বাংলা কাব্য-রূপান্তর : অসীম সাহা
সূচনা পর্ব
ভূমিকা
[জয়দেব। পুরো নাম জয়দেব গোস্বামী। তাঁর জন্মস্থান নিয়ে বিতর্ক আছে। অনেকের মতে, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার অজয় নদের তীরে কেন্দুবিল্ব বা কেঁদুলি গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কেউ কেউ আবার তাঁকে উড়িষ্যার মিথিলার অধিবাসী বলেও মনে করেন। জানা যায়, তাঁর পিতার নাম ভোজদেব এবং মাতার নাম বামাদেবী। তাঁর স্ত্রীর নাম পদ্মাবতী।
জয়দেব সংস্কৃত ভাষার শেষ কবি ও শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবেও বিবেচিত। অনুমান করা হয়, তিনি খ্রিষ্টীয় বারোশো শতকের কবি। গবেষকগণের মতে, জয়দেব ছিলেন বাংলার রাজা লক্ষ্মণ সেনের (১১৭৯-১২০৬ খ্রিষ্টাব্দ) রাজসভার পঞ্চরত্নের মধ্যে অন্যতম। বাকি চারজন রত্ন ছিলেন : গোবর্ধন আচার্য, শরণ, ধোয়ারী ও উমাপতি ধর। কারো কারো মতে, তিনি কিছুকাল উৎকলরাজেরও সভাপণ্ডিত ছিলেন।
জয়দেব সংস্কৃত ভাষায় রচিত তাঁর গীতগোবিন্দম্ কাব্যের জন্য বিখ্যাত। এটিতে রয়েছে ২৮৬টি শ্লোক, ২৪টি গীত। ১২ সর্গে এটি বিভক্ত। এই কাব্যের নায়ক-নায়িকা রাধা-কৃষ্ণ হলেও, এঁদের মাধ্যমে জীবাত্মার সঙ্গে পরমাত্মার মিলনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মূলত এই কাব্যগ্রন্থ আবর্তিত হয়েছে রাধাকৃষ্ণের মানবীয় প্রেম ও কামলীলাকে কেন্দ্র করে।
এর মধ্যে যে গীতসমূহ রয়েছে, তা রাগ ও তালভিত্তিক। ইংরেজিসহ ইউরোপের বিভিন্ন ভাষায় এটি অনূদিত হয়েছে। ভারত ও ভারতের বাইরেও এই গ্রন্থের জনপ্রিয়তা অসাধারণ।
গীতগোবিন্দ-এর প্রধান বৈশিষ্ট্য, এতে পঙ্ক্তির শেষে অন্ত্যমিলের ব্যবহার, যা সংস্কৃত 888sport live footballের ক্ষেত্রে খুবই দুর্লভ। জয়দেবের আমলে বাংলা 888sport app download apkর অন্ত্যমিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার ছিল। তিনি সংস্কৃত ভাষায় কাব্য রচনা করলেও ছন্দের ব্যাপারে ও ভাষাশৈলীর ক্ষেত্রে সংস্কৃতের পুরো অনুগামী হননি। ফলে তাঁর 888sport app download apkয় বাংলা 888sport app download apkর সহজ গতিশীলতা লক্ষ করা যায়। তবে অনেক পদ সম্পূর্ণ না থাকাতে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে অন্ত্যমিলের সীমাবদ্ধতা থাকাতে 888sport app download apk latest version করতে গিয়ে আমাকে সংকটে পড়তে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তিনি পয়ারের সমতা রক্ষা করেননি। বিশেষত কীর্তনাঙ্গের গানগুলোতে সম্ভবত সুরের প্রয়োজনে এবং ছন্দ ও তালের বৈচিত্র্য রক্ষা করতে গিয়ে তিনি ত্বরিত পদমাত্রার বদল ঘটিয়েছেন এবং অনেক ক্ষেত্রে ছন্দসমতাও রক্ষিত হয়নি। তাই আমি 888sport app download apk latest version না করে যতদূর সম্ভব মূল ব্যঞ্জনা ঠিক রেখে পদগুলো বিনির্মাণের চেষ্টা করেছি। অনেক ক্ষেত্রে নিরুপায় হয়ে পঙ্ক্তি নির্মাণের চেষ্টা করেছি। তাতে মূল 888sport app download apkর বিষয়ের ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় হয়েছে কি না, তা নিশ্চিতভাবে বলতে না পারলেও এ-ক্ষেত্রে আমার বলবার কথা একটাই, আমি গীতগোবিন্দ-এর মধ্যে যে মানবীয় প্রেম, তাকে গুরুত্ব দিয়ে বাঙালি পাঠকের কাছে এই কাব্যগ্রন্থের পঙ্ক্তিসমূহের আস্বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি সংস্কৃত জানি না। তাই শ্রীবিজয়চন্দ্র মজুমদার ও শ্রীধরের বাংলা কাব্যিক 888sport app download apk latest version এবং শ্রীহরেকৃষ্ণ মুখোপাধ্যায়ের গদ্যানুবাদ থেকে সরাসরি 888sport app download apk latest version না করে পঙ্ক্তি বিনির্মাণের প্রয়াস চালিয়েছি। উল্লেখ্য, পদগুলোর ব্যঞ্জনা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তার জন্যে সবসময় অন্ত্যমিলে পূর্ণমিল রাখতে পারিনি, অর্ধমিলেরও ব্যবহার করতে হয়েছে। তাছাড়া মিশ্রছন্দ ব্যবহার করার ফলে মাত্রাবৃত্ত ছন্দে যুক্ত শব্দকে বিযুক্ত করে মাত্রাগণনাও করতে পারিনি। এখানে আমি নিরুপায় ছিলাম। ওটা করতে গেলে মূল থেকে একেবারে সরে যেতে হতো। আর পদরচনায় সাধু-চলিতের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা তো ছিলই। তা সত্ত্বেও যে কোনো বিচ্যুতির জন্য আমি পাঠকের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী। এখানে আমি ১২টি সর্গের মূল পদকে বিনির্মাণের জন্য বেছে নিয়েছি। নিচে পদসমূহ দেওয়া হলো। – অসীম সাহা]
সূচনাগীত
যাহার রচিত কাব্য শ্রীগীতগোবিন্দ।
যাতে প্রীত হয় যতো কৃষ্ণভক্তবৃন্দ ॥
অভিভূত হতে হয় শুনে সেই বাণী।
লোককে বোঝাতে বলি নিগূঢ় কাহিনি ॥
রাধাকৃষ্ণ রাসলীলা নির্জন গহনে।
সে-সব বর্ণনা করে কৃষ্ণ মনে মনে ॥
কাব্যসূচনা
একদিন কৃষ্ণচন্দ্র একান্তে বসিয়া।
বলেন মনের কথা দূতিকে ডাকিয়া ॥
শোনো দূতি, আমি চাই রাধিকা-প্রণয়।
রাধার ইচ্ছা, এ-প্রাণ নাহি যেন রয় ॥
কামেতে কাতর এই আমার হৃদয়।
রাধার বিচ্ছেদে মোর প্রাণ নাহি রয় ॥
কামজ্বরে জর্জরিত আমার অন্তর।
রাধাকে আনিয়া প্রাণ বাঁচাও সত্বর ॥
কী করে আমার সাথে হবে গো মিলন।
তাহার উপায় দূতি বের করো হে এখন ॥
কৃষ্ণের করুণ কথা কানেতে শুনিয়া।
চলে গেল দূতি খুব হৃষ্ট মন নিয়া ॥
রাধিকার কাছে গিয়ে বলল সে-দূতি।
ত্যাগ করে অভিমান, যাও ব্রজপতি ॥
কৃষ্ণচন্দ্রে কেন দাও এমন যাতনা।
চন্দ্রমুখী পূর্ণ করো মনের বাসনা ॥
ত্যাগ করে নিজ গৃহ গেল চলে বনে।
ধরিল কেবল গান তোমার গুণগানে ॥
অনুগতজনে কেন মনে রাখে ক্রোধ।
দয়া করে দূর করো মনের বিরোধ ॥
এই হরি পূর্বরাতে তোমাকে ছাড়িয়া।
প্রমোদ-কাননে ছিল অন্য 888sport promo code নিয়া ॥
সেই অপরাধে সে তো ভয় পেল মনে।
আসার সাহস নেই রাধিকার সনে ॥
সেই দোষ ক্ষমা করে চল বৃন্দাবনে।
কৃষ্ণসঙ্গে বাস করো নিকুঞ্জভবনে ॥
বৌ ছাড়া বনে কাটে যেমন প্রহর।
কানাইকে নিয়ে তুমি পূর্ণ করো ঘর ॥
দেখো মেঘ ঢেকে দিল সমস্ত আকাশ।
চাঁদের হল না তাতে একান্ত প্রকাশ ॥
বনভূমি ছেয়ে গেলে ঘন অন্ধকারে।
কেউ কাউকে দেখতে না পায় একেবারে ॥
তাই বলি, মিলে যাও তোমরা দুজন।
কৃষ্ণের বিরহজ্বালা দূর করো এখন ॥
এমন সুন্দর স্থান রসের আবেশে।
খুশি মনে বনে যায় আনন্দিত হেসে ॥
কী যে বনের রূপ, প্রকাশও না যায়।
সুশোভিত ফুলের বনে মৌমাছি গায় ॥
মৃদুমন্দ সুরভিত ঠাণ্ডা বায়ু ধায়।
অতিসুখে পাখিগুলো কুহু কুহু গায় ॥
অত্যন্ত নির্জন বন যমুনার কূলে।
জলেস্থলে ডাকে পাখি মনপ্রাণ খুলে ॥
রাধাকৃষ্ণ পুলকিত হয়ে মনে মনে।
কৌতূহলে থেকে যায় সেই নীপবনে ॥
নির্ভয়ে কৃষ্ণলীলা হয় সে-কুঞ্জবনে ॥
কীরকম রাধারূপ যায় না তো বলা।
পরস্পর মিশে গিয়ে করে ছলাকলা ॥
রাধা ও কৃষ্ণের রতি হয় নানা মতো।
ভয় পেয়ে রাধা শুধু কাঁপে অবিরত ॥
কথার দেবতা কৃষ্ণ সংসারের সার।
তার চিত্তে যার মন বসে একবার ॥
পদ্মাবতী রাধিকার পায়ে পড়ে রয়।
জয়দেব তারে প্রধান সেবক কয় ॥
সে-কবি জয়দেব লেখেন কথকতা।
রাধিকার সঙ্গে তাঁর কামলীলাকথা ॥
শোনো কৃষ্ণভক্ত, শোনো আমার বচন।
পূর্ণ করতে মন, কৃষ্ণ করো 888sport app download for android ॥
কৃষ্ণের লীলাতে মন আনন্দিত হয়।
যদি তোমাদের মনে কৌতূহল রয় ॥
তবে মনোযোগ দাও এই 888sport app download apkতে।
মধুর কোমল রস-পদ পাবে তাতে ॥
কৃষ্ণনামে 888sport apk download apk latest version হয় বৈষ্ণবে কেবল।
বিলাসীজনের কৃষ্ণ, বিলাসেই ফল ॥
এখানে আছেন যারা পণ্ডিতমণ্ডলী।
তাহাদের দোষ-গুণ এইখানে বলি ॥
উমাপতি ধর সব শাস্ত্রতে পণ্ডিত।
বাক্যের বিস্তার আছে, নেই কোনো হিত ॥
গোবর্ধন আচার্য কবি, জানি সে দারুণ।
শৃঙ্গারের বর্ণনাই একমাত্র গুণ ॥
অসমর্থ অন্য গুণ বর্ণনায় তিনি।
এটাই তো দোষ তাঁর, তাঁকে আমি চিনি ॥
ধোয়ী নামে কবিরাজ শ্রুতিধর বড়।
শোনামাত্র গ্রন্থনায় ভীষণ সে দড় ॥
জানিতে-বুঝিতে এটা উৎকৃষ্ট নয়।
আকারে-ইঙ্গিত বুঝলে সে সুখী হয় ॥
দুর্বোধ্যতা বুঝতে নাও কবির শরণ।
অপারগ অন্যরূপ করতে বর্ণন ॥
বাক্যের জটিল তত্ত্ব গ্রন্থনা বিশেষ।
জানেন জয়দেব শুধু তা সবিশেষ ॥
এখন কৃষ্ণের স্তুতি করে অবতার।
গীতছন্দে ভক্তিরসে হয় তা অপার ॥
গীত
রাগ : মালবগৌড় ॥ তাল : রূপক
ঢেউয়ের সাগর সেচে করি চার বেদ উদ্ধার।
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত মৎস্যরূপ তার ॥
পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে চেপে
গোলাকার ব্রণচিহ্ন চেপে
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত কাছিমরূপ তার ॥
তোমার দাঁতের অগ্রে বিশ্ব
যেন চাঁদের কলংক হয় নিঃস্ব।
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত শূকররূপ তার ॥
সোনার কশিপুরূপ ধরে
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত মানুষরূপ তার ॥
ছলনা করিলে বালিকার সাথে
পায়ে বিনাশ হয় গঙ্গা তাতে
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত বামনরূপ তার ॥
ক্ষত্রিয়ের রক্তে বানালে যে হ্রদ
স্নান করে তাতে আনলে বিপদ
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত সর্পরূপ তার ॥
রাবণের মাথা কেটে নিয়ে
তৃপ্ত করো রাজাদের দিয়ে
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত রঘুরূপ যে তার ॥
শোভা পায় সাদা শাড়ি নীলে
লাঙলঘায়ে যমুনা মিলে।
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত কৃষকরূপ তার ॥
যজ্ঞ থেকে নিন্দা করো বেদে
দয়া করো পশুহত্যাভেদে
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত বুদ্ধরূপ তার ॥
মেøচ্ছবধে অস্ত্র তুমি নিলে
ধূমকেতু-ভয়েতে মরিলে
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত কল্কিরূপ তার ॥
শোনো শোনো জয়দেবের এ-গীত
সংসারের সুখে তারা করে হিত
জয় জগদীশ হরি অদ্ভুত দশরূপ তার ॥
বেদকে উদ্ধার করে বাঁচলো সংসার।
পিঠে আছে গোলাকার ব্রণের আকার ॥
শুয়োরের তীক্ষè দাঁত করিয়া বিস্তার।
দৈত্যকে মেরে করে তাহাকে উদ্ধার ॥
বলিদৈত্য ছল ক’রে করে ক্ষাত্র ক্ষয়।
রাবণ-বধে হল কৃষক কৃপাময় ॥
মেøচ্ছবধে দশ রূপ ধরল প্রকৃতি।
সেই কৃষ্ণচন্দ্রে আমি জানাই প্রণতি ॥
কাব্যের শুরুতে কিছু বিঘ্ন ছিলো, তাই
কৃষ্ণচন্দ্রে ফের আমি প্রণতি জানাই ॥
প্রথমে করলাম শুরু মঙ্গলগীতছন্দে।
মঙ্গল গুজ্জরীরাগ করি যে আনন্দে ॥
গীত
রাগ : গুজ্জরী তাল : নিঃসাড়
জয় জয়দেব হরে।
স্ফীত স্তনদ্বয় করেছো আশ্রয় কানে দুল নিয়ে বনমালী ওড়ে ॥
স্থিতি সূর্যমাঝে আছে যে সব কাজে হংসমুনি মানস সরোবরে ॥
সাপের গর্জন ভুবনরঞ্জন সূর্য যদুকুল পদ্মবন-ঘরে ॥
গরুড় বাহনে মেরে দৈত্যগণে বাড়াল আনন্দ শুধু সুরপুরে ॥
পদ্মসম চোখ তুমি আলোক থাকলে প্রতিদিন ত্রিভুবন জুড়ে ॥
জলের বরণ ধরলে গোবর্দ্ধন চন্দ্রের মতো মুখ হলো ভয়ে।
সীতাকে দূষণ কাড়লে ভূষণ মারলে দশানন তুমি যুদ্ধজয়ে ॥
তোমার দুপায়ে প্রণাম করিয়া সুখী করলে যতো মিত্রদেরে।
জয়দেব রচিত মঙ্গলগীত ভাষাতে রচিল সেই গিরিধরে ॥
এই শৃঙ্গাররসের বর্ণনা করিতে
কৃষ্ণের বুকে শৃঙ্গারের মুগ্ধ পিরিতে
কমলার মতো স্তনযুগলের মাঝে।
কী মিষ্টি ঘ্রাণ, কানে কুমকুম বিরাজে ॥
শক্ত আলিঙ্গনে কৃষ্ণবক্ষ লাজে।
লাগল কুমকুম মুদ্রার মতো সাজে ॥
কামকেলি করে পুরো দেহ হল সিক্ত।
অন্তরলক্ষ্মীর প্রেম হলো তাতে ব্যক্ত ॥
এমন কৃষ্ণের অতি অপূর্ব হৃদয়।
কেবলি সবার মন করে নেয় জয় ॥
গ্রন্থারম্ভ
বিরহিণী রাধিকার বিরহ-বর্ণনা।
সম্প্রতি ইচ্ছে হইল করিতে রচনা ॥
বসন্তের রূপ দেখে বলে রাধা, ঠিক।
মাধবীফুলের চেয়ে কোমল অধিক ॥
কামজ্বরে অতিশয় হইয়া আকুল।
কৃষ্ণের বিরহ-দুঃখে হয় সে ব্যাকুল ॥
কৃষ্ণকে ভেবে ভেবে মনে লজ্জা পায়।
তার কাছে গিয়ে সে যে রতি করতে চায় ॥
একমন হয়ে রাধা সখিসঙ্গে যায়।
কৃষ্ণের সন্ধানে বনে ঘুরিয়া বেড়ায় ॥
রাধিকার কানে কানে বলে সহচরী।
কৃষ্ণের কথায় আছে সরস মাধুরী ॥
বসন্তে বর্ণনা করে বসন্তের রাগে।
ভণিতায় লেখে নাম, বনকাণ্ডভাগে ॥
গীত
রাগ : বসন্ত ॥ তাল : যতি
এখন বসন্তে হরি ঘুরিয়া বেড়ায়।
যুবতীর সাথে হরি নাচে আর গায় ॥
লবঙ্গলতার ঘ্রাণ ভেসে আসে ঠাণ্ডা হাওয়ায়।
কুহুকুহু সুরে কোকিলের মতো মৌমাছিরা গায় ॥
ফুলমৌ পানে মৌমাছির স্থান হয় বৃক্ষের ডাল।
যার স্বামী দূরে থাকে, তার 888sport sign up bonus হয়ে ওঠে কাল ॥
মৃগনাভি ঘ্রাণে বৃক্ষতে ব্যাপ্ত হয় সৌরভ তার।
যুবকের মন কামের আঁচড়ে পুড়ে হয় ক্ষার ॥
সোনানির্মিত কামের ছত্র, যেন নাগেশ্বর ফুল।
তীক্ষè পাথরে তৈরি নাগেশ্বর, মন হয় ব্যাকুল ॥
দারুণ বিশ্ব দেখি জীবন্ত ফুল যেন সদা হাসে।
কেতকী নির্মল হয়ে বিরহীর থাকে যেন পাশে ॥
মাধবীর ঘ্রাণে মল্লিকার ফুল খুব মনকাড়া।
মুনির জন্যে স্বামীরা স্ত্রীকে খুন করে দিশেহারা ॥
মাধবীর আলিঙ্গনে খুশি হল মুকুলিত আম।
অতি পবিত্র যমুনাজলে স্বচ্ছ বৃন্দাবনধাম ॥
জয়দেব রচিত অদ্ভুত এ-গিরিধারী বিহার।
সেই সুন্দর বৃন্দাবনলীলা হোক তার বিস্তার ॥
শীতল সুগন্ধ নিয়ে বহিছে বাতাস।
বনরাজি ঘিরে আছে জীবন্ত প্রকাশ ॥
সামান্য বেগে বায়ু, কুঁড়ির তবু ভয়।
আঘাত আসতে পারে এমন সময় ॥
তীব্র চাপে বনরাজি হয়ে যায় হিম।
তার গন্ধে অবশেষে সেও তো অসীম ॥
পোড়ে মন বিরহীর, শেষ হয় আয়ু।
কেতকীর গন্ধে ধীরে বয়ে যায় বায়ু ॥
নরপতি কী সে-কাজ দিয়ে যে পাঠান।
পাঠালেন সেনাপতি প্রাণের সমান ॥
তাতে পায় সুখ আর মনেতে উচ্ছ্বাস।
বিরহীর দুঃখে প্রাণ হয় যে উদাস ॥ r (চলবে)


Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.