কেতকী কেশরে কেশপাশ করো সুরভি –
ক্ষীণ কটিতটে গাঁথি লযে পর করবী,
কদম্ব রেণু বিছাইয়া দাও শয়নে
অঞ্জন আঁকো নয়নে ॥
– রবীন্দ্রনাথ
পশুপাখি, কীটপতঙ্গের সৌন্দর্য স্থানভেদে – কারো ঝুঁটিতে, কারো কেশরে, কারো লেজে, কারো পাখায়, কারো পদমূলে। কিন্তু মানুষের সৌন্দর্যের কেন্দ্রবিন্দু মুখমণ্ডলে। এই মুখমণ্ডলের সৌন্দর্যকে উন্নততর ও বিকশিত করে কেশরাশি। কাজলকালো কেশের গর্ভ থেকে পূর্ণচন্দ্রের বিকাশ যেন মুখমণ্ডল।
চোখ-ভ্রু-নাক-ঠোঁট-দাঁত যতই সুন্দর হোক-না-কেন, মাথার ওপরের কৃষ্ণ কেশদাম 888sport promo codeর মুখমণ্ডলের চারপাশে ছড়িয়ে না-থাকলে তার সৌন্দর্য পরিপূর্ণ অনুভূত হয় না। ঘন কালো চুলের মধ্যে সুন্দর মুখের আভা যেন মেঘের আড়াল থেকে উদ্ভাসিত চাঁদের মতোই। কথাসরিৎসাগর শরৎচন্দ্র রেঙ্গুন যেতে জাহাজ থেকে গভীর রাতে সমুদ্রে আঁধারের রূপ দেখেছিলেন, তেমনি কালো কেশে আঁধারের রূপ আছে। সুদীর্ঘ আলুলায়িত কেশে নবনীতের কোমল পেলবতা আছে, সুঘ্রাণের মাদকতা আছে – আছে স্পর্শসুখের অব্যক্ত কোমল অনুভব। তাই সুর-তালের অনুষঙ্গে রবীন্দ্রনাথের গানে পাই :
দাও আকুলিয়া ঘনকালো কেশ,
পরো দেহ ঘেরি মেঘনীল বেশ;
কাজল নয়নে যূথীমালা গলে
এস নীপবনে ছায়াবীথিতলে।
এই কেশের আছে অনেক নাম : চুল, অলক, কচ, কুন্তল, চুলক শিরোজ, শিরসিজ, শিরোরুহ, মূর্ধজ, চিকুর, কৃশলা। এগুলো সবই তৎসম শব্দ। কিন্তু বাংলা একাডেমির ব্যবহারিক বাংলা অভিধানে কেশ শব্দটি আঞ্চলিক বলে নির্দেশ করা হয়েছে। কিন্তু জ্ঞানেন্দ্রমোহন ও হরিচরণের বৃহদায়তন অভিধান বলে, কেশ সংস্কৃত শব্দ। ‘কে’ মানে মাথা বা মস্তক, ‘শ’ মানে শায়িত থাকে যা; অর্থাৎ কেশ মানে চুল – মাথায় যা শুয়ে থাকে। সংস্কৃত চুলক থেকে কিংবা চূড়া থেকে চুল শব্দটির উৎপত্তি। চূড়া > চূড় > চুল। কেশ আর চুল তো বোঝা গেল কিন্তু চুলের 888sport app প্রতিশব্দ অপ্রচলিত হলেও সেগুলোর উৎস সন্ধান করা যাক। শিরোজ = শিরঃ + জ। শির বা মাথায় জন্মে যে।
শিরসিজ = শব্দটির উৎসও একই রকম। শিরসি (মস্তকে) + জ (জন্মে যে)।
শিরোরুহ = শিরস্ (শিরঃ) + রুহ (আরোহণ করা, জন্মানো)। মানে, মাথায় আরোহণ করে বা উঠে আছে যে। তিনটি শব্দই উপপদ তৎপুরুষ সমাস।
অলক = এর গাঠনিক রূপ √অল + অক। অর্থ : যা মুখ অলংকৃত করে, ভঙ্গুর কুন্তল, কুটিলকেশ, চূর্ণকুন্তল। অর্থাৎ ললাট-সীমান্তের চারপাশে বিস্তৃত ক্ষুদ্র কেশগুচ্ছই অলক। মাইকেলের বাক্যমাণিক্যে : অলকে মণির আভা। আর রবীন্দ্রনাথের ভাষায় : অধরে অধর মিলন অলকে অলকে, কোথা পুলকের তুলনা।
কচ = √কচ্ + অ। যা মস্তকে শোভা পায়। শব্দটির প্রয়োগ বর্তমানে বিরল। বিদ্যাপতির কাব্যে ও নবদ্বীপ পরিক্রমায় পাওয়া যায় : কবহু বান্ধয়ে কচ কবহু বিখারি এবং কুঞ্চিত কচ ধৈর্যহরণ। রবীন্দ্রনাথের গানে মুণ্ডিত কেশ বা কেশরহীন অর্থে মিলে বিকচ শব্দটি। তাঁর প্রেমপর্যায়ের ১৪০ সংখ্যক গানে পাই : বিকচ নীপকুঞ্জে নিবিড়তিমিরপুঞ্জে/ কুন্তলফুলগন্ধ আসে অন্তরমন্দিরে/ উন্মদ সমীরে ॥
কুন্তল = কুন্ত + ল। অর্থ : যা কুন্তাকার গ্রহণ করে, কেশ। মধুকবির বর্ণনায় : হারাইলে, মরি, কুন্তলশোভন মণি ফণিনী যেমন। (মেঘনাদবধ)।
চিকুর = এই শব্দটির বহু অর্থের মধ্যে একটি অর্থ কেশ। মধ্যযুগের বাংলা 888sport live footballে বিদ্যাপতির কাব্যে ও ব্রজবুলি ভাষায় শব্দটি পাওয়া যায়। বর্তমানে এর প্রয়োগ বিরল।
মূর্ধজ/ মূর্দ্ধজ = মূর্ধন্ মানে মাথা। মাথায় জন্মে যে অর্থে কেশ।
কৃশলা = কৃশ (সূক্ষ্ম) + লা (গ্রহণ করা) + অ। যে অতি কৃশ বা সূক্ষ্ম দেহ ধারণ করে – এই অর্থে কেশ।
কেশ বা চুলের বহুবচন : চুলের গোছা, কেশগুচ্ছ, কেশদাম, কেশরাশি, চিকুরজাল, কেশজাল ইত্যাদি। কেশের রঙ-ঢঙ-নমুনা, আকার-আকৃতি অনুসারে পূর্বপদে বিশেষণ যুক্ত করা যায় : কোঁকড়াচুল, কোঁকড়ানো চুল, কুঞ্চিত কেশ, তরঙ্গায়িত কেশ, এলোচুল, এলোকেশ, এলানো চুল, কাঁচা চুল, কালো চুল, অপক্ব কেশ, পাকা চুল, পলিত কেশ, শুভ্রকেশ, শে^তকেশ, কাঁচাপাকা চুল, মুণ্ডিত কেশ ইত্যাদি।
আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে, সমাজের সর্বক্ষেত্রে লৈঙ্গিক বৈষম্যের বিরুদ্ধে সচেতন মানুষের অবস্থান হলেও ভাষায় লৈঙ্গিক বৈষম্য বিরুদ্ধে তারা নন। বিশেষত বাংলা ভাষায় এই লৈঙ্গিক বৈষম্য সৌন্দর্যের ধারক। তাই লক্ষ করা যায়, কেশের সৌন্দর্য বর্ণনায় স্ত্রী-লিঙ্গের প্রাধান্য। 888sport promo codeদের লম্বা চুল, কেশবিন্যাস, বিনুনিবন্ধন, কবরীরচনা – এসবের বিবরণ-বর্ণনায় বাংলা ভাষায় যত শীলিত শব্দ আছে তার এক-চতুর্থাংশ শব্দও পুরুষের চুলের বর্ণনায় নেই! বিকচ মস্তক, মুণ্ডিত শির বা টিকিধারী মাথার কি কোনো সৌন্দর্য আছে? হয়তো আছে তবে মাত্রায় ন্যূন। রবীন্দ্রনাথের ঢেউ-খেলানো কাঁধসমান কেশদাম বা নজরুলের বাবরি-দোলানো কালো চুলের মোহনীয় মাধুর্য নিশ্চয়ই আছে। জটাধারী সন্ন্যাসীর পিঙ্গল জটাজালেও আছে ভিন্নমাত্রার সৌন্দর্য। বাংলার সন্তসাধক, বাউলসুফি, সাধুবৈষ্ণব, মোল্লা-পুরোহিত সকলেই ভিন্ন-ভিন্ন স্টাইলে দীর্ঘকেশী, শ্মশ্রুমণ্ডিত, বা জটাধারী; নয় তো মুণ্ডিতমস্তক ও টিকিধারী। অন্তত বাঙালি পুরুষের চুলে এর বেশি বৈচিত্র্য নেই। মাইকেল মধুসূদন থেকে কাজী নজরুল পর্যন্ত বাংলার কবি-লেখকেরা অনেকেই লম্বা চুলের ঐতিহ্য ধারণ করেছেন। রবীন্দ্র-নজরুল তো বাংলার কবিদের দীর্ঘ কেশের ইতিহাসে আইকন। কিন্তু তিরিশের কবি-লেখকেরা এক্ষেত্রে ছিলেন স্বতন্ত্র। বিগত শতকে তিরিশের পঞ্চকবির অন্যতম বুদ্ধদেব বসুর লেখায় এর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। তিনি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার আলোকে দীর্ঘ কেশধারী কবিদের সম্পর্কে লিখেছেন : ‘উনিশ শতকে জন্মালে প্রকৃতির অভিপ্রেত এই অলংকার কবিজনোচিত কুঞ্চিত দীর্ঘতায় সগৌরবে বিলম্বিত করতে পারতুম, কিন্তু এই কাটাছাঁটা বিশশতক কোনো বাহুল্যকেই প্রশ্রয় দেয় না, পুরুষ মানুষের – এমনকি মেয়েদের চুলের পর্যন্ত না।’ (‘সবচেয়ে দুঃখের দু-ঘণ্টা’, পৃ ১৮৯, উত্তর তিরিশ, নিউ এজ পাবলিশার্স লিমিটেড, কলকাতা, ১৯৫২)। কাব্য888sport live footballে লম্বা চুল ধারণের শেষ প্রতিনিধি এদেশে বোধ করি নির্মলেন্দু গুণ। কেশ ও শ্মশ্রুমণ্ডিত চেহারায় তিনি রবীন্দ্রনাথের ছায়াধারী।
বাঙালি পুরুষরা কেশেবেশে সীমিত বৈচিত্র্যের। কিন্তু বাঙালি রমণীরা কেশেবেশে বহুধা বৈচিত্র্যের ধারক। তাদের কেবল কেশের পরিচর্যা ও 888sport live chatিত কেশবিন্যাসের বিষয়টি উদাহরণসহ তুলে ধরলেই তা সুস্পষ্ট হতে পারে। বাঙালি 888sport promo codeর আছে হরেকরকম বিনুনিবিন্যাস ও খোঁপাবাঁধার অসংখ্য 888sport live chatশৈলী। আছে কেশবিন্যাসের বহুবিধ উপাদান এবং সাজসজ্জার উপকরণ। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে এসবে এসেছে বিবর্তন। 888sport promo codeদের কেশবিন্যাস, চুলের সাজসজ্জা ও সৌন্দর্যচর্চায় রূপরূপান্তর এখন বিউটি পার্লার পর্যন্ত। বুদ্ধদেব বসু পুরুষের চুল কাটা ও দাড়ি চাঁছার সঙ্গে 888sport promo codeর কেশবিন্যাসের তুলনা করেছেন অনিন্দ্যসুন্দর ভাষায়। ইচ্ছে হয় তাঁর পুরো লেখাটি উদ্ধৃত করি। তা অসম্ভব বলে, যাঁরা সেটি পড়েননি, পড়তে অনুরোধ করি।
চুম্বক বক্তব্যে বুদ্ধদেব লিখেছেন : ‘একটি মেয়ে যখন স্নানের পর চুল এলিয়ে রোদ্দুরে পিঠ দিয়ে দাঁড়ায়, যখন বিকেলবেলা ঘাড় বেঁকিয়ে বিনুনি করতে-করতে পাইচারি করে, যখন সে দাঁতের ফাঁকে ফিতে চেপে দু-হাত তুলে খোঁপা বাঁধে, আর যখন শান্ত নিভৃত অবসরে চুলের মধ্যে চিরুনি চালাতে-চালাতে গান করে গুনগুন – এই সবগুলি অবস্থাতেই সে সুন্দর, সুন্দরী
না-হলেও সুন্দর, কারণ এই সবগুলি কাজের পিছনেই রয়েছে তার প্রাণের প্রেরণা। চুল বাঁধার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত এমন কোনো ভঙ্গি নেই যা স্বভাব থেকে চ্যুত, জীবনের স্বভাবিক ছন্দ থেকে ভ্রষ্ট। একলা একটি মেয়ে যখন চুল বাঁধে, তাকে ঘিরে থাকে প্রশান্তির পরিমণ্ডল, যখন সে চুল খুলে দিয়ে অনেকক্ষণ ধরে আঁচড়ায়, তখন তার আঙুলের সঙ্গে চিরুনির, চিরুনির সঙ্গে চুলের, এবং চুলের সঙ্গে আঙুলের এমন একটি নিবিড়মধুর সম্পর্ক স্থাপিত হয় যে দেখে মনে হয় সমস্ত বিক্ষোভ, সমস্ত অস্থিরতা অতিক্রম করে সে মেয়ে নিজের মধ্যে একটি পূর্ণতা পেয়েছে। আবার যখন একদল মেয়ে বিকেলের রঙিন রোদ্দুরে বারান্দায় বসে পরস্পরের চুল বেঁধে দেয়, কলহাস্যে, কৌতুকে, কটাক্ষে, গ্রীবার ঘূর্ণনে, বাহুর আন্দোলনে, রোদের হলুদ আর আলতার লালে সমস্তটা মিশিয়ে যেন আনন্দ আর ধরে না। কেননা, চুল বাঁধা তো নিছক একটা নিয়মরক্ষা নয়, ওর ভিতর দিয়ে মেয়েরা নিজেদের ব্যক্ত করে, তাদের সমগ্র জীবনের সঙ্গে ওটা যুক্ত।’ (ওই, পৃ ১৯৮-১৯৯)। সব্যসাচী লেখক বুদ্ধদেব বসুর এমন শৈল্পিক দৃষ্টির সুগভীর অনুধাবন এবং অনিন্দ্যসুন্দর বর্ণনা 888sport promo codeর কেশবিন্যাসের অসামান্য উদাহরণ। এসবকিছুর কথা বাদ দিয়ে কেবল খোঁপার ও বেণীর ইতিকথা বললেই বাঙালি 888sport promo codeর রূপচর্চার স্বরূপ অনুধাবন হয়।
দুই
খোঁপা এসেছে সংস্কৃত ক্ষুপ্ শব্দ থেকে। হিন্দিতে বলা হয় খোংপা। কেউ কেউ মনে করেন খোঁপা শব্দটি সাঁওতালি। কিন্তু আভিধানিকরা তা মনে করেন না। সুকুমার সেন মনে করেন, ক্ষুম্পক > ক্ষুম্প > ক্ষুপ্ > খোঁপ > খোঁপা। এর অর্থ : এঁটেসেঁটে যা রাখা যায় – 888sport promo codeর চুলবাঁধার পদ্ধতিবিশেষ। এই খোঁপারও আছে সুদীর্ঘ ইতিহাস। প্রাচীনকালে বাঙালি কৌমসমাজে এবং আদিবাসী অস্ট্রিক 888sport promo codeদের মধ্যে চুল ও খোঁপা বাঁধার প্রচলন ছিল। এখনো সেই ঐতিহ্য বহমান। চুলের সঙ্গে ফুলের সম্পর্ক মনিকাঞ্চনের মতো। তাই বাঙালির প্রাচীন ইতিহাস থেকে জানা যায়, অস্ট্রিক, দ্রাবিড় ও সাঁওতাল 888sport promo codeরা খোঁপায় ফুল দিয়ে সাজতো। সেই ঐতিহ্য উৎসবে-আনন্দে বাঙালি 888sport promo codeদের মধ্যে এখনো বর্তমান।
ডা. নৃপেন ভৌমিক বাংলার শব্দকথা গ্রন্থের ‘বাঙালির কেশসজ্জা’ অধ্যায়ে বিচিত্রবিধ খোঁপার নাম ও বর্ণনা দিয়েছেন। সেখান থেকে ঋণ করে বলা যায়, বৈদিক যুগের প্রাচীন দুটি খোঁপার নাম – কুরীর ও কুম্ব। কান888sport app খোঁপার নাম, কানোড়ি। মধ্যতালুতে চুড়ো করে বাঁধা খোঁপার নাম শিখণ্ড। তাছাড়া মধ্যযুগে প্রচলিত খোঁপাগুলোর নাম ছিল : লোটন, পান, টালি, অমৃতিপাক, খেজুরছড়ি, এলোকেশী, বিনোদবেণী, জিলিপি, প্রজাপতি ইত্যাদি।
যতীন্দ্রকুমার সেন তাঁর ‘কামিনীকুন্তল’ শীর্ষক রম্যরচনায় সেকালের বিচিত্র খোঁপার সরস বিবরণ দিয়েছেন। তাঁর বর্ণনায় আছে, খোট্টা খোঁপা, তবলার বিড়ার মতো বিড়ে খোঁপা, বেনে খোঁপা, ব্রহ্মচূড়, বৈষ্ণবচূড়, ভৈরবী খোঁপা, খেয়াল খোঁপা, দোলন খোঁপা, সোহাগী খোঁপা, ঢালুয়া খোঁপা, গোলকধাঁধা, স্বামীভোলানো ইত্যাদি। পরবর্তীকালে এদেশে ইংরেজ-আগমন ও 888sport promo codeদের ইংরেজি শিক্ষার ছাপ লেগে আছে খোঁপার নামের মধ্যে। যেমন : ডায়মন্ড কাঁটা, ফিরিঙ্গি খোঁপা, টায়রা খোঁপা, অ্যারোপ্লেন খোঁপা, তোপ খোঁপা, ম্যাট্রিকুলেশন খোঁপা, বিএ-পাশ খোঁপা ইত্যাদি। শিক্ষার মানের সঙ্গে খোঁপার সাদৃশ্যও এখানে বিদ্যমান।
খোঁপার মতো বেণীও লম্বা চুলো 888sport promo codeর কেশবিন্যাসের অন্যতম মাধ্যম ও সৌন্দর্যের নিদর্শন। বেণীর অপর নাম বিনুনি। বিনুনিরও আছে বিচিত্র ভঙ্গিমা। একটি লোকগানে আছে : ‘আমার যেমন বেণী তেমনি রবে/ চুল ভিজাবো না।/ চুল ভিজাবো না আমি বেণী ভিজাবো না।’ নজরুলের গানে পাই : ‘সই, ভাল করে বিনোদ বেণী বাঁধিয়া দে/ বঁধু যেন বাঁধা থাকে বিনুনি-ফাঁদে।’ বেণী ও বিনুনি সমার্থক। তবে বেণী তৎসম শব্দ কিন্তু বিনুনি তদ্ভব। √বেণ্ + ঈ = বেণী। এর অর্থ : বিরহিণী বা প্রোষিতভর্তৃকার বদ্ধ কেশ। 888sport app download apk বা গানের চিত্রকল্পে খোঁপা কারাগার ও বেণী ফাঁদের মতো – যাতে প্রেমিকের মনপাখি আবদ্ধ হয়। নজরুলের এমন আরো অনেক গানে চমৎকার চিত্রকল্পের বর্ণনা আছে।
তৎসম শব্দ বেণীবন্ধন থেকে সম্ভবত বিনুনি শব্দের উৎপত্তি – বেণী + উনি = বেনুনি > বিনুনি। বেণী বা বিনুনি করতে চুলের একাধিক গুচি লাগে। তিন থেকে সাত গুচি দিয়ে বিনুনি করতে হয়। বেশি গুচির বেণী সূক্ষ্ম ও অধিক সুন্দর। ঘাড়ের ওপর বাঁধা বেণীর গোলাকার রূপকে বলা হয় কবরী। মধ্যযুগের অন্নদামঙ্গলে আছে : কার বেণী কার খোঁপা কার এলোচুল। কবি ভারতচন্দ্র রায়গুণাকরের রচনায় বেণীর শৈল্পিক উপমা ও চিত্রকল্প পাঠকচিত্তকে বিমোহিত করে : ‘বিননিয়া বিনোদিনী বেণীর শোভায়/ সাপিনী তাপিনী তাপে বিবরে লুকায়।’ দোলায়িত বেণীর আঁকাবাঁকা গতির সৌন্দর্য দেখে জীবন্ত সাপও যেন লজ্জায় গর্তে লুকিয়ে যায়। রবি গুহমজুমদারের লেখা এবং শচীন দেববর্মণের কণ্ঠে গাওয়া প্রায় সমধর্মী চিত্রকল্পের একটি আধুনিক গান আছে : ‘তোমার সাপের বেণী দোলে না/ দোলে না হাওয়ার বাঁশি শুনে।’
বাংলা 888sport live footballের মধ্যযুগের কবি বড়ু চণ্ডীদাস থেকে বৈষ্ণব কবিকুলের রচনায় এসেছে কেশবিন্যাসের কথা। মঙ্গলকাব্য থেকে রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যানে আছে কৃষ্ণকেশের সৌন্দর্যবর্ণন। আলাওলসহ সেকালের সকল প্রধান কবির রচনাতে নায়িকার রূপবর্ণনায় আছে কুন্তলচর্চার প্রসঙ্গ।
বাংলা 888sport live footballের প্রথম নিদর্শন চর্যাপদ সান্ধ্যভাষায় রচিত রূপকধর্মী ভাবসংগীত হলেও তাতে রমণীর খোঁপা রচনা ও ফুলগোঁজার চিত্রকল্প আছে। বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের বিভিন্ন খণ্ডে শ্রীমতি রাধিকার সৌন্দর্যচর্চায় চুলের প্রসঙ্গ বহুবার এসেছে। চকিত অবলোকনে কয়েকটি উদাহরণ :
* চূড়ী বান্ধ আউলায়্যা কবরী। (বড়ু চণ্ডীদাস)
* লাবণ্য হল তোর সিহাল কুন্তল। (ছত্রখণ্ড)
* ময়ূর পুঁছে বান্ধিআঁ/ তাত কুসুমের মালা। (বাণখণ্ড)
* নীল জলদসম কুন্তলভারয়া।
* বেকএ বিজুলী শোভে চাপকমালা। (দানখণ্ড)
বড়ু চণ্ডীদাসের শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে চুলের বর্ণনা ও কেশপরিচর্যার এমন আরো বাক্যমাণিক্য মেলে – খোঁপায় দোলঙ্গের মালা বা সেখানে শোভা পায় চম্পকফুল। শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের বংশী খণ্ডে বেশি পাওয়া যায় রাধা ও কৃষ্ণের চুলের শৈল্পিক বিবরণ। সেখান থেকে কয়েকটি উদ্ধৃতি :
* কাল কাহ্নাঞিঁ চাঁচর কেশে কুসুম শোভিত মাথে।
* পরএ মগর খাড়ুমাথে ঘোড়া চুল।
* মুণ্ডিআঁ পেলাইবোঁ কেশ জাইবোঁ সাগর।
যোগিনী রূপ ধরী লইবোঁ দেশান্তর ॥
* কাল কাহ্নাঞিঁ মাথাতে ঘোড়াচুলে।
এঁহি চিহ্নে কাহ্নঞিঁকে চাইহ গোকুলে ॥
* ময়ূরপুছে বান্ধি চূড়া কেশপাশে দিআঁ বেঢ়া
কনয়া কুসুমে বান্ধি জটা।
* পাকিল দাঢ়ী মাথার কেশ।
চৈতন্যপূর্ব ও চৈতন্য-উত্তরকালের বৈষ্ণব পদাবলিতেও
মেলে রাধাকৃষ্ণের কেশের সৌন্দর্যবর্ণন এবং কেশপরিচর্যার বিবরণ। বিশেষত বিদ্যাপতি, চণ্ডীদাস, জ্ঞানদাস ও গোবিন্দদাসের পদাবলিতে রাধাকৃষ্ণের চুলের সৌন্দর্যের বর্ণনার মাধ্যমে সূচিত হয়েছে দেহরূপের সংকীর্তন। এখানে বৈষ্ণব পদাবলি থেকে চয়িত হলো কেশসম্পর্কিত কয়েকটি উজ্জ্বল পঙ্ক্তি :
* বাসিত ফুলেঁ রাধা বান্ধসি কেশ। (বড়ু চণ্ডীদাস)
* কেশ নিঙারিতে বহে জলধারা।
চামরে গলয়ে যেন মোতিমহারা ॥
অলকহিঁ তীতল তহিঁ অতিশোভা। (বিদ্যাপতি)
* বেদী বনাওব আপন অঙ্কমে
ঝাড়ু করব তাহে চিকুর বিছানে। (ওই)
* খসত বসন রসন চোলি/ গলিত বেণি লোলনি। (ওই)
* সিনিয়া উঠিতে নিতম্বতটিতে/ পড়েছে চিকুররাশি। (চণ্ডীদাস)
* কুন্দকুসুমে ভরু কবরিক ভার।
হৃদয়ে বিরাজিত মোতিম হার ॥ (গোবিন্দদাস)
* কাল কেশ এলাইয়া বেশ নাহি করি।
কাল অঞ্জন আমি নয়নে না পরি ॥ (চণ্ডীদাস)
* খসাইয়া বেণী ফুলের গাঁথনী/ দেখয়ে খসায়ে চুলি।
হসিত বয়ানে চাহে মেঘপানে/ কি কহে দুহাত তুলি ॥ (ওই)
* চিকুর ফুরিছে বসন উড়িছে/ পুলক যৌবনভার।
(জ্ঞানদাস)
* শিরে দেয় গুঞ্জাফুলগুচ্ছ। (বলরামদাস)।
* কানড় ছন্দে কবরী বান্ধে/নব মল্লিকার ফুলো।। (গোপালদাস)
* মুকুর আঁচারি রাই বান্ধে কেশভার। (যশোরাজ খান)।
মধ্যযুগীয় ভাষার জন্য এসব উদ্ধৃতিতেও কুন্তলদামের শোভা সুস্পষ্ট নয় সাধারণ পাঠকের কাছে। তা কিছুটা বোঝা যায় বিদ্যাপতি ও চণ্ডীদাসের দুটি গীতি888sport app download apkয়। এ দুটির ভাবানুবাদ করেছেন গোলাম মুরশিদ। বিদ্যাপতির ভাবানুবাদে তিনি লিখেছেন : ‘এলোচুল ছড়িয়ে পড়লো নিতম্বতটিতে। বিন্দু বিন্দু জল ঝরছিল সেই সিক্ত কেশরাশি থেকে। কৃষ্ণের বোধ হলো যেন পুনরায় বেণীবদ্ধ হওয়ার আশঙ্কায় তারা কাঁদছিল।’ (বৈষ্ণব পদাবলী প্রবেশক, পৃ ৫৮)। চণ্ডীদাসের পদের ভাবানুবাদটি এরকম : ‘রাধিকার মুখমণ্ডল চন্দ্রের মতো তো বটেই, এমনকি তার চেয়েও বেশি সুন্দর। পেছনের ঘন মেঘের মতো কেশরাশি এবং দেহের নীলাম্বরের পটভূমিকায় সে মুখমণ্ডল বিদ্যুৎ-লতার মতোই মনে হয়। তড়িৎ-শিখাসদৃশ তাঁর এই রূপ এবং কৃষ্ণচিকুরও নীলাম্বরের পরস্পরবিরোধী বর্ণ চোখ-ধাঁধানো।’ (ওই, পৃ ৪৯)।
কুচবরণ কন্যারে তার মেঘবরণ চুল – এই চিরকালীন চিত্রকল্প প্রাচীনকাল থেকে বাঙালি কবিদের বিমোহিত করেছে। তাই লক্ষ করা যায়, মৈমনসিং গীতিকার নায়িকা মহুয়া মলুয়া কমলা, রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যানের পদ্মাবতী লাইলি শিরি, মনসামঙ্গলের বেহুলার মতো মধ্যযুগের কিংবদন্তি নায়িকাদের চুলের সৌন্দর্য বর্ণনায় কবিরা পঞ্চমুখ। কয়েকটি উদ্ধৃতির বিচয়ন :
* আজানু লম্বিত কেশ কস্তুরী সৌরভ।
মহাঅন্ধকারময় দৃষ্টি পরাভর ॥
তার মধ্যে সীমন্ত খড়্গরে ধার জিনি।
বলাহক মধ্যে যেন স্থির সৌদামিনী॥
স্বর্গ হন্তে আসিতে যাইতে মনোরথ।
সৃজিল অরণ্য মাঝে মহাসূক্ষ্ম পথ ॥
(পদ্মাবতী, আলাওল)
* শ্রাবণ মাসেতে যেন কালো মেঘ সাজে।
দাগল-দিঘল কেশ বায়েতে বিরাজে ॥
কখন খোঁপা বান্ধে কন্যা কখন বান্ধে বেনি।
কূপে রঙ্গে সাজে কন্যা মদনমোহিনী ॥
(কমলা, দ্বিজ ঈশান)
* হাট্টীয়া না যাইতে কইন্যার পায়ে পড়ে চুল।
মুখেতে ফুইট্টা উঠে কনক চাম্পার ফুল ॥
(মহুয়া, মৈমনসিং গীতিকা)।
আলাওলের পদ্মাবতীর পাশাপাশি 888sport app বাংলার রোমান্টিক প্রণয়োপাখ্যানেও পাওয়া যায় 888sport promo codeকুন্তলের মনোহর বর্ণনা। তিনটি অনিবার্য উদ্ধৃতি :
* ঘন-চয়-রূচিকেশ শিরেত শোভন।
প্রভা ছাড়ি ভানু যেন তিমির শরণ ॥
(দৌলত কাজী, সতী ময়না ও লোর চন্দ্রানী)
* মোহাম্মদ কবীরে কহে মালত মাধুরী।
গুন্থিয়া মালতী পুষ্প দিঅ কেশজড়ি ॥
(মুহম্মদ কবীর, মধুমালতী)
* চতুর্দিকে মুক্তা ধাইছে আউদল কেশ। (ওই)
888sport promo codeর সৌন্দর্যের আধার সুদীর্ঘ চুল। এমন আজানুলম্বিত কেশের বর্ণনা পাওয়া যায় মনসামঙ্গলের নায়িকা বেহুলার মোহনীয় রূপে। বাসরঘরে বেহুলা নাকি তার খোলা লম্বা চুল পালঙ্কের পাশে ঝুলিয়ে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিল। সেই চুল বেয়ে কালসাপ বিছানায় উঠে লক্ষিন্দরকে দংশন করে। সেই থেকে বাঙালি 888sport promo codeদের মধ্যে সংস্কার যে, খোলাচুলে ঘুমাতে নেই!
তিন
বাংলা 888sport live football ও সংগীত-সাম্রাজ্যের দুই মহান গীতিকার রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল ইসলাম। তাঁদের সংগীত, বিশেষত
বর্ষা-বসন্ত ও প্রেমের গানে 888sport promo codeর কেশ বহুমাত্রিক উপমা-উৎপ্রেক্ষায়, রূপক-চিত্রকল্পে বিধৃত হয়েছে। 888sport promo codeকেশের স্বরূপ গদ্য ও 888sport app download apkর চেয়ে তাঁদের সংগীত888sport live chatেই সমাধিক চিত্রিত। উদ্ধৃতি-কণ্টকিত না-করে রবীন্দ্র-নজরুলের প্রচলিত ও বহুশ্রুত গান ও 888sport app download apk থেকে কয়েকটি উদাহরণ চয়ন করা যায় :
রবীন্দ্রনাথ থেকে –
* ঝাঁকড়া চুলের মেয়ের কথা কাউকে বলিনি,
কোন দেশে যে চলে গেছে সে চঞ্চলিনী। (‘ঝাঁকড়া চুল’)
* কেশ এলাইয়া, ফুল কুড়াইয়া,
রামধনু-আঁকা পাখা উড়াইয়া,
রবির কিরণে হাসি ছড়াইয়া দিব রে পরান ঢালি।
(‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ’)
* দাও আকুলিয়া ঘন কালো কেশ
পরো দেহ ঘেরি মেঘনীল বেশ … (বর্ষা, ৭৯নং গান)
* ঘোমটা মাথায় ছিল না তার মোটে
মুক্তবেণী পিঠের ’পরে লোটে। (বিচিত্র, ৭৫নং গান)
* আমার লতার একটি মুকুল/ ভুলিয়া তুলিয়া রেখো –
তোমার, অলকবন্ধনে। (প্রেম, ৩৪নং গান)
* ঘন কালো তব কুঞ্চিত কেশে যূথীর মালা। (ওই, ৩৯)
* ওই তো মালতী ঝরে পড়ে যায় মোর আঙিনায়,
শিথিল কবরী সাজাতে তোমার লও-না তুলে ॥ (ওই, ৪৪)
* অমল শরত-শীতল-সমীর বহিছে তোমার কেশে,… (ওই, ৫৩)
* যেন রে সেই উড়ে-পড়া এলো কেশের স্পর্শ। (‘গ্রীষ্ম’, ১৯)
* তব পিঙ্গল জটা হানিছে দীপ্ত ছটা,… (ওই, ২২)
* কেতকীকেশরে কেশপাশ করো সুরভি,
ক্ষীণ কটিতটে গাঁথি লয়ে পরো করবী ॥ (‘বর্ষা’, ২৭)
* মোতিম হারে বেশ বনা দে, সীঁথি লগা দে ভালে।
উরহি বিলুণ্ঠিত লোল চিকুর মম বাঁধহ চম্পকমালে। (ওই, ৩১)
* বৃষ্টি আসে মুক্তকেশে আঁচলখানি দোলে ॥ (ওই, ৬৩)
* আজি পল্লিবালিকা অলকগুচ্ছ সাজালো
বকুলফুলের দুলে,.. (ওই, ১১০)।
নজরুল থেকে –
* মোর প্রিয়া হবে এসো রানি দেব খোঁপায় তারার ফুল…
বিজলী জরীন ফিতায় বাঁধিব মেঘরঙ এলো চুল ॥
* সাঁঝ হেরে মুখ চাঁদমুকুরে/ ছায়াপথ-সিঁথি রচি’ চিকুরে,
নাচে ছায়া-নটী কাননপুরে/ দুলে লটপট লতা-কবরী।
(বুলবুল, ৩নং গান)
* বন-ফুল-আভরণ খুলিয়া ফেলিয়া
আলুথালু এলোকেশ গগনে মিলিয়া…।
(১নং গান, গীতি-শতদল)
* আকাশ-ছাওয়া চোখের চাওয়া উতল হাওয়া কেশের বাসে। (৬নং গান, বুলবুল)
* উড়িছে অলক কার অলকার ঝরোকায়। (৬৭নং গান, নজরুল-গীতিকা)
* মেঘে মেঘে এলোচুলে আকাশ গিয়েছে ভরে। (ঠুংরী, নজরুল-গীতিকা)
* পাগলী মেয়ে এলোকেশী/ নিশীথিনীর দুলিয়ে কেশ,
নেচে বেড়ায় দিনের চিতায়/ লীলার যে তার নেই গো শেষ।। (শ্যামাসংগীত)
* আমি ধূর্জটি, আমি এলোকেশে ঝড় অকাল বৈশাখীর!
…আমি বন্ধন-হারা কুমারীর বেণী, তন্বী-নয়নে বহ্নি,…
(‘বিদ্রোহী’)
নজরুল প্রিয়ার খোঁপাটিতে শুধু দোপাটি ফুল দিয়ে সাজিয়েই ক্ষান্ত হননি – সুসজ্জিত কবরী খুলতেও আবদার করেছেন। উর্দু-আরবি ও ফারসি শব্দের সমন্বয়ে রচিত একটি গানে কবি বলেছেন : ‘আলগা করো গো খোঁপার বাঁধন/ দিল ওহি মেরা ফঁস গায়ি/ বিনোদ বেণীর জরীন ফিতায়/ আন্ধা ইশক্ মেরা কস্ গায়ি।/ তোমার কেশের গন্ধে কখন/ লুকায়ে আসিল আমার লোভী মন/ বেহুঁশ হো র্ক র্গি পড়ি হাথ মে/ বাজুবন্দ মে বস্ গায়ি।।’ তাছাড়াও প্রসঙ্গত মনে পড়ে নজরুলের ব্যথার দান গল্পগ্রন্থের খোঁপা-সম্পর্কিত উৎসর্গপত্রটির কথা। তাতে তিনি লিখেছেন : ‘মানসী আমার!/ মাথার কাঁটা নিয়েছিলুম বলে/ ক্ষমা করনি,/ তাই বুকের কাঁটা দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করলুম।’
রবীন্দ্র-নজরুলের গান-888sport app download apk থেকে এমন শত শত উদাহরণ উদ্ধার করা যায়, যাতে কেশের সৌন্দর্য বর্ণিত হয়েছে। উপমা, উৎপ্রেক্ষা, যমক, চিত্রকল্প, তুলনা-প্রতিতুলনা, নরত্বারোপ ইত্যাদি কাব্যালংকারে পরিপূর্ণ তাঁদের গীতি888sport app download apkর ভুবন। এই দুই সংগীত-রাজাধিরাজের গান যেমন বাণীপ্রধান তেমনি কাব্যিক, গীতল ও চিত্রল। রবীন্দ্র-নজরুলের গানের বাণী যেমন ‘চিত্ররূপময়’ তেমনই অলংকারসজ্জিত – গয়নাগাটিতে ভরা। তাই আবদুল মান্নান সৈয়দের মোক্ষম মন্তব্য : ‘বাংলা গানের দুই আকাশপরশী মিনার রবীন্দ্র-সংগীত ও নজরুলগীতি। … রবীন্দ্রনাথের কোনো কোনো 888sport app download apk-গানের পঙ্ক্তি
নজরুল-গীতির ভিতরে চলে এসেছে; কিন্তু তা সবসময়ই নজরুল-রীতির ভিতরে সমন্বিত।’ (শ্রেষ্ঠ 888sport live, পৃ ১৫৮, মুক্তধারা)।
চার
কেবল বাংলা 888sport live footballে নয়; সমগ্র বিশ্ব888sport live footballেই, প্রধানত 888sport app download apkয়, প্রাচীনকাল থেকেই 888sport promo codeর সুদীর্ঘ কেশের বর্ণনা-বন্দনা ও অভিনন্দিত করার কথা জানা যায়। সংস্কৃত ও বাংলা কাব্যে রমণীর রূপে যেমন চারুকেশী ও মুক্তকেশীদের দাপট তেমনই আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ 888sport promo codeদের কুঞ্চিত কেশের আছে বিচিত্রবিধ বেণীর বিভা। গড়ন যেমনই হোক, ঘন কালো লম্বিত চুল যখন মুখমণ্ডলের চারপাশ ঘিরে থাকে তখন মনে হয়, মেঘচিড়ে যেন শারদচন্দ্রিমা বিকশিত হচ্ছে! বাংলা ও বিদেশি 888sport app download apkয় এই রূপের কোনো মৌলিক পার্থক্য নেই। 888sport app download apk latest version ও ভাবানুবাদে পাশ্চাত্যের দুয়েকটি 888sport app download apkর আংশিক উদাহরণ দিই :
* তোমার চুলের বর্ণনায় কাটাতে পারি তামাম জীবন
আঁকতে পারি একএকটির নিবিড় সুন্দরতা
অন্য প্রেমিক অন্য চোখে দেখে নেয় ভালোবাসার মুখ,
তোমার চুলের বিন্যাসে আমি পাই আমার মুগ্ধতা।
ইতালিতে তোমার নাম ওরা রেখেছে মেডুসা,
রাগিণীর মতো আউলানো চূর্ণকুন্তল
আমি বলি তরঙ্গময়ী; আমার হৃদয়
খুলতে জানে সে-চুলের তাবৎ আগল।
(পাবলো নেরুদা, 888sport app download apk latest version : আনন্দময়ী মজুমদার)
পাপবিদ্ধ জীবন ও জীবনের সর্ববিধ পঙ্কিলতাকে যিনি 888sport app download apkয় রূপায়ণ করে বিশ্ব888sport live footballে অমর হয়ে আছেন তিনি ফরাসি কবি শার্ল বোদলেয়ার। বুদ্ধদেব বসুর ভাষায় তাঁর 888sport app download apk ক্লেদজ কুসুম। এই বোদলেয়ারের চুল-সম্পর্কিত 888sport app download apkর অংশবিশেষ এরকম :
অনেক, অনেকক্ষণ ধরে তোমার চুলের গন্ধ
টেনে নিতে দাও আমার নিঃশ্বাসের সঙ্গে;
আমার সমস্ত মুখ ডুবিয়ে রাখতে দাও তার গভীরতায়
ঝরনার জলে তৃষ্ণার্তের মতো;
সুগন্ধি রুমালের মতো তা নাড়তে দাও হাত দিয়ে
যাতে 888sport sign up bonusগুলো ঝরে পড়ে হাওয়ায়।
(888sport app download apk latest version : বুদ্ধদেব বসু)
সুন্দর স্বর্ণাভ ওই কেশগুচ্ছ নয়,/ নয় ও ললাটপট, মহিমা যাহার
অপরূপ, নয় ওই ভ্রƒধনু-বাহার/ দু’ চোখের, শত চোখ দেখায় তন্ময়।
[‘সুন্দর স্বর্ণাভ ওই’, ফরাসি কবি কোয়াশ্যাঁ দ্যু বেলে (১৫২৫-১৫৬০), 888sport app download apk latest version : অরুণ মিত্র]
পাঁচ
মধ্যযুগের বৈষ্ণব কবিদের বিরহিণী রাধিকার রূপটি ঐতিহ্যের রূপায়ণের মাধ্যমে চলে এসেছে বাংলার লোককবি ও বাউলদের গানে। তাই রাধারমণ দত্তের গানে পাই : ‘আগে যদি জানতাম বন্ধু, যাইবা রে ছাড়িয়া/ দুই চরণ বান্ধিয়া রাখতাম মাথার কেশ দিয়া।’ লোকসংগীত ও বাউলগানে বাংলার বিরহী 888sport promo codeর এমন অসংখ্য উদাহরণ পাওয়া যায়। সেসব গানে কেশবতী কন্যার রূপমাধুরী অলভ্য নয়। কিন্তু রবীন্দ্র-নজরুলোত্তর 888sport app download apkয় কি তা খুব সহজলভ্য? এর জবাবে একলহমায় জীবনানন্দ দাশের কথা মনে পড়বে। মনে পড়বে তাঁর বনলতা সেনের কথা। বহু উদ্ধৃত, অসংখ্যবার উচ্চারিত, কাব্যামোদীদের কাছে প্রায় আপ্তবাক্যের মতো সেই হীরককণা পঙ্ক্তি : ‘চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা।’ মনে পড়বে, আল মাহমুদের চুলখোলা আয়েশা আক্তার-এর কথাও। তবে বুদ্ধদেব বসুর ভিন্ন মেজাজের একটা চমৎকার 888sport app download apk আছে চুল নিয়ে। ছোট্ট অথচ সুগভীর আবেদনময় 888sport app download apkটির অংশবিশেষ এরকম :
তুমি যখন চুল খুলে দাও, ভয়ে আমি কাঁপি।
তুমি যখন চুল খুলে দাও,
ভেসে আসে তোমার চুলের গন্ধ,
গুনগুন করে গান করো তুমি,
ভয়ে আমার বুক কাঁপে।
প্রেমিকার আলুলায়িত কেশের প্রতি অনুরাগের পরিবর্তে কবির এই ভীতির হেতু কী, উৎস কোথায়? কবি কি এই 888sport promo codeরূপের মধ্যে পুরাণের আদ্যাশক্তির স্বরূপ উপলব্ধি করেছেন? অসুরবিনাশিনী যে শক্তিরূপের বিধ্বংসী ছায়া পরিলক্ষিত হয় পৌরাণিক 888sport promo codeর এলোকেশী চণ্ডরূপে তা-ই যেন কবি চেতনালোকে প্রত্যক্ষ করেছেন। কেননা, বেণী বা খোঁপাবদ্ধ কেশে আছে মোহময় কমনীয়তা; কিন্তু খোলাচুলে রণরঙ্গিণী রূপ। চণ্ডী দুর্গা কালী এই অসুরবিনাশিনী রূপেরই শক্তিমন্ত আধার।
এবার 888sport appsের পঞ্চাশ ষাট ও সত্তরের দশকের প্রধান কবিদের 888sport app download apkয় চুল ও খোঁপার প্রতীকী বর্ণনা উপস্থাপন করা যেতে পারে :
* বিস্রস্ত আকুল দেহে মেঘপ্রায় তুমি মুক্তকেশা।
(সৈয়দ আলী আহসান, কাব্যসমগ্র, পৃ ৪৯, লালন প্রকাশনী, 888sport app)
* আকাশ সাঁওতাল যুবতীর মতো মেঘনম্র খোঁপা
বাঁধলে তোমাকে খুব কাছে পেতে ভারি সাধ হয়।
(শামসুর রাহমান, ‘তোমার মুখশ্রী আজ’, ইচ্ছে হয় একটু দাঁড়াই)
* স্নান সেরে এলে কুন্তলধারা/ ঝরতো একদা গুরু নিতম্ব ’পরে।
(শামসুর রাহমান, ‘মিশ্ররাগ’, বিধ্বস্ত নীলিমা)
* তারপর তুমি এলে এলোচুলের
সোনালি বিস্তার নিয়ে আমার কামরায়।
(শহীদ কাদরী, ‘শীতরাত্রির স্বপ্ন’, আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও, অবসর, 888sport app)
* সভাপতি কামরুলের
রূপালি চুলের ঢল মিশে গেছে সেই অশ্রুজলে।
(সৈয়দ শামসুল হক, ‘আমিও তো যাবো’, ইউপিএল নির্বাচিত 888sport appsের 888sport app download apk ১৯৯৯)
* এলোচুল জানালায় বিমূঢ় দৃষ্টির তীব্র দাহ …
(মোহাম্মদ রফিক, ‘জন্ম’, ত্রয়ী, ঐতিহ্য)
* বুঝি তাই কৈশোরেই কালো চুলে দৃশ্যমান
ইঁদুরের ক্ষুদ্র তীক্ষ্ন দাঁতের সমান কিছু বরফের কুঁচি :
অকাল জরার আশীর্বাদ!
(দিলওয়ার, ‘খেলা’, রক্তে আমার অনাদি অস্থি)
* এখনো হয়নি পড়া তোমার যুগল ভুরু, সূক্ষ্ম তিল
একগুচ্ছ চুলের বানান।
(মহাদেব সাহা, ‘তোমার বর্ণনা’, নির্বাচিত ৩০০ 888sport app download apk)
* যেখানে আমরা গিয়েছিলাম/ সেখানে জল মাটির চেয়ে বেশি,
মানুষ কেন, পাখিও নেই,/ তুমিই ছিলে একলা এলোকেশী।
(নির্মলেন্দু গুণ, ফেসবুক থেকে)
* এদের চুলের নিচে, শুভ্র ঘাড়ে, সমুদ্রের গন্ধ।
(সিকদার আমিনুল হক, ‘বর্ষণের রাত্রি ও কামসূত্র’, মনজুরে মওলা-সম্পাদিত পঁচিশ বছরের প্রেমের 888sport app download apk)
* আমার চুমু ক্লিপের মতো চুলের থেকে খুলে
ইচ্ছে করে যতই তুমি হারিয়ে আস ভুলে…
হারিয়ে আসা গুচ্ছ চুমু আবার এসে ফিরে,
হীরের মতো জ্বলবে তোমার কালো চুলের ভিড়ে।
(আবিদ আজাদ, ‘চুমুর 888sport sign up bonus’, ইউপিএল নির্বাচিত 888sport appsের 888sport app download apk ২০০০)
* ভালো লেগেছিল তাকে/ ২৫শে বৈশাখে/ রমনার বটমূলে
খোলাচুলে/ ঘুরছিল উদাসীনা।
(দাউদ হায়দার, ‘২৫শে বৈশাখ ২২শে শ্রাবণ’, সমস্ত স্তরে ক্ষতচিহ্ন)
বিগত শতকের চল্লিশ থেকে সত্তরের দশকে বিরাজিত পশ্চিমবঙ্গের প্রতিনিধিত্বশীল কয়েকজন কবির 888sport app download apkয় প্রাপ্ত কয়েকটি উদ্ধৃতি :
* ধোঁয়াটে সাপের মত কোঁকড়ান কালো এলোচুল
আমাকে জড়ায়ে থাক সারারাত, সারাক্ষণ চুম্বন-আকুল।
(‘চন্দ্রাবতী’, দিনেশ দাসের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা)
* তোমার খোঁপা দিলাম খুলে,
জড়িয়ে নিলাম আমার মুখে, চোখে, বুকে …
(‘তোমার মুখ’, বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, ওই)
* একটুকু বসো আর; দেখিছ না ঘরের তিমিরে
তোমার কেশের গন্ধে ভাসিচে কী গভীর আরাম।
(‘একটি স্বপ্ন’, অজিত দত্তের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, ভারবি, কলকাতা)
* সিঁদুর মেঘের রঙে ক্ষীণ সিঁথি ক্ষতরেখা রক্তঝরা বেলা
… চূর্ণ কুন্তলের জালে ললাটিকা উল্কামুখী।
(‘রূপান্তর’, অরুণ মিত্রের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, ভারবি, কলকাতা)
* দূরের ঝোপঝাড় যেন কোন মেয়ের জটপাকানো এলো চুল…
(‘থলকাবাদের বাংলোয়’, রাম বসুর শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, ওই)
* হেমন্তের হাওয়া খেলে লুটোপুটি, রুক্ষ খোলা চুলে,
বাঁ-কানের এক কোণে নিরুচ্চার কেশবতী ফণা, রাঙা দুল,…
(‘নীহারিকা, আলো অন্ধকার’, তরুণ সান্যালের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, দে’জ পাবলিশিং, কলকাতা)
* কোকিল হয়ে বসব তোমার ফুলে,…
খোঁপা হয়ে রইব তোমার চুলে।
(‘নাগা 888sport app download apkর অনুসরণে’, আশিস সান্যালের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, ওই)
* ভিজে চুল খুলেছে সে সুকুমার, উদাস আঙুলে
স্তনের বৃত্তের কাছে উদ্বেলিত গ্রীষ্মের বাতাস…।
(‘দুপুর’, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের শ্রেষ্ঠ 888sport app download apk, নসাস, 888sport app)
* তবু রাতের বিছানা জানে,
আমার বালিশে নেই তোমার চুলের গন্ধ,
মণিকর্ণিকার আলো, ঝরেপড়া একটি দুটি যৌনরোম।
(‘সশ্রম মৃত্যুদণ্ড’, উত্তম দত্ত)
এছাড়াও 888sport apps ও পশ্চিমবঙ্গের কবিদের 888sport app download apkয় 888sport promo codeর চুল নিয়ে হঠাৎ কোনো পঙ্ক্তি, চিত্রকল্প বা উপমা-উৎপ্রেক্ষা ক্ষণপ্রভা বিদ্যুতের মতো ঝলসে ওঠে। সেসবের মধ্য থেকেই কয়েকটি মোহনীয় উদ্ধৃতি এখানে চয়িত হয়েছে।
ছয়
888sport promo codeর খোলাচুলের বিরুদ্ধে শাসকেরা রাজনীতিও কম করেননি! ২০২২ সালে ইরানে হিজাব না-পরা ও চুল উন্মুক্ত রাখার স্বাধীনতার দাবিতে 888sport promo codeরা প্রবল আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। সেই আন্দোলনে 888sport promo code বিক্ষোভকারীরা হিজাব পুড়িয়েছেন, সর্বসমক্ষে চুল খুলে নেচেছেন এবং নিজের চুল কেটে আগুনে পুড়িয়েছেন। শত শত মুক্তমনা 888sport promo code এই আন্দোলনে
জেল-জুলুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। সত্তরের বেশি 888sport promo code এই বিক্ষোভে মৃত্যুবরণও করেছেন। তাই বলা যায়, 888sport promo codeর সুদীর্ঘ কেশ কেবল সৌন্দর্যের স্মারক নয় – 888sport promo codeর স্বাধীনতা অর্জনের মোক্ষম হাতিয়ারও।
চুলোচুলি, কেশাকেশি – এই শব্দদুটি গ্রামবাংলার 888sport promo codeদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটির অন্যতম লক্ষণাক্রান্ত। বাংলা ব্যাকরণের এ-ধরনের শব্দগুচ্ছ ব্যাতিহার বহুব্রীহি সমাসের অন্তর্ভুক্ত। পরস্পর একই ধরনের কাজে যুক্ত থাকলে বলা হয় ব্যাতিহারিক ক্রিয়া। তাছাড়া কথা বলার জন্য মুখের চুলবুলি, চুলচুলি, চুলকানি ইত্যাদি শব্দের সঙ্গেও চুলের সংযোগ আছে। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বীরত্ব দেখানোর জন্য কেউ কেউ বলে, অমুক আমার কেশাগ্র স্পর্শ করতে বা একটি চুলও ছিঁড়তে পারবে না। তাতে অশ্লীলতার ইঙ্গিত থাকুক বা না-থাকুক, তাতে যে স্থানেরই হোক কেশের সংযোগ সুস্পষ্ট। তাই কথা888sport live footballিক ও রম্যলেখক আনিসুল হক লিখেছেন : ‘মানুষ যে সৃষ্টির সেরা জীব, তার একমাত্র প্রমাণ হলো তার মাথার চুল। অন্য কোনো প্রাণীর মাথায় চুল নেই। … মানুষ – সে 888sport promo code-পুরুষ যেই হোক, চুল আছে।’ (‘চুলোচুলি’, গদ্যকার্টুন সমগ্র ২, পৃ ৫২৪, অনুপম প্রকাশনী, 888sport app)।
আজানুলম্বিত 888sport promo codeকেশের সৌন্দর্য নিয়ে বাংলার কবি-888sport live chatী-গীতিকারেরা যতই উদ্দামতা প্রকাশ করুন-না-কেন, তাতে পাঠকচিত্ত রম্যতায় যতই বিমুগ্ধ হোন-না-কেন, লম্বিত কেশদামের শ্রী আধুনিক বাঙালি 888sport promo codeর শিরে এখন আর তেমন নেই! ব্যস্ততা ও সময়-সংকটের এই যুগে কেশপরিচর্যার সুযোগ কোথায়! তাই ববকাট্ ও বয়কাটেই এখন ভরসা এবং স্বস্তি। বুদ্ধদেব বসু 888sport promo codeর এই কেশ-সংহারের বিষয়টি এখন থেকে আশি বছর আগেই আঁচ করতে পেরেছিলেন। পেশাদারিত্বের ভিত্তিতে চুল যারা ছাঁটে তাদের আমরা বলি নাপিত বা শীল। সুভাষণে তাদের বলা হয় সভাসুন্দর। বুদ্ধদেব তাদের পেশাকে 888sport live chat ও 888sport live chatীর মর্যাদায় উন্নীত করেছেন। তাদের নামকরণ করেছেন, কেশকর্তন888sport live chatী ও কেশকলাবিদ। রূপচর্চাকারী হিসেবে এদের মানমর্যাদা দিনদিন বেড়েই চলেছে। পরজন্মে কুন্তলশোভিত 888sport promo code হয়ে জন্মানোর বাসনা থাকলেও তা তিনি সুচিন্তিতভাবে পরিত্যাগ করেছেন। বলেছেন : ‘আমার এই এক জন্মেই যখন 888sport alternative linkের নায়িকাদের চুল গুল্ফ থেকে জানুতে এবং জানু থেকে স্কন্ধদেশে উন্নীত হলো, তখন পরজন্মে দেশের মধ্যে এমন মেয়ে নিশ্চয়ই থাকবে না, পরামানিকের কাছে নিয়মিত যিনি যাতায়াত না করবেন। আবার ভুল বললাম – পরামানিক তো আর নয়, তারা হবে রূপ888sport live chatী, কেশকলাবিদ, সৌন্দর্যসম্পাদক;…।’ (‘সবচেয়ে দুঃখের দু-ঘণ্টা’, উত্তর তিরিশ, পৃ ২০১)।


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.