গল্পকথার জাদুকর ও তাঁর মুক্তিযুদ্ধের 888sport alternative link

আহমেদ মাওলা
চলে গেলেন বাংলা কথা888sport live footballের জীবন্ত কিংবদন্তি, গল্পকথার জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ (১৯৪৮-২০১২)। কোটি পাঠক ও ভক্তের চোখ আজ অশ্র“সজল, শোকে মুহ্যমান বাংলার শ্যামল প্রান্তর। বেদনায় শ্রাবণের আকাশ যেন কান্নায় ভেঙে পড়লো বৃষ্টিতে। বৃষ্টি তিনি খুব ভালোবাসতেন। লিখেছেন বৃষ্টিবিলাস 888sport alternative link। নুহাশ পল্লীর একটি ঘরের নামও রেখেছেন ‘বৃষ্টিবিলাস’। যদিও নিউইয়র্কের আকাশে ১৯ জুলাই ছিল ঝকঝকে রোদ। কিন্তু ২১ জুলাই জ্যামাইকা 888sport apps সেন্টারে তাঁর প্রথম জানাজার সময় ঝাঁপিয়ে এলো বৃষ্টি। ‘ও কারিগর, দয়ার সাগর ওগো দয়াময়/ চাঁদনী প্রসর রাইতে যেন আমার মরণ হয়’ Ñ না, ১৯ জুলাই রাত ১১টা ২০ মিনিটে আকাশে কোনো চাঁদ ছিল না, ছিল কৃষ্ণপক্ষের রাত। জোছনা ছিল হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে প্রিয়। চাঁদের রহস্যময় আলোয় প্রকৃতি অন্যরকম হয়ে যায়। তিনি জোছনার সেই রহস্য খুঁজতে গিয়ে লিখেছেন  জোছনাত্রয়ী 888sport alternative link। তাঁর 888sport alternative linkে বারবার ঘুরেফিরে এসেছে জোছনার প্রসঙ্গ। বৃষ্টিতে ভেজা এবং জোছনা দেখার রোমান্টিক আবেগ তিনি সঞ্চার করে দিয়েছেন নতুন প্রজন্মের মধ্যে। যুক্তিবাদী মিসির আলী এবং হলুদ পাঞ্জাবির হিমু চরিত্রের অমর স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদ আর নেই, একথা ভাবতেই হৃদয় ভেঙে কান্না আসে। কত 888sport sign up bonus, কত কথা জড়িয়ে আছে তাঁর সঙ্গে। একবার খেতে বসেছি মনোচিকিৎসক ও লেখক মোহিত কামালের বাসায়। মিলিভাবি হুমায়ূন ভাইয়ের পছন্দের অনেক রান্না টেবিলে সাজিয়েছেন। খেতে খেতে নানা বিষয়ে কথা হচ্ছে। এর মধ্যে হুমায়ূন ভাই আমার দিকে ইঙ্গিত করে বললেন – ‘ওকে আরেকটা চিংড়ি মাছ দাও। ও মিলনের (ইমদাদুল হক মিলন) ওপর একটা বই লিখেছে। ভবিষ্যতে আমার ওপরও একটা লিখবে।’ তাঁর হালকা রসিকতায় খাওয়ার টেবিলে সবাই হেসে ওঠে। ‘সমালোচক থেকে আমি তিন হাত দূরে থাকি।’ আমি বলি, ‘আপনার মতো মানুষের যে সমালোচকভীতি আছে, এটা জানতাম না।’
হুমায়ূন ভাই এরকম উত্তর দেবেন, ভাবতে পারিনি। তিনি বললেন, ‘আমি ভাই লিখি নিজের আনন্দের জন্য। পাঠকরা আমার আনন্দে ভাগ বসায় মাত্র। আমি ভাই উঁচুদরের 888sport live chatরচনার জন্য লিখি না।’ হুমায়ূন ভাই রূপচাঁদা মাছটা আমার প্লেটে তুলে দিয়ে বললেন – ‘অগ্রিম ঘুস দিয়ে রাখলাম।’
তাঁর রসিকতায়, েস্নহে, হৃদয় আর্দ্র হয়ে চোখ ভরে যায় জলে। ইচ্ছে ছিল, হুমায়ূন আহমেদের 888sport live chatসূত্র নিয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ রচনা করার; কিন্তু পেশাগত ব্যস্ততার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তাঁকে নিয়ে লিখতে না পারার লজ্জায় আমি দীর্ঘদিন তাঁর মুখোমুখি হইনি। তিনি বেঁচে থাকতে কেন লিখিনি, সেই অপরাধবোধে হৃদয়ে চলে প্রবল ভাঙচুর, বুক ফেটে কান্না আসে। হায়! কোথায় পাব তারে?

দুই
হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন আমাদের সময়ের শ্রেষ্ঠ এবং জনপ্রিয় কথা888sport live chatী। স্বাধীনতা-উত্তর সত্তর দশকে এক অতিনতুন ভাষা নিয়ে তিনি আমাদের কথা888sport live footballে প্রবেশ করেন। শুরু থেকে তাঁর ভাষা ছিল সহজবোধ্য, সাবলীল, অজটিল। গল্প বলার এক অসাধারণ সম্মোহনী শক্তি ও চৌম্বক আকর্ষণ তাঁকে রাতারাতি খ্যাতির শীর্ষে নিয়ে যায়। কাহিনিবর্ণনায় টানটান, কৌতূহলোদ্দীপক ঘটনার বিন্যাস, চমকপ্রদ নাটকীয়তা, বৈচিত্র্যময় ও বিশ্বাসযোগ্য চরিত্রসৃষ্টি, গভীর অন্তর্দৃষ্টি হুমায়ূন আহমেদের 888sport alternative linkকে পাঠকপ্রিয়তার তুঙ্গে নিয়ে গেছে। নাগরিক মধ্যবিত্ত শ্রেণির সুখ-দুঃখ, আনন্দ-বেদনা, স্বপ্ন-আকাক্সক্ষার এমন শৈল্পিক রূপায়ণ হুমায়ূন আহমেদের পূর্বে কেউ করতে পারেননি। মধ্যবিত্ত শ্রেণি আপন আয়নায় নিজেদের ছবি দেখে নিজেরাই মুগ্ধ, বিস্মিত। হুমায়ূন আহমেদের সৌভাগ্য যে, তাঁর গল্প-888sport alternative linkের কুশীলবরাই তাঁর পাঠক। ফলত, হুমায়ূন আহমেদ কেবল জনপ্রিয় নন, জননন্দিত হয়ে ওঠেন। স্থান করে নেন কোটি হৃদয়ের মণিকোঠায়।
সাধারণ মধ্যবিত্ত জীবন, হিমু, মিসির আলী, মাস্তান চরিত্র ইত্যাদি বৈচিত্র্যময় জীবনের রূপায়ণ করলেও হুমায়ূন আহমেদের লেখালেখির একটা বিরাট অংশজুড়ে আছে মুক্তিযুদ্ধ। নানাভাবে, নানামাত্রিকতায় তিনি আলো ফেলেছেন মুক্তিযুদ্ধের ওপর। তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধের অনেক হৃদয়বিদারক, মর্মন্তুদ, বিষাদময় ঘটনা। টুকরো টুকরো মৃত্যুর কথা, হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের অশ্র“ভেজা কাহিনি তিনি লিখেছেন। ‘নন্দিনী’, ‘জলিল সাহেবের পিটিশন’, ‘শীত’, ‘জনক’, ‘উনিশ’শ একাত্তরে’র মতো গল্প যেমন আছে, তেমনি মুক্তিযুদ্ধকে পটিভূমি করে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন ছয়টি 888sport app download for androidীয় 888sport alternative link। এগুলো হচ্ছে – সূর্যের দিন (১৯৮৬), ১৯৭১ (১৯৮৬), আগুনের পরশমণি (১৯৮৭), নির্বাসন (১৯৮৩), শ্যামল ছায়া (১৯৮৫), জোছনা ও জননীর গল্প (২০০৫)। এ ছয়টি 888sport alternative linkে হুমায়ূন আহমেদ ছয়টি দৃষ্টিকোণ থেকে মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য অনুসন্ধানের প্রয়াস পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপ্লাবী বর্ণনা তাঁর 888sport alternative linkকে হৃদয়স্পর্শী করেছে। মুক্তিযুদ্ধকে খুব কাছ থেকে দেখার যে অভিজ্ঞতা, হুমায়ূন আহমেদ সেই অভিজ্ঞতাকে পূর্ণমাত্রায় কাজে লাগিয়েছেন। সূর্যের দিন 888sport alternative link ১৯৭১ সালের মার্চের প্রথম দিকের বিলোড়িত সময় ধারণ করেছে। কিশোর-উপযোগী বিষয় ও ভাবনা থেকে রচিত হলেও সূর্যের দিন 888sport alternative linkে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নময় আকাক্সক্ষার রূপায়ণ ঘটেছে। এই 888sport alternative linkটি যদিও কিশোর-উপযোগী বিষয় ও ভাবনা থেকে রচিত, তবু এতে ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকে 888sport app শহরের জনজীবনের অস্থির আতঙ্কিত অবস্থা, গুলি, কারফিউ, শহর ছেড়ে দলে দলে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার কথা, শেখ মুজিবের ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক ভাষণ উঠে এসেছে খুব চমৎকারভাবে।
‘সাত তারিখে শেখ মুজিবুর রহমান ভাষণ দেবেন রেসকোর্স মাঠে। ভোররাত থেকে লোকজন আসতে শুরু করেছে। দোকানপাট বন্ধ। অফিস আদালত নেই। সবার দারুণ উৎকণ্ঠা। কি বলবেন এই মানুষটি? সবাই তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।… অবশেষে রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর বিখ্যাত বক্তৃতা শুরু করলেন। তাঁর মুখ দিয়ে কথা বলে উঠলো 888sport apps।… পঁচিশ মার্চ রাতে হৃদয়হীন একদল পাকিস্তানী মিলিটারি এ শহর দখল করে নিল। তারা উড়িয়ে দিলো রাজারবাগ পুলিশ লাইন। জগন্নাথ হল এবং ইকবাল হলের ছাত্রদের গুলি করে মারল। বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে হত্যা করলো শিক্ষকদের।… একরাত্রিতে এ শহর মৃতের শহর হয়ে গেলো। সাতাশ তারিখ চার ঘণ্টার জন্য কার্ফ্যু তোলা হয়। মানুষের ঢল নামলো রাস্তায়। বেশির ভাগ মানুষই শহর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে।’ (সূর্যের দিন, পৃ ৬৮)।
উপর্যুক্ত বর্ণনায় সেই সময়ের বাস্তব অবস্থা সহজে অনুমান করা যায়, অবস্থা কেমন ভয়াবহ ছিল। এই 888sport alternative linkের সাজ্জাদ, খোকন, মুনীর, টুনু, নীলু প্রভৃতি কিশোরবয়সী স্কুলছাত্রের সেই সময়ের মানসিক অবস্থা, অভিভাবকদের উৎকণ্ঠা, নীলগঞ্জে গিয়ে আশ্রয় নেওয়া, সেখান থেকে সাজ্জাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের কথা বর্ণিত হয়েছে বাস্তবতার নিরিখে। 888sport alternative linkের পরিসমাপ্তিতে দেখা যায়, মুক্তিযুদ্ধে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে মৃত্যুবরণ করার জন্য একটি চোদ্দ বছরের বালককে ‘বীরপ্রতীক’ উপাধি দেওয়া হয়। তার নাম সাজ্জাদ। খোকন মে মাসের শেষের দিকে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এই কিশোর বালকদের একটা স্বপ্ন – ‘অন্ধকার রজনী শেষে এরা আনবে একটি সূর্যের দিন।’
কিশোর-888sport alternative link হলেও হুমায়ূন আহমেদ এ-888sport alternative linkকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় রঞ্জিত করতে পেরেছেন সফলভাবে।
১৯৭১ শিরোনামের 888sport alternative linkটির পটভূমি গ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় একরাতে নীলগঞ্জ গ্রামের স্কুলঘরে হঠাৎ পাকিস্তানি সৈন্যরা এসে অবস্থান নেয়। তাদের ধারণা, গ্রামের দক্ষিণে বিরাট জঙ্গলে মুক্তিবাহিনী লুকিয়ে আছে। তাই নীল শার্ট পরিহিত রফিক নামের এক রাজাকারের সহায়তায় প্রথমে মসজিদের ইমাম এবং স্কুলের হেডমাস্টারকে ধরে নিয়ে এসে নির্মম নির্যাতন চালায়। এক বাড়িতে ঢুকে 888sport promo codeধর্ষণও করে পাকিস্তানি মেজর। হেডমাস্টারকে অভিনব শাস্তি (যৌনাঙ্গের সঙ্গে ইট বেঁধে সারাগ্রাম ঘোরানো) প্রদান করে। শেষ পর্যন্ত মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করে। এসব দেখে রাজাকার রফিকের মনেও পাকিস্তানি সৈন্যদের প্রতি ঘৃণা ও প্রতিবাদী চেতনা জ্বলে ওঠে।
একসময় পাকিস্তানি মেজর রফিককে সন্দেহ করে। তাকেও বিলের জলে দাঁড় করিয়ে হত্যা করা হয়। রাজাকার রফিককে হত্যা করার জন্য যখন পানিতে নামনো হয় তখন সে মেজরকে উদ্দেশ করে বলে – ‘মেজর সাহেব, আমার কিন্তু মনে হয় না আপনি জীবিত ফিরে যেতে পারবেন এদেশ থেকে।’
888sport alternative linkের শেষে রফিক চরিত্রটি যেন আত্মসাক্ষাৎ লাভ করে। সে হয়ে ওঠে এক রূপান্তরিত বাঙালি। এভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার শৈল্পিক রূপায়ণ ঘটে হুমায়ূন আহমেদের কুশলী হাতে।
শ্যামল ছায়া 888sport alternative linkে হুমায়ূন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের ভিন্ন এক বাস্তবতা তুলে ধরেন। অভাবের তাড়নায় রাজাকারে নাম লেখায় কেরামত ও হাসান আলী। পাকিস্তানি সৈন্যরা যখন নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে, বিনা কারণে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়, চোখের সামনে এসব অন্যায় দেখে, রাজাকার হয়েও কেরামত এবং হাসান আলীর মনে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়।
চেয়ারম্যান সাব কইলেন, হাসান আলী রাজাকার হইয়া পড়। সত্তর টাকা মাইনা, তার উপর খোরাকী আর কাপড়।… তার ঘরে খাইয়া মানুষ। তার কথা ফেলতে পারি না। রাজাকার হইলাম।… কামডা বোধ হয় ভুল হইল।… যখনই হিন্দুদের ঘরে আগুন দেয়া শুরু হলো, কেরামত ভাই কইলেন, এটা কী কাণ্ড, কোনো দোষ নাই, কিচ্ছু নাই, ঘরে কেন আগুন দিমু?… ও তো হিন্দু হ্যায়, গাদদার হ্যায়। কেরামত বুক ফুলাইয়া কইলো, আগুন নেই দেঙ্গা। তার লাশ নদীতে ভাইস্যা উঠলো।… মিলিটারি যা কয় তাই করি। নিজের হাতে আগুন লাগাইলাম সতীশ পালের বাড়ি, কানু চক্রবর্তীর বাড়ি।… ইস্ মনে উঠলে কইলজাডা পুড়ায়। আমি একটা কুত্তার বাচ্চা।… সে রাতেই গেলাম মসজিদে। পাক কোরান হাতে নিয়া কিরা কাটলাম, এর শোধ তলবাম। এর শোধ না তুললে আমার নাম হাসান আলী না। আমি বেজন্মা। (শ্যামল ছায়া, পৃ ২৮)।
আমরা দেখতে পাই, হাসান আলী রাজাকার হয়েও তার ভেতর জেগে ওঠে তীব্র এক মানবিকবোধ। সে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে। তার বিবেকে প্রশ্ন জেগেছে বিনাদোষে মানুষ হত্যা, ঘরে আগুন দেওয়া – এ তো বর্বরতা। বুকের ভেতর তীব্র ঘৃণা আর প্রতিশোধের আগুনই হাসান আলীকে দুঃসাহসী করে তোলে। মসজিদের ভেতর ঢুকে পাক কোরান হাতে সে যখন ‘কিরা কাটে’ প্রতিশোধ নেওয়ার শপথ করে – চরিত্রটি ভিন্ন এক মাত্রা লাভ করে। শ্যামল ছায়া 888sport alternative linkের সার্থকতা এখানেই যে, রাজাকার হয়েও হাসান আলী যে-জীবনজিজ্ঞাসায় উত্তীর্ণ হয়, তা হচ্ছে স্বদেশপ্রেম ও মানবিকতায়। অর্থাৎ জন্মভূমির শ্যামল ছায়ায় সে স্নাত হয়।
জ্যোৎস্না ও জননীর গল্প (২০০৫) হুমায়ূন আহমেদের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একটি উচ্চাকাক্সক্ষী 888sport alternative link। প্রচুর তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে, ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে তিনি সুবৃহৎ 888sport alternative linkটি রচনা করেন। এ-888sport alternative linkে হুমায়ূন আহমেদ তিনটি কাজ করেছেন। এক. তাঁর নিজের ভাষায় দেশমাতৃকার ঋণশোধ করেছেন। দুই. মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক একটি সফল 888sport alternative link লিখেছেন। তিন. মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি দূর করেছেন। তৃতীয় কাজটি করা খুব সহজ ছিল না। কারণ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের মধ্যে এর মাঝে অনেক মিথ্যা ঢুকে গেছে। ১৯৭২ সালের জানুয়ারিতে লেখা এক 888sport liveে বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা উল্লেখ করে জিয়াউর রহমান লিখেছেন – সমগ্র বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর নামেই তিনি ঘোষণাটি দিয়েছিলেন। হুমায়ূন আহমেদ ওই ঘোষণার দিন হিসেবে ২৭ মার্চই উল্লেখ করেছেন এবং জিয়ার নিজের লেখা ডায়েরির উদ্ধৃতি দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি ইতিহাসের গ্রহণযোগ্য একটা মীমাংসা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ইতিহাসের সত্য অনুসন্ধান থাকলেও জোছনা ও জননীর গল্প 888sport alternative linkের কাঠামোটি খুবই আকর্ষণীয়।
নীলগঞ্জ হাইস্কুলের আরবির শিক্ষক মাওলানা ইরতাজউদ্দিন কাশেমপুরীকে নিয়ে গল্পের শুরু। একটি রাজহাঁস নিয়ে তিনি 888sport app শহরে ঢুকেছেন। গল্প এগিয়ে যায়। একসময় ইরতাজউদ্দিন স্থানীয় শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হন। তারপর হঠাৎ একদিন তিনি মসজিদে জুমার নামাজ পড়াতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ পরাধীন দেশে জুমার নামাজ পড়া যায় না। পাকিস্তানি আর্মি তাকে উলঙ্গ করে নীলগঞ্জ ঘোরায়, তারপর গুলি করে মারে। তার লাশ পরম যতেœ তুলে এনে সমাহিত করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মনসুর সাহেব।
মাস্টারের স্ত্রী মাঝেমধ্যে পাগল হয়ে যায়, কিন্তু যেদিন খুব প্রকৃতিস্থ থাকে, সেদিন স্বামীকে এক কাজে সাহায্য করেন।
ইরতাজউদ্দিনের ছোট ভাই শাহেদের গল্প দিয়ে কাহিনি শুরু হয়। কিন্তু শাহেদ চলে যায় অনেক দূরে, আরো দূরে ছিটকে পড়ে তার স্ত্রী আসমানী ও তাদের মেয়ে। সেই বারাসাতের এক আশ্রয়স্থলে কিন্তু শাহেদ তাদের আবিষ্কারের আগে আমরা খুঁজে পাই আরো অনেকের গল্প। গৌরাঙ্গ, তার স্ত্রী ও কন্যার, পুলিশ ইন্সপেক্টর মোবারক, তার স্ত্রী ও কন্যার এবং কবি হতে চাওয়া কিন্তু শেষ পর্যন্ত আলবদর বনে যাওয়া কলিমুল্লাহর, যে মোবারক হোসেনের একটি মেয়েকে বিয়ে করে, বিহারি জোহর সাহেবের, সন্তসদৃশ অধ্যাপক ধীরেন্দ্রনাথ রায়চৌধুরীর। হুমায়ূন আহমেদ নিজে আছেন এ-888sport alternative linkে, তাঁর বাবা-মা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল আছেন স্বনামে। শামসুর রাহমান ও নির্মলেন্দু গুণ আছেন কাহিনির ঘটনাংশে। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে বড় হয়ে ওঠে হুমায়ূন আহমেদের গল্প বলার জাদুকরি কুশলতা। আমরা আন্দাজ করে নিতে পারি, কলিমুল্লাহ যে আলবদর হবে এবং বেঁচেও যাবে, এটি আমরা বুঝতে পারি। আমরা আগেই জেনেছি, ধীরেন্দ্রনাথকে তুলে নিয়ে যাবে। গৌরাঙ্গের পরিণতি কী হবে, আমরা জানি। শাহেদ যে আসমানীকে পাবে, তাও  আমরা বুঝতে পারি। শুধু ইরতাজউদ্দিন এবং মনসুর হোসেনের কথা আমরা ভুলে যাই। তিনি তুলে আনেন 888sport app মিটফোর্ড হাসপাতালের ডোমদের কথা, স্বরূপকাঠির যতীন্দ্রনাথ মণ্ডলের কথা, হাসান হাফিজুর রহমান-সম্পাদিত মুক্তিযুদ্ধের দলিল থেকে কোনো চিঠি অথবা বয়ান। হুমায়ূন আহমেদের কাছে সাধারণ মানুষদের এসব গল্পই বিশেষ মর্যাদা পায়। কারণ এগুলোর মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের মর্মবাণী লুকিয়ে আছে। জোছনা ও জননীর গল্প নামকরণের তাৎপর্য কোথায়? এর উত্তর খুঁজতে গেলে আমরা দেখতে পাই জননী আসলে দেশমাতৃকা। স্ত্রী মরিয়মের কাছে মুক্তিযোদ্ধা নাইমুলের তার  ফিরে আসার কথা। কিন্তু না, নাইমুল কথা রাখেনি। সে ফিরে আসতে পারেনি তার স্ত্রীর কাছে। বাংলার বিশাল প্রান্তরে কোথাও তার কবর হয়েছে। জোছনারাতে সে (দেশমাতৃকা) তার বীর সন্তানদের কবরে অপূর্ব নকশা তৈরি করে। অপরূপ জোছনায় গভীর মমতায় জড়িয়ে রাখে আপন বীর সন্তানের কবর। নদীতে ভেসে যাচ্ছে হয়তো কারো মৃতদেহ, জোছনায় ভরে আছে নদীর চরাচর। হুমায়ূন আহমেদ এভাবে মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য অনুসন্ধান করেছেন।
সহজ প্রকাশভঙ্গি, চরিত্রের মুখে সংলাপের কৌশলী প্রয়োগ তাঁর পাঠককে নিয়ে যায় কাহিনির গভীরে। মুক্তিযুদ্ধের 888sport alternative linkেও এর ব্যতিক্রম ঘটাননি হুমায়ূন আহমেদ। সমকালীন তরুণ পাঠকদের মধ্যে সঞ্চার করে দিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনা। এ-চেতনা কোনো বিমূর্ত ধারণামাত্র নয়, যে আবেগ, বিশ্বাস, চিন্তা একটি বৈষম্যহীন সমাজের স্বপ্ন দেখায়, গণতন্ত্র ও সমাজতন্ত্রের জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে শেখায়, ধর্মান্ধতা ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত অভিন্ন জাতিসত্তায় প্রণোদিত করে – তা-ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। সে-চেতনার একটি ধারাবাহিক ইতিহাস আছে, আছে হাজার বছরের সংগ্রাম এবং লক্ষ মানুষের রক্তে রাঙানো জীবনকাহিনি।