কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্য পান্থজনের সংগীতসখা

অপূর্ব শর্মা

‘আমি তোমারই তোমারই তোমারই নাম গাই, আমার নাম গাও তুমি।’ এই আমি আর তুমি নিয়ে বাংলা ভাষায় কত গান লেখা হয়েছে তার হিসাব করা কি আদৌ সম্ভব? হয়তো না। তবে ভালোলাগার পরশে অনন্য হয়ে ওঠা, কালের ক্যানভাসে ঠাঁই করে নেওয়া বাংলাগানের একটি তালিকা ইচ্ছা করলেই তৈরি করতে পারি আমরা। যদিও সে-তালিকা খুব বেশি দীর্ঘ হবে না, তথাপি এ-তালিকায় বেশ ওপরের দিকেই থাকবে কালিকাপ্রসাদের লেখা উলিস্নখিত গানটি। এটি অল্প সময়েই এপার বাংলা, ওপার বাংলা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে বিশ্ববাঙালির কাছে, পেয়েছে সর্বজনীনতা। কালিকা বলতেন, পরিবেশ-পরিস্থিতিতে গানের ভাব বদলে যায়। ‘সাধের লাউ’কে তিনি বিরহের গান আখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কি ঘুণাক্ষরেও টের পেয়েছিলেন তাঁর নিজের লেখা গানই একদিন সম্পূর্ণ বাঁকবদল হয়ে এমন পরিস্থিতিতে পড়বে? এ-প্রশ্নের উত্তর আজ আর আমাদের জানার কোনো অবকাশ নেই।

কালিকার ভালোবাসার গানটিই আজ বেদনার গান হয়ে গেছে। প্রিয় মানুষের মুখ নয়, ‘তোমারই নাম গাই’ শুনে খোদ কালিকাকেই মনে পড়ছে আমাদের? কালিকা কি ‘তোমারই’ বলতে আমার বা আমাদেরই গান গাওয়াকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন; আর তাঁর গাওয়া দেখে আমরাও সম্পৃক্ত হচ্ছি তাতে? সুরের এই দ্যুতির সঙ্গে তৈরি হচ্ছে বিনি সুতার বন্ধন। বেদনাগাথা উঁকি দিচ্ছে মনে। জাতিস্মরের ‘এ তুমি কেমন তুমি’ ভেসে উঠছে চোখের সামনে! ভুবনমাঝির গানে সম্মিলিতভাবে কণ্ঠ মেলালে ধরে আসছে গলা। তাঁর বিয়োগামেত্মর সঙ্গে যেন একাকার হয়ে বেদনার সংগীতে পরিণত হয়েছে গানটি!

আচ্ছা, কালিকা কি আগাম টের পেয়েছিলেন মৃত্যুর হিমশীতল পরশ তাঁকে আচ্ছাদিত করতে যাচ্ছে? সেজন্যই কি আগেভাগেই লিখে গেলেন এমন একটি গান। এ যেন নিজের জন্য কালিকার লিখে যাওয়া শোকসংগীত! শুধু 888sport appয় কিংবা কলকাতায় নয়, সিলেট, শিলচর যেখানেই গাওয়া হচ্ছে গানটি, সজল হয়ে উঠছে আঁখিযুগল! একক বা সম্মিলিত যেভাবেই হোক না কেন, শ্রোতারা বা সমবেতরাও গলা মেলাচ্ছেন তাতে। একজন 888sport live chatীর এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী হতে পারে?

অনেকেই তো লোকগান করে থাকেন। দীর্ঘ ইতিহাস ঘাঁটলে এই তালিকায় অসংখ্য নাম সংযোজন করা যাবে। কিন্তু হেমাঙ্গ বিশ্বাস ও নির্মলেন্দু চৌধুরীর পর কালিকাপ্রসাদের মতো আর কেউ আসেননি। যদিও সে-সময় আর এ-সময়ে বিস্তর ফারাক। তখন ব্যান্ড কিংবা আধুনিকতার এত দাপট ছিল না। গ্রামে পৌঁছেনি গিটারের শব্দ। সুর দিয়েই 888sport live chatীরা মাতোয়ারা করতেন শ্রোতাদের। এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। রিমোট হাতে নিয়ে শোনা যায় গান। বাটন চাপলেই পালটে ফেলা যায় চ্যানেল। ইউটিউবে সার্চ দিলে পাওয়া যায় তাবৎ গানের ভাণ্ডার! প্রাচ্য এবং পাশ্চাত্যের ব্যবধান ঘুচে যায় মুহূর্তেই। প্রচারমাধ্যমের ছড়াছড়ির এ-সময়ে পান্থজনের গান গেয়ে ঠিক একজন হয়ে ওঠা, কিংবা অনন্য হয়ে ওঠা সত্যিই কঠিন কাজ; দুঃসাধ্যও বটে। সেটা যদি হয় দেশজ বাদ্যযন্ত্রের বদৌলতে, তাহলে তো চ্যানেল কিংবা মঞ্চে গান করে শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করা আরো কঠিন হয়ে দাঁড়ানোর কথা! সেই কঠিন কাজটিই সহজে, অনেকটা একক নেতৃত্বে শুরু করলেন কালিকাপ্রসাদ, যা তাঁকে অধিষ্ঠান করল অনন্য উচ্চতায়। এনে দিলো অমরতা।

বেশিদিন আগের কথা নয়, ১৯৯৯ সালের ৭ আগস্ট দোহার প্রতিষ্ঠা করেন কালিকা। 888sport appsের গান গেয়ে যাত্রা শুরু হয় দোহারের। একতারাটার ছিলা তাঁর স্পর্শে যেন প্রাণ ফিরে পেল। সঙ্গী হিসেবে পেলেন রাজীব, অমিত, মৃগনাভি, ঋত্বিক, সত্যজিৎ, সৌম্য ও নিরঞ্জনকে। লোহা ও চুম্বকের মতোই আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়লেন সংগীতের সঙ্গে। শুধু গান গাওয়া নয়, গান নিয়ে রীতিমতো শুরু করলেন গবেষণা। বিকৃতি রোধে যাঁর গান তাঁর কাছে, যে-অঞ্চলের গান সে-অঞ্চলে পৌঁছাতে শুরু করলেন। বিশেষ করে লোকগানের উৎসভূমি এই বাংলায় অর্থাৎ 888sport appsে ছুটে এলেন তিনি। চালালেন অনুসন্ধান। নতুন নতুন গান আবিষ্কারের নেশা তাঁকে পেয়ে বসল। দীর্ঘ পথপরিক্রমায় এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছালেন, নিজেই হয়ে গেলেন নিজের প্রতিদ্বন্দ্বী। ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঘুরে বেড়াতে থাকলেন এপার বাংলা-ওপার বাংলা। কখনো ধুলো ওড়াপথ, কখনো কর্দমাক্ত সড়ক পাড়ি দিতে হয়েছে তাঁকে। যানবাহন থেমে গেলে হাঁটাপথকে করেছেন চলার সাথি। কলকাতা নগরীর আধুনিকতা আর চাকচিক্য ভুলে হাওরে ভাসিয়েছেন নৌকা, শুধু বাউলসঙ্গ পাওয়ার আশায়। তবে করিম-সংস্পর্শে তাঁর গান খোঁজার অভিযাত্রায় যুক্ত হয় নতুন মাত্রা। শাহ আবদুল করিমের জীবন-দর্শনের মাঝে তিনি খুঁজে পেলেন লোকগানের বাউলগানের ভিন্ন এক পথ। তাঁর ভাষ্য অনুযায়ী, শাহ আবদুল করিমের চোখের মতো আর কারো চোখ তিনি দেখেননি। করিমের চোখ ছিল নির্লিপ্ত, স্থির। করিমের কাছ থেকেই তিনি জেনেছেন, সহজ কথা কাকে বলে। তাঁর মতে, শাহ আবদুল করিম শুধু অধ্যাত্ম-ভাবনায় মগ্ন ছিলেন না, তিনি মানুষের ওপর নির্যাতন-শোষণের প্রতিক্রিয়া জানাতেন, যা বাউল ঘরানার ছিল না। এই যে উপলব্ধি, দৃষ্টির প্রখরতা তা শুধু মগ্নতারই ফসল। লোকগানের বিশাল ভুবন সাঁতরে বেড়ানোর কারণেই এমন সরল উচ্চারণ করতে পেরেছিলেন কালিকা।

কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য্যকে পুরোপুরি উপলব্ধি করতে হলে পেছনে ফিরে যেতে হবে। কালিকার কালিকা হয়ে-ওঠায় কিন্তু কাজ করেছে পারিবারিক আবহ। তাঁর বাবা রামচন্দ্র ভট্টাচার্য শুধু ধ্রম্নপদী সংগীতের 888sport live chatীই ছিলেন না, ছিলেন সুরের ভুবনের দক্ষ সংগঠক ও পৃষ্ঠপোষক। কাকা অনমত্ম ভট্টাচার্য্যের সংগ্রহে ছিল প্রায় পাঁচ হাজার লোকগান। আরেক কাকা মুকুন্দদাস ভট্টাচার্য্য এবং পিসি আনন্দময়ী দেবীও ছিলেন একই অঙ্গনের মানুষ। অনমত্মকুমার ভট্টাচার্য্যের ‘লোকবিচিত্রা’ নামে একটি গানের দল ছিল। লোকগানের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যেতিনি দলটি গঠন করেছিলেন। তাঁর অকালপ্রয়াণে সে-প্রচেষ্টা থমকে যায়। কাকার স্বপ্নকে সার্থক করতেই বন্ধুদের নিয়ে ‘দোহার’ প্রতিষ্ঠা করেন কালিকা। দলের নামকরণ করেন তাঁর শিক্ষক অভীক মজুমদার। মূলত অনমত্ম ভট্টাচার্য্যের সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করেই দোহারের যাত্রা শুরু হয়। ‘লোকগানের রূপ, রস, গন্ধ – সবকিছুর অরিজিন্যালিটি বজায় রাখার চেষ্টা’কেই কালিকাপ্রসাদ করেন চলার পথের পাথেয়। সুরে নিজস্বতা আর সংগতে গ্রামীণ বাদ্যযন্ত্র ঢোল, খোল, মাদল, ধামসা, ডুবকি, খঞ্জনি, ডুগডুগি, সারিন্দার ধ্বনির বাতাবরণ তৈরিই দোহারে আবিষ্ট করে শ্রোতাকে। বাউল, কীর্তন, ঝুমুর, ভাটিয়ালি, চটকা, ভাওয়াইয়া প্রভৃতি গানে সুরের মৌলিকত্ব বজায় রেখে তিনি তৈরি করেন গায়কিতে নিজস্বতা। মূলত পারিবারিক আবহই কালিকাকে মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়েছিল। দৈনিক আনন্দবাজারের ‘মাটিতে পা রেখেই শহরের মঞ্চে লোকগান শোনাতে চেয়েছেন কালিকাপ্রসাদ’ শীর্ষক 888sport world cup rateে যেন সে-চিত্রই ভেসে ওঠে আমাদের সামনে –

ছোট্ট ছেলেটা অসম্ভব ভালো তবলা বাজাত। বাজাবে নাই-বা কেন! বাড়ির সকলে তো গান-বাজনা নিয়েই থাকে। আসামের শিলচর সেন্ট্রাল রোডের ভট্টাচার্য্য বাড়ির ছেলেটার সহজাত ওই প্রতিভা দেখে তাই কেউ কখনো অবাক হননি। সেই ছেলেই যখন নিজস্ব গানের দল ‘দোহার’ গড়ে, তখনো আশ্চর্য হননি কেউ। সেটাই যেন স্বাভাবিক ছিল। সংগীতের আবহেই জন্ম হয়েছিল ছোট্ট সেই ছেলে কালিকাপ্রসাদের। গানের সঙ্গেই জুড়ে ছিল তাঁর গোটা পরিবার। গানই যেন বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। বাবা, কাকা, ফুফু সকলেই গানের সাধনা করতেন। সংগ্রহ করতেন লোকগান। সংগৃহীত সেই গান বাড়িতে তো বটেই, বাইরেও গাওয়া হতো। 888sport appsের সিলেট অঞ্চলের পাশাপাশি সেই সংগ্রহে ছিল উত্তর-পূর্ব ভারতের একটা বিসত্মীর্ণ অঞ্চলের লোকগান। আর সেই লোকগানের স্বাতন্ত্র্য ধরে রাখতেই গান গাওয়া শুরু করেন কালিকাপ্রসাদ।

কালিকা আসামের শিলচরে জন্মগ্রহণ করলেও তাঁর পূর্বপুরুষের আবাস ছিল সিলেটে। এ-কারণেই তাঁর রক্তে প্রবহমান ছিল বাংলার নদী-হাওরের ঢেউ ও মুক্ত হাওয়া। তাঁর কাছে শিলচর, কলকাতা এবং সিলেট ছিল একই সূত্রে গাঁথা। জন্মমাটি শিলচরে কেটেছে শৈশব-কৈশোর; সেখানেই নিয়েছেন আগামীর পাঠ। শিলচরের স্থানীয় শিশুতীর্থে প্রাথমিক, নরসিংহ স্কুল থেকে মাধ্যমিক শেষ করে তিনি ভর্তি হন গুরুচরণ কলেজে। উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যমত্ম পড়াশোনা করেন এই কলেজে। এ-সময় তাঁর মধ্যে বহুমুখী প্রতিভার সম্মিলন লক্ষ করা যায়। ভালো তবলা বাজাতে পারতেন। ছিলেন দক্ষ অভিনেতা। কলেজে অধ্যয়নকালীন রাজা কা বাজা নাটকে তাঁর অভিনয় আজো ভুলতে পারেননি শ্রোতারা। কলেজের প্রতিটি বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। লিখতেন 888sport app download apk। গুরুচরণ কলেজের পাঠ চুকিয়ে তুলনামূলক 888sport live footballের ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। শহর কলকাতার সঙ্গে গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠতা। পড়ার পাশাপাশি যখন গড়ে তুললেন গানের দল এবং নিজেকে উজাড় করে দিয়ে পেতে থাকলেন প্রতিষ্ঠা, নজরে এলেন নগরের মানুষের। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে এবং দোহারকে। এ-কথা স্বীকার করতে কারো দ্বিধা হবে না, ‘সারেগামাপা’র মঞ্চ তাঁর এই অভিযাত্রাকে সম্প্রসারিত করতে ভূমিকা রেখেছে। এই মাধ্যমটি বাঙালির ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয় তাঁর সুর ও বাণী। বিশেষ করে প্রতিটি লোকগানের উৎস, স্রষ্টা এবং পরিপ্রেক্ষিত বর্ণনা করে গানকে তিনি আরো উপভোগ্য ও নান্দনিক করে তুলতেন। পঁচিশ রকম লোক বাদ্যযন্ত্র ও পঁয়ত্রিশ রকমের লোকসংগীত পদ্ধতি তিনি প্রয়োগ করেন দলীয় সংগীতে। তাঁর মতো প্যাশন নিয়ে লোকগানকে শ্রম্নতিমধুর করার গুণ বা কৌশল সমকালে ঠিক এভাবে আর কেউ দেখাতে পারেননি। 888sport appsকে তিনি আপনভূমি মনে করতেন। বলতেন,

এ-দেশটা আমার আরেক সত্তা। আমার সবচেয়ে বড় পরিচয় আমি বাঙালি। একাত্তর সালে আমার জন্ম। জন্মগতভাবে আমি একাত্তরের সমত্মান।

সেই প্রমাণ আমরা পাই তাঁর গানে, ভাবনায় কিংবা জীবনাচারে। 888sport appsের লোকসংগীত নিয়ে তাঁর মতো করে এত কাজ আর কেউ করেছে কিনা বিষয়টি প্রশ্নসাপেক্ষ। অন্য এক উচ্চতায় তিনি আসীন করেছেন বাংলার লোকগানকে। বিশেষ করে বাংলার লোকগানের প্রচার, প্রসার এবং বিকৃতি রোধে তিনি ছিলেন বদ্ধপরিকর। বিকৃতিকে তিনি মনেপ্রাণে ঘৃণা করতেন। সুযোগ পেলে তুলে ধরতেন কোন গান কীভাবে বিকৃত হয়েছে তা। পরিবেশনা এবং আঙ্গিক নিয়ে নিয়মিতই চালাতেন নিরীক্ষা। গানের প্রতি গভীর মনোযোগ এবং ব্যাপক অনুসন্ধানের কারণেই কালিকাপ্রসাদ স্বাচ্ছন্দ্যে করতে পারতেন এটা। সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা এবং সাত সুরের সাধনা ঠিক কীভাবে করতে হয় তাঁর কাছ থেকেই সেই পাঠ নিতে পারেন সংশিস্নষ্টরা।

মানুষ নিজেকে অতিক্রম করে যখন প্রতিষ্ঠা লাভ করে, তখন সাংগঠনিক পরিচয় গৌণ হয়ে যায়। তার পরিচয়েই পরিচিত হয় সংগঠন কিংবা দল। কেউ নিজেকে পরিণত করেন ইনস্টিটিউশনে। কালিকার বেলাতেও ঘটেছে তেমনটি। তবে শুধু দোহার দলের প্রাণপুরুষ হিসেবে কালিকার পরিচয় দিতে অনাগ্রহী লোকসংস্কৃতি গবেষক অনার্য তাপস, তাঁর মতে, এতে কালিকার গুরুত্বকে খর্ব করা হয়। তিনি তাঁকে বাংলা ‘লোকগানের নক্ষত্র’ আখ্যা দিয়ে বলেন :

লোকসংগীত শুধু একধরনের গানই নয়। এটি একটি জনপদের; কিছু মানুষের দর্শনও বটে। কালিকাপ্রসাদ সেসব গানের চর্চার মাধ্যমে লোকায়ত বাংলার সহজিয়া ঘরানার দর্শনের চর্চা করতেন।… আসাম থেকে পুরুলিয়া, মেদিনীপুর থেকে কোচবিহার মাঝখানে 888sport appsের বৃহত্তর সিলেট, 888sport app-বিক্রমপুরসহ আরো বিসত্মৃত অঞ্চলের লোকগানের ধারা, পরম্পরা, পদকর্তা, তাদের জীবনচর্যার দার্শনিক ভিত্তি তার মাথায় গেঁথে ছিল। সে সঙ্গে তিনি মনে রেখেছিলেন আমত্মর্জাতিকতাকে। কিন্তু বি888sport app download for androidের চিতায় পুড়িয়ে ফেলেননি ‘স্বদেশ প্রেক্ষিত’। সে কারণেই বোধহয় শেখ ভানু, হাছন রাজা, শাহ আবদুল করিম, জালালউদ্দিন খাঁ, রাধারমণ, শীতলং শাহ প্রমুখ লোককবি, সাধক, দার্শনিকের সার্থক উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে ‘দোহার’ ভেবেছিলেন। খুঁজে ফিরেছিলেন নাগরিক পরিম-লে বিকৃতভাবে জনপ্রিয় হওয়া লোকগানের স্বরূপ, স্বকীয়তা আর অবিকৃত সুর ও বাণী।

অনার্য তাপসের কথাই ঠিক। সে-পথেই তিনি ধাবমান ছিলেন সর্বদা। তবে খুব ভালো করে লক্ষ করলে দেখা যাবে, দেশভাগের একটা বিশাল ক্ষত ছিল তাঁর মনে। সুযোগ পেলেই কথায়-গানে তা উলেস্নখ করতেন তিনি। যদিও কালিকাদের পরিবার দেশভাগের অনেক আগেই পাড়ি জমিয়েছিলেন ওপারে। তাঁর পরিবারে দেশভাগের ক্ষত না থাকলেও যাদের সঙ্গে তাঁর ওঠাবসা ছিল, যারা ছিলেন তাঁর খেলার সাথি তাদের প্রায় প্রত্যেক পরিবারই ছিল বিভক্তির শিকার। তাই সেই বেদনা থেকে বিচ্ছিন্ন হতে পারেননি কালিকা, যার প্রমাণ আমরা পাই তাঁর গানে। দেশভাগ নিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এপার বাংলা ওপার বাংলা মধ্যে জলধি নদী।’ এ-গানটি শিলচরের মানুষের অতিপ্রিয় একটি গানে পরিণত হয়েছে। কারণ গানটির সঙ্গে তাদের আবেগ ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। আর সর্বশেষ এ-গানের সঙ্গে সংযোজিত হয়েছে কালিকার বিয়োগব্যথা।

গান তো সবাই গায়, কিন্তু গান নিয়ে ভাবনা আছে, এমন 888sport live chatী কজন আছেন? প্রতিটি বাক্যের গভীরে গিয়ে এর ভাবার্থ তুলে ধরে, গানের জন্মের ইতিহাস উপস্থাপন করে, রচয়িতার নাম উচ্চারণ করে তিনি পালন করেছেন একজন নিষ্ঠাবান সংস্কৃতি-গবেষকের ভূমিকা। তবে ভাববার বিষয় হলো, লোকগানের 888sport live chatী হলেও তাঁর মনোজগতের বড় একটা অংশ জুড়েই ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। কোনোকিছুর উদাহরণ দিতে গেলেই তিনি অনেকটা আবশ্যিকভাবে নিয়ে আসতেন রবীন্দ্রনাথের প্রসঙ্গ। বাউলগানের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সংযোগ তিনি উত্থাপন করতেন দক্ষতার সঙ্গে। তাঁর এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়ার স্বরূপ প্রতিভাত হয়ে ওঠে কবি-গবেষক স্বপন নাথের ভাষ্যে। দৈনিক খোলাকাগজ পত্রিকায় ‘লোকগানের লোকায়ত সুর ও মর্ম’ শীর্ষক নিবন্ধে তিনি উলেস্নখ করেছেন :

লোকায়ত পরিবেশে নির্মিত গান ও সুরকে নিয়ে এসেছেন জনগণের কাছে। বাউলের যে মৌল সুর তাকেই তিনি প্রাধান্য দিয়েছেন। বিশ্বায়নের প্রেক্ষিতে সবাই যখন গানের মৌল কথা, সুর, বিষয়, বক্তব্য পাল্টে দিচ্ছে না-বুঝে। এ-সময়ে কালিকা গানের মৌল তানকেই তুলে ধরেছেন। এজন্য তাঁর ও দোহারের গানে খুঁজে পাওয়া যায় আসল বাউলগান ও গানের গীতিকারকে। বিভিন্ন সময়ে তিনি কথা বলেছেন গণমাধ্যমে। মঞ্চে গান পরিবেশনকালে ফাঁকে ফাঁকে তিনি গান বিষয়ে বক্তব্য রাখতেন, গান বাঁধার ইতিহাস বলতেন, উৎস বলতেন। তার উপস্থাপন এত স্পষ্ট ছিল, তাতে সহজেই দর্শক-শ্রোতা তাঁর বর্ণনায় চলে যেতেন গানের উৎসের দিকে। এর ফলে গীতিকার ও গীতিকার-সংশিস্নষ্ট সময় ও পরিবেশের সঙ্গে দর্শক-শ্রোতার অদৃশ্য মেলবন্ধন তৈরি হতো। গানের মধ্যে আবেশিত হয়ে যেত দর্শক-শ্রোতা, মন-চিমত্মা-ভাবনা।

স্বপন নাথের কথার রেশ ধরে বলতে চাই, পান্থজনের গান গেয়ে তিনি শুধু তাদেরই প্রিয় হয়ে ওঠেননি; নগরের নাগরিকদেরও 888sport apk download apk latest version-ভালোবাসা অর্জন করতে সমর্থ হন। গ্রাম-শহরের ব্যবধান তাঁর সুরের মূর্ছনায় একই সমামত্মরালে চলে আসে। যেমন গাঁয়ের মানুষ, তেমনই শহরের মানুষ মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনতে থাকে তাঁর গাওয়া গান। আর এই ঢেউয়ে লোকগানের প্রতি তৈরি হতে থাকে ভাবাবেগ, যা শ্রোতা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। আর এই আবহের কারণেই ব্যান্ডের 888sport live chatীরাও কিবোর্ডে তোলেন, ‘বন্ধু তর লাইগারে আমার তনু জড় জড়’ কিংবা, ‘বন্ধে মায়া লাগাইছে পিরিতি শিখাইছে দেওয়ানা বানাইছে’ প্রভৃতি গান। প্রকৃত অর্থেই কালিকাপ্রসাদ হয়ে ওঠেন পান্থজনের সংগীতসখা। আর দোহার হয়ে ওঠে তাঁর সহযাত্রী। অনেক ক্ষেত্রেই বিভিন্ন গানের দলের আদর্শচ্যুতি প্রত্যক্ষ করি আমরা; কিন্তু দোহার লক্ষ্যচ্যুত হয়নি কখনো। নামের সার্থকতা বজায় রেখে চলেছে দলটি। দোহারে সাধারণত নতুন গান লেখা ও সুর তৈরি করার রীতি নেই। তবে সময়ের প্রয়োজনে কিংবা কোনো বিশেষ কারণে কলম তুলে নিতেন কালিকা। ‘এপার বাংলা ওপার বাংলা’র পর তিনি লিখলেন শাহবাগের গণজাগরণমঞ্চ নিয়ে ‘শাহবাগ দিচ্ছে ডাক’। গানটি আন্দোলনকারীদের মধ্যে প্রাণসঞ্চার করল। এ-প্রসঙ্গে কালিকাপ্রসাদের বক্তব্য ছিল, ‘একটি আন্দোলনের সঙ্গে সবার সমর্থন থাকবে এমন নয়, আমাদের কাছে মনে হয়েছিল যে, সাম্প্রতিক সময়ে এমন গণজোয়ার আর সংগঠিত হয়নি। এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করতেই গানটি তৈরি করা হয়েছিল। আমাদের মনে হয়েছিল, পুরনো কোনো গান দিয়ে এই আন্দোলনকে বেগবান করা সম্ভব নয়। তাই নতুন কথা লিখেছিলাম।’ মুক্তিযুদ্ধের ছবি ভুবনমাঝির প্রয়োজনে আবারো পদকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। লিখলেন, ‘তোমারই নাম গাই।’ গান লেখায় অনীহা প্রসঙ্গে তাঁর অভিব্যক্তি ছিল, ‘এত এত লোকগান আছে, নতুন করে আর লেখার প্রয়োজন নেই।’ ভাবতে অবাক লাগে, শুধু গায়কির জোরে, উপস্থাপনার নান্দনিকতায় লোকগানকে এমন এক উচ্চতায় আসীন করলেন, যা এতকাল ছিল ভাবনারও অতীত! একাই লড়াই করে লোকগানের 888sport live chatীদের জন্য তৈরি করে নিলেন নগরে স্থায়ী আসন। যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ‘সারেগামাপা’র মঞ্চ। শুধু কি সারেগামাপার মঞ্চ, মেইনস্ট্রিমে এখন চলে এসেছে লোকগান। রাধারমণ এবং শাহ আবদুল করিমের গান এখন প্রায় প্রতিটি অনুষ্ঠানেই গীত হয় আবশ্যিকভাবে। এটা কালিকারই প্রচেষ্টার ফসল।

সংগীতে সতেরো বছরের যাত্রাপথে কালিকা যেভাবে লোকগানকে সমৃদ্ধ করেছেন তা কালের ক্যানভাসে অমলিন হয়ে থাকবে চিরকাল। ‘বন্ধুর দেশে’, ‘বাংলার গান শিকড়ের টান’, ‘রূপসাগরে’, ‘মাটিস্বর’, ‘মাটির কেলস্না’, ‘সহস্র দোতারা’ প্রভৃতি অ্যালবামের মাঝে যেমন কালিকার সুর টিকে থাকবে, তেমনি টিকে থাকবে বিভিন্ন চ্যানেলের আর্কাইভ কিংবা ইউটিউবে। থাকবেন ভুবনমাঝি, মনের মানুষ এবং জাতিস্মর live chat 888sportে। আর থাকবেন গ্রাম থেকে  গ্রামামত্মরে, চা বাগান এবং কয়লাখনি থেকে উদ্ধার করা লোকগানে। এসব গান এবং প্রামিত্মক 888sport live chatীদের সঙ্গই তাঁকে সমৃদ্ধির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছিল। বিস্ময় জাগে, যখন জানতে পারি বছরে প্রায় দেড়শো গানের অনুষ্ঠান করেছেন কালিকা ও তাঁর দল। তখন কালিকাপ্রসাদের অনন্যতা চোখের সামনে ভেসে ওঠে। এসব কারণেই কালিকা হয়ে উঠেছিলেন, ‘এনসাইক্লোপিডিয়া, লাইব্রেরি অব ফোক।’ যার ফলে শুধু সংগীতগুণীরাই নন, বোদ্ধারাও সমীহ করতেন তাঁকে। শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদারের কথায় সে-ইঙ্গিত পাই আমরা। আরম্ভ পত্রিকার বিশেষ 888sport free betয় তিনি ‘দোহার-আমার স্বজন, সুজন’ শীর্ষক 888sport liveে লেখেন –

শেকড় উৎখাত হয়ে পরবাসী হওয়া লোকসমাজের মানুষের লোকগানে কীভাবে ছায়া ফেলে নতুন সমাজকাঠামো এবং পরিবর্তিত জীবনপ্রবাহ, তারও সন্ধান করেছে সে একজন গবেষক হিসেবে। খালেদ চৌধুরী, রণজিৎ সিংহ, রণেন রায়চৌধুরী, হেমাঙ্গ বিশ্বাসরা আমৃত্যু প্রামত্মবাসী মানুষের গান নিয়ে সাধনা করেছেন এক অর্থে প্রামত্মবাসী হয়েই। এটা নিয়ে আমাদের এক সশ্রদ্ধ মুগ্ধতা আছে ঠিকই। কিন্তু এর মাধ্যমে প্রামত্মবাসী মানুষের গান নিয়ে মূলধারার সংগীতচর্চায় সে-অর্থে কোনো অমত্মর্ঘাত ঘটানো যায় না। দোহার এক্ষেত্রে অনন্য।

প্রামত্মবাসী মানুষের গানকে সঙ্গী করে কোনো বৈদ্যুতিক যন্ত্রের অনাকাঙিক্ষত অনুপ্রবেশ ছাড়াই মূলধারার সংস্কৃতির আসরে নিজেদের জোরালো উপস্থিতি ব্যক্ত করেছে তারা। প্রত্যাহবান জানিয়েছে সমাজের ওপরতলার সংস্কৃতির উদ্ধত মিনারকে।

আজ মহানগরীর সংগীতের আসরে নাগরিক স্রষ্টাদের পাশে একই সম্মানে গীত হচ্ছে শাহ আবদুল করিম, রাধারমণ, দ্বিজদাস, মলয়া, দীন ভবানন্দ  থেকে শুরু করে মুকুন্দ তেলির গান। বাণিজ্যিক সংগীতের পরিম-লে এসব মহাজনের গান এবং লোকায়ত বাদ্যযন্ত্রকে একমাত্র নির্ভর করে যে মর্যাদার আসনে নিজেদের অধিষ্ঠিত করেছে দোহার, তা নিঃসন্দেহে শস্নস্নাঘার বিষয়।

সত্যি কথা বলতে কি, বাংলা গানের সর্বাত্মক আকালের সময়েও আমরা যে এখনো স্বপ্ন দেখার সাহস পাই, তার অনেকটাই দোহারের জন্য। সেজন্যই দোহার আমার কাছে ভালোবাসার, 888sport apk download apk latest versionর এবং ভরসার একটি নাম।

শুভপ্রসাদের এই অকপট স্বীকারোক্তিই প্রমাণ করে কালিকা গত দুই দশকে লোকগানকে ঠিক কতটা উচ্চতায় আসীন করেছেন। এ-কথা স্বীকার্য, তিনিও সমাসীন হয়েছেন একইভাবে। কালিকাপ্রসাদ যে-পর্যায়ে পৌঁছেছিলেন, ইচ্ছা করলেই আরাম-আয়েশের জীবন বেছে নিতে পারতেন; কিন্তু না, তিনি সে-পথে অগ্রসর হননি। কঠিনেরে ভালোবেসে সামগ্রিকতার পথে অব্যাহত রেখেছিলেন গানযাত্রা। জি বাংলায় সারেগামাপা অনুষ্ঠান দ্বারা তাঁর প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছিল না। ২৪ ঘণ্টাই যেন লোকগান শুনতে পায় মানুষ, সে-স্বপ্ন দেখতেন তিনি। এজন্য একটি চ্যানেল করার কাজ শুরু করেছিলেন। অনেকদূর এগিয়েও নিয়েছিলেন সে-কাজ। শুরু করেছিলেন রেকর্ডিং। মৃত্যু যেদিন তাঁকে কেড়ে নিল জীবনের কাছ থেকে, সেদিন তিনি ওই চ্যানেলের জন্য গান সংগ্রহ করতে রওনা হয়েছিলেন। ৭ মার্চ বীরভূমের শিউড়িতে অনুষ্ঠান বিকেলে হলেও বেরিয়ে পড়েছিলেন সাতসকালে। কিন্তু পৌঁছতে পারলেন না, তাঁর প্রিয় ডুগডুগিটা, ডপকিটা দুর্ঘটনার কাদায় ডুবে গেল। আর প্রাণটা সেই কাদাজলের সঙ্গে মিশে একাকার হলো মৃত্তিকায়! গানটা সত্যিই ফিরে গেল মাটির দেশে, মৃত্যুটাকে মিথ্যা করে।

এমন মহান 888sport live chatীর পথদুর্ঘটনায় মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি কেউ। তাঁর আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়ে সংস্কৃতিজগতের প্রতিটি মানুষ। কষ্টগাথার প্রকাশ ঘটাতে, 888sport apk download apk latest version জানাতে কবিরা হাতে তুলে নেন কলম। লেখেন 888sport app download apk। শোকমিছিল বের হয়। ছুটি ঘোষণা করা হয় শিলচরে। সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মানে পালন করা হয় তাঁর
শেষকৃত্যানুষ্ঠান। তাঁকে 888sport apk download apk latest version জানাতে শবমিছিলে অংশ নেন মুখ্যমন্ত্রী। গান গেয়েই গানের মানুষকে বিদায় জানায় কলকাতাবাসী। আর শোকে কাতর গানপাগল মানুষ চোখের জলে ভাসায় বুক।

 

তথ্যসূত্র

১. শুভবর্ণ, ‘দোহারের যাত্রা লোকসংগীতকে ঘিরে’, ২৬ অক্টোবর ২০১৩, দৈনিক জনকণ্ঠ, 888sport app।

২. দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা, অনলাইন ভার্সন, ৭ মার্চ ২০১৭, কলকাতা।

৩. মাছুম বিলস্নাহ, ৮ মার্চ, আমাদেরসময়ডটকম, 888sport app।

৪. অনার্য তাপস, ‘লোকগানের নক্ষত্র’, দৈনিক সমকাল, ৯ মার্চ ২০১৭, 888sport app।

৫. স্বপন নাথ, ‘লোকগানের লোকায়ত সুর ও মর্ম’, দৈনিক খোলাকাগজ, ১৪ মার্চ, 888sport app।

৬. সোমেশ্বর অলি, ‘888sport appsের গান গেয়েই যাত্রা, ‘দোহার’ ব্যান্ডের’, ৭ মার্চ ২০১৭, দৈনিক সমকাল, 888sport app।

৭. দেবমাল্য চক্রবর্তী, ‘ভাঙা’ দোহার জুড়বে তো?’, এ বেলা, কলকাতা।

৮. শুভপ্রসাদ নন্দী মজুমদার, ‘দোহার-আমার স্বজন, সুজন’, মাসিক আরম্ভ, অক্টোবর ২০১৫, কলকাতা। r