শাকুর মজিদ
কলকাতার জন অরণ্যে
আমাকে ‘কলিকাতা’ চিনিয়েছিলেন কিছু লেখক প্রথমে। যাঁদের লেখায় আমি এ-শহর সম্পর্কে জানি। সে-তালিকায় ফাল্গুনী-নীহাররঞ্জন-শরৎচন্দ্র বা পরের জেনারেশনের শংকর-সুনীল ছিলেন। আমার শৈশবে রবীন্দ্রনাথ আমাকে কলকাতা চেনাননি কখনোই। একমাত্র ‘ছুটি’ গল্প পড়ার সময় কলকাতায় পাঠানো শিশুটির নাগরিক জীবনের কষ্টের কথা পড়েছিলাম।
কিন্তু কলকাতা আমাকে দেখিয়ে চিনিয়েছিলেন প্রথম তিন live chat 888sportকার – রায়-ঘটক-সেন। মেঘে 888sport app তারা বা আকালের সন্ধানে বা অপু ট্রিলজির শেষ পর্বে নায়ক যখন পড়াশোনা করতে কলকাতা যাবে বলে কথা বলে, তখন একটু একটু করে কলকাতার কথা আমার শোনা। এর বাইরে তপন সিংহ বা অগ্রদূতের কিছু live chat 888sportেও আমি কলকাতাকে দেখি। উত্তমকুমার-সুচিত্রা, ছবি বিশ্বাস বা ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়ের কিছু ছবিতেও সাদা-কালো কলকাতাকে আমি দেখি।
কিন্তু কলকাতার শ্রেণিচরিত্র আমার কাছে প্রথম বোধহয় এসেছিল সত্যজিতের ছবিতে। তার বাংলা নাম ছিল জন অরণ্য আর ইংরেজি নাম The middle man, মানে স্রেফ দালাল। সত্যজিৎকে চেনানোর জন্য আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে 888sport appয় ভারতীয় দূতাবাস বেশ কাজের কাজ করেছিল। ধানম–র দূতাবাসের উল্টোদিকে তাদের একটা হল ছিল। সেখানে বিনা পয়সায় বড় পর্দায় ভারতীয় সিনেমা দেখানো হতো।
আশির দশকের প্রথম দিকে আমি ভারতীয় live chat 888sport দেখার সুযোগ পাই বন্ধুর বাড়ির ভিসিআরে। বন্ধুর পছন্দে ছবি দেখা হতো। অমিতাভের ছবি ছিল প্রধান আকর্ষণ। বাংলা ছবি কয়েকটা পাওয়া যেত যদিও, কিন্তু কেউ তেমন দেখতে চাইত না। সত্যজিতের নাম পড়েছি কাগজে কিন্তু তার ছবি দেখার সুযোগ হয় না। সুযোগটা করে দিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাসের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আমি প্রায়ই সুযোগ পেলে সাইকেল চালিয়ে বিকেলবেলা বুয়েট থেকে চলে যেতাম ধানম–। বিনা পয়সায় ছবি দেখে চলে আসতাম।
জন অরণ্য দুটো কারণে আকর্ষণীয় ছিল আমার কাছে। তার প্রথম কারণ, ছবিটি আমার সে-সময়ের প্রিয় ঔপন্যাসিক শংকরের দুটো 888sport alternative linkকে জোড়া দিয়ে বানানো, আর তা বানিয়েছেন খুব নামকরা live chat 888sportকার – সত্যজিৎ রায়। ছবিটি দেখে গা শিউরে উঠেছিল। যখন দেখি কাজ পাওয়ার জন্য ছবির নায়ক যে-মেয়েটিকে তার সম্ভাব্য ক্লায়েন্টের কাছে নিয়ে যায়, সে হচ্ছে তার ঘনিষ্ঠ বন্ধুর ছোট বোন।
জন অরণ্য ছবিটিতে মূলত কলকাতার দালাল শ্রেণির কথা বলা হয়েছে। বুঝতে বাকি থাকে না, এ-শহরটির প্রধান ব্যবসায়িক গোষ্ঠী মূলত এই শ্রেণির। কলকাতা কখনো 888sport live chatনগরী ছিল না। কারণ উৎপাদনমুখী কোনো 888sport live chat-কারখানা এখানে গড়ে ওঠেনি। অন্য অঞ্চলে যেসব পণ্য উৎপাদন হতো, কলকাতায় এসে এগুলো বাজারজাত হতো। এ-প্রক্রিয়ার মধ্যেই যুক্ত হয় ঠক আর ঠাকুর শ্রেণির কিছু মধ্যস্বত্বভোগী, খাঁটি বাংলায় যাদের দালাল বলা হয়। এসব কমিশন এজেন্ট বা মিডলম্যানরা উনিশ শতক থেকেই এই কলকাতায় বিসত্মৃতি লাভ করে। তাদের কেউ ইংরেজদের সাপস্নায়ার হিসেবে কাজ করে, কেউ বাবুদের। সেই শ্রেণির প্রতিনিধিত্বকারীরা যে বিংশ শতাব্দীর সত্তরের দশক পর্যমত্ম এভাবে আছে, তার প্রকাশ দেখে গা শিউরে উঠেছিল এবং এই শিরশিরে ভাবটি তৈরি করিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়।
কলকাতার মহাসড়ক দিয়ে যেতে সড়কদ্বীপের মধ্যে যে-কতগুলো নাম লিখে এই শহরটি তাদের শহর বলে মনে করিয়ে দেওয়া হয়, তার মধ্যে সত্যজিতের নামটি একাধিক জায়গায়ই দেখেছি। সত্যজিতের ছবির নিচে লেখা হয়েছে, KOLKATA : CITY OF SATYAJIT RAY.
রবীন্দ্রনাথের সত্যজিৎ
সত্যজিতের পূর্বপুরম্নষের বাস ছিল 888sport appsের কিশোরগঞ্জে। সেখান থেকে কলকাতা যান তাঁর পিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়, থাকতেন উত্তর কলকাতার কর্নওয়ালিশ রোডে। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে উপেন্দ্রকিশোর রায়ের সখ্য ছিল, তাঁর বাবা সুকুমার রায়কে অনেক সেণহ করতেন রবীন্দ্রনাথ।
রবীন্দ্রনাথের বয়স যখন ৬০, সত্যজিতের তখন জন্ম। সত্যজিতের যখন ১০ বছর বয়স, রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে তাঁর প্রথম দেখা শামিত্মনিকেতনের পৌষমেলায়। সত্যজিতের মাতা সুপ্রভা রায় ১০ বছর বয়সী পুত্র সত্যজিৎকে নিয়ে গিয়েছিলেন গুরম্নর আশীর্বাদ নেওয়ার জন্য। সত্যজিৎ রবিঠাকুরের সামনে একটা অটোগ্রাফের খাতা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথ খাতার ওপর তাৎক্ষণিক সই না করে নিয়ে গিয়েছিলেন বাড়িতে। পরদিন সকালবেলা সত্যজিৎ রবীন্দ্রনাথের উত্তরায়ণে গিয়ে হাজির হলে ফেরত পান খাতা। সে-খাতার ভেতর লেখা ছিল আট লাইনের একটি 888sport app download apk।
বহুদিন ধরে বহু ক্রোশ দূরে
বহু ব্যয় করি বহু দেশ ঘুরে
দেখিতে গিয়েছি পর্বতমালা
দেখিতে গিয়েছি সিন্ধু।
দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া
ঘর হতে শুধু দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের উপরে
একটি শিশির বিন্দু \
রবীন্দ্রনাথ-সত্যজিৎ সম্পর্ক এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। মূলত শুরম্ন এখান থেকে। ১৯৩৭ সালে সত্যজিতের মা রবীন্দ্রনাথের হাতে নিজ পুত্রকে তুলে দেওয়ার জন্য ভর্তি করান শামিত্মনিকেতনে। সত্যজিতের বয়স তখন ১৬। রবীন্দ্রনাথের মৃত্যু অবধি তিনি শামিত্মনিকেতনেই কবিগুরম্নর সস্নেহে বেড়ে ওঠেন এবং রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর অনেক অনেক পর সত্যজিৎ রায় যখন live chat 888sportকার হিসেবে আবির্ভূত হন, তিনি একে একে বেছে নেন রবীন্দ্রনাথের গল্প-888sport alternative link।
রবীন্দ্র-পরবর্তী সময়ে কলকাতার 888sport live chat-888sport live football ও সংস্কৃতির অঙ্গনে প্রধান প্রতিনিধিত্বকারী পুরম্নষ হিসেবে সত্যজিতের নামই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয়। এ-কারণেই হয়তো নীল-সাদার সড়কদ্বীপে শহরকে সবুজ রাখার পরামর্শ দিয়ে সিটি করপোরেশন যখন জানান দেয়, এই শহরটি রবীন্দ্রনাথ, রামকৃষ্ণ, বিবেকানন্দ, বিধানচন্দ্র রায়, মাদার তেরেসা, নিবেদিতা, শরৎচন্দ্রের শহর, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় সত্যজিতের নামও। কলকাতা তো সত্যজিতেরও শহর। সত্যজিৎকে বলা হয় রবীন্দ্রনাথের পর সবচেয়ে প্রতিভাবান বাঙালি সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তাঁর পরিচিতি বহুবিধ। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে তাঁর সিনেমার ভক্তই বেশি।
live chat 888sportের রবীন্দ্রনাথ
আমার বারবার মনে হতো রবীন্দ্রনাথ কেন live chat 888sportে এলেন না? তাঁর মতো প্রতিভাবানেরই তো জায়গা live chat 888sport, যেখানে 888sport live chatের ছয়টি শাখাকে এক করে বাঁধা হয়, অমন বাঁধ যদি সত্যজিৎ যথাযথভাবেই বাঁধতে পারেন, তবে রবীন্দ্রনাথ নয় কেন? বারবার মনে হয়েছে, শব্দসহ চলমান চিত্র দেখানোর সুযোগটা যদি ২০ বছর আগে এসে যেত, বাঙালি পেত পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চিত্রপরিচালকও। কিন্তু বাসত্মবিকতা হচ্ছে যে, কলকাতায় যখন সবাক live chat 888sport বানানো হয়, তখন কবির যথেষ্ট বয়স হয়ে গেছে। live chat 888sport-পরিচালনা যথেষ্ট শারীরিক পরিশ্রমসাপেক্ষ কাজ। সত্যজিৎকেও আমরা দেখেছি তাঁর মধ্যপঞ্চাশে এসেই তিনি ইনডোরমুখো হয়ে গিয়েছিলেন শুটিংয়ে। ৩৪ বছর বয়সে ছবি বানানোর সময় তাঁর যে শারীরিক তেজ ছিল পথের পাঁচালীতে, ছাপ্পান্নতে শতরঞ্জ কি খিলাড়ি বা শেষের দিকে সত্তরে এসে যখন শাখা-প্রশাখা বা গণশত্রম্ন বানান, তখন নিজের লেখা চিত্রনাট্যটা ইনডোরেই সীমাবদ্ধ রেখেছিলেন।
রবীন্দ্রনাথকে সচল অবস্থায় দেখেছি কয়েকটা live chat 888sportে। ইউটিউব থেকে পাওয়া তাঁর নিজের পরিচালনায় বানানো নটীর পূজা আর সত্যজিতের বানানো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তথ্যচিত্রে শামিত্মনিকেতনে ধারণ করা কয়েকটা শট মাত্র। আমগাছের তলায় হাঁটছেন, একটা গাড়িতে করে যাচ্ছেন, তাঁকে গাড়িতে ওঠানো হচ্ছে, দলবল নিয়ে পায়চারি করছেন, এমন। এবং এটা যখন করা হয়, তাঁর বয়স তখন আশি। সুতরাং এ-বয়সে ক্যামেরার সামনে পাওয়াটাই ভাগ্য, পেছনে পাওয়ার আশা করা অন্যায়ই।
তবে রবীন্দ্রনাথ সরাসরি live chat 888sport নির্মাণে না এলেও live chat 888sport কি তাঁকে বাদ দিতে পেরেছিল? বাংলা live chat 888sportের নির্বাক যুগে ১৯২০ সালে ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম রবীন্দ্রনাথের বিসর্জন গল্পের live chat 888sportায়ণ করেছিলেন, কিন্তু কাজটা হয়নি। ১৯২৩ সালে নরেশচন্দ্র মিত্রের পরিচালনায় রবীন্দ্রনাথের কাহিনির চিত্ররূপ পায় মান ভঞ্জনে। ১৯২৯ সালে ধীরেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় তপতী ছবিটি নির্মাণ শুরম্ন করলেও চার রিল পর্যমত্ম শুটিং হয়। এ-ছবিতে কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের জন্য রবীন্দ্রনাথ রাজি হলেও বিদেশ 888sport slot gameের কারণে ছবির কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। শিশিরকুমার ভাদুড়ী ১৯২৯ সালেই রবীন্দ্রনাথের বিচারক নিয়ে বানিয়েছিলেন নির্বাক live chat 888sport। ১৯৩১ সালে সবাক live chat 888sportের যুগ শুরম্ন হয় শরৎচন্দ্রের কাহিনি নিয়ে, পরের বছরই রবীন্দ্রনাথ live chat 888sport নির্মাণে নেমেছিলেন। মাত্র চার দিনে নটীর পূজার শুটিং শেষ হয়। শামিত্মনিকেতনের ছাত্রছাত্রীদের অভিনীত এ-live chat 888sportে উপালির চরিত্রে অভিনয় করেন রবীন্দ্রনাথ স্বয়ং। এরপর ১৯৩২ থেকে ১৯৩৮ সাল পর্যমত্ম তাঁর জীবদ্দশায় চিরকুমার সভা, নৌকাডুবি, গোরা, চোখের বালি নিয়ে live chat 888sport নির্মিত হয়। নজরম্নল ইসলাম তখন সচল যুবক। তিনিও live chat 888sport নির্মাণে আসেন।
নজরম্নল একটা ছবি পরিচালনা করেছিলেন, নায়কের ভূমিকায় অভিনয়ও করেছিলেন। কিন্তু অন্য অনেক পরিচালকের ছবিতে তিনি সংগীত পরিচালনা করেছিলেন বেশি। একবার রবীন্দ্রনাথের লেখা গানের সুরারোপ করতে গিয়ে বিভ্রাট বাধে। রবীন্দ্রনাথের গোরা 888sport alternative link অবলম্বনে তৈরি ছায়াছবিতে নজরম্নলকে সংগীত-পরিচালক হিসেবে মনোনীত করেন নরেশচন্দ্র মিত্র। তখন সুরকার হিসেবে নজরম্নলের জনপ্রিয়তা সবার ওপরে। live chat 888sportটি যখন মুক্তি পেতে যাচ্ছে, তখন বিশ্বভারতী মিউজিক বোর্ড থেকে আপত্তি ওঠে যে, বোর্ডের অনুমতি না নিয়ে ছবিতে রবীন্দ্রসংগীত (সাতটি রবীন্দ্রসংগীত) ব্যবহার করা হয়েছে এবং সুরও যথাযথ নয়; অতএব ছবিটি মুক্তি পেতে পারে না। প্রযোজকের মাথায় হাত। নজরম্নল কালক্ষেপণ না করে ফিল্মের প্রিন্ট ও প্রজেক্টর নিয়ে ট্যাক্সি করে শামিত্মনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের কাছে চলে গেলেন। সব শুনে রবীন্দ্রনাথ বললেন, ‘কী কা- বলো তো? তুমি শিখিয়েছ আমার গান, আর ওরা কোন আক্কেলে তার দোষ ধরে? তোমার চেয়েও আমার গান কি তারা বেশি বুঝবে? আমার গানের মর্যাদা কি ওরা বেশি দিতে পারবে?’ এ-কথা বলে আগের থেকে লিখে রাখা অনুমতিপত্র নিয়ে তাতে সই ও তারিখ দিয়ে দিলেন।
১৯৩৮ সালে কবি কাজী নজরম্নল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টিসংবলিত কাহিনি, গান ও সুরে মুখর ছিল কলকাতাকেন্দ্রিক বাংলার live chat 888sportজগৎ। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তখন অশীতিপর। তাঁর শারীরিক দুর্বলতাজনিত কারণেই বোধহয় আমরা live chat 888sportকার রবীন্দ্রনাথকে পাওয়ার সুযোগ পাইনি।
১৯৬০ সালের আগে পর্যমত্ম রবীন্দ্রনাথের শোধবোধ, শেষরক্ষা, অজমত্মা, নৌকাডুবি, দৃষ্টিদান, বিচারক, গোরা, বউঠাকুরাণীর হাট, চিত্রাঙ্গদা, চিরকুমার সভা, কাবুুলিওয়ালা, খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন, ক্ষুধিত পাষাণ নিয়ে প্রথিতযশা নির্মাতারা ছবি বানান। তাঁদের মধ্যে তপন সিংহ-পরিচালিত কাবুলিওয়ালা ভারতের রাষ্ট্রপতি পদক, বার্লিন আমত্মর্জাতিক live chat 888sport উৎসবে 888sport app download bd ও ক্ষুধিত পাষাণ ভারতে জাতীয় live chat 888sport 888sport app download bd অর্জন করে।
রবীন্দ্রনাথ টালিউডে সীমাবদ্ধ থাকার কথা নয়, ছিলেনও না। কলকাতার আরেক প্রতিভাবান live chat 888sportকার ঋতুপর্ণ ঘোষ ২০০৩ সালে বলিউডি সুপারস্টার ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে বানিয়েছিলেন চোখের বালি। ২০০৮-এ সুমন মুখোপাধ্যায় বানিয়েছেন চতুরঙ্গ, ২০১২-তে বাপ্পাদিত্ত বন্দ্যোপাধ্যায় বানান চার অধ্যায়। শুধু বাংলাতেই নয়, হিন্দিতেও তাঁর কাহিনি নিয়ে live chat 888sport হয়েছে বলিদান (১৯২৭), নৌকাডুবি নিয়ে মিলন (১৯৪৭), কাবুলিওয়ালা (১৯৬১), সমাপ্তি নিয়ে উপহার (১৯৭১), ক্ষুধিত পাষাণ নিয়ে লেকিন (১৯৯১), চার অধ্যায় (১৯৯৭), নৌকাডুবি নিয়ে ঋতুপর্ণ ঘোষের কাসমাকাস (২০১১)।
888sport appsে রবীন্দ্রনাথ কীভাবে আছেন সেটা এখনকার কলকাতার লোক জানে বলে মনে হয় না। রবীন্দ্রনাথের জন্ম ও মৃত্যুদিনে 888sport appsের অমত্মত কুড়িটি টেলিভিশনকেন্দ্র প্রায় সারাদিনই রবীন্দ্রনাথের গান এবং নাটক নিয়ে সময় কাটায়। রবীন্দ্রনাথের কাহিনি নিয়ে চাষী নজরম্নল ইসলাম ২০০৪ সালে শাসিত্ম, ২০০৬ সালে সুভা নামে দুটো live chat 888sport বানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের ১১৯টি ছোটগল্পের মধ্যে এমন কোনো গল্প পাওয়া কঠিনই হবে, যাকে নিয়ে একাধিক নাটক বানানো না হয়েছে 888sport appsের বিভিন্ন টেলিভিশনে।
সত্যজিতের রবীন্দ্রনাথ
১৯৬০ সালে ভারত সরকার দায়িত্ব দিলো সত্যজিৎ রায়কে। তিনি বানালেন প্রামাণ্যচিত্র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সত্যজিৎ রায় ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের তপন সিংহ, মৃণাল সেন, পূর্ণেন্দু পত্রীসহ বিখ্যাত প্রায় সব চিত্রপরিচালকই ছবি বানানোর ক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথের আশ্রয় নিয়েছিলেন। তাঁরা বানিয়েছিলেন নিশীথে, অর্ঘ্য, সুভা, দেবতার গ্রাস, অতিথি, শাসিত্ম, ইচ্ছাপূরণ, মেঘ ও রৌদ্র, মাল্যদান, স্ত্রীর পত্র, বিসর্জন, শেষরক্ষা, নৌকাডুবি, মালঞ্চ প্রভৃতি live chat 888sport। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে হিট হয়েছিল নৌকাডুবি, এটি একাধিক নির্মাতা বানিয়েছিলেন, এমনকি উর্দুতেও এটা বানানো হয়। 888sport appsে এবং পাকিসত্মানে একাধিক live chat 888sportকার এর কাহিনি নিয়ে ছবি বানালেও কাহিনিকার হিসেবে অনেক জায়গায়ই রবীন্দ্রনাথের নাম ব্যবহার করেননি।
সত্যজিতের পরিবারের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের সম্পর্ক এবং শামিত্মনিকেতনে কয়েক মাস রবীন্দ্রনাথের সাক্ষাৎ তদারকিতে পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছিলেন বলেই হয়তো তাঁর হাতে পড়ে রবীন্দ্রনাথের গল্প-888sport alternative linkগুলো সচল ও জীবমত্ম হয়ে উঠেছিল। রবীন্দ্রনাথের তিনটি ছোটগল্প ‘সমাপ্তি’, ‘পোস্টমাস্টার’ ও ‘মনিহারা’ নিয়ে তিনকন্যা বানিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায় ১৯৬১ সালে। রবীন্দ্রনাথের বড়গল্প নষ্টনীড় দিয়ে, ১৯৬৪-তে বানালেন চারম্নলতা। বলা হয়ে থাকে যে, সত্যজিতের সবচেয়ে নিখুঁত live chat 888sportের নাম চারম্নলতা। ছবিটি রাষ্ট্রপতি পদক, বার্লিন ও মেক্সিকো live chat 888sport উৎসবে শ্রেষ্ঠ ছবি হিসেবে পুরস্কৃত হয়। সত্যজিৎ এর পর বড় 888sport app download bd পান ঘরে বাইরের জন্য। ১৯৮৪-তে ভারতীয় জাতীয় live chat 888sport 888sport app download bd ও দামাস্কাস আমত্মর্জাতিক live chat 888sport উৎসবে 888sport app download bd পান তিনি। সত্যজিৎ তাঁর সারাজীবনের কাজের জন্য পৃথিবীর সর্বোচ্চ live chat 888sport 888sport app download bd অস্কার পেয়েছিলেন। চার্লি চ্যাপলিনের পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় সত্যজিৎকেই ডি-লিট প্রদান করেছিল। তবে 888sport free betর বিচারে রবীন্দ্রনাথের কাহিনি নিয়ে বানানো live chat 888sportগুলো থেকে তিনি সর্বোচ্চ 888sport app download bd পেয়েছিলেন।
নটীর পূজার নিউ এম্পায়ার
এখন আমরা কলকাতায় গেলে নতুন নতুন শপিং কমপেস্নক্সে গড়ে ওঠা অত্যাধুনিক সিনেপেস্নক্সগুলোতে আয়েশ করে সিনেমা দেখতে পছন্দ করি। তার পরও কলকাতায় আমার সবচেয়ে প্রিয় সিনেমা হলটির নাম নিউ এম্পায়ার। এর একটা কারণ, ১৯৯০ সালে এই হলে আমি প্রথম সিনেমা দেখি। শুনেছি, নতুন সিনেপেস্নক্সগুলোর কারণে এ-হলটি লোকসানে আছে। লোকসান কাটানোর জন্য বিল্ডিংটির সঙ্গে লাগানো কিছু খাবারের দোকান আর বারটাই নাকি ভরসা।
২০১২ সালের ডিসেম্বরে মহাজনের নাও নাটকের একপাল আর্টিস্ট নিয়ে এই হলেই ছবি দেখেছি দাবাং-২। একসময় এ-হলটি নাটক ও ব্যালে প্রদর্শনের জন্য ব্যবহৃত হতো। ১৯৩২ সালে যে-বছর এটি বানানো হয় সেখানে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁর নির্দেশিত প্রথম ও একমাত্র live chat 888sport নটীর পূজার শুটিং করেছিলেন এ-অডিটরিয়ামে। টানা চার দিন লেগেছিল ২০ মিনিটের এ-নৃত্যনাট্যটির শুটিংয়ের জন্য। ষাটের দশকের গোড়ার দিকে এখানে নাটকের পাশাপাশি সিনেমা দেখানো শুরম্ন হয়। এই দশকের শেষ দিকেই এই হলটি পুরোদস্ত্তর সিনেমা হলে রূপামত্মরিত হয়।
এখন এই হলটির সামনে একটা ছোট সাইনবোর্ড চোখে পড়ে। চার্লি চ্যাপলিনের নামে তাঁর সামনের রাসত্মাটির নাম হয়েছে। কিন্তু আমার কাছে রবীন্দ্রনাথের নিজের পরিচালনায় live chat 888sportায়ণের ঘটনাটির কারণে এই হলটি বড় বেশি তাৎপর্যময় বলে মনে হয়।
সত্যজিতের নন্দন
কলকাতায় ভালো ছবি দেখার জায়গাটি কিন্তু নন্দন। রবীন্দ্র সদনের এ-চত্বরটির সঙ্গেও সত্যজিতের সংশিস্নষ্টতা আছে। পশ্চিমবঙ্গের live chat 888sport888sport live chatের বিকাশ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে live chat 888sport-সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে ১৯৮৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর পশ্চিমবঙ্গ সরকার নন্দন প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এর দ্বারোদ্ঘাটন করেছিলেন সত্যজিৎ রায়। এর লোগোটিও তাঁর অাঁকা। এখন live chat 888sport প্রদর্শন ছাড়াও নন্দনে নিয়মিত আয়োজিত হয় বিভিন্ন সেমিনার ও live chat 888sport রেট্রোস্পেকটিভ। কলকাতা আমত্মর্জাতিক live chat 888sport উৎসবের প্রধান অনুষ্ঠানস্থলও নন্দন। মূল ভবনে live chat 888sport প্রদর্শনের জন্য রয়েছে মোট তিনটি অডিটরিয়াম। এই হলগুলোর ধারণক্ষমতা যথাক্রমে ৯৩১, ২০০ ও ১০০। এছাড়া নন্দন-চার অডিটরিয়ামটি ব্যবহৃত হয় শুধু সেমিনার ও সংবাদ সম্মেলনের উদ্দেশ্যে। নন্দন-দুই অডিটরিয়ামের সামনের লবিটি ব্যবহৃত হয় প্রদর্শনীর উদ্দেশ্যে। ১৯৯৫ সালে কলকাতায় যে ফিল্ম ইনস্টিটিউট বানানো হয়, তার নাম হয়েছে সত্যজিতের নামে – সত্যজিৎ রায় live chat 888sport ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট (Satyajit Ray Film and Television Institute-SRFTI) ।
১৯৯০ সালে প্রথমবার কলকাতা গিয়ে দলবেঁধে আমরা একটি মাত্র সিনেমা দেখেছিলাম। হলের নাম – নিউ এম্পায়ার। ইংরেজি ছবি, নাম ছিল And God Created Woman, সঙ্গে আমাদের নিজাম স্যার, আর বড় ভাইয়েরা। এর আগে 888sport appর মধুমিতা ছিল আমাদের দেখা সবচেয়ে জাঁকজমকের সিনেমা হল। কিন্তু নিউ এম্পায়ারের বিশাল পর্দা, বসার ব্যবস্থা এবং শব্দ প্রক্ষেপন দেখে বিমোহিত হয়ে গিয়েছিলাম। এরপর থেকে যখনই কলকাতা গিয়েছি, অমত্মত দুটো সিনেমা না দেখে আসিনি। এমনও হয়েছে, বিকেলবেলা এক হল থেকে বেরিয়ে হাঁটা দূরত্বে আরেক হলে গিয়ে ছবি দেখেছি, এবং বলা বাহুল্য, ওসব ছিল হিন্দি সিনেমা। কলকাতার ধর্মতলা-চৌরঙ্গী অঞ্চলজুড়ে গোটা পাঁচেক সিনেমা হল আছে এবং 888sport appর মতো বস্ন্যাক হয় না সেখানে, কাউন্টার থেকেই টিকিট পাওয়া যেত।
কিন্তু লক্ষ করি যে-বাঙালি (হীরালাল সেন) ভারতীয়দের সিনেমা বানানো শিখিয়েছিলেন, শত বছরের ব্যবধানে কলকাতায় বাংলা সিনেমা শুধু পোস্টারেই দেখা যায়। যে বড় হলগুলোতে আমরা ছবি দেখতে যাই, সেখানে বাংলা ছবি চালানো হয় না। খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, বাংলা সিনেমার মার্কেট নেই। বিগ বাজেটের হিন্দি ছবির কাছে মার খেয়ে আছে বাংলা সিনেমা। সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেন, তপন সিংহ, বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত এঁদের ছবি তাহলে চলে কোথায়? শুনেছি নন্দনে দুটো হল আছে। সেখানে লো বাজেটের প্যারালাল মুভি চলে। আর কমার্শিয়াল বাংলা ছবি চলে মফস্বলের হলে, কিংবা শহরতলির আনাচে-কানাচে বেড়ে ওঠা ছোট হলগুলোতে।
ভারতে প্রথম বায়োস্কোপ আসে সেই ১৮৯০ সালে। 888sport appsের মানিকগঞ্জের ২৪ বছর বয়সী তরম্নণ হীরালাল সেন নির্বাক live chat 888sport বানিয়ে প্রথম দেখিয়েছিলেন ভারতবাসীকে। এরপর ধীরে ধীরে কাহিনিচিত্র বানানো শুরম্ন হয়। প্রথম প্রথম উর্দু এবং ফার্সি ভাষায় এগুলো বানানো হতো। শরৎচন্দ্রের দেনা পাওনা নিয়ে প্রথম বাংলা টকি বানানো হয়েছিল ১৯৩১ সালে। এ-ছবিতে প্রথম শব্দ শোনা যায় চিত্রের সঙ্গে। 888sport appsের ফরিদপুরের চলিস্নশ বছর বয়সী যুবক প্রেমাংকুর অতর্থি পরিচালনা করেছিলেন এ-ছবি। সেখান থেকে বিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝিতে সত্যজিতের হাত পর্যমত্ম বাংলা live chat 888sport আসতে কুড়ি বছরের বেশি সময় লেগেছিল এবং সত্যজিতের ছোঁয়া পেয়ে ছবিগুলোও একটা ভিন্ন রূপ পেতে শুরম্ন করে।
১৯৯৬ সালে কলকাতার ছবিপাড়ায় মনের আনন্দে একদিন ঘুরে বেড়িয়েছিলাম। তখন আমি টেলিভিশনের জন্য নাটক লিখেছি। কী করে তার শুটিং হয়, তার কিছু আমার তেমন জানা নেই। 888sport appর কারওয়ান বাজারের এফডিসিতে বেশ কবার সিনেমার শুটিং দেখেছি। ইচ্ছা ছিল, সুযোগ পেলে কলকাতায় গিয়ে সিনেমা বানানো দেখে আসব।
ট্যাক্সিওয়ালাকে ফিল্মপাড়ার কথা বলতেই টালিগঞ্জের এক জায়গায় এক গেটের কাছে আমাকে নামিয়ে দেয়। আমি ঘুরে ঘুরে কিছু স্টুডিও দেখি। কোথাও ফিল্মের শুটিং দেখি না। স্টুডিওতে সেট ফেলা হয়েছে, টেলিভিশনের জন্য সিরিয়াল বানানো হচ্ছে জননী, আর আমাকে বলা হয়, এই ফিল্মপাড়াটিকে বলা হয় ‘টালিউড’। বুঝতে বাকি থাকে না যে, ‘হলিউডে’র নাম থেকেই এ-‘টালিউড’ শব্দটি তারা নিয়েছে এবং ঘটনাটি ঘটিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার ফিল্মপাড়া ‘হলিউড’ তৈরির বছর ছয়েক পরেই, ১৯৩৭ সালে। এখান থেকে নাম রফতানি হয়েছে বোম্বেতে (মুম্বাইয়ে) এবং তার নাম হয়েছে ‘বলিউড’ এবং এসেছে 888sport appয়ও, নাম হয়েছে ‘ঢালিউড’। হলিউড, বলিউড বা ঢালিউডের নামে ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড সিরিমনি হতে শুনেছি ‘টালিউড’ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডের কথা শুনিনি। জায়গাটি এই ভারতবর্ষের সিনেমার সূতিকাগার হয়েও এখনো বড়ই নিস্পৃহ।
কলকাতার গৌতম ঘোষ
কলকাতার live chat 888sport-নির্মাতাদের দুজন ছাড়া আমি কাউকে সরাসরি দেখিনি। একজন বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, আরেকজন গৌতম ঘোষ। দুজনই এসেছিলেন ২০০২ সালের 888sport apps উৎসবে। কলকাতার নন্দন চত্বরে সাতদিন ধরে 888sport apps মেলা হয়েছিল। 888sport appsের দুটি ছবি সেখানে দেখানো হয়। আমার ছিল ১৯৯৯ থেকে ২০০২ সাল পর্যমত্ম তোলা 888sport appর মঞ্চনাটকের ছবি নিয়ে প্রদর্শনী রিদম অন দ্য স্টেজ। কলকাতার মঞ্চনাটকের ছবি দেখালেন নিমাই ঘোষ। গগনেন্দ্র প্রদর্শনশালায় এ যৌথ প্রদর্শনী। এ-প্রদর্শনী দেখতে এসেছিলেন গৌতম ঘোষও। তখনি আলাপ এবং পরে সখ্য। তাঁর বাড়িতে একরাতে বিবি রাসেল আর আমাকে দাওয়াত খাইয়েছিলেন। সে-সময় বুদ্ধদেব দাশগুপ্তও ছিলেন।
গৌতম ঘোষ 888sport appsের দর্শকদের কাছে অনেক বেশি পরিচিত সেই পদ্মানদীর মাঝি থেকেই। 888sport appsের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় এরপরও অনেক ছবি তিনি বানিয়েছেন। আমি তাঁকে চিনি সেইবার থেকেই, যখন আমি কলকাতাকে দেখি তাঁর ছবিতে।
888sport apps উৎসবে যোগ দেওয়া ছিল আমন্ত্রিত হয়ে কলকাতায় আমার প্রথম আসা। সমলয় নামক একটি সংগঠন ছিল এর আয়োজক, আর সানু ব্যানার্জি এর মুখ্য সঞ্চালক। সে-উৎসবে এসে কলকাতার গুণী-জ্ঞানী অনেক মানুষকে দেখি। বিখ্যাত চিত্রকর সানু লাহিড়ি উদ্বোধন করেছিলেন সে-উৎসব। 888sport apps থেকে live chat 888sport, নাটক, নাচ, সংগীতের গোটা পঞ্চাশেক 888sport live chatী-কুশলী এসেছিলেন। আমার পরম ভাগ্য যে, সত্যজিৎ রায়ের live chat 888sportের যিনি স্থিরচিত্রগ্রাহক ছিলেন, তাঁর সঙ্গে আমার যৌথ প্রদর্শনী। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সত্যজিতের বয়সের ব্যবধান যেরকম ছিল, আমার সঙ্গে তাঁর বয়সও সেরকম ব্যবধানের। আমার পাওয়া ছিল তাঁর কাছ থেকে শোনা সত্যজিতের গল্প। তারা বাংলা নামে একটা টেলিভিশন চ্যানেল ছিল, সেখানে আমাকে মুখোমুখি বসানো হয়েছিল নিমাই ঘোষের সঙ্গে।
টালিউড
দুই দফায় ১৪ দিনের প্রদর্শনী চলাকালে আমি একটা ভিন্ন জিনিস লক্ষ করি। কলকাতার বাংলা টেলিভিশন আর কাগজের যেসব সংবাদকর্মী এসেছেন তাঁরা একইরকম। কিছুটা বয়সী। আর ইংরেজি কাগজের এবং অবাঙালি মালিকানাধীন টেলিভিশনের যেসব সংবাদকর্মী এসেছেন, তাঁদের ডাঁট-বাঁট, চলন-বলন আরেকরকম। তাঁরা যে-বাংলাটা বলছেন তা আমাদের মতো একেবারেই নয়। এবং স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনি যে, ওই অবাঙালিরাই কলকাতার আর্ট-কালচারের পৃষ্ঠপোষকতার জায়গাটা দখল করে নিচ্ছেন। টেলিভিশন চালাচ্ছেন, ফিল্মেও লগ্নি করতে নামছেন তাঁরা। এ মাড়োয়ারি গোষ্ঠী কেবল মুনাফানির্ভর ক্ষেত্রগুলোতে অর্থ লগ্নি করছে। যেখানে নিশ্চিত মুনাফা আছে, সেখানেই বিনিয়োগ, অন্যথায় নয়। আর এ-কারণেই গুণী live chat 888sport-নির্মাতারা হাত গুটিয়ে বসে আছেন, তাঁদের কাজ নেই। বিগ বাজেটের হিন্দি আর তামিল ছবির কাছে বাংলা সিনেমা টিকতেই পারছে না। কেবল সরকারি অনুদান পেলেই তাঁরা নতুন ছবিতে হাত দিতে পারেন, নইলে নয়।
এর বছরখানেক পর খবর পাই, ঋতুপর্ণ ঘোষ ছবি বানাচ্ছেন রবীন্দ্রনাথের চোখের বালি। বাংলা সিনেমা পাবলিককে খাওয়ানোর জন্য বোম্বে (মুম্বাই) থেকে নিয়ে এসেছেন হার্টথ্রব হিট নায়িকা ঐশ্বরিয়া রায়কে, এবং এজন্য বড় বাজেট লগ্নি করছে মাড়োয়ারি প্রডিউসার ভেঙ্কটেশ ফিল্মস।
১৯৯৬ সালে জন্মলাভ করা এ-প্রতিষ্ঠানটি ভারতে বেশ কয়টি উলেস্নখযোগ্য ছবি বানিয়ে ফেলেছে। তাঁদের লগ্নি যেমন বেশি, রিটার্নও ভালো, সঙ্গে 888sport app download bdও থাকে। ২০১৪ পর্যমত্ম এটি প্রায় ৬০টি live chat 888sport মুক্তি দিয়েছে। ঋতুপর্ণের পরিচালনায় চোখের বালি এবং রেইনকোট জাতীয় live chat 888sport-888sport app download bd পেয়েছে। তাঁরা সাথী, মিনিস্টার, ফাটাকেষ্ট, চ্যাম্পিয়ন, জ্যাকপট, চিরদিনই তুমি যে আমার, পরান যায় জ্বলিয়া রে, জোশ, আওয়ারা, চ্যালেঞ্জ-২-এর মতো ছবিতে যেমন লগ্নি করেছেন, আবার অটোগ্রাফ, বাইশে শ্রাবণ, ইতি মৃণালিনী, প্রলয়, প্রেম আমার, হেমলক সোসাইটি, চিত্রাঙ্গদা ইত্যাদি ছবিও প্রযোজনা করেছেন।
২০০৪ সালে কলকাতায় গিয়ে ফিল্মপাড়ায় বড় ধরনের পরিবর্তন দেখি। নতুন যেসব শপিং কমপেস্নক্স হয়েছে, সেখানে সিনেপেস্নক্স হয়েছে। চার-পাঁচটা হলে একসঙ্গে চলছে হিন্দি ও ইংরেজি ছবি, কিছু বাংলাও। সেসব হলের স্যারাউন্ড সিস্টেমের সাউন্ড, বসার জায়গা, পাশে খাবারের দোকান, সব মিলিয়ে জমজমাট অবস্থা।
সন্দীপ রায়ের বানানো একটা ছবি দেখলাম বোম্বের বোম্বেটে। এর আগে কলকাতার ছবিতে এমন অ্যাকশন দৃশ্য আমার দেখা ছিল না। তিনি ছবি বানাতে হাত দেন মূলত তাঁর বাবা সত্যজিতের অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে। তাঁকে নিয়ে কলকাতায় তাঁদের চার পুরম্নষের সাংস্কৃতিক আভিজাত্য।
সৃজিতদের নতুন হাওয়া
উপেন্দ্রকিশোর দিয়ে সূচনা, তারপর সুকুমার-সত্যজিৎ, শেষে সন্দীপ রায় হাত দিলেন live chat 888sport নির্মাণে। বাবার কাহিনি থেকে বোম্বের বোম্বেটে বানাতে প্রডিউসার পেলেন বালাজিকে। তাঁরাও অবাঙালি মাড়োয়ারি। যথেষ্ট সুযোগ পেয়েছেন তিনি খরচ করার, কাজেও লাগিয়েছিলেন। খুব মজা পেয়েছিলাম ছবিটা দেখে। পরবর্তীকালে ভেঙ্কটেশ তাঁকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন তাঁদের ব্যানারে আরো কিছু ছবি বানাতে। আমরা 888sport appয় বসে অপর্ণা সেন, ঋতুপর্ণ ঘোষ প্রমুখের ছবি দেখে বর্তমানের কলকাতাকে চিনতে পারি। এর মধ্যে live chat 888sport নির্মাণে এসেছে পরিবর্তন। ফিল্মের কারবার শেষ হয়ে ডিজিটাল ফরমেট যখন চলে এলো, তখন ভেঙ্কটেশ প্রায় দুশোটি ডিজিটাল হল বসালেন পশ্চিম বাংলায়, বেশি করে লগ্নি করতে লাগলেন অপেক্ষাকৃত কম বাজেটের ডিজিটাল ছবিতে। ফলে বেশ কিছু তরম্নণ প্রতিভাবান live chat 888sportকার এলেন কলকাতার সিনেমায়। এঁদের একজনের বেশ ভক্ত আমি, তাঁর নাম সৃজিত। বাইশে শ্রাবণ নামক একটি ছবি দেখে আমি live chat 888sportের ভিন্ন ভাষা খুঁজে পাই এবং আন্দাজ করি, এঁদের সবার ভেতরেই রবীন্দ্রনাথ। তা না হলে ছবির নাম যে ‘তারিখ’ নিয়ে, সেটা রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুদিন হবে কেন?
ছবিটার সূচনায় ছিলেন জীবনানন্দ, শেষে এসে রবীন্দ্রনাথ হাজির হন। এক পর্যায়ে 888sport app download apk ও কাব্য নিয়ে আলোচনার পর প্রবীর ও পাকড়াশি অনুমান করেন যে, খুনি নামকরা বাঙালি কবিদের মৃত্যুবার্ষিকীতেই খুন করে এবং তারা বুঝতে পারে যে, এর পরের খুনের তারিখ হলো ২৯ জুন। কারণ সেদিন মাইকেল মধুসূদন দত্তের মৃত্যুবার্ষিকী।
এর একমাস পর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যুবার্ষিকী (বাইশে শ্রাবণ) চলে আসে। প্রবীর পাকড়াশিকে রবীন্দ্রনাথ নামের একজনের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য আমন্ত্রণ জানায়। সৃজিত মুখোপাধ্যায় অত্যমত্ম তরম্নণ এক প্রতিভাবান live chat 888sport-পরিচালক, অভিনেতা, চিত্রনাট্যকার, অর্থনীতিবিদ। সত্যজিৎ রায় যে-বছর শতরঞ্জ কি খিলাড়ি বানান, সে-বছর তাঁর জন্ম। জওয়াহেরলাল নেহ্রম্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমফিল এবং পিএইচডি শেষ করেন এবং কাজের ফাঁকে দিলিস্নতে ইংরেজি সার্কিট থিয়েটারের সঙ্গে বেশ ভালোভাবে যুক্ত হন। তারপর ২০১০ সালে তিনি প্রথম live chat 888sport অটোগ্রাফ তৈরি করেন। live chat 888sportটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এর ধারাবাহিকতায় তিনি ২০১১ সালে বাইশে শ্রাবণ, ২০১২ সালে হেমলক সোসাইটি, ২০১৩ সালে মিশর রহস্য, ২০১৪ সালে জাতিস্মর ও চতুষ্কোণ live chat 888sport পরিচালনা করেন।
কলকাতা সিনেমার পালে এখন নতুন হাওয়া লেগেছে। এ-নৌকা যাঁরা এখন বাইছেন, তাঁরা সবাই সত্যজিৎকেই তাঁদের আদর্শ মেনে হাল ধরে আছেন, আর সত্যজিতের আদর্শের অনুপ্রেরণা তো রবীন্দ্রনাথ থেকেই।

Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.