888sport apkীর দৃষ্টিকোণ থেকে
এ-সমস্যার স্বরূপ ও ভয়ংকর পরিণতির প্রতি তিনি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। কোনো কাজ ভালো কি মন্দ তার বিচারের জন্য মাপকাঠি ছিল হিন্দু করেছে না মুসলমান করেছে। শুধু অশিক্ষিতদের মধ্যে নয়, বহু শিক্ষাভিমানী সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প দেখে লেখক হতাশ হয়েছেন। নির্মোহ ও নৈর্ব্যক্তিক বিশেস্নষণ করে বলেছেন –

হিন্দু মুসলমান শুধু দুটি কথা। এই দুটি কথা আমাদিগকে এতই মোহাচ্ছন্ন করেছে যে আমাদের মনুষ্যত্ব সত্যিই ক্ষুণ্ণ হয়েছে কিনা ভেবে দেখা দরকার। যাঁরা গর্বিত এবং গোঁড়া, তারা হয়তো জানেই না যে, তাঁরা কি পরিমাণে মোহাচ্ছন্ন। মোহাচ্ছন্ন জনের সবচেয়ে বড় শাস্তিই এই যে, তাঁরা তাঁদের পাপ সম্বন্ধে অন্ধ। আমাদের দেশের অনেক শিক্ষাভিমানী সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি যে রকম ভ্রান্ত এবং সাম্প্রদায়িক মনোভাবগ্রস্ত, তাতে সত্যিই হতাশ হতে হয়। আশৈশব একসঙ্গে খেলাধুলা, একই দেশে বাস, একই স্কুল-কলেজের শিক্ষা, তথাপি হিন্দু মুসলমানে এই যে ব্যবধান, এর কারণ খুঁজে দেখলে বুঝতে পারা যায়, কি পরিমাণে অনিষ্ট সাধিত হয়েছে হিন্দু মুসলমান এই দুটি কথার দ্বারা। সত্য, মঙ্গল ও প্রেম যদি সত্যিই সবারই কাম্য, তবে কেন এত ব্যবধান?

এই সাম্প্রদায়িক বিরোধের জন্য হিন্দু-সম্প্রদায়ভুক্ত যাঁরা তাঁরা দায়ী করছেন মুসলমানকে; আবার
মুসলমান-সম্প্রদায়ভুক্ত যাঁরা তাঁরা বলছেন হিন্দু দায়ী। হয়তো এ ব্যাপারে কেউ কারো চেয়ে কম দায়ী নয়। …  মুসলমানের টুপী বা হিন্দুর টীকিতে মানবতার বিকাশ সাধিত হয় এমন ধারণা যত শিগ্‌গির আমাদের মন থেকে দূর হয় ততই মঙ্গল। টুপী বা টীকিতে পাপ যায় না।

আরেকটি গুরুতর সমস্যার কথা তিনি উল্লেখ করেছেন। শিক্ষিত সমাজের সরকারি-বেসরকারি উচ্চপদস্থ ব্যক্তিদের সততার অভাব এবং দায়িত্বহীনতা দেশের উন্নয়নে অন্যতম প্রতিবন্ধক – সেটি তিনি যুক্তি দিয়ে উপস্থাপন করেছেন। এ-সমস্যার বস্তুনিষ্ঠ পর্যালোচনা করে তিনি যেসব মন্তব্য করেছেন তা এ-যুগেও প্রাসঙ্গিক – সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে পুলিশের দুর্নাম তো আছেই, কিন্তু কোন বিভাগে যে সমস্ত বিষয় বিচার ইত্যাদির মর্যাদা রক্ষা হয় তা বিচার করতে গেলে চিত্ত বিকল হয়ে যায়। তোষামোদ সুপারিশ উপঢৌকন এমন কি উৎকোচ চলে না এমন কোনো সরকারী বিভাগ আছে কি না খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। দেশের এই দুর্দিনে সরকারী কর্মচারীদের হৃদয়হীনতা অশামিত্ম নিবারণ না ক’রে বাড়িয়েই চলেছে। এসব সরকারী কর্মচারীদের প্রতিপত্তি দেখে বিস্তি খেলায় রঙের গোলামের মানের কথা মনে পড়ে।

সেবক যখন শাসকের স্থান অধিকার করে তখন শাসন শোষণে পরিণত হয়। আমাদের দেশে তাই ঘটেছে। এমন নির্বিঘ্নে শোষণের ব্যবস্থা ও অধিকার অন্য কোথাও নাই। শব্দের অর্থের দিক দিয়ে এক একজন ধর্মাবতার, এক একজন শোষণাবতার।

… হিন্দুর হাতে শাসনভার ন্যস্ত হবে, না মুসলমানের হাতে, তাই নিয়ে আমাদের কাড়াকাড়ি। এদিকে মুসলমানের বিশ্বাস অর্জন করবার চেষ্টা হিন্দুর নেই; মুসলমানও হিন্দুর ভক্তি অর্জন করবার কথা ভাবছে না মোটেই। হিন্দুর ব্যথায় মুসলমানের আনন্দ, মুসলমানের দুঃখে হিন্দুর উল্লাস, দে’খে দে’খে মানবের অধিষ্ঠাত্রী দেবতা আজ লাঞ্ছিত। দয়া, ক্ষমা, প্রেম, প্রীতির পরিবর্তে নিন্দাবাণী, আর আপন সাধুত্ব-অভিমানই হয়েছে আমাদের ধর্ম। তাই দেশের কল্যাণকামীর মনে প্রশ্ন জাগে, কল্যাণ কোথায়?

এ-বইয়ের ষষ্ঠ রচনার নাম ‘পল্লী-চিত্র’। একটি গ্রামে একদিনের 888sport slot gameের অভিজ্ঞতার জীবন্ত 888sport sign up bonus তুলে ধরে জয়তী পত্রিকায় ‘বাঙালি মুসলমানের অর্থসমস্যা’ নামে এই রচনাটি প্রকাশিত হয়েছিল। মাত্র দু-পৃষ্ঠার এ অভিজ্ঞতায় গ্রামবাংলার মুসলমান সমাজের দুর্গতির স্বরূপ উন্মোচন করেছেন তিনি। অশিক্ষা, কুসংস্কার, দারিদ্র্য, অপরিচ্ছন্নতা এমনকি পানীয় জলের অভাবে দুর্দশাগ্রস্ত তাদের জীবন। লেখকের বক্তব্যের নির্যাসটুকু কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না –

মুসলমান-সমাজের অর্থ-সমস্যা ক্রমেই জটিলতর হইয়া উঠিতেছে। এ-সত্য আবিষ্কার করিবার জন্য শিক্ষিত অভাবমুক্ত প্রসন্নচিত্ত মুসলমানের বুকে কোনো বেদনার সঞ্চার হইতেছে কি না জানি না। তবে একথা নিঃসংশয়ে বলা চলে যে, পেটের ক্ষুধা পেটেই বহিয়া আজও লক্ষ লক্ষ মুসলমান বেহেশতে যাইবার আশায় মসজিদ নির্মাণ মেরামত ইত্যাদির চাঁদা, ওয়ায়েজ মওলানার রাস্তা-খরচ, মাদ্রাসা মক্তবের চাঁদা, ফকীরের ভিক্ষা ইত্যাদি অকাতরে দান করে। এই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের দোজখের ভয় কত বড় তাহা আজিকার জড়বাদী জগতের পক্ষে উপলব্ধি করা একেবারে মুস্কিল ব্যাপার। কিন্তু বড় দুঃখ লাগে যে, সমাজনেতারা যে পরিমাণ দোজখের ভয় দেখাইয়া এই সব নিঃস্ব-সন্তানগণকে শাসন করিতে সর্বদা যত্নবান, ইহাদের সাংসারিক জীবনের ব্যর্থতার প্রতিকারের কোনো ব্যবস্থা করিবার জন্য তেমন উদ্যোগী নহেন।

কাজী আনোয়ারুল কাদীরের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ 888sport live ‘888sport live footballে সাম্প্রদায়িকতা’। 888sport liveটি জয়তী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। হিন্দু-মুসলমান বিরোধের কারণ হিসেবে বাঙালি লেখকদের অনুদারতা ও সংকীর্ণতার কথা বলেছেন। অনেক 888sport live footballিক তাঁদের লেখকসত্তা ভুলে গিয়ে ধর্মীয় পরিচয়কে মুখ্য করে তুলেছেন। এমন সাম্প্রদায়িক মনোভাব শুধু 888sport live footballের পরিসরে সীমাবদ্ধ থাকেনি, সমাজ-সংস্কৃতিকেও দূষিত করেছে। এই দূষণ শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও কলুষিত করে তোলে। দুই সম্প্রদায়ের লেখকদের কারো কারো এমন বিদ্বিষ্ট মনোভাব 888sport live football বা দেশ কারো পক্ষেই কল্যাণকর নয়। এ-888sport liveে লেখক মৌলিক চিন্তা ও গভীর সমাজচেতনার পরিচয় দিয়ে বলেছেন –

হিন্দু-মুসলমান-সমস্যা ক্রমেই জটিলতর হয়ে উঠেছে। এই সমস্যা সমাধানের যে সব চেষ্টা হচ্ছে তা বিশেষ সফলতার দিকে অগ্রসর হচ্ছে না। সব চেষ্টাই এমনভাবে বিফল হবার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে মনে হয়েছে – এই সংঘর্ষের জন্য বাংলা 888sport live footballও অনেকখানি দায়ী। এর অনেক স্থলে সত্যের অপলাপ ও প্রেমের অভাব দৃষ্ট হয়। অনেকস্থলে অহিন্দু বলেই হোক বা অন্য কোনো কারণেই হোক কতকগুলি লেখকের দ্বারা মুসলমানের যে চিত্র অঙ্কিত হয়েছে তা হয়তো সত্য নয়, অথবা যদি সত্য হয় তবে তার পার্শ্বের হিন্দুর যে চিত্র দাঁড় করান হয়েছে সেটি হয়তো সত্য নয়। সোজা কথায়, আমাদের 888sport live footballে যেখানে হিন্দু মুসলমান উভয়কে আঁকা হয়েছে সেখানে হিন্দুকে শুধু হিন্দু বলেই বড় করার চেষ্টা হয়েছে। বাঙালী জাতির কল্যাণকে উদ্দেশ্য ক’রে আমাদের 888sport live football গড়ে ওঠেনি।

এ-বইয়ের শেষ রচনা ‘উর্দু বাংলা তর্ক’। এটি মুসলিম 888sport live football-সমাজের নবম বার্ষিক অধিবেশনে পঠিত হয়। তখন রচনাটির শিরোনাম ছিল ‘আমাদের মাতৃভাষা’। গত শতাব্দীর প্রথমার্ধে পূর্ববঙ্গের মুসলমানদের মধ্যে ‘বাঙালিত্ব’ নিয়ে যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল, এরই অনিবার্য পরিণতি ছিল ভাষা-সমস্যা। বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের সংকটের মূলে ছিল মাতৃভাষা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব। মুসলমান সমাজের নানা অংশ এ-বিষয়ে নানা দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ করতেন। এ-বিতর্ক বাঙালি মুসলমানের ভাষা ও 888sport live footballচর্চা এবং চিন্তাচর্চাকে নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এজন্য লেখক দায়ী করেছেন মুসলমান নেতৃত্বের অদূরদর্শিতা ও দায়িত্বহীনতাকে। লেখক যথার্থই বুঝেছিলেন, ‘যে জাতির ভাষা নেই তার ভাববার শক্তিও নেই – আর ভাববার শক্তি না থাকলে একটি জাতি দরিদ্র তো হবেই।’ অর্থনৈতিক দৈন্য ও চিন্তার দৈন্য পরিপূরক। গভীর অন্তর্দৃষ্টির পরিচয় দিয়ে আনোয়ারুল কাদীর লিখেছেন –

বাঙালি মুসলমানদের যাঁরা পথপ্রদর্শক যাঁরা উর্দু ও বাংলা নিয়ে তর্ক করছেন, তাঁরা কয়েক কোটি মানব-সন্তানের চিন্তাশক্তির বিষয় না ভেবে শুধু ভাষার জাতি-বিচারে ব্যস্ত। তাঁরা ভাবের আদান-প্রদানই যে ভাষার মূল উদ্দেশ্য একথা ভুলে যাচ্ছেন। তাতে করে অসুবিধে হচ্ছে – কয়েক কোটি মানব-সন্তানের হৃদয়ের সুখ-দুঃখ,
আশা-আকাঙ্ক্ষার গতিরোধ হচ্ছে। সহজে যে ভাষায়ই হোক তাদের ভাবরাজিকে প্রবাহিত হতে বাধা দেওয়া ভাল কাজ হচ্ছে না। … মানুষের অন্তরের দরদ বা অনুভূতিটি কোন্‌ ভাষায় প্রকাশ করতে হবে সে সম্বন্ধে বিধিনিষেধ দ্বারা শাসন করা নিষ্ঠুর আচরণ। এই নিষ্ঠুরতার ফলে বাঙালি মুসলমানদের চিন্তাশক্তিকে দুবর্বল করা হয়েছে। সত্য সত্যই এদের কোন ভাষা নেই। বাংলাও তাদের ভাষা নয়; উর্দ্দুও তারা আয়ত্ত করতে পারে নি – পারছেও না।

পূর্বোলিস্নখিত 888sport liveের বক্তব্যের সঙ্গে ‘বাংলা উর্দু ও বাঙালি মুসলমান’ 888sport liveের বক্তব্যের মিল রয়েছে। এ-888sport liveে স্পষ্ট করে লেখক বলেছেন, মাতৃভাষা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে বাঙালি মুসলমান বাংলা 888sport live footballে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে পারেনি। এজন্য উচ্চশিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত মুসলমান পরিবারগুলো দায়ী। এসব পরিবার উর্দুকে মাতৃভাষা হিসেবে গ্রহণ করে উর্দুর চর্চা করতো। এই নেতিবাচক মানসিকতার কারণে বৃহত্তর বাঙালি মুসলমান সমাজে বাংলা ভাষা ও 888sport live footballের সমাদর হয়নি। ভাষার প্রতি অবজ্ঞা দেশের প্রতি অবজ্ঞারই শামিল। লেখকের ভাষায় – বাঙালী মুসলমানের মধ্যে স্বদেশপ্রেম বর্দ্ধিত হয় নাই, এই কারণেই তাহারা সমগ্র বাঙালী জাতির সর্বাঙ্গীণ

মঙ্গল সম্বন্ধে উদাসীন। তাহারা নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ লইয়াই ব্যসস্ত কিন্তু এখানে মুশকিল এই যে, নিজেদের স্বার্থ দেশের বৃহত্তর স্বার্থের উপর নির্ভর করে। সমগ্র দেশের শিক্ষা-সমস্যা, অন্ন-সমস্যা, বস্ত্র-সমস্যা ইত্যাদিকে বাদ দিয়া শুধু মুসলমানের অন্ন বা বস্ত্র বা অন্য কোন সমস্যার সমাধান অসম্ভব। কিন্তু স্বদেশপ্রেমের অভাবে বাঙালী মুসলমান এ সমস্ত সমস্যার ভার নিতে নারাজ।

এ-888sport liveে তিনি দ্বিধাহীনভাবে ঘোষণা করেছেন – ‘বাংলাই বাঙালী মুসলমানের মাতৃভাষা, সুতরাং বাংলার সাহায্যে জাতীয় 888sport live football গঠনের চেষ্ঠাই সঙ্গত ও সহজ।’

কাজী আনোয়ারুল কাদীর ছিলেন উচ্চশিক্ষিত, রুচিশীল ও সংস্কৃতিমনস্ক বাঙালি। পাশ্চাত্য 888sport live football ও দর্শনের প্রতি অনুরাগ তাঁকে একটি অসাধারণ জীবন দর্শন উপহার দিয়েছিল। বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের দিশারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন সবচেয়ে অগ্রজ। একজন আদর্শ শিক্ষাবিদ ও সার্থক প্রাবন্ধিক হিসেবে তিনি এ-আন্দোলনে অসামান্য ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাঁর ভূমিকার মূল্যবান স্বীকৃতি ধ্বনিত হয়েছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কণ্ঠে।

১৯২৬ সালের জানুয়ারি মাসে 888sport appয় মুসলিম 888sport live football-সমাজ প্রতিষ্ঠার পর ১৯২৭ সালের ২৭ ও ২৮শে ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় এর প্রথম বার্ষিক সম্মেলন। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে কলকাতা থেকে সে-সম্মেলন উদ্বোধন করতে আসেন কাজী নজরুল ইসলাম। এর কয়েকদিন আগে তিনি জ্বরে ভুগেছিলেন। অসুস্থ শরীর নিয়ে সম্মেলনের দুদিনের অধিবেশনেই তিনি উপস্থিত ছিলেন, প্রথমদিন উদ্বোধনী সংগীত হিসেবে একটি গান (খোশ আমদেদ) এবং দ্বিতীয় দিনে একটি গজল পরিবেশন ও 888sport app download apk (খালেদ) আবৃত্তি করেন। সম্মেলনের কার্যক্রম নজরুলকে কতটা উদ্দীপ্ত করেছিল দ্বিতীয় দিনের অধিবেশনে প্রদত্ত তাঁর ভাষণ থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়।

888sport live football-সমাজের অভিযাত্রিকদের অভিনন্দিত করে তিনি বলেছিলেন –

… বহুকাল পরে কাল রাত্রে আমার ঘুম হয়েছে। আজ আমি দেখছি এখানে মুসলমানের নূতন অভিযান শুরু হয়েছে। আমি এই বার্তা চতুর্দিকে ঘোষণা করে বেড়াব। আর একটি কথা – এতদিন মনে করতাম আমি একাই কাফের কিন্তু আজ আমি দেখে আশ্বস্ত হলাম যে, মৌঃ আনোয়ারুল কাদীর – প্রমুখ কতকগুলি গুণী ব্যক্তি দেখছি আস্ত কাফের। আমার দল বড় হয়েছে এর চেয়ে বড় সান্ত্বনা আর আমি চাই না।

বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম কাণ্ডারি আবুল ফজল পূর্বসূরি আনোয়ারুল কাদীরের অবদানকে 888sport apk download apk latest versionভরে 888sport app download for android করেছেন। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও মুসলিম 888sport live football-সমাজ ও বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের অগ্রযাত্রার পেছনে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা উল্লেখ করেছেন। আবুল ফজল ‘বুদ্ধির মুক্তি’ 888sport liveে লিখেছেন –

এই বিপুল পরিবর্তন একদিনে হয় নি, কারও একার চেষ্টায় ঘটে নি। দীর্ঘকাল ধরে বহু মানুষ বহুভাবে এর পথ কেটেছেন, ভিত গেড়েছেন, আগামী দিনের পথ রচনা করতে মাল-মসলা জুগিয়েছেন। তাঁদের অনেকের কথা আমরা ভুলে গিয়েছি। অনেকের 888sport sign up bonus বি888sport sign up bonusর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সমাজের রথ-চক্র বড় ধীরে ও অলক্ষে চলে। অলক্ষ থেকে নানাজনের নানা হাত তাকে সামনের দিকে এগিয়ে দেয়। মুখর রাজনৈতিক নেতাদের চেয়ে এঁদের দানের মূল্য অনেক বেশি। শান্ত ও গম্ভীর প্রকৃতির, স্বল্পভাষী ও উদারচেতা আনওয়ারুল কাদীর সাহেবেরও অলক্ষে থেকে সমাজ ও দেশের মঙ্গল চিন্তা মামুলি ও গতানুগতিক ছিল না। এ যুগে 888sport app মুসলিম 888sport live football সমাজ যে মুক্তবুদ্ধি ও স্বাধীন চিন্তার ঢেউ তুলেছিল আনওয়ারুল কাদীর সাহেবের চিন্তা ও রচনা তারই সাক্ষাৎ ফল। ইতিহাস ও ঐতিহ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাঙালিদের সুনাম নেই। পূর্বসূরিদের কীর্তি অবহেলায় বি888sport sign up bonusর অতলে হারিয়ে যায়। বিংশ শতাব্দীতে বাঙালি মুসলমান সমাজের অন্যতম অগ্রসর চিন্তাবিদ কাজী আনোয়ারুল কাদীর। শিক্ষিত বাঙালিদের অধিকাংশেরই তাঁর সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। এমনকি স্বল্পায়ু ‘বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন’-এর সঙ্গে যুক্ত অন্য মনীষীগণ ইতিহাসে যেভাবে আলোচিত ও চর্চিত হয়েছেন, সেই মনোযোগ আনোয়ারুল কাদীর পাননি। অথচ তিনি ছিলেন সেই প্রবক্তাদের পথপ্রদর্শক। বিস্মৃত এই চিন্তানায়কের উপযুক্ত মূল্যায়ন ছাড়া বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলনের ইতিহাস অপূর্ণ থেকে যাবে।